R.K.Menon Legal Academy

R.K.Menon Legal Academy

You may also like

sabbir max
sabbir max
My Tv 1M
My Tv 1M

We provide all types of legal support and activities

13/05/2022

কেস স্টাডি-১ঃ ১৯২৩ এর আগস্ট মাসের ৩ তারিখ। বেলা ৩.৩০ মিনিট। শংকরীতলা পোস্ট অফিসে আসামী বরেন্দ্রকুমার সহ চারজন দস্যুতাবৃত্তি করার এক পর্যায়ে পোস্টমাস্টার অমৃত লাল রায় বন্দুকের গুলিতে খুন হন। উল্লেখ্য, মৃত পোস্টমাস্টার অন্য তিনজন আসামীর দ্বারা গুলিবিদ্ধ হলেও বরেন্দ্র কুমার বাহিরে পাহারারত অবস্থায় ছিলেন।
মামলা ক্যালকাটা হাইকোর্টে গেলে আত্মপক্ষ সমর্থনে বরেন্দ্র কুমারের আইনজীবী তার মক্কেলের খুনে অংশগ্রহণ না করার ডিফেন্স উত্থাপন করেন। কিন্তু মহামান্য ক্যালকাটা হাইকোর্ট দণ্ডবিধির ৩৪ ধারার অধীনে সাধারণ অভিপ্রায়কে (Common Intention) উপজীব্য ধরে বরেন্দ্র কুমারকে ৩৫ ধারার অধীনে যৌথদায়ে অভিযুক্ত করে খুনে অংশগ্রহনকারী বিবেচনা করে তাকেও সমান শাস্তি প্রদান করে যদিও প্রমাণ হয় বরেন্দ্র কুমার গুলি করেনি। কিন্তু শুধু অপরাধের প্রকৃতি সম্পর্কে বরেন্দ্র কুমারের পূর্ব ধারনা ও তার প্রেক্ষিতে অংশগ্রহণের জন্যই তার অন্যান্য আসামীর মতই সাজা হয়। একেই সাধারণ ভাষায় ’সাধারণ অভিপ্রায়' বলে। আর সাধারণ অভিপ্রায় অনুযায়ী অপরাধে অংশগ্রহণের শাস্তি সমান হয় যাকে যৌথ দায় বলে। এটিই বিখ্যাত Barendra Kumar Ghosh v. King Emperor মামলা বা 'The Post Master Case'.

কেস স্টাডি-২ঃ Mr. X তার বন্ধু Mr. Y কে কোন তথ্য না জানিয়ে তাকে কোন বাড়ির বাইরে দাঁড় করিয়ে সেই বাড়িতে অনধিকার প্রবেশ করে এবং সেই বাড়ির মালিককে আঘাত করে। এক্ষেত্রে Mr. X আঘাতের শাস্তি পেলেও Mr. Y দণ্ডবিধির ৩৮ ধারায় ভিন্ন অভিপ্রায়ের কারণে শাস্তিযোগ্য হবেনা। শুধু অপরাধের ইচ্ছার ঐক্যের অভাবে (বা অপরাধ সম্পর্কে পূর্ব পরিকল্পনা না থাকার কারণে) Mr. Y এর পরিনতি বরেন্দ্র কুমারের মত হল না।

গল্প দু'টি থেকে দু'টি শিক্ষা পাই-
১. প্রতিটি মামলাই বৈচিত্র্যময়। শুধু উপস্থিত থাকলে অপরাধীর তকমা গায়ে সেঁটে দেয়ার প্রবণতা আমাদের থাকলেও আইন তা বলেনা।
২. প্রতিটি আসামীরই তার আত্মপক্ষ সমর্থনে কিছু বলার থাকতে পারে।

১৯৪৮ সালের মানবাধিকার দলিলের ১১ নম্বর অনুচ্ছেদে নির্দোষিতার অনুমান বা Presumption of innocence (Innocent untill proven guilty) কে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে। হাতে হাতকড়া থাকলেই কেউ অপরাধী হয়না। বিচারের রায়টাই মূখ্য। এমনকি কোন ব্যক্তিকে অপরাধী বলতে হলে আপিল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।

অপরাধীর শাস্তি সবাই প্রত্যাশা করে। কিন্তু তথ্য বিভ্রাটের এই সময়ে মাউসের এক ক্লিকেই সত্যকে মিথ্যা আর মিথ্যাকে সত্য করার সুযোগ থেকে যায়। তাই একজন অপরাধীর সাথে নিরীহ ব্যক্তির নাম যুক্ত হওয়া শুধু ক্লিকের অপেক্ষা।

একারণেই আইনের অন্যতম নীতি হলো, "একশো অপরাধী ছাড়া পাক, কিন্তু কোন নিরপরাধ ব্যক্তি যেন শাস্তি না পায়।" এমনকি আসামী বা অভিযুক্ত (Accused) শব্দগুলোর সাথে অপরাধী (Convict/ Offender/Criminal) শব্দগুলোর ব্যবহারিক পার্থক্য রয়েছে।
আর এ কারণেই যেকোন ব্যক্তির (এমনকি অপরাধীর ও) আইনজীবী নিয়োগেরও অধিকার রাষ্ট্র আইন করে কেড়ে নিতে পারে না। এটা একজনের সাংবিধানিক অধিকার।

