Dhemoshia Mohsenia Islamia Dakhil Madrasa
You may also like
শিক্ষা জাতির মেরুদণ্ড
ব্রেকিং নিউজ
বার্ষিক পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা, পরীক্ষা তিন বিষয়ে
শিক্ষার্থীকে দেওয়া হবে যোগ্যতার সনদ
এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের বর্তমানে সনদের পাশাপাশি দেওয়া হয় ট্রান্সক্রিপ্ট। সনদে শিক্ষার্থী কোন জিপিএ (গড় গ্রেড) পেয়ে পাশ করেছে, সেটা উল্লেখ থাকে। আর ট্রান্সক্রিপ্টে বিষয়ভিত্তিক প্রাপ্ত নম্বর ও গ্রেড উল্লেখ থাকে।
পাবলিক দুই পরীক্ষায় শিক্ষার্থী কী যোগ্যতা অর্জন করেছে, সেই বিবরণী সংবলিত রিপোর্ট কার্ডও দেওয়ার চিন্তা করেছে সরকার। এতে শিক্ষার্থীর অর্জিত দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি, জ্ঞান ও মূল্যবোধের দিকগুলো তুলে ধরে হবে।
জানা যায়, জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখায় (এনসিএফ) রিপোর্ট কার্ড প্রবর্তনের এই কথা উল্লেখ আছে। রূপরেখা প্রণয়ন কমিটি বিষয়টি প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তরে চালুর প্রস্তাব করে। তখন এটি প্রাথমিক স্তরে চালুর ব্যাপারে অনীহা প্রকাশ করেছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরে অবশ্য কেবল ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে আজ বেলা ১১টায় এনসিএফ সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক আছে।
এই বৈঠক সামনে রেখে মঙ্গলবার কোর কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে শিক্ষাবিদরা প্রাথমিক স্তরেও ‘শ্রেণিভিত্তিক যোগ্যতার বিবরণী’ প্রথা চালুর জন্য চাপ দেন। বিষয়টি আজ উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে উঠতে পারে। শিক্ষার্থীর যোগ্যতার বিবরণী সংবলিত রিপোর্ট কার্ড সম্পর্কে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক মশিউজ্জামানের সঙ্গে যুগান্তরের কথা হয়।
তিনি বলেন ‘এক্সপেরিয়েন্সিয়াল লার্নিং’-এর (অভিজ্ঞতাভিত্তিক শিখন) শিক্ষাক্রম ও পাঠ ব্যবস্থাপনায় শিক্ষার্থী কী যোগ্যতা অর্জন করল, তা জানিয়ে দেওয়া দায়িত্বের অংশ। এজন্যই শ্রেণিভিত্তিক যোগ্যতার বিবরণী শিক্ষার্থীকে জানিয়ে দেওয়া হবে। স্কুল পর্যায়ে শিক্ষকরা যেসব বিষয়ে ধারাবাহিক মূল্যায়ন করবেন, এর রেকর্ড রাখবেন। বছর শেষে রিপোর্ট কার্ডে উল্লেখ করে অভিভাবকের কাছে দেবেন। আর পাবলিক পরীক্ষায় দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে কিছু বিষয় শতভাগ ধারাবাহিক বা স্কুলে শিক্ষকরা শিখনকালীন মূল্যায়ন করবেন। আর যেসব বিষয়ে সামষ্টিক মূল্যায়ন বা কেন্দ্রীয় পরীক্ষা হবে, সেগুলোয়ও এসএসসিতে ৫০ আর এইচএসসিতে ৩০ শতাংশ শিখনকালীন মূল্যায়ন হবে। সেই মূল্যায়নের ভিত্তিতেই শিক্ষার্থীকে যোগ্যতার বিবরণী সংবলিত রিপোর্ট কার্ড দেওয়া হবে।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ২০২৩ সালে নতুন এনসিএফ বাস্তবায়ন হবে প্রাথমিকের ও মাধ্যমিকের দুটি করে চার শ্রেণিতে। এর আগে আগামী বছর প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে যথাক্রমে প্রথম ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে ১০০টি করে ২০০ স্কুলে এর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ হবে। পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন শেষে ২০২৫ সালের এসএসসি পরীক্ষা হবে রূপরেখার আলোকে তৈরি শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তকের আলোকে। ২০২৬ সালের একাদশ এবং ২০২৭ সালের দ্বাদশ শ্রেণির পাবলিক পরীক্ষা হবে এটির আলোকে।
রূপরেখার প্রস্তাবে রিপোর্ট কার্ড সম্পর্কে বলা হয়েছে, প্রচলিত নম্বরভিত্তিক সনদ বা রিপোর্ট কার্ডের পরিবর্তে বর্ণনামূলক বহুমাত্রিক সনদ বা রিপোর্ট কার্ডের প্রচলন করা হবে। এতে শিক্ষার্থীর বিভিন্ন যোগ্যতা অর্জনের অগ্রগতির প্রতিফলন থাকবে। জ্ঞান, দক্ষতা, দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধ বিকাশের অবস্থা এতে উল্লেখ থাকবে। এই কার্ডের মাধ্যমে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয়। সাময়িক ও পরীক্ষায় এটা প্রচলন করা যেতে পারে। এতে আরও বলা হয়, পাবলিক পরীক্ষার ক্ষেত্রেও একই রকম ধারা অনুসরণ করা হবে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক শিক্ষার্থী মূল্যায়নের রিপোর্ট কার্ড এবং পাবলিক পরীক্ষার রিপোর্ট কার্ড সম্পূর্ণ নতুন আঙ্গিকে প্রণয়ন ও প্রচলন করা হবে। এক্ষেত্রে প্রযুক্তির ব্যবহার ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা হবে।
জানা যায়, পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে বর্তমানে যেভাবে সনদ দেওয়া হয়, সেভাবেই দেওয়া হবে। তবে সনদ ও ট্রান্সক্রিপ্ট উভয়টির লেখায় ভিন্নতা আসবে। বিষয়ভিত্তিক যোগ্যতার মূল্যায়নে ‘খুব ভালো’, ‘ভালো’, ‘গড়পড়তা ভালো বা মধ্যম মানের’, ‘কিছু চ্যালেঞ্জ আছে’, ‘বেশকিছু চ্যালেঞ্জ আছে’ এসব উল্লেখ থাকবে রিপোর্ট কার্ডে। নম্বরের পরিবর্তে এসব মন্তব্য দিয়ে শিক্ষার্থীকে মূল্যায়ন করা হলে জিপিএ-৫ এর পেছনে ছোটার প্রবণতা কমবে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।
এই নীতি প্রণয়নের সঙ্গে জড়িত ছিলেন (কোর কমিটির সদস্য) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. এম তারিক আহসান। তিনি যুগান্তরকে বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এই যোগ্যতার সনদ দেওয়ার রীতি প্রচলিত আছে। এটা দেওয়া হলে শিক্ষার্থীর যোগ্যতা সম্পর্কে নিয়োগকর্তারা জানতে পারবেন। ফলে এখন শিক্ষার্থী নিজে নিজেই তার বায়োডাটায় যেটা যুক্ত করেন, সেটা প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতির মাধ্যমে পাওয়া যাবে। এটির ভিত্তি হচ্ছে শিখনকালীন মূল্যায়ন। শিক্ষকরা বিভিন্ন মানদণ্ড অনুসরণে শিখনকালীন মূল্যায়ন করবেন। এর কোনোটি দিয়ে সাময়িক বা বার্ষিক পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা যেতে পারে। আর কোনো স্তরের শিখনকালীন মূল্যায়নের ফল পাবলিক পরীক্ষার কার্ডে যুক্ত হবে।
জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা বাস্তবায়নে ১১ চ্যালেঞ্জ
নতুন রূপরেখায় বদলে যাবে শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যবই। নতুনত্ব আসবে পরীক্ষা ও মূল্যায়ন পদ্ধতিতে। সার্বিকভাবে নতুন এই রূপরেখায় বিদ্যমান শিক্ষাব্যবস্থা ভেঙে একেবারে মৌলিক হিসেবে প্রবর্তন করা হবে। ২০২৩ সালে এসব চালু হলেও আগামী বছর ২শ স্কুলে পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করা হবে। এসব বিষয়ে কার্যক্রম শুরুর লক্ষ্যে আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক ডেকেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নতুন রূপরেখা অনুযায়ী শিক্ষাক্রম বাস্তবায়নে অন্তত ১১ ধরনের চ্যালেঞ্জ তৈরি হতে পারে। এগুলোর মধ্যে শীর্ষে আছে পাঠ্যবই এবং পাঠদান। এছাড়া আছে উপযুক্ত শিক্ষক; তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা মূল্যায়ন; দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ের শিখনকালীন বা ধারাবাহিক মূল্যায়ন; শিক্ষকের হাতে দেওয়া এই শিখনকালীন মূল্যায়নের স্বচ্ছতা; লেখাপড়ার মতো আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ায় অভিভাবক ও সামাজিক মূল্যায়ন; উচ্চমাধ্যমিকে দুই পাবলিক পরীক্ষার চাপ; মাধ্যমিকে ব্যবসায় শিক্ষা, ইতিহাস, ভূগোলের মতো বিষয়গুলোর পরিণতি; বিজ্ঞান, মানবিক, বাণিজ্য বিভাগের অনুপস্থিতিতে নবম-দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্ব। আরও আছে, মাধ্যমিকে বৃত্তিমূলক এবং উচ্চমাধ্যমিকে প্রায়োগিক বিষয় প্রবর্তন ও রূপরেখা বাস্তবায়নে অতিরিক্ত ব্যয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন যুগান্তরকে বলেন, যে কোনো নতুনত্বই প্রথমে চ্যালেঞ্জ মনে হয়ে থাকে। বিশ্বের অন্যান্য দেশে প্রতি পাঁচ বছর পরপর শিক্ষাক্রম মূল্যায়ন ও যুগোপযোগী করা হয়ে থাকে। সেই হিসাবে আরও আগে আমাদের এ ক্ষেত্রে মনোনিবেশ করা প্রয়োজন ছিল। কেননা, ২০১২ সালের পর পৃথিবীতে অনেক পরিবর্তন এসেছে। এই পরিবর্তন ধারণ আর আগামীতে বিশ্ব কোথায় যাবে- এসব বিবেচনায় নিয়েই নতুন শিক্ষাক্রম আনার চিন্তা করা হয়েছে। এটি বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় ব্যয় ও পরিশ্রমের প্রস্তুতি সরকারের আছে।
নতুন রূপরেখায় শিক্ষার্থীদের শেখার জন্য দশটি শিখন-ক্ষেত্র উল্লেখ করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ১৪টি বছর পড়ানো হবে এসব ক্ষেত্র থেকে। ৪ বছর বয়সে প্রাক-প্রাথমিক ‘মাইনাস টুতে’ (বিদ্যমান ধারণায় নার্সারি) ভর্তি হবে শিক্ষার্থীরা। এরপর উঠবে কেজি স্তরে। কিন্তু তাদের কোনো পাঠ্যবই থাকবে না। তবে বয়স অনুযায়ী ভাষা ও যোগাযোগ এবং গণিত ও যুক্তি থেকে শুরু শিল্প ও সংস্কৃতি পর্যন্ত দশটি বিষয়েই পাঠ শেখানো হবে।
প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত নির্বাচিত বিষয় বা পাঠ্যবই থাকবে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে ৫টি আর উচ্চমাধ্যমিকে প্রতিবর্ষে ৭টি করে বিষয়ে পরীক্ষা থাকবে। এ ক্ষেত্রে সনাতনী পদ্ধতির বিভাগভিত্তিক পাঠ থাকছে না মাধ্যমিকে। মাদ্রাসা ও কারিগরি স্তরেও অভিন্ন পাঠ্যবই থাকবে। সব মিলে দেশে চালু হচ্ছে একমুখী শিক্ষা।
সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, এসব পরিকল্পনা বাস্তবায়নে মূল হাতিয়ার হলেন শিক্ষকরা। কিন্তু দেশে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে যেসব শিক্ষক নিযুক্ত আছেন কিংবা যে নতুন শিক্ষাক্রম আসছে তা বাস্তবায়নে এই বিপুলসংখ্যক শিক্ষককে প্রস্তুত করা কতটুকু সম্ভব সেটা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। রূপরেখায় ৩য় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা রাখা হয়নি। পরীক্ষা ছাড়া মূল্যায়ন কীভাবে হবে কিংবা শিখনকালীন মূল্যায়নের প্রক্রিয়াটা কেমন হবে-সেটা নিয়েও অভিভাবকরা জানতে চাচ্ছেন।
এছাড়া অষ্টম শ্রেণি পর্যন্তও পরীক্ষার বদলে শিখনকালীন মূল্যায়ন রাখা হয়েছে ৬০ শতাংশ। আর এই মূল্যায়ন নিয়ে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন ও শঙ্কা হচ্ছে, কতটুকু নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছতার সঙ্গে এই মূল্যায়ন হবে। কেননা মূল্যায়নটি থাকছে বিদ্যালয়-মাদ্রাসার শিক্ষকদের হাতে।
এ প্রসঙ্গে শিক্ষাক্রম রূপরেখা প্রণয়ন কমিটির সদস্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. এম তারিক আহসান যুগান্তরকে বলেন, রূপরেখাটি পর্যায়ক্রমে ২০২২ থেকে ২০২৭ সালের মধ্যে বাস্তবায়ন হবে। এজন্য স্বল্প, মধ্যম ও দীর্ঘমেয়াদি কিছু পরিকল্পনাও এতে আছে। যেহেতু ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন হবে তাই বিপুলসংখ্যক শিক্ষককে পর্যায়ক্রমে প্রস্তুত করা যাবে। এছাড়া শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া পরিমার্জন করা হবে। সেটা অনুযায়ী প্রাক-চাকরিকালীন শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে শিক্ষকের দক্ষতা ও যোগ্যতা নিশ্চিত করে নিয়োগ দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। একই সঙ্গে চাকরিকালীন এবং অব্যাহত পেশাগত উন্নয়ন কার্যক্রমও থাকবে।
তিনি আরও বলেন, পরীক্ষা ও মূল্যায়ন এক জিনিস নয়। তথাকথিত লিখিত বা মৌখিক পরীক্ষা ছাড়াও মূল্যায়ন সম্ভব সেটাই পরিকল্পিতভাবে ৩য় শ্রেণি পর্যন্ত সম্পূর্ণরূপে আর দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বিভিন্ন হারে থাকবে। মূল্যায়নের দায়িত্বে শুধু শিক্ষকের কাছে না রেখে বরং শিক্ষার্থী নিজে, সহপাঠী, তার অভিভাবক, এমনকি কমিউনিটিকেও স¤পৃক্ত করার কথা বলা হয়েছে। এই মূল্যায়নের প্রক্রিয়া এমন হবে যাতে প্রত্যেকেই নিজ পর্যবেক্ষণ থেকে নম্বরের বদলে গুণগত তথ্য দিয়ে মূল্যায়ন করবে।
প্রস্তাবিত রূপরেখায় ব্যবসায় শিক্ষা, ইতিহাস, ভূগোল ইত্যাদি বিষয়গুলো নেই। অর্থাৎ, এ বিষয়গুলো আগের মতো আলাদাভাবে দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে রূপরেখা প্রণয়ন কমিটির সদস্যরা বলছেন, বিভিন্ন বিষয়ের সমন্বয়ের মাধ্যমে দশটি বিষয় সাজানো হয়েছে। তাই সাদা চোখে ইতিহাস, ভূগোল, পদার্থবিজ্ঞান বা ব্যবসায় শিক্ষার বিষয়গুলোকে আলাদা বিষয় হিসাবে দেখা না গেলেও এই বিষয়গুলো সমন্বিতভাবে রাখা হয়েছে। এ দশটি বিষয়ের মধ্যে পাঁচটি একাডেমিক বিষয় রাখা হয়েছে। বাকি পাঁচটি বিষয় সম্পূর্ণরূপে নির্দিষ্ট থিম ভিত্তি করে সাজানো হয়েছে। ফলে বাংলা, ইংরেজি, বিজ্ঞান, গণিত ইত্যাদি একাডেমিক বিষয়গুলোও স্বতন্ত্র না থেকে পারস্পরিক সম্পর্কযুক্তভাবে প্রকাশিত হয়েছে।
