Vai Harun
পাখির চোখে সুন্দজ্য দেখুন
#গল্পটা_সকলেরই_পড়া_উচিৎ কেও খারাপ ভাবে দেখন না
মাঝ রাতে যখন বউয়ের আদর পেতে মন চাইছে, বউ তখন ঘুমে বিভোর। কি করি ডাকবো? ওর ঘুমটা ভাঙাবো?
কিন্তু আমার যে খুব মন চাইছে, না ডেকে ওকে চুমু দিয়ে আমি হালকা আদর করতে লাগলাম, খেয়াল করলাম ও একটু নড়ে উঠছে মানে ওর ঘুমটাও পাতলা হয়ে গেছে,
আমি আদরের মাত্রা আর একটু বাড়ায় দিলাম, নতুন বিয়ে করেছি আদর ছাড়া কি থাকা যায়। বউ (শশী) ঘুম ঘুম চোখে, কি হয়েছে আমি ঘুমাচ্ছিতো।
আমার নামম নিরব, আমি বললাম পড়ে ঘুমিও আগে আদর দাও, আমার খুব মন চাইছে।
শশীঃ হুম।
নিরবঃ ও হুম বলাতে, আমি ওর গায়ের উপর উঠে পড়লাম।
শশীঃ আরে আরে কি করছেন?
নিরবঃ কি করছি মানে, তুমিই তো বললে হুম তাই তো করছি।
শশীঃ সব কিছুতেই আপনার তাড়াহুড়া বেশি।
নিরবঃ কি তারাহুড়া করলাম, আর শোন আমায় তুমি করে বলবা, তোমার মুখে মুখে আপনি ডাক ভালো লাগে না, পর পর মনে হয়।
আমি এখন কিছু শুনবো না, ঘুম ভেঙেছে আদর নেবো।
শশীঃ হুম বলেছি তো দেবো। আগে মাঝ রাতে ঘুম ভাঙলো একটু আল্লাহর শুকুর করি, সুবাহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, আল্লাহু আকবর, ইয়া আর হামার রাহিমিন।
নিরবঃ হয়েছে, শেষ, এবার আসো শুরু করি।
শশীঃ হুম কিন্তু তার আগে দোয়া পড়তে হবে, আমার সাথে পড়ো।
নিরবঃ আদর করবো তাতে আবার দোয়া, কি শুরু করলে মাঝ রাতে আদর চেয়েছি তাই এতো বাহানা করছো?
শশীঃ না বর মশাই। যে কোন কাজ আল্লাহর নামেই শুরু করতে হয়, সব কিছুরই আলাদা আলাদা দোয়া আছে তা না পারলে অন্তত বিসমিল্লাহ বলে সব করতে হয়।
তাছাড়া সহবাসের সময় দোয়া না পড়লে, দুজনার মাঝখানে শয়তান প্রবেশ করে মজা নেয়, আর সে মিলনটাকে অবিত্র করে দেয়, তখন যে সন্তান গর্ভে আসে সে সন্তান কখনও ঈমানদার হয় না।
জেনে শুনে এ ভূল কেন করবো?
যে সম্পর্কটা জান্নাত থেকে এসেছে, যে সম্পর্ক টা পবিত্র তাকে পবিত্র রাখাই তো উচিৎ।
আসুন আমার সাথে দোয়া পড়ুন তারপর শুরু করুনঃ
""বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়তনা ওয়া জান্নিবিশ শায়তনা মা রাজাকতানা""
নিরবঃ কখন থেকে মন চাইছিলো, বিয়ে করেই যেন আদর পাগলা হয়ে গেছি, তোমার আদর না পেলে ঘুমই আসতে চায় না, কেমন লাগছে??
শশীঃ হুম ভালো,
নিরবঃ কষ্ট হচ্ছে নাতো।
শশীঃ একটু লজ্জা পেয়ে ধ্যাত, এতে আবার কষ্ট হয় নাকি।
নিরবঃ ওকে তাহলে গাড়ি চলতে থাক।
শশীঃ মানে কি হুম, সারারাত চলবে নাকি।
নিরবঃ তুমি চাইলে চলতেই পারে।
শশী কিছু না বলে হেসে দিয়ে, আমায় শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো।
কিছুক্ষন পর সেই তৃপ্তি মিললো, আহ শান্তি। আমি এখন ঘুমাই।
শশীঃ কি, কোন ঘুম চলবে না এখন।
নিরবঃ কেন আরও চাই? আর পারবো না এখন, তাইলে সকালে।
শশীঃ আদর ছাড়া আর কোন ভালো কথা নাই, আমি বলেছি যে আমার চাই।
যাও উঠে গোসল করো, দুজন তাহাজ্জুদ পড়বো।
নিরবঃ কি বলো তুমি, এখন গোসল করলে ঘুম পালিয়ে যাবে এ শাস্তি দিও না। তুমি যাও না তুমি পড়ো, আমি ঘুমাই।
শশীঃ আমার কথা না শুনলে আমি কিন্তু পানি এনে মাথায় ঠেলে দেবো!!!
নিরবঃ ধুর কি বউরে বাবা, ভালো লাগে না। মাঝ রাতে আদর চেয়ে যেন বিপদে পড়েছি বলে উঠে চলে গেলাম ওয়াসরুমে।
এসে তাহাজ্জুদ পড়লাম দুজনে, ঘুমাতে যাবো ওমনি ফজরের আজান। জানি ঘুমাতে দেবে না এখন তাই আজান শেষ করার অপেক্ষায় না থেকে, ফজর ও পড়া শুরু করলাম।
ঘুমাতে যাবো তখন বউ এখনই ঘুমাতে হবে ১০টা মিনিট তো একটু তেলাওয়াত করা যায়।
নিরবঃ দেখো সকালে আমাকে অফিস যেতে হবে এখন ঘুমাবো আর কিছু বলো না।
শশীঃ বেশ ফজরের নামাজের পর কিছু দোয়া ও আমল থাকে সেগুলো একটু পড়ো, আমি বলছি আমার সাথে পড়ো।
ওতো কিছু না হোক "আয়াতুল কুরসি" আর সূরা হাশরের শেষ ৩ আয়াতটা পড়ো।
নিরবঃ আমি ঘুম ৮ টার আগে আমার সাথে কোন কথা বলবা না।
শশীঃ হুম বুঝেছি এক সাথে হবে না, ধীরে ধীরে করাতে হবে। আমি ছোট ছোট দোয়া ও আমল গুলো করে সূরা ওয়াকিয়াহ ও আর রহমান পড়ে এবার আমিও ঘুমাতে গেলাম। ৭:৩০ টায় উঠে ওর জন্য ব্রেক ফাস্ট বানাতে গেলাম। ৮ টার এলার্ম বাজলে নিরবকে ডাকতে এলে ও আমায় টেনে বিছানায় নিয়ে গেলো, আমি কি হচ্ছে এটা সকাল সকাল।
ঘুম থেকে যে জাগতে পেরেছো তার শুকুর না করে দুষ্টুমি করছো।
ঘুম থেকে ওঠার দোয়া বলো?
নিরবঃ পারতাম চর্চা না করতে করতে ভূলে গেছি।
শশীঃ আমার সাথে বলো ""আলহামদু লিল্লাহিল্লাযী আহইয়ানা বা'দা মা আমাতানা ওয়া ইলায়হিন নুশুর""
যাও এবার ফ্রেশ হও খাবার দিচ্ছি
নিরব এসেই খেতে যাবে আমি হাত ধরে বসলাম
নিরবঃ কি হাত ধরলে যে খাওয়ায় দেবে?
শশীঃ জ্বী না। খাবার সামনে আসার দোয়া নাই পড়লে অনন্ত খাওয়ার আগে তো ""বিসমিল্লাহি আলা বরকাতুল্লাহ"" ও খাওয়া শেষে আলহামদুলিল্লাহ পড়বে।
নিরবঃ সরি শোনা, আসলে আমি সবই পারতাম চর্চা না করে করে সব দোয়া ভূলে গেছি। তুমি শিখিয়ে দিও আবার আমি শিখে নেবো।
শশীঃ হুম তাই তো দিতে হচ্ছে।
নিরবঃ আচ্ছা তাহলে আসি সাবধানে থেকো বলেই কপালে একটা চুমু দিয়ে চলে যাবো তখনই শশী হাত ধরে বসলো, আমি বললাম কি হয়েছে শোনা কিছু বলবে?
শশীঃ ঘর থেকে বের হবার সময় "আয়তুল কুরসি" ও "বের হবার দোয়া" পড়তে হয়, তাহলে বাইরে কোন বিপদ ঘটলে আল্লাহ তা থেকে হেফাজাত করেন।
পড়ো, ""বিসমিল্লাহি তাওয়াক্কালতু আলাল্লাহি লা হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহ""।
নিরবঃ আচ্ছা আসি, আল্লাহ হাফেজ।
শশীঃ ফি আমান্নিল্লাহ। ২ টার দিকে নিরব ফোন দিলো।
নিরবঃ কি করো সুইট হার্ট, উম্মমমমমম
শশীঃ আসসালামু আলাইকুম, নামাজ পড়ে উঠলাম, তুমি পড়ছো?
নিরবঃ ওয়ালাইকুম আসসালাম। হুম পড়েছি।
আমাকে আবার সালাম দেওয়া লাগে নাকি।
শশীঃ কোথায় বলা আছে যে সব মানুষকে সালাম দিতে নাই। সালাম অর্থ শান্তি বর্ষিত হওয়া। যখন দুজন ব্যক্তি সালাম আদান প্রদান করে তখন তাদের মাঝে শান্তি বর্ষিত হয়। তাই সব সময় সালাম দিতে হয়ে ছোট বড় সবাইকেই।
নিরবঃ হুম, কি রান্না করছো। আমি আজ তাড়াতাড়ি চলে আসবো।
শশীঃ বলবো না কি রান্না করছি, আচ্ছা আসো সমস্যা নাই। গাড়িতে ওঠার আগে এই দোয়া টা পড়ো ""সুবহানাল্লাজি সাখখারা লানা হা-জা ওয়ামা কুননা লাহু মুক্বরিনীন, ওয়া ইন্না ইলা রাব্বিনা লামুনক্ববালিবুন""
নৌ চলাচলের সময় ""বিসমিল্লাহি মাজরিহা ওয়া মুরসাহা ইন্না রাব্বী লা গাফূরুর রাহীম""
রাখছি আল্লাহ হাফেজ।
বিকাল ৫টায় নিরব এসে কনিঙ্বেল দিচ্ছে,
শশীঃ কে?
