North Howrah Left Wing
To Make democratic movement powerful.
সর্বহারার মহান শিক্ষক ফ্রেডরিক এঙ্গেলস
-----------------------------------------------------------
শ্রমিকশ্রেণীর বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে কার্ল মার্কসের সঙ্গে ফ্রেডরিক এঙ্গেলসের নাম অবিচ্ছেদ্যভাবে যুক্ত। সমাজতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে বুর্জোয়া রাজনৈতিক অর্থনীতির বিচার বিশ্লেষণ তিনিই প্রথম শুরু করেন -- যা পরবর্তীকালে বিপ্লবের বিজ্ঞানে পরিণত হয়। বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের অন্যতম স্থপতি ফ্রেডরিক এঙ্গেলস। কার্ল মার্কসের জীবনী সম্পর্কিত এক রচনায় লেনিন লিখেছিলেন " মার্কসের মতাদর্শ সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে গেলে তার ঘনিষ্ঠতম সতীর্থ ও এঙ্গেলসের সঙ্গে পরিচিত হতে হবে।"
চাই শ্রমিক শ্রেণীর পার্টি
--------------------------------
উন্নত পুঁজিবাদী রাষ্ট্র সর্বদাই ধনীদের স্বার্থে শ্রমিক শ্রেণীকে ও জনগণকে লুণ্ঠনের যন্ত্র হিসেবে কাজ করে। এ কারণে এঙ্গেলস মনে করতেন প্রতিটি রাষ্ট্ররই একটি শ্রেণীচরিত্র থাকে । কেননা, রাষ্ট্রব্যবস্থা এক শ্রেণীকে পদানত করে অন্য শ্রেণীর স্বার্থ রক্ষা করে। মানুষ কর্তৃক মানুষকে ও জাতি কর্তৃক জাতিকে শোষণের ব্যবস্থার অবসান করতে হলে প্রয়োজন শ্রমিকশ্রেণীর নেতৃত্বে বুর্জোয়া রাষ্ট্রব্যবস্থাকে উৎখাত করা। একটা পর্যায় রাষ্ট্রের আর কোনো ভূমিকাই থাকবে না এবং রাষ্ট্রব্যবস্থা অবলুপ্ত হবে। আর এখানেই শ্রমিক শ্রেণীর পার্টিকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হয়। মতাদর্শ ও সংগঠন ছাড়া শ্রমিকশ্রেণী এ কাজ সম্পূর্ণ করতে পারেনা। বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের আদর্শে অবিচল রাজনৈতিক দলই শ্রমিকশ্রেণীকে এই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনে নেতৃত্ব দিতে পারে।
পুঁজিবাদের সংকট
--------------------------
সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন এবং পূর্ব ইউরোপের দেশগুলোতে সমাজতন্ত্রের অবশেষ সাধারণ মানুষের জীবন যাত্রার উন্নতি সাধন করতে পারেনি, অবনতি ডেকে এনেছে। পুঁজিবাদ প্রমাণ করেছে, মানুষের মৌলিক সমস্যার সমাধান এই সমাজে হবে না কিন্তু নিত্যনতুন সংকটের জাঁতাকলে সে আষ্টেপৃষ্টে জড়িয়ে পড়বে। এই সংকট থেকে মুক্তি পেতে সে লুটেরা পুঁজির চরিত্র ধারণ করেছে। ধনতন্ত্র ধান্দার ধনতন্ত্রতে পরিনত হচ্ছে। গরীব খেটে খাওয়া মানুষ, নিম্নবিত্ত মানুষ, মধ্যবিত্ত মানুষ এর ফল টের পাচ্ছেন এবং ক্ষোভ বাড়ছে।কিন্তু ক্ষোভ বাড়লেও শাসক শ্রেণির নীতি পরিবর্তনের আবশ্যিকতা সবাই উপলব্ধি করতে পারছেন না।
শাসক শ্রেণির নীতির ফল
------------------------------------
আমাদের দেশে শাসক শ্রেণীর শোষণ নীতির ফলশ্রুতিতে গণ- দারিদ্র্য এক বিপজ্জনক মাত্রায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। কৃষকরা ফসলের দাম পাচ্ছে না। শ্রমিকরা তার ন্যায্য মজুরি থেকে হচ্ছে বঞ্চিত । এদিকে মূল্যবৃদ্ধি হচ্ছে লাগামছাড়া। ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ায় ফলে চাহিদার সংকোচন ঘটছে। জাতীয় অর্থনীতির ক্রমাগত শিল্পহীন অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। দেশের শিল্প ভিত্তিকে ধ্বংস করে দেওয়া, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ধ্বংস করে দেওয়া, স্বনির্ভরতাকে বিসর্জন দেওয়া এই সবই আমাদের জনগণের সিংহভাগের উপর চাপ বৃদ্ধি করে চলেছে। দেশের বৃহৎ কর্পোরেট সম্পদ ও আয় এবং মেহনতী মানুষের দারিদ্রতা উভয়ের অভূতপূর্ব বৃদ্ধি ঘটছে। ভারতে শীর্ষ ১০% এবং শীর্ষ ১% মানুষের আয় মোট জাতীয় আয়ের যথাক্রমে ৭২ % এবং ৪০.৫ %, যেখানে নীচের ৫০% জনগণের অংশ কমে গেছে ৩ শতাংশ। ক্ষুধা, দারিদ্র, শিশু পরিচর্যা, নারী নিরাপত্তা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, মানবাধিকার ইত্যাদির মত সমস্ত সূচকে ভারত পতনশীল।
শ্রেণী সংগ্রামই একমাত্র পথ
---------------------------------------
গত ৯ বছর ধরে রাষ্ট্র ক্ষমতাকে ব্যবহার করে কর্পোরেট সাম্প্রদায়িক সরকার তাদের শ্রেণি শাসন এবং শ্রেণি শোষণ চালিয়ে যাচ্ছে। ওরা শ্রেণি সংগ্রামের চরম বিরোধী। ওদের মত হলো রাষ্ট্র কোন শোষোণমূলক সংস্থা নয়। রাষ্ট্র ধর্ম ও সম্পদশালীদের রক্ষক এবং প্রতিনিধি। সে কারণেই শ্রেণী সংগ্রাম-সমাজ পরিবর্তনের কথা যারা বলে অর্থাৎ কমিউনিস্টরা তাদের প্রধান শত্রু। আরএসএস ঘোষিত আদর্শ অনুযায়ী শ্রমিক কর্মচারী এবং নিম্ন বর্ণের কাজ হল মালিকের সেবা করা। নিঃশব্দে কাজ করে যাওয়া।
আমাদের কাজ হবে আশু দাবির ভিত্তিতে শ্রমিক কৃষক ও জনগণকে যুক্ত করে শ্রেণি আন্দোলন গণ সংগ্রামকে তীব্রতর করা। ঐতিহাসিক কৃষক সংগ্রাম আমাদের শিখিয়েছে নাছোড়বান্দা আন্দোলন সরকারকে পিছু হটতে বাধ্য করে। কেন্দ্রীয় সরকারকে তার কর্পোরেট নীতির পরিবর্তন করাতে হলে, আর এস এস বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতেই হবে।
বর্তমান পরিস্থিতির চ্যালেঞ্জের সামনে দাঁড়িয়ে ভারতের মাটিতে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রবাদের লড়াইকে জয়ী করার জন্য প্রতিটি কমিউনিস্ট কর্মীর কাছে এঙ্গেলসের শিক্ষাকে আত্মস্থ করা অপরিহার্য।
✍️ অভিজিৎ চ্যাটার্জি
------------------------------------
নভেম্বর বিপ্লবের আদর্শ ছড়িয়ে দাও...
উত্তর হাওড়া জুড়ে শারদ বুকস্টল...
