Banda Asadullah Galib

Banda Asadullah Galib

Muslim is the best.

28/03/2024

মাহরামের প্রকারভেদ

সাধারণত তিন ধরনের সম্পর্ককে শরীয়ত মাহরাম হওয়ার কারণ সাব্যস্ত করেছে। যথা :
ক) বংশীয়/ঔরসজাত সম্পর্ক।
খ) দুধ সম্পর্ক ও
গ) বৈবাহিক সম্পর্ক।

বংশগত সম্পর্কের কারণে মাহরাম নারীর বংশ সম্পর্কিত মাহরাম পুরুষগণ হলেন-
১. পিতা, দাদা-নানা ও তদোর্ধ্ব পুরুষ।
২. পুত্র, পৌত্র ও তদস্তন পুরুষ।
৩. ভাই-সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয়। ৪. ভ্রাতুষ্পুত্র ও তদস্তন পুরুষ।
৫. ভাগ্নে (সহোদর, বৈমাত্রেয় ও বৈপিত্রেয় বোনের ছেলে)।
৬. চাচা।
৭. মামা।

আল্লাহ তাআলার বাণী-

وَ لَا یُبْدِیْنَ زِیْنَتَهُنَّ اِلَّا لِبُعُوْلَتِهِنَّ اَوْ اٰبَآىِٕهِنَّ اَوْ اٰبَآءِ بُعُوْلَتِهِنَّ اَوْ اَبْنَآىِٕهِنَّ اَوْ اَبْنَآءِ بُعُوْلَتِهِنَّ اَوْ اِخْوَانِهِنَّ اَوْ بَنِیْۤ اِخْوَانِهِنَّ اَوْ بَنِیْۤ اَخَوٰتِهِنَّ اَوْ نِسَآىِٕهِنَّ اَوْ مَا مَلَكَتْ اَیْمَانُهُنَّ اَوِ التّٰبِعِیْنَ غَیْرِ اُولِی الْاِرْبَةِ مِنَ الرِّجَالِ اَوِ الطِّفْلِ الَّذِیْنَ لَمْ یَظْهَرُوْا عَلٰی عَوْرٰتِ النِّسَآءِ

(তরজমা) তারা যেন নিজেদের আভরণ প্রকাশ না করে তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুষ্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, আপন নারীগণ, তাদের মালিকানাধীন দাসী, পুরুষদের মধ্যে যারা যৌন কামনা-রহিত পুরুষ এবং নারীদের গোপন অঙ্গ সম্বন্ধে অজ্ঞ বালক ব্যতীত অন্য কারো নিকট। (সূরা নূর (২৪) : ৩১)

পুরুষের বংশ সম্পর্কিত মাহরাম নারীগণ হলেন-

১. মা ২. কন্যা ৩. ভগ্নী ৪. ফুফু, ৫. খালা ৬. ভ্রাতুষ্পুত্রী ৭. ভাগ্নী।

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-

حُرِّمَتْ عَلَیْكُمْ اُمَّهٰتُكُمْ وَ بَنٰتُكُمْ وَ اَخَوٰتُكُمْ وَ عَمّٰتُكُمْ وَ خٰلٰتُكُمْ وَ بَنٰتُ الْاَخِ وَ بَنٰتُ الْاُخْتِ

(তরজমা) তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে তোমাদের মা, কন্যা, ভগ্নী, ফুফু, খালা, ভ্রাতুষ্পুত্রী, ভাগ্নী। ... (সূরা নিসা (৪) : ২৩)

দুধ সম্পর্কের কারণে মাহরাম দুগ্ধপানের কারণেও মাহরাম সাব্যস্ত হয়ে থাকে। দুধ মা, দুধ কন্যা, দুধ বোন ইত্যাদি নারীগণ পুরুষের মাহরাম পরিগণিত হবেন। অনুরূপভাবে দুধ পিতা, দাদা ও তদোর্ধ্ব পুরুষ, দুধ পুত্র ও তদস্তন পুরুষ, দুধ ভাই ইত্যাদি পুরুষ নারীর মাহরাম হিসেবে গণ্য হবেন।

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন-

حُرِّمَتْ عَلَیْكُمْ اُمَّهٰتُكُمْ وَ بَنٰتُكُمْ وَ اَخَوٰتُكُمْ وَ عَمّٰتُكُمْ وَ خٰلٰتُكُمْ وَ بَنٰتُ الْاَخِ وَ بَنٰتُ الْاُخْتِ وَ اُمَّهٰتُكُمُ الّٰتِیْۤ اَرْضَعْنَكُمْ

