Dr. Ramit Azad
Taught at EWU (Physics) and a awesome man...
দুটি মন আর, নেই দু'জনার (পর্ব -১৫)
----------------------------------- রমিত আজাদ
আমার গানের বুলবুলি আজ গাইলো আমার মনে,
আপনা থেকেই বসলো এসে, আমার কুসুম বনে।
সন্ধ্যামণি সুর ছড়ালো কুঞ্জে গুঞ্জে ধেয়ে,
সেই কুসুমের সুবাস মাখি, ব্যকুল আকুল হয়ে!
ওরে আমার সোনার পাখি, সকাল-সন্ধ্যা ডাকাডাকি,
কত কেঁদে রাঙিয়ে আঁখি, অবশেষে পেলাম নাকি!
শরাব সে তো তুচ্ছ পেয়, অধর সুধাই অনুমেয়,
আমার প্রিয়ার ওষ্ঠসুরাই, শ্রেষ্ঠ শরাব জেনে নিও।
সেই শরাবে আমি আজি, পিয়ে হলাম মত্তরাজি।
জলসা সে তো রঙমহলার, বাদশা নবাব রাজ-ধিরাজার।
আমার জলসা তার নয়নায়, লীলান্বিত সোহাগ ছোঁয়ায়,
বাহুপাশে জড়িয়ে তাহায়, আলিঙ্গনের ফুলশয্যায়।
পালঙ্কে সে নাইবা হলো, নাইবা হলো তারার রাতে,
তাও তো সে হাত জড়িয়ে হাতে, চুম দিয়েছি নয়নপাতে।
সেই চুমেরই ঘুম আবেশে, মুঁদলো নয়ন কামোচ্ছাসে;
কেমন করে এগিয়ে দিলো, ওষ্ঠ দুটি সোহাগ আশে।
আমি মধু পিয়েই ভাসি, সাঁঝ রাঙানো নীলাম্বরে।
ভীরু-প্রণয় আকুল ঝরে, মত্ত প্রেমের ঘুমঘোরে।
এত জ্বালা নিয়ে বুকে, ছিলো কি সে দূর অতীতে?
আজ সে জ্বালার হলো ইতি, প্রিয়তমর অধীর হাতে।
(চলবে)
----------------------------------------------------
রচনাতারিখ: ১৮ই ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ সাল
রচনাসময়: রাত ০২টা ৫০ মিনিট
পূর্বের পর্বের লিংক:
https://www.facebook.com/ramit.azad/posts/pfbid0LF7CwpR844EQyjpMm6sBTwndBcXBWGJdfApjwqCJWxyCrmBk9851qqpm4yv53EWol
কবিতাটির নাম চিত্রা সিং-এর বিখ্যাত গান থেকে নেয়া।
Two Hearts are, No More Belonging to Them (Episode-15)
--------------------------------------------------------- Ramit Azad
দুটি মন আর, নেই দু'জনার (পর্ব -১৫)
----------------------------------- রমিত আজাদ
আমার গানের বুলবুলি আজ গাইলো আমার মনে,
আপনা থেকেই বসলো এসে, আমার কুসুম বনে।
সন্ধ্যামণি সুর ছড়ালো কুঞ্জে গুঞ্জে ধেয়ে,
সেই কুসুমের সুবাস মাখি, ব্যকুল আকুল হয়ে!
ওরে আমার সোনার পাখি, সকাল-সন্ধ্যা ডাকাডাকি,
কত কেঁদে রাঙিয়ে আঁখি, অবশেষে পেলাম নাকি!
শরাব সে তো তুচ্ছ পেয়, অধর সুধাই অনুমেয়,
আমার প্রিয়ার ওষ্ঠসুরাই, শ্রেষ্ঠ শরাব জেনে নিও।
সেই শরাবে আমি আজি, পিয়ে হলাম মত্তরাজি।
জলসা সে তো রঙমহলার, বাদশা নবাব রাজ-ধিরাজার।
আমার জলসা তার নয়নায়, লীলান্বিত সোহাগ ছোঁয়ায়,
বাহুপাশে জড়িয়ে তাহায়, আলিঙ্গনের ফুলশয্যায়।
পালঙ্কে সে নাইবা হলো, নাইবা হলো তারার রাতে,
তাও তো সে হাত জড়িয়ে হাতে, চুম দিয়েছি নয়নপাতে।
সেই চুমেরই ঘুম আবেশে, মুঁদলো নয়ন কাম পরশে;
কেমন করে এগিয়ে দিলো, ওষ্ঠ দুটি সোহাগ আশে।
আমি মধু পিয়েই ভাসি, সাঁঝ রাঙানো নীলাম্বরে।
ভীরু-প্রণয় আকুল ঝরে, মনোহরো ঘুমঘোরে।
এত জ্বালা নিয়ে বুকে, ছিলো কি সে দূর অতীতে?
আজ সে জ্বালার হলো ইতি, প্রিয়তমর অধীর হাতে।
(চলবে)
----------------------------------------------------
রচনাতারিখ: ১৮ই ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ সাল
রচনাসময়: রাত ০২টা ৫০ মিনিট
পূর্বের পর্বের লিংক:
https://www.facebook.com/ramit.azad/posts/pfbid0LF7CwpR844EQyjpMm6sBTwndBcXBWGJdfApjwqCJWxyCrmBk9851qqpm4yv53EWol
কবিতাটির নাম চিত্রা সিং-এর বিখ্যাত গান থেকে নেয়া।
Two Hearts are, No More Belonging to Them (Episode-15)
---------------------------------------------------------- Ramit Azad
দুটি মন আর, নেই দু'জনার (পর্ব -১৪)
----------------------------------- রমিত আজাদ
প্রেমিকা: কি হলো যে, চুপ কটা দিন, কোন খবর নাই?
প্রেমিক: রাগ করো না, প্রেম আমারি, ব্যস্ত ভীষণ তাই।
প্রেমিকা: আমার বেলায় ব্যস্ত হলে, তোমার জীবন চলবে?
প্রেমিক: ব্যস্ত থাকি কাজ নিয়ে গো, তোমায় কি আর ভুলবে?
প্রেমিকা: কি মাস এটা, আছে মনে? ঠাহর করতে পারো?
প্রেমিক: ফেব্রুয়ারী মাস তো এটা, প্রশ্ন কেমনতরো?
প্রেমিকা: সেই কথা না, এই মাসে যে অনেক কটা দিন।
এই ধরোনা গোলাপ দিবস, প্রমিজ দিবস, হাগ ডে, কিস নিন।
প্রেমিক: হা! হা! হা! তাই তো, তাই তো, ভরপুর এই মাসটা,
ভালো ভাষা, ভালোবাসায়, ফাগুন ভাসার চেষ্টা!
প্রেমিকা: এখন শুনি আমায় নিয়ে, প্ল্যান কি তোমার বলো?
প্রেমিক: আর কিছুতে নাই বা পারি, ভ্যালেন্টাইনে চলো।
প্রেমিকা: ভালোবাসার দিবস আমার ভীষণ ভালো লাগে,
এতকাল তো কেউ ছিলো না, তাই লাগে নি কাজে!
প্রেমিক: এখন তোমার আমি আছি, ফাগুন কথা কবে।
ফেব্রুয়ারীর চৌদ্দ তারিখ, ভালোবাসা হবে।
ফেব্রুয়ারীর এগারোতে তারা দুজন মেলে,
চায়ের কাপের স্বাদের সাথে কত কথা বলে।
প্রেমিকা: ফাগুন দিনে কিন্তু আমি পড়বো নতুন শাড়ী।
প্রেমিক: বাসন্তি রঙ, জড়িয়ে তোমায় মানাবে যে ভারী!
প্রেমিকা: ভালোবাসার দিনে কিন্তু দেখা হওয়া চাই।
প্রেমিক: আমিও কি তোমার চাইতে, উদগ্রীব কম ভাই?
কিন্তু আমার কাজ যে আছে, ঐদিন নাই ছুটি।
প্রেমিকা: আকাশ ভেঙে পড়লো মাথায়, আনন্দ যায় টুটি!
এই না কত প্লান-প্রোগ্রাম, কত মধুর কল্পনা?
প্রেমিক: পেশা সে তো কর্ম বোঝে, প্রেমের তো নাই জল্পনা!
প্রেমিকা: তবে কি তায় বৃথা যাবে তোমার আমার ভ্যালেন্টাইন?
প্রেমিক: ওহ হো এবার পড়লো মনে, হুররা বলো, নতুন আইন।
প্রেমিকা: কি হয়েছে? বলো না ছাই, মনটা আমার ধৈর্যহীন।
প্রেমিক: ছুটি সেদিন, কাজ হবে না, করবো পালন ভ্যালেন্টিন।
প্রেমিকা: সকাল সকাল হতে পারে, তোমার আমার দেখা।
প্রেমিক: সন্ধ্যা তক বেড়িয়ে যাবো, দিলাম তোমায় কথা।
প্রেমিকা: দেখো আবার দেরী না হয়, তোমার ভুলো মন।
প্রেমিক: মন তো পড়ে তোমার কাছে, আছেই সর্বক্ষণ!
দিন গুণে যায়, তারা দু'জন, আসবে কবে ফোরটিন?
কত কি যে স্বপ্ন বুনে, করতে রঙিন ভ্যালেন্টিন।
শহর ছেড়ে হয়তো তারা যাবে অনেক দূরে,
যেথায় ময়ুর নাচবে ঘিরে, গাইবে কোকিল সুরে!
আগের রাতে প্রেমিক তারে, বলে টেলিফোনে,
"কি গো আমার নয়ন মণি, আছে কথা মনে?"
প্রেমিকা কয় হতাশ সুরে, "কাল তো আমার কাজ।
কর্মস্হলে মিলন মেলা, পড়েছে সাজ সাজ!"
প্রেমিক বলে, "এ কি কথা? কি শুনিলাম আজি?
নিজে থেকেই অফার দিয়ে করলে আমায় রাজি।
এখন বলছো ব্যস্ত তুমি দেখা হবে নাকো?
এমন করে পিছিয়ে গিয়ে, হতাশ করে থাকো?"
প্রেমিকা: কোথায় আমি পিছিয়ে গেলাম, রাজি আছি শিওর।
তবে সময় অল্প দিবো, গল্প হবে পিওর।
প্রেমিক: একটুতে কি ভরবে এ' মন, কানায় কানায় ভরছে যা?
এই কটা দিন স্বপ্ন কত বুনেছে এই মনটা বাহ্!
প্রেমিকা: সকাল সকাল এসো দুজন, করে ফেলি দেখা।
দুপুর নাগাদ কাজে যাবো, ওখানেও তো ঠ্যাকা!
প্রেমিক: কি আর করা, তাই হবেখন, অল্পটুকুই সই।
বৃথা যেতে দিনটা অমন, মোটেও রাজি নই।
সেজেগুজে তুমি থেকো, আসবো আমি ঠিক,
যেমন করে পালকি নিয়ে আসে যে প্রেমিক।
(চলবে)
----------------------------------------------------
রচনাতারিখ: ১৭ই ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ সাল
রচনাসময়: রাত ০১টা ০১ মিনিট
পূর্বের পর্বের লিংক:
https://www.facebook.com/ramit.azad/posts/pfbid02fbErvY93wLjShFHFXHnN3nJBBBkMMwd4peyinSaiKv5j1NPBERgA3CTDba2ABVHZl
কবিতাটির নাম চিত্রা সিং-এর বিখ্যাত গান থেকে নেয়া।
Two Hearts are, No More Belonging to Them (Episode-14)
----------------------------------------------------------- Ramit Azad
প্রকাশকদেরকে ধন্যবাদ।
প্রোপোজ ডে (পর্ব -২)
----------------------- রমিত আজাদ
ছেলেটির নাম ছিলো 'কাব্যিক'। আর নারীটির নাম ছিলো 'আক্সিনিয়া'। মহিলাটির সাথে ছেলেটির প্রথম যেদিন পরিচয় হয়েছিলো, ছেলেটার নাম উচ্চারণ করতে নারীটির একটু কষ্ট হয়েছিলো। আক্সিনিয়া বলেছিলো, "বেশ কঠিন নাম তো! উচ্চারণ করতে কষ্ট হয়! আচ্ছা নামটার কি কোন অর্থ আছে?"
