Love Stories Writer シ︎
ভালোবাসার গল্প, Love Story ,
#প্রতিশোধে_প্রণয়
#মাহমুদা_লিজা
পর্বসংখ্যাঃ১২
মায়ের কথা বড্ড মনে পড়ছে তানহার। গত দুইমাস মায়ের সাথে দেখা হওয়াতো দূর কথাটাও হয়নি। মায়ের প্রতি চাঁপা অভিমানটা এখনো মনে পুষে রেখেছে মেয়েটা। উদাস হয়ে জানালা পেরিয়ে দৃষ্টি রাখল ঐ দূর আকাশটায়। আকাশ দেখলে নাকি তার মন ভালো হয়ে যায়।
শান্তর অনুপস্থিতিতে তানহা অপেক্ষা করে কখন ঐ মানুষটা আসবে। অন্যান্য দিনের তুলনায় আজ একটু বেশিই দেরী হচ্ছে শান্ত আসতে।
অলস সময়টা টেলিভিশনের চ্যানেলগুলো রিমোট কন্ট্রোলের সাহায্যে এ মাথা থেকে ও মাথা ঘুরে কাটিয়ে দেয় তানহা। দৌড়ে গিয়ে দরজার কাছটায় কতক্ষণ বসল। এখনো আসার নাম নেই শান্তর।
অন্যান্য দিন ছয়টায় ফিরলেও ঘড়িতে এখন নয়টা বাজতে চলেছে। বারবার দরজার দিকে তাকিয়েও সময় যাচ্ছে না আজ।
রিমোট কন্ট্রোল দিয়ে টেলিভিশনের চ্যানেল বদলাতে বদলাতে চোখ পড়ল মুখরোচক খবরটায়।
নিউজ রিডার পড়তে শুরু করেছে - বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মুকিত মজুমদার এবং তার ছেলে রিশাদ মজুমদারের আপত্তিকর কিছু ভিডিও নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন যাবত তাদের এই অনৈতিক কর্মকান্ডের উপর চলছিল কারো সূক্ষ্ম নজরদারি কিন্তু তাদের অভিযোগ সকল ভিডিও বানোয়াট ও মিথ্যে। প্রযুক্তির কল্যাণে নাকি এডিট করা হয়েছে ভিডিওগুলো। অজ্ঞাত কোন এক ব্যক্তি ভিডিও ফুটেজগুলো আমাদের চ্যানেলে পাঠিয়েছেন এবং তার সাথে ছিল অশ্লীল ও নোংরা কিছু ফোনালাপ।
টেলিভিশনের পর্দায় বাবা ও ভাইয়ের ছবি এবং ভিডিও দেখে হাত পা কাঁপতে থাকে তানহার।
নিউজ রিডার বলেই চলেছে - এই দুই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে রয়েছে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণের অভিযোগ, নারী পাচার এবং নারী ব্যবসার ঘৃণ্য অভিযোগ। এত এত প্রমাণের পরেও তারা নিজেদের টাকার গরমে ঠিকই ঘুরে বেড়াচ্ছেন দেদারসে। তবে চাঞ্চল্যকর তথ্য হলো গতরাত থেকে তারা দুজনেই লাপাত্তা। ধারণা করা হচ্ছে নিজেদের কুকীর্তি ফাঁস হওয়ার পর গা ঢাকা দিয়েছেন তারা।
টেলিভিশনের পাওয়ার অফ করে রিমোটটা সোফায় রেখে নির্বাক হয়ে তানহা বসে ছিল। কোথাও সূক্ষ্ণ আশা ছিল তার বাবা আর ভাই এটা করতে পারেনা কিন্তু আজকের পর সেই ক্ষীণ আলোটাও তার মন থেকে মুছে গেল। শান্তর উপস্থিতি এখন ভীষণ করে প্রয়োজন কিন্তু ছেলেটা এত রাত হওয়ার পরও আসছে না কেন?
_______
মুখ বাঁধা কালো কাপড়ে, হাত বাঁধা পেছন থেকে, অন্ধকারে গো গো শব্দ করছেন মুকিত মজুমদার এবং তার ছেলে রিশাদ মজুমদার। ছোট্ট একটা মোমবাতি জ্বালিয়ে তাদের সামনে আসলো শান্ত, সাথে নিয়ে আসলো মেহুলকে।
মেহুলকে দেখেই চমকে উঠলো রিশাদ আর মুকিত মজুমদার। মেহুলের পাশেই তখন এসে দাঁড়াল নূরী। কলেজে নূরী, রিশাদ, হাসান আর শান্ত একসাথেই পড়ত। নূরীকেও ছাড়েনি রিশাদের মত নোংরা কীটটা।
মেহুলের চোখের কোণে থাকা জলটা মুছে শান্তকে বলল - ওদের তিলে তিলে যন্ত্রণা দে ভাই। একদম মেরে ফেলিস না।
শান্ত মৃদু হেসে বলল - আমায় চিনতে পেরেছিস রিশাদ? চেহারা অনেকটা বদলে গেছে, তাই আন্দাজ করতে পারছিস না।
শান্ত কিছুক্ষণ চুপ থেকে হাসানকে ইশারা করল নূরী আর মেহুলকে সরিয়ে নিতে।
সবাই যাওয়ার পর শান্ত রিশাদকে বলল - তোকে আমি এক বিন্দু আঘাতও করব না। আমার সাথে তোর অন্যায় কিছু নেই। তোকে শাস্তি তারা দিবে যাদের তুই আঘাত দিয়েছিস। তোর বাবাকেও সেই শাস্তি দিবে তারা।
কথাটা বলেই রুমটা অন্ধকার করে চলে এলো শান্ত। এদিকে গতরাত থেকে কিছু খেতে না পেয়ে, ক্ষিদা আর তৃষ্ণায় প্রাণ ওষ্ঠাগত বাবা - ছেলের।
_____
রাত দশটা নাগাদ বাসায় এলো শান্ত। ঘুমন্ত তানহা সোফায় শুয়ে বেঘোরে ঘুমোচ্ছে। তার দিকে তাকিয়ে মৃদু হেসে নিজের ঘরে চলে গেল শান্ত। তাকে দেখে বোঝার উপায় নেই কত বড় কান্ড সে ঘটিয়ে এসেছে। অফিসের পোশাক ছেড়ে ফ্রেশ হয়ে নিল প্রথমে। আসার সময় সাথে করে আনা খাবারগুলো রেডি করে তানহাকে ডাকতে গেল।
মাথায় আলতো করে হাত রেখে ছোট্ট স্বরে তানহাকে ডাকছে শান্ত। শান্তর ক্ষীণ আওয়াজ নিজের কর্ণকুহরে যেতেই ঘুম হালকা হয়ে এল তানহার। চোখজোড়া জোর করে খুলে দেখল শান্ত বসে আছে তার সামনে। তাকে দেখেই এক লাফে উঠে বসল তানহা। ঘুম জড়ানো কন্ঠে বলল - কয়টা বাজে? এত লেট হলো কেন?
তানহার আদুরে শাসনে খুব হাসি পেল শান্তর। তবুও ভয় পাওয়ার ভান করে বলল - অফিসে কাজ ছিলো তো। সরি আর দেরী হবে না। এবার উঠো, খেয়ে নাও।
তানহা ভাবল শান্ত ভয় পেয়েছে। তাই সে শান্ত মেয়ের মত বলল - মনে থাকে যেন।
শান্ত মৃদু হেসে বলল - মনে না থাকলে তুমি মনে করিয়ে দিবে। আমার আবার মেমোরি লস প্রজেক্টে থাকে।
তানহা চোখ কুঁচকে কিছু বলতে যাবে অমনি তার ঠোঁটে আঙ্গুল দিয়ে চুপ করিয়ে দিল। ফিসফিস করে বলল - আমার কথা শোনো, খেয়ে নাও তাড়াতাড়ি। নয়লে অল্প বয়সে বুড়ো হয়ে যাবা। তখন আমাকে কে দেখবে? নাকি তুমিও আমায় ছেড়ে যাবার প্ল্যান করছ?
