Md Shipon Talukder
আমি মুজিব সৈনিক। অপ্রতিরোধ্য পথচলার মশাল হাতে নিয়ে হেটে চলা একজন ছাত্রলীগ কর্মি।
জয় বাংলা
জয় বঙ্গবন্ধু
জয় বাংলাদেশ ছাএলীগ
“গ্রামে গ্রামে কাজ করো
দুঃখের দিনে মানুষের
পাশে দাঁড়াও”
- বঙ্গবন্ধু
"ভিক্ষা করে
কোন জাতি বাঁচতে
পারে না
নিজে স্বাবলম্বী হতে হবে"
- বঙ্গবন্ধু
যশোর স্টেডিয়ামে দেওয়া ভাষণে, ২৬ ডিসেম্বর ১৯৭২
বাংলাদেশ ছাত্রলীগের
ময়মনসিংহ বিভাগীয় প্রতিনিধি সভা।
সভাপতিত্ব করেন - জনাব সাদ্দাম হোসেন।
সভাপতি, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
সঞ্চালনায় - জনাব শেখ ইনান।
সাধারণ সম্পাদক, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ।
উপস্থিত ছিলেন, ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সংগ্রামী সভাপতি, জনাব আল আমিন ভাই।
ধোবাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগ এর আহবায়ক,
জনাব নাদিউজ্জামান শুভ ভাইয়ের নেতৃত্বে,
সভায় অংশগ্রহণ করার মুহুর্তে...
আজ ০৫ ই ডিসেম্বর।
১৯৬৯ সালের আজকের এই দিনে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পূর্ব-পাকিস্তানের নামকরন করেন "বাংলাদেশ"।
#বঙ্গবন্ধু #বাংলাদেশ
"যুুদ্ধ চাইনা- শান্তি চাই, এবং আগামী প্রজন্মের জন্য শান্তিময় বিশ্ব চাই" এই সাবলীল উচ্চারনে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারন পরিষদের ৭৭ তম অধিবেশনে ভাষন প্রদান করেন।
ধোবাউড়া উপজেলা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দের কাছে আজকে ৫নং গোয়াতলা ইউনিয়ন ছাত্রলীগ শাখা হতে আমার রাজনীতি সিভি দেওয়ার মুহুর্তে
বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি
১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস পালন করা হয়। স্বাধীনতার জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ সকল শহীদদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি। মহান আল্লাহ সবাইকে জান্নাতুল ফেরদৌস
দান করুন আমিন।
২০০৭ সালের ১৬ই জুলাই, গ্রেফতারের পূর্বমুহূর্তে জনগণের উদ্দেশ্যে লেখা বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার খোলা চিঠি।
প্রিয় দেশবাসী,
আমার সালাম নেবেন। আমাকে সরকার গ্রেফতার করে নিয়ে যাচ্ছে। কোথায় জানি না। আমি আপনাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ও অর্থনৈতিক মুক্তির লক্ষ্যেই সারাজীবন সংগ্রাম করেছি। জীবনে কোনও অন্যায় করিনি। তারপরও মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ও আপনারা দেশবাসীর ওপর আমার ভরসা।
আমার প্রিয় দেশবাসী, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের কাছে আবেদন কখনও মনোবল হারাবেন না। অন্যায়ের প্রতিবাদ করবেন। যে যেভাবে আছেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবেন। মাথা নত করবেন না। সত্যের জয় হবেই। আমি আছি আপনাদের সঙ্গে, আমৃত্যু থাকব।আমার ভাগ্যে যা-ই ঘটুক না কেন আপনারা বাংলার জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যান। জয় জনগণের হবেই।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়বই। দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাবই।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
শেখ হাসিনা
১৬/০৭/২০০৭
অভিনন্দন ❤
আমাদের গর্ব, আমাদের অহংকার, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার স্নেহধন্য, প্রিয় নেতা ..........