কাব্যিক: হ্যাঁ, আছে। নামটার অর্থ পোয়েটিক।
আক্সিনিয়া: ও আচ্ছা। খুব সুন্দর নাম তো! অবশ্য তুমি দেখতেও পোয়েটিক-ই!
কাব্যিক: আমি দেখতে পোয়েটিক?
আক্সিনিয়া: হুম! একেবারে হিন্দি সিনেমার নায়ক 'রাজু'-দের মত।
তখন বেশিরভাগ হিন্দি সিনেমায় নায়কের নাম হতো 'রাজু'। তাই ইউক্রেণীয়রা এই নামটা ভালো রপ্ত করেছিলো।
কাব্যিক: এখন কি আপনি আমাকে 'রাজু' বলে ডাকতে চান?
আক্সিনিয়া: না থাক। কাব্যিক-ই ঠিক আছে। আমি প্রাকটিস করে নেব।
আক্সিনিয়ার সাথে কাব্যিক-এর পরিচয় ইয়েমেনের আলীর রুমে। ইয়েমেনের আলীর সাথে আবার পরিচয় স্বল্প দিনের। কাব্যিক বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ডরমিটরিতে আছে আড়াই বছর যাবৎ। মোটামুটি সবাইকেই সে চেনে। হঠাৎ একদিন আলজেরিয়ার বিল-এর রুমে নতুন একজনকে দেখলো। বিল অনেক পুরাতন বয়স্ক মানুষ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পিএইচডি করছেন ম্যাথমেটিক্স-এ। নতুন লোকটিকে দেখতে বাংলাদেশী বা ইন্ডিয়ান-এর মতন লাগে। শুকনা-শাকনা ও খাটো। গায়ের রঙ-ও শ্যামলা। আরবদের মতন উঁচু-লম্বা ও ফরসা নয় একেবারে। বিল যখন পরিচয় করিয়ে বললো যে সে আরব, তখন কাব্যিক একটু অবাকই হয়েছিলো। তারপর যখন শুনলো যে তিনি ইয়েমেন-এর তখন বুঝতে পারলো, হুম ইয়েমেনিদের অনেকে দেখতে বাঙালীদের মতনই হয়।
আলী: তুমি কি বাংলাদেশের?
কাব্যিক: হুম। আমি বাংলাদেশের।
আলী: তোমরা তাম্বুল খাও, ও তরকারীতে হলুদ দিয়ে রাঁধো তাই না?
কাব্যিক: তুমি তাম্বুল চিনে কি করে? আর হলুদও বা চিনলে কি করে?
আলী: হেয়ালী ভাবে হাসতে হাসতে বললো। অনেকগুলো বছর ধরে ওদের সাথে কাটাই তো, তাই।
কাব্যিক: কোথায় কাটাও? ইউক্রেইণে? এখানে আমি আগে তোমাকে দেখেছি বলে মনে পড়ে না?
আলী: আরে আমি এই দেশে অনেকদিন ছিলাম। আমার বিশুদ্ধ রুশ ভাষা শুনে বুঝতে পারছি না?
কাব্যিক: হুম, তাই তো। তোমার রুশ ভাষা তো স্বচ্ছ।
আলী: এই দেশেই মাস্টার ডিগ্রী সম্পন্ন করেছিলাম। তারপর নিজ দেশ, মানে ইয়েমেনে চলে যাই। সেখানে চাকুরী করেছিলাম কয়েক বৎসর। তারপর আবার চলে এলাম এখানে পিএইচডি করতে।
কাব্যিক এখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। পাশ করার পরে পিএইইচডি করার দারুণ ইচ্ছা তার। তাই পিএইচডি করা লোক দেখলে সে দারুণ সমীহ করে। তাই সে আলীকে তুমি থেকে আপনি বলা শুরু করলো।
আলী বললো, "আরে থাক থাক আপনি বলতে হবে না। বুঝলাম, তুমি বয়সে আমার ছোট। আর তোমাদের দেশের কালচার অনুযায়ী আমাকে আপনি বলারই কথা। তা আমরা যখন এই ডরমিটরিতে একসাথে থাকবো, বন্ধুর মতনই থাকি। আমাকে বড় ভাইয়ের মতন শ্রদ্ধা করে তুমি বলো তাহলেই হবে।"
কাব্যিক: আমাদের দেশের কালচার সম্পর্কে অনেক কিছুই জানেন দেখছি! কি করে জানলেন?
আলী: হে হে হে। তোমাদেরকে 'বাঙ্গালী' বলে না?
কাব্যিক: 'বাঙ্গালী' শব্দটাও আপনি জানেন দেখছি। এখানে তো এটা কেউ জানে না। আপনি কি করে জানলেন?
আলী: আসলে আমাদের দেশে মানে ইয়েমেনে অনেক বাঙ্গালী আছে। ওরা এখন আমাদের দেশেরই নাগরীক। তবে ওদের পূর্বপুরুষরা তোমার দেশ থেকেই আসা।
কাব্যিক: কি করে হয়েছিলো ওটা?
আলী: ইংরেজরা নিয়ে এসেছিলো। ইংরেজরা কিছুদিন আমাদের দেশের শাসক ছিলো। তখন তারা ইয়েমেনিদের চাইতে বাঙ্গালীদের ট্রাস্ট করতো বেশী। ঐ ইংরেজরাই তাদের সহযোগী হিসাবে বাঙ্গালীদেরকে নিয়ে এসেছিলো।
এরকম কথা কাব্যিক জীবনে প্রথম শুনলো। সে এতকাল জানতো যে, ব্রাহ্মণরা বরাবরই ইংরেজদে ল্যাসপেন্সার হিসাবে কাজ করতো। কিন্তু বাঙালীদের কথা শুনলো এই প্রথম। মনে মনে একটু অবাকই হলো। আবার মর্মাহতও হলো। বাঙ্গালীরা তো যুদ্ধংদেহী, স্বাধীনচেতা, বিদ্রোহী; ওরা কি করে ইংরেজদের ল্যাসপেন্সার হলো? ইতিহাসটা ঘেটে দেখতে হবে!
আলী: কাব্যিক। তুমি এই বিল্ডিং-এর কোন ফ্লোরে থাকো?
কাব্যিক: আমি পাঁচ তলায় থাকি।
আলী: ( অবাক হয়ে) আরে তাই নাকি? আমিও তো ঐ ফ্লোরেই রুম পেয়েছি। তা তোমার রূম নাম্বার কত?
কাব্যিক: ৮৮।
আলী: আমি তো কাছাকাছি রুমে থাকি। ৮৪ নম্বর রুম।
কাব্যিক: হুম চিনি ঐ রুম।
আলী: তাহলে সময় পেলে এসো আমার রুমে। দাওয়াত থাকলো।
কাব্যিক: ধন্যবাদ।
আলী: তুমি রান্না কেমন করো?
কাব্যিক: আমি ভালো রান্না করতে পারি।
আলী: তাহলে আমিও তোমার রুমে যাবো। তোমাদের দেশীয় খাবার খেতে।
কাব্যিক: আসবে অবশ্যই। দাওয়াত থাকলো।
আলী: অনেকদিন তোমাদের দেশীয় খাবার খাওয়া হয় না। বাড়ীতে তো রেগুলারই খেতাম।
কাব্যিক: তুমি আবারও আমাকে অবাক করছো। কেন যেন মনে হচ্ছে আমার দেশের মানুষদের সাথে তোমার কোন একটা গভীর সম্পর্ক আছে।
এবার আলী হাসতে হাসতে বললো, "হা, হা, হা। আমার স্ত্রী ইন্ডিয়ান।"
এবার কাব্যিক-ও অবাক হলো। বললো, "তোমার স্ত্রী ইন্ডিয়ান?"
আলী: হুম।
কাব্যিক: (বেশ আগ্রহ নিয়ে) ভাই বল তো বিষয়টা কি?
আলীর কথা ও হাসি আচরণের মধ্যে কাব্যিক শুরু থেকেই কেমন যেন একটা বন্ধন-বন্ধন, আত্মীয়-আত্মীয় ভাব লক্ষ্য করেছিলো। এবার সেই যোগসূত্রটি খুঁজে পেলো।
আলী: মেয়েটার বাবা-মা আমাদের দেশেই থাকে। একসময় ওর বাবা কোন একটা বড় চাকুরী নিয়ে ইয়েমেনে এসেছিলো। তারপর থেকে যায় সেখানেই। তবে ইন্ডিয়াতেও ওদের ঘর-বাড়ী আছে। যোগাযোগও আছে। আমার বাবার সাথে ওর বাবার বন্ধুত্ব ছিলো। ওদের মেয়েটিকে আমি ছোট, কিশোরী দেখেছিলাম। তারপর ইউক্রেণে লেখাপড়া শেষ করে যখন দেশে ফিরে যাই। তখন গিয়ে দেখি সেই মেয়ে পূর্ণ যৌবনা! অপরূপা এক রূপবতী!
কাব্যিক আলীর কথা শুনে একগাল হাসলো।
আলী বলে যেতে থাকলো, "তা আমার বাবা বললেন যে ওর সাথে আমার বিয়ে ঠিক করেছেন। ব্যাস ওকে বিয়ে করতে হলো আমাকে।"
কাব্যিক: ওরা মুসলমান?
আলী: মুসলমান তো বটেই। তা নইলে কি আর বিয়ে ঠিক হয়?
কাব্যিক: কি নাম তোমার স্ত্রী-র?
আলী: জাহানারা।
কাব্যিক: বাহ্! বেশ সুন্দর নাম তো!
আলী: ধন্যবাদ।
কাব্যিক: তা, তুমি যেভাবে বললে যে, বাবা-মা বিয়ে ঠিক করেছে তাই বিয়ে করলে। মেয়ে কি তোমার পছন্দ হয় নি?
আলী: কি আশ্চর্য্য! পছন্দ হবে না কেন? বললাম না, অপরূপা রূপবতী!
এবার কাব্যিক মজা করার জন্য বললো, "যখন তুমি ইয়েমেন ছেড়ে চলে আসো, তখন তো আর ও যৌবনবতী রূপবতী ছিলো না। ছিলো কিশোরী। তখন নিশ্চয়ই তুমি ওর দিকে নজর দাও নাই?"
আলী: না। তা দেই নাই। ওকে নিয়ে ঐ চিন্তা মাথাতেই আসে নাই তখন।
কাব্যিক: এই পাশ্চাত্য ফ্রী-মিক্সিং-এর দেশে এতগুলা বছর কাটালে। এখানে নিশ্চয়ই কারো না কারো সাথে প্রেম হয়েছিলো?
আলী এবার একগাল মিষ্টি হেসে বললো, "হুম তা তো হয়েছিলো-ই। এত সুন্দরী সুন্দরী মেয়ে এই দেশে। নিজেকে কি আর সংবরন করা যায়?"
কাব্যিক: তারপর নিজ দেশে গিয়ে বাবা-মার পছন্দ অনুযায়ী বিয়ে করলে।
আলী: রাইট। এটাই তো আমাদের দেশের ট্রেডিশন। তোমাদের দেশেও তো ঐ একই ট্রেডিশন, তাই নয় কি?
----------------------------
এই পরিচয়ের দুই একদিন পরে কাব্যিকের সাথে ফ্লোরের কিচেনে দেখা হয়েছিলো আলীর। আলী কাব্যিকের পাতিলের ঢাকনা তুলে দেখে বলেছিলো, "'হলদি' দিয়েছ তরকারীতে?" 'হলদি' শব্দটি স্পষ্ট বাংলায় উচ্চারণ করলো।
কাব্যিক বললো, "হুম। হলদি না দিয়ে তো আমরা তরকারী রাঁধি না। আসো আমার রুমে, একসাথে ডিনার করি।"
আলী: আজ থাক। আজ আমি রান্না করে ফেলেছি। আরেকদিন আসবো।
এরও দু'দিন পরে। কাব্যিক গেলো আলীর রুমে। কিন্তু রুমে ঢুকে একটু থতমত খেয়ে গেলো। সেই রুমে একজন ইউক্রেণীয় নারী বসা। তার সাথে একটা বাচ্চা মেয়ে। বাচ্চাটার চেহারা দেখে মনে হয় যে মিক্সড ম্যারেজের বাচ্চা। মহিলাকে দেখে মনে হলো যে, আশেপাশেই কোথাও থাকে, আলীর কাছে বেড়াতে এসেছে।
আলী: পরিচিত হও। এটা আক্সিনিয়া। আক্সিনিয়া, এটা কাব্যিক।
আক্সিনিয়া: তুমি কি বাংলাদেশের?