অন্যদিকে মাধ্যমিকে সবার জন্য বৃত্তিমূলক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। নবম-দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান, মানবিক, বাণিজ্য বিভাগের বিভাজন না রাখা নিয়েও প্রশ্ন আছে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে। অনেকের মাঝেই প্রশ্ন, তাহলে বিজ্ঞান শিক্ষার গুরুত্ব কমে যাবে কিনা।
আর উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে গিয়ে শিক্ষার্থীরা চাপের মুখে পড়ার ঝুঁকি আছে কিনা- এ প্রসঙ্গে রূপরেখার সদস্যরা জানান, রূপরেখা অনুযায়ী ১৬ বছর বয়সের পর ক্যারিয়ার ঠিক করে সেই অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের বিষয় নির্বাচনের সুযোগ রাখা হয়েছে। কেননা, বর্তমানে কোনো শিক্ষার্থী কী পড়বে- নবম শ্রেণিতে তা অনেকটাই বাবা-মা চাপিয়ে দেন। এতে শিক্ষার্থীর মেধা, আগ্রহ, প্রবণতা ইত্যাদি বিবেচনা পায় না। অন্যদিকে এসএসসিতে বিভাগ হওয়ায় সমন্বিত শিক্ষা বিঘ্নিত হচ্ছে। তাই অষ্টম থেকে দশম শ্রেণিতে বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞানের গুরুত্ব অন্য বিষয়গুলোর তুলনায় বেশি রাখা হয়েছে, যাতে সমন্বিত বিষয় হিসাবে থাকলেও এ বিষয়গুলো অধিক গুরুত্ব পায়। এটা অনুযায়ী শিখনসময় বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে বর্তমানে একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে বাংলা-ইংরেজির মতো সাধারণ বিষয়ে যত গুরুত্ব দেওয়া হয়, নতুন পদ্ধতিতে তা কমিয়ে নৈর্বাচনিক বা বিভাগভিত্তিক বিষয়ে গুরুত্ব বেশি রাখা হয়েছে।
এদিকে বর্তমানে চালু থাকা সৃজনশীল পরীক্ষা পদ্ধতি থাকছে না। বিভিন্ন আদলে মূল্যায়নের পাশাপাশি এমসিকিউ এবং বর্ণনামূলক প্রশ্নও থাকবে। প্রশ্ন হচ্ছে, এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অভ্যস্ত হতে পারবে কিনা। একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে পরপর পাবলিক পরীক্ষা শিক্ষার্থীদের ওপর চাপ আনবে কিনা- সেটাও অভিভাবকদের বড় প্রশ্ন।
এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে শিক্ষার্থীদের চাপ না বেড়ে বরং কমার সম্ভাবনা বেশি। কেননা, প্রচলিত পদ্ধতিতে দ্বাদশ শ্রেণির শেষে শিক্ষার্থীদের একসঙ্গে দুই বছরের পাঠের ওপর পরীক্ষা দিতে হয়, যা তাদের জন্য বড় ধরনের চাপ। এখন আলাদাভাগে পরীক্ষা হওয়ায় এ চাপ অনেক কমে আসবে। পাশাপাশি একাদশ শ্রেণির কোনো কোর্সে রেজাল্ট খারাপ হলে পরের বছর পরবর্তী ব্যাচের সঙ্গে সেই কোর্সের মানোন্নয়ন পরীক্ষার সুযোগ থাকছে।
নতুন রূপরেখা বাস্তবায়নে অতিরিক্ত অর্থ বরাদ্দ প্রয়োজন হবে কিনা- এমন প্রশ্নের উত্তরে এনসিটিবির সদস্য অধ্যাপক মশিউজ্জামান যুগান্তরকে বলেন, অনেকেই বলতে চাচ্ছেন যে, শিক্ষাক্রম রূপরেখা উচ্চাভিলাষী। তা নয়, বরং বাস্তববাদী। এটি যেহেতু রাতারাতি বাস্তবায়িত হবে না, তাই অতিরিক্ত কোনো বাজেট প্রয়োজন হবে না। প্রথমত নতুন কোনো বিষয় প্রস্তাব করা হয়নি। বৃত্তিমূলক শিক্ষার জন্য যে ট্রেড চালু করার কথা এসেছে সেই খাতে পাঠ্যপুস্তক ও শিক্ষক-সহায়িকাসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় উপকরণ এবং শিক্ষক প্রশিক্ষণের অর্থ বরাদ্দ সরকারের পরিকল্পনায় আছে, সেই সক্ষমতাও রয়েছে।
আরেক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বিদ্যমান সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা না থাকলেও যেটা আসবে তাতে তাদের সমস্যা হবে না। আনুষ্ঠানিক শিখন কার্যক্রমে অভিভাবক ও সমাজের সম্পৃক্ততা শিক্ষার্থীর একাডেমিক উন্নতির জন্য নয়। বরং তাদের বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা ও দৈনন্দিন কার্যক্রমে শিক্ষার্থীকে সম্পৃক্ত করার মাধ্যমে তার (শিক্ষার্থীর) যোগ্যতা অর্জনে সাহায্য করাই এ পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য।
দাখিল পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণা, এসএসসি নিয়ে যে তথ্য
করোনার কারণে নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা নিতে না পারলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখন খুলতে পারায় চলতি বছরের দাখিল পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড।
বৃহস্পতিবার ২০২১ সালের দাখিল পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণা করা হয়।
সূচি অনুযায়ী, আগামী ১৪ নভেম্বর চলতি বছরের দাখিল পরীক্ষা শুরু হবে। মোট তিন দিনে এই পরীক্ষা হবে। শেষ হবে ২১ নভেম্বর। প্রথম দিন (১৪ নভেম্বর) কোরআন মাজিদ ও তাজভিদ এবং পদার্থবিজ্ঞান (তত্ত্বীয়) বিষয়ের পরীক্ষা হবে। ১৮ নভেম্বর হবে হাদিস শরিফের পরীক্ষা। শেষদিন ২১ নভেম্বর ইসলামের ইতিহাস, রসায়ন (তত্ত্বীয়), তাজভিদ নসর ও নজম (মুজাব্বিদ গ্রুপ) এবং তাজভিদ (হিফজুল কোরআন গ্রুপ) বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
সময়সূচিতে পরীক্ষার্থীদের জন্য পাঁচটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো হলো- ১. করোনা অতিমারির কারণে যথাযথ স্বাস্থ্যবিধি মেনে পরীক্ষার কেন্দ্রে যেতে হবে। ২. পরীক্ষা শুরুর ৩০ মিনিট আগে অবশ্যই পরীক্ষার্থীদের আসন গ্রহণ করতে হবে। ৩. পরীক্ষার সময় হবে ১ ঘণ্টা ৩০ মিনিট। এমসিকিউ ও লিখিত পরীক্ষার মধ্যে কোনো বিরতি থাকবে না। ৪. পরীক্ষার দিন সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে শিক্ষার্থীদের উত্তরপত্র এবং ওএমআর শিট বিতরণ করা হবে। ৫. পরীক্ষা শুরুর তিন দিন আগে প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের কাছ থেকে প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে হবে।
এদিকে পৃথক সময়সূচিতে পরীক্ষা হলেও সাধারণত প্রতিবছর এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি ভোকেশনাল- এই তিনটি পরীক্ষা একইদিনে শুরু হয়। কিন্তু এ বছর দাখিলের সময়সূচি ঘোষণা হয়ে গেল, কিন্তু এসএসসির সময়সূচি ঘোষণা হয়নি এখনো।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একটি শিক্ষা বোর্ডের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার একটি গণমাধ্যমকে বলেন, এবারও এসএসসি পরীক্ষা একই দিনে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। সেভাবেই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। সময়সূচির বিষয়েও পৃথক ফাইল গেছে। হয়তো দাখিলের পরীক্ষার সময়সূচির ফাইলটি অনুমোদন হয়ে গেছে আগে। তাই আগে দাখিলের সময়সূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
