Tasmim Aboni

Tasmim Aboni

Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from Tasmim Aboni, Writer, Kushtia.

23/02/2024

#গল্প_কাহিনি

23/09/2023
06/04/2023

#সুইসাইড_নোট
#তাসমিম_অবনি

পর্বঃ ০৬

এইবার যেনো অরিদ্র বেশি ভেঙে পরলো। তিথি যে তার কথা শুনছে না, আর না কোনো সাড়া দিচ্ছে। সবাই এসে অরিদ্রকে তিথির থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে খাটিয়া ধরতে লাগল। অরিদ্র চিৎকার করে বলছে তিথিকে সে কোথাও যেতে দিবে না। অরিদ্রের এমন কান্না দেখে সবাই অনেক কষ্ট পাচ্ছে। কিন্তু সত্যিটা তো মানতেই হবে। আর তিথির দাফন তো করতে হবে। তাই সবাই অরিদ্রকে বোঝাতে লাগল। অবশেষে সবাই অনেক বোঝানোর পর সেও যেতে রাজি হলো। অরিদ্র গিয়ে তিথির খাটিয়ার সামনে পায়া ধরলো। সবাই নিয়ে যেতে লাগলো তিথিকে শেষ বিদায় দিতে। তিথির মা পিছনে থেকে কান্না করছে সবাই তাকে সামলাতে লাগে।একমাত্র আদরের মেয়ে আজ মায়ের বুক ফাঁকা করে চলে গেল। চোখের সামনে নিজের মেয়ের লাশ দেখা কতটা কষ্টের তা কেবল সেই বাবা মা ই জানেন।

তিথির জানাযার সময় দেওয়া হয়েছিল সকাল ১১ টা ৩০ মিনিট। সবাই সঠিক সময়ে নিয়ে যায় গোরস্থানে। তিথির জানাযায় অনেক মানুষ শরিক হয়। অরিদ্র জানাযায় অংশ নেয় আল্লাহর দরবারে ভালোবাসার প্রিয় মানুষ টার জন্য দোয়া করে। তারপর সবাই তিথিকে কবরে দাফন করে চলে আসে। কিন্তু পিছনে দাঁড়িয়ে রইল অরিদ্র। তিথির কবরের পাশে ধপ করে বসে পরলো। কান্না করছে পাগলের মতো। একা একাই কথা বলে যাচ্ছে তিথির কবরের দিকে তাকিয়ে। অনেক্ষন কান্না করতে করতে হঠাৎ অরিদ্রের চারপাশে ঝাপসা হয়ে গেল। তারপর অরিদ্রের যখন জ্ঞান ফিরে তখন সে নিজেকে হাস্পাতালের বেডে নিজেকে আবিষ্কার করে।

শেফার চোখ দিয়ে অনবরত পানি পরেই চলেছে। অরিদ্রের দিকে তাকানোর কোনো ক্ষমতাই নেই তার। শেফা ভাবছে অরিদ্র কত কষ্ট নিয়ে তার কাছে সবটা খুলে বলল। সে নিজে হলে হয়তো পারত না কখনোই। শেফা কিছুক্ষণ পর অরিদ্রের দিকে তাকিয়ে দেখে অরিদ্রের চোখে পানি টলমল করলেও তা ঝরে পরে যাচ্ছে না। কতটা কষ্ট বুকে চেপে রাখছে সে। হঠাৎ অরিদ্র শেফাকে উদ্দেশ্য করে বলে উঠল,,,

অরিদ্রঃ শেফা জানিস আমার খুব মনে পরছে তিথিকে। আমি থাকতে পারছি না এইভাবে। আমি ওর কাছে চলে যাব। তার আগে তোকে একটা জিনিস দেখায়। ( পকেট থেকে এক্তা কাগজ বের করে শেফার দিকে এগিয়ে দিল অরিদ্র),,,
এই নে ধর,,, এটা আমার তিথির শেষ অস্তিত্ব, শেষ লেখা নোট #সুইসাইড_নোট যাকে বলে।

শেফা কাগজটা হাতে নিল। অরিদ্র আবার বলল,,,

অরিদ্রঃ আমি এটা তোকে দিলাম। রেখে দিস যত্নে। আমি নিজের কাছেই রাখতাম কিন্তু আমার আরও বেশি কষ্ট হতো।আর আমার মনে হয় আমার অবর্তমানে তুইই আছিস যে এটা যত্নে রাখতে পারবে।আচ্ছা এখন বাসায় চলে যা তুই। আমি একটু একা থাকতে চাই।

শেফা অরিদ্রকে একা রেখে চলে আসে। অরিদ্র দূর আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। অন্ধকার হয়ে গেছে ভালোই। আজ আকাশটা একদম পরিষ্কার,,, কোনো মেঘ নেই। কিন্তু অরিদ্রের মনের আকাশটায় আজ ঘন মেঘের ছায়া। যা সহজে দূর হওয়ার নয়। আকাশের দিকে তাকিয়ে অরিদ্র ভাবতে থাকে আজ সে বড় একলা। তার পাশে কেউ নেই। তার পাশে তার প্রিয়তমা টা যে নেই,,,চলে গেছে বহুদুর। কিছুক্ষন ভেবে বলে,,,

অরিদ্রঃ তুমি কি ভালো আছে তিথি ওই দূর আকাশের তারা হয়ে? আমাকে ছেড়ে কি সত্যি ভালো আছো? তুমি ভালো থাকলে আমিও ভালো থাকি কিন্তু আজ যে আমি তোমাকে ছাড়া ভালো নেই। অনেক কষ্ট হচ্ছে তোমাকে ছাড়া থাকতে। আমার পক্ষে তোমাকে ছাড়া বেচে থাকা সম্ভব নয়। আমার ভালোবাসা সত্যিই কি এতটা দূর্বল ছিল যে তুমিই হারায় গেলে। জানি না এই প্রশ্নের উওর আদোও আছে কি তোমার কাছে। কিন্তু এইটুকু জানি তুমি হীনা আমি অচল। মৃত্যু হয়তো আমাদের আলাদা করে দিছে। কিন্তু হয়তো মৃত্যুই আবার আমাদের এক করে দেবে। আমিও তাই চাই। বড্ড ভালোবাসি তোমায় রাগিনী।