নিরবঃ প্রিয়তমা আমি গো।
শশীঃ আসসালামু আলাইকুম।
নিরব উত্তর দিয়ে ঘরে ঠুকবে। আমি দাড়াও
নিরবঃ কি হয়েছে, ঠুকতে দাও টায়ার্ড আমি।
শশীঃ ঘরে ঠোকার দোয়া পড়""আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকা খাইরাল মাউলাজি, ওয়া খাইরাল মাখরাজি বিসমিল্লাহি ওয়ালআজনা ওয়া বিসমিল্লাহি খারাজনা ওয়ালা রাব্বানা তাওয়াক্কালনা"" নিরব ঘরে ঠুকলো।
দরজায় নক করে প্রিয়তমা বলে ডাক না দিয়ে সালাম দিলেই তো হয়।
নিরবঃ হুম ঠিকাছে প্রিয়তমা যাই ফ্রেশ হয়ে আসি। বাথরুমে ঠুকতে যাবো শশী সামনে, দোয়া পড়ো ""আল্লাহুম্মা ইন্নি আউযুবিকা মিনাল খুবশি ওয়াল খাবাইস""।
আর বের হবার সময় পড়বা ""গুফরানাকা""
নিরবঃ ঠিকাছে, যাও কিছু খেতে দাও।
বাইরে এসে দেখি প্রিয়তমা খাবার রেডি করে রাখছে, খেতে যাবো তখনই
শশীঃ না নেবে না, আমার এখনো গুছানো হয় নি যাও আসরের নামাজ পড়ে নাও আমি বেলকুনিতে নিয়ে আসছি সব।
নিরবঃ আহ গরম গরম ভেলপুরি সে যে কি টেস্ট, সাথে সুজির রসভরি। কোনটা রেখে কোনটা খাই। দুজন মিলে খাচ্ছি আর মজা করছি। সন্ধা হয়ে এলো আজান দিচ্ছে আমি মসজিদে চলে গেলাম। বাসায় এসে শুনছি শশী তেলাওয়াত করছে, ও আসলে সুন্দর তেলাওয়াত করে। জীবনে হয়ত কোন এক ভালো কাজ করছিলাম যার জন্য আল্লাহ এতো ভালো একটা জীবন সঙ্গি পেলাম। পরকালেও যেন আল্লাহ ওকেই আমার জন্য রাখে।
আমি বসে আছি খাটে শশী তখন দোয়া পড়ছে যে সব আমল ও সব সময় করে সেসবই। সব শেষে মোনাজাত ধরলো, অনেকটা সময় পর মোনাজাত শেষ করে আমার পাশে এসে বসলো। আমার গায়ে একটা ফু দিয়ে আমায় জড়িয়ে ধরলো।
আমি কি ব্যাপার আমায় ফু দিলা কেন, বশ করার দোয়া টোয়া জানো নাকি আমায় বস করলে যাতে আর কোন বিয়ে না করি।
শশীঃ যাহ ফাজিল ছেলে একটা। বশ করবো কেন তুমি তো আর ছোট ছোট দোয়া গুলো আমল করো না, যে গুলো ফজর ও মাগরিব নামাজের পর পড়তে হয় তাই তোমায় ফু দিলাম যাতে আমার দোয়াতে তোমারও কাজ হয়।
নিরবঃ হুম বুঝলাম তা এতো সময় মোনাজাতে এতো কি দোয়া পড়ছিলে শুনি?
শশীঃ আল্লাহকে বলছিলাম, যাতে জান্নাতে দুজন দুজনার সাথী হতে পারি সেভাবে যেন দুজনকে আমলদার বানিয়ে দেন। আমার আগে তোমাকে যেন পৃথিবী থেকে না নিয়ে যান। যেন দুজনকেই এক সাথে নিয়ে যান বা আমাকে আগে, আর বাবা -মা, পরিবারের অন্য সবাই যেন ভালো থাকে সুস্থ থাকে, যত পরিজন কবরে শুয়ে সবার যেন কবরের আযাব মাফ হয়ে যায় এরকম সবার জন্য দোয়া করছিলাম।
নিরবঃ কথা গুলো যেন মন ছুয়ে গেলো, কত কিছু নিয়ে ভাবে ও। আমি তোমাকে জান্নাতে আমার পাশে চাই বলে জড়িয়ে ধরলাম শশীকে।
রাত হলো, এসার আজান হলো আমি মসজিদে চলে গেলাম নামাজ শেষে শশীর মতই বললাম। আরও বললাম আল্লাহ আমরা দুজন কেউ কাউকে ছাড়া থাকতে পারি না, আমাদের কখনও আলাদা করে দিও না, একা করে দিও না। মৃত্যু যখন দিবা দুজনকে এক সাথেই দিও। দুজনকে এক সাথে জান্নাতের সাথী করে দিও।
বাড়ি ফিরে দেখি শশী খাবার রেডি করে রাখছে, খেতে বসলাম শশীকে বললাম স্ত্রীকে খাওইয়ে দেওয়া নবীর সুন্নাত আজ তোমাকে আমি খাওইয়ে দেবো। শশী একটা মন জুড়ানো মিষ্টি হাসি দিলো।
খাওয়া শেষে ব্রাশ করে, ওযু করে দুজনে বিছানায় চলে গেলাম।
শশীঃ ঘুমাবার আগে কিছু আমল আছে, যেগুলো পড়ে ঘুমালে দুষ্টু জ্বীন বা শয়তান ঘুমের মধ্যে আক্রমন বা বিরক্ত করতে পারে না।
প্রথমে "আয়াতুল কুরসি" পড়ো, তারপর সূরা ফাতিহা একবার ও ইখলাস তিন বার পড়ো, সূরা নাস ও ফালাক পড়ো, দুরুদ পড়ো, তওবা পড়ো। মনে করে এ ঘুম থেকে তুমি আর কোনদিন জীবত হয়ে উঠবে না, সে ভাবে আর যেসব দোয়া পড়তে মন চায় সেগুলো পড়ো।
সাথে সূরা মূলক পড়ো নিয়মিত ঘুমানোর আগে এই সূরা পড়লে কবরে শাস্তি মওকুফ হয়।
সব শেষ ঘুমের দোয়া পড়ো ""আল্লাহুম্মা বিইসমিকা আ'মুতু ওয়া আহ ইয়া""
এবার উত্তর দিকে মাথা দিয়ে, ডান কাত হয়ে হাতের নিচে মাথা রেখে, দু পা এক করে আরবি 'হা' ও 'মীম' এর মত আকার নিয়ে মুদ্দার এর মত ঘুমিয়ে যাও।
দুজনেই এভাবে ঘুমিয়ে গেলো, বেশ কিছুদিন পর এসব আমল দুজানার দৈনিক রুটিন হয়ে গেলো। দুজনেই অনেক আমলদার হয়ে গেলো।
ঠিক একইভাবে তারা আবারও ঘুমিয়ে গেলো কিন্তু সকাল বেলা আর ঘুম থেকে জাগলো না দুজনই।
কিছু পড়ে মাইকে ঘোষনা হলো তারা মৃত।
বাড়ি ভরে গেলো মানুষের কলরবে, কেঁদেই চলেছে প্রিয়জনরা সবে।
গোসল করানো হলো, জানাযা পড়ানো হলো, সবশেষে পাশাপাশি কবরে দুজনকে দাফন করা হলো। সবাই যে যার মত চলে গেলো।
অন্ধকার কবরে দুজন দু কক্ষে শুয়ে, হঠাৎ কবরে একটা সুড়ঙ্গ পথ তৈরি হলো, দুজনকে জাগ্রত করে সে পথ ধরে এক সাথে জান্নাতে পাঠানো হলো।
তাদের অধিক আমলে আল্লাহ খুশি হয়ে তাদের কবরের আযাব মাফ করে জান্নাতবাসি করে দিলেন। আলহামদুলিল্লাহ
গল্পটা যদি নিজের জীবনে বাস্তবায়ন হতো কতো ভালোই না লাগতো, যদি মৃত্যু পরবর্তি জীবনে কোন শাস্তিই না হতো!!!
আল্লাহ তার সকল বান্দাকে আমলদার বানিয়ে দিক, সঠিক পথে চলার তৌফিক দিন।
#সমাপ্ত
গল্পটা ভালো লাগলে একটা শে য়া র করুন❤️
প্রথমবারের মতো কলারোয়া উপজেলায় ভয়ঙ্কর রাসেল'স ভাইপার সাপের দেখা মিলেছে, এলাকা জুড়ে আতঙ্ক
গণমাধ্যম মারফত জানলাম, গত ৫ নভেম্বর সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার চন্দনপুর ইউনিয়নের ভোজের বটতলা নামক স্থানে একটি চন্দ্রবোড়া সাপ মারা হয়েছে। ৬ নভেম্বর একই ইউনিয়নের চন্দনপুর গ্রামে সাহেব আলির বসত বাড়ির ভিতর থেকে আরেকটি চন্দ্রবোড়া সাপ মারা হয়। পরবর্তীতে ৭-১২ নভেম্বরের মধ্যে কলারোয়া উপজেলার কায়েবা ইউনিয়নের দাঁতখালি গ্রামে ধানক্ষেত থেকে আরো দুটি চন্দ্রবোড়া সাপ মারা হয়।
এর আগে এই সাপ কলারোয়াতে দেখা মেলেনি। রাসেল'স ভাইপার সাপ কচুরিপানার উপর থাকতে ভালোবাসে। তাই হয়তো নদীর কচুরিপানার সাথে ভেসে নদীর তীরবর্তী গ্রামগুলোতে ঢুকে পড়েছে।
সাপটি কামড় দিলে ক্ষতস্থান তীব্র যন্ত্রণা করবে ও ফোসকা পড়বে। কামড়ের ১০০ মিনিটের মধ্যে এন্টিভেনাম না প্রয়োগ করলে বাঁচার সম্ভবনা নেই বললেই চলে।
সাতক্ষীরার কেউ এই সাপের কামড়ের শিকার হলে কালক্ষেপণ না করে অতি দ্রুত সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে চলে যাবেন। সেখানে এন্টিভেনাম আছে। উপজেলার কোনো হাসপাতালে এন্টিভেনাম পাবেন না।
রাসেল'স ভাইপার বা চন্দ্র বোড়া ভয়ঙ্কর ও তীব্র বিষধর একটি সাপ। চাঁপাইনবাবগঞ্জ, শিবচর ও ইশ্বরদীতে এক আতঙ্কের নাম এ সাপ। প্রায়ই এই সাপের কামড়ের স্বীকার হচ্ছেন কৃষকেরা। মারাও যাচ্ছেন অনেকে। চাঁপাইনবাবগঞ্জে পাকা ধান কাটার শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। সাপের ভয়ে কৃষকেরা বুট জুতা পরে মাঠে যাচ্ছেন।
এই সাপ খুবই কম ড্রাই বাইট মারে (২০%)। এদের দাঁত দ্বিতীয় বৃহত্তম ভেনোম ফ্যাং। সাপটি একেবারে ৪০-৪৫টা বাচ্চা প্রসব করে। ৭৫টি পর্যন্ত বাচ্চা প্রসব করার রেকর্ড আছে।
সব থেকে আশ্চর্যের বিষয়:
গত ১০০ বছরে বাংলাদেশে সাপটি দেখা না যাওয়ায় ২০০৯ সালে বাংলাদেশ থেকে বিলুপ্ত ঘোষণা করে ICUN. পরবর্তীতে ২০১২ সালে হটাৎ করে চরাঞ্চলে দেখা মেলে সাপটির। ২০১৭ সালের পর থেকে পদ্মা ও মেঘনার তীরবর্তী এলাকা বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালি, চাদপুর, লক্ষিপুর, মুন্সিগঞ্জ, কুষ্টিয়া, শরিয়তপুরের নরিয়ায়, রাজশাহী, পাবনা, নওগা, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সাতক্ষীরাসহ ২১টি জেলায় পাওয়া যায়।
Blog With Harun Vai
😔বাঁ’শ কাকে বলে শুনেন😔
কালকে এক বন্ধুর সাথে ঘুরতে গিয়ে
বাসায় আসতে প্রচুর লেট হয়েছিল।
বাসায় আসার পর😑
আম্মুঃ কিরে কই ছিলি?🙄
আমিঃ এইতো এক ফ্রেন্ডের বাসায়।😔
আব্বুঃ ছেলেটা এই মাত্র বাসায় আসলো খেতে দাও😎
তখন আম্মু আমাকে খেতে দিয়ে ভিলেন স্টাইলে এক এক করে 12 টা ফ্রেন্ড এর বাসায় ফোন দিলেন😱😱
তার মধ্য ৫ জনই বললো হ্যা আন্টি ও ত এখানেই ছিলো😊
২ জন বললো হ্যা আন্টি ও ত একটু আগেই বেরিয়ে গেল🙂
৩ জন বললো অ্যান্টি ও তো এখানেই আছে পড়তেছে ফোন দেই😍
১জন বললো টয়লেটে গেছে আন্টি 😁😁
আর একজন ত বেশি পা’ক’না’মী কইরা আমার কন্ঠ ন’ক’ল করেই বললো হ্যা আম্মু কিছু বলবা🤗🤗
এখন বলেন তো কেমন ডা লাগে।
কতই না সুন্দর ছিলো সেই দিন গুলো
বাসর রাতের শেষ ভাগে এসে জামাই আমার ফুপিয়ে কান্না করতেছে। তার চোখ ভর্তি পানি দেখে আমার কেবলি হাসি পাচ্ছে।