(তরজমা) তোমাদের জন্য হারাম করা হয়েছে তোমাদের মা ... দুধ-মা, দুধ বোন। ... (সূরা নিসা : (৪) : ২৩)

বিখ্যাত মুফাসসির আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবনে আহমদ কুরতুবী রাহ. এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন-

একজন নারী যদি কোনো শিশুকে দুধ পান করায় তাহলে সে দুগ্ধ পানকারীর জন্য হারাম হয়ে যায়। কারণ সে তার মা। তেমনি দুধমার মেয়ে, বোন হওয়ার কারণে; দুধমার বোন, খালা হওয়ার কারণে; দুধমার মা, নানী হওয়ার কারণে; দুধমার স্বামীর অন্য পক্ষের কন্যা, বোন হওয়ার কারণে; স্বামীর বোন, ফুফু হওয়ার কারণে; স্বামীর মা, দাদী হওয়ার কারণে ঐ শিশুর জন্য হারাম হয়ে যায়। তেমনি দুধমার ছেলে-মেয়ের সন্তানাদিও হারাম হয়ে যায়। কারণ তারা তার ভাই-বোনের
সন্তানাদি। (তাফসীরে কুরতুবী ৫/৭২)

25/03/2024

আর কত জালাইবি বল? ইদুর?

01/01/2023

কুরআন মজীদে দাওয়াত ইলাল্লাহ।

দাওয়াত একটি আরবী শব্দ, যার অর্থ ডাকা, আহবান করা। ইসলামের দাওয়াতের সারকথা হচ্ছে, মানুষকে দুনিয়ার শান্তি ও আখিরাতের মুক্তির দিকে আহবান করা।

ইসলামের আবির্ভাব শুধু ব্যক্তির কল্যাণের জন্য নয়; সমগ্র মানবজাতির কল্যাণের জন্য ইসলাম। আর ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষের সৌভাগ্য দুটি বিষয়ের উপর নির্ভরশীল : সালাহ ও ইসলাহ। অর্থাৎ নিজে সংশোধন হওয়া এবং অন্যকে সংশোধন করা। দাওয়াতের কাজ ছাড়া যা কখনো সম্ভব নয়।

দাওয়াতি কাজের গুরুত্ব ও ফযীলত এত অধিক, যা কোনো মানুষ বাহ্যিক দৃষ্টিতে অনুধাবন করতে পারে না। পবিত্র কালামের অসংখ্য আয়াত যার উজ্জ্বল সাক্ষী। আল্লাহ তাআলা বলেন, (তরজমা) ‘ঐ ব্যক্তির কথার চেয়ে ভালো কথা আর কার হতে পারে, যে আল্লাহর প্রতি আহবান করেছে, সৎ কাজ করেছে এবং বলেছে, আমি অনুগতদের একজন?’ (সূরা হামীম আসসাজদাহ : ৩৩)

আল্লামা শাববীর আহমদ উছমানী রাহ. এই আয়াতের ব্যাখ্যায় লেখেন, এই আয়াতে ঐ সকল বিশেষ প্রিয়ভাজন বান্দার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যারা একক আল্লাহর প্রভুত্বে বিশ্বাস স্থাপন করে নিজেদের স্থিরতা ও দৃঢ়তার প্রমাণ দিয়েছে। এখানে তাদের অপর একটি উচ্চ মর্যাদার কথা আলোচনা করা হয়েছে। অর্থাৎ উত্তম ও উৎকৃষ্ট লোক সেই ব্যক্তি যে একমাত্র আল্লাহর জন্য নিজেকে নিবেদিত করে তাঁর আনুগত্য ও নির্দেশ পালনের ঘোষণা দেয়, তাঁর মনোনীত পথে চলে এবং দুনিয়াবাসীকে তাঁর দিকে আসার আহবান জানায়। তার কথা ও কাজ অন্যদেরকে আল্লাহর পথে আসার জন্য প্রভাবিত করে। লোকজনকে সে যে সকল ভালো কাজের দাওয়াত দেয় সে নিজেও সেগুলো আমল করে। আল্লাহর বন্দেগী ও আনুগত্যের ঘোষণা প্রদানে কোন সময়ে কোন স্থানে সামান্যতম সংকোচও বোধ করে না। তার জাতীয় পরিচিতি শুধু ইসলাম। সকল প্রকারের সংকীর্ণতা ও গোষ্ঠীপ্রীতি ত্যাগ করে নিজে খাঁটি মুসলমান হওয়ার ঘোষণা প্রদান করে এবং যার দাওয়াত দেওয়ার জন্য সাইয়েদুনা মুহাম্মাদ মুস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দন্ডায়মান হয়েছিলেন এবং যার জন্য সাহাবায়ে কিরাম রা. নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন।

সূরা নাহল-এ আল্লাহ তাআলা বলেন, (তরজমা) ‘ডাক স্বীয় প্রতিপালকের পথে পরিপক্ক কথা বুঝিয়ে এবং উত্তমরূপে উপদেশ শুনিয়ে। আর তাদেরকে বিতর্কে নিরুত্তর কর উত্তম পন্থায়।’

এই আয়াতে খোদ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে তালীম দেওয়া হচ্ছে মানুষকে কিভাবে পথে আনতে হবে। এর তিনটি পন্থা বলা হয়েছে। ক) হিকমত, খ) মাওইযা হাসানা ও গ) জিদাল বিল্লাতী হিয়া আহসান।

হিকমত অর্থাৎ মযবূত দলিল-প্রমাণের আলোকে হিকমত ও প্রজ্ঞাজনোচিত ভঙ্গিতে অত্যন্ত পরিপক্ক ও অকাট্য বিষয়বস্ত্ত পেশ করতে হবে, যা শুনে সমঝদার ও জ্ঞানবান রুচিসম্পন্ন লোক মাথা ঝুঁকিয়ে দিতে বাধ্য হয়। দুনিয়ার কাল্পনিক দর্শনাদি তার সামনে ম্লান হয়ে যায়। কোনো রকম জ্ঞান-বিজ্ঞান ও চিন্তা-চেতনার বিকাশ যেন ওহী বর্ণিত তত্ত্ব ও তথ্যকে পরিবর্তন করতে না পারে।

মাওইযা হাসানা-এর দ্বারা মনোজ্ঞ ও হৃদয়গ্রাহী উপদেশকে বোঝানো হয়েছে, যা কোমল চরিত্র ও দরদী আত্মার রস ও আবেগে থাকবে পূর্ণ। নিষ্ঠা, সহমর্মিতা, দরদ ও মধুর চরিত্র দিয়ে সুন্দর ও ভারসাম্যপূর্ণ পন্থায় যে নসীহত করা হয় তাতে অনেক সময় পাষাণ-হৃদয়ও মোম হয়ে যায়, মৃত দেহে প্রাণ সঞ্চার হয় এবং একটি হতাশ ও ক্ষয়ে যাওয়া জাতি গা ঝাড়া দিয়ে জেগে ওঠে। মানুষ ভয়-ভীতি ও আশাব্যঞ্জক বক্তব্য শুনে লক্ষ্যস্থলের দিকে ছুটে চলে প্রবল বেগে, বিশেষত যারা অতটা সমঝদার, ধীমান ও উচ্চ মেধা-মস্তিষ্কের অধিকারী নয়, অথচ অন্তরে সত্য-সন্ধানের স্পৃহা প্রবল, তাদের হৃদয়ে মনোজ্ঞ ওয়ায-নসীহত দ্বারা এমন কর্ম-প্রেরণা সঞ্চার করা যায়, যা উঁচু জ্ঞানগর্ভ বক্তৃতা দ্বারা সম্ভব

হয় না।

হ্যাঁ, দুনিয়ায় সব সময় একটা দল এমনও থাকে, যাদের কাজই হচ্ছে প্রতিটি বিষয়ে জটিলতা সৃষ্টি করা এবং কথায় কথায় হুজ্জত করা ও কূটতর্কে লিপ্ত হওয়া। এরা না হিকমতপূর্ণ কথা কবুল করে, না ওয়ায-নসীহতে কান দেয়। তারা চায় প্রতিটি বিষয়ে তর্ক-বিতর্কের ময়দান উত্তপ্ত হোক। অনেক সময় প্রকৃত বোদ্ধা, ন্যায়নিষ্ঠ ও সত্যানুসন্ধিৎসু স্তরের লোকদেরও সংশয়-সন্দেহ ঘিরে ধরে, আলোচনা-পর্যালোচনা ছাড়া তখন তাদেরও সন্তোষ লাভ হয় না। তাই বলা হয়েছে-‘আর তাদেরকে বিতর্কে নিরুত্তর কর উত্তম পন্থায়।’

