GOLPO PEDIA

GOLPO PEDIA

জীবন নিয়ে গল্প লেখা অনেক সহজ!
কিন্ত গল্পের মতো করে জীবন সাজানো অনেক কঠিন।

08/04/2024

R.i.p mosquito 🤣🤣

08/04/2024

🎀মরিচিকা🎀
•শেষ পর্ব•
লেখক-:-তানিশা লাবন্য
👇
আজকে ভাবলাম ছেলে মেয়েদের সাথে ঘুমাই কেমন যেন অশান্তি লাগছে। তাই যেমন ভাবা তেমন কাজ।ওদের সাথে ঘুমাতে গেলাম। ওরা দুইজন আমাকে পেয়ে কি যে খুশি। দুইজনকে দুই পাশে নিয়ে মাথায় হাত বুলাচ্ছি। তখন ছেলেকে জিজ্ঞেস করলাম আচ্ছা ধর আমি আর তোমাদের পাপা আলাদা থাকা শুরু করলাম তখন তোমাদের কেমন লাগবে!!! ছেলে উঠেই বলল কেন মা?? পাপা আলাদা থাকবে কেন?? আমার পাপাকে ছাড়া ভালো লাগেনা। মেয়েও তার ভাইয়ের সাথে তাল মিলালো। তখন আমি বললাম আচ্ছা আমাকে ছাড়া থাকতে পারবে??? তখন ওরা দুইজনই জড়িয়ে ধরে কান্না শুরু করল আর বলে না মা আমরা তুমাকে ছাড়া কিভাবে থাকব??? আমি তখন ওদের দুইজনকে থামাতে থামাতে বললাম আরে আমিত মজা করছি। আমি আমার মানিকদের রেখে কোথায় যাব??মনে মনে নিজেকে দুইটা থাপ্পড় মারতে মন চাইল। আমি কি পাগল ওদের সামনে এমন কথা বলছি ছিহ কেমন মা আমি! সন্তানদের কান্না করালাম।

সকাল সকাল উকিলের কাছে গেলাম। তালাকের নোটিশ বাতিল করার জন্য আমি পারব না আসিফকে তালাক দিতে কারন আমি যে মা আমার ভালো খারাপের চেয়ে সন্তানদের ভালো থাকা আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তবে হ্যাঁ আমি আসিফকে আর আগের মত গ্রহণ করতে পারব না তা ঠিক।ওর প্রতি ভালোবাসা কেমন যেন ফ্যাকাসে হয়ে গেছে যা হাজার চেষ্টা করলেও ঠিক করতে পারব না। আমি চাই আমার ছেলে মেয়ে সুস্থ সুন্দর পরিবেশে বড় হোক। ওদের মুখের দিকে তাকিয়ে বিষ খেতেও আমি পিছপা হব না আর এটাত সামান্য বিষয়। দুইদিন পর আসিফ বাসায় আসে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে অনেক্ষন বসে ছিল। আমি অনুভুতিহিনের মত ওর সাথে ছিলাম। আসিফ আমার আগ্রহ না দেখে বলে অনু তুমি কি আমাকে ক্ষমা করনি????আমি উত্তর দিলাম আচ্ছা আসিফ ক্ষমা করা কি এতই সহজ! তুমি ২য় বিয়ে করবে বলেছ তার মানে আমি যে তোমার জীবনে কত মূল্যহীন হয়ে পড়েছিলাম। কতটা অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়েছিলাম তুমি বুঝতে পারছো! আর আমি তা কিভাবে ভুলি আসিফ? আমার এত বছরের ভালোবাসার এই প্রতিদান দেখে আমি ওইদিনই ভিতর থেকে মরে গিয়েছিলাম। আর তুমি বলছো তোমাকে ক্ষমা করেছি কিনা। বিষয়টা ক্ষমার না আসিফ, আসল কথা আমি নির্জীব হয়ে গিয়েছি। আসিফ আর কোন কথা বলেনি সেইদিন।

এইভাবে কাটতে লাগে আমাদের দিনকাল।আসিফ তার অতিতের কাজের জন্য বারবার অনুতপ্ত হয়েছে যা আমি ওর চোখ এ স্পষ্ট দেখতাম।ওর বিভিন্ন কার্যক্রম এ আমি ওর প্রতি আবার দূর্বল হয়ে পড়লাম।আবার শুরু করলাম আমাদের ভালোবাসার দিনচলা। কিন্তু এখন নিজেকে সময় দেই নিজের দিকে খেয়াল রাখি সবার পাশাপাশি। আল্লাহর কাছে হাজার শুক্রিয়া জানাই আল্লাহ যে আমাকে সুখ দিয়েছে। এরপর কেটে গেল আরও অনেক বছর। ছেলে মেয়ে যার যার জীবন নিয়ে ব্যাস্ত। আমি আর আসিফ একলা বাড়িতে থাকি অবশ্য কাজের লোক দুইজন আছে। ছেলে মেয়েরা নিয়মিত খোজ নেয়। বুড়োবুড়ির ভালোই চলে যায় এর মাঝে আসিফ আমাকে একা করে না ফেরার দেশে চলে যায়। ওর মৃত্যুর পর আমি ছেলের সাথে থাকা শুরু করি। নাতিনের সাথে আনন্দে দিন যায় আমার আলহামদুলিল্লাহ।

এর মাঝে একদিন জমি জমার কাগজ চেক করতে গিয়ে আসিফের একটা ডায়রি পাই। বেশ পুরোনো হবে। কৌতুহল নিয়ে পড়া শুরু করলাম ডায়রির এক জায়গায় আমার হ্রদক্রিয়া বন্ধ হয়ার উপক্রম হল। ওইখানে লেখা আছে

আজকে রায়হানের (আসিফের বন্দুএবং কলিগ)সাথে বাজি ধরেছিলাম যে দুইজন দুইজনের বউকে বলবো আমরা ২য় বিয়ে করব। দেখি কে জিতে? আমরা বাজি ধরেছি বলার পর বউদের রিয়েকশন দেখব এবং ৩ মাসের কাজের কথা বলে বাহিরে যাব আর এসে দেখব বউদের কত অধঃপতন হয়েছে। কার বউ কাকে বেশি ভালোবাসে।

পরের পাতা, রায়হানের বউ নাকি অনেক কান্নাকাটি করেছে ও যেন বিয়ে না করে তবে রায়হান বলেছে সে নাকি করবেই। আর এইদিকে অনু কিছুই করেনি উল্টো আমাকে বাড়ি থেকে বের করে দিল মা সহ।আর মার উপর খুব জেদ লেগেছে সে কেন আমার অন্যায় কে সমর্থন করল??? সে কেন অনুর পক্ষ নিলনা! রায়হান এইকথা শুনে বলে অনু নাকি আমাকে ভালো বাসে না। ভালোবাসলে ঠিকই কান্না করত। কিন্তু আমি জানি আমার অনু আমাকে খুব ভালোবাসে।

পরের পাতা, অনুর কিছু ছবি আতিফা (আসিফের বোন) আজকে দিল। আমার অনুকে যা লাগছেনা। মাশাল্লাহ। অনু একদম নিজের যত্ন নেয়না। এইবার নিচ্ছে আমার খুব ভালো লাগছে মন চায় আবার বিয়ে করি বউটাকে।

পরের পাতা,আজকে অনু ছবি নিজের প্রফাইলে দিয়েছে। তখন রায়হান আমাকে বলে তোর বউ আরেকজন কে পটাতে চায় তাই এমন সুন্দর ছবি দেয়েছে দেখবি পাখি অন্য ডালে চলে গেছে বন্ধু।আমার খুব খারাপ লাগল।ঠিকি কি অনু অন্যকাউকে নিয়ে খুশি হতে চায়! না আমার অনু এমন না। তার পুরো অংগে জীবনে শুধু আমার ছাপ থাকবে আমার স্পর্শ থাকবে আর কেউর না। বাসায় যেয়ে নেই দেখাচ্ছি মজা।