জনাব জুয়েল আরেং এমপি মহোদয়
নব-নির্বাচিত সভাপতি
হালুয়াঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগ ।।
ও
জনাব খায়রুল আলম ভূঁয়া
নব নির্বাচিত সাধারন সম্পাদক
হালুয়াঘাট উপজেলা আওয়ামী লীগ ।
বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করছি।
বাংলা শুভ নব্বর্ষ ১৪২৯
"শুভ জন্মদিনে" জানাই,
অন্তরের অন্তস্তল থেকে হৃদয় নিগ্রানো ভালোবাসা।🎂
শুভ হোক আপনার আগামী দিনগুলো,
দোয়া ও শুভ কামনা রইলো ভাই❤️❤️❤️ #
এক সাগর রক্তের বিনিময়
বাংলার স্বাধীনতা আনলো যারা
আমরা তোমাদের ভুলব না।
মহান
স্বাধীনতা
দিবেস
সকল বীর শহিদের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি
ও ৫নং গোয়াতলা ইউনিয়নের ছাত্রলীগ
এর পক্ষ থেকে সকলকে বিজয়ী শুভেচ্ছা।
https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=331223419037273&substory_index=5&id=100064488534275
ভয়াল ২৫ মার্চ : অপারেশন সার্চ লাইটের নামে গণহত্যা
ভয়াল ২৫ মার্চ। ১৯৭১ সালের এইদিনে বাঙালী জাতির ইতিহাসে এক বিভিষিকাময় রাত নেমে আসে। মধ্য রাতে বর্বর পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নিরস্ত্র বাঙালীদের ওপর অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে।
পূর্ব পরিকল্পিত অপারেশন সার্চলাইটের নীলনকসা অনুযায়ী আন্দোলনরত বাঙালীদের কণ্ঠ চিরতরে স্তব্ধ করে দেয়ার ঘৃণ্য লক্ষ্যে বাঙালীদের ওপর এই আক্রমন চালানো হয় ।
মার্কিন সাংবাদিক রবার্ট পেইন ২৫ মার্চ রাত সর্ম্পকে লিখেছেন, “সে রাতে ৭,০০০ মানুষকে হত্যা করা হয়, গ্রেফতার করা হয় আরো ৩,০০০ লোককে। ঢাকায় এই ঘটনা ছিল কেবল শুরু। পূর্ব পাকিস্তান জুড়ে পাকিস্তানী সৈন্যরা চালিয়ে যায় হত্যাযজ্ঞ। সেইসাথে তারা জ্বালিয়ে দিতে শুরু করলো ঘর-বাড়ি, দোকান-পাট। লুট আর ধ্বংস তাদের নেশায় পরিণত হলো যেন। রাস্তায় রাস্তায় পড়ে থাকা মৃতদেহগুলো কাক-শেয়ালের খাবারে পরিণত হলো। সমস্ত বাংলাদেশ হয়ে উঠলো শকুন তাড়িত শ্মশান ভূমিতে।”
কোলকাতা থেকে ডোনাল্ড সিম্যান লন্ডনের ‘সানডে এক্সপ্রেসে’ লিখেন, ২৫ মার্চের মধ্যরাত থেকে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর হাতে ২০ থেকে ৪০ হাজার মানুষ নিহত হয়েছে। একাত্তরের ২৮ মার্চ প্রকাশিত এই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, পূর্ব পাকিস্তানের সর্বত্র এখন বিদ্রোহের আগুন জ্বলছে। স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে শেখ মুজিবের মুক্তি বাহিনীর সাথে পাকিস্তানের নিয়মিত বাঙ্গালী সৈন্য, ইষ্ট পাকিস্তান রাইফেলস ও পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা পালিয়ে গিয়ে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছে।
একই তারিখে ব্রিটিশ সাংবাদিক সিডনী এইচ সহনবার্গ ‘সানডে টাইমস’ এ ‘বিগ গানস ব্লাষ্ট আনআর্মড বেঙ্গলিজ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদনে লিখেন, পাকিস্তানী সামরিক বাহিনী গুলি ছুঁড়তে ছুঁড়তে পূর্ব পাকিস্তান দখল করে নিয়েছে। প্রদেশের ৭০ মিলিয়ন জনতার স্বায়ত্ব শাসন লাভের সংগ্রাম বন্ধ করার জন্য আর্টিলারি ও মেশিনগান নিয়ে অ¯্রবিহীন জনতার উপর হামলা শুরু করেছে। রিপোর্ট এর প্রায় শেষ অংশে বলা হয়, ট্রাকে করে সামরিক বাহিনীর পাহারায় এয়ার পোর্টের রাস্তা দিয়ে আসার সময় স্বাধীনতা সংগ্রামের কঠিন সমর্থক পথের ধারে বসবাসকারী গরিব বাঙ্গালিদের কুড়ে ঘরগুলোতে সৈন্যদের আগুন জ্বালিয়ে দিতে দেখা গেছে। একজন পাকিস্তানী সৈন্য এয়ারপোর্টে এসময় গর্ব করে বলেছেন, বহু মানুষ মারা গেছে এবং বাংলাদেশ শেষ হয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, এর আগে ৩৫ জন বিদেশী সাংবাদিককে বহিস্কার করা হয় । যার মধ্যে সিডনীও একজন।