তানহা যেন মেঘের ভেলায় তুলোর মত ভাসছে। সবকিছু হঠাৎ এতটাই ভরহীন লাগলো তার কাছে। শান্তর চোখ যেন তাকে কিছু বলছে।
কি মায়া ঐ মুখটাতে। খোঁচা খোঁচা দাড়িতে লোকটার মুখে যেন সব মায়া জড়ানো আছে। ফর্সা গালটার বাঁ পাশে ছোট্ট একটু কা'টা দাগ।
তানহা হাত বাড়িয়ে গালটা আলতো করে ছুঁয়ে দিয়ে বলল - আপনি এখনো কত সুন্দর!
তানহার অমন বেকুবের মত কথায় ফিক করে হেসে দিল শান্ত। কপালে থাকা চুলগুলো পিছনে ঠেলে দিয়ে বলল - আমার বয়স কত জানো? আমার বত্রিশ শেষ আর তুমি বলছ সুন্দর!
তানহা ঠোঁটে হাসি ঝুলিয়ে শান্তকে দেখছে। তার কথা বলার ধরনটাই আলাদা। প্রতিটি কথা ব্যক্ত করার সময় তার চোখেই সব ভাষার গাম্ভীর্য প্রতিফলিত হয় যেন। তার চোখজোড়া যেন তার কথায় সায় দেয় স্পষ্ট করে।
শান্তর বাজানো তুড়ির শব্দে সম্বিৎ ফিরে তানহার। কালক্ষেপণ না করে তানহাকে এক প্রকার টেনেই নিয়ে যায় খাবার টেবিলে।
তানহার মনের উচাটন অবস্থা আঁচ করতে পেরে শান্ত আঁড়চোখে তার সব কাজ পর্যবেক্ষণ করছে। শান্তও খেতে পারছে না তানহার অমন আহ্লাদী আচরণে। মেয়েটার মায়া জড়াতে সেও চায় কিন্তু তার বিবেক তাকে কোথাও বাঁধা দেয়। মনে পড়ে পুষ্পর সাথে কাটানো সেই রঙিন মুহূর্তগুলোর কথা।
খাবার শেষ না করেই উঠে যায় শান্ত। যাওয়ার আগে গম্ভীর কন্ঠে তানহাকে বলে - আমি আজ ঐ রুমটায় শোবো না তানহা, আজ একটু একা থাকতে চাই। তুমি প্লিজ নিজের রুমটায় শুয়ে পড়ো। আমাকে আজ এতটুকু স্পেস দাও। একা থাকতে চাই আমি। আবার অভিমান করে বসো না যেন।
তানহা খাবার রেখেই একমনে শান্তর কথাগুলো শুনে গেল। খাবারটা সেও রেখে দিয়েছে। মৃদু হেসে শান্তর কথায় সায় দেয় কিন্তু মনতো মানতে চায়না।
--------------
এপাশ ওপাশ করে শান্তর অনুপস্থিতি ভুলতে চাইছে তানহা কিন্তু পারছে না। পা টিপে টিপে শান্তর রুমটায় এসে দেখল রুমটা ফাঁকা। বারান্দার দরজাটা খোলাই ছিল। তানহা নিঃশব্দে এক পা দু পা করে বারান্দায় এলো।
রেলিং ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে শান্ত। উদাস হয়ে কি যেন দেখছে।
তানহা ঠিক তার পেছনে গিয়ে দাঁড়াল। তার পিঠে মাথা ঠেকিয়ে উল্টোপাশ হয়ে দাঁড়াল। তানহার উপস্হিতি অনুভব করে শান্ত গম্ভীর স্বরে বলল - আমার কথা রাখোনি।
তানহা ব্যথিত স্বরে বলল - একা একা দম বন্ধ লাগছে।
শান্ত চোখজোড়া বন্ধ করে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বলল - যাই হয়ে যাক আমার কথা শোনা উচিত ছিল।
তানহা কিছুটা সরে দাঁড়াল। ক্ষীণ আওয়াজে বলল - আপনি আমার পাশে না থাকলে ঘুম আসে না।
শান্ত ঘুরে দাঁড়াল তানহার দিকে। তার দিকে তাকিয়ে আবারও বলল - আজকে রাতটা প্লিজ আমাকে একটু একা থাকতে দাও।
মুখ না তুলে বারান্দা ছেড়ে এলো তানহা। প্রত্যোত্তর না করেই নিজের জন্য বরাদ্দ রুমটায় শুয়ে পড়ল।
শান্তর উদাস মনটা আজ বড়ই বিক্ষিপ্ত। তানহার অভিমানটা ধরতে পেরেও কিছু করার সাধ্য নেই তার। নিজের জীবনের অসম্পূর্ণ হিসাবটা মিলাতে গিয়ে গোলকধাঁধায় আটকে গেছে সে। তার বিমর্ষ আদলটা ঐ মায়াবী মেয়েটার সামনে মোটেই আনতে সে ইচ্ছুক নয়।
চলবে......
( Our Main Page )
🔴 আমাদের পেজটি খুজে পেতে ফেসবুক-এ সার্চ করুন : Love Stories WRITER
েলুক_পাখনা 💚
#ইফা_আমহৃদ
পর্ব: ০৭
সূর্যের প্রথম কিরণ নেত্রপল্লবে পতিত হতেই ব্যাঘাত ঘটল নিদ্রার। আড়মোরা ভেঙে উঠে বসলাম। গতরাতের ঘটনা দৃশ্যমান হতেই ধরফরিয়ে উঠলাম। লোমকূপ দাঁড়িয়ে গেছে। সবটা আমার দুঃস্বপ্ন ভেবে বিছানা ছেড়ে উঠলাম। কিট্টি ঘুমিছে আছে। গতরাতে আধ খাওয়া গাজর এখনো পড়ে আছে। তাহলে সেটা আমার স্বপ্ন ছিল না। আমি ওয়াশরুমে গেলাম। চোখ মুখে পানি ছিটিয়ে দিলাম। বড়োলোক বাড়ি, বড়োলোকি চালচলন।
ড্রাইনিং টেবিলে গিয়ে নিজেই চেয়ার টেনে বসলাম খেতে। পেটে ক্ষুধায় চোঁ চোঁ করছে। আশেপাশে না তাকিয়ে পরোটা মুখে দিতেই দৃষ্টি নিবদ্ধ হলো সামনে। দুজন উদিতা বসে আছে সমানে। থমকে গিয়ে ডায়ে-বায়ে দৃষ্টি দিলাম। দুজনকে দুবার করে দেখছি। মুখ থেকে নিচে পড়ল রুটির টুকরো। দৃষ্টি ভ্রম ভেবে চোখ পরিষ্কার করে পুনরায় তাকালাম। অগ্নি অট্টহাসিতে ফেটে পড়ে বললেন, "এটা তোমার দৃষ্টিভ্রম নয় ক্যান্ডেল। আমি আর অভ্র যেমন জমজ। উদিতা আর ঊষাও তেমন জমজ। আমি গতকাল রাতে তোমাকে এটার কথাই বলেছি।"
"তারমানে গতকাল সবটা সত্যি ছিল, আমার দুঃস্বপ্ন নয়।"
অগ্নি রুটির টুকরো মুখে দিয়ে বলেন, "হ্যাঁ, তুমি জ্ঞান হারানোর পর মাটিতে শুয়ে পড়েছ। 'তুমি যা কিপ্টা' আমি বুঝে উঠতে পারি না, তোমার শরীরের ওজন এত কেন? আলুর বস্তা টানতে টানতে তোমাকে ঘরে রেখে এসেছি।" অগ্নির কথাতে সৌজন্য হাসি দিলাম। সামনে দুটো জগ। একটাতে দুধ, আরেকটাতে জুস। দুধ গ্লাসে ঢালতে ঢালতে অভ্র স্যারের দিকে তাকিয়ে দেখলাম, তিনি বিরক্তির সাথে খাচ্ছেন। দুধে চুমুক দিয়ে বললাম, "আপনার বউ যদি জমজ হতো, তাহলে ভালো হতো। আপনার শালিকাকে অগ্নি স্যার বিয়ে করতেন। আপনার মতো অগ্নি স্যারের দুটো জমজ মেয়ে হতো। চারজন দেখতে প্রায় একই ধরনের হতো। কোনটা কার মেয়ে বুঝতেই সময় শেষ হয়ে যেতো।"
"স্টুপিড মার্কা কথা বার্তা। চুপচাপ খান।"
কথা বলতে বলতে আটটা পরোটা খেয়ে ফেললাম, সবজি ভাজি খেয়ে ফেললাম, জগ ভর্তি দুধ আর জুস তাও শেষ। পেটে ক্ষুধা শেষ হচ্ছে না। ঊষা গ্লাসটা সরিয়ে রেখে বলে, "খাবো না বাবাই। দুধ খেতে ইচ্ছে করছে না।"
অভ্র স্যারের প্লেটে একটা অর্ধ সিদ্ধ ডিম। এক কামড় মুখে নিয়ে বললেন, "চুপচাপ খাও। দুধ না গেলে বড়ো হবে কীভাবে?"
সৌজন্য হাসি দিয়ে বললাম, "কেউ কিছু খেতে না চাইলে জোর করা ঠিক নয়। তাছাড়া বাচ্চাদের তো নয়ই। (ঊষাকে উদ্দেশ্য করে) দাও তোমার গ্লাসটা আমাকে দাও। খাবার নষ্ট করা ঠিক নয়, আমি খেয়ে ফেলি।" বলেই হাত বাড়িয়ে দিলাম। উদিতা তার বাবাইয়ের দিকে তাকালো। অভ্র স্যার ডিমটা এগিয়ে দিয়ে বলে, "নিন, আমার মেয়েরটা শুধু কেন খাবেন? তার বাবাইয়ের টাও খান।"
"ধন্যবাদ।" বলেই কেড়ে নিয়ে মুখে দিলাম। তৃপ্তিকর ঢেকুর তুললাম। অগ্নি ব্যঙ্গ করে বললেন, "একটা মানুষ এতো খায় কীভাবে? (বিরতি দিয়ে) অভ্র আজকে তুই উদিতা আর ঊষাকে অফিসে নিয়ে যাস। আমাকে গার্মেন্টে যেতে হবে। গত সপ্তাহে এক হাজার পিস পোশাকে ডেলিভারিতে যাবে আজ। তদারকি করতে হবে।"
"আগামীকাল ফ্যাশন শো। ড্রেস ডিজাইনিং ব্যাপার আছে না? আজকে ড্রেস পরে তারা ওয়ার্ক করবে। ফটো তোলা হবে। সেখানে ওদের দুজনকে আমি কীভাবে সামলাবো?" অভ্র স্যার বললেন। বিপরীতে অগ্নি বলেছেন, "ফ্যাশন হাউস ছোটো জায়গা, মাত্র দুতলা। আর আমি যেখানে যাবো সেখানে দশ তলা, লোকসংখ্যা বেশি। হারিয়ে যেতে পারে। তোর মেয়েকে তুই দেখ।"
অভ্র চেয়ার চেয়ে উঠে দাঁড়াল। তেজ নিয়ে বলে, "আমি ওদের বাবা, মা নেই। আমার মেয়েকে তো আমরাই দেখব। তোর তো কিছু হয়না, হলে দেখতি।"
"অভ্র তুই ভুল ভাবছিস।"
অভ্র অগ্নির কথায় কোনো প্রতুত্তর না দিয়ে উদিতা ও ঊষাকে উদ্দেশ্য করে বলে, "তোমরা দুজনে তৈরি হয়ে নাও।"
অতঃপর অভ্র স্যার দুই মেয়েকে নিয়ে নিজ ঘরের দিকে অগ্ৰসর হলেন। অগ্নি আমার দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। অভ্র স্যার চোখের আড়াল হতেই অগ্নি বলে উঠে, "দেখেছ, অভ্র শুধু আমার উপর রাগ দেখালো। বড়ো গার্মেন্ট, অচেনা মানুষ। হারিয়ে গেলে তখন?"
নীরবতা পেরিয়ে গেল কিছুক্ষণ। অভ্র স্যার উদিতা আর ঊষাকে নিয়ে বেরিয়ে এলেন ঘর থেকে। বেরিয়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে পা বাড়াতেই আমি বললাম, "আপনি, উদিতা, ঊষা অফিসে চলে যাবেন অন্যদিকে অগ্নি স্যার নিজেও চলে যাবেন। এবার যদি আমি আপনার বাড়ির সবকিছু চু/রি করে পালিয়ে যাই?"
অভ্র স্যার দু মেয়ের হাত ধরে আছেন। ঊষা অভ্র স্যারের হাত চে/পে ধরে বলে, "সে আমার আইসক্রিম খেয়ে ফেলেছিল বাবাই।"
"চো/রে চো/রের টাই খায়। ভালো মানুষের টা নয়। তোমার এক বাটি আইসক্রিম না খেয়ে সবগুলো খেলে ভালো হতো।"
ঊষা চুপ করে গেল। ঘাড় কাত করে বললেন, "আপনার দ্বারা তাও সম্ভব। তবে আমি আমার মেয়েদের আপনার কাছে রেখে যেতে পারি না। আমার সম্পদের চেয়ে মেয়েরা আমার প্রিয়। আপনি যদি আমাকে সাহায্য করতে চান। তাহলে আমার সাথে অফিসে আসুন। ওদের একটু সামলাবেন।"
অগ্নি ইশারায় বললেন অভ্র স্যারের সাথে যেতে। কিট্টিকে গাজর দিয়ে পুনরায় ফিরে এলাম। ততক্ষণে অভ্র স্যার দুই মেয়েকে নিয়ে গাড়িতে উঠে গেছেন। গাড়িতে উঠতেই গতিশীল হলো গাড়ি। গন্তব্য ফ্যাশন হাউসে।
_
মডেলরা নিজেদের মতো ড্রেস পড়ে ওয়ার্ক করছে। জুস খেতে খেতে আমি উদিতা ও ঊষা দেখছি মডেলদের কাজ। মেয়ে দুটো মিশুক প্রকৃতির। অনেক সহজেই আমরা মিশে গেছি একে অপরের সাথে। অভ্র স্যার সামনে দাঁড়িয়ে ফটোগ্রাফারকে ইন্সটাকশন দিচ্ছে কীভাবে ছবি তুলতে হবে। কারণ ফ্যাশন হাউসে আগের ফটোগ্রাফারকে বের করে দিয়েছেন। মডেল দুটো আমাকে ভাব দেখিয়ে মডেলিং করছে। নম্র গলায় বললাম, "স্টেজে যখন আপনি ওয়ার্ক করবেন তখন সবাইকে এক নজরে দেখবেন। হাসবেন। দেখবেন এক নজরেই আপনি সবার মন কেড়ে নিয়েছেন।"
আমার কথাতে মডেল রেগে গেল। তীক্ষ্ণ গলায় বলেন, "আপনি তো একজন আয়া। অভ্র স্যারের মেয়েদের দেখাশোনা করেন। আপনি কী বুঝবেন?"
"আমি ফ্যাশন ডিজাইনার। কোন পোশাকের সাথে কোন ধরণের গেট আপ করতে হয়, একটু হলেও বুঝি।" মৃদু হেসে বললাম। মডেল আমার কথায় রেগে গিয়ে বলেন, "তাহলে এই পোশাক পড়ে দেখান। আপনার পোশাক দেখলে বোঝা যায়, ক্ষত থেকে উঠে এসেছেন। লাইক সরিষা ক্ষত। জনগণ কীভাবে আকর্ষণ করতে হয়, আমি ভালো জানি। জানি বলেই শাহরিয়ার ফ্যাশন হাউসের এত সুনাম।"
একবার ইচ্ছে করল, পোশাকটি পড়তে। পোশাকটি দেখতেই বেশি অস্বস্তি দায়ক। স্লীভ ল্যাস, পা পর্যন্ত হলেও হাঁটুর একটু উপরে কম করে হলেও চারটা ফাড়া। গলাটাও বেশ চওড়া। আমি কাচুমাচু করে রইলাম। মডেল ভাব প্রকাশ করল। একই ডিজাইনের আরও একটি পোশাক আমার গায়ে ছুড়ে দিয়ে বললেন, "এই শহরে এক নাম্বার মডেল আমি। আমাকে হায়ার করতে সবাই উঠে পড়ে লাগে। চ্যালেঞ্জ করে বলছি, আমার চেয়ে ভালো মডেল পারলে এনে দেখান।"
পোশাকটা হাত দিয়ে চেপে ধরে রইলাম কিছুক্ষণ। রাগে শরীরটা কাঁপছে। এই 'শাহরিয়ার ফ্যাশন হাউসের' কারণেই সে শহরে নাম্বার ওয়ান। ইচ্ছে করছে পোশাকটা পরিধান করে, জবাব দিতে। অভ্র স্যার নিজের আসন ছেড়ে দাঁড়িয়ে রাগান্বিত কণ্ঠে বললেন, "আপনাকে আমার মেয়েদের দেখাশোনা করতে এনেছি আর আপনি মডেলের সাথে বিবাদ করছেন। একবার মডেল চলে গেলে আমার কত লস হবে আপনার ধারণা আছে?"
চলবে.. ইন শা আল্লাহ
বাড়িতে যদি ছোটো মামাতো ভাই আসে, তাহলে কি ফোন নিজের আয়ত্তে থাকে? 🤐🤐
( Our Main Page )
🔴 আমাদের পেজটি খুজে পেতে ফেসবুক-এ সার্চ করুন : Love Stories WRITER
#কাজল_চোখের_মেয়ে
#নুসাইবা_ইভানা
পর্ব-৫
সানার চোখ থেকে টুপ টুপ করে অশ্রু ঝড়তে লাগলো। দু'হাতে বেড শিট আকরে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলো। মাথা কেমন ফাঁকা হয়ে গেছে কিছুই যেন নেই মাথায়।গাড়ী নিয়ে পুলিশ স্টেশনে আসে সানা। কোনমতে নিজেকে সামলে নিয়ে বলে,আমি মিসিং ডায়েরি করতে চাই।
- আরেহহহ সুনেহরা ম্যাম যে!বসুন।
- অফিসার প্লিজ কিছু করুন আমার হ্যাসবেন্ডকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
- রিলাক্স ম্যাম উনি কোন বাচ্চা নন। কখনো থেকে খুঁজে পাচ্ছেননা?
- সাত ঘন্টার বেশি হবে। আমরা দূ'জন একসাথে এসেছিলাম।
- আপনি বাসায় চলে যান স্যার ঠিক চলে আসবে।
- চলে আসবে মানে কি? আপনাদের কোন রেসপন্সিবিলিটি নেই! কোন সমস্যা না হলে কি আমি আপনাদের কাছে এসেছিে!ফোনটাও সুইচ অফ। ড্রাইভার নেয়নি, বডিগার্ড নেইনি। এভাবে কখনো ও বের হয় না। নিশ্চয়ই কোন সমস্যা হয়েছে।
- ম্যাম চব্বিশ ঘণ্টার আগে মিসিং ডায়েরি নেয়া হয় না।তবুও আপনার জন্য আমরা চেষ্টা করছি।
- চেষ্টা করছি কি! দ্রুত ব্যাবস্থা নিন। আপনার কথা মতো চব্বিশ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে করতে বড় কোন বিপদ হয়ে যাক?
- ম্যাম বললাম তো দেখছি!
______________________________________________
বৈশাখের শেষ দিকে ভেজা বেঞ্চ আর ভেজা কৃষ্ণচুড়া। হাতে একগুচ্ছ হলুদ গোলাপের ভেতরে একটা কালো গোলাপ। রাত তখন সবেএগারো'টা পার্কে কোন মানুষ নেই বললেই চলে, মাথা নিচু করে বসে আছে রাজ। কিছু সময় পর মনে হলো তার পাশে কেউ বসেছে।রাজ জানে কে হতে পারে, নিশব্দে ফুলগুলে মাঝখানে রেখে দিয়ে বলে,শেষবারের মত বিরক্ত করার জন্য দুঃখিত।
পাশের মেয়েটা বলল,কি বলবে, তাড়াতাড়ি বলো, আমার বেবি রেখে এসেছি।
- কিছু বলার নেই।
- তাহলে তামাশা করতে আমাকে ডেকে এনেছো? এই মধ্য রাতে?
- কুল জান, এতো হাইপার কেন হচ্ছ জান্স। কথাগুলো বলে নিজেই হেসে বলে,তুমি আমার স্বভাব বারবার নষ্ট করে দাও! এই এতো বছর পরেও এক বাচ্চার মা'কে জান বলছি।
- হেয়ালি না করে কি বলবে বলো!
- তুমি বাসায় যাও রোজি, আমি একজনকে তোমার সাথে দেখা করাতে নিয়ে আসছি।
- ভুলেও এই কাজ করবে না। আমি কারো সাথে দেখা করতে পারবো না। আমার হ্যাসবেন্ড ফেরার সময় হয়েছে। আমি চললাম। ভালো থেকো নিজের মত নিজেকে ঘুছিয়ে নাও।
রোজি সামনের দিকে পা বাড়াতেই রাজ, রোজ বলে ডেকে উঠে।
এতো বছর পর সেই পরিচিত ডাক শুনে রোজির পা থমকে যায়। নিজকে সামলানো কষ্টকর হয়ে যাচ্ছে। হাতের উল্টো পিঠে চোখের কোনের জাল টুকু মুছে নিয়ে শক্ত কন্ঠে বলে, কি বলতে চাও?
রাজ ফুলগুলো বাড়িয়ে দিয়ে বলে, তোমার জন্য এনেছিলাম, তোমার তো হলুদ গোলাপ পছন্দ?
- রোজি ফুলগুলো নিলোনা উল্টো রাজের উদ্দেশ্যে বলল, পছন্দ সব সময় এক থাকে না। এখন আমার লাল গোলাপ পছন্দ।
রাজ রোজির দিকে না তাকিয়ে বলে,তোমাকে পেয়ে গেলে জীবনে আর কোন কিছুর আফসোস থাকতো না।এই দীর্ঘ মেয়াদি অভিনয় করতে হতো না। তাই হয়তো তোমাকে পেলাম না।
রোজির আর কোন উত্তর দিলো না। পার্কে থেকে বের হয়ে রিক্সায় উঠে বসলো,এখন রোজি কাঁদবে খুব করে কাঁদবে। নিজের চোখ থেকে টুপ, টুপ করে বৃষ্টির মত ঝড়ে যাওয়া অশ্রুগুলোকে আটকাচ্ছে না, বরং ঝড়তে দিচ্ছে। উপসংহারে যদি বিচ্ছেদ-ই থাকবে, তাহলে সূচনা এতো রঙিন হয়েছিল কেন?রোজি হাত দিয়ে নিজের বুকের বা"পাশ জড়িয়ে ধরে বলে,আমি ভালো নেই রাজ একটুও ভালো নেই আমাকে কুঁড়ে কুঁড়ে খাচ্ছে তোমাকে হারানো বিরহ। এই নিখুঁত অভিনয়ে সেই ক্ষত কারো দৃষ্টিতে পরছে না।ঠিক হুমায়ুন আহমেদের উপন্যাসের মত আমাদের সমাপ্তি হলো।
রাজ কতখান সেখানেই বসে রইলে। হাতের ফুলগুলো নিচে পরে আছে। কি আশ্চর্য যে, মেয়ে সব সময় বলতো লাল গোলাপ সবার পছন্দ-তো তাই আমার হলুদ গোলাপ পছন্দ। আর তুমি আমার লাইফে হলুদ গোলাপ। ঠিক হলুদ গোলাপের মত স্পেশাল এক্সপেন্সিভ।
রাজ বের হলো নিজেকে একদম পাল্টে নিয়ে পকেটে থেকে মোবাইল বের করে, অন করতেই সানার কল আসলো।
রাজ নিজেকে সামলে নিয়ে রিসিভ করে কানে ধরতেই, সানার করুন কন্ঠ ভেসে এলো, আমার কারো সাথে দেখা করার ইচ্ছে নেই শুধু তুমি তাড়াতাড়ি আমার কাছে চলে আসো। কোথায় ছিলে? মোবাইল বন্ধ ছিলো কেন? আমার টেনশন হচ্ছিল বুঝতে পারছো?
রাজ শান্ত কন্ঠে বলল, আমি আসছি, এই পৃথিবীতে একমাত্র তুমিই আছো যে আমার জন্য অপেক্ষায় আছে, তাই তোমাকে উপেক্ষা করবো না। আসছি আমি।
রাজ গাড়ী নিয়ে বের হয়নি একদম নিজেকে আড়াল করে বের হয়েছিল, কালো হুডি আর মাস্ক দিয়ে নিজেকে আড়াল করে। বের হয়ে একটা রিক্সা নেয়।
মানুষের জীবন বড়ই অদ্ভুত,ভালোবাসার মানুষটাকে ছাড়লেও ভালোবাসা ছাড়া যায় না। সবই যে বলে,জীবনে,মানুষ আসবে যাবে কেউ থাকবে না এসব ব্যাপার না। শতজন আসলেও সেই একজনের শূন্যতা পূরণ করতে ব্যার্থ! সে না থেকেও আমাদের সাথে থেকে যায়।
আমাদের, প্রত্যেক মানুষের নিজস্ব একটা মানুষ থাকে।যাকে ভেবে হাসা যায়,আবার চট করেই মন খারাপ করা যায়। সে জীবনে না থাকলেও বিষন্ন বিকেলে তার কথা ভেবে মনটাকে সান্ত্বনা দেয়া যায়। সে ভাগ্যে না থাকলেও আমাদের জীবনে থাকে। কঠিন ভাবে আমার সাথে জড়িয়ে থাকে। তার অস্তিত্ব শুধু অনুভব করা যায়। প্রকাশ করা যায় না। তবে সে থাকে আমাদের প্রতিটি মন খারাপ অথবা হুট করেই ঠোঁটের কোনে হাসিতে লেপ্টে থাকে। তার শুন্যতা কখনো পূরণ হয় না।
সানা কেঁদে, কেটে এক করে ফেলেছে, রাজের বাবা সোহেল সিকদার,দিশা বেগম রুশা সবাই সানাকে এতোক্ষণ সান্ত্বনা দিচ্ছিলো। এরমধ্যেই রাজ বাসায় ঢুকেই দেখে সব এক জটলা।
রাজকে দেখেই সোহেল সিকদার বলে,কোন কমন সেন্স নেই কোথায় ছিলে?
রাজ প্রসঙ্গ পাল্টে বলে, মাহার কেসটা ক্লোজ করতে।এরজন্য এমন অবস্থা করতে হবে!
সানা উঠে কোন কথা না বলে সোজা নিজের রুমে চলে গেলো।
রাজ পিছু পিছু রুমে আসলো, ততক্ষণে ধরনি জুড়ে মুষল ধারার বৃষ্টি পরছে। সানা খোলা বারান্দায় এসে দাঁড়িয়েছে। বৃষ্টির ফোটার সাথে তার অশ্রুগুলোও ঝড়ে পরছে।
রাজ সানার বাহু ধরে নিজের দিকে ঘুরালো, সানার চোখের পানি মুছে দিয়ে বলে,আমি ফিরেছি তো! কাঁতছো কেন?
সানা রাজকে জড়িয়ে ধরে বলে,বারবার মনে হচ্ছিল তোমাকে হারিয়ে ফেলেছি।
- উঁহু আর আমার জীবন থেকে কিছু হারাবার নয়৷ একদম কাঁদবে না।
- আমি জানি তুমি কেস ক্লোজ করতে যাওনি। তাহলে সত্যি করে বলো কেথায় ছিলে?
-আলতো করে সানার কপালে চুমু দিয়ে বলে, কিছু সত্য না জানাই ভালো। যে সত্য তোমার হৃদয়ে ক্ষত তৈরি করবে, থাকনা তা অজানা। বিশ্বাস রাখো আমি অনৈতিক কিছু করিনি।
- সানা আর ঘাটলো না। জড়িয়ে ধরলো রাজকে। সানা জানে রাজ কখনো রোজিকে ভুলতে পারবেনা। কথাটা জানার পরে রাজের প্রতি তার ভালোবাসা দ্বিগুণ বেরে গেছে।
রাজ সানার থুতনি ধরে মুখটা একটু উঁচু করে বলে,
শোনো, কাজল চোখের মেয়ে
আমার দিবস কাটে, বিবশ হয়ে
তোমার চোখে চেয়ে।
এই যে মেয়ে, কাজল চোখ
তোমার বুকে আমায় চেয়ে
তীব্র দাবির মিছিল হোক।
তাকাস কেন?
আঁকাস কেন, বুকের ভেতর আকাশ?
কাজল চোখের মেয়ে
তুই তাকালে থমকে থাকে
আমার বুকের বাঁ পাশ।
(সাদাত হোসাইনের কবিতা)
সানা রাজের পায়ের উপর ভর দিয়ে রাজের অধরে আলতো করে নিজের অধর মিলিয়ে দিলো।
সানা সরে আসতে চাইলে রাজ সানার অধর গভীর ভাবে আঁকড়ে ধরলো।
ভালোবাসাময় হোক সানা আর রাজের জীবন।
সারাক্ষণ লাইট, ক্যামেরা আর মিথ্যে অভিনয়ের আড়ালে সব অভিনেতা, অভিনেত্রীর জীবনেই থাকে কিছু সাদা, কালো অধ্যায়। তবে তাদের চাকচিক্য দেখে আমরা ভাবি তারাই হয়তো সবচেয়ে সুখি মানুষ!
সমাপ্তি
( Our Main Page )
🔴 আমাদের পেজটি খুজে পেতে ফেসবুক-এ সার্চ করুন : Love Stories WRITER
#কাজল_চোখের_মেয়ে
#নুসাইবা_ইভানা
পর্ব-৪
হালের জনপ্রিয় অভিনেতা সারফারাজ শাহরিয়ার শান্ত সু'ই'সা'ই'ড করেছে। বর্তমানে গুরুত্ব অবস্থায় তিনি এ্যাপোলো হসপিটালে ভর্তি আছেন।তার সু'সা'ইড করার কারণ এখনো জানা যায়নি। গতকাল শেষ রাতে তিনি নিজের রুমে এই সু'ই'সা'ই'ড করেন।
তবে ধারনা করা হচ্ছে, ব্যাক্তিগত লাইফে কোন বিষয় নিয়ে হয়তো তিনি ডিপ্রেশনে ছিলেন। তবে সেটা প্রেম ঘটিত কিনা তা৷ জানা যায় নি।
সানা নির্বোধের মত বসে আছে। কানে একটা কথাই বাজছে। আচ্ছা রুদ্র যেমন আত্মহত্যা করলো, আমিও যদি বাস্তবে এভাবেই হারিয়ে যাই, তাহলে কেমন হয় সুনেহরা?
-আপনি এসব কি অলুক্ষুনে কথা বলছেন!, রদ্র তো মাধবীর মৃত্যু মেনে নিতে পারেনি তাই মা'রা গেছে।আর তাছাড়া সিনেমা আর বাস্তব জীবন কি এক?
- আমি তো নিজেই ম'রে গেছি।এখন না হয় শরীরটাকে মুক্তি দিলাম।
- এসব কথা বলতে নেই আজ মানতে কষ্ট হচ্ছে, দুঃখ হচ্ছে ধিরে ধিরে সেই দুঃখ সয়ে যাবে। তখন কষ্ট থাকবে, তবে ম'রে যেতে ইচ্ছে করবে না।
হঠাৎ রাজ এসে সানার কাঁধে হাত রেখে বলে তুমি ঠিক আছো তো?
সানা রাজকে জড়িয়ে ধরে বলে আমি ঠিক নেই। আজকে আবার সেই অতীত চোখের সামনে ভেসে উঠলে।
ভুলে যাও সেসব দিনের কথা। এখন শুধু আমাদের নতুন জীবনের মূহুর্তগুলো সুন্দর করার সময়।
- কিন্তু তুমি এমন একটা স্টেপ কেনো নিয়েছিলে?
- আসলে যখন দেখলাম ভালোবাসার মানুষটা আমাকে ছাড়া অন্য কারো সাথে ভালো আছে! এটা মেনে নিতে পারিনি। বারবার মনে হচ্ছিলো সে আমাকে ছাড়া ভালো থাকতে পারেনা। সে আমার মত আমার বিরহে পুড়বে। প্রতিনিয়ত আমাকে হারোনার কষ্টে জড়জড়িত হবে!
সানা মনে,মনে বলছে,আপনি বুঝবেননা রাজ মেয়েরা নিজেদের কষ্ট কত সুক্ষ্ম ভাবে লুকিয়ে রাখতে পারে। তাদের হৃদয়ে দহন হলেও তা কাউকে বুঝতে দেয় না। আপনাকে না পাওয়ার যন্ত্রণা থাকলেও কখনো প্রকাশ করে তার বর্তমান নষ্ট করবে না।
সানাকে অন্য মনস্ক দেখে রাজ বললো,তোমরা মেয়েরা এতো স্বার্থপর কিভাবে হও।
সানা রাজের দিকে না তাকিয়ে উত্তর দিলো মেয়ে হওয়া এতো সহজ না!মেয়ে শব্দটার সাথে যুক্ত আছে এক আকাশ সম ধৈর্য। ছোট থেকেই না তারা জানে কিভাবে মেনে নিয়ে, মানিয়ে চলতে হয়।
ওই যে খুব সহজেই তোমরা বলে ফেলো মেয়েরা স্বার্থপর।
হ্যা মেয়েরা ভিষণ রকম স্বার্থপর। তারা তো হাসতে হাসতে নিজের বাবা মায়ের কথা ভেবে,প্রিয় মানুষটাকে ছেড়ে দেয়। তবে কেউ জানেনা সে হাসি কতটা বিষাদের? কেউ বোঝেনা সেই মিথ্যে হাসির আড়ালে কত না পাওয়ার গল্প লুকিয়ে রেখে এগিয়ে নিচ্ছে জীবন। কত দীর্ঘ শ্বাস একাই ছেড়ে অন্যের মুখে হাসি ফোটাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
মেয়েরা আসলেই স্বার্থপর।
রাজ সানার দিকে তাকিয়ে বলে,তোমরা মেয়েরা বড়ই অদ্ভুত তোমাদের বোঝার সাধ্য আমাদের নেই। তোমরা রহস্যময়ী, ছলনাময়ী।
সানা মুখে কথা বললেও তার হৃদয়ে চিন চিন ব্যাথা অনুভব করছে,নিজের হ্যাসবেন্ডের মুখেতার প্রাঙ্গনের কথা শুনা এতো সহজ নয়।
রাজ সানাকে আনমনা দেখে রাজ সানার চোখের পানিটুকু মুছে দিয়ে বলে তুমি ভাবছো তিন বছর আমার সাথে থেকেও আমার ভালোবাসা অর্জন করেতে পারলেনা!
দেখো রোজির জায়গাটা কখনো তোমাকে দিতে পারবো না। কিন্তু তোমার জায়গাটা আর কেউ নিতে পারবে না। সে অতীত তুমি বর্তমান। সে চলে যাওয়ার পর বেঁচে থাকা দূর্বিষহ হয়ে গিয়েছিল। তুমি চলে গেলে বেঁচে থাকাও হবে না।
- সানা রাজকে জড়িয়ে ধরে বলে,আমি তোমাকে ছাড়ছিনা।"তুমি আমার অনেক সখের খুঁজে পাওয়া এক প্রজাপতি নীল।
রাজ সানাকে নিজের সাথে জড়িয়ে নিলো। একে অপরে মিশে গেলো দু'জনে।
কিছু সময় পর সানা বলল,আচ্ছা রোজি তোমাকে ছাড়লো কেন?
- ও আমাকে অপশন দিয়েছিল, হয়তো সিনেমা নয়তো ও।
আর আমার কাছে একটাই অপশন ছিলো, সেটা হলো সিনেমা। ও ওর জেদ।বজায় রেখেছে। আমার পরিস্থিতি বোঝেনি।
কিন্তু তোমার বাবার সাথে তোমার কি প্রবলেম?
'বাবার জন্য সিনেমাতে আসা। আমার বাবা এক কালে হিরো ছিলো, আর এখন পরিচালক। এই জগতে থেকে সবাই নিজেকে সামলে রাখতে পারেনা। বাবাও পারেনি। এই বয়সেও তার নিত্য নতুন মেয়ে লাগে। বাবা বলেছে যদি আমি সিনেমাতে না আসি তাহলে বাবা, মা'কে তার আসল চেহারা দেখাবে।
আমার মা ভিষণ অন্যরকম সে এসব মেনে নিতে পারবে না।
নিজের বাবার এমন রুপ দেখার পর তার সাথে কথা বলতেও ঘৃনা লাগে।
সানা রাজের হাতের উপর হাত রাখলো। নিম্ন স্বরে বললো,আমি আর সিনেমা করতে চাইনা। আমি সংসারী হতে চাই?
- আমি তোমাকে ভুল বুঝবো না পাগলী তুমি কেমন সেটা আমি জানি। আর তাছাড়া এখানে সব নায়িকারা চরিত্রহীন হয়না। অনেক ভালো ভালো নায়িকাও আছে।
- রাজ আমি এমনিতেই করবো না আর সিনেমা। নিজেকে প্রমাণ করতে চেয়েছি, প্রতি নিয়ত কালো বলে সবাই কোনঠাসা করতো তাই তাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছি গায়ের রঙ ছাড়াও জশ খ্যাতি অর্জন করা যায়।
- যেমনটা তোমার ইচ্ছে। তবে আমাকে থাকতে হবে এই প্রফেশনে। চিন্তা করো না আমার বাবা যা করেছে বা করছে তা আমাকে দিয়ে কখনো হবে না।
-,তোমার প্রতি আমার বিশ্বাস আছে রাজ। এবার এই বিশ্বাস টিকিয়ে রাখার দ্বায়িত্ব তোমার।
- বিশ্বাস হলো কচু পাতায় থাকা পানির মত,তাই তার যত্ন নেয়া খুব কঠিন। তবে যদি তা এক ভাবে রেখে দেয়া যায়, তাহলে কখনো আঁচ আসে না।
______________________________________________
প্রথম সিনেমার পর সানাকে আর পিছু ফিরে দেখতে হয়নি। একের পর এক হিট সিনেমা উপহার দিয়েছে দর্শকদের ।সানার অভিনয় মন কেরেছে সবার। তবে ফিল্ম ইণ্ডাষ্ট্রিতে টিকে থাকা ওতোটা সহজ নয়। সানার
ন্যাচারলা লুক আর অসধারন অভিনয় খুব অল্পসময়ে তাকে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে পৌঁছে দিয়েছে।
সানা আজ ব্লাক শাড়ীর সাথে ম্যাচিং জুয়েলারি পরেছে। একদম হালকা মেকাপ, হালকা লিপস্টিক আর চোখে গাড়ো কাজল।
তিন বছর একটানা কাজ করে আগামী দুই বাস হলো রাজের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে।
সানা আয়নায় নিজেকে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছে। আচ্ছা রাজের পাশে তাকে মানায় তো? কেউ তাদের অগোচরে বলে নাতো, বাঁদরের গলায় মুক্তর মালা!
ছোট বেলা থেকে গায়ের রঙের জন্য কম কথা তো শুনতে হয়নি! উপন্যাসের পাতায় অথবা সিনেমাতে কালো মেয়েদের কদর থাকলেও বাস্তবে তা নগন্য।
তবে আমার অনুপ্রেরণা ছিলো, পিয়াংকা চোপড়া। তার অতীত যেনে সামনে এগোনোর চেষ্টা করেছি। আজ আমি আমার লক্ষ্য সফল। তবে আফসোস একটাই, এ সমাজ শিক্ষিত হয়েছে তবুও বর্ণের বৈষম্য করে। এটা কি শিক্ষা! মানুষের গায়ের রং মানুষের পরিচয় না!
রাজ পেছন থেকে সানাকে জড়িয়ে ধরে বলে, #কাজল_চোখের_মেয়ে এতো কি দেখছো! তোমাকে অসম্ভব সুন্দর লাগছে।
সানা সামনের দিকে ঘুরে বলে,রোজির চেয়ে বেশি?
রাজ কিছু সময় চুপ থেকে বলে,এখানে রোজি আসলো কেন?
আমার বরের প্রথম ভালোবাসা তো তাই তাকে দেখার তীব্র ইচ্ছে।
- জানের যখন এতোই ইচ্ছে তবে তো সেই ইচ্ছে পূরণ করতে হয়! আজকে এওয়ার্ড শো শেষে তোমাকে নিয়ে যাবো। তাদের বাসায়।
- সত্যি!
