Dr. Ruckshana Liza's Gynae & Obs Care

চোখ রাখতে পারেন আগামীকাল রাত ৮ টায়।
মনের খবর টিভি

তিনি জন্মমাত্রই একজন বীর পালোয়ান পুত্র!!
জন্মতারিখ -২২/০১/২০২৪
জন্ম ওজন -৪.৮ কেজি।
সার্জন - এই আমি।
আজকে 1st post operative day তে তাকে দেখতে গেলাম।মাতা-পুত্র দুজনেই আলহামদুলিল্লাহ খুব ভালো আছে।বীর পালোয়ান পুত্র কাঁদছিলো।
আমি কোলে নিলাম। তিনি কান্না বন্ধ করলেন। হাসিমুখে ক্যামেরায় পোজ দিলেন।
ছবিতে প্রমান দেখুন 😊😊।

বাইরে তীব্র হাড় কাপানো শীত!!
সূর্যের দেখা পাওয়া ভার।
জনজীবন প্রায় বিপর্যস্ত।।

কিন্ত আমাদের জীবনের ভিন্ন চিত্র।থেমে নেই কোন কিছুই।হাসপাতালে, চেম্বারে পুরোদমে চলছে ইনডোর,আউটডোর রোগীর চিকিৎসা।করে যাচ্ছি জরুরী অপারেশন।

শীতকালে গাইনী বিভাগে complicated pregnancy-র সংখ্যা যেন একটু বেশি বেড়ে যায়।
শীতের কারনে রোগীদের অনেকেই সময়মত হাসপাতালে আসেন না।জটিলতা তৈরি হলে তখন আসেন।

গত ১ সপ্তাহে ৩ জন Intra uterine fetal death(পেটের ভেতরে বাচ্চার মৃত্যু) রোগী পেয়েছি।
হয়তো সময়মত আসলে বাচ্চাগুলোকে বাঁচানো যেতো!দীর্ঘ ৯ মাস প্রচন্ড কষ্ট করে,বাচ্চার জন্মের কিছুদিন আগে জরায়ুর ভেতরে বাচ্চার মৃত্যুর মতো কষ্ট আর কোন কিছুতে নেই!!

সবাইকে সচেতন থাকতে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। আমার রোগীরা ও তাদের সন্তানরা ভালো থাকলে আমিও ভালো থাকি।

ডাঃ রুখসানা মমতাজ (লিজা)
আবাসিক সার্জন (গাইনী)
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল,
সদর, দিনাজপুর।

আমার নতুন বছরের সূচনা আমার হাতে এই ছোট্ট রাজপুত্রের পৃথিবীতে আগমনের মধ্য দিয়ে।
HAPPY NEW YEAR.

It's a beautiful morning ❤️❤️
প্রতি শুক্রবারের মত আবারও সাপ্তাহিক চেম্বার বীরগঞ্জের পথে।
সবাইকে শুভ সকাল।

প্রায় এক বছর আগে এই রোগী যখন আমার কাছে গর্ভকালীন চেকআপে (ANC)আসে, আল্টাসনোগ্রাম করিয়ে দেখি ৫ মাসের প্রেগনেন্সি কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত বাচ্চার মাথার খুলি ও ব্রেইন তৈরি হয়নি, যেটাকে মেডিকেলের ভাষায় Anencephaly বলা হয়।
খুব কষ্ট পেলাম।

রোগীকে বাচ্চার সমস্যাটা বুঝিয়ে বললাম। জন্মগত ত্রুটি যুক্ত এই বাচ্চা গুলো যাদের মস্তিষ্ক ও খুলি তৈরি হয় না, এরা মাতৃগর্ভে বেঁচে থাকে, কিন্তু জন্মের পর বেশিক্ষণ বা বেশি দিন বেচে থাকে না।

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ছোট্ট একটি ভিটামিন ফলিক এসিডের অভাবে বাচ্চার এই সমস্যাটি হয়ে থাকে।
গর্ভকালীন প্রথম তিন মাসে মায়ের শরীরে ফলিক এসিডের ঘাটতি থাকলে বাচ্চার Anencephaly হতে পারে।

বাচ্চাটিকে ইনডাকশন দিয়ে নরমাল ডেলিভারি করানো হয় এবং পরবর্তীতে বাচ্চা নেয়ার ৩ মাস আগে থেকেই কিছু ঔষধ দেই ও পরীক্ষা নিরীক্ষা করাই।

আলহামদুলিল্লাহ বর্তমানে তিনি আবারো মা হতে চলেছেন।নিয়মিত গর্ভকালীন চেকাপে আমার কাছে আসেন।আল্লাহ পাকের অসীম রহমতে এখন পর্যন্ত তার অনাগত সন্তান সম্পুর্ন সুস্থ আছে। আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্টটিতে উনি বারবার উনার বাবুর মাথাটা ঠিক আছে কিনা জানতে চান।
রোগীর সাথে সাথে আমিও স্বস্তি পাই।

প্রত্যেক গর্ভবতী মায়ের কাছে অনুরোধ রইলো,১ম তিন মাসে অন্তত ১ বার আল্ট্রাসনোগ্রাম অবশ্যই করুন,আপনার অনাগত সন্তান সুস্থভাবে বেড়ে উঠছে কিনা সেটা নিশ্চিত হোন।

ডাঃ রুখসানা মমতাজ (লিজা)
আবাসিক সার্জন (গাইনী)
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল,
সদর, দিনাজপুর।

সাপ্তাহিক চেম্বার, বীরগঞ্জ।

আজ সকালে বীরগঞ্জএ আসার পর প্রচন্ড মাইগ্রেন এর ব্যথায় কষ্ট পাচ্ছিলাম। মাথা ব্যথা নিয়েই রোগী দেখছি।
এর মাঝেই মন ভালো করে দিলো আমার এই রোগী।
দেখে কি মনে হয় মাত্র ৭ দিন আগে তার সিজারিয়ান অপারেশন করেছি ??
হাসি মুখে বাবু নিয়ে ফলো আপে এসেছে।অনেক বেশি খুশি সে।ফুলের মত বাবুটাকে কোলে নিয়ে ইচ্ছে হলো আমার কাছে রেখে দেই।

আমার রোগীরা আমাকে ভালোবাসে,এটা আমার মত ক্ষুদ্র মানুষের জীবনে অসম্ভব বড় পাওয়া।
সারাজীবন এই ভালোবাসাটা ধরে রাখতে চাই।

ভালো থাকুক পৃথিবীর প্রতিটি মা,প্রতিটি নারী,প্রতিটি সন্তান।

ডাঃ রুখসানা মমতাজ (লিজা)
আবাসিক সার্জন (গাইনী)
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল,
সদর, দিনাজপুর।