একাত্তরের মার্চে পাইকারি এই গণহত্যার স্বীকৃতি খোদ পাকিস্তান সরকার প্রকাশিত দলিলেও রয়েছে। পূর্ব পাকিস্তানের সঙ্কট সম্পর্কে যে শ্বেতপত্র পাকিস্তানি সরকার মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে প্রকাশ করেছিল, তাতে বলা হয়: “১৯৭১ সালের পয়লা মার্চ থেকে ২৫ মার্চ রাত পর্যন্ত এক লাখেরও বেশী মানুষের জীবননাশ হয়েছিল।”
১৯৭০-এর সাধারণ নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে জয়লাভ করা সত্ত্বেও আওয়ামী লীগের কাছে পাকিস্তানী জান্তা ক্ষমতা হস্তান্তর না করার ফলে সৃষ্ট রাজনৈতিক অচলাবস্থা নিরসনের প্রক্রিয়া চলাকালে পাকিস্তানি সেনারা কুখ্যাত ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নাম দিয়ে নিরীহ বাঙালী বেসামরিক লোকজনের ওপর গণহত্যা শুরু করে। তাদের এ অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল আওয়ামী লীগসহ তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের প্রগতিশীল রাজনৈতিক নেতা-কর্মীসহ সকল সচেতন নাগরিককে নির্বিচারে হত্যা করা।
সেদিন দুপুরের পর থেকেই ঢাকাসহ সারাদেশে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছিল। সকাল থেকেই সেনা কর্মকর্তাদের তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মত। হেলিকপ্টার যোগে তারা দেশের বিভিন্ন সেনানিবাস পরিদর্শন করে বিকেলের মধ্যে ঢাকা সেনানিবাসে ফিরে আসে।
ঢাকার ইপিআর সদর দফতর পিলখানাতে অবস্থানরত ২২তম বালুচ রেজিমেন্টকে পিলখানার বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিতে দেখা যায়।
এদিন মধ্যরাতে পিলখানা, রাজারবাগ, নীলক্ষেত এলাকায় আক্রমণ করে পাকিস্তানি সেনারা। হানাদার বাহিনী ট্যাঙ্ক ও মর্টার নিয়ে নীলক্ষেতসহ বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা দখল নেয়। সেনাবাহিনীর মেশিনগানের গুলিতে, ট্যাঙ্ক-মর্টারের গোলায় ও আগুনের লেলিহান শিখায় নগরীর রাত হয়ে উঠে বিভীষিকাময়।
পাকিস্তানি হায়েনাদের কাছ থেকে রক্ষা পায়নি রোকেয়া হলের ছাত্রীরাও। ড. গোবিন্দ চন্দ্র দেব ও জ্যোতির্ময় গুহ ঠাকুরতা, অধ্যাপক সন্তোষ ভট্টাচার্য, ড. মনিরুজ্জামানসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ৯ জন শিক্ষককে নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়। ঢাবির জগন্নাথ হলে চলে নৃশংসতম হত্যার সবচেয়ে বড় ঘটনাটি। এখানে হত্যাযজ্ঞ চলে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত।
বিশিষ্ট নজরুল গবেষক ও বাংলা একাডেমীর সাবেক পরিচালক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম থাকতেন বিশ্ববিদ্যালয়ের নীলক্ষেত আবাসনের ২৪নং বাড়িতে। ওই বাড়ির নিচে দুপায়ে গুলিবিদ্ধ দুই মা তাদের শিশু সন্তানকে নিয়ে আশ্রয় নিয়েছিলেন। সিঁড়ি ভেসে যাচ্ছিল তাদের রক্তে। পাক হায়নারা ভেবেছিল অন্য কোন দল অপারেশন শেষ করে গেছে। তাই তারা ওই বাড়িতে ঢোকেনি। অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম তখন প্রাণে বেঁচে যান।
মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণ করে অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম আরো বলেন, তাদের বাড়ির নিচে আর একজন অবাঙালী অধ্যাপক থাকলেও তিনি ২৫ মার্চের আগে কাউকে না জানিয়ে বাড়ি ছেড়ে চলে যান। শুধু তাই নয়- বিশ্ববিদ্যালয় আবাসিক এলাকার সব অবাঙালী পরিবার তাই করেছিলেন। এ থেকেই ধারণা করা যায় যে, ২৫ মার্চের এই হত্যাযজ্ঞের পূর্বাবাস অবাঙালীরা জানতো।
প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান অপারেশন সার্চ লাইট পরিকল্পনা বাস্তবায়নের সকল পদক্ষেপ চূড়ান্ত করে গোপনে ঢাকা ত্যাগ করে করাচি চলে যান।
সেনা অভিযানের শুরুতেই হানাদার বাহিনী বাঙালী জাতির অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে তাঁর ধানমন্ডির বাসভবন থেকে গ্রেফতার করে। গ্রেফতারের আগে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং যে কোন মূল্যে শত্রুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহবান জানান।
বঙ্গবন্ধুর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে সকল বাঙালী পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে এবং দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র লড়াই শেষে একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর পূর্ণ বিজয় অর্জন করে। বিশ্বের মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশের।
#বঙ্গবন্ধু #আওয়ামী_লীগ #স্বাধীনতার_মাস #বাংলাদেশ
🎂শুভ জন্মদিন
বাংলার সিংহ পুরুষ
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান 🎂
আপনি জীবনে অন্যান্য সমস্ত বিলাসিতা কেড়ে নিয়েছেন
এবংআপনি যদি কাউকে হাসতে এবং হাসাতে পারেন
তবে আপনি সর্বাধিক বিশেষ উপহার দিয়েছেন ঃ
সুখ ও স্বাধীনতা।
শুভ জন্মদিন
Sharif Ahmed ।❤️
মাননীয় প্রতিমন্ত্রী গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়।
আল্লাহ রহমত আপনার উপর বর্ষিত হোক
১০ জানুয়ারির রেসকোর্স ময়দান : উচ্ছ্বাসে উল্লসি ওঠে আকুল আবেগ
১০ জানুয়ারি (১৯৭২) বিকেল ৪.২৫ মিনিটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকার মতো করে নির্মিত ১০০ ফুট দীর্ঘ মঞ্চে স্থাপিত মাইকের সামনে যখন ভাষণ দিতে ওঠেন, তখন তিনি শিশুর মতো কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন; তার দু'চোখ গড়িয়ে অশ্রু পড়ছিল বারবার।
কান্না ছিল সেদিনের একমাত্র কণ্ঠস্বর। তিনি কাঁদছিলেন। কাঁদছিল লাখো মানুষ। যুগে যুগে অনেক কেঁদেছে বাঙালি, অনেক কান্না বুকের রক্ত হয়ে ঝরেছে। কিন্তু সেদিনের প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন। সাড়ে সাত কোটি বাঙালির জন্য অসীম মমতার আবাস যে মহামানবের বুকে, তাঁকে ফিরে পাবার আনন্দে উদ্বেল বাঙালি অঝোরে কেঁদেছে ১৯৭২-এর ১০ জানুয়ারি। আর তিনি কেঁদেছিলেন তাঁর প্রিয় মাতৃভূমিতে প্রাণাধিক প্রিয় জনতার মাঝে আসতে পেরে।
এই সেই ঐতিহাসিক রমনা রেসকোর্স যেখান থেকে ৭ মার্চ (১৯৭১) বঙ্গবন্ধু মুক্তিসংগ্রাম-স্বাধীনতা সংগ্রামের ডাক দিয়েছিলেন, যে ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলার মুক্তিপাগল মানুষ স্বাধীনতা সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। আর এখানেই ১০ জানুয়ারি (১৯৭২) বঙ্গবন্ধু আবার মঞ্চে জনতার সামনে দাঁড়ালেন। ৭ মার্চ মানুষ যেমন ছুটে গিয়েছিল রেসকোর্সের দিকে, ১০ জানুয়ারিও ঢাকাবাসী রওয়ানা হয় রেসকোর্সের দিকে। ৭ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ভাষণের সময় জনগণের মধ্যে ছিল উত্তেজনা। আর ১০ জানুয়ারি সেই একই উত্তেজনা ছিল কিন্তু এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আনন্দ আর আবেগ। কারণ জাতির পিতা ফিরে এসেছেন।
১০ জানুয়ারি রেসকোর্স ময়দানে ৩৫ মিনিটব্যাপী প্রদত্ত বক্তৃতায় বাংলার প্রাণপ্রিয় নেতা শেখ মুজিবুর রহমান দৃপ্ত কণ্ঠে ঘোষণা করেন, “আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি। বাংলার একজন লোকও বেঁচে থাকতে এই স্বাধীনতা নষ্ট হতে দেবে না। বাংলাকে দাবিয়ে রাখতে পারে এমন কোন শক্তি নেই”।
