হাফেজ মাওলানা আবুল হাসান নদভী
Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from হাফেজ মাওলানা আবুল হাসান নদভী, Public Figure, Mymensingh.
গতকাল একটা মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করছিলাম। প্রথম আযানের পর খতিব সাহেব খুতবা শুরু করলেন। কিন্তু আমি এমনই অধম যে এই বাংলা খুতবার কিছুই বুঝলাম না। উনি কোথা থেকে শুরু করলেন, কোথায় শেষ করলেন আল্লাহ ই ভালো জানেন। আমাদের দেশে কোন কোন মসজিদে মূল খুতবা আরবিতে হয়। বেশির ভাগ মসজিদে মূল খুতবা আরবিতে এবং প্রথম আযানের পর খতিবগণ বাংলায় নাতিদীর্ঘ আলোচনা করেন। আগে পরের খুতবা নিয়ে বিতর্ক না করাই ভালো। এ বিষয়ে বিতর্ক আমার উদ্দেশ্য নয়। আমার কথা হলো লক্ষ লক্ষ খতিব প্রতি জুমাবার আলোচনা করেন। তাদের অনেকেই অযথা প্যাঁচাল ছাড়া কিছুই উপহার দেননা। অথচ খতিব গণ যদি একটুখানি পড়াশোনা করে মিম্বরে পা রাখতেন, তাহলে সমাজ ও রাষ্ট্র অনেক উপকৃত হতে পারতো। বছরে ৪৮/৪৯টা আলোচনা মোটিভেশান এর হাতিয়ার হতে পারে। কোরআন হাদিস এর আলোকে নিন্মোক্ত বিষয়ে প্রতি জুমাবার সর্বোচ্চ ৩০ মিনিট আলোচনা হতে পারে।
১. সাম্প্রদায়িকতা ও ইসলাম
২. ডিভাইসের অপব্যবহার
৩. পরিবার প্রথা ও ইসলাম
৪. পিতামাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব
৫. সন্তানের প্রতি পিতামাতার দায়িত্ব
৬. তথ্য সন্ত্রাস
৭. গীবতের কুফল
৮. সমাজকল্যাণ নবীজীবনের আদর্শ
৯. দান সাদাকা
১০. প্যারেন্টিং
১১. সময় ব্যবস্থাপনা
১২. ইসলামে জ্ঞান চর্চা
১৩. শিরক বিদআত
১৪. ইসলামে কর্মসংস্থানের গুরুত্ব
১৫. রাজনৈতিক নেতাদের দায়িত্ব
১৬. এতিম/ বিধবাদের জন্য করনীয়
১৭. সমবায় সমিতি
১৮. পর্দার বিভ্রান্তি দূর করা
১৯. সালাত,সওম, হজ্জ, যাকাত,সালাম ও অন্যান্য ধর্মীয় বিষয়
২০. জান্নাত, জাহান্নাম, পরকাল
২১. পারস্পরিক সুসম্পর্ক।
এসকল বিষয় ছাড়াও জীবনঘনিষ্ঠ অনেক বিষয় উঠে আসতে পারে জুমার খুতবায়। তবে আলোচনা বেশি লম্বা না হওয়াই ভালো। রাসুল( সা.) সুন্নাত ও তাই। তিনি নামাজ লম্বা করতেন বক্তব্য খাটো করতেন।
অথচ আজকাল তার উল্টো চিত্র সমাজে বিরাজমান।
আরেকটা বিষয় অপ্রিয় হলেও সত্য যে, আমার জীবনে দান সাদাকা নিয়ে যত আলোচনা শুনেছি তার বেশিরভাগ ই মাদ্রাসা ও মসজিদ নির্মাণ বিষয়ে ওয়াজ, নসিহা। কিন্তু রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার, গৃহহীন কে গৃহনির্মাণে সহায়তা, দরিদ্র ও মেধাবীদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি, কর্মসংস্থানে সহায়তা যে বিশাল সওয়াবের কাজ খুতবায় এ বিষয়ে আলোচনা হতে পারে। সন্মানিত খতিবগন বিষয়টি ভেবে দেখতে পারেন।
বিশ্ব বরেণ্য আলেম,বর্ষীয়ান ধর্মীয় নেতা, আল জামিয়া ইসলামীয়া পটিয়া চট্টগ্রামের মহাপরিচালক, শায়খুল হাদীস, হাকিমুল ইসলাম আল্লামা আব্দুল হালিম বুখারী ইন্তেকাল করেছেন, ইন্নী লিল্লাহ...।
আল্লাহ তাকে উচ্চ মাকাম দান করুন।
#পাত্র_পাত্রী_নির্বাচনে_যা_করতে_বলেছেন_নবীজি :
বিয়ে-শাদি মানবজীবনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ। কেননা, নারী-পুরুষ সৃষ্টিগতভাবেই একে অপরের পরিপূরক। নারী ছাড়া পুরুষ এবং পুরুষ ছাড়া নারীর জীবন অসম্পূর্ণ। মানবেতিহাসে সভ্য সমাজে বিয়ে ও পরিবারের গুরুত্ব কখনো কমেনি; বরং আধুনিক সমাজে অধঃপতন থেকে বেছে থাকতে, পরিবার ব্যবস্থা টিকিয়ে রাখার জোর দাবি উঠেছে।
বস্তুত, জীবনে বিয়ে-শাদির গুরুত্ব বলার অপেক্ষা রাখে না। আল্লাহ তাআলা হজরত আদম (আ.)-কে সৃষ্টি করার পর হজরত হাওয়া (আ.)-কে তার জীবনসাথিরূপে সৃষ্টি করেন। তাদের বিয়ের মাধ্যমে ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ করে দেন। সেই ধারাবাহিকতা এখনো পৃথিবীতে চলমান।
পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘আর তাঁর (আল্লাহ) নিদর্শনাবলির মধ্যে রয়েছে যে তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের থেকেই স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি পাও। আর তিনি তোমাদের মধ্যে ভালোবাসা ও মায়া সৃষ্টি করেছেন।’ (সুরা রুম, আয়াত : ২১)
#পাত্র_নির্বাচনে_কোন_বিষয়টি_গুরুত্ব_দিতে_হবে?
