𝐀𝐝𝐧𝐚𝐧 𝐅𝐚𝐫𝐚𝐛𝐢-আদনান ফারাবী

𝐀𝐝𝐧𝐚𝐧 𝐅𝐚𝐫𝐚𝐛𝐢-আদনান ফারাবী

লেখকের নিজস্ব পেইজ...🌸

20/06/2024

#গল্পঃ_এক_মুঠো_রোদ্দুর
#পর্বঃ০৫+০৬

আদনানের হাত ধরে চেম্বারে প্রবেশ করে একটা মেয়ে। আদিবা দুজনের দিকে তাকিয়ে আছে। মেয়েটা কে? আদনানের সাথে মেয়েটার কীসের সম্পর্ক? এসব প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছিলো আদিবার মাথায়।

-- আদিবা আমাদের জন্য দুকাপ চা করে নিয়ে আসো।

আদিবা চলে গেলো চা বানানোর জন্য। মেতেটা আদনানকে বলল -- কিরে এই মেয়েটা কে?

-- আমার এসিস্ট্যান্ট।

-- বাহ! যে ছেলে মেয়েদের সাথে কথা বলতনা ঠিক ভাবে তার মেয়ে এসিস্ট্যান্ট! তাও এমন সুন্দরী একটা মেয়ে। কাহিনি কি?

-- কোনো কাহিনি নেই। মেয়েটার চাকরি দরকার ছিল। আর আমারও একটা এসিস্ট্যান্ট দরকার ছিল।

-- কাহিনি তো গড়বড় আছেই।

-- এই তোদের একটা সমস্যা। তিল কে তার বানানো।

আদিবা চা নিয়ে এসে দুজনকে দিয়েছে। চা খাওয়া শেষ করে আদনান মেয়েটাকে বলল -- আমি একটু আসছি।

এই কথা বলে আদনান চলে গেলো। মেয়েটা ফোন বের করে টিপতে থাকে। আর আদিবা মেয়েটার দিকে তাকিয়ে আছে।

মেয়েটা আদিবাকে উদ্দেশ্য করে বলল -- নাম কি তোমার?

-- আমি আদিবা রহমান।

-- ওহ আচ্ছা কতদিন ধরে আছো?

-- অল্পকিছু দিন হলো। আপনাকে তো এর আগে দেখিনি।

-- আসলে আমি আজকেই দেশের বাহিরে থেকে আসছি। আর আদনান আমার ছোট বেলার ফ্রেন্ড। বলতে গেলে আমরা এক সাথেই বড় হয়েছি।

-- ওহ আচ্ছা।

দুজন নিজেদের মধ্যে আরো কিছুক্ষণ কথা বলল। আদিবা ক্লিয়ার হলো মেয়েটা আদনানের ফ্রেন্ড। আদনান কাজ শেষ করে চেম্বারে ফিরে আসে।

-- আদনান আমি এখন চলে যাবো। তুই কিন্তু সন্ধ্যা আসবি। আর হ্যাঁ সাথে করে আদিবাকেও নিয়ে আসবি ঠিক আছে?

-- আবার আদিবা কে কেন?

-- কারণ আদিবা আমার গেস্ট। আদিবা তুমিও কিন্তু আসবে ঠিক আছে?

-- আচ্ছা।

মেয়েটা হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে চলে গেলো। দেখতে দেখতে বিকেল হয়ে যায়। আদনান আদিবার কাছে এসে বলল -- আদিবা তুমি এখন বাসায় চলে যাও। আর রেডি হয়ে থেকো। আমি তোমাকে নিয়ে যাবো।

-- ঠিক আছে স্যার।

আদনানের কথা শুনে আদিবা খুশি হয়ে চলে যায়। কিছুক্ষণ পরে আদনান বাসায় গিয়ে রেডি হয়ে আদিবার বাসার সামনে চলে আসে। আদিবা বের হতেই আদনান মুগ্ধ হয়ে আদিবার দিকে তাকিয়ে থাকে। আদিবা একটা নীল শাড়ী পড়েছে। আদিবাকে খুব সুন্দর দেখাচ্ছে। হালকা হাওয়াতে আদিবার চুপ গুলো দোল খাচ্ছিল। আর আদনান মুগ্ধ হয়ে আদিবার দিকেই তাকিয়ে আছে।

-- স্যার! ও স্যার!

আদনান এতোটাই মুগ্ধ হয়েছে যে আদিবা যে তার সামনে এসে ডাকছে আদনানের কোনো খোঁজ নেই। এবার আদিবা একটু জোরে শব্দ করতেই আদনান নিজের মধ্যে ফিরে আসে।

-- স্যার আমি কখন থেকে আপনাকে ডাকছি।

-- ওহ আচ্ছা উঠো।

আদিবা পিছনে গিয়ে বসে। আদনান গাড়ি চালাতে শুরু করে। আদনানের গাড়িতে থাকা গ্লাস টা দিয়ে আদিবাকে দেখা যাচ্ছে। আদনানের চোখ বার বার সেদিকেই যাচ্ছে। আদিবা যখন তাকায় আদনান চোখ সরিয়ে নেয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই তারা পৌছে যায় তাদের গন্তব্যে। আদনান ভিতরে যেতেই মেয়েটা এসে আদনান কে জড়িয়ে ধরে। এটা দেখে আদিবা তো তেলেবেগুনে জ্বলে উঠে। এবার সবাই ভিতরে আসে। ভিতরে আসতেই দেখে আদনানের স্কুল ফ্রেন্ড সবাই এখানে আছে। আদনান আর আদিবা সেদিকে যায়। আদিবা গিয়ে একটা চেয়ারে বসে পড়ে আর আদনান কি করে তা দেখতে থাকে। সবাই এসে আদিনানকে জড়িয়ে ধরে। সাথে মেয়ে ফ্রেন্ড গুলো ও। এদিকে আদিবা জেলাশ ফিল করছে। আদিবা একা বসে আছে আর বাকি সবাই আড্ডা দিচ্ছে।

একটা লোক সবাইকে বিয়ার দিচ্ছে। এটা দেখে আদিবা লোকটাকে ডাক দেয়। আর লোকটা আদিবার কাছে আসে। আদিবা বিয়ার নিয়ে খাওয়া শুরু করে দেয়। কয়েক গ্লাস টপাটপ খেয়ে ফেলে।

খাওয়া মাত্রা বেশি হওয়াতে আদিবা চোখে ঝাপসা দেখতে শুরু করে। আর তার শরীর মাথা সব যেনো ঘুরছে। হঠাৎ করে একা একা আদিবা হাসতে শুরু করে।

আদিবার হাসির শব্দ শুনে আদনান এগিয়ে আসে। আদিবার এমন অবস্থা দেখে আদনান ব্যাপারটা বুঝতে পেরে আদিবার কাছে গিয়ে বলল -- তোমাকে এসব খেতে কে বলছে?

-- তো কি করব? আপনাদের তামশা দেখব?

-- আদিবা!

-- স্যার আমার কাছে কেমন যেনো লাগছে আমি বাসায় যাবো।

আদনান সবাইকে বিদায় জানিয়ে আদিবাকে বসা থেকে তুলতেই আদিবা আদনানের বুকে ঢলে পড়ে। আর আদনানের শার্ট শক্ত করে ধরে রাখে। আদনান কোনোরকমে আদিবাকে গাড়িতে বসায়। আর আদনানের পাশের সিটেই বসিয়ে দেয়।

আদনান গাড়ি চালাতে শুরু করে। আদিবা আদনানের কাধের উপর মাথা রেখে দেয়। আদনান আদিবার মাথা সরিয়ে দেয়। আদিবা আবার নিয়ে আসে। ব্যাপার টা আদনানের বিরক্ত লাগছে। তাও সে বার বার আদিবাকে সরিয়ে দিচ্ছে কিছু না বলে।

কিছুক্ষণের মধ্যেই আদিবার বাসার সামনে চলে আসে। আদনান গাড়ি থেকে নেমে দরজা খুলে দেখে আদিবা হেটে যাওয়ার অবস্থায় নেই। আদনান মনে মনে ভাবতে থাকে। এখন কোলে করে নিয়ে যাওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই।

আদিবাকে আদনান এবার কোলে তুলে বাসার সামনে গিয়ে দরজার কলিং বেলে চাপ দিতেই আদিবার আব্বু এসে দরজা খুলে দেয়।

আদিবাকে আদনানের কোলে দেখে বলল -- আদিবার কি হয়েছে?

-- তেমন কিছু হয়নি ঘুমালে ঠিক হয়ে যাবে। ওর রুম কোনটা?

আদিবার বাবা রুম দেখিয়ে দেয়। আর উনি পানি আনতে যায়।

আদনান আদিবার রুমে গিয়ে খাটের উপরে শুইয়ে দিতেই আদিবা আদনানের হাত ধরে বুকের কাছে নিয়ে আসে। আদিনান হাত ছাড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু আদিবা শক্ত করে হাত ধরে রাখে।

-- আদিবা কি করছ ছাড়ো।

আদিবা চোখ বন্ধ করে বলল -- না আপনাকে আমি ছাড়ছি না। পরে আবার অন্য মেয়েদের জড়িয়ে ধরবেন। আপনি অন্য মেয়েদের জড়িয়ে ধরলে আমার কাছে খুব খারাপ লাগে।

আদনান কি করবে বুঝতে পারছেনা। আদিবার বাবা আসার শব্দ শুনে এবার আদনান একটা টান মেরে নিজের হাত নিয়ে আসে।

-- আমি চলে যাচ্ছি। ওকে ঘুমাতে দেন। পার্টিতে বিয়ার খেয়ে এই অবস্থা হইছে। চিন্তার কোনো কারণ নেই। সকালে ঠিক হয়ে যাবে।

এই কথা বলে আদনান বাহিরে চলে আসে। আর গাড়ি চালাতে শুরু করে। আদনানের কানে আদিবার বলা কথা গুলো এখনও কানে বেজেই চলছে। আদনান সব ভাবিনা বাদ দিয়ে গাড়ি চালাতে মনোযোগ দেই। কিছুক্ষণের মধ্যেই বাসায় চলে যায়। বাসায় গিয়ে দরজার কলিং বেলে চাপ দিতেই রানী বেগম এসে দরজা খুলে দেয়। আর আদনানের দিকে তাকিয়ে মুচকি মুচকি হাসতে থাকে।

-- এভাবে হাসার কি হলো?

-- কিছু না তুই গিয়ে ড্রেস চেঞ্জ করে নে।

এই কথা বলে রানী বেগম হাসতে হাসতে চলে গেলো। আদনান কিছুই বুঝতে পারলোনা এবার সে নিজের রুমে গিয়ে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে ড্রেস চেঞ্জ করতে যাবে এমন সময় দেখে তার শার্টের মধ্যে লিপস্টিকের দাগ। আদনান এবার বুঝতে পারে তার মায়ের মুচকি হাসার কারণ। আর দি লিপস্টিক যে আদিবার সেটাও শিওর হয়ে যায়। আদনান ফ্রেশ হয়ে খাবার খেয়ে রুমে ঘুমিয়ে পড়ে। সকালে ঘুম থেকে উঠে আদনান হাসপাতালে চলে যায়। হাসপাতালে গিয়ে দেখে আদিবা এখনও আসেনি। আদনান পকেট থেকে ফোন বের করে আদিবাকে ফোন করে। কিন্তু আদিবা ফোন রিসিভ করেনা। আদনান বেশ অবাক হয়ে গেলো। এই মেয়েটার কি হয়ে গেলো হঠাৎ করে? ফোন রিসিভ করছেনা! কোনো সমস্যা হয়নি তো আবার? নাকি এখনো বিয়ারের নেশা কেটে উঠেনি? কিন্তু বিয়ারের নেশা তো এতক্ষণ থাকার কথা নই। আদনান গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে আদিবার বাসার উদ্দেশ্যে।

আদনানের কেন জানি খুব চিন্তা হচ্ছে আদিবার জন্য। হঠাৎ করে মেয়েটার কি হলো? হঠাৎ করে হাসপাতালে আসেনি আবার ফোন ও রিসিভ করেনি। এসব ভাবছে আর গাড়ি আপন মনে এগিয়ে যাচ্ছে। আচমকা আদনানের ফোন বেজে ওঠে। আদনান ফোন হাতে নিয়ে দেখে আদনানের ফ্রেন্ড ফোন দিয়েছে। আদনান ফোন রিসিভ না করে ফোন রেখে দেয়। কিছুক্ষণের মধ্যেই আদনান আদিবার বাসার সামনে পৌছে যায়। আদনান তাড়াতাড়ি করে গাড়ি থেকে নেমে আদিবার বাসার সামনে গিয়ে দরজার কলিং বেলে চাপ দেয়।

কলিং বেলের শব্দ শুনে আদিবা এসে দরজা খুলে আদনানকে দরজার সামনে দেখে সে হতবাক হয়ে যায়।

-- স্যার আপনি?

-- তুমি ফোন রিসিভ করছিলে না কেন? আর হাসপাতালে যাওনি কেন?

আদিবা মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে। কারণ আদিবা অনেকটা ভয়ে আছে।

-- হাসপাতালে যাবেনা ভালো কথা ফোন রিসিভ করে তো বলতে পারতে! তোমার জন্য চিন্তা হচ্ছিল তুমি কি বুঝতে পারোনা?

আদিবা এবার চোখ তুলে আদনানের দিকে তাকায়।

রাগে আদনানের চোখ লাল হয়ে আছে।

-- তোমার মতো এমন কেয়ার ল্যাস মেয়ে আমি দেখিনি। কারোর কোনো সমস্যা থাকলে সেটা জানাতে হয়।

-- আসলে স্যার।

আদিবা কিছু বলতে যাবে তখনই আদিবার বাবা এসে বলল -- আরে ডাক্তার সাহেব যে। তুমি কখন আসলে?

-- একটু আগেই আসলাম।

-- তুমি ওখানে দাঁড়িয়ে আছো কেন? ভিতরে আসো। আদিবা তুই ও না! দাড় করিয়ে রাখিলি কেন ওঁকে?

-- আমি ভিতরে যাবোনা। হাসপাতালে কাজ আছে। আদিবা তুমি রেডি হয়ে আসো আমি বাহিরে অপেক্ষা করছি।

এই কথা বলে আদনান চলে যায়।

-- কিরে ডাক্তার এখানে কেন আসছে?

-- আমি হাসপাতালে যাইনি সেই জন্য। তোমার সাথে পরে কথা বলব। এখন আমি যাই।

আদিবা অনেক বেশি ভয় পেয়ে যায়। আর সে তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে বেরিয়ে পড়ে। আদিবা বের হয়ে দেখে আদনান গাড়ির ভিতরে বসে আছে। আদিবা গিয়ে গাড়িতে উঠে। আদনান গাড়ি চালাতে শুরু করে। আদিবা তো ভয়ে চুপসে আছে। আর আদনান ও কোনো কথা বলছেনা। দুজনেই নিশ্চুপ। কারোর মুখে কোনো কথা নেই।

আদনান হঠাৎ করে গাড়ি থামিয়ে বলল -- নামো গাড়ি থেকে।

-- এখানে কেন? হাসপাতালে যাবেন না?

-- এতো প্রশ্ন করতে কেউ বলছে? মুখ দেখেতো মনে হচ্ছে না খেয়ে আছো।

আদিবা কিছুই বলল না। আদিবা আসলেই সকাল থেকে না খেয়ে আছে। কারণ গতকাল রাতে সে নিজের অজান্তে আদনানের সাথে কেমন ব্যবহার করছে তা সে এখনও জানেনা। হাসপাতালে না যাওয়া আর ফোন রিসিভ না করার এটাই কারণ ছিল।

এবার দু'জনে নেমে একটা রেস্টুরেন্টে যায়। দু'জন খাবার খেয়ে বেরিয়ে আসে। আবার গাড়িতে উঠে বসে। কিছুক্ষণের মধ্যেই হাসপাতালে পৌছে যায়।

আদনান আর আদিবা আদনানের চেম্বারে আসে। তখন আদনান আদিবাকে বলল -- আমার ফোন রিসিভ করছিলেনা কেন?

-- সরি স্যার।

-- কীসের সরি!

-- কাল রাতে আপনাকে কি কি বলছি তার জন্য। আর আপনার সামনে কীভাবে দাড়াবো সেই জন্য হাসপাতালে আসিনি। ফোন ও রিসিভ করিনি।

-- নেক্সট টাইম যেনো এমন ভুল না হয়।

-- হবেনা স্যার। আমি আর কখনও বিয়ার খাবোনা। কাল কেন যে খেতে গেলাম।

আদিবার কথা শুনে আদনান বলল -- আমি বিয়ারের কথা বলিনি। আমি বলছি আজকে যেটা করলে সেটা যেনো আর কখনও না হয়।

-- ঠিক আছে স্যার।

এবার আদনান পুরো হাসপাতাল ঘুরতে শুরু করে। সাথে আদিবা ও আছে। আদিবা আনমনে আদনানের দিকে তাকিয়ে আছে। এই মানুষ টা খুব অদ্ভুত। রাগি মানুষের পিছনে অন্য একটা মানুষ লুকিয়ে আছে। যেটা সচারাচর কেউ দেখতে পায়না। বেখেয়ালি ভাবে হাঁটছে আদিবা। আচমকা সে কারোর সাথে ধাক্কা খেয়ে ফ্লোরের উপর পড়ে যায়। আর ও বাবা গো বলে একটা চিৎকার দেয়।

-- তোমার চোখ কই থাকে?

-- চোখ তো চোখের যায়গা থাকে।

-- তাহলে দেখে চলতে পারো না?

-- এতো কথা না বলে আগে আমাকে তুলুন স্যার। তারপর প্রশ্ন করবেন।

আদনান আদিবাকে না তুলে চেম্বারে চলে যায়।

-- হাতি একটা। নিজে খেয়াল করেনা। আবার সব দোষ আমার দেয়। এই বেডার বউ যে হবে তার তো জীবন শেষ। রাক্ষস একটা।

নিজে নিজে এসব বলতে বলতে উঠে যায়।

দেখতে দেখতে কয়েকদিন কেটে যায়। আদিবা সুযোগ পেলেই আদনানের দিকে তাকিয়ে থাকে। যদিও আদনান বুঝতে পারে কিন্তু সে তেমন একটা পাত্তা দেয়না। আর আদিবা ভুল করলে বকা তো আছেই।

রাত ঠিক চারটে বাজে। তখনই আদনানের ফোন বেজে ওঠে। আদনান নাম্বারের দিকে তাকিয়ে দেখে আদিবা ফোন দিয়েছে।

এতো রাতে আদিবা ফোন দেওয়ার কারণ কি? এই মেয়ের কি চোখে ঘুম নেই? যত্তসব।

এসব বলতে বলতে ফোন রিসিভ করে।

-- রাত কয়টা বাজে এখন?

-- স্যার।

আদিবার কণ্ঠ শুনে আদনানের বুঝতে বাকি নেই যে আদিবা কান্না করছে।

-- কি হইছে কান্না করছ কেন? সব ঠিক আছে তো?

-- স্যার আপনি প্লিজ আমাদের বাসায় আসুন।

-- এতো রাতে? কোনো সমস্যা হইছেকি?

-- স্যার আমার বাবা কোনো কথা বলছেনা। আমি কিছু বুঝতে পারছিনা। আপনি প্লিজ আসুন। আমি কখন থেকে বাবাকে ডেকেই যাচ্ছি। কিন্তু বাবা কোনো রেসপন্স করছনা। আপনি তাড়াতাড়ি আসুন।

-- ঠিক আছে আমি এক্ষুনি আসছি।

এই কথা বলে আদনান নিজের রুমের লাইট অন করে একটা টি-শার্ট গায়ে দিয়ে বেরিয়ে পড়ে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আদিবার বাসার পৌছে যায়। আদনান যেতেই আদিবা তাড়াতাড়ি করে দরজা খুলে আদনানকে তার বাবার কাছে নিয়ে যায়।

আদনান আদিবার বাবাকে চেক করে বুঝতে পারে। আদিবার বাবা আর নেই। উনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করছে।

-- ও স্যার! আমার বাবা কথা বলছেনা কেন? আমার বাবার কি হয়েছে? আমার বাবা তো এভাবে চুপ থাকেনা।

-- আদিবা শান্ত হও। এভাবে ভেঙে পড়লে চলবেনা। তোমাকে শক্ত হতে হবে। আর বাস্তবতা কে মেনে নিতে হবে।

-- আপনি বলুন না আমার বাবার কি হইছে? বাবা কথা কেন বলছেনা?

-- তোমার বাবা আর আমাদের মাঝে নেই।

-- না।

আদিবা একটা চিৎকার দিয়ে বাবাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকে। আদনান আদিবাকে কি বলে সান্ত্বনা দিবে। সে ভাষা খুঁজে পাচ্ছেনা। এদিকে আদিবা তো বাবার লাশ জড়িয়ে কান্না করছে।

-- বাবা তুমিও আমাকে একা করে চলে গেলে? তুমি না বলছিলে তুমি আমাকে ছেড়ে কখনও যাবে না? ও বাবা কথা বলো। আমি তোমাকে ছাড়া কীভাবে থাকব? ছোট বেলায় আম্মু আমাকে রেখে চলে গেছে। আজ তুমিও চলে গেলে বাবা? বাবা একটু কথা বলো আমার সাথে। আমার কথা টা একটুও ভাবলেনা তুমি? আমি কীভাবে একা থাকব? কথা বলো বাবা।

আদনান নিজের পকেট থেকে ফোন বের করে রানী বেগমকে ফোন দিয়ে এখানে আসতে বলে। রানী বেগম কিছুক্ষণের মধ্যেই চলে আসে। আর উনি আদিবাকে সান্ত্বনা দিতে থাকে। দেখতে দেখতে ভোর হয়ে যায়। আর মানুষের আনাগোনা বাড়তে থাকে। সবাই আদিবার বাবার লাশ দেখতে আসে। আর আদিবা তো কান্না করেই যাচ্ছে। এদিকে লাশ দাফন করার সব ব্যবস্থা করে আদনান। শেষ বিদায়ের সময় আদিবাকে বাবার লাশের সামনে নিয়ে আসে। আদিবা হাউমাউ করে কান্না করতে থাকে। রানী বেগম কিছুতেই আদিবাকে ধরে রাখতে পারছে না।

-- আমার বাবাকে নিয়ে যাবেন না। আমি আমার বাবাকে ছাড়া থাকতে পারবোনা। ও বাবা। আমি যে এবার এতিম হয়ে গেলাম। আমার তো আর কেউ নেই তুমি ছাড়া। বাবা।

রানী বেগম আদিবাকে সান্ত্বনা দিয়ে বলল -- আদিবা মা আমার কে বলছে তোমার কেউ নেই। আমরা আছিনা?

আদিবা রানী বেগমকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই আদিবার বাবার লাশ দাফন করা হয়। দাফন কাজ শেষ করে আদনান ফিরে আসে। আদিবা কান্না করতে করতে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে পড়ে।

-- আম্মু আদিবা কোথায়? খেয়েছে কিছু?

-- না। এখন ঘুমিয়ে আছে।

-- আচ্ছা ঠিক আছে। তুমিও তো না খেয়ে আছো। আমি গিয়ে তোমাদের জন্য খাবার নিয়ে আসি।

-- তোর সাথে আমার কিছু কথা আছে।

-- হ্যাঁ বলো।

-- এখানে না।

রানী বেগম আদনান কে আলাদা একটা রুমে নিয়ে যায়। আর সেই রুমের দরজা বন্ধ করে দেয়। রুমের মধ্যে মা ছেলে ছাড়া আর কেউ নেই।

চলবে?

