Fuad khan

Fuad khan

Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from Fuad khan, Blogger, .

24/08/2022

Hhhhh

19/01/2022
18/01/2022

লিডার নজরুল ইসলাম স্বপন মিয়াজী ভাই ❤️❤️🥰🥰

#নিজাম উদ্দিন হাজারী ভাই

08/01/2022

VVI

13/11/2021

" কিংবদন্তি কথাসাহিত্যিক
হুমায়ূন আহমেদ "

বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় বাঙালি কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ। নন্দিত লেখক, জনপ্রিয় নাট্যকার এবং চলচ্চিত্র নির্মাতা, হিমু ও মিসির আলীর স্রষ্টা হুমায়ূন আহমেদের ৭৩ তম জন্মদিন আজ।

তাকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক বলে গণ্য করা হয়। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক। অন্য দিকে তিনি আধুনিক বাংলা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর পথিকৃৎ।

হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জে তাঁর মাতামহের বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। ছোটবেলায় তার নাম ছিলো শামসুর রহমান কাজল। চট্টগ্রামে থাকাকালে তাকে বাচ্চু নামে ডাকা হতো। তারপর নাম পাল্টে হলেন হুমায়ুন আহমেদ। তাঁর পৈত্রিক বাড়ি নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রাম। তাঁর পিতা ফয়জুর রহমান আহমেদ এবং মা আয়েশা আখতার খাতুন। তার পিতা পুলিশ বিভাগে চাকরি করতেন।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ফয়জুর রহমান পিরোজপুর মহকুমার এসডিপিও হিসেবে কর্মরত ছিলেন এবং কর্তব্যরত অবস্থায় পাকবাহিনীর হাতে শহীদ হন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তান সেনাবাহিনী হুমায়ুন আহমেদকেও আটক করে এবং নির্যাতনের পর হত্যার জন্য গুলি চালায়। তিনি অলৌকিকভাবে বেঁচে যান। সঙ্গত কারণেই হুমায়ূন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জ্বীবিত ছিলেন।

জীবদ্দশায় তুমুল জনপ্রিয়তা দেখে যাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিলো তার। বাংলাদেশে তার মতো জনপ্রিয় লেখক কমই এসেছেন। বাংলাদেশের সাহিত্যজগতে হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার মতো আগমন ঘটে তার। মধ্যবিত্ত ঘরে তিনি লেখক হিসেবে জনপ্রিয়তার শীর্ষে পৌঁছান। ‘নন্দিত নরকে’ এবং ‘শঙ্খনীল কারাগার’ উপন্যাস দুটি দিয়ে তার যাত্রা শুরু সাহিত্য জগতে। উপন্যাস দুটি পাঠকপ্রিয়তা পেয়ে যায় দ্রুত। ‘জোছনা ও জননীর গল্প’ নামে মুক্তিযুদ্ধের বড় ক্যানভাসের উপন্যাস রয়েছে হুমায়ূনের। এটি দিয়েছে ব্যাপক খ্যাতি।

দুই শতাধিক উপন্যাস লিখে গেছেন হুমায়ূন আহমেদ। তার নতুন উপন্যাস মানেই ছিলো বিক্রির তালিকায় সেরা অবস্থানে। হিমুবিষয়ক বই মানেই পাঠকের হুমড়ি খেয়ে পড়ার মতো অবস্থা। মিসির আলী ছিলো তার সৃষ্ট আরেকটি জনপ্রিয় চরিত্র। ‘কোথাও কেউ নেই’, ‘এইসব দিনরাত্রি’, ‘কবি’, ‘বাদশা নামদার’ ইত্যাদি কতো কতো উপন্যাস, যা পাঠকদের মনকে ছুঁয়ে গেছে।