★★ বোনাস পর্বঃ

কিছুদিন পর সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যায়। তিথির পরিবার কিছুটা শোক কাটিয়ে উঠতে পেরেছেন। কিন্তু সেটা তাদের মনের বিরুদ্ধে গিয়ে যুদ্ধ করে হয়েছে। সত্ত্যিই কি এত সহজে ভুলে যাওয়া যায়। সবাই কিছুটা স্বাভাবিক জীবনে ফিরলেও কিন্তু অরিদ্র তা পারেনি। তিথির চলে যাবার পর সে নিজেকে কিছুদিন ঘর বন্দি করে রাখে। তিথির মৃত্যুর ১৭ দিনের দিন সকালে অরিদের মা অরিদ্রকে ডাকতে যাচ্ছিলেন খাবার খাওয়ার জন্য। ঘরে ঢুকে দেখেন রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে অরিদ্র। তা দেখে চিৎকার করে সেন্সলেস হয়ে যান। সবাই যখন ছুটে আসে। তিথির পরিবারও ছুটে আসেন। তিথির ভাই অরিদ্রের টেবিলে একটা কাগজ দেখতে পায়। কাগজ খুলে সে পড়ে। পড়ার পর সে ধপ করে মেঝেতে বসে পরে। ভাবতেও পারে নাই যে অরিদ্রের মত একটা ছেলে সুইসাইড করতে পারে। হ্যা কাগজ টা অরিদ্রের লেখা ছিল #সুইসাইড_নোট.......
...সবকিছুর স্মৃতিচারণে চোখের কোণ বেয়ে পানি গড়িয়ে পরলো শেফার। হাতে থাকা #সুইসাইড_নোট গুলো দেখে একবারও চোখের পানি ধরে রাখতে পারে না শেফা। প্রায় ১৫ বা ১৬ বছর পরেও এই গুলো ভুলতে পারে না সে। দুটো মানুষের ভালোবাসার শেষ চিহ্ন সে এতগুলো বছরে অনেক যত্নে আগলে রেখেছে। এই দুটো নোট সে নিজের কাছে রেখে দিয়েছে। দুটো নোট হলো অরিদ্র আর শেফার। নোট গুলোই দুটো মানুষের ভালোবাসার সমাপ্তি, শেষ লেখা, মান-অভিমান, অভিযোগ, রাগ-অনুরাগ, সুখ-দুঃখ, জীবনের সব চাওয়া পাওয়া জুড়ে রয়েছে। এতগুলো বছর পরে এইগুলা হাতে নিয়ে বিশ্বাস হলো ভালোবাসা বলে সত্যি কিছু আছে। একজন আরেকজন কে কতটা ভালোবাসে বোঝা যায় অরিদ্র আর তিথির ভালোবাসা দেখলে।

শেফা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলে,,,,

শেফাঃ সত্যিকারের ভালোবাসা গুলো কখনো হারিয়ে যায় না। ইতিহাসের পাতায় এই ভালোবাসা গুলোই লিখিত হয়ে থাকে বছরের পর বছর। সমাজের কুদৃষ্টি সম্পন্ন জানোয়ার গুলো যদি না থাকতো তাইলে হয়তো হাজারো ভালোবাসা বেচে থাকতো আর তাদের ভালোবাসাও পূর্ণতা পেত। তবে ভালো থাকুক দুটো ভালোবাসার মানুষ পরপারে।
অরিদ্র আজ যদি তুই আমাদের মাঝে বেচে থাকতিস। আফসোস!!!

শেফা কাগজ দুটো আবার খুব যত্নে রেখে দিল। নিজের মনে সুপ্ত ভালোবাসা প্রকাশ করতে পারে নাই কখনো তাই দুটো মানুষের ভালোবাসা টা যত্নে রেখেছে।

সেদিন অরিদ্র সুইসাইড করার পর হসপিটালে নেওয়া হয়,,বেচেও যায় অরিদ্র। কিন্তু যার বাচার ইচ্ছাটাই মরে যায় তাকে কি আর বাচানো সম্ভব হয়? একটু সুস্থ হওয়ার পর অরিদ্র কে আর কোথাও খুজে পাওয়া যায় না। পরদিন অরিদ্রকে মৃতঅবস্থায় তিথির কবরের উপর পরে থাকতে দেখা যায়। অরিদ্র তিথিকে ছাড়া থাকতে পারে নাই। তাইতো আল্লাহ অরিদ্রকে নিজেই নিয়ে নিলেন। অরিদ্রকেও তিথির কবরের পাশে কবর দেওয়া হয়। দুটো মানুষ এক হয়ে গেছে।

★ এভাবেই হয়তো ইতিহাসের পাতায় ঢেকে যাবে এমন কিছু ভালোবাসা। কেউ কখনো সেটা ফিরেও দেখবে না। পৃথিবীতে হয়তো কারোর ভালোবাসা পূর্ণতা পায় আর কারোর টা পায় না। সমাজের হীন শ্রেণির মানুষের জন্য আজও শত শত ভালোবাসা হেরে যায়। চাপা পরে যায় তাদের ভালোবাসা ওই কবরের নিচে। এই হীন, নিচ, নিকৃষ্ট মানুষ গুলো সত্যিই ঘৃণার যোগ্য। দোয়া করি সব ভালোবাসা গুলো বেচে থাকুক আর পূর্ণতা পাক।

★★সমাপ্ত ★★

(পর্বটা সত্যি অনেক বড় হয়ে গেছে কিন্তু শেষ করার প্রয়োজন ছিল তাই।ধন্যবাদ)

06/04/2023

#সুইসাইড_নোট
#তাসমিম_অবনি

পর্বঃ ০৫

তূর্য অরিদ্রকে উদ্দেশ্য করে বলে,,

তূর্যঃ অরিদ্র, এই অরিদ্র তুমি কাদছো না কেন? এভাবে চুপ হয়ে বসে আছো কেন? দেখো আমার বোনটা আর বেচে নেই। সবাই দেখো আমার এই মিষ্টি বোন টার জন্য কান্না করতেছে। তুমি এত নিশ্চুপ কেন, অরিদ্র?? জানো আমার বোন টা আমাদের ছেড়ে, তোমাকে ছেড়ে অনেক অনেক দূরে চলে গেছে। আর ফিরবে না, আর কখনো দেখতে পাব না ওই মিষ্টি মুখটা। আর ভাইয়া বলে কেউ ডাকবে না। কোনো আবদারও করবে না আমার কাছে। তিথি যে আমাদের সবাইকে ফাকি দিয়ে চলে গেছে। অরিদ্র তুমি তিথির কাছে যাও একটু। আর যে কখনোই দেখতে পারবে না তোমার প্রিয়তমা কে। শেষবারের মতো ওকে দেখে নাও। তিথি যে আর নেই মেনে নাও অরিদ্র। প্লিজ এভাবে নিরব হয়ে বসে থেকো না,,, তিথিকে আর একবার দেখে নাও। ওকে যে বিদায় দেওয়ার সময় হয়ে গেছে। যাও অরিদ্র প্লিজ,,,,

( তূর্য অরিদ্রের কাধে মাথা দিয়ে কেদে দিল কথাগুলো বলতে গিয়ে। অনেক কষ্ট হচ্ছে যে তার। কিন্তু এইদিকে অরিদ্রের কানে যেন কিছুই ঢুকলো না। সে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে তিথির খাটিয়ার দিকে। অরিদ্রের এমন নিস্তব্ধতা কেউ মেনে নিতে পারছে না যে। অরিদ্রের এমন নিস্তব্ধতা দেখে অরিদ্রের মা এসে অরিদ্রের গালে একটা থাপ্পড় মারেন। গালে ব্যথা অনুভব করে সে,, বাস্তবতায় ফিরে আসে। সামনে নিজের মা কে রাগান্বিত অশ্রুসিক্ত নয়নে তাকিয়ে থাকতে দেখে। তারপর অন্যপাশে তাকাতেই দেখতে পেল তিথিকে সাদা কাফনে জড়িয়ে খাটিয়া তে রাখা হয়েছে। তার বুকের মধ্যে মোচড় দিয়ে উঠে।)

অরিদ্র জোরে চিৎকার দিয়ে উঠে। সবাই এতক্ষন তার দিকেই তাকিয়ে ছিল। হঠাৎ চিৎকারে সবাই ভয় পেয়ে যায়। অরিদ্রের কষ্ট দেখে সবাই অনেক কষ্ট পায়। অরিদ্র চিৎকার করে তার মাকে জড়িয়ে ধরে কাদতে লাগে৷ আর বলে,,,,

