Mofti alamin
Assalamo aley kom
মহান আল্লাহ সুবহানাহুওয়া তা'আলার দরবারে সহস্র শুকরিয়া যে মহান আল্লাহ সুবহানাতায়ালা উত্তমভাবে সালাফিয়া মাদ্রাসার সম্মেলনটি করার তৌফিক দিয়েছেন আলহামদুলিল্লাহ
একটি হাদীস ও জাহমিয়াদের সন্দেহের অপনোদনঃ
হাদীসটি হচ্ছে,
(إِذَا كَانَ أَحَدُكُمْ يُصَلِّي فَلَا يَبْصُقُ قِبَلَ وَجْهِهِ، فَإِنَّ اللَّهَ قِبَلَ وَجْهِهِ إِذَا صَلَّى) .
হাদীসটির অনুবাদঃ
“তোমাদের কেউ যখন সালাতে দাঁড়ায় তখন সে যেন তার চেহারার সামনের দিকে থুতু না পেলে। কারণ যখন সে সালাত আদায় করে তখন আল্লাহ তার চেহারার সামনে।”
হাদীসটির ব্যাখ্যাঃ
মহিমান্বিত, সর্বশক্তিমান আল্লাহ, তিনি তাঁর আরশের উপর আছেন এবং তিনি যথার্থভাবে কোনো অপব্যাখ্যা ছাড়াই সালাত আদায়কারী ব্যক্তির চেহারার দিকে মুখ করে আছেন। তবে সেটার ধরণ আমাদের জানা নেই, তাঁর মহিমার সাথে উপযোগী করে তা সাব্যস্ত করতে হবে।
শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া, (আল্লাহ তাঁর প্রতি রহম করুন) বলেছেন:
“বান্দা যখন নামাজের জন্য দাঁড়ায়, তখন সে তার রব্বের সামনে থাকে এবং তিনি তার উপরে থাকেন, তাই তারা তাকে তার ডান দিক থেকে বা তার বাম দিক থেকেও ডাকে না এবং তারা তাকে উপরের দিকে ডাকে।” নিচের দিকে নয়। "আর-রিসালাহ আল-আরশিয়াহ" (পৃ. ৩২) থেকে উদ্ধৃতি শেষ।
শাইখ ইবনে উসাইমিন (আল্লাহ তার প্রতি রহম করুন) বলেন:
নিম্নোক্ত উপায়ে আল্লাহ কর্তৃক সালাত আদায়কারীর সামনে থাকা এবং তাঁর সত্তা আরশের উপরে থাকার বিষয়ে যা প্রমাণিত হয়েছে তা একত্রিত করা সম্ভব:
প্রথম: হাদীসের ভাষাসমূহ আল্লাহর উপরে থাকা ও মুসল্লির সামনে থাকার বিষয়টি একত্রিত করেছে। আর জানা কথা যে সহীহ হাদীস কখনো অসম্ভব কিছু সরবরাহ করে না।
দ্বিতীয়: উচ্চতায় থাকা এবং চেহারার বিপরীতে থাকার মধ্যে কোনো দ্বন্দ্ব নেই। কখনো কখনো কোনো কিছু একই সাথে উচ্চতায় থাকা এবং বিপরীত থাকতে পারে, কারণ বিপরীতে থাকার জন্য সারিবদ্ধতার প্রয়োজন হয় না। আপনি কি দেখতে পাচ্ছেন না যে একজন মানুষ সূর্য উদিত হওয়ার সাথে সাথে সূর্যের দিকে তাকায় এবং বলে: এটা আমার মুখের সামনে? যদিও এটি আকাশে রয়েছে, এটি শব্দ বা অর্থের দ্বন্দ্ব হিসাবে বিবেচিত হয় না, যদি এটি একটি সৃষ্ট সত্তার ক্ষেত্রে জায়েয হয় তবে স্রষ্টার ক্ষেত্রে এটি আরও বেশি উপযুক্ত।
