Hope Agro Farm
হোপ এগ্রো ফার্ম একটি ছাগল উৎপাদন কেন্দ্র যেখানে বিভিন্ন দেশি ও বিদেশি জাতের ছাগল পাওয়া যায়
ছাগল পালনের ক্ষেত্রে নতুন ছাগলের মান যাচাই করে কেনা যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি কেনার পর এর যত্নও গুরুত্বপূর্ণ। আসুন জেনে নেই খামারে নতুন ছাগল কেনার পর করণীয় সম্পর্কে-
খামারে নতুন ছাগল কেনার পর করণীয়ঃ
১। খামারের জন্য ক্রয়কৃত ছাগল অনেক সময় অসুস্থ থাকতে পারে বা কোন রোগের জীবানু বহন করতে পারে তাই ক্রয়কৃত ছাগলকে কমপক্ষে ৩ সপ্তাহ বা ২১ দিন আলাদা জায়গায় রেখে পর্যবেক্ষণ করতে হবে।
২। ক্রয়কৃত ছাগল বাইরে থেকে বিভিন্ন রোগের জীবানু বহন করে নিয়ে খামারের অন্য ছাগলগুলোকে আক্রান্ত করতে পারে তাই ছাগলটি ভালো কোন জীবাণুনাশক দিয়ে জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
৩। ছাগলটিকে ভালো ভাবে কৃমি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যদি গর্ভবতী থাকে সেক্ষেত্রে ভেটেরিনারি ডাক্তার এর পরামর্শ অনুযায়ী কৃমি নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
৪। ছাগলের সবথেকে ভয়ংকর রোগ পিপিআর থেকে রক্ষা পেতে অবশ্যই ক্রয়কৃত ছাগলকে পিপিয়ারের ভ্যাকসিন দিতে হবে। এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার থাকলে পশু হাসপাতালে যোগাযোগ করে পরামর্শ নিতে হবে।
৫। উপরের ধাপগুলো সম্পন্ন করার পর ছাগলকে গোসল করিয়ে তারপর মুল খামারে নিয়ে আসতে হবে।
ছাগলের পি পি আর রোগের লক্ষণ ও প্রতিরোধঃ
বর্তমানে বাংলাদেশে ছাগল পালনের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাঁধা হল পি পি আর।
ছাগলের পি পি আর রোগের লক্ষণঃ
• রোগের শুরুতে ১০৫-১০৭ ডিগ্রি ফাঃ জ্বর হয়, এর সাথে পাতলা পায়খানা শুরু হয়।
• ছাগলের নাক দিয়ে স্লেম্মা নির্গত হয় এবং নাকে ও মুখে ঘা হয়।
• নাসারন্ধের চারধারে স্লেম্মা জমে যায়।
• গর্ভবর্তী ছাগলের গর্ভপাত ঘটে।
• ছাগলের দাঁড়ানোর ভঙ্গি অনেকটা কুঁজো হয়ে যায়।
ছাগলের পি পি আর রোগের প্রতিরোধঃ রোগ হওয়ার পূর্বে সুস্থও ছাগলকে এ রোগের টিকা দিয়ে রোগ প্রতিরোধ করাই সবচেয়ে উত্তম ব্যবস্থা। ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত পদক্ষেপ সমূহ পুরোপুরি মেনে চলতে হবে। বাচ্চার বয়স ৪ মাস হলেই এ রোগের টিকা দিতে হবে।
ছাগলের ক্ষুরা রোগের লক্ষণঃ
• ছাগল আক্রান্ত হলে কাপুনি দিয়ে জ্বর আসে।
• মুখ থেকে লালা পড়তে থাকে।
• মুখ ও পায়ে ফোস্কা দেখা দেয় এবং পরে ফেটে গিয়ে ১৮-২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘায়ে পরিণত হয়।
ছাগলের ক্ষুরা রোগের প্রতিকারঃ সময়মত টিকা দিতে হবে রোগাক্রান্ত ছাগলকে পৃথক করে রাখতে হবে। মৃত্যু ছাগলকে দূরে পুঁতে রাখতে হবে। রোগাক্রান্ত ব্যবহৃত সামগ্রী গর্তে পুঁতে রাখতে হবে বা পুড়িয়ে ফেলতে হবে।
ছাগলের ওলান প্রদাহ বা ম্যাসটাইটিস রোগের লক্ষণ ও প্রতিরোধঃ
ছাগলের ওলান প্রদাহ বা ম্যাসটাইটিস রোগের লক্ষণ সমুহঃ
• গায়ে জ্বর থাকে, ওলান ভীষণ গরম ও শক্ত হয়, বাটসহ ফুলে ওঠে।
• বাট দিয়ে কখনও পাতলা আবার জমাট বাঁধা রক্ত মিশ্রিত দুধ আসে।
• এক পর্যায়ে বাঁটগুলো অত্যন্ত শক্ত হয়ে যায় এবং দুধ বের হয় না।
• অত্যধিক মারাক্তক অবস্থায় আক্রান্ত বাটে পচন ধরে ও এক পর্যায়ে বাট পচে খসে পড়ে।
ছাগলের ওলান প্রদাহ বা ম্যাসটাইটিস রোগের প্রতিরোধঃ পরিষ্কার পরিচ্চন্ন স্থানে রাখতে হবে। বাটে সময় যাতে ক্ষত সৃষ্টি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আক্রান্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক চিকিৎসা ব্যবস্থা নিতে হবে।
নবজাত বাচ্চা ছাগলের যত্নঃ
• বাচ্চার শ্বাস প্রশ্বাস চালু করা এবং বাচ্চার শরীর পরিষ্কার করা ও শুকানো।
• বাচ্চার নাভি রজ্জু পরিষ্কার জীবাণুমুক্ত কাঁচি দিয়ে কেটে দিতে হবে।
• নাভি কাটার পর উক্ত স্থানে টিংচার আয়োডিন বা টিংচার বেনজীন জীবাণুনাশক ওষুধ লাগাতে হবে।
• বাচ্চাকে শাল দুধ বা কলস্ট্রাম পান করাতে হবে।
ছাগলের বাসস্থানঃ
ছাগলের রাত্রিযাপন, নিরাপত্তা, ঝড়বৃষ্টি, রোদ, বন্যপ্রাণী ইত্যাদির কবল থেকে বাঁচার জন্য বাসস্থান প্রয়োজন রয়েছে। পারিবারিক পর্যায়ে ছাগল পালনের ক্ষেত্রে আলাদা বাসস্থান ব্যবস্থা তেমন দেখা যায় না। তবে এক সঙ্গে অনেক ছাগল পালনের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানসন্মত বাসস্থান করা প্রয়োজন হয়।
পূর্ব- পশ্চিম লম্বা-লম্বি করে দক্ষিন দিকে খোলা উন্মুক্ত স্থানে ছাগলের ঘর নির্মাণ করতে হবে। অপেক্ষাকৃত উঁচু স্থানে ঘর নির্মাণ করা উচিৎ, যাতে পানি নিষ্কাশনে কোন জটিলতা দেখা না দেয়। বসবাসের ঘর সংলগ্ন বা অন্য কোন উচুস্থানে ও খড়/ ছন/ চাটাই/ টিন প্রভৃতি দিয়ে প্রতি ছাগলের জন্য ৫-৬ বর্গফুট করে স্থান দিয়ে ছাগলের বাসস্থান তৈরি করা যায়। ছাগল উঁচু জায়গায় থাকতে পছন্দ করে। ঘরের ভিতর মাচা করে দিতে হবে। মাচার উচ্চতা মেঝে থেকে ২.৫-৩ ফুট। মাচা থেকে ছাদের উচ্চতা ৫-৬ ফুট। মাটির মেঝে হতে পর্যাপ্ত বালি দিতে হবে যাতে ঘর শুষ্ক থাকে। মাচা থেকে উপরের অংশ জি.আই/ বাঁশের নেট প্রস্তুত করে আবৃত করতে হবে। বৃষ্টির ছাট যেন ঘরে ঢুকতে না পারে সে জন্য ঘরের চাল ১-২ ফুট বাড়িয়ে ঝুলিয়ে দিতে হবে। শীতকালে মাচার উপর ৪-৫ ইঞ্চি পুরু করে খড় বিছিয়ে দিতে হবে এবং মাচার উপরের খোলা অংশ চট দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।
খামারের জায়গা নির্বাচন / অবস্থান ও বাসস্থানঃ
• জায়গা উঁচু হতে হবে, যেন বৃষ্টির পানি না জমে।
• প্রধান সড়ক হতে দূরে তবে যোগাযোগ ব্যবসস্থা ভাল হতে হবে।
• খোলামেলা পরিবেশ হতে হবে।
• কাকাড় ও বালি মিশ্রিত স্থান যেখানে পানি সহজে শুকিয়ে যায়।
• পানি নিষ্কাশনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকতে হবে।
• ঘনবসতি এলাকা এবং শহর হতে দূরে হতে হবে।
• পানি ও বিদ্যুৎ সরবরাহও ব্যবস্থা ভাল হতে হবে।
• শ্রমিক মজুরী কম ও জায়গার সহজলভ্য এলাকা নির্বাচন করা উত্তম।
• পর্যাপ্ত ফলের গাছ ও চারণ ভূমি আশেপাশে থাকতে হতে।
দৈনিক কার্যক্রম সূচিঃ
ক) সকাল ৭-৯ টা
• ছাগলের সার্বিক অবস্থা ও আচরণ পরীক্ষা করতে হবে।
• পানির পাত্র/ খাবার পাত্র পরিষ্কার করা এবং পাত্রে খাবার ও পানি সরবরাহ করতে হবে।
• খাবার দেবার পর কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে আচরণ পরীক্ষা করতে হবে।
• ছাগল সকালে বের করার পর ছগলের ঘর নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
খ) সকাল ১১-১২ টা
• খাবার ও পানি সরবরাহ করতে হবে।
গ) বিকাল ৪-৫ টা
• খাদ্য ও পানি সরবরাহ করতে হবে।
• দরজা বন্ধ করতে হবে।
• আচরণ পরীক্ষা করতে হবে।
সাপ্তাহিক কাজ
• খাদ্য তৈরি করতে হবে।
• ঘর জীবাণুনাশক পানি দ্বারা পরিষ্কার করতে হবে।
• প্রয়োজনে টিকা প্রদান বা কৃমিনাশক ওষুধ খাওয়াতে হবে।
১৮. এন্ড্রোপোগন ঘাস বছরের কোন কোন সময় চাষ করা যায়?
• নেপিয়ার ঘাসের অনুরূপ সময়েই চাষ করা যায়। বছরের যে কোন সময়ে চাষ করা যায় তবে বসন্ত কালে বিশেষ করে ফাল্গুণ-চৈত্র মাসে এন্ড্রোপোগন ঘাস চাষ করা উত্তম।
১৯. কোন ধরণের মাটিতে এন্ড্রোপোগন ঘাস চাষ করা যেতে পারে?
• নেপিয়ার ঘাস যে ধরণের মাটিতে চাষ করা যায় ঠিক একই ধরণের মাটি ও স্থানে অনায়াসে চাষ করা যায়, লবণাক্ত ও জলাবদ্ধ স্থান ছাড়া বাংলাদেশের সব ধরণের মাটিতেই এন্ড্রোপোগন ঘাসের চাষ করা যেতে পারে। পাহাড়ের টিলা বা আংশিক ঢালু মাটিতে এ ঘাস ভাল জন্মায় না।
২০. এন্ড্রোপোগন ঘাস চাষের জন্য জমি কিভাবে তৈরি করতে হবে?
• আগাছা পরিষ্কার করে রসালো মাটিতে বেশ কয়েকবার (২-৩ বার) চাষ করে অথবা বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর পরই কাদা বা পলি মাটিতে এন্ড্রোপোগন ঘাসের মোথা বা কাটিং লাগানো যেতে পারে।
২১. প্রতি হেক্টর জমিতে কত সংখ্যক কাটিং বা মুথা লাগানো যেতে পারে?
• ত্রিশ হাজার মুথা লাগাতে হবে।
২২. এন্ড্রোপোগন ঘাস চাষের ক্ষেত্রে সার প্রয়োগের নিয়ম কী রকম হতে পারে?
• জমি তৈরির সময় প্রতি হেক্টরে ইউরিয়া, টিএসপি এবং এমওপি সার যথাক্রমে ৫০:৭০:৩০ কেজি অনুপাতে প্রয়োগ করতে হবে।
২৩. এন্ড্রোপোগন ঘাস লাগানোর পর কি পরিমাণ সার দিতে হবে?
• ঘাস লাগানোর এক মাস পরে প্রতি হেক্টরে ৫০-৭৫ কেজি ইউরিয়া এবং প্রতি কাটিং-এর পর পরই একই পরিমাণে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হবে।
২৪. এন্ড্রোপোগন ঘাসের কাটিং-এর দূরত্ব কতটুকু হতে হবে?
• চারা থেকে চারা ৭০ সে.মি. এবং কাটিং থেকে কাটিং ৩৫ সে.মি. দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
২৫. এন্ড্রোপোগন ঘাস চাষে সেচ দেয়ার প্রয়োজন আছে কি?
• খরা মৌসুমে প্রতি ১৫-২০ দিন পর পর সেচ দেয়ার প্রয়োজন হয়।
২৬. এন্ড্রোপোগন ঘাস কত বয়সে কাটা যায়?
• গ্রীষ্মকালে ২৫-৩০ দিন বয়সে এবং শীতকালে ৩০-৪০ দিন বয়সে কাটা যেতে পারে (সেচ সুবিধার প্রেক্ষাপটে)।
২৭. এন্ড্রোপোগন ঘাস বছরে কতবার কাটা যায়?
• প্রথম বছর ৭-৯ বার, ২য়, ৩য় এবং ৪র্থ বছরে ৯-১১ বার কাটা যায়।
২৮. বছরে প্রতি হেক্টর জমি থেকে কি পরিমাণ এন্ড্রোপোগন ঘাস উৎপাদিত হতে পারে?
• প্রতি হেক্টরে ১০০-১৩০ টন।
২৯. এন্ড্রোপোগন ঘাসের পুষ্টিমাণ কি রকম হতে পারে?
•প্রতি কেজিতে শুষ্ক পদার্থ ৩৭০ গ্রাম, জৈব পদার্থ ৩৩৮ গ্রাম, আমিষ ২২ গ্রাম, আঁশ ১৪৬ গ্রাম, পাচ্যতা ৬৪% এবং বিপাকীয় শক্তি ৩.৭৮ মেগা জুল।
৩০. এন্ড্রোপোগন ঘাস কিভাবে সংরক্ষণ করে অনেক দিন পর্যন্ত খাওয়ানো যেতে পারে?
• নেপিয়ার ঘাসের অনুরূপে সাইলেজ পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করে খাওয়ানো যেতে পারে।
৩১. স্প্লেনডিডা ঘাস বছরের কোন কোন সময়ে রোপণ করা যায়?
• বছরের যে কোন সময়ে তবে বসন্ত ঋতুতে বিশেষ করে ফাল্গুণ-চৈত্র মাসে স্প্লেনডিডা ঘাস চাষ করার অতি উত্তম সময়।
৩২. কোন ধরণের জমিতে স্প্লেনডিডা ঘাস আবাদ করা যেতে পারে?
• জলাবদ্ধ, লোনা এবং পাহাড়ি ঢালু জমি ছাড়া বাংলাদেশের সব ধরণের জায়গায় এই ঘাস চাষ করা যেতে পারে।
৩৩. স্প্লেনডিডা ঘাস চাষের জন্য কিভাবে জমি তৈরি করতে হবে?
• নেপিয়ার এবং এন্ড্রোপোগন ঘাস চাষের অনুরূপ জমি তৈরি করে স্প্লেনডিডা ঘাসের মুথা বন্যা পরবর্তী সময়ে লাগাতে হবে।
৩৪. স্প্লেনডিডা ঘাস চাষের ক্ষেত্রে প্রতি হেক্টর জমিতে কাটিং-এর সংখ্যা এবং দূরত্ব কী পরিমাণ হতে হবে?
• প্রতি হেক্টরে ৩০-৪০ হাজার মুথা/কাটিং লাগাতে হবে। এক্ষেত্রে চারা থেকে চারা ৭০ সে.মি. এবং কাটিং থেকে কাটিং-এর দূরত্ব ৩৫ সে.মি. হতে হবে।
৩৫. স্প্লেনডিডা ঘাস আবাদের সময় কী নিয়মে সার প্রয়োগ করতে হবে?
• জমি তৈরির সময়ে প্রতি হেক্টরে ইউরিয়া, টিএসপি এবং এমওপি যথাক্রমে ৫০:৭০:৩০ কেজি অনুপাতে প্রয়োগ করতে হবে।
৩৬. ঘাস লাগানোর পরবর্তী সময়ে কী নিয়মে সার প্রয়োগ করতে হবে?
• প্রতি হেক্টরে ঘাস লাগানোর এক মাস পরে ৫০-৭৫ কেজি ইউরিয়া এবং প্রতি কাটিং-এর পরে একই পরিমাণে ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হবে।
৩৭. চাষের ক্ষেত্রে বছরের কোন সময়ে পানি সেচ দেয়ার দরকার হয়?
• খরা মৌসুমে প্রতি ১৫-২০ দিন পরপর পানি সেচ দেয়ার দরকার হয়।
৩৮. স্প্লেনডিডা ঘাস বছরে কতবার কাটা যায়?
• গ্রীষ্মকালে প্রতি ২৫-৩০ দিন পরপর এবং শীতকালে সেচের সুবিধা থাকলে প্রতি ৩০-৪০ দিন পরপর স্প্লেনডিডা ঘাস কাটা যায়।
৩৯. বছরে কতবার স্প্লেনডিডা ঘাস কর্তণ করা যায়?
• প্রথম বছরে ৭-৯ বার এবং ২য়, ৩য় ও ৪র্থ বছরে ৯-১১ বার কর্তণ করা যায়।
৪০. এক বছরে প্রতি হেক্টরে কি পরিমাণ কাঁচা স্প্লেনডিডা ঘাস উৎপাদিত হতে পারে?
• ১০০-১৩০ টন ঘাস উৎপাদিত হতে পারে।
৪১. প্রতি কেজি ঘাসের পুষ্টিমাণ কি রকম?
• প্রতি কেজি ঘাসে শুষ্ক পদার্থ ৩৩৫ গ্রাম, জৈব পদার্থ ৩২৭ গ্রাম, আমিষ ২১ গ্রাম, আঁশ ১৮৩ গ্রাম, পাচ্যতা ৬০% এবং বিপাকীয় শক্তি ৩.২০ মেগা জুল থাকতে পারে।
৪২. স্প্লেনডিডা ঘাস কিভাবে সংরক্ষণ করে খাওয়ানো যেতে পারে?
• সাইলেজ বা শুকিয়ে হে তৈরির মাধ্যমে স্প্লেনডিডা ঘাস সংরক্ষণ করে খাওয়ানো যেতে পারে।
৪৩. বছরের কোন সময়ে রোজা জাতের ঘাস রোপণ করা যায়?
• বছরের যে কোন সময়ে রোজা জাতের ঘাস রোপণ করা যায় তবে ফাল্গুণ-চৈত্র মাস উত্তম সময়।
৪৪. কোন ধরণের জমিতে রোজা জাতের ঘাস রোপণ করা যেতে পারে?
• এ ঘাস মধ্যম মানের লবণাক্ততা সহ্য করতে পারে। এ ছাড়া জলাবদ্ধ ও পাহাড়ী ঢাল ছাড়া বাংলাদেশের সব জায়গাতেই এ ঘাস জন্মায়।
৪৫. রোজা জাতের ঘাস চাষ করতে কিভাবে জমি তৈরি করতে হবে?
• আগাছা পরিষ্কার করে ২-৩ বার চাষ দিতে হবে। এ ছাড়া বন্যা পরবর্তী সময়ে পানি নেমে যাওয়ার পর কাদা মাটিতে ঘাসের মুথা লাগানো যেতে পারে।
৪৬. প্রতি হেক্টর জমিতে কত সংখ্যক মুথা লাগানো যেতে পারে?
• ৩৫-৪০ হাজার মুথা লাড়ানো যেতে পারে। চারা থেকে চারা ৭০ সে.মি. এবং কাটিং থেকে কাটিং ৩৫ সে.মি. দূরত্ব থাকতে পারে।
৪৭. রোজা ঘাস চাষে কিভাবে সার প্রয়োগ করা হয়?
• প্রতি হেক্টর জমি তৈরির সময়ে ৫০:৭০:৩০ কেজি অনুপাতে যথাক্রমে ইউরিয়া, টিএসপি এবং এমওপি সার প্রয়োগ করতে হবে।
৪৮. ঘাস লাগানোর পর আবার সার দেয়ার প্রয়োজন হয় কি?
• লাগানোর এক মাস পর প্রতি হেক্টরে ৫০-৭৫ কেজি ইউরিয়া এবং প্রতি কাটিং-এর পরে একই মাত্রায় ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হবে।
৪৯. রোজা ঘাস চাষে সেচ দেয়ার প্রয়োজন হয় কি?
• খরা মৌসুমে ১৫-২০ দিন পরপর সেচ দেয়ার প্রয়োজন হয়।
৫০. বছরে কোন কোন সময়ে ঘাস কাটা যায়?
•গ্রীষ্মকালে প্রতি ৩০-৩৫ দিন পরপর এবং সেচ সুবিধা সাপেক্ষে শীতকালে প্রতি ৩৫-৪০ দিন পরপর ঘাস কাটা যেতে পারে।
৫১. বছরে কতবার ঘাস কাটা যায়?
• প্রথম বছর ৭-৮ বার এবং ২য়, ৩য় ও ৪র্থ বছরে ৮-১০ বার কাটা যায়।
৫২. প্রতি হেক্টর জমিতে কী পরিমাণ রোজা ঘাস উৎপাদিত হয়?
• প্রতি হেক্টরে ৭০-৯০ টন ঘাস উৎপাদিত হয়।
৫৩. প্রতি কেজি ঘাস থেকে কী পরিমাণ পুষ্টি পাওয়া যেতে পারে?
• শুষ্ক পদার্থ ২২০ গ্রাম, জৈব পদার্থ ১৯৯ গ্রাম, আমিষ ২৬ গ্রাম, আঁশ ১১৬ গ্রাম, পাচ্যতা ৬০% এবং বিপাকীয় শক্তি ২.১০ মেগা জুল।
৫৪. রোজা ঘাস কি পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা যেতে পারে?
• হে হিসাবে শুকিয়ে অথবা সাইলেজ পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করে নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত খাওয়ানো যেতে পারে।
৫৫. জাম্বু ঘাস বছরের কোন কোন সময়ে চাষ করা যায়?
• বছরের যে কোন সময় রোপণ করা যায় তবে উত্তম সময় হচ্ছে ফাল্গুণ-চৈত্র মাসে।
৫৬. কোন ধরণের মাটিতে জাম্বু ঘাস চাষ করা যায়?
• জলাবদ্ধ, পাহাড়ী ঢাল এবং লবণাক্ত স্থান ছাড়া বাংলাদেশের সব জায়গায় এ ঘাস চাষ করা যায়।
৫৭. জাম্বু ঘাস চাষের জন্য কিভাবে জমি চাষ করা যায়?
• আগাছা পরিষ্কার করে ৩-৪ বার চাষ দিয়ে জমি তৈরি করতে হবে অথবা বন্যা পরবর্তী সময়ে কাদা মাটিতে ঘাস লাগানো যেতে পারে।
৫৮. জাম্বু ঘাস চাষের ক্ষেত্রে প্রতি হেক্টর জমিতে কয়টি কাটিং লাগাতে হবে?
• সাত কেজি অথবা ৩৫-৪০ হাজার কাটিং/মুথা লাগাতে হবে।
৫৯. জাম্বু ঘাস রোপণে কাটিং এবং লাইন থেকে লাইনের দূরত্ব কতটুকু থাকতে হবে?
• সারি থেকে সারি ৭০ সে.মি. এবং কাটিং থেকে কাটিং ৩৫ সে.মি.।
৬০. জাম্বু ঘাস চাষে সার প্রয়োগের নিয়মাবলী কি কি?
• জমি তৈরির সময় ইউরিয়া, টিএসপি এবং এমওপি যথাক্রমে ৫০:৭৯:৩০ কেজি অনুপাতে প্রতি হেক্টরে দিতে হবে।
৬১. ঘাস লাগানো এবং প্রতি কাটিং-এর পর কত পরিমাণে কোন ধরণের সার দিতে হবে?
• ঘাস লাগানোর এক মাস পরে এবং প্রতি কাটিং-এর পরপরই প্রতি হেক্টরে ৫০-৭৫ কেজি ইউরিয়া দিতে হবে।
৬২. জাম্বু ঘাস চাষে সেচ দেয়ার প্রয়োজন আছে কি?
• খরা মৌসুমে প্রতি ১৫-২০ দিন পরপর সেচ দেয়ার দরকার হয়।
৬৩. বছরের কোন সময় জাম্বু ঘাস কাটা যায়?
• গ্রীষ্মকালে ৩০-৪৫ দিন পরপর, শীতকালে সেচ সুবিধা সাপেক্ষে ৪০-৫০ দিন পরপর ঘাস কাটা যায়।
৬৪. জাম্বু ঘাস বছরে কতবার কাটা যায় এবং কতটন ঘাস উৎপাদিত হয়?
• প্রথম আবাদে প্রথম বছর ৫-৬ বার, দ্বিতীয় বছরে ৭-৮ বার কাটা যায় এবং প্রতি হেক্টরে ১০০-১৫০ টন ঘাস উৎপাদিত হয়।
৬৫. প্রতি কেজি জাম্বু ঘাসে পুষ্টির পরিমাণ কতটুক?
• শুষ্ক পদার্থ ১৯০ গ্রাম, জৈব পদার্থ ১৮০ গ্রাম, আমিষ ২১ গ্রাম, আঁশ ৭৫ গ্রাম, পাচ্যতা ৬৩% এবং বিপাকীয় শক্তি ১.৯৫ মেগা জুল।
৬৬. জাম্বু ঘাস কিভাবে সংরক্ষণ করা যায়?
• সাইলেজ পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা যায়।
৬৭. পারা ঘাস বছরের কোন সময়ে লাগানো যায়?
• বছরের যে কোন সময়ে লাগানো যায় তবে ফাল্গণ-চৈত্র মাসে লাগানো সবচেয়ে উত্তম।
৬৮. কোন ধরণের মাটিতে পারা ঘাস লাগানো যায়?
• জলাবদ্ধ, লবণাক্ত এবং পাহাড়ী ঢালসহ সব ধরণের মাটিতে লাগানো যায়।
৬৯. পারা ঘাস লাগানোর জন্য জমি তৈরি করতে হয় কিভাবে?
• আগাছা পরিষ্কার করে ৩-৪ বার ভালোভাবে চাষ করে অথবা বন্যা পরবর্তী কাদা মাটিতে পারা ঘাস লাগানো যেতে পারে।
৭০. পারা ঘাস চাষে প্রতি হেক্টর জমিতে কত সংখ্যক কাটিং লাগাতে হবে?
• ২৮-৩০ হাজার কাটিং লাগাতে হবে।
৭১. পারা ঘাস চাষে কাটিং লাগানোর দূরত্ব কতটুকু হতে হবে?
• সারি থেকে সারি ৭০ সে.মি. এবং কাটিং থেকে কাটিং ৩৫ সে.মি. দূরত্ব রাখতে হবে।
৭২. পারা ঘাস চাষে সার প্রয়োগের প্রয়োজন হয় কি?
• জমি তৈরির সময় প্রতি হেক্টরে ৫০:৭০:৩০ কেজি অনুপাতে যথাক্রমে ইউরিয়া, টিএসপি এবং এমওপি সার প্রয়োগ করতে হবে।
৭৩. পারা ঘাস লাগানো এবং কাটি-এর পর কিভাবে সার প্রয়োগ করতে হবে?
• এক মাস পরে এবং প্রতি কাটিং-এরপর পরই হেক্টর প্রতি ৫০-৭৫ কেজি ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হবে।
৭৪. পারা চাষে কোন মৌসুমে সেচ দিতে হবে?
• খরা মৌসুমে ১৫-২০ দিন পরপর সেচ দেয়ার প্রয়োজন হয়।
৭৫. বছরে কোন কোন সময়ে ঘাস কাটা যায়?
• গ্রীষ্মকালে ৩০-৩৫ দিন পর এবং শীতকালে সেচ সুবিধার প্রেক্ষাপটে ৩৫-৪৫ দিন পর ঘাস কাটা যায়।
৭৬. পারা ঘাস বছরে কতবার কাটা যায়?
• প্রথম চাষে ৬-৭ বার এবং ২য়, ৩য় ও ৪র্থ চাষে ৭-৯ বার ঘাস কাটা যায়।
৭৭. বছরে প্রতি হেক্টর জমিতে কী পরিমাণ পারা ঘাস উৎপাদিত হয়?
• ১০০-১২০ টন ঘাস উৎপাদিত হয়।
৭৮. প্রতি কেজি কাঁচা পারা ঘাসের পুষ্টিমাণ কত?
• শুষ্ক পদার্থ ২৬০ গ্রাম, জৈব পদার্থ ২৪০ গ্রাম, আমিষ ১৮ গ্রাম, আঁশ ১১৩ গ্রাম, পাচ্যতা ৬০% এবং বিপাকীয় শক্তি ২.৬০ মেগা জুল।
৭৯. পারা ঘাস কিভাবে সংরক্ষণ করা যায়?
• সাইলেজ তৈরি করে সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
৮০. শতকরা ১৫-২০ ভাগ শুকনো খড়ের স্তর হিসাবে ব্যবহার করলে সাইলেজ থেকে বাড়তি আর কি সুবিধা পাওয়া যেতে পারে?
• পরবর্তীতে খড় আর আলাদা করে খাওয়াতে হয় না।
৮১. সাইলেজের স্তরে খড় দিতে না পারলে অন্য কি ঘাস স্তর হিসাবে দেয়া যেতে পারে?
• ডাল বা সিম-জাতীয় ঘাস যথা খেসারী, মাষকালাই, কাউপি বা হেলেন ডাল, ইপিল-ইপিল ইত্যাদি ঘাস সবুজ অবস্থায় সাইলেজ করে রাখা যেতে পারে।
৮২. ডাল বা সিম-জাতীয় ঘাসে সাইলেজ করলে কি অসুবিধা হতে পারে?
• এ জাতীয় ঘাসে অধিক মাত্রায় আমিষ থাকে বিধায় শুধু ডাল-জাতীয় ঘাস দ্বারা সাইলেজ তৈরি করলে ভালো সাইলেজ নাও হতে পারে।
৮৩. ডাল-জাতীয় ঘাসের সাথে অ-ডাল-জাতীয় ঘাস মিশিয়ে সাইলেজ করা যাবে কি?
• ডাল-জাতীয় ঘাসের সাথে অ-ডাল-জাতীয় ঘাস (ভূট্টা, নেপিয়ার ইত্যাদি) সর্বোচ্চ ১:১ এবং সর্বনিম্ন ১:৩ অনুপাতে মিশিয়ে চিটাগুড়ের সংমিশ্রণে সাইলেজ করা উত্তম। এক্ষেত্রে মিশ্রিত ঘাসের ভাজে ভাজে পূর্বে বর্ণিত খড় দেয়া ভালো।
৮৪. অ-ডাল-জাতীয় ঘাস না পাওয়া গেলে তখন কি করা যাবে?
• পূর্বের নিয়মেই ঘাসের সাথে খড় ব্যবহার করে সাইলেজ তৈরি করা যেতে পারে।
৮৫. কোন ধরণের গর্তে কী পরিমাণ ঘাস সংরক্ষণ করা যেতে পারে?
• প্রতি ১০০ ঘণফুটের মাটির গর্তে ২.৫-৩.০ টন সবুজ ঘাস সংগ্রহ করা যেতে পারে।
৮৬. ঘাস লাগানো এবং প্রতি কাটিং-এর পর কত পরিমাণে কোন ধরণের সার দিতে হবে?
• ঘাস লাগানোর এক মাস পরে এবং প্রতি কাটিং-এর পর পরই প্রতি হেক্টরে ৫০-৭৫ কেজি ইউরিয়া দিতে হবে।
৮৭. একশত ঘণফুটের মাটির গর্তের আকার আয়তন কি রকম হতে পারে?
• গর্তটি অবশ্যই উঁচু জায়গায় (যেখানে পানি কোনভাবেই গর্তে প্রবেশ করতে পারবে না) ৩ ফুট গভীরতা, ৩ ফুট প্রস্থ, মাঝে ৮ ফুট এবং উপরে ১০ ফুট আকারের গর্ত করতে হবে।
৮৮. গর্তের আকার কি রকম হতে হবে?
• ঘাসের পরিমাণের উপর গর্তের আকার নির্ভর করবে তবে গর্তের তলা পাতিলের তলার মত সমানভাবে বাঁকা হলে সহজে ঘাস চাপানো যাবে।
৮৯. সাইলেজ পদ্ধতিতে ঘাস সংগ্রহের ক্ষেত্রে খরচ কমানোর উপায় কি হতে পারে?
• খরচ কমানোর জন্য সাইলোর তলায় এবং চারদিক শুকনো খড় দিয়ে ঢেকে দেয়া যায়।
৯০. সাইলো ঢাকার জন্য কোন মাপের পলিথিনের প্রয়োজন হবে?
• দুই গজ প্রস্থের ডাবল পলিথিনের ৮-৯ গজ পলিথিন হলে ২০ ফুটের একটি সাইলো পিটের শুধু উপরের দিক বন্ধ করা যাবে কিন্তু সাইলো পিটের চারদিকে মুড়লে পলিথিনের পরিমাণ ও সাইলেজ খরচ বেড়ে যাবে।
৯১. সাইলেজ তৈরির ক্ষেত্রে কত পরিমাণ চিটাগুড় এবং কি পরিমাণ পানি মিশাতে হবে?
• সবুজ ঘাসের ৩-৪% চিটাগুড় মেপে বাড়িতে নিয়ে তাতে ১:১ অথবা ৪:৩ অনুপাতে পানি (চিটাগুড়:পানি মিশাতে হবে) যাতে সহজে ঝরনা দ্বারা সমভাবে ঘাসের উপর ছিটানো যেতে পারে।
৯২. সাইলোর তলায় কিভাবে পলিথিন দিতে হবে?
• পলিথিন বিছিয়ে দিতে হবে, না পারলে পুরু করে খড় বিছাতে হবে। দুই পাশে্ পলিথিন না দিতে চাইলে ঘাস সাজানোর সাথে সাথে খড়ের আস্তরণী দিতে হবে।
৯৩. সবুজ ঘাস এবং শুকনো খড় কিভাবে দিতে হবে?
• সবুজ ঘাসের সাথে ভাজে ভাজে শুকনো খড় দিতে হবে। প্রতি ভাজে ৩০০ কেজি সবুজ ঘাসের সাথে ১৫ কেজি শুকনো খড় দিতে হবে । প্রতি ৩০০ কেজি ঘাসের ভাজে ভাজে ৯-১২ কেজি চিটাগুড় এবং ৮-১০ লি. পানি মিশিয়ে ঝর্ণা বা হাত দিয়ে সমানভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে। খড়ের ভিতরে কোন চিটাগুড় দিতে হবে না। এভাবে ভাজে ভাজে ঘাসের সাথে খড় সাজাতে হবে এবং সাথে সাথে ভালোভাবে পা দিয়ে চেপে ভেতরের বাতাস যথা সম্ভব বের করতে হবে। ঘাস যত এঁটে সাজানো যাবে সাইলেজ তত উন্নত হবে।
৯৪. ঘাস-ভর্তি সাইলো পিটের উচ্চতা কতটুকু হতে পারে?
• সাইলো ভর্তি করার জন্য মাটির উপরে ৪-৫ ফুট পর্যন্ত ঘাস সাজাতে হবে। ঘাস সাজানো শেষ হওয়ার পর ঘাসের উপরে খড় দ্বারা পুরু করে আস্তরণ দিয়ে নিখুঁতভাবে পলিথিন দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।
৯৫. সাইলো পিটের উপরে মাটি দেয়া হয় কেন?
• সাইলো পিটের পলিথিনের উপরে সর্বশেষে ৩-৪ ইঞ্চি পুরু করে মাটি দিলে পলিথিন শক্তভাবে বসে পড়বে।
৯৬. সাইলো পিটে সমস্ত ঘাস কি একই দিনে সাজাতে হবে?
• সাইলো পিটে একই দিনে সম্পূর্ন ঘাস সাজানো যেতে পারে তবে বৃষ্টি না থাকলে প্রতিদিনই সামান্য সামান্য করেও কয়েকদিনের মধ্যেই সাইলো পিট ভর্তি করা যেতে পারে।
৯৭. সাইলেজ খাওয়ানোর নিয়ম কি?
• প্রতি ১০০ কেজি দৈহিক ওজনের জন্য গরুকে ১০ কেজি হিসাবে সাইলেজ খাওয়ানো যেতে পারে। বর্ষা মৌসুমে-প্রাপ্ত ঘাস সংরক্ষণ করলে শুকনা মৌসুমে গো-খাদ্যের অভাব কমানো যেতে পারে।
৯৮. সাইলেজ তৈরিতে সার্বিকভাবে কি কি সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে?
• সাইলেজ যাতে পানিতে নষ্ট না হয় সে জন্য নিচু জায়গায় কখনো সাইলেজ করা যাবে না, সাইলেজের ভিতরে পানির প্রবেশ এড়াতে পলিথিন নিশ্চিতভাবে এঁটে দিতে হবে। চিটাগুড় পাতলা হলে তার পরিমাণ বাড়িয়ে পানি কমিয়ে মিশাতে হবে, আবার বেশি পাতলা হলে চিটাগুড় ঘাস থেকে চুঁইয়ে নিচে পড়ে আঁঠালো দ্রবণ তৈরি করে ঘাসের গায়ে লেগে থাকবে, ফাঁকা জায়গাগুলো যথাসম্ভব বন্ধ করার প্রয়োজনে সাইলোর কোণার ঘাস ও খড় ভালোভাবে পা দিয়ে চেপে সাজাতে হবে, ঘাসের সাথে খুব বেশি পানি থাকা ঠিক হবে না ।
আপনি জানেন কি একটি ছাগলের কয়টি হাড় থাকে?
উত্তরঃ১৮৯ টি।
ছাগলের মিনারেল এর অভাব জনিত কিছু রোগ :
১. সেলেনিয়াম :
পৃথিবীতে অনেক স্থানে সেলেনিয়াম এর পরিমান কম এজাতীয় মাটি আছে যেখানে ঘাস চাষ করলে সেই ঘাসে ও ভিটামিন ই এর অভাব থাকে। যার ফলে ওই স্থানের গবাদি পশুর ভিটামিন ই অভাব জনিত রোগ দেখা যায়। ভিটামিন ই অভাব জনিত রোগ হলো white muscle disease (nutritional muscular dystrophy), বাচ্চা জন্মানোর পর পিছনের পায় দাঁড়াতে না পারা বা দুর্বল হওয়া, বাচ্চা জন্মানোর পর দুর্বল মাংস পেশীর কারণে নিউমোনিয়া হওয়া জোরে জোরে শ্বাসপ্রস্বাস করা ইত্যাদি। এক্ষেত্রে বাচ্চা হওয়ার পরপর সেলেনিয়াম ভিটামিন E ইনজেকশন দিতে হবে।
২. জিঙ্ক :
জিঙ্ক এর অভাব জনিত রোগ এবং লক্ষণ মুখ থেকে লালা পড়া, খুড়ার আকৃতি অস্বাভাবিক হওয়া, পায়ের গিট এ ব্যাথা হওয়া, চামড়া বিভিন্ন ধরণের রোগ, পাঠার অন্ডকোষ ছোট আকৃতির হওয়া, ক্রস করতে আগ্রহী না হওয়া ইত্যাদি।
৩. কপার :
কপার ছাগলের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ মিনারেল। কপার অভাব জনিত রোগ পশম এর রং ফ্যাকাশে হওয়া, বাচ্চা পরে যাওয়া, মরা বাচ্চা হওয়া, রক্ত শূন্যতা, হাড় ভেঙ্গে যাওয়া, ক্ষুদা মন্দা, ওজন কমে যাওয়া, দুধ উৎপাদন কমে যাওয়া। কপার ভেড়ার জন্য খুবই ক্ষতিকর কিন্তু ছাগলের জন্য অত্তন্ত গুরুত্বপূর্ণ, পর্যাপ্ত নাহলে উপরোক্ত রোগ গুলি হতে পারে। তাই উন্নত দেশে ছাগলকে বছরে একবার কপার বোলাস দেয়া হয় যা কিনা পেটে গিয়ে ছড়িয়ে পরে এবং কপার গুঁড়া গুলো আস্তে আস্তে গলতে থাকে। এধরণের একটি বোলাস এক বছর পর্যন্ত কাজ করে।
৪. আয়রন :
আয়রন খুব একটা দরকার হয়না কিন্তু যদি ক্রেমি আক্রম করে তবে আয়রন খুবই জরুরি মিনারেল। যাকিনা রক্ত শূন্যতা থেকে রক্ষা করে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে আয়রন ইনজেকশন ও দিতে হতে পারে।
৫. আয়োডিন :
এর অভাবে গলগন্ড রোগ হতে পারে। প্রতিদিন খাবারে ১% আয়োডিন যুক্ত লবন থাকা জরুরি।
৬. ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস :
ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস অনুপাত ২:১ হওয়া খুব জরুরি, এর কম বেশি হলে পাঠার প্রস্রাবের রাস্তা বাধা গ্রস্থ হবে (urinary calculi)। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ছাগল মারা পর্যন্ত যায়। তাছাড়া বাচ্চা জন্মের সময় বিভিন্ন সমেস্যা দেখাযায়, হাড়ের গঠন সুগঠিত হতেপারে না। দানাদার খাবারে ফসফরাস এর পরিমান অনেক বেশি তাই দানাদার খাবার বেশি দিলে অবশ্যই ক্যালসিয়াম এর মাত্রা বাড়াতে হবে। যারা ঘাস চাষ করতে মুরগির লিটার ব্যবহার করেন তাদের ও এই ব্যাপারে সতর্ক থাকা জরুরি কারণ মুরগির লিটার এ ফসফরাস বেশি থাকে যা ফসলের ফসফরাস এর পরিমান বাড়িয়ে দেয়।
৭. ম্যাঙ্গানিজ :
ম্যাঙ্গানিজ এর অভাব এ বাচ্চার গ্রোথ কমে যায়, কনসিভ % কমে যায়, বাচ্চা সময়ের আগে পরে যায় বা এবরশন হয়। পায়ের গঠন ত্রুটিপূর্ণ হয় এবং হাটতে সমস্যা হয়। অতিরিক্ত ক্যালসিয়াম ম্যাঙ্গানিজকে শরীরে শোষণ করতে বাধা দেয়।
ভিটামিন A :
ভিটামিন A এর অভাবে নাক দিয়ে ঘন সর্দি বের হবে, শ্বাস প্রশ্বাসে প্রব্লেম হবে, ডায়রিয়া, লোম অগুছালো, চোখে কম দেখা, বন্ধা বা গাভিন না হওয়া, খুব সহজে রোগাক্রন্ত হওয়া ইত্যাদি।
ভিটামিন B :
যেকোনো গরু ছাগল ভেড়া অসুস্ত হওয়ার পর দুর্বলতা কাটাতে Vitamin B1 (thiamine) খুব জরুরি। খাওয়া কমে গেলে, ঘাড় বাঁকা, পায়ে সমস্যা পোলিও , চোখের মনি ঘুরতে থাকা, অরুচি, লিভার ইত্যাদি সমস্যা জন্য Vitamin B1 (thiamine) খুব উপকারী।
ভিটামিন D :
জয়েন্ট এ ব্যাথা, বাঁকা পা bowed legs (rickets) জন্য সেই সাথে যখন ক্যালসিয়াম দেয়া হয় তখন D ব্যবহার করা উচিৎ। ষ্টল ফিডিং ছাগলকে নিয়মিত ভিটামিন D দেয়া উচিৎ।
ভিটামিন E :
যারা নিয়মিত silage এবং খড় খাওয়ান তাদের নিয়মিত ভিটামিন E খাবারে দিতে হবে।
আধুনিক পশু পালনের জন্য মোট ব্যবস্থাপনা খরচের ৬৫-৭০ শতা্ংশ খাদ্য খাতে খরচ হয়ে থাকে । তাই পশু পালনের সর্বক্ষেত্রেই লাভ-লোকসান নির্ভর করে সাশ্রয়ী মূল্যের খাদ্য সরবরাহের উপর। আরও উল্লেখ্য যে, পশুর দৈহিক বৃ্দ্ধি এবং আশানুরূপ দুধ-মাংস উৎপাদনের প্রয়াসে রসালো খাদ্য সামগ্রীর গুরুত্ব অনেক। বৎসর-ব্যাপী এই ফডার খাদ্য-সামগ্রী (বিশেষ ধরনের কাঁচা ঘাস) সব ঋতুতে সম পরিমানে উৎপাদন করা সম্ভব হয় না। আর চলমান ঘাস উৎপাদন ছাড়া ক্রমাগত হ্রাসকৃত চারণ-ভূমির প্রাকৃতিক ঘাস খাইয়ে পশুর পুষ্টি চাহিদা মেটানো সম্ভব হয় না। এসব কারণে অধিক ফলনশীল দেশী-বিদেশী উন্নত ঘাস চাষের প্রচলন শুরু হয়েছে। এমতাবস্থায়, ঘাস উৎপাদন-সংশ্লিষ্ট বিষয়াদির উপরে যথাযথ প্রযুক্তি প্রয়োগের প্রয়াসে “ঘাস উৎপাদন” শীর্ষক পর্বে আলোকপাত করা হলো:
সংশ্লিষ্ট তথ্য
১. বর্তমানে উচ্চফলনশীল ঘাস উৎপাদনের প্রয়োজন কি?
• অতীতে আমাদের দেশে প্রাকৃতিক চারণভূমি ছিল যেখানে গরু বাছুর চড়ানো যেতো। বর্তমানে চারণভূমির পরিমাণ কমে যাচ্ছে। বর্ধিত হারে দুধ মাংস উৎপাদনের স্বার্থে গবাদি পশুপালনের প্রয়োজনে বর্তমানে উচ্চফলনশীল আধুনিক সবুজ ঘাসের আবাদ করা প্রয়োজন।
২. বর্ষজীবি বা বহুবর্ষী ঘাস বলতে কোন জাতের ঘাসকে বুঝায়?
•যে সব ঘাস একবার আবাদ করলে পরবর্তীতে ঐ ঘাস থেকেই বেশ কয়েক বছর ঘাস উৎপাদন করা যায় তাদেরকে বর্ষজীবি বা বহুবর্ষী ঘাস বলা হয়।
৩ আমাদের দেশে বর্তমানে কি কি বহুবর্ষী ঘাস উৎপাদন করা যায়?
•নেপিয়ার, এন্ড্রোপোগন, স্প্লেনডিডা, রোজা, সিগনাল, জাম্বু, পারা ইত্যাদি ঘাস আমাদের দেশে সরকারী এবং বেসরকারী পর্যায়ে আবাদ করা হয়।
৪. উল্লিখিত ঘাসসমূহ কি একই সময়ে আবাদ করা যায়?
•উল্লিখিত ঘাসসমূহের কোনটি একই ঋতুতে আবার কোনটি বিভিন্ন ঋতুতে ভিন্ন আবহাওয়ায় ভিন্ন চাষ পদ্ধতিতে উৎপাদিত হয়।
৫. নেপিয়ার ঘাস বছরের কোন সময়ে চাষ করা যায়?
• বছরের যে কোন সময়ে নেপিয়ার ঘাস আবাদ করা যায় তবে বসন্তকালে (ফাল্গুণ-চৈত্র মাসে) নেপিয়ার ঘাস আবাদ করলে আশানুরূপ ফলন পাওয়া যায়।
৬. কোন ধরণের জমিতে নেপিয়ার ঘাস আবাদ করা উচিৎ?
• জলাবদ্ধ স্থান ছাড়া বাংলাদেশের সব ধরণের জমিতে এমনকি পাহাড়ী ঢাল এবং সমুদ্র তীরবর্তী লোনা জমিতে নেপিয়ার ঘাস চাষ করা যেতে পারে।
৭. নেপিয়ার ঘাস চাষের জন্য কিভাবে জমি তৈরি করতে হবে?
• আগাছা পরিষ্কার করে রসালো মাটিতে ২-৩ বার চাষ দিয়ে অথবা বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পর কাদা মাটিতে নেপিয়ার ঘাস লাগানো যেতে পারে।
৮. নেপিয়ার চাষের ক্ষেত্রে কিভাবে কাটিং তৈরি করতে হয়?
• পরিপক্ক ঘাসকে কেটে কমপক্ষে একটি গিটসহ টুকরা করে কাটিং তৈরি করতে হবে।
৯. নেপিয়ার চাষের ক্ষেত্রে কাটিং-এর সংখ্যা কত হওয়া দরকার?
• প্রতি হেক্টর জমিতে ২৫-২৬ হাজার কাটিং বা মুথা লাগাতে হবে।
১০. নেপিয়ার চাষে কাটিং এবং লাইনের দূরত্ব কত হবে?
• লাইন থেকে লাইন প্রায় ৭০ সে.মি. এবং কাটিং থেকে কাটিং প্রায় ৩৫ সে.মি. দূরে হতে হবে।
১১. নেপিয়ার চাষের জমিতে কিভাবে সার প্রয়োগ করতে হয়?
• জমি তৈরির সময়ে ৫০:৭০:৩০ অনুপাতে যথাক্রমে ইউরিয়া, টিএসপি ও এমওপি সার প্রয়োগ করতে হবে।
১২. ঘাস লাগানোর পর আবার সার দেওয়ার প্রয়োজন আছে কি?
• এক মাস পরে প্রতি হেক্টর জমিতে ৫০-৭৫ কেজি ইউরিয়া এবং প্রতি কাটিং-এর পর ও খরা মৌসুমে ১৫-২০ দিন পর একই মাত্রায় সার প্রয়োগ করতে হবে।
১৩. নেপিয়ার ঘাস চাষে সেচের প্রয়োজন হয় কোন সময়?
• খরা মৌসুমে ১৫-২০ দিন পরপর, গ্রীষ্মকালে ঘাস কাটার সময় এক থেকে দেড় মাস পরপর, শীতকালে ৫০-৬০ দিন পরপর (সেচ সুবিধানুযায়ী) নেপিয়ার ঘাস চাষে সেচের প্রয়োজন।
১৪. নেপিয়ার ঘাস বছরে কতবার কাটা যায়?
• প্রথম বছর ৫-৬ বার; ২য়, ৩য় এবং ৪র্থ বছর ৭-৯ বার কাটা যায়।
১৫. বছরে কী পরিমাণ কাঁচা নেপিয়ার ঘাস উৎপাদন হতে পারে?
• প্রায় ১৫০-২০০ টন কাঁচা নেপিয়ার ঘাস উৎপাদন হতে পারে যদি চাষের সব ব্যবস্থা সঠিক থাকে।
১৬. প্রতি কেজি কাঁচা নেপিয়ার ঘাসের পুষ্টিমাণ কী রকম হতে পারে?
• শুষ্ক পদার্থ ২৫০ গ্রাম, জৈব পদার্থ ২৪০ গ্রাম, আমিষ ২৫ গ্রাম এবং বিপাকীয় শক্তি ২০ মেগা জুল।
১৭. কাঁচা নেপিয়ার ঘাস অনেক দিন পর্যন্ত খাওয়ানোর জন্য কিভাবে সংরক্ষণ করা যায়?
• সাইলেজ তৈরি করে একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গুণাগুণ ঠিক রেখে সংরক্ষণ করা যেতে পারে।
যমুনা পাড়ী জাতের ছাগলের বৈশিষ্ট্যঃ
ভারতের এটোয়া জেলায় যমুনা পাড়ী ছাগলের উৎপত্তি। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী এলাকায় এ জাতের ছাগল পাওয়া যায়। এদের শরীরের রং সাদা, কালো, হলুদ বাদামী বা বিভিন্ন রঙয়ের সংমিশ্রণে হতে পারে। কান লম্বা ঝুলানো ও বাঁকা। পা খুব লম্বা এবং পিছনের পায়ের পেছন দিকে লম্বা লোম আছে। এরা অত্যন্তও কষ্ট সহিষ্ণু ও চঞ্চল। একটি পূর্ণ বয়স্ক পাঁঠার ওজন ৬০-৯০ কেজি এবং ছাগীর ওজন ৪০-৬০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। দৈনিক দুধ উৎপাদন ৩-৪ লিটার।
ছাগল পালন করে নারীরা আর্থিকভাবে দারুণ লাভবান হচ্ছে। আজকের ভিডিও টা সাবার জন্য।
কপিরাইট ফর কৃষি দিবানিশি
নেপিয়ার ঘাস পরিত্যক্ত জায়গায় ভালো জন্মে। লম্বায় তিন থেকে পাঁচ ফুট পর্যন্ত হয়। দুই সপ্তাহ অন্তর ঘাস কাটা যায়। নেপিয়ার ঘাস চাষ খুব সহজ এবং ব্যয়ও কম। গরু, মহিষ, ছাগল ও ভেড়া এ ঘাস খুব পছন্দ করে। তাই এরা সহজেই বেড়ে ওঠে।
নেপিয়ার ঘাস এর উপযোগী জলবায়ু ও ভূমি : এ ঘাস সব ধরনের মাটিতেই জন্মে। তবে বেলে দো-আশ মাটিতে এর ফলন সবচেয়ে বেশি। এ ঘাসের জন্য উঁচু জমি ভালো। বন্যা প্রস্তাবিত জমি এ ঘাস চাষের জন্য অনুপযুক্ত। বাংলাদেশের আবহাওয়া নেপিয়ার ঘাস চাষের জন্য খুবই উপযুক্ত।
জমি নির্বাচন: পানি নিষ্কাশনের জন্য ভাল ব্যবস্থা আছে অর্থাৎ যেখানে বৃষ্টি বা বর্ষার পানি জমে থাকে না এরূপ জমি নেপিয়ার চাষের জন্য উত্তম। প্রায় সব ধরনের মাটিতেই এ ঘাস রোপন করা যায়, তবে বেলে-দোআঁশ মাটি সবচেয়ে বেশি উপযোগী।
চাষের সময়ঃ নেপিয়ার ঘাসের বীজ সারা বৎসরই রোপন করা যায়। প্রচন্ড শীত এবং বর্ষার পানির সময় বাদে সব সময় বীজ বপন করা যায় তবে কাটিং এর ক্ষেত্রে সাধারণতঃ বর্ষার প্রারম্ভে এই ঘাসের কাটিং বা চারা রোপন করা হয়। বৈশাখ-জ্যৈষ্ঠ্য মাসে প্রথম বৃষ্টির পর জমিতে চারা বা কাটিং লাগালে প্রথম বছরেই ৩/৪ বার পর্যন্ত ঘাস কাটা যেতে পারে। চারা বা কাটিং লাগানোর পর যদি রৌদ্র হয় বা মাটিতে রস কম থাকে তাহলে চারার গোড়ায় পানি সেচ দিতে হবে।
চাষ পদ্ধতি : এ ঘাস চাষের জন্য জমিতে চার থেকে পাঁচটি চাষ দিয়ে এবং মই দিয়ে আগাছামুক্ত করার পর রোপণ করতে পারলে উত্তম।
জমি প্রস্তুতের সময় : ১.৫০ থেকে ২.০০ টন জৈবসার- প্রতি একরে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিতে হবে। এছাড়া রাসায়নিক সারের মধ্যে ইউরিয়া, টিএসপি ও পটাশ ইত্যাদি সার ব্যবহার করতে পারেন।
বীজ বপনঃ প্রথমে বীজ ১-২ ঘন্টা মিষ্টি রোদে শুঁকিয়ে তারপরে নরমাল করে ২৪-৪৮ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন তারপরে জমিতে ছিটিয়ে দিন। পরবর্তী ২৪-৪৮ ঘন্টার মধ্যে বীজ জার্মিনেশন হয়ে যায়। চারা ৩-৪ ইঞ্চি হবার পরে একটি সেচ দিতে পারলে ভালো।
সার প্রয়োগ ও পানি সেচ : ভালো ফলন ও গাছের বৃদ্ধির জন্য সার এবং পানির প্রয়োজন। বর্ষা মৌসুমে পানি সেচের প্রয়োজন হয় না। কিন্তু অন্য সময়ে সাধারণত পানি সেচের প্রয়োজন হয় এবং ইউরিয়া ১৫০ কেজি, টিএসপি ৮০ কেজি, ও এমওপি ৭০ কেজি সার প্রয়োগ করতে হবে।
ঘাস কাটার পদ্ধতি: বীজ থেকে চারা হবার পর থেকে ৩৫-৪০ দিন পর প্রথমবার ঘাস সংগ্রহ করা যায়, মাটির ৫-৬ ইঞ্চি উপর থেকে ঘাস কাটতে হয়।তিন সপ্তাহ পরপর পুনরায় ঘাস কাটা যায়। প্রথম কাটিং-এ ফলন একটু কম হলেও দ্বিতীয় কাটিং থেকে পরবর্তী ২/৩ বছর পর্যন্ত ফলন বাড়তে থাকে। এরপর আস্তে আস্তে কমতে থাকে। পরে পুনরায় বীজ অথবা কাটিং বা মোথা লাগাতে হবে। প্রত্যেকবার ঘাস কাঁটার পর একর প্রতি ৬০-৭০ কেজি ইউরিয়া, ৪০-৫০ কেজি টিএসপি, ৪০-৫০ কেজি এমওপি এবং ২-৩ টন গোবর/ কম্পোস্ট সার মাটিতে মিশিয়ে দিতে হবে।
খাওয়ানোর নিয়মঃ জমি থেকে ঘাস কাটার পর ঘাস যাতে শুকিয়ে না যায় সেদিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখতে হবে। আস্ত ঘাস গবাদিকে খেতে দিলে অপচয় বেশি হয়। তাই মেশিন, দা অথবা কাঁচি দ্বারা ২-৩ ইঞ্চি লম্বা করে কেটে খাওয়ানো ভাল। এই কাটা ঘাস খড়ের সাথে মিশিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে। এ ছাড়া দুই থেকে তিন ইঞ্চি করে কেটে খড়ের সঙ্গে মিশিয়েও খাওয়ানো যায়। নেপিয়ার ঘাসে শতকরা ৭-১২ ভাগ প্রোটিন আছে।
নেপিয়ার ঘাস শুকিয়ে সংরক্ষণ করা সুবিধাজনক নয়। তবে কাঁচা ঘাস সাইলেজ করে শুষ্ক মৌসুমে সংরক্ষণ করা যায়।
সতর্কতা:
নেপিয়ারের জমিতে ইউরিয়া সার প্রয়োগের পর অনেক দিন খরা হলে ইউরিয়া হতে নাইট্রেট বা নাইট্রাইট ঘাসের মধ্যে উৎপন্ন হতে পারে এবং পরবর্তীতে অধিক বৃষ্টিপাত হওয়ার পর দ্রুত বেড়ে ওঠা এই ঘাস কেটে খাওয়ানো ঝুকিপূর্ণ। এতে বিষক্রিয়া হতে পারে।
ঘাস কাটার সময় নিম্নলিখিত সতর্কতা অবলম্বন করলে বিষক্রিয়ার প্রভাব থেকে গবাদিপশুকে মুক্ত রাখা যায়।
(১) জমিতে সার ছিটাবার ২ সপ্তাহের মধ্যে ঘাস কাটা উচিত নয়।
(২) সার ছিটাবার পরে দীর্ঘ দিন খরা থাকার পর হঠাৎ অধিক বৃষ্টিপাতের পর দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়া ঘাস কেটে খাওয়ানো উচিত নয়।
(৩) ঘাস কাটার একমাস পূর্বে সার ছিটানো উচিত।
নেপিয়ার উচ্চ ফলনশীল ঘাস। এই ঘাস চাষের মাধ্যেমে গবাদিপশুর কাঁচা ঘাসের চাহিদা মিটানো সম্ভবপর। কাঁচা ঘাস/সাইলেজের ব্যবহার যথাযথভাবে করতে পারলে দুধ উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে যা দ্বারা ক্রমান্বয়ে দেশের দুধের চাহিদা মিটানো সম্ভব। সম্প্রতি আমাদের দেশে দুধের দাম যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে করে দুধ উৎপাদন বাড়লে কৃষকের যেমন আর্থিক স্বচ্ছলতা বৃদ্ধি পাবে তেমনি দেশের আর্থিক অবস্থারও উন্নতি ঘটবে।
চাষিরা যাতে ঘাসের কাটিং বা চারা সংগ্রহ করতে পারে সেজন্য প্রতিটি উপজেলায় ঘাসের চারা বিতরণের ব্যবস্থা রয়েছে।
ছাগল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশে থাকতে পছন্দ করে। এদের বাসস্থানে আলো-বাতাসের ব্যবস্থা করতে হয়। ছাগল সবসময় শুকনো ও উঁচুস্থান খুব ভালোবাসে। ছাগলের যাতে ঠাণ্ডা না লাগে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। কারণ ঠাণ্ডায় এরা নিউমোনিয়াসহ অন্যান্য জটিল রোগে আক্রান্ত হয়। তাই শীতের সময় মেঝেতে ধানের খড় অথবা নাড়া বিছিয়ে দিতে হয়। শীতের সময় ছাগলকে ঠাণ্ডা থেকে রক্ষার জন্য এদেও ঘরের দেয়ালে প্রয়োজনে চটের বস্তা টেনে দিতে হবে। নিচে ছাগলের রোগের কারণসমূহ উলে−খ করা হলো-
১। ভাইরাসজনিত রোগ : পি.পি.আর, নিউমোনিয়া ইত্যাদি
২। ব্যাকটেরিয়াজনিত রোগ : গলাফুলা, ডায়রিয়া ইত্যাদি
৩। পরজীবীজনিত রোগ : ছাগলের দেহের ভিতরে ও বাইরে দুধরনের পরজীবী দেখা যায়।
দেহের বাইরে চামড়ার মধ্যে উঁকুন, আটালি ও মাইট হয়ে থাকে। দেহের ভিতরে গোলকৃমি, ফিতাকৃমি ও পাতাকৃমি দ্বারা ছাগল বেশি আক্রান্ত হয়। এরা ছাগল কর্তৃক খাওয়া পুষ্টিকর খাদ্যে ভাগ বসায়। অনেক কৃমি ছাগলের শরীর থেকে রক্ত চুষে নেয়। তাছাড়া ছাগলের প্রায়ই রক্ত আমাশয় হতে দেখা যায়। এ রোগটি প্রোটোজোয়া দ্বারা হয়ে থাকে।
ছাগলের খাদ্য ব্যবস্থাপনাই হচ্ছে অন্যতম প্রধান বিষয়। ছাগল সবুজ ঘাস ও দানাদার খাদ্য খেয়ে জীবন ধারণ করে।তাছাড়া চিকন ধানের খড় খুব ছোট করে কেটে চিটাগুড় মিশিয়েও ছাগলকে খাওয়ানো যায়। খাদ্য ব্যবস্থাপনার প্রথমেই ছাগল ছানার কথা ভাবতে হবে। ছাগল ছানা ২-৩ মাসের মধ্যে মায়ের দুধ ছাড়ে। বাচ্চার বয়স ১ মাস পার হলে উন্নত মানের কচি সবুজ ঘাস ও দানাদার খাদ্যের অভ্যাস করাতে হবে।
সবুজ ঘাস : ছাগলের জন্য ইপিল ইপিল, কাঁঠাল পাতা, খেসারি, মাসকালাই, দূর্বা, বাকসা ইত্যাদি ঘাস বেশ পুষ্টিকর। দেশি ঘাসের প্রাপ্যতা কম হলে ছাগলের জন্য উন্নত জাতের নেপিয়ার, পারা, জার্মান ঘাস চাষ করা যায়। চাষ করা ঘাস কেটে বা চরিয়ে ছাগলকে খাওয়ানো যায়।
দানাদার খাদ্য : ছাগলের পুষ্টি চাহিদা মেটানোর জন্য সবুজ ঘাসের সাথে দৈনিক চাহিদামতো দানাদার খাদ্য সরবরাহ করতে হবে। গম, ভুট্টা, গমের ভুসি, চালের কুঁড়া, বিভিনড়ব ডালের খোসা, খৈল, শুঁটকি মাছের গুঁড়া ইত্যাদি দানাদার খাদ্যের মিশ্রণ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। দানাদার খাদ্যের সাথে খাদ্য লবণ ও ভিটামিন-খনিজ মিশ্রণ যোগ করতে হয়। বয়সভেদে ছাগলকে দৈনিক ১-২ লিটার বিশুদ্ধ পানি সরবরাহ করতে হয়।
পানি : মানুষের মতো সকল পশুপাখির পানির প্রয়োজন রয়েছে। বয়সভেদে ছাগল দৈনিক ১-২ লিটার পানি পান করে। তাই পানি ছাগলের নাগালের মধ্যে রাখতে হবে।
Click here to claim your Sponsored Listing.
Category
Products
Contact the business
Telephone
Website
Address
Rangpur
5730
Jaldhaka Nilphamari Rangpur
Rangpur
পাখি ক্রয় ও বিক্রয়ের একটি বিশস্থ প্রতিষ্ঠান।
Badarganj, Kalupara Sonarpara
Rangpur, 5430
I'm Nur Mohammad, i'm Digital marketer on online platform, and honest video creator.
01315266775
Rangpur
◈•┼┼•🌹•┼┼•◈ ✮┼✮ ━━❖❖♥❖❖━━ ꧁𑁍Fish𑁍꧂ ━━❖❖♥❖❖━━ ╭══════════💚═╮ ༺King༻ ╰═💜══════════╯
Rangpur
Rangpur
Assalamualaikum everyone. Welcome to Bird's & Aqua Fish Farm. It's a new online base shopping page.Here you will get different kind of Bird's & Aqua Fish.Do like and follow our pag...
Nilphamari, Kishorganj
Rangpur, 5320
Veeya Agro Farm ( ভিয়া এগ্রো ফার্ম) এ পাচ্ছেন গবাদিপশুর সকল ধরনের পুষ্টিকর খাদ্য।