অর্থাৎ কখনো এমন অবস্থার সম্মুখীন হলে তখন উৎকৃষ্ট পন্থায় সৌজন্য ও শিষ্টাচার এবং সত্যানুরাগ ও ন্যায়-নিষ্ঠতার সাথে তর্ক-বিতর্ক কর। প্রতিপক্ষকে নিরুত্তর করতে চাইলে তা উত্তম পন্থায় কর। অহেতুক বেদনাদায়ক ও কলজে-জ্বালানো কথাবার্তা বলো না, যা দিয়ে সমস্যার কোনো সুরাহা হয় না; বরং তা আরও প্রলম্বিত হয়। উদ্দেশ্য হওয়া উচিত প্রতিপক্ষকে বুঝিয়ে সন্তুষ্ট করা ও সত্যকে সুপ্রতিষ্ঠিত করা। রুক্ষতা, দুর্ব্যবহার, বাক-চাতুর্য ও হঠকারিতা কখনো সুফল দেয় না। (তাফসীরে উছমানী ২/৬২৮-৬২৯)

অন্য জায়গায় আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন-(তরজমা) মহাকালের শপথ! নিশ্চয়ই মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত। কিন্তু তারা নহে, যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে এবং পরস্পরকে সত্যের উপদেশ দেয় ও ধৈর্য্যের উপদেশ দেয়।’ (সূরা আসর)

অর্থাৎ ক্ষতি থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য মানুষের চারটি জিনিস প্রয়োজন : ক) আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি ঈমান আনা এবং তাদের হিদায়াত ও প্রতিশ্রুতির প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করা-তা দুনিয়া সম্পর্কিত হোক, কিংবা আখিরাত সম্পর্কিত। খ) সেই ঈমান ও ইয়াকীনের প্রভাব কেবল মন-মানস পর্যন্ত সীমাবদ্ধ না রাখা; বরং অঙ্গ-প্রত্যঙ্গেও তা প্রকাশ করা এবং বাস্তব জীবনে আন্তরিক বিশ্বাসের প্রতিফলন ঘটানো। গ) কেবল নিজের ব্যক্তিগত সংস্কার ও কল্যাণ নিয়েই তুষ্ট না থাকা, বরং দেশ ও জাতির সামষ্টিক স্বার্থকেও সম্মুখে রাখা। দুজন মুসলমান একত্র হলে নিজের কথা এবং কাজের দ্বারা একে অপরকে সত্য দ্বীন মেনে চলার এবং প্রতিটি কাজে সত্য ও সততা অবলম্বনের তাকীদ করা। ও ঘ) প্রত্যেকে একে অপরকে এই নসীহত ও ওসীয়ত করা যে, সত্য ও ন্যায়ের ক্ষেত্রে এবং ব্যক্তিগত ও জাতীয় সংস্কার-সংশোধনের ক্ষেত্রে যত বাধা-বিপত্তি, যত অসুবিধা ও বিপদাপদ দেখা দিবে, এমনকি যদি মন-মানসের বিরোধী কাজও বরদাশত করতে হয় তাহলেও ধৈর্য্য ও সবরের সঙ্গে তা বরদাশত করতে হবে। পুণ্য ও কল্যাণের পথ থেকে পা যেন কখনো ফসকে না যায় এই ওসীয়ত করতে হবে। যে সৌভাগ্যবান ব্যক্তির মধ্যে এই চারটি গুণের সমাবেশ ঘটবে এবং যিনি নিজে পূর্ণাঙ্গ হয়ে অন্যদেরকে পূর্ণাঙ্গ করার চেষ্টা চালাবেন, কালের পৃষ্ঠায় তিনি অমর হয়ে থাকবেন। আর এমন ব্যক্তি যেসব নিদর্শন রেখে দুনিয়া থেকে বিদায় নেবেন তা ‘বাকিয়াতে সালেহাত’ তথা অবশিষ্ট নেক কাজ হিসেবে সর্বদা তার নেকীর খাতায় সংযোজন ঘটাবে। বস্ত্তত এই ছোট সূরাটি সমস্ত দ্বীন ও হিকমতের সার-সংক্ষেপ। ইমাম শাফেয়ী রাহ. যথার্থ বলেছেন যে, কুরআন মজীদে কেবল যদি এই সূরাটিই নাযিল করা হতো, তাহলে (সমঝদার) বান্দাদের হিদায়াতের জন্য যথেষ্ট ছিল। পূর্বকালের মনীষীদের মধ্যে দুজন একত্র হলে বিচ্ছিন্ন হওয়ার সময় তারা একে অপরকে সূরাটি পাঠ করে শুনাতেন। (তাফসীরে উছমানী ৪/৭৪৫)

