Dr. Oli Ullah Fahad
Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from Dr. Oli Ullah Fahad, Doctor, Cumilla.
Mpox: একটি গুরুত্বপূর্ন সংক্রামক রোগের পরিচিতি
Mpox, পূর্বে যা "Monkeypox" নামে পরিচিত ছিল, এটি একটি ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ যা মূলত আফ্রিকার মধ্য এবং পশ্চিমাঞ্চল থেকে উদ্ভূত। পক্সভাইরাস পরিবারভুক্ত একটি ভাইরাস থেকে এ রোগটি সৃষ্টি হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বব্যাপী এর প্রকোপ বৃদ্ধি পাওয়ায় এর নাম এবং গুরুত্ব নতুন করে আলোচনায় এসেছে। এই রোগটির সাথে পরিচিত হওয়া এবং এর প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি।
👉 Mpox কী?
Mpox হলো একটি সংক্রামক ভাইরাসজনিত রোগ যা প্রধানত পশু থেকে মানুষের মধ্যে ছড়ায়, বিশেষ করে বানর ও ছোট স্তন্যপায়ী প্রাণী থেকে। তবে এটি মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হতে পারে এবং ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে ছড়াতে পারে। এই রোগটির লক্ষণগুলি কিছুটা গুটিবসন্তের (Smallpox) মতো, তবে কম মারাত্মক। Mpox এর নাম পরিবর্তন করে "Mpox" করা হয়েছে রোগটির ভয়ভীতি এবং ভুল ধারণা দূর করার জন্য।
👉 Mpox এর লক্ষণসমূহ:
Mpox এর লক্ষণগুলি সাধারণত ভাইরাস সংক্রমণের ৭-১৪ দিনের মধ্যে প্রকাশিত হয়। লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে:
- জ্বর
- মাথাব্যথা
- পেশীতে ব্যথা
- ক্লান্তি
- লিম্ফ নোড ফোলাভাব
- শরীরে ফুসকুড়ি যা ফোঁসকা বা ঘায়ে পরিণত হতে পারে
এই ফুসকুড়ি সাধারণত মুখ, হাত, এবং পায়ের তালুতে শুরু হয় এবং পরে শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়ে। ফুসকুড়ি শুরু হওয়ার পর থেকে এটি সাধারণত কয়েক সপ্তাহ ধরে থাকে।
👉Mpox এর সংক্রমণ এবং প্রতিরোধ:
Mpox প্রধানত সংক্রমিত প্রাণীর সংস্পর্শে আসা, সংক্রামিত ব্যক্তির সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বা আক্রান্ত জায়গার সামগ্রী স্পর্শের মাধ্যমে ছড়ায়। সংক্রমণ প্রতিরোধে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হলো:
- সংক্রমিত ব্যক্তিদের সাথে ঘনিষ্ঠ সংস্পর্শ এড়ানো
- হাত নিয়মিত ধোয়া এবং পরিষ্কার রাখা
- সংক্রমিত পশুর মাংস সঠিকভাবে রান্না করা
- সুরক্ষামূলক পোশাক পরিধান করা
👉চিকিৎসা:
Mpox এর জন্য কোনো নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই, তবে লক্ষণ অনুযায়ী চিকিৎসা প্রদান করা হয়। কিছু ক্ষেত্রে গুটিবসন্তের টিকা Mpox এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা দিতে পারে, কারণ এই দুটি ভাইরাসের মধ্যে কিছুটা মিল রয়েছে। গুরুতর সংক্রমণের ক্ষেত্রে, হাসপাতাল ভিত্তিক চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে।
👉শেষ কথা:
Mpox একটি গুরুত্বপূর্ণ জনস্বাস্থ্য সমস্যা, যা সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি। রোগটির প্রাদুর্ভাব রোধে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা, সচেতনতা বৃদ্ধি, এবং প্রয়োজনীয় সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অপরিহার্য। রোগটি সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান এবং সতর্কতা অবলম্বন করে এর প্রকোপ কমানো সম্ভব।
🛑 চুল ঝড়ে যাওয়ার কারণ, প্রতিকার এবং প্রতিরোধ:
চুল ঝড়ে যাওয়া একটি সাধারণ সমস্যা যা অনেক মানুষের জীবনে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। যদিও প্রতিদিন কিছু চুল পড়া স্বাভাবিক, কিন্তু অতিরিক্ত চুল ঝড়ে যাওয়ার পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। এই আর্টিকেলে আমরা চুল ঝড়ে যাওয়ার কারণ, প্রতিকার এবং প্রতিরোধের উপায় নিয়ে আলোচনা করব।
➡️ চুল ঝড়ে যাওয়ার কারণ
চুল ঝড়ে যাওয়ার বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে, যেমন:
👉জিনগত কারণ: এন্ড্রোজেনিক এলোপেশিয়া বা পুরুষ ও মহিলা প্যাটার্ন বল্ডনেস, একটি জিনগত অবস্থা যেখানে চুল ধীরে ধীরে পাতলা হতে শুরু করে এবং পুনরায় উঠে আসে না।
👉হরমোনের পরিবর্তন: হরমোনের পরিবর্তন যেমন গর্ভাবস্থা, মেনোপজ, বা থাইরয়েডের সমস্যা চুল ঝড়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে।
👉স্ট্রেস: মানসিক বা শারীরিক স্ট্রেস চুলের বৃদ্ধি চক্রকে প্রভাবিত করতে পারে, যার ফলে টেলোজেন ইফ্লুভিয়াম নামক অবস্থার সৃষ্টি হয়।
👉পুষ্টির অভাব: ভিটামিন এবং মিনারেলের অভাব, বিশেষ করে আয়রন, জিঙ্ক, এবং ভিটামিন ডি, চুল ঝড়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে।
👉স্বাস্থ্য সমস্যা: অটোইমিউন রোগ, যেমন এলোপেশিয়া আরেটা, এবং সংক্রামক রোগ যেমন স্ক্যাল্প ইনফেকশন চুল ঝড়ে যাওয়ার কারণ হতে পারে।
➡️চুল ঝড়ে যাওয়ার প্রতিকার
চুল ঝড়ে যাওয়ার প্রতিকারে কিছু চিকিৎসা এবং প্রাকৃতিক উপায় কার্যকর হতে পারে:
👉মেডিকেল চিকিৎসা: মিনোক্সিডিল (Minoxidil) এবং ফিনাস্টেরাইড (Finasteride) এর মত ওষুধ চুলের বৃদ্ধি বৃদ্ধিতে সহায়ক হতে পারে। তবে এগুলি ব্যবহার করার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ।
👉লেজার থেরাপি: লো লেভেল লেজার থেরাপি (Low-Level Laser Therapy) চুলের ফলিকলকে উদ্দীপিত করে এবং চুলের বৃদ্ধি বৃদ্ধি করতে সহায়ক হতে পারে।
👉পুষ্টিকর খাদ্য: ভিটামিন এবং মিনারেল সমৃদ্ধ খাদ্য, যেমন ফল, সবজি, বাদাম, এবং মাছ চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়ক হতে পারে।
👉হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট: যদি চুল ঝড়ে যাওয়া স্থায়ী হয়, তবে হেয়ার ট্রান্সপ্লান্ট একটি বিকল্প হতে পারে। এটি একটি সার্জিকাল পদ্ধতি যেখানে স্বাস্থ্যকর চুলের ফলিকলগুলি স্থানান্তর করা হয়।
➡️চুল ঝড়ে যাওয়ার প্রতিরোধ
চুল ঝড়ে যাওয়া প্রতিরোধে কিছু সহজ উপায় পালন করা যেতে পারে:
👉স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট: যোগব্যায়াম, মেডিটেশন, এবং পর্যাপ্ত বিশ্রাম স্ট্রেস কমাতে সহায়ক হতে পারে, যা চুল ঝড়ে যাওয়া প্রতিরোধে সহায়ক।
👉স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: ভিটামিন, মিনারেল এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্য গ্রহণ করে পুষ্টির অভাব পূরণ করা।
👉সঠিক হেয়ার কেয়ার: অতিরিক্ত রাসায়নিক ব্যবহার এড়ানো, চুলের জন্য উপযোগী শ্যাম্পু এবং কন্ডিশনার ব্যবহার করা এবং নিয়মিত চুল ট্রিম করা।
👉মেডিকেল চেকআপ: নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে হরমোন এবং অন্যান্য শারীরিক সমস্যা নির্ণয় করা এবং যথাযথ চিকিৎসা গ্রহণ করা।
➡️শেষ কথা
চুল ঝড়ে যাওয়া একটি সাধারণ সমস্যা হলেও, এর কারণ ও প্রতিকার জানা থাকলে এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চললে চুল ঝড়ে যাওয়া প্রতিরোধ করা এবং পুনরায় চুল গজানো সম্ভব।
Dr. Oli Ullah Fahad
#চুল #ঝরা
🛑 থাইরয়েড হরমোন:
➡️থাইরয়েড হরমোন দেহের বিপাকীয় কার্যাবলী নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয়, যা গলার সামনের অংশে অবস্থিত। প্রধানত দুটি হরমোন উৎপাদিত হয়: থাইরোক্সিন (T4) এবং ট্রাই-আইডোথাইরোনিন (T3)। এরা শরীরের বিভিন্ন কোষে প্রবেশ করে এবং বিপাকীয় কার্যাবলীতে সহায়তা করে।
➡️থাইরয়েড হরমোনের উৎপাদন ও নিয়ন্ত্রণ
থাইরয়েড হরমোনের উৎপাদন পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত থাইরয়েড স্টিমুলেটিং হরমোন (TSH) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। পিটুইটারি গ্রন্থি TSH নিঃসৃত করে, যা থাইরয়েড গ্রন্থিকে T4 এবং T3 উৎপাদনে উদ্দীপ্ত করে। যখন T4 এবং T3-এর স্তর রক্তে বৃদ্ধি পায়, তখন TSH-এর নিঃসরণ হ্রাস পায়, যা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে #থাইরয়েড #হরমোনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে।
➡️ থাইরয়েড হরমোনের প্রকারভেদ
👉থাইরোক্সিন (T4): এটি থাইরয়েড গ্রন্থি থেকে প্রধানত নিঃসৃত হরমোন। তবে এটি নিজেই সক্রিয় নয়; এটি শরীরের বিভিন্ন টিস্যুতে T3-এ রূপান্তরিত হয়।
👉ট্রাই-আইডোথাইরোনিন (T3): এটি সক্রিয় হরমোন এবং T4-এর তুলনায় শরীরের বিপাকীয় কার্যাবলীতে বেশি কার্যকর
➡️ থাইরয়েড হরমোনের কার্যাবলী
👉বিপাক নিয়ন্ত্রণ: থাইরয়েড হরমোন কোষের মাইটোকন্ড্রিয়ায় অক্সিজেন ব্যবহারের হার বৃদ্ধি করে, যা বিপাকীয় কার্যাবলী ত্বরান্বিত করে।
👉শারীরিক বৃদ্ধি ও বিকাশ: শৈশব এবং কৈশোরে শারীরিক বৃদ্ধি ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
👉মস্তিষ্কের বিকাশ: গর্ভাবস্থায় এবং শৈশবে মস্তিষ্কের বিকাশে সহায়ক।
👉শক্তি উৎপাদণ: প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট এবং ফ্যাটের বিপাক নিয়ন্ত্রণ করে শক্তি উত্পাদনে সহায়তা করে।
❄️থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যহীনতা
থাইরয়েড হরমোনের ক্ষতি ও লক্ষণ:
➡️ #হাইপোথাইরয়েডিজম (থাইরয়েড হরমোনের অভাব)
👉ক্ষতি:
🛑বিপাকের ধীর গতি: শরীরের বিপাকীয় হার কমে যায়, যা ওজন বৃদ্ধির কারণ হতে পারে।
🛑শারীরিক ও মানসিক অবসাদ: ক্রমাগত ক্লান্তি ও দুর্বলতা
🛑ঠাণ্ডা সহ্য না করতে পারা: ত্বকের শুষ্কতা ও ঠাণ্ডা অনুভূতি।
👉লক্ষণ:
- ওজন বৃদ্ধি
- ক্লান্তি ও দুর্বলতা
- ত্বকের শুষ্কতা
- চুল পড়া
- হৃদস্পন্দনের ধীর গতি
- কোষ্ঠকাঠিন্য
- মেজাজের পরিবর্তন ও বিষণ্ণতা
➡️ #হাইপারথাইরয়েডিজম (থাইরয়েড হরমোনের অতিরিক্ততা)
👉ক্ষতি:
>বিপাকের দ্রুত গতি: শরীরের বিপাকীয় হার বেড়ে যায়, যা ওজন হ্রাসের কারণ হতে পারে।
>শারীরিক ও মানসিক উত্তেজনা: অস্থিরতা, নার্ভাসনেস এবং ঘাম।
👉লক্ষণ:
- ওজন হ্রাস
- অতিরিক্ত ঘাম
- উচ্চ হৃদস্পন্দন
- মেজাজের পরিবর্তন ও উত্তেজনা
- তৃষ্ণা বৃদ্ধি
- দুর্বল পেশী
➡️বাচ্চাদের মধ্যে থাইরয়েড সমস্যা
বাচ্চাদের মধ্যে থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যহীনতা গুরুতর প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে শারীরিক ও মানসিক বিকাশে।
👉হাইপোথাইরয়েডিজম:
- বৃদ্ধি ও বিকাশে বিলম্ব
- শারীরিক ও মানসিক বিকাশের সমস্যা
- মস্তিষ্কের বিকাশের বিলম্ব
👉হাইপারথাইরয়েডিজম:
- অতিরিক্ত উত্তেজনা
- ওজন হ্রাস
- বৃদ্ধির অস্বাভাবিকতা
🙀প্রতিকার
➡️হাইপোথাইরয়েডিজমের প্রতিকার
👉থাইরয়েড হরমোন সাপ্লিমেন্টেশন: সিন্থেটিক থাইরয়েড হরমোন (লেভোথাইরোক্সিন) গ্রহণ।
👉নিয়মিত মনিটরিং: থাইরয়েড হরমোনের স্তর নিয়মিত পরীক্ষা করা।
👉স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: থাইরয়েডের কার্যকারিতা বৃদ্ধির জন্য পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ।
➡️হাইপারথাইরয়েডিজমের প্রতিকার :
👉অ্যান্টি-থাইরয়েড ওষুধ: থাইরয়েড হরমোনের উৎপাদন কমাতে ওষুধ।
👉রেডিওএকটিভ আয়োডিন থেরাপি: থাইরয়েড গ্রন্থির কার্যকারিতা কমাতে রেডিওএকটিভ আয়োডিন ব্যবহার।
👉থাইরয়েডেকটমি: থাইরয়েড গ্রন্থি অপসারণ।
➡️পরিত্রাণ
1.নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা: থাইরয়েডের কার্যকারিতা নিয়মিত পরীক্ষা করা।
2.পুষ্টিকর খাদ্য: আয়োডিন যুক্ত খাদ্য গ্রহণ।
3. স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট: মানসিক চাপ কমানো।
4. স্বাস্থ্যকর জীবনধারা: নিয়মিত ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস।
5. বিশেষজ্ঞের পরামর্শ: যেকোনো থাইরয়েড সমস্যা হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া।
➡️ উপসংহার
থাইরয়েড হরমোন আমাদের দেহের গুরুত্বপূর্ণ বিপাকীয় কার্যাবলী নিয়ন্ত্রণ করে। থাইরয়েড হরমোনের ভারসাম্যহীনতা বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে, যা সঠিক চিকিৎসা এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। স্বাস্থ্যকর জীবনধারা এবং পুষ্টিকর খাদ্য থাইরয়েড হরমোনের কার্যকারিতা বজায় রাখতে সহায়ক।
Dr. Oli Ullah Fahad
👎শ্বেত রুগী
➡️শ্বেত রুগী (লিউকোডার্মা) বা ভিটিলিগো একটি দীর্ঘস্থায়ী ত্বকের রোগ যা ত্বকের নির্দিষ্ট অংশে মেলানিন উৎপাদক কোষের (মেলানোসাইট) ধ্বংসের ফলে সাদা দাগের সৃষ্টি করে। এটি একটি অটোইমিউন ব্যাধি হিসেবে পরিচিত যেখানে শরীরের ইমিউন সিস্টেম ভুলবশত নিজের কোষগুলিকে আক্রমণ করে।
➡️কারণ ও ঝুঁকি ফ্যাক্টর
শ্বেত রুগীর সঠিক কারণ এখনও সম্পূর্ণভাবে অজানা, তবে বেশ কিছু কারণ এবং ঝুঁকি ফ্যাক্টর রয়েছে:
