Adv Nadim Ahmed Shimul
Advocate,Supreme Court Of Bangladesh
অ্যান্থনি মাসকারেনহাস (জন্ম: ১০ জুলাই, ১৯২৮-মৃত্যু: ৬ ডিসেম্বর, ১৯৮৬) দক্ষিণ এশিয়ার বিশিষ্ট সাংবাদিক ও লেখক ছিলেন। তাঁর পুরো নাম নেভিল অ্যান্থনি ম্যাসকারেনহ- াস। তিনি ভারতের গোয়ায় জন্মগ্রহণ করেন এবং পড়াশোনা করেন পাকিস্তানের করাচিতে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালীন সময় তিনি বাংলাদেশে সংঘটিত গণহত্যা ও অন্যান্য ঘটনা পর্যবেক্ষণপূর্বক বিশ্ববাসীর কাছে সর্বপ্রথম উন্মোচিত করেন। এ নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে লিখেন যা বাংলাদেশের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে বিশ্ববাসী- কে সচেতন করে তুলতে সাহায্য করেছিল।
দুটি কথা:
১৯৬৮ সালের কথা। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বব্যাপী তুমুল আলোড়ন এবং বিতর্কের সূত্রপাত হলো একটি বই নিয়ে। বইটি এ্যান্থনী ম্যাসকারেনহাস- এর 'বাংলাদেশ: এ লিগ্যাসি অব ব্লাড। স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশের প্রায় দশ বছরের রাজনৈতিক সংকট এবং পট-পরিবর্তনের বহু ঘটনা এবং তথ্য এতে প্রকাশ করলেন ম্যাসকারেনহাস। দেশের দুই প্রধান এবং প্রতাপশালী রাষ্ট্রনায়ক শেখ মুজিবুর রহমান এবং মেজর জেনারেল জিয়াউর রহমানের হত্যাকাণ্ডের বহু অজানা তথ্য উল্লেখ করেছেন তিনি। বর্ণনা করেছেন এদেশের সেনাবাহিনীর কিছু সদস্য এবং রাজনীতিকদের অনেক পদস্থলনের কথা, রাষ্ট্রনায়কদের ভুল পদক্ষেপের কথা।
বইটি পড়ার সময় এর বাংলা অনুবাদের কথাটি মনে হয়েছে আমার। শুধুমাত্র বিদেশি ভাষার কারণে বহু পাঠক দেশের অনেক রাজনৈতিক সংকট, উপর্যুপরি অভ্যুত্থান ইত্যাদি সম্পর্কে অজ্ঞ থেকে যাবেন ভেবেই ম্যাসকারেনহাস-এর 'বাংলাদেশ এ লিগ্যাসি অব ব্লাড' বাংলায় অনুবাদ হলো।
'বাংলাদেশ: এ লিগ্যাসি অব ব্লাড' দেশের দুটি বড় অভ্যুত্থান এবং জেনারেল জিয়া-র হত্যাযজ্ঞ সম্পর্কে পাঠককে সামান্যতম ধারণা দিতে সক্ষম হলেই আমার শ্রম সার্থক মনে করব।
-মহিউল ইসলাম মিঠু
Preface
Offence, punishment, harassment, suffering etc. are very much common words to the litigant people. It is the familiar scenario of our society to be harassed by the mighty people. At the same time, the real miscreants are being acquitted for want of witnesses and for the gap of our legal system. As an example we can say that if an innocent person be entangled into a criminal case, he thinks that since he is not connected with alleged occurrence, he will not face the trail. As such, it is found that said accused be convicted for his non appearance. This consequence may be happened after obtaining bail.
Considering the demand of lawyers and persons involved with the legal profession I have tried to arrange this book. Earlier, another publication in the name of "Law Talk" was published by me under the publication of New Warshi Book Corporation. The name of that book being mostly related with the civil nature of cases, I have decided to change the name. Besides these, in this book I have re-arranged many chapters with up-to-date decisions and style.
For publishing this book I am grateful to the all merciful and kindness Allah Rabbul Al-amin. I have been encouraged by my colleagues Mr. Munshi Ahasan Kabir, Mr. M. Belayet Hossain, Mr. Md. Mashiur Rahman Sabuj, all are Barristers at Law, Advocates, Supreme Court of Bangladesh. Further, I have also been encouraged by my colleague Mr. Manash Ranjan Saha(Mision), Mrs. Sharmin Sultana (Moushumi), both are Advocates. Mostly. I have been assisted by my associates Samrat, Rizvi, Sumaiya & Shela. I am very much grateful to all of them.
Kamruzzaman Bhuiyan
Author
জীবনের কিছু বাস্তব গল্প
#প্রেক্ষাপট_১
উচ্চ বেতনে চাকুরি করা এক যুবক আরেক গরীব যুবককে প্রশ্ন করলো,
- তুমি কোথায় চাকুরি করো?
- একটা কোম্পানিতে ।
- স্যালারি কতো?
- ১০০০০ টাকা।
- মোটে দশ হাজার? চলো কিভাবে? তোমার মালিক তোমার প্রতি অবিচার করছে। তুমি যেই ছেলে তোমার যা যোগ্যতা,তাতে হেসেখেলেই তুমি অনেক টাকা বেতন পেতে পারো।
যুবকের মেজাজ খাট্টা হয়ে গেলো। নিজের কাজের প্রতি ও বসের প্রতি
বেজায় রুষ্ট হয়ে উঠলো। পরদিন গিয়ে সরাসরি বসকে বেতন বাড়ানোর কথা। জানালো। কথা কাটাকাটি হওয়ার একপর্যায়ে বস তাকে চাকরিচ্যুত করলো।
এখন যুবকটি বেকার।
#প্রেক্ষাপট_২
- তোমার প্রথম সন্তান হলো বুঝি?
- জ্বি।
- তোমার স্বামী এ উপলক্ষ্যে তোমাকে কিছু দেয় নি? উপহার, টাকা বা এ জাতীয় কিছু?
- না। কেন দিবে? এ তো আমাদেরই সন্তান! উপহার বা টাকা দিতে হবে কেন?
- কেন তোমাকে হাত খরচার জন্যেও তো দু’চার পয়সা দিতে পারে। তার কাছে কি তোমার কোনও মূল্য নেই? তুমি চাকরানি?
স্ত্রীর মনে ধরলো কথাটা।
সারাদিন কথাটা ভাবতে ভাবতে মনটা বিষিয়ে উঠলো। সত্যিই তো! আমাকে একটা টাকাও কখনো ছোঁয়ায় না! রাতে কর্মক্লান্ত স্বামী ঘরে ফিরলো।
স্ত্রীর মুখ দিয়ে বোমা বিস্ফোরিত হলো। রেগে গেলো দু’জনে, কথা কাটাকাটি ঝগড়া আর ঝগড়া। পরে হাতাহাতি, শেষ পর্যন্ত তালাকে গিয়ে গড়ালো।
#প্রেক্ষাপট_৩
- এই বৃদ্ধ বয়েসে কষ্ট করছেন? ছেলে ঢাকায় থাকে,বড় চাকুরি করে শুনেছি। মস্ত বড় ফ্ল্যাটে বউ-বাচ্চা নিয়ে থাকে। আপনাদের দু’জনকে সাথে নিয়ে যেতে পারে না? আপনাদের দেখতেও তো আসে না!
- না না, ছেলে আমার খুবই ব্যস্ত। টাকা পাঠায় তো। ফোনে ও খোঁজ-খবর নেয় নিয়মিত।
- কী এমন ব্যস্ততা তার শুনি? নিজের জন্মদাতা-জন্মদাত্রীকে দেখতে আসার সময় হয় না?
- সারাদিন অফিস-বাসা করতে করতেই তো তার সবটা সময় চলে যায়!
- আপনি খোঁজ নিয়েছেন? সে ঢাকায় বাড়ি-গাড়ি হাঁকিয়ে বেড়াচ্ছে।
আর আপনারা অজপাড়াগাঁয়ে ধুঁকছেন?
বৃদ্ধ বাবা বাসায় এসে স্ত্রীকে খুলে বললো।
স্ত্রীও বাধা দিল,
- আপনি ভুল শুনেছেন। সে আসলেই ব্যস্ত।
- নাহ,সেকি কি মিথ্যা বলতে পারে ?
আহা রে! কাকে বুকের রক্ত পানি করে বড় করলাম। এটা ভেবেই করে বসলেন ব্রেইন স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক!