আল্লাহ তাআলা সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ প্রদানের প্রতি উৎসাহ প্রদান করে বলেন- তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল থাকতেই হবে, যারা মানুষকে কল্যাণের দিকে ডাকবে এবং সৎকাজের নির্দেশ দিবে ও অন্যায় কাজ হতে বিরত রাখবে। আর তারাই সফলকাম। (সূরা আল ইমরান)

সূরা যারিয়াতে (আয়াত : ৫৫) আল্লাহ তাআলা বলেন, (তরজমা) ‘আর তুমি বুঝাতে থাক। কারণ বুঝানো ঈমানদারদের উপকারে আসে।’

অর্থাৎ দাওয়াত ও তাবলীগের দায়িত্ব আপনি পরিপূর্ণভাবে পালন করেছেন। এখন আপনার অত দুঃখিত ও অনুতপ্ত হওয়ার প্রয়োজন নেই। সত্য না মানার যা দোষ তা সত্যদ্রোহীদের উপরই বর্তাবে। তবে বুঝোনো আপনার দায়িত্ব। তাই দাওয়াত ও তাবলীগের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ণ রাখুন। যার ভাগ্যে ঈমান আছে আপনার উপদেশে সে উপকৃত হবে, ঈমান আনবে এবং যারা ইতিপূর্বে ঈমান এনেছে তারা আরও বর্ধিত হারে উপকৃত হবে। আর অস্বীকারকারীদের জন্য আল্লাহর প্রমাণ পূর্ণ হবে।

(তাফসীরে উছমানী ৪/৩২১)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে উদ্দেশ করে আল্লাহ তাআলা বলেন-(তরজমা) হে বস্ত্রাবৃত! উঠ, সতর্কবাণী প্রচার কর এবং তোমার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা কর।’ (সূরা মুদ্দাসসির : ১-৩)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতের জন্য এত ফিকির করতেন এবং উদ্বিগ্ন থাকতেন যে, আল্লাহ তাআলা তাকে উদ্দেশ্য করে বলেন-(তরজমা) তারা যদি এ বিষয়ে বিশ্বাস না করে তবে তাদের পেছনে মনস্তাপ করতে করতে হয়ত তুমি প্রাণপাত করবে। (সূরা কাহফ : ৬)

অর্থাৎ এই কাফিররা যদি কুরআনের কথা না মানে, তো আপনি তাদের দুঃখে বিলকুল পেরেশান হবেন না। আপনি দাওয়াত ও তাবলীগের দায়িত্ব আদায় করেছেন ও করে যাচ্ছেন, কেউ না মানলে আপনার অতটা মর্মাহত ও চিন্তিত হওয়ার প্রয়োজন নেই। এই ভেবে অনুতাপ করাও সমীচীন নয় যে, আমি এমন মেহনত কেন করলাম যা সফল হল না? আপনি সর্বাবস্থায় সাফল্যমন্ডিত। দাওয়াত ও তাবলীগ এবং মানবতার প্রতি সহানুভূতি ও সহমর্মিতার যে কাজ আপনি করছেন তা আপনার মর্যাদা বৃদ্ধির সহায়ক। হতভাগার দল কবুল না করলে ক্ষতি তাদেরই। (তাফসীরে উছমানী ২/৭০১)

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উম্মত হওয়ার কারণে আমাদের উপরও দাওয়াতের কাজ জরুরি। যেমন সূরা ইউসুফে আল্লাহ তাআলা বলেন-(তরজমা) বল, এই আমার পথ। আল্লাহর দিকে ডাকি বুঝে-শুনে আমি এবং যারা আমার সঙ্গে আছে। আল্লাহ পবিত্র এবং আমি শরীক সাব্যস্তকারীদের অন্তর্ভুক্ত নই। (সূরা ইউসুফ : ১০৮)

অর্থাৎ এই খাঁটি তাওহীদের পথই আমার পথ। আমি বিশ্ব মানবতাকে আহবান করি যে, সমস্ত ধ্যান-ধারণা ও চিন্তা-চেতনা ছেড়ে এক আল্লাহর অভিমুখী হও এবং তাঁর তাওহীদ, তাঁর গুণাবলি ও বিধি-বিধান ইত্যাদির বিশুদ্ধ জ্ঞান বিশুদ্ধ পন্থায় অর্জন কর। আমি ও আমার সঙ্গীগণ অকাট্য দলিল-প্রমাণ এবং বিশুদ্ধ উপলব্ধি ও ব্যুৎপত্তির আলোকে এই সত্য সরল পথে প্রতিষ্ঠিত আছি। আল্লাহ তাআলা আমাকে এক আলো দান করেছেন, যাতে সব সাথীর দেল-দেমাগ সমুজ্জ্বল হয়ে গেছে। কারও অন্ধ অনুকরণ নয়, বিশুদ্ধ তাওহীদের পথচারী প্রতিটি কদমে তার মন-মানসে আল্লাহর মারিফত ও অর্ন্তদৃষ্টির বিশেষ জ্যোতি ও পরম দাসত্বের স্বাদ উপলব্ধি করে অবচেতন মনে বলে ওঠে-‘আল্লাহ পবিত্র। আমি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত নই।’ (তাফসীরে উছমানী ২/৪৫৯)