প্রসঙ্গত মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে চরিত্রবান ও দ্বীনদার যুবককে অগ্রাধিকার দেয়া উচিৎ। কেননা, রাসুল (সা.) বলেন, ‘যখন তোমাদের নিকট এমন কোনো পাত্র বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসে, যার চরিত্র ও দ্বীনদারিতে তোমরা সন্তুষ্ট; তবে তোমরা তার বিয়ের ব্যবস্থা করে দাও। যদি তোমরা তা না করো, তবে তা পৃথিবীতে বিপর্যয় ডেকে আনবে এবং ব্যাপক বিশৃঙ্খলার কারণ হবে।’ (তিরমিজি, হাদিস :১০৮৪; ইবনে মাজাহ, হাদিস : ১৯৬৭)
বিশেষ করে চরিত্রবান, সভ্য-শিষ্টাচারসম্পন্ন ও সঠিক আকিদা-বিশ্বাসের কোনো যুবক পেলে তাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। কেননা, তার মধ্যেই প্রকৃত দ্বীন পাওয়া যাবে। কিন্তু যদি কোনো মেয়ের বিয়ে বিলম্ব হয়ে যাওয়ার কারণে ঈমানের কমতি ও চারিত্রিক স্খলনের আশঙ্কা করে এবং উত্তম দ্বীনদার পাত্র পাওয়া না যায়; তাহলে তুলনামূলক যাকে ভালো পাওয়া যায়, তার সঙ্গে বিয়ে দেওয়া যেতে পারে। আল্লাহ সাহায্যকারী।
#যেমন_পাত্রী_নির্বাচন_করতে_বলেছেন_নবীজি :
ধরুন, এখন আপনার বিয়ের বয়স হয়েছে। আপনি বিয়ের কথা ভাবছেন। তাহলে জেনে রাখা জরুরি যে কেমন পাত্রী নির্বাচন করা উচিত। পাত্রী নির্বাচনের ক্ষেত্রে সঠিক মানদণ্ড হলো দুইটি : সৌন্দর্য ও দ্বীনদারি। অর্থাৎ কোনো নারীকে বিয়ের আগে ধর্তব্য হলো- তার সৌন্দর্য। এরপর তার দ্বীনদারি ও ধার্মিকতা।
সুতরাং যদি কোনও পাত্রী পছন্দ হলে, শরিয়তসম্মত পন্থায় বিয়ের জন্য অগ্রসর হোন। তারপর যদি তার দ্বীনদারি ঠিক থাকে, তাহলে বিয়ে করুন। অন্যথায় বর্জন করুন। অর্থাৎ বিয়ের ক্ষেত্রে পাত্রী নির্বাচন ও প্রত্যাখ্যান হয় যেন দ্বীনদারিকে কেন্দ্র করে। ইমাম আহমদ বিন হাম্বল (রহ.) বলেছেন, ‘কোনো পুরুষ যদি কোনও নারীকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়, তাহলে সর্বপ্রথম তার সৌন্দর্য সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবে। যদি এ ব্যাপারে তার প্রশংসা করা হয়, তাহলে তার দ্বীন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবে। দ্বীনের ক্ষেত্রে যদি প্রশংসিত হয়, তাহলে বিয়ে করবে; অন্যথায় দ্বীনের কারণে প্রত্যাখ্যান করবে। কিন্তু এমনটি করা ঠিক নয় যে— প্রথমেই দ্বীন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবে, আর এ ক্ষেত্রে প্রশংসনীয় হলে সৌন্দর্য সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবে; এরপর সৌন্দর্যের ব্যাপারে প্রশংসনীয় না হলে— ফিরিয়ে দেবে। তাহলে এ প্রত্যাখ্যান হবে সৌন্দর্যের কারণে; দ্বীনের কারণে নয়।’ (শরহু মুনতাহাল ইরাদাত, লিল-ইমাম বুতি : ২/৬২১)
#সৌন্দর্যের_ক্ষেত্রে_যা_খেয়াল_রাখতে_বলেছেন_নবীজি :
জাবির ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যখন কোনো নারীকে বিয়ের প্রস্তাব দেবে, তখন সম্ভব হলে— তার এমন কিছু যেন দেখে নেয়, যা তাকে বিবাহে উৎসাহিত করে।’