পরের পাতা,আজকে রায়হানের জন্য খুব খারাপ লাগছে ওর বউকে ওর রুমে অন্য পুরুষ এর সাথে অনৈতিক কাজে নিজে নাকি হাতে না হাতে ধরেছে। পরে জানতে পারে ওই ছেলে নাকি ওর বউর এক্স ছিল। বিয়ের পরও নাকি তাদের মাঝে মেলামেশা হত। রায়হান নাকি ওর বউকে তালাক দিচ্ছে। শুনে খুব খারাপ লাগলো।

পরের পাতা,অনু আমাকে তালাক নামা দিয়ে দিয়েছে আমি মেনে নিতে পারছিনা। আমার অনু কত কষ্ট পেয়েছে আমি আজকে বুঝতে পারলাম। তাইত অনুর চোখ এ কোন পানি ছিলনা। অতি শোকে পাথর হ ম্যে গেছে আমার অনু। আমি কি করে বুঝাই তুমার আসিফ তুমারই আছে। এখন যদি বাজির কথা বলি তবুও অনু বিশ্বাস করবেনা ভাববে বানিয়ে বলছি। তাই অনুকে আমি এইসব কিছুই বলব না শুধু ওকে প্রমান করতে হবে আমি ওকে কতটা ভালোবাসি।

পরের পাতা,আমার অনু আসলেই খুব কষট পেয়েছে। তা আজকে বুঝতে পারলাম ওর কথা শুনে। ওকে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম আমায় ক্ষমা করেছে কিনা আমায় ও যা বলল তাতে বুঝলাম ও অনেক আঘাত পেয়েছে। আরে পাগলি এতদিন সংসার করেও বুঝলিনা তোর আসিফ কেমন!!? তুই আমাকে এত নিচ ভাবলি। আসলে দোষ আমারই আমিই কেন এমন করতে গেলাম।রায়হান আমাকে বলে ভাবি তোকে অনেক ভালোবাসেরে। তুই অনেক ভাগ্যবান।রায়হানকে দেখে খুব খারাপ লাগে। বেচারা খুব গর্ব করত বউ ওকে খুব ভালোবাসে কিন্তু এমন কিছু দেখে খুব খারাপ লাগে।

আমি পুরো ডায়রি পড়ে কান্নায় ভেঙে পড়লাম।আল্লাহ আমি আমার আসিফকে কেন এত ভুল বুঝলাম। ওকে এত কষ্ঠ দিলাম। ওই ঘটনার পর পুরো ১ বছরের বেশি ওকে কাছে আসতে দেইনি। দৈনিক কড়া কড়া কথা শুনিয়েছি। ও কিচ্ছুটি আমাকে বলেনি। সব চুপ করে সহ্য করেছে। আল্লাহ গো আমার মরে যেতে ইচ্ছে করছে। আমি এক অভাগি যে আমার স্বামীর মন বুঝতে পারিনি। ও আমাকে এত বিশ্বাস করত অথচ আমি কিছুই দিতে পারলাম না ওকে।

এরপর কেটে গেল কত বসন্ত। ওপারে গিয়ে ওর কাছে ক্ষমা চাওয়ার অপেক্ষায় আছি। আল্লাহ ও হয়ত আমার উপর নারাজ তাই আমাকে আসিফের কাছে যেতে দিচ্ছেনা।আজকে তালাক নামা উঠিয়ে নিয়েছিলাম বলে নয়ত কত বড় ভুল আমার দ্বারা হয়ে যেত।এই জিনিসটার জন্য মনে একটু আফসোস কম লাগে।আমি এখন শুধু আমার আসিফের কাছে যেতে চাই....
কই তুমি আসিফ? আমার আর এই দুনিয়া ভালো লাগেনা আমি তোমার কাছে যেতে চাই এত্ত এত্ত অভিমান করতে চাই কেন তুমি এমন করলে?......
আসিফ আমার নিখুঁত ভালোবাসার মানুষ.......

🔴সমাপ্ত🔴

নতুন গল্প পেতে GOLPO PEDIA এর সাথেই থাকুন

08/04/2024

G.O.A.T FOR THE REASON

05/04/2024

🎀মরিচিকা🎀
পর্ব-৩
লেখক-:-তানিশা লাবন্য
👇
হঠাৎ আসিফের ম্যাসেজ পেয়ে ভিতরটা কেমন ছলাৎ করে উঠে। আমি রিপ্লে দিলাম আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহ ভালো রেখেছে। আসিফ বলে এত্ত দিন হল আসলাম একদিন ও একটা কল ম্যাসেজ কিছু দিলানা৷ আমি কেমন আছি মরে গেছি নাকি বেচে আছি কিছুই জানার চেষ্টা করলে না অনু??? আমি রিপ্লে দিলাম আমি না নিলে খবর নেয়ার মত অনেকে আছে তোমার জীবনে। আর আমি মনে করি আমি এখনও এমন গুরুত্বপূর্ণ কেউ হতে পারিনি যে আমি খবর নিলে তুমার কিছু যায় আসবে।তখন আসিফ বলে এইভাবে বলছো কেন অনু??? তুমি আমার স্ত্রী।
আমি বললাম বাহ মনে আছে তাহলে আমিতো ভুলেই গেছিলাম। তখন আসিফ আর কোন রিপ্লে দিল না।

এইভাবে কাটতে লাগলো আমার দিন কাল। ছেলে মেয়েদের স্কুল, লেখাপড়া, বিকালে হাটতে যাওয়া। আর হলিডে তে ওদের নয়ে ঘুরতে যাই এইখানে সেইখানে। এরই মধ্যে একদিন ছেলে মেয়েদের নিয়ে পদ্ম রিসোর্ট এ গেলাম। ওইখানে ভালো ভালো ছবি তুললাম আর একটা ছবি খুব সুন্দর হয় তাই ফেসবুক এ প্রফাইলে দিলাম। সাথে সাথে প্রশংসার ফুলঝুরি পড়তে লাগে। এরই মাঝে শুনলাম আসিফ দেশে এসেছে। ননদ আমাকে কল দিয়ে বলে তার ভাই নাকি ছেলে মেয়েদের দেখতে আসবে আজ বিকালে তাই আমি ছেলে মেয়েদের খাইয়ে ওদের বলে দিলাম তুমাদের আব্বু আসবে কোন শয়তানি করবেনা কিন্তু আর তোমার আব্বুর সাথে ভালো ব্যবহার করবে। ছেলে মেয়েরা বলল ঠিক আছে। তাই আমি আমার রুমে দরজা লাগিয়ে বই পড়তে লাগলাম।কারন আসিফ আমাকে দেখতে আসবেনা আর আমিও ওর সামনে পড়তে চাইনা। কাজের খালা কে বলে দয়েছি নাস্তা পানি দেয়ার জন্য সব রেডি করে রাখা আছে।

বই পড়তে পড়তে কখন ঘুমিয়ে গেছি বলতে পারিনাই।
দরজার ঠক ঠক আওয়াজে ঘুম ভেঙে যায় আমার। ভাবলাম ছেলে মেয়েরা এসেছে হয়তবা। দরযে খুলে দেখি আসিফ দাঁড়িয়ে আছে। আমি ওকে দেখে কেমন অপ্রস্তুত হয়ে গেলাম। ও কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে ভিতরে এসে দরজা আওয়াজ করে লাগিয়ে দেয়। আমার ভিতর কেমন যেন কেপে উঠে। এসেই আমার দুইগালে এমনভাবে চাপ দিয়ে ধরে যেন দাত বের হয়ে যাবে। বিছানার উপর ফেলেই আমার উপর চড়ে বসে। তাৎক্ষনিক কর্মকানডে আমি পুরো অবাক। আমাকে বলে এই তোকে এত্ত বড় সাহস দিয়েছে কে?? ফেসবুকে তোর ছবি দেয়ার!!! নিজের সুন্দর চেহারাটা মানুষকে দেখাতে চাস????এত তোর লজ্জা লাগেনা!! এই তুই কথা বল। এই বলে জোড়ে মুখ ছেড়ে দেয়। আর আমি ছারা পেয়ে ওকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেই আমার উপর থেকে। আর পাগলের মত হাসতে থাকি ও কিছুটা অবাক হয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে হয়ত আমার হটাৎ হাসি ও নিতে পারছেনা!!
আমি হাসতে হাসতে বললাম আমি সুন্দর!? আমি যদি সুন্দর হতাম তাহলে আমার স্বামী কখন ও অন্য নারী কে বিয়ে করতে চায় নাকি!!! আচ্ছা কোন পাগলেও এইকথা বিশ্বাস করবে? বল আসিফ...