আল্লাহ তাআলা আমাদের দাওয়াত ইলাল্লাহর গুরুত্ব বোঝার এবং সঠিকভাবে এ দায়িত্ব পালন করার তাওফীক দান করুন। আমীন।

21/10/2022
22/07/2022

It is the handwriting of dear little sister.

22/07/2022

অকৃতজ্ঞ ছাড়া কেউ অহংকারী হতে পারেনা।। সম্পদ আর শক্তি সৌন্দর্যের অহংকার স্থায়ী নয়।।
আর অকৃতজ্ঞদের জন্য রয়েছে জাহান্নাম।।

10/07/2022
05/07/2022
03/07/2022
13/03/2022

আল্লাহু আল্লাহু, তুমি জাল্লে জালালুহু, এভাবে উচ্চারণ করা স্পষ্ট ভুল৷
সহিহ উচ্চারণ এভাবে, আল্লাহু আল্লাহু, তুমি জাল্লা জালালুহু৷

11/01/2022
11/01/2022

দেশের সরকারী হাসপাতাল গুলিতে মানুষ যত হয়রানীর শিকার হয়, এর বিনিময় সরকার জাহান্নাম ছাড়া কিছুই পাবেনা মনে হয় আখেরাতে।

24/11/2021

জন্ম তারিখ একী, বাট পর্দায় থাকা আর না থাকার তফাত।।

26/07/2021

আল্লাহু আকবার, কালামের মাজীদের আয়াত দিয়ে দিয়ে নসিয়ত। দ্বিল জুড়িয়ে যায়, আল্লাহর রহমতের প্রতি আশা জাগাই।

22/07/2021

সমস্ত নবী রাসূলের কাজ ছিল আল্লাহ
তা 'আলার তৌহিদের দাওয়াত দেওয়া।

09/05/2021

হাত তুলে সম্মিলিতো মুনাজাত,, বুঝিলে বুঝপাতা না বুঝিলে আকলে হাদিস।

17/02/2021

যার সাথে যার বিয়ে লেখা আছে কপালে, তার সাথে তার বিয়ে হবে।
এটা কি ফিক্সড?
আল্লাহ কি নিজেই বাছাই করে দেয় অমুকের জন্যে অমুককে?
আত্মহত্যা যদি কপালে লেখাই থাকে তাহলে ব্যক্তির পাপ হবে কেন?