অরিদ্রঃ মা,,,মা,,,মা। আমার যে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে মা। আমার যে আর সহ্য করার ক্ষমতা নেই। মা আমার জানো এই খানে খুব ব্যথা করছে (বুকের বা পাশে হাত দিয়ে)। মনে হচ্ছে আমার থেকে আমার আত্মাটাই কেউ ছিরে নিয়ে যাচ্ছে। আমার যে দম বন্ধ লাগছে মা। আমার তিথি কিভাবে পারলো আমাকে ছেড়ে চলে যেতে। ও কিভাবে পারলো বলো মা? বলো?? মা তিথিকে উঠতে বলো নাহ মা। ও আমার উপর রাগ করে এইভাবে শুয়ে আছে। আমার কথা শুনবে না এখন। মা ও কখনো তোমার কথা ফেলতে পারবে না,, তাই তুমি ও কে উঠতে বলো প্লিজ মা। মা আমার কাছে তিথিকে এনে দাও। আমি ওকে খুব যত্নে রাখবো প্রমিস। প্লিজ মা।😭

আজ যে চাইলেও তার মা তাকে এই জিনিস টা এনে দিতে পারবে না। কারন সে তো চলে গেছে না ফেরার দেশে। অরিদ্রের মা ছেলেকে বুকে জড়িয়ে ধরে কাদছেন। কিছুই করার নাই যে আর। ছেলের ভালোবাসার মানুষ টা যে আর এই পৃথিবীতে নেই,,,, বেচে থাকলে হয়তো যে করেই হোক ফিরিয়ে আনতেন। এইভাবে চুপ করে ছেলের কষ্টগুলো দেখতে হতো না। কি করে আনবে সেটা তো আর কখনো সম্ভব হবে না। যে মারা যায় সে তো আর কখনো ফিরে আসে না।

অরিদ্র আবার তিথির নাম ধরে ডাকে। তিথি তো আর সেই ডাকের উত্তর দিবে না। মা কে ছেড়ে অরিদ্র উঠে আস্তে আস্তে তিথির খাটিয়ার কাছে গিয়ে ধপ করে বসে পরে।

তিথিকে সাদা কাফনে দেখতে অরিদ্রের ভিতর টা শেষ হয়ে যাচ্ছে। যার লাল বেনারসি শাড়ি পরার কথা সে আজ সাদা কাফনে। তিথির মুখের দিকে তাকিয়ে আছে অরিদ্র। মুখটা কেমন ফ্যাকাশে হয়ে গেছে। মৃত ব্যক্তির মুখটা হয়তো এমন টাই দেখায়। একদম নিষ্পাপ শিশুর মতো লাগে। সেই মানুষটি বেচে থাকতে যেমনই হোক না কেন,, মারা যাওয়ার পর যে সব ধুয়ে যায়। অরিদ্রের কাছে তিথিকে সদ্য হওয়া নিষ্পাপ শিশুর মতো লাগছে। আলতো করে তিথির মুখটা অরিদ্র তার দুই হাতের মাঝে নিল। কতটা মায়াবী চেহারা এই মেয়ের। শরীর ঠান্ডা হয়ে গেছে। তিথিকে উদ্দেশ্য করে অরিদ্র বলতে লাগলো,,,,

অরিদ্রঃ এই মায়াবিনী, জান, তুমি এমন কেনো করছো? আমি কি অপরাধ করেছি বলবে..? এভাবে চুপ করে থেকে কোন অপরাধের শাস্তি দিচ্ছো আমাকে বলো?? এই রাগ করে আছো? প্লিজ কথা বলো। আমার কাছে ফিরে এসো। তুমি জানো তো আমি তোমাকে ছাড়া কতটা কষ্ট পাচ্ছি। তুমি আমাকে বলছিলে আমাকে কখনো কষ্ট পেতে দিবে না কিন্তু দেখো আজ আমি তোমার জন্য খুব কষ্ট পাচ্ছি যে। তোমারও কষ্ট লাগছে বলো....তাও কেন চুপ করে আছো বলো তো?? প্লিজ উঠো,,,প্লিজ।

চলবে.....

09/03/2023

#সুইসাইড_নোট
#তাসমিম_অবনি
পর্বঃ ০৪

চিঠিটা পরা শেষ করে আমি তিথিকে বুকে নিয়ে কাদতে থাকি।
অরিদ্রঃ কেন এভাবে আমাকে কষ্ট দিলে তুমি তিথি। কেন চলে গেল?? আমাকে কেন ছেড়ে চলে গেলে জানপাখি।তিথি এমন কেন করলা? আমি তো তোমার পাশে ছিলাম। আমি যে তোমাকে বড্ড ভালোবাসি। আমি কি করে বেচে থাকবো তোমাকে ছাড়া। আমাকে কিভাবে থাকব তোমাকে ছাড়া তুমি একবারও ভাবলা নাহ??তুমি তো আমাকে তোমার সব মনের কথা শেয়ার করতা,,তাহলে আজকে কি এমন হলো যে এইকথাগুলো বলতে পারলা নাহ? কেন নিজে এত বড় সিদ্ধান্ত নিলে? আমরা দুজন মিলে একসাথে থাকতাম।

কথাগুলো বলেই অরিদ্র কান্নায় ভেঙে পরে। চিৎকার করছে আর কান্না করছে। ছেলেদের নাকি কাদতে নেই। কিন্তু ছেলেরা তখনই কাদে যখন তার খুব প্রিয় জিনিসটা হারিয়ে যায় চিরতরে,,, অরিদ্রের কান্নায় হসপিটালের সবাই ছুটে চলে আসে দেখতে। পুলিশ বেশি ভিড় সামাল দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। তাই একটা পুলিশ এসে অরিদ্র কে বলে সে যেন তিথিকে ছেড়ে দেয়।অরিদ্র তিথিকে আরও শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রাখে।

এমন ভাবে ধরে আছে যেন ছেড়ে দিলেই হারিয়ে ফেলবে সারাজীবনের মতো। অরিদ্রকে সবাই বুঝাই তিথি তাকে ছেড়ে গেছে অনেক আগেই। অরিদ্র যে তিথিকে অনেক আগেই হারিয়ে ফেলেছে সেই কথা টা অরিদ্র মানতে নারাজ। হয়তো ভালোবাসা জিনিস টাই এমন নিষ্ঠুরতম। একজনকে কাদিয়ে চলে যায় এইভাবেই।

অরিদ্রের কাছে থেকে তিথিকে যখন পুলিশ ছাড়ানোর চেষ্টা করছিল তখন অরিদ্র দেখলো তিথির হাতের শিরা কাটা। হাতটা ধরে অরিদ্র ভাবে এই হাতটা ধরে কত হেটেছে রাস্তায়। এই হাতটা ধরে সারাজীবন হাটার ইচ্ছা ছিল কিন্তু তা আজ সব শেষ হয়ে গেছে।