ভগবান আছে মাটির পৃথিবীতে
------------------------------------------
যে কোন ঘটনাকে তার সঠিক কার্য কারণ সম্পর্কের ভিত্তিতে বিচার করা এবং সেই অনুযায়ী কাজের পথনির্দেশ নির্ধারণ করাকেই বিজ্ঞানমনস্কতা বলা হয়। বিদ্যাসাগর ঠিক সেই কাজটাই করেছিলেন এবং অকুতোভয়।
রামমোহনের মত বিদ্যাসাগরও মনে করতেন পাশ্চাত্য বিজ্ঞান ও সভ্যতার অগ্রগতি সম্পর্কে আমাদের ছাত্রদের সুস্পষ্ট জ্ঞান থাকা আবশ্যক। পাশ্চাত্যে তখন জ্ঞান বিজ্ঞানের জগতে যে জোয়ার এসেছিল, যে প্রবল ঢেউ উঠেছিল তাকে ভারতীয় শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রবাহিত করা প্রশ্নাতীতভাবে প্রয়োজন ছিল বলেই বিদ্যাসাগর অনুভব করেছিলেন। জ্ঞান বিজ্ঞানের সত্যকে গ্রহণ না করলে জাতির অগ্রগতি সম্ভব হবে না।
বিদ্যাসাগর ব্যালেনটাইনকে লিখেছেন, "আমার দুঃখের সঙ্গে ভাবতে হয় আমাদের দেশে এখনো অনেক মানুষ রয়েছেন যাঁরা মনে করেন শাস্ত্রের কোন কথাই মিথ্যা হতে পারে না। এমনও হয়েছে দেখেছি, ইউরোপে ঘটেছে -- বিজ্ঞানের কোন নতুন আবিষ্কারের কথা যদি তাঁদের বলা হয় তাঁরা মুখ টিপে হেসেছেন আর নিজেদের অন্ধ বিশ্বাসের প্রতি দৃঢ়তা বহুগুণ বাড়িয়ে তুলেছেন। সব জায়গাতেই বিজ্ঞানের সত্যকে গ্রহণ করার প্রতি তীব্র অনীহা। অবশ্য সুখের কথা, বাংলাদেশে যেখানেই শিক্ষার প্রসার ঘটেছে সেখানে এই সকল পন্ডিতদের প্রভাব কমে আসছে।"
বিদ্যাসাগর ২৯ বছর বয়সে ১৮৪৯ সালে রচনা করলেন তাঁর তৃতীয় গ্রন্থ 'জীবন চরিত'। তিনি বেছে বেছে ৯ জন মহিষীকে নিয়ে জীবনী লিখলেন, কোপারনিকাস, গ্যালিলিও, নিউটন হার্শেল, গ্রোশাস, ডুবাল, লিনিয়াস জেঙ্কিল ও জোন্স। ধর্মযাজকরা বলে দিতেন বিজ্ঞান কী, কাকে বিজ্ঞান বলতে হবে, কতদূর বলতে হবে। এতই প্রভাব দিল তাঁদের। এই বিজ্ঞানীরা ধর্মযাজকদের এই খবরদারির প্রতিবাদ করতেন। এঁরা শাস্তিও পেতেন প্রতিবাদ করলে। কিন্তু তারা নিজেরা পরীক্ষণ, পর্যবেক্ষণ, সমীক্ষা ইত্যাদির মাধ্যমে যা জেনেছেন তার উল্টো কথা বললে তাঁরা মেনে নেবেন কী করে? বিজ্ঞান তো যাচাই করে সত্যকে জানতে শেখায়। বিজ্ঞান বিশ্বাস-নির্ভর জ্ঞান কে মূল্য দেয় না। বস্তুবাদকে প্রতিষ্ঠা করে। বিদ্যাসাগর ভাবাবেগে চলতেন না। এইসব বিজ্ঞানীদের ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে দেখে তিনি অনুপ্রাণিত হয়ে শিক্ষার্থীদের এদের কথা তুলে ধরলেন 'জীবন চরিত'এ। যেমন ধর্মশাস্ত্রের বিজ্ঞান না মেনে কোপার্নিকাস বলেছিলেন পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘোরে। গ্যালিলিও তাই প্রমাণ করেছিলেন। এর ফলে তাঁকে নির্বাসিত হতে হয়েছিল। মাধ্যাকর্ষণ তত্তের সঙ্গে নিউটনের নাম জড়িত। তাছাড়া তিনি আলোক ও বর্ণ দুই পদার্থের স্বরূপ নির্ণয় করেছেন। গণিতশাস্ত্রের পারদর্শী গ্রোশাস 'সর্বতন্ত্রপক্ষীয়' সমর্থন করতেন বলে জেলে যেতে হয়। 'সর্বতন্ত্রপক্ষীয়' হলো এমন এক সমাজব্যবস্থা যেখানে রাজা নেই এবং সর্বসাধারণের মতানুসারে যাবতীয় রাজকার্য নির্বাহ হয়।
বিদ্যাসাগরের বিজ্ঞানমনস্কতার জন্যই আর ধর্ম সম্পর্কে নিস্পৃহ মনোভাব ছিল। তিনি কখনও যাননি মন্দির- মসজিদ-গির্জায়। তিনি গিয়েছেন সমাজের নিপীড়িত-অবহেলিত-দলিত মানুষের কাছে। সেই কারণে বিদ্যাসাগর বলেছেন, "চোখের সামনে মানুষ অনাহারে মরবে, ব্যাধি-জরা- মহামারীতে উজার হয়ে যাবে, আর দেশের মানুষ চোখ বুজে ভগবান ভগবান করবে -- এমন ভগবত প্রেম আমার নেই আমার ভগবান আছে মাটির পৃথিবীতে।"
বিদ্যাসাগরমশাইয়ের ২০৪ তম জন্মদিবসে আমাদের অত্যন্ত আধুনিক মুক্তচিন্তা সম্পূর্ণ মানুষটির জীবন চর্চা কে আয়ত্ব করার প্রয়োজন দেখা দিচ্ছে বারে বারে। আমরা এমন সমাজের বাসিন্দা যেখানে অধিকাংশ মানুষ অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থানসহ বিভিন্ন অধিকার থেকে বঞ্চিত। বৈষম্য বিরাজমান সম্পদ বণ্টনে। গরীব মানুষের দুঃখ, কষ্ট, দারিদ্র্যতার আসল কারণ খুঁজে পেতে গেলে চেতনায় আঘাত হানতে হবে।
বিদ্যাসাগরের জীবনাদর্শ, জীবনচর্চা আমাদেরকে অনুপ্রাণিত করুক, উদ্বুদ্ধ করুক, এবং সমাজ সভ্যতার এই সংকট থেকে মুক্তির জন্য লড়াইয়ে শক্তি যোগাক।
✍️ অভিজিৎ চ্যাটার্জি
কেন ৩১ আগস্ট প্রাসঙ্গিক ?
--------------------------------------
খাদ্য মানুষের জন্মগত অধিকার। খাদ্যের অভাবে মানুষের জীবন হয় বিপন্ন। খাদ্যের দাবি মানুষের মৌলিক দাবি। স্বাভাবিকভাবেই ১৯৫৯ সালে ৩১ আগস্ট লক্ষ লক্ষ অভুক্ত, নিরন্ন মানুষের পক্ষে সরকারের কাছে বাঁচার জন্য খাদ্যের ব্যবস্থা করার দাবি জানানোর মধ্যে ভুল কিছুই ছিলো না। এই অভুক্ত আধপেটা মানুষের উপর তৎকালীন রাজ্য সরকার নামিয়ে এনেছিল বর্বরোচিত আক্রমণ। শাসকের হাতিয়ারবলে রক্তাক্ত মহামিছিলে পরিনত হয়েছিল সেই ভুখা জনতার আন্দোলন। ৬৪ বছর আগের শহীদের রক্তাক্ত এক ইতিহাসকে ফিরে দেখার দিন ৩১ আগস্ট যা আজও প্রাসঙ্গিক।
তখন ক্ষমতায় ছিলো কংগ্রেস। আজ আছে বিজেপি এবং তৃণমূলের সরকার। শাসক পাল্টে গেছে, শোষণের ধরন বদলেছে কিন্তু শাসকের চরিত্রটা বদলায়নি। নতুন কৃষি আইনের মাধ্যমে খাদ্যপণ্যের বাজার বৃহৎ পুঁজির হাতে তুলে দিতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার। আইন বদল করে অত্যবশ্যকীয় পণ্যের দামের নিয়ন্ত্রণ তারা খোলা বাজারের হাতে ছেড়ে দিয়েছে। অত্যবশ্যকীয় পণ্যের দাম সরকার নিয়ন্ত্রণ না করার ফলে বর্তমানে কালোবাজারি ও মজুতদারিদের হাত শক্ত হয়েছে। খাদ্যের কৃত্রিম সংকট খাদ্যপন্যের দাম বৃদ্ধি করে। এর ভয়ংকর ফল আমরা দেখতে পাচ্ছি। ভারতের মোট জনসংখ্যার ১৩৯ কোটির মধ্যে না খেতে পাওয়া মানুষের সংখ্যা এখন প্রায় ১৮ কোটি ৯২ লক্ষ। সারা বিশ্বের মোট অভুক্ত মানুষের প্রায় আঠাশ ভাগ বাস করেন ছিয়াত্তর বছরের স্বাধীন দেশ ভারতবর্ষে। অথচ চাল,গম, ডাল ইত্যাদির উৎপাদনে স্বয়ম্ভর দেশ হওয়া সত্বেও বিশ্ব ক্ষুধা সূচকে ( গ্লোবাল হাঙ্গার ইনডেক্স) ১২১ টি দেশের মধ্যে ভারতের স্থান ১০৭ নম্বরে। এফ সি আই গোডাউনে হাজার হাজার টন খাদ্য শস্য পচে নষ্ট হয় কিন্তু দেশের দরিদ্র অভুক্ত মানুষের মধ্যে তা বন্টন হয় না। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন মেনে মাথা পিছু ১০ কিলো করে চাল কিংবা গম দরিদ্র পরিবারের মধ্যে দেওয়ার বামপন্থীদের দাবিকে কর্ণপাত করা হয় নি।
কেন্দ্রের কৃষি আইন কার্যকর হওয়ার আগেই এরাজ্যের তৃণমূল সরকার এপিএমসি বা কৃষিপণ্য বিপনন আইনেও বিপজ্জনক পরিবর্তন করেছে।
ক্রমবর্ধমান বেকারত্ব মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমিয়েছে, অন্যদিকে বাজারে চাল ডাল তেল নুন সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম আগুন ছোঁয়া। সাধারণ মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস। আজও বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে মজুতদার মুনাফাখোর ব্যবসায়ীদের দল। তফাৎ শুধু এই, তখন তারা এসব করতো আড়াল থেকে কারণ তাদের কাজ ছিলো আইনানুগ নিষিদ্ধ। এখন দুটো সরকারই আইন করে বাজারের নিয়ন্ত্রণ ফাটকাবাজদের হাতে ছেড়ে দিয়েছে। এর পরিবর্তে ইলেক্টোরাল বন্ডের মাধ্যমে প্রচুর টাকার যোগান পাচ্ছে দুটো দল। সেই টাকা ব্যবহার করে একের পর এক নির্বাচনে বৈতরণি পার হচ্ছে।
সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষকে যুক্ত করে তীব্র গণ আন্দোলন গড়ে তুলে শ্রেণী ভারসাম্যের পরিবর্তনই হলো একমাত্র সমস্যার সমাধানের পথ। শত বাধা পেরিয়ে কাঁটা বেছানো সেই পথ ধরেই কমিউনিস্টদের এগুতে হবে। সেই কারণে ১৯৫৯ সালের ঐতিহাসিক খাদ্য আন্দোলন আজও প্রাসঙ্গিক।
✍️ অভিজিৎ চ্যাটার্জি
আজ ঐতিহাসিক মহামিছিল...
হোক প্রতিবাদ...
স্বাধীনতা দিবস উদ্ যাপন হোক সম্প্রীতি,ভ্রাতৃত্ব, সার্বভৌমত্ব,ধর্মনিরপেক্ষতা সহ সংবিধানের মূল্যবোধ রক্ষার শপথের মধ্য দিয়ে
আর নয় এই নগ্নতার দৃশ্য, আসুন গড়ে তুলি প্রতিরোধ...
সারা ভারত গণতান্ত্রিক মহিলা সমিতি উত্তর হাওড়া আঞ্চলিক এর ৩নং ইউনিটের উদ্যোগে স্বাস্থ্য সচেতনতা ও পরীক্ষা শিবির
অস্বাভাবিক ভাবে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির বিরুদ্ধে সি পি আই (এম) উত্তর হাওড়া এরিয়া কমিটির উদ্যোগে আজকের মিছিল ও প্রতিবাদ কর্মসূচি
खाद्य पदार्थों की कीमतों में असामान्य वृद्धि के खिलाफ सी पी आई (एम) उत्तर हावड़ा एरिया कमेटी द्वारा आज विरोध कार्यक्रम
হাওড়ার সবজি বিক্রেতাদের মেজাজটা দেখুন.....
উত্তর হাওড়া সি আই টি ইউ এর পক্ষ থেকে আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের বামফ্রন্ট প্রাথীদের সমর্থনে প্রচার চলছে হাওড়া সবজি বাজারে আগত জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা গ্রামের খেটে খাওয়া চাষী খেত মজুরদের কাছে।
বাম পথে হাঁটছে গ্রাম।
পঞ্চায়েতের ঐতিহ্য সেই বাম জমানাতেই।
দেখে নিন সেই ঐতিহ্যের ইতিহাস।
Possible?
চোপড়ায় মনোনয়ন দিতে যাবার পথে বাম-কংগ্রেস এর মিছিলের ওপর একদিকে TMC গুন্ডাদের এলোপাথাড়ি গুলি বর্ষণ ও অন্যদিক থেকে পুলিশের কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়ে বামপন্থী কর্মীদের নিহত ও আহত করার বিরুদ্ধে সর্বত্র প্রতিবাদ। রাজ্যজুড়ে নির্বাচন কমিশনের অপদার্থতা ও পুলিশ প্রশাসনের একাংশের দলদাসের ভূমিকার বিরুদ্ধে লড়াকু কমরেডদের প্রতি কুর্নিশ জানিয়ে বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সভা চলছে উত্তর #হাওড়া CPIM
आज पूरे पश्चिम बंगाल में प्रतिवाद!
#लोकतंत्र की हत्या
उत्तर #हावड़ा CPIM
মানুষের রসদে, মানুষের পঞ্চায়েত।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে লালঝাণ্ডার লড়াইয়ের রসদ যোগান আপনিও। সিপিআই(এম) পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সংগ্রাম তহবিলে দান করুন।
পরিবেশ আন্দোলন ও নৈতিক দায়িত্ব
দাবদহন---- কি, কেন এবং কর্তব্য
--------------------------------------------------
তীব্র দাবদাহ চারিদিকে শুরু হয়ে গেছে এবং সারা ভারত বির্পযস্ত। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ফেব্রুয়ারী মাস থেকেই মাসিক গড় তাপমাত্রা ১৯০১ সালের পর থেকে সবচেয়ে উষ্ণ ছিল। একাধিক পশ্চিমী ঝঞ্জার কারণে কিছু বৃষ্টিপাত হয়েছে। কিন্তু মে মাসের শেষ পর্যন্ত তিন মাসের তাপপ্রবাহকে এই বৃষ্টিপাত প্রতিরোধ করতে পারেনি। এই দীর্ঘায়িত এবং প্রাথমিক দাবদাহের ফলে গম উৎপাদন কমে যায়। ইউক্রেনের যুদ্ধের কারণে উচ্চ আন্তর্জাতিক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও গমের সরবরাহ হ্রাস পেয়েছে।
এটা স্পষ্ট যে ভারত গত কয়েক বছর ধরে অস্বাভাবিকভাবে অতিরিক্ত গ্রীষ্মের সাক্ষী হচ্ছে।
ভারতের আবহাওয়ার রেকর্ডগুলি ইঙ্গিত দেয় যে ভারতে প্রতি বছর গ্রীষ্মকাল সময়ের আগে এসে যাচ্ছে। বেশির ভাগ দিনের গড় তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে ৩.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস বা তার উপর থাকছে। ২০১৫ সাল থেকে তাপ প্রবাহের দ্বারা আক্রান্ত রাজ্যের সংখ্যা দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে ২৩ টি রাজ্যে পৌঁছেছে।
তাপ প্রবাহ
-------------
তাপ প্রবাহকে দুটি শ্রেণীতে বিভক্ত করা যেতে পারে। প্রথম বা 'পটভূমি' হল অস্বাভাবিকভাবে উচ্চ তাপমাত্রার সময়কাল। দ্বিতীয়টি হচ্ছে 'অসঙ্গতি' যা 'পটভূমি'র উচ্চতার উপরে এবং তার সাথে থাকে ভিন্নতা। তাপের তীব্রতা এবং ক্রমবর্ধমান ফ্রিকোয়েন্সি দিয়ে ভারতে তাপ তরঙ্গকে নির্ধারণ করা হয়। ভারতে আবাহবিদরা সাম্প্রতিককালে সমতল বা পাহাড় ইত্যাদিতে তাপমাত্রার নিখুঁত পরিমাপের পরিপ্রেক্ষিতে তাপপ্রবাহ ঘোষণা করে। তাই নিম্ন তাপমাত্রা, এবং অস্বাভাবিকভাবে উচ্চ তাপমাত্রা সহ কম দিনগুলিকেই "তাপ প্রবাহ" হিসাবে গণ্য করা হয়৷ প্রকৃতপক্ষে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বছরের পর বছর ধরে গড় তাপমাত্রা বাড়ছে৷ একশ বছর আগের তুলনায় ভূপৃষ্ঠের তাপমাত্রা এখন প্রায় ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি। তাপপ্রবাহ পরিস্থিতির জন্য অনুকূল আবহাওয়ার ধরণও বেড়েছে। এর পিছনে কারণ হল বাতাসের উচ্চ চাপের সময়কাল, রৌদ্রোজ্জ্বল দিন, এবং উত্তর ও উত্তর পশ্চিম ভারতে নিচের দিকে বাতাস বেশি ঘন হওয়া । দীর্ঘ সময়ের জন্য স্থায়ী উত্তপ্ত তাপপ্রবাহ আরো বিপজ্জনক। এটি অন্যান্য প্রভাব ছাড়াও উচ্চহারে প্রাণহানির দিকে পরিচালিত করে।
উপরের সমস্ত কারণগুলি থাকার ফলে ২০২২ সালে ভারত ও পাকিস্তানে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ সৃষ্টি হয় ৷ IMD এবং ওয়ার্ল্ড মেটিওরোলজিক্যাল অর্গানাইজেশন (WMO) উভয়েই ২০২৩ ফেব্রুয়ারি থেকে মে মাসের মধ্যে ভারতের বেশিরভাগ অঞ্চলে তাপপ্রবাহের বর্ধিত সম্ভাবনার পূর্বাভাস দিয়ে দিয়েছিল। এর প্রধান কারণ আবহাওয়ার পরিবর্তন। তাপ প্রবাহের একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় বলা হয়েছে যে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ২০২২ সালের থেকে তাপ প্রবাহের সম্ভাবনা ৩০ গুণ বেড়েছে।
লা নিনার প্রভাব
---------------------
তাপ প্রবাহের পূর্বাভাসে অবদান রাখার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল এল নিনো এবং লা নিনার অবস্থান। এল নিনো এবং লা নিনা হলো প্রাকৃতিক জলবায়ু ঘটনা। এদের বেশিরভাগ অবস্থান প্রশান্ত মহাসাগর। এল নিনো উষ্ণ সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রা দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। লা নিনা, (মহিলা প্রতিরূপ) সমুদ্রের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঠান্ডা দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। একত্রে এগুলি এল নিনো সাউদার্ন অসিলেশন (ENSO) এর অংশ। কয়েক বছর নিরপেক্ষ অবস্থায় থাকার পর দুটি অবস্থার মধ্যে পেন্ডুলামের মতো যাতায়াত করে। এদের অবস্থানগুলির পরিবর্তন সারা বিশ্বের আবহাওয়ার অবস্থাকে প্রভাবিত করে। এল নিনোতে, পশ্চিমগামী প্রবাহিত বাতাস দুর্বল হয়ে পড়ে এবং পৃষ্ঠের জল দক্ষিণ আমেরিকার পূর্ব দিকে প্রবাহিত হয়। ফলস্বরূপ, ছয় মাস অঞ্চলটিকে উষ্ণ করে রাখে। লা নিনা র প্রভাবে, পূর্ব আফ্রিকা এবং পশ্চিম এশিয়া উপ-মহাদেশকে করে শুষ্ক এবং গরম। এর ফলে ভারতীয় উপমহাদেশে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত এবং বন্যার সম্ভাবনা দেখা দেয়।
এই বছর WMO ভবিষ্যদ্বাণী করেছে যে লা নিনা, যা সেপ্টেম্বর 2020 থেকে বিরাজ করছে তা 2023 সালের গ্রীষ্ম পর্যন্ত চলতে থাকবে এবং শুধুমাত্র তারপরে নিজেকে প্রত্যাহার করবে৷ 2020 সাল থেকে লা নিনা বৃষ্টিপাতের ধরণকে প্রভাবিত করে তাপমাত্রা বাড়িয়েছে এবং বিভিন্ন অঞ্চলে খরা ও বন্যার অবস্থাকে আরও খারাপ করেছে। এটিকে "ট্রিপল-ডিপ" লা নিনা বলা হয়েছে কারণ এটি 1950 সালের পর এই প্রথম তিন বছর একটানা বিরাজ করছে। এই ঘটনা আবহাওয়া বিশেষজ্ঞদের সতর্ক করতে সাহায্য করেছে যে পশ্চিমি ঝঞ্ঝা দুর্বল হওয়ার কারণে এবং ২০২৩ সালে তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে বিপর্যয় অপেক্ষা করছে। WMO সতর্ক করে বলেছে, এল নিনো জুলাই-আগস্ট ২০২৩ এর মধ্যে শুরু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। তা যদি হয়, তাহলে ২০০৯,১৪, ১৫ ১৮, এবং ২০২২ বছরের মতো উষ্ণ আবহাওয়া এবং একটি দুর্বল বর্ষার জন্য আমাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।
দাবদাহের প্রভাব
------------------------
আমাদের দেশে দীর্ঘ এবং তীব্র তাপপ্রবাহের ব্যাপক প্রভাব পড়ে শিশু, বয়স্ক এবং দরিদ্র মানুষের উপর। জনগনের সেই অংশ যারা ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বসবাস করেন এবং যাদের বাসস্থানে বায়ুচলাচল দুর্বল , তাদের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি হয়ে দাড়াঁয় ভয়াবহ। পাশাপাশি তীব্র দাবদাহের ফলে কম উৎপাদনশীলতা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের ক্ষতি এবং অর্থনৈতিক ক্ষতির দিকে মানুষকে টেনে নিয়ে যায়।
ভারতের অনেক জায়গায় গ্রীষ্মকালে স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি থাকে। শুষ্ক আবহাওয়ায় বসবাসকারী জনগণ, যেখানে জনসংখ্যার চাপ তুলনামূলক কম, সেখানে ঘাম কম হওয়ার কারণে উচ্চ তাপমাত্রা সহ্য করতে পারে। ফলে মৃত্যু হার তুলনায় সেখানে কম। কিন্তু আর্দ্র পরিবেশে বসবাসকারী মানুষের জীবনযাপন আরও কঠিন। যখন আর্দ্রতা বেশি থাকে, ঘামের মাধ্যমে শরীরকে ঠান্ডা করা কম কার্যকর হয়। ফলে উচ্চ তাপমাত্রার প্রভাব সহ্য করা আরও কঠিন হয়ে পড়ে। চরম তাপ প্রবাহিত আবহাওয়ায় ঘনবসতিপূর্ণ এবং কংক্রিটযুক্ত শহরগুলিতে, কায়িকশ্রমের উপর নির্ভরশীল মানুষের বেঁচে থাকার জন্য লড়াইটা হয়ে ওঠে অনেক কঠিন। সে লড়াইয়ে কোনো দায়ভার সরকারকে গ্রহণ করতে দেখা যায় না।
পদক্ষেপ
-------------
শুধুমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গ্রীষ্মের ছুটি বাড়িয়ে দিয়ে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব না। শিশুরা জাতির ভবিষ্যৎ। শিশুদের পরিবেশ সচেতনতা শুধুমাত্র বইয়ের পাতায় আটকে রাখা নয়, হাতে কলমে করাতে উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে পরিবেশ নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবক সংস্থার সাথে যোগাযোগ তৈরি করে নানা ধরনের পরিবেশ সচেতনতার কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে। আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনো একটা দিন উদযাপন করে দায় সারা যায় না।
প্রয়োজন আরও খোলা সবুজ স্থান, ছায়াময় এলাকা এবং জলাশয় তৈরি করার জন্য শহরগুলিতে জরুরি পদক্ষেপের প্রয়োজন। সোলার এনার্জিকে ব্যবহার করে শক্তি সাশ্রয়ী ভবন, এয়ার কন্ডিশনার ব্যবহার কমানো যেতে পারে। একবার মাত্র ব্যবহার করা প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর জন্য কঠোর আইন প্রনয়ণ, ব্যাটারি চালিত গাড়ি ব্যবহারে উৎসাহ দান, প্রতিটি ক্লাব এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে যুক্ত করে পরিবেশ দূষণ বিরোধী কর্মসূচি গ্রহণ করা সহ অন্যান্য ব্যবস্থার মাধ্যমে মানুষের অংশগ্রহণকে সুনিশ্চিত করতে সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে।
স্থানীয় স্তরে যেমন কিছু কাজ করতে হবে, আবার এই দূষণের জন্য প্রধানত দায়ী ধনী দেশগুলোর বিরুদ্ধেও পৃথিবীব্যাপি জনমত তৈরি করতে পরিবেশ আন্দোলনের কোনো বিকল্প এই মূহুর্তে নেই। কর্পোরেট পুঁজির স্বার্থে যারা দেশের প্রাকৃতিক সম্পদকে বিক্রি করে দিচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধেও সোচ্চার হতে হবে পরিবেশপ্রেমিদের। মানুষের জন্য পরিবেশ। তাই মানুষের রুটি রুজিকে রক্ষা করেই পরিবেশ রক্ষার স্বার্থে পরিবেশ আইন তৈরি করতে হবে। সব শেষে, পরিবেশখাতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বাজেটে বরাদ্দ বৃদ্ধি করতে হবে ---- এই দাবিতে শক্তিশালী পরিবেশ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। পরিবেশ আন্দোলন মানবজাতির অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। স্বাভাবিকভাবেই আনুষ্ঠানিকতার ভেতর এই আন্দোলনকে যেন সীমাবদ্ধ না করা হয়।