এই রোগিনী যখন আমার চেম্বারে আসে তখন অলরেডি তার ডেলিভারির ব্যথা শুরু হয়ে গেছে।

পেটে জমজ বাচ্চা।পরীক্ষা করে দেখলাম জরায়ুর মুখ সম্পূর্ণ খুলে গিয়েছে,বাচ্চার পজিশন উল্টো (breech)।আলট্রাসনোগ্রাম রিপোর্টে দেখি দুটো বাচ্চাই উল্টো পজিশনে রয়েছে (both breech)।
বাচ্চা গুলো ম্যাচিওর হতে আরো এক সপ্তাহ বাকি.।
আমি রোগীকে রেফার করে দেয়ার সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করলাম।
কিন্তু মহান আল্লাহ পাক আমার হাত দিয়েই পৃথিবীতে তাদের জন্ম লিখে রেখেছেন।
লেবার টেবিল পর্যন্ত নেয়ার সুযোগ পেলাম না। চেম্বারের টেবিলেই ১ম বাচ্চাটা ডেলিভারি করলাম(২.৭ কেজি)।এরপর ডেলিভারি টেবিলে নিয়ে ২য় বাচ্চা ডেলিভারি করলাম।
আলহামদুলিল্লাহ বাচ্চা ২জন এবং মা দুজনেই ভালো আছে।সুস্থ হয়ে ছুটি নিয়ে বাড়ি গিয়েছে।

মাতৃসেবা হসপিটালের পুরো টিম পুরো ডেলিভারি প্রক্রিয়ায় আমাকে সহযোগিতা করেছে। তাদের সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও শুভকামনা।

ডাঃ রুখসানা মমতাজ (লিজা)
আবাসিক সার্জন (গাইনী)
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল,
সদর, দিনাজপুর।

যে কোন অবস্থাতেই চেষ্টা করি
সময় নিয়ে আপনাদের সমস্যা গুলো শোনার... হাসিমুখে আপনাদের পাশে থাকার....।।

বিয়ের নয় বছর হয়েছে। এই নয় বছর ধরেই একটি সন্তানের মা-বাবা হওয়ার জন্য অনেক চিকিৎসা করেছেন। দুই বছর আগে আমার চেম্বারে আসেন। আমি চিকিৎসা শুরু করি।

আলহামদুলিল্লাহ বছরখানেক চিকিৎসার পর তিনি গর্ভবতী হন। গর্ভকালীন পুরো সময়টা আমার তত্ত্বাবধানে ছিলেন। আল্লাহ পাকের অশেষ রহমতে বিয়ের নয় বছর পর পুত্র সন্তানের মা হয়েছেন।

প্রতিদিন কত শত ঘটনার সাক্ষী হই।
মহিলারা ও গর্ভবতী নারীরা বিভিন্ন রকমের অসুস্থতা নিয়ে হাসপাতালে আসেন। আমরা আমাদের সাধ্যমত চিকিৎসা দেই,প্রয়োজনীয় অপারেশন করি।
রোগীরা সুস্থ হয়ে বাড়ি যায়।

কিন্তু সন্তানহীন পিতা-মাতা বছরের পর বছর দীর্ঘ অপেক্ষার পর তাদের কোলে তাদের নিজের সন্তান তুলে দেয়ার মত আনন্দের সাথে আর কোন আনন্দের তুলনা হয় না।
মহান আল্লাহ পাক সেই আনন্দের একটি অংশ হওয়ার মতো তৌফিক দান করেছেন। আলহামদুলিল্লাহ।

ডাঃ রুখসানা মমতাজ (লিজা)
আবাসিক সার্জন (গাইনী)
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল,
সদর, দিনাজপুর।

I've received 3,000 reactions to my posts in the past 30 days. Thanks for your support. 🙏🤗🎉

উনার বয়স ৮০। স্বামী গত হয়েছেন বহু বছর আগে।সন্তানেরা সবাই নিজ নিজ সংসারে ব্যস্ত। দীর্ঘদিন রোগ পুষে রাখার কারনে জটিল আকার ধারণ করেছে।

হাসপাতালে গাইনী বিভাগে আমার ইউনিটে ভর্তি হওয়ার পর বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে উনার ফাইনাল ডায়াগনোসিস ছিল :

Large ovarian tumor (left) with 2nd degree utero-vaginal prolapse with big cystocele with rectocele with decubitus ulcer with hypertension.

ডিম্বাশয়ে উনার টিউমারটা ছিল অনেক বড় ও মূত্রথলির সাথে লাগানো। সাথে ছিল ওনার অনিয়ন্ত্রিত হাই প্রেসার।কার্ডিওলজিস্ট এর পরামর্শ নিয়ে প্রেসার নিয়ন্ত্রণ করা হলো,সাথে প্রতিদিন ড্রেসিং প্যাক দিয়ে ওনার জরায়ু মুখের ঘা শুকানো হলো,এরপর অপারেশনের জন্য ওনাকে রেডি করলাম।
ওটি টেবিলে শোয়ানোর পরে দেখা গেল উনার ব্লাড প্রেসার ২২০/১২০।অপারেশন ক্যানসেল হয়ে গেল।

পুনরায় প্রেসারের ওষুধ পরিবর্তন করে আবারও সময় নিয়ে তাকে অপারেশনের জন্য প্রস্তুত করলাম।

অবশেষে আমি উনার অপারেশন করলাম। উনার জরায়ু,ডিম্বাশয়ের টিউমার অপসারণ করা হলো মাসিকের রাস্তা দিয়ে নেমে যাওয়া মূত্রথলী ও পায়খানার রাস্তা ঠিক করে দেয়া হলো। এবং পরবর্তীতে যেন পুনরায় উনার prolapse না হয় সেভাবে ফিক্সেশন করে দেয়া হলো।

উনার এই বয়সে এই অপারেশন জটিল ও ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। গতকাল অপারেশনের দশ দিন পর উনি সেলাই কাটার জন্য হাসপাতালে এসেছিলেন।
হাসিমুখে জানালেন উনি ভালো আছেন।

আমি সেলাই কেটে প্রয়োজনীয় ঔষধ পত্র লিখে দিলাম এবং বাড়িতে বিশ্রাম নিতে বললাম।

হাসপাতালে কাজ করার সময় অনেক ডাক্তার ও রোগীদের ভিড়ের মাঝে থাকি।
চলে যাওয়ার সময় উনি আবার আমার কাছে এলেন

এবং এত মানুষের মাঝে আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন...."আমার মাথায় যতটা চুল আছে ততটা তোমার পরমায়ু হোক।"

কিছুক্ষণ নির্বাক হয়ে রইলাম।অজান্তেই চোখ ভিজে উঠলো।

হঠাৎ হঠাৎ রোগীদের কাছ থেকে পাওয়া তীব্র ভালোবাসা এবং দোয়া অনেক সীমাবদ্ধতার মাঝেও রোগী সেবা দিয়ে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়।
জীবনটাকে স্বার্থক মনে হয়।

ডাঃ রুখসানা মমতাজ (লিজা)
আবাসিক সার্জন (গাইনী)
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল,
সদর, দিনাজপুর।

pic courtesy- Dr.nipa, Dr.anannya.