# এবার_আসি_মূলকথায়
-কিছু নিরীহ-অযাচিত প্রশ্ন আমাদের সুখী জীবনকে ক্ষণিকের মধ্যেই দুঃখী করে দিতে সক্ষম।
-আমাদের সমাজে ছদ্মবেশী দরদীরা নিরন্তর শান্ত জীবনে অশান্তির দাবানল জ্বালিয়ে দেয়।
-ছদ্মবেশী ডাইন/ডাইনীগুলো নিজের থেকে কিন্তু আপনাকে কিছুই দিবেনা। কিন্তু অন্যের থেকে অবৈধভাবে আদায় করার পদ্ধতি শিখিয়ে দিয়ে আপনাকে জিতিয়ে দেয়ার নামে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিবে।
#গল্পের_হিতোপদেশঃ
---জীবনে ৩য় ব্যাক্তি কে প্রবেশ করার সুযোগ দেবেন না। আর যদিও কোন ভাবে ঢুকে যায় তাহলে যথা সম্ভব তার কথা কানে তুলবেন না। ৩য় ব্যাক্তি হতে সাবধান।
(সংগৃহীত)
গাজীপুর মহানগরী পুলিশ আইন, ২০১৮
ধারা ৫২। বিরক্তিকর তল্লাশি, আটক, ইত্যাদির জন্য দণ্ডঃ
কোনো পুলিশ অফিসার বিরক্তিকরভাবে বা বিনা প্রয়োজনে কোনো ব্যক্তিকে তল্লাশি, আটক বা গ্রেফতার করিলে অথবা কাহারও কোনো সম্পত্তি আটক করিলে, তিনি ১ (এক) বৎসর পর্যন্ত কারাদণ্ডে অথবা ন্যূনতম ৫(পাঁচ) হাজার টাকা এবং সর্বোচ্চ ১০ (দশ) হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ডে অথবা উভয় প্রকার দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
ধারা ১০৮। পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্ৰহণঃ
আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে যাহা কিছুই থাকুক না কেন, এই আইন, বিধি, প্রবিধান বা তদধীন প্রদত্ত কোনো আদেশের অধীন কোনো পুলিশ অফিসারের বিরুদ্ধে কোনো মামলা দায়ের করিতে হইলে সরকারি কার্য-সম্পাদনকালে একজন সরকারি অফিসারকে ফৌজদারি কার্যবিধিতে যে সংরক্ষণ (protection) প্রদান করা হইয়াছে তাহা বলবৎ থাকিবে, তবে অন্যবিধ ক্ষেত্রে মামলা দায়েরের জন্য পুলিশ অফিসার কর্তৃক সংশ্লিষ্ট অপরাধ সংঘটনের ৬(ছয়) মাসের মধ্যে এতদসংক্রান্ত মামলা দায়ের করিতে হইবে এবং অনুরূপ মামলা দায়েরের কমপক্ষে ১ (এক) মাস পূর্বে উক্ত মামলার কারণ লিপিবদ্ধ করিয়া একটি নোটিশ সংশ্লিষ্ট পুলিশ অফিসার এবং তাহার ঊর্ধ্বতন অফিসারের নিকট প্রেরণ করিতে হইবে।
বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬
৩৪। শিশু ও কিশোর নিয়োগে বাধা- নিষেধ
৩৪। (১) কোন পেশায় বা প্রতিষ্ঠানে কোন শিশুকে নিয়োগ করা যাইবে না বা কাজ করিতে দেওয়া যাইবে না৷
(২) কোন পেশায় বা প্রতিষ্ঠানে কোন কিশোরকে নিয়োগ করা যাইবে না বা কাজ করিতে দেওয়া যাইবে না, যদি না-
(ক) বিধি দ্বারা নির্ধারিত ফরমে একজন রেজিস্টার্ড চিকিৎসক কর্তৃক তাহাকে প্রদত্ত সক্ষমতা প্রত্যয়নপত্র মালিকের হেফাজতে থাকে, এবং
(খ) কাজে নিয়োজিত থাকাকালে তিনি উক্ত প্রত্যয়নপত্রের উল্লেখ সম্বলিত একটি টোকেন বহন করেন
(৩) কোন পেশা বা প্রতিষ্ঠানে কোন কিশোরের শিক্ষাধীন হিসাবে অথবা বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণের জন্য নিয়োগের ক্ষেত্রে উপ-ধারা (২) এর কিছুই প্রযোজ্য হইবে না।
(৪) সরকার যদি মনে করে যে, কোন জরুরী অবস্থা বিরাজমান এবং জনস্বার্থে ইহা প্রয়োজন, তাহা হইলে সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, উহাতে উল্লিখিত সময়ের জন্য উপ-ধারা (২) এর প্রয়োগ স্থগিত ঘোষণা করিতে পারিবে।
বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬
২১। ছাঁটাইকৃত শ্রমিকের পুনঃনিয়োগ
২১। যে ক্ষেত্রে কোন শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয় এবং ছাঁটাইয়ের এক বৎসরের মধ্যে মালিক পুনরায় কোন শ্রমিক নিয়োগ করিতে ইচ্ছুক হন সে ক্ষেত্রে মালিক ছাঁটাইকৃত শ্রমিকের সর্বশেষ জানা ঠিকানায় নোটিশ প্রেরণ করিয়া তাহাকে চাকুরীর জন্য আবেদন করিতে আহ্বান জানাইবেন, এবং এই আহ্বানে সাড়া দিয়া কোন শ্রমিক পুনরায় চাকুরী পাইবার জন্য আবেদন করিলে তাহাকে নিয়োগের ব্যাপারে অগ্রাধিকার দেওয়া হইবে, এবং এ রকম একাধিক ছাঁটাইকৃত শ্রমিক প্রার্থী হইলে তাহাদের মধ্যে পূর্বের চাকুরীর জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে অগ্রাধিকার দেওয়া হইবে।
বাংলাদেশ শ্রম আইন-২০০৬
ধারাঃ২০- ছাঁটাই -
২০। (১) কোন শ্রমিককে প্রয়োজন অতিরিক্ততার কারণে কোন প্রতিষ্ঠান হইতে ছাঁটাই করা যাইবে।
(২) কোন শ্রমিক যদি কোন মালিকের অধীনে অবিচ্ছিন্নভাবে অনুযন এক বৎসর চাকুরীতে নিয়োজিত থাকেন, তাহা হইলে তাহার ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে মালিককে
(ক) তাহার ছাঁটাইয়ের কারণ উল্লেখ করিয়া এক মাসের লিখিত নোটিশ দিতে হইবে, অথবা নোটিশ মেয়াদের জন্য নোটিশের পরিবর্তে মজুরী প্রদান করিতে হইবে;
(খ) নোটিশের একটি কপি প্রধান পরিদর্শক অথবা তৎকর্তৃক নির্ধারিত কোন কর্মকর্তার নিকট প্রেরণ করিতে হইবে, এবং আরেকটি কপি প্রতিষ্ঠানের যৌথ দর কষাকষি প্রতিনিধিকে, যদি থাকে, দিতে হইবে; এবং
(গ) তাহাকে ক্ষতিপূরণ বাবদ তাহার প্রত্যেক বৎসর চাকুরীর জন্য ত্রিশ দিনের মজুরী বা গ্রাচ্যুইটি যদি প্রদেয় হয়, যাহা অধিক হইবে, প্রদান করিতে হইবে।
(৩) উপ-ধারা (২) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ধারা ১৬(৭) এর অধীন ছাঁটাইয়ের ক্ষেত্রে উপ-ধারা (২) (ক) এর উল্লিখিত কোন নোটিশের প্রয়োজন হইবে না, তবে ছাঁটাইকৃত শ্রমিককে উপ-ধারা (২) (গ) মোতাবেক প্রদেয় ক্ষতিপূরণ বা গ্রাচ্যুইটির অতিরিক্ত হিসাবে আরোও পনের দিনের মজুরী দিতে হইবে।
(৪) যে ক্ষেত্রে কোন বিশেষ শ্রেণীর শ্রমিককে ছাঁটাই করার প্রয়োজন হয় সে ক্ষেত্রে, মালিক এবং শ্রমিকের মধ্যে এতদসংক্রান্ত কোন চুক্তির অবর্তমানে, মালিক উক্ত শ্রেণীর শ্রমিকগণের মধ্যে সর্বশেষে নিযুক্ত শ্রমিককে ছাঁটাই করিবেন।
A good case may face bad fate in the hand of a bad lawyer but a bad case may face good result in the hand of a good lawyer.
অনিল কৃষ্ণ সমাদ্দার বনাম রাষ্ট্র, ১৯৮১ বিএলডি, পৃ. ৪০১
১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ১৪৯ ধারা কখন বেআইনি জনতার কোনো সদস্যকে অন্যের খুনের পরোক্ষ অপরাধে দোমী সাব্যস্ত করা যায় ?