তখন আসিফ নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। তখন আমি কিছুটা রেগে গিয়ে বললাম ছবি দিয়েছি আরও দিব আমার ইচ্ছা এই তুমি কে?? আমি এখন স্বিদ্ধান্ত নিয়েছি তুমাকে তালাকনামা দিব। সই করে দিও। আসলে এই জীবনে একা থাকা খুব কঠিন। তুমিত ঠিকি আরেক মেয়েকে নিয়ে সুখে থাকবে আর আমি সন্যাসির মত একা জীবন কাটিয়ে দিব কেন?? আমারও অধিকার আছে কারও ভালোবাসা পাওয়ার। আদর সোহাগ পাওয়ার। আর যখন তখন আমার শরিলে হাত দিবেনা। লজ্জা করেনা!!! এইভাবে আমাকে ব্যাথা দিতে!!! আমি আর তোমার মুখ দেখতে চাইনা এক্ষনি চিৎকার করার আগে এইখান থেকে বের হও। এই বলে ধাক্কিয়ে ওকে ঘর থেকে বের করে দিলাম। দরজা লাগিয়ে ইচ্ছে মত কান্না করলাম। তালাক এর কথা ত বলে দিলাম সত্তি কিভাবে তালাক দিব??? আমার যে কলিজা ছিরে যাবে। তখন নিজেকে নিজে বুঝালাম কারও জীবন এ আগাছা হয়ে পড়ে থাকার চেয়ে বিদায় নেয়া খুবি ভালো। ও ওর নতুন বউ নিয়ে রং তামাশা করবে আর আমি দেখেও কিছু বলতে পারব না। ভিতর ভিতর দুঃখ পাব। এর থেকে চলে যাওয়াই ভালো হবে।

তাই পরদিন একজন উকিলের সাথে দেখা করে। আসিফের বর্তমান ঠিকানায় নোটিশ পাঠিয়ে দিয়ে দিলাম৷ এসে আবার ছেলে মেয়েদের নিয়ে ব্যাস্ত হয়ে পড়লাম।এইভাবে ১ সপ্তাহ যাওয়ার পর একদিন শ্বাশুড়ি আমার বাসায় আসে আমি উনাকে দেখে খুব অবাক হই কারন উনি এখানে আসার কথা না। এসেই আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে করতে বললেন মা রে আমার আসিফকে তুই বাচা মা। আমার ভিতর ধক করে উঠে। আসিফের আবার কি হল???আমি মাকে বসিয়ে জিজ্ঞেস করলাম মা কি হয়েছে ভালো ভাবে বলুন। আর কান্না বন্ধ করুন।তখন আমার শ্বাশুড়ি বলে ৩ দিন আগে তুমার দেয়া তালাক এর নোটিশ আমাদের বাসায় যায়। আসিফ ওইটা পাওয়ার পর থেকে খায়না ঘুমায় না। সারাদিন বিছানায় পড়ে থাকে। আজকে ত আমাকে ধরে পাগলের মত কান্না করতে করতে বলে মা অনুকে এনে দেও ওকে ছাড়া আমি কিভাবে থাকব?? তখন আমি বলি এই তুইনা ২য় বিয়ে করবি বলছিলি এখন আবার অনুকে চাস কেন??

তখন আমার ছেলে বলে যখন অনু আমার থেকে দূরে যেতে থাকল তখন আমি অনুর মর্যাদা বুঝি। ওর যত্ন ভালোবাসা সব বুঝতে পারি। আর যেই মেয়ের সাথে কথা বলতাম কয়দিন কথা বলার পরই বুঝি ও আমাকে অনুর মত কক্ষন ও ভালোবাসতে পারবেনা। তাই ওর সাথে অনেক আগেই কথা বলা ওফ করে দেই। আমি ভাবছিলাম অনুকে দেশে এসে বুঝিয়ে সব বলব কিন্তু ও আমার কোন কথা না শুনে রুম থেকে বের করে দিছে। ও যে সত্যি তালাক নামা দিবে তা কখনও আমি ভাবতে পারিনি কারন আমার বিশ্বাস ছিল ও কখনও এমন করতে পারেনা।তুমি যদি ওকে না এনে দাও তাহলে আমি বিষ খাব তবুও তালাক দিব না। মা প্লিজ আমাকে অনু এনে দাও। এই বলে আমার শ্বাশুড়ি কাদতে লাগলেন।

আমি সব শুনে সান্ত হয়ে বসে আছি। আমার শ্বাশুড়ি আমার উত্তর এর আশায় মুখের দিকে তাকিয়ে আছে। আমি কিছুক্ষন সময় নিয়ে তাকে বললাম দেখুন মা আপনি মুরুব্বি মানুষ আমি আপনাকে অসন্মান করতে চাইনা। তবুও একটা কথা বলতে হয় আপনাদের মা ছেলে দুইজন এর রুপ দেখা হয়ে গেছে। আপনারা গিরগিটির মত রং পরিবর্তন করেন। আর আপনাদের কথায় ত সব হবেনা। আমার ও নিজের কিছু স্বিদ্ধান্ত আছে। আমাকে সময় দিন আমি ভেবে আপনাকে জানাবো।আমার শ্বাশুড়ি আমার এমন উত্তর কখন্ব আশা করেনি হয়ত। কারন ১০ বছর তাদের হ্যাঁ তে হ্যাঁ আর না তে না বলেছি তাই হয়ত ভাবছে এখনও তাই করব। কিন্তু এই এক ধাক্কায় আল্লাহ আমাকে সব শিখিয়েছে।

আমি কখনও ভুলব না আমার স্বামীর পরকিয়ার কথা, আমার শ্বাশুড়ির ওই অন্যায় উপদেশ। কিছুই ভুলিনি। কিছুইনা....
আমার শ্বাশুড়ি শেষ বারের মত আমার হাত ধরে বললেন মা ভুলত মানুষই করে আমি তুমার সাথে অন্যায় করেছি তা কখনও অস্বিকার করবনা। আমার ছেলেও করেছে কিন্তু এই অভাগি পাপি মায়ের কথা চিন্তা করে দেখ। আমার ছেলে তার সাজা পেয়েছে দৈনিক মানসিক অশান্তি ওকে ঘুমাতে দেয়না। ও কান্না করে।এই বলে আমার শ্বাশুড়ি চলে গেল।

আমি কি করব কিছুই বুঝ মতে পারছিনা। ছেলে মেয়েদের দিকে তাকালে কিছুই ভালো লাগেনা। আমি চাইনা ওরা একটা অসুস্থ পরিবেশে মানুষ হোক। ভালো থাকুক....। দুইদিন ভাবার পর ঠিক করলাম আমাদের কি করা উচিত!!!

চলবে...

