Muzahidul Islam Akram
ক্রিক খোঁড়!
বাবর আজমকে নিয়ে এক পরিচিতজনের ফেকবুক পোস্ট মারফত প্রথম জেনেছি, বাবর সেলফিশ-ইগোসেন্ট্রিক এবং আরো অনেক অনেক...
সেলফিশনেস, তার কিছু কিছু ইনিংসের মাধ্যমে সংজ্ঞায়িত করা গেলেও ইগোসেন্ট্রিক ব্যাপারটা কোনোভাবে মেলাতে পারছিলাম নাহ। তাই অনুসন্ধিৎসাবসত জানতে চাইলাম, ব্যাপার কি! বাবরের বিরুদ্ধে এমন এ্যালিগেশন কেনো?
এরপর জানতে পারলাম ইমাদ ওয়াসিমের সাথে তার ঝামেলার ব্যাপারটা।
আজ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন ইমাদ ওয়াসিম। তবে আজকের অবসরের পেছনে খুব যে বাবরের হাত আছে তা একদমই আমি মনে করি নাহ৷
কারন কিছুদিন আগেই ক্যাপ্টেন্সি থেকে সরে দাড়িয়েছেন পাকিস্তান ক্রিকেটের অন্যতম সাদামাটা ক্যাপ্টেন বাবর। সড়ে দাড়িয়েছেন বললে ভুল হবে, বাবরের ক্যাপ্টেন্সি নিয়ে সমালোচনা অনেকদিনের। তবে পেস ইউনিটের আশ্চর্যজনক পারফরম্যান্স, ইউনিট না বলে বরং নাসিম শাহ এর দারুণ নৈপুণ্যে এবং দলের অন্য সবার ইনডিভিজুয়াল পারফরম্যান্সে দল র্যাংকিংয়ে এক নম্বরে থাকায় খুব বেশি মুখ খুলতে পারতো নাহ সবাই।
তবে বিশ্বকাপ শুরু আগের একটা রিপোর্টে চোখ বুলিয়ে দেখলাম, তখনই বলা হয়েছিল বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে উঠতে না পারলে স্যাক করা হবে বাবর আজমকে৷ তাই বাবর আজমকে ক্যাপ্টেনসি থেকে সড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বললেই বরং মানানসই হয়।
যাইহোক, যে কারনে ইমাদ ওয়াসিমের সাথে সদ্য সাবেক ক্যাপ্টেন বাবর আজমের ঝামেলা থাকলেও প্রভাবক হিসেবে বাবর আজম নন তা বলি..
ক্রিকেটের নতুন ফর্মেট টি-টেন লীগকে বিশ্ব দরবারে জনপ্রিয় করার প্রয়াসে আছে আবুধাবির টি-টেন লীগ। বেশ কয়েকবছর ধরে অনুষ্ঠিত হয়ে আসা এই লীগে একটি দলের ক্যাপ্টেন্সির দায়িত্বে আছেন ইমাদ ওয়াসিম।
অন্যদিকে পাকিস্তানে এমুহূর্তে চলমান অথবা শুরু হতে যাচ্ছে ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি লীগ। তাই অতিরিক্ত টাকা উপার্জনের লক্ষ্যে ন্যাশনাল টি-টোয়েন্টি লীগকে স্কিপ করে টি-টেন লীগকে বেছে নিয়েছেন ইমাদ ওয়াসিম।
আর এতেই বেঁধেছে যত আপত্তি। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডে সদ্য নিযুক্ত দুই মহারথী ওয়াহাব রিয়াজ এবং মোহাম্মদ হাফিজ এই সিদ্ধান্তের চরম বিরোধী। তারা বলেছেন জাতীয় দলে তারাই বিবেচ্য হবেন যারা পাকিস্তানের লীগকে গুরুত্ব দেবে। তাই খুবই স্বাভাবিকভাবে পাকিস্তান দলে ইমাদ ওয়াসিমের দরজা বন্ধ হয়ে গেলো। আর এতেই অবসরের সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন তিনি।
এবার কথা বলা যেতে পারে কেনো নিতে গেলেন এমন কঠিন সিদ্ধান্ত, কেনোই বা জাতীয় দলকে স্কিপ করে টি-টেন লীগ...
বাবর আজমের সাথে মনস্তাত্ত্বিক ঝামেলা থাকার কারনে জাতীয় দলে বারবার ইগনোর করা হচ্ছিলো ইমাদ ওয়াসিমকে। এছাড়াও ওয়ানডে ক্রিকেটে দীর্ঘদিন আছেন দলের বাইরে। টি-ক্রিকেটেও চিরাচরিত সবুজ জার্সি গায়ে মাঠে নেমেছেন অর্ধবছর হতে চললো। তাই তার মনের মাঝে একধরনের ক্ষোভ সৃষ্টি হয়ে থাকতে পারে বলে আমার ধারণা। আর এই ক্ষোভের বশবর্তী হয়েই এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকতে পারেন।
এছাড়াও সিদ্ধান্তে প্রভাবক হিসেবে কাজ করতে পারে মোহাম্মদ আমির। জাতীয় দলে খেলেন না পাকিস্তানি এই পেসার। তাই বছরের পুরোটা সময় বিশ্বের বিভিন্ন লীগে খেলে বেড়ান তিনি। এই পেসারের সাথে আবার বেশ সখ্যতা ইমাদ ওয়াসিমের। মিডিয়ায় দুইজনই একে-অপরকে বেশ ভালো সাপোর্ট দেন। একবার আমির বলেছিলেন তিনি টি-টোয়েন্টি দলে ক্যাপ্টেন হিসেবে ইমাদ ওয়াসিমকে দেখতে চান অন্যদিকে ইমাদ বলেছিলেন ক্যাপ্টেন হলে দলে ব্যাক করাবেন আমিরকে।
তাই দুইজনের বন্ধুত্বের গভীরতা অনুমেয়। একারণেই ইমাদ যখন কিছুটা কনফিউজিং সময় পার করছিলেন তখনই হয়তো আমির তাকে তার লাইফস্টাইলে আসার আমন্ত্রণ জানাতে পারেন [আমিরের এই ব্যাপারটা পুরোটাই অনুমান করে বলা]
ডোনাল্ড এর কথাটা ভাবলে মনটা খারাপ হয়ে যায়।
এত ডেডিকেশন দিয়ে সবাইকে প্রস্তুত করে বিশ্বকাপের মঞ্চে আনলেন অথচ এখানে কারো হাতই জ্বলে উঠছে নাহ!
এমন বাজে পারফরম্যান্সের পর যখন তার দিকেও আঙুল তুলছে তখন নিজের খারাপ লাগা একপাশে রেখে তার শীর্ষদের মন চাঙা করে দিচ্ছেন আবারও নতুন কোনো টোটকা।
বল হাতে গ্রেটদের শর্টলিস্টে থাকা ডোনাল্ডকে হয়তো ভাগ্যবিধাতা শিক্ষক হিসেবে এতটা সাফল্যও লিখে দেননি! নইলে ছাত্ররা বিশ্বকাপের আগে এত নিপুণ পারফরম্যান্সের পর বিশ্বকাপেই কেনো অফফর্মে চলে যাবে?
শোরগোল শোনা যাচ্ছে, চুক্তি নবায়ন হয়নি ডোনাল্ডের সাথে৷ বিসবি বারংবার যা করে তা ই হয়তো করতে যাচ্ছে এবারও। কোচিং প্যানেলের একটা নির্দিষ্ট অংশের দিকে দায় ঠেলে নিজেদের কেটে পড়ার চেস্টা!
যদিওবা এই বিশ্বকাপই ডোনাল্ডের শেষ এসাইনমেন্ট হয় তবুও আপনি আমাদের মনে থেকে যাবেন অনেকদিন...
আমি নিশ্চিত, এমন সাকিবকে আপনি কখনো দেখেননি!
একদিনের ক্রিকেটে ব্যাটিং পাওয়ার-প্লে তে গড় ১০০+ (!)
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে এমন দারুণ স্ট্যাটস আছে দুইজনের নামের পাশে।
প্রথমে যিনি আছেন তিনি অবশ্য ভিন্ন আরো একটি কারনে সবার আগ্রহের জায়গায় থাকেন। দক্ষিণ আফ্রিকা অনূর্ধ্ব-১৯ দলে খেলা কলিন অ্যাকারম্যান এবার বিশ্বকাপ খেলছেন নেদারল্যান্ডসের হয়ে। এই ব্যক্তিটিই অর্জন করে আছেন এই স্ট্যাটসে সবার প্রথমের জয়গাটা। (অবশ্য আর কয়দিন থাকতে পারবেন তা ঠিক করে বলার উপায় নাই)
ওয়ানডেতে ৮ ইনিংসে প্রথম ১০ ওভারের মাঝে ব্যাট করা অ্যাকারম্যান পাওয়ার-প্লে তে আউট হয়েছেন মাত্র ১ বার।
আর তাই, তার মোট রানই হয়ে আছে এভারেজ। ১১০ এভারেজ অ্যাকারম্যানের।
তবে দুই নম্বরে যে নামটি আছে তার দুই নম্বরে উঠে আসা ভাগ্যের জোড়ে নয়, দারুণ ব্যাটিং নৈপুণ্য দেখিয়েই অর্জন করেছেন এই এভারেজ।
দুই নম্বরে আছেন শুভমান গিল। ভারতীয় দলের বর্তমান সময়ের অন্যতম সেরা এই ওপেনার পাওয়ার-প্লে তে ব্যাট করেছেন ৩৭ ইনিংসে। ৩৭ ইনিংসের মাঝে পাওয়ার-প্লে তে বোলাররা তাকে আউট করতে সক্ষম হয়েছে মাত্র ৮ বার।
৩৭ ইনিংসে ৮৩৯ রান করা শুভমানের এভারেজ ১০৪.৮৭!
পাওয়ার-প্লে তে শুভমানকে আউট করা যেন বোলারদের কাছে দুঃস্বপ্নের মতো...
ব্যাট হাতে নিজের খারাপ সময় পেছনে ফেলতে বিশ্বকাপ চলাকালীন সময়েই মিরপুরে কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিমের সাথে অনুশীলনে সাকিব..
থাম্বনেইল দেখে আঁতকে উঠলেন.? ভাবছেন এ আবার কোন মুরিদের আবির্ভাব হলো?
না, কোনো মুরিদের আবির্ভাব হয়নি। বড় আসর বলতে বিশ্বকাপে চেজিংয়ে চেজ মাষ্টারের সাথে তুলনা করেছি শুধু।
এই টুর্নামেন্ট সাকিবের খুব একটা ভালো যাচ্ছে নাহ। বাংলাদেশের খেলা চার ম্যাচের মাঝে তিনটিতে খেলেছেন সাকিব যার মাঝে চেজিংয়ে ব্যাট করেছেন ২ ম্যাচে। ২ ম্যাচের একটিতে করেছেন ১৪ আর অন্যটিতে ১!
তাই এই বিশ্বকাপের আগের স্ট্যাটস গুলো আগে দেখি তারপর না হয় এতো বাজে পারফরম্যান্স এর পরেও টুর্নামেন্টের মাঝপথে এসে সাকিব এমুহূর্তে কয় নম্বরে আছেন তা দেখবো।
২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত চেজিংয়ে সবচেয়ে বেশি রানের মালিক ছিলেন সাকিব আল হাসান। ১৭ ইনিংসে তার নামের পাশে ছিলো ৭২৮ রান যেখানে ৫ অর্ধশতকের সাথে আছে ২টি শতক।
এসময় সাকিব যাদেরকে পিছনে ফেলেছিলেন তাদের নামে একবার চোখ বুলিয়ে নেবেন?
রানাতুঙ্গা, ফ্লেমিং, লারা, ক্যালিস, টেন্ডুলকার, সাঙ্গাকারা, পন্টিং সহ আরো অনেক রথী মহারথীদের পেছনে ফেলে সাকিব বসেছিলেন রাজার চেয়ারে।
এসময় বিরাটের অবস্থান ছিলো কত নম্বরে গেজ করেন।
সময়ক্ষেপণ না করি, ১৩ ম্যাচে ৩৭৩ রান করা বিরাটের অবস্থান ছিলো ৪৩ নম্বরে!
৫ই অক্টোবর বিশ্বকাপ যখন শুরু হলো তার আগ পর্যন্ত এই বিশ্বকাপে অংশগ্রহণ করা খেলোয়াড়দের মাঝে, বিশ্বকাপে চেজিংয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় প্রথম ১৫ জনের মাঝে একমাত্র সাকিব আল হাসানই ছিলেন।
এবার আসি বর্তমান প্রেক্ষাপটে...
চলতি আসরে বিরাট আছেন বিশ্বকাপ আসরে নিজের সেরা ফর্মে। বিশেষ করে চেজিংয়ে ভারতের মূল স্তম্ভ হয়ে পারফর্ম করে যাচ্ছেন। চলতি ম্যাচে স্পর্শ করেছেন চলতি আসরে চেজিংয়ে ৩০০ রানের মাইলফলক।
আজ কিউইদের বিপক্ষে বিরাটের ৯৫ রানের দৃষ্টিনন্দন ইনিংসের পরে বিশ্বকাপ আসরে চেজিংয়ে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকা নিম্নরুপঃ
[এখন থেকে সব স্ট্যাটস কিউই ম্যাচে বিরাটের ৯৫ রানের ইনিংস সহ]
১। রোহিত শর্মা (৮১৭)
২। সাকিব আল হাসান (৭৪৩)
৩। বিরাট কোহলি (৭২৩)
চলতি বিশ্বকাপের আগের আসরগুলো পর্যন্ত বিশ্বকাপ আসরে কখনোই বিরাটের পারফরম্যান্স বিরাটীয় ছিলো নাহ। তাই এটা কেউ অস্বীকার করতে পারবেন নাহ, এই আসরের ম্যাচগুলো একপাশে রাখলে কিংবা সব একসাথে করলেও বড় আসরে বিরাটের চেয়ে চেজিংয়ে ঢের এগিয়ে থাকবেন সাকিব।
এখন কথা হতে পারে কার ইনিংস কতটা ইম্প্যাক্টফুল! একটা ইনিংস তখনই বেশি ইমপ্যাক্টফুল ইনিংস হিসেবে গণ্য হয় যখন তা দলের জয়ে ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশ এখনও ছোট দলের গন্ডি পেরোতে না পারায় বিশ্বকাপে জয়ের সংখ্যাও যেমন কম সেই একই কারনে জয়ী ম্যাচে সাকিবের ব্যাটিং ইনিংস ও কম।
চেজিংয়ে জয়ী ম্যাচে বিরাট কোহলি যেখানে ব্যাট করেছেন ১৫ ম্যাচে সেখানে সাকিব ব্যাট করেছেন ৭ ম্যাচে। তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই সাকিবের সাথে কোহলির রানের ফারাক অনেক বেশি হবে।
তাই আমরা কথা বলতে পারি এভারেজ, নট আউট ইনিংস এবং স্ট্রাইকরেট নিয়ে...
চেজিংয়ে জয়ের ম্যাচে বিরাট কোহলি নট আউট ছিলেন ১৫ ম্যাচের মাঝে ৫ বার। যার অর্থ বিরাট কোহলি ক্রিজে থেকে জয় ছিনিয়ে আনতে পেরেছেন ১৫ বারের মাঝে মাত্র ৫ বার।
বিপরীতে সাকিব আল হাসান সাত বারের মাঝে মাঠে থেকে জয় নিশ্চিত করতে পেরেছেন ৩ বার। পার্থক্যটা এখানে অনেক বেশি👀
অন্যদিকে, এই ১৫ ম্যাচে বিরাট কোহলির এভারেজ ৬৫.৯০ যেখানে ৭ ম্যাচ খেলা সাকিবের এভারেজ ৭৫.৫০।
এবার আসি স্ট্রাইকরেট নিয়ে। চেজিংয়ে স্ট্রাইকরেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোহলি চেজিংয়ের সময় জেতা ম্যাচে ব্যাটিং করেছেন ৮৩.৬২ স্ট্রাইকরেটে অন্যদিকে সাকিব ব্যাটিং করেছেন ৮৭.৫৩ স্ট্রাইকরেটে।
আশাকরি স্ট্যাটসগুলোর মাধ্যমে বোঝাতে সক্ষম হয়েছি ট্যাটস নির্ভর কথা বলতে গেলে বড় আসরে সাকিব এখনো বিরাটের চেয়ে এগিয়ে আছেন👀
[একটা বিষয় ক্লিয়ার করতে চাই, এই পোস্টে আমার ইনটেনশন এমন ছিলো না যে স্ট্যাটস ঘেটে বিরাটকে সরিয়ে সাকিবকে চেজ মাষ্টার দাবি করা। বিরাট কোহলি আরো অনেক নামের ন্যায় 'চেজ মাষ্টার' নামটিও দুয়েকদিনে অর্জন করেননি। একযুগেরও বেশি সময় ধরে ভারতের মতো একটা দলকে চেজিংয়ে মূল স্তম্ভরুপে সাপোর্ট দেওয়ার মাধ্যমেই অর্জন করেছেন। ওয়ানডে বিশ্বকাপে এর আগের আসর পর্যন্ত কোহলি নিজের রঙিন না হতে পারলেও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসরগুলোতে নিজের রঙ ছড়িয়েছেন বরাবর। ওয়ানডে বিশ্বকাপে যা ছড়ানো বাকি ছিলো তা এবার ছড়াচ্ছেন শুরু থেকেই। টুর্নামেন্টের মাঝপথেই ছাড়িয়ে গেছেন চেজিংয়ে ৩০০ রানের মাইলফলক। আমি শুধু স্ট্যাটসগুলো জানালাম মাত্র]
সাকিবের ইনজুরিতে অনেকে লোকলজ্জার ভয়ে পাব্লিক্যালি খুশি প্রকাশ করছে নাহ কিন্তু বলছে, অনেক হয়েছে এবার সাকিবের অপমানিত হওয়ার চেয়ে বিদায় বলা উচিত।
তাদের জন্য, তিন ম্যাচের মাঝে প্রথম দুই ম্যাচে ওপেনিং জুটি ভাঙতে সাকিবকেই প্রয়োজন হয়েছে। আজ প্রথম উইকেট যাওয়ার কর কনওয়ে-উইলিয়ামসনের জুটিও সাকিবই ভাঙলেন। উইলিয়ামসের ক্যাচ তাসকিন না ফেললে হয়তো ভিন্ন কিছু ও হতে পারতো..
এবার বলুন, সাকিবকে ট্রল করার কারন কি.? সাকিবের আগে বাংলাদেশের হয়ে কোন ক্যাপ্টেন নিজে টপ পারফরম্যান্স করার পরেও এভাবে সমালোচনার শিকার হয়েছে?
আমার তো মনে পড়ছে নাহ।
চোখ বন্ধ করলে দেখতে পারি অতীতের বিভিন্নজনের বিভিন্ন কর্মকান্ড। নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে তরুন কাউকে বলির পাঠা বানানোর উদাহরন তো তারাই তৈরি করে দিয়ে গেছেন। অথচ তাদের নামে কোনো কথা হয়নি কারন তারা মিডিয়ায় রসপূর্ণ কথা বলতে পারতেন, আগের রাতে স্কোয়াড দিয়ে খবরের পাতার মূল শিরোনাম তৈরি করতে সাহায্য করতেন।
সাকিব তা পারেন নাহ বলেই হয়তো নিজের পারফরম্যান্স অন্য সবার চাইতে ভালো হওয়া স্বত্বেও এতো সমালোচনার শিকার হইতে হয়।
সাকিব নিজে এগুলো সয্য করতে শিখে গেছেন অনেক আগেই।
তবে আজকের একট তথ্য জেনে রাখুন, পাগলামি করে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে আউট হওয়ায় যাকে বুলিং করলেন তিনি বল হাতে ব্রেকথ্রু এনে দেওয়ার পর সারাক্ষণ ফিল্ডিং করে ম্যাচ পরবর্তী প্রেস মিটে অন্যজনকে পাঠিয়ে এখন গেছেন হসপিটালে স্ক্যানিং করতে।
-রিফাদ
ডিসকাউন্ট পোস্ট থেকে অ্যাপ্রিসিয়েশন পোস্ট, লিটন যেন আকাশ আর পাতাল দুটোই দেখে চলেছেন গত কিছুদিন ধরে।
বাংলাদেশ ক্রিকেটে সমালোচকদের হট টপিক লিটন কুমার দাশ। সবচেয়ে বেশি ট্রোলড মানুষদের পরিসংখ্যান করা হলে বোধহয় প্রথম তিনজনের তালিকায় পাওয়া যাবে লিটনের নাম।
২০২১ সালে খুবই বাজে পারফরম্যান্স এর কারনে সমালোচনার মাত্রা পৌঁছেছিলো চরম পর্যায়ে। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ পরে তো বোর্ড প্রেসিডেন্ট বলেই বসেছিলেন, জাতীয় দলের আশেপাশে আর দেখা যাবেনা লিটন সৌম্যকে।
তবে প্রেসিডেন্টের এমন কথার চাইতেও লিটনকে আঘাত করেছিল সম্ভবত সমালোচনার অন্য আরেকটা অভিনব পদ্ধতি। সেসময় শুরু হয়েছিলো ডিসকাউন্ড পোস্ট ট্রেন্ডের৷ লিটনের ইনিংসের উপড় দেওয়া হতো বিভিন্ন ডিসকাউন্ট। যার মাঝে ছিলো, লিটন ম্যাচে যত রান করবেন তত পার্সেন্ট ছাড় কিংবা যত রান করবেন তার কয়েকগুন টাকা ডিসকাউন্ট!
একজন মানুষের মনুষ্যত্ব কত নিচুতে পৌছালে অন্য আরেকজনকক নিয়ে এমন পোস্ট করা যায় তা ভাবা খুবই দুরুহ৷ এ নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ক্ষোভ ঝেড়েছিলেন স্বয়ং লিটনের স্ত্রী। উগড়ে দিয়েছিলেন ঐসব সমালোচকদের উপড় সমগ্র রাগ আর ঘৃণা।
এরপরের লিটনকে আমরা সবাই জানি। বিশ্বের বাঘা বাঘা প্লেয়ারদের পিছনে ফেলে ছড়াচ্ছিলেন রানের ফোয়ারা। গড়েছিলেন রেকর্ডের পর রেকর্ড।
কিন্তু সুসময় খুব বেশি স্থায়ী হয়নি লিটনের। ২০২২ সালটা যদি লিটনের হয় তবে ২০২৩ সালটা আবারও সমালোচকদের। ভাইস ক্যাপ্টেন হওয়ার পর থেকেই ব্যাট হাতে সাদাকালো লিটন। দৃষ্টিকটু সব আউটের কারনে সমালোচিত হচ্ছেন বছরের শুরু থেকেই। শুরু দিকে শুধু টেকনিক্যাল দিকগুলো নিয়ে সমালোচনা হলেও সময় গড়ালে তা রুপ নিয়েছে নোংরা রুপে। আবারও শুরএ হয়েছিল ডিসকাউন্ট পোস্টের ছড়াছড়ি। শোরগোল উঠেছিল বাদ দেওয়ার।
তাই সমালোচকদের মুখ বন্ধ করার জন্য বেছে নিলেন ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডকে। সমালোচকদের মুখে জিম্বাটন খেতাব পাওয়া লিটন আবারও প্রমান করলেন নিজের সামর্থ্য। লিটন যে শুধু খর্বশক্তির দলের বিপক্ষেই নয় বরং সব দলের বিপক্ষেই ভয়ঙ্কর তার প্রমান আবারও দিলেন আজ। মাত্র ৬৬ বলে ৭৬ রানের ইনিংসটি হয়তো দলকে ম্যাচ জেতাতে পারেনি, কিন্তু স্বস্তি এনে দিয়েছে ম্যানেজমেন্টে।
বিশ্বকাপের ১৫ সদস্যের দলে ব্যাকআপ ওপেনার নেয়নি বাংলাদেশ। তাই লিটনের অফফর্মে চিন্তার ভাজ পড়ছিলো ম্যানেজমেন্টে। ব্যাকআপ ওপেনার না থাকায় লিটনকে বাদ দেওয়ার মতো সিদ্ধান্ত নিতেও বারবার ভাবতে হতো কোচ-ক্যপ্টেনকে। তবে আজ রানের দেখা পেয়ে নিজের সাথে ম্যানেজমেন্টের মাথা থেকেও সড়িয়ে দিলেন বিরাট চিন্তার বোঝা।
আজকের মতো প্রতিবার জ্বলে উঠুক ব্যাট, লিটনে রঙিন হোক বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্বপ্ন।
বড় ব্যবধানে হারার ম্যাচে স্বস্তির খবর রানে ফিরলেন লিটন
লিভিংস্টোন এর অগ্রিম সতর্কবার্তা সত্বেও ম্যাচ বাচাতে পারেনি টিম বাংলাদেশ। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৩৭ রানের বিশাল ব্যবধানে ম্যাচ হারলো সাকিব বাহিনী।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বড় ব্যবধানে হারার পর শঙ্কা করা হচ্ছিল রানরেট বাড়াতে বাংলাদেশের উপড় চড়াও হবে ইংল্যান্ড। ইংল্যান্ডের প্লেয়ারদের মুখেও ফুটে উঠছিলো সেই কথাই। লিভিংস্টোন কিংবা জস বাটলার, সবাই বলছিলেন রানরেট বাড়িয়ে নেওয়ার কথা। ম্যাচ শুরুর পরেও দেখা গেলো একই চিত্র।
টস জিতে ইংল্যান্ডকে ব্যাটিংয়ে পাঠানো যে মোটেই সঠিক কোনো সিদ্ধান্ত ছিলো নাহ তা বুঝাতে দেরি করেননি বেয়ারস্টো-মালান। শুরু থেকেই বাংলাদেশি বোলারদের উপড় চড়াও হন ইংলিশ ওপেনার। দুই ওপেনার দারুণ এক পার্টনারশিপ গড়ে স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ১১৫ রান। তার পরের উইকেট জুটি আরো ভয়ঙ্কর ছিলো বাংলাদেশের জন্য। মালান-রুট জুটিতে ইংলিশ স্কোরবোর্ডে যোগ হয় ১৫১ রান।
এরপরই মূলত কামব্যাক করে বাংলাদেশ। যদিও প্রথম ৩০ ওভার পর্যন্ত বেশ ভালোভাবেই ম্যাচে ছিলো বাংলাদেশের কিন্তু ৩০-৪০ ওভারের মাঝামাঝি ১০ ওভারে বাংলাদেশের বোলারদের নিয়ে রীতিমতো ছেলেখেলা করে ইংল্যান্ড।
৪০ ওভারের পর শরিফুল এবং মাহেদি এর দারুণ কামব্যাকে ৩৬৪ রানে বেধে রাখা গেছে ইংল্যান্ডকে।
মাহেদি শিকার করেন ৪ উইকেট এবং শরিফুল শিকার করেন ৩ উইকেট।
৩৬৬ রানের পাহাড়সম টার্গেটে ব্যাট করতে নেমে আবারও ব্যর্থ তানজিদ তামিম। একাদশে ইংল্যান্ডের একমাত্র পরিবর্তন টপলি এর বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন মাত্র ১ রান সংগ্রহ করে। সম্প্রতি আবারও ডিসকাউন্ট পোস্টের সম্মুখীন হওয়া লিটন একপ্রান্ত আগলে রেখে ব্যাটিং করে গেলেও অপর প্রান্তে থিতু হতে পারছিলেন না কেউ ই।
তানজিদ তামিম স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরলে ৩ নম্বরে ব্যাটিংয়ে আসেন শান্ত। বিশ্বকাপ মিশনের প্রথম ম্যাচে দারুণ ইনিংস খেলা শান্ত এদিন ফেরেন গোল্ডেন ডাকে। টপলির বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে ফিল্ডারের হাতে ক্যাচ দেন শান্ত।
চার নম্বরে ব্যাট করতে আসা ক্যাপ্টেন সাকিবও ব্যর্থ দলের প্রয়োজনের সময়। সাকিবও ধরা পড়েন টপলির ফাঁদেই। ক্লিন বোল্ড হয়ে সাকিব প্যাভিলিয়নে ফিরলে বাংলাদেশের জয়ের আশা তখনই ফিকে হয়ে যায়। এরপর মুশফিক হৃদয় ছোট ছোট ইনিংস খেললেও তা শুধুই বাড়াতে পেরেছে পরাজয়ের ব্যবধান।
হাজারো না পাওয়ার এই ম্যাচে স্বস্তির খবর হতে পারে লিটনের রানল ফেরা। ক্রিস ওকস কে এক ওভারে তিনটি বাউন্ডারি হাকিয়ে প্রথমেই জানান দিয়েছিলেন রানে ফেরার। পুরো ইনিংস জুড়েই আত্মবিশ্বাসী লিটন হাঁকিয়েছেন ৭ বাউন্ডারি এবং ২ ওভার বাউন্ডারি। হ্যাট্রিক বাউন্ডারি হাঁকানো ওকসের বলেই উইকেটের পিছনে বাটলারের হাতে ধরা পড়েন লিটন৷ মাত্র ৬৬ বলে ৭৬ রানের ইনিংসটি পরের ম্যাচগুলোর জন্য টিম ম্যানেজমেন্টে স্বস্তি দিতে পারে সন্দেহাতীতভাবে।
ইংল্যান্ড নিজেদের স্বভাবসুলভ খেলাই খেলছে। বাংলাদেশ না হয়ে আজ প্রতিপক্ষ হিসেবে দক্ষিণ আফ্রিকা বা অস্ট্রেলিয়া হলেও একই ইনটেন্ট নিয়ে খেলতো।
কিন্তু বিষয়টা হচ্ছে ম্যাচের আগের স্ট্রাটেজি! ম্যানেজমেন্টে এতজন অভিজ্ঞ এবং বিশেষ করে শ্রীরাম নিজের ঘরের মাঠের পিচ সম্পর্কে ধারনা দিতে ব্যর্থ হওয়া দেখে খুবই হতাশ।
ইংল্যান্ড এমনিতেই বাংলাদেশ থেকে অনেক এগিয়ে, এর সাথে ব্যাকফায়ার করেছে স্পিনার খেলানোর সিদ্ধান্ত।
বিশ্বকাপের মিশনের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে দারুন জয়ের পরেও নির্ভার থাকার উপায় নেই টাইগারদের। কারন ১০ তারিখ মঙ্গলবার বাংলাদেশের ম্যাচ ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। ইংলিশদের বিপক্ষে কেমন একাদশ খেলানো যেতে পারে তা নিয়েই আলোচনা করবো এই প্রতিবেদনে।
আফগান বধের ধর্মশালাতেই ইংলিশদের বিপক্ষে ম্যাচ টাইগারদের। তাই প্লানে খুব বেশি রদবদল আনতে হবেনা টাইগার ম্যানেজমেন্টের। তবে চিন্তার বিষয় বাংলাদেশের বোলিং লাইনআপ নিয়ে।
আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাত্র পাঁচ বোলার নিয়ে মাঠে নেমেছিলো সাকিব বাহিনী। পাচ বোলার নিয়ে ইংল্যান্ডের বিপক্ষেও মাঠে নামা অনেকাংশে সুইসাইডাল ডিসিশন এর শামিল। তাই ইংল্যান্ডের বিপক্ষে অনুমিতভাবেই একজন বোলার ইন হবে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে কার জায়গায় কে ইন হবেন.?
চলতি বিশ্বকাপে ফিঙ্গার স্পিনাররা দারুণ ইম্প্যাক্ট রাখছেন। প্রস্তুতি ম্যাচ থেকে মূলপর্ব সবজায়গায় পাওয়া গেছে প্রমান। বাংলাদেশ আফগানিস্তান ম্যাচেও দারুণ বল করেছেন মিরাজ। আফগানিস্তানের নাবিও দারুন বল করেছেন। ৬ ওভার বোলিং করে মাত্র ১৮ রানের খরচায় তুলে নিয়েছেন একটি উইকেট।
তাই ফিঙ্গার স্পিনার হিসেবে মাহেদি বা নাসুমের যেকোনো একজন দলে আসবেন ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। নাসুমের চেয়ে মাহাদি ঢের এগিয়ে থাকায় বাজি ধরা যায় মাহেদির হয়েই৷ এছাড়াও মাহাদি দারুণ পারফরম্যান্স করেছেন সর্বশেষ কয়েক ম্যাচে। ওয়ার্ম আপ ম্যাচে শ্রীলঙ্কাকে বেধে রাখার দায়িত্ব নিপুণভাবে পালন করেছেন৷ তুলে নিয়েছিলেন তিন তিনটি উইকেট।
এখন কথা হতে পারে তাহলে কার জায়গায় আসবেন মাহাদি। এক্ষেত্রে আমি দুটো নাম বেছে নিব৷ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং হৃদয় এর যেকারো জায়গায় দলে আসতে পারেন শেখ মাহেদি। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ একাদশে থাকলেও নামের প্রতি সদ্ব্যবহার করতে পারেননি। এছাড়াও গতম্যাচে ব্যাট না পেলেও এক ওভার বোলিং করতে এসে বাজে বোলিং করেছেন। রানের হিসেবে ৭ রান খরচ করলেও প্রত্যেকটি করেছেন শর্ট বল৷ বামহাতি ব্যাটার থাকায় একটি চারের উপড় দিয়েই বেচে গেছেন রিয়াদ।
অন্যদিকে হৃদয় গত কয়েকম্যাচে স্বরূপে ফিরতে পারছেন নাহ৷ তাই হৃদয়ের একটা সম্ভাবনা থেকেই যায়। যদিও দারুণ ফিল্ডার হিসেবে সুখ্যাতি থাকায় এদিকে একাদশে থাকার দৌড়ে এগিয়ে থাকবেন হৃদয়।
একাদশে আরো একটি পরিবর্তন আসতে পারে পেস বোলিং ইউনিটে। তিনজনই দারুণ বল করেছেন সর্বশেষ ম্যাচে। তারপরও আসতে পারে একটি পরিবর্তন। মুস্তাফিজ কিংবা শরিফুলের জায়গায় দলে আসতে পারেন হাসান মাহমুদ।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে বাজে বল করলেও পেতে পারেন আরো একটি সুযোগ। মূলত মিডল ওভারগুলোতে হাসানের উইকেট টেকিং এ্যাবিলিটির জন্যই তার উপড়ে আবারও ভরসা করতে পারে ম্যানেজমেন্ট। এছাড়াও হাসানের ডেডলি ইনসুইং যেকোনো ব্যাটারকে যেকোনো মুহুর্তে প্যাভিলিয়নে পাঠানোর জন্য যথেষ্ট।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বোচ্চ এই দুটি পরিবর্তনই দেখা যেতে পারে বাংলাদেশ স্কোয়াডে।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে যদিও আন্ডারডগ হয়ে খেলবে বাংলাদেশ, তারপরও ধর্মশালার স্পিনিং ট্রাকে ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়নকে হারানোর একটা সুযোগ অবশ্যই হাতছাড়া করতে চাইবে নাহ সাকিব বাহিনী।
কতটুকু একমত.?
বল হাতে এবং বুদ্ধির খেলায় এক সাকিবের কাছেই হেরে বসলো আফগানিস্তান। ২০১৯ থেকে ২৩, সাকিবের হাতেই নাস্তানাবুদ আফগানরা।
আজ বিশ্বকাপে মিশনের প্রথম ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে মাঠে নেমেছে বাংলাদেশ। টস জিতে বোলিং নেওয়া বাংলাদেশকে বেশ ভোগাচ্ছিলো আফগান ওপেনাররা৷ ব্রেকথ্রু এর জন্য দিশেহারা বোলিং ইউনিটে শান্তির বার্তা নিয়ে আসেন স্বয়ং ক্যাপ্টেন সাকিব। দলীয় নবম ওভার এবং ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ওভারে এসেই ইব্রাহিম জাদরানকে তানজিদ তামিমের তালুবন্দি করে প্যাভিলিয়নে পাঠান।
দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছিলো আফগান। গুরবাজের সাথে ৩৬ রানের জুটি গড়েছিলো রহমত শাহ। আফগানদের লাগাম টানার জন্য তাই দরকার ছিলো একটি উইকেট।
দলের প্রয়োজনের সময় আবারও এগিয়ে আসলেন সাকিব৷ রহমত শাহ কে লিটনের তালুবন্দি করে দলকে এনে দিলেন ব্রেকথ্রু।
ব্যক্তিগত রেকর্ডের ধার না ধারা সাকিবকে ইশারা দিচ্ছিলো আরো একটু নতুন রেকর্ড। রেকর্ডটি ছিলো বিশ্বকাপে বামহাতি স্পিনারদের মাঝে সর্বোচ্চ উইকেট শিকার। আজ নিজের দ্বিতীয় উইকেট শিকারের মাধ্যমে ড্যানিয়েন ভেট্টোরির সাথে যুগ্মভাবে এক নম্বরে ছিলেন।
রেকর্ড সম্পর্কে উদাসীন সাকিব ভেট্টোরিকে পেছনে ফেলেন অল্প কিছুক্ষণ পরেই।
নাজিবুল্লাহ জাদরানকে বিট করে ব্যটে এডজ হয়ে বল স্ট্যামে আঘাত হানলে সাকিব হয়ে যান বাহ হাতি স্পিনারদের মাঝে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি।
এভাবেই রেকর্ডের পর রেকর্ড গড়ে চলেছেন সাকিব আল হাসান৷ ভক্ত সমর্থক এই কারনেই তাকে রেকর্ড আল হাসান নামেও ডেকে থাকে। বিশ্বসেরা বোধহয় এমন কাউকেই বলে...
ওপেনিং চিরিমনি অনুষ্ঠিত না হওয়ার সমালোচনা হজম করতে না করতেই আজকে আবারও শুরু হয়েছে দর্শক নিয়ে সমালোচনা। বৈশ্বিক ক্রিকেটের সর্বোচ্চ আসর 'ওয়ানডে বিশ্বকাপ' এর ওপেনিং ম্যাচেও দর্শকের খরা হওয়ায় সমালোচনা হওয়াটা প্রায় স্বাভাবিক ই ধরা যায়। সমালোচনা যে বিসিসিআই কে নিয়ে হচ্ছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে নাহ। হ্যা, বিসিসিআই অনেকাংশে দায়ী তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। তবে আমার দৃষ্টিতে দর্শক না হওয়ার সম্ভাব্য কারন হিসেবে ধরা দিয়েছে আরো দুয়েকটি কারন। সেগুলো নিয়েই আলোচনা করা যাক এই পর্বে...
'আয়োজনের দিক দিয়ে সবচেয়ে বাজে বিশ্বকাপ' হ্যা এমনটাই ফলাও করে শিরোনাম হয়েছে ক্রিকেট প্লেয়িং দেশগুলোতে।
কোনো বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট মানেই জাঁকজমকপূর্ণ উদ্ভোদনী অনুষ্ঠান দেখে অভ্যস্থ আমরা। যেকোনো বিশ্বকাপেই বিশ্বকাপের উন্মাদনা কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয় উদ্ভোদনী অনুষ্ঠান। বিশ্বকাপের কথা বাদ দিলেও আইপিএল এ আরিজিত সিং যখন 'ঝুমে যো পাঠান' কিংবা 'কেসারিয়া' গেয়ে উঠেন তখন আরিজিতের সাথে গলা মেলানো লাখো কন্ঠ শুনেই মনে হয়, হ্যা কিছু একটা শুরু হতে যাচ্ছে।
সেখানে বিশ্বকাপের মতো আসরে ওপেনিং চিরিমনি ক্যানসেল করায় বিশ্বকাপের উন্মাদনা যেন চুপসে গেছে অনেকটাই।
ওপেনিং চিরিমনি ক্যানসেলের কারনে চুপসে যাওয়াটা একটি কারন হলেও মেইন কারন নয়। আরো আছে বেশ কয়েকটি কারন। যার একটি হলো, আমরা উপমহাদেশের যারা ক্রিকেটভক্ত আছি তারা মূলত নিজের দেশের খেলাটাই বেশি উপভোগ করি। এমন অনেকেই আছে, যারা অন্য দেশের খেলা নিয়ে বিন্দু পরিমাণ ও মাথা ঘামায় নাহ। সেখানে উপমহাদেশের বাইরের দুটি দেশের খেলা হওয়ায় টিকিট কেটে দেখার মানুষের অভাব লক্ষ্য দেখা গেছে।
এখন প্রশ্ন আসতে পারে গত আসরের দুই ফাইনালিস্ট এর ম্যাচ মানে তো হাইভোল্টেজ ম্যাচ। হাইভোল্টেজ ম্যাচেও দর্শক আগ্রহ পেলো না কেনো.?