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৩৩(১) অনুচ্ছেদে আলোকপাত করা হয়েছে ”....nor shall he be denied the right to consult and be defended by a legal practitioner of his choice.”
অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করতে আইনজীবী যেমন দায়বদ্ধ ঠিক তেমনি নিরপরাধ কোন ব্যক্তিকে মুক্ত করতেও একইভাবে সাংবিধানিকভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম সহ সকল গণমাধ্যম শুধু ঘটনা প্রকাশ করতে পারে কিন্তু বিচারকের আসনে বসতে পারেনা। ১৮৭২ সালের সাক্ষ্য আইনের ৬০ ধারায় media trial কে জনশ্রুতি সাক্ষ্য (Hearsay Evidence) হিসেবে অগ্রহণযোগ্য বিবেচনা করা হয়েছে। ৬০ ধারায় মূল উপজীব্য হলো-Evidence must be direct or
Hearsay evidence must not acceptable in all cases. কেননা একজন রিপোর্টারের তথ্যগুলো তার নিজের চাক্ষুষ নয়, বরং সংগৃহীত। তাই তথ্যগুলো যতক্ষণ না আদালতে জেরার মাধ্যমে পরীক্ষা করার সুযোগ হচ্ছে ততক্ষণ তা অগ্রহণযোগ্য। এই বিধানটি সার্বজনীন ও যুক্তিযুক্ত।

তাই আইনজীবীর মামলা গ্রহনে অস্বীকৃতি সেই আইনজীবীর অধিকার হলেও আসামীর আইনজীবী না পাওয়ার ঘটনা একটি অসাংবিধানিক বিষয়। এমনো হতে পারে, কোন অপরাধে নিকৃষ্ট অপরাধীর নামের তালিকায় কোন নিরীহ ব্যক্তির নাম ভুলক্রমে বা কারো ইচ্ছাকৃতভাবে যুক্ত করা হয়েছে।

অপরাধীর শাস্তির দাবীতে সোচ্চার হওয়া যেমন ন্যায়বিচার অন্বেষণ করার নামান্তর ঠিক তেমনি আইনজীবী রূপে ঘটনার ভিতরের গল্প উদঘাটন করে নিরপরাধ ব্যক্তিকে মুক্ত করে আনাও ন্যায়বিচারের আরেক রূপ। তাই আদালতে বিচারের আগেই প্রমাণ ছাড়া কাউকে অভিযুক্ত করাও প্রাসঙ্গিক নয়।

ছোট্ট একটি গল্প দিতে যবনিকাপাত করছি। খুব সম্ভবত ন্যায়বিচারক হযরত উমর বিন খাত্তাব (রাঃ)এর রাজত্বের কথা। এক ব্যক্তি উমরের আদালতে অপর এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে তার চোখ উপড়িয়ে ফেলার অভিযোগ নিয়ে এসেছে। প্রমাণস্বরূপ এক হাতে করে তার তুলে নেয়ে চোখটি নিয়ে হাজির হয়েছে। এই ঘটনায় অন্যান্য জুরিদের চোখ ছানাবড়া৷ সবাই উমর কে তাৎক্ষণিক ন্যায় বিচার প্রদান করে অপরাধীর শাস্তি নিশ্চিত করার জন্য চাপ প্রয়োগ করতে লাগলেন। সবার যুক্তি ছিল, তুলে ফেলা চোখ যখন হাতে তখন আর কী প্রমাণ প্রয়োজন?
উত্তরে উমর বললেন, এটি তাহলে বিচার হবে তবে ন্যায় বিচার নয়। কেননা, এমনো হতে পারে যার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে এই বাদী হয়তো তার দু'টি চোখই তুলে নিয়েছে, যার কারণে সে আদালত প্রাঙ্গণে আসতে পর্যন্ত পারছেনা। তাই দুই পক্ষের কথা না শুনে বিচার করতে তিনি অস্বীকার করেছিলেন। Audi Alteram Partem (Hear the both sides or nobody can be condemned unheard) তত্ত্বটির এর এটি একটি চমৎকার উদাহরণ।

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর 'গান্ধারীর আবেদন' তাই বলেছিলেন, ...... দণ্ডিতের সাথে
দণ্ডদাতা কাঁদে যবে সমান আঘাতে
সর্বশ্রেষ্ঠ সে বিচার।......
মূল কথাই হলো, বিচার আর ন্যায়বিচার এক নয়। ন্যায়বিচার প্রপঞ্চটি তাই যতোটা না ব্যাখ্যার বিষয় তার চেয়েও বেশী অনুধাবনের আর চর্চার।
কালেক্টৈড:শের-ই-আলম সোহাগ স্যার
এসিস্ট্যান্ট প্রফেসর, ডিপার্টমেন্ট অফ ল অ্যান্ড জাস্টিস, মেট্রোপলিটন ইউনিভার্সিটি,বাংলাদেশ।

11/05/2022

আইন বিষয়ে পড়াশোনা করেন এইরকম অনেকেই আছেন যাদের মনে দ্বিধা বা সংশয় থাকে যে,আইন পড়া বা আইনজীবী হওয়া কি আসলে সম্মানিত বিষয় কিনা? এই ঘটনা টি পড়লে হয়তো অনেকেই তাদের উত্তরটি পেয়ে যাবেন।