✍️ অভিজিৎ চ্যাটার্জি
आज उत्तर हावड़ा में C.P.I (M) की जनसभा
उपस्थित थे कामरेड सूजन चक्रवर्ती, कामरेड श्रीदीप भट्टाचार्य, कामरेड दिलीप घोष, और जिला के सदस्य।
जनसभा के सभापति कामरेड अभिजीत चटर्जी।
উত্তর হাওড়ায় আজ জনগণের জনসভা
--------------------------------------------------------তীব্র গরম। প্রান হাঁসফঁস। ১৫ নং, ৬ নং, ৩ নং ওয়ার্ড সহ উত্তর হাওড়ার বিভিন্ন ওয়ার্ডে পানীয় জলের তীব্র সমস্যা। জলের চাপ কমে যাওয়ায় বহু মানুষের বাড়ি জল পৌঁছাচ্ছে না। শাসক দলের নেতা কর্মীদের প্রত্যক্ষ মদতে কর্পোরেশনের আইনকে তোয়াক্কা না করে টাকার বিনিময়ে বেয়াইনিভাবে জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে বহু বাড়িতে। একদিকে জলের অভাব, অন্যদিকে জল অপচয় হচ্ছে। রাস্তার ধারের জলের সংযোগ থাকলেও অনেক যায়গায় জল নেই। রাস্তা থেকেই রাস্তার কল চুরি হয়ে যায়। কয়েকটি জায়গায় স্থানীয় মানুষ নিজেদের টাকায় কল কিনে লাগিয়েছেন যাতে জল অপচয় বন্ধ হয়। রাস্তার ধারে নোংরা আবর্জনা জমে থাকে। নিয়মিত পরিস্কার হয়না। নর্দমা নিয়মিত পরিস্কার না হওয়ার ফলে অল্প বৃষ্টিতেই জল থৈথৈ। মশার উপদ্রব বেড়ে চলায় ঘরে ঘরে ডেঙ্গু ম্যালারিয়া দেখা দিচ্ছে । ডেঙ্গুতে বহু মানুষ আক্রান্ত হলেন। মৃত্যু হলো। ডেঙ্গুতে মৃত্যু লেখা যাবে না। বাধ্য করা হলো লিখতে, অজানা জ্বরে মৃত্যু । রাস্তায় সব জায়গায় আলো থাকলেও রক্ষনাবেক্ষন না থাকায় সব আলো জ্বলে না। পরিবেশের দূষণ বেড়েই চলেছে। যেখানে যত গাছ আছে কেটে ফেলা হচ্ছে। সবুজ কমছে। পুকুর ভরাট করা হচ্ছে। কর্পোরশনের আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে শাসক দলের নেতা কর্মীদের মদতে চলছে অসাধু প্রমোটোর চক্র। টাকা খরচ করতে পারলে সমস্ত রকম বেয়াইনি কাজ করা সম্ভব। বেয়াইনি কাজে টাকা কামিয়ে গত ১০ বছরে শাসক দলের নেতা কর্মীদের সম্পত্তি বিপুল পরিমাণে বেড়েছে কিন্তু মানুষের সুরহা হয়নি। বেয়াইনি কাজ থেকে বেয়াইনি রাজএ পরিনত হয়েছে হাওড়া শহর। এক কথায় দুর্বিষহ অবস্থা।
২০১৮ সাল থেকে হাওড়া কর্পোরেশনে কোনো নির্বাচিত পৌর বোর্ড নেই। পৌর নির্বাচন না করেই শুধুমাত্র প্রশাসক নিয়োগ করে কর্পোরেশন চালানো হচ্ছে। আদালতের নির্দেশ থাকা সত্বেও কর্পোরেশন নির্বাচন বন্ধ করে রেখেছে রাজ্য সরকার। নির্বাচিত কোনও প্রতিনিধি না থাকায় জনগণের অভাব, অভিযোগ, সুবিধা, অসুবিধা জানতে পারছে না কর্পোরেশন। এই যন্ত্রণা থেকে মানুষ মুক্তি চায়। স্থানীয় ইস্যুতে স্থানীয় মানুষকে যুক্ত করেই দাবি আদায় করতে হবে। ভুল বললাম, দাবি আদায় বাধ্য করতে হবে। কর্পোরেশন অবিলম্বে নির্বাচনের দিন ঘোষণা না করলে বৃহত্তর আন্দোলনে যাবে উত্তর হাওড়া। অধিকার চাইলে পাওয়া যায় না। এবার অধিকার কেড়ে নিতে হবে। জনগণকে যুক্ত করেই এই লড়াই লড়তে হবে। লাল ঝান্ডা সেই পথ দেখাবে।
২০ শে মে সেই চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার দিন। উত্তর হাওড়ার শ্রীরাম ঢ্যাং রোডএ মধ্য বাবুডাঙ্গার জনসভা মানুষের কাছে সেই বার্তাই পৌঁছে দেবে।
✍️ অভিজিৎ চ্যাটার্জি
অবিলম্বে হাওড়া পুর নির্বাচন করতে হবে
২০ শে মে জনসভার প্রচার
হকের
জনসভা
২০ মে ২০২৩
হকের জনসভা...
20 मई को जनसभा में आप सबसे मुलाकात होगी।
----------------------------------------------
पूरे पांच साल हो गए पर अभी तक हावड़ा कॉरपोरेशन चुनाव की घोषणा नही की गई है।
हावड़ा पोर सभा के नागरिकों को पोर सभा की परिसेवा से वंचित करना और ज़ोर ज़ुल्म करके असंविधानिक तरीको से पोर बोर्ड को अपने दखल में रख रखी है राज्य सरकार।
स्वच्छ पानी,जंजाल मुक्त रास्ता, लाइट की व्यस्था (लाइट पोस्ट होने के बावजूद लाइट नहीं जलना)15 मिनट की वर्षा से रास्ते मौहल्ले में पानी का जमाव, नालों का सही रूप से रख रखाव नही करना आम लोगो को ऐसे बहुत सारी समस्या से जूझना पड़ रहा है। आम लोग जाय तो किसके पास ना कोई जनप्रतिनिधि है ना कोई निर्वाचित बोर्ड या वार्ड कमेटी। पोर कमिश्नर को देकर बोर्ड चलाया जा रहा है।( जो कि निर्वाचित प्रतिनिधि नही है)।
आम जनता के कर के पैसे से पोरसभा चलेगी और आम लोगों की सुख सुविधा का ख्याल न रखके साशक दल के नेता का उस पैसे से मौज उड़ाना। और जब आम जनता इन सबके खिलाफ सड़क पर उतर कर पोर परिसेवा के लिए आवाज़ बुलन्द करेगी तो ये पुलिस प्रशासन और गुंडों की मदद से उन्हें झूठे मामलो और जान से मार डालने की धमकी से उनके ऊपर अत्याचार करने को तयार रहेगी।
इन्ही सब कारणों के प्रतिवाद में आगमी 20 मई 2023 को शाम 6 बजे उत्तर हावड़ा एरिया कमेटी के पुकार पर मध्य बाबूडांगा में एक जनसभा बुलाई गई है।
इस सभा मे मौजूद रहेंगे , CPI(M) के केंद्रीय कमेटी के सदस्य कॉमरेड सूजन चक्रवर्ती, श्रीदिप भट्टाचार्य और हावड़ा जिला के सचिव कॉम, दिलीप घोष।
आप सभी से अनुरोध है कि सही समय पर उपस्थित होकर इस सभा को सफल बनाएं।
২০ মে জনসভায় দেখা হবে
----------------------------------------
দীর্ঘ ৫ বছর হাওড়া পুর নিগমের নির্বাচন ঘোষণা হয়নি। হাওড়া পুর সভার নাগরিক হিসেবে এটা আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। জোর করে হাওড়া পুর সভা দখল করে আছে শাসক বাহিনী। বেহাল পৌর পরিসেবা। পরিস্কার পানীয় জল, জঞ্জাল মুক্ত রাস্তা, আলোর পোস্ট থাকলেও সব জায়গায় আলো নেই, ১৫ মিনিট বৃষ্টি হলেই জল দাঁড়িয়ে যায়। মানুষ কার কাছে যাবে ? না আছে মেয়র, না কাউন্সিলর, না ওয়ার্ড কমিটি।