মামলার বিবরণঃ
বাকেরগঞ্জ জেলার স্বরূপকাঠি থানার বাকুরা গ্রামের মৃত শ্রীনাথ শিকদারের বসতবাড়ি ছিল তার মালিকি দখলিয় আর.এস. ২০৮ দাগের ধানি জমির সংলগ্ন ২১৪ দাগে এবং উক্ত জমিতে তার উৎপাদিত ধান কেটে নেয়ার ১০/১২ দিন পরে সে পড়ও কেটে নিয়েছিল । ঘটনার দিন বিগত ৭/১/১৯৬৯ইং তারিখ মঙ্গলবার সকাল ৭.৩০ মিনিে সময় যখন শ্রীনাথ কাটা ধান গাছের গোড়া উঠাচ্ছিল তখন আপীলকারীগণ আরও ১০/১২ ব্যক্তি লেজা, সড়কি, লাঠি ইত্যাদি মারাত্মক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত এবং বেআইনি জনতাবদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তাকে ধান গাছের গোড়া উঠাতে নিে করেছিল। কিন্তু সে তাদের কথা না শুনে যখন দাড়িয়ে গিয়েছিল তখন আপীলক অনিল কৃষ্ণ তার বুকের ডান পার্শ্বে সড়কি দিয়ে আঘাত করে রক্তাক্ত জখম করেছি এবং রবীন্দ্রনাথ সমাদ্দার লাঠি দিয়ে তার মাথায় আঘাত করলে সে মাটিতে পে গিয়েছিল। তখন অপর আসামিগণ লেজার, হাতল, সড়কি এবং লাঠি দিয়ে তার আঘাত করেছিল। ঘটনাস্থল থেকে চিৎকার শুনে তার আত্মীয়স্বজন ১নং সাক্ষী সুনী ২নং সাক্ষী আনন্দ মোহন, ৩নং সাক্ষী ধীরেন্দ্র, ৪নং সাক্ষী মহেন্দ্র, ৫নং সাক্ষী অভ ৭নং সাক্ষী পুষ্প রানী, ৯নং সাক্ষী চিত্তরঞ্জন এবং পড়শী ৬নং সাক্ষী আমজাদ মা দৌড়ে ঘটনাস্থলে এসে শ্রীনাথকে আসামিগণকর্তৃক আঘাত করতে দেখেছিল সাক্ষীগণকে আসতে দেখে আসামিগণ ঘটনাস্থল ত্যাগ করেছিল। সাক্ষীগণ গুরুতর জখম প্রাপ্ত শ্রীনাথের নিকট থেকে ঘটনা সম্পর্কে জানতে পেরেছিল । ঘটনাস্থল থেকে তারা জথমিকে প্রথমে তার বাড়িতে এবং তারপরে থানা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্যে নিয়ে গিয়েছিল । জখমির পুত্র ১নং সাক্ষী সুনীল ঘটনা সম্পর্কে থানায় এজাহার করেছিল । থানা হাসপাতালের ডাক্তারের পরামর্শক্রমে উন্নত চিকিৎসার জন্যে বরিশাল নেয়ার পথে শ্রীনাথ মারা গিয়েছিল। তদন্তের পর পুলিশ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দায়ের করলে প্রাথমিক তদন্তের পর ম্যাজিস্ট্রেট আসামিদের দণ্ডবিধির ৩০২/১৪৯ ধারার অপরাধে অভিযুক্ত করে দায়রা বিচারে সোপর্দ করেছিল চিকিৎসকসহ ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করার পর দায়রা বিচারক ৮ জন আসামিকে দণ্ডবিধির ৩০২/১৪৯ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে প্রত্যেককে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করেছিল। তদ্দ্বারা সংক্ষুব্ধ হয়ে আপীলকারীগণ হাইকোর্ট বিভাগে আপীল দায়ের করেছিল। শোনানি অস্তে হাইকোর্ট বিভাগ আপীলটি আংশিক মঞ্জুর করে আপীলকারী অনিল কৃষ্ণ সমাদ্দার ও রবীন্দ্রনাথ সমাদ্দারের দণ্ডাদেশ বহাল রেখে অপর আপীলকারীদের খালাস প্রদান করেছিল ।
সিদ্ধান্তঃ
আসামিগণের সাধারণ উদ্দেশ্য ছিল শ্রীনাথ শিকদারকে জমি থেকে বেদখল করা এবং তাকে হত্যা করা নয়। তাই আসামি অনিল এবং রবীন্দ্রের আঘাতের ফলে শ্রীনাথ মৃত্যুবরণ করায় দণ্ডবিধির ৩০২ ধারার সাথে দণ্ডবিধির ১৪৯ ধারা যোগ করে সাধারণ উদ্দেশ্যে অপর আসামিদের খুনের পরোক্ষ অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করা যায় না ।
Bani Khan Vs. State; 18 DLR (WP) 28 -
১৬ বছরের কম বয়স্ক বালিকা তার পিতারগৃহ ইচ্ছাকৃতভাবে ত্যাগ করে প্রেমিকের সঙ্গে চলে যায় ও প্রেমিক তাকে আসামীর নিকটে নিয়ে যায় ও তাদের বিবাহ বন্ধনের ব্যবস্থা করার জন্য আসামীর সাহায্য প্রার্থনা করে এক্ষেত্রে আসামীর কোন অপরাধ হয়নি বলে সিদ্ধান্ত হয়।
PLD 1959 (Lah) 38 -
মদ্য পান প্রভাবিত হয়ে প্রদত্ত সম্মতি কিংবা কোন উন্মাদ স্ত্রীলোক প্রদত্ত সম্মতি আইনের দৃষ্টিতে কোন সম্মতি নহে। যে ব্যক্তি প্রভাবিত করে তার সাথে যৌনসঙ্গম করলে, এমনকি দৃশ্যতঃ যদিও সে সম্মতি প্রদান করে তবুও সেই ব্যক্তি দন্ডবিধির ৩৭৬ ধারা মোতাবেক অপরাধের দায়িত্ব এড়াতে পারেনা ।
রাজন্য বনাম গোবিন্দ, (১৮৭৬) ১ বোম্বে, পৃ. ৩৪২
১৮৬০ সালের দত্ত বিধির ৩০২ ও ৩০৪ ধারা নর হত্যা কখন খুন হিসেবে গণ্য হয় ?
মামলার বিবরণঃ
১৮ বছর বয়স্ক যুবক আসামি গোবিন্দ ১৫ বছর বয়স্ক তার স্ত্রী বেলাইকে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়ে তার বুকের উপর হাঁটু দিয়ে চেপে ধরে এবং তার মুখের উপর জোরে জোরে ৩টি ঘুষি মারে। এতে বেলাইর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরনের ফলে সে অতি অল্পক্ষনের মধ্যে মারা যায়। দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুনের অভিযোগে সাতারা দায়রা আদালতে গোবিন্দকে অভিযুক্ত করা হলে বিচারক তাকে খুনের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করেন। মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের জন্যে মামলাটি হাইকোর্টে প্রেরিত হলে বিচারকদের মধ্যে একজন একজন গোবিন্দকে খুনের জন্যে দোষী সাব্যস্ত করলেও কন বয়স্ক অজুহাতে মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে তাকে আজীবন দীপান্তরের দণ্ডে দণ্ডিত করেন কিন্তু অপর বিচারক মত প্রকাশ করেন যে, আসামি খুনের জন্যে নয় বরং নিম খুনে জন্যে দায়ী। বিচারকদের মধ্যে দ্বিমত হওয়ায় বিষয়টি মিমাংসার জন্যে একজন তৃতী বিচারকের নিকট পাঠানো হয়। তৃতীয় বিচারকও আসামিকে খুনের জন্যে দোষী সাবা না করে নিম খুনের জন্যে দোষী সাব্যস্ত করেন। অতএব, দুইজন বিচারবে মতানুসারে আসামিকে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারায় খুনের জন্যে দোষী সাব্যস্ত ও দণ্ডিত করে ৩০৪ ধারায় নিম খুনের জন্যে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন দীপান্তরের দণ্ড দেয়া হয়।
সিদ্ধান্তঃ
যেখানে মৃত্যু ঘটানোর কোনো অভিপ্রায় বা জ্ঞান থাকে না, সেখানে নর হত্যা খুন নয় এবং মৃত ব্যক্তির শরীরের উপর যে সকল আঘাত প্রদান করা অভিপ্রেত ছিল তা স্বাভাবিক অবস্থায় মৃত্যু ঘটানোর জন্যে যথেষ্ট ছিলনা । বিষয়টি মানব জীবনের ঝুঁকির উপর এবং প্রায় কি ধরণের ঘটনা ঘটেছে তার পারিপার্শ্বিকতা এবং ব্যবহৃত অস্ত্রের উপর নির্ভরশীল ।
The undisciplined man doesn't wrong himself alone-
he sets fire to the whole world...😎
কেমন করে বুঝবেন মামলাটি টাকা আদায়ের মামলা হবে ?