আইনি আলোচনাঃ ফৌজদারি কার্যবিধি, সাক্ষ্য আইন, জুরিস্প্রুডেন্স।

মাত্র ২০ হাজার টাকা চেয়েছিলো পুলিশ। কিন্তু ওই টাকা দেওয়ার মতো কেউ ছিলো না শংকর দেবনাথের।
পড়ুন Shishir Manir এর পোস্ট। তিনি ফাঁসির আসামি শংকরের ফাইলটি খুঁজে বের করেছিলেন। বিজ্ঞ আইনজীবী শিশির মনিরকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।..
১। এই মামলার পেপারবুক হাতে পেয়ে বার বার পড়লাম। ঘটনার বর্ণনা পড়ে গা শিহরিয়া উঠল। Horror সিনেমার মত বীভৎস বর্ণনা। যতই পড়ি ততই অবাক হই। আর ভাবি এটি কিভাবে সম্ভব! কিন্তু আইনজীবী হিসেবে অবাক হলেই ত হবে না! দেখাতে হবে প্রমাণ। সাক্ষী-সাবুদ। সেজন্য দরকার বার বার পড়া। ফিকির করা। গবেষণা করা। নজির খুঁজা। আমার জুনিয়র বন্ধু ইমরানকে বার বার পড়তে বললাম। রিসার্চ করতে দিলাম। নজির বের করার দায়িত্ব দিলাম। বেশ খাটাখাটি করল।প্রাথমিকভাবে সন্তুষ্ট হলাম। সিদ্ধান্ত নিলাম শংকরের জন্য আমরা সংগ্রাম করব।

২। আসামির পরিচিত একজনকে পেলাম। তার নাম এডভোকেট আলমগীর। জেলে থাকা আবস্থায় তার সাথে পরিচয়।তিনি ঢাকা জজ কোর্টে ওকালতি করেন। নবাব আলী ভাই তার মাধ্যমে জেল কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ওকালাতনামা ব্যবস্থা করলেন। জেল আপিলকে নিয়মিত আপিলে রুপান্তর করার জন্য দরখাস্ত দিলাম। আদালত মন্জুর করলেন। মামলাটি নিয়মিত আপিলে পরিণত হল। নতুন নম্বর পরল। এরই মধ্যে আদালত ১৫ দিলের জন্য ছুটি হয়ে গেল। সময় নিয়ে গভীরভাবে পড়ার সুযোগ পেলাম।

৩। পড়াশুনা করে আমরা মোটামুটি বুঝতে পারলাম বর্ণনা যত বীভৎসই হউক না কেন এই আসামী নির্দোষ। সাক্ষী-সাবুদ কোন কিছুই সঠিকভাবে উপস্থাপন করা হয়নি। নিরপরাধ মানুষকে ফাঁসিয়ে দেয়া হয়েছে। সে পরিস্থিতির স্বীকার। খুঁজাখুজির এর পর্যায়ে নজির পাওয়া গেল। আমাদের দেশের ৩টি আর ভারতীয় ২/৩ টি। সেগুলো ভালভাবে পড়লাম। কাছাকাছি আলোচনা। সত্যিই লিগ্যাল রিসার্চ অনিন্দ্য সুন্দর। এই কাজ করার জন্য দরকার গভীর মনোযোগ, কৌতুহলি মন এবং অগাধ ধৈর্য।

৪। মামলার শুনানি শুরু হল। প্রথমেই রাষ্ট্রপক্ষ সম্পূর্ণ পেপারবুক পড়ে শুনাল।মাননীয় বিচারকগণ নানান প্রশ্ন করলেন। রাষ্ট্রপক্ষ সঠিক সন্তোষজনক জবাব দিতে পারল না। এডভোকেট নবাব আলী বসে বসে নোট নিল। দিন শেষে আমাকে ব্রিফ করত। আমরা জবাবের জন্য প্রস্তুতি নিলাম। ৫/৬ দিন পর আমার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় আসল।

৫। যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের পূর্বে ঘটনাটি সংক্ষিপ্তভাবে বলে নেয়া ভাল। আজ থেকে ১৬ বছর আগে কমলাপুর রেলস্টেশনের ৭ নম্বর প্লাট ফর্মের কাছে শংকর দেবনাথকে একটি দ্বিখণ্ডিত মাথাসহ পুলিশ গ্রেফতার করে। মাথাটি তার হাতে ব্যাগের ভিতর পাওয়া যায়। সাথে কিছু ঘাসও ছিল। ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার করে শাহজাহানপুর থানায় নিয়ে যায়। দুইদিন পর তাকে ঢাকার মেজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করে। শংকর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। তার স্বীকারোক্তি মতে জাকির নামে আরেকজনকে গ্রেফতার করে চাঁদপুর থেকে। গ্রেফতারের পর শংকরকে নিয়ে যাওয়া হয় গাজীপুরের শালবনে। সেখান থেকে লাশের বাকি অংশ উদ্ধার করা হয়। এই মর্মে তারা দুজনই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়। তাদের ভাষায় একজনকে ভয় দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা আদায়ের জন্য একটি অনাথ ছেলেকে ব্লেড দিয়ে গলা কাটে। অতঃপর লাশের মাথা ব্যাগে রেখে দেয়। এমন সময় উপস্থিত লোকজন তাদের হাতে নাতে ধরে ফেলে।খবর পেয়ে পুলিশ তাদের গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। তখন থেকেই সে জেলে আছে। আর কোনদিন জামিন পায় নাই। ৭/৮ বছর কোন সাক্ষী আসে নাই। ৬ জন সাক্ষীর জবানবন্দি নিয়ে ঢাকার আদালত তাদের দুইজনকে ফাঁসির আদেশ দেয়।রায়ের প্রায় ৭ বছর পর Death Reference শুনানির জন্য হাইকোর্টে কার্যতালিকায় আসে।