তবে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে এসএসসি পরীক্ষা শুরুর কথা ওই গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এসএম আমিরুল ইসলাম।
৫৪৩ দিন পর খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান
আনন্দ আলোয় উদ্ভাসিত নতুন সকাল আজ
আনন্দ আলোয় উদ্ভাসিত নতুন সকাল আজ
দেশের স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা আজ খুলছে। করোনার ছোবলে ৫৪৩ দিন আগে সরকার দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছিল। এরপর এ বছরের ফেব্রুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত একাধিকবার শ্রেণি কার্যক্রম চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়।
কিন্তু সংক্রমণের দাপটে তা আর হয়ে ওঠেনি। আন্তর্জাতিক মানদণ্ড অনুযায়ী কোথাও সংক্রমণের হার একটানা দুই সপ্তাহ ৫ শতাংশে স্থিতিশীল থাকলেই সেখানে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যাবে। কিন্তু বাংলাদেশে শনিবারও সংক্রমণের হার ৭ শতাংশের ওপরে ছিল।
অবশ্য এটা আগের দিনের তুলনায় প্রায় দেড় শতাংশ কম। সেই হিসাবে অনেকটা ঝুঁকি নিয়েই ছাত্রছাত্রীদের সরাসরি পাঠদানের জন্য ক্লাসরুমে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। প্রথম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় সোয়া ৩ কোটি শিক্ষার্থী।
প্রাক-প্রাথমিক স্তরে এখন শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাবে না। এখনো বিশ্ববিদ্যালয় খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়নি।
এদিকে দীর্ঘদিন পর ক্লাসে বসার আনন্দে মাতোয়ারা ছাত্রছাত্রীরা। এক সপ্তাহ ধরে তারা স্কুলব্যাগ, ড্রেস, জুতা ইত্যাদি কিনে স্কুলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে। তাদের স্বাগত জানাতে বেশির ভাগ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানও প্রস্তুত।
বিশেষ করে শহরাঞ্চলের স্কুল-কলেজ অনেকটাই নতুন রূপে সাজানো হয়েছে। এছাড়া বিশেষ পরিস্থিতিতে প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তবু অভিভাবকরা কিছুটা অস্বস্তি আর উদ্বেগে আছেন।
সার্বিক বিষয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন শনিবার যুগান্তরকে বলেন, প্রায় দেড় বছর ধরে বন্ধ আছে সরাসরি পাঠদান। এতে শিক্ষার অপরিমেয় ক্ষতি হচ্ছিল।
তাই ক্ষতি আর না বাড়ানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন মহলের দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া হচ্ছে। পুনরায় ক্লাস শুরু উপলক্ষ্যে সরকার সার্বিক পদক্ষেপ নিয়েছে। মহামারি পরিস্থিতির বাস্তবতা বিবেচনায় রেখে সর্বোচ্চ সতর্কতা গ্রহণ করা হয়েছে।
আমরা শিক্ষকদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়েছি। শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা নিশ্চিতের জন্য স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রস্তুত করা হয়েছে। শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ৯০ শতাংশকে টিকা দেওয়া হয়েছে। এরপরও আমরা বসে থাকব।
দৈনিক প্রত্যেকটি স্কুল মনিটরিংয়ের পাশাপাশি ঢাকায় আসা প্রতিবেদন পর্যালোচনা করা হবে। স্কুল খোলাকে সামনে রেখে শেষ মুহূর্তের সমস্যা সমাধানের জন্য শনিবার মন্ত্রণালয় খোলা রাখা হয়েছিল।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট ৯ স্তরের দায়িত্বপ্রাপ্তদের জন্য ৬৩ দফা নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রস্তুতের জন্য দেওয়া হয়েছে আলাদা ১৯ দফা নির্দেশিকা।
রুটিন তৈরির জন্য পাঠানো হয়েছে ১১ দফা করণীয়। আর স্কুল-কলেজের হোস্টেল খুলতে আলাদাভাবে দেওয়া হয়েছে ১৪ নির্দেশনা। প্রাথমিক স্তরের জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে মৌলিক রুটিন করে দেওয়া হয়েছে।
আর শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য আলাদাভাবে দেওয়া হয়েছে ১৬ দফা নির্দেশনা। উভয় ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দুই স্তরে মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
স্কুল পরিচালনা করতে গিয়ে কোনো ধরনের সমস্যা হলো কিনা সেই তথ্য দৈনিকই শিক্ষার মাঠ প্রশাসন এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানকে পাঠাতে হবে ঢাকায়।
এছাড়া সার্বিক পরিস্থিতি নজরদারিতে রাখতে সাধারণ মাঠ প্রশাসনকেও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে ১১ দফা নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রধানরা দৈনিক স্কুল-কলেজ ও মাদ্রাসার সমস্যাসহ সার্বিক দিক বিকাল ৩টার মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরকে (মাউশি) জানাবেন।
একইভাবে উপজেলা ও থানা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তারাও মনিটরিং করে প্রতিদিন বেলা ৪টার মধ্যে মাউশিতে প্রতিবেদন দেবেন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তথ্য সংগ্রহ করবেন জেলা ও উপজেলা শিক্ষা অফিসের কর্মকর্তারা। সমস্যা হলে তা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরকে (ডিপিই) জানাতে হবে।
এদিকে শ্রেণিকাজ শুরুর পর পরিস্থিতির উদ্ভব ঘটলে পুনরায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়ার প্রস্তুতিও আছে সরকারের। শনিবার জামালপুরে এক অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী এ কথা উল্লেখ করে বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে পাঠদান চললে করোনার সংক্রমণ বৃদ্ধির সম্ভাবনা কম।
বিষয়টি নিশ্চিতে আমরা স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা করেছি। আমরা কোনোভাবেই শিশুদের স্বাস্থ্যের বিষয়টি অবহেলা করব না। তাই বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছি।
যদি কোনো প্রতিষ্ঠান সেসব না মানে তাহলে অবশ্যই সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর যদি ফের সংক্রমণ বেড়ে যায় তাহলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবার বন্ধ করা হবে।