নতুন গল্প পেতে GOLPO PEDIA এর সাথেই থাকুন

01/04/2024

🎀মরীচিকা🎀
পর্ব-২
লেখক-:-তানিশা লাবন্য
👇
আজকে অনেকদিন পর আয়নায় নিজেকে ভালো করে দেখলাম। চোখের নিচে গাঢ় করে ডার্ক সার্কেল পড়ে গেছে। তলপেট টা থল থলে কিছুটা ঝুলে গেছে। মুখের আনাচে কানাচে অসংথ্য দাগ। মুটিয়ে শরিলটা কেমন যেন বালিশের মত এবড়োথেবড়ো হয়ে গেছে। চুলের কি ছিরি। এতদিন সংসার এর দিকে খাটতে খাটতে নিজের দিকে তাকানোর সুযোগ পাইনি। দুধে আলতা রং কেমন যেন ফেকাশে হয়ে গেছে। যেই রুপে পাগল হয়ে আমাকে বিয়ে করেছিল সেটা এখন নেই।বিয়ের পর ভালো একটা ক্রিম কিনতে কিপটেমি করতাম। ভাবতাম শুধু শুধু অপচয় এই টাকাটা ফিউচারে কাজে দিবে।এইবলে টাকা সেভ করতাম। নিজের জন্য ভালো একটা থ্রিপিস পর্যন্ত কিনিনি। বাসার সবাই দামি জামা কাপড় পরলেও আমি কম দামি গজ কাপড়ের থ্রিপিস দিয়ে চালিয়ে দিতাম।ভাবতাম সারাদিন বাসায় থাকি এত ভালো জামা কাপড় দিয়ে হবে কি??? বুয়া রাখার সামর্থ্য থাকার পরেও নিজেই দিন থেকে রাত সব কাজ করতাম। ভাবতাম নিজেই করি বুয়াকে টাকা দিব কেন??

এখন দেখি যেই কাজটা ফিউচারের কথা চিন্তা করে করেছিলাম আজ সব পানিতে গেল। এখন স্বামী তার ফিউচার অন্য কাউকে নিয়ে সাজাতে চায়। তাই এখন একটু নিজেকে নিয়ে ভাবার সময়। এতদিন সব শখ আল্লাদ বিসর্জন দিয়েছি কিন্তু আর না। কার জন্য ভাববো??? বিয়ের সময় আমার বয়স ছিল ১৮ এখন ২৮। আমার সাথের অনেক মেয়েদের এখনও বিয়েই হয়নি। আর আমি দুই বাচ্চার মা যাইহোক আজকে থেকে নিজের আর বাচ্চাদের খেয়াল রাখব শুধু। কোন বেইমানের না। তাই ঠিক করলাম আজকে একটা ডায়েটিশিয়ান এর কাছে যাব। শরিলের বাড়তি ওজন কমানো খুব প্র‍য়োজন। সাথে নিজের জন্য কিছু কেনাকাটা করার প্রয়োজন। বয়সের তুলনায় বেশি দেখচ্ছে। আর অন্যদিকে আসিফ ফিট। দেখলে মনে হয় এখনও সেই ছাব্বিশ বছরের তাগড়া যুবক অথচ বয়স ৩৭ চলে। নামি দামি ব্র‍্যানড এর কাপড় আর জুতা ছাড়া কিছু পরেনা। প্রত্যেক উইকে নিজের জন্য একটা দিন বরাদ্দ রাখে সেইদিন পুরুষ পার্লারে যেয়ে বিভিন্ন সার্ভিস নিয়ে আসে। কখনও বাধা দেইনি আরও খুশি হতাম যে আমার স্বামী মাশাল্লাহ। কিন্তু এখন দেখছি সেই রুপ দেখিয়ে অবিবাহিত মেয়েকে বিয়ে করতে চাচ্ছে।

যাইহোক আজকে সকাল আসিফ আর ওর মা বাসা থেকে চলে গেছে। আর এই একতালার বাড়িটা আগে থেকেই আমার নাম এ ছিল। বছর খানেক আগে করেছে। দুইটা ফ্ল্যাট ভাড়া দেওয়া। যাওয়ার সময় ৫০ হাজার টাকা আমাকে দিয়ে গেছে। আর বলে গেছে মাসে একবার এসে টাকা দিয়ে যাবে আর ছেলে মেয়েদের দেখে যাবে। বিয়ের তারিখ এখনও ফাইনাল হয়নি হলে নাকি জানাবে। আমি যাওয়ার সময় শুধু একটা হাসি দিয়ে বললাম দোয়া করি তোমার দাম্পত্য জীবন সুখের হোক। আসিফ অবাক হয়ে আমার দিকে কেমন করে তাকিয়ে ছিল। আমাকে ভাংতে না দেখে হয়ত বারবার অবাক হচ্ছে। আসলে ও শান্তি পাচ্ছিল না কেন আমি এত স্বাভাবিক ভাবে নিচ্ছি তাই হয়ত তাকে ভাবাচ্ছে। ও চাচ্ছিল আমি কাদি ওর কাছে ভিক্ষা চাই ভালোবাসা হয়ত তখন ও সুখ পেত।যারা আমাদের দুঃখ দেয় তারা চায় আমরা আসলেই দুঃখ পাই। যখন দেখে তা বিপরিত তখন তারা উন্মাদ হয়ে যায়। কিন্তু আমি সেই পৈশাচিক শান্তি কখন ও আসিফকে দিবনা। ওকে বুঝাতে চাই তোমায় ছাড়া আমার দিব্যি চলে যাবে৷ তুমি থাকা না থাকার ধার ধারিনা।

আসিফ শেষে একটা কথা বলেছিল। অনু আমার কেন যেন মনে হচ্ছে তুমি আমাকে কখনও ভালোবাসনি। তুমি কি সত্যিই কখনও আমাকে ভালোবাসনি??? আমি শুধু হেসে উত্তর দিলাম তুমি যা মনে কর। অনেকেই ভাববে হয়ত আমি তালাক দিচ্ছিনা কেন?? একটুও আত্ম অহামিকা নেই আমার??? আসলে সবই আছে কিন্তু এত বছরের তিল তিলে গড়ে তুলা সংসার ছেড়ে চলে যাব কেন আমি??? আমার ছেলে মেয়েরা কেন এতিমের মত বড় হবে! এই সংসার আমার। আসিফকে আমি চাইনা তবে আমি নিজের অধিকার ছেড়ে দিবনা। আমি চলেগেলে ও দিব্যি অন্য মেয়েকে বিয়ে করে আনন্দে থাকবে আর ওই মেয়েও সাজানো সংসার পাবে। তা আমি কখনও হতে দিবনা।

বিকালে একজন স্বাস্থ্যবিদের সাথে দেখা করতে যাবো। বাসায় একজন কাজের খালা রেখেছি। আর দেশ থেকে আমার খালাত বোনকে এনেছি। বাচ্চাদের দেখে রাখার জন্য। আর একা একটা বাড়িতে খুব খারাপ লাগবে। এতদিন আসিফ ছিল মা ছিল এখনত তারা নেই তাই ওকে আনা। আমার পরিবারের কেউ জানেনা আসিফের ২য় বিয়ের কথাটা। আর জানানোর প্রয়োজন বোধ করিনি। আমি চাইনা আমার জিনিস নিয়ে মানুষ সমালোচনা করুক। মা এই জিনিস টা নিতে পারবেনা এই বয়সে। আর যেই জিনিস আমিই ধারধারিনা সেটা অন্যকে কেন জানানো???