৬। আগে থেকেই প্রস্তুতি ছিল। ৬টি নজির দিয়ে একটি রিসার্চ bundle বানিয়ে ৪ কপি করলাম। এক কপি রাষ্ট্রপক্ষ। দুই কপি দুইজন বিচারক ও আরেক কপি আমার নিজের। তার আগে মামলার মূল রেকর্ড কয়েকবার পর্যালাচনা করলাম। আমি ও আমার জুনিয়র ইমরান সামি তন্ন তন্ন করে পাতায় পাতায় খুঁজলাম। বার বার দেখলাম।হঠাৎ চোখে পরল অস্বাভাবিক একটি বিষয়। সকল কিছু মিলিয়ে কৌশল ঠিক করে রেখেছিলাম। সেভাবেই শুরু করলাম। নিম্নোক্ত তিনটি point এ যুক্তি উপস্থাপন করলামঃ

ক। এই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীর আইনগত কোন মূল্য নেই।
খ। এই জবানবন্দী আমার নয়।
গ। বেকসুর খালাস চাই এবং আমার জীবনের মূ্ল্যবান সময় নষ্ট করার জন্য ক্ষতিপূরণ/পুনর্বাসন চাই।

বুঝার সুবিধার্থে বিষয় তিনটি আলাদা করে আলোচনা করছিঃ

আইনগত মূল্য নাই

ক। একটি স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী গ্রহণ করার আগে দুটি অনিবার্য বিষয় পরীক্ষা করতে হয়। যথাঃ এটি স্বেচ্ছায় করা হয়েছে কি না? এবং এটি সত্য কি না? এই দুটি শর্ত একসাথে পুরণ করতে পারলেই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী গ্রহণ করা যাবে এবং এর আলোকে শাস্তি দেয়া যাবে। অন্যথায় এই জবানবন্দীর ভিত্তিতে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা যাবে না। বললাম,'My Lords, these two conditions are inseparable twin. Prosecution must prove that the confessional statement is voluntary and true. These two conditions are concomitant side of the same coin. I will show your Lordships that it was neither voluntary nor true.' সিনিয়র বিচারক বললেন,'আচ্ছা দেখান। কিভাবে দেখাবেন?' প্রথমেই বললাম,' আইনে আছে ২৪ ঘন্টার বেশি কাউকে পুলিশ হেফাজতে রাখা যাবে না। যদি রাখে এবং তারপর স্বীকারাক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে তাহলে ঐ জবানবন্দীর আইনগত মূল্য নাই। কারণ এ সময় তাকে illegal detention এ রাখা হয়েছিল। জজ সাহেবরা মাথা নাড়ালেন।আমি রেকর্ড থেকে দেখালাম তাকে ৪৮ ঘন্টার বেশি পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছিল। গ্রেফতার করার পর তাকে গাজীপুরের শালবনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে গিয়ে লাশের কঙ্কাল উদ্ধার করার বর্ণনা দেয়া হয়েছে। তারপর ঢাকায় নিয়ে আসে। তারও একদিন পর আদালতে উপস্থাপন করা হয়। এই বিলম্বের কারণে আদালতের কোন অনুমতি নেয়া হয় নাই। জজ সাহেব বললেন,'কোন নজির আছে।' সাথে সাথে উত্তর দিলাম,'Yes My Lords. I have prepared thin bundle for your kind assistance. In this bundle there are two earlier decisions from our Supreme Court (Appellate Division) and one decision from our High Court Division. In all these cases our apex Courts were pleased to acquit the condemned prisoners who were kept in police custody for more than two days.' বিচারপতি মহোদয়গণ আমার সাথে সাথে নজিরসমূহ পড়লেন। আমি বললাম,' My Lords, may I invite you to the page No.... and line no.....' Both the Judges replied 'yes.' Then I read out those paragraphs and the Hon'ble judges also read those lines carefully and noted in their notebook. অতএব, এই জবানবন্দী voluntary নয়। এর উপর ভিত্তি করে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা যাবে না।

জবানবন্দী আমার নয়

খ। পরবর্তী point এই জবানবন্দী আমার নয়। এই ভাষ্য সত্য নয়। জজ সাহেব বললেন, কেন বলছেন? My Lord, দুই কারণে বলছি। এক. দেখুন এই জবানবন্দীর নিচে প্রদত্ত স্বাক্ষর কার? দুই. এই মাথা আর এই কঙ্কাল কার? মাথা তরুতাজা কিন্তু শরীর পুরানো কেন? ডাক্তারের পরীক্ষা কি বলছে?

এক. এই জবানবন্দীর মূল স্বাক্ষরটি দেখেন। এই কথা বলে আমি LCR (Lower Court Record) দেখার অনুরোধ করলাম। বিচারকদের হাতে তুলে দিলাম। বললাম,' দেখেন My Lords, এই জবানবন্দী যার হাতের লেখা এই স্বাক্ষরও তারই হাতের লেখা। ম্যাজিস্ট্রেট সাহেব নিজেই স্বাক্ষর দিয়েছেন এই কথা আমি বলছি না। আমি বলছি একই হাতের লেখা। তাহলে কে লিখল? মেজিস্ট্রেট? আমি? নাকি পুলিশ? যেই লিখুক এটি বেআইনী। জালিয়াতি। গভীর মনোযোগ দিয়ে দুইজন বিচারপতি বার বার দেখলেন। চিন্তায় পরে গেলেন। কি করে হয় এটা? আমাকে আবার দেখতে বললেন। আমিও দেখলাম। রাষ্ট্রপক্ষ দেখল। সবাই অবাক করে তাকিয়ে রইল। শুনশান নীরবতা। বললাম হস্তলেখা বিশারদের মাধ্যমে পরীক্ষা করা দরকার। আপনারা নিজেরাও খালি চোখে দেখে বুঝতে পারছেন। আবারও নোট নিলেন। আমি বললাম,' My Lords, fraud has been practiced upon me and fraud vitiates everything. I have been put to condemned cell based on this fraud. Golden period of my life already passed. Who will be responsible for this irreparable loss? 16 years I am in jail. I was a young man and now I am 42 years old. Who will return those days? Can it be compensated by money? Who can replace my life?' অনুভব করলাম বিচারকরা বেশ আবেগ প্রবণ হয়ে গেলেন।

দুই. এই লাশ আর এই মাথা এক নয়। দেখেন ডাক্তারের মতামত অনুযায়ী মাথার বয়স আনুমানিক ৮ বছর আর কঙ্কালের বয়স আনুমানিক ১৬ বছর। ঘটনা ঘটেছে আগেরদিন পরেরদিন দেহ কঙ্কাল হল কেমনে? কোথায় পেল সেই কঙ্কাল? মানবদেহের মাংস কি একদিনে পঁচে যায়? কঙ্কাল হয়ে যায়!! মেডিকেল সাইন্স কি বলে? এই কথা বলে Modi's A Textbook of Medical Jurisprudence and Toxicology বই দেখালাম। পড়ে শুনালাম। কোনভাবেই সম্ভব না। তাহলে এই হাড্ডি কার? রাষ্ট্র DNA পরীক্ষা করল না কেন? কেন নির্ধারণ করেনি? না করেই আমাকে আসামী করল কিভাবে? এটাও প্রতারণা। বিচারকরা বেশ নিস্তব্ধ হয়ে গেলেন। আমি শুধু বললাম,'My Lords, this is an unique case for compensation. This person needs to be rehabilitated by the state. State can not ignore responsibility. Your Lordship should look into this aspect very seriously. It is miscarriage of Justice.'

ক্ষতিপূরণসহ খালাস

গ। খালাস আর ক্ষতিপূরণ। সবকিছু বিবেচনায় নিয়ে আমাকে বেখসুর খালাস দেন। একই সাথে ক্ষতিপূরণ বা পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দেন। নতুন উদাহরণ সৃষ্টি করেন। আমাদের আলোকিত করেন। আপনাদের মহানুভবতা প্রতিষ্ঠিত হউক। কারণ miscarriage of Justice হয়েছে। এখানে খালাসই যথেষ্ট নয়। তার জীবন থেকে হারিয়ে যাওয়া সময় কেউ ফেরত দিতে পারবে না। তার পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে আমরা কিছুটা হলেও স্বস্তি পেতে পারি। অন্যায় করা হয়েছে। তার জীবন শেষ করে দেয়া হয়েছে। রাষ্ট্রকে সেই দায় নিতে হবে। দায় স্বীকার করে অনুতপ্ত হতে হবে। ভবিষ্যতে নজির হয়ে থাকবে। এই কথা বলে একটি দরখাস্ত দেখালাম। এটি ছিল ক্ষতিপূরণ বা পুনর্বাসনের দরখাস্ত। জজ সাহেব বললেন,' বাহ! শুধু খালাসই চান না, ক্ষতিপূরণও চান।' বললাম Yes, My Lords.'

০৭। যুক্তিতর্ক শেষে জজ সাহেব রায়ের দিন ঘোষণা করার জন্য ফাইল নিলেন। তখন কথা উঠল ক্ষতিপূরণের দরখাস্তের কি হবে? জজ সাহেব বললেন,' এই ধরনের নজির কি আছে? আমি বললাম জি আছে। আমার দেয়া Bundle টি দেখেন। আবার শুনানি শুরু হল। দুটি নজির দেখালাম। একটি আমাদের দেশের অন্যটি ভারতের। আমাদের দেশের নজিরটি রিট এখতিয়ারে দেয়া হয়েছিল। সেখানে বিস্তারিত আলোচনা আছে। আর ভারতের নজিরটি ফৌজদারি এখতিয়ারে দেয়া হয়েছিল। দুটো রায় থেকে পড়ে শুনলাম। জজ সাহবে একমত হলেন। রাষ্ট্রপক্ষকে উদ্দেশ্য করে বললেন,' আছে ত নজির। এটি শুরু হওয়া দরকার। নতুন ধারণা। নতুন চিন্তা। এভাবেই Jurisprudence develop করে। এখানে miscarriage of Justice হয়েছে। তাই খালাসই যথেষ্ট নয়। ' রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী দাঁড়িয়ে সময় চাইলেন। বললেন,' My Lords, মাননীয় Attorney General বিষয়টি জেনেছেন। তিনি এই বিষয়ে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করবেন। তিনি ৩ সপ্তাহ সময় চেয়েছেন। কারণ বিষয়টি আমাদের কাছে সম্পূর্ণ নতুন। খালাসের পর ক্ষতিপূরণ বা পুনর্বাসন নতুন ক্ষেত্র খুলে দিবে।

০৮। এই বিষয়ে আরও বিস্তারিত আলোচনা হল। অন্য আসামীর জন্য আরেকজন আইনজীবী ছিলেন তিনি বললেন, My Lord, রায়ের দিন নির্ধারণ করে দেওয়াই ভাল। তাছাড়া আদালত বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বন্ধের আগেই রায় ঘোষণা হওয়া জরুরী।জজ সাহেব আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন,কি করব? বলেন? আমিও রাজি হয়ে গেলাম।রায়ের দিন নির্ধারণ করে দিলেন।