কাব্যিক: হ্যাঁ। আমি বাংলাদেশের।
আক্সিনিয়া: কোথায় থাকো এই ফ্লোরেই?
কাব্যিক: হুম। ৮৮ নাম্বার রুমে। কাছেই। এটা আপনার বাচ্চা?
আক্সিনিয়া: হুম। এটা আমার মেয়ে।
কাব্যিক: ওর বাবা কোথায়?
প্রশ্নটা করেই কাব্যিক থতমত খেয়ে গেলো। প্রশ্নটা করা উচিৎ হয় না। প্রশ্নটা যদি বিব্রতকর হয়!
হলোও তাই। আক্সিনিয়া হঠাৎ করেই গুটিয়ে গেলো।
তার হয়ে আলী জবাব দিলো, "মানে। মেয়েটার বাবা তো সিরিয়ান। তিনি এখন সিরিয়াতেই আছেন। মেয়ে আর মেয়ের মা ইউক্রেণেই থাকে।"
কাব্যিক বুঝতে পারলো যে, ডাল মে কুছ কালা হ্যায়!
ঘটনাটা সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ হতে পারে। তারপর রাত দশটার দিকে আলী নিজেই কাব্যিকের রুমে এলো। বললো, "চা দাও কাব্যিক। চা খাবো।"
কাব্যিক তার জন্য চা বানাতে বানাতে আলী নিজে থেকেই বললো, "মানে ঐ যে মেয়েটাকে দেখলে, মানে আক্সিনিয়া। ও আসলে আমার ক্লাসমেইট ছিলো। আমরা একসাথেই ইউনিভার্সিটিতে পড়েছি। মেয়েটার প্রেম হয় আমাদেরই আরেক ক্লাসমেইট-এর সাথে। ও ছিলো সিরিয়ান। ওদের বিয়েও হয়েছে। তারপর ঐ বাচ্চাটার জন্ম। কিন্তু পড়ালেখা শেষ করে সিরিয়ানটা ঐ যে সিরিয়া চলে গেলো, আর কখনো ফেরে নাই। বৌ-বাচ্চার খোঁজও নেয় না।"
সবকিছু শুনে কাব্যিকের খুব খারাপ লাগলো। তবে এরকম কেস আরো আছে। তার নানাবিধ কারণও আছে। যার অন্যতম কারণ হলো কম্যুনিস্ট গোঁড়ামী ও সংকীর্ণতা!
আক্সিনিয়া-র বয়স হয়েছে। মুখ দেখে সঠিক বয়স আন্দাজ করার অত ক্ষমতা কাব্যিকের নেই। তবে অনুমান করতে পারে যে আক্সিনিয়ার বয়স ত্রিশ প্লাস। মানে কাব্যিক-এর চাইতে পাক্কা দশ বছরের বড়। আলী অবশ্য তার নিজের বয়স তেত্রিশ বলেছে। বয়স অনুপাতে আক্সিনিয়া এখনো বেশ সুন্দরী। ফিগারও সুন্দর।
এর সপ্তাহ খানেক পরে একদিন রাত প্রায় এগারোটার দিকে কাব্যিক গেলো আলীর রুমে। দরজা নক করার পরে আলী ভিতর থেকে বললো, "কাম ইন।" বেশ কনফিডেন্সের সাথে রুমের দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে থতমত খেয়ে গেলো কাব্যিক। এই রাতে আক্সিনিয়া বসা আলীর রুমে। আজ সাথে বাচ্চাটি নেই। আক্সিনিয়া একা। তার পরনের পোশাকটা বাইরের পোশাক নয়। ঘরের রিলাক্সড পোশাক। কাব্যিক ভাবলো এত রাতে আক্সিনিয়া কি করে আলীর রুমে? আলী না বিবাহিত?! আক্সিনিয়ারও তো ফর্মালি স্বামী আছে!
(চলবে)
---------------------------------------------------------------------
রচনাতারিখ: ১৩ই ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ সাল
রচনাসময়: রাত ১০টা ৫৪ মিনিট
Propose Day (2)
--------------------- RRamit Azad
MONE KORO AMI NEI ~ মনে কর আমি নেই ~ অলকা ইয়াগ্নিক ~Aadhunik Bangla Gaan - Alka Yagnik আমাদের নতুন শপিং ওয়েবসাইট এ অবশ্যই ঘুরে আসুন। লিঙ্কঃ- https://bit.ly/3tmtUAe
প্রোপোজ ডে (পর্ব -১)
----------------------- রমিত আজাদ
যুদ্ধাহত নগরী এখন খারকোভ। ইউক্রেইন-এর প্রাচীন রাজধানী। তবে পরবর্তিতে এই নগরী হয়ে ওঠে তারুণ্যের প্রাণকেন্দ্র, শুধু ইউক্রেইনের না, সমগ্র সোভিয়েত ইউনিয়নেরই। সেই নগরীতে প্রাচুর্য ছিলো বিশ্ববিদ্যালয় ও উচ্চশিক্ষার প্রতিষ্ঠানের। সুতরাং প্রাচুর্য ছিলো তারুণ্যের ও ততোধিক প্রাচুর্য ছিলো প্রেমের।
সেখানেই কোন একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়ন করতো একটি বিদেশী তরুণ। প্রাচ্যদেশীয় ও মুসলিম হওয়ায় তার মধ্যে তখন যৌনতার চাইতে প্রেম, ভাবাবেগ ও নৈতিকতার আধিক্য ছিলো বেশি। তখনও সে কোন তরুণীর দেহস্পর্শের সুখ পায়নি। অবশ্য ঐদিকে তার ততটা টানও ছিলো না। তার স্বপ্ন ছিলো, কোন এক স্বপ্নের রাজকুমারীকে খুঁজে বের করা। যাকে সে মনপ্রাণ দিয়ে ভালোবাসবে। তবে তখনও তেমন কাউকে না পেয়ে আপাততঃ করছিলো অপেক্ষা।
তবে হঠাৎ করেই হৃদয়ঘটিত একটা ঘটনা ঘটে গেলো তার সাথে, যেটাকে হৃদয়ঘটিত ঘটনার চাইতে যৌনঘটিত ঘটনা বলাই অধিকতর যুক্তিসঙ্গত হতে পারে। সদ্য কৈশোর পেরুনো বিশ বৎসর বয়সের তরুণ যখন সমবয়সী এক তরুণীকে খুঁজছিলো, তখন সে কিনা প্রস্তাব পেলো তার চাইতে অনেক বেশী বয়সী এক রমণীর কাছ থেকে। অবশ্য রমণীটি রূপসীই ছিলেন।
কেমন করে, কিভাবে, কোথায়, কখন, কি রূপে, কোন পরিস্থিতিতে ঐ প্রস্তাব সে পেয়েছিলো; পাশাপাশি আর কোন নারী বা নারীগণের উপস্থিতি ছিলো কিনা তার আশেপাশে, আজকের গল্পটি হবে তাই নিয়েই।
---------------------------------------------------------------------
রচনাতারিখ: ১৩ই ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ সাল
রচনাসময়: ভোর ০৭টা ১৯ মিনিট
Propose Day
-------------- Ramit Azad
দুটি মন আর, নেই দু'জনার (পর্ব -১৩)
----------------------------------- রমিত আজাদ
শাপলা বিল, শালুক ঝিল, জলের ঢলে ফুল মিছিল,
ঐ যে দূরে বন নিখিল, শাপলা জলে মনের মিল।
ফুলে ফুলেই গাঁথলো মালা, ছলছবিতে আকাশ নীল।
গোলাপী তার অঙ্গ শোভা, সবুজ পাতায় হারায় দিল!
ফটিক জলে ভাসি ভাসি, শাপলা হাসে রাশি রাশি।
অমন শোভায় তারা দুজন, শুনতে পেলো পাখির কুজন,
কুজন তো নয়, স্বর্গীয় সুর, কর্ণে ঢালে বাজনা মধুর।
এই তো তাদের প্রেমের গীতি, জন্মদিনের মধুর স্মৃতি;
প্রেমিক দেখে নয়ন ভরে, সোনার তনু প্রেমিকারে।
আহা কি যে রূপ মনোহর, বৃষ্টিস্নাত ফুল যেন তার!
সেও তো আজি শাপলা সাজে, শালুক রঙা শাড়ির ভাঁজে।
অমন রূপে চোখ জ্বালিয়ে, কানন যেন মরলো লাজে।
আহা এমন শাপলা বিলে, কেউ ছিলো না সেদিন মিলে,
তারা দুজন মজলো প্রেমে, দেখলো শালিক, দোয়েল, চিলে।
শীতের কালে বিলের জলে, নাও ভাসে না হেলে দুলে।
তাও মনে চায় ভাসাই তরী, ফুলের দেশে ঘুরেই মরি।
প্রেমিকা কয়, "ধীমান বড়, এই শাড়িটা চিনতে পারো?
প্রেমিক বলে, "অবাক করো, চিনবো আমি কেমনতরো?
না দেখেছি আগে কারো, না দেখেছি তুমিই পড়ো!"
"আরে এ যে, তোমার কেনা, জন্মদিনের উপহার ও।"
প্রেমিক হাসে আকাশ ভরি, "ওরে আমার সোনার তরী,
তোমার মতন রূপসীরে সব পোশাকেই মানায় ভারী!"
প্রেমিকা কয়, "আঁকো ছবি, শিল্পী তুমি, তুমিই কবি।
পা ভেজাবো জলে আমি, তুলবে যে তাই জলে নামি।"
"নামবো যখন জলেই আজি, তুলবো প্রথম শাপলা রাজি,
শাপলা ফুলে বানাই মালা, তাই পড়াবো কন্ঠে সাজি।"
"ওরে আমার মনের নাগর, তোমায় বিনে বাঁচি না ঘোর!
পড়াও তবে ফুলের মালা, সেই হবে আজ গহনা মোর।"
প্রেমিক তোলে ফুলের ডালি, গাঁথে মালা প্রণয় ঢালি।
মালা গাঁথা শেষ হলে তায়, পড়িয়ে দিলো শোভন গলায়।
আরে এ যে সাখাৎ পরী, পড়লো আজি ধরায় ঝরি!
কুসুম ভরা সুর ও গীতি, জন্মদিনের মধুর স্মৃতি!
সাজানো তায় কাঠের নায়ে, উঠলো মেয়ে গলুই বেয়ে,
তুললো প্রেমিক আলোক ছবি, বেলা শেষের রাঙা রবি।
অস্তরাগে উড়লো পাখি, সোনার কিরণ ডানায় মাখি।
সোনার মেয়ে তাই না দেখি, হেসেই হলো কুটিকুটি!
এভাবে তায় শেষ হলো দিন, সূর্য হারায় ধুলায় মলিন।
কাটলো যে দিন শাপলা বাগে, সুর-সোহাগে অনুরাগে।
এই অভিসার না ভোলা যায়, জড়ালো তায় কেমন মায়ায়!
বাজলো সুরে সন্ধ্যা-গীতি, জন্মদিনের মধুর স্মৃতি!
----------------------------------------------------
রচনাতারিখ: ১০ই ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ সাল
রচনাসময়: রাত ১০টা ৩৫ মিনিট
পূর্বের পর্বের লিংক:
https://www.facebook.com/ramit.azad/posts/pfbid0N9BpTknwTCMUZaV83PtkyvwqiZd3C3rkySkmNa8WDuPaJsR5eiSjGxRp8nxWA3Evl
কবিতাটির নাম চিত্রা সিং-এর বিখ্যাত গান থেকে নেয়া।
Two Hearts are, No More Belonging to Them (Episode-13)
---------------------------------------------------------- Ramit Azad
দুটি মন আর, নেই দু'জনার (পর্ব -১২)
----------------------------------- রমিত আজাদ
এরপর তারা নিয়মিত মেলে অভিসারে জলে বনে,
হাত ধরাধরি, চোখে চোখ রাখি, কথা কয় মনে মনে।
প্রেমেতে মাতাল প্রেমিক মজে প্রেমিকার আলোড়নে,
এলোচুলে তার গুঁজিয়া নাসিকা মাতে যে সুধায় ঘ্রাণে!