স্বাস্থ্যবিদের কথামত চলা শুরু করলাম। খাওয়া দাওয়া ঘুম আর ব্যায়ামের একটা তালিকা বানিয়ে দিয়েছে৷ ১০ কেজি কমাতে হবে ২ মাসে। নিজের জন্য কিছু কেনাকাটা করলাম। কিছু ভালো স্কিন কেয়ারের প্রডাকট কিনলাম। আজকে অনেকদিন পরে পার্লারে গেলাম চুলটা একটা কাট দিলাম ভালোই লাগছে। এর মাঝে শুনতে পেলাম আসিফ অফিসের কাজের জন্য ৩ মাসের জন্য হংকং যাচ্ছে তাই এসে বিয়ে করবে। টাকা নাকি আমার একাউন্টে সময়মত দিয়ে দিবে মাসে মাসে। এই খবর আসিফ আমার মোবাইলে ম্যাসেজ করে দিয়েছে। আমি শুধু হুম লিখেছি।

অন্য সময় আসিফ দেশের বাহিরে গেলে আমি ওর ব্যাগ প্যাক। অন্যান্য সব কাজ করে দিতাম আর যাওয়ার সময় ওকে অনেক্ষন জড়িয়ে ধরে বসে থাকতাম।এইবার কেমন যেন কোন অনুভুতিই হল না। যাক ওকে নিয়ে আর ভাবতে চাইনা। ছেলে মেয়েদের নিয়ে ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ।

বিকেলে নিয়ম করে হাটতে যাই। আর সাথে ঘুমও হচ্ছে ভালো। তাই মুখে অনেকটা লাবন্য ফিরে আসছে। আসলে হেলদিভাবে চলাফেরা করলে সব ঠিক থাকে।
এখন সব কিছু নিয়ম মতাবেক করার চেষ্টা করছি। ছেলে মেয়েরা অনেক সময় বলে আম্মু তুমাকে সুন্দর লাগছে। আমি হাসি। মেয়েটা বড় পাজি হয়েছে শুধু বলে আম্মু তুমি অনেক সুন্দর। আমি তখন বলি তুমি আমার থেকেও সুন্দর।

এইভাবি কিভাবে কিভাবে ২ মাস চলে গেল বুঝতেই পারলাম না আগে থেকে অনেক শুকিয়েছি। স্কিনটা খুব ভালো হয়েছে এখন আলহামদুলিল্লাহ। কেমন যেন নিজেকে খুব ভালো লাগে। কিছু সুন্দর সুন্দর শাড়ি আর থ্রিপিস কিনেছি। ওইগুলো পড়ে মাঝে মাঝে বের হই।তখন পাশের বাসার আয়শা ভাবি একদিন জিজ্ঞেস করে।ভাবি কিভাবে এত্ত পরিবর্তন??? আপনাকে এখন চিনাই যায়না। এত্ত স্লিম আর এত্ত সুন্দর লাগছে!!! কি কি করলেন?? তখন আমি উত্তর দিলাম বেশি কিছুনা নিজেকে ভালোবাসতে শিখলাম এতটুকুই। নিজেকে ভালোবাসুন দেখবেন আপনিও সুন্দর আর সুখি হবেন।তখন ভাবি বলে কিযে বলেন ভাবি কিছুই বুঝলাম না। আমি বললাম হাহা না বুঝলে কি আর করার এই বলে চলে আসি।

মাঝে মাঝে ছেলে মেয়েদের সাথে ছবি আমার ননদকে দিতাম। সে সব ছবি তার ভাই মানে আসিফকে পাঠাত। আমি চাইতাম আসিফ দেখুক আমি সুখে আছি তাই ইচ্ছা করেই দিতাম যেন আসিফের কাছে ছছবিগুলো যায়। ২.৫ মাসের মাথায় আসিফ একদিন ম্যাসেজ দিল
কেমন আছো অনু???

চলবে...

নতুন গল্প পেতে GOLPO PEDIA এর সাথেই থাকুন

31/03/2024

🎀মরীচিকা🎀
পর্ব-১
লেখক-:-তানিশা লাবন্য
👇
বিয়ের ১০ বছর পর আমার স্বামীর মনে হল তার ২য় বিয়ে করা উচিত।ভিষন অবাক হলাম তখন যখন দেখলাম আমার শ্বাশুড়ির পূর্ন সমর্থন আছে। ভাবছেন আমাদের সন্তান নেই তাই স্বামী বিয়ে করতে চাইছে?? উহু তেমন কিছুনা আমাদের মাশাল্লাহ ২ টা ছেলে (৭) আর মেয়ে (৫) আছে। তাকে আমি বিয়ের কারন জিজ্ঞেস করলাম তখন সে উত্তর দিল আমি বেশি টাকা কামাই করি আমার বউ পালার মুরোদ আছে আমি আরেকটা করলে সমস্যা কি!!!! আর ইসলামে নিয়ম আছে।

আমি বললাম বাহ ভালোই ইসলাম মান তাহলে তো ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড় তো??তখন আমার স্বামী রাগ দেখিয়ে বলল বেশি কথা বল তুমি। আমার ইচ্ছা আমার এক মেয়েকে খুব মনে ধরেছে আমার অফিসের আর আমি তাকেই বিয়ে করছি। এই বলে সে ঘর থেকে চলে গেল।আমি অনুভুতিহীন এর মত তার যাওয়ার দিকে তাকিয়ে রইলাম আমি আসলে কি করব বুঝতে পারছিনা। আসলে খুব টাকা হয়েছে তার আমার বিয়ের সময় তার বেতন ছিল ২৩ হাজার। আর এখন পদন্নতি হতে হতে ২ লাখ ছাড়িয়েছে। এখনও মনে পড়ে সেই দিনগুলো যখন তার উন্নতির জন্য নামাজ পড়ে কান্না করতাম।যেই সংসার এর জন্য দুধে আলতা রং তামাটে করলাম!!! যেই অসুস্থ শ্বাশুড়ির সেবা করলাম এতদিন!! আজকে সেই আমাকে উত্তর দিল আমার ছেলে যদি পালতে পারে তাহলে তুমি এত কথা বল কেন???

তখন আমি আমার শ্বাশুড়িকে বললাম মেনে নেওয়া কি এতই সহজ মা?? আমার শ্বশুর এমন চাইলে আপনিও কি মেনে নিতেন??? তখন আমার শ্বাশুড়ি আমাকে বেয়াদব বললেন। হাহা উচিত কতা কেউরই ভালো লাগেনা।যাইহোক ১০ বছর সংসার করা স্বামীই আমার মুল্য দেয়নি আর সেত পরের মা। যাকে আমি আপন ভেবে ভুল করেছিলাম। কেমন যানি কান্না আসছেনা। নিজের ভাগ্যের উপর হাসি পাচ্ছে। বেইমান গুলোর জন্য এতদিন করেছি ভেবেই হাসি পাচ্ছে। আমি আসিফ ঘরে আসার অপেক্ষা করতে লাগলাম। আজকে বোঝাপরা করে সব হিসেব চুকিয়ে নিতে হবে। অন্য মেয়েদের মত কেদেকেটে বালিশ ভিজানো চলবেনা। যেই মানুষ এতদিন সংসার করার পর অন্যজনকে আপন করার কথা ভাবতে পারে তার জন্য কেন কান্না করব। নিজের মনকে অনেক বুঝিয়ে শক্ত করলাম।

রাত প্রায় ১১ টায় আসিফ বাসায় আসল। অন্যদিন খাবার নিয়ে অপেক্ষা করতাম তবে আজকে তা আর করলাম না। ছেলে মেয়েদের খাইয়ে ঘুম পারিয়ে আমি নামাজের পাটিতে নফল ইবাদতে বসে আছি। আল্লাহ ছাড়া এই মুহুর্তে কেউ আমার আপন নয়। তাই তাকেই মনের সব কথা বললাম অনেক্ষন। কেমন যেন খুব হালকা লাগছে। আসিফ আসার সময় মোবাইলে কথা বলছে শুনলাম এসেই অফিসের ব্যাগ ছোফায় রেখে ওইখানেই বসে হেসে হেসে কার সাথে যেন কথা বলছে। মাঝে মাঝে গান গাচ্ছে আবার হাসছে। বুঝলাম যাকে পছন্দ করত সেই মেয়ের সাথে কথা বলছে। এর মাঝে আমার শ্বাশুড়ি ডাইনিং এ আসিফ কে বলছে কিরে বাবা অফিসের জামা না ছেড়েই কার সাথে কথা বলছিস?? আসিফ উত্তর দিল তোমার নতুন বউ এইটা শুনে আমার কলিজাটা কেমন মোচড় দিল। ততক্ষনে আমি নামাজ শেষ করে ডাইনিং এ চলে আসছিলাম। আমার শ্বাশুড়ি বলে দে দেআমকে দে একটু কথা বলি।আসিফ মাকে দিল আর মা কথা বলতে শুরু করে। কিযে আদুরে ডাক নতুন হবু বউকে আমিত খুব অবাক এই কয় বছরে আমাকে ত এইভবে কখন ও ডাকেনি।