তৃতীয়: যদি আমরা ধরে নিই যে কোনো সৃষ্ট সত্তার ক্ষেত্রে উচ্চতা ও সামনা-সামনি গুণ দুটি বিরোধপূর্ণ, তাহলেও তা স্রষ্টার জন্য বিরোধপূর্ণ হওয়া আবশ্যক করে না। কারণ আল্লাহ তাআলা তাঁর সকল গুণের দিক দিয়েই বান্দার মতো নয়। তাই তিনি সালাত আদায়কারীর সামনে থাকা এটা দাবী করে না যে তাঁর সত্তা সে মুসল্লির সামনে থাকা কোনো স্থান বা প্রাচীরের মধ্যে থাকবেন, কারণ তাঁর জন্য সত্তাগতভাবে উপরে থাকার বিষয়টি বহু (নকলী, আকলী, ফিতরী) দলীল বাধ্যতামূলকভাবে সাব্যস্ত করে। তাছাড়া কোনো প্রাণীই তাঁকে ঘিরে নেই বা পরিবেষ্টন করে নেই, বরং তিনি সবকিছুকে (তাঁর জ্ঞান ও ক্ষমতার মাধ্যমে) পরিবেষ্টন করে আছেন।
মাজমূ' ফতোয়া এবং রাসায়েলে শাইখ আল-উসাইমীন (4/51) থেকে উদ্ধৃতি এখানে শেষ।
শাইখ Abubakar Muhammad Zakaria হাফিজাহুল্লাহ।
#বায়তুল মাকদাসের ইতিহাস (সেই ৫হাজার বছর পূর্ব থেকে বর্তমান পর্যন্ত)
#মসজিদুল আকসা মুসলমানদের তৃতীয় পবিত্র ও সম্মানিত স্থান। মুসলমানদের প্রথম কেবলা। হাজার হাজার নবী-রাসূল [আলাইহিমুস সালাম]-এর আগমনের পুণ্যভূমি। সকল মুসলিমের প্রাণের কেন্দ্রস্থল বাইতুল মাকদিস। নিম্নে সংক্ষিপ্ত ইতিহাস তুলে ধরা হলো।
#মসজিদুল আকসা অর্থ দূরবর্তী মসজিদ। আবূ যার (রাজি:) বলেন: আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! পৃথিবীতে সর্বপ্রথম কোন মসজিদ তৈরি করা হয়েছে? তিনি বললেন, মসজিদে হারাম। আমি বললাম, অতঃপর কোনটি? তিনি বললেন, মসজিদে আকসা। আমি বললাম, উভয় মসজিদের (তৈরির) মাঝে কত বছর ব্যবধান ছিল? তিনি বললেন, চল্লিশ বছর।
অধিকাংশ তাফসীরকারের মতে, আদম আলাইহিস - সালাম কাবাঘর নির্মাণের ৪০ বছর পর মসজিদুল আকসা তৈরি করেন অথবা নবী ইবরাহীম আলাইহিস- সালাম কাবাঘর পুনঃসংস্কারের ৪০ বছর পর মসজিদুল আকসা তৈরি করেন।
ইবরাহীম (আ:) থেকে বর্তমান যুগ পর্যন্ত ঐতিহাসিক ঘটনা
#ইবরাহীম (আলাইহিস -সালাম) এর পুত্র ইসহাক আলাইহিস সালাম এখানেই বসবাস করতেন। পরে ইসহাক আলাইহি সালাম-এর পুত্র ইয়াকুব (আ:) ও তাঁর ১২ পুত্র বসবাস করছেন। অতঃপর তাঁর ১২ সন্তান থেকে ১২টি গোত্রের আবির্ভাব ঘটে; এরা সকলেই বানী ইসরাঈল তথা (ইয়াকুবের) সন্তান। উল্লেখ্য, নবী ইয়াকুব আলাইহিস সালাম এর নামই হচ্ছে ইসরাঈল।
অতঃপর নবী সুলায়মান (আলাইহিস -সালাম) মসজিদুল আকসা পুনঃসংস্কার করেন ১০০৪ খ্রিস্টপূর্বে। অনেকে মনে করেন সুলায়মান (আলাইহিস -সালাম) প্রথম মসজিদুল আকসা তৈরি করেছেন, কিন্তু এটা ভুল তথ্য। কারণ ইবরাহীম (আলাইহিস -সালাম) আর সুলাইমান (আলাইহিস -সালাম)-এর মাঝে প্রায় ১০০০ বছরের পার্থক্য।
রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন: সুলায়মান ইবনু দাঊদ (আলাইহিস -সালাম) যখন বায়তুল মাকদিস নির্মাণ করলেন, তখন তিনি আল্লাহর কাছে তিনটি বস্তু চাইলেন: তিনি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করলেন এমন ফয়সালা, যা তাঁর ফয়সালার মোতাবেক হয়। তা তাকে প্রদান করা হলো। আর তিনি আল্লাহর নিকট চাইলেন এমন বিশাল রাজ্য, যার অধিকারী তার পরে আর কেউ হবে না। তাও তাকে দেওয়া হলো। আর যখন তিনি মসজিদ নির্মাণের কাজ সমাপ্ত করলেন; তখন তিনি আল্লাহর নিকট প্রার্থনা করলেন, যে-ব্যক্তি তাতে শুধু সালাতের জন্য আগমন করবে, তাকে যেন পাপ থেকে ওই দিনের মতো মুক্ত করে দেন, যে-দিন সে তার মাতৃগর্ভ থেকে ভূমিষ্ঠ হয়েছিল।
নবী সুলায়মান (আলাইহিস -সালাম)-এর মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গেই বনী ইসরাঈল তথা ইয়াহুদীদের মধ্যে বিচ্যুতি এবং তাদের হুকুমত ও রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় বিভক্তি দেখা দেয়। তা ছাড়া তারা অগণিত নাফরমানিতে লিপ্ত হয়ে পড়ে। বিশেষ করে, তাদের কাছে প্রেরিত অসংখ্য নবী-রাসূলদের তারা হত্যা করে। দাউদ (আলাইহিস -সালাম) ও সুলায়মান (আলাইহিস -সালাম) ১০১০-৯৩১ খ্রি.পূ. পর্যন্ত বায়তুল মাকদাস শাসন করেছেন।
সুলায়মান (আলাইহিস -সালাম) খ্রি.পূ. ৯৩১ সালে ইন্তেকাল করেন।
বর্তমান বিকৃত তাওরাতের রাজন্যবর্গ ও শাসকদের প্রথম পুস্তিকায় সুলায়মান (আলাইহিস -সালাম)-এর ওপর মিথ্যা অপবাদ আরোপ করা হয়েছে এভাবে যে, তিনি মহান আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগি বর্জন করে মূর্তিপূজা করতেন। নাউযুবিল্লাহ।
আর এ কারণেই ইয়াহুদীরা আল্লাহর গযবে পতিত হয় এবং বায়তুল মাকদাসের মতো পবিত্র ভূমি থেকে বিতাড়িত হয়। নিম্নে বাইতুল মাকদাস ও ইয়াহুদীদের উপর বিভিন্ন জাতির আধিপত্যের ইতিহাস সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো।
ইহূদীদের উত্থান-পতনের ইতিহাস
১. আরামীয়দের আধিপত্য: নবী সুলাইমান (আলাইহিস -সালাম) মৃত্যুর কিছুদিন পর (খ্রি.পূ. ৮৭৪- খ্রি.পূ. ৮৫৩ সালের মধ্যে) আরামীয় সেনাবাহিনী বাইতুল মুকাদ্দাসে যুদ্ধে লিপ্ত হয় এবং সেখানকার সকল ইয়াহুদী নেতাকে হত্যা করে সমস্ত ধনসম্পদ লুট করে।
২.আশুরীয়দের আধিপত্য: ৮৫৯-৮২৪ খ্রি.পূ. পর্যন্ত ইয়াহুদীদের উপর আশুরীয়দের আধিপত্যের সূত্রপাত ঘটে।
৩. বাবেলীয়দের আধিপত্য: বাদশা বাখতু নাসর, যিনি শাম ও ফিলিস্তিনকে নিজ শাসনাধীনে আনার জন্য খ্রি.পূ. ৫৯৭ সালে প্রথম বার এবং খ্রি.পূ. ৫৮৬ সালে দ্বিতীয় বার সেখানে আক্রমণ করেছিলেন। বিরাট সংখ্যক ইয়াহুদীদের হত্যা করেন এবং বন্দিদেরকে বাবিলের (ব্যাবিলনের) খাবূর নদীর কাছে নাইবূর এলাকায় নির্বাসিত করেন।
৪.ইরানীদের আধিপত্য: পারস্য-সম্রাট সাইরাস বাবেল নগরী দখল করে খ্রিস্টপূর্ব ৫৩৯ সালে, বাখতুন নাসরের বন্দিদেরকে এবং যেসব ইয়াহুদী বাবেলে বসবাস করত, তাদেরকে আল কুদসে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেন এবং তাদের উপাসনালয় সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ করার অনুমতি দেন। সেই প্রথম ইরানী, যে না কি ইয়াহুদীদের লালনপালন করেন।
৫. গ্রিকদের আধিপত্য: গ্রিকসম্রাট ইস্কান্দার আলেকজান্ডার খ্রি.পূ. ৩৩১ সালে মিশর, শাম ও ফিলিস্তিনে সামরিক অভিযান পরিচালনা করে ইরানীদের উৎখাত করেন। এতে ইয়াহুদীরাও গ্রীকদের অধীনে চলে আসে।
৬. রোমীয়দের আধিপত্যে: রোম-সম্রাট বোম্বেই খ্রি. পূ. ৬৪ সালে সিরিয়া দখল করেন। পরের বছর তিনি আল-কুদস দখল করেন। ইনজিলসমূহের বিবরণ অনুসারে রোম-সম্রাট দ্বিতীয় হেরোডিস খ্রি.পূ. ৪ সাল থেকে ৩৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত ইয়াহুদীদের শাসন করেন এবং তার যুগেই ঈসা (আলাইহিস -সালাম) জন্মগ্রহণ করেন।
৭. রোমান সম্রাট তিতুস ৭০ খ্রিস্টাব্দে আল-কুদসে আক্রমণ করে সেখানকার হাজার হাজার ইয়াহুদীকে হত্যা এবং তাদের বাড়ি-ঘর ধ্বংস করেন। ঠিক এ সময় ইয়াহুদীরা মদীনায় হিজরত করে।
৮. রোমান সম্রাট হাদরিয়ান ১৩২থেকে ১৩৫ খ্রিস্টাব্দে বাইতুল মাকদিস থেকে ইয়াহুদীদের উচ্ছেদ করেন। সবশেষে আবার রোমান সম্রাট হেরাক্লিয়াস ইয়াহুদীদেরকে শাস্তি দেন এবং আল-কুদসে যে ইয়াহুদী ছিল, তাদের সেখান থেকে বহিষ্কার করেন; আর এভাবে খ্রিস্টানদের পক্ষ থেকে এ শহর ইয়াহুদীদের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষিত হয় ।
ইয়াহুদী জাতি নিজেদের ‘আল্লাহ কর্তৃক নির্বাচিত জাতি’ হিসেবে গণ্য করে। নিজেদেরকে শ্রেষ্ঠ বলে মনে করে, অন্যান্য জাতিকে হীন এমনকী চতুষ্পদ জন্তু বলে গণ্য করে; অথচ তাদের মধ্যে জগতের সকল নিকৃষ্ট ও জঘন্য কার্যকলাপ বিদ্যমান। তারা সেই আদিকাল থেকেই পৃথিবীর বুকে নানান অশান্তি, যুদ্ধবিগ্রহ বাঁধাতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।
ইয়াহুদী এমন একটি জাতি, যাদের নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বহুসংখ্যক নবী ও রাসূল হত্যার ইতিহাস। তারা নবী ইয়াহইয়া (আলাইহিস -সালাম)-কে হত্যা করেছে, নবী যাকারিয়া (আলাইহিস -সালাম)-কে করাত দিয়ে চিরে দুই টুকরা করে ফেলেছে। ঈসা (আলাইহিস -সালাম)-কেও হত্যার দাবি করেছিল।
ইয়াহুদীরা পবিত্র ও সচ্চরিত্রা নারী মরিয়ম [আলাইহাস সালাম]-এর ওপর ব্যভিচারের জঘন্য অপবাদ আরোপ করেছিল। উল্লিখিত সংক্ষিপ্ত ইতিহাস থেকে জানা যায়–ইয়াহুদীরা আল্লাহর নানাবিধ নাফরমানি ও নবী-রাসূলদের হত্যা করার কারণে তাদের উপর লানত বর্ষিত হয়েছিল। যার কারণে তারা আর তাদের বসতবাড়ি এবং বায়তুল মাকদাস ফিরে পায়নি।