পুলিশ জোর করে অরিদ্রের থেকে তিথির লাশ কে ছাড়িয়ে নিয়ে চলে যায় ময়না তদন্তের জন্য। কিন্তু তিথির বাবা মা তিথির ময়না তদন্ত করাবেন না। অরিদ্র ফ্লোরে বসেই তিতির নাম ধরে চিৎকার করে কাদতে লাগে।অরিদ্রের বাবা মা তাদের ছেলে কে সামলাতে পারছেন না। তিথিকে এম্বুলেন্সে রাখার ব্যবস্থা করছে সবাই। সেটা অরিদ্র দেখে হসপিটালের বাইরে চলে আসে। তিথিকে এম্বুলেন্সে রাখা দেখে অরিদ্র এম্বুলেন্সে উঠে বসে। তিথির হাত ধরে বসে থাকে৷ তিথির হাত পুরো ঠান্ডা হয়ে জমে গেছে।

তিথিকে তার বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে। কিছু মহিলারা তিথির শেষ গোসল করানোর জন্য নিয়ে গেলেন। মুহূর্তেই বাড়িতে অনেক মানুষ চলে আসে। ভরে যায় পুরো বাড়ি। এই বাড়ি টাই কিছুদিন পরে অনেক মানুষের সমাগম হতে চলেছিল কিন্তু আজকেই তা হয়ে গেল। বিয়ে হলে সবাই আসতো অনেক মজা করতো কিন্তু আজ কেউ মজা করতে আসেনি।এসেছে তিথিকে শেষবারের মতো দেখতে। কান্নায় পুরো বাড়ি ছড়িয়ে গেছে। সবাই কান্নাকাটি করছে। কেউ দোয়া করছে,,কেউ বা কোরআন তিলাওয়াত করছে তিথির জন্য।

একদিকে অরিদ্র তিথির বাসার ডায়নিংরুমের ফ্লোরে বসে আছে। না এখন আর অরিদ্র কাদছে না। হয়তো ভুলেই গেছে কাদতে। কতটা আঘাত পেলে একটা মানুষ কাদতেও ভুলে যায় ঠিক তেমনি হচ্ছে অরিদ্রের। প্রিয়জন হারানোর কষ্ট টা যে কত্ত বড় কষ্ট সেটা শুধু সেই বুঝে। প্রিয়তমাকে হারিয়ে অরিদ্রও বাকরুদ্ধ হয়ে গেছে। কোনো অনুভুতিই তার মধ্যে কাজ করছে না। অরিদ্রের এই অনুভুতিহীনভাবে বসে থাকায় যেন ভয়ংকর কিছুর পূর্বাভাস দিচ্ছে তা সবাই বুঝতেই পারছে। তিথির ভাই অরিদ্রের কাছে গিয়ে পাশে বসে,, কাধে হাত দিয়ে অরিদ্রকে ডাকে কিন্তু কোনো সাড়াশব্দ দেয় না অরিদ্র। মেঝের দিকে দৃষ্টি স্থাপন করেই আছে। তাই তিথির ভাই তুর্য অরিদ্রকে ধাক্কা দিয়ে ডাক দেয়। অরিদ্র একটুও নড়ে না। তুর্য অরিদ্র কে উদ্দেশ্য করে বলতে লাগে,,,

চলবে.....

09/03/2023

#সুইসাইড_নোট
#তাসমিম_অবনি

পর্ব: ০৩

কিছু দূর যেতেই আমার পা থমকে যায়। পুরো শরীরে কাঁটা দিতে শুরু করে। সামনে তাকাতেই আমার পুরো দুনিয়া ঘুরে গেল। আমার চোখের সামনে তিথি বিধস্ত অবস্থায় পড়ে আছে। আমার বুকের মধ্যে এক অজানা ভয় বাসা বাধলো। আমি কোনো কিছু আর না ভেবেই আমি দৌড়ে তিথির কাছে গেলাম। পড়ে থাকা ওড়না টা নিয়ে তিথিকে জড়িয়ে ধরি বুকের মধ্যে। আমি তিথিকে ডাকি কিন্তু তিথির কোনো সাড়াশব্দ নেই। কোনো কথাই যেন কানে ঢুকছে না তিথির। তিথির অবস্থা দেখে নিজেকে আর সামলাতে পারছিলাম না। তিথিকে ঐ জানোয়ারগুলো কিভাবে ব্যবহার করেছে,,ছিড়ে খেয়েছে মনে হয়েছে। কতটা কষ্ট দিয়েছে আমার তিথিকে। তিথি কাদছে অস্পষ্ট ভাবে বলল,,, " ভালোবাসি তোমার,, খুব ভালোবাসি " আমি তোমার সাথে বাঁচতে চাই, অরিদ্র।"

কথাটা বলেই তিথি ডুকরে কেদে ওঠে। ওর ভাই-বাবা এসে ওকে এভাবে আমার কোলে পরে থাকতে দেখে ভেঙে পরেন। কোনো রকম তিথিকে সামলিয়ে ঠিক করে নিয়ে কোলে তুলে নিলাম। আমি তিথিকে কোলে নিয়ে হাটতে লাগলাম। পিছনে ওর বাবা দাঁড়িয়ে কাদছেন। আমাকে যেতে দেখে তিথির বাবা আমাকে উদ্দেশ্য করে বলল,,,

বাবা ঃ কোথায় নিয়ে যাচ্ছো তিথিকে??

অরিদ্রঃ আমি ওর কিছু হতে দিব না। গাড়ি নিয়ে আসুন ভাইয়া।ওকে তাড়াতাড়ি হসপিটালে নিয়ে যেতে হবে। ওকে বাচাতেই হবে,, ও যে আমার সাথে বাচতে চাই। আমি তিথিকে বাচাতে চাই।

তিথিকে হসপিটালে নিয়ে আসলাম। মহিলা গায়েনি ডাক্তার তিথিকে দেখলেন। তিথিকে ভর্তি করানো হলো। ডাক্তার ঘুমের ইঞ্জেকশন দিয়েছেন তিথিকে। তিথিকে এইভাবে পড়ে থাকতে দেখে আমার যে খুব কষ্ট হচ্ছিল। তাও নিজেকে কিছুটা সামলে ওর হাতটা ধরে বসে রইলাম। প্রায় একদিন পর তিথির জ্ঞান ফিরল। তিথি চোখ খুলেই আমাকে দেখে কেদে দেয়। ওকে কাদতে দেখে আমারও চোখের কোণে পানি জমতে থাকে। আমার বাসার আর তিথির বাসার সবাই এসে ওকে দেখে যায়।

সবাই দেখে চলে গেলেও আমি কখনো যায়না। আমি ওর কাছে থেকে এক মুহুর্তের জন্যও দূরে যাইনি। কাল রাতে আমাকে জোর করে বাসায় পাঠায় সবাই।তিথিকে একটু সুস্থ দেখে আমিও চলে আসি। বাসায় এসে লম্বা একটা শাওয়ার নিয়ে খেয়ে তিথির কাছে ফোন দেয়। তিথিকে একটু চিন্তায় দেখলেও তিথি সুস্থ আছে দেখে ফোন কেটে ঘুমাই পরি।
খুব ভোরে ফোনের আওয়াজে যখন ঘুম ভাংলো তখন কল রিসিভ করতেই তিথির মায়ের কান্নারত কণ্ঠ ভেসে আসে। মুহুর্তেই আমার ঘুমের রেশ কেটে যায়।

তিথির মা আমাকে তাড়াতাড়ি হসপিটালে যেতে বলেন। আমি কিছু জিজ্ঞেস করার আগেই কেটে দেন। আমি খুব ভয় পেয়ে গেলাম এই ভেবে যে তিথির কিছু হয়নি তো আবার। আমি উঠে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে চলে গেলাম হসপিটালে। হসপিটালে গিয়ে দৌড়ে তিথির রুমের কাছে যেতেই দেখতে পেলাম রুমের সামনে অনেক ভিড় জমা হয়েছে। ভিড় ঠেলে আমি ভিতরে প্রবেশ করতেই দেখি আমার তিথি গলায় দড়ি দিয়েছে। তিথির লাশ ঝুলছে ফ্যানের সাথে। আর ফ্লোরে অনেক রক্ত পরে আছে। আমার সবকিছু কেমন দুঃস্বপ্ন মনে হচ্ছিল।
তিথিকে এভাবে দেখে আমার পুরো শরীর অবশ হ্যে যায়। আমি সামনে এগনোর চেষ্টা করেও পারছিলাম না। আমি ফ্লোরে পরে গেলাম। আমাকে এসে আমার আম্মু ধরলেন। দেখতে পেলাম সবাই কাদছে। আমার সবকিছু মানতে বড্ড কষ্ট হচ্ছিল। তখন কিছু লোক তিথিকে নামাই রাখে আমার ঠিক সামনে। দেখলাম আমার তিথির মুখটা কেমন নীলচে বর্নের হয়ে গেছে। ডাক্তার এসে তিথিকে দেখে বলেন,, Patient অনেক আগেই মারা গেছেন। গলায় দড়ি দেওয়ার কারনে নিশ্বাস বন্ধ হয়ে মারা গেছে। আমার কান কে বিশ্বাস করতেও ভয় হচ্ছে যদি সেটা সত্যি হয়ে যায়। সত্যি যদি আমার তিথি মারা গিয়ে থাকে। সবাই আমাকে একটা কথায় বলতে লাগে,,, " তিথি আর বেচে নেই,,,মরে গেছে তিথি "।

কথাটা শোনা মাত্রই আমার গা রাগে রি রি করতে লাগে। কিসব বলছে এরা। আমি চিৎকার দিয়ে বলে উঠলাম,,,,

অরিদ্রঃ না,,না আমার তিথির কিছুই হয়নি। আমার তিথির কিছু হতেই পারে না। তিথি আমাকে কথা দিছিলো যে আমাকে ছেড়ে কখনো যাবে না। ও ওর কথা রাখবে না এটা কি করে হয়। ওর কিছু হয়নি। আমার তিথি আমাকে নিয়ে বাঁচতে চেয়েছিল। আর কালকে রাতেও তো ও আমাকে বল্ল তিথির আর আমার একসাথে থাকার জন্য,,, বিয়ের কথা আর আজ কি করে ও আমাকে ছেড়ে যেতে পারছে। আমি যে মানতে পারছি না এটা।

সবাই আমার তিথির কাছে যেতে দিচ্ছিল না। আমি ওর ঐ মায়াবি মুখটার দিকেই চেয়ে ছিলাম। খুব কষ্ট হচ্ছিল।

** শেফার চোখ দিয়ে পানি টপটপ করে পড়ছে। অরিদ্রের কাধে শেফা হাত রেখে কাঁপাকাঁপা কণ্ঠে বলল,,,

শেফাঃ কি কি করছিল তিথি??তারপর কি হলো......

শেফার কথা শেষ হওয়ার আগেই অরিদ্র আবার বলতে লাগে,,

অরিদ্রঃ পুলিশ এসে যখন রুমটা খুজতে লাগে তখন তিথির বেডের পাশে একটা কাগজ পায়। সেটা পুলিশ এসে তিথির ভাই এর হাতে দেয়। তিথির ভাই চিঠিটা পড়ে ধপ করে বসে পরে ফ্লোরে। আমার দিকে চিঠিটা এগিয়ে দেয়। আমি চিঠি টা হাতে নিয়ে খুলতেই দেখি এটা তিথির হাতের লিখা। আমি চিঠিতে একবার হাত বুলিয়ে পরতে শুরু করি। চিঠি টা পড়ে আমি স্তব্ধ হয়ে গেলাম। তিথির এই কথাগুলো আমাকে সরাসরি বললেই পারতো কিন্তু নিজের লজ্জায় বলতে পারে নাই। তিথির লেখা শেষ কিছু লাইন আমাকে সম্পুর্ন ভেঙে দিল।

" অরিদ্র আমি তোমাকে অনেক ভালোবাসি। বিশ্বাস করো তোমাকে ছাড়া আমি অন্য কারোর কথা কখনো ভাবতেও পারি নাই। আমার যে অনেক স্বপ্ন ছিলো আমার আর তোমার ভালোবাসার একটা সুখের সুন্দর সংসার হবে। কিন্তু সেই স্বপ্ন পুরো ভেঙে দিল ঐ শয়তানগুলো। আমি যে কোনোমতেই মানতে পারছি না অরিদ্র। আমাকে ওরা কত বাজেভাবে ছুয়েছে,, নিজেকে নিজের কাছেই অনেক কুলষিত, অপবিত্র লাগছে।তুমি আমার সামনে থাকলে আমার যে আরও বেশি কষ্ট হচ্ছিল। আমি এইভাবে কি করতাম। কিভাবে তোমার জীবনে ঢুকতাম বলতে পারো?? আমি তোমাকে ভালোবাসি। আমি চাইনা আমার জন্য কেউ তোমাকে কখনো কথা শোনাক। তাই আমি আমার জীবন টাই রাখব না। প্লিজ ক্ষমা করে দিও। অনেক ভালোবাসি তোমাকে।

চলবে.....

09/03/2023

#সুইসাইড_নোট
#তাসমিম_অবনি

পর্বঃ ০২

শেফাঃ কি হলো কাদছিস কেন? কি হইছে তোর বলবি তো আমাকে। না বললে বুঝবো কিভাবে বল। মন খারাপ হয়েছে নাকি? কিছু বল অরিদ্র।
কান্না থামিয়ে কিছুক্ষন পর অরিদ্র বলতে লাগল,,

অরিদ্রঃ আমার সবকিছু শেষ হয়ে গেছে শেফা। আমার আর বেচে থাকার কোনো ইচ্ছা নাই। আমার বাচার আশাটাই যে আজ বেচে নেই। পৃথিবীর মিথ্যে মায়া ত্যাগ করে সে পাড়ি জমিয়েছে না ফেরার দেশে। আমাকে মেরে ফেলতে পারবি শেফা??মরতে চাই আমি,,বাচার ইচ্ছা নাই।

শেফার মাথার উপর দিয়ে গেল অরিদ্রের কথাগুলো। কিছুই বুঝতে পারলো না। অরিদ্রকে শান্ত হতে বলল।কিছু সময় ধরে অরিদ্র এইভাবেই চুপ থাকল। কিন্তু শেফা এখনও হাল ছাড়ে নাই যদিও অরিদ্র কিছু বলছে না শুধুই কেদে যাচ্ছে। হঠাৎ অরিদ্র শেফাকে বলল,,,

অরিদ্রঃ শেফা,, আমাকে একটু খোলা পরিবেশে নিয়ে যাবি? আমার এই চার দেওয়ালের মধ্যে দম বন্ধ লাগছে। খুব কষ্ট লাগছে রে। প্লিজ নিয়ে চল আমাকে এখান থেকে।

শেফা বুঝতে পারল অরিদ্রের নিশ্চয়ই কিছু হইছে যেটা ওকে অনেক কষ্ট দিচ্ছে। তাই শেফা অরিদ্রকে নিয়ে একটা ব্রিজের উপরে এসে দাঁড়ায়। দুজনের দৃষ্টি নিচে বহমান পানির দিকে। কি সুন্দর স্রোত নদীতে। দেখতেই সুন্দর লাগছে, সাথে প্রকৃতির নির্মল বাতাস। গায়ে আসতেই খুব সুন্দর অনুভব হচ্ছে। শেফা আকাশের দিকে তাকিয়ে থেকেই অরিদ্রকে প্রশ্ন করল,,,

শেফাঃ কি হয়েছে অরিদ্র? তুই এভাবে মন মরা হয়ে আছিস কেন?আর তুই ওভাবে হসপিটালের বাইরে অজ্ঞান হয়ে পরেছিলি কেন?