আর প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, শিক্ষাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার কারণেই স্কুল খুলে দিতে হয়েছে। তবে যেহেতু সব এলাকায় সংক্রমণ সমান নয়।
তাই কোনো এলাকায় পরিস্থিতি তেমন হলে সেখানের স্কুল বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশনা আমরা ইতোমধ্যে পাঠিয়েছি। আমাদের কাছে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের নিরাপত্তাই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনার রোগী শনাক্ত হয়। এর ১০ দিন পর ১৭ মার্চ বন্ধ করা হয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এরপর এখন পর্যন্ত ২৩ দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানো হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর মতে, মহামারিকালে দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ রাখার দিক থেকে বাংলাদেশ বিশ্বে দ্বিতীয়। ইউনেস্কো-ইউনেসেফের মতো প্রতিষ্ঠান দীর্ঘ বন্ধে বাংলাদেশে শিক্ষার ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে একাধিকবার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
দেশের সুশীল সমাজের পক্ষ থেকে স্কুল খোলার চাপ ছিল। আর বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছিলেন। এমন পরিস্থিতিতে প্রথমে ১৮ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সচিব সভায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার প্রস্তুতি নিতে বলেন।
পরে তিনি এ নিয়ে সংসদেও কথা বলেন। এরপরই ৩ সেপ্টেম্বর চাঁদপুরে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে স্কুল খোলার তারিখ প্রকাশ করেন শিক্ষামন্ত্রী। এর আগে ২৬ আগস্ট স্কুল খোলা নিয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সেখানে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, করোনা সংক্রান্ত জাতীয় পরামর্শক কমিটির প্রধান এবং অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। ওই বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী স্কুল খোলার ব্যাপারে সম্মিলিত মতামত দিয়েছে করোনা সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি।
পাশাপাশি কমিটি স্কুল খোলার আগে ও পরে করণীয় সম্পর্কে নির্দেশিকা দিয়েছেন। এ নিয়ে ৫ সেপ্টেম্বর আন্তঃমন্ত্রণালয়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানেই স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হয়।
রুটিন : পাঠদান কার্যক্রম পরিচালনায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য মৌলিক রুটিন তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। এটি অনুযায়ী, প্রতিদিন পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস হবে। সঙ্গে একেকদিন এক একটি শ্রেণির ক্লাস হবে।
যেসব স্কুলে শিক্ষার্থী বেশি সেখানে প্রয়োজনে দুই শিফটে ক্লাস নেওয়া যাবে। প্রথম শিফট সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে শুরু হয়ে ৩টা ঘণ্টা চলবে। দুপুরে ৩০ মিনিটের বিরতি থাকবে। এরপর ক্লাস শুরু হয়ে বিকাল ৩টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত চলবে।
প্রতিদিনই ক্লাস শুরুর আগে দশ মিনিট করে কোভিড-১৯ স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতনতামূলক আলোচনা করতে হবে। এর আগে ৩০ মিনিট থাকবে শিক্ষার্থীদের স্কুলে প্রবেশের জন্য। একসঙ্গে প্রবেশ ও বের হওয়া যাবে না।
বুধ ও বৃহস্পতিবার কেবল পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাবে। অন্য চার দিন তাদের সঙ্গে আরেকটি শ্রেণির ক্লাস হবে। সে ক্ষেত্রে শনিবার চতুর্থ, রোববার তৃতীয়, সোমবার দ্বিতীয় এবং মঙ্গলবার প্রথম শ্রেণির ক্লাস হবে। এই চার শ্রেণির কেবল বাংলা, গণিত ও ইংরেজি বিষয়ে পাঠদান হবে।
আর পঞ্চম শ্রেণির সব বিষয়েই পাঠদান চলবে। মাধ্যমিক স্তরের জন্য প্রথমে রুটিন করা হলেও পরে বাতিল করে প্রতিষ্ঠানভিত্তিক নিজের প্রয়োজনের নিরিখে কর্মপন্থা ঠিক করতে বলে দেওয়া হয়েছে।
ব্যুরোর পাঠানো খবর-
বগুড়ায় সব স্কুলে ক্লাস গ্রহণের প্রস্তুতি সম্পন্ন : জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ক্লাস গ্রহণের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সারিয়াকান্দি উপজেলার সম্প্রতি বন্যায় ডুবে যাওয়া ৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে পানি নেমে গেছে।
সেখানেও ক্লাস গ্রহণের উপযোগী করা হয়েছে। বগুড়ার সহকারী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাবেদ আকতার জানান, ১২ উপজেলায় মোট এক হাজার ৩৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। বর্তমানে কোনো বিদ্যালয়ে বন্যার পানি নেই।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যদের তত্ত্বাবধানে সব প্রতিষ্ঠান ক্লাস গ্রহণের উপযোগী করা হয়েছে। প্রতিটি বিদ্যালয়ে মাস্ক, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, তাপমাত্রা পরিমাপের মেশিন রাখা হবে।
চট্টগ্রামে প্রস্তুত সাড়ে চার হাজার প্রতিষ্ঠান : চট্টগ্রামে পাঠদানের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে প্রায় সাড়ে চার হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। দীর্ঘদিন পর স্কুল খুলে দেওয়ার আগে ৪৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করেছেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এবং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা।
সব স্কুল-কলেজে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ক্লাস চালু করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা। শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নগরীর ডিসি হিল সংলগ্ন ন্যাশনাল প্রাইমারি স্কুল ও ডা. খাস্তগীর বালিকা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান।
এ সময় তিনি করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে শিক্ষার্থীকে স্কুলে দিয়ে অভিভাবকদের স্কুলের সামনে জটলা না করার অনুরোধ জানিয়েছেন।
বরিশালে স্কুলে স্কুলে আনন্দ উৎসব : প্রায় প্রতিটি স্কুল-কলেজ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, কোনো কোনো স্কুল-কলেজে নতুন করে রং করা হয়েছে। কোনো প্রতিষ্ঠানে আলপনা, ক্লাস রুমে বেলুন দিয়ে সাজাতেও দেখা গেছে।
সব মিলিয়ে স্কুলে স্কুলে যেন আনন্দ উৎসব বিরাজ করছে। দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র ইংরেজি ভার্সনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাহানারা ইসরাইল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। শনিবার স্কুলটিতে গিয়ে দেখা গেছে, স্কুলের প্রতিটি কক্ষ নতুন করে সাজানো হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান কবি এসএম শেলী বলেন, শিক্ষার্থীদের সুরক্ষার দায়িত্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ওপর। সেই চিন্তা থেকে পুরো প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত করা হয়েছে।
রাজশাহীতে ঊচ্ছ্বসিত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা : পাঠদান শুরুর জন্য রাজশাহীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রস্তুতি শেষ। দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আজ খুলছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ নিয়ে উচ্ছ্বসিত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
জেলার বাঘা উপজেলার আড়ানি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নার্গিস খাতুন বলেন, পাঠদানের উপযোগী করার জন্য আমরা শ্রেণিকক্ষগুলো পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করেছি। আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন।
গোদাগাড়ী উপজেলার পিরিজপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী আকবর আলী স্কুল খোলার সংবাদে মহাখুশি। সে বলে, বাড়িতে আর মন টিকছে না। স্কুলে কখন যাব সেই অপেক্ষায় আছি।
রংপুরে অভিভাবকদের স্বস্তি : রংপুরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে যাওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছেন শিক্ষক ও অভিভাবকরা। নগরীর সাতমাথা বালাটারি এলাকার আফজাল হোসেন, কেরানীরহাট এলাকার সাইফুল ইসলাম ও মর্ডান চেয়ারম্যানপাড়ার আবু সুফিয়ান মুকুল জানান, করোনার কারণে দীর্ঘদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল।
এ কারণে সন্তানদের নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। তারা লেখাপড়ায় অনেকটা পিছিয়ে পড়েছে। এখন মনে স্বস্তি ফিরেছে। তারা স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে কঠোর হওয়ারও আহব্বান জানান।
গঙ্গাচড়ার কোলকোন্দ আবুলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক বলেন, প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় খারাপ লেগেছে। খোলার অপেক্ষায় ছিলাম। সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক শিক্ষার পরিবেশ ফেরাতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে।
গোলাপ ফুলে শিক্ষার্থীদের বরণ : ক্যাম্পাসের প্রধান ফটকে থাকবে তাপমাত্রা পরিমাপের ব্যবস্থা। শরীরের তাপমাত্র বেশি হলে আলাদা রুমে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে প্রবেশের পর হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মাস্ক পরিধানও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
এরপর শিক্ষার্থীদের হাতে গোলাপ ফুল দিয়ে ক্যাম্পাসে বরণ করা হবে। কথাগুলো বলছিলেন যশোরের চৌগাছা উপজেলার এবিসিডি কলেজের অধ্যক্ষ রেজাউল ইসলাম। তিনি আরও বলেন, আগেই ক্যাম্পাস পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে।
স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী চলবে ক্লাস কার্যক্রম। শুধু চৌগাছা উপজেলার এবিসিডি কলেজ নয়, যশোরের দুই সহস্রাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।
সিলেটে পাঠে ফের মনোযোগী করাই বড় চ্যালেঞ্জ : সিলেট বিভাগের সব কটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকেই পাঠদানের উপযোগী করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। তাদের দাবি, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে হাওড় ও দুর্গম পাহাড়ি এলাকাতে থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও পাঠদান শুরুর ব্যত্যয় ঘটবে না।
বিভাগের চার জেলার মধ্যে সুনামগঞ্জের হাওড়াঞ্চলে থাকা অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেই শিক্ষার্থীদের যেতে হয় নৌকায়। আবার মৌলভীবাজারের পাহাড়ি এলাকার অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অবস্থান অনেকটা গহিন অরণ্যের উঁচু পাহাড়, টিলায়।
সিলেট ও হবিগঞ্জ এই দুটি জেলার হাওড় ও পাহাড়ি এলাকাতেও রয়েছে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। শিক্ষাবিদ ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ বলেন, শিক্ষার্থীদের ক্লাসে আসা, ফের পাঠে মনোযোগী করা একটা কঠিন চ্যালেঞ্জ।
ময়মনসিংহেও সব প্রস্তুতি সম্পন্ন : ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. গাজী হাসান কামাল যুগান্তরকে জানান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এছাড়া স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে গ্রহণ করা হয়েছে নানা উদ্যোগ।
বিদ্যালয়ের গেটে রাখা হয়েছে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
কুমিল্লায় পাঁচ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রস্তুত : জেলায় প্রায় পাঁচ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার জন্য প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। নবাব ফয়জুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা রোকসানা ফেরদৌস মজুমদার বলেন, স্কুল খোলা হবে তাই শিক্ষকদের নিয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার জন্য কমিটি করে দেওয়া হয়েছে।
অনলাইনে সব শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মানাসহ যাবতীয় নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুল মান্নান বলেন, সব প্রতিষ্ঠানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়টিতে জোর দেওয়া হয়েছে।
#স্কুল-মাদ্রাসা-কলেজ খুলছে, পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্টের কী হবে?