আসসালামু আলাইকুম। ব্যস্ততার জন্য নিয়মিত গল্পটা দিতে পারছিনা। তার জন্য সরি। ঈদ ছিলো তো তাই🫠। ইদ মোবারক যদিও তিনদিন পর দিলাম 🫥।
কাজের চাপ ও একটু বেশি। তাই একদিন পর পর গল্প দেওয়ার চেষ্টা করি। ভুল ত্রুটি ক্ষমা করবেন। ধন্যবাদ।

12/06/2024

"স্বামীর প*রকী*য়ার প্রমাণ পেয়ে ফাঁ*সি নিয়েছে বাড়ির বউ। কিন্তু মা*রা যায়নি। আল্লাহ তায়ালার অশেষ কৃপায় সঠিক সময়ে মেয়ে অানিসা আর পাশের বাসার এক কাকিমা এসে বাঁচিয়ে নিয়েছে।"

খবরটা মুহূর্তের মধ্যেই পুরো মহল্লায় ছড়িয়ে পড়েছে। সব মানুষজন ছিহ্ ছিহ্ করছে। একেকজন তো বাড়ি বয়ে এসে বিভিন্ন বাণীও শুনিয়ে গেছে বউকে।

এইতো পাশের বাসার জলিল কাকার বউ এসে বলে গেল, "স্বামীর অন্য মেয়ের সাথে সম্পর্ক আছে তাই বলে কী ম*রতে যেতে হবে না-কি? পুরুষ মানুষের এরকম একটু-আধটু দোষ থাকেই। মানিয়ে নিতে না পারলে আবার কিসের বউ? আমরা কী কম কষ্ট করে সংসার করেছি? অনেক কষ্টে দিন কেটেছে তবুও এমন ঢং করে মরতে যাইনি।"

আবার আরেকজনকে টিটকারি করে বলতে শোনা যাচ্ছে, "কীভাবে গলায় দড়ি দিয়েছিল গো? এখনো বেঁ*চে আছে কী করে?"

সবকিছুই নিশ্চুপ হয়ে শুনছে লিজা। কিছু বলার মতো শক্তি পাচ্ছে না। কিছু বলতে গেলেই কাশি উঠে যাচ্ছে। তাই চুপচাপ বিছানায় শুয়ে আছে।

ওর সেবার করার মতো একটা মানুষকেও আশেপাশে দেখা যাচ্ছে না। সম্পূর্ণ বাড়িটাই এখন প্রতিবেশিদের দিয়ে ভরা। বাড়ির মানুষজন বলতে শুধু পাশের বাসার সেই কাকিমা যিনি লিজার জন্য লেবুর শরবত বানাচ্ছেন আর ওর ননদ ঈশিতা।

লিজার দশ বছর বয়সী মেয়েটা বিছানায় মায়ের হাত ধরে বসে বসে কাঁদছে। কাঁদতে কাঁদতে চোখ-মুখ লাল করে ফেলেছে একেবারে। হিচকি উঠে গেছে।

লিজা মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে মনে মনে বলে, "তোর জন্যই তো আমার এ পদক্ষেপ নেওয়া। সব ঠিক করে দেব আমি। দেখবি আবার আমরা ভালোভাবে, শান্তিতে বাঁচতে পারবো। রোজ রোজ আমাদের ঝগড়া দেখে তোর যাতে কাঁদতে না হয় তার জন্যই তো আমার এত কষ্ট পাওয়া, তোকে এতটা কষ্ট দেওয়া।"

আবারো মেয়ের চোখ জোড়া মুছিয়ে দিল লিজা। ওর স্বামী আয়মানকে বেশ খানিকক্ষণ আগেই খবর দেওয়া হয়েছে। তার এতক্ষণে অবশ্যই চলে আসার কথা কিন্তু এখনো আসেনি। রাস্তায় যদি জ্যামও থাকে তবুও চলে আসার কথা।

মনের ভেতরের রাগটা হঠাৎ করেই বেড়ে গেল লিজার। ভেবেছে আরো কিছুক্ষণ অপেক্ষা করেই চলে যাবে বাপের বাড়ি। মেয়েকে নিয়ে এবাড়ি থেকে চিরতরে বিদায় নেবে। গত কয়েকদিন ধরে অনেক সহ্য করেছে আর না।

ঘন্টা দুয়েক বাদেই লিজা একদম সুস্থ অনুভব করছে। যা করার তার এখনি করতে হবে। রাত আটটা বাজে। এই রাতের বেলায়ই চলে যাবে সে। আর এক মুহূর্তও এখানে থাকবে না। আয়মান এখনো বাড়িতে আসেনি। ওই মহিলার সাথেই আছে নিশ্চয়ই। এতক্ষণে পরিবারের মানুষজনেরা এসেও লিজাকে বিভিন্ন কথা শুনিয়ে গেছে। শেষে এল লিজার শাশুড়ী। তিনি পান চিবাতে চিবাতে বললেন, "গলায় দড়ি দেওয়ার আগে আমাদের সম্মানের কথা একবারো ভাবলি না। পুরো পাড়ার মানুষ জেনে গেছে? সম্মান তো আমাদেরই গেছে।"

লিজা আর এবার চুপ করে থাকতে পারলো না। বেশ তেজ নিয়েই বললো, "আপনার ছেলে অন্য মহিলা নিয়ে ফূর্তি করলে মান-সম্মান যায় না আপনাদের? সব দোষ শুধু ছেলের বউদের। ছেলেদের কোনো দোষই নেই তাই-না?"

লিজার শাশুড়ী আর কোনো কথা না বলে কটমটে চাহনি নিক্ষেপ করে কী যেন বিড়বিড় করতে করতে চলে গেল।

লিজা সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে বিছানা থেকে উঠে একটা ব্যাগ নিয়ে ওর আর আনিসার কিছু কাপড়চোপড় গুছিয়ে নিল। ভাইকে ফোন করে জানিয়ে দিয়েছে। সে বাসস্ট্যান্ডে এসে দাঁড়াবে।

ব্যাগ গুছিয়ে একপাশে রাখতেই দেখে ঈশিতা রুমে এসেছে। অনেকটা ইতস্তত করছে সে।

লিজা নিজেই বললো, "কিছু বলবি ঈশু?"

"তুমি চলে যাবে ভাবী?"

লিজা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললো, "না গিয়ে কী আর উপায় আছে? আমার আত্মসম্মানের জন্য হলেও আমাকে যেতে হবে। নিজের কথা বাদই দিলাম, আমার মেয়েটার জন্য হলেও যেতে হবে আমাকে। এরকম পরিবেশে কীভাবে বড় হবে আমার মেয়েটা?"

"তুমি ইচ্ছা করে সবাইকে দেখানোর জন্য ফাঁসি নিয়েছিলে। তাই-না ভাবী? আমি দেখেছি তুমি নিজে থেকেই চেয়ার থেকে নেমে দরজা খুলে দিয়েছিলে। কেউ ফাঁসি নিলে তো মরতে চায়। কিন্তু তুমি তো চাওনি। তবে একটু সময় ঝুলে ছিলে। চেয়ারটা পায়ের কাছ থেকে ফেলে দাওনি।"

ঈশিতার কথায় লিজা হাসলো শুধু। আসলেই সে এসব ইচ্ছা করে করেছে। বিয়ের শুরুতে এমনকি কয়েকদিন আগে পর্যন্তও আয়মান তাকে ভীষণভাবে ভালোবাসতো। কিন্তু বেশ অনেকদিন ধরে পরিবর্তন লক্ষ্য করে লিজা। বাড়িতে দেরি করে আসা, ফোন করলে সবসময় ওয়েটিংয়ে পাওয়া, ছোটোখাটো বিষয় নিয়ে ঝগড়া এসব একটু বেশিই ভাবাতো লিজাকে। তাই সে সরাসরিই আয়মানকে প্রশ্ন করে যে এসবের মানে কী?

আয়মান সরাসরি উত্তর দিয়ে দেয়, "আমার জীবনে এখন অন্য কেউ আছে। তোমাকে আর আমার জীবনে দরকার নেই। তুমি চাইলে এভাবেও আমার জীবনে থাকতে পারো। নামেমাত্র বউ হয়ে। আবার চাইলে ডিভোর্স দিয়ে চলেও যেতে পারো।"

তারপর থেকেই শুরু হয় অবহেলা, অত্যাচার। মাঝেমাঝে তো মারধরও করতো। লিজা এতদিন ডিভোর্সের কথা ভাবেনি শুধুমাত্র মেয়েটার কথা চিন্তা করে। কিন্তু যেখানে নিজের সম্মান নেই সেখানে বাকিটা জীবন থাকবে কী করে? মেয়েকে সে একাই মানুষ করতে পারবে।

আগের কথা ভাবতেই চোখের কোণে অশ্রু জমে লিজার। একফোঁটা গড়িয়েও পড়ে। লিজা একহাতে চোখের পানি মুছে ঈশিতাকে উদ্দেশ্য করে বললো, "বুঝলি ঈশু? এটা তোর ভাইয়ের জন্য একটা ছোট্ট পরীক্ষা ছিল। ভেবেছিলাম সে আমাকে এখনো একটু হলেও ভালোবাসে। কিন্তু না। আমি ভুল ছিলাম। তাকে কিন্তু খবর দেওয়া হয়েছিলো অনেক আগে। কিন্তু সে আসেনি। যে আমার মৃত্যুর খবর শুনেও অন্য মহিলা নিয়ে মেতে থাকতে পারে সে আর যাইহোক আমাকে ভালোবাসে না৷ তাহলে এই মূল্যহীন সম্পর্ক রেখে কী লাভ? শুধুমাত্র কী ভাত-কাপড় দিলেই দায়িত্ব পালন হয়? একটু ভালোবাসাই তো চেয়েছিলাম। কতদিন হয়ে গেল আমার মেয়েটাকে সে আদর করে মা ডাকে না। আসার সময় একটু চকলেটও নিয়ে আসে না। আমার মেয়েটা লুকিয়ে লুকিয়ে কাঁদে। আমাকে, আমার মেয়েকে দেওয়ার মতো একটু ভালোবাসাও তার কাছে অবশিষ্ট নেই। তুই চাইলে সবাইকে বলে দিতে পারিস।"

ঈশিতা কান্না করে দিয়ে বললো, "না ভাবী, আমি কাউকে বলবো না। তুমি একবারের জন্য চলে যাবে আমাদের ছেড়ে?"

লিজা দৃঢ়ভাবে বললো, "গেলে একেবারেই যাবো। আর ফিরে আসবো না।" বলেই আনিসাকে জামা পড়িয়ে তৈরি করে দিল। নিজে বোরকা পড়ে ব্যাগ নিয়ে বেরোতে যাবে এমন সময় ওর চাচী শাশুড়ি এসে বললো, "এখন আবার কী নতুন নাটক করেছো? মান-মর্যাদার তো আর কিছু বাকি রাখলে না।"

"আপনাদের মান-সম্মান যাতে আর না যায় সে ব্যবস্থাই তো করছি। আপনাদের ছেলে আসলে বলে দিয়েন যে আমি বাপের বাড়ি চলে গেছি আর সেটা একবারের জন্যই।" বলেই লিজা একহাতে ব্যাগ আর আরেক হাতে আনিসার হাত ধরে বেরিয়ে যায় ঘর থেকে। কেউ তাকে আটকায় না। শুধুশুধু আটকিয়ে কী হবে? আপদ বিদায় হলেই তো বাঁচে সবাই।

লিজা গেটের সামনে আসতেই দেখলো আয়মান এসেছে।

আয়মান লিজাকে এমনভাবে দেখে বলে, "কোথায় যাচ্ছো তুমি? আর ফোনে কে যেন বলছিল ফাঁসি নিয়েছো। সুস্থ আছো এখন?"

লিজা শান্তস্বরে বলে, "আমার সুস্থতার কথা তোমার না ভাবলেও চলবে মিস্টার আয়মান চৌধুরী। চলে যাচ্ছি আমি তোমাকে মুক্তি দিয়ে। ডিভোর্স পেপার পেয়ে যাবে। আর চিন্তা করো না কাবিনের টাকা দিতে হবে না। অবশ্য আমি আগে ডিভোর্স দিলে তো এমনিতেও দিতে হবে না। কাবিনের দশ লাখ টাকা দিতে হবে ভেবেই তো এতদিন নিজে থেকে ডিভোর্সটা দাওনি। তোমার চিন্তা কমিয়ে দিলাম। আর চিন্তা করো না। আমার মেয়েকে নিয়ে আমি খুব সুখেই থাকবো। অন্তত আত্মসম্মান নিয়ে বেঁচে থাকতে পারবো। তুমিও তোমার প্রেমিকা নিয়ে সুখে থেকো। যতোই হোক তুমি আমার বাচ্চার বাবা, তোমাকে তো আর বদদোয়া দিতে পারি না।"

"তুমি যাচ্ছো যাও। কিন্তু আমার মেয়েকে নিয়ে কোথায় যাচ্ছো।"

লিজা তাচ্ছিল্য হেসে বললো, "তোমার মেয়ে? হাসালে। হতে পারো তুমি জন্মগতভাবে বাবা। কিন্তু আমার মেয়েরও হয়তো লজ্জা হয় তোমাকে বাবা বলে পরিচয় দিতে। আমার মেয়ের দিকে হাত বাড়ানোর চেষ্টাও করবে না।"

আয়মান কিছু বলতে যাচ্ছিলো তার আগেই ওর ফোনে ওর প্রেমিকা কণিকার কল আসে আর ও তার সাথে কথা বলতে বলতে ঘরে চলে যায়। একবারো ফিরে তাকায় না লিজা, আনিসার দিকে।

লিজাও গেট খুলে বেরিয়ে যায় বাপের বাড়ির উদ্দেশ্যে। শেষবার বাড়িটাকে ভালোভাবে দেখে যায়। নিজ ইচ্ছায় আর কখনো আসবে না এ বাড়িতে।

------------------

সেই ঘটনার আজ ছয় বছর পেরিয়ে গেছে। আয়মান প্রেমিকার ধোঁকায় নিঃস্ব হয়ে গেছে। কণিকা তাকে ঠকিয়ে সব টাকা-পয়সা নিয়ে গায়েব হয়ে গেছে। তীব্র অনুশোচনায় পুড়ছে আয়মান। লিজার কাছে যাওয়ার আর সাহস করেনি। কীভাবেই বা যাবে? লিজা বাড়ি ছাড়ার একমাসের মাথায়ই তাদের ডিভোর্স হয়ে গেছে।

অন্যদিকে লিজা মেয়ে নিয়ে বেশ সুখেই আছে। বাপের বাড়ি থাকে না লিজা। আলাদা বাসা নিয়েছে। পড়াশোনা কমপ্লিট করেছিল ঠিকই কিন্তু আয়মান চাকরি করতে দেয়নি তখন কিন্তু ডিভোর্সের পর চাকরি যোগাড় করেছে। বলতে গেলে অনেক সুখেই আছে। সম্মানের সাথে বেঁচে আছে। আয়মান নামের কালো অধ্যায়টাকে জীবন থেকে মুছে দিয়েছে। মাঝেমাঝে মনে পড়লে কেঁদে ভাসায় না উল্টো নিজের মনকে আরো শক্ত করে।

সমাপ্ত

#আত্মসম্মান

10/06/2024

ফেসবুক যুগীয় বাংলা সিনেমা...🥴🥴

নায়কঃ🏃‍♂️
- দৌড়ে এসে মা কে বলছে,, মা,মা, আমি Facebook account খুলেছি!!😌🙇

নায়েকের মাঃ👩‍🦳
- আজ যদি তোর খালা Active থাকতো!!😕🤦‍♀️

নায়কঃ🤵
- মা কি হয়েছিল খালার??😟🤔
ছোটবেলা থেকে দেখছি, তুমি Facebook এ ঘুরে বেড়াও কিছুতেই Like & comment করো না,,,😿😤🤦‍♂️
আজ তোমাকে বলতেই হবে মা, বলতেই হবে!!😓🙄

নায়েকের মাঃ👩‍🦳
- শোন তাহলে,🙁
আজ থেকে ২০ বছর😢আগে, চৌধুরী তার high profile id আর DSLR camera দেখিয়ে তোর খালার সর্বনাশ করেছিল,,,😩
এই অপমান মেনে নিতে না পেরে, তোর খালা id deactivated করে দিয়ে ছিল!!