প্রশ্নটা আগাগোড়াই ভ্যালিড। প্রশ্ন ওঠাটা স্বাভাবিক। তবে, গ্রুপপর্বেই যেকোনো দলের ম্যাচ ৯টি। এবং ৯ টি ম্যাচ কমপক্ষে ৪-৫টি ভিন্ন ভিন্ন শহরে। আহমেদাবাদ এর আশেপাশে যারা ক্রিকেট ভক্ত আছেন এবং ভারতের বেশিরভাগ ম্যাচ দেখবেন বলে ঠিক করে রেখেছেন তাদের জন্য ৪-৫ টি শহর ঘোরা এবং ২ মাসের জার্নির খরচ বেশ বড় একটা এমাউন্ট। তাই নিজের দেশের ম্যাচ দেখার পর ওপেনিং চিরিমনি ছাড়া সাবকন্টিনেন্ট এর বাইরের দুটি দেশের খেলা দেখার প্রতি আগ্রহ কিছুটা কম থাকাই স্বাভাবিক।
যদি ছোটোখাটো ওপেনিং চিরিমনি ও রাখতো বিসিসিআই, তবুও দর্শকের এই অবস্থা হতো না।
উদ্ভোদনী ম্যাচেও দর্শক নাই এই লাইনটি মূলত সবাই লক্ষ্য করে ম্যাচের শুরুতে। ম্যাচটি শুরু হয় ভারতীয় সময় দুপুর দুটোয়। যা পুরোদস্তুর অফিস টাইম। তাই অফিসটাইমে দর্শকের ঢল কম হবে এমনটাই স্বাভাবিক। সমশ যত গড়তে থাকে মানুষের উপস্থিতি ও বেড়েছে। তবে হ্যা, আইপিএল এর মতো দর্শক হয়তো উপস্থিত হয়নি আর না হওয়ার কারন উপড়ের দুটি পয়েন্ট।
দর্শক কম মনে হওয়ার সবচেয়ে বড় কারন হচ্ছে ক্যাপাসিটি। আহমেদাবাদ স্টেডিয়ামে দর্শক ধারন ক্ষমতা ১ লাখ ২০ হাজার। ক্রিকেট স্টেডিয়াম গুলোর মধ্যে সম্ভবত সবচেয়ে বেশি ধারন ক্ষমতার স্টেডিয়াম এটা। এই স্টেডিয়ামে যদি মিরপুরের শেরে বাংলা স্টেডিয়ামের সর্বোচ্চ ধারনকৃত দর্শক ও উপস্থিত হয় তার পরেও মনে হবে খুব বেশি দর্শক হয়নি। শেরে বাংলায় দর্শক ধারন ক্ষমতা গুগলের সহায়তায় জানতে পারলাম ২৫৪১৬ জন। সবসময়ই ধারনক্ষমতার চেয়ে বেশি দর্শক উপস্থিত হয়৷ তাই ধরলাম ৩০০০০ দর্শক উপস্থিত হয়। এই ৩০০০০ দর্শক ও যদি আহমেদাবাদ স্টেডিয়ামে উপস্থিত হয় তাহলে মনে হবে স্টেডিয়াম পুরো খালিই পড়ে আছে।
তাই ক্যাপসিটি একটি বড় ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করেছে এমনটা মনে হওয়ার জন্য।
২০৩০ বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হবে আর্জেন্টিনা, প্যারাগুয়ে, উরুগুয়ে, স্পেন, মরক্কো এবং পর্তুগালে।
ওপেনিং ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে আর্জেন্টিনায় এবং ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে স্পেনে। হোস্ট ৬টি দেশই বিশ্বকাপে অংশগ্রহব করবে কোনোরকম বাছাইপর্ব উতরানো ব্যতিরেখেই।
মালয়েশিয়ায় বিপক্ষে আজ ছোট টার্গেটে খেলতে নেমে শে ওভারে মালয়েশিয়ায় দরকার ছিলো মাত্র পাঁচ রান।
বোলিংয়ে এসে প্রথম তিন বল ডট এবং চতুর্থ বলে ফিফটি হাঁকানো ব্যাটারকে জয়ের তালুবন্দি করে প্যাভিলিয়নে পাঠান। পরের দুটি বলে দুইটি সিঙ্গেল কনসিড করলে বাংলাদেশের জয় নিশ্চিত হয়ে যায় এবং বাংলাদেশ সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে।
নিজের টি-টোয়েন্টি অভিষেকে আজ এশিয়ান গেমসে মালয়েশিয়ায় বিপক্ষে খেলতে নেমে কোনো বল ফেস না করেই রান আউট হন মাহমুদুল হাসান জয়। আর এতেই অংশীদার হয়ে যান এক অনৈচ্ছিক রেকর্ডবুকে।
ক্রিকেট ইতহাসের নবম এবং বাংলাদেশ ক্রিকেটের দ্বিতীয় প্লেয়ার হিসেবে টি-টোয়েন্টি অভিষেকে ডায়মন্ড ডাক পেলেন মাহমুদুল হাসান জয়।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বপ্রথম এই দূর্ভাগা রেকর্ডবুকে নাম লিখিয়েছিলেন সৌম্য সরকার।
২০১৫ সালে পাকিস্তানের বিপক্ষে অভিষেক ম্যাচে কোনো বল ফেস না করেই রান আউটের শিকার হয়েছিলেন পরবর্তী সময়ে অন্যতম সেরা ওপেনার হয়ে ওঠা সৌম্য। সেই ম্যাচে প্রথমবারের মতো পাকিস্তান বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে জয়লাভ করেছিলো বাংলাদেশ এবং ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছিলেন সাব্বির রহমান।
দেশের ফেরার পথে প্রায় ৬৪ বোতল মদ নিয়ে বিমানবন্দরে ধরা পড়েছেন বসুন্ধরা কিংসের পাঁচ তারকা ফুটবলার। এই পাঁচজনের মাঝে বেশিরভাগই নিয়মিত প্রতিনিধিত্ব করেন লাল সবুজের বাংলাদেশকে।
পাঁচজন ফুটবলার হলেন তপু বর্মন, আনিসুর রহমান জিকো, তৌহিদুল আলম সবুজ, শেখ মোরসালিন ও রিমন হোসেন।
মালদ্বীপের মাজিয়া স্পোর্টস অ্যান্ড রিক্রিয়েশন ক্লাবের বিপক্ষে এএফসি কাপের ম্যাচ খেলে দেশে ফেরার সময় অবৈধ মদ এনেছিলেন ওই পাঁচ ফুটবলার। হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের কাস্টমস কর্মকর্তারা তাদের কাছে ৬৪ বোতল বিদেশি মদ পেয়েছেন বলে জানিয়েছে একটি সূত্র। তবে অনেকের সন্দেহ, মদের বোতল ছিল ১০০ এর কাছাকাছি।
ঘটনাটি ঘটে বেশ কয়েকদিন আগে। যার কারনে কিংস এ্যারেনায় নিজেদের বাঁচা মরার লড়াইয়েও এই পাঁচজনকে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে মাঠে নামায়নি বসুন্ধরা কিংস। পরে নিশ্চিত করেছে, শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে সাময়িক নিষিদ্ধ করা হয়েছে এই পাঁচজনকে।