৫ বছর নির্বাচিত বোর্ড নেই। কমিশনারকে দিয়ে পৌর বোর্ড চালানো হচ্ছে যিনি নির্বাচিত প্রতিনিধি নন। মানুষের করের টাকায় পুরসভা চলবে কিন্তু মানুষের মতামত দেওয়ার অধিকার থাকবে না। মানুষের হকের দাবি নিয়ে মিছিল করলে পুলিশের হাতে মার খেতে হবে। মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়া হবে। পুলিশি নির্যাতনের বিরুদ্ধে মানুষ আজ রুখে দাঁড়িয়েছেন। কারও হিম্মত নেই মানুষের শক্তিকে আটকে রাখার। হাওড়াসহ রাজ্যজুড়ে বেপরোয়া দুর্নীতি চালিয়ে যাচ্ছে তৃণমূলের নেতানেত্রীরা। পাইকারি হারে কাটমানি চলছে। এসব কতদিন চলবে। মানুষ কাজ পাবে না আর তৃণমূল ডাকাতি করে যাবে। মানুষ এসব আর মানছে না। মানছে না বলেই লড়াই শুরু হয়েছে। এ লড়াই চলবে। এ লড়াই বাঁচার লড়াই। বাঁচতে গেলে লড়তে হবে। হাওড়া পৌর সভায় প্রকাশ্যে দুর্নীতির যে বাসা তৈরি হয়েছে তা ভাঙতে হবে। তৃণমূল বাহিনী আর প্রশাসন এক হয়েও তা আটকে রাখতে পারবে না।
রাজ্যে যেখানে ভোট হচ্ছে, তৃণমূল - বিজেপি হারছে আর বাম কংগ্রেস প্রার্থীদের মানুষ জিতিয়ে দিচ্ছে। প্রতিদিন তৃণমূল বিজেপি থেকে দলে দলে মানুষ লাল ঝান্ডার নিচে আসছে। আগামী দিন লাল ঝান্ডার। লাল টুকটুকে সেই দিনটার খোঁজে আমাদের পথ চলা।
২০ মে জনসভায় দেখা হবে কমরেড।
✍️ অভিজিৎ চ্যাটার্জি
শতবর্ষের আলোয় আলোকিত পদাতিক ✊🏾
This is tha real facts of kerala not story
ওরা ছোটে পথে প্রান্তরে
ওরা কাজ করে, ওরা শ্রমজীবী
ALSO WORKING CLASS ❤✊🏾❤️
রাজ্যের ব্যাপক দুর্নীতি নিয়ে শুধুমাত্র রাজনৈতিক স্তরে ই নয় সামাজিক ভাবেও ব্যাপক গণ আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে..
#जनसभा
#জনসভা
#हावड़ा
#হাওড়া
২০ শে মে এর জনসভায় দলে দলে যোগ দিন
*ভগৎ সিং ও তাঁর সাথীরা কি কমিউনিস্ট ছিলেন ?*

উত্তর সত্য যুগে হোয়াটসঅ্যাপ ইউনিভার্সিটি ও গোদী মিডিয়ার ক্রমাগত মিথ্যা প্রোপাগান্ডা অনেক সত্যকে আড়াল করলেও ২৩ শে মার্চ ভগৎ সিং ও তাঁর দুই সাথী সুকদেভ ও রাজগুরুর শহীদ দিবস এই সত্যকে বহু চেষ্টা করেও বিকৃত করতে পারেনি ।
ভগৎ সিং এর নামে নিজেদের সঙ্কীর্ণ মতাদর্শ চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা থেকে যে হিন্দুত্ববাদীরা বিরত হয়েছে তাও নয় । কিন্তু সংঘের মতাদর্শ ভগৎ সিং এর নামে চালানোর পথে বাধা ভগৎ সিং ও তাঁর সাথীদের লেখা, কর্মকাণ্ড ও দস্তাবেজ । কাজেই ভগৎ সিং বিষয়ক আলোচনাকে ওনার ‘দেশপ্রেম’ ও ‘আত্মত্যাগ’ এই দুই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চেয়েছে হিন্দুত্ববাদীরা । ভগৎ সিং ও তাঁর সাথীদের মতাদর্শ নিয়ে যুক্তিনিষ্ঠ চর্চা বরাবর ব্রাত্যই থেকে গিয়েছে । অবশ্য এর জন্য দায়ী যে শুধু বিজেপি বা সংঘ -পরিবার তা নয় , ভারত বর্ষের শাসক শ্রেণী আসলে কখনও চায়নি ভগৎ সিং ও তাঁর সাথীদের মতাদর্শ ও কর্মসূচি সম্বন্ধে সমস্ত মানুষ জানুক । এর কারণ অনুধাবন করা যায় ভগৎ সিং ও তাঁর সাথীদের লেখা ও কর্মসূচিতে নজর দিলে ।
ভগৎ সিং ও তাঁর সাথীদের মতাদর্শগত ভিত্তি গড়ে ওঠে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ের ভারত বর্ষ সহ সারা পৃথিবীর রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে । প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর তীব্র অর্থনৈতিক সংকট আঘাত হানে ভারতের বিপুল সংখ্যক দরিদ্র কৃষক ও শ্রমিক শ্রেণীর উপর । ব্যাপক বেকারত্বে যুঝতে থাকে মধ্যবিত্ত শ্রেণী । শচীন্দ্র নাথ সান্যাল , যোগেশ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের মতো এক শ্রেণীর বিপ্লবী উপলব্ধি করতে শুরু করেন ভারতবর্ষে চলতে থাকা অর্থনৈতিক শোষণের শ্রেণী গত ভিত্তি [1]। তাঁরা এও উপলব্ধি করেন জাতীয় বুর্জোয়া নেতৃত্ব দেশের শ্রমিক , কৃষক ও যুবদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছে । শ্রেণী দৃষ্টিভঙ্গিতেই জাতীয় কংগ্রেসের সাথে মত পার্থক্য বাড়তে থাকে এই বিপ্লবীদের । এঁদের অনেকেই রাশিয়ার বলশেভিক বিপ্লব থেকে অনুপ্রাণিত হন । ১৯২৪ এ এই মতাদর্শ গত অবস্থান থেকেই উত্তরপ্রদেশ ও পাঞ্জাবের কিছু বিপ্লবী প্রতিষ্ঠা করলেন হিন্দুস্তান রিপাবলিকান অ্যাসোসিয়েশন ( HRA )
প্রতিষ্ঠা কালে HRA এর ম্যানিফেস্টোতেই স্পষ্ট করে দেওয়া হয় তার মতাদর্শগত অবস্থান । বিপ্লবী শচীন্দ্র নাথ সান্যালের খসড়া করা ম্যানিফেস্টো তে ঘোষণা করা হয় যে “HRA -র আশু লক্ষ্য হল Federal Republic of United States of India গড়া ।” যে Republic এর মূল নীতি হবে “সার্বজনীন ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠিত করা ও সেই সমস্ত ব্যবস্থার অবসান ঘটানো যা মানুষের দ্বারা মানুষের উপর শোষণ কায়েম রাখে।[2]” HRA র সদস্য বিপ্লবী মন্মথনাথ গুপ্ত পরে ম্যানিফেস্টোর এই অংশের ব্যাখ্যা দিয়ে লেখেন “অবশ্যই এখানে মানুষের দ্বারা মানুষের শোষণ হীন ব্যবস্থা বলতে HRA -র আদর্শ সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার কথা বোঝানো হয়েছে ।” HRA -র উত্তরপ্রদেশ প্রভিনশিয়াল কমিটির গোপন নথিতে দেখা যায় HRA তার সদস্যদের সোভিয়েত রাশিয়া তে প্রশিক্ষণ নেওয়ার জন্য পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এবং এব্যাপারে বিপ্লবী তথা ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির প্রতিষ্ঠাতা সদস্য মানবেন্দ্রনাথ রায়ের সাহায্য নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল [3]। বিপ্লবী শচীন্দ্রনাথ সান্যালের লেখা বই , বন্দী জীবন , থেকে জানা যায় যে শচীন্দ্রনাথ সান্যাল ও যোগেশ চন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের সাথে মানবেন্দ্রনাথ রায়ের চিঠিতে যোগাযোগ ছিল । তাঁরা রাশিয়া থেকে নিয়মিত কমিউনিস্ট পত্র পত্রিকাও সংগ্রহ করতেন । ম্যানিফেষ্টোর ঘোষণা , “বিপ্লবী পার্টি জাতীয় নয় বরং আন্তর্জাতিক পার্টি কারণ এর মূল লক্ষ্য হল বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন স্বার্থ নিশ্চিত করে বিশ্ব শান্তি রক্ষা করা ; এই বিপ্লবী পার্টির লক্ষ্য বিভিন্ন দেশের মধ্যে পারস্পরিক প্রতিযোগিতা নয় বরং পারস্পরিক সহযোগিতা।” , থেকে এটা স্পষ্ট হয় যে এই বিপ্লবীরা ছিলেন সঙ্কীর্ণ জাতীয়তাবাদের ঊর্ধ্বে ।