অরিদ্র একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলে বলল,,,,

অরিদ্রঃ আমার সব শেষ হয়ে গেছে শেফা। আমার ভালোবাসা আমাকে আজ একা করে দিয়ে চলে গেছে। কি করে বাচবো আমি ওকে ছাড়া। আমার যে ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।

শেফাঃ ম..মা...মানে? তোর ভালোবাসা চলে গেছে মানে কি? তুই তো তিথিকে ভালোবাসিস। কি হয়েছে তিথির??তিথি কি তোকে ঠকিয়েছে??

অরিদ্র আবার শেফাকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কান্না করতে লাগল। শেফা বারবার জিজ্ঞেস করতে লাগল। শেফার মনে ভয় হানা দিচ্ছে। না জানি অরিদ্র কি বলবে তাকে। অরিদ্র অভাবেই বলতে লাগল,,,

অরিদ্রঃ জানিস শেফা তিথিকে আমি যেদিন প্রথম দেখেছিলাম সেদিন আমার ওকে অনেক ভালো লেগেছিল। আমার এই ভালো লাগাটাই যে ওর প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি করবে কেই বা জানতো??তিথি আমার সেই প্রথম অনুভূতিময় ভালোবাসা। আমার প্রথম ভালোবাসা তিথি। আমি ওকে যখন প্রপোজ করি ও তখন কিছু বলেছিলো না। কিন্তু পরে বল্ল ও আমাকে ভালোবাসে। আমাদের ৪ বছরের রিলেশন করার পর আমরা বাসায় রাজি করিয়ে এই মাসে বিয়ের ডেট ফিক্সড করি।আমাদের দুই জনের পরিবার অনেক খুশি হয়। কিন্তু মাঝখানে এমন একটা ঘটনা ঘটে যাবে আমি কল্পনাও করতে পারি নাই।

শেফাঃ কি ঘটনা ঘটেছে অরিদ্র??

অরিদ্রঃ তিনদিন আগে রাতে আমি তিথির সাথে কথা বলছিলাম। ও তখন একটা টিউশনি পরিয়ে আসছিল বাসায়। কথা বলার মাঝে ও আমাকে বলে কিছু বাজে ছেলে ওর পিছু করছে। ওর অনেক ভয় লাগছিল। আমি ওকে বললাম তাড়াতাড়ি হাটতে থাকো আমি আসছি তোমাকে নিতে। ভয় পেও না। ও অনেক দ্রুত হাটতে থাকে। তখন ওর চারপাশে বাজে ছেলেগুলো ঘিরে ধরে। আমি বুঝতে পারলাম ও অনেক বড় বিপদে পরছে। তাই আমি দেরি না করে বাইকের চাবি নিয়ে বেরিয়ে পরি। ফোনে আমি তখনও তিথিকে সাহস দিচ্ছিলাম কিচ্ছু হবে না তিথি। তারপর ওর ফোনের ওপাশ থেকে চিল্লানীর আওয়াজ কানে আসে।তারপর কিছু শুনতে পাইনি। আমি ওকে খুজতে লাগলাম।

আমার বাসা ওর বাসা থেকে একটু দূরে হওয়ায় লেট হয়ে গেছিল্। আমি সোজা ওর বাসায় গিয়ে খুজি।কিন্তু পাইনা। তারপর আমি, ওর বড় ভাই আর ওর আব্বু তিনজন মিলে খুজতে লাগি।আমরা ওর বাসার পাশের সব রাস্তা অলিগলি দেখতে লাগলাম। না পেয়ে দিশেহারা হয়ে যাচ্ছিলাম আমি।আমি ওদের বাসার দুই গলি পরে এসে একটা চায়ের দোকান দেখি। চায়ের দোকানের লোকটা কে জিজ্ঞেস করতেই তিথি নাকি সামনের রাস্তা দিয়ে দৌড়ে গেছে। আমিও সেই রাস্তায় যেতে লাগি। ওই রাস্তায় যেতেই দেখলাম তিথির ব্যাগ পরে আছে,,তিথির ব্যাগ এভাবে পরে থাকতে দেখে আমার বুকের মধ্যে তোলপাড় হয়ে যাচ্ছিল।

আমি যাচ্ছিলাম আর আল্লাহ কে বার বার স্মরণ করছি আমার তিথির যেন কিচ্ছু না হয়। সামনে যত যেতে লাগলাম তত ওর কিছু জিনিস পেলাম। রাস্তা টা গিয়েছে একটা বড় মাঠের দিকে। আমি ওর বড় ভাই কে ফোন দিলাম এই দিকে আসতে কারন মাঠটা অনেকটা বড়।মাঠে গিয়ে আমি ফোন বের করে আলো জালিয়ে ওকে খুজতে লাগি আর ডাকতে লাগলাম ওর নাম ধরে। কিছুক্ষন খোজার পর কিছুদুর যেতেই আমার পা থমকে যায়। পুরো শরীরে কাঁটা দিতে শুরু করে।
সামনে যা দেখি তা আমি কখনোই ভাবতে পারি নাই,,,,,

চলবে,,,,

07/03/2023

" মৃত্যুর স্বাদ একদিন সবাইকে গ্রহণ করতে হবে। না চাইলেও একদিন ঠিকই মরতে হবে সবাইকে। মানুষ মরনশীল। "

এই কথাটা বার বার মষ্তিস্কে আঘাত করছে অরিদ্রের। কোনো ভাবনা -চিন্তা করার আগেই শুধু এই কথাগুলো মনে পড়ছে। অরিদ্র যত চাইছে এইগুলো নিয়ে না ভাবতে তাও তার মষ্তিস্ক এটাই ভাবাচ্ছে। " মৃত্যু " শব্দটা অরিদ্রের চারপাশে ঘুরছে,,,,মনে হচ্ছে সে পাগল হয়ে যাবে।

অরিদ্রকে এই শব্দটা অনেক কষ্ট দিচ্ছে। সে আর সহ্য করতে পারছে না,,,হয়তো তার এই কষ্টটা সামান্য কিন্তু মৃত্যু যন্ত্রনা যে ভয়াবহ। মাথায় অনেক সমস্যা হতে লাগল অরিদ্রের। অরিদ্র সহ্য করতে না পেরে মাথায় জোরে চেপে ধরে চিৎকার করে উঠল। আর বলতে লাগলো,,,,