👉অটোইমিউন প্রতিক্রিয়া: ইমিউন সিস্টেমের অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়ার ফলে মেলানোসাইট ধ্বংস হয়।
👉জিনগত কারণ: পরিবারের মধ্যে এই রোগের ইতিহাস থাকলে ঝুঁকি বাড়ে।
👉পরিবেশগত ফ্যাক্টর: সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি, কিছু রাসায়নিক পদার্থ বা ত্বকের আঘাত শ্বেত রুগী উদ্দীপিত করতে পারেন
➡️লক্ষণ ও উপসর্গ
শ্বেত রুগীর প্রধান লক্ষণ হল ত্বকের নির্দিষ্ট অংশে সাদা দাগের উদ্ভব। এটি সাধারণত নিম্নলিখিত উপায়ে প্রকাশ পায়:
👉সাদা দাগ: মুখ, হাত, পা, এবং যৌনাঙ্গের আশেপাশে সাদা দাগ দেখা যায়।
👉চুলের রং পরিবর্তন: আক্রান্ত অঞ্চলের চুল ধূসর বা সাদা হয়ে যেতে পারে।
👉চোখের রং পরিবর্তন: চোখের রঙের পরিবর্তন হতে পারে।
➡️চিকিৎসা পদ্ধতি
শ্বেত রুগীর কোনও স্থায়ী নিরাময় নেই, তবে কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি দাগের বিস্তার কমাতে এবং ত্বকের রং পুনরুদ্ধারে সহায়ক হতে পারে:
👉স্টেরয়েড ক্রিম: প্রাথমিক অবস্থায় স্টেরয়েড ক্রিম ব্যবহার করে ত্বকের রং কিছুটা পুনরুদ্ধার করা যেতে পারে।
👉PUVA থেরাপি: আলট্রাভায়োলেট এ (UVA) আলো এবং ফটোসেনসিটাইজার ঔষধ ব্যবহার করে ত্বকের রং পুনরুদ্ধারের চেষ্টা করা হয়।
👉লেজার থেরাপি: লেজার থেরাপির মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্ত ত্বকের রং পুনরুদ্ধার করা যেতে পারে।
👉সার্জারি: কিছু ক্ষেত্রে, ত্বকের গ্রাফটিং করা হতে পারে যেখানে সুস্থ ত্বককে ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলে প্রতিস্থাপন করা হয়।
➡️জীবনযাপন এবং মানসিক স্বাস্থ্য
শ্বেত রুগী শুধুমাত্র শারীরিক নয়, মানসিক দিক থেকেও চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে। রোগীরা প্রায়শই আত্মবিশ্বাস হ্রাস, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা এবং হতাশার সম্মুখীন হন। তাই মানসিক সমর্থন এবং কাউন্সেলিংও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রোগীদের সুস্থ মানসিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে পরিবার, বন্ধু, এবং সামাজিক সমর্থন অত্যন্ত প্রয়োজন।
➡️খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারা
স্বাস্থ্যকর জীবনধারা এবং সুষম খাদ্যাভ্যাস শ্বেত রুগীর ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে সহায়ক হতে পারে:
👉সুষম খাদ্যাভ্যাস:ভিটামিন বি১২, ফোলিক অ্যাসিড, এবং অন্যান্য পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত।
👉হাইড্রেশন: পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা ত্বক সুস্থ রাখতে সহায়ক।
👉🏼মানসিক স্বাস্থ্য:যোগব্যায়াম, ধ্যান এবং মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
➡️শেষ কথা
শ্বেত রুগী একটি জটিল ত্বকের রোগ যা শারীরিক ও মানসিক চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি করতে পারে। সঠিক চিকিৎসা, স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, এবং মানসিক সমর্থনের মাধ্যমে রোগীরা একটি পূর্ণ ও সুস্থ জীবন যাপন করতে পারেন। শ্বেত রুগীর প্রতি ইতিবাচক মনোভাব এবং সামাজিক সমর্থন রোগীর মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
➡️Vitiligo: also known as leukoderma, is a chronic skin condition characterized by the loss of melanin-producing cells (melanocytes), resulting in white patches on the skin. It is considered an autoimmune disorder where the body's immune system mistakenly attacks its own cells.
➡️Causes and Risk Factors
The exact cause of vitiligo is still unknown, but several factors and risk factors have been identified:
👉Autoimmune Response: The immune system's abnormal response leads to the destruction of melanocytes.
👉Genetic Factors: A family history of vitiligo increases the risk.
👉Environmental Factors: Ultraviolet (UV) radiation, certain chemicals, or skin trauma can trigger vitiligo.
➡️ Symptoms and Signs
The primary symptom of vitiligo is the appearance of white patches on the skin. It usually manifests in the following ways:
👉White Patches:These patches commonly appear on the face, hands, feet, and around the ge****ls.
👉Hair Color Changes: Hair in the affected areas may turn gray or white.
👉Eye Color Changes:There may be changes in the color of the eyes.
➡️ Treatment Options
There is no permanent cure for vitiligo, but several treatment options can help reduce the spread of patches and restore skin color:
👉Steroid Creams: Topical steroid creams can help restore some skin color in the early stages.
👉PUVA Therapy: This involves using ultraviolet A (UVA) light and a photosensitizer drug to attempt to restore skin color.
👉Laser Therapy: Laser treatments can help restore color to affected skin areas.
👉Surgery: In some cases, skin grafting is performed, where healthy skin is transplanted to the affected areas.
➡️Lifestyle and Mental Health
Vitiligo poses not only physical but also mental challenges. Patients often experience decreased self-esteem, social isolation, and depression. Thus, mental support and counseling are crucial. Maintaining good mental health is vital, and support from family, friends, and social networks is essential.
➡️ Diet and Lifestyle
A healthy lifestyle and balanced diet can aid in managing vitiligo:
👉Balanced Diet: Consuming foods rich in vitamin B12, folic acid, and other nutrients is beneficial.
👉Hydration: Drinking adequate amounts of water helps keep the skin healthy.
👉Mental Health: Practices like yoga, meditation, and mental health care are crucial.