আমি রাত্রি। আজ আমার জীবনের প্রথম মধুময় রাত। গায়ের রঙ চাপা হলেও; ভালবাসার দাবী নিয়ে অবিবাহিত জীবন পথে কয়েক জন পুরুষ এসেছিলো। শুদ্ধতম বন্ধনের মানুষটির জন্য, তাদেরকে হাসি মুখে ফিরিয়ে দিয়েছি। আজ পারিবারিক ভাবে জুনাইদের সাথে আমার বিয়ে হলো। জুনাইদ যেদিন আমায় প্রথম দেখে গেলো, সেদিন থেকে ছেলেটি আস্ত প্রেমিক হয়ে গেলো। বলা নেই কওয়া নেই পরেদিন শেষ বিকেলে বাইকে ছড়ে চলে এলো! লজ্জায় শ্যামা মেয়ে আমি রক্ত জবা হয়ে উঠি। আড় চোখে একবার তাকিয়ে, ঠোঁটে হাসি লেগে থাকা ছেলেটির মাঝে নিজকে সপে দেই। জুনাইদের আগ্রহ উত্তেজনার দুইদিনের মাঝে ঘটা করে আমাদের আংটি বদল হয়। আংটি বদলের এক সপ্তাহ পর বিয়ে হয়। এই গোটা একটি সাপ্তাহ রাতে দু'জন চোখের পাতা এক করিনি। কথা বলে কাটিয়ে দিয়েছি সাত সাতটি রাত।
ওর প্রিয় রঙ লাল, আমার কালো। খুব ইচ্ছে ছিলো, গতানুগতিক ধারা উলটে দিয়ে; বিয়ের দিন কালো শাড়ি পরবো। কিন্তু আমার সাহেবের পছন্দের কাছে হেরে গেলাম। ও আমায় জোর করেনি, শুধু বলেছে ' বিয়ের দিন লাল শাড়িতে তোমারে যা লাগবে না'! উত্তরে বললাম কি লাগবে শুনি? সদ্য ফোঁটা লাল গোলাপ দেখেছো? দুষ্টু হেসে উত্তরে বললাম না তো। সেও হেসে বললো, আচ্ছা, আচ্ছা; আয়নায় দেখাবো তোমারে। কখন দেখাবে? প্রথম রাতে।
তার প্রিয় রঙে'র লাল শাড়ি পরে, তার'ই অপেক্ষায় বসে আছি। বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি, অবসান ঘটিয়ে চলে এলো তার নববধূর কাছে। রুমে ঢুকে দরজার ছিটকেনি লাগিয়ে পর্দার ফাঁকফোকর ভালো করে দেখে, হাতের পাগড়ি রেখে; নত মস্তকে বসে থাকা আমার সামনে এসে দাঁড়ালো। ঘোমটার অল্প আস্তরণের ভেতর থেকে দেখলাম তার মুগ্ধ চাহনি। সেই চিরচেনা হাসি হেসে পাশে বসে বললো অবশেষে তুমি শুধুই আমার হলে। তার এ কথা শুনে ইচ্ছে করছিলো, সব লাজুকলতা'র গলা চেপে দিয়ে তার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ি! কিন্তু পারিনি, আড়ষ্ট আমি আরো কুঁকড়িয়ে গেলাম। আমাকে সহজ করার জন্য প্রেমিক পুরুষের ন্যায় ফোন কলের কথোপকথন সরাসরি নিয়ে এলো। মুখে হাসি রেখে গম্ভীর কণ্ঠের ভাব ধরে বলে 'রাত্রি তোমার হাত ধরতে অনুমতি লাগবে'? হু বলে মাথা হ্যা সূচক নাড়িয়ে তার ডান হাত ধরে বললাম, জরিমানা হিসেবে এবার একশত একবার ভালোবাসি বলো। সুখকর এ শাস্তি কেনো? এই যে অনুমতি নিলে। হাত শক্ত করে ধরে চোখ বন্ধ করে; উফফ শব্দ করে মেকি বিরক্তির ভাব ধরে বলে, এই মেয়ে আমার সাধের রাত খেয়ে দিলো রে। তুমি গুনতে থাকো। বেশি হলে শোধ করে নেবো। কম হলে আগামী কাল পুষিয়ে দেবো।
কিন্তু আমাদের একসাথে আগামী কাল এলো না। শেষ রাতে তার ফুপিয়ে কান্না করা'কে মজার চলে নিয়েছে। কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলেছি ভার্জিনিটি ক্ষয়ে যাওয়ায় দুঃখ পেয়ে কষ্টের জলে ভাসছো? অহেতুক বকবক করেও ওকে আমি স্বাভাবিক করতে পারিনি। চারপাশে ফজরের আজানের ধ্বনি ভেসে আসছে। হাত ধরে টেনে বললাম, জুনাইদ চিন্তা হচ্ছে তো। হঠাৎ কি হলো তোমার?
হাত ঝেড়ে ফেলে দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলো। বিস্ময়ে দু'চোখ দরজায় কাটকে যায়। চোখ দু'টো জ্বালা করতে থাকে। পানি জমতে থাকে। ঝাপসা চোখ নিয়ে অজু করে ফজর আদায় করলাম। সিজদায় পড়ে এক জীবনের জন্য তাকে'ই চাইলাম। ওর ক্ষানিক অবহেলায় ভেতর পুড়ে যাচ্ছে। 'ঠিক হয়ে যাবে' বলে নিজেক সান্ত্বনা দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকাল হলো সবাই মিলে নাস্তা করলাম। চারপাশের লোকেরা নতুন বউ দেখতে আসছে। ভাবিরা হাসি তামাশা করছেন। সকাল দশটা পেরিয়ে গেলো তার দেখা নেই। বাধ্য হয়ো শ্বাশুড়ি মা'কে জিজ্ঞেস করলাম, মা আপনার ছেলে নাস্তা করেছে? উত্তর এলো 'না'। আরো বললো ওকে সকাল থেকে উনি দেখেননি। তাকে কল করার জন্য রুমে গেলাম। রুমে গিয়ে দেখি ফোন বিছানায় পড়ে আছে।
দুপুরের খাবারের সময় বাসায় এসেছে। ওকে দেখে বন্ধ হয়ে যাওয়া দমে পানি এলো। সবাই সহ একসাথে বসে ভাত খাচ্ছিলাম। ইচ্ছে করছিলো তার সামনে দৌড়ে গিয়ে দাঁড়াই।
ফ্রেশ হয়ে খেতে বসে জুনাইদ বললো, মা আমরা একটু পর ও বাড়ি যাবো। বাবার বাড়ি যাওয়ার কথা শুনেও মনে উচ্ছাস জমলো না। কেনো যেনো যেতে ইচ্ছে করছিলা। রুমে এসে থম ধরে বসে রইলাম। খেয়ে এসে তৈরি হওয়ার জন্য আমাকে তাড়া দিতে লাগলো। স্থির চোখে তার দিকে তাকিয়ে বললাম, আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলো। সঙ্গে সঙ্গে ও আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বললো দ্রুত করো। কিন্তু তার মুখে সেই চিরচেনা হাসি নেই, কেমন যেনো ফেকাসে দেখাচ্ছে। উত্তরে বললাম, বিয়ের পরের দিন যাওয়ার নিয়ম নেই, তিনদিন হলে যেতে হয়। ধুরো, তুমি আছো মুরব্বিদের যুগে। বোরকা পরে নাও তো।
আমার কেনো যেনো বুকের ভেতর ফেটে যাচ্ছে। ইচ্ছে করছে ওর বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ফুঁপিয়ে কান্না করি। কান্নার জলে তার শার্ট ভিজিয়ে দেই। কিন্তু তার সরে সরে থাকা'তে নিজেকে এগিয়ে নিতে পারলাম না।
শেষ বিকেলে রক্ত রাঙা সূর্যকে সাক্ষী রেখে জুনাইদ আমাকে চিরদিনের জন্য বাবার বাড়ি রেখে গেলো। যা আমার কল্পনায়ও ছিলো না। আমাকে রেখে বাজার যাওয়ার অযুহাতে সে আমার জীবন থেকে চলে গেলো।
রাতে এলো না, ফোনে কল যাচ্ছে না। শ্বাশুড়ি'কে ফোন দিয়েও কোন খাবর ফেলাম না। পরের দিন সে নিজ থেকে বড় দুলাভাই'কে ফোন দেয়। তার না কি আমাকে পছন্দ হচ্ছে না। আমি কালো। দুলাভাই বললো, বিয়ের আগে তিনদিন এসে দেখে গেলেন; সেই তিনদিন কালো দেখেননি?
দেখিনি তখন, তখন তো তাকে বিশ্ব সেরা রূপবতী মনে হয়েছে। এখন সোজা কথা তার সাথে আমি সারাজীবন সংসার করতে পারবো না। দুলাভাই রেগে খুব গালাগালি করলেন।
তাকে ছাড়া এক সপ্তাহ কেটে গেলো। তার একটাই কথা সে আমাকে নিবে না, নিবেই না। আমার একটাই দোষ, আমি কালো। তার পরিবারের লোকেরাও অনেক বুঝিয়েছে, কিন্তু সে তার কথায় অটল। এবার তাকে জেল ফাঁসি যা-ই দেওয়া হোক, সে তাই মেনে নিবে; শুধু আমাকে ছাড়া।
আমার পরিবারের লোকেরা অপমানিত হয়ে ক্ষেপে গেলো। হয়ে গেলো আমাদের বিচ্ছেদ। বিচ্ছেদের দিন শুধু একটি কথা-ই বলেছি 'জীবনে যখন থাকবেই না, তাহলে ভালোবাসতে শিখিয়েছিলে কেনো'? তাকে আরো অনেক কথা বলার ছিলো। কিন্তু এই একটা প্রশ্নের উত্তর'ই তো সে দিতে পারলো না। সেদিন নিজেকে শক্ত রেখেছি। চোখের জল লোকচক্ষু'তে পড়তে দেইনি। কিন্তু তারপর থেকে আর পারিনি নিজেকে শক্ত রাখতে। এক রুমের বাসিন্দা হয়ে গেলাম। রুমের বাহিরে শব্দ না যাওয়ার মতো করে হাউমাউ করে কেঁদেছি। পরিবারের লোকেরা আমার ভালোথাকার জন্য এখানে সেখানে ঘুরতে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সে ভেতর থেকে নড়ছেনা। ঠায় বসে আছে হৃদয়ের মাঝ বরাবর। বসে বসে ছুরি দিয়ে খোঁচাচ্ছে আর হাসছে!
ছয় মাস সুস্থ মানুষ ছিলাম৷ এর পর আমার নাম হয়েছে 'মেয়েটি পা*গল'।
©রোকসানা আক্তার আলো*
( বিঃদ্রঃ:- এই গল্পটি সত্য ঘটনা অবলম্বনে লেখা। মেয়েটি এখন ঢাকার কোন এক সুনামধন্য মানসিক হাসপাতালে আছে।
পুরুষদের বলি; বিয়ের আগে দশবার নয়, একশত বার দেখবেন।
আমার ঘরের সামনে একই রকম একটা ঘটনা আছে। সেইম কেচ্ছা, বিয়ের আগে দেখে গিয়ে সেই পাগল। বিয়ের পরও সেই লেভেলের বউ ভক্ত। দুইবছর কেটে যায়, একটা ছেলে হয়। এরপর পুরুষটির চোখ খুলে তার বউ কালো। অথচ জন্ম থেকে মেয়েটি কালো। বরং এখন বাচ্চা হওয়ার পর আমার মনে হচ্ছে মেয়েটি শ্যামলা থেকে ফর্সা হয়ে গেছে!)