করোনার কারণে দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর বন্ধের পর ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দেওয়া হচ্ছে স্কুল-কলেজ। শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি জানিয়েছেন, ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দিলেও শুরুতে একসঙ্গে সব শ্রেণির ক্লাস হবে না। ধাপে ধাপে বিভিন্ন শ্রেণির ক্লাস হবে। প্রথমে হয়তো চলতি বছরের এসএসসি-এইচএসসি পরীক্ষার্থী যারা এবং আগামী বছরের পরীক্ষার্থী- তারা প্রতিদিনই ক্লাস করবে। আগামী নভেম্বরে এসএসসি ও ডিসেম্বরে এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
এতদিন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় এ বছরও ক্লাসে পাঠদান হয়নি। তাই বিপাকে রয়েছেন এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থীরা। তবে পরীক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা নিয়ে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে রাখা হয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) পরীক্ষার্থীকে অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া শুরু করে গত ১৮ জুলাই থেকে। পরীক্ষার প্রশ্নপত্র থেকেই এই অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হচ্ছে।
অ্যাসাইনমেন্ট যে নেওয়া হচ্ছে, সেটার কী হবে? এ বিষয়ে আজ শুক্রবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক (ডিজি) অধ্যাপক ড. সৈয়দ মো. গোলাম ফারুক সাংবাদিকদের বলেছেন, শিক্ষার্থীদের যে অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হয়েছিল এবং যে অ্যাসাইনমেন্ট জমা দেওয়া হয়েছে, সেগুলো নকল করে নাকি শিক্ষার্থীদের জ্ঞানের মাধ্যমে করেছে, সেগুলো ভালো করে দেখার জন্য বলা হয়েছে।
ডিজি আরও বলেন, প্রতিটি বিদ্যালয় ক্লাস শুরু করার আগে যা যা করণীয় সে বিষয়গুলো মাথায় রেখে কাজ করার জন্য আগেই জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তা এবং শিক্ষকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছিল। কাজেই আমরা আশা করি, বিদ্যালয় খুলে দিলে আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। ইতোমধ্যেই আমরা সব প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি।
অ্যাসাইনমেন্ট বিষয়ে গত ১৫ জুলাই সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছিলেন, অ্যাসাইনমেন্ট ঠিকঠাকভাবে করলে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা ভালো হবে। অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম শেষে নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে এসএসসি আর ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া হবে। পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হলে সব বিষয়ের ফল দেওয়া হবে ‘সাবজেক্ট ম্যাপিং’-এর মাধ্যমে। আর পরীক্ষা নেওয়া গেলে নৈর্বাচনিক বাদে বাকি সব বিষয়ে গ্রেড দেওয়া হবে সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ে।
করোনার কারণে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছুটি চলছে। সরকারের সর্বশেষ ঘোষণা অনুযায়ী চলতি বছরের ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি রয়েছে। নতুন সিদ্ধান্তের ফলে ছুটি আর বাড়ছে না। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, তারা আশা করছেন ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ক্লাস শুরু হবে।
গতকাল (২ সেপ্টেম্বর) রাতে বৈঠক করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার পক্ষে মত দেয় কোভিড-১৯ বিষয়ক জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। সেই রাতে শিক্ষামন্ত্রী একটি বেসরকারি টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে ধাপে ধাপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত আসার ইঙ্গিত দেন।
গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ ধরা পড়ে। করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি থাকায় শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনায় নিয়ে সরকার ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে। পরে কয়েক দফা চেষ্টা করেও এই মহামারির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আর খোলা সম্ভব হয়নি। দীর্ঘ দিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ রয়েছে।
চলমান এই ছুটি আরেক দফা বাড়ানো হয়েছে আজ (২৬ আগস্ট)। সে অনুযায়ী, আগামী ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলমান ছুটি অব্যাহত থাকবে।
স্কুল-কলেজের রুটিন চূড়ান্ত করে নির্দেশনা
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের ক্লাস রুটিন চূড়ান্ত করার নির্দেশনা দিয়েছে মাউশি। প্রতিদিন নির্দিষ্ট শ্রেণিতে ২টি করে ক্লাস ধরে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রুটিন তৈরি করবে। নির্দেশনা অনুযায়ী ২০২১ ও ২০২২ সালের এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার্থী এবং পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আসবে এবং অন্যান্য শ্রেণির শিক্ষার্থীরা আসবে সপ্তাহে একদিন।
ক্লাসের সময়সূচি প্রণয়নের জন্য আরও কিছু বিষয় বিবেচনায় ধরে বুধবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)।
করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে দেড় বছর বন্ধ থাকার পর ১২ সেপ্টেম্বর প্রাথমিক থেকে উচ্চমাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সশরীর ক্লাস শুরুর ঘোষণা দিয়েছে সরকার। এরই আলোকে সময়সূচি প্রণয়নের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালুতে সাত চ্যালেঞ্জ
প্রায় দেড় বছর বন্ধের পর ১২ সেপ্টেম্বর খুলছে স্কুল, কলেজ ও মাদ্রাসা। যদিও শিক্ষা এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এ ব্যাপারে ‘রিওপেনিং’ (পুনরায় ক্লাস চালু করা) পরিকল্পনা তৈরি করেছে। পাশাপাশি বিভিন্ন নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে। এছাড়া করোনা সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটিও এ নিয়ে বেশকিছু সুপারিশ দিয়েছে। কিন্তু এরপরও শিক্ষা কার্যক্রম শুরুর ক্ষেত্রে সরকারকে অন্তত ৭টি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জগুলোর মধ্যে আছে-শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরে ও বাইরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন নিশ্চিত করা; প্রতিদিনই শিক্ষক, শিক্ষার্থী, স্টাফসহ সংশ্লিষ্টদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা; খোলার আগে সবাইকে টিকার (এক ডোজ) আওতায় আনা; বন্যাদুর্গত এলাকা; উচ্চ সংক্রমিত জেলা; শিখন ঘাটতি দূর করা; ঝরে পড়া, স্থানান্তরিত ও স্কুলবিহীন শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফিরিয়ে আনা।
বিশেষজ্ঞদের মতে, দেড় বছর বন্ধ থাকায় অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঝোপঝাড়ে ছেয়ে গেছে। আসবাবপত্রে জমেছে ধুলোর পাহাড়। বাথরুমসহ ওয়াশ ব্লক নষ্ট হওয়ার পথে। তাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে স্কুল-কলেজ ব্যবহার উপযোগী করা। খোলার পর ধারাবাহিকভাবে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণও কঠিন। করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরিস্থিতি কমবেশি ১০ শতাংশ। ১০-১৫ শতাংশ শিক্ষক-কর্মচারী এবং ১৮ বছরের বেশি বয়সি বেশির ভাগ শিক্ষার্থী এখনো টিকা পায়নি। এদিকে দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলের ১৩ জেলায় চলছে বন্যা। বেশকিছু জেলায় সংক্রমণের হার অনেক বেশি। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে জ্ঞানগত ঘাটতি। অনেক শিক্ষার্থী ঝরে পড়েছে। তাদের মধ্যে কারও বিয়ে হয়ে গেছে, আবার কেউ অর্থ উপার্জনে কাজে জড়িয়ে গেছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করা খুবই কঠিন। তবুও কাজটি করতে হবে এর সঙ্গে জড়িতদের।