➡️Conclusion
Vitiligo is a complex skin condition that poses physical and mental challenges. With proper treatment, a healthy diet, and mental support, patients can lead a full and healthy life. A positive attitude towards vitiligo and social support play a significant role in improving the patient's mental and physical well-being.
Dr. Oli Ullah Fahad
👎শিশুদের পায়ে ব্যথা: কারণ ও প্রতিকার
শিশুরা প্রায়ই তাদের পায়ে ব্যথা অনুভব করতে পারে। যদিও এটি সাধারণত গুরুতর নয়, পায়ে ব্যথা শিশুর স্বাচ্ছন্দ্য ও কার্যক্রমকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই এর কারণ ও প্রতিকার জানা গুরুত্বপূর্ণ।
➡️ পায়ে ব্যথার কারণ
👉🏼শারীরিক কার্যকলাপ: অনেক শিশুরা খেলাধুলা বা দৌড়ঝাঁপের ফলে পায়ে ব্যথা পেতে পারে। অতিরিক্ত পরিশ্রম বা অস্বাভাবিক শারীরিক কার্যকলাপ পায়ে ব্যথার মূল কারণ হতে পারে।
👉🏼বৃদ্ধির ব্যথা: বৃদ্ধি প্রক্রিয়ার সময় পায়ে ব্যথা সাধারণ একটি সমস্যা। সাধারণত এটি ৩ থেকে ১২ বছরের শিশুদের মধ্যে দেখা যায়।
👉🏼প্ল্যান্টার ফ্যাসাইটিস: পায়ের পাতার নিচের অংশে প্রদাহ হওয়ার ফলে পায়ে ব্যথা হতে পারে। এটি অনেক সময় খালি পায়ে হাঁটা বা অনুপযুক্ত জুতা পরিধানের কারণে হয়।
👉🏼আঘাত বা আঘাতজনিত সমস্যা: পায়ে আঘাত, মচকানো বা হাড় ভেঙে গেলে ব্যথা হতে পারে।
👉🏼জয়েন্ট সমস্যা: আর্থ্রাইটিস বা অন্যান্য জয়েন্ট সমস্যা শিশুদের পায়ে ব্যথার কারণ হতে পারে।
➡️প্রতিকার
👉🏿বিশ্রাম: পায়ে ব্যথা থাকলে বিশ্রাম নেওয়া খুবই জরুরি। পায়ে চাপ কমাতে এবং ব্যথা কমাতে বিশ্রাম সাহায্য করে।
👉🏾বরফের প্যাক: পায়ে ব্যথা থাকলে বরফের প্যাক লাগানো যেতে পারে। এটি প্রদাহ কমায় এবং ব্যথা হ্রাস করে।
👉🏼উচ্চতা প্রদান: পায়ে ফোলা থাকলে পা উঁচুতে রাখা উচিত, যা রক্তপ্রবাহ স্বাভাবিক রাখতে সাহায্য করে।
👉🏼ব্যথানাশক ওষুধ: পেডিয়াট্রিশিয়ানের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যথানাশক ওষুধ দেওয়া যেতে পারে।
👉🏼সঠিক জুতা: শিশুরা যেন সঠিক আকার ও আরামের জুতা পরে তা নিশ্চিত করা উচিত। অনুপযুক্ত জুতা পায়ের ব্যথা বাড়িয়ে দিতে পারে।
➡️চিকিৎসকের পরামর্শ
যদি পায়ে ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী হয় বা অন্যান্য উপসর্গের সাথে থাকে, যেমন ফোলা, লালচে ভাব, বা চলাফেরায় সমস্যা, তবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। চিকিৎসক প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে সমস্যার মূল কারণ নির্ণয় করতে পারেন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করতে পারেন।
শিশুদের পায়ে ব্যথা নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার আগে এর কারণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানা গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পরিচর্যা ও চিকিৎসার মাধ্যমে পায়ে ব্যথা দ্রুত নিরাময় সম্ভব।
Dr. Oli Ullah Fahad
👎প্রাণির কামড় এবং র্যাবিস ভ্যাকসিন কি?
➡️প্রাণির কামড় সাধারণত অনাকাঙ্ক্ষিত এবং বিপজ্জনক হতে পারে। এ ধরনের ঘটনা ঘটলে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে র্যাবিস ভ্যাকসিন নেওয়া একটি প্রধান পদক্ষেপ। নিচে আমরা প্রাণির কামড় এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট ভ্যাকসিন সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো।
➡️ র্যাবিস কি?
র্যাবিস হলো একটি মারাত্মক ভাইরাসজনিত রোগ যা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রকে আক্রমণ করে। একবার লক্ষণ প্রকাশ পেলে এটি প্রায় সর্বদা মৃত্যুজনক। সাধারণত র্যাবিস ভাইরাসটি আক্রান্ত প্রাণির লালা দ্বারা সংক্রমিত হয়, যেমন কামড়, আঁচড় বা লালা লাগা।
➡️কোন প্রাণির কামড়ে র্যাবিসের ঝুঁকি বেশি?
বিশ্বব্যাপী, র্যাবিস সংক্রমণের প্রধান উৎস হলো কুকুর। এছাড়া বিড়াল, শিয়াল, বাদুড়, এবং বন্য প্রাণিরা (যেমন র্যাকুন এবং স্কাঙ্ক) র্যাবিস ভাইরাসের বাহক হতে পারে। এই কারণে, এই ধরনের প্রাণির কামড় হলে বা আঁচড় লাগলে র্যাবিসের বিরুদ্ধে সতর্কতা অবলম্বন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
➡️কামড়ের পরে কী করবেন?
যদি কোনো প্রাণি কামড় দেয়, তাহলে দ্রুত নিচের পদক্ষেপগুলি নিন:
👉🏼ক্ষত ধোয়া: প্রথমেই আক্রান্ত স্থানে প্রচুর পানি এবং সাবান দিয়ে ক্ষত ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন। এটি ভাইরাসের পরিমাণ কমাতে সহায়ক হতে পারে।
👉🏼চিকিৎসা নেওয়া: দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে যান বা চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
➡️র্যাবিস ভ্যাকসিন
প্রাণির কামড়ের পরে র্যাবিস ভ্যাকসিন নেওয়া জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। র্যাবিস ভ্যাকসিন পোস্ট-এক্সপোজার প্রফিল্যাক্সিস (PEP) নামে পরিচিত এবং এটি সাধারণত কয়েকটি ডোজে প্রদান করা হয়। কামড়ের পর যত দ্রুত সম্ভব ভ্যাকসিন নেওয়া শুরু করা উচিত।
👉🏼ইমিউনোগ্লোবুলিন (Rabies Immunoglobulin): এটি প্রথম ডোজের সাথে দেওয়া হয় এবং কামড়ের স্থানে ইনজেক্ট করা হয়।
👉🏼র্যাবিস ভ্যাকসিন সিরিজ: এটি সাধারণত প্রথম দিন, ৩ দিন, ৭ দিন, ১৪ দিন এবং ২৮ দিনে দেওয়া হয়।
➡️প্রতিরোধ
র্যাবিস প্রতিরোধে কিছু সাধারণ সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে:
👉🏼পোষা প্রাণির টিকাদান: পোষা কুকুর এবং বিড়ালের নিয়মিত র্যাবিস ভ্যাকসিন প্রদান করুন।
👉🏼বন্য প্রাণি থেকে দূরে থাকা: বন্য প্রাণির কাছাকাছি যাবেন না এবং তাদের স্পর্শ করবেন না।
👉🏼শিক্ষা ও সচেতনতা: পরিবারের সদস্য, বিশেষ করে শিশুদের র্যাবিস এবং তার ঝুঁকি সম্পর্কে সচেতন করুন।
Dr. Oli Ullah Fahad
➡️র্যাবিস একটি গুরুতর এবং প্রাণঘাতী রোগ। যেকোনো প্রাণি কামড়ের পরে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া এবং প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন গ্রহণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সচেতনতা এবং সতর্কতা মেনে চললে র্যাবিস সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
#র্যাবিস #ভ্যাকসিন
#প্রাণিরকামড়
👎শিশুদের অ্যাকিউট ওয়াটারি ডায়রিয়া (AWD):
➡️অ্যাকিউট ওয়াটারি ডায়রিয়া (AWD) কী?