খুব এলোমেলো আবহাওয়া বাইরে।ঠিক এসময়ে নারীদের জন্য কিছু পরামর্শ:

🌹গর্ভবতী নারীরা চলাফেরায় অত্যন্ত সাবধানতা অবলম্বন করুন।পিছলে পড়ে অনেক দুর্ঘটনা ঘটছে।

🌹খুব প্রয়োজন ছাড়া বাসার বাইরে বের হবেন না।
বের হলে মাস্ক ব্যবহার করুন।জ্বর, সর্দি,কাশির রোগী থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকুন।

🌹জ্বর, সর্দি,কাশি ও ইউরিন ইনফেকশন এর রোগী প্রচুর পাচ্ছি চেম্বারে।যেকোনো ইনফেকশন গর্ভবতী মায়ের অনাগত সন্তানের জন্য খুব ঝুঁকিপূর্ণ।
তাই দ্রুত চিকিৎসা নিন।

🌹প্রচুর পরিমান তরল,ফলের রস খান।

🌹অনেক মেয়েরা এখনো মাসিকের সময় কাপড় ব্যবহার করেন।এই স্যাতস্যাতে আবহাওয়ায় কাপড় ঠিকমতো না শুকালে ইনফেকশন এর ঝুকি বাড়ে।
স্যানেটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করুন।

🌹পরিষ্কার,পরিচ্ছন্ন,হাসি খুশি থাকুন।শরীর এবং মন দুটোই সুস্থ থাকবে।

ডাঃ রুখসানা মমতাজ (লিজা)
আবাসিক সার্জন (গাইনী)
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল,
সদর, দিনাজপুর

আজ থেকে ঠিক ১ মাস আগে আমার হাতে সিজারিয়ান সেকশনে জন্ম নেয় এই টুকটুকে হলুদ পরী।আজ অপারেশন পরবর্তী ফলো আপে এসেছে রোগী।

নরমাল ডেলিভারি হোক কিংবা সিজারিয়ান সেকশন,ডেলিভারি পরবর্তী চেক আপ ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ,যেটাকে আমরা মেডিকেলের ভাষায় PNC(Post natal care) বলে থাকি।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংগঠন (WHO) প্রদত্ত Post natal care এর উপাদান গুলো নিম্নরূপ:

1. নতুন মা এবং নবজাতক শিশুর মৌলিক পরীক্ষা

2. নতুন জন্মের পরে দ্রুত যত্ন

3.তাৎক্ষণিক পোস্টনেটাল যত্ন

4. পোস্টনেটাল চেক-আপ

5. স্তন্যপানে সাপোর্ট প্রদান

6. পরিবার পরিকল্পনা পরিসেবা

7. পুষ্টি এবং স্বচ্ছতা

8. মানসিক সমর্থন এবং মানসিক স্বাস্থ্য

9. নবজাতকের টিকা

10. স্বাস্থ্য পরামর্শ এবং শিক্ষা।

প্রসব পরবর্তী দিনগুলোতে যেকোন সমস্যায়,দ্বিধায়,প্রশ্নে,পরামর্শে হাসপাতালে চলে আসুন।

ভালো থাকুক পৃথিবীর সকল সন্তানেরা।
আর প্রতিটি নতুন মা মাতৃত্বকে উপভোগ করুক সুস্থ শরীর ও সুস্থ মনে।

ডাঃ রুখসানা মমতাজ (লিজা)
আবাসিক সার্জন (গাইনী)
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল,
সদর, দিনাজপুর।

আজকে হাসপাতালে বহির্বিভাগে আমার কাছে একজন রোগী এসেছিলো।গত এক বছরে সে তিনবার বাচ্চা নষ্ট করার ঔষধ খেয়েছে।
সর্বশেষ খেয়েছে গত মাসে।এখন আর bleeding বন্ধ হচ্ছে না।
রক্তশুন্য হয়ে সে একেবারে ফ্যাকাশে।

সরকারিভাবে এত প্রচার-প্রচারণা এবং সহজলভ্যতার পরও এখনও জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহনে অনেক দম্পতির জানার অভাব/অনীহা দেখা যায়।সাথে রয়েছে abortion inducing ঔষধের availability.

সকল মায়েদের এবং মেয়েদের অনুরোধ করছি,আপনারা সঠিক জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহনে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগলে বা পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ভয় পেলে হাসপাতালে চলে আসুন।

সব ধরনের শংকা ও দ্বিধা কাটাতে পাশে আছি।
সাথে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি, ইচ্ছেমতো বাচ্চা নষ্ট করার ঔষধ খেয়ে,না জেনে নিজের জীবনকে ঝুঁকির মুখে ফেলবেন না।

ডাঃ রুখসানা মমতাজ (লিজা)
আবাসিক সার্জন (গাইনী)
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল,
সদর, দিনাজপুর।

প্রতিদিন অনেকগুলো বাবু আমার হাত ধরে পৃথিবীতে আসে।ডাক্তার হওয়ার পর থেকে কত শত,হাজার বাচ্চা আমার হাতে জন্ম নিয়েছে, সেই হিসাব রাখা হয়নি কখনও।

তাদের মাঝে একজন এই Super hero.গর্ভকালীন নানান জটিলতা পেরিয়ে এই ডাক্তার আন্টির হাত ধরে পৃথিবীতে এসে তিনি জয় করে বেড়াচ্ছেন সবাইকে।

Regular ANC(গর্ভকালীন নিয়মিত চেক আপ)
প্রত্যেকটি গর্ভবতী মা এবং তার অনাগত সন্তানের জন্য খুব জরুরী।

মিষ্টি এই দম্পতি পুরো Pregnancy Period রেগুলার চেক আপ করিয়েছেন।
এখন বাবুর বয়স ১ বছর। এখনো মাঝে মাঝে দেখা করতে চলে আসেন।

পৃথিবীর সকল অনাগত মায়েরা ভালো থাকুক,সুস্থ থাকুক।সবার ঘর আলো করে আসুক একজন সুস্থ সবল সন্তান।

ডাঃ রুখসানা মমতাজ (লিজা)
আবাসিক সার্জন(গাইনী-অবস)
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল,
সদর, দিনাজপুর।

দিনাজপুরের মানুষের জন্য ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল (সদর হাসপাতাল) একটি ভরসার নাম।এই হাসপাতালে প্রতিদিন সেবা পাচ্ছে হাজার হাজার মানুষ।

হাসপাতালের গাইনী-অবস বিভাগে প্রতিনিয়ত দেয়া হচ্ছে গর্ভকালীন সেবা,জরুরী গাইনী সেবা,বহির্বিভাগ সেবা,প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা, প্রতিদিন হচ্ছে অসংখ্য নরমাল ডেলিভারি,করা হচ্ছে Routine এবং emergency অপারেশন।

সরকারি হাসপাতালের সেবা নিয়ে আমাদের অনেকের মাঝেই কিছুটা নেতিবাচক মনোভাব রয়েছে।কিন্তু আমি হলফ করে বলতে পারি,এক জায়গায় এত বিপুল পরিমান বিশেষজ্ঞ ও জরুরী সেবা সরকারি হাসপাতাল ছাড়া আর কোথাও পাওয়া সম্ভব নয়।

এই হাসপাতালের গাইনী বিভাগে Resident Surgeon হিসেবে বিশেষজ্ঞ সেবা দিতে এই আমি প্রতিদিন আছি আপনাদের পাশে।

যেকোনো গাইনী সমস্যায় চলে আসতে পারেন নিঃসংকোচে।

ডাঃ রুখসানা মমতাজ (লিজা)
আবাসিক সার্জন(গাইনী-অবস)
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল,
সদর, দিনাজপুর।

শুভ সকাল।
সাপ্তাহিক চেম্বারের পথে...
গন্তব্য - বীরগঞ্জ।
প্রতি শুক্রবারের মত আজকের সারা দিন টি বীরগঞ্জ বাসীদের জন্য।

কনসালটেন্ট হিসেবে আমার ১ম কর্মক্ষেত্র ছিল কাহারোল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স,দিনাজপুর।এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এর জন্মলগ্ন থেকে বিগত ৪০ বছরে কখনো কোন major অপারেশন হয়নি।
অপারেশন প্রয়োজন হলে রোগীদের বড় হাসপাতালে রেফার করা হতো।

যোগদানের ৩ মাসের মধ্যে অপারেশনের টিম ও থিয়েটার ready করে সবার সহযোগিতায় সিজারিয়ান অপারেশন শুরু করি।

ছবিতে কাহারোল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ সিজারিয়ান সেকশনে জন্ম নেয়া ১ম শিশু, শিশুর মা এবং সার্জন (সাথে আমার টিম)।

🦚গরমে ত্বকের যত্ন 🦚

🎁প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা 🎁
গরমকালে শরীরে বেশি মাত্রায় টক্সিন বা দূষিত পদার্থ জমা হয়। তাই গ্রীষ্মে বেশি পানি খাওয়া উচিত।পানি খেলে ত্বক হাইড্রেটেট থাকবে এবং উজ্জ্বলতা বাড়বে, নিজেকে সতেজ লাগবে। পানির পাশাপাশি সম্ভব হলে কচি ডাবের পানিও খেতে পারেন।

🎁সানস্ক্রিনের ব্যবহার🎁
গরমকালে রোদের তাপে ত্বক পুড়ে কালচে হয়েযেতে পারে। তা থেকে বাঁচতে সানস্ক্রিন অবশ্যই ব্যবহার করুন। রোদে বেরোনোর প্রায় ১৫ মিনিট আগে, মুখ-হাত-পা এবং শরীরের খোলা অংশে সানস্ক্রিন লাগান।

এক্ষেত্রে আপনার ত্বকের ধরন অনুযায়ী সানস্ক্রিন বাছাই করুন। তবে শুধু রোদ না, দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটার বা ল্যাপটপের সামনে কাজ করার আগে ও রান্না করার আগেও সানস্ক্রিন ব্যবহার করা বেশ কার্যকরী।

🎁ঘন ঘন মুখে পানির ঝাপটা দেয়া🎁
গরমকালে কম-বেশি সবারই ঘাম হয়। তাই বারবার মুখে পানির ঝাপটা দিন। এতে ত্বকে ঘাম বসবে না। ময়লাও জমবে না। সেই সঙ্গে বারবার মুখে পানির ঝাপটা দেয়ার ফলে নিজেকে অনেকটা সতেজও লাগবে।

🎁সাবান পরিবর্তন করা🎁
শীতকালে মুখ ধোয়ার জন্য যে সাবান বা ফেস ওয়াশ ব্যবহার করতেন, গরমে তা কিন্তু চলবে না। কারণ গরমে মুখের গ্রন্থি থেকে অতিরিক্ত তেল বের হয়। ফলে গরমে আলাদা ফেস ওয়াশ ব্যবহার করুন।

🎁প্রচুর ফল খাওয়া🎁
গরমে যতটা বেশি সম্ভব ফল খান। এতে শরীরে পানি ও অন্যান্য তরলের ভারসাম্য বজায় থাকবে। এছাড়া ফলে থাকা ভিটামিন, পুষ্টিগুণ ত্বক ও শরীর ভালো রাখতে বিশেষভাবে সাহায্য করবে।

🎁অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট জাতীয় ক্রিম ব্যবহার🎁
গরমকালে অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যুক্ত ক্রিম বা সেরাম ব্যবহার করুন। কারণ এর ফলে আপনার কোমল ত্বকের কোনো ক্ষতি হবে না। সেই সাথে ত্বকে অ্যান্টি-অক্সিডেন্টের পরিমাণও সুষমভাবে বজায় থাকবে।

🎁টোনার ব্যবহার🎁
এটি একধরনের প্রসাধনী। কসমেটিক্সের দোকানে পাওয়া যায় এই টোনার। গরমে টোনার ব্যবহার করা উচিত। কারণ টোনার ত্বকের তৈলাক্ত ভাব কমিয়ে দেয় এবং ত্বক পরিষ্কার রাখে। এমনকি টোনার ব্যবহার করলে ত্বকে সজীব ভাবও আসে।

🎁কম মেকআপ🎁
এই সময়ে যতটা সম্ভব কম মেকআপ ব্যবহার করুন। গরমে ঘাম বেশি হয়। তার ওপরে মেকআপ করলে ত্বকে চাপ পড়ে যা অত্যন্ত ক্ষতিকারক। গরমে মেকআপ সামগ্রীও বুঝে বাছাই করা উচিত। পাশাপাশি বাড়তি সতর্কতা হিসেবে বাইরে বেরোলে ছাতা ব্যবহার করুন।

♦️গর্ভাবস্থায় জ্বরের কারণ ও কমানোর ঘরোয়া উপায়♦️

গর্ভাবস্থায় জ্বর হলে তা গুরুত্ব সহকারে নেওয়া জরুরি। মনে রাখবেন গর্ভাবস্থায় ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসের কারণে জ্বর মা এবং নবজাতক উভয়ের জন্যই মারাত্মক হতে পারে।

গর্ভাবস্থায় জ্বরও ভাইরাল সংক্রমণের ইঙ্গিত দিতে পারে। ভাইরাল সংক্রমণ যেমন CMV, রুবেলা, হারপিস ইত্যাদি শিশুর উপর প্রভাব ফেলতে পারে এবং টেরাটোজেনিসিটি বা বৃদ্ধির সীমাবদ্ধতার কারণ হতে পারে।

💢 জ্বর কি?

শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে তাকে জ্বর বলে। প্রতিটি ব্যক্তির স্বাভাবিক তাপমাত্রা একে অপরের থেকে আলাদা হতে পারে, তবে বৈজ্ঞানিকভাবে এটি প্রায় 98.6 ফারেনহাইট। একটা বিষয় পরিষ্কার যে জ্বর কোনো রোগ নয়। এটি একটি লক্ষণ যে আপনার শরীর কোনো রোগ বা সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার চেষ্টা করছে।

💢গর্ভাবস্থায় জ্বরের কারণঃ

গর্ভাবস্থায় ইমিউন সিস্টেম দুর্বল হয়ে যায়, কারণ মা এবং শিশু উভয়কে রক্ষা করার জন্য অতিরিক্ত কাজ করতে হয়। এই সময়, শরীর সংবেদনশীল হয়ে ওঠে এবং সংক্রমণের প্রবণ হতে পারে, যা জ্বর হিসাবে দেখাতে পারে। নীচে দেওয়া পয়েন্টগুলির মাধ্যমে, গর্ভাবস্থায় সাধারণত জ্বর হওয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলি সম্পর্কে জানুন –

☘️ঠান্ডা বা ইনফ্লুয়েঞ্জা:
গর্ভাবস্থায় সর্দি, যা সাধারণত একটি ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাল সংক্রমণ, জ্বর হতে পারে। এই সময় সর্দি, কাশি এবং গলা ব্যথা হতে পারে। এটি সাধারণত 3-4 দিনের মধ্যে ভাল হয়ে যায়, তবে সমস্যাটি দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকলে অবিলম্বে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।

☘️ইউরিনারি ট্রাক্ট ইনফেকশন (ইউটিআই):
গর্ভাবস্থায় মহিলাদের মূত্রনালীর সংক্রমণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এটি একটি মূত্রনালীর সংক্রমণ, এতে প্রস্রাবের সঙ্গে রক্ত, ঠান্ডা লাগা এবং জ্বর হতে পারে। প্রস্রাবের ফ্রিকোয়েন্সি বৃদ্ধি, প্রস্রাবের সময় ব্যথা মূত্রনালীর সংক্রমণের লক্ষণ। গর্ভাবস্থায় এটি একটি সাধারণ সমস্যা নয়। এই কারণে, অকাল প্রসব এবং অ্যামনিওটিক ঝিল্লি ফেটে যাওয়ার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়।

☘️গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস (বা পেটের সংক্রমণ): গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস প্রধানত ভাইরাস এবং কিছু ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্ট হয়। এটি বমি, ডায়রিয়া এবং জ্বরের মতো লক্ষণগুলির সাথে আসে। এই সমস্যাটি একজন গর্ভবতী মহিলার ক্ষেত্রেও ঘটতে পারে এবং এর মারাত্মক পরিণতি হতে পারে।

☘️ডেঙ্গু এবং ম্যালেরিয়া:
এটি মূলত মশার কামড়ের কারণে হয়। প্রধান উপসর্গগুলো হলো উচ্চ গ্রেডের জ্বর, জ্বরের সঙ্গে ঠান্ডা লাগা, ঘাম, চরম দুর্বলতা, মাথাব্যথা, চোখের পেছনে ব্যথা (ডেঙ্গু)। গর্ভবতী মহিলাদের জন্য মশার কামড় থেকে নিজেদের রক্ষা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ম্যালেরিয়া সংক্রমণের কারণে গর্ভপাত হতে পারে, প্রিটারম ডেলিভারি হতে পারে এবং এমনকি ভ্রূণের সংক্রমণের ঘটনাও রয়েছে।

☘️টাইফয়েড:
প্রধান উপসর্গগুলো হলো জ্বর, দুর্বলতা, ডায়রিয়া, বমি, ফোলাভাব, পেটে ব্যথা, মাথাব্যথা, ক্ষুধামন্দা, মুখে রুচিহীনতা। জটিলতা প্রতিরোধের জন্য অ্যান্টিবায়োটিকের প্রাথমিক সূচনা অপরিহার্য।

☘️করোনাভাইরাস সংক্রমণ:
করোনা ভাইরাস সংক্রমণও এখন একটি সাধারণ কারণ। এটি কোনো লক্ষণ ছাড়াই ঘটতে পারে। তবে প্রধান উপসর্গগুলো হলো জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট, গন্ধ ও স্বাদ অনুপস্থিতি। ভ্রূণের সংক্রমণের ঝুঁকি কম হলেও সতর্কতা প্রয়োজন। কোভিড সংক্রমণ এড়াতে, ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ রাখুন, মাস্ক ব্যবহার করুন এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন।

☘️ভ্রূণের সংক্রমণ ( Chorioamnionitis):
যোনিপথে ফুটো হওয়ার সমস্যা থাকলে মেমব্রেন ফেটে যাওয়ার জন্য ডাক্তারের কাছে যেতে হবে। ঝিল্লি ফেটে যাওয়ার পরে, ভ্রূণ যোনি ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রামিত হতে পারে, যা শিশুর জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক। এর জন্য প্রয়োজন অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসা এবং শিশুর তাড়াতাড়ি ডেলিভারি।

☘️গর্ভাবস্থায় জ্বরের অন্যান্য বিরল কারণগুলির মধ্যে রয়েছে হেপাটাইটিস, পাইলোনেফ্রাইটিস (কিডনি সংক্রমণ), যক্ষ্মা, কোলানজাইটিস, নিউমোনিয়া।

💢গর্ভাবস্থায় জ্বর কীভাবে শিশুর ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারেঃ

☘️ভ্রূণের বিকাশে ব্যাঘাত-
গর্ভাবস্থায় হাইপারথার্মিয়া (অস্বাভাবিকভাবে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি) গর্ভপাত ঘটাতে পারে বা ভ্রূণের বিকাশে বাধা হতে পারে। গর্ভাবস্থায় জ্বর, বিশেষ করে জন্মগত ত্রুটির সাথে যুক্ত।

☘️জন্মগত ত্রুটির ঝুঁকি (টেরাটোজেন)- রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্রের একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে যেসব মহিলারা গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে বা তার ঠিক আগে জ্বরে আক্রান্ত হন তাদের নবজাতকের জন্মগত ত্রুটির ঝুঁকি বেশি থাকে।

☘️নিউরাল টিউব ডিফেক্টস- গবেষণার মাধ্যমে দেখা গেছে যে নারীদের গর্ভাবস্থায় জ্বর ছিল তাদের নবজাতকের মধ্যে ‘নিউরাল টিউব ডিফেক্ট’ হওয়ার প্রবণতা বেশি।

☘️অটিজম এবং শিশু বিকাশ- একটি গবেষণায় নিশ্চিত করা হয়েছে যে গর্ভাবস্থায় জ্বর শিশুর বিকাশকে প্রভাবিত করে এবং অটিজম হতে পারে।

💢গর্ভাবস্থায় জ্বরের সাথে কীভাবে মোকাবিলা করবেনঃ
গর্ভাবস্থায় জ্বর হতে পারে, তাই এটি নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করবেন না। বাড়িতে একটি থার্মোমিটার রাখুন এবং আপনার তাপমাত্রা পরীক্ষা করতে থাকুন। যদি এটি শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা (98.6 ফারেনহাইট) থেকে অনেক বেশি হয় তবে অবিলম্বে আপনার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন। শুরুতে, আপনি নিম্নলিখিত সহজ পদ্ধতিগুলি অবলম্বন করে ক্রমবর্ধমান জ্বর কমাতে পারেন।

১. আরামদায়ক এবং ঢিলেঢালা পোশাক পরুন। সুতির পোশাক আপনার জন্য বেশি মানানসই হবে। ঠান্ডা লাগলে চাদর বা কম্বল পরতে পারেন।

২. এই সময়ে হাইড্রেটেড থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মাঝে পানি পান করতে থাকুন।