- উঁহু মিথ্যে।
- আচ্ছা মাহা মেহবুব তোমার নামে যে কেস ফাইল করেছে তার কি হবে?
- এখন তোমাকে সে-সব নিয়ে ভাবতে হবে না চলো দেরি হচ্ছে।
- ওয়েট, তোমার বুকপকেটে এই হলদে রাঙা গোলাপটা গেঁথে দেই দারুণ মানাবে।
- জান পরে যদি মেয়েরা আমার দিকে নজর দেয় সেই দায়ভার কে নেবে?
- মেয়েরা দিলে সমস্যা নেই জান। তবে তুমি মেয়েদের দিকে নজর দিলে চোখ তু'লে নেবো।
রাজ মুচকি হেসে বলে ডেঞ্জারাস বউ আমার!
#চলবে
আসসালামু আলাইকুম।
আমি আগেই বলেছি গল্পটা বেশি দীর্ঘ হবে না। ইনশাল্লাহ খুব দ্রুত অন্তিম পর্ব দেয়ার চেষ্টা করবো।
হ্যাপি রিডিং 🥰
( Our Main Page )
🔴 আমাদের পেজটি খুজে পেতে ফেসবুক-এ সার্চ করুন : Love Stories WRITER
গল্প: #আমার_সংসার
#পর্ব ( ২ ) #লেখাঃ মি. হাসিব
" তোমার বাচ্চা কখনো হবেনা! এটা আমি ভালো করেই জানি?
"বাড়িতে প্রবেশ করবে ঠিক এই সময় শাশুড়ির মুখে এই কথাটি শুনে রুপা একটু অবাকি হয়।
হাসিব : মা তুমি এই সব কি বলতেছো। রুপার বাচ্চা হবেনা সেটা তুমি কেমন করে যানো।
"তোরা যে ডাক্তার কাছে গিয়েছিলি সেই ডাক্তার আমাকে ফোন দিয়ে বলেছে? আর জানিস সেই ডাক্তার আমার কে!
হাসিব : কে সেই ডাক্তার?
"সে হলো আমার মামাতো ভাই, কিছুক্ষন আগেই বললো ফোন দিয়ে।
হাসিব : কিন্তু মা আগে তো কখনো এই মামার কথা বলো নাই আর"' ওই ডাক্তার আমাকে কেমনে চিনে।
"তোর কি মনে আছে। যখন রুপার বাচ্চাটি ন"ষ্ট করার জন্যে আমার কাছে এসেছিলি আমি কি বলেছিলাম?
হাসিব : ওহ মনে পরেছে তুমি তো এই ডাক্তার কাছেই যেতে বলেছিলে।
"হুমম কারন আমি জানতাম তোরা দুজনে আমাকে কিছুই জানাবি না তাই একটু খোজ নেয়ার জন্যেই এই সব করেছি।
হাসিব : ছি ছি ছি : মা তুমি এই যঘ্যর্ন কাজটি করতে পেরেছো।
" হ্যা পেরেছি এখানে আমার কোন প্রকার ভূল নেই।
হাসিব : তোমার কাছে এইটা আমি আশা করিনাই মা!
- এটা বলেই হাসিব রুপাকে নিয়ে রুমে চলে আসে।
রুপা : তোমাকে বলেছিলাম না এই বাচ্চাটি ন''ষ্ট খরবো না। এখন দেখলে তো কি হলো।
হাসিব : আরে চুপ থাকো কাল তোমাকে অন্য কোথাও নিয়ে যাবো।
রুপা : আমার মনে ও কেমন কেমন করেছে? সত্যি যদি এমনটা হয় তোখন কি হবে।
হাসিব : তখনকার টা তখন দেখা যাবে এখন রেষ্ট নাও তো।
রুপা : আচ্ছা আমি ফ্রেশ হয়ে এসে রেষ্ট নিচ্ছি।
"এটা বলেই রুপা ফ্রশ হওয়ার জন্যে ওয়াশ রুমে যেতে থাকে ঠিক সেই সময় শাশুড়ির ঘর থেকে আওয়াজ আসতেছে,, যে?
"ভাই তুই যে ওষুধ দিয়েছিস ওটা খাওয়ালে কি আর গর্ভধারণ করতে পারবে না রুপা?
( ফোনের একটু লাউড স্পিকার দেয়া ছিলো তাই ওই পাশের কথা ও রুপা শুনতে পায় )
" আরে না কখনোই গর্ভধারণ করতে পারবে না। আর তুই তো 6/7 মাস ধরে এই ওষুধ খাওয়াচ্ছিস কিছু তো বুজতেছিস নাকি। তুই শুধুমাত্র দুধের সাথে এটা মিশিয়ে খাওয়াবি?
( কথা শুনেই রুপা বুঝতে পারে এটা সেই ডাক্তার যার কাছে গিয়েছিলাম..! কিন্তু রুপা ভাবতে থাকে শাশুড়ি মা এমন যর্ঘন্য কজ কেনো করাচ্ছেন। তার মানে এই জন্যেই আমাকে 6/7 মাস থেক নিয়মিত দুধ খাওয়ায়। আর বলে নাতি পুতির মুখ দেখতে চাই। কিন্তু আমি তার কোন পাকা ধানে মই দিয়েছি )
"ঠিক তখনি আবার এ শুনতে পায় যে,
"শোন রুপা কে এই বাসা থেকে বিদায় করার পরেই আমি তোর মেয়েটাকে বাসায় নিয়ে আসবো?
"এবার রুপার কাছে সব পরিষ্কারক হয়ে যায়। শাশুড়ি নিজেই চায়না রুপার গর্ভে সন্তান আসুক।
এর পরে ফ্রেশ হয়ে রুপা রুমে এসে। মন মরার মতো বসে থাকে। হাসিবের নজরে পরতেই জিঙ্গাসা করে।
হাসিব : কি হলো তোমার আবার বললাম তো কালকে নিয়ে যাবো অন্য ডাক্তার কাছে।
রুপা : বাদ দাও হাসিব এই সব কথা। তোমার নিজের পরিবারের লোকেই চায়না আমার গর্ভে সন্তান আসুক ( কথাটি আস্তে করে বলে )
হাসিব : কি বললা তুমি ।
রুপা : কোই কিচ্ছু না তো। আচ্ছা আমার মাথা ব্যথা করতেছে আমি একটু ঘুম যাবো।
হাসিব : ঠিক আছে ঘুমাও তবে।
""যেইনা রুপা ঘুম যাবে ঠিক তখনি হাসিবের মা এক গ্লাস দুধের বাটি নিয়ে আসে।
"বউমা ওহ বউমা দুধ টুকু খেয়ে নেও তো একঠু।
শাশুড়ির মুখে এমন কথা শুনে রূপা ভাবতে থাকে একটি মহিলা কতোটা অভিনয় করতে পারে। হাসিবের মা কে না দেখলে বুজতেই পারতাম না।
রুপা : না মা আমি খাবো না। আপনার ছেলে কে দিন খেতে!
" এটা হাসিবের জন্যে না তোমার জন্যে এই দুধ, এটা খাইলে যদি আল্লাহ্ রহমত বর্শন করে।
রুপা : আজ আমার ভালো লাগতেছে না। আপনার ছেলে দিও ও খাক।
"মুখে মুখে তর্ক করো কেনো হ্যা। বললাম না খেয়ে নেও।
হাসিব : মা তুমি এমন করতেছো কেনো ওর সাথে। হয়তো ভালো লাগতেছে না ওর। দাও আমি খাবো দুধ।
"তোর খাওয়া যাবে না।
হাসিব : আমার খাওয়া যাবে না মানে।
"আরে পাগল এটা বমার জন্যে নিয়ে এসেছি। তুই খাবি কেনো শুনি।
রুপা : ঠিক আছে আপনি দুধ গ্লাসটি রেখে যান আমি পরে খাবো।
"দেখেছিস হাসিব তোর বউ আমার কথা শুনতেই চায়না। নিজের মেয়ের মতো দেখি কিন্তু আমাকে কোন প্রকার দামেই দেয় না।
হাসিব : ও বললো তো তুমি রেখে যাও পরে খাবে।
"" আচ্ছা ঠিক আছে এখন তুই দুধ খাবি তো চল আমার সাথে রান্না ঘরে।
হাসিব :ঠিক আছে চলো?
এটা বলেই হাসিব ও তার মা রান্না ঘরে আসে। আর এই ফাকে রুপা দুধের গ্লাসটি জানালা দিয়ে ফেলেদেয় বাহিরে।
"আবার ১০ মিনি পরে হাসিবের মা রুমে আসে এসেই দেখে যে......
পরবর্তী পর্বটি জন্যে আমাদের সাথেই থাকুন ধন্যবাদ
❤ আল্লাহ্ সর্ব শক্তিশালী ❤
( Our Main Page )
🔴 আমাদের পেজটি খুজে পেতে ফেসবুক-এ সার্চ করুন : Love Stories WRITER
বাচ্ছাটি ন''ষ্ট করার ২ বছর পরে রুপা জানতে পারে আর কখনো মা হতে পারবে না সে?।
এই কথাটি শুনেই যেনো আকাশ থেকে পরে রুপা!
রুপা : তোমাকে বলেছিলাম না আমি এই বাচ্চা ন''ষ্ট করবো না, দেখলে তো এখন কি হলো।
হাসিব : আরে ডাক্তার এই সব ভূয়া কথা বলে। তুমি দেখিও আবার তোমার গর্ভে সন্তান আসবে।
রুপা : না হাসিব ডাক্তার কখনো মিথ্যা কথা বলে না। তুমি ও সেটা ভালো জানো।
হাসিব : এই চুপ করবে আমার কিন্তু এই সব কথা একদমি ভালো লাগতেছে না।
রুপা : কি এমন হতো আমাদের বাচ্ছাটি নিলে? খুব বেশি কি টাকা পয়সা খরচ হতো।
--হাসিব যেনো রুপার কথা গুলা একটি কান দিয়ে শুনে অন্য কান দিয়ে বের করে দিতেছে।
( সবাই ভাবতেছেন কি হচ্ছে গল্পে তবে শুনুন আপনাদের ও বলি... আজ থেকে ( ১) বছর আগে রুপা ও হাসিবের বিয়ে হয়েছিলো...? ভালোই যাচ্ছিলো দিন কাল কিন্তু রুপা ও হাসিব অসচেতনতার কারনে রুপার গর্ভে একটি সন্তান আসে। এই কথাটি শুনেই তো রুপা মহা খুশি। কারন সে মা হবে। কিন্তু অন্য দিকে যখনি হাসিব এই কথাটি শুনতে পায় ঠিক তখনি বলে দেয় । না এখন বাচ্চা নিবো না কারন আমাদের সবে মাত্র বিয়ে হয়েছে ৫ মাস হলো। 3/4 বছর পরে বাচ্চা নিবো। কারন এখন বাচ্চা নিলে সংসার এ সমস্যা হবে। তো রুপা হাসিবের এই কথায় অনেক কষ্ট। কিন্তু কিছু করার ও থাকে না..কারন হাসিবের কথা শুনতেই হবে।
রুপা অনেক বুজিয়েছে হাসিবে কে কিন্তু হাসিব কোন প্রকার এই মানতে রাজি না।
তাই এক প্রকার বাদ্ধ হয়ে.. হাসপাতালে গিয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে, বাচ্ছাটি নষ্ট করে রুপা। ডাক্তার রুপাকে দেখেই বুজেছিলো বাচ্ছি টি সে নষ্ট করতে চায় না।
কিন্তু কিবা আছে ডাক্তার এ করার, বাড়ির যে কর্তা সেই যদি বাচ্চা নেয়ার অনুমতি না দেয় তো কেমনে হয়।
--শেষ মেশ বাচ্চা টি নষ্ট''ই করে ফেলে।
রুপা : এখন তো তুমি খুশি নাকি হাসিব।
হাসিব : খুশি হবার কিছুই নেই রুপা। কারন আমরা বাচ্চা কাচ্ছা একটু দেরিতেই নিবো এতে তোমার ও ভালো হবে।
-হাসিবের এমন কথা শুনে রুপা কি বলবে না বলবে ভাষাই খুজে পাচ্ছে না।
তো এই ভাবে ২টি বর কেটে যায় রুপার ও হাসিবের সংসার এর!
-হঠাৎ একদিন হাসিবের মা বলে উঠে নাতি পুতির মুখ কি আমরা কখনো দেখবো না নাকি হ্যা।
-কথাটি শুনে একটু হাসিব লজ্জাই পেয়েছিলো.. কিন্তু তখন রুপা বলে উঠে ।
রুপা : মা আমি তো চাই বাচ্চা নিতে কিন্তু আপনার ছেলেইত,,,,,।
হাসিব : এই চুপ করবে তুমি রুপা।
-আমি বউমা এতো কিছু জানি না। আমার নাতি পুতি চাই ওকে।
-শাশুড়ি এমন কথা শুনে রুপা ও এবার লজ্জা পায়.?
এর পরে হাসিব ও রুপা রুমে এসে দুজন দুজনকে বলতে থাকে।
রুপা : আমার বাচ্চা চাই।
হাসিব : আরে বাবা হুম অবশ্যই বাচ্চা নিবো এখন।
রুপা : যদি আবার আগের মতো কতো তখন কি হবে হুম।
হাসিব : আরে না এই সব কিছুই হবে না।
--- এই ভবে আরো 5/7 মাস চলে যায় কিন্তু রুপার গর্ভে আর কোন প্রকার সন্তান আসেনা। এটা নিয়ে রুপা একটু বেশিই চিন্তিত । কারন যদি কিছু হয় তখন।
রুপা : এই চলো নি ডাক্তার কাছে যাই। পরিক্ষা করে দেখি আমার গর্ভে কেনো সন্তান আসতেছে না আর।
হাসিব : আচ্ছা ঠিক আছে চলো।
---এর পরে হাসিব ও রুপা দুজনেই ডাক্তার কাছে আসে , এর পরে কীছু পরিক্ষা নিরাক্ষা করে। জানতে পারে যে রুপা আর কখনো মা হতে পারবে না। কারন রুপা যখন সামনের বার বাচ্চা ন''ষ্ট করেছে ঠিক সেই সময় কিছু ভূলের কারনে,, এমন একটি সমস্যা হয়েছে যে আর কছনোই বাচ্চা হবে না। ( কি সমস্যা আপনাদের পরে বলবো সাথেই থাকুন )
--ডাক্তার যখনি এই কথাটি হাসিব কে বলেছে,, হাসিব যেনো বিশ্বাস করতেছে না।
হাসিব : ডাক্তার আপনার কোথাও ভুল হচ্ছে ।
ডাক্তার : এটা আমি বলতেছি না কম্পিউটার বলতেছে। আপনার অবিশ্বাস হলে আপনি আসতে পারেন। বা অন্য কোথায় দেখাইতে পারেন ধন্যবাদ ।
এটা বলেই ডাক্তার চলে যায়!
রুপা : ডাক্তার কি এই সব সত্যি বলতেছে হাসিব। আমি আর কখনো কি মা হতে পারবো না?
হাসিব : আরে মাঝে মাঝে ডাক্তার ভূয়া রিপোর্ট দেয়। বাসায় চলো আমরা অন্য কোথাও যাবো কাল কে।
-তো এর পরে যখনি হাসিব ও রুপা বাসায় আসে ঠিক তখনি,,,,!!!
গল্প : #আমার_সংসার
পর্ব ( ১ )
লেখনি✍ : মি. হাসিব
( Our Main Page )
🔴 আমাদের পেজটি খুজে পেতে ফেসবুক-এ সার্চ করুন : Love Stories WRITER
Click here to claim your Sponsored Listing.
Website
Address
Faridpur
Faridpur
যখন সত্য নীরবতা দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয় তখন সেই নীরবতা হলো একটি মিথ্যার সমান https://youtube.com/chan
Katiher
Faridpur
সবার আগে সব ধরনের ব়োমান্টিক &সেড পোস্ট পেতে আমাদের মধ্যবিও পেইজে ফলো দিয়ে পাশে থাকুন ধন্যবাদ!