ইসলামী যুগ
শেষ নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) মদীনায় হিজরতের এক বছর পূর্বে রাতেরবেলায় মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসায় সফর করেন, যাকে ইসরা বলা হয়। অতঃপর সেখানে রাসূল (সাঃ) নবী-রাসূলদের নিয়ে ইমামতি করে সালাত আদায় করেন। সালাত শেষে ঊর্ধ্বাকাশে গমন করেন, যাকে মিরাজ বলা হয়। বাইতুল মাকদাস মুসলমানদের প্রথম কেবলা ছিল, যা হিজরতের ১৭ মাস পর কাবার দিকে কেবলা ঘুরে যায়।
খুলাফায়ে রাশেদার যুগ
দ্বিতীয় খলীফা উমার ইবনুল খাত্তাব (রাজিঃ) ৬৩৮ খ্রিস্টাব্দে অর্থাৎ হিজরী ১৮ সালে যখন আল-কুদস ও ফিলিস্তিন জয় করেন। তখন খ্রিস্টানরা খলীফার কাছে শর্তারোপ করেছিল যে, কোনো ইয়াহুদী যেন সেখানে বসবাস না করে এবং তিনিও তাদের ইচ্ছার প্রতি ইতিবাচক সাড়া দেন এবং এ বিষয়টি তাদের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তিপত্রে লিপিবদ্ধ করেন। তখন থেকে ১৩৪৩ হিজরী অর্থাৎ ১৯২৫ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত পাশ্চাত্যের হাতে তুর্কী উসমানী খিলাফতের পতন না হওয়া পর্যন্ত বাইতুল মাকদাস ইয়াহুদী মুক্ত ছিল। প্রায় ১৮০০ বছর ইয়াহুদীরা বাইতুল মাকদিসে বসবাসের সুযোগ পায়নি। উল্লেখ্য যে, উমার -এর যুগে ১৮-৪০ হিজরী পর্যন্ত মোট ২২ বছর বাইতুল মাকদাস মুসলিমদের অন্যতম প্রদেশ ছিল। আলহামদুলিল্লাহ।
উমাইয়া (৪১ হিজরী থেকে ১৩২ হিজরী) শাসনামলের ৯০ বছর: এই নব্বই বছর পুরোটাই বাইতুল মাকদাস মুসলমানদের হাতে ছিল। উমাইয়া শাসনামলে বাইতুল মাকদাসে উল্লেখযোগ্য কর্ম হলো, বর্তমান স্থাপনাটি উমাইয়া যুগেই নির্মিত। উমাইয়া খলীফা আবদুল মালিক ৬৯০ খ্রিস্টাব্দে মসজিদ পুনর্নির্মাণ ও সম্প্রসারণ করেন। সেই সঙ্গে তিনি ‘কুব্বাত আস-সাখরা’ নির্মাণ করেন।
আব্বাসীয় (১৩২-৬৫৬ হিজরী) শাসনামলের ৫২৪ বছর: আব্বাসীয় শাসনামলের ৫২৪ বছরের মধ্য ৩৬০ বছর বাইতুল মাকদাস মুসলমানদের দখলেই ছিল। অতঃপর আব্বাসীয় শাসনামলের শেষের দিকে ৪৯২ হিজরী মোতাবেক ১০৯৯ খ্রিস্টাব্দে খ্রিস্টান ক্রুসেডাররা বাইতুল মাকদাস দখল করে নেয় এবং হাজার হাজার মুসলিমদের হত্যা করে। আর এর পিছনে তৎকালীন মিথ্যা ফাতেমী দাবিদার মিশরের শীআ শাসকগোষ্ঠী ক্রুসেডারদের আহ্বান করে এবং ফিলিস্তিন দখলের আমন্ত্রণ জানায়। এর ফলে অতি সহজে খ্রিস্টান ক্রুসেডাররা বাইতুল মাকদাস দখল করে নেয়।
মুসলিম বীর গাজী সালাহউদ্দীন আইয়ুবী (রাহিঃ) ভালোভাবেই শীআদের নেফাকী আর সুন্নীদেরকে হত্যার ইতিহাস জানতেন। তাই তিনি দেখলেন বাইতুল মাকদাস উদ্ধার করতে হলে–আগে শীআদের উচ্ছেদ করতে হবে, কারণ তারাই ক্রুসেডারদের উৎসাহ প্রদান করছে। অবশেষে ৫৬৭ হিজরী মোতাবেক ১১৭১ খ্রিস্টাব্দে মিশরের মাটি থেকে শীআদের উৎখাত করেন। অতঃপর ৫৮৩ হিজরী মোতাবেক ১১৮৭ খ্রিস্টাব্দে মুসলিম বীর সিপাহসালার সুলতান সালাহউদ্দীন আইয়ুবী হিত্তিন প্রান্তরে ক্রুসেডারদের পরাজিত করে পুনরায় জেরুযালেম শহর ও বাইতুল মাকদাস মুসলমানদের অধিকারে নিয়ে আসেন। আলহামদুলিল্লাহ।
মামলুকীদের (৬৪৮ হিজরী থেকে ৯২৩ হিজরী) শাসনামলে ২৭৫ বছর: এই ২৭৫ বছর পুরোটাই বাইতুল মাকদাস–সুন্নী মামলুকী মুসলমানদের হাতেই ছিল, যদিও তারা খ্রিস্টান ক্রুসেডারদের বিরুদ্ধে জিহাদরত ছিলেন।
উসমানীয় (৯২৩ হিজরী থেকে ১৩৪৪ হিজরী) শাসনামলের ৪০০ বছর প্রায় পুরোটাই বাইতুল মাকদাস মুসলমানদের দখলে ছিল। অটোমান বা উসমানীয় শাসনের শেষদিকে ১৯১৭ খ্রিস্টাব্দে ইংরেজরা ফিলিস্তিনে অনুপ্রবেশ করে এবং ১৯২০ খ্রিস্টাব্দে পূর্ণ কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে। অল্প সময়ের মধ্যে ইয়াহুদীরা ফিলিস্তিনে স্থায়ীভাবে বসতি স্থাপন করে। ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমিতে ইয়াহুদীর সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মুসলমানদের সঙ্গে রাজনৈতিক ও ধর্মীয় দাঙ্গা নিত্যদিনের ঘটনায় পরিণত হয়। এসময় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদীরা অন্যায়ভাবে মুসলমানদের ফিলিস্তিন ভূমিকে মুসলমান ও ইয়াহুদীদের মধ্যে ভাগ করে দেয়। ফলে ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে ১৫ মে বেলফোর ঘোষণার মাধ্যমে জায়নবাদী অবৈধ ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হয়।
অবৈধভাবে গড়ে ওঠা রাষ্ট্র ইসরায়েল ১৯৬৭ খ্রিস্টাব্দে ‘মসজিদুল আকসা’ জবরদখল করে নেয় এবং জায়নবাদী ইসরায়েল একের পর এক মুসলিম–অধ্যুষিত এলাকা দখল করে ইয়াহুদী বসতি সম্প্রসারণ অব্যাহত রেখেছে এবং হত্যা-গুম চালিয়ে যাচ্ছে। হে আল্লাহ! তুমি ইয়াহুদীদের ধ্বংস করো এবং ফিলিস্তিন ও বাইতুল মাকদাস মুসলমানদের হাতে ফিরিয়ে দাও।
তথ্যঃ
১-আল-আনিসুল জালিল বি তারীখিল কুদুস, আবদুর রাহমান বিন মুহাম্মাদ মুজিরুদ্দীন: ১/২৭২-২৭৫
২- আল কামেল ফিত-তারিখ—ইবনুল আসির: ১০/৩৭, সালাহউদ্দীন আয়্যুবী ওয়া কাযাউ আলা ফাতেমিঈন—সাল্লাবী: ১৬৩-২০৩
৩-মুখতাসার ফি আখবারিল বাশার, ইমাদুদ্দীন ইসমাঈল বিন আলী: বিস্তারিত ৩য় খণ্ড।