৩. শরীরকে যতটা সম্ভব বিশ্রাম দিন। জ্বরের কারণে মাথা ঘোরাও হতে পারে, তাই বেশি নড়াচড়া করবেন না।
একটি ভাল বায়ুচলাচল ঘরে থাকার চেষ্টা করুন।

৪. আপনার কোন নির্দিষ্ট উপসর্গ থাকলে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করুন।

💢গর্ভাবস্থায় জ্বরের ওষুধ
গর্ভাবস্থায় জ্বর মোকাবেলা করার জন্য আপনি কিছু নির্বাচনী ওষুধ গ্রহণ করতে পারেন। নিচে জেনে নিন কোন ওষুধ আপনার জন্য সঠিক হবে–

জ্বরের জন্য বাজারে অনেক ওষুধ পাওয়া যায়, কিন্তু গর্ভাবস্থায় খুব কমই নিরাপদ বলে মনে করা হয়। সাধারণত গর্ভাবস্থায় ডাক্তাররা প্যারাসিটামল দিয়ে থাকেন। প্যারাসিটামল একটি নিরাপদ ওষুধ এবং এটি ভ্রূণকে প্রভাবিত করে না, যদি না খুব বেশি মাত্রায় গ্রহণ করা হয়।

সঠিক ওষুধ বেছে নেওয়ার জন্য আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করাই ভালো, কারণ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া আপনার এবং আপনার শিশুর জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।

💢গর্ভাবস্থায় জ্বর কমানোর ঘরোয়া উপায়ঃ

গর্ভাবস্থায় জ্বর কমানোর জন্য প্রাকৃতিক প্রতিকার গ্রহণ করা যেতে পারে। এটি সাধারণ সর্দি, ফ্লু এবং কিছু সংক্রমণ প্রতিরোধেও সহায়ক। যেমন-
তুলসি চা,আদা ও মধু,মেথির জল ইত্যাদি।

💢গর্ভাবস্থায় জ্বর কমাতে সতর্কতাঃ

💦কোন বিষয়গুলো মাথায় রাখা জরুরি-

☘️ডায়েটে বিশেষ মনোযোগ দিন। আপনার খাদ্যতালিকায় ফল এবং সবুজ শাকসবজি অন্তর্ভুক্ত করতে ভুলবেন না। এছাড়াও, এই সময়ে, ডাক্তারের কাছ থেকে সঠিক ডায়েট সম্পর্কিত তথ্য নিন।

☘️যেকোনো সংক্রমণ এড়াতে, নিজেকে পরিষ্কার রাখুন এবং এর মধ্যে আপনার হাত ধুয়ে নিন।

☘️নিয়মিত মেডিকেল চেকআপ করান।

☘️আপনি চাইলে থার্মোমিটার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করতে পারেন।

☘️এলার্জি হতে পারে এমন খাবার থেকে দূরে থাকুন।

☘️যেকোন অস্বস্তির ক্ষেত্রে অবিলম্বে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।

💢ইমার্জেন্সি কন্ট্রাসেপ্টিভ পিল (Emergency Contraceptive Pill – ECP)💢

☘️ ইমার্জেন্সি পিল কি ?

এটি এমন এক ধরনের পিল যা অরক্ষিত বা অনিরাপদ সহবাসের পর নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ব্যবহার করলে গর্ভে সন্তান আসার সম্ভাবনা প্রায় থাকে না।

জরুরি গর্ভনিরোধক খাবার পিল বা ইসিপি কোনো নিয়মিত পদ্ধতি নয়। এটি শুধুমাত্র জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহার করা যায়। জরুরি গর্ভনিরোধক খাবার পিল বা ইসিপি গর্ভধারণ রোধ করে, কখনও গর্ভপাত ঘটাতে সাহায্য করে না।

☘️ ইমার্জেন্সি পিল কখন নেয়া যায়?

*সহবাসের সময় আপনি বা আপনার সঙ্গী যদি কোন জন্মনিরোধক পদ্ধতি ব্যবহার না করেন।

*যদি সহবাসের সময় আপনার সঙ্গী কনডম সঠিক ভাবে ব্যবহার না করে থাকেন, অথবা কনডম ফেটে গিয়ে থাকে।

*যদি আপনি মনে করেন যে, আপনার জরায়ুতে অবস্থিত জন্মনিরোধক (আই, ইউ, ডি) স্থান্যচুত হয়েছে!

* যদি আপনার যোনিতে অবস্থিত ডায়াফ্রাম অথবা জন্ম নিরোধক ক্যাপ সরে গিয়ে থাকে ।

* যদি নিরাপদকাল গণনায় ভুল হয়।

* যখন কোনো পদ্ধতি ছাড়া বা অনিচ্ছাকৃত বা জোরপূর্বক সহবাস হয়।

অরক্ষিত সহবাসের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই জন্মনিরোধক ব্যবহার করতে হবে। তবে সহবাসের ১২ঘন্টার ভিতরে খেলে ভাল হয় অবশ্যই ৭২ ঘন্টার পরে খাওয়া উচিৎ নয় ।

☘️ জরুরি গর্ভনিরোধক পিলের অসুবিধা-

*নিয়মিত পদ্ধতি হিসেবে এই খাবার বড়ি ব্যবহার করা যায় না। অন্যান্য জন্মনিরোধক পদ্ধতির মতো এটা কার্যকরও নয়।

*সহবাসের মাধ্যমে ঘটা যৌনরোগ প্রতিরোধ করে না যেটা কনডম করতে পারে।

*পদ্ধতিটি শুধুমাত্র জরুরিভাবে ব্যবহারের জন্যই নির্দিষ্ট করা হয়েছে।

☘️ জরুরি গর্ভনিরোধক পিলের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া :

*বমি বমি ভাব বা বমি হতে পারে
*মাথা ব্যথা হতে পারে
*মাথা ঝিমঝিম করতে পারে
*অবসন্নতা বোধ হতে পারে
* স্তনে ব্যথা হতে পারে
* মাসিকের সমস্যা হতে পারে
* যোনিপথে রক্তক্ষরণ হতে পারে

* যদি পিল খাওয়ার পর ৩ ঘন্টার ভিতর বমি হয়ে যায় তাহলে সাথে সাথে আরো একটা পিল খেতে হবে।

☘️ যখন চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে

১. রক্ত এক সপ্তাহের বেশি গেলে।

২. পেটে তীব্রব্যথা তিন-পাঁচ সপ্তাহের বেশি থাকলে।

৩. তিন সপ্তাহের মধ্যে ঋতুস্রাব না হলে।

💥💥জরুরি গর্ভনিরোধক পিল ব্যবহারে সতর্কতা:

*জরুরি গর্ভনিরোধক খাবার পিল বা ইসিপি পরিবার পরিকল্পনার কোনও নিয়মিত পদ্ধতি নয়। এটি শুধুমাত্র জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহার করা যায়।

* ইমার্জেন্সি পিল ব্যবহারের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞ ডাক্তার বা গাইনোকোলজিস্ট -এর পরামর্শ নেওয়া উচিত। অরক্ষিত যৌন মিলনের পর ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ইমার্জেন্সি পিল খান অনেক নারীরা। এই পিলের সাইড ইফেক্ট বা অপকারী দিকই বেশি।

*মাসে ১ বারের বেশি বা ঘনঘন ইমার্জেন্সি পিল খাওয়া উচিত নয়।

*যেসব মায়েরা বাচ্চাকে বুকের দুধ পান করান তাদের ক্ষেত্রে এই পিলের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া বেশি দেখা দিতে পারে। সাধারণত এই পিল গুলো খেলে বুকের দুধের পরিমান কমে যায়।

*এক গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ইমার্জেন্সি পিলের ব্যবহারে মায়ের জিনগত পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে।

* বারবার ইমার্জেন্সি পিল ব্যবহারের কারণে ডিম্বাশয়ে নানা প্রতিক্রিয়া হতে শুরু করে। যার ফলে জিনগত পরিবর্তন হয় আর তার প্রভাব সরাসরি পড়ে গর্ভজাতের উপরে। ফলে তার ক্রোমোজমে ত্রুটি দেখা দেয়।

তাই শুধুমাত্র জরুরী প্রয়োজনেই ডাক্তারের পরামর্শ সাপেক্ষে জরুরি গর্ভনিরোধক পিল গ্রহন করুন। ।

মেনোপজ – নারীর জীবনের বিশেষ অধ্যায়:

ক্লাস নেয়ার সময় হঠাৎ করেই ৫৩ বছর বয়সী আফরোজা অনুভব করলেন তার সারা শরীরের ভিতর দিয়ে বিদ্যুৎ প্রবাহের মতো কি যেন হলো! সাথে তীব্র গরমের অনুভূতি, ঘাম। আজই প্রথম নয়। এখন প্রায়ই এমন হচ্ছে। নিজেকে সামলে ক্লাস নেয়ায় মন দেয়ার চেষ্টা করলেন তিনি।

গৃহিনী শাহানার বয়স ৪৭ চলছে। আজকাল অল্পতে মেজাজ হারাচ্ছেন, সাথে শরীরে প্রচন্ড জ্বালাপোড়া। নিজেকে কেমন যেন ফেলনা মনে হচ্ছে তার। সবাই নিজের মতো করে ব্যস্ত, কারও যেন তার প্রতি নজর নেই। নিজের বয়স হিসাব করে তার মনে হলো স্বামীর সাথে আলোচনা করে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া দরকার।

তানিয়া একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিতে বড় পদে চাকুরি করেন। বয়স ৪২। খুবই স্বাস্থ্য সচেতন, নিয়মিত জিম করেন। এই বয়সেও তাই ত্রিশের বেশি মনে হয় না তাকে। ইদানীং তার রাতে একদমই ঘুম হচ্ছে না। কোমরের হাড়ে ব্যথা, পিরিয়ড অনিয়মিত, প্রচুর ব্লিডিং হচ্ছে। এসব নিয়ে কারও সাথে কথা বলবেন কিনা ভেবে পাচ্ছেন না।

এই তিনজন ভিন্ন বয়সের নারী একই সমস্যার ভিতর দিয়ে যাচ্ছেন। অনেকগুলো শারীরিক অসুবিধার জন্য দায়ী এই সমস্যাকে বলা হয় ‘মেনোপজ পূর্ববর্তী অবস্থা’।

মেনোপজ কি?

সহজ ভাষায় মেনোপজ হচ্ছে নারীদের পিরিয়ড স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া। মেয়ে শিশুর জন্মের সময়েই নির্দিষ্ট সংখ্যক ডিম্বাণু জরায়ুতে জমা থাকে। প্রতিমাসে পিরিয়ডের সাথে অনিষিক্ত ডিম্বাণু বের হয়ে যাওয়ায় সঞ্চিত ডিম্বাণুর সংখ্যা ধারাবাহিকভাবে কমতে থাকে। এভাবে কমতে কমতে ডিম্বাণুর সংখ্যা একেবারে শেষ হয়ে যাওয়ার অবস্থাকেই ‘মেনোপজ’ বলে।

কোন বয়সে হয়?

এ দেশের আবহাওয়ায় সাধারণত ৪৮ থেকে ৫৪ বছর বয়সে নারীদের মেনোপজ হয়। গড় হিসাব করলে এটাকে ৫১ বছর ধরা যায়। অনেকের অবশ্য আর্লি মেনোপজ হয়ে থাকে। সেটার নির্দিষ্ট বয়স নেই, তবে সাধারণত চল্লিশোর্ধ হবার পরেই হয়। আর্লি মেনোপজ জেনেটিক্যালি হয়ে থাকে। অর্থাৎ বংশের মা, খালা, নানির থেকে প্রাপ্ত জিনোমের জন্য আর্লি মেনোপজ হয়। অসুস্থতা জনিত কারণে অস্ত্রোপাচারের মাধ্যমে জরায়ু অপসারণ করা হলে সেটাকে সার্জিক্যাল মেনোপজ বল।

মেনোপজের লক্ষণ

মেনোপজের সাধারণ কিছু লক্ষণ হলো লম্বা সময় ধরে পিরিয়ড অনিয়মিত থাকা, শরীরের বিভিন্ন হাড়ের জয়েন্টে ব্যাথা, রুক্ষ্ম মেজাজ, হট ফ্ল্যাশ, দেহের মধ্যভাগে হঠাৎ করে চর্বি জমা, ঘুম একেবারে কমে যাওয়া ইত্যাদি। মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়া, নিজেকে ফেলনা ভাবা, অল্পতে মুড বদল হওয়া, নতুন পরিস্থিতির সাথে খাপ খাওয়াতে না পারা ইত্যাদি হচ্ছে মেনোপজের মানসিক লক্ষণ।



মেনোপজের প্রভাব

মেনোপজের শারীরিক ক্ষতিকারক প্রভাব হচ্ছে ‘অস্টিওপোরোসিস’ বা হারক্ষয়। এ সময় শরীরে ক্যালসিয়াম কমতে থাকে বলে নারীর কোমরের হাড় কমজোরি হয়ে যায়। খুব সামান্য আঘাতেই তখন বড় ধরনের ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। কোমর এবং শরীরের নীচের দিকের হাড় দূর্বল হয়ে যাওয়ায় মেনোপজের সময় বেশিরভাগ নারী কোমর ব্যাথায় ভোগেন।

মেনোপজের শারীরিক সমস্যাগুলো অনেক অস্বস্তিকর হলেও মনের উপরই এর প্রভাব বেশি। বেশিরভাগ নারী এসময়ের পরিবর্তন মেনে নিতে পারেন না। নানারকম মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। আমাদের দেশে সাধারণত পুরুষদের স্ত্রীর মেনোপজ সম্পর্কিত বিষয়ে যথাযথ ধারণা না থাকায় এ সময়ে দাম্পত্য কলহ বাড়ে। তুচ্ছ বিষয় নিয়ে বড় ধরনের ঝগড়া হয়, মনোমালিন্য ঘটে। সন্তানদের সাথেও দূরত্ব তৈরি হয়। বাল্যকাল থেকে চলে আসা অভ্যস্ততা হঠাৎ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় নারীদের মাঝে শূন্য অনুভূতি, কি যেন নেই, জীবন থেকে কিছু হারিয়ে গেলো, বুড়িয়ে গেলাম এইসব মানসিক দুশ্চিন্তা দেখা দেয়।