নয় মাসেরও অধিক সময় পরে স্বদেশে ফিরে এসে দেশবাসীর সামনে বক্তৃতা করতে গিয়ে জনতার প্রিয় নেতার চোখে অশ্রু নেমে আসে। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি যাঁরা মুক্তিযুদ্ধে শহীদ হয়েছে, যাঁরা বর্বর বাহিনীর হাতে নিহত হয়েছে তাদের আত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করে বলেন, "আজ আমার জীবনের সাধ পূর্ণ হয়েছে। বাংলাদেশ আজ স্বাধীন। বাংলার কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র, মুক্তিযোদ্ধা ও জনতার প্রতি জানাই সালাম। তোমরা আমার সালাম নাও।
তিনি বলেন, "পশ্চিম পাকিস্তানে আমি ফাঁসিতে যাচ্ছিলাম। কিন্তু আমি জানতাম বাংলাদেশ স্বাধীন হবে।”
তিনি আরও বলেন, "বাংলার মানুষ মুক্ত হাওয়ায় বাস করবে। খেয়ে-পেয়ে সুখে থাকবে এটাই আমার সাধনা।"
কবিগুরুর সাত কোটি সন্তানেরে হে মুগ্ধ জননী, রেখেছো বাঙালি করে মানুষ করোনি...।' কবিতাংশের উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, কবিগুরুর আক্ষেপকে আমরা মোচন করেছি। তিনি বলেন, বাঙালি জাতি প্রমাণ করে দিয়েছে যে, তারা প্রাণ দিতে জানে। এমন কাজ তারা এবার করেছে যার নজির ইতিহাসে নেই।”
প্রিয় নেতা আরো বলেন, "গত সাতই মার্চ এই রেসকোর্সে বলেছিলাম দুর্গ গড়ে তোল। আজ আবার বলছি আপনারা সবাই একতা বজায় রাখুন। আমি বলেছিলাম, 'বাংলাদেশকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ।' আজ বাংলাদেশ মুক্ত ও স্বাধীন। যদি কেউ বাংলাদেশের স্বাধীনতা হরণ করতে চায় তাহলে সে স্বাধীনতা রক্ষার জন্য মুজিব সর্বপ্রথম তার প্রাণ দেবে।"
বঙ্গবন্ধু আরো ঘোষণা করেন, "বাংলাদেশ একটি আদর্শ রাষ্ট্র হবে। আর তার ভিত্তি বিশেষ কোন ধর্মীয় ভিত্তিতে হবে না। রাষ্ট্রের ভিত্তি হবে গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা।"
পাকিস্তানি বাহিনী গত দশ মাসে বাংলাদেশকে বিরান করে দিয়েছে। উল্লেখ করে শেখ মুজিব বলেন, "আমি প্রেসিডেন্ট হিসেবে নয়, নেতা হিসেবে নয়, আপনাদের ভাই হিসেবে বলছি—যদি দেশবাসী খাবার না পায়, বস্ত্র না পায়, যুবকরা চাকুরী বা কাজ না পায় তাহলে স্বাধীনতা ব্যর্থ হয়ে যাবে পূর্ণ হবে না। তোমরা, আমার ভাইয়েরা, গেরিলা হয়েছিলে দেশমাতার মুক্তির জন্য। তোমরা রক্ত দিয়েছো। তোমাদের রক্ত বৃথা যাবে না।"
বিধ্বস্ত বাংলাদেশকে পুনর্গঠনের জন্য আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেছেন, "নিজেরা সবাই রাস্তা তৈরি করতে শুরু করুন, যার যার কাজ করে যান। একজনও ঘুষ খেয়ো না। মনে রেখ আমি সহ্য করবো না।"
তিনি বলেছেন, “সকলে জেনে রাখুন বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম রাষ্ট্র এবং পাকিস্তানের স্থান চতুর্থ। ইন্দোনেশিয়া প্রথম ও ভারত তৃতীয়।"
৩০ লক্ষ শহিদ
বঙ্গবন্ধু বলেন যে, বর্বর পাক হানাদার বাহিনী অন্ততপক্ষে ৩০ লক্ষ মানুষকে হত্যা করেছে। বাংলাদেশ হানাদার বাহিনী যখন স্টিম রোলার চালিয়ে যায়, তখন তিনি পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী। ওরা তাঁকে ফাঁসি দিতে চেয়েছিল। ওদের কাছে তখন তিনি একটি প্রার্থনা করেছিলেন যে, তাঁর মৃতদেহ যেন সোনার বাংলায় পাঠানো হয়।
তিনি আরও বলেন, "আমার ফাঁসির হুকুম হয়েছিল। কবর খোঁড়া হয়েছিল। জীবন দেবার জন্য প্রস্তুত ছিলাম। বলেছিলাম আমি মানুষ, আমি বাঙালি, আমি মুসলমান। মানুষ একবার মরে, দুবার নয়। হাসতে হাসতে মরবো তবু ওদের কাছে ক্ষমা চাইবো না। মরার আগে বলে যাবো আমি বাঙালি, বাংলা আমার ভাষা, জয় বাংলা বলবো, বাংলার মাটি আমার মা। আমি মাথা নত করবো না।"
অন্য ভাষাভাষীদের নিরাপত্তার আশ্বাস
বঙ্গবন্ধু তাঁর বক্তৃতায় দেশবাসীকে বাংলাদেশে বসবাসকারী অন্য ভাষাভাষী লোকদের পূর্ণ নিরাপত্তা প্রদানের জন্য দেশবাসীকে অনু্রোধ করেন। তিনি বলেন, "বিশ্ববাসীকে আমরা দেখাতে চাই বাঙালিরা কেবল স্বাধীনতার জন্যই আত্মত্যাগ করতে পারে তাই নয়, তারা শান্তিতে বসবাস করতে পারে।”
যথাসময়ে বিচার হবে