৪-সহীহ বুখারী: ৩৩৬৬ তাফসীরে কুরতুবী: ৪/১৩৮, ফাতহুল বারী (নবীদের ঘটনা) ৬/৪০০-৪১০
৫-রাজন্যবর্গ ও শাসকদের ১ম পুস্তিকা, ইসসাহ ১১:১-২
৬-আযরার পুস্তিকা, অধ্যায় ৬:৩-৭, অধ্যায় ১:৭-১১
৭- দানিয়ালের পুস্তিকা, অধ্যায় ১১:৫
৮- মথির ইঞ্জিল পৃ. ২
আব্দুল মালেক আহমাদ মাদানী
পি এইচ ডি গবেষক কিং খালেদ এউনিভার্সিটি, ইতিহাস বিভাগ ।
সালাফিয়া ক্যাডেট মহিলা মাদ্রাসার প্রথম সাময়িক পরীক্ষার ছাত্রীদের একাংশ
স্ত্রীর সহবাস প্রসঙ্গে ধর্মীয় আদেশঃ
মেয়েদের জন্য পোস্টটি খুব প্রয়োজন•••
*** কিছু দিন পূর্বে একটি নিউজ চোখে পড়ছিলো যে, স্ত্রীর বিনা অনুমতিতে তাঁর সাথে মিলন করা স্বামীর জন্য ধর্ষণ হিসেবে ধরা হবে !!!! প্রাথমিক চিকিৎসা স্বরুপ এসব জ্ঞানপাপীদেরকে উত্তম মাধ্যম দেয়া অত্যন্ত সমীচীন ! আসুন জেনে নিই ইসলাম ধর্ম কি বলে ?
*** আজ শুধু মাত্র স্ত্রীর উপর স্বামীর অধিকার নিয়ে কিছু কথাঃ অন্যদিন স্ত্রীদের অধীকার নিয়ে কথা হবে ইনশাআল্লাহ।
*** মহানবী সা: বলেছেন “ স্বামী যখন তাঁর স্ত্রীকে দৈহিক প্রয়োজনে আহবান করবে, সে যেনো স্বামীর কাছে অত্যন্ত দ্রুত চলে আসে । এমনকি সে রান্না ঘরে রুটি পাকানোর কাজে ব্যস্ত থাকলেও ।”
সুনানে তিরমিযি ১১৬০
ছহীহুল জামে ৫৩৪
*** মহানবী সা: বলেছেন “ যে স্ত্রী স্বামীর ডাকে সাঁড়া না দেয় এবং স্বামী রাগান্বিত অবস্হায় সারারাত একাকী কাটায়, সে স্ত্রীর উপর ফিরিশ্তারা সকাল পর্যন্ত লা’নত দিতে থাকে ।”
ছহীহুল বোখারি ৫১৯৩
ছহীহ মুসলিম ১৪৩৬
সুনানে আবু দাউদ ২১৪১
নাসাঈ
*** মহানবী সা: বলেছেন “ তিন ব্যক্তির নামাজ তাঁদের মাথা অতিক্রম করেনা অর্থাৎ কবুল হয়না । তন্মধ্যে একজন হলেন অবাধ্য স্ত্রী , যে স্বামীর ডাকে সাঁড়া দেয়না এবং স্বামী রাগান্বিত অবস্হায় ঘুমায় ।”
তাবরানী ১০৮৬
সুনানে তিরমিযি ৩৬০
হাকেম
সিলসিলা ছহীহা ২৮৮
*** মহানবী সা: বলেছেন “ স্বামীর অনুমতি ব্যতিরেকে নফল রোজা রাখা যাবেনা এবং স্বামীর অপছন্দ ব্যক্তিকে ঘরে প্রবেশ করানো যাবেনা ।”
ছহীহুল বোখারি ৫১৯৫
ছহীহ মুসলিম ২৪১৭
দারেমী ১৭২০
সিলসিলা আহাদিসুস ছহীহা ৩৯৫
Click here to claim your Sponsored Listing.
Videos (show all)
Category
Telephone
Website
Address
Mymensingh
Mymensingh
Service Specialty: Fast delivery Customer support any time High-quality services Unlimited revision until you satisfy 100% satisfaction reports & screenshots
Mymensingh
As Salamu Alaikom,Welcome to our Buisness Page.InShaAllah We are Providing the Best Service Everyone.