কোন ব্যক্তি অপর কোন ব্যক্তির নিকট কোন টাকা প্রাপক হলে সে ব্যক্তি তার প্রতিশ্রুতির তারিখে কিংবা যখনি প্রাপক তার টাকা ফেরত দাবী করেন এ ব্যক্তি যদি তার দাবী অনুযায়ী টাকা প্রদানে অস্বীকার করলে তখন টাকা আদায়ের জন্য ঐ ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট আদালতে টাকা আদায়ের জন্য মামলা আনায়নের অধিকার হয়। টাকা আদায় করা যেহেতু উদ্দেশ্য, সেহেতু আদালতে তাকে অবশ্যই টাকা আদায়ের মামলা আনয়ন করতে হয়।
কোন আইনের আলোকে এ ধরনের মামলা আনয়ন করা হয়-
টাকা আদায়ের মামলায় দাতা কাউকে টাকা প্রদান করে সেই টাকার দাবী পেশ করলে এবং গ্রহীতা কর্তৃক সে দাবী অস্বীকার করায় টাকার দাবীদার ব্যক্তি সুনির্দিষ্ট প্রতিকার আইনের ৪২ ধারা অনুযায়ী এ ধরনের মামলা আনায়ন করতে হয়।
রেকর্ড বা খতিয়ানের ভুল সংশোধনের নিয়ম ২০২৩
ভূমি মন্ত্রনালয়ের ‘আইন শাখা-০১’ এর, গত ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ তারিখের নং- ৩১.০০.০০০০.০৪২.৬৭.০৩১.১১.৮৪১ স্মারকে প্রচারিত ‘পরিপত্রে’ চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত রেকর্ড বা খতিয়ানের ভুল সংশোধনের জন্য ৩ ধরনের কর্তৃপক্ষের কথা বলা হয়েছে- সহকারী কমিশনার (ভুমি) কর্তৃক বিবেচনাযোগ্য করনিক ভুলের মধ্যে নামের ভুল, অংশ বসানোর হিসেবে ভুল, দাগসুচিতে ভুল, ম্যাপের সংঙ্গে রেকর্ডের ভুল, জরিপকালে পিতার মৃত্যুর কারনে সন্তানদের নামে সম্পত্তি রেকর্ড হবার কথা থাকলেও জরিপকারকদের ভুল বা অজ্ঞাত কারনে তা মুল প্রজা বা পিতার নামে রেকর্ড হওয়া ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।
একইভাবে প্রতারনামূলক লিখনের (Fraudulent Entry) মাধ্যমে সৃষ্ট চুড়ান্তভাবে প্রকাশিত রেকর্ড সংশোধনের জন্য প্রাপ্ত আবেদন অথবা প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রাজস্ব কর্মকর্তা প্রজাস্বত্ত্ব বিধিমালা, ১৯৫৫ এর বিধি ২৩ এর উপবিধি (৪) অনুযায়ী রেকর্ড সংশোধনের ব্যবস্থা গ্রহন করবেন।
২। The State Acquisition and Tenancy Act, 1950 এর ১৪৯ ধারার (৪) উপধারা মতে, Board of Land Administration যে কোন সময় যে কোন খতিয়ানে বা চুড়ান্তভাবে প্রকাশিত সেটেলমেন্ট রেন্ট-রোলে অন্তরভুক্ত যথার্থ ভুল (Bonafide Mistake) সংশোধনের আদেশ দিতে পারেন। কিন্তু Board of Land Administration বর্তমানে বিলুপ্ত বিধায় এ ক্ষমতা সরকারের পাশাপাশি ভূমি আপিল বোর্ডের রয়েছে।
৩। ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল সর্বশেষ জরিপে প্রকাশিত খতিয়ানের বিষয়ে যে কোন আদেশ প্রদানে এখতিয়ারবান। জরিপ পরবর্তী স্বত্বলিপি গেজেটে চুড়ান্ত প্রকাশনার পর কোন সংশোধনীর দাবী থাকলে তা ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল, ল্যান্ড সার্ভে আপিল ট্রাইব্যুনাল এবং মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বিচার্য” অর্থাৎ আপনার খতিয়ানে যে কোন ধরনের ভুল হোক না কেন, ভুলের ধরন অনুসারে উপরিউক্ত তিন ভাবেই তা সংশোধন সম্ভব।
ভুল নামে মামলা ও প্রতিকারঃ
মিথ্যা বা হয়রানিমূলক মামলা দায়ের আমাদের বিদ্যমান বিচার ব্যবস্থার একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। কখনো ইচ্ছাকৃতভাবে আবার কখনো ভুলক্রমে অনেকেই মিথ্যা বা হয়রানিমূলক মামলার শিকার হন।
যদিও আইনানুযায়ী কাউকে ভুল করে মামলার পক্ষ করা হলে অথবা পক্ষ থেকে বাদ দেয়া হলে মামলার কোনো ক্ষতি হয় না। মামলা তার আপন গতিতেই চলবে।
মামলার মূল বিষয়বস্তু ঠিক থাকলে আদালত মামলা পরিচালনা করে যাবে।
আদালতের সামনে উপস্থাপিত প্রত্যেকটি মামলায় বিরোধীয় বিষয়টি পক্ষদের অধিকার ও স্বাথের সঙ্গে যতটুকু প্রাসঙ্গিক আদালতে ততটুকুই বিবেচনায় নিয়ে মামলা পরিচালনা করবে।বাকি বিষয়বস্তু আদালতের বিবেচ্য নয়।
তাই, যে ক্ষেত্রে বাদী হিসেবে ভুল লোকের নামে মামলা দায়ের করেছে অথবা সঠিক বাদীর নামে এটি দায়ের করা হয়েছে কিনা সন্দেহ, সেসব ক্ষেত্রে আদালত ন্যায় বিচারের কোনো ক্ষতি হবে না এরকম মনে করলে মামলা পরিচালনা করবে। আবার আদালত যদি মনে করে যে মামলাটি ভুলক্রমে দায়ের করা হয়েছে এবং উক্ত মামলাটি প্রকৃত বিরোধীর বিষয় নির্ধারণ করার জন্য প্রয়োজনীয় তবে সেক্ষেত্রে আদালত অন্য কোনো লোককে বাদী হিসাবে স্থলাভিষিক্ত বা সংযোজিত করতে আদেশ দিতে পারেন। এসব ক্ষেত্রে মামলার কোনো ক্ষতি হয় না ও সাধারণ নাগরিকও হয়রানির শিকার হন না।
আদালত মামলার যেকোনো পর্যায়ে যেকোনো পক্ষের আবেদন অনুযায়ী কিংবা আবেদন ছাড়াই এবং আদালতের কাছে সঙ্গত মনে হলে অন্যায়ভাবে যুক্তপক্ষের নাম বাদী বা বিবাদী যে হিসাবেই হোক- বাদ দিতে পারবে। একইভাবে কোনো ব্যক্তির নাম বাদী বা বিবাদী যে হিসেবেই থাক- যদি সংযোজন করা প্রয়োজন- তা আদালত সংযোজন করতে পারে।
অর্থাৎ ন্যায়বিচারের স্বার্থে বা মামলা কেন্দ্রিক প্রশ্নগুলোর সুষ্ঠু ও সম্পূর্ণভাবে বিচার ও সমাধানের উদ্দেশে যদি কাউকে সংযোজন বা বাদ দিতে হয় তাহলে আদালত সে আদেশ দিতে পারেন।
কিন্তু এমন কোনো লোককে বাদীপক্ষের অন্তর্ভুক্ত করা যাবে না, যার পরিচালনার জন্য কোনো অভিভাবক নেই (যদি নাবালক ইত্যাদি হয়)।
যে ক্ষেত্রে মামলার কোনো নতুন বিবাদীকে যুক্ত করা হয়, সে ক্ষেত্রে আদালত অন্য কোনো নির্দেশ না দিলে, আরজি আবেদন প্রয়োজন অনুযায়ী সংশোধন করতে হবে সংশোধীত সমন ও আরজির অনুরূপ নকল নতুন বিবাদীর ওপর জারি করতে হবে এবং আদালত যদি মনে করে তাহলে মূল বিবাদীর ওপরও সমন জারি করতে হবে।
ভূমি বিষয়ক নিম্নের তথ্যাবলী প্রত্যেকেরই জানা উচিত! “পর্চা”, “দাগ”, “খতিয়ান”, “মৌজা”, “জমা খারিজ”, “নামজারি”, “তফসিল” ইত্যাদি বিষয়ের ডেফিনেশন এবং জেনে নিন ভূমি বিষয়ক জরুরী সব তথ্য।
১!“নামজারী” বা মিউটেশন কাকে বলে?
ক্রয়সূত্রে/উত্তরাধিকার সূত্রে অথবা যেকোন সূত্রে জমির নতুন মালিক হলে নতুন মালিকের নাম সরকারি খতিয়ানভুক্ত করার প্রক্রিয়াকে নামজারী বলা হয়।
২!“জমা খারিজ”কাকে বলে?
যৌথ জমা বিভক্ত করে আলাদা করে নতুন খতিয়ান সৃষ্টি করাকে জমা খারিজ বলে। অন্য কথায় মূল খতিয়ান থেকে কিছু জমির অংশ নিয়ে নতুন জোত বা খতিয়ান সৃষ্টি করাকে জমা খারিজ বলে।
৩!“খতিয়ান” কাকে বলে?
ভূমি জরিপকালে ভূমি মালিকের মালিকানা নিয়ে যে বিবরণ প্রস্তুত করা হয় তাকে “খতিয়ান” বলে।
খতিয়ান প্রস্তত করা হয় মৌজা ভিত্তিক। আমাদের দেশে CS, RS, SA এবং সিটি জরিপ সম্পন্ন হয়েছে। এসব জরিপকালে ভূমি মালিকের তথ্য প্রস্তত করা হয়েছে তাকে “খতিয়ান” বলে। যেমন CS খতিয়ান, RS খতিয়ান…
ভূমি জরিপ: CS, RS, PS, BS কি?
৪!ভূমি বা Land কাকে বলে?
“ভূমি কাকে বলে?”- এর আইনী সংজ্ঞা রয়েছে। The State Acquisition and Tenancy Act, 1950- এর ২(১৬)- ধারা মতে, “ভূমি (land) বলতে আবাদি, অনাবাদি অথবা বছরের যেকোন সময় পানিতে ভরা থাকে এবং ভূমি হতে প্রাপ্ত সুফল, ঘরবাড়ি বা দালান কোঠা বা মাটির সঙ্গে সংযুক্ত অন্যান্য দ্রব্য অথবা স্হায়ীভাবে সংযুক্ত দ্রব্য এর অন্তর্ভুক্ত বুঝাবে।”
৫! ভূমি জরিপ/রেকর্ড কাকে বলে? ভূমি জরিপ হচ্ছে ভূমির মালিকানা সম্বলিত ইতিহাসের সরেজমিন ইতিবৃত্ত।
আইনী সংজ্ঞা হচ্ছে, The Survey Act, 1875 এবং সংশ্লিষ্ট বিধিমালা অনুযায়ী সরকারের জরিপ বিভাগ সরেজমিন জরিপ করে ভূমির মালিকানার যে বিবরণ
এবং নকশা তৈরী করে তাই রেকর্ড বা জরিপ। অর্থাৎ রেকর্ড বা জরিপ হচ্ছে মালিকানার বিরবণ এবং নকশার সমন্বয়। একটি ভূমির মালিক কে এবং তার সীমানা কতটুকু এটা ভূমি জরিপের মাধ্যমে নকশা/ম্যাপ নির্ণয় করা হয়। এই নকশা এবং ম্যাপ অনুসারে মালিকানা সম্পর্কিত তখ্য যেমন ভূমিটি কোন মৌজায় অবস্থিত, এর খতিয়ান নাম্বার, ভূমির দাগ নাম্বার, মালিক ও দখলদারের বিবরণ ইত্যাদি প্রকাশিত হয় যাকে খতিয়ান বলে। রেকর্ড বা জরিপ
প্রচলিতভাবে খতিয়ান বা স্বত্ত্বলিপি বা Record of Rights (RoR) নামেও পরিচিত। রেকর্ড বা জরিপের ভিত্তিতে ভূমি মালিকানা সম্বলিত বিবরণ খতিয়ান হিসেবে পরিচিত। যেমন CS খতিয়ান, RS খতিয়ান, ইত্যাদি। আমাদের দেশে পরিচালিত ভূমি জরিপ বা রেকর্ড গুলো হচ্ছে;
1. CS -Cadastral Survey
2. SA- State Acquisition Survey (1956)
3. RS -Revitionel Survey
4. PS – Pakistan Survey
5. BS- Bangladesh Survey (1990)
ক) সি.এস. জরিপ/রেকর্ড (Cadastral Survey)
“সিএস” হলো Cadastral Survey (CS) এর সংক্ষিপ্ত রূপ। একে ভারত উপমহাদেশের প্রথম জরিপ বলা হয় যা ১৮৮৯ সাল হতে ১৯৪০ সালের মধ্যে পরিচালিত হয়। এই জরিপে বঙ্গীয় প্রজাতন্ত্র আইনের দশম অধ্যায়ের বিধান মতে দেশের সমস্ত জমির বিস্তারিত নকশা প্রস্তুত করার এবং প্রত্যেক মালিকের জন্য দাগ নম্বর উল্লেখপুর্বক খতিয়ান প্রস্তুত করার বিধান করা হয়। প্রথম জরিপ হলেও এই জরিপ প্রায় নির্ভূল হিসেবে গ্রহণযোগ্য। মামলার বা ভূমির জটিলতা নিরসনের ক্ষেত্রে এই জরিপকে বেস হিসেবে অনেক সময় গণ্য করা হয়।
খ) এস.এ. জরিপ (State Acquisition Survey)
১৯৫০ সালে জমিদারী অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন পাশ হওয়ার পর সরকার ১৯৫৬ সালে সমগ্র পূর্ববঙ্গ প্রদেশে জমিদারী অধিগ্রহনের সিদ্ধান্ত নেয় এরং রায়েতের সাথে সরকারের সরাসরি সম্পর্ক স্থাপনের লক্ষ্যে জমিদারদের প্রদেয় ক্ষতিপুরণ নির্ধারন এবং রায়তের খাজনা নির্ধারনের জন্য এই জরিপ ছিল।
জরুরী তাগিদে জমিদারগন হইতে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এই জরিপ বা খাতিয়ান প্রণয়ন কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছিল।
গ) আর.এস. জরিপ ( Revisional Survey)
সি. এস. জরিপ সম্পন্ন হওয়ার সুদীর্ঘ ৫০ বছর পর এই জরিপ পরিচালিত হয়। জমি, মলিক এবং দখলদার ইত্যাদি হালনাগাদ করার নিমিত্তে এ জরিপ সম্পন্ন করা হয়। পূর্বেও ভুল ত্রুটি সংশোধনক্রমে আ. এস জরিপ এতই শুদ্ধ হয় যে এখনো জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের ক্ষেত্রে আর, এস জরিপের উপর নির্ভর করা হয়। এর খতিয়ান ও ম্যাপের উপর মানুষ এখনো অবিচল আস্থা পোষন করে।
ঘ) সিটি জরিপ (City Survey)
সিটি জরিপ এর আর এক নাম ঢাকা মহানগর জরিপ। আর.এস. জরিপ এর পর বাংলাদেশ সরকার কর্তিক অনুমতি ক্রমে এ জরিপ ১৯৯৯ থেকে ২০০০ সালের মধ্যে সম্পন্ন করা হয়। এ যবত কালে সর্বশেষ ও আধুনিক জরিপ এটি। এ জরিপের পরচা কম্পিউটার প্রিন্ট এ পকাশিত হয়।
৬!“পর্চা” কাকে বলে?
ভূমি জরিপকালে চূড়ান্ত খতিয়ান প্রস্তত করার পূর্বে ভূমি মালিকদের নিকট খসড়া খতিয়ানের যে অনুলিপি ভুমি মালিকদের প্রদান করা করা হ তাকে “মাঠ পর্চা” বলে। এই মাঠ পর্চা রেভিনিউ/রাজস্ব অফিসার কর্তৃক তসদিব বা সত্যায়ন হওয়ার পর যদি কারো কোন আপত্তি থাকে তাহলে তা শোনানির পর খতিয়ান চুড়ান্তভাবে প্রকাশ করা হয়। আর চুড়ান্ত খতিয়ানের অনুলিপিকে “পর্চা” বলে।
৭!“মৌজা” কাকে বলে?
যখন CS জরিপ করা হয় তখন থানা ভিত্তিক এক বা একাধিক গ্রাম, ইউনিয়ন, পাড়া, মহল্লা অালাদা করে বিভিন্ন এককে ভাগ করে ক্রমিক নাম্বার দিয়ে চিহ্তি করা হয়েছে। আর বিভক্তকৃত এই প্রত্যেকটি একককে মৌজা বলে।
৮!“তফসিল” কাকে বলে?