তখনই আসিফ আমাকে দেখে বলে অনু ভাত দেও। আমি মনে মনে বললাম বাহ পুরুষ এখন দুই টাকা বেশি কামাই করছে বলে স্ত্রী কে আর মানুষ মনে হয় না। এমন এক ভাব করছে ২য় বিয়ে করা কোন ব্যাপারই না। হায়রে বেইমান, বলেনা কম পানির মাছ বেশি পানিতে পড়লে যা হয় আরকি। তবে মুখে কিছুই বললাম না। আসিফকে বললাম তোমার চাকর না আমি খাইতে মন চাইলে তোমার মাকে বল ভাত দিবে। আর খাওয়া শেষ হলে রুমে এস কথা আছে। এই বলে চলে আসি।ওইদিকে ও অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে কি বললাম কারন ১০ বছরে এই প্রথম এইভাবে কথা বললাম। এতদিন নরম হয়েছিলাম এখন একটু গরম হয়ে দেখি।

খাওয়া শেষ করে আসিফ রুমে আসে আমি বলি শুন বেশি কথা বলতে পারব না।ছেলে মেয়ের দিকে তাকিয়ে তোমাকে তালাক দিতে পারছিনা। তবে তোমার সাথে থাকার ইচ্ছাও মরে গেছে।তুমি আরেকটা বিয়ে কর কিংবা ১০ টা কর তাতে আমার কিচ্ছু যায় আসেনা। মাস শেষে ৫০ হাজার টাকা আমাকে দিবে সন্তানদের পড়ালেখা খরচ বাবদ আর এই বাড়ি ছেড়ে তুমি তুমার মা কালকে যাবে এইখানে শুধু আমি আর আমার সন্তান রা থাকব। বেশি বাড়াবাড়ি করলে পুলিশের কেস খাবে। আমি মামলা করতে পিছপা হবনা। আর তুমার এখানে আসার দরকার নাই নিয়মিত। ছেলে মেয়েদের দেখতে মন চাইলে মাঝে মাঝে এসো। এখন যাও অন্য রুমে শোও গিয়ে।আসিফের মুখে কথা ছিলনা হয়ত কথা খুহে পাচ্ছেনা কি বলবে?? সহজ সরল সংসারি মেয়েটা কখন যে এমন চালাক আর কঠোর হল তাই হয়ত ভাবছে।আমাকে আসিফ বলল মানুষের স্বামীরা অন্য মেয়ের দিকে তাকালে স্ত্রী রা কান্না করে সমুদ্র বানায় আর তুমার বর বিয়ে করছে জেনেও চোখ এ এক ফোটা পানি দেখলাম না। আমি তখন হাসতে হাসতে উত্তর দিলাম পাগল নাকি আমি বেইমানের জন্য কান্না করব নাকি!!! তুমি যদি এত বছর সংসার করে খুশিতে খুশিতে বিয়ে করতে পার তাহলে আমি কেন কান্না করব??? এইসব মানুষের জন্য আমার কান্না আসেনা দয়া আসে। তখন আমার স্বামী কিছু না বলে চলে গেল।

চলবে...

নতুন গল্প পেতে GOLPO PEDIA এর সাথেই থাকুন

24/01/2024

👻মায়াবী বধূ👻
পর্ব-৩
লেখক-:-আরিফ
👇
আমার আসল পরিচয় জানার আগে নিজের মায়ের কথা ভাবুন। কারন তার দম প্রায় বন্ধ হয়ে আসছে।

পুনরায় অট্রো হাসিতে মেতে উঠেছে মাইশা। অন্ধকার বাড়িটা দ্বী গুন ভয়ংকর হয়ে উঠেছে। নিরব শেখ বুঝতে পারলেন তাঁর মায়ের বিপদ রয়েছে। গাল বেয়ে টপ টপ করে ঘাম ঝরছে। তাঁর ভিতরে প্রচন্ড উত্তেজনা কাজ করছে ‌।
"_তুমি আমার মায়ের সাথে কী করেছো ? দোহায় তোমার, আমার মায়ের কোনো ক্ষতি করো না।
আর্তকন্ঠে একই কথা বলে যাচ্ছেন বার বার। কিন্তু এতেও মাইশার মনে কোনো মায়া হলো না। তার অট্রো হাসি না থামিয়ে আরো দ্বী গুন বাড়িয়ে দিলো।
নিরব শেখ হাত জোর করে বসে পড়েন মাইশার সামনে। নিরবের কান্ড দেখে মাইশা আরো বেশি খুশি হয়েছে ।
হঠাৎ পাশের রুম থেকে আর্তচিৎকারের আওয়াজ নিরব শেখের কানে পৌঁছায় । এটা তাঁর মা জুলেখা বেগমের চিৎকার । নিরব কোনো দিকে ভ্রুক্ষেপ না করে সোজা আওয়াজের উৎস খুঁজতে থাকে। আওয়াজ টা পাশের একটা ছোট রুম থেকে আসছে। রুমটা বেশ পুরনো। কয়েক যুগ আগে থেকেই এই ঘরে কেউ আসে না। চলিত আছে এই ঘরে নাকি নিরবের দাদু ছবি আঁকতেন। তাই দাদুর মৃত্যুর পর বন্ধ পরে আছে ঘরটা। নিরব দ্রুত গতিতে ঘরের দরজা ঠেলে ভিতরে প্রবেশ করেন । চারিদিকে কেমন বিদঘুটে গন্ধ। এই গন্ধ আগেও কোথায় পেয়েছিলেন তিনি। হঠাৎ মনে পরে গতরাতের কথা। হুম গত রাতে রোহানের ঘরের আশে পাশে তিনি এমন বিদঘুটে গন্ধ আবিষ্কার করেছিলেন।
চারিদিকে চাক্ষুষ করছিলেন নিরব শেখ। না ঘরের মধ্যে কাউকে দেখা যাচ্ছে না। তবে সেই আর্তচিৎকার কোথা থেকে এলো।
শরীরের প্রতিটি শিরা-উপশিরার র'ক্ত টগবগ করছে নিরব শেখের। যে করেই হোক মায়ের কোনো ক্ষতি হতে দিবেন না তিনি। কিন্তু তাঁর আগে মায়ের খোঁজ তো মিলতে হবে।
হঠাৎ নিঃশ্বাস ফেলার শব্দে নিরব শেখ ভয়ে ঠান্ডা হয়ে যান। হয়তো কেউ আছে এই ঘরটাতেই‌ ।
"_মা , ও মা , আমি নিরব! তুমি এখানে আছো কী?
অশ্রু সিক্ত নয়নে আর্তকান্না ভরা কন্ঠে বার বার একই শব্দ উচ্চারণ করছিলেন নিরব শেখ।
"_নিরব!!
রোগাক্রান্ত কন্ঠে ফিসফিসিয়ে জুলেখা বেগমের ডাক। নিরব মূহুর্তে ঘুরে দাঁড়ায় । জানালার পাশে সিলিং এ ঝুলছে মায়ের অর্ধ মরা দেহ। নিরব বিকট চিৎকারে ভেঙ্গে পড়েন । দৌড়িয়ে মায়ের কাছে চলে আসেন ।
"_মা ভয় পেয়েও না , তোমার কিছু হবে না। আমি চলে এসেছি তো।
কান্না জড়িত কন্ঠে নিরব শেখ জুলেখা বেগমকে সাহস দিতে লাগলেন। পরমূহর্তে নিরব শেখ খেয়াল করেন মায়ের দেহ ঠান্ডা হয়ে গেছে। শ্বাস বন্ধ হয়ে গেছে। হাত পা ছেড়ে দিয়েছেন জুলেখা বেগম ।
আঁকাশ ফুরানো চিৎকারে ফেটে পড়েন নিরব শেখ। চোঁখের সামনে মায়ের মৃত্যু যেনো তাঁর মৃত্যুর স্বাদ।
"_আপন জন হারালে কেমন লাগে এবার বুঝতে পারছেন তো মিঃ আরিফ। হুম আমি আপনাকে আর নিরব বলবো না। কারন সত্যি লুকানোর মানুষ যে আর বেঁচে নেই আপনার।
মাইশার এমন কথায় ঘুরে তাকান নিরব শেখ। তিনি বুঝতে পেরেছেন এতক্ষণে, এটা মাইশা নয়।
"_মিতু !
ভ্রু কুঁচকে অবাক সূচক প্রশ্ন ছুঁড়লেন তিনি।