অরিদ্র ঃ " আমি মরতে চাই। আমাকে কেউ মেরে ফেলো। আমি আর বাঁচতে চাই না। আল্লাহ তুমি আমাকে এই নিষ্ঠুর পৃথিবী থেকে নিয়ে নাও। আমাকে সুস্থ ভাবে বাঁচতে দিল না কেউ। আমার বাঁচার একমাত্র আশাটাও হারিয়ে গেল অজানায়। আমার প্রিয়তমা চলে গেছে আমাকে ছেড়ে। আমাকেও নিয়ে নাও আল্লাহ,, আমি বাঁচতে চাই না। "

এই কথাগুলো বলতে বলতেই সেন্সলেস হয়ে যায় অরিদ্র। পাঁচ ঘন্টা পর অরিদ্রের জ্ঞান ফিরল। চোখ খুলতেই নিজেকে একটা রুমের বেডে আবিষ্কার করলাম। সবকিছু ঝাপসা ঝাপসা লাগছিলো আমার। মাথায় হাত দিয়ে উঠে বসলাম। পাশে তাকিয়ে দেখলাম একটা ট্রে তে কাঁচি, তুলা, মেডিসিন আরও কিছু সামগ্রী। বুঝতে দেরি হলো না যে আমি কোথায় আছি। কিন্তু আমাকে এখানে কে এনেছে হসপিটালে। কি হয়েছিল? ভাবতেই মনে পরে যায় সেই ভয়ানক মৃত্যু। আপনজন হারানোর বেদনা,,, মনে পরতেই অরিদ্রের চোখের কোণে পানি জমতে থাকে। তখনই রুমে একজন নার্স প্রবেশ করল। নার্সকে দেখে আমি কিছু বলতে যার তার আগেই এসে বলতে লাগলেন,,,,

নার্স ঃ একি আপনি উঠে পরেছেন। আপনার শরীর খুব দুর্বল রেস্ট করুন। আমি ডাক্তারকে ডেকে নিয়ে আনছি।

নার্স দ্রুত চলে গেল রুম থেকে। আমি কোনো কথা বলার সুযোগই পেলাম না। কিছুক্ষণ পরে ডাক্তার এসে আমার চেকআপ করতে লাগলেন। আমি ডাক্তারকে বললাম,,," আমাকে কে এনেছে এইখানে? " ডাক্তার??

ডাক্তার ঃ আপনাকে একটা মেয়ে নিয়ে এসেছে এখানে। বাইরেই বসে আছে মেয়েটা। নার্স যাও গিয়ে মেয়েটাকে ডেকে আনো। ( নার্সকে উদ্দেশ্য করে বল্ল।)

নার্স চলে গেল ডাকতে। কিছুক্ষন পর মেয়েটা রুমে আসে তখন ডাক্তার চলে গেল রুম থেকে। মেয়েটা এসে আমার বেডের সামনে দাঁড়ায়। মেয়েটা আর কেউ নয় তার বেষ্ট ফ্রেন্ড শেফা। শেফা আসলে আমি শেফাকে বসতে বললাম। ও পাশে থাকা টুল টায় বসলো।আমি ওকে দেখে নিজেকে আটকে রাখতে পারলাম না। কেদে দিলাম ওর সামনে। শেফা অরিদ্রকে কাদতে দেখে অবাক হয়। হঠাৎ অরিদ্র কাদছে কেন??এই একটা প্রশ্নই শুধু তার মাথায় আসছে। শেফা আর কিছু না ভেবে অরিদ্রের কাধে হাত দিয়ে বল্ল,,

শেফা ঃ কি হয়েছে অরিদ্র তোর? কাদছিস কেন???

অরিদ্র কাধে শেফার স্পর্শ পেয়ে পাশে ঘরে শেফাকে জড়িয়ে ধরে আর জোরে কান্না করে দেয়। হঠাৎ এভাবে জড়িয়ে ধরায় শেফা থতমত খেয়ে যায়। শেফা স্বাভাবিক হয়ে জিজ্ঞেস করে অরিদ্রকে,,,,,
( বেশি বেশি লাইক, কমেন্ট আর সাপোর্ট করবেন। প্লিজ🥺।পরবর্তী পর্ব পেতে সাপোর্ট করবেন)
চলবে.......

#সুইসাইড_নোট
#তাসমিম_অবনি

04/03/2023

পড়ে কান্না আসলে লেখক দায়ী নয়🌹🌹🌹

বন্ধুর মৃতদেহ/লাশ নিয়ে এম্বুলেন্সে তার গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি। সময় কাটানোর জন্য মোবাইলটা বের করলাম। ঠিক সেই মুহূর্তে আমার মোবাইলে একটা মেসেজ এলো। আমার সামনেই প্রিয় বন্ধু কফিনের মধ্যে লাশ হয়ে ঘুমিয়ে আছে।

মেসেজ করেছে অবন্তী। চেক করে দেখি নাম্বারে প্রায় ১০/১২ টা মেসেজ করেছে। সম্ভবত মেসেজ এর শব্দ সংখ্যার লিমিটের কারণে বারবার মেসেজ করেছে। আমি সবগুলো একসঙ্গে পড়লাম,

ফাহাদ...
আমাকে মাফ করে দিও৷ যে বাবার চোখের দিকে তাকিয়ে কোনদিন কথা বলতে পারিনি। সেই বাবা যখন সেদিন অসহায়ের মতো আমার সামনে দুটো হাতজোড় করে কান্না করলো। তখন বাবার সেই ভালোবাসার কাছে তোমার আমার ভালোবাসা হার মেনে গেছে। আর তাই আজ ১১ দিন ধরে আমি অন্য মানুষের স্ত্রী। কথা দিয়েছিলাম জীবনের শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তোমার সঙ্গে থাকবো। আমার সবসময় ভয় হতো তুমি হয়তো আমাকে কষ্ট দেবে। হয়তো আমাকে ছেড়ে অন্য কাউকে বিয়ে করবে। অথচ দেখো, আমি নিজেই তোমাকে কষ্ট দিলাম। আমি নিজেই তোমাকে ছেড়ে অন্য কাউকে বিয়ে করে নিলাম। জীবন অদ্ভুত তাই না?

তোমার কি মনে আছে, যখনই আমি কাঁদতে কাঁদতে তোমাকে বলতাম
" আমাকে ছেড়ে যাবে না তো কোনদিন? "
তুমি হাসতে হাসতে বলতে, " আমি কোনদিন যাবো না অবন্তী, কিন্তু তুমি হয়তো চলে যাবে। "

তখন আমি রাগ করতাম। কারণ আমি তো তোমায় পাগলের মতো ভালোবাসতাম। তুমি নেই এরকম একটা পৃথিবী আমি কল্পনা করতে পারতাম না। অথচ আজ অন্য কেউ আমার স্বামী। রোজ তার সাথে আমাকে ঘুমাতে হয়। সকাল বেলা চোখ মেলে তাকিয়ে তার মুখটাই দেখতে হয়।

মানুষের জীবন এমন কেন?
যে যাকে চায়,
যদি তাকে পায়,
প্রকৃতির তাতে কি আসে যায়?
কেন প্রকৃতি তাদের কদায়?