জমির পরিচয় বহন করে এমন বিস্তারিত বিবরণকে “তফসিল” বলে। তফসিলে, মৌজার নাম, নাম্বার, খতিয়ার নাম্বার, দাগ নাম্বার, জমির চৌহদ্দি, জমির পরিমাণ সহ ইত্যাদি তথ্য সন্নিবেশ থাকে।
৯!“দাগ” নাম্বার কাকে বলে? যখন জরিপ ম্যাপ প্রস্তুত করা হয় তখন মৌজা নক্সায় ভূমির সীমানা চিহ্নিত বা সনাক্ত করার লক্ষ্যে প্রত্যেকটি ভূমি খন্ডকে আলাদা আলাদ নাম্বার দেয়া হয়। আর এই নাম্বারকে দাগ নাম্বার বলে। একেক দাগ নাম্বারে বিভিন্ন পরিমাণ ভূমি থাকতে পারে। মূলত, দাগ নাম্বার অনুসারে একটি মৌজার অধীনে ভূমি মালিকের সীমানা খূটিঁ বা আইল দিয়ে সরেজমিন প্রর্দশন করা হয়।
১০!“ছুটা দাগ” কাকে বলে?
ভূমি জরিপকালে প্রাথমিক অবস্থায় নকশা প্রস্তুত অথবা সংশোধনের সময় নকশার প্রতিটি ভূমি এককে যে নাম্বার দেওয়া হয় সে সময় যদি কোন নাম্বার ভুলে বাদ পড়ে তাকে ছুটা দাগ বলে। আবার প্রাথমিক পর্যায়ে যদি দুটি দাগ একত্রিত করে নকশা পুন: সংশোধন করা হয় তখন যে দাগ নাম্বার বাদ যায় তাকেও ছুটা দাগ বলে।
১১!“খানাপুরি” কাকে বলে? জরিপের সময় মৌজা নক্সা প্রস্তুত করার পর খতিয়ান প্রস্তুতকালে খতিয়ান ফর্মের প্রত্যেকটি কলাম জরিপ কর্মচারী কর্তৃক পূরন করার প্রক্রিয়াকে খানাপুরি বলে।
১২!“আমিন” কাকে বলে?
ভূমি জরিপের মাধ্যমে নক্সা ও খতিয়ান প্রস্তত ও ভূমি জরিপ কাজে নিযুক্ত কর্মচারীকে আমিন বলে।
১৩!“কিস্তোয়ার” কাকে বলে?
ভূমি জরিপ কালে চতুর্ভুজ ও মোরব্বা প্রস্তত করার পর সিকমি লাইনে চেইন চালিয়ে সঠিকভাবে খন্ড খন্ড ভুমির বাস্তব ভৌগলিক চিত্র অঙ্কনের মাধ্যমে নকশা প্রস্তুতের পদ্ধতিকে কিস্তোয়ার বলে।
১৪!“খাজনা” ককে বলে?
সরকার বার্ষিক ভিত্তিতে যে প্রজার নিকট থেকে ভূমি ব্যবহারের জন্য যে কর আদায় করে তাকে খাজনা বলে।
১৫!“দাখিলা” কাকে বলে?
ভূমি কর/খাজনা আদায় করে যে নির্দিষ্ট ফর্মে ( ফর্ম নং১০৭৭) ভূমি কর/খাজনা আদায়ের প্রমান পত্র বা রশিদ দেওয়া হয় তাকে দাখিলা বলা হয়।
১৬!"DCR কাকে বলে?
ভূমি কর ব্যতিত আন্যান্য সরকারি পাওনা আদায় করার পর যে নির্ধারিত ফর্মে (ফর্ম নং ২২২) রশিদ দেওয়া হয় তাকে DCR বলে।
১৭!“কবুলিয়ত” কাকে বলে?
সরকার কর্তৃক কৃষককে জমি বন্দোবস্ত দেওয়ার প্রস্তাব প্রজা কর্তৃক গ্রহণ করে খাজনা প্রদানের যে অঙ্গিকার পত্র দেওয়া হয় তাকে কবুলিয়ত বলে।
১৮!“নাল জমি” কাকে বলে?
২/৩ ফসলি সমতল ভূমিকে নাল জমি বলা হয়।
১৯!“খাস জমি” কাকে বলে?
সরকারের ভূমি মন্ত্রনালয়ের আওতাধিন যে জমি সরকারের পক্ষে কালেক্টর বা ডিসি তত্ত্বাবধান করেন এমন জমিকে খাস জমি বলে।
২০!“চান্দিনা ভিটি” কাকে বলে?
হাট বাজারের স্থায়ী বা অস্থায়ী অকৃষি জমির যে অংশ প্রজার প্রতি বরাদ্ধদ দেওয়া হয় তাকে চান্দিনা ভিটি বলে।
২১!“ওয়াকফ” কাকে বলে?
ইসলামি বিধান অনুযায়ী কোন ভূমি তার মালিক কর্তৃক ধর্মীয় ও সমাজ কল্যাণমূলক প্রতিষ্ঠানের ব্যয় ভার বহন করার উদ্দেশ্যে কোন দান করাকে ওয়াকফ বলে।
২২!“মোতওয়াল্লী” কাকে বলে?
যিনি ওয়াকফ সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা ও তত্ত্বাবধান করেন তাকে মোতওয়াল্লী বলে। ওয়াকফ প্রশাসকের অনুমতি ব্যতিত মোতওয়াল্লী ওয়াকফ সম্পত্তি হস্তান্তর করতে পারে না।
২৩!“দেবোত্তর” সম্পত্তি কাকে বলে?
হিন্দুধর্ম মতে, ধর্মীয় কাজের জন্য উৎসর্গকৃত ভূমিকে দেবোত্তর সম্পত্তি বলে।
২৪!“ফরায়েজ” কাকে বলে?
ইসলামি বিধান মোতাবেক মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি বন্টন করার নিয়ম ও প্রক্রিয়াকে ফরায়েজ বলে।
২৫!“ওয়ারিশ” কাকে বলে?
ওয়ারিশ অর্থ উত্তরাধিকারী । ধর্মীয় বিধানের অনুয়ায়ী কোন ব্যক্তি উইল না করে মৃত্যু বরন করলে তার স্ত্রী, সন্তান বা নিকট আত্মীয়দের মধ্যে যারা তার রেখে যাওয়া সম্পত্তিতে মালিক হওয়ার যোগ্যতাসম্পন্ন এমন ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণকে ওয়ারিশ বলে।
২৬! “সিকস্তি” কাকে বলে?
নদী ভাঙ্গনের ফলে যে জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যায় তাকে সিকস্তি বলে। সিকস্তি জমি যদি ৩০ বছরের মধ্যে স্বস্থানে পয়ন্তি হয় তাহলে সিকস্তি হওয়ার প্রাক্কালে যিনি ভূমি মালিক ছিলেন তিনি বা তাহার উত্তরাধিকারগন উক্ত জমির মালিকানা শর্ত সাপেক্ষ্যে প্রাপ্য হবেন।
২৭!“পয়ন্তি” কাকে বলে?
নদী গর্ভ থেকে পলি মাটির চর পড়ে জমির সৃষ্টি হওয়াকে পয়ন্তি বলে।
২৮!“দলিল” কাকে বলে?