"_বাহ্ নামটা দেখছি ভালোই মনে আছে আপনার।
ঠোঁটের কোণে বিরক্তিকর হাসি নিয়ে তাকিয়ে আছে মাইশা রূপী মিতু। নিরব শেখের মনে পড়ে আজ থেকে কয়েক বছর আগের কথা।

সময়টা ২০১৬ সাল ।
বাসর ঘরে বধু সেজে গুটিসুটি মেরে বসে আছে মিতু। সৎ মায়ের জোরাজুরিতে এক ভিন দেশী লোকের সাথে বিয়ে হয়েছে তার। কথা হয়েছে বিয়ের পর মিতু কে নিয়ে বিদেশে চলে যাবেন উনি। লোকটার নাম অরিফ, শুনেছে সে মায়ের কাছে। হ্যাঙলা গড়নের বেশ ফর্সা লোকটা। মিতুর সৎ মা কে টাকার লোভ দেখিয়ে রাজি করিয়ে ফেলেন তিনি। কিন্তু মিতু তো অন্য একজনকে ভালোবাসে । ছেলেটার নাম সবুর। মিতুকে সেও ভিষন ভালোবাসে । টাকার কাছে বিক্রি হয়ে সৎ মেয়েকে জোর পূর্বক বিয়ে দিয়ে দেন সৎ মা আম্বিয়া বেগম।
সবুর প্রিয় মানুষ কে না পাওয়ার ব্যথা সহ্য করতে না পেরে কোথাও হারিয়ে গেছে। হয়তো আত্মহত্যা বেছে নিয়েছে। না হয় অনেক দূরে চলে গেছে যেখানে তাকে কেউ খুঁজে পাবে না।
সবুরের কথা মনে পড়তেই দীর্ঘ শ্বাস ফেলে মিতু।

অচেনা বাড়ি অচেনা মানুষ জন। আর মানুষ জন বলতে তিন জন লোককেই চোখে পড়েছে মিতুর। বেশ ঘাবড়ে আছে সে। খানিক বাদে দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকে আরিফ।
মিতু ঘাড় উঁচিয়ে দেখে আরিফের সাথে বাকি তিন জনও আছে। কিন্তু সে মায়ের কাছে শুনেছে বাসর রাতে নাকি শুধু স্বামী স্ত্রী থাকেন।"_ তবে কেনো এই তিন জনও এলো উনার সাথে। হয়তো মা মিথ্যা বলেছে।
সহজ সরল মিতু চুপটি মেরে বসে আছে খাটের এক কোনায়। আরিফ ধীর গতিতে কাছে গিয়ে বসে। ভ্রু কুঁচকে তাকায় মিতুর দিকে। তখনো সব অজানা মেয়েটার কাছে। তার সাথে কী ঘটতে চলেছে তার ভাবনার বাইরে।
হঠাৎ মিতু খেয়াল করে সাথে থাকা লোকগুলোও একে একে মিতুর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। মিতু এইবার খানিক ঘাবড়ে গেল।
আরিফ পর মূহুর্তে টান দিয়ে মিতুর দু পাট্টা কেড়ে নিলো। অসহায়ের মত তাকিয়ে আছে মিতু। তবে কী তার সৎ মা জেনে শুনে মিতু কে এদের হাতে তুলে দিয়েছে?
মিতুর চোখের কোণে পানি জমে গেছে।
সাথে আসা দুজনে দ্রুত গতিতে মিতুর দুই হাত ধরে বিছানায় শুইয়ে দিলো। মিতুর আর্তচিৎকার জানালার সচ্ছ কাচে ধাক্কা খেয়ে ফিরে আসছে বার বার।
পালাক্রমে ধ'র্ষ'ণ করতে লাগলো অবলা মিতু কে। র'ক্তা'ক্ত শরীরে ছটফট করতে লাগলো সে। কারো দয়া হলো না সে দিন। খায়েশ মিটিয়ে অচেতন মিতুকে ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করে তাঁরা।
আজ কেটে গেছে কয়েক বছর। মিতুর এখনো বেশ ভালো মনে আছে আরিফের চেহারা।
নিরব শেখ বড় করে ঢোক গিলেন । সেদিনের আরিফ তো তিনিই ছিলেন । কিন্তু মিতুর চেহারার এত পরিবর্তন কিভাবে হলো এখনো অজানা নিরব শেখের কাছে।

"_মিতু তুমি এখনো বেঁচে আছো?
অবাক সূচক প্রশ্ন ছুঁড়ছেন নিরব শেখ।
"_ হ্যা আমি এখনো বেঁচে আছি । তোদের সবাই কে শেষ করবো। কাউকে বাঁচতে দিবো না। তোদের জন্য আমার সবুর কে মরতে হয়েছে। আমি হয়েছি ধ'র্ষি'তা। সেদিন তোর ভাইয়ের রুমে যেই মেয়েকে দেখেছিস ওটা আমি ছিলাম না। ওটা তো রোহানের প্রেমিকা যাকে আমিই ডেকে এনেছিলাম সেদিন রাতে। আমি তোকে একধরনের ডার্গ দিতাম যেনো আমার প্রতিবিম্ব সব মেয়ের মধ্যে দেখতে পাস। আর রোহানের দরজায় যেই তরলটা লাগানো ছিলো ওটা একটা পয়জন। যেটা মানুষের শরীরে ঘামের সাথে প্রবেশ করে তাকে দ্বী গুন উত্তেজিত করে দেয়।
নিরব শেখ বুঝতে পারে সব কথা।

"_তুই আমার পরিবার কে শেষ করেছিস আমি তোকে ছাড়বো না।
বলতে বলতে তেড়ে আসছেন নিরব শেখ। মিতুও তৈরি আছে। রাম দা হাতে রাগান্বিত দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে নিরব শেখের দিকে। কাছে আসতেই বিকট আওয়াজে গর্জে উঠে মিতু। নিরব শেখের শরীর থেকে মাথা আলাদা হয়ে ছিটকে পড়ে ফ্লোরে।
বড় বড় দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইল মিতু। এখনো রাগে ফুঁসছে তার শরীর। মাথা বিহীন ম'রদে'হ পড়ে আছে এক পাশে। র'ক্তে'র বন্যা বয়ে যাচ্ছে শেখ বাড়ির উঠোন।

"_হ্যালো মিঃ বোরহান!
মেয়ে কন্ঠ শুনেই চোখ জ্বল জ্বল করে উঠে বোরহানের ।
"_জ্বী কে বলছেন?
একটু ভাব ভঙ্গিতে উত্তর দেয় বোরহান।

"_ আমি মাইশা! হয়তো চিনবেন না। আসলে আমি আপনাকে পছন্দ করি । আগামীকাল রাতে কী সুইট ড্রিম হোটেলে মিট করতে পারবেন আমার সাথে?