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী পেসার তানজিম সকিব আজ প্রথম আলোর একটি বিশেষ সাক্ষাৎকারে দাবি করেছেন, ওভারের ছয়টি বলই ইয়র্কার করতে সক্ষম তিনি।
বিশেষ সাক্ষাৎকারে কথা বলেছেন নিজের যোগ্যতা, শক্তিমত্তা ও আশার কথাগুলো নিয়ে। এখানে উঠে এসেছে তার একাগ্রতা এবং ডোনাল্ডের সাথে তার ভবিষ্যত পরিকল্পনার কথাও।
ওভারে প্রতি ঘন্টায় গড়ে ১৩৫ কিলোমিটার গতিতে বল করা সকিবকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিলো চেস্টা করলে আরো ৪-৫ কিলোমিটার বেশি গতিতে বল করতে পারবেন কিনা। উত্তরে সকিব বলেন, তিনি জাতীয় লীগের খেলা গুলোতে ১৪০ এর আশেপাশেই বল করেন৷ সামনে চেস্টা করে বলের গতি আরো বাড়ানোর পরিকল্পনা আছে বলে নিশ্চিত করেছেন তিনি।
এছাড়াও ইয়র্কারের ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে বলেন, ইয়র্কার এমন এক ধরনের বল যা যেকোনো ব্যাটারকে পরাস্ত করতে সক্ষম। ঠিক জায়গায় ফেলতে পারলে কেউ খেলতে পারবে নাহ ইয়র্কার।
নিজের ইয়র্কারের দক্ষতা নিয়ে বলেন, অনুশীলনের মাধ্যমেই রপ্ত করেছেন এই স্কিল।
ইয়র্কারে এখন তিনি এতটাই দক্ষ যে চাইলে ওভারের ছয়টি বলই ইয়র্কার করতে সক্ষম।
দলে টিকে থাকতে কি দরকার তাও বলেছেন তিনি। এই বিষয়ে কোচের সাথে হওয়া তার কথোপকথনের লাইন তুলেন। কোচ তানজিম সকিবের কাছে বোলিংয়ের পাশাপাশি ব্যাটিংটা ও এক্সপেক্ট করছে বলে জানান তিনি।
কোচের চাওয়ায় এবং ব্যটারদের ভরসার নাম হওয়ার জন্য নিয়মিত ব্যাটিং প্রাকটিস করছেন তিনি।
সাকিব-তামিম ইস্যুতে রেকর্ডেড ভিডিও পাবলিশ করার পর আজ আবারও রেকর্ডেড ভিডিও নিয়ে হাজির হয়েছিলেন ক্যাপ্টেন ম্যাশ। আজ কথা বলেছেন বিশ্বকাপ স্কোয়াডের ১৫ জন ক্রিকেটারকে নিয়ে। সংক্ষেপে বললে, ম্যাশের গলায় যেন সাকিবের কথারই পুনরাবৃত্তি শোনা গেছে।
ওপেনিং জুটি নিয়ে ম্যাশ বলেছেন সাকিবের সুরে সুর মিলিয়েই। টি-স্পোর্টস এ দেওয়া ইন্টারভিউ এ সকিব বলেছিলেন, ওপেনিং জুটি থেকে সব ম্যাচ ভালো খেলার দাবি রাখেন নাহ তিনি। তবে ২-৩ টি দারুণ ইনিংসের আবদার রেখেছেন তাদের কাছে।
ম্যাশও বলেছেন একই কথা। ম্যাশ বলেন, তারা ৪-৫ টি ম্যাচে দারুণ শুরু এনে দিতে পারলেই দলের জন্য দারুণ রেজাল্ট বয়ে আনা সম্ভব।
এছাড়াও অন্যান্য জায়গা গুলো নিয়ে প্লেয়ারদের ভূয়সী প্রশংসা করেছেন ক্যাপ্টেন ম্যাশ। পেস ইউনিটের প্রশংসায় পঞ্চমুখ ছিলেন তিনি।
সর্বোপরি, বর্তমান দল থেকে দারুন রেজাল্ট পাবার ক্ষেত্রে আশাবাদী ম্যাশ। দল মত নির্বিশেষে সবার থেকে এই দলের প্রতি সাপোর্ট চেয়েছেন তিনি।
ক্যাপ্টেন ম্যাশের মত আমরাও আশা রাখি, ভালো যদি কিছু হয় তবে এবারই সম্ভব।
রাফসানঃ সবচেয়ে ক্রেজিয়েস্ট মোমেন্ট কোনটি.?
সাকিবঃ স্ট্যাম্পে লাথি মারা এবং আন্তর্জাতিক ম্যাচে প্লেয়ারদের তুলে আনা।
▪️স্টার্কের হ্যাট্রিকে নিশ্চিত হওয়া গেলো বিশ্বকাপ এসে গেছে▪️
ক্রিকেটপাড়ায় একটা কথা বেশ প্রচলিত আছে, 'যখন স্টার্কের বলে আগুন ঝরতে দেখবেন তখন বুঝে নিবেন বিশ্বকাপ আসন্ন'
আজ নেদারল্যান্ডস এর বিপক্ষে স্টার্কের আগুনঝরা বোলিং দেখে তাই নিশ্চিত হলাম আসলেই দরজায় কড়া নাড়ছে বিশ্বকাপ।
বিশ্বকাপ প্রস্তুতি ম্যাচে আজ নেদারল্যান্ডস এর বিপক্ষে খেলতে নেমে স্টার্ক তুলে নিয়েছেন হ্যাট্রিক।
গত দুই বিশ্বকাপ আসরের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি এই বিশ্বকাপেও আছেন দারুণ ছন্দে। তাই তো খর্ব শক্তির নেদারল্যান্ডসের টপ ওর্ডারে ধস নামিয়ে সতর্ক করলেন অন্যদের।
বৃষ্টিবিঘ্নিত ২৩ ওভারের ম্যাচে স্মিথের ফিফটিতে ১৬৬ রান তোলে মাইটি অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ওভারেই স্টার্কের তোপের শিকার হয় ডাচ টপ ওর্ডার। ওভারের পঞ্চম বলে এলবিডব্লুর ফাঁদে পড়ে পতন হয় প্রথম উইকেটের। ওভারের শেষ বলে দারুণ এক ইনসুইং এ স্টাম উড়ে ডাচ নাম্বার তিনের। দলীয় তৃতীয় ওভার এবং নিজের দ্বিতীয় ওভারে বোলিং করতে এসে প্রথম বলেই নিজের সিগনেচার ইয়র্কারে হ্যাট্রিক পূর্ন করেন স্টার্ক।
স্টার্ক দারুণ নৈপুণ্য দেখালেও শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জেতা হয়নি অজিদের। দিনের বেশিরভাগ সময় দাপট দেখানো বৃষ্টির কাছেই শেষ পর্যন্ত হার মানে দুই দল। ম্যাচ পরিত্যক্ত ঘোষনা হওয়ার আগ পর্যন্ত ১৪.২ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ৮৪ রান তুলেছিলো ডাচরা।
লাল সবুজের জার্সিতে(আন অফিসিয়াল) তামিমের প্রথম ফিফটি, লিটনের রানে ফেরার দিনে তৃতীয় স্পিনার হিসেবে জায়গা পাকাপোক্ত করলেন মাহেদি
বাংলাদেশ ক্রিকেটে একটা মিথ বেশ অনেকদিন ধরেই প্রচলিত আছে, কোনো টুর্নামেন্ট/সিরিজের প্রস্তুতি ম্যাচে বাংলাদেশ ভালো করলে ঐ টুর্নামেন্ট/সিরিজ ভালো যায় নাহ!
মিথ সত্য নাকি মিথ্যা সে আলোচনা করা বৃথা, তবে আশা করবো এমন কোনো কিছু থাকলেও তা কেবল মনের মিথ হয়েই থাকুক, মাঠে নয়।
টেকনিক্যাল আলোচনার বাইরে থেকে চিন্তা করলে আজকের ম্যাচে বাংলাদেশ দারুণ কিছু জিনিস অর্জন করেছে। যার মাঝে অন্যতম লিটনের রানে ফেরা, তামিমের অসাধারণ নৈপুণ্য, ফ্লাট উইকেটে কোন স্পিনার খেলানো হবে সেই সিদ্ধান্ত, মিরাজের ম্যাচুরিটি, সিনিয়র-জুনিয়র সবার ডেডিকেশন।
▪️ওপেনার হিসেবে লিটনের ব্যর্থতার খাতা বড় হয়ে গেছে অনেক আগেই৷ বাংলাদেশের ওপেনিং জুটির পারমানেন্ট সমস্যার মাঝে লিটনের অফফর্ম নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছিলো কোচ ক্যাপ্টেনকে। তবে আজকের ম্যাচে লিটনের রান প্রাপ্তি অনেকটা বোঝা হালকা করেছে কোচ ক্যাপ্টেনের মাথা থেকে।
লিটনের প্রতি ভক্ত সমর্থক থেকে শুরু করে লিটনের প্রতি সব মানুষের এক্সপেকটেশন অনেক বেশি থাকে৷ এই হাই এক্সপেকটেশন এর বলি হয়ে অনেকসময় নির্ভার লিটনের পারফরম্যান্স পাওয়া সম্ভব হয় নাহ। আমি মনে করি লিটনের খারাপ করার পেছনে অন্যতম দায়ী হচ্ছে দলের অতিরিক্ত বোঝা তার কাঁধে চাপানো। (হয়তো এর পিছনে অন্য কেউ দায়ী নাও থাকতে পারে, লিটন নিজেই দায়ী হইতে পারে অতিরিক্ত চাপ নেওয়ার ক্ষেত্রে)
সাকিব ক্যাপ্টেন হওয়ার পর সর্বপ্রথম এই বোঝামুক্ত করেছেন লিটনকে। টি-স্পোর্টস এর ইন্টারভিউ এ সাকিব লিটনের কাছে সব ম্যাচ নয়, দুই থেকে তিনটি ম্যাচে অতি অসাধারণ পারফরম্যান্স চেয়েছেন৷ এ ও বলেছেন, সবাই যদি খুব বেশি খারাপ করে তাও হতাশ হবেন না নাহ আবার খুব বেশি ভালো করলেও অতি আনন্দিত ও হবেন নাহ।
ক্যাপ্টেনের মুখে এমন কথা শোনার পর অবশ্যই নির্ভার হয়েছেন লিটন৷ আর তাই আজ দেখা মিললো ভিনটেজ লিটনের।
এছাড়াও পার্টনার হিসেবে তানজিদ তামিমের এমন দারুণ ব্যাটিং শৈলীও লিটনকে ভালো খেলতে সাহায্য করেছে।
▪️বাংলাদেশের পক্ষে তানজিদ তামিম এর আগে খেলেছিলেন মাত্র গোটা কয়েক ম্যাচ যেখানে রানের কোটা পেরোয়নি ২০ এর ঘর। তাই তামিমের প্রতি ক্ষোভ জমা হচ্ছিলো সবার। বিশেষ করে, তামিম ইকবালের জায়গায় তানজিদ তামিমকে নেওয়ায় তার প্রতি এক্সপেকটেশন এবং আক্রোশ দুটোই সমান্তরালে বেড়ে গেছে। এই প্রেশার থেকে বেরিয়ে আসার জন্য এমন একটি পারফরম্যান্স দরকার ছিলো তামিমের।
শুরু থেকে স্ট্রাইক রোটেড করে খেলা তামিমকে বেশ আত্মবিশ্বাসী মনে হয়েছে পুরোটা সময়। দারুণ কিছু শট খেলেছেন ৮৪ রানের সুবিশাল এই ইনিংসে। শুরুতে লিটন যখন কিছুটা ধীরস্থির ভাবে খেলছিলেন তখন দলের রানের চাকা পাকা-হাতে সচল রেখেছেন। লিটনকে পড়তে হয়নি তাই সামান্য পরিমান প্রেশারেও। তানজিদ তামিম যে বড় ইনিংস খেলার যোগ্যাতা নিয়েই দলে এসেছেন তার ছাপ লক্ষ্য করা যায় পুরো ইনিংস জুড়ে।
ওভার দ্য টপ খেলতে গিয়ে সোজা ফিল্ডারের হাতে বন্দি না হলে হয়তো ছুয়ে ফেলতেন তিন অংকের ম্যাজিকাল ফিগার। মূলপর্বে ব্যাট উঁচু করে ধরতে দেখার মুহুর্তের অপেক্ষায় রইলাম...
▪️শান্তর অবর্তমানে নাম্বার তিনে এসে বেশ দারুণ ব্যাটিং করেছেন মিরাজ। নিয়মিত ক্যপ্টেনকে জানান দিয়ে রাখলেন, দলের প্রয়োজনে যেকোনো জায়গায় ডেকে নিতে পারে তাকে। লিটনের ডিপার্চারের পরে তানজিদ তামিমকে দারুণ সাপোর্ট দিয়েছেন। দলের প্রয়োজনে হাঁকিয়েছেন বাউন্ডারি। রানের চাকা সচল রেখেছেন সব সময়। তামিম ফিরে গেলে মুশির সাথে জুটি গড়ে মাঠ ছেড়েছেন জয় নিয়েই।
▪️আজকের ম্যাচে এসবের চেয়েও বড় পাওয়া বোধহয় মাহেদি হাসান। ফ্লাট উইকেটে বাংলাদেশের স্পিনাররা বরাবরই নাকানি চুবানি খায়৷ গত বিশ্বকাপেও ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ম্যাচের কথা এখনও চোখে ভাসে৷ এছাড়াও আরো বিভিন্ন ম্যাচে লক্ষ্য করা গেছে এই অভাব।
তবে ক্যাপ্টেনের ডিসিশন মেকিংয়ে নিজের নামটা উজ্জ্বল করে রাখলেন মাহেদি। টসের পরপরই বলা হচ্ছিলে আজকের পিচ ৩০০-৩১০ রানের। পাওয়ারপ্লে তে নতুন বলেই বোলারদের লাইন লেন্থ নিয়ে বেশ ধকল পোহাতে হচ্ছিলো। সেখানে ব্যতিক্রম মাহেদি হাসান। শুধু ব্যতিক্রম বলতে কম বলা হবে, মূলত তার জন্যই শ্রীলঙ্কাকে ২৬০ এর কোটায় বেধে রাখা সম্ভব হইছে।
ফ্লাট উইকেটে মাহেদি যে এই প্রথম ভালো করেছেন তা ই নয়! এর আগেও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের মাটিতে হওয়া সিরিজে দারুন বল করেছিলেন তিনি। গতবছরের এশিয়া কাপেও টি-টোয়েন্টি ফরমেটে ভালো বল করেছিলেন। সাকিব মিরাজ বাদে অন্য স্পিনারের দরকার হলে তাই নাসুমের চেয়ে নিজেকে একধাপ এগিয়ে রাখলেন মাহেদি।
▪️আজকের ম্যাচে লক্ষ্য করার মতো আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে দুই সিনিয়র ক্যাম্পেইনারের ডেডিকেশন। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং মুশফিকুর রহিম তাদের প্রতি এক্সপেকটেশন এর চাইতেও ভালো নৈপুণ্য দেখিয়েছেন ফিল্ডিংয়ে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ যেন চলে হয়ে উঠেছিলেন ২৫-২৬ বছরের যুবক।
মূলপর্বের ম্যাচেও তাদের প্রতি এমন ডেডিকেশন চাওয়া থাকবে।
ছোট্ট করে বললে, এই ম্যাচে ভালো অনেক কিছুই অর্জন করেছে বাংলাদেশ। আশাকরি এই পারফরম্যান্স অব্যাহত রাখবে মূলপর্বেও।
মিথ কে মিথের জায়গায় রেখে স্বপ্নকে ছোঁয়ার রাস্তায় এগিয়ে যাওয়ার জন্য শুভকামনা রইলো টিম বাংলাদেশ।
Click here to claim your Sponsored Listing.
Videos (show all)
Category
Contact the public figure
Address
Sirajganj, 6780
News, Advertisements & Others. Journalist Shuvo Kumar Ghosh.
Village/Kansona Ghospara, Post-Salap, Ullapara
Sirajganj
i am interesting in my job
Sirajganj, 6700
Welcom WEC News is recognised by audiences around the world as a provider of news that you can trust.