তাকে বলা হয় কথার জাদুকর। গল্প-উপন্যাস ছাড়াও হুমায়ূন আহমেদ নাট্যকার হিসেবেও ছিলেন প্রবল জনপ্রিয়। এদেশে কেবলমাত্র হুমায়ূন আহমেদের লেখা নাটকের জন্যই রাজপথে মিছিল হয়েছে। ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকে বাকের ভাইকে যখন ফাঁসি দেওয়া হবে তখনই ঢাকাসহ দেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় মিছিল হয়েছিলো বাকের ভাইয়ের ফাঁসি যেনো না দেওয়া হয়।

টেলিভিশনে মানুষকে নাটকমুখি করার ক্ষেত্রে হুমায়ূন আহমেদের তুলনা তিনি নিজেই। একইভাবে দেশি লেখকের বইয়ের পাঠক সৃষ্টিতেও বিশাল অবদান রয়েছে তার। চলচ্চিত্র পরিচালক হিসেবেও তিনি সফল। প্রথম চলচ্চিত্র ‘আগুনের পরশমণি’ দিয়ে জয় করে নেন সিনেমাপ্রেমীদের মন। ‘শ্রাবণ মেঘের দিন’ সিনেমাটিও এদেশের সফল সিনেমার একটি। সবশেষ পরিচালনা করেন ‘ঘেটুপুত্র কমলা’।

তার নির্মিত সমাদৃত চলচ্চিত্রগুলো হলো আগুনের পরশমণি (১৯৯৪), শ্রাবণ মেঘের দিন (১৯৯৯), দুই দুয়ারী (২০০০), শ্যামল ছায়া (২০০৪), ও ঘেটু পুত্র কমলা (২০১২)। শ্যামল ছায়া ও ঘেটু পুত্র কমলা চলচ্চিত্র দুটি বাংলাদেশ থেকে বিদেশি ভাষার চলচ্চিত্র বিভাগে অস্কারের জন্য দাখিল করা হয়েছিল। এছাড়া ঘেটু পুত্র কমলা চলচ্চিত্র পরিচালনার জন্য তিনি শ্রেষ্ঠ পরিচালনা বিভাগে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন।

সংখ্যায় বেশি না হলেও তার রচিত গানগুলোও জনপ্রিয়তা লাভ করে। তার রচিত অন্যতম উপন্যাসসমূহ হলো মধ্যাহ্ন, জোছনা ও জননীর গল্প, মাতাল হাওয়া, লীলাবতী, কবি, বাদশাহ নামদার ইত্যাদি।

জোছনার প্রতি ছিলো হুমায়ূন আহমেদের অসম্ভব রকমের ভালোবাসা। শহরের মানুষকে তিনি জোছনার প্রেমে উদ্বুদ্ধ করেন নাটক ও উপন্যাসের মধ্যে দিয়ে। ‘জোছনা বিলাস’ নামে রয়েছে তার উপন্যাস। জোছনা ও বৃষ্টির প্রতি ছিলো তার টান। ‘বৃষ্টি বিলাস’ নামেও তার উপন্যাস রয়েছে। নুহাশপল্লীতে একটি ঘরের নাম তিনি রেখেছিলেন বৃষ্টি বিলাস।

নন্দিত লেখক-নাট্যকার এবং চলচ্চিত্রকার হুমায়ূন আহমেদের রয়েছে আলোচিত কিছু চরিত্র। সেসব চরিত্রে যারা অভিনয় করেছেন তারা স্মৃতিচারণ করেছেন তাকে। 'বাকের ভাই' চরিত্রে অভিনয় করে তারকাখ্যাতি পান আসাদুজ্জামান নূর। আসাদুজ্জামান নূর এ বিষয়ে বলেন, “আমার অভিনয় জীবনের সেরা একটি কাজ ‘কোথাও কেউ নেই’ নাটকের বাকের ভাই চরিত্রটি। হুমায়ূন আহমেদ নিখুঁতভাবে বাকের ভাই চরিত্রটি তৈরি করেছিলেন।”

হুমায়ূন আহমেদ তার মিসির আলীকে নিয়ে বেশ কয়েকটি উপন্যাস লিখেছিলেন। মিসির আলী চরিত্রের সবচেয়ে বড় দিক- মিসির আলী যুক্তি দিয়ে যেকোনো বিষয়ের সমাধান করেন।

এখনো হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় চরিত্র হিসেবে হিমুর অবস্থান প্রথমে। হিমুর জনপ্রিয়তা দিন দিন বেড়েই চলেছে। হিমুকে অনুসরণ করে এখনো একুশে বই মেলার সময়ে হলুদ পাঞ্জাবি পড়ে ঘুরে বেড়ান অনেকে। এখনো বিভিন্ন সময় শহরে কখনো কখনো হিমুর দেখা মেলে। হিমুকে নিয়ে প্রথম লেখা উপন্যাস ‘ময়ূরাক্ষী’।

ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়ন এবং নর্থ ডাকোটা স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পলিমার রসায়ন শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক হিসাবে দীর্ঘকাল কর্মরত ছিলেন। পরবর্তীতে লেখালেখি এবং চলচ্চিত্র নির্মাণের স্বার্থে অধ্যাপনা ছেড়ে দেন।

সত্তর দশকের শুরু করে মৃত্যু অবধি তিনি ছিলেন বাংলা গল্প-উপন্যাসের অপ্রতিদ্বন্দ্বী কারিগর। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা তিন শতাধিক। তার বেশ কিছু গ্রন্থ পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে, বেশ কিছু গ্রন্থ স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভুক্ত।

বাংলা সাহিত্যের উপন্যাস শাখায় অসামান্য অবদানের জন্য তিনি ১৯৮১ সালে বাংলা একাডেমি প্রদত্ত বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন। এছাড়া বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে তার অবদানের জন্য ১৯৯৪ সালে বাংলাদেশ সরকার তাকে দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বেসামরিক সম্মাননা একুশে পদকে ভূষিত করে।

নন্দিত এই বাংলাদেশী লেখক, কবি, সাহিত্যিক, চলচ্চিত্র পরিচালক, গীতিকার, নাট্যকার হুমায়ূন আহমেদ ১৯ জুলাই ২০১২ সালে দুরারোগ্য ব্যাধিতে মৃত্যুবরণ করেন।

হুমায়ুন আহমেদ এর জন্মদিনে গভীর ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা জানাই।

© হারুন-অর-রশীদ।
(Source: dailystar, bdnews24, mjamin, Wikipedia)

02/11/2021

যেভাবে হত্যা করা হয় ইন্দিরা গান্ধীকে

৩১শে অক্টোবর সকালে অফিসের জন্য তৈরি হয়েই ব্রেকফাস্ট টেবিলে এসেছিলেন ইন্দিরা গান্ধী। দুটো পাউরুটি টোস্ট, কিছুটা সিরিয়াল, মুসাম্বির জুস আর ডিম ছিল সেদিনের ব্রেকফাস্টে।

নাস্তার পরেই মেকআপ ম্যান তার মুখে সামান্য পাউডার আর ব্লাশার লাগিয়ে দিয়েছিলেন। তখনই হাজির হন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডাক্তার কে পি মাথুর।রোজ ওই সময়েই মিসেস গান্ধীকে পরীক্ষা করতে যেতেন তিনি।

ঘড়িতে যখন ন'টা বেজে দশ মিনিট, ইন্দিরা গান্ধী বাইরে বের হলেন। বেশ রোদ ঝলমলে দিনটা।রোদ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে আড়াল করতে সেপাই নারায়ণ সিং একটা কালো ছাতা নিয়ে পাশে পাশে হাঁটছিলেন।

কয়েক পা পেছনেই ছিলেন ব্যক্তিগত সচিব আর কে ধাওয়ান আর তারও পেছনে ছিলেন ব্যক্তিগত পরিচারক নাথু রাম।
সকলের পেছনে আসছিলেন ব্যক্তিগত নিরাপত্তা অফিসার, সাব ইন্সপেক্টর রামেশ্বর দয়াল।

বাসভবনের লাগোয়া প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ছিল আকবর রোডে। দুটি ভবনের মধ্যে যাতায়াতের একটা রাস্তা ছিল।
সেই রাস্তার গেটের সামনে পৌঁছে ইন্দিরা গান্ধী তার সচিব আর কে ধাওয়ানের সঙ্গে কথা বলছিলেন।হঠাৎই পাশে দাঁড়ানো নিরাপত্তাকর্মী বিয়ন্ত সিং রিভলবার বের করে ইন্দিরা গান্ধীর দিকে গুলি চালায়।

প্রথম গুলিটা পেটে লেগেছিল। ইন্দিরা গান্ধী ডান হাতটা ওপরে তুলেছিলেন গুলি থেকে বাঁচতে। তখন একেবারে পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে বিয়ন্ত সিং আরও দুবার গুলি চালায়। সে-দুটো গুলি তার বুকে আর কোমরে লাগে।
ওই জায়গার ঠিক পাঁচ ফুট দূরে নিজের টমসন অটোমেটিক কার্বাইন নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল আরেক নিরাপত্তা কর্মী সতবন্ত সিং।ইন্দিরা গান্ধীকে মাটিতে পড়ে যেতে দেখে সতবন্ত বোধহয় কিছুটা ঘাবড়ে গিয়েছিল। সে নির্বাক তাকিয়ে ঘটনা প্রত্যক্ষ করছিল।

তখনই বিয়ন্ত চিৎকার করে সতবন্তকে বলে 'গুলি চালাও।' সতবন্ত সঙ্গে সঙ্গে নিজের কার্বাইন থেকে চেম্বারে থাকা ২৫টা গুলিই ইন্দিরা গান্ধীর শরীরে গেঁথে দিয়েছিল।

বিয়ন্ত সিং প্রথম গুলিটা চালানোর পরে প্রায় ২৫ সেকেন্ড কেটে গিয়েছিল ততক্ষণে।নিরাপত্তা কর্মীরা ওই সময়টায় কোনও প্রতিক্রিয়া দেখান নি, এতটাই হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন সবাই।

তারপরে সতবন্ত সিং গুলি চালাতে শুরু করতেই একদম পিছনে থাকা নিরাপত্তা অফিসার রামেশ্বর দয়াল দৌড়ে এগিয়ে আসেন।সতবন্ত তখন একনাগাড়ে গুলি চালিয়ে যাচ্ছেন। মি. দয়ালের উরু আর পায়েও গুলি লাগে। সেখানেই পড়ে যান তিনি।

ইন্দিরা গান্ধীর আশপাশে থাকা অন্য কর্মচারীরা ততক্ষণে একে অন্যকে চিৎকার করে নির্দেশ দিচ্ছেন।
ওদিকে এক নম্বর আকবর রোডের ভবন থেকে পুলিশ অফিসার দিনেশ কুমার ভাট এগিয়ে আসছিলেন শোরগোল শুনে।
বিয়ন্ত সিং আর সতবন্ত সিং তখনই নিজেদের অস্ত্র ম্যাগাজিন খালি করে মাটিতে ফেলে দিয়েছে। বিয়ন্ত বলেছিল, "আমাদের যা করার ছিল, সেটা করেছি। এবার তোমাদের যা করার করো।"

ইন্দিরার আরেক কর্মচারী নারায়ণ সিং সামনে লাফিয়ে পড়ে বিয়ন্ত সিংকে মাটিতে ফেলে দেন।পাশের গার্ডরুম থেকে বেরিয়ে আসা ভারত- তিব্বত সীমান্ত পুলিশ বা আই টি বি পির কয়েকজন সদস্য দৌড়ে এগিয়ে এসে সতবন্ত সিংকেও ঘিরে ফেলে।

প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে সবসময়ে একটা অ্যাম্বুলেন্স রাখা থাকত । ঘটনাচক্রে সেদিনই অ্যাম্বুলেন্সের চালক কাজে আসেন নি। কোন কোন বর্ননা মতে সে পাশে কোথাও চা খাচ্ছিল।

ইন্দিরা গান্ধীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা মাখনলাল ফোতেদার চিৎকার করে গাড়ি বার করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
মাটিতে পড়ে থাকা ইন্দিরাকে ধরাধরি করে সাদা অ্যাম্বাসেডর গাড়ির পিছনের আসনে রাখেন আর কে ধাওয়ান আর নিরাপত্তা কর্মী দিনেশ ভাট।

সামনের আসনে, ড্রাইভারের পাশে চেপে বসে পড়েন মি. ধাওয়ান আর মি. ফোতেদার।গাড়ি যেই চলতে শুরু করেছে, সোনিয়া গান্ধী খালি পায়ে, ড্রেসিং গাউন পরে 'মাম্মি, মাম্মি' বলে চিৎকার করতে করতে দৌড়ে আসেন।ইন্দিরা গান্ধীকে ওই অবস্থায় দেখে সোনিয়া গান্ধীও গাড়ির পিছনের আসনে চেপে পড়েন। রক্তে ভেসে যাচ্ছিল ইন্দিরা গান্ধীর শরীর। সোনিয়া তার মাথাটা নিজের কোলে তুলে নেন।

খুব জোরে গাড়িটা 'এইমস' বা অল ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট ফর মেডিক্যাল সায়েন্সের দিকে এগোতে থাকে। চার কিলোমিটার রাস্তা কয়েক মিনিটের মধ্যেই পেরিয়ে যায়।সোনিয়া গান্ধীর ড্রেসিং গাউনটা ততক্ষণে ইন্দিরা গান্ধীর রক্তে পুরো ভিজে গেছে।

ওই গাড়িটা 'এইমস'এ ঢুকেছিল ন'টা ৩২ মিনিটে।
জরুরী বিভাগের দরজা খুলে গাড়ি থেকে ইন্দিরা গান্ধীকে নামাতে মিনিট তিনেক সময় লেগেছিল। কিন্তু সেখানে তখন কোনও স্ট্রেচার নেই। কোনওরকমে একটা স্ট্রেচার যোগাড় করা গিয়েছিল।

গাড়ি থেকে তাকে নামানোর সময়ে ওই অবস্থা দেখে সেখানে হাজির ডাক্তাররা ঘাবড়ে গিয়েছিলেন।ফোন করে সিনিয়র কার্ডিয়োলজিস্টদের খবর দেওয়া হয়। কয়েক মিনিটের মধ্যেই ডাক্তার গুলেরিয়া, ডাক্তার এম এম কাপুর আর ডাক্তার এস বালারাম ওখানে পৌঁছে যান।

ইসিজি করা হয়েছিল, কিন্তু তার নাড়ীর স্পন্দন পাওয়া যাচ্ছিল না। চোখ স্থির হয়ে গিয়েছিল। বোঝাই যাচ্ছিল যে মস্তিষ্কে আঘাত লেগেছে।একজন চিকিৎসক মুখের ভেতর দিয়ে একটা নল ঢুকিয়ে দিয়েছিলেন যাতে ফুসফুস পর্যন্ত অক্সিজেন পৌঁছাতে পারে। মস্তিষ্কটা চালু রাখা সবথেকে প্রয়োজন ছিল তখন।৮০ ব্যাগ রক্ত দেওয়া হয়েছিল ইন্দিরা গান্ধীকে। শরীরে যে পরিমাণ রক্ত থাকে, এটা ছিল তার প্রায় ৫ গুণ।

ডাক্তার গুলেরিয়া বলছেন, "আমি তো দেখেই বুঝে গিয়েছিলাম যে উনি আর নেই। কিন্তু নিশ্চিত হওয়ার জন্য ইসিজি করতে হয়েছিল। তারপরে আমি ওখানে হাজির স্বাস্থ্যমন্ত্রী শঙ্করানন্দকে জিজ্ঞাসা করেছিলাম, এখন কী করণীয়? ঘোষণা করে দেব আমরা যে উনি মৃত? তিনি না বলেছিলেন। তখন আমরা মিসেস গান্ধীকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাই।"

চিকিৎসকরা 'হার্ট এন্ড লাং মেশিন' লাগিয়েছিলেন ইন্দিরার শরীরে। ধীরে ধীরে তার শরীরে রক্তের তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি থেকে কমে ৩১ ডিগ্রি হয়ে গেল।তিনি যে আর নেই, সেটা সকলেই বুঝতে পারছিল, কিন্তু তবুও 'এইমস'এর আটতলার অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল তাকে।

চিকিৎসকেরা দেখেছিলেন যে যকৃতের ডানদিকের অংশটা গুলিতে ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। বৃহদান্ত্রের বাইরের অংশটা ফুটো হয়ে গেছে। ক্ষতি হয়েছে ক্ষুদ্রান্ত্রেরও।ফুসফুসের একদিকে গুলি লেগেছিল আর পাঁজরের হাড় ভেঙ্গে গিয়েছিল গুলির আঘাতে। তবে হৃৎপিণ্ডতে কোনও ক্ষতি হয় নি।

দেহরক্ষীদের গুলিতে ছিন্নভিন্ন হওয়ার প্রায় চার ঘণ্টা পর, দুপুর দুটো ২৩ মিনিটে ইন্দিরা গান্ধীকে মৃত ঘোষণা করা হয়েছিল।কিন্তু সরকারি প্রচারমাধ্যমে সেই ঘোষণা করা হয়েছিল দূরদর্শনের সন্ধ্যা ছয়টার খবরে। সংবাদ উপস্থাপক সালমা সুলতান ইন্দিরা গান্ধীর মারা যাওয়ার খবর প্রচার করেন।

ইন্দিরা গান্ধীর জীবনীকার ইন্দর মালহোত্রা বলছেন, গোয়েন্দা এজেন্সিগুলো আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিল যে মিসেস গান্ধীর ওপরে এরকম একটা হামলা হতে পারে।তারা সুপারিশ পাঠিয়েছিল যে প্রধানমন্ত্রীর আবাস থেকে সব শিখ নিরাপত্তা-কর্মীদের যেন সরিয়ে নেওয়া হয়।কিন্তু সেই ফাইল যখন ইন্দিরা গান্ধীর টেবিলে পৌঁছায়, তখন ভীষণ রেগে গিয়ে তিনি নোট লিখেছিলেন, "আরন্ট উই সেকুলার?" অর্থাৎ, "আমরা না ধর্মনিরপেক্ষ দেশ?"

এরপরে ঠিক করা হয়েছিল যে একসঙ্গে দু'জন শিখ নিরাপত্তা-কর্মীকে প্রধানমন্ত্রীর কাছাকাছি ডিউটি দেওয়া হবে না।৩১শে অক্টোবর সতবন্ত সিং বলেছিল যে তার পেট খারাপ। তাই তাকে শৌচালয়ের কাছাকাছি যেন ডিউটি দেওয়া হয়।এইভাবেই বিয়ন্ত আর সতবন্ত সিংকে একই জায়গায় ডিউটি দেওয়া হয়েছিল।

যার পরিণতিতে স্বর্ণ মন্দিরে সেনা অপারেশন - 'অপারেশন ব্লুস্টার'এর বদলা নিয়েছিল তারা প্রধানমন্ত্রীকে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দিয়ে।
১৯৮৪ সালের আজকের এই দিনে নিহত হন ইন্দিরা গান্ধী। ৭১'এর বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধুটির জন্য রইল গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

(সুত্রঃবিবিসি বাংলা, উইকিপিডিয়া ও নেটে প্রাপ্ত বিভিন্ন আর্টিকেল)

Videos (show all)

Meet cutting |fish cutting |Fishing |meet
জামাল স্যারের আউটসোর্সিং ক্লাস#freelancing  #freelancer #outsourcing

Telephone