বর্ণনাকারী বলেন, আমি একটি মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেবার পর তাকে দেখার আকাঙ্ক্ষা-অন্তরে গোপন রেখেছিলাম। অতঃপর আমি তার মাঝে এমন কিছু দেখি— যা আমাকে তাকে বিয়ে করতে আকৃষ্ট করল। অতঃপর আমি তাকে বিয়ে করি।’ (সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২০৮২)
আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত আছে, রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে প্রশ্ন করা হলো, হে আল্লাহর রাসুল! কোন স্ত্রী সর্বোত্তম? তিনি বলেন, ‘(স্বামী) যে স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে পুলকিত হয়, কোনো নির্দেশ দিলে আনুগত্য করে এবং সে তার নিজস্ব ব্যাপারে বা তার অর্থ-সম্পদের ব্যাপারে স্বামী যেটা অপছন্দ করে— তার বিপরীত কিছু করে না।’ (মুসনাদে আহমদ, সিলসিলাতুল আহাদিস আস-সহিহা; হাদিস : ১৮৩৮)
#সৌন্দর্যের_বিষয়টি_যে_কারণে_গুরুত্বপূর্ণ :
উল্লেখ্য যে, সৌন্দর্য বলতে কেবল বাহ্যিক রূপ-সৌন্দর্য বোঝায় না। বরং মনন ও সুকুমারবৃত্তির সৌন্দর্যও এর অন্তর্ভুক্ত। অর্থাৎ বিশেষ গুণ-বৈশিষ্ট্য, জ্ঞান, মেধা, যোগ্যতা ও বুদ্ধিমত্তা ইত্যাদিও অপরিহার্য। যদিও মানুষ কারো গুনাগুণ বিচারের আগে তার বাহ্যিক রূপ-সৌন্দর্য অবলোকন করে।
প্রসঙ্গত, বাহ্যিক সৌন্দর্যের বিষয়টি আপেক্ষিক। কারণ, সবার দৃষ্টিভঙ্গি এক নয়। একজনের কাছে কাউকে আকর্ষণীয় মনে হলেও অন্যের কাছে তা নাও হতে পারে। কারও কাছে ফর্সা ভালো লাগে, আবার কারও কাছে ভালো লাগে মৃদু শ্যামলা।
সুতরাং বিয়ের আগে এ বিবেচনা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বিয়ের অন্যতম উদ্দেশ্য হলো, মনের পরিতৃপ্তি ও প্রশান্তি অর্জন করা। চরিত্রের সুরক্ষা ও চোখ অবনমিত রাখার ক্ষেত্রে এটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং আপনি যদি এমন নারীকে বিয়ে করেন, যার দিকে তাকালে আপনার মনে আকর্ষণ সৃষ্টি হয় কিংবা ভালো লাগে, তাহলে স্বভাবতই মনে প্রশান্তি আসবে। পাশাপাশি পরনারী থেকে দৃষ্টি অবনমিত রাখতে সহায়ক হবে। (তবে এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো- তাকওয়া বা আল্লাহভীতি)। কারণ, এই সৌন্দর্য ও আকর্ষণবোধ ছাড়া দাম্পত্যজীবনে বেশি দূর যাওয়া সম্ভব নয়।
#দ্বীনদারির_ক্ষেত্র_যেমন_হওয়া_চাই :
আল্লাহর রাসুল (সা.) দ্বীনদার মেয়েকে বিয়ে করার নির্দেশ দিয়েছেন। আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে তিনি বলেন, ‘নারীদের (সাধারণত) চারটি বিষয় দেখে বিয়ে করা হয়। যথা: ক. তার ধন-সম্পদ। খ. বংশমর্যাদা। গ. রূপ-সৌন্দর্য। ঘ. দ্বীনদারি বা ধার্মিকতা। তবে তুমি দ্বীনদার (ধার্মিক) নারীকে বিয়ে করে সফল হও; অন্যথায় তুমি লাঞ্ছিত হবে।’ (বুখারি, হাদিস : ৫০৯০; মুসলিম, হাদিস : ১৪৬৬; সুনানে আবু দাউদ, হাদিস : ২০৪৭)
আর এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে, ধার্মিকতা ও নীতি- নৈতিকতা হীন নারী একজন পুরুষের জন্য এবং তার পরিবার ও ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য মারাত্মক ফিতনা, অশান্তি এবং ধ্বংসের কারণ।
।
Click here to claim your Sponsored Listing.
Category
Website
Address
2201