কখনো মেলে রেস্তোরা-ক্যাফে কখনো ঝিলের ধারে,
ভরিয়া পরাণ গেয়ে যায় গান, দুজনায় দু'জনারে।
আকাশে উঠে যে চাঁদ, গগনে ফুটে যে তারা,
তারই নিচে তারা, মেতে যায় প্রেমে, অনুরাগে মাতোয়ারা!
প্রেমিক শুধায় প্রেমিকারে তার, "কবে তব জনম-দিন?"
প্রেমিকা হাসিয়া বলে যায় তারে, "সমাগত সেই দিন।
কটা দিন পরে বছর ঘুরিবে, আসিবে নতুন সাল।
তার আগে আগে জন্মেছি আমি, ছিলো তা শীতের কাল।"
জন্ম আমার হয়েছিলো মাঘে কুয়াশা-শিশির সাথে,
ঐ হিমে জমে, এসেছিনু আমি, এই ধরা নৈরাতে।
আগমনে মোর হেসেছিলো ঘোর, পিতা-মাতা ভাই বোন,
আমি ভাগ্যবতী, এনেছি অমরাবতী, বলেছেন প্রিয়জন।
"ওহ্! তাই বলো তবে, আর নেই বাকি, কটা দিন আছে শুধু।
চলো না সেদিন ছুটে যাই দূরে, যেখানে প্রান্তর ধু ধু।"
"দূরে, খুব দূরে কি নিতে চাও মোরে, কোলাহল ছাড়ি কোথা?"
"নিতে চাই সেথা, নাই কলরব যেথা, নাই নগরীর কথকতা।"
প্রেমিকা: চলো যাই চলে, শালুকের ঝিলে, বাহারের শতদলে।
জলে আর ফুলে, রঙে মিলেঝিলে, কাটাবো দুজনে মিলে।
প্রেমিক: সকাল-সন্ধ্যা কাটাবো দুজনা, গাংচিলে নভো-নীলে।
প্রেমিকা: আমি হবো নীল, তুমি গাংচিল, মেঘে মেঘে অনাবিলে।
প্রেমিক: পাখনা মেলিয়া, উড়িবো খেলিয়া, ছুঁয়ে দেবো নভোলোক,
প্রেমিকা: আমারে ঘিরিয়া, গাহিয়ো মাতিয়া, নেশাতুর প্রেমোলোক।
যথাদিনে তারা মিলিলো দু'জনা, চলিলো নিরুদ্দেশ,
আজ হবে দেখা শালুকের ঝিল, কুসুম জলের দেশ।
পানসি সাজিয়ে, ভাসিবে সে ঝিলে, দুলিবে ফুলের জলে,
মিতালির তালে তারাও দুলিবে প্রণয়ের ডামাডোলে।
যেতে যেতে পথে প্রেমিক মজিলো, প্রেমিকার রূপে-প্রাণে।
এলোচুলে তার গুঁজিয়া নাসিকা মাতিলো সুধায় ঘ্রাণে,
"ডাগর আঁখিতে প্রিয়া মোর ওগো, মনোহর আভরণে,
একডালি ফুলে সাজাবো তোমারে, মধুর জন্মদিনে?"
----------------------------------------------------
রচনাতারিখ: ১০ই ফেব্রুয়ারী, ২০২৪ সাল
রচনাসময়: রাত ১২টা ৪৫ মিনিট
পূর্বের পর্বের লিংক:
https://www.facebook.com/ramit.azad/posts/pfbid0MZ1CD5vP2zg6iLY6xiAd1AP47u2ZLYWzBnfrCuSbtmC7Skufkctim9xuLMbCk4YPl
কবিতাটির নাম চিত্রা সিং-এর বিখ্যাত গান থেকে নেয়া।
(ছবি ব্যবহার করার অনুমতি দেয়ার জন্য স্নেহাশীষ সারা-কে ধন্যবাদ)
Two Hearts are, No More Belonging to Them (Episode-12)
--------------------------------------------------------- Ramit Azad
আমার সহপাঠী জনাব জিয়াউল হক আজ আনুষ্ঠানিকভাবে রিয়ার এ্যাডমিরাল-এর র্যাংক ব্যাজ পড়েছেন। আলহামদুলিল্লাহ্!
উনাকে প্রাণঢালা অভিনন্দন।
আরো আনন্দের বিষয় হলো, উনাকে র্যাংক ব্যাজ পড়িয়েছেন আমাদেরই কলেজের দুইজন বড় ভাই। উনারাও বাংলাদেশ নৌবাহিনীতে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছেন।
প্রতীক্ষিত পাঁচটি অভিসার
--------------------------- রমিত আজাদ
কার্নেশন ফুল চাও?
দেবো।
গোলাপ তো দিয়েছি।
আরো দিয়েছি কদম, জিনিয়া, উৎপল, রজনীগন্ধা।
কার্নেশনটাই বাকি আছে কেবল।
সেটাও দেবো।
তবে কি, আজকাল কার্নেশন ফুলের দামটা বড় বেশি!
তোমাকে একসাথে পাঁচ রঙের পাঁচটি কার্নেশন দিতে মন চায়।
দুর্মূল্যের বাজারে
একসাথে পাঁচটি কার্নেশন কেনা পোষাবে না।
তাহলে এক কাজ করি,
একটি একটি করে দেই?
এই ধরো, প্রথমদিন দিলাম
লাল রঙের কার্নেশন।
পরদিন গোলাপী রঙের,
তারপর দিন বেগুনী।
এভাবে পাঁচদিনে পাঁচটি ফুল দেবো।
এভাবে ফুল দেয়ার অজুহাতে, তোমার সাথে পাঁচবার দেখা হবে!
প্রতীক্ষিত পাঁচ পাঁচটি অভিসার।
----------------------------------------------------------------
------------------------------------------------------------
রচনাতারিখ: ২৪শে জানুয়ারী, ২০২৪ সাল
রচনাসময়: রাত ১২টা ৩৪ মিনিট
Expected Five Dates
--------------------------- Ramit Azad
প্রেম নিতে চাও, প্রেম?
------------------------- রমিত আজাদ
প্রেম নিতে চাও, প্রেম?
কদম ফুলের গোলক ভরা পাতায় পাতায় জেম?
থাকবে আরো ভোরের শিশির পাপড়ি ভরা জলে,
ফুলের তোড়া ছুতোই শুধু ভালোবাসার ছলে।
আকাশ জুড়ে মেঘ যদি তায় উড়বে এলোমেলো,
তোমার কেশের উড়বে নিশান হাওয়ায় টলোমলো।
রসিকতা করবো কত, দেখতে তোমার হাসি।
এলোমেলো কথার ছলে বলবো "ভালোবাসি"।
তুমি যদি বুঝেই ফেলো, রাগ করবে নাকি?
রাগের কথা বলিনিতো, ওরে পরাণ পাখি!
মনের কথায় নেই কোন খুঁত, কথায় ভূবন ভোলে।
হৃদয় জুড়ে এক পারাবার তোমার ঢেউয়ে দোলে।
-----------------------------------------------
-----------------------------------------------
রচনাতারিখ: ২৪শে জানুয়ারী, ২০২৪ সাল
রচনাসময়: রাত ১২টা ১৩ মিনিট
Want to take love?
------------------------ Ramit Azad
৫৬৪।
সুরভী ছড়ায়ে তুলিও জোয়ার, ধুলিজলে দিও মাধবী রাতুল,
দহনে দিবসে, বারি বরিষণে, ছাপিয়া দিও তার একূল-ওকূল।
মন হতে যদি দিতে চাও ফুল? গুনিয়া গুনিয়া প্রেমের মুকুল?
কাঁটাগুলি তবে রাখিও ভাঙিয়া, যেন না ফোটে বেদনার হুল।
-----------------------রমিত আজাদ
২৩শে জানুয়ারী, ২০২৪ সাল
৫৬৩।
স্বপ্ন মাখিনু লগ্ন গুনিয়া, ভগ্ন সে দোরে রত্ন মোর;
চাহিয়া চাহিয়া জাগিনু পরানে, কত সে নিশি, কত না ভোর!
আসিবে বুঝি কি বন্ধু আমার, সাজাতে অবনী কুসুম ডোর।
গন্ধ-মাতাল মহুল ঝুলনা, ডাগর আঁখিতে নেশার ঘোর।
------------------ রমিত আজাদ
২২শে জানুয়ারী, ২০২৪
নিদর্শনহীন ঠোঁটপালিশ
----------------------- রমিত আজাদ
তুমি কিছুটা মুটিয়ে গেছো।
তবে হাসিটা আগের মতই আছে।
ঐ যে, কড়া লাল লিপস্টিকে জোড়া ঠোঁট,
যেখানে আমি অধর রেখেছিলাম বারংবার।
একবারও ঠোঁটপালিশে মাখেনি আমার অধর।
আধুনিক লিপস্টিকগুলো এমনই হয়তোবা।
কোন নিদর্শন রাখেনা ভালোবাসার।
এ যুগে সবগুলো প্রেমই মাঝপথে থেমে যায়।
কানাগলি ধরে অনেকটা পথ যাওয়ার পর
যেমন দেয়াল এসে পথরোধ করে।
প্রেমিকের দীর্ঘশ্বাস শোনেনা প্রেমিকা।
প্রেমিকার হতাশা জানেনা প্রেমিক।
তুমি বোধহয় নূপুর পরতে।
যখন অপেক্ষায় থাকতাম,
তোমার পৌঁছানোর আগেই পৌঁছাতো
তোমার আগমনী ধ্বনি।
আমি প্রতীক্ষায় থাকতাম তোমার দু'টি অধরের।
যেখানে ফুটে থাকতো কড়া লাল লিপস্টিক,
কতটাই উজ্জ্বল!
অথচ মাখামাখির কোন নিশানাই রাখতো না সে।
সেই উত্তম।
পরিণতিহীন প্রেমের নিদর্শন না রাখাই ভালো।
---------------------------------------------------
রচনাতারিখ: ২২শে জানুয়ারী, ২০২৪ সাল
রচনাসময়: রাত ০৮টা ৫৫ মিনিট
Non-marking lip polish
-------------------- Ramit Azad
ছোট ছোট প্রেম - ২ (ঙ)
----------------------------------- রমিত আজাদ
(প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য)
আমি চলে না গিয়ে বরং উল্টা আবার বসলাম চেয়ারটাতে।
সিলভিনাও আমার পাশে বসলো। তারপর বললো, "আমার কেমন যেন খুব টায়ার্ড টায়ার্ড লাগছে।"
আমি বললাম, "আমি খুব ভালো ম্যাসেজ জানি। তোমার সব টায়ার্ডনেস মুছে দেব।"
এই 'টায়ার্ডনেস মুছে দেব' কথাটার 'মুছে দেব'-কে রুশ ভাষায় বলে 'স্নিমু'। ওদিকে 'স্নিমু' শব্দটির আরেকটি অর্থ হয় 'বিবস্ত্র' করা। সিলভিনা কি বুঝলো জানি না। সে তড়াক করে লাফ দিয়ে উঠে কিছুটা দূরে সরে গিয়ে বললো, "কি? তুমি আমাকে কি করতে চাইছো?"
আমিও হতচকিত হয়ে গেলাম! তারপরই বুঝলাম যে, সে হয়তো ভুল বুঝেছে। বললাম, "আরে না। তুমি যা মনে করেছ তা না। আমি ম্যাসেজ করে তোমার টায়ার্ডনেস দূর করতে চাইছি। বসো।"
সিলভিনার তারপরেও কেমন সন্দেহের দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে থাকলো। পাশে আর বসতে চাইলো না।
আমি আবারও বললাম, "এসো, পাশে বসো। আমরা একসাথে ইন্ডিয়ান গান দেখি। তুমি না ইন্ডিয়ান গান পছন্দ করো?"