অ্যাকিউট ওয়াটারি ডায়রিয়া (AWD) হল হঠাৎ শুরু হওয়া ডায়রিয়া যা প্রধানত তরল মলের মাধ্যমে শরীর থেকে পানি এবং লবণ বের করে দেয়। এটি শিশুদের মধ্যে একটি সাধারণ সমস্যা এবং দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন।
➡️AWD এর লক্ষণ:
👉🏼তরল মল: বারবার পাতলা, পানির মতো মলত্যাগ।
👉🏼পেট ব্যথা: পেটের চারপাশে ব্যথা বা ক্র্যাম্প।
👉🏼বমি: কখনও কখনও বমির অনুভূতি বা বমি।
👉🏼জলশূন্যতা: পানিশূন্যতা, যার ফলে শিশু দুর্বল বা অবসন্ন অনুভব করতে পারে।
👉🏼জ্বর: কিছু ক্ষেত্রে হালকা জ্বর থাকতে পারে।
➡️কারণসমূহ:
AWD সাধারণত ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া বা প্যারাসাইটের কারণে হয়। প্রধান কারণগুলি হলো:
👉🏼রোটাভাইরাস: শিশুদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ ভাইরাল কারণ।
👉🏼ই-কোলাই: খাবার বা পানির মাধ্যমে ছড়াতে পারে।
👉🏼সালমোনেলা: দূষিত খাবার বা পানির মাধ্যমে।
👉🏼শিগেলা: সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে।
➡️প্রতিরোধ:
👉🏼স্বাস্থ্যকর অভ্যাস: নিয়মিত হাত ধোয়া এবং বিশুদ্ধ পানি পান করা।
👉🏼টিকা: রোটাভাইরাস টিকা অনেক ক্ষেত্রেই AWD এর ঝুঁকি কমাতে সহায়ক।
👉🏼নিরাপদ খাদ্য: পরিষ্কার ও সঠিকভাবে রান্না করা খাবার খাওয়া।
➡️চিকিৎসা:
👉🏼ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন (ORS):
- পানিশূন্যতা প্রতিরোধে ORS অত্যন্ত কার্যকর।
- শিশুকে ছোট ছোট পরিমাণে বারবার ORS খাওয়ানো উচিত।
👉🏼জিঙ্ক সাপ্লিমেন্ট:
- ডায়রিয়ার সময় জিঙ্ক সাপ্লিমেন্ট দিলে রোগ নিরাময়ের গতি বাড়ে।
👉🏼প্রোবায়োটিক:
- কিছু ক্ষেত্রে প্রোবায়োটিক ডায়রিয়া কমাতে সহায়ক হতে পারে।
Dr. Oli Ullah Fahad
👉🏼চিকিৎসকের পরামর্শ :
- দীর্ঘস্থায়ী বা গুরুতর ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।
➡️জরুরি লক্ষণ:
যদি শিশুর মধ্যে নিচের লক্ষণগুলি দেখা দেয়, তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত:
👉🏼অতিরিক্ত দুর্বলতা বা অবসন্নতা
👉🏼চোখের চারপাশে কালো দাগ
👉🏼অতিরিক্ত পিপাসা
👉🏼মলত্যাগে রক্ত
👉🏼প্রস্রাব কমে যাওয়া
➡️উপসংহার:
শিশুদের অ্যাকিউট ওয়াটারি ডায়রিয়া একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে, তবে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে এটি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। শিশুর স্বাস্থ্যের প্রতি নজর দেওয়া এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
👎শিশুদের ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম (IBS):
➡️ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম (IBS) কী?
ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম (IBS) হল একটি দীর্ঘস্থায়ী পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা, যা সাধারণত পেটে ব্যথা এবং অন্ত্রের অভ্যাসের পরিবর্তন (যেমন, ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য) দ্বারা চিহ্নিত। যদিও এটি প্রায়ই প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে দেখা যায়, শিশুদের মধ্যেও এই সমস্যা হতে পারে।
➡️শিশুদের মধ্যে IBS এর লক্ষণ:
শিশুদের মধ্যে IBS এর লক্ষণগুলি বিভিন্ন হতে পারে, তবে সাধারণত নিম্নলিখিতগুলির মধ্যে কিছু লক্ষণ দেখা যেতে পারে:
👉পেটে ব্যথা: পেটের বিভিন্ন স্থানে ব্যথা হতে পারে, যা সাধারণত খাওয়ার পরে বাড়তে পারে।
👉অন্ত্রের অভ্যাসের পরিবর্তন: বারবার ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য।
👉গ্যাস এবং ফুলাভাব: অতিরিক্ত গ্যাস এবং পেট ফুলে যাওয়ার অনুভূতি।
👉অপর্যাপ্ত মলত্যাগের অনুভূতি: মলত্যাগের পরেও সম্পূর্ণ পরিপূর্ণতার অভাব।
➡️কারণসমূহ:
শিশুদের মধ্যে IBS এর সঠিক কারণ এখনও সম্পূর্ণরূপে বোঝা যায়নি। তবে নিম্নলিখিত বিষয়গুলি এই সমস্যা বাড়াতে পারে:
👉পরিবারিক ইতিহাস: পরিবারে IBS এর ইতিহাস থাকলে শিশুরাও ঝুঁকিতে থাকতে পারে।
👉মানসিক চাপ: মানসিক চাপ বা উদ্বেগ IBS এর লক্ষণগুলোকে বাড়িয়ে দিতে পারে।
👉অতিরিক্ত খাদ্য সংবেদনশীলতা: কিছু খাবারের প্রতি অতিরিক্ত সংবেদনশীলতা।
➡️IBS নির্ণয়:
IBS নির্ণয়ের জন্য কোনো নির্দিষ্ট পরীক্ষা নেই। চিকিৎসক সাধারণত উপসর্গ এবং চিকিৎসার ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে নির্ণয় করেন। কিছু ক্ষেত্রে, অন্যান্য গুরুতর কারণগুলো বাদ দেওয়ার জন্য রক্ত পরীক্ষা বা অন্ত্রের স্ক্যানের প্রয়োজন হতে পারে।
➡️ব্যবস্থাপনা ও চিকিৎসা:
👉খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন:
- ফাইবারযুক্ত খাবার বৃদ্ধি করা।
- দুধ বা গ্লুটেনজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলা।
👉মেডিকেশন:
- চিকিৎসক বিভিন্ন ঔষধ প্রেসক্রাইব করতে পারেন, যেমন অ্যান্টিস্পাসমোডিক বা প্রোবায়োটিক।
👉মানসিক সমর্থন:
- মানসিক চাপ কমানোর জন্য পরামর্শ থেরাপি।
👉জীবনধারার পরিবর্তন:
- নিয়মিত ব্যায়াম এবং পর্যাপ্ত ঘুম।
➡️শেষ কথা:
শিশুদের মধ্যে IBS মোকাবিলার জন্য বাবা-মায়ের সচেতনতা ও ধৈর্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। উপযুক্ত চিকিৎসা ও সঠিক জীবনযাপনের মাধ্যমে এই অবস্থার উন্নতি করা সম্ভব। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসরণ এবং শিশুদের মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের প্রতি মনোযোগ দেওয়া জরুরি।
Dr. Oli Ullah Fahad
#অ্যাপথাস আলসার(Aphthous ulcers)
---
➡️অ্যাপথাস আলসার: কারণ, লক্ষণ এবং চিকিৎসা
অ্যাপথাস আলসার বা মুখের ঘা হলো মুখের অভ্যন্তরে ছোট, বেদনাদায়ক ক্ষত। এগুলো সাধারণত ঠোঁট, গাল, জিহ্বা, বা তালুর ভেতরে দেখা যায়। যদিও এগুলো ক্ষতিকর নয়, তবে অনেক অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে।
➡️ কারণসমূহ