ভালো থাকার মূলমন্ত্র

মেনোপজ নিয়ে বেশিরভাগ নারী অসচেতন থাকেন বলে হুট করে উপসর্গ দেখা দিলে নিজেরা খেই হারিয়ে ফেলেন। নিজেকে নিয়ে সচেতন থাকলে, নিজের প্রতি যত্নবান হলে এই সমস্যা স্বাভাবিকভাবে মোকাবেলা করা যায়। বেশিরভাগ নারী সংসার, সন্তান, পারিবারিক দায়িত্ব এসব নিয়ে ব্যস্ত থাকার কারণে নিজের দিকে তাকানোর খুব একটা সময় পান না। এসব কারণেই মেনোপজের সময় তারা অনেক বেশি ভেঙ্গে পড়েন।

এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে প্রথমেই নিজেকে ভালোবাসতে হবে।
শত ব্যস্ততার মাঝেও নিজের জন্য আলাদা করে কিছুটা সময় রাখতে হবে, নিজের যত্ন করতে হবে। নিজের সমস্যা বুঝে মেনোপজের সময় দৈনন্দিন কাজের পাশাপাশি বাগান করা, লেখালেখি করা, সূচিকর্ম করা, বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাওয়া, নিজের কোন অপূর্ণ শখ পূরন করা ইত্যাদি কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখলে মানসিক সমস্যা কাটিয়ে ওঠা অনেকাংশেই সম্ভব।

মেনোপজের কারণে সৃষ্ট সমস্যার চিকিৎসা

যেহেতু মেনোপজ একটি প্রাকৃতিক পরিবর্তন তাই শরীর ধীরে ধীরে এই পরিবর্তনের সাথে নিজেকে মানিয়ে নেয়। সাধারণত তিন থেকে চারবছরের মাঝে শরীর মেনোপজ পরবর্তী অবস্থার সাথে অভ্যস্থ হয়ে যায়। কিন্তু দীর্ঘসময় পরেও যদি শারীরিক কিংবা মানসিক সমস্যা দূর না হয় সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের কাছে যাওয়া আবশ্যক। ডাঃ জাহানারা জানান, ‘হটফ্ল্যাশ, নাইট সোয়েট, ভ্যাজাইনাল ড্রাইনেস, চুলকানি এসব শারীরিক সমস্যার জন্য ঠিকমত চিকিৎসা দরকার। প্রয়োজনে হরমোন ট্রিটমেন্টও করা হয়ে থাকে। ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্টেরন হরমোনের ক্ষরণ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এই সমস্যাগুলো হয় বলে এসব হরমোন প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে সমস্যা কমিয়ে আনা যায়। তবে হরমোনের ট্রিটমেন্ট বেশ খরচের এবং সময়সাপেক্ষ।’

মেনোপজের সময় নারীদের মানসিক সমস্যা দীর্ঘায়িত হলে সেটাকে ‘এম্পটিনেস সিনড্রোম’ বলে। এমন সমস্যা হলে অবশ্যই মানসিক ডাক্তারের শরণাপন্ন হয়ে প্রপার কাউন্সিলিং করা দরকার। সেই সাথে পরিবারের সকলের আন্তরিকতাপূর্ণ সহযোগিতামূলক ব্যবহার মানসিক সমস্যা দূর করায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

মেনোপজে খাদ্যাভ্যাস ও ব্যায়াম

মেনোপজের সময় শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা দেয়। তাছাড়া পরিণত বয়সে চাইলেও সব ধরণের খাবার খাওয়া যায় না। তাই এ সময় পুষ্টিকর খাবারের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। প্রোটিন ও ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার নিয়মিত খেতে হবে। কিডনি বিন, হোলগ্রেইন চালের আটা, লাল চালের ভাত, মুরগির মাংস, কলিজা, ব্রোকলি, সবুজ শাকসব্জি, গরুর দুধ এসব পুষ্টিকর খাবার রাখতে হবে নিত্যদিনের খাদ্য তালিকায়।

ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট ও ভিটামিন বি কমপ্লেক্স খাওয়া যেতে পারে। অতি অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে। এতে শরীর সুস্থ থাকার পাশাপাশি ত্বকও ভাল থাকবে। হরমোনের পরিবর্তন ঘটায় এ সময় অনেকের দেহের মধ্যভাগে মেদ জমে। এটা দূর করতে নিয়মিত হাঁটার অভ্যাস গড়ে তোলা যেতে পারে, কিংবা ঘরে বসেই করা যেতে পারে বিভিন্ন ধরনের ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ।

পরিবারের দায়িত্ব

মেনোপজের সময় হওয়া শারীরিক ও মানসিক অসুবিধার সময় পরিবারের সবাইকে নারীদের ব্যাপারে অধিকতর যত্নশীল হতে হবে। বিশেষ করে স্বামী ও সন্তানদের এই বিষয়ে সচেতন ভূমিকা পালন

মেনোপজ মানেই কি যৌনজীবনের শেষ??

মেনোপজের সময় হরমোনের ঘাটতির কারণে ভ্যাজাইনাল ড্রাইনেস দেখা দেয়। এ সমস্যা সমাধানের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী লুব্রিকেন্ট ব্যবহার করা যেতে পারে। তাছাড়া এই সময়ে ছোট বাচ্চার দায়িত্ব কিংবা সার্বক্ষনিক তটস্থ থাকা লাগে না বলে যৌনজীবন হতে পারে নির্বিঘ্ন। গর্ভধারনের ভয় থাকে না বলে স্বামী স্ত্রী দুইজনই নিশ্চিন্ত থাকতে পারেন। শারীরিক ও মানসিক সমস্যায় পার্টনার যথাযথ সাপোর্ট দিলে এই সময়ে আনন্দময় যৌনজীবন উপভোগ করা সম্ভব।

মেনোপজ নারীজীবনের স্বাভাবিক একটি অবস্থা। যদিও অসেচতনতার কারণে অনেকেরই পরিবর্তিত শারীরিক অবস্থার সাথে মানিয়ে নিতে কষ্ট হয়, তবুও এখনকার ব্যস্ত নারীদের এ নিয়ে বিলাপের সময় নেই। ‘বুড়ি হয়ে গেলাম, জীবন থমকে গেলো’- এই ভাবনার দিন ফুরিয়েছে। এখনকার আধুনিক নারীরা নিজেদের শরীর নিয়ে অনেক সচেতন। তারা নিত্য কাজের পাশাপাশি নিজেদের জন্যও আলাদা সময় বের করে নেন। পাশাপাশি সচেতন, সাপোর্টিভ পার্টনার তাদের মানসিক শক্তি বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ। আজ তাই অনেক নারীই মেনোপজের সময়টা সুস্থতা ও আনন্দের সাথে অতিক্রম করতে পারছেন।

c.Farhana Tandra