Our Global TV Business & Trade

Our Global TV Business & Trade

Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from Our Global TV Business & Trade, Media/News Company, .

Photos from Our Global TV Business & Trade's post 12/06/2022

JCX Business Tower

23/05/2021
14/05/2021

Eid Mubarak

19/04/2021

Some 38 government and private sector agencies yesterday signed a memorandum of understanding to speed up the process of clearing imported and exportable goods under a National Single Window (NSW).

The electronic gateway will allow businesses to submit information related to imports and exports to regulatory authorities only once to clear their goods from the ports.

The single entry point will deliver a user-friendly, electronic system that streamlines and automates procedures for international trade-related permits, licences, certificates and customs declarations, said the National Board of Revenue (NBR).

Once fully introduced, the NSW, which will connect the 38 agencies electronically, will benefit 319,000 Bangladeshi traders by cutting time and cost.

The average processing time for imports is expected to come down to 122 hours and the average processing time for exports to 88 hours.

“This is potentially a significant and vital step to facilitate trade,” said Finance Minister AMA Muhith at the MoU signing ceremony at the Pan Pacific Sonargaon Hotel in Dhaka.

“Implementation of the NSW will be beneficial for businesses,” said Commerce Minister Tofail Ahmed.

The government has undertaken the NSW scheme at $74 million with funds from the International Finance Corