আভা
i love Allah
ভালোই লাগে 🙂
কুমিল্লা, বরিশাইল্লা, নোয়াখাইল্লারা ঢাকা ভাড়া না থাকলে, ঢাকা কখনোই বাংলাদেশের রাজধানী হতো না!'🤍 😐
বাড়িওয়ালা যখন ছাদ ইউজ করতে দেয়না!🙂
Dear December! তোমাকে খুব মিস করছি! তুমি তো গোসল করতে দাও নাই!
আর January তো হাতই ধুতে দিচ্ছে না!'🙂
মা তো সন্তানের জন্য বেহেশতই। দুনিয়ায় বেহেশতের নেয়ামত। আল্লাহ এই নেয়ামতকে হায়াতে তইয়েবা দান করুন।
এরকম একটা মুরগি থাকলে কম করে হলেও ২ বছর খাওয়া যাবে😂😂
আম্মুর রান্না করা শেষ খিচুড়ি।
আম্মুর রিপোর্ট আসার ২ বা ৩ দিন আগের রান্না করা, সারাবাড়ি কাউকাউ হৈ চৈ করে খাওয়া দাওয়া হলো সেদিন। তখনো জানিনা কি চলছে, মানুষটা নিজেও বুঝলো না...
আম্মুর খুব পছন্দ ছিলো খিচুড়ি, আমারও পোলাও বিরিয়ানির চেয়ে বেশি পছন্দ খিচুড়ি। একটু ঠান্ডা ধাচ বা বৃষ্টি হলেই আম্মুর কাছে ঘ্যানঘ্যান শুরু করে দিতাম খিচুড়ির জন্য। আমার আর ঘ্যানঘ্যান করা হবে না
আম্মু চলে গেছে আজ ৫ দিনে পরে গেলো। খুব অদ্ভুত ভাবে বেচে আছি, চারদিকে সব চলছে সব পরে আছে, মানুষটা নাই।
খিচুড়িটা নষ্ট হয়ে উঠেছিলো একটু,আগে হলে খেতাম না। কিন্তু গরম করে খেলাম, মায়ের হাতের স্বাদটা শেষবারের মত ছাড়ি কি করে!
মা, ভালো থেকো...
১৭ই ডিসেম্বর, ২০২৩
দুপুর ১২.৩১
"পরিপূর্ণ মানসিক শান্তি'একমাত্র আল্লাহর
দিকেই রয়েছে-!"🖤
__ [সূরা:রাদ- আয়াত :২৮]
অতিরিক্ত চা পানে কি*ডনিতে ৩০০ পাথর পাওয়া গেছে। চা'খোর মানুষেরা কইই?'🙂
১১বছর নিঃসন্তান। মেডিক্যাল রিপোর্টে উভয়ই ফিট। বর হঠাৎ জানালেন সম্পত্তি বন্টনে তার প্রতিবন্ধী ভাইকে ঠকিয়েছেন। সম্পত্তি ফেরত। বছরান্তে রাজকন্যার আগমন।
ফেইসবুক চালাই মুলত অপু, বুবলি, জায়েদ খান, পরি মনি, মানিক মিয়া, জান্নাত তোহা,
প্রিন্স মামুন আর লায়লার কাহিনী দেখার জন্য!! 🙂
বিদায় গুনীজন
ড. ইনামুল হক
পর্ব ০২ :-
তো আসল ঘটনা শুরু ব্রেকআপ করার দুই মাস পর থেকে। দুই মাসের বেশি হবে সম্ভবত। যাইহোক , দুই মাস পর থেকে আমার শরীর আস্তে আস্তে দুর্বল হতে লাগলো। শরীর ভেঙে যেতে লাগলো। কোনো কিছু খেতে পারতাম না। খেলে সাথে সাথে বমি করে দিতাম। অরুচি এসে গেছিলো মুখে। কোনো খাবারই হজম হতো না। মাথা ঘুরাতো। ভাবলাম অতিরিক্ত কাজ করার ফলে এইসব হচ্ছে। খাওয়া-দাওয়া নেই শুধু কাজ নিয়ে পড়ে থাকতাম। মনে করলাম এইসব সমস্যা খাওয়া-দাওয়া বাড়ালে ঠিক হয়ে যাবে। তাই আর ডাক্তার দেখলাম না। শুধু ফার্মেসি থেকে বমির ট্যাবলেট আর ওরাল স্যালাইন কিনে খেতে লাগলাম। এরপর থেকে কাজের পরিমাণ কমিয়ে দিলাম। ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া , ঘুম ঠিক রাখলাম। এইভাবে কয়েক সপ্তাহ গেলো , কিন্তু ফলাফল ভালো না। দিন দিন অবস্থা খারাপ হচ্ছিলো। আস্তে আস্তে মাথার চুলগুলো পড়তে লাগলো। ব্রাশ চিরুনী দিয়ে আঁচড়ালে এক গাদা চুল এসে যেতো। চেহারার চাপা ভেঙে যেতো লাগলো অথচ আমার চেহারা ভরাট ছিলো। একপর্যায়ে শরীর এমন ভাবে শুকিয়ে গেলো যেন দেখতে মনে হচ্ছিলো আমি একটা শুটকি।
বিছানার সাথে হাত-পা লেগে গেছিলো। মানে বিছানায় শুইলে মনে হতো খাটের বিছানা আর আমার হাত-পা একই। কোনো ভাবে আলাদা করে চিহ্নিত করা যেত না। শরীরের ওজন কমতে থাকলো। শরীরে এক তিল পরিমাণ শক্তি ছিলো না। এরপর অবস্থা খারাপ দেখে আমার বন্ধুরা তো পাগল হয়ে গেলো। সেদিন আমি বুঝছিলাম প্রকৃত বন্ধু কাকে বলে ! বাবা তো ছিলো না। মা-বোন হলো মহিলা মানুষ। তারাই বা আর কতটুকু করবে ! আর আত্নীয় স্বজন তো সুবিধাপার্টি। বিপদের সময় লেজ গুটিয়ে পালায়। তো বন্ধুরা আমার এই অবস্থা দেখে তৎক্ষণাৎ আমাকে হাসপাতালে নিয়ে গেলো। হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে স্যালাইন দেওয়ানো হলো। ডাক্তারের চিকিৎসা নিলাম। টানা ২সপ্তাহ ২দিন অর্থ্যাৎ ১৬দিন ছিলাম।
এরপর শরীর একটু সুস্থ হলে হাসপাতাল থেকে রিলিজ নেই। ডাক্তার শরীরে কোনো রোগ খুঁজে পায় নাই। অনেক পরিক্ষা করানো হইছিলো। কোনো রোগই ধরা পড়ে নাই। এই ১৬ দিন স্যালাইনের ওপর ছিলাম আর কিছু ট্যাবলেট। যাইহোক , হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে বাসায় ফিরে আসলাম। প্রথম ৯ দিন ভালোই ছিলাম , ১০দিনের মাথায় আবার ঐ আগের সমস্যা শুরু। আবার বমি , মাথা ঘুরানো , চুল পড়া , কিছু খেতে না পারা ইত্যাদি সব দেখা দিতে লাগলো। এবং আস্তে আস্তে এগুলো চরম আকারে ধারণ করতে লাগলো। এবার আমার মা বিষয়টা নিয়ে একটু ভাবলেন। তিনি মনে করলেন আমার বোধহয় কারো বদনজর লাগছে যেহুতু আমি অনেক ফর্সা আর সুদর্শন ছিলাম।
তো আমি আবার বদনজরে বিশ্বাসী না। মায়ের এইসব চিন্তা যখন আমি জানতে পারলাম তখন মাকে বললাম "" কি আজগুবি চিন্তা নিয়ে বসে আছো। বদনজর একটা কুসংস্কার , ভূয়া। ""
কিন্তু মা তো মা-ই ! তিনি আমাদের এলাকার মসজিদের ইমাম সাহেবের কাছে যেতে বললেন। আমি প্রথম যেতে চাইলাম না। কিন্তু মায়ের জোরাজুরিতে যেতে হলো।
তো একদিন সময় করে ঐ হুজুরের কাছে গেলাম।
হুজুরটা অনেক ভালো। আমাদের এলাকায় তার অনেক নাম-ডাক। এলাকার বড় কোনো বিষয়ে বা ঘটনায় তিনি সবার আগে থাকবেন। সবার সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করেন। মনে তিল পরিমাণ অহংকার নেই। দেখা হলেই হুজুর মুখে একটা হাসি দিয়ে কথা বলবেন। তার মুখের হাসি দেখেই আমরা গলে যেতাম , কথা বলবো কি ! এমন টাইপের মানুষ তিনি। তো হুজুরের কাছে গেলাম। তার কাছে গিয়ে সব সমস্যা খুলে বললাম। তো তিনি বেশ কিছু দোয়া পড়ে ফুক দিয়ে দিলেন আর এক বোতল পড়া পানি দিয়ে বললেন "" তোমার বদনজর না বরং অন্য কিছু হয়েছে বোধহয় ! ""
হুজুরের কথা শুনে আমি বেশ ঘাবড়ে গেলাম। আমি মনে মনে ভাবছিলাম " আমার বোধহয় লিভার নষ্ট হয়ে গেছে বা গলায় কোনো সমস্যা হইছে যার কারণে কিছু খেতে পারি না ""
এইসব চিন্তা ভাবনা শেষে হুজুরকে জিজ্ঞেস করলাম "" আমার কি হইছে হুজুর ? আর আপনি
" বোধহয় " বললেন কেন ? তার মানে আপনি শিউর না যে আমার অন্য কিছু হইছে ? ""
হুজুর :- তুমি এই পানি পড়া গুলো আগে খেয়ে দেখো। দেখো উন্নতি হয় কিনা। বদনজর লাগলে তার সমাধান তো আছে কিন্তু সেটা বেশ খানিকটা কঠিন। এখানে কার নজর লাগছে সেটা জানলে ভালো হতো।
আচ্ছা ! তুমি আগে পড়া পানিটা খেয়ে শেষ করে আসো।
আমি :- আচ্ছা হুজুর।
এই বলে আমি হুজুরকে সালাম দিয়ে বাসায় চলে আসলাম। এসেই মাকে বললাম "" তোমাকে তো বলছিলামই বদনজর ভূয়া , কিসের না কি ! হুদাই পানি পড়া হাতে ধরায় দিসে ! ""।
মা :- চুপ ! একটা কথাও বলবি না তুই এখন । তুই হইলি পোলাপাইন। তোর কি কোনো বুদ্ধি আর অভিজ্ঞতা হইছে এখন পর্যন্ত ! মুরুব্বিদের কথার উপর দিয়ে যাস কেন ? বদনজর আছে। এটা সত্য। হাদিস পড়।
এইসব বলে মা আমাকে বেশ কয়েকটা হাদিস শুনিয়ে দিলো আমাকে। আমার হাদিসগুলো শুনতে মোটেও ভালো লাগছিলো না। ইদানিং আমার আযান শুনতেও ভালো লাগে না। শুধু গান শুনতে মন চায়।
আর ডিজে পার্টি করতে মন চায়। আরবি শব্দ শুনতেই ভালো লাগে না। এদিকে পড়া পানি বেশ কয়েকদিন খেলাম। কিন্তু কোনো উন্নতি চোখে পড়ছিলো না। এদিকে আমার মা বেশ কয়েকটা টোটকা অবলম্বন করতে লাগলেন। শুকনা মরিচ টোটকা , পান দিয়ে টোটকা ইত্যাদি দিয়ে আমার বদনজর কাটাতে চেষ্টা করতে লাগলেন। আর আমি ডাক্তারের কাছে দৌড়াচ্ছিলাম। ডাক্তার আর টোটকা দুটোই চলছিলো আর হুজুরের ঝাড়ফুক , পানি পড়া।
কাজ তো করতে পারছিলামই না। বড় ভাইয়ের ( যার চাকরি করি ) কাছে অনেক বকা শুনতাম কাজ করতে না পারার ফলে। এরপর জব থেকে বেশ কিছুদিনের জন্য ছুটি নিলাম। ছুটি নিয়ে মার কথা মত জন্ডিসের গোসল করলাম। তার ধারণা মতে আমার নাকি জন্ডিস হইছে তাই বমি আসে কিছু খেতে পারি না। তাই জন্ডিসের গোসল করলাম অথচ ডাক্তার বলছিলো আমার জন্ডিস হয় নাই। এমনকি শরীরে কোনো রোগ নাই। জন্ডিসের গোসল নেওয়ার পর বেশকিছুদিন ভালো ছিলাম। টুকটাক কিছু খেতে পারতাম তবে বেশিরভাগই তরল খাবার , যেমন :- ফলের জুস , দুধ এগুলো খেতে পারতাম। ভাত তো খেতেই পারতাম না। ভাত খেলেই বমি আসতে চাইতো। রুটিও ঠিকমত খেতে পারতাম না। শুধু পুডিং , দই এই জাতীয় জিনিস খেতাম আর ফল ।
জন্ডিসের গোসল নেওয়ার পর কয়েকদিন ভালো থাকার পরে আবার সমস্যা শুরু। আবার বমি হওয়া শুরু। ডাক্তারও বিরক্ত হয়ে গেছিলো ট্রিটমেন্ট করতে করতে। অনেক ডাক্তার চেন্জ করছি। লিভার বিশেষজ্ঞ , গলা বিশেষজ্ঞ , মেডিসিন বিশেষজ্ঞ অনেক ডাক্তার একের পর এক দেখাইছি। কিন্তু কোনো কাজ হয় নাই। এরপর মা অনেক চিন্তায় পড়ে গেলো। আমাকে নিয়ে চিন্তা করতে করতে তারও খাওয়া-দাওয়া বন্ধ হয়ে গেলো। এদিকে হুজুরের পড়া পানি খেলে একটু ভালো লাগতো তবে বেশি না। সামান্য পরিমাণ ভালো লাগা কাজ করতো। শরীরে একটু শক্তি পেতাম। তো পড়া পানি শেষ হলে হুজুর তার কাছে যেতে বলেছিলো। তাই পড়া পানি শেষ হলে হুজুরের কাছে যাই। এবার মায়ের জোরাজুরিতে না বরং নিজের ইচ্ছাতেই হুজুরের কাছে যাই। কারণ সমস্যাটা এতটাই সিরিয়াস হয়ে গেছিলো যে এক পর্যায়ে মেডিকেল সায়েন্সের ওপর থেকে আমার ভরসা উঠে গেছিলো। আমি আস্তে আস্তে বুঝতে পারছিলাম যে , আমার সমস্যাটা কোনো সাধারণ না বরং কিছু একটা অস্বাভাবিক বিষয় আছে। আমি ঠিকমত নামাজও পড়তে পারতাম না। নামাজ পড়ার জন্য ওযু করলেই ঠান্ডা লেগে যেত। তারপর অনেক কাশি হতো। তায়াম্মুম করেও নামাজ পড়তে পারতাম না। মনে হতো কেউ আমাকে নামাজ পড়তে বাধা দিচ্ছে। মনের ভিতর ভুল-ভ্রান্তি বেড়ে গেছিলো। কোনো কিছু মনে থাকতো না। স্মৃতিশক্তি লোপ পেয়ে গেছিলো। মাথা সবসময় ভার হয়ে থাকতো। তো যাইহোক , যেমন ভাবা তেমন কাজ। একদিন হুজুরের কাছে গেলাম। ঐদিন আবার আমি একা যাই নি। কারণ হুজুরের বাসায় যাওয়ার মত শক্তি আমার শরীরে ছিলো না। এতটাই দুর্বল ছিলাম আমি তখন। তাই বাধ্য হয়ে আমার এক ঘনিষ্ট বন্ধুকে সাথে নিয়ে যাই। তো আস্তে আস্তে হেঁটে হেঁটে আমরা হুজুরের বাসায় পৌছে গেলাম।
হুজুরের বাসার ভিতরে ডুকে হুজুরকে পেলাম না।
হুজুর বাসায় ছিলেন না কোনো এক কারণবশত।
তো আমরা বসে বসে হুজুরের জন্য অপেক্ষা করতে থাকলাম।
বেশ কিছুক্ষন পর হুজুর আসলো। আমরা উঠে সালাম দিলাম। তো হুজুর বলতে লাগলো ,
হুজুর :- আরে নিলয় তোমার শরীরটা এখন কেমন ?
আমি :- না হুজুর ভালো না , একেবারেই খারাপ।
আপনার ঝাড়ফুক আর পড়া পানির তেমন একটা প্রভাব তো পড়লো না আমার ওপর। তবে পড়া পানিটা খেলে একটু ভালো লাগতো।
এদিকে আমি ঠিকমত কথাও বলতে পারছিলাম না।
বাকিটা সব আমার বন্ধুই বলেছিলো। বন্দুর নাম
" সাহেল "। তো সাহেল বলতে লাগলো ,
সাহেল :- হুজুর ওর তো অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। কত টাকা খরচ করছে ডাক্তারের পিছনে। কত পরিক্ষা করালো। কিছুতেই তো কিছু হলো না। বরং দিন দিন অবস্থা আরো খারাপের দিকে যাচ্ছে।
এমন সময় হুজুর সাহেলকে থামিয়ে যা বললো তা শুনে তো আমাদের কান পুরো জমে গেলো। কি শুনলাম এটা আমরা ? ,,,,,,
চলবে ।
বি:দ্র:- নেক্সট পর্বটা বোধহয় শেষ পর্ব হবে।
" বোধহয় " বললাম এইজন্য যে যদি কাজ না থাকে তাহলে কালকেই শেষ করে দিবো। আর যদি কাজ থাকে তাহলে তো কিছু করার নাই। পর্বের পরিমাণ বাড়াতে হবে। তবে চেষ্টা করবো কালকে শেষ করে দিতে। "" উল্টারকরণ যাদু(সত্য ঘটনা) , লিফট(সত্য ঘটনা) , জ্বীনবন্দি আয়না(সত্য ঘটনা) "" ইত্যাদি আরো যে ঘটনাগুলো লিখেছিলাম তার সবগুলোতে কমবেশি বলেছিলাম যে নেক্সট ঘটনা " বরফ দিয়ে যাদু " এটা লিখবো।
কিন্তু এটা তো লেখার সময়ই হচ্ছে না। এটা মূলত অনেক বড় একটা ঘটনা। বিভিন্ন প্যাচ আছে ঘটনায় তাই লেখা হচ্ছে না। তবে চেষ্টা করবো এটা শেষ করে " বরফ দিয়ে যাদু " ঘটনাটা লেখার।
ধন্যবাদ সবাইকে 🙂🙂।
শুকনা বান যাদু ( সত্য ঘটনা )
পর্ব ০১(সূচনা পর্ব) :- ঘটনাটা যার কাছ থেকে নেওয়া সে তার নাম প্রকাশে ইচ্ছুক না। ঘটনাটা উনি ফেসবুক মেসেন্জারে আমার সাথে শেয়ার করেছিলেন। তো ভাবলাম ঘটনাটা গ্রুপের সবার সাথে শেয়ার করে দেই। যাইহোক , আমরা ভিক্টিমের ছদ্মনাম ধরে নিলাম " নিলয় "। ভিক্টিম একজন ছেলে৷ তো আর কথা না বাড়িয়ে ঘটনায় চলে যাওয়া যাক। ঘটনাটা তার ভাষ্যমতেই বলছি :-
ঘটনাটা ২০১৮ সালে ঘটা একটি ঘটনা।
ঘটনাটি ঘটে বরগুনায় থাকাকালীন।
আমার নাম নিলয়। মা-বাবার একমাত্র সন্তান। আমার আর কোনো ভাই নেই তবে ছোট একটা বোন আছে। একমাত্র ছেলে সন্তান হওয়ার ফলে মা-বাবার অনেক আদরের আমি । দেখতে অনেক ফর্সা আর সুদর্শন ছিলাম। ভালো স্বাস্থ্যবান ছিলাম। দেখতে বডি বিল্ডারদের মত লাগতো।
আমার বাবার গায়ের রং অনেক ফর্সা , একেবারে দুধের মত সাদা। তাই পাড়া-প্রতিবেশীরা বলে থাকেন "" আমি নাকি আমার বাবার মত হয়েছি এবং তার গায়ের রং আর সৌন্দর্যটা পেয়েছি ""। ২০১৬ সালে বাবাকে হারাই।
তখন পরিবারের দায়িত্ব আমার কাঁধে এসে পড়ে। আমার বয়স তখন ২২ ছুইছুই যখন বাবা মারা যায়।
পড়াশুনা চলছিলো তবে বাবা মারা যাওয়ার পর পড়ালেখা আর বেশিদিন চালিয়ে নিতে পারি নি। কোনোমতে ইন্টার পাশ করলাম।
তারপর কোনোমতে অনেক খোঁজা-খুজির পর একটা জব পেলাম। এদেশে তো অশিক্ষিত বেকারের থেকে শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বেশি। অনেক কষ্টে একটা জব পেলাম। বাবার মৃত্যুর পর আত্নীয়-স্বজনরাও খোঁজ নেওয়া কমিয়ে দিলো। অথচ বাবা থাকাকালীন সময়ে কত আদর , কত খোঁজ-খবর ছিলো। আর আজ বাবা নেই , আত্নীয়-স্বজনরাও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। তাদের কোনো ডাক-খোঁজ নেই। বাবার মৃত্যুর পর আস্তে আস্তে পরিবারটাকে কোনোমতে গুছিয়ে নিলাম। দিন-কাল ভালোই যাচ্ছিলো।
তখন ছিলো শীতকাল। আর ঘটনার শুরু এইখান থেকেই। সারাদিন কাজ নিয়ে পড়ে থাকতাম তাই এক পর্যায়ে বন্ধুরা মিলে একটা লঞ্চ পিকনিকের আয়োজন করলাম। আয়োজনটা মূলত বন্ধুরাই করেছে। আয়োজন শেষে আমাকে জানানো হলো।
আমি শুরুতেই না বলে দিলাম যে আমি যাবো না।
প্রচুর কাজ আছে , এদিকে বোনটাও বড় হচ্ছে। সামনে বিয়ে-সাদি দিতে হবে। একটা দায়িত্বের মধ্যে পড়ে আছি। এদিকে মা বারবার বলছে "" এত কাজ নিয়ে প্রেসার নিলে শরীর খারাপ হবে। পিকনিকে যা , শরীর আর মন দুইটাই রিফ্রেশ হবে। ভালো লাগবে ""।
আমি মায়ের কথায় কোনো কর্ণপাত করলাম না। কোনো গুরুত্ব দিলাম না। আমার যাওয়ার ইচ্ছা নাই সেজন্য । তো মা আর ছোট বোন মিলে অনেক জোরাজোরি করলো , বন্ধুরাও অনেক রাজি করানোর চেষ্টা করলো। কিন্তু আমি তো নাছোরবান্দা , আমি যাবো না তো যাবোই না। মা-বোনকে একা রেখে কিভাবে পিকনিকে যাবো । মা আর বোন আমাকে আশ্বাস দিলো এটা বলে যে তাদের কিছু হবে না। নানাকে বাসায় আনিয়ে রাখবে। আমাকে চিন্তা না করে পিকনিকে যেতে বললো। আমি প্রথম প্রথম যেতে না চাইলেও পরে কি মনে করে যেন রাজি হয়ে গেলাম।
তো দিন-কাল ফিক্সড হলে আমরা বন্ধুরা সবাই সকাল ৮টায় পিকনিকের জন্য রওনা দিলাম। ৯:৩০টার দিকে লঞ্চ ছাড়লো। পিকনিকে বাইরের মানুষও অনেক ছিলো যারা টিকিটের মাধ্যমে এসেছে। আমাদের ফ্রেন্ড সার্কেলের থেকে বাইরের মানুষই বেশি। তো লঞ্চে থাকাকালীন সময়ে আমার বেশ ভালোই লাগছিলো। চারিদিকে পানি আর হালকা বাতাস এই দুইয়ে মিলে ভালোই লাগছিলো। তাছাড়া চারিদিকে তখন কুয়াশা আর কনকনে শীত। এটা আমার প্রথম লঞ্চ পিকনিক ছিলো বলে বেশ ভালো লাগছিলো আর অভিজ্ঞতাটাও বেশ জোরালো ছিলো।
সবকিছু ঠিক-ঠাকভাবে চলছিলো। এইভাবেই কিছুক্ষণ লঞ্চে পায়চারি করছিলাম এমন সময় একটা মেয়েকে দেখলাম ( এখানে একটা কথা বলতে হবে সেটা হলো ভিক্টিম মেয়েদের সাথে রিলেশন করতো তবে সেটা টাইম পাসের জন্য। অর্থ্যাৎ সে মেয়েদের সাথে ফান রিলেশন করতো 😑। )।
ভালো করে দেখলাম মেয়েটা বেশ সুন্দরী। আমার প্রথম দেখাতেই ভালো লেগে গেলো। মেয়েটার পিছনে ফলো করতে থাকলাম। মেয়েটাও বুঝতে পারছিলো যে আমি ওকে ফলো করছি। যতটুকু বুঝছিলাম , মেয়েটা তার বান্ধবীদের সাথেই পিকনিকে আসছে।
তো এক পর্যায়ে মেয়েটার সাথে ফেইস টু ফেইস কথা বলি। আস্তে আস্তে আমাদের কথার পরিমাণ বাড়ে। মেয়েটার নাম হলো ঝর্ণা। আস্তে আস্তে আমরা পরিচিত হই। এক পর্যায়ে আমাদের ফ্রেন্ডশিপ হয়।
পিকনিকে একসাথে খাওয়া-দাওয়া , মজা-মাস্তি সব হলো। বন্ধুরা তো হারামি , ওরা হিংসায় পড়ে গেলো।
ওদের রেখে আমি এখন ঝর্ণাকে নিয়ে পড়ে থাকি।
( পিকনিকের কথাগুলো অপ্রয়োজনীয় হওয়ায় এগুলো স্কিপ করে মূল ঘটনা লেখা হলো )।
যাক পিকনিকটা ভালোই ইনজয় করা হয়েছে। পিকনিক শেষে বাসায় চলে আসলাম। ঝর্নার ফোন নাম্বার নেওয়া হয়েছে। বেশ ভালো বন্ডিং তৈরি হয়ে গেছে আমাদের মাঝে। এইভাবে জব আর ঝর্ণা দুইজন আমার লাইফে চলতে থাকলো। আমার লাইফে কত ঝর্ণা আসলো আর গেলো। সবই টাইম পাস। এত কাজের মাঝে হালকা একটা বিনোদন।
তো যাইহোক , ঝর্ণার সাথে আমার ফ্রেন্ডশিপ রিলেশন আস্তে আস্তে গাঢ় হতে লাগলো। সম্পর্কটা ফ্রেন্ডশিপ ছাড়িয়ে যেতে লাগলো। একদিন ঝর্ণার সাথে মিট করে ওকে প্রপোজ করলাম। ও রাজি হয়ে গেলো। ঝর্ণা যে সহজেই রাজি হয়ে যাবে সেটা আমি ভাবি নাই। তাই ওর সহজেই রাজি হওয়াটা আমাকে বেশ অবাক করে। তো আর বেশি মাথা না ঘামিয়ে আমাদের প্রেম চলতে থাকলো। একসাথে ঘুরা , মনের কথা শেয়ার করা সবই হত আমাদের মাঝে।
এরপর আস্তে আস্তে ওর প্রতি আমার একঘেয়েমি আসতে লাগলো। ওকে আর ভালো লাগতো না। ওর আর আমার সম্পর্ক বড়জোড় ৭ মাস টিকে ছিলো।
এরপর আমিই ওর সাথে ব্রেকআপ করি। বিভিন্ন নানা অজুহাতে ঝগড়া করে ওর সাথে ব্রেকআপ করি। ওকে বলি যে "" আমি হলাম হ্যান্ডসাম একটা ছেলে। আমার পিছনে দশটা মেয়ে ঘোরে , তোমার মত ক্ষ্যাত মেয়েকে আমি আমার বউ বানাবো ?
কখনোই না ""। এইসব বলে এবং ঝগড়া করে ওর সাথে ব্রেকআপটা করা হয়।
ঝর্ণা অনেক কান্না করছিলো। ওর এইরকম রিয়েকশন দেখে বুঝলাম ও আমার সাথে রিয়েল লাভ করছে। কিন্তু আমি তো ওর সাথে ফান করছি।
আর আমার এখন ওকে ভালো লাগে না। তো আসল ঘটনা শুরু ব্রেকআপ হওয়ার দুই মাস পর থেকে ,,,,
চলবে।
বি:দ্র:- প্রথম পর্ব সূচনা মাত্র। পরের পর্বগুলোতেই মূলত যাদু নিয়ে ঘটা ঘটনাগুলো লেখা হবে।
গার্লফ্রেন্ড আমার সাথে s*x না করলে, অমন গার্লফ্রেন্ড আমার দরকার নেই😒
তবে বউ আমার সতীত্য চাই☺️
আমার মা আমার জননী😘
পাশের বাড়ির আন্টির ফিগার উফ😋
আমার ভাবি আমার মা এর মত😊
পাশের বাড়ির ভাবি কে এক রাত পেলে রে ভাই😎 পুরো খেয়ে ফেলতাম😋😋😋
আমার বোন আমার কলিজার টুকরা🥰
অন্য জনের বোন তাতে আমার কি😏।
আমার সুখ মিটলেই হবে🤤🤤
আমার বউ এর দিকে কোনো হারামজাদা তাকাবি না👿👿
যখন বন্ধুর বউ🙄কি মাল পেয়েছে মাইরি পুরোই s*xy 🤤🤤 😍😍
নিজে বিয়ের আগে সেক্স করার ইচ্ছা রাখিস। আর বউ চাস সতীত্য কি মনে করে? 👿👿😡😡
নিজের মা জননী🥰
আর পাশের বাড়ির আন্টি কারো মা নয়? 🤔
তোর বোন তোর কলিজা তাই তাকে কিছু বলিস না🤗🤗
অন্য জনের বোন কে ইভটিজিং কেমন করিস? 🤨🤨
হেভাস থাকে শরীরে নাহলে দেহের গঠন ত_ তোর বোনের ও এক🙏🙏
মেয়েদের কে সম্মান দিতে শিখুন🥰তারাও কারো ভালোবাসা........... তারাও কারো মমতাময়ী মা👰.............তারাও মা সমান ভাবি😊তারাও কারো কলিজার টুকরার বোন😘😘😘
এমন ভাবে নিজের চরিত্র গঠন করুন,, যেনো অন্ধকার রুমেও একটা মেয়ে আপনার সাথে নিজেকে সেফ মনে করে🥰🥰.............
# All Friend 😌🙏🏻🙏🏻😇🙂😌 কিছু ভুল হয়ে থাকলে ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন 🥺🥺
আমাদের স্কুলের নতুন ম্যাডাম এসেছে 💔🙃
মানুষটার সাথে সাক্ষাৎ বেইলি রোডে। মরিচ কিনবো, তাকে বললাম দুই হালি মরিচ দিবেন আমাকে। বললেন, মা তুমি নিয়ে নাও।
ঝাল হাতে লেগে যাবে জন্য নিজে হাত দিতে ভয় পাচ্ছিলাম।
পরে বললেন চোখে দেখেন না উনি।
অনেক আশ্চর্যের ব্যাপার তাইনা? চোখে না দেখা সত্বেও মানুষ কে বিশ্বাস করে ব্যবসা করে যাচ্ছেন। অথচ আমরা বছরের পর বছর পার করেও অনেক কে বিশ্বাস করতে পারিনা।
চাচার জন্য অনেক দোয়া।
~Ipsh*ta🌸
কত সত্য আড়ালে থেকে যায়,
কত কষ্ট মানুষ বুকে চাপা দেয়!!!
পরকীয়ার শাস্থি হওয়া উচিৎ কঠিন থেকে কঠিনতম।।।
দুপুরে খাওয়ার সময় প্লেটে ভাত নিয়ে আপুকে বললাম,
-- তরকারি দে তো
আপু বিরক্ত হয়ে বললো,
-" তোর সামনেই তো তরকারির বাটি। নিজে নিয়ে খেতে পারিস না?"
আমি নিজ হাতে তরকারি নিয়ে যখন খেতে যাবো তখন আপু চেচিয়ে বললো,
-" রাক্ষসের মতো পুরো বাটির তরকারি নিয়েছিস কেন? আমার জন্য তো একটুও রাখলি না।"
আমি রেগে গিয়ে বললাম,
-- এজন্যই তোকে বলেছিলাম তুই তরকারি দে। আমি নিলেই তো তোর চোখে শুধু বেশি বেশি হয়
আপু একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,
-"এইতো আর ৬দিন। ৬দিন পর যখন আমার বিয়ে হয়ে যাবে তখন কলিজা ভুনা, সিনা, ফেপসা সব একা একা রাক্ষসের মতো খাস"
আমি আর কিছু বললাম না। এখন কিছু বললেই আপু ড্রামা শুরু করে দিবে তারপর মা এসে আমায় বকাবকি করবে..
রাত ১টার দিকে বার্সার খেলা দেখছি। এমন সময় আপু নারিকেল তেলের বোতল হাতে নিয়ে আমার কাছে এসে বললো,
-" মাথাটা খুব ব্যথা করছে রে। মাথায় একটু তেল দিয়ে দে তো"
আমি টিভির স্কিনের দিকে তাকিয়ে বললাম,
-- এখন সামনে থেকে যা, খেলা দেখছি। আমি কারো মাথায় তেল দিতে পারবো না
আপু আবারও একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,
-" আর তো মাত্র ৫দিন। ৫দিন পর তোকে আর কেউ বলবে না মাথায় একটু তেল দিয়ে দিতে।তখন সারারাত আরাম করে খেলা দেখিস"
আমি রাগে আপুর দিকে তাকিয়ে বললাম,
--আমাকে কি তোর মেয়ে মনে হয়? আমায় দিয়ে যতসব মেয়েলি কাজ করাস। মাথায় তেল দেওয়া, মাথা থেকে উকুন আনা, আঙুলে নেলপলিশ লাগানো সব আমাকে দিয়ে করাস
আপু হেসে বললো,
-"সত্যি বলতে তোর মাঝে একটা মেয়েলি মেয়েলি ভাব আছে।"
--তুই কিন্তু বেশি ফাইজলামি করছিস
-"তাহলে আমায় ঠিক মতো তেল দিয়ে দে,আর ফাইজলামি করবো না"
আমি কিছু না বলে আপুর মাথায় তেল দিতে লাগলাম। আপু হুট করে বললো,
-"আমার বিয়ে হয়ে গেলে আমায় মিস করবি?"
আমি টিভির স্কিনের দিকে তাকিয়ে বললাম,
-- কিসের মিস? তোর বিয়ে হলে আমি বাঁচবো
আপু কিছু না বলে শুধু একটু হাসলো.....
পরের দিন সকালে বিছানায় বসে একমনে ফোন টিপছি। এমন সময় আপু রুমে ঢুকে আমার মুখের উপর একটা নতুন পাঞ্জাবিটা ছুড়ে মেরে বললো,
-" তাড়াতাড়ি এই পাঞ্জাবিটা পরে তৈরি হয়ে নে। তোকে নিয়ে একজায়গায় যাবো"
আমি বিরক্তিকর চোখে আপুর দিকে তাকিয়ে বললাম,
-- আমি কোথাও যেতে পারবো না।শুধু শুধু বিরক্ত করিস না
আপু মুখ গোমড়া করে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললো,
-" আর তো মাত্র কয়েকটাদিন। কয়েকদিন পর যখন আমার বিয়ে হয়ে যাবে তখন তো তোকে আর কেউ বিরক্ত করবে না। বিয়ের পর চলে যাবো জামাইয়ের সাথে দেশের বাহিরে। চাইলেও আমার এই মুখটা তুই কখনো দেখতে পাবি না"
আমি পাঞ্জাবিটা হাতে নিয়ে বললাম,
--দয়া করে আর ড্রামা করিস না। আমি তৈরি হচ্ছি
নীল পাঞ্জাবিটা পরে তৈরি হয়ে আপুর রুমে এসে দেখি আপুও নীল শাড়ি পড়েছে। আমি আপুর দিকে তাকিয়ে বললাম,
--আপু তোকে খুব সুন্দর লাগছে । মনে হচ্ছে তুই হিমুর রুপা
আপু হেসে বললো,
-" তোর মনে আছে তুই যখন ছোট ছিলি বাবা যে রঙের জামা আমায় কিনে দিতো তোকেও সেই রঙের শার্ট-গেঞ্জি কিনে দিতে হতো। তা নাহলে তুই কান্নাকাটি শুরু করে দিতি।
আমি আপুর কথা শুনে নিচের দিকে তাকিয়ে হেসে বললাম,
-- কোথায় যাবি এখন?
আপু আয়নার দিকে তাকিয়ে কপালের টিপটা ঠিক করতে করতে বললো,
-"তোকে নিয়ে আজ রিকশায় ঘুরবো, নৌকায় ঘুরবো আর অনেক অনেক ছবি তুলবো যাতে পরবর্তীতে তুই সেই ছবি গুলো দেখে আমায় একটু-আধটু মিস করতে পারিস"
রিকশায় উঠে রিকশাওয়ালাকে বললাম,
--মামা, আপনার রিকশা ১ঘন্টার জন্য ভাড়া নিলাম। আপনি আপনার পছন্দমতো জায়গায় নিয়ে যান।
রিকশায় বসে আমি আর আপু একমনে কি যেন বলছিলাম। হঠাৎ রিকশাওয়ালা একটা আবাসিক হোটেলের সামনে রিকশা থামালো। আমি অবাক হয়ে রিকশাওয়ালে বললাম,
-- এইখানে কেন রিকশা থামিয়েছেন?
রিকশাওয়ালা হেসে বললো,
-" মামা, এটা নিরাপদ জায়গা। এইখানে পুলিশের কোন ভয় নাই। আপনারা ভিতরে গিয়ে কাজ করেন আমি বাহিরে অপেক্ষা করছি।"
আপু কথাটা না শোনার অভিনয় করে রিকশা থেকে নেমে অন্য দিকে হাটা শুরু করলো। আমি রিকশাওয়ালাকে টাকাটা দিয়ে বললাম,
--এখন যদি আপনাকে দুইটা থাপ্পড় মারি তাহলে মানুষ ভাববে গরীবের উপর অত্যাচার করছি। মেয়েটা আমার আপন বড় বোন হয়...
নৌকার মাঝি মাঝ নদীতে বৈঠা উপরে তুলে আমায় বললো,
-" মামা, কিছু করার ইচ্ছে থাকলে ভিতরে গিয়ে করতে পারেন। নৌকা এখন পাড় থেকে অনেক দূরে। কোন রিস্ক নাই"
আমি কিছু বলার আগেই আপু মাঝিকে বললো, নৌকা পাড়ে নিয়ে দিতে....
পার্কে যখন আপুর ছবি তুলছিলাম তখন একজন লোক দূর থেকে বারবার আমায় ইশারায় ডাকছিলো। আমি লোকটার কাছে গেলে লোকটা আমায় কানে কানে বললো,
-" রুম লাগবে? "
কেন জানি আর সহ্য করতে পারছিলাম না। লোকটার গালে সজোরে থাপ্পড় মেরে বললাম,
-- আপনারা পেয়েছেন কি? পার্কে কি শুধু প্রেমিক-প্রেমিকেরা নোংরামি করতে আসে? ভাই-বোন কি আসতে পারে না?
লোকটা গালে হাত রেখে বললো,
-" পারেন শুধু গরীবকে মারতে। মেয়েটা আপনার বোন হলে একই রঙের শাড়ি পাঞ্জাবি পরে পার্কে এসেছেন কেন? আপনাদের দেখে তো যে কেউ ভাববে আপনারা প্রেমিক-প্রেমিকা
এমন সময় আপু এসে লোকটাকে বললো,
-"আপনি যান "
আমি যখন মন খারাপ করে নিচের দিকে তাকিয়ে ছিলাম আপু তখন আমার মাথায় হাত রেখে বললো,
-" আমি এইখানে রিকশাওয়ালা, মাঝি কিংবা পার্কের এই লোকটাকে পুরোপুরি দোষ দিবো না। রিকশাওয়ালার মনে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে এইরকম চিন্তা একদিনে সৃষ্টি হয় নি। আমাদের আগেও এই রিকশায় অনেক ছেলে-মেয়ে বসে ঐ হোটেলে গিয়েছে। তাই রিকশাওয়ালা ভেবেছে আমরাও সেখানেই যাবো। নৌকার ভিতর অনেক প্রেমিক-প্রেমিকা এমন করেছে তাই মাঝি এমন কথা বলার সাহজ পেয়েছে। আর পার্কের অই লোকটা অনেক প্রেমিক প্রেমিকাদের এমন ব্যবস্থা করে দিয়ে নিজে কিছু ইনকাম করেছে তাই সে এই কথাটা বলেছে। প্রকৃত দোষ ঐসব প্রেমিক-প্রেমিকাদের যারা ওদের মনে এই ধারণাটা সৃষ্টি করেছে।
মানুষ আজকাল মনে করে একই রঙের শাড়ি পাঞ্জাবি শুধু প্রেমিক প্রেমিকারা পরতে পারে কোন ভাই-বোন পরতে পারে না, রিকশায় কিংবা নৌকায় প্রাপ্ত বয়স্ক সমবয়সী কোন ভাই-বোন ঘুরে বেড়াতে পারে না। পারে শুধু প্রেমিক-প্রেমিকারা।"
বাসায় ফেরার জন্য রিকশা ডাকলাম। আপু রিকশায় উঠে চোখের জলটা আড়ল করে আমায় বললো,
-"পিয়াস, তুই অন্য রিকশা দিয়ে আয়। মানুষের চিন্তা ভাবনা নষ্ট হয়ে গেছে"
আমার মতো হয়তো অনেক ভাই আছে যারা বড় হবার পরে একই রঙের জামা কাপড় পরে বোনকে নিয়ে বাহিরে কোথাও ঘুরার সাহস পায় না। সমাজে নানা মানুষের নোংরা কথার ভয়ে একই রিকশা কিংবা নৌকায় ভাই-বোন একসাথে একটু ঘুরে-বেড়াতে চায় না
নষ্ট_ভাবনা
আবুল_বাশার_পিয়াস
ফ্যানপোস্ট
হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া গল্প....