সিলভিনা আস্তে আস্তে করে আমার পাশে বসলো। তারপর কম্পিউটারে ইন্ডিয়ান ফিল্মি গান চালালো। আমি চেয়ার ছেড়ে উঠে সিলভিনার পিছনে গিয়ে দাঁড়ালাম। সিলভিনা বাঁকা চোখে আমাকে পর্যবেক্ষণ করতে লাগলো। আমি ওর দুই কাঁধের উপরে দুই হাত রাখলাম। তারপর আস্তে আস্তে করে চেপে ওকে ম্যাসেজ করতে থাকলাম। আমি জানি যে, এই ম্যাসেজটা খুবই আরামদায়ক। এতে যে কারো চোখেই আরামে ঘুম নেমে আসে। সিলভিনা আর কোন বাধা দিলো না। মিনিক দশেক ম্যাসেজ করার পর ও বললো, "বাহ! খুব ভালো ম্যাসেজ করো তো তুমি!" আমার টায়ার্ডনেস একদমই দূরে হয়ে গেছে। মাথাটা সামান্য ধরেছিলো, সেটাও চলে গেছে।
আমি বললাম, "আমি হিপনোটিজমও জানি। হিপনোটাইজ করে মাথাব্যাথা দূর করতে পারি।"
সিলভিনা: তুমি যে কি, তা তুমি জানো আর তোমার সৃষ্টিকর্তা জানে। কি তুমি পারো না বলতো? একবার ইসাবেলা আমাকে বলেছিলো তুমি নাকি মিলাদও পড়াতে পারো।
আমি হা হা করে হেসে বললাম, "আমি, বিয়েও পড়াতে পারি।"
সিলভিনা: থাক আর বাহাদুরী দেখাতে হবে না। বিয়ে পড়ানো কঠিন কিছু না।
আমি: করবো তোমাকে হিপনোটাইজ?
সিলভিনা: না। দরকার নাই। হিপনোটাইজ করে আবার কি করে বসো, কে জানে? আজ যা হয়েছে, এ পর্যন্তই থাক।
আমি আবার সিলভিনার পাশে বসে ইন্ডিয়ান গান দেখতে থাকলাম।
সিলভিনা বললো, "ঐ যে নায়িকাটা। ইউরোপীয় পোশাক পরে নাচছে। অথচ জানো, ওকে ইন্ডিয়ান পোশাকেই ভালো মানায়।"
আমি: কোন ইন্ডিয়ান পোশাকে, শাড়ি?
সিলভিনা: সালোয়ার-কামিজ-এও ভালো লাগে।
বেশ স্পষ্ট উচ্চারণে 'সালোয়ার-কামিজ' শব্দজোড়া বললো সিলভিনা। আমি তো অবাক!
আমি: তুমি 'সালোয়ার-কামিজ' চেন?
সিলভিনা: চিনবো না কেন? আমার আছে তো কয়েক সেট।
আমি: তোমার আছে সালোয়ার-কামিজ?!
সিলভিনা: কি বিশ্বাস হয় না?
আমি ওর কথার কোন উত্তর না দিয়ে। অবাক হয়ে ওর দিকে তাকিয়ে রইলাম।
সিলভিনা মনে হলো ক্ষেপেছে। বললো, "বিশ্বাস হয় না, না? দাঁড়াও, আলমারী থেকে বের করে দেখাচ্ছি।"
এই বলে আলমারীর দিকে এগিয়ে গেলো সে। সেখান থেকে নীল ও গোলাপী রঙের মিক্সড প্রিন্টেড এক সেট সালোয়ার-কামিজ নামিয়ে আনলো। তারপর বললো, "দেখো। দেখেছো, আমার আছে কিনা সালোয়ার-কামিজ?"
আমি: হুম তাইতো দেখছি। তা তুমি এগুলো পরো? নাকি মিউজিয়ামে সাজিয়ে রেখেছ?
সিলভিনা: কি? মিউজিয়ামে সাজাই? আমি এগুলো খুব ভালো ভাবেই পরতে জানি। এই দেখো।
আমি ওর কথায় কিছুটা বিস্ফোরিত হলাম। সিলভিনা কি এখন আমার সামনে সালোয়ার-কামিজ পরা শুরু করবে নাকি?
আমি চেয়ার ছেড়ে ওর দিকে এগিয়ে গেলাম। সিলভিনা কামিজটাকে ওর সামনে মেলে ধরলো। বললো, "কি? মানায় আমাকে?"
মানাক বা না মানাক, আমি ওকে বললাম, "অপূর্ব!"
সিলভিনা: সালোয়ারটা পরলে পুরো সেটটা হবে। তখন আরো ভালো লাগবে।
আমি সিলভিনার দিকে আরো কাছে এগিয়ে গেলাম। সিলভিনার হাত থেকে কামিজটা নিলাম। তারপর ওটাকে সিলভিনার গায়ের উপরে মেলে ধরলাম। সিলভিনা বললো, "একি? একি? তুমি কি করছো?"
আমি বললাম, "যা করছি করতে দাও।"
কামিজটা ওর গায়ের উপর টাইট করে ধরে বললাম, "এ যে পরীর মত লাগছে!"
আমার কথা শুনে সিলভিনা মোমের মত গলে পড়তে লাগলো।
একটা সিনেমার গানের লাইন মনে পড়লো,
'তোমার মনের মত করে আমায় তুমি সাজিয়ে নাও,
তোমার খুশীর ডুরে শাড়ী, আমায় তুমি পরিয়ে নাও।'
আমি: তোমাকে একটা কথা বলি সিলভিনা?
সিলভিনা: কি কথা?
আমি: তুমি যদি এখন এই সালোয়ার-কামিজের সেট-টা পরো, তোমাকে সাক্ষাৎ অপ্সরীর মতন লাগবে!
সিলভিনা: আমাকে এই পোশাকে দেখতে চাও?
আমি: হ্যাঁ চাই।
সিলভিনা: তাহলে তুমি সামান্য সময়ের জন্য রুমের বাইরে যাও আমি পোশাকটা পরি।
আমি: আমাকে বাইরে যেতে হবে কেন সিলভিনা?
সিলভিনা: বারে! আমি কি তোমার সামনেই পোশাক পাল্টাবো নাকি?
আমি: আমি রুমের ভিতরেই থাকি। জাস্ট ঐদিকে ফিরে থাকবো। আর এর মধ্যে তুমি পোশাক পাল্টাবে।
সিলভিনা: (লাজুক স্বরে) কি যে বলো!
আমি: সিলভিনা, তোমার বয়স চব্বিশ।
সিলভিনা: ঠিকআছে। তুমি ঐ চেয়ারটায় গিয়ে আমার দিকে পিঠ দিয়ে বসো। আমি পোশাক পাল্টাচ্ছি। একদম এদিকে তাকাবে না কিন্তু।
আমি সুবোধ বালকের মতন করে বললাম, "ওক্কে।“
তারপর আমি ঠিকই উল্টা ফিরে ঐ চেয়ারটায় গিয়ে বসলাম। কয়েক মিনিট পার হলো। আমি কাপড়ের খসখস আওয়াজ শুনলাম। শ্রবণোত্তর শব্দ হলেও আমি শুনলাম। এই লগণে পুরুষের কান হয়তো খুব পাকা হয়ে যায়। এরপর আমি সহসা উঠে দাঁড়ালাম। ওর দিকে ঘুরতেই সিলভিনা হাত দিয়ে ওর বুক ঢেকে ফেললো। ও মাত্র টপস-টা খুলেছে। এখন ওর পরনে জিনসের প্যান্ট আর ব্রা। হালকা গোলাপী রঙের ব্রা আবৃত যা দেখলাম, তাতে আমার সিলভিনার গলায় ঝোলানো হারের লকেটের উপর ঈর্ষা হলো! এরপর আমি ওর পুরুষ্ট শরীরের মধু গাঁথুনিটায় দৃষ্টি বুলালাম।
সিলভিনা: এই একদম অসংযত হবে না। তুমি কিন্তু কথা দিয়েছিলে।
আমি: সিলভিনা। নারীর জন্য সবচাইতে মধুর অনুভূতি কি জানো?
সিলভিনা মৃদু বিস্মিত স্বরে প্রশ্ন করলো, "কি?"
আমি: যখন তার ভালোবাসার পুরুষটি তাকে বিবস্ত্র করে। আর যখন তার ভালোবাসার পুরুষটি ঐ বিবস্ত্র দেহে আবার পোশাক পরিয়ে দেয়।
সিলভিনা: তুমি কি এখন তাই চাইছো?
আমি: অস্বীকার করবো না। হ্যাঁ, এখন আমি তাই-ই চাইছি।
আমি সিলভিনার দিকে এগিয়ে যেতে সিলভিনা "না" বলে কয়েক পা পিছিয়ে গেলো। কিন্তু আমি খপ করে ওর হাতটা ধরে ফেললাম। আমার হাত ছাড়িয়ে নেয়ার সামান্য চেষ্টা করে, পরমুহূর্তেই সিলভিনা আমার উপর লুটিয়ে পড়লো!
'উঠিয়াছে চাঁদ গগনে আমারি, ফুটিয়াছে কত তারা;
এ মধুর যামী তোমারি-আমারি হতে চাই দিশেহারা।
বিদেশিনী ওগো, দোলাও তোমারি হৃদয় সাগর দোলা,
ডুবিবো-মরিবো, আঁধারে মজিবো, আমি যে প্রেমিক-ভোলা!'
(রমিত আজাদ)
(সমাপ্ত)
(এমন ছোট ছোট প্রেমের কাহিনী প্রতিটি মানুষের জীবনেই রয়েছে)
----------------------------------------------------------------------------------------------
রচনাতারিখ: ১৩ই জানুয়ারী, ২০২৪ সাল
রচনাসময়: দুপুর ০৩টা ১০মিনিট
A Little Love Story - 2 (E)
---------------------------------- Ramit Azad
পূর্বের পর্বের লিংক:
https://www.facebook.com/ramit.azad/posts/pfbid0XWAXYBwrvPKym9qzsFn2trRLAfSytp5ZatfN3ARxC14SgxCEfAiHmc7oKqDCfpi3l
ছোট ছোট প্রেম - ২ (ক)
---------------------------- রমিত আজাদ
(প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য)
অলৌকিক কিছু ঘটনা আমার জীবনে ঘটে। জানিনা আপনাদের জীবনেও এমনটা ঘটে কি না? যেমন আমি কোন একটা বিষয় টানা কয়েকটা দিন ভাবছি, হঠাৎ করে একদিন ঐ ঘটনাটাই আমার সামনে বা আমার সাথে ঘটে গেলো! সিলভিনা-র সাথে আমার ঠিক এমন একটি ঘটনাই ঘটেছে। আজই ঘটলো ঘটনাটা।
সিলভিনা অবাঙালী মেয়ে। মানে আমার কাছে বিদেশিনী। মেয়েটার দেশটার নাম আমি গোপন রাখতে চাই, শুধু এইটুকু বলবো যে, সে দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের মেয়ে। ছোট্ট করে যাদেরকে 'লাতিনা' বা 'ল্যাটিনা' বলা হয়। বেশীরভাগ লাতিনা মেয়েই হয় খুব কিউট। তদুপরী ওদের প্রতি আমার তেমন কোন আকর্ষণ কখনো ছিলো না। আমার কাছে তার চেয়ে বরং রুশী বা ইস্ট-ইউরোপিয়ান শ্বেতাঙ্গিনীদের কদর ছিলো বেশী। আপনারা আমাকে আবার চট করে র্যাসিস্ট ভেবে বসবেন না যেন। আমি একদম র্যাসিস্ট নই। র্যাসিস্ট-ই যদি হতাম তাহলে ইথিওপিয় কৃষ্ণাঙ্গিনির সাথে প্রেম করতাম না। তবে সেটা ভিন্ন চাপ্টার আজ আর ঐ আফ্রিকা প্রসঙ্গে যাবো না। লাতিন আমেরিকা নিয়েই থাকি।
সব পুরুষেরই কোন না কোন চয়েজ থাকে। যেমন, আমার এক বন্ধু বলতো যে 'মুলাত্তো' মেয়ে দেখলে ওর মাথা টলমল করে ওঠে! মুলাত্তো মানে বাবা-মায়ের একজন শ্বেত বর্ণের ও আরেকজন ঘোর কৃষ্ণ বর্ণের। এই দুইয়ের মিলনে যা হয়, তা হলো কফি উইথ মিল্ক। অবশেষে ও একটা মুলাত্তো গার্লফ্রেন্ড জুটিয়েছিলোও। কিন্তু আমার পছন্দ ছিলো, শ্বেত বর্ণ।
সিলভিনা মেয়েটি মোটেও শ্বেত বর্ণের ছিলো না। ও যেই দেশের অধিবাসিনী, সেখানে সাদা, কালো ও শ্যাম; এই তিন বর্ণের মানুষই রয়েছে। সিলভিনা ছিলো শ্যাম বর্ণের। তবে বয়স যেহেতু খুবই কম ছিলো, তাই চেহারা কিউটই ছিলো। তবে ফিগারটা স্লিম ছিলো না। সামান্য ভারী ছিলো। বাংলা সাহিত্যের ভাষায় ভরাট শরীর বলা যেতে পারে।
এবার আসা যাক, সিলভিনা মেয়েটি আমার পছন্দের তালিকায় ছিলো কি ছিলো না, সেই প্রসঙ্গে। সাফ সাফ জানিয়ে দেই, না। মানে সিলভিনা আমার পছন্দের তালিকায় ছিলো না। ওকে প্রথম কবে, কখন, কোথায় দেখেছি তা আমার স্পষ্টই মনে আছে। 'প্রথম দর্শনে পিরীতি উজিলা' এই টাইপের কোন ঘটনা সিলভিনার সাথে আমার দিক থেকে ঘটেই নাই। তবে উল্টাটা বোধহয় ঘটেছিলো। এটা আবার আমি জেনেছিলাম ইসাবেলা-র কাছ থেকে। ইসাবেলা আমার ক্লাসমেইট।
ঐ ইসাবেলার রুমেই আমার সাথে সিলভিনার প্রথম দেখা। আমি ইসাবেলার রুমে গিয়েছিলাম কোন একটা কাজে, হতে পারে গবেষণা সংক্রান্ত কোন ম্যাটেরিয়াল নিয়ে ডীল করতে। তা একফাঁকে আমি গেলাম ওয়াশ রুমে। ওয়াশরুমে থেকে ফিরে এসে দেখি ওমা, ইসাবেলার রুমে আরেকটি ফুটফুটে ফ্রেশ মেয়ে বসে আছে! ফ্রেশ বলছি এই কারণে যে ও সদ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে। প্রিপারেটরি কোর্সে পড়ে। জানলাম যে মাত্র একমাস হয় সিলভিনা মস্কোতে এসেছে।
হ্যাঁ, ঘটনা মস্কোতেই। রাসপুতিন-লেনিন-স্তালিন-ইয়েলৎসিন-পুতিন এর দেশ মস্কো। মহাশক্তিধর পরাশক্তি রাষ্ট্র রাশিয়া। সেখানে প্রতি বৎসর পৃথিবীর নানা দেশ থেকে পড়তে আসে হাজার হাজার স্টুডেন্ট। আমি যে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে গবেষণা করতাম তা ছিলো অন্যতম আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয়। দুনিয়ার ১৮০ টি দেশের ছেলে ও মেয়েরা পড়ালেখা করতো ওখানে। সাদা, কালো, লাল, নীল, হলুদ, সবুজ, বর্ণালীর কোন রঙেরই কোন অভাব ছিলো না ওখানে। আরো অভাব ছিলো না প্রেমের। এত্তগুলা ইয়াং ছেলে-মেয়ে যেখানে এক জায়গায়! সেখানে প্রেমের অভাব তো হওয়ার কথাই না। আর সুযোগ যেহেতু আছেই তাই ভিন বর্ণ, ভিন ধর্ম, ভিন জাত, ভিন সংস্কৃতির, বিপরীত লিঙ্গের সাথে প্রেমের স্বাদ নেবে না কেন? তাই সেখানে স্বজাতির চাইতে মিক্সড প্রেমের আধিক্যই ছিলো বেশী!