অ্যাপথাস আলসারের সঠিক কারণ পুরোপুরি জানা যায়নি, তবে কিছু সম্ভাব্য কারণের মধ্যে রয়েছে:
👉স্ট্রেস: মানসিক চাপ ও উদ্বেগের কারণে হতে পারে।
👉পুষ্টির অভাব: ভিটামিন বি-১২, জিঙ্ক, ফলিক অ্যাসিড বা আয়রনের ঘাটতি।
👉আলর্জি: খাবারের অ্যালার্জি বা সংবেদনশীলতা।
👉মুখের আঘাত:দাঁত দিয়ে কামড়ানো বা শক্ত ব্রাশ ব্যবহার।
👉হরমোনের পরিবর্তন: মাসিক চক্রের সময় হরমোন পরিবর্তন।
👉জেনেটিক ফ্যাক্টর:পরিবারের অন্য সদস্যদের মধ্যে থাকলে।
➡️লক্ষণসমূহ
অ্যাপথাস আলসারের কিছু সাধারণ লক্ষণ হলো:
👉ছোট, গোলাকার বা ডিম্বাকৃতির ক্ষত
👉ক্ষতের প্রান্ত লাল এবং মাঝে সাদা বা হলুদ রঙের
👉ব্যথা ও জ্বালা
👉ক্ষতস্থানের চারপাশে ফোলাভাব
➡️চিকিৎসা
অ্যাপথাস আলসার সাধারণত কিছুদিনের মধ্যে নিজে থেকেই সেরে যায়। তবে ব্যথা ও অস্বস্তি কমানোর জন্য কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা যেতে পারে:
👉মাউথওয়াশ: অ্যান্টিসেপটিক মাউথওয়াশ ব্যবহার করলে সংক্রমণ প্রতিরোধে সহায়তা করে।
👉ওষুধ: ব্যথা কমানোর জন্য টপিক্যাল জেল বা ক্রিম।
👉বাড়িতে তৈরি লবণপানি গার্গল: লবণ ও পানি মিশিয়ে কুলি করলে আরাম পাওয়া যায়।
👉ভাল পুষ্টিকর খাদ্য: ভিটামিন বি-১২, আয়রন, ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া।
👉স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট: মানসিক চাপ কমানোর চেষ্টা করুন।
👉মৃদু দাঁত ব্রাশ ব্যবহার: মুখের ভেতর আঘাত এড়াতে।
➡️কখন ডাক্তার দেখাবেন
-আলসার যদি বড় হয় বা অনেক দিন ধরে না সারে
- খুব বেশি ব্যথা হলে
- বারবার আলসার দেখা দিলে
- মুখের অন্য স্থানে সংক্রমণ বা জ্বর দেখা দিলে
➡️ উপসংহার
অ্যাপথাস আলসার সাধারণত ক্ষতিকর নয়, তবে ব্যথা ও অস্বস্তি সৃষ্টি করতে পারে। পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ ও মুখের যত্নের মাধ্যমে এগুলো প্রতিরোধ করা সম্ভব। যদি সমস্যা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত।
Dr. Oli Ullah Fahad
HFMD (Hand-foot-and-mouth disease/ হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ)
➡️এটি মূলত একটি ভাইরসাবাহিত ব্যাধি, যা মূলত কক্সস্যাকিভাইরাস (coxsackievirus ) নামে একটি গোত্রের ভাইরাস দ্বারা হয়ে থাকে। শিশু থেকে শুরু করে বয়স্ক- সবারই হতে পারে। তবে সাধারণত দশ বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায়। প্রাকৃতিকভাবে প্রতি দু-তিন বছর পর পর এই রোগ মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। তখন একইসাথে অনেক শিশু আক্রান্ত হয়।
পাঁচ বছরের নিচে বাচ্চাদের জ্বর হবার অন্যতম কারণ এইচএফএমডি। শিশুদের সবচেয়ে বেশি হওয়া সংক্রামক রোগের তালিকাতেও এর স্থান উপরের দিকে। আক্রান্ত শিশুর সংস্পর্শ থেকে দ্রুত তার আশেপাশে ছড়িয়ে যায় রোগের ভাইরাস।
➡️লক্ষণ
👉জ্বরের সঙ্গে গলাব্যথা,
👉শরীরে নানা জায়গায় পানিভর্তি ফুসকুড়ি,
👉মুখের ভেতরে ক্ষত,
👉মুখ দিয়ে ক্রমাগত লালা নিঃসরণ,
খাবারে অরুচি ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়।
হাত, পা ও জিহ্বাতে সাধারণত ফুসকুড়ি দেখা দেয় তবে উরু অথবা নিতম্বেও হতে পারে।
ত্বকের ফোস্কা বা ফুসকুড়ি অনেকটা জলবসন্তের মতো। 'ফুট অ্যান্ড মাউথ' নামে গবাদি পশুর একটি অসুখ রয়েছে যার সঙ্গে এটির কোনো সম্পর্ক নেই।
মুখে ঘায়ের কারণে খেতে কষ্ট হতে পারে রোগীর। ফুসকুড়ি ছড়িয়ে পড়তে পারে শরীরের অন্যান্য অংশেও। যাদের বয়স পাঁচ বছরের কম, তাদের ক্ষেত্রে উপসর্গের প্রকোপ বেশি হতে পারে।
➡️কীভাবে ছড়ায়
আক্রান্ত ব্যক্তির ফোস্কা থেকে নির্গত রস, হাঁচি কাশি, ব্যবহৃত পোশাক এবং স্পর্শ করা যেকোনো জিনিস, এমনকি মলের মাধ্যমেও এটি ছড়ায়।জনসমাগম যেসব জায়গায় বেশি, সেখান থেকেই এই রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি বেশি।
➡️চিকিৎসা
কোনো নির্দিষ্ট ওষুধ নেই এই রোগের। মূল চিকিৎসা উপসর্গভিত্তিক। জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল দেয়া যেতে পারে, তবে কোন ধরনের (সিরাপ, ট্যাবলেট, সাপোজিটরি) এবং কতটুকু দিতে হবে সেটা চিকিৎসকের থেকে জেনে নেয়াই ভালো। মুখে ঘা থাকলে বাচ্চাকে তরল বা নরম খাবার দেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়। ফলের রস বা এসিডিক কোনো পানীয় না দেয়াই ভালো।
বাচ্চার যাতে পানিশূন্যতা না হয় সেদিকেও দৃষ্টি রাখতে হবে, কারণ মুখে ঘা হলে অনেক সময় তারা পানিও খেতে চায় না। আতঙ্কিত হবার কিছু নেই, কারণ ৭-১০ দিন পর রোগী সুস্থ হয়ে ওঠে, অবশ্য ফুসকুড়ি সম্পূর্ণ মিলিয়ে যেতে হয়তো আরো কয়েকদিন লাগতে পারে।
➡️সাবধানতা :
যেহেতু সংক্রামক রোগ, তাই বাইরে গেলে রোগীর থেকে সহপাঠী, খেলার সাথী এদের দেহেও ভাইরাস ছড়াতে পারে। তাই আক্রান্তদের আলাদা করে রাখতে হবে। শিশুকে অবশ্যই বাসায় রাখতে হবে। স্কুলপড়ুয়া হলে যতদিন সুস্থ না হয়ে উঠছে, ততদিন ছুটি নিয়ে রাখা জরুরি। আরেকটি বিষয় মাথায় রাখা দরকার- বাসায় গর্ভবতী নারী থাকলে তাকে অবশ্যই রোগীর থেকে দূরে রাখতে হবে, কারণ গর্ভাবস্থায় এই ভাইরাসের সংক্রমণ হলে নানা জটিলতার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
➡️কিছু কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য দ্রুত চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করা দরকার। বিশেষ করে বাচ্চার বয়স ছয় মাসের কম হলে। দশদিন পরেও যদি অবস্থার উন্নতি না হয়, যদি শিশু নির্জীব হয়ে পড়ে এবং সাড়া না দেয়, বাচ্চার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি ভিন্ন কোনো কারণে কম থাকে, উপসর্গের প্রকোপ যদি মারাত্মক আকার ধারণ করে ইত্যাদি কারণে।
Dr. Oli Ullah Fahad
মায়ের বুকের দুধ কম হওয়ার কারণ ও বৃদ্ধির উপায়:
➡️বুকের দুধ কি আসলেই কম? বাচ্চা কি আসলেই দুধ কম পাচ্ছে?