ইতিমধ্যে কাকোরি ষড়যন্ত্র মামলায় HRA -র বেশীর ভাগ সদস্য গ্রেফতার হয়ে যাওয়ায় সংগঠন দুর্বল হয়ে পড়লে ভগৎ সিং , সুকদেভ , চন্দ্রশেখর আজাদ, শিভ ভার্মা ( পরবর্তী কালে CPI এবং 1964 সালে CPIM এ যুক্ত হন ) ও বিজয় কুমার সিনহা দায়িত্ব নিলেন HRA কে পুনরায় সংগঠিত করতে । ১৯২৮ -এর ৮ই ও ৯ই সেপ্টেম্বর দিল্লীর ফিরোজ শাহ কোটলায় কেন্দ্রীয় কমিটির এক জরুরি বৈঠক বসল । এই বৈঠকে ভগৎ সিং এর প্রস্তাবে পাশ হল পার্টির বিপ্লবী কর্মসূচি যার প্রধান লক্ষ্য সমাজতন্ত্র । পার্টির নাম HRA থেকে বদলে করা হল HSRA ( Hindustan Socialist Republican Association ) . অবশ্য HRA থেকে বদলে HSRA করার বেশ কয়েক বছর আগেই ভগৎ সিং ও তাঁর সাথীরা নওজওয়ান ভারত সভা গঠন করেছিলেন সোশ্যালিস্ট রিপাবলিক অফ ইন্ডিয়া গড়ার লক্ষ্য নিয়ে ।
পাবলিক সেফটি বিল ও ট্রেড ডিসপুট বিলের বিরুদ্ধে HSRA কেন্দ্রীয় কমিটি সিদ্ধান্ত নিল বিধানসভা ভবনে বোমা হামলার । ১৯২৯ এর ৮ই এপ্রিল বিধান সভায় ভগৎ সিং ও বটুকেশ্বর দত্তের বোমা হামলা কাঁপন ধরাল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদে , যদিও এই বোমা হামলায় শারীরিক ভাবে কারোর ক্ষতি করার চেষ্টা করা হয়নি । বোমার ধোঁয়ার আড়ালে অনায়াসে সরে পড়তে পারতেন ভগৎ সিং ও বটুকেশ্বর দত্ত , কিন্তু তাঁরা তা না করে সেখানে দাঁড়িয়ে স্লোগান দিতে থাকেন —
“বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক ”
“সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক”
“দুনিয়ার শ্রমিক এক হোক” ।
বিধান সভা বোমা হামলায় গান্ধীজী ক্ষুব্ধ হয়ে লিখলেন প্রবন্ধ - “The Cult of Bomb” । জবাবে চন্দ্রশেখর আজাদের নির্দেশে HSRA এর অবস্থান স্পষ্ট করতে বিপ্লবী ভগবতী চরণ ভোহরা লিখলেন প্রবন্ধ - “The Philosophy of the Bomb” । সেই প্রবন্ধে ভগবতী চরণ লিখেছিলেন “বিপ্লবীরা বিশ্বাস করে ভারতবর্ষের মুক্তি হবে প্রকৃত বিপ্লবের মধ্য দিয়ে । সেই বিপ্লব শ্রেণী বৈষম্য ও পুঁজিবাদের কফিনে শেষ পেরেক পুঁতবে । ” ভগবতী চরণ আরও লিখেছিলেন “বিপ্লব সর্বহারার একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত করবে ও পরজীবী শোষক শ্রেণীকে ক্ষমতা থেকে অপসারিত করবে” [4] ।
দায়রা আদালতে বিচার চলাকালীন ভগৎ সিং ও তাঁর সাথীরা তাঁদের বয়ানের মাধ্যমে তাঁদের অবস্থান ব্যাখ্যা করে বলেন “… আমরা দেখেছি ট্রেড ডিসপুট বিল বিধান সভায় পেশ হবার সাথে সাথেই দেশ জুড়ে শ্রমিক আন্দোলনের নেতাদের নির্বিচারে গ্রেফতার করা হতে থাকল । সমসাময়িক সমস্ত ঘটনা আমাদের অনুমান সঠিক বলে প্রমাণ করে যে - দেশের লক্ষ লক্ষ শ্রমজীবী মানুষ এই প্রতিষ্ঠান গুলি থেকে কিছুই আশা করতে পারেনা যে প্রতিষ্ঠানগুলি কেবল শোষক শ্রেণীর অত্যাচারের মূর্তমান প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে ”[5] । ঘোষণা পত্রটি শেষ হয় ততদিনে জনপ্রিয় হয়ে যাওয়া তাঁদের প্রিয় স্লোগান “ইনকিলাব জিন্দাবাদ ” দিয়ে ।
ভগৎ সিং, বটুকেশ্বর দত্ত গ্রেফতার হয়ে যাওয়ার পর হংসরাজ, ইন্দ্রপাল প্রমুখ HSRA বিপ্লবীরা ভিন্ন নামে সংগঠন খুলে পাঞ্জাবের বিভিন্ন শহরে বোমা বিস্ফোরণ ঘটাতে থাকেন । অবশেষে ১৯৩০ সালের মাঝামাঝি হংসরাজ ও ইন্দ্রপাল ভাইসরয়ের ট্রেনে বিস্ফোরণ ঘটানোর প্রচেষ্টায় গ্রেফতার হয়ে গেলে HSRA সংগঠন পুনরায় সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে । দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্যরা হয় জেলে নয়তো ফেরার । এই অবস্থায় জেলের মধ্যে ভগৎ সিং ও জেলের বাইরে চন্দ্রশেখর আজাদ উপলব্ধি করলেন যে এভাবে কিছু ব্যক্তিবিশেষের উপর কিছু সশস্ত্র হামলার দ্বারা তাঁদের প্রধান লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব নয় , সমাজতান্ত্রিক বিপ্লবের জন্য প্রয়োজন বিপ্লবী গণ-আন্দোলন । ভগৎ সিং ও চন্দ্রশেখর আজাদ দুজনেই চেয়েছিলেন কিছু সদস্যকে সোভিয়েত রাশিয়ায় পাঠিয়ে বলশেভিক বিপ্লবের কৌশলে প্রশিক্ষিত করতে এবং পরিকল্পনা মতো ‘বাবা পৃথ্বী সিং আজাদ’ কে সোভিয়েত রাশিয়ায় পাঠিয়েও ছিলেন [6] ।
জেলের মধ্যে ভগৎ সিং এই সময় নিজেকে সম্পূর্ণ রূপে নিমজ্জিত করলেন কার্ল মার্কস , ফ্রেডরিক এঙ্গেলস , ভ্লাদিমির লেনিনের রচনা সমগ্র ও অন্যান্য কমিউনিজমের পাঠে । তার প্রতিফলন ও পাওয়া যায় জেলে বসে লেখা ভগৎ সিং এর জেল নোটবুক , চিঠিপত্র ও অন্যান্য রচনায় । ভগৎ সিং এর ধর্ম নিরপেক্ষতা ও সাম্প্রদায়িকতা বিরুদ্ধ অবস্থানের পরিচয় পাওয়া যায় তাঁর একেবারে প্রথম দিককার লেখা গুলি থেকেই । ‘কীর্তি’ পত্রিকায় “সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও তার সমাধান” নামক প্রবন্ধে তিনি লেখেন - “সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার যদি কোন সমাধান থেকে থাকে তবে তা হল ভারতের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার উন্নতি । একে অপরের বিরুদ্ধে লড়াই করা থেকে রুখতে মানুষের মধ্যে শ্রেণী চেতনা জাগিয়ে তোলা ভীষণ জরুরি । দরিদ্র কৃষক ও শ্রমিকদের বোঝাতে হবে যে তাদের প্রকৃত শত্রু হচ্ছে পুঁজিপতিরা ।” সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে ভগৎ সিং এর সাথীদের অবস্থানও ছিল সুদৃঢ় । তাঁদের সংগঠন নওজওয়ান ভারত সভা ছিল সমস্ত রকম তুচ্ছ ধর্মীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে । সভায় যোগদান করতে হলে প্রত্যেক সদস্যকে প্রতিজ্ঞা করতে হত যে তাঁরা দেশের স্বার্থকে নিজের নিজের সম্প্রদায়ের স্বার্থের আগে রাখবেন [7] ।