হুট করেই সবকিছু ঠিকঠাক হয়েছিল। আমি তাই ইচ্ছে করেই তোমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করেছি। নাম্বারটা বন্ধ করলাম। বিয়ের দিন ভাইয়ার মোবাইল ফেসবুকের আইডি ডিলিট করলাম। তুমি কষ্ট পেয়েছ জানি, যার সঙ্গে সারাজীবন সুখে দুঃখে কাটাবো ভেবেছিলাম। তাকেই কষ্ট দিলাম।

আমার পরিবারে সবাই খুব খুশি। আমার স্বামী মানুষটাও খুব ভালো। এখন পর্যন্ত ভালোই মনে হচ্ছে আমার কাছে। ভবিষ্যতে কি হবে জানি না।

তোমার কি আমাদের সেই প্রথম দেখা করার কথা মনে আছে? সেটাই প্রথম ছিল, আর ওটাই যে শেষ দেখা হবে কোনদিন তো ভাবিনি। আসলে মানুষের চিন্তার বাহিরেও তো কতকিছু ঘটে তাই না। সেদিন তোমার সাথে তিন ঘন্টা ছিলাম তাই না? অথচ তিন ঘন্টার মধ্যে আমরা কেউ কাউকে স্পর্শ করলাম না। কিন্তু যখন আমাকে রিকশায় তুলে দিয়ে তুমি তোমার হাতটা বাড়িয়ে দিলে। তখন প্রথম তোমার হাতটা স্পর্শ করলাম। বিশ্বাস করো সেদিন আমার কিছুতেই ছাড়তে ইচ্ছে করছিল না।
রিকশা ছেড়ে দিল, আমিও ছেড়ে দিলাম তোমার হাতটা। আমার ভালোবাসা, আমার স্বপ্ন।

তোমার ঘরে আমার জন্য কিনে রাখা শাড়িগুলো নিশ্চয়ই এখনো আছে। আচ্ছা আমি তো এখন তোমার নয়। ওই শাড়িগুলো কি আমি পাবো? তুমি তো যখনই পছন্দ হতো কিনে রেখে দিতে, আমি বলতাম বিয়ের পরে সবগুলো একসঙ্গে নেবো। আজ আমি বিবাহিতা, কিন্তু স্বামী তুমি নয়। এমন স্বপ্ন তো দেখিনি কোনোদিন।

নিজের পছন্দের একটা মেয়ে বিয়ে করে নিও৷ তারপর সবগুলো শাড়ি তাকে দিয়ে দিও। মেয়েরা শাড়ি কতটা পছন্দ করে তুমি কি জানো? তোমার স্ত্রীকে যখন দিবে তখন উপলব্ধি করে নিও৷

তোমার সাথে অনলাইনে পরিচয়। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি এ জীবনে আর কোনদিন অনলাইনে যাবো না। নাম্বারটাও চিরদিনের জন্য বন্ধ করে দেবো। আজকের পর থেকে আমাদের আর কোনদিন কথা হবে না।
তোমার কাছে একটা অনুরোধ করি। যদি আমাদের কোনদিন চলার পথে দেখা হয়ে যায় তাহলে প্লিজ অচেনা হয়ে চলে যেও।

নিজের যত্ন নিও।
জীবন গুছিয়ে নিও।
জীবন তো একটাই।
তুমি ভালো থেকো, আমি ভালো নেই।

~ ~ ~ অবন্তী

সবগুলো মেসেজ একত্রে পড়লাম। আমার সামনে কফিনের মধ্যে চিরনিদ্রায় ঘুমিয়ে আছে ফাহাদ। অবন্তীর যখন পরপর পাঁচদিন অনলাইনে আসেনি কিংবা কোনো ধরনের যোগাযোগ করেনি। তখন এক রাতে অফিস থেকে ফিরে রাগ করে মোবাইল আছাড় দিয়ে ভেঙ্গে ফেলে৷

ভাঙ্গা মোবাইল আর ঠিক হলো না। ফাহাদ তার সিমটা আমার মোবাইলে চালু করলো। জরুরি কল এলে আমি ফাহাদকে দিতাম। ফাহাদ রাগ করে বললো যে অবন্তী যেদিন যোগাযোগ করবে সেদিন নতুন মোবাইল কিনবে। তার আগে নয়।

মোবাইল ভাঙ্গার দুদিন পরে ফাহাদের প্রচন্ড জ্বর এলো। একদিনের মধ্যেই তাকে হাসপাতালে ভর্তি করলাম। ডাক্তার পরীক্ষা করে বললো ফাহাদের ডেঙ্গুজ্বর হয়েছে। তবে চিন্তার কিছু নাই।

ডাক্তারের কথা বিশ্বাস করেছিলাম। কিন্তু ডাক্তার তো সবকিছুর খবর জানেন না। যিনি জানের তিনি হচ্ছেন সৃষ্টিকর্তা। তিনি ফাহাদের এই জ্বরকেই মৃত্যুর উছিলা করলেন। যেই ডাক্তার বলেছিলেন চিন্তার কিছু নাই।
সেই ডাক্তার নিজেই আজ সকালে ফাহাদকে মৃত ঘোষণা করলেন। ফাহাদের আর জানা হলো না অবন্তীর বিয়ের কথা।

আমি অনেক ভেবে সিদ্ধান্ত নিলাম যে অবন্তীকেও ফাহাদের মৃত্যুর খবর জানাবো না। অবন্তী যদি সত্যি সত্যি আর অনলাইনে না আসে আর পুরনো সিমটা ব্যবহার না করে। তাহলে ফাহাদের মৃত্যুর খবর সে জানবে না। কি লাভ সদ্য সংসার জীবন শুরু করা ওই মেয়েটাকে কষ্ট দিয়ে।

তারচে বরং সে ভাবুক ফাহাদও হয়তো ভালো আছে। কোনো একদিন শাড়ি পরতে গিয়ে অবন্তী হয়তো মনে মনে ফাহাদের কথা চিন্তা করবে। সে ভাববে ফাহাদের কেনা সবগুলো শাড়ি বোধহয় তার স্ত্রী পরে রোজ ফাহাদের সামনে আসে। কিন্তু ফাহাদ সাদা কাফন পরে কবরে যাবার খবরটা নাহয় তার অজানা থাকুক।

আমি ফাহাদের সিম থেকে অবন্তীর নাম্বারে একটা মেসেজ দিলাম,

" আমার জন্য ভেবো না। স্বামীর সঙ্গে মানিয়ে নেবার চেষ্টা করো। বিবাহের বন্ধন সবচেয়ে বড় একটা বন্ধন। ভালো থেকো ভালোবাসা। "

অবন্তী রিপ্লাই দিলো,

" এতো সহজে ক্ষমা করার জন্য ধন্যবাদ। আর মেসেজ দিও না। বিদায়, চিরবিদায়। "

মোবাইল পকেটে রাখলাম। এম্বুলেন্স ততক্ষণে ফাহাদদের বাড়ির সামনে এসে গেছে। কফিনে রাখা ফাহাদকে নেবার জন্য সবাই দাঁড়িয়ে আছে। আমি ফাহাদের কফিনটা স্পর্শ করে বিড়বিড় করে বললাম,

" তোর সঙ্গে আর কোনদিন একই গাড়িতে চড়ে ভ্রমণ করা হবে না। আজই তোর আর আমার একসঙ্গে ভ্রমণের শেষ দিন। বিদায় বন্ধু, বিদায়। "

#ভালোবাসার_সমাপ্তি



সমাপ্ত

04/03/2023

Welcome all members

Want your public figure to be the top-listed Public Figure in Kushtia?
Click here to claim your Sponsored Listing.

Videos (show all)

Category

Website

Address

Kushtia