নায়কঃ🤵
- প্রতিবাদ করলে না কেন মা, কেন?

নায়েকের মাঃ👩‍
- আমরা তো আর চৌধুরীর মতো hi-fi ভাবে pic upload করতে পারতাম না,,,
তাই মুখ বুঝে ঐ অপমান সহ্য করা ছাড়া আমাদের কিছুই করার ছিল না!!

নায়কঃ
- সঙ্গে সঙ্গে Facebook এ login করে চৌধুরীর timeline এ গিয়ে
post দিল,,,
,,,,,,,,,,চৌধুরী ২০ বছর আগে তুই আমার খালার সর্বনাশ করেছিলি, আজ তোর সব পোস্টে হাহা রিয়েক্ট দিয়ে তার প্রতিশোধ নিলাম!!

09/06/2024

#ফিরে_আসা
#পর্বঃ_০২ এবং শেষ

[দরজা খুলতেই আরো বেশী অবাক হলাম, দেখলাম রিয়া একটা বাচ্চা মেয়েকে কোলে নিয়ে দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। বুঝতে পারতেছিনা এমন সময় আমি কি করবো? আমার কি করা উচিৎ!] আগের পর্বের শেষাংশ।

মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে থাকলাম। রিয়াও কথা বলতে ইতস্তত বোধ করতেছে। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থেকে জিজ্ঞেস করলাম, "তুমি?"

রিয়া তার কোল থেকে বাচ্চা মেয়েটাকে নামিয়ে দিয়ে বললো, "মা এখানে দাঁড়াও তো। আমি আসবো সেটা আশা করোনি তাইনা?"

চোখের সামনে সেই পাঁচ বছর আগের রিয়াকে ই যেনো দেখতে পাচ্ছি। মেয়েটার ভেতরটা যতটা নরম বাহির টা ততোটা নরম না। সেই আগের মতো তার কথা বলার ধরণ। রিয়ার মেয়েটার বয়স চার থেকে সাড়ে চার বছরের মতো হবে। হয়তো এখান থেকে গিয়েই বিয়ে করে ফেলেছিলো। মেয়েটা দেখতে একদম তার মায়ের মতো হয়েছে। আমি কিছু না বলে তার আশপাশ দেখতেছিলাম! সে কি একা আসছে নাকি স্বামী নিয়ে আসছে। দেখলাম তার পেছনে একটা সুটকেস ছাড়া আর কিছু নেই। কাউকে দেখতে না পেয়ে বললাম, "একা আসছো?"

-কেনো অন্য কেউ আসার কথা নাকি? আচ্ছা আমরা কি বাইরে দাঁড়িয়ে কথা বলবো নাকি ভেতরে যাবো?

আমি আমতা আমতা করতে করতে বললাম, "আসো!"

ঘরের ভেতর ঢুকে সে তো আগুন, "কি অবস্থা করে রেখেছো ঘরটার, একটু গুছিয়েও তো রাখা যায়।" এই বলতে বলতে সে আমার রুম গোছাচ্ছে। আমি সোফায় বসে রিয়ার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকলাম আর ভাবতেছি মেয়েটা কত সহজ-সরল, এমন একটা মেয়েকে আমি কতো কষ্ট দিয়েছি।

পাশ থেকে ওর বাচ্ছাটা আমার দিকে আঙ্গুল দিয়ে বার-বার বলতেছে, "মাম্মা, মাম্মা এতা কে? (মেয়েটার ভালো করে কথা ফোটেনি)

রিয়া চুপচাপ রুম গোছাতে থাকলো।

হঠাৎ খেয়াল করলাম তার হাতে আমাদের বিয়ের একটা ফটো, এটাই একমাত্র আমাদের বিয়ের স্মৃতি যেটা বিছানার পাশে ছিলো। রিয়ার চোখ দিয়ে নিরবে পানি বেরিয়ে যাচ্ছে। হয়তো বিয়ের কথা মনে পড়তেছে।

সাহস নিয়ে এক নিশ্বাসে বলে ফেললাম, "রিয়া তোমার স্বামী আসেনি? সে কেমন আছে? নিশ্চয় সে আমার মতো এত স্বার্থপর না তাইনা?

রিয়া চোখের পানি মুছতে মুছতে বলতেছে, " হ্যা সে-ও স্বার্থপর তাইতো তোমার সাথে প*রকী*য়া করতে চলে আসলাম। কি আমার সাথে প*রকী*য়া করবে?

রিয়া কি বললো সব কিছু আমার মাথার উপর দিয়ে গেলো, হয়তো আমার ধারণা ই ঠিক সে বিয়ে করেছে। কিন্তু আমার কাছে এটা পরিষ্কার যে আমাকে প*রকী*য়ার কথাটা ইগো দেখিয়ে বলছে। কারণ রিয়া এমন কোন মেয়ে না।

-"মানে"

-সুখ জিনিসটা আমার কপালে নেই মনে করেছিলাম, আমি বিশ্বাস করতাম তোমাকে নিয়ে সুখী হতে না পারা টা আমার ভাগ্যে লিখা আছে, বিধাতা হয়তো আমার কপালে সুখ রাখেননি। তবুও আমি এই বিছানার এক পাশে সারা জীবন পার করে দিতে চেয়েছিলাম। এত কিছুর পরও আমি নিজে কান্না করে আমার দুঃখ গুলো ঢেকে রাখার চেষ্টা করেছিলাম। যেদিন আমি রাগের বসে চলে যাবো বলছি আর তুমিও আমাকে আটকালেনা সেদিন মনে করেছিলাম আমার জীবনের শেষ দিন। কিন্তু আমার হায়াত ছিলো তাই বেঁ*চে গেছি। তোমার কি মনে আছে একদিন প্রচন্ড ঝড়-বৃষ্টি হচ্ছিলো? বিয়ের পর তুমি আমাকে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়েছিলে শুধু মাত্র সেদিন। হয়তো তুমি অবচেতন মনে ছিলে। যায় হউক। সেই রাতের ফসল হচ্ছে আমার মেয়েটা। যেদিন এখান থেকে চলে যাচ্ছিলাম সেদিন আমি আমাদের বাসায় যাইনি। গিয়েছিলাম সু*ইসা*ইড করতে। কিন্তু আমার মেয়েটা সু*ইসা*ইড করতে দেয়নি। আমার মনে হলো পেটের ভিতর থেকে সে বলতেছে, "মা আমি কোন অন্যায় করিনি আমাকে মে*রো না!" এই সব ঘটনা আব্বা(শশুড়) জানতো। কিন্তু আমি বারন করেছিলাম তোমাকে কিছু বলতে, কারণ আমি চাইনি তুমি আমার প্রতি দয়া করো। আমি চেয়েছি তুমি আমাকে ভালোবাসো। আমি চেয়েছি তোমার মাঝে অনুশোচনা বোধ সৃষ্টি হোক। আমার জীবনের কঠিন সময়ে তুমি স্বার্থপরের মতো আমাকে ছেড়ে দিয়েছিলে। কিন্তু আমি পারিনি তোমার কঠিন সময়ে তোমাকে ছেড়ে থাকতে, কেনো জানো? অল্প দিনে বড্ড বেশী ভালোবেসে পেলেছিলাম। এই পাঁচ বছরে সব থেকে বেশী কষ্ট পাচ্ছিলাম তখন যখন মেয়েটা ওর পাপ্পা কোথায় জিজ্ঞেস করতো আর কথাটার আমি কোন জবাব দিতে পারতাম না। আমার ফোন যদি ওর হাতে থাকে যে কেউ কল দিলে ও পাপ্পা পাপ্পা বলে ডাকতে থাকে। একটা মেয়ের জীবনে সন্তানের কাছে তার পিতার পরিচয় দিতে না পারার মতো আর কোন কষ্ট নেই।

আমি নিজের কান কে বিশ্বাস করতে পারতেছিলাম না, মেয়েটা নিজের মধ্যে এতো কষ্ট লুকিয়ে রেখেছিলো?