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নবজাতকের কান্নাকে শুধুমাত্র ক্ষুধার জন্য কান্না বলে ধরে নেয়া হয়। এটা কিন্তু সত্য না। নবজাতকের যেকোন অস্বস্তি, কষ্ট হলেই সে কান্না করে। পেটে ব্যথা, ভেজা কাপড়, ঠান্ডা লাগা ইত্যাদি যেকোন ক্ষেত্রেই কিন্তু নবজাতক কান্না করে। নবজাতকের চামড়া খুবই স্পর্শকাতর হওয়া কাপড়ের ঘষা লাগার কারণেও কান্না করতে পারে। এমনকি শুধুমাত্র কোলে উঠার জন্যও বাচ্চা কান্না করে। কাজেই, বাচ্চা কান্না করলে শুধু খাওয়ার বিষয় না অন্যদিকগুলো নিয়েও চিন্তা করতে হবে।
তবে, কিছু ক্ষেত্রে আসলেই বাচ্চা পর্যাপ্ত দুধ নাও পেতে পারে। সেগুলোকে চিনতে হবে। এবং কোন সমস্যা থাকলে সমাধান করতে হবে। নিচের লক্ষণগুলো আছে কিনা দেখুন-
১। বাচ্চা সারাদিন কমপক্ষে ৬-১২ বার প্রস্রাব করে কিনা। যদি না করে তাহলে বাচ্চা হয়ত পরিমান মত দুধ পাচ্ছে না। তবে, খেয়াল রাখতে হবে যে জন্মের পর প্রথম দুইদিন নবজাতক প্রস্রাব নাও করতে পারে। এটা স্বাভাবিক।
২। বাচ্চার ওজন বাড়ছে কিনা। জন্মের পর প্রথম ৭ দিন বাচ্চার ওজন কমতে থাকে। তবে, এর পর থেকে ক্রমাগত ওজন বাড়ার কথা। যদি না বাড়ে তাহলে হয়তো পর্যাপ্ত দুধ পাচ্ছে না।
৩। বাচ্চা বেশি কান্না করে। ঠিকঠাক দুধ খায় এবং শান্ত হয়। কিন্তু কিছুক্ষণ পর আবার কান্না শুরু করে। অনেক ক্ষেত্রে মায়েরা একবার খাওয়ানোর সময় দুইস্তন থেকে অল্প অল্প করে দুধ খাওয়ান। এর ফলে বাচ্চার পাওয়া দুধের পরিমাণ ঠিক থাকলেও দুই স্তন থেকেই সামনের দিকের অপেক্ষাকৃত পাতলা দুধ (foremilk) পায়। এবং পিছনের দিকের ঘন দুধ (hindmilk) পায় না। ফলে, কিছুক্ষণ পরেই আবার বাচ্চার ক্ষুধা লেগে যায় এবং কান্নাকাটি শুরু করে।
এ লক্ষণগুলো থাকলে বাচ্চা দুধ পরিমাণমত পাচ্ছে না ধরে নেয়া যায়। প্রশ্ন আসে যে কেন বাচ্চা যথেষ্ট পরিমাণে বুকের দুধ পাচ্ছে না বা কেন মায়ের বুকে দুধ যথেষ্ট পরিমাণে তৈরি হচ্ছে না। এজন্য একটু ভিতরের কথা জানলে সুবিধা হবে।
➡️মায়ের বুকে দুধ কিভাবে তৈরি এবং নিঃসরিত হয়?
শিশু যখন মায়ের স্তনের বোটায় দুধ খাওয়ার সময় চুষে তখন মায়ের ব্রেইন থেকে দুইটি হরমোন (রক্তে থাকা একধরণের কেমিক্যাল) নিঃসরিত হয়। এর মধ্যে একটা প্রোল্যাকটিন (prolactin) এবং অন্যটি অক্সিটোসিন (oxytocin) ।
প্রোল্যাকটিন মায়ের স্তনে দুধ তৈরি করতে সহায়তা করে। অর্থাৎ যত বেশি প্রোল্যাকটিন নিঃসরিত হবে তত বেশি বুকের দুধ তৈরি হবে।
অন্যদিকে, অক্সিটোসিনের কাজ হলো দুধ স্তন থেকে বের করা। অর্থাৎ বাচ্চা যখন বুকে মুখ দেয় এবং চুষে তখন দুধ বের হবে। সোজা ভাষায় অক্সিটোসিন বেশি নিঃসরিত হলে স্তনে আগে থেকে তৈরি থাকা দুধ বেশি বেশি বের হয়ে আসবে।
👉প্রোল্যাকটিন (Prolactin)
প্রোল্যাকটিন অ্যালভিওলাই বা দুধ কোষের উপর কাজ করে দুধ তৈরি করে,
প্রোল্যাকটিনের জন্য মা আরাম বোধ করেন এবং তার ঘুম ভালো হয়,
প্রসবের পর প্রথম ২ ঘন্টা রক্তে প্রোল্যাকটিন সবচেয়ে বেশি থাকে ফলে এই সময় শিশু দুধ পান করলে দুধের তৈরি হওয়ার মাত্রা আরো বেড়ে যায়,
শিশু যখন মায়ের বুকের দুধ ঘন ঘন পান করে, প্রোল্যাকটিন নিঃসরণ বেড়ে যায় এবং বুকের দুধের পরিমান বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে, বুকের দুধ কম খাওয়ালে প্রোল্যাকটিন নিঃসরণ কমে যায় এবং দুধের পরিমাণও হ্রাস পায়।
👉অক্সিটোসিন (Oxytocin)
অক্সিটোসিন(oxytocin) দুধকোষ (alveoli)এর চারপাশে থাকা মাংসপেশি কোষ (myoepithelial cells)এর উপর কাজ করে। অক্সিটোসিন নিঃসরণের ফলে মাংসপেশি সংকুচিত হয় এবং দুধকোষ থেকে দুধ বের হয়ে আসে।
অক্সিটোসিন তৈরি হয়ে থাকা দুধ বের করে ফলে শিশু খেতে পারে। মা যখন শিশুকে খাওয়ানোর ইচ্ছা নিয়ে তার কাছে যায় তখন থেকেই অক্সিটোসিন নিঃসরণ বেড়ে যায়। শিশু চোষার সময় তা আরো বেড়ে যায় (let down reflex or milk ejection reflex)।
ধীরে ধীরে মায়ের শারীরিক ও মানসিক অনুভুতির সাথেও জড়িত হয়ে যায়। এমন কি শিশুকে স্পর্শ করা, শিশুর কান্না শোনা, এমনকি শিশুর কথা কল্পনা করলেও অক্সিটোসিন নিঃসরণ হয় এবং দুধ বের হয়ে আসা শুরু হয়।
➡️কি কি কারণে মায়ের বুকের দুধ কমে যায়?
👉দেরিতে বুকের দুধ খাওয়ানো শুরু করা।
বুকের দুধের আগেই শিশুকে অন্যকিছু খাওয়ানো। এতে বাচ্চার ক্ষুধা কমে যেতে পারে এবং বুকের দুধ খাওয়ানো শুরু করতে সমস্যা হতে পারে।
👉মায়ের মধ্যে সন্দেহ, দ্বিধাধন্দ থাকা। বিশেষ করে নতুন মায়েদের অনেক সময়ই মনে হয় যে সে বাচ্চাকে সঠিকভাবে দুধ খাওয়াতে পারবে না। ফলে, প্রোল্যাকটিন ও অক্সিটোসিন হরমোন সঠিকভাবে বা পরিমাণমত তৈরি নাও হতে পারে। এবং পর্যাপ্ত দুধ তৈরি ও নিঃসরণ নাও হতে পারে।
👉শারীরিক ব্যথা বেদনা বা মানসিক অস্থিরতা থাকলে মায়ের রক্তে অক্সিটোসিন নিঃসরণ কমে যায়। এ কারণে পর্যাপ্ত ব্যথানাশক সেবন করা ও মাকে মানসিক সমর্থণ দেয়া জরুরি।
➡️পজিশন ও এটাচমেন্ট সম্পর্কে জানতে এবং শিশুকে মায়ের দুধ কিভাবে খাওয়াবেন?
👉যতদ্রুত সম্ভব নবজাতককে বুকের দুধ দেয়া শুরু করা। কমপক্ষে ১ ঘন্টার মধ্যে বুকের দুধ খাওয়ানো শুরু করতে হবে।
👉নবজাতক ও তার মাকে একই রুমে এবং সম্ভব হলে একই বিছানায় রাখতে হবে। এর ফলে মা নবজাতকের স্পর্শ পাবে, গন্ধ পাবে, শব্দ শুনতে পাবে এবং দুধ বেশি বেশি তৈরি হবে। এবং বেশি বেশি নিঃসরণও হবে।
রাতে প্রোল্যাকটিন নিঃসরণ বেশি হয়। এ কারণে শিশুকে রাতের বেলায় ঘন ঘন বুকের দুধ খাওয়াতে হবে। দিনেরাতে যখনই বাচ্চাকে চাহিদা মোতাবেক খাওয়াতে হবে।
👉শিশুকে ঘন ঘন বুকের দুধ খাওয়াতে হবে এবং খাওয়ানো কখন বন্ধ করতে হবে সেটা আপনার শিশুর ওপর ছেড়ে দিতে হবে। শিশু যখন বুকের দুধ পান করে তখন আপনার শরীর থেকে হরমোন নিঃসৃত হয়। এই হরমোন দুধ উৎপাদনের ওপর প্রভাব ফেলে।তাই যত বেশি বুকের দুধ খাওয়াবেন তত বেশি বুকের দুধ তৈরি হবে। শিশুকে দিনে ১২থেকে ১৮ বার বুকের দুধ পান করান।
👉 নবজাতককে কোলে নিয়ে বসে বসে দুধ খাওয়াতে হবে। এ সময় মোবাইল /টেলিভিশন দেখা যাবে না।
👉দুটি স্তন থেকেই সমানভাবে শিশুকে দুধ পান করাতে হবে। প্রথম স্তন থেকে শিশুকে দুধ পান করান এবং সেই পর্যন্তই করান যতক্ষণ না পর্যন্তু শিশু পান করা বন্ধ করে দেয়। এরপর দ্বীতিয় স্তনে দুধ পান করান। শিশুকে একপাশের স্তন থেকে একবারে সম্পুর্ণ খাওয়াতে হবে। ফলে, স্তন (অর্থাৎ দুধকোষ বা alveoli) খালি হবে। দুধকোষ খালি হলে প্রোল্যাকটিন নিঃসরণ বাড়ে এবং বেশি বেশি দুধ তৈরি হয়।একই সঙ্গে উভয় স্তন থেকে দুধ পাম্প করলে, দুধের উৎপাদন বাড়ে এবং দুধে চর্বির পরিমাণও বেশি হওয়ার সম্ভবনা থাকে।
👉মায়ের পুষ্টি ঠিক থাকতে হবে। যদি মা অপুষ্টির শিকার হন তাহলে অনেক ক্ষেত্রে দুধের পরিমাণ কমে যেতে পারে। একারণে প্রয়োজন ক্ষেত্রে মাকে চিকিৎসা করাতে হবে। একই সাথে মাকে পুষ্টিকর খাবার (শর্করা, আমিষ, ভিটামিন, মিনারেলইত্যাদি সমৃদ্ধ) খেতে হবে। সাধারণভাবে বলা যায় গড়পড়তা মানুষের ৩ বেলার বিপরীতে দুগ্ধদায়ী মাকে ৪-৫ বেলা খেতে হবে ( প্রতিদিন ৫০০ ক্যালরি অতিরিক্ত খেতে হবে)।
দুধদানকারী মাকে ফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম খেতে হবে। প্রসবের ৪২ দিন পর ভিটামিন এ (২০০,০০০ ইউনিট) এবং ০৩ মাস পর থেকে আয়রণ ট্যাবলেট খেতে হবে।
👉বুকের দুধ বা ব্রেস্ট মিল্কের উৎপাদন বাড়াতে খাবারের তালিকায় টাটকা শাক-সবজি, লাউ, পিঁয়াজ, মুরগি, ডিম, দুধ, রসুন, মিট স্যুপ রাখুন। এছাড়াও মরশুমি ফল ও ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার যেমন স্যালমন, ফ্ল্যাক্সবীজ স্তন্যদানকারী নারীদের জন্য ভালো। এছাড়াও, বুকের দুধের পরিমাণ বাড়ানোর জন্য মেথি, ওটমিল, কালোজিরা,মৌরি বেশ কার্যকরী।একই সাথে কিছু ঔষধও সহায়তা করতে পারে।
👉মায়ের দুধের প্রায় ৯০ শতাংশই পানি। তাই শিশুকে দুধ পান করার সময় শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা খুব জরুরি। এই সময় প্রতিদিন ৮ থেকে ১২ গ্লাস পানি পান করুন। এছাড়াও, অন্যান্য তরল খাবার যেমন, দুধ, জুস, সুপ পান করতে পারেন। শিশুকে দুধ পান করানোর আগে এক গ্লাস পানি পান করুন।
Dr. Oli Ullah Fahad
Click here to claim your Sponsored Listing.
Videos (show all)
Category
Telephone
Website
Address
Cumilla
মুন স্পেশালাইজড হাসপাতাল, রুম নংঃ ৬০৪, ঝাউতলা
Cumilla, 3500
ব্রেস্ট এন্ড কোলোরেক্টাল সার্জন কনসালটেন্ট সার্জন
Cumilla
I shall speak in favour of religion "Islam", "Islam & Humanity", "Common Ailments & Management".
Monwara Mansion, Nangalkot Bazar, Nangalkot
Cumilla
• হামদর্দের যেকোন প্রোডাক্ট হোম ডেলি?
Moon Hospital, Shahid Khawaja Nizamuddin Road, Jhawtala
Cumilla, 3500
kidney is one of the most important organ.its better to prevent kidney diseases than to treat.so love kidney,live your life happily