১৯৫৬ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনে ছিলো, একটা ছেলে যদি একজন মেয়ের সাথে কথা বলতে চায়, তবে তাকে প্রক্টর বরাবর দরখাস্ত করে অনুমতি নিতে হবে। প্রক্টর অনুমতি দিলেই সে কথা বলতে পারবে, নইলে নয়। এমনকি তার নিজের ক্লাসের কোন মেয়ের সাথেও না। ব্যতিক্রম ঘটলেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার সহ কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা।
১৯২৭ সালের ডিসেম্বর মাসের ঘটনা, তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৬ বছর চলছিল।
একদিন কোলকাতা থেকে একজন যুবক ঢাকায় এলেন এবং কয়েকজন বন্ধু বান্ধব নিয়ে তিনি ঘুরতে বের হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরে দেখবেন বলে।
ঘুরতে ঘুরতে কার্জন হলের সামনে এসে পড়লে সেই যুবক দেখলেন , দূরে একটা থ্রী কোয়ার্টার হাতার ব্লাউজ আর সুতির শাড়ি পরা একটি সুন্দরী মেয়ে দাঁড়িয়ে আছে। তিনি তাঁর বন্ধুদের জিজ্ঞেস করলেন, মেয়েটি কে? উত্তরে বন্ধুরা জানালেন, মেয়েটি হলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলিম ছাত্রী। আগত যুবকটি বললেন, সত্যি? আমি এই মেয়ের সাথে কথা বলব। সেই যুবক মেয়েটির সাথে কথা বলার জন্য একটু এগিয়ে গেলে, তাঁর বন্ধুরা তাকে বাঁধা দিয়ে বলেন, না তুমি যেওনা। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে মেয়েদের সাথে কথা বলতে চাইলে অনুমতি নিতে হয়। তুমি ওর সাথে অনুমতি ছাড়া কথা বললে, তোমার কঠিন শাস্তি হবে। সেই যুবক বললেন, "আমি মানি নাকো কোন বাঁধা, মানি নাকো কোন আইন," এই বলেই তিনি হেঁটে হেঁটে গিয়ে মেয়েটির সামনে দাঁড়ালেন। মেয়েটিকে বললেন, আমি শুনেছি আপনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলিম ছাত্রী। কি নাম আপনার? মেয়েটি মাথা নিচু করে উত্তর দিলেন, ফজিলাতুন্নেছা। যুবক জিজ্ঞাসা করলেন, কোন সাবজেক্টে পড়েন? উত্তর এলো, গণিতে। গ্রামের বাড়ি কোথায়? টাঙ্গাইলের করটিয়া। ঢাকায় থাকছেন কোথায়? সিদ্দিকবাজার। এবার যুবক বললেন, আপনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলিম ছাত্রী, আপনার সাথে কথা বলতে পেরে আমি খুবই আপ্লুত হয়েছি। আজ সন্ধ্যায় আমি আপনার সাথে দেখা করতে আসবো।
মেয়েটি তৎক্ষণাৎ চলে গেলেন। দূরে দাঁড়িয়ে এসিস্ট্যান্ট প্রক্টর এসব দেখছিলেন। এই ঘটনার তিনদিন পর, ২৯ ডিসেম্বর ১৯২৭ সাল, কলা ভবন আর বিজ্ঞান ভবনের নোটিশ বোর্ডে হাতে লেখা বিজ্ঞপ্তি টাঙ্গিয়ে দেয়া হলো, ঐ যুবকের নামে। তার নাম লেখা হলো, তার বাবার নাম লেখা হলো এবং বিজ্ঞপ্তিতে বলা হলো, এই যুবকের আজীবনের জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হলো।
এই ঘটনার পর ঐ যুবক আর কোনদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসেননি। বৃদ্ধ বয়সে ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট তিনি মৃত্যুবরণ করলেন। যে যুবকটা আর কোনদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেননি, অথচ তার মৃত্যুর পর রাষ্ট্রিয় মর্যাদায় কবর দেয়া হলো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় মসজিদ সংলগ্ন স্থানে।
সেদিনের সেই ঝাঁকড়া চুলের বাঁধভাঙা সাহসী যুবক আর অন্য কেউ নয়, আমাদের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম।
আর সেদিনের সেই মেয়েটি ছিলেন ফজিলাতুন্নেসা জোহা। কবি কাজী নজরুল ইসলাম তাঁকে নিয়ে 'বর্ষা বিদায়' কবিতা রচনা করেন। ফজিলাতুন্নেসা ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম মুসলিম ছাত্রী।
(সোশ্যাল মিডিয়ায় পাওয়া)
Click here to claim your Sponsored Listing.