আমি সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা করতাম। মানে আমার বিশ্ববিদ্যালয় জীবন তখন সমাপ্ত হয়ে গিয়েছে। আমি তখন উচ্চশিক্ষার দ্বিতীয় ধাপে আছি। আমার বয়স তখন ছাব্বিশ হলেও দেখতে তুলনামূলকভাবে অনেক ইয়াং লাগতো। বিশ-একুশ বৎসর বলে চালিয়ে দেয়া যেত। আমার এই ইয়াং লুকটা অনেক মেয়েকে দ্বিধান্বিত করতো। সিলভিনা-র ক্ষেত্রেও বিষয়টা অমনই হয়েছিলো। পরবর্তিতে ইসাবেলা আমাকে বলেছিলো, "তুমি তখন ওয়াশরুমে গিয়েছ। সেই সময় সিলভিনা আমার রুমে এলো, আসলে আমিও সিলভিনা-কে ভালো চিনতাম না। শুধু জানতাম যে আমার দেশ থেকে কয়েকটা নতুন মেয়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে এসেছে, সিলভিনা তাদেরই একজন। তা সিলভিনা খোঁজ নিয়ে আমার রুমে এসেছিলো সিনিয়র আপুর সাথে পরিচিত হওয়ার জন্য। আমার টেবিলে বই-পত্র ছড়ানো দেখে ও জানতে চেয়েছিলো যে, রুমে আরো কেউ আছে কিনা? তা আমি বলেছিলাম যে আমার একজন ক্লাসমেইট এসেছে পড়ার কাজে। ও এখন ওয়াশরুমে গিয়েছে। আসবে এখনই। সিলভিনা জানতে চেয়েছিলো যে তুমি আমাদের দেশেরই কিনা? আমি বলেছিলাম যে, 'না ও বাংলাদেশের'। তারপর তুমি রুমে ঢোকার সাথে সাথে সিলভিনার ছানাবড়া চোখ দেখে তো আমি অবাক!" আমি বলেছিলাম, "কিসের অবাক? সিলভিনার চোখই বা ছানাবড়া হলো কেন?" আমার প্রশ্নের জবাবে ইসাবেলা বলেছিলো, "ও তুমি বুঝবে না। মেয়েরা মেয়েদের দৃষ্টি বোঝে। তোমাকে দেখে সিলভিনা-র মাথা টলমল করে উঠেছিলো! ও মনে মনে ভাবছিলো এত্ত সুন্দর একটা যুবক!"
ইসাবেলার কথা শুনে আমি না হেসে পারিনি। বললাম, "আমি সুন্দর? আমার তো সারাজীবন নিজেকে সাধারণ একজনই মনে হয়েছে!"
ইসাবেলা: এটাই তোমার সমস্যা। বড় বেশী সরল! তুমি জানোই না যে, তুমি কতটা এট্রাকটিভ।
আমি: তাই বুঝি?
ইসাবেলা: আলবৎ! তোমার সাথে কিছুক্ষণ কথা বলে যে কোন মেয়েই পটে যাবে। কত কথা যে তুমি জানো রে বাবা!
আমি মৃদু হাসলাম। ইসাবেলা আবার আমার প্রেমে পড়েছে কিনা সেটা আর জানতে চাইলাম না। এ্যাডমায়ারার বাড়ানোর দরকার নাই।
যাক, সিলভিনা প্রসঙ্গে আসি। বললে তো কত কথাই বলা যায়। অত কথা আর না বলি। সংক্ষেপে বলবো, পরবর্তি মাস ছয়েক সিলভিনাকে আমি নানা জায়গায় দেখেছি। কখনো বিশ্ববিদ্যালয়ের লাউঞ্জে, কখনো ক্যাম্পাসের সামনের বড় রাস্তাটির পার্শ্ববর্তি চওড়া ফুটপাতে, কখনো মেইন বিল্ডিংয়ের কাঁচ ঢাকা ক্যাফেতে, যেখানে আমরা জমিয়ে আড্ডা দিতাম। একবার এক জন্মদিনের অনুষ্ঠানেও ওকে দেখেছিলাম। ইসাবেলার কোন এক বান্ধবীর জন্মদিন ছিলো। সেখানে সিলভিনাও দাওয়াত পেয়েছিলো। ততদিনে সিলভিনার মধ্য থেকে বালিকা ভাবটা কমে, কিছুটা ম্যাচিউরিটি এসেছে। হয়তো বিদেশে একা একা থাকার কারণে নেইভনেসটা কমে গেছে। আবার শরীরেও কিছুটা পুরুষ্টতা এসেছে। পুরুষের চোখ তো ঐ শরীরের দিকেই। আমাকে একবার এক মেয়ে বলেছিলো, মানে ঘটনাটা এমন, ওর সাথে কোথাও গিয়েছি। তা তার পরনের কালো প্যান্টটিতে নিতম্বের অংশে সাদা ধুলা লেগে গিয়ে দৃষ্টিকটু দেখাচ্ছে। আমি জনসমক্ষে তাকে কিছু বলতেও পারছিলাম না। পরে লিফটে উঠে ওকে কথাটা বললাম। সে একগাল হেসে আমাকে বললো, "পুরুষরা তো ঐদিকেই তাকিয়ে থাকে! যাক ধুলা লাগলে আর ঐদিকে তাকাবে না।" ওর কথা শুনে আমি একটু লজ্জাই পেয়েছিলাম। আমাদের পুরুষের চোখ আসলেই লোভাতুর! যাহোক, সিলভিনার কথা বলছিলাম। তা ঐ জন্মদিনের অনুষ্ঠানে ওর পুরুষ্ট শরীরের দিকে অনেক যুবকই লোভাতুর চোখে দেখছিলো। দু'একজনকে দেখলাম যে খাতির জমানোর চেষ্টাও করছে। কিন্তু সিলভিনা-কে বেশ সতর্ক দেখলাম। হতে পারে যে, এই কয়েকমাসে ও লোক চিনতে শিখেছে।
ইউরোপ-আমেরিকায় অনুষ্ঠান মানেই খানাপিনা-র পাশাপাশি নাচা-গানা। কখনো দ্রুত লয়ের গানের সাথে সিঙ্গেল নাচ, আবার কখনো বা স্লো মিউজিকের সাথে যুগল নৃত্য। যুগল নাচে ইউজুয়ালী ছেলেরাই মেয়েদেরকে আমন্ত্রণ জানায়, এটাই প্রচলিত। সিলভিনাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে বেশ কয়েকজন যুবক ওর সাথে নাচলো। এই নাচ হয় আলো-আঁধারিতে তাই সেই সুযোগে কেউ কেউ বেসামাল হয়ে পড়ে। পুরুষরা সুযোগ বুঝে মেয়েদের এখানে ওখানে হাত দেয়ার চেষ্টা করে। কোন মেয়ে এটা এ্যালাউ করে, কোন মেয়ে এ্যালাউ করে না। সিলভিনা-কে বেশ সংযতই দেখলাম। সে যুগল নাচ নাচলেও কাউকেই অসংযত হতে এ্যালাউ করেনি। আমি মনে মনে বলেছিলাম, "গুড! মেয়ে। এমনই থাকো।" সিলভিনা আমার দিকে কয়েকবার তাকিয়েছিলো। হতে পারে যে, আমার কাছ থেকে নাচের ইনভাইটেশন আশা করছিলো সে, কিন্তু আমি ওকে ইনভাইট করিনি। কেন যেন ঐদিন মন টানছিলো না। মুড-এর উপরেও তো কত কিছু নির্ভর করে!
আরেকদিন সিলভিনার সাথে দেখা হয়েছিলো ঐ ইসাবেলার রুমেই। ওরা দুজন সেখানে ছিলো, আমি তৃতীয় ব্যাক্তি গিয়ে উপস্থিত হলাম। সিলভিনা সেদিন আমার কাছে ইন্ডিয়ান-বাঙালী কালচার সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে চাইলো। আমি ধৈর্য্যের সাথে ওর প্রশ্নগুলোর উত্তর দিলাম। তারপর সিলভিনা আমাকে বললো,
সিলভিনা: আমাকে দেখে কি ইন্ডিয়ান মেয়েদের মত লাগে?
আমি: আমার তো সেরকম মনে হয় না। আমার কাছে তো তোমাকে লাতিনার মতই লাগে।
সিলভিনা: তবে যে ওরা বলে?
আমি: কারা?
সিলভিনা: আমার অনেকগুলো ইন্ডিয়ান বন্ধু-বান্ধব আছে। ওরা বলে।
ওর কথায় আমি কি জবাব দেব বুঝতে পারছিলাম না। তারপর ওর ড্রেসের দিকে আমার নজর পড়লো। একটু আনকমোন ড্রেস মনে হলো।
আমি: তুমি আজ এটা কি ড্রেস পড়েছ?
সিলভিনা: কেন চিনতে পারছো না? তুমি না বাংলাদেশী?
আমি: বাংলাদেশে তো এমন কোন ড্রেস দেখি নাই!