তিনি অবশ্য উল্লেখ করেন যে, ইয়াহিয়া সরকারের সঙ্গে যারা সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করেছে সে সকল দালালদের বিরুদ্ধে যথাসময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এদের বিচার করা হবে। সে ভার সরকারের ওপর ন্যস্ত রাখতে তিনি বলেন। এছাড়া পাক হানাদার বাহিনীর গণহত্যার ব্যাপকতা নিরূপণকল্পে আন্তর্জাতিক তদন্ত সংস্থা গঠনের কথা বলেন।
গত ২৫ মার্চের কথা উল্লেখ করে বঙ্গবন্ধু জানান যে, তাকে ছেড়ে চলে আসার সময় তাজউদ্দীন, সৈয়দ নজরুল প্রমুখ নেতা কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। তিনি তাদের আদেশ করেছিলেন যে, তারা যাতে নির্দেশমতো সংগ্রাম চালিয়ে যায়। তিনি এখানেই মরবেন কিন্তু মাথা নত করবেন না। তাঁর সহকর্মীর ওয়াদা পালন করেছেন, সেজন্য তিনি তাদের ধন্যবাদ জানান।
ভুট্টোর প্রতি
বঙ্গবন্ধু বলেন, পশ্চিম পাকিস্তানের জনগণের বিরুদ্ধে তাঁর কোনো ক্ষোভ নেই। তিনি পশ্চিম পাকিস্তানি নেতাদের উদ্দেশে বলেন যে, তারা অসংখ্য বাঙালিকে হত্যা করেছে, অসংখ্য বাঙালি মা-বোনের অসম্মান করেছে, তবু তিনি চান তারা যেন ভালো থাকেন।
ভুট্টোর উদ্দেশে তিনি বলেন যে, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র এটি অতি সত্য ঘটনা। পশ্চিম পাকিস্তানও স্বাধীনতা রক্ষা করে শ্রীবৃদ্ধি করুক তিনি তাই চান। বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকলে তাদের প্রতি বাংলাদেশ একই নীতি গ্রহণ করবে। এছাড়া ভুট্টো সাহেব বঙ্গবন্ধুকে পাকিস্তানের সাথে কোনোরকম একটি যোগসূত্র রাখার যে অনুরোধ করেছিলেন সে ব্যাপারে বঙ্গবন্ধু বলেন, "আপনারা সুখে থাকুন, শান্তিতে থাকুন। আমরাও আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিয়ে শান্তিতে থাকতে বদ্ধপরিকর ... বাঁধন টুটে গেছে।”
স্বীকৃতি দানের আবেদন
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ভাষণে বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের প্রতি সাহায্যের আবেদন জানাবার সময় বলেছেন, "বিশ্বের সকল মুক্ত রাষ্ট্রকে অনুরোধ করছি বাংলাকে স্বীকৃতি দিন।” তিনি এছাড়া বাংলাদেশকে জাতিসংঘের সদস্যপদ প্রদানের আহ্বান জানিয়েছেন।
সাহায্য চাই
বঙ্গবন্ধু বলেন, “গত দশমাসে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী বাংলাকে বিরান করেছে। বাংলার লাখো মানুষের আজ খাবার নেই, অসংখ্য লোক গৃহহারা। এদের জন্য মানবতার খাতিরে আমরা সাহায্য চাই।" বিশ্বের সকল রাষ্ট্রের প্রতি তিনি সাহায্যের আবেদন জানান।
ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর সাথে নয়াদিল্লিতে তাঁর আলোচনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন যে, তারা পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন।
তিনি বলেন যে, মিসেস গান্ধীকে তিনি ঘনিষ্ঠভাবে চেনেন। তিনি পণ্ডিত নেহরুর কন্যা ও পণ্ডিত মতিলাল নেহরুর পৌত্রী। রাজনীতি তার প্রতিটি রক্তকণিকার মধ্যে নিহিত। তাঁকে তিনি শ্রদ্ধা করেন। তাঁর মুক্তির জন্য
মিসেস গান্ধী বিশ্বের সকল রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে ব্যক্তিগতভাবে চিঠি লিখেছেন। বঙ্গবন্ধু বলেন, “আমরা মিসেস গান্ধী, ভারত সরকার ও জনগণের কাছে কৃতজ্ঞ।”
তিনি আরও বলেন, বাংলার প্রায় এক কোটি মানুষ প্রাণভয়ে ভারতে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছিল। তাদের খাবার ও বাসস্থান দিয়ে সাহায্য করেছে ভারত। সেজন্যও তিনি মিসেস গান্ধী ও ভারতবাসীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
ভারতীয় সৈন্য প্রসঙ্গে
বঙ্গবন্ধু বলেন, “আমি যে মুহূর্তে বলব, তখনই সমস্ত ভারতীয় বাহিনীর লোকেরা বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যাবে। এখনই আস্তে আস্তে অনেককে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।”