যে কোন লিখিত বিবরণ আইনগত সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণযোগ্য তাকে দলিল বলা হয়। তবে রেজিস্ট্রেশন আইনের বিধান মোতাবেক জমি ক্রেতা এবং বিক্রেতা সম্পত্তি হস্তান্তর করার জন্য যে চুক্তিপত্র সম্পাদন ও রেজিস্ট্রি করেন সাধারন ভাবে তাকে দলিল বলে।
ভূমির পরিমাপঃ
ডেসিমেল বা শতাংশ বা শতকঃ
***************************
১ শতাংশ = ৪৩৫.৬০ বর্গফুট
১ শতাংশ =১০০০ বর্গ লিঙ্ক
১ শতাংশ = ৪৮.৪০ বর্গগজ
৫ শতাংশ = ৩ কাঠা = ২১৭৮ বর্গফুট
১০ শতাংশ = ৬ কাঠা = ৪৩৫৬ বর্গফুট
১০০ শতাংশ = ১ একর =৪৩৫৬০বর্গফুট
কাঠা পরিমাপঃ
****************
১ কাঠা = ৭২০ বর্গফুট/৭২১.৪৬ বর্গফুট
১ কাঠা = ৮০ বর্গগজ/৮০.১৬ বর্গগজ
১ কাঠা = ১.৬৫ শতাংশ
২০ কাঠা = ১ বিঘা
৬০.৫ কাঠা =১ একর
একরের পরিমাপঃ
******************
১ একর = ১০০ শতক
১ একর = ৪৩,৫৬০ বর্গফুট
১ একর = ১,০০,০০০ বর্গ লিঙ্ক
১ একর = ৪,৮৪০ বর্গগজ
১ একর = ৬০.৫ কাঠা
১ একর = ৩ বিঘা ৮ ছটাক
১ একর = ১০ বর্গ চেইন = ১,০০,০০০ বর্গ লিঙ্ক
১ একর = ৪,০৪৭ বর্গমিটার
১ শতক = ০.৫ গন্ডা বা ৪৩৫.৬০ বর্গফুট
বিঘা পরিমাপঃ
*************
১ বিঘা = ১৪,৪০০ বর্গফুট /১৪৫২০বর্গফুট
১ বিঘা = ৩৩,০০০ বর্গলিঙ্ক
১ বিঘা = ৩৩ শতাংশ
১ বিঘা = ১৬০০ বর্গগজ/১৬১৩ বর্গগজ
১ বিঘা = ২০ কাঠা
৩ বিঘা ৮ ছটাক = ১.০০ একর
লিঙ্ক পরিমাপঃ
****************
১লিঙ্ক = ৭.৯ ইঞ্চি /৭.৯২ ইঞ্চি
১লিঙ্ক =০.৬৬ ফুট
১০০ লিঙ্ক = ৬৬ ফুট
১০০ লিঙ্ক = ১ গান্টার শিকল
১০০০ বর্গ লিঙ্ক = ১ শতক
১,০০,০০০ বর্গ লিঙ্ক = ১ একর
কানি একর শতকে ভূমির পরিমাপঃ
*******************************
১ কানি = ২০ গন্ডা
১ গন্ডা = ২ শতক
১ শতক =২ কড়া
১ কড়া = ৩ কন্ট ১ কন্ট = ২০ তিল
ফুট এর হিসাবঃ
*****************
১ কানি = ১৭২৮০ বগফুট
১ গন্ডা = ৮৬৪ বফু
১ শতক= ৪৩৫.৬০ বফু
১ কড়া = ২১৭.৮ বফু
১ কন্ট = ৭২ বফু
১ তিল= ৩.৬ বফু
বর্গগজ/বর্গফুট অনুযায়ী শতাংশ ও একরের পরিমাণঃ
*********************************
৪৮৪০ বর্গগজ = ১ একর
৪৩৫৬০ বর্গফুট= ১ একর
১৬১৩ বর্গগজ= ১ বিঘা
১৪৫২০বর্গফুট = ১ বিঘা
৪৮.৪০ বর্গগজ = ০১ শতাংশ
৪৩৫.৬০ বর্গফুট= ০১ শতাংশ
৮০.১৬ বর্গগজ= ১ কাঠা
৭২১.৪৬ বর্গফুট = ১ কাঠা
৫.০১ বর্গগজ = ১ ছটাক
৪৫.০৯ বর্গফুট= ১ কাঠা
২০ বর্গহাত = ১ ছটাকা
১৮ ইঞ্চি ফুট= ১ হাত (প্রামাণ সাই)
শেয়ার করে টাইমলাইনে রেখে দিন।
আমরা যদি আইনের জন্য শ্রদ্ধা কাম্য করি, তাহলে আমাদের অবশ্যই শ্রদ্ধা করার মতো আইন বানাতে হবে।
— লুইস ডি ব্রান্ডেইস
ডিভোর্স কে দিতে পারেনঃ
মানুষ একসঙ্গে থাকা বা সংসার করার জন্য বিয়ে করেন। এ কারণে সাধারণত ডিভোর্স বা বিবাহবিচ্ছেদ কারও কাম্য নয়। কিন্তু বিশেষ পরিস্থিতিতে বিচ্ছেদ অনিবার্য হয়ে ওঠে। স্বামী বা স্ত্রী যে কেউ ডিভোর্স দিতে পারেন। তবে স্ত্রী ডিভোর্স দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি শর্ত রয়েছে। বিয়ে নিবন্ধনের সময় নিকাহনামার ১৮ নম্বর কলামে যদি স্ত্রীকে ডিভোর্সের অধিকার দেওয়া থাকে, তবে স্ত্রী ডিভোর্স দিতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে স্বামীর জন্য যে প্রক্রিয়া বলা হয়েছে, একই বিধান স্ত্রীর জন্যও প্রযোজ্য। তবে ডিভোর্সের অধিকার না দেওয়া থাকলে স্ত্রী পারিবারিক আদালতে আবেদন করে ডিভোর্স দিতে পারবেন।
ডিভোর্সের আইনি প্রক্রিয়াঃ
স্বামী বা স্ত্রী তালাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, পৌরসভা বা সিটি করপোরেশনের মেয়রকে লিখিতভাবে নোটিশ পাঠাতে হয়। স্বামী বা স্ত্রীকেও নোটিশের কপি পাঠাতে হবে। চেয়ারম্যান বা মেয়র নোটিশপ্রাপ্তির তারিখ থেকে ৯০ দিন অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত কোনো বিবাহবিচ্ছেদ কার্যকর হবে না। নোটিশপ্রাপ্তির ৩০ দিনের মধ্যে চেয়ারম্যান বা মেয়র সংশ্লিষ্ট পক্ষদ্বয়ের মধ্যে আপস বা সমঝোতার উদ্দেশ্যে সালিসি পরিষদ গঠন করবেন। এ সালিসি পরিষদ দুই পক্ষের মধ্যে সমঝোতার চেষ্টা করবেন। ৩০ দিন সময় চেয়ারম্যান বা মেয়র কর্তৃক নোটিশপ্রাপ্তির তারিখ থেকে হিসাব করতে হবে।
পারস্পরিক সম্মতিতে ডিভোর্সঃ
পারস্পরিক সম্মতিতে বিবাহবিচ্ছেদের মধ্যে বেশি প্রচলিত হচ্ছে ‘খুলা’। এই পদ্ধতিতে স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের সম্মতিতে স্ত্রীকে প্রদেয় দেনমোহর ও ভরণপোষণ প্রদান করে একই বৈঠকে বিবাহবিচ্ছেদ করে তা রেজিস্ট্রেশন করা হয়। এ ক্ষেত্রে ৯০ দিনের নোটিশ প্রদানের প্রয়োজন হয় না। তবে এই প্রক্রিয়ায় বিচ্ছেদের পর স্ত্রীর নতুন করে বিয়ে করার ক্ষেত্রে ইদ্দতকালীন তিন মাস সময় পার হওয়ার পর বিয়ে করতে হবে।
ডিভোর্স কখন আদালতেঃ
মুসলিম পারিবারিক আইন অনুসারে স্বামী তাঁর স্ত্রীকে ডিভোর্স দিতে চাইলে আদালতে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না। তবে নিকাহনামার ১৮ নম্বর দফা বা কলামে স্ত্রীকে ডিভোর্স দেওয়ার অধিকার না দিলে বিবাহবিচ্ছেদের জন্য স্ত্রীকে আদালতে আবেদন করতে হয়। ১৯৩৯ সালের মুসলিম বিবাহবিচ্ছেদ আইন অনুসারে স্ত্রী আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করতে পারবেন। আদালত বিবাহবিচ্ছেদের ডিক্রি প্রদান করলে ওই ডিক্রি প্রদানের সাত দিনের মধ্যে একটি সত্যায়িত কপি আদালতের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট চেয়ারম্যান বা মেয়রের কাছে পাঠানো হবে। চেয়ারম্যান বা মেয়র যেদিন নোটিশ পাবেন, সেদিন থেকে ঠিক ৯০ দিন পর তালাক চূড়ান্তভাবে কার্যকর হবে।
স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা থাকলেঃ
তালাক ঘোষণার সময় স্ত্রী যদি অন্তঃসত্ত্বা থাকেন, সে ক্ষেত্রে নিয়ম একটু ভিন্নতর। তালাকের নোটিশ পাঠানোর ৯০ দিন পরও যদি স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা থাকেন, তাহলে যেদিন সন্তান ভূমিষ্ঠ হবে, সেদিন তালাক কার্যকর হবে। এর আগে নয়। কিন্তু নোটিশ পাঠানোর ৯০ দিন আগেই যদি সন্তান ভূমিষ্ঠ হয়, তবে স্বাভাবিক নিয়মে, অর্থাৎ ৯০ দিন পর তালাক কার্যকর হবে।
ডিভোর্স রেজিস্ট্রেশনঃ
মুসলিম বিবাহ ও তালাক রেজিস্ট্রেশন আইন ১৯৭৪–এর ৬ ধারামতে তালাক রেজিস্ট্রি করতে হয়। তালাক প্রদানকারী তালাক রেজিস্ট্রেশনের জন্য সংশ্লিষ্ট কাজি বরাবর আবেদন করবেন। কাজি নির্ধারিত ফি নিয়ে তালাক রেজিস্ট্রি করবেন এবং ফি ব্যতীত প্রত্যয়িত কপি প্রদান করবেন।