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রাথমিক ও গণশিক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরী বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আবার চালুর ক্ষেত্রে নানান চ্যালেঞ্জ আছে। সেগুলো যথাযথভাবে সামাল দেওয়া না গেলে অভিভাবকের আস্থা অর্জন কঠিন হবে। আর এমন অবস্থায় স্কুল খুলেও লাভ নেই। বরং উদ্যোগ বুমেরাং হবে। কেননা তখন অনেকে সন্তানকে স্কুলে পাঠাবেন না। অন্যদিকে খোলার পরে যদি স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত না করেই স্কুল চালিয়ে যাওয়া হয়, তাহলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। তাই এসব দিক নিশ্চিতে স্থানীয় পর্যায়ে তদারকি কমিটি থাকতে হবে। ওই কমিটির প্রতিবেদন কেন্দ্র দেখতে পারে। কিন্তু কেন্দ্র থেকে তদারকি করে স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করা সম্ভব হবে না। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে, আজকের (রোববার) বৈঠকেই যেন করোনা সংক্রমণের দিক থেকে ‘লাল’, ‘হলুদ’ ও ‘সবুজ’ চিহ্নিত এলাকাগুলো আলাদা করা হয়। পাশাপাশি এসব এলাকার জন্য আলাদা নীতি গ্রহণ করা হয়। প্রয়োজনে উচ্চঝুঁকির জেলাগুলোতে পরে শ্রেণির কাজ শুরু করা যেতে পারে। আবার প্রয়োজনে পাঠদান বন্ধ করে দেওয়ার প্রস্তুতিও রাখতে হবে। নইলে জাতীয়ভাবে বড় ধরনের ক্ষতির মধ্যে পড়তে হবে।
জানা গেছে, আজ বিকালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে বসছে ওই আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা। এতে শিক্ষা, কৃষি, তথ্য ও সম্প্রচার, স্বাস্থ্যমন্ত্রী এবং ক্রীড়া, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী ও শিক্ষা উপমন্ত্রীর অংশ নেওয়ার কথা আছে। এছাড়া ৬ জন সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এতে যোগ দেবেন।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এখন শিক্ষা কার্যক্রম চালুর ক্ষেত্রে প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে করোনা সংক্রমণের নিুগতি ধরে রাখা। শ্রেণিকক্ষে একজনও যদি আক্রান্ত অবস্থায় বসে, তাহলে বাকি সবারই সংক্রমিত হওয়ার শঙ্কা থাকে। তাই স্কুলের গেটেই দৈনিক প্রত্যেকের তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা করতে হবে। এজন্য ‘নন-কনট্যাক্ট’ থার্মোমিটার থাকতে হবে। এছাড়া যাদের মাস্ক পরানোর নিয়ম করা হবে তাদের সেটা নিশ্চিত করতে হবে। আগের মতো স্কুল চালানো যাবে না। একটি শ্রেণির শিক্ষার্থীদের একদিন স্কুলে আনা ও তাদের তিন ভাগে বসানোর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে হবে। কেবল পরীক্ষার্থীরা দৈনিক স্কুলে এলেও তাদের বসার ক্ষেত্রে শারীরিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে। বাথরুমসহ গোটা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পরিষ্কারের পর প্রস্তুত করা আরেকটি চ্যালেঞ্জ। এটা নিশ্চিতে মাঠ প্রশাসনকে কাজ করতে হবে। এক্ষেত্রে অভিভাবকদের তদারকির দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে।
এছাড়া আছে জেলাভিত্তিক অতি-সংক্রমণপ্রবণ এবং বন্যাকবলিত ১৩ জেলা। সংক্রমণপ্রবণ এলাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান চালু করা হবে কিনা সেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। বন্যাকবলিত জেলাগুলোর পরিকল্পনাও নিতে হবে। ক্লাসের পাঠদান বন্ধ থাকায় দেড় বছরে শিক্ষকদের আচরণগত পরিবর্তন এসেছে। বিপরীত দিকে শিক্ষার্থীদের অভ্যাসের পরিবর্তন হয়েছে। এ দুটিকে স্বাভাবিক অবস্থায় আনার ক্ষেত্রে প্রশাসন, অভিভাবক ও শিক্ষকের ভূমিকা প্রয়োজন। বিশেষ করে আগের ক্লাসে ঠিকমতো লেখাপড়া না করায় শিক্ষার্থীর যে শিখন-ঘাটতি তৈরি হয়েছে তা পূরণের মূল কাজ শিক্ষকের। আচরণগত পরিবর্তন পুনঃস্থাপনের পাশাপাশি শিক্ষার্থীকে মূল ধারায় ফিরিয়ে আনতে শিক্ষককে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে উপযুক্ত করা জরুরি। শ্রেণি কার্যক্রম শুরুর পর যারা স্কুলে আসবে না, তাদের খোঁজ নিতে বাড়ি বাড়ি যেতে হবে শিক্ষকদের। এছাড়া উপার্জন বন্ধ হওয়ায় শহরের অনেক শিশু গ্রামে চলে গেছে। কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। এই দুই ধরনের শিক্ষার্থীর নতুন স্কুলের ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। এ ক্ষেত্রে স্কুল পরিচালনা কমিটির ভূমিকা থাকা প্রয়োজন।
সারা দেশে নমুনা পরীক্ষা বিবেচনায় শনাক্তের হার ১০ শতাংশের নিচে নেমেছে। শনিবার দেশে সংক্রমণের হার ছিল ৯.৮২ শতাংশ। তবে কয়েকটি জেলায় এখনো শনাক্তের হার ঊর্ধ্বমুখী। রাজধানীর আশপাশের জেলাগুলোতেই সংক্রমণের হার বেশি। সবশেষ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যমতে, ফরিদপুরে শনাক্তের হার ২৪ দশমিক ৬৯ শতাংশ। মুন্সীগঞ্জে এ হার ২৫ শতাংশ, গাজীপুর ১৭ দশমিক ৯৯, মাদারীপুরে ১৫ দশমিক ৯০ শতাংশ। লক্ষ্মীপুর ১৯ দশমিক ৬৯, ফেনীতে এ হার ১৬ দশমিক শূন্য চার, কুষ্টিয়ায় ১৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ। গণসাক্ষরতা অভিযানের উপপরিচালক কেএম এনামুল হক যুগান্তরকে বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে কোনো এলাকায় সংক্রমণ ৫ শতাংশের বেশি থাকলেই সেটি উচ্চঝুঁকিভুক্ত। জাতীয়ভাবে আমরা এখনো ৯ শতাংশের ওপরে আছি। তাই চ্যালেঞ্জ বিবেচনা করা জরুরি। তবে এটা ঠিক যে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলতে হবে। খোলার পরে কীভাবে চালাতে হবে সে বিষয়ে জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থা ও বিশ্বব্যাংকের তৈরি গাইডলাইনের আলোকে আমাদের একটি জাতীয় গাইডলাইন আছে। সেটি যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। বন্যা ও সংক্রমণ ইত্যাদি বিবেচনায় ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে প্রয়োজনে ‘এডুকেশন ইন ইমার্জেন্সি’র নীতি অনসুরণ করা যেতে পারে।
এসব বিষয়ে কথা হয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেনের সঙ্গে। তিনি যুগান্তরকে বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রাতিষ্ঠানিক লেখাপড়া স্থগিত রাখার কৌশল থেকে বিশ্বের প্রায় সব দেশই সরে এসেছে। এই অবস্থার মধ্যে বৃহস্পতিবার ফ্রান্স শিশুদের জন্য স্কুল খুলে দিয়েছে। তাই আমাদেরও আর বসে থাকার সুযোগ নেই। সরকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার চিন্তা করছে। এ ব্যাপারে বিভিন্ন পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হয়েছে। এরপরও কী চ্যালেঞ্জ আছে বা স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিতে আর কী করণীয়-তা নির্ধারণেই আজ (রোববার) বৈঠক আছে। সেখানে বিস্তারিত আলোচনা হবে।
Click here to claim your Sponsored Listing.
Category
Website
Address
Chakaria
í αต $íตթlҽ ճօվ í lօѵҽ մ αตตմ αճճմ α→ժ αllհα í αต ตմ$líต í ®ҽαllվ lօѵҽ վօմ Blood :A+�
Chakaria, 4741
Hi all students of this school.I hope every one well by the grace of almighty of Allah..
Chakaria
চকরিয়া গ্রামার স্কুলের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