আমরা বিয়ে করি ২০১০ সালের মাঝামাঝি। আমরা ব্যাচমেট ছিলাম, এরপর বেস্ট ফ্রেন্ড থেকে জীবনসঙ্গী। দুজনেই তখন মেডিসিনে এফসিপিএসের ট্রেনিং করছি, হাসপাতালে রোগী দেখতে অনেক সময় দিতে হয়।
মাস চারেক পর আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। প্রায়ই জ্বর আসতো, ধারণা করা হয় যে কাজের অনেক চাপ যাচ্ছে দেখে এমন হচ্ছে। কিন্তু অবস্থা দিন দিন আরো খারাপ হচ্ছিল। ১০৪-১০৫ ডিগ্রি জ্বর উঠে যাচ্ছিল, সাথে ইউরিনারি রিটেনশনও দেখা দেয়। কোনভাবেই ডায়াগনোসিস করা সম্ভব হচ্ছিল না। এমআরআই করে ডাক্তাররা ধারণা করেন যে আমার সিএনএস টিউবারকিউলোসিস হয়েছে। তখন আমার পরিস্থিতির দ্রুত অবনতি হচ্ছিল। কথা জড়িয়ে যেত, সাথে মেমোরি লস দেখা দেয়। কাছের মানুষদেরও চিনতে পারতাম না, এমনকি আমার স্ত্রীকেও না।
টিউবারকিউলোসিসের চিকিৎসা এবং এর পাশাপাশি স্টেরয়েড নেবার পর আমি কিছুটা সুস্থ হই, হাসপাতাল থেকে বাসায় চলে আসি। কিন্তু এসময়ই প্রথম প্যারালাইসিসের লক্ষণ দেখা দেয় আমার মাঝে। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হয় যে আমাকে সিংগাপুর নেয়া হবে। এখানে আমাকে অনেক প্রতিকূলতার সম্মুখীন হতে হয় যার মধ্যে টাকা জোগাড় করাটা প্রধান ছিল।
তখন আমার দুই পায়ে শক্তি কম, হুইলচেয়ারে বসিয়ে ক্যাথেটার লাগিয়ে আমাকে সিংগাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। এসময় আমার সার্বক্ষণিক সঙ্গী ছিল নাফিসা। আমাকে সারাক্ষণ দেখাশোনা করা এবং সেই সাথে বিভিন্ন ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ও পালন করে।
ডাক্তারের পরামর্শে সিংগাপুর থেকে আমাকে ইন্ডিয়া পাঠানো হয়। এখানে ওষুধের পাশাপাশি আমাকে ফিজিওথেরাপি দেয়া হয়, ফলে স্বাস্থ্যের কিছুটা উন্নতি হয়। আমি তখন ওয়াকিং স্টিকে ভর দিয়ে হাঁটতে পারতাম। ২০১২ সালের মাঝামাঝি নাগাদ দেশে ফেরত আসি। এসময় আমি আর নাফিসা এমআরসিপি পার্ট ওয়ান আর টু পাশ করি।
২০১২ সালের শেষের দিকে আমার স্বাস্থ্যের দ্রুত অবনতি হয়। শেষ পর্যন্ত সিংগাপুর থেকে ডায়াগনোসিস হলো যে আমার সিরিনগোম্যায়ালিয়া নামে স্পাইনাল কর্ডের খুব রেয়ার একটা ডিজিজ হয়েছে। কয়েকবার স্পাইনাল সার্জারি করলাম, কিন্তু সেটা খুব একটা ফলপ্রসূ হলো না। এই সময়েই শুরু হলো পুরো শরীরে প্রচণ্ড স্নায়বিক ব্যথা ও আমার শারীরিক অবস্থার ক্রমাগত অবনতি হয়। সবরকম ওষুধ এমনকি শক্তিশালী ওপিওয়েড ও হাই ডোজ স্টেরয়েড দিয়েও ব্যথা নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছিল না। শেষ চেষ্টা হিসেবে আমার পেটে একটি যন্ত্র বসিয়ে দেয়া হয় যেখান থেকে মরফিন সরাসরি আমার মস্তিষ্কে পাম্প করা হয়।
আমার বর্তমান যে শারীরিক অবস্থা, তাতে আবার পূর্বের মত হওয়া সম্ভব নয়। বর্তমানে ট্রিটমেন্ট প্ল্যান হলো অসুখটা ও সিমটমগুলো যতদূর সম্ভব নিয়ন্ত্রণ করা। আমি যে এই পর্যন্ত আসতে পেরেছি তাতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা আমার স্ত্রীর ও আমার বাবা মায়ের। মাঝখানে প্রায় দুই বছর আমি পুরোই বিছানায় ছিলাম। নিজে উঠে বসতে পারতাম না, বাইরের আলো বাতাস পর্যন্ত দেখিনি। এসময় নাফিসার যত্ন আর সঙ্গই আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছিল।
অনেক ভেবে ওকে আমি বলেছিলাম যে আমাকে ছেড়ে চলে যেতে। কারণ আমি মাঝখানে কয়েকবার মৃত্যুর সম্মুখীন হই এবং আমার যে শারীরিক অবস্থা তাতে আমার ভবিষ্যৎ নিয়ে খুব একটা আশা ছিলনা।
কিন্তু নাফিসা আমাকে ছেড়ে যায়নি। আমার কখনোই মনে হয়নি যুদ্ধটা আমার একার। আমার পাশে একসাথে, কখনো বা আমার চাইতেও বেশি কষ্ট ও ত্যাগ স্বীকার করে নাফিসা আমার সাথে লড়ে গেছে। মাঝখানে আমার রক্তশূন্যতা দেখা দেয়, হিমোগ্লোবিল লেভেল চারের নিচে নেমে গিয়েছিল। তখন নাফিসাই রক্তদান করে আমার জীবন রক্ষা করে।
এত কিছুর পরেও যে আমি পোস্ট গ্র্যাজুয়েশন করতে পেরেছি, তাতেও নাফিসার অবদান সবচেয়ে বেশি। আমি জীবন নিয়ে কখনোই হাল ছাড়িনি। আমার যত্ন নিতে গিয়ে নাফিসা ওর পড়াশোনা থেকে প্রায় চার বছর দূরে সরে আসে। আমি ওকে আবার পড়াশোনায় ফিরতে উৎসাহিত করি।
নাফিসা এমআরসিপি ফাইনাল পার্ট দেবার সিদ্ধান্ত নেয় এবং আমার নামও এন্ট্রি করে দেয়। ফলে আমিও একরকম বাধ্যই হই প্রস্তুতি নিতে। প্রস্তুতি নেবার সময় শারীরিক অংশটুকুই ছিল সবচেয়ে কঠিন। প্রচণ্ড ব্যথা ও অ্যাডিসন’স ক্রাইসিস নিয়ে প্রস্তুতি নেই। এসময় আমার ব্লাড সুগার তিনের নিচে নেমে যেত এবং রক্তচাপও কমে যেত। হাই ডোজ স্টেরয়েড নিয়ে এগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে হয় তখন। ২০১৭ সালে আমি আর নাফিসা কাছাকাছি সময়ে এমআরসিপি পাশ করি।
এখন চেম্বারও করতে পারছি, নিয়মিত রোগী দেখি। নাফিসা কখনোই বিশ্বাস হারায়নি আমার উপর আর আমাকেও বিশ্বাস করতে শিখিয়েছে যে জীবনে প্রতিকূলতার পরেও ভাল সময় আসতে পারে। ওর কারণেই আমি ভবিষ্যৎ নিয়ে স্বপ্ন দেখি, এত কষ্টের মাঝেও বেঁচে থাকার প্রেরণা পাই। ভালবাসা যে সব প্রতিকূলতাকে জয় করতে পারে, আমার স্ত্রীই তার সবচেয়ে বড় প্রমাণ।
---Dr. Nafisa Akter & Dr. Adeeb Hasan
(লেখাটি কার উপযুক্ত প্রমাণ দিলে ক্রেডিট যোগ করে দেয়া হবে।)
ভারতের নাগপুরের কিংসওয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বাংলাদেশ বিমানের পাইলট নওশাদ আতাউল কাইউম মারা গেছেন।
ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।😢
কখনো যদি মনে হয় "আপনি ভালো নেই" তখন এই ছবিটি খুব ভালোভাবে দেখবেন। এই মা ভাত রান্নাটা শেষ করতে পারবেন কিনা জানেন না, নদী ভাঙ্গনের ফাটল তার চুলা পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। আর একটু পরই হয়তো নদী তার শেষ সম্বলটুকুও গ্রাস করে নেবে।
-কি করছো এখন
-ঘুমাচ্ছি?