ডিভোর্সের কত দিন পর বিয়ে করা যায়ঃ
আইনগত সব প্রক্রিয়া মেনে একতরফা অথবা দুই পক্ষের সম্মতিতে ডিভোর্স সম্পন্ন হওয়ার পর যেকোনো দিন পুনরায় বিয়ে করা যায়। তবে নারীদের ক্ষেত্রে খুলা তালাক সম্পন্ন হলেও পুনরায় বিয়ে করার আগে তিন মাস অপেক্ষা করতে হবে।
ডিভোর্স কার্যকরের পর আগের স্বামী বা স্ত্রীর সঙ্গে পুনরায় সংসারঃ
তালাক কার্যকরের পর যদি তালাক দেওয়া স্ত্রীকে আবার গ্রহণ করতে চান, তবে আগের মতো নিয়ম মেনে পুনরায় বিয়ে করতে হবে। তবে তালাক দেওয়ার পর যে ৯০ দিন সময় হাতে থাকে, ওই দিনের মধ্যে যদি তালাক দেওয়া স্বামী বা স্ত্রীকে গ্রহণ করতে চান, তাহলে তালাক প্রত্যাহার করে নিলেই হবে। এ ক্ষেত্রে কোনো বাধা থাকবে না। আগের মতো সংসার করতে পারবেন। কারণ, তালাক সম্পূর্ণ কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত দুই পক্ষ আইনসম্মতভাবে স্বামী-স্ত্রী হিসেবেই থেকে যান। (শফিকুল ইসলাম এবং অন্যান্য বনাম রাষ্ট্র, ৪৬ ডিএলআর, পৃষ্ঠা ৭০০)। তাই এই ৯০ দিন পর্যন্ত স্বামী তাঁর স্ত্রীকে ভরণপোষণও দিতে বাধ্য।
ডিভোর্সের পর দেনমোহর ও ভরণপোষণঃ
আমাদের দেশে একটি ভুল ধারণার প্রচলন রয়েছে, স্ত্রী যদি তালাক প্রদান করেন, তাহলে দেনমোহর পাবেন না। এ ধারণা ভুল। স্ত্রী তালাক দিলেও তিনি দেনমোহর পাবেন। বিবাহবিচ্ছেদ যেভাবেই হোক, স্ত্রী অবশ্যই দেনমোহর পাবেন। তবে নিকাহনামায় কোনো উশুল লেখা থাকলে বকেয়া টাকা পাবেন। বিয়ে যত দিন চলমান থাকবে, তত দিন স্বামী তাঁর স্ত্রীকে উপযুক্ত পরিমাণে ভরণপোষণ দিতে বাধ্য থাকবেন। এর ব্যত্যয় ঘটলে স্ত্রী যেকোনো সময় আইনের আশ্রয় নিতে পারবেন।
হিন্দুধর্মাবলম্বীদের ডিভোর্সঃ
হিন্দু আইনে বিবাহবিচ্ছেদের কোনো বিধান নেই। দাম্পত্য সম্পর্ক তিক্ত পর্যায়ে গেলে একজন হিন্দু স্ত্রী তাঁর স্বামী থেকে পৃথক ভরণপোষণ এবং পৃথক বাসস্থান দাবি করে মামলা করতে পারেন। তবে বর্তমানে আমাদের দেশে হিন্দুধর্মাবলম্বীদের অনেকেই দেওয়ানি আদালতে বিবাহবিচ্ছেদ চেয়ে ঘোষণামূলক মামলা করে থাকেন।
খ্রিষ্টধর্মাবলম্বীদের ডিভোর্সঃ
খ্রিষ্টান দম্পতি ডিভোর্স দিতে চাইলে জেলা জজ অথবা হাইকোর্ট বিভাগে আবেদন করতে হয়। দ্য ডিভোর্স অ্যাক্ট, ১৮৬৯-এর ধারা ১৭ ও ২০-এর অধীন বিবাহবিচ্ছেদ ও বাতিল–সম্পর্কিত রায় হাইকোর্ট বিভাগের মাধ্যমে নিশ্চিত করতে হয়, যা অনেক বিচারপ্রার্থীর জন্য ঝামেলাপূর্ণ। আদালতের মাধ্যমে বিবাহবিচ্ছেদের প্রক্রিয়া জটিল বলে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের মধ্যে অনেকে অ্যাফিডেভিট করে বিবাহবিচ্ছেদ ও আবার বিয়ে করে থাকেন। তবে এটা আইনসিদ্ধ নয়।
ভিন্নধর্মাবলম্বীদের মধ্যে ডিভোর্সঃ
বিশেষ বিবাহ আইনে বিয়ে হলে স্বামী বা স্ত্রী চাইলেই বিবাহবিচ্ছেদ ঘটাতে পারবেন না। এ আইন অনুযায়ী কোনো পক্ষ বিবাহবিচ্ছেদ ঘটাতে চাইলে তাঁকে ১৮৬৯ সালের ডিভোর্স অ্যাক্ট অনুযায়ী এ বিচ্ছেদ ঘটাতে হবে। এর জন্য আদালতের শরণাপন্ন হতে হবে এবং আদালতের অনুমতিক্রমে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটাতে হবে। বিবাহবিচ্ছেদের নামে একটি হলফনামা পাঠিয়ে দিলেই বিচ্ছেদ হয়ে যাবে, সেটি বলা যাবে না। আদালতের অনুমতি ছাড়া বিবাহবিচ্ছেদ সম্পন্ন করতে চাইলে অপর পক্ষ তা চ্যালেঞ্জ করতে পারবে।
ডিভোর্স না দিয়ে বিয়ের শাস্তিঃ
বিয়েসংক্রান্ত অপরাধগুলোর সংজ্ঞা ও দণ্ড সম্পর্কে দণ্ডবিধি, ১৮৬০-এর ৪৯৩ থেকে ৪৯৮ ধারা পর্যন্ত বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। এ আইনের ৪৯৪ ধারা অনুসারে, স্বামী বা স্ত্রী বর্তমান থাকা অবস্থায় পুনরায় বিয়ে করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। ওই ধারা মোতাবেক, স্বামী বা স্ত্রী বর্তমান থাকা অবস্থায় পুনরায় বিয়ে করলে তা সম্পূর্ণ বাতিল বলে গণ্য হবে। এ অপরাধ প্রমাণিত হলে প্রতারণাকারী স্বামী বা স্ত্রী সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন। তবে এর ব্যতিক্রমও রয়েছে। যদি স্বামী বা স্ত্রী সাত বছর পর্যন্ত নিরুদ্দেশ থাকেন এবং জীবিত আছেন মর্মে কোনো তথ্য না পাওয়া যায়—এমন পরিস্থিতিতে পুনরায় বিয়ে করলে তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না। এ ছাড়া কোনো স্বামী বর্তমান স্ত্রীর অনুমতি সাপেক্ষে বিশেষ কোনো পরিস্থিতিতে সালিসি পরিষদের কাছে পুনরায় বিয়ের আবেদন করতে পারেন। সালিসি পরিষদ তা যাচাই–বাছাই করে বিয়ের অনুমতি দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে পুনরায় বিয়ে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে না। আগের বিয়ের কথা গোপন রেখে প্রতারণার মাধ্যমে পুনরায় বিয়ে করলে তা ৪৯৫ ধারা মোতাবেক শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এ ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হলে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। আবার কেউ জেনেশুনে অন্যের স্ত্রীকে বিয়ে করলে দণ্ডবিধির ৪৯৪ ধারা মোতাবেক সেটি বাতিল হয়ে যাবে। এ ক্ষেত্রে তা দণ্ডবিধির ৪৯৭ ধারা মোতাবেক ব্যভিচার হিসেবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। অপরাধ প্রমাণিত হলে পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড হতে পারে।
মামলা কোথায় করবেনঃ
বিয়েসংক্রান্ত অপরাধ ঘটলে সরাসরি আদালতে মামলা করতে হবে। এ ক্ষেত্রে মামলার প্রমাণ হিসেবে বিয়ের কাবিননামা ও অন্যান্য প্রমাণ সঙ্গে জমা দিতে হবে এবং আইনজীবী নিয়োগ করতে হবে। মামলা চালানোর সামর্থ্য না থাকলে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার বরাবর আবেদন করতে হবে।
Click here to claim your Sponsored Listing.
Videos (show all)
Category
Telephone
Website
Address
Gazipur
1710
Gazipur Judge Court
Gazipur, 1703
Glorious Law & Justice - GLJ (Legal Services) আপনার আইন বিষয়ক যে ক?
234, Block/B, Mawna Chowrasta, Ward-08, Sreepur Municipal
Gazipur, 1740
Legal Service is your human right.
Shop-08, 2nd Floor, Bhawal Convention Center, Dhaka Road, Chowrasta
Gazipur, 1704
"অফিস কিংবা কোম্পানির, সকল নিবন্ধন এখন এক জায়গায়"