"যা কিছু হয় সবকিছুই আল্লাহর হুকুমেই হয়" এই বাক্যটার অপব্যাখ্যা করেন অনেকেই।

সবকিছুই যদি আল্লাহর হুকুমেই হয়ে থাকে তাহলে যিনি চুরি ডাকাতি ছিনতাই করছেন তিনিও কি পরোক্ষভাবে আল্লাহর হুকুমেই এগুলো করছেন?
বা তাকদীরে লেখা আছে বিধায় এগুলো করছে?
নাহ! তাকদীরের বিষয়টি এমন নয়। তাহলে কেমন?
উত্তর জানার আগে আমরা আরেকটা বিষয় ক্লিয়ার হয়ে নিই চলুন।
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
“আমি তাদের (মানুষদের) সামনে পথ তুলে ধরেছি,হয় সে কৃতজ্ঞ হোক অথবা কুফরি করুক।”
(সুরা দাহর ৩ নাম্বার আয়াত)
আল্লাহ তায়ালা মানুষকে ইচ্ছে এবং কর্ম এই দুটোর ব্যাপারেই স্বাধীনতা দিয়েছেন। কে কি করছো করো।
ভাল করছো নাকি মন্দ করছো সবই লিপিবদ্ধ হচ্ছে, কিয়ামতে সেই হিসেবে জান্নাত অথবা জাহান্নাম।
ব্যাপারটা অনেকটা এরকম,
আপনাকে ১ ঘন্টা সময়ের এক্সাম দিতে বলা হলো চাকরির জন্যে।
এখানে ভুল লিখবেন নাকি শুদ্ধ লিখবেন নাকি কোনটাই লিখবেননা তা একান্তই আপনার ইচ্ছা।
চাকরির মালিক আপনাকে এই স্বাধীনতা দিয়েছেন।
যদি রেজাল্ট ভাল হয় তাহলে চাকরির এপয়েন্মেন্ট লেটার পেয়ে যাবেন।
তেমনি জান্নাত.....
এতটুকুতে ক্লিয়ার হয়েছেন তো?
আপনি রাস্তার মোড়ে বসে আছেন।
মোড়টা ৯০ডিগ্রি এংগেলের কাছাকাছি ধরে নিন।
পাশেই সাইনবোর্ডে বড় করে লেখা আছে "গাড়ী আস্তে চালান, ১০০কিমি স্পীডে গাড়ী এই মোড় ঘুরতে পারবেনা, মোড় ঘুরানোর সময় ১০০কিমি স্পীডে গাড়ী থাকলে তাহলে এক্সিডেন্ট করবেন।”
এবার আপনি দেখতে পেলেন কানে দুল হাতে ব্যাচলাইট পরা দুইজন ছেলে বাইক নিয়ে সেই লেভেলের স্পীডে আসতেছে। এখানে যে মোড় আছে তা তাদের খেয়াল নেই।
ফলাফল = এক্সিডেন্ট।
এখন আপনি কি বলবেন?
কর্তৃপক্ষ এই সাইনবোর্ডে লিখে রেখেছিল তাই এক্সিডেন্ট হলো?
মানুষের প্রতিটা কাজ কর্ম আল্লাহ লিখে রেখেছেন এটা ঠিক। তবে আল্লাহ লিখে রেখেছেন বিধায় আমরা করছি, ব্যাপারটা এমন নয়।
বরং আমরা কখন কি করব কি খাব ইত্যাদি এগুলো আল্লাহ আগে থেকেই জানেন, যেহেতু তিনি ইলমে গায়েবের অধিকার রাখেন, আর তাই তিনি লিখে রেখেছেন। বুঝতে অসুবিধা হলে এক্সিডেন্ট এর উদাহরনটা আবার পড়ুন।
এবার আসি, দুইটি আয়াতের ভুল ব্যাখ্যা জেনেছে অনেক মানুষ। আর তা হচ্ছে,
আল্লাহ প্রতিটা মানুষের জোড়া বানিয়েছেন।
এটা এমন নয়, বরং সুরা যারিয়াত এর ৪৯ নং আয়াত ও সূরা ইয়াসিনের ৩৬ নং আয়াতের যথার্থ অর্থ হচ্ছে প্রতিটি জীবন্ত প্রানী বা উদ্ভিদকে সৃষ্টি করেছেন জোড়ার মাধ্যমে।
অর্থাৎ পুংলিঙ্গ স্ত্রী লিঙ্গের কম্বিনেশন এর মাধ্যমে।
যদি সবার জন্যেই জীবনসঙ্গী সৃষ্টি করেই রাখেন তাহলে যারা বিয়ের আগেই মারা যাচ্ছে তাদের ক্ষেত্রে কি বলবেন?
অতএব, প্রতিটি ছেলে-মেয়ের জোড়া রয়েছে এটা উপরিউক্ত রেফারেন্স এর আয়াতের বুঝ নয়, বরং প্রতিটি সৃষ্ট জীব সৃষ্টির পিছনে জোড়া কাজ করেছে এটা ঠিক।

ক্লিয়ার করতে পারলাম কিনা?
আরো কিছু আয়াত নিয়ে মানুষ বিপাকে পড়ে,
যেমন কেউ বলে, কুরআনেই তো আছে ভাল ছেলেরা ভাল মেয়েই পাবে, ভাল মেয়েরা ভাল ছেলেকেই পাবে।
এটাও সঠিক বুঝ নয়।
সুরা নুরের ৩ নাম্বার আয়াতে সেখানে মূল ভাবটা হচ্ছে কোন ব্যাভিচারী ছেলে যেন ব্যাভিচারীনী নারী বা মুশরিকা নারী ছাড়া বিবাহ না করে, অনুরুপ মেয়েরাও।
এর ব্যাখ্যায় তাফসীরে জালালাইনে পড়েছিলাম, যদি বর ভাল হয় আর বউ খারাপ চরিত্রের হয় তাহলে সংসার টিকবে?
কিংবা বউ ভাল বর খুবেই খারাপ, শান্তি থাকবে?
বর বউ দুইজনেই ভাল, তাদের মাঝে শান্তি থাকবেনা?
অবশ্যই!