০৯। আগে থেকেই বুঝতে পারছিলাম খালাস পাব। ক্ষতিপূরণ নিয়ে তিনি কি বলেন সেটা নিয়ে বেশ উদ্বিগ্ন ছিলাম। রায়ের দিন সবাই হাজির। জজ সাহেব ঘোষণা করলেন, 'ফাঁসির আদেশ বাতিল করা হল। দুইজনকেই বেকসুর খালাস প্রদান করা হল। এই মামলায় miscarriage of Justice হয়েছে। আসামীরা চাইলে আলাদাভাবে ক্ষতিপূরণ বা পুনর্বাসন চাইতে পারে। একই সাথে ২১ জন পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়কে নির্দেশ দিলেন।' বললেন,' রায়টি আমি তাড়াতাড়ি নামিয়ে দিব।'

১০। রাষ্ট্রপক্ষ এই রায়ের বিরুদ্ধে আর আপিল করল না। প্রায় দুই মাস পর হঠাৎ নবাব আলী ভাই জানাল শংকর মুক্তি পেয়েছে। তার সাথে ফোনে কথা হয়েছে। শুনে মনটা আনন্দে নেচে উঠল। খুবই পুলকিত বোধ করলাম। এডভোকেট আলমগীরের সাথে কথা হল। বললাম, আমি তাকে দেখতে চাই। কথা বলতে চাই। একবার নিয়ে আসেন। বলল পরের দিন নিয়ে আসবে।

১১। এনেক্স ৭ নম্বর কোর্টে বসে আছি। নবাব আলী ভাই ফোন দিয়ে বলল আলমগীর ভাই ও শংকর দেবনাথ@আনোয়ার দেখা করতে আসছে।নিজের অজান্তেই চোখের কোনে পানি এসে গেল। ভাবতে লাগলাম দেখতে কেমন সে? কোনদিন ত দেখিনি! তার চেহারা কেমন হবে? এতদিন মৃত্যুর সেলে থাকার পর তার অনুভুতি কেমন হবে? মুক্তির পরই বা কেমন অনুভূতি তার? অবচেতন মনে ভাবতে ভাবতে সে এসে গেল। আলমগীর পরিচয় করিয়ে দিল। আমি উঠে কোলাকুলি করলাম। অন্য রকম অনুভূতি। ভাষায় সব প্রকাশ করা সম্ভব নয়। অনেক কথোপকথনের পর জিজ্ঞাসা করলাম কি হয়েছিল? কেন আপনাকে গ্রেফতার করল? তখন বললঃ

স্যার, আমি নতুন মুসলমান হয়েছিলাম। ঢাকায় মেসে থেকে দর্জির কাজ করতাম। কমলাপুর রেল স্টেশনের পাশে নতুন অভারব্রিজ নির্মাণ করা হয়েছিল। কৌতুহল বশতঃ বিকালে দেখতে গিয়েছিলাম। হাটাহাটি করতে বের হয়েছিলাম। হঠাৎ দেখলাম কিছু মানুষ জড়ো হয়ে কি যেন দেখছে? আমিও দেখতে গেলাম। দেখি ট্রেনে কাটা পরা একটি মাথা সবাই ভীড় করে দেখছে। আমিও উৎসুক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকলাম। পুলিশ এসে সেখান থেকে কয়েকজনকে গ্রেফতার করল। আমাকেও গ্রেফতার করল। অন্যদের অভিভাবক বা আত্মীয়-স্বজনরা এসে ছুটিয়ে নিয়ে গেল। আমার কেউ নাই। আমার জন্য কেউ আসল না। আমার কাছে ২০ হাজার টাকা চাইল। আমি দিতে পারি নাই। তাই আমার এই অবস্থা স্যার। বলতে বলতে সকলেরই চোখ ঝাপসা হয়ে গেল..............................
কালেক্টেড: বিজ্ঞ আইনজীবী Monir এর পোষ্ট থেকে।

01/05/2022

Sign Up | LinkedIn 500 million+ members | Manage your professional identity. Build and engage with your professional network. Access knowledge, insights and opportunities.

23/04/2022

হিন্দু আইনে বিবাহ বিচ্ছেদ এর কিছু আইনি প্রক্রিয়া:-

ডিভোর্স অর্থ বৈবাহিক সম্পর্কের বিচ্ছেদ ঘটানো। এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিবাহ সামাজিক ও আইনগত দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সম্পূর্ণভাবে ভেঙে যায়। পারিবারিক কলহ, অর্থনৈতিক নির্ভরশীলতা, অপ্রাপ্ত সম্পর্ক, বন্ধ্যাত্ব ইত্যাদি নানা কারণে বিবাহবিচ্ছেদ হতে পারে। বিবাহবিচ্ছেদের ধারণা সাধারণ্যে গৃহীত বা অনুমোদিত হলেও হিন্দু আইন অনুযায়ী স্বীকৃত নয়। হিন্দু সমাজে বিবাহকে দেখা হয় স্বামী ও স্ত্রীর ধর্মীয় কর্তব্য সম্পাদনের উদ্দেশ্যে পবিত্র মিলন হিসেবে। হিন্দু ধর্মদর্শন বৈবাহিক সম্পর্ককে 'অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক' হিসেবে গণ্য করে।
ঋষি মনু বিশ্বাস করতেন যে, স্ত্রীর কর্তব্য এমনকি মৃত্যুর পরও চলতে থাকে। তাই তার কখনোই দ্বিতীয় স্বামী থাকতে পারে না।
কারণ, হিন্দু পুরাণতত্ত্ব অনুযায়ী বিবাহের মধ্য দিয়ে স্বামী ও স্ত্রীর মাঝে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক তৈরি হয়। এ কারণেই হিন্দু প্রথা অনুযায়ী বিবাহবিচ্ছেদ স্বীকৃতনা হলে কোনো পক্ষই একে অন্যকে ডিভোর্স দিতে পারে না।
হিন্দু মতবাদের দায়ভাগ আইনে (যা বাংলাদেশে প্রচলিত) ডিভোর্স স্বীকৃত নয়। যদিও মিতাক্ষরা আইনে ডিভোর্স বেশ কিছু ক্ষেত্রে স্বীকৃতি পেয়েছে।যা হোক, ১৯৫৫ সালের হিন্দু বিবাহ আইন পাসের মধ্যে দিয়ে ভারতে বিবাহ ও বিবাহবিচ্ছেদের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। আইনটি পাসের ফলে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক হিসেবে বিবাহের ধারণা পুরোপুরি বিলুপ্ত হয় এবং তা মুসলিম আইনেরমতোই আইনসিদ্ধ চুক্তিতে রূপান্তরিত হয়।
আইনটিতে বিবাহবিচ্ছেদের অংশটি সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ।
ধারা ১৩(১)-এর অধীনে স্ত্রী বা স্বামী উভয়কেই বিবাহবিচ্ছেদ ঘটানোর অধিকার দেয়া হয়েছে। স্বামী ও স্ত্রীর যে কেউ আদালতে বিবাহবিচ্ছেদের আজ্ঞপ্তি (ডিক্রি অন ডিভোর্স) পাওয়ার জন্য আবেদন (পিটিশন) দাখিল করতে পারেন।
আইন অনুযায়ী বেশ কিছু কারণে বিবাহবিচ্ছেদের আবেদন করা যায়।
***************************
যেমন,
★স্বামী যদি তার স্ত্রী ব্যতীত অন্য কোনো নারীর সঙ্গে স্ত্রীর ইচ্ছার বিরুদ্ধে সহবাস করে থাকে।
★ আবেদনকারী যদি নিষ্ঠুরতার শিকার হয় কিংবা আবেদনকারীকে যদি দরখাস্ত দাখিলের পর থেকে টানা দুই বছর ত্যাগ করা হয়।
★স্বামী-স্ত্রী দুজনের কেউ যদি অন্য ধর্ম গ্রহণের মাধ্যমে নিজ ধর্ম ত্যাগ করে।
★দুই পক্ষের কেউ যদি দুরারোগ্য মানসিক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়; যা কখনোই ভালো হওয়ার নয়।
★কেউ যদি কুষ্ঠের মতো দুরারোগ্য কিংবা সংক্রামক ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়।
★ স্বামী-স্ত্রীর কাউকে যদি সাত বছর ধরে খুঁজে পাওয়া না যায়★
তখন সংক্ষুব্ধ পক্ষ বিবাহবিচ্ছেদের জন্যে আদালতেরদ্বারস্থ হতে পারেন।
শুধু তাই নয়, ওই আইনের ধারা ১৩(২)(৪) অনুযায়ী একজন হিন্দু নারী বিবাহবিচ্ছেদের জন্য পিটিশন দায়ের করতে পারেন, যেখানে তার ১৫ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই বিবাহ সম্পন্ন হয়েছে এবং সে ১৫ বছর পূর্ণ হওয়ার পর বিবাহ বাতিল করেছে।
তবে ১৮ বছর পূর্ণ হবার পূর্বেই এ ধরনের আবেদন করতে হবে।হিন্দু অধ্যুষিত রাষ্ট্র নেপাল ১৯১০ সালে মূলিকি আইন প্রণয়নের মাধ্যমে পুরুষদের পরোক্ষভাবে বিবাহবিচ্ছেদ ঘটানো আইনগত স্বীকৃতি দিয়েছে।
পরবর্তীতে আরো দুটি পৃথক আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নারীদেরকেও ওই অধিকার দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশে প্রচলিত দায়ভাগ আইন অনুসারে ডিভোর্স সম্ভব নয়। কারণ হিন্দু সনাতন আইনে ডিভোর্সের কোনো প্রচলন নেই। কেবল একটি ক্ষেত্রে স্ত্রী তার সতিত্ব হারালে স্বামী থেকে পৃথক বসবাসের প্রশ্ন আসে।
কিন্তু স্বামী যদি অসৎ চরিত্রের হয় তাহলে কী ঘটবে?
বাংলাদেশে প্রচলিত হিন্দু আইনে একজন নারী শুধুমাত্র পৃথক বসবাসের ও ভরণপোষণের অধিকারী, ডিভোর্স এর কোন আইনগত বিধি-বিধান নেই!
***********************
এক্ষেত্রে আবার খ্রীস্টান নারীদের জন্য একটি আইনি দিক উন্মুক্ত আছে। বাংলাদেশে প্রচলিত ডিভোর্স আইন, ১৮৬৯-এর ধারা ১০-এ খ্রীস্টান নারীদের ক্ষমতায়ন করা হয়েছে, যেখানে কিছু যুক্তিসঙ্গত কারণে একজন খ্রীস্টান স্ত্রী ডিসট্রিক্ট কোর্ট অথবা হাইকোর্ট বিভাগে বিবাহবিচ্ছেদের পিটিশন (আবেদন)দাখিল করতে পারেন।
যেমন-
★যদি কোনো খ্রীস্টান স্বামী ব্যভিচার, ধর্ষণ, ব্যভিচারের মাধ্যমে নতুন বিবাহ, বিকৃত যৌনাচার, একই সময় দুই স্ত্রীর সঙ্গে বসবাস, পশুপ্রবৃত্তি ও ধর্মত্যাগ করে থাকে তাহলেই স্ত্রী আদালতে দরখাস্ত দিতে পারে।

কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে বাংলাদেশের আদালতগুলোতে উল্লেখযোগ্য প্রতিষ্ঠিত বিচারিক কোনো নজির ও নীতি নেই, যেখানে আদালত তার ন্যায়পরায়নতা, সুবিচার ও বিবেচনাপ্রসূত জ্ঞানের মাধ্যমে হিন্দু বিবাহবিচ্ছেদ সম্পর্কিত নীতি প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে।
তাহলে প্রশ্ন জাগে, কেন হিন্দু নারীরা তাদের অধিকারের ব্যাপারে সোচ্চার নয়?
একটি সভ্য সংস্কৃতিতে কখনোই বিবাহবিচ্ছেদের যথেচ্ছা ব্যবহার কাম্য নয়। কারণ তা সমাজে অস্থিরতা, সামাজিক ব্যবচ্ছেদ বা বিচ্যুতি ও প্রতিশোধপরায়ণতা বাড়ায়। বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে বয়সের বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
সম্প্রতি ভারতে বিচ্ছেদ হয়ে যাওয়া হিন্দু পুরুষ ও নারীদের মাঝে চালানো এক গবেষণায় দেখা গেছে, এদের ৩৩ শতাংশ পুরুষ ও ৬০ শতাংশ নারীর বিবাহ সম্পন্ন হয়েছিল ২০ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার আগেই।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বিবাহবিচ্ছেদের ব্যাপারে করণীয় কী?
************************************
★প্রথমত, বিবাহবিচ্ছেদের মূলে যেসব কারণ কাজ করে থাকে সেগুলোর মুখাপেক্ষী যাতে না হতে হয়, সেদিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।
বিচ্ছেদ কখনোই সুখ আনে না, এর ফলে জীবনে গুরুত্বপূর্ণ একটি অধ্যায়ের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিসমাপ্তি ঘটে। এক্ষেত্রে বিবাহের পক্ষদ্বয়ের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগ, সহমর্মিতা, আন্তরিকতা ও আস্থা রাখা জরুরি।
★দ্বিতীয়ত, যথাযথ আইন প্রণয়নের মাধ্যমে নারী ও পুরুষকে বিবাহবিচ্ছেদের অধিকার দিতে হবে।
প্রশ্ন জাগে যে, হিন্দু রীতি অনুযায়ী বিবাহ যেখানে অবিচ্ছেদ্য বন্ধন, সেখানে আইনের মাধ্যমে এই অধিকার প্রদান করা হলে হিন্দু দর্শনের সঙ্গে সংঘর্ষ তৈরি হবে কি না?
এর উত্তরে বলা যায়, যখন কোনো আচরণ নির্যাতনের শামিল হয় তখন এই অধিকারের চর্চা অমূলক হবে না।
★তৃতীয়ত, আইন প্রনয়নের ক্ষেত্রে আইনগত উদ্দেশ্য ও আইনগত ইচ্ছা এই দুটি বিষয় পরিষ্কার করা দরকার।
পরিশেষে মানবিক আইন বিজ্ঞান ও দর্শন (জুরিসপ্রুডেন্স) এর সঙ্গে সঙ্গতি রেখে, শুধু একটি সমপ্রদায়ের নির্দিষ্ট কিছু মানুষের জন্য নয় বরং সমাজে প্রত্যেকটি মানুষের অধিকারের প্রতি সম্মান দেখানোর জন্যে যুগোপযোগী আইন প্রণয়ন এবং তার সঙ্গে সঙ্গে প্রণীত আইনের যথাযথ বাস্তবায়নই কাম্য।

বিঃদ্রঃ সংগৃহিত, সংশোধিত ও পরিমার্জিত।

Want your public figure to be the top-listed Public Figure in Kulaura?
Click here to claim your Sponsored Listing.

Category

Telephone

Website

Address

Uchlapara
Kulaura

Other Entrepreneurs in Kulaura (show all)
Freelancer Shakil Freelancer Shakil
Sylhet
Kulaura, 3220

freelancer

Motiur Rahman Motiur Rahman
Maulvibazar
Kulaura, 3233

I'm a Certified Professional Marketing Expert.

Umaimah - উমাইমাহ্ Umaimah - উমাইমাহ্
Moulvibazar
Kulaura, 3230

Wear your Happiness🌻 We are committed to providing you the happiest outfit at a reasonable price.💜

Nizam Uddin Nizam Uddin
Kulaura, Sylhet
Kulaura

Hey everyone, i am Nizam Uddin liton a Digital marketing expert and SEO specialist..I'm certified by @Google. i have lot's of experience about Digital marketing. if you want to con...

K.B.Ariyan K.B.Ariyan
Kulaura, 3230

K.B.Ariyan

High score It High score It
Khulaura, Bade Bhukshimoil Rood, Rosulgonj Bazar
Kulaura, 3230

I am Freelancer 😇

Airtel Airtel
Karmadha, Moulovibazar, Dhaka
Kulaura

Official Facebook Channel of Airtel Bangladesh, the #1 Network of Friends. "Airtel" is a brand of Robi Axiata Ltd.

মণিপুরি শাড়ি ও চাদর মণিপুরি শাড়ি ও চাদর
Moulvibazar
Kulaura, 4700

কমলগঞ্জের মনিপুরী শাড়ি,ওড়না,চাদর,ফতুয়া,পাঞ্জাবি,গামছা, বিছানার চাদর,থ্রি-পিস ও মাফলার পাওয়া যায়।

ANTH Freelancing RobirBazar ANTH Freelancing RobirBazar
RobirBazar
Kulaura

ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষন সেন্টার।

Ahmed Mahbub Ovi Ahmed Mahbub Ovi
Juri. Hasnabad
Kulaura

★—সফলতার পিছনে কারো সাহায্যের দরকার নেই—★ •আল্লাহর রহমতই যথেষ্ট• ���