রিয়া কথা গুলো বলে খাটের এক কোণায় বসে অবুঝ শিশুর মতো হু হু করে কান্না করতে করতে বলতেছে, "তুমি হয়তো ভাবতেছো তাহলে আজকে কেনো আসলাম, কারণ গতকাল তোমার ফোন পেয়ে বুঝেছিলাম তোমার মতো স্বার্থপর একটা মানুষ কখনো কোন কারণ ছাড়া ফোন দিবেনা। মা, বাবা দুজনের মৃ*ত্যুর খবর আমি শুনেছি তারপরেও আমি তোমাকে দেখা দেইনি কারণ তোমার মধ্যে অনুশোচনা বোধ না আসলে কখনো ভালোবসার আসল অর্থটা তুমি বুঝতেনা।

মেয়েটাকে কোলে নিয়ে রিয়ার সামনে গিয়ে বললাম, "আমার মেয়েটার নাম কি রাখছো?"

সে নিচের দিকে তাকিয়ে আছে। স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি তার চোখের পানি টপ-টপ করে নিচে পড়তেছে। আমি পাশে বসে ওকে জ*ড়িয়ে ধরতে চাইলাম। কিন্তু সে এমন জেদ ধরে বসে আছে তাঁকে কোন ভাবেই ধরতে পারতেছিনা। খুব বেশী জোর করে তাকে জড়িয়ে ধরে বললাম, "হুম আজকে বেশী করে কেঁদে নাও এরপর কখনো এই চোখে পানি আসতে দিবো না। ভালো কিভাবে বাসতে হয় সেটা তুমি আমাকে শিখিয়েছো। এখন ভালোবাসার পরীক্ষাটা আমি দিবো।

[প্রিয় পাঠক জানিনা লিখাটা আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে! তবে আমি আমার সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। সমালোচনা করতে হলে গঠনমূলক সমালোচনা করুন। সমালোচনা কাউকে ছোট করার জন্য না সমালোচনা হোক শিখানোর জন্য। সর্বপরি সবাইকে ধন্যবাদ সাথে থাকার জন্য।]

নিয়মিত গল্প পড়তে পেইজটি ফলো করুন 𝐀𝐝𝐧𝐚𝐧 𝐅𝐚𝐫𝐚𝐛𝐢-আদনান ফারাবী

09/06/2024

#গল্পঃ_এক_মুঠো_রোদ্দুর
#পর্বঃ_০৪

মাথা থেকে গাড়ির গ্লাসটা বের করতেই মাথা থেকে র*ক্ত বের হতে শুরু করে। রক্ত দেখে আদিবা অজ্ঞান হয়ে যায়। আদিবার এমন অবস্থা দেখে আদনান আদিবাকে কোলে তুলে অন্য সিটে শুইয়ে দেয়। আদনান এবার লোকটার মাথায় ভালো ভাবে বেন্ডেজ করে দিয়ে আদিবার চোখে পানি দিয়ে জ্ঞান ফিরিয়ে আনে।

আদিবা চোখ খুলতেই দেখে আদনান দাঁড়িয়ে আছে। আদিবা তাড়াতাড়ি করে উঠে বলল।

-- সরি স্যার। আসলে হঠাৎ করে কি হয়ে গেলো বুঝতে পারিনি।

-- তোমাকে আর আমার এসিস্ট্যান্ট হয়ে কাজ করতে হবেনা। তুমি বাসায় চলে যাও।

-- কেন স্যার?

-- কারণ তোমাকে দিয়ে এসব হবেনা।

এই কথা বলে আদনান হাটা শুরু করে আর আদিবা আদনানের পিছনে যেতে যেতে বলল,

-- স্যার আর এমন হবে না। আমাকে প্লিজ আরেকটা সুযোগ দিন আপনার পাশে থাকার।

কথাটা শুনে আদনান দাঁড়িয়ে যায়। আর সে আদিবার দিকে তাকাতেই আদিবা আবার বলল,

-- না মানে স্যার আমাকে আরেকটা সুযোগ দিন। আমার চাকরি টা খুব দরকার। আমার এই চাকরি চলে গেলে আমি আর বাবা কীভাবে চলব স্যার?

এই কথা বলে আদিবা ফেলফেল করে কান্না করে দেয়।

-- এটা কি চোখ নাকি সমুদ্র? কিছু হলেই চোখে পানি চলে আসে?

-- স্যার আমার চাকরি থেকে বাদ দিবেন না প্লিজ।

-- কান্না থামাও। এটাই কিন্তু লাস্ট সুযোগ।

-- ধন্যবাদ স্যার। আপনি খুব ভালো।

আদনান নিজের চেম্বারে গিয়ে বসে। আদিবা এসে আদনানের সামনে এসে বলল -- স্যার এখন তো কোনো কাজ নেই। চলুন আমরা ঘুরে আসি।

-- ঘুরাঘুরির মুড আমার নেই। আর কে বলছে কাজ নেই?

-- আমি বলছি।

-- বস কি আমি নাকি তুমি?

-- আপনি।

-- তাহলে কাজ নেই বললে কেন? পাশের রুমে আমার কয়েকটি ফাইল আছে ওই গুলো গুছিয়ে রেখে দাও।

-- ঠিক আছে স্যার।

এই কথা বলে আদিবা আদনানের দিকে তাকিয়ে মনে মনে বলতে থাকে।

-- কি সুন্দর একটা একটা কথা বললাম। কই খুশি হবে তা না করে কাজ ধরিয়ে দিল। হনুমান একটা। এর মতো আন রোমান্টিক মানুষ আমি আর দেখিনি।

-- এখনও দাঁড়িয়ে আছো কেন?

-- সরি স্যার যাচ্ছি।

এই কথা বলে আদিবা চলে গেলো। আর সে নিজের কাজ করতে থাকে। আদিবা সব ফাইল এক সাথে নিয়ে যখন হাটতে যাবে তখনই কিছু একটার সাথে পা লেগে সব ফাইল পড়ে যায়। সাথে সাথে আদিবা মাথায় হাত দিয়ে বলে-- যাহ এবার বুঝি আমার চাকরি টা গেল?

আদিবা আদনানের চেম্বারে উঁকি দিয়ে দেখে আদনান নেই। আদিবা একটা দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে নিজেকে নিজে বলতে থাকে -- আদিবা তোকে দিয়ে কোনো একটা কাজ ঠিক ভাবে হয়না। ডাক্তারের থেকে মন সরিয়ে কাজে মন দে।

আদিবা কোনোরকমে ফাইল গুলো ঠিক করে রেখে বাহিরে আসে।

-- স্যার সব ঘুছিয়ে দিয়েছে।

-- এই সামান্য একটা কাজ করতে ত্রিশ মিনিট লেগেছে।

ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলল। আদিবা কিছু বললনা। তখনই আদনানের চেম্বারে প্রবেশ করে রানী বেগম।

-- আম্মু তুমি এখানে?

আদনানের কথা শুনে আদিবা ও তাকাল। রানী বেগম বলল -- শপিংমলে যাচ্ছিলাম। তাই ভাবলাম তোর সাথে একটু দেখা করে যাই।

-- ওহ আচ্ছা। মিস আদিবা। আমাদের জন্য দুকাপ চা বানিয়ে নিয়ে আসুন। চায়ে চিনি কম দিবেন।

ঠিক আছে বলে আদিবা চলে গেলো।

-- কিরে মেয়েটা কে? এর আগে তো দেখিনি।

-- আজকেই প্রথম জইন করছে। আমার এসিস্ট্যান্ট হয়ে।

-- মেয়েটা তো খুব মিষ্টি।

-- মিষ্টি না ছাঁই কোনো একটা কাজ ঠিক করে করতে পারেনা।

-- ধীরে ধীরে শিখে যাবে।

কথার মাঝখানে আদিবা চা নিয়ে আসে। আর দুজনকে চা দিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে থাকে।

রানী বেগম চা খেয়ে বলল -- বাহ তুমি তো খুব ভালো চা বানাতে পারো।

-- ধন্যবাদ আন্টি।

-- নাম কি তোমার?