জেল থেকে লেখা ভগৎ সিং এর প্রবন্ধ গুলির মধ্যে বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য “কেন আমি নাস্তিক?” এবং “তরুণ রাজনৈতিক কর্মীদের প্রতি” । “তরুণ রাজনৈতিক কর্মীদের প্রতি” শীর্ষক প্রবন্ধটি ভগৎ সিং লেখেন তাঁর ফাঁসি হওয়ার অল্প কিছুদিন মাত্র আগে । প্রবন্ধটিতে তিনি ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামের গতি প্রকৃতি ও সম্ভাব্য পরিণতি এবং সমাজতান্ত্রিক ভারত গড়তে তরুণ প্রজন্মের কর্তব্য স্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেন । প্রবন্ধটিতে তিনি লেখেন “বর্তমানের আন্দোলন কোন না কোন আপোষ অথবা ব্যর্থতা দিয়ে সমাপ্ত হবে । আমি এটা বলছি কারণ এই সংগ্রামে প্রকৃত বিপ্লবী শক্তিকে নিযুক্ত করা হয়নি। এই সংগ্রাম মধ্যবিত্ত দোকানদার শ্রেণী ও কিছু পুঁজিপতিদের উপর নির্ভরশীল । … প্রকৃত বিপ্লবী বাহিনী রয়েছে গ্রামে আর কলে-কারখানায় , তারা হল কৃষক এবং শ্রমিক শ্রেণী ।” এই প্রবন্ধে তরুণদের প্রতি ভগৎ সিং এর পথনির্দেশ “তোমরা যখন আওয়াজ তোল ‘ইনকিলাব জিন্দাবাদ’ বলে , আমি ধরে নিই তোমরা এর অর্থ বুঝেই আওয়াজ তোল । আমাদের সংজ্ঞা অনুযায়ী , যেমনটা আমরা বিধানসভা বোমা মামলার বয়ানে বলেছিলাম , বিপ্লব বলতে আমরা বুঝি বর্তমানের সমাজ ব্যবস্থার সম্পূর্ণ অবসান ঘটিয়ে তার পরিবর্তে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা স্থাপন করা । সেই উদ্দেশ্যে আমাদের আশু লক্ষ্য হল ক্ষমতা দখল করা । এটা বাস্তব ঘটনা যে , এই রাষ্ট্র হচ্ছে শাসক শ্রেণীর হাতের একটা যন্ত্র যার দ্বারা তারা তাদের স্বার্থ সুরক্ষিত রাখতে পারে । আমরা এই রাষ্ট্র যন্ত্র ছিনিয়ে নিয়ে , আমাদের আদর্শ প্রতিষ্ঠিত করতে মার্কসবাদের ভিত্তিতে সমাজ ব্যবস্থার পুনর্গঠন করতে চাই । এই উদ্দেশ্যেই আমরা সরকার দখল করার জন্য লড়ছি । এসবের সাথে আমাদের জনগণকে শিক্ষিত করতে হবে এবং আমাদের কর্মসূচি বাস্তবায়িত করতে পরিস্থিতি অনুকূলে নিয়ে আসতে হবে ।” তিনি আরও লিখেছিলেন “… কৃষক ও শ্রমিকদের সমর্থন পেতে ও তাদের সংগঠিত করতে পার্টির নাম হবে কমিউনিস্ট পার্টি । সুশৃঙ্খল পার্টি কর্মীদের সমস্ত আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে হবে । পার্টিকে কৃষক ও শ্রমিক ইউনিয়ন গুলিকে সংগঠিত করতে হবে ।”[8]
আদালতে বিচার চলাকালীন ভগৎ সিং ও তাঁর সাথীরা আদালত কক্ষকে তাঁদের মতাদর্শ ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য সম্পূর্ণ রূপে ব্যবহার করেছিলেন । ২১ শে জানুয়ারি ১৯৩০ তারিখে লাহোর ষড়যন্ত্র মামলার অভিযুক্ত ভগৎ সিং ও তাঁর সাথীরা আদালতে লাল স্কার্ফ পরিধান করে আসেন । ম্যাজিস্ট্রেট আসন গ্রহণ করার সঙ্গে সঙ্গেই অভিযুক্তরা স্লোগান দিতে থাকেন - “সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক” , “কমিউনিস্ট ইন্টারন্যাশনাল দীর্ঘজীবী হোক” , “লেনিনের নাম চির অমর থাকবে” , “সাম্রাজ্যবাদ নিপাত যাক” । এরপর তাঁরা পাঠ করেন লেনিনের স্মৃতিতে ও বলশেভিক বিপ্লবের সমর্থনে তাঁদের পাঠানো টেলিগ্রামের বয়ান ।
বিপ্লবী যতীন দাস শহীদ হওয়ার পর সুকদেভ আশঙ্কা করেন যে তাঁকে ফাঁসি না দিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হবে ও ভগৎ সিং সহ অন্যান্যদের ফাঁসি দেওয়া হবে । এই আশঙ্কায় সুকদেভ ভগৎ সিং কে চিঠি লিখে জানান এরকম হলে তিনি আত্মহত্যা করবেন । জবাবে ভগৎ সিং সুকদেভ কে চিঠিতে লিখেছিলেন “আমি (এবং তুমিও ) এদেশে সমাজতন্ত্র ও কমিউনিজমের ধারণার জন্ম দিইনি । সময় ও পরিস্থিতির প্রভাবে আমরা এই পথ বেছে নিয়েছি । আমরা অবশ্যই এই আদর্শ গুলি ( সমাজতন্ত্র ও কমিউনিজম ) প্রচার করতে কিছু প্রচেষ্টা করেছি, তাই আমি বলি যেহেতু আমরা এক কঠিন কাজের দায়িত্ব নিয়েছি , আমাদের সেই দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে যাওয়া উচিৎ । আমরা আত্মহত্যা করে সমস্যা থেকে পালিয়ে গেলে মানুষ বিভ্রান্ত হবেন , আমি তো মনেকরি এমন করাটা প্রতিক্রিয়াশীল কাজ হবে।”
সুকদেভের আশঙ্কা অবশ্য অমূলক ছিল । ৭ই অক্টোবর ১৯৩০ এ ভগৎ সিং , রাজগুরু ও সুকদেভ তিন জনেরই ফাঁসির সাজা ঘোষিত হয় । ভগৎ সিং এর জীবনীকার গোপাল ঠাকুর লিখেছিলেন ফাঁসির কয়েকদিন আগে যখন ভগৎ সিং কে জিজ্ঞাসা করা হয় তাঁর শেষ ইচ্ছা কি ? উত্তরে তিনি বলেছিলেন তিনি ভ্লাদিমির লেনিনের জীবনী পড়ছেন , মৃত্যুর আগে বইটি পড়া শেষ করতে চান ।[ 9]
বর্তমান ভারতে যখন পুঁজিবাদী শোষণ ও শ্রেণী বৈষম্য চরম আকার ধারণ করেছে, সাম্প্রদায়িকতার
বিষাক্ত ছোবল দেশে বিপর্যয় ডেকে আনছে তখন ভগৎ সিং এর স্বপ্নের সমাজ ব্যবস্থা গড়তে তাঁর আদর্শ দেশের শ্রমিক , কৃষক ও ছাত্র-যুবদের অনুপ্রাণিত করবে ।
_______________________________________
সূত্রঃ
[1] S.C. Bose, The Indian Struggle 1920-42.
[2] National Archive of India, Home Political File No. 375 of 1925.
[3] National Archive of India , Home Political File No. 253 of 1925.
[4] The Philosophy of the Bomb.
[5] Statement in the Sessions Court by Bhagat Singh and BK Dutt on 6th June 1929.
[6] ‘লেনিন কে দেশ মে’ — বাবা পৃথ্বী সিং আজাদ ।
[7] National Archive of India , Home Political File No. 130
[8] To Young Political Workers - Bhagat Singh.
[9] Mainstream Weekly, Vol XLV, No 42 , Impact of Lenin on Bhagat Singh.
Click here to claim your Sponsored Listing.
Videos (show all)
Category
Contact the organization
Telephone
Website
Address
711106
Salap Makardah2 Howrah
Howrah, 711409
10/1, Panjari Para Lane Salkia
Howrah, 9133
National Republic Party of India
KONA EXPRESS WAY SERVICE Road
Howrah, 711104
পার্থ বোস, সভাপতি হাওড়া জেলা (সদর) তৃণমূল কংগ্রেস জয়হিন্দ বাহিনী ।