আমার কথায় সিলভিনা মন খারাপ করে চুপ মেরে গেলো। ইসাবেলা বললো,
ইসাবেলাল: আহ্হা! দিলে তো কচি মেয়েটার মনটা খারাপ করে!
আমি: কেন? আমি আবার মন খারাপ করার মত কি বলেছি?
ইসাবেলা: আরে দেখছো না, ও শাড়ি পড়েছে?
এই কথা বলে ইসাবেলা আমাকে একটা চোখ টিপ দিলো। আমি যা বোঝার বুঝে গেলাম।
দেখলাম যে এক খন্ড লম্বা কাপড়-কে সিলভিনা শাড়ির মত করে পড়ার চেষ্টা করেছে। নিচে যদিও প্যান্ট ও টপস আছে।
আমি: (কৃত্রিম ভাব এনে) ও হ্যাঁ, তাই তো! শাড়িই তো। আমার চোখে পড়লো না কেন? শাড়ি তো আমার ফেভারিট নারী ড্রেস। বেশ লাগছে তো তোমাকে শাড়িতে!
আমার মুখে তার পোশাকের ও রূপের প্রশংসা শুনে সিলভিনা তো গলে গলে পড়লো!
সিলভিনা: থ্যাংক ইউ, থ্যাংক ইউ।
আমি মনে মনে ভাবছিলাম, সামান্য প্রশংসাতেই অল্প বয়সী মেয়েরা কেমন বরফ গলা নদী হয়ে যায়!
সিলভিনার পরনের টপসটি ছিলো স্লিভলেস। আর্মপিট স্পষ্ট দেখা যাচ্ছিলো। অল্পবয়সী মেয়ের পরিচ্ছন্ন আর্মপিট। আমার পুরুষ মন কেমন যেন আনচান করে উঠলো!
-------------------------------------------
ইসাবেলা আমাকে একদিন কথায় কথায় বলেছিলো, "তুমি সিলভিনা-র সাথে কিছু করো না কেন?"
আমি: মানে?
ইসাবেলা: কিছু বোঝ না?
আমি: কি বোঝার আছে, বলতো?
ইসাবেলা: আরে সিলভিনা তোমাকে চায়, বোঝ না?
আমি: চাইলে তো বলতো-ই। কই কোনদিন বলে নাই তো?
ইসাবেলা: একেবারে মুখ ফুটে বলতেই হবে?
আমি: না বললে, বুঝবো কি করে। ('মেয়েদের বুক ফাটে তো মুখ ফোটে না' কথাটা আমি শুধু বাঙালী মেয়েদের ক্ষেত্রেই সত্য ভাবতাম। কিন্তু বিদেশে এসে বুঝেছি যে, এটা সব দেশের মেয়েদের ক্ষেত্রেই সত্য। শুধু ইনটেনসিটির কমবেশি রয়েছে)
ইসাবেলা: মেয়েদের মনের কথা রীড করতে পারো না?
আমি: না। তাছাড়া ওরকম থট-রীডার হতে গেলে রিস্কও থাকে।
ইসাবেলা: কি রিস্ক?
আমি: পরে হয়তো বলে বসলো যে, আমি যা ভাবছি বিষয়টা তা নয়। তখন তো অপমানের একশেষ!
ইসাবেলা আমার কথা শুনে এমন এক হাসি হাসলো, যার অনেক রকম মানে হতে পারে। এই ক্ষেত্রেও থট-রীডার হওয়া বাদ দিলাম।
-------------------------------
'অলৌকিক' যে বিষয়টা গল্পের শুরুতে বলছিলাম। আমি টানা কয়েকদিন মানসপটে দেখেছি যে, আমি কোন এক সড়কের পাশে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে আছি, আর আমার সামনে হঠাৎ একটা বাস এসে থেমে গেল। সেই বাসের অটোমেটিক ডোর খুলতেই সেখান থেকে সিলভিনা নেমে এসে আমার মুখোমুখি হলো। আমার মানসপটে এটা কেন বারবার ভাসলো আমি জানি না।
আজ ঠিক এই ঘটনাটাই ঘটলো। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল সড়কটার পাশের চওড়া ফুটপাত দিয়ে আমি হেটে যাচ্ছিলাম। আমার মত কতজনাই তো হেটে যাচ্ছিলো, সাদা, কালো, লাল, নীল, হলুদ, নানা বর্ণের নারী-পুরুষ হেটে যাচ্ছে। জড় এই পৃথিবীর বুকে জীবিতদের গতি। হঠাৎ দেখা হলো আমাদের ব্যাচের সাজ্জাদের সাথে। অতিশয় সজ্জন আমার এই বন্ধুটি। ওর নাম সাজ্জাদ না রেখে সজ্জন রাখলেই বেশি মানাতো। কম্পিউটার সায়েন্সে পি.এইচ.ডি. করছেন তিনি। দেখা হতেই আমরা দুজন আলোচনায় মশগুল হয়ে গেলাম। মৃদু হেসে হেসে খুব ভদ্রতার সাথে কথা বলছিলেন তিনি। বিকালটা ছিলো সামারের বিকেল। মস্কোতে সামারগুলো ভীষণ সুন্দর হয়। আমার কাছে মনে হয় যে, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সড়কটিই মস্কোর সুন্দরতম সড়ক। চার লেনের চওড়া মসৃণ সড়ক। তার দুইপাশে চওড়া বাগান আইল্যান্ড। সেই আইল্যান্ডে বার্চ, ম্যাপেল, পাইন, ইত্যাদি বৃক্ষ যেমন আছে; তেমনি আছে বাহারী ফুলের কেয়ারী। পিটুনিয়া ফুলটার ইদানিং চল হয়েছে বেশ। আর সড়কের দুই তীরে হেটে চলছে নানা বর্ণের হাস্যজ্জ্বল তরুণ-তরুণীরা। সব মিলিয়ে কেমন একটা শান্তির মনোরম ও রোমান্টিক পরিবেশ! আমার ও সাজ্জাদের আলোচনার মাঝখানে হঠাৎ একটা ট্রলিবাস এসে থামলো ঠিক আমার সামনেই। এখানে ইউজুয়ালী বাস থামে না, থামে আর কয়েক মিটার সামনে, যেখানে বাস স্টপেজ আছে। কিন্তু কি এক কারণে এখানেই বাসটা থামিয়ে দিলো চালক। তারপর খুললো তার অটেমেটিক ডোর। ঠিক তার মাঝের অটোমেটিক দরজাটি দিয়ে নেমে এলো সিলভিনা।
আমাকে দেখে সিলভিনা যেন আকাশের চাঁদ হাতে পেলো। একগাল হেসে আমার দিকেই এগিয়ে এসে, "প্রিভিয়েত (শুভেচ্ছা)" বলে চুক করে একটা চুমু বসিয়ে দিলো আমার গালে। আমার পাশে দাঁড়ানো সাজ্জাদ অনেকটা হতঃবিহ্বল হয়ে গেলো! পরক্ষণেই নিজেকে সামলে নিয়ে সাজ্জাদ বললো। "আমি তাহলে যাই আজ।" বলেই সে আমাদের দুজনকে রেখে হন হন করে হেটে চলে গেলো। ইউরোপে সে তো আর এই প্রথমদিন নয়। অনেকগুলা বছর ধরেই আছে। তাই পরিস্থিতি বুঝেই সে তার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললো। আমার দিকে তাকিয়ে আরো বড় করে হাসলো সিলভিনা। এমন অবস্থায় আর নীরবতা বা জড়তা কোনটাই চলে না। আমিও সিলভিনার গালে চুমু এঁকে তাকে বললাম, "চলো তাহলে, কোন ক্যাফেতে গিয়ে বসি? যাবে?" সিলভিনা খুব মিষ্টি হেসে বললো, "অবশ্যই। আমি তো এখন ফ্রী-ই আছি। চলো বসি কোথাও।"
আমি সিলভিনাকে সাথে নিয়ে ক্যাম্পাসের ভিতরে একটি নির্জন ক্যাফের দিকে এগিয়ে গেলাম।
(চলবে)
----------------------------------------------------------------------------------------------
রচনাতারিখ: ১২ই জানুয়ারী, ২০২৪ সাল
রচনাসময়: সন্ধ্যা ০৭টা ২০ মিনিট
ছোট ছোট প্রেম - ২ (খ)
---------------------- রমিত আজাদ
(প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য)
সিলভিনাকে সাথে নিয়ে আমি ক্যাম্পাসের গভীরতায় প্রবেশ করলাম। সমাজতান্ত্রিক আমলে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ক্যাফে-ট্যাফে ছিলো হাতে গোনা কয়েকটা তাও খুব মামুলি টাইপ। হৈ-হুল্লোড় কিছু ছিলো না বললেই হয়। এখন হয়েছে উল্টাটা। ক্যাম্পাস ভরা শুধু ক্যাফে আর ক্যাফে। দুই একটা হাই কোয়ালিটি রেস্টুরেন্টও নির্মিত হয়েছে। ডরমিটরিগুলো আগে ছিলো নির্জন আর ছিমছাম। ছিলো পড়ালেখার জন্য শান্ত পরিবেশ। এখন প্রত্যেকটা ডরমিটরিতে মিনিমাম দুইটা করে ক্যাফে। সামনে, পিছনে অথবা ডানে-বামে। দিনরাত চব্বিশ ঘন্টা হাই ভলিউমে মিউজিক চলে। একটা ক্যাফেতে তো আফগানীরা বেলী ড্যান্সেরও আয়োজন করে থাকে। কিছু কিছু ক্যাফেতে আছে জুয়ার বিলিয়ার্ড। মাঝে মধ্যে ক্যাফের ভিতরে বা সামনে টালটক্কর খাবি খায়! এইসব দেখলে মেজাজ যায় সপ্তমে উঠে। সমাজতন্ত্র নামক স্বৈরাচারের পতন হয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হোক, নিজ দেশে মানুষের ভোটের ও বাক-স্বাধীনতার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হোক সেটা আমিও চেয়েছিলাম। সব সময়ই তাই চাই। কিন্তু সেটার মানে তো লাগামহীনতা নয়! যাহোক, হতে পারে যে পেন্ডুলাম মেথড-এর মত, একবার চরম বামে ছিলো তাই বাঁধনমুক্ত হয়ে দোল খেয়ে এবার চরম ডানে চলে এসেছে। আশা করি এভাবে দুলতে দুলতে একসময় ভারসাম্য অবস্থায় ফিরে আসবে সবকিছু।
আমিও দুলছিলাম সিলভিনাকে নিয়ে। আমরা দুজন দেহ ও মনে দুলতে দুলতে একটা ক্যাফেতে প্রবেশ করলাম। আসলে সিলভিনাই কৌশল করে আমাকে ঐ ক্যাফেটিতে নিয়ে গেলো। আমি জানতাম যে ঐদিকে কয়েকটা ক্যাফে আছে, কিন্তু ঠিক কোনটাতে গেলে যুৎসই হবে তা জানতাম না। আমার আসলে ক্যাফে-ট্যাফেতে যাতায়াত খুব একটা নাই। সিলভিনা আমাকে নিয়ে এমন একটা ক্যাফেতে ঢুকলো যেটা প্রায় বনের ভিতরে। বন বলছি এই কারণে যে, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের পিছনেই একটা ফরেস্ট পার্ক আছে। আমেরিকান ভাষায় বোধহয় এটাকে 'উড' বলে। আমরা যেই ক্যাফেতে ঢুকলাম ওটা ক্যাম্পাসের শেষে, ফরেস্ট পার্কটির ঠিক পাশেই। খুব নির্জন জায়গা। ক্যাফের ভিতরে ঢুকে আরো নির্জনতা দেখলাম। ঐ মুহুর্তে আমরাই একমাত্র কাপল ছিলাম ঐখানে। এর বাইরে আর মাত্র একটা লোক বসে ছিলো এক কোনায়। তবে ক্যাফের স্টাফরা ঠিকই আছে। খানা-পিনার সব ব্যবস্থাই রেডী। লো সাউন্ডে মৃদু মিউজিক বাজছিলো সাউন্ডবক্সে। ভিতরে কোন হৈচৈ নাই। আমার বেশ পছন্দ হলো জায়গাটা। সিলভিনা ভালো জায়গাই চুজ করেছে। এবার আমার কাজের পালা। মেয়ে তো আমাকে জায়গা দেখিয়ে দিলো। ছেলে হিসাবে ট্রিট দিতে হবে আমাকে। আমি সিলভিনাকে বললাম, "কি খাবে বলো?" স্টলের ওপাশে সেলস-গার্ল নয়, মাঝ বয়সী তবে রূপসী এক ভদ্রমহিলা বসে ছিলেন। উনাকে বেশ প্লিজেন্ট মনে হলো। ইউজুয়ালী রুশদেশে বিক্রেতারা প্লিজেন্ট হয়না, রাফ হয়। সমাজতান্ত্রিক অভ্যাসটা পুরোপুরি যায় নাই এখনো।