এছাড়াও বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে সমর্থন ও সহযোগিতা দানের জন্য ব্রিটিশ, জার্মান, ফ্রান্স, সোভিয়েত ইউনিয়ন ও মার্কিন জনগণের প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে এক নজর দেখার জন্য এবং তাঁর কথা শোনার জন্য রমনা রেসকোর্সের মাঠ ছিল লোকে লোকারণ্য। কুয়াশা কাটতে না কাটতেই জনস্রোত বয়ে যায় রেসকোর্সের দিকে। দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ জমায়েত হয়েছিল এই প্রিয় নেতাকে দেখার জন্য। সেদিন শেখ মুজিবের জন্য বাংলার জনমানুষের হৃদয়ে কী ভীষণ পরিমাণ আবেগ- অনুভূতি ছিল তা ভাষায় প্রকাশ করা যাবে না।
১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে দেখার জন্য রমনা রেসকোর্সের মাঠে এসেছিলেন ৭০ বছর বয়স্ক এক বৃদ্ধা। নাম তার করিমননেছা। মাঠের উত্তর দিকের মেয়েদের গেট দিয়ে প্রবেশ করতে গেলে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবিকারা করিমননেছাকে প্রবেশ পথে বাধা দেন। তখন এই বৃদ্ধা নিজের কাছে সযত্নে থাকা এক টুকরো রক্তাক্ত কাপড় বের করে কান্নাভেজা অথচ দৃপ্ত কণ্ঠে বলে ওঠেন, “লৌ (রক্ত) আনছি লৌ। আর লৌ লইয়া আইছি, শেখ সাবেরে দিমু। এই দেহেন কত লৌ আনছি।" করিমননেছার দুটি সন্তান ছিল আরাফাত আলী ও কালাচান। দুই সন্তানই নারায়ণগঞ্জের আদমজী মিলে চাকরি করতেন। বৃদ্ধা জননীর এই দুই সন্তানই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে শহীদ হন। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর গুলিতে দুই পুত্রের বক্ষ বিদীর্ণ হয়ে যখন রক্তস্রোত বয়ে গেল বাংলার শ্যামল মাটির ওপর তখন বৃদ্ধা করিমননেছার মনে হয়েছিল শেখ মুজিবের ৭ মার্চের ভাষণের কথা যেখানে বলা হয়েছিল, "রক্ত যখন দিয়েছি, রক্ত আরও দেব”।
বৃদ্ধা করিমননেছা সেদিন পুত্রশোক ভুলে গিয়ে কাপড়ে তুলে নিয়েছিল তার প্রাণপ্রিয় সন্তানদের বুকের রক্ত এবং অপেক্ষা করছিল কবে শেখ মুজিব দেশে ফিরে আসবেন। অনেক অপেক্ষা করার পর বৃদ্ধা যখন জানতে পারলেন শেখ মুজিব ঢাকায় আসছেন হানাদার শত্রুদের হাত থেকে মুক্তি পেয়ে তখন তিনি বহু দূরের শিমুলপাড়া থেকে তার নাতির হাত ধরে চলে এসেছেন রেসকোর্সের ময়দানে বঙ্গবন্ধুকে এক নজর দেখার জন্য। তাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল তিনি কেন এত দূর থেকে এসেছেন? জবাবে বৃদ্ধা কান্নায় ভেঙে পড়ে জানিয়েছিলেন, "আমার ছেলে দুইডার মতন আরও কত ছেলে মইরা গেছে। কত মায়েরা বোকের ছেলেগ দিয়া আছকা বোক খালি কইরা রইছে। আমি আইছি যার লাইগা ছেলেগ পাডাইলাম যুদ্ধ করতে তারে এক নজর দেইকা যাইতে। কোন সময় আইব। তারে দেখলে আমার সব দুক শেষ অইব।” বৃদ্ধা করিমননেছা যখন একথাগুলো বলছিলেন তখন তার দুই চোখের কোণ দিয়ে পানি ঝরছিল অঝোরে। করিমননেছা দুই পুত্রের শোক ভুলে গিয়েছিলেন রমনার মাঠে জনসমুদ্রে জাতির পিতাকে এক নজর দেখতে পেয়ে।
ঐদিন বঙ্গবন্ধুর জন্য নৈবেদ্য নিয়ে এসেছিলেন অনেকে যার মধ্যে নিহিত ছিল বঙ্গবন্ধুর জন্য হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা। এমনি একজন ঐদিন রেসকোর্সের মাঠে উপস্থিত ছিলেন যার নাম হাতেম আলী। বৃদ্ধ হাতেম আলী এসেছিলেন তার ছোট বোন জয়গুনা খাতুনকে সাথে নিয়ে। তিনিও বৃদ্ধা। এরা দুজন পদ্মার নদী সিকস্তী একটি দুঃখী পরিবারের দুজন নিঃস্ব মানুষ। নদীগর্ভে সবকিছু বিলীন হবার পর হাতেম আলী এসে ঠাই নিয়েছিল দয়াগঞ্জে এবং বোন জয়গুনা খাতুন আশ্রয় নিয়েছিল ডেমরাতে। শেখ মুজিবকে দেখার আকুল আশা নিয়ে দুই ভাই-বোন এসেছিলেন রেসকোর্স ময়দানে। আর তাদের একান্ত আপনজন শেখ মুজিবকে অর্ঘ্য দিতে সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন দু’গাছি ফুলের মালা। মালা দুটি ওদের হৃদয় নিংড়ানাে অফুরান ভালোবাসার নৈবেদ্য। শুধু হাতেম আলী আর জয়গুনা খাতুনই নন ঐদিন বাংলার নয়নমণি বঙ্গন্ধুকে হৃদয় নিংড়ানো ভালোবাসা আর শ্রদ্ধা দিয়ে অভ্যর্থনা করতে এসেছিলেন লক্ষ লক্ষ হাতেম আলী আর জয়গুনা খাতুনরা। হাতেম আলী ঐদিন বলেছিলেন, "শেখ সাহেবকে আমরা ভোট দিয়েছি। ভোটের নম্বর দুটিও নিয়ে এসেছি। গত নয় মাস খান সেনাদের অত্যাচারে এখানে সেখানে ঘুরে বেড়িয়েছি। কিন্তু যেখানেই গেছি ভোটের কাগজ দুটো যত্ন করে রেখেছি। তিনি এসেছেন। দেশটাতে শান্তি হবে। আমরা সবাই শান্তিতে থাকতে পারব। ছেলেমেয়ে নিয়ে যাতে দু-মুঠো খেতে পারি এটাই আমরা চাই।”
সকাল থেকে তারা খেয়েছেন কিনা জিজ্ঞাসা করলে জয়গুনা খাতুন বলেছিলেন, “শেখ সাহেবকে দেখতে কি আর খাওয়া লাগে। তাঁর বক্তৃতা শুনলে গায়ে বল পাই। তিনি বেঁচে এসেছেন এটাই আমাদের সান্ত্বনা। তার জন্যে আমরা মানত করেছি। ভিক্ষে করে হলেও শিন্নি দেব।”
ঐদিন নারায়ণগঞ্জের ভাঙ্গা থেকে এসেছিলেন ৬৫ বছর বয়স্ক পিয়ারউদ্দিন। পিয়ারউদ্দিন অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেছিলেন, “শেখ সাহেবকে দেখতে পাব এটাই আমাদের বড় আনন্দ। কত ঘর-বাড়ি পুড়িয়ে দিয়েছে। কত লোককে তারা মেরে ফেলেছে তাতে আমাদের আফসোস নাই। শেখ সাহেব আসুক এটাই ছিল আমাদের কামনা। তিনি এসেছেন। এবার গরিবের উপকার হবে। আমরা বাড়িঘরে থেকে শান্তিতে বাস করতে পারব। গত ৯ মাস আমরা ঘর থেকে বের হতে পারিনি।” বঙ্গবন্ধুকে দেখার জন্য লৌহজং থেকে এসেছিলেন সুরেন্দ্র মালয়। পেশায় জেলে। গত এক বছর যাবৎ রােগে ভুগতে থাকলেও বঙ্গবন্ধুর আসার সংবাদ জানাতে পেরে লৌহজং থেকে অসুস্থ শরীর নিয়েই তিনি ঢাকা চলে আসেন বঙ্গবন্ধুকে দেখার জন্য। (সূত্র: দৈনিক বাংলা ও পূর্বদেশ, ১১ জানুয়ারি ১৯৭২)।
রেসকোর্স ময়দান অসংখ্য ইতিহাসের সাক্ষী। এই সেই রেসকোর্স ময়দান যেখানে ১৯৬৯ সালে শেখ মুজিবুর রহমান 'বঙ্গবন্ধু' উপাধি লাভ করেছিলেন। ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি এই রেসকোর্স ময়দান, যেখানে ভাষণ প্রদানকারী ব্যক্তিটি এখন একটি জাতি, একটি নতুন ভূখণ্ড ও একটি নতুন পতাকার জন্মদাতা।
#স্বদেশ_প্রত্যাবর্তন #বঙ্গবন্ধু
আগামীকাল ১০ জানুয়ারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কর্মসুচি-
বাস্তবতা
❤️❤️
ঢাবিতে কেক কেটে ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ৭৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী আজ। বাংলা, বাঙালির স্বাধিকার অর্জনের লক্ষ্যে জাতির...
সফল হোক
আজ ৪ জানুয়ারী,
বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সাফল্যের ৭৪ তম বর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে ময়মনসিংহ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান সফল হোক।
Click here to claim your Sponsored Listing.
Videos (show all)
Category
Telephone
Website
Address
Mymensingh
2410
Mymensingh
Mymensingh, MUKTAGACHHA
Hi, I am Naim, I have a YouTube channel, I am a blogger in my page, so all my friends support me,
Mymensigh , Dhaka
Mymensingh
Creativity is your best makeup skill, don’t be afraid to experiment.. Stay connected to youtube channel : LAMIA BINTE
Mymensingh
Mymensingh
❣-༊'ভালোবাসা༊'তাকেই༊দেও'!༊࿐'💙🌺! -༊🌻😻༊┅ღ'যার༊চারপাশে এতো༊ সুন্দর ༊মানুষ ༊থাকা সত্ত্বেও ༊তার ༊চোখ
Gafargaon
Mymensingh, 2233
This page is dedicated to all categori video.specially we make sad and amazing videos
Naha Road
Mymensingh, 2200
Best wishes for everyone. keep your environment clean.