অচেনা মেয়ের এমন প্রস্তাবে লাফিয়ে উঠে বোরহানের মন । মেয়ের নেশা বড়ই মারাত্মক।
"_যত টাকা যাবে যাক এই মেয়েকে আমার ভোগ করতেই হবে।
কল কেটে ঠোঁটের কোণে পৈচাশিক হাসি হেসে পরের শিকারের অপেক্ষায় রয়েছে মাইশা।

কল কেটে ঠোঁটের কোণে পৈচাশিক হাসি হেসে পরের শিকারের অপেক্ষায় রয়েছে মাইশা।
একই ভাবে বাকি দুই জনকেও কল করে একেক জন কে একেক টাইমে ডেকে নেয় সে।
পরদিন ঠিক সময় হোটেলে পৌঁছে গেলো বোরহান।
"_হ্যালো মিস, এই হোটেলে পাঁচ তলায় মাইশা নামের কোনো মেয়ে কী রুম বুক করেছে?
রিসিভার কে জিজ্ঞেস করে বোরহান কাঁচুমাচু হয়ে দাঁড়ালো।
"_জ্বী স্যার উঠেছে তো।
রিসিভার রুম টা দেখিয়ে নিজ পথে পা বাড়ালো। বোরহানের চোখে মুখে আনন্দের ঝলকানি। দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকতেই অন্ধকারে নিজেকে হারিয়ে ফেলে সে। এদিক সেদিক কাউকে দেখা যাচ্ছে না।
"_ মিস মাইশা! আছেন কী রুমে?

না এখনো কোনো সাড়া নেই। বোরহান খানিক ঘাবড়ে গেলো । কাঁপা পদক্ষেপে রুমের ভিতরে প্রবেশ করে। লাইট জ্বালানোর জন্য ইলেকট্রিক বোর্ড খুঁজতে থাকে সে। কিন্তু সুইচ গুলো কাজ করছে না। মোবাইলের টর্চ জ্বেলে সামনে এগোতে থাকে বোরহান।
তবে কী কেউ তাকে ফাঁসিয়ে নিয়ে এসেছে এখানে। নানান প্রশ্ন বাসা বেঁধেছে বোরহানের মনে।

"_আসুন আপনারি অপেক্ষায় ছিলাম।
ভরাট কন্ঠে চমকে উঠে বোরহান । মেয়ে কন্ঠ এত মোটা হয় কিভাবে? তবুও মানুষের আভাস পেয়ে কিছুটা স্বস্তি বোধ করছে বোরহান।
"_কই আপনি? আপনাকে দেখতে পাচ্ছি না কেনো?
কাঁপা কাঁপা গলায় বলে যাচ্ছে বোরহান।

"_সামনের দিকে আসুন।
বোরহান ধীর পায়ে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। হঠাৎ পেছনে কারো স্পর্শ অনুভব করে সে। নরম হাতের ছোঁয়া পেয়েই সাড়া শরীরের লোম দাঁড়িয়ে যায় বোরহানের। মোবাইল বিছানার এক পাশে রেখে বুকে টেনে নেয় মাইশাকে। দু'জনে অনেক কাছে চলে এসেছে। বোরহান কে জোর ধাক্কায় বিছানায় ফেলে দেয় মাইশা । বোরহানের খুশি যেনো ধরছে না।
মাইশা কে কাছা পাবার তীব্র ইচ্ছা তার ভিতর। কিন্তু ঘোর কাটতেই বোরহান খেয়াল করে বিছানা ভিজে গেছে। তার পাশে দুটো মানুষ উপুড় হয়ে পড়ে আছে। চোখ ডোলে ভালো মত দেখে নেয় সে। মেয়েটার দিকে তাকাতেই দেখে সে দা হাতে দাঁড়িয়ে আছে। আবছা আলোয় বেশ ভালোই বুঝা যাচ্ছিলো ।
"_কী করছো তুমি? তোমার হাতে দা কেনো ?
বেশ ঘাবড়ে গেছে বোরহান। উঠে দাঁড়াতে ভুলে গেছে সে। হঠাৎ একনাগাড়ে দা দিয়ে কু'পিয়ে জ,খম করতে থাকে মাইশা।
বোরহানের পুরো শরীর র'ক্তে র'ঞ্জিত হয়েছে। অন্ধকার ঘর আলোকিত হয়ে গেছে। সামনেই ফ্রেমে বাঁধানো মাইশার আগের রূপ অর্থাৎ মিতুর ছবি। বোরহান বেশ ভালো বুঝতে পেরেছে কেনো এই পরিস্থিতি হলো তার। শেষ চেষ্টা হিসেবে হাত জোর করে প্রান ভিক্ষা চাইতে লাগলো সে। কিন্তু মাইশা রূপী মিতু পিছ পা হতে নারাজ। একনাগাড়ে কুপিয়ে যাচ্ছে বোরহান কে।

হঠাৎ কেউ মিতুর নাম ধরে ডেকে উঠে।
_মিতু !
মিতু বুঝতে পারে তাকে কে ডাকছে। এই কন্ঠ যে তার বরই চেনা।
"_সবুর !
মুখে আনন্দের হাসি হেসে এদিক সেদিক খুঁজতে থাকে মিতু। কিন্তু কোথাও যে দেখা মিলছে না সবুরের।
সবুর যে তাকে ছেড়ে অনেক দূরে চলে গেছে। র'ক্তমা'খা শরীরে লা'শ তিনটি পাশে নিয়ে বসে আছে সে।
ফিসফিসিয়ে একনাগাড়ে সবুর সবুর বলে যাচ্ছে। সবুরের কাছে যেতে বড়ই ইচ্ছে করছে যে তার। এই কল'ঙ্কিত জিবনের মুক্তি দিতে চায় সে। আর পারছে না যে এই কলঙ্ক বয়ে বেড়াতে।
বেলকুনি থেকে শহরটা বেশ ভালোই দেখা যায়। এই শহরের মানুষ জন বড়ই স্বার্থপর। এখানে তাঁর কোনো মূল্য নেই। তবে কী লাভ বেঁচে। খোলা বেলকুনি তে দাঁড়িয়ে ছোট বেলার কথা মনে করে সে।
বাবা মা বেঁচে থাকতে কত সুন্দর ছিলো জিবনটা। একটা ঝড়েই জিবনটা বরবাদ হয়ে গেছে যে তার ‌।
মাটির দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসে মিতু। এই মাটিটাও যে তাকে বাঁচায় নি সে দিন।
পৃথিবীর সব কিছুই স্বার্থপর।
এক পা দু পা করে এগিয়ে যাচ্ছে মিতু। শেষ বারের মত পৃথিবীটা দেখে নেই সে। নিজের ফর্সা হাতের দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসছে। সে তো খুনি।
চোখ বন্ধ করে ঝাপিয়ে পড়ে বেলকুনি থেকে।

শেষ পর্যন্ত নিঃশ্বাস টাও বেঈমানি করলো তার সাথে। সেও ছেড়ে গেলো তাকে ছেড়ে।
সেও বাঁচতে চেয়েছিলো দশ পাঁচ টা মেয়ের মত। কিন্তু পৃথিবী যে তাকে মেনে নিতে পারে নি।

🔴সমাপ্ত🔴

নতুন গল্প পেতে GOLPO PEDIA এর সাথেই থাকুন

Want your public figure to be the top-listed Public Figure in Narayanganj?
Click here to claim your Sponsored Listing.

Videos (show all)

#funnyvideos
Peace 💞#nature #animeedit #highlights #viralshorts
R.i.p mosquito 🤣🤣#funnymoments #funnyposts #mosquito
G.O.A.T FOR THE REASON#ronaldo #highlights
🤣🤣#highlights
Sigma fox🗿#highlights #funnyanimals
Caption in video#funnyvideosclips #highlights
#funnyposts
#naruto#narutoshippuden #madara #hashirama

Category

Website

Address

Narayanganj