-কখন ঘুমালে?
-একটু আগে।
- দুপুরে খেয়েছো?
- নাহ, রান্না হচ্ছে। একটু পর খাবো।
- ৩ টা বাজে এখন। কখন তোমার রান্না শেষ হবে আর কখন তুমি খাবে।
- হয়ে যাবে। তুমি খেয়েছো?
- তোমার খাওয়ার আগে আমি কখনো খাই?
- আজ খেয়ে নাও। আমার লেট হবে।
তাসিন ফোন রেখে বিছানায় চিৎ হয়ে শুয়ে আছে। শরীর চলছেনা আর। গত রাত থেকে এখনো পেটে কোন খাবার যায়নি।
বাসায় রান্না হয়নি। মেসের রুমমেটরা দুপুরে কেউ বাসায় খায়না। সবাই অফিসে চলে যায়। বাজার হয়নি সকালে।
পকেটেও কোন টাকা নেই। এই মেসে তাসিনই কেবল একমাত্র বেকার মানুষ।
সারাদিন বই পড়ে। এই গল্প টল্প পড়ে অথবা দু একটা কবিতার বই।
বাসা থেকে মাসে ৩০০০ হাজার টাকা আসে। বাবা নেই, মা বাসায় বসে সেলাই টেলাই এর কাজ করে যা উপার্জন করে, তা দিয়ে সংসারটাকে টেনেটুনে নিয়ে যাওয়াই কঠিন হয়ে যায়।
তারপরও সেই কষ্টের টাকা থেকে, এই টাকাটা তাকে পাঠাতে হয়।
যদিও ৩০০০ টাকার মধ্যে ২০০০ টাকা চলে যায় সিট ভাড়াতে আর বাকি ১০০০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা মেসের বুয়ার বিল।
মেসে থাকতে হলে ওয়াইফাই এর বিল ১০০ টাকা দেওয়া বাধ্যতামূলক!
যদিও তাসিন এর এন্ড্রয়েড মোবাইল ফোন অথবা ল্যাপটপ কিছুই নেই, তবুও দিতে হয়।
জগতের যে কত নিয়ম ফলো করে টিকে থাকতে হয়!
ক্ষুধায় তাসিনের শরীর দুমড়ে মুচরে যাচ্ছে। পেটের ভেতর গ্যাস বুদবুদ শব্দ করে ফেপে উঠছে।
পেট ফুলে গেছে, অথচ পেটে কোন খাবার যায়না প্রায় ২৮ ঘন্টা!
গলির মোড়ের যে চায়ের দোকানটা, সেখানে ২৩৫ টাকা বাকি জমেছে।
কলা রুটি খেয়ে কাটিয়ে দেওয়া যেত;কিন্তু যাওয়ার ই তো সুযোগ নেই।
মুন্নি আবার ফোন দিয়েছে।
- খাওয়া হলো তোমার?
- হ্যা হয়েছে। খুব ক্ষুধার্ত ছিলাম, গুনে গুনে ২ প্লেট ভাত খেয়েছি। তুমি খাওনি এখনো?
- নাহ, এখন খেতে যাবো। খেয়ে এসে তোমাকে কল দিচ্ছি।
- আচ্ছা খেয়ে নাও।
মুন্নি ফোন কেটে দিয়ে ঘরের দরজা বন্ধ করে কান্না করছে।
সে জানে, তাসিন এখনো কিছু খায়নি। প্রিয় মানুষের কন্ঠস্বর শুনলে তার না বলা কথাও বুঝা যায়।
মুন্নির সামনে ভাতের থালায় খাবার পড়ে আছে। কাছের মানুষ না খেয়ে আছে জানার পর কি করে গলা দিয়ে খাবার নামে?
মুন্নি তার খাবারগুলো একটা বক্সে ভরে বাসা থেকে বের হয়ে গেলো।
তাসিনের বাসার গেটে এসে তাকে ফোন দিয়ে নিচে নামতে বললো।
তাসিন নিচে নেমে দেখে মুন্নি দাঁড়িয়ে আছে। তার হাতে একটা টিফিন বক্স।
সামনে আসতেই মুন্নি বক্সটা তাসিনের হাতে দিয়ে বললো, আজ শোল মাছের ভর্তা আর শিং মাছের ঝোলটা ভালো হয়েছে।
আমি একা একা খাবো, এটা মানতে পারছিলাম না। তুমি তো দুপুরে খেয়েছো, এটা রাতে খেও। আর উপরে যেয়ে ফ্রেস হয়ে বের হও।
পাক্কা ১০ মিনিট সময় আছে তোমার হাতে। ১ মিনিটও যাতে লেট হয়না।
ব্যাচেলর মেসে থাকা ছেলেদের রেডি হয়ে বাসা থেকে বের হতে ২ মিনিট লাগে। এর আগেও মুন্নি কখনো ২ মিনিটের বেশি সময় দেয়নি। আজ ১০ মিনিট সময় দিয়েছে।
তাসিন বুঝতে পারছে, এটা আসলে তার ভাত খাওয়ার সময়।
সে ভাত খেয়ে নিচে নেমে দেখে মুন্নি গেটের পাশে নেই।
তাসিন তাকে খুঁজতে খুঁজতে অনেকদূর চলে এসেছে। কোথাও মুন্নিকে দেখা যাচ্ছেনা।
সে মুন্নির ফোনে কল দিতে যেয়ে দেখলো ব্যালেন্স নেই। ব্যাচেলর মেসে থাকা দরিদ্র পরিবারের ছেলেদের ফোনে সবসময় ব্যালেন্স থাকে না।
একটু পর মুন্নি ফোন দিয়েছে। তাসিন ফোন ধরেই বললো,
- এ্যাই মুন্নি, কোথায় চলে গেলে?
- বাসায়।
- বাসায় মানে?
- বাসায় একটু কাজ আছে! জরুরী কাজ!
- কি এত জরুরী কাজ? না বলেই চলে যেতে হয়?
- পরে বলি?
- আচ্ছা বইলো।
- তুমি খেয়েছো?
তাসিন কোন জবাব দিল না। কারন ওপাশ থেকে মুন্নি কান্না করছে।
একদম হাউমাউ টাইপ কান্না। মনে হচ্ছে, এখনি বোধয় তার দমবন্ধ হয়ে আসবে।
তাসিন দুঃশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে তাকে জিজ্ঞেস করলো,
- কি হয়েছে, মুন্নি? কাঁদছো কেন? কেউ কিছু বলেছে? আমি কিছু করেছি?
- নাহ, তুমি কিছু করোনি। এমনিই কাঁদছি।
- এমনিই কেউ কখনো কাঁদে?
- আমি কাঁদি তো।
- কি হয়েছে বলো আমাকে?
- সন্ধ্যায় আমার এংগেইজমেন্ট। তোমার কথা তো বাবাকে অনেকবার বলেছি। বাবা তার মেয়েকে কোন বেকার ছেলের সাথে বিয়ে দিবে না।
আমি আর এসব নিতে পারছিনা, তাসিন! তোমাকে ছাড়া আমার বেঁচে থাকা কঠিন হয়ে যাবে।
তাসিন কি জবাব দিবে বুঝে উঠতে পারছেনা। বড়লোক বাবার আদরের সন্তান হলে হয়তো গোপনে বিয়ে করে বাড়ি নিয়ে যেত।
যেখানে মা নিজেই ঠিকঠাক সংসারটা চালাতে পারছেনা, সেখানে হুট করে নতুন একটা মানুষকে এনে সেট করে দেওয়ার মতো অত'টা দায়িত্ব জ্ঞানহীন তো তাসিন না।
ঢাকায় আসার পর কত কত চাকরির ইন্টারভিউ দিয়েছে। অথচ, ভালো ইন্টারভিউ দিয়েও কোন চাকরি হলো না।
চাকরির ইন্টারভিউ মানেই বাস ভাড়াটা অযথা খরচ হওয়া।
এই শহরে তাসিনের বোধয় কোন চাকরি হবেনা।
দুদিন পর মুন্নির ফোন এলো। ভাঙা ভাঙা কন্ঠে তাসিন বললো,
- কেমন আছো, মুন্নি?
মুন্নি কাঁদতে কাঁদতে জবাব দিল,
- তোমার কি মনে হয়, আমি ভালোই আছি?
তাসিন বললো,
- ভালো থাকারই তো কথা। যার স্বামী শহরের নাম করা শিল্পপতির ছেলে, তার ভালো না থাকাটা মানায়?
- অথচ, আমি তোমার সাথেই খারাপ থাকতে চেয়েছিলাম।
- জীবন আসলে এত'টা সহজ না। পৃথিবী মানুষের প্রত্যাশা পূরন করতে অপছন্দ করে। আমার সাথে থাকলে তুমি সুখী হবেনা। একটা মানুষ নিয়ে আসলে জীবন না। বেঁচে থাকতে আরো অনেক কিছুই লাগে। আমার ঘর নেই, থাকার কোন নির্দিষ্ট জায়গা নেই, ভর দিয়ে দাঁড়ানোর একটা লাঠি নেই। আমার জীবনে এসে তুমি কিছুই পাবেনা।
আমি চাইনা, তুমি আমার জীবনে আসো। তুমি বরং অন্য কোথাও ভালো থাকো।
ছোট্ট এই জীবনে, তোমার খারাপ থাকাটা মেনে নিতে পারবোনা।
- অর্থ সম্পদই কি জীবনের সব? এখানে কি ভালোবাসার কোন মূল্য নেই? এই যে আমি কাঁদছি, তোমার মায়া লাগছেনা?
- মায়া লাগলেই সব কিছু আটকে রাখতে নেই। কিছু কিছু মায়াকে উপেক্ষা করতে শিখে গেলে, মায়াময় কিছু জিনিস ভালো থাকবে।
বিয়ের ডেট কবে ঠিক হয়েছে?
- এই মাসের ২৮তারিখ।
- ওহ, আজ তো ২২ তারিখ। আর মাত্র এক সপ্তাহ!
- তোমার মন খারাপ হচ্ছেনা?
- নাহ। বিয়ে তো আনন্দের বিষয়। তার উপর কাছের মানুষের বিয়ে। মন খারাপ কেন হবে?
- মন খারাপ করা লাগবেনা তোমার। আমি ফোন রাখছি।
মুন্নি ফোন রেখে দিলো। তাসিন খেয়াল করলো তার চোখ থেকে টুপ করে এক ফোঁটা জল মাটিতে পড়ে গেলো।
কি আশ্চর্য!
পুরুষ মানুষ কখনো কাঁদে? তাসিন নিজেকে বুঝাতে চেষ্টা করলো, পুরুষদের হৃদয় হবে পাথরের মতো। মৃত্যুতেও এরা কাঁদতে পারবেনা।
এদের সহ্য করার ক্ষমতা হবে প্রবল।
কিন্তু তাসিন নিজেকে যতই বুঝাচ্ছে, ততোই তার কান্না বেড়ে যাচ্ছে।
হাউমাউ করে কান্না পাচ্ছে। কাছের মানুষের চলে যাওয়াতে কান্না পাওয়াটাই স্বাভাবিক।
তবুও, তাসিন তো নিন্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে। এতটুকু ব্যথায় সে কাঁদবে কেন?
আজ ২৮তারিখ।
সকাল বেলায় ঘুম ভাঙলো মুন্নির ফোনে।
- হ্যালো।
- হ্যা মুন্নি, বলো!
- দুপুরে বিয়ে।
- কনগ্রেটস!
- তুমি কি একটু আসবে?
- কোথায়?
- বিয়েতে।
- তুমি কি চাচ্ছো?
- শেষবার তোমাকে একটু দেখতাম।
- আচ্ছা আসবো।
- নীল পাঞ্জাবিটা আছে না?
- হ্যা আছে। তবে, আয়রন করা না।
- ওটাই পড়ে এসো!
- আসবো।
মুন্নি ফোন রেখে দিলো। তাসিনের জীবনের সবচেয়ে কঠিন এবং কষ্টের দিন আজকে। তবুও সে কাপরের স্তুপ থেকে নীল পাঞ্জাবীটা বের করে পানি দিয়ে আয়রন করে নিলো।
পাশের রুমমেটের কাছ থেকে একটু পারফিউমের ঘ্রাণ মাখিয়ে নিলো।
তাসিন বাসা থেকে বের হয়ে সোজা কমিউনিটি সেন্টারে গেলো। কমিউনিটি সেন্টারের নাম আনন্দ কমিউনিটি সেন্টার।
যদিও এখান থেকেই অনেক মানুষের বেদনার গল্প শুরু হয়।
ফুল দিয়ে সাজানো একটা স্টেজে মুন্নি বসে আছে। কি পরীর মতো লাগছে মেয়েটাকে।
তাসিন বুঝতে পারছে ঝলমলে আলোর স্টেজে বসা মেয়েটার ব্যাকস্টেজে অন্য একটা মানুষ।
এই মানুষটা সে নিজেই।
কখনো নিজের প্রেমিকার বিয়েতে প্রাক্তন প্রেমিক দাওয়াত খেতে আসে, এরকম কিছু তাসিন কখনো শুনেনি।
এত বড় স্পর্ধা প্রেমিকদের হয়না।
তাসিন স্টেজের সামনে গিয়ে দাঁড়ালো। কুচকানো পাঞ্জাবি দেখে তেমন কেউই পাত্তা দিচ্ছে না। ক্যামেরাম্যান বললো- এ্যাই ভাই চাপেন তো। দেখেন না ছবি তুলতেছি।
তাসিন হাসতে হাসতে সাইডে চেপে গেলো। মুন্নি কিছু বলতে পারছেনা।
ক্যামেরা ম্যান হাসতে বললে মুন্নি হাসে। ক্যামেরা ম্যানরা কখনো কাঁদতে বলে না। কাঁদতে বললে, এই মুহূর্তে মুন্নি জন্মের কান্না কাঁদতো।
একটু পর তাসিন স্টেজে উঠে মুন্নির আর তার স্বামীর পাশে বসে মুন্নির সাথে শেষ দেখা করে এলো।
চলে আসার সময় মুন্নির হাতে একটা খাম ধরিয়ে দিয়ে বলে আসলো, তোমার বিয়ের উপহার!
চলে আসার সময়, তাসিন পেছনে তাকিয়ে একটা অতৃপ্তির হাসি দিলো।
মুন্নি তাকাচ্ছে না। তাকালেই হয়তো কেঁদে ফেলবে।
বাসর ঘরে ঢুকে মুন্নি তাসিনের দেওয়া খামটা খুললো।
খামের ভেতর কম্পিউটারে কম্পোজ করা বোল্ড লেটারের একটা চাকরির এপোয়েন্টমেন্ট লেটার।
গল্প:এপোয়েন্টমেন্ট লেটার
#ইমতিয়াজ মাহমুদ তুষার
#ফ্যানপোস্ট
#লিখালিখি
Posted by- আভা
Click here to claim your Sponsored Listing.
Videos (show all)
Category
Website
Address
2282