সিলভিনা আমাকে চকলেট কেক দেখিয়ে দিলো। আমি দুটা বড় টুকরা চকলেট কেক ও ন্যাচারাল বীন কফির অর্ডার দিলাম। কয়েক মিনিটের মধ্যেই সব রেডী করে ফেললেন বিক্রেতা সেলস-উম্যান। ন্যাচারাল বীনের ধুমায়িত কফির গন্ধে মনটা ভরে উঠলো। ঐ নিয়ে কর্নারের একটা টেবিলে আমরা দুজন মুখোমুখি না বসে, পাশাপাশি বসলাম। এই পাশাপাশি বসার পিছনে আমার একটা উদ্দেশ্য ছিলো।
প্রথমে চকলেট কেক আর কফি খেতে খেতে আমরা টুকটাক কথা বলতে থাকলাম। এখানে একটা কথা বলে রাখি। সিলভিনা সাউথ-আমেরিকান। ওর নেটিভ ল্যাংগুয়েজ স্প্যানিশ। আর আমার ন্যাটিভ ল্যাংগুয়েজ বাংলা। যেই ভাষার জন্য আমার পূর্বপুরুষরা প্রাণ দিয়েছিলো। ইংরেজ বা পাকিস্তানী কেউই আমাদের উপর অন্য ভাষা পুরোপুরি চাপাতে পারে নাই। অপরপক্ষে লাতিন আমেরিকায় হয়েছে উল্টাটা। উপনিবেশিক স্পেনীয়রা সেখানকার নারীদের বলাৎকার করে মিক্সড ন্যাশন পয়দা করেই খান্ত হয় নি; ওদের স্পেনীয় ভাষাটাও নেটিভদের উপর চাপিয়ে দিয়েছে। তাই ওখানে পাতাঝরার মতই ঝরে গিয়েছে অনেক অনেক ভাষা! আমার আর সিলভিনার ভাষা ভিন্ন ভিন্ন। তাই আমরা ঐ দেশে যেটা কমোন ভাষা, মানে রুশ ভাষা সেটাতেই কথা বলছিলাম। কিন্তু ঝামেলা একটা রয়েছে। সিলভিনা ঐদেশে নতুন। রুশ ভাষাটা এখনো সে পুরোপুরি রপ্ত করে উঠতে পারেনি। এখনো শিখছে। তাই ওর সাথে খুব কঠিন ওয়ার্ড, সেন্টেস ব্যবহার করে গভীর কথা বলা সম্ভব ছিলো না। এমনকি দুই-একটা মধুর কথা বলে যে ওকে পটাবো, সেটারও যুৎ ছিলো না। তবে ওকে পটানোর খুব একটা প্রয়োজন ছিলো বলে মনে হয় না। সিলভিনা আমার উপর পটেই ছিলো। তা নইলে ভরা জলসায় ঐভাবে কেউ চুক করে চুমু দিয়ে বসে না। এবং ওর চুম্বনটা হালকা নয়, বরং বেশ গভীরই ছিলো।
কেক ও কফি খেতে খেতে আমি ওর শরীরের সাথে ঘনিস্ট হতে শুরু করলাম। ওর মুখোমুখি না বসে পাশে বসার এটাই ছিলো আমার উদ্দেশ্য। এভাবে কাছে ঘেষতে ঘেষতে যখন সিলভিনার খুব কাছাকাছি হয়ে গেলাম। মানে আমার আর ওর শরীরের মধ্যে যখন ডিফারেন্স এক সেন্টিমিটারের কম, তখনও দেখলাম ও কিছু বলছে না। বরং ওর দৃষ্টিতে একটা মৃদু হাসির আভাস লক্ষ্য করলাম। সিলভিনা তার কেক খাওয়া শেষ করলো। আমি কেকের পুরোটা খেলাম না। এর কারণ দুইটা, প্রথমত কেকের টুকরাটা বেশ বড় ছিলো, দ্বিতীয়ত: এত ডার্ক চকলেট আমি খুব বেশি খেতে পারি না। সিলভিনা আমাকে বললো,
সিলভিনা: কেকটা খেয়ে শেষ করলে না কেন? খাও।
আমি: না। আর খাবো না।
সিলভিনা: কেন?
আমি: এত ডার্ক চকলেট কেক বেশি খেতে পারিনা আমি।
সিলভিনা: ও।
এরপর আমাকে অবাক করে একটা কাজ করলো সিলভিনা। আমার প্লেটটি ওর কাছে টেনে নিয়ে আমার খাওয়া চামচটি দিয়েই আমার রেখে দেয়া অবশিষ্ট কেকটুকু খেতে শুরু করলো ও। এই দৃশ্য দেখে আমার হৃদয়ে দোলা লেগে গেলো। ও কোন পেটের ক্ষুধা থেকে কাজটা করছিলো না। মেয়েরা এমন কাজ অন্য এক ক্ষুধা থেকে করে। আমি বুঝে গেলাম যে, বোঝার আর কিছু বাকি নাই।
আমি আরেকটু ঘনিষ্ট হয়ে আমাদের শরীরের মধ্যকার দূরত্বকে শূন্যে নামিয়ে আনলাম। তারপর পরম আবেশে আমার বাম হাতে দিয়ে ওর কোমর জড়িয়ে ধরলাম। এই পর্যায়ে সিলভিনা আমার দিকে তাকিয়ে, দৃষ্টি ঝলকিয়ে হাসলো। এই হাসির মানে আমি বুঝি। এটা আবাহন ও প্রশ্রয়ের হাসি।
ওভাবে সিলভিনাকে জড়িয়ে ধরে রাখতে আমার খুব ভালো লাগছিলো। আমার বাহুবন্ধনে বসে বেশ দুলে দুলে কেক খাচ্ছিলো সিলভিনা। কেক খাওয়া শেষ করে কফির পেয়ালায় চুমুক দিয়ে অবশিষ্টটাকে শেষ করলো। আমি বললাম, "আর কিছু খাবে?" সিলভিনা বললো, "না। আর কিছু খাবো না।" আমরা আরো কিছুক্ষণ ওখানে বসে রইলাম। ঐ বিকালে অমন সুন্দর পরিবশের একটা ক্যাফেতে বসে থাকতে দারুণ লাগছিলো। ওদিকে ব্যাকগ্রাউন্ডে একটা প্রেমের গান বেজে উঠলো, 'মালচিক মই' (মাই বয়)।
--------------------------------
খাওয়া-দাওয়া তো শেষ হয়ে গেলো এখন আর ওখানে বৃথা বসে থাকা যাবে না। বললাম, "এবার কি আমরা উঠবো?"
সিলভিনা: চলো উঠি।
উঠলাম ঠিকই, কিন্তু ওকে বাহুবন্ধন মুক্ত করে আমার মন ভালো লাগছিলো না। মনে হচ্ছিলো যে, এই সময়টা আরো দীর্ঘায়িত হওয়া উচিৎ।
আমরা ঐ রাশান উডের মধ্য দিয়ে ফিরতি পথে কিছুটা এলাম। তারপর দেখলাম যে একটা আপেল গাছের নীচে ছিমছাম একটি বেঞ্চি পাতা আছে। বললাম, "চলো বসি ঐখানে।" সিলভিনা বললো, "ঠিক আছে। চলো বসি।" আবার আমরা দুজনা পাশাপাশি বসলাম। আমি আবার ওর শরীরের সাথে ঘনিষ্ট হয়ে ওর কোমর জড়িয়ে ধরে বসলাম। অনেককাল আগে কোন একটি রুশ উপন্যাসে এমন একটা তৈলচিত্র দেখেছিলাম। একটা আপেল গাছের নিচে একটি যুগল আলিঙ্গনাবদ্ধ হয়ে বসে আছে। আমার মনে হলো আজ আমরাই যেন ঐ উপন্যাসের ছবি!
আমরা বেশ কিছুক্ষণ অমন অন্তরঙ্গ হয়ে বসে ছিলাম। হঠাৎ কি যে হলো সিলভিনার! সে বলে উঠলো,
সিলভিনা: নাহ্, এটা সম্ভব না। তুমি হাত ছাড়িয়ে নাও।
টিনের চালে কাক, আমি তো অবাক!
এত দূর এসে হঠাৎ এটা কি বলছে সিলভিনা! আমি তো ভেবেছিলাম হয়েই গেলো প্রায়।
আমি: (বিস্মিত) এ কি বলছো? কেন?
সিলভিনা: নাহ্। এটা ঠিক না। আমি পারবো না।
আমি: কেন ঠিক না? কেন পারবে না?
সিলভিনা হাত সরানোর কথা বললেও আমি হাত সরাইনি। যেমনটা ওকে জড়িয়ে ছিলাম, তেমনটাই জড়িয়ে আছি।
সিলভিনা: আমারই দেশের বড় আপুর সাথে তুমি আছো। আমি তোমার সাথে আসতে পারবো না। এটা অনৈতিক!
আমি: কার কথা কি বলছো তুমি?
সিলভিনা: বোঝ না, কার কথা বলছি আমি?
আমি: না, বুঝলাম না। কার কথা বলছো তুমি? নাম বলো।
সিলভিনা: আবার নামও বলতে হবে? আচ্ছা ঠিকআছে 'ইসাবেলা'।
আমি: (পুরাই আকাশ থেকে পড়লাম) কিসের ইসাবেলা?
সিলভিনা: কিসের না? বলো, কার ইসাবেলা?
আমি: কার ইসাবেলা?
সিলভিনা: একেবারে আকাশ থেক পড়লে যে? আমার দেশের বড় আপু ইসাবেলার সাথে তোমার প্রেম আছে না? সে তোমার গার্লফ্রেন্ড না?
আমি: এইসব কি বলছো তুমি? আমি তো অবাক!
সিলভিনা: অবাক হওয়ার ভান করছো, না? তোমাদের মধ্যে যে প্রেম আছে এটা অস্বীকার করতে পারো?
আমি: এইসব কথা কে বলেছে তোমাকে? ইসাবেলা?
আমার এই প্রশ্নে সিলভিনা চুপ মেরে গেলো। আমি আবারো বললাম, "শোন, ইসাবেলা তোমাকে কিছু বলেছে কিনা আমি জানি না। তবে ইসাবেলার সাথে আমার কোনরকম প্রেম-ট্রেম নাই।
আমার এই কথা শুনে সিলভিনা কিছু সময় চুপ থাকলো। তারপর এক ঝটকায় আমার হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বেঞ্চি থেকে উঠে দাঁড়িয়ে বললো, "না। আমার পক্ষে এই সম্পর্ক সম্ভব না। তুমি থাকো তোমার ইসাবেলাকে নিয়ে। আমি গেলাম।"
(চলবে)
--------------------------------------------------------------------------
রচনাতারিখ: ১২ই জানুয়ারী, ২০২৪ সাল
রচনাসময়: রাত ১০টা ২১ মিনিট
A Little Love Story
----------------------- Ramit Azad
Click here to claim your Sponsored Listing.
Category
Telephone
Website
Address
Dhaka
Dhaka
Anisul Hoque is a writer, poet, playwright, columnist lives in Dhaka, Bangladesh ([email protected]). Maa (Freedom's Mother) is his famous book. HarperCollins published his...
Dhaka
Kazi Nazrul Islam(1899-1976) is Bangladesh's national, also known as a 'rebel poet' for his courage.
Dhaka
Author, Independent Researcher, Tech & Digital Marketer, Business & Marketing Consultant, Voice-over
True Bangladeshi
Dhaka
Around the world, corruption hurts people. In many countries – like Bangladesh – it can even kil
Dhaka Commerce College
Dhaka, 121
salam sir is the best and boss in accounting ......
Dhaka
Licensed Aviation Maintenance Engineer. Owner of #AircraftGallery & Red Flame Bangladesh.