-- আদিবা রহমান।

-- খুব মিষ্টি নাম। আদনান।

-- বলো।

-- আদিবার কোনো কাজ না থাকলে আমি ওকে নিয়ে একটু শপিংমলে যাই। ভাবছি তোকে যেতে বলব।

-- ঠিক আছে। আর আদিবা আপনি শপিংমল থেকে বাসায় চলে যাবেন। হাসপাতালে আসতে হবে না।

-- আমি আবার কি করলাম?

আমি বলছি তুমি কিছু করছ? আজ তোমার ছুটি। কাল ৯ টার আগে হাসপাতালে উপস্থিত থাকবে।

-- ঠিক আছে স্যার।

এবার আদিবা রানী বেগমের সাথে বেড়িয়ে পড়ে। দু'জনে গাড়িতে উঠে বসে।

-- আদিবা তোমার মা-বাবা আছে?

-- বাবা আছে কিন্তু মা নেই। মা আমার জন্মের সময় মারা যায়।

-- ওহ আচ্ছা। তোমাদের বাসা কোথায়?

আদিবা ঠিকানা বলল।

-- তুমি পড়াশোনা না করে চাকরি কেন করছ?

-- আসলে আমার বাবা খুব অসুস্থ। আমি যদি কোনো কিছু না করি আমাদের সংসার কীভাবে চলবে? তাই আদনান স্যারকে অনেক রিকুয়েষ্ট করে চাকরি টা নিলাম। কিন্তু মনে হয়না আমি এই চাকরি বেশি দিন করতে পারবো।

-- কেন?

-- স্যার বার বার হুমকি দেয়। কিছু ভুল হলেই বলে চাকরি নট।

রানী বেগম একটা হাসি দিয়ে বলল -- আসলে আমার ছেলেটা রাগী হলেও খুব ভালো মনের একটা মানুষ।

-- আচ্ছা আন্টি স্যারের তো বিয়ের বয়স হয়ে গেছে। ওনাকে বিয়ে করাচ্ছেন না কেন?

-- আমি তো কতবার বলছি। কে শুনে কার কথা? বলে যখন সময় হবে তখন সে নিজেই বলবে।

কথা বলতে বলতে দুজনেই শপিংমলে পৌছে যায়। কেনাকাটা শেষ করে বেরিয়ে আসে। আর আদিবা আদিবার বাসায় চলে যায়।

-- আদিবা আজ প্রথম দিন কেমন কেটেছে?

-- আর বলো না।

আদিবা তার বাবাকে সব কথা বলল।

-- তুই তো এমন ছিলি না? হঠাৎ তোর কি হলো?

-- আমিও জানিনা। আচ্ছা আমি ফ্রেশ হয়ে আসি।

অন্যদিকে আদনান হাসপাতাল থেকে বাসায় চলে যায়। আদনান ফ্রেশ হয়ে নিজের রুমে বসে থাকে। তখনই রানী বেগম আদনানের রুমে আসে।

-- আদনান।

-- হুম কখন ফিরলে?

-- তুই আসার কিছুক্ষণ আগেই।

-- কেনাকাটা সব হইছে?

-- হুম। মেয়েটা কিন্তু খুব মিষ্টি। তোর সাথে খুব ভালো মানাবে।

-- কোন মেয়ে?

-- তোর এসিস্ট্যান্ট, আদিবার কথা বলছি।

-- আমাকে দেখে কোনো দিক থেকে পাগল মনে হয়?

-- কেন?

-- এই তাঁর ছেড়া মেয়ের সাথে আমাকে মানাবে বলছ? এর মতো মেয়ে আমি দুটি দেখিনি।

-- কি বলছিস এসব?

-- বাদ দাও। খাবার রেডি করো খিদে পেয়েছে।

-- আচ্ছা খেতে আয়।

আদনান খাওয়া দাওয়া খেয়ে নিজের রুমে আসে। তখনই আদনানের ফোনে একটা মিস কোল আসে। আদনান ফোন হাতে নিয়ে বলে এই যুগেও মানুষ মিস কল দেয়?

আদনান সেই নাম্বারে কল বেক করে।

--হ্যালো কে আপনি?

-- আমি আদিবা।

-- কোন আদিবা?

-- আপনার এসিস্ট্যান্ট।

-- ওহ তাইতো ভাবি এই যুগেও মানুষ মিস কল দেয়।

-- আসলে স্যার আমার ফোনে মাত্র এক টাকা ছিল।

-- কি জন্য কল দিলে? আর তুমি আমার নাম্বার কোথায় পেয়েছ?

-- এতো বড় ডাক্তার। আপনার নাম্বার ম্যানেজ করা কোনো ব্যাপার হলো?

-- কার থেকে নিয়েছ সেটা বলো।

-- আপনার আম্মুর থেকে। কি করছেন খাবার খেয়েছেন?

-- হ্যাঁ।

-- ওমা আমাকে জিজ্ঞেস করবেন না?

-- প্রয়োজন নেই। কি বলার জন্য ফোন দিয়েছ?

-- স্যার কাল কখন আসবেন হাসপাতালে?

-- ৯ টায়। ঠিক আছে রাখলাম ঘুমব।

এই কথা বলে আদনান ফোন কেটে দেয়। আদিবা আদনানের চোদ্দগুষ্টিকে উদ্ধার করে ঘুমিয়ে পড়ে।
সকালে আদিবা খুব তাড়াতাড়ি করে ঘুম থেকে উঠে ৯ টার আগেই হাসপাতালে চলে আসে। ৯ টা বেজে গেলো কিন্তু আদনান এখনও আসেনি। আদিবা গিয়ে আদনানের চেয়ারে বসে। আদনানের কথা মনে পড়তেই আবার উঠে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই আদনান নিজের চেম্বারে প্রবেশ করে। তবে আজ আদনান একা আসেনি। সাথে একটা মেয়ে আছে। মেয়েটা আদনানের হাত ধরে আছে। এটা দেখে আদিবা হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। আদিবা আদনানের পাশে থাকা মেয়েটাকে সহ্য করতে পারছেনা। আর তার মনে মেয়েটাকে নিয়ে হাজার প্রশ্ন তৈরি হতে থাকে।

চলবে?

নিয়মিত গল্প পড়তে 𝐀𝐝𝐧𝐚𝐧 𝐅𝐚𝐫𝐚𝐛𝐢-আদনান ফারাবী পেইজটি ফলো করুন।

Want your public figure to be the top-listed Public Figure in Dhaka?
Click here to claim your Sponsored Listing.

Category

Website

Address


Dhaka

Other Public Figures in Dhaka (show all)
Shaquie Ahmed Shaquie Ahmed
Nayapaltan
Dhaka

Regardless of Shaquie Ahmed's various contribution towards the music scenario of Bangladesh, he has brought before some amazing and soothing lyrics which has been instantly appreci...

Prof. Dr. Mohar Ali Prof. Dr. Mohar Ali
BUET
Dhaka

Dhaka Guitar Workshop Dhaka Guitar Workshop
Ramna
Dhaka

marjuk russel marjuk russel
Dhaka, 1239

Sports Reporter, Presenter & Talk Show Host

Strictly Business Collective Strictly Business Collective
Dhaka, 1344

আমার অফিসিয়াল পেইজে আপনাদের সবাইকে স্বাগতম।

RJ Jacklin RJ Jacklin
Dhaka

The journey of being a RJ from 2007 to till 2016 will always amaze me. I will always cherish the mem

Hanif Sanket Hanif Sanket
Dhaka

‘Hanif Sanket’ has been the popular name in every walk of life throughout the country

Faria Faria
Dhaka

Kazi Arif Kazi Arif
78/C, Indira Road, Dhaka
Dhaka, 1221

Meena Meena
Dhaka

http://jobsdhaka.com [email protected] join JobsDhaka.com http://www.facebook.com/group.php?gid=105384333345

Nasrin Bithy Nasrin Bithy
Dhaka