একজন ভাল একজন খারাপ এমন হলে সংসারে শান্তি আসা খুব মুশকিল আর তাই আল্লাহ তায়ালা অমন করে বর্ননা করেছেন।
ভালর জন্য ভাল, খারাপের জন্যে খারাপ, এটা ফিক্সড করে দেননি বরং ভালর জন্যে ভাল কিছুই পারফেক্ট হবে এটাই বুঝিয়েছেন।
নিজে ভাল হলেই যে ভাল পাওয়া যাবে ব্যাপারটা এমন নয়। অনেকে নিজে ভাল কিন্তু পায় খারাপ। আবার অনেকে নিজে খারাপ অথচ পায় ভাল।
লুত (আঃ) ছিলেন একজন নবী। অথচ ওনার স্ত্রী ভাল ছিলনা। যদিও পরে বিচ্ছেদ হয়।
আবার ফেরাউন ছিল খারাপ অথচ তার স্ত্রী আছিয়া (আঃ) ছিল ভাল।
সুরা নুরের লিয়ান সংক্রান্ত আয়াতের ব্যাখ্যায় দেখবেন একজন সাহাবীর স্ত্রী অন্যজন পুরুষের সাথে যেনায় লিপ্ত হয়েছিল।
যদি ভালরা ভালকেই পেয়ে থাকবে তাহলে এসব ঘটনা কি?

“দুশ্চরিত্রা নারী-সকল দুশ্চরিত্র পুরুষ- সকলের জন্য এবং দুশ্চরিত্র পুরুষ-সকল দুশ্চরিত্রা নারী-সকলের জন্য উপযুক্ত । (সূরা নূর : ২৬) উল্লেখিত আয়াতে বলা হয়েছে যে, দুশ্চরিত্রা নারী দুশ্চরিত্র পুরুষদের জন্য, এমনিভাবে তার বিপরীত।

কেননা আল্লাহ তা’আলা মানব চরিত্রে স্বাভাবিকভাবে যোগসূত্র রেখেছেন। অতএব দুশ্চরিত্রা ব্যাভিচারিণী নারী ব্যাভিচারী পুরুষদের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে থাকে, এমনিভাবে তার বিপরীত এবং সৎ চরিত্রা নারীরা সাধারণত সৎ চরিত্র পুরুষদের প্রতিই আকৃষ্ট হয়ে থাকে এমনিভাবে তার বিপরীত। প্রত্যেকেই নিজ নিজ আগ্রহ অনুযায়ী জীবন-সঙ্গী খোঁজ করে নেয় এবং আল্লাহর বিধান অনুযায়ী সে এমনই পায়।

বিঃদ্রঃ উল্লেখিত আয়াতে বলা হয়েছে যে দুশ্চরিত্রা নারী-সকল দুশ্চরিত্র পুরুষ-সকলের জন্য এবং দুশ্চরিত্র পুরুষ-সকল দুশ্চরিত্রা নারী-সকলের জন্য উপযুক্ত।এখন কেউ যদি উপযুক্ত হয়েও না পায় সেটা আল্লাহর ইচ্ছা কেননা সে উপযুক্ত ছিল কিন্তু আল্লাহ কোন বিশেষ কারনে এমন করেছেন। তবে মূলত সৎ চরিত্রের পুরুষ সৎ চরিত্রের নারীর সাথেই সম্পর্ক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তেমনি অসৎ চরিত্রের পুরুষের অসৎ চরিত্রের নারীর সাথে সম্পর্ক হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।

সবাই এই আয়াত টার ভুল ব্যখ্যা বুজে। আমরা সাধারন মানুষরা এই আয়াত পড়ে বলে ফেলি যে যে যেমন তেমন পাবে। এর আগে, পিছে কি বলছে তা কি পড়ি?পুরো সুরাটা ব্যভিচারী নিয়ে লিখা। আর আল্লাহর বিধান অনুযায়ী ব্যভিচারীদের প্রকাশ্যে পাথর মেরে শাস্তির কথা বলেছেন। যাতে সবাই তাদের চিনে। আর কোন মুমিন পুরুষ, নারি কে ব্যভিচারীদের

12/02/2021

হুজুর (সা) রজাব মাসের শুরু থেকে এ-ই দোয়াটা পড়িতেন। অতএব সকলে পড়ার চেষ্টা করি।
যার অর্থ হচ্ছে,-- হে আল্লাহ, আপনি আমাকে রজব এবং শাবান মাসের বরকত দ্বান করুন এবং রমাজান পর্যন্ত পৌছিয়ে দিন।।

Videos (show all)

আর কত জালাইবি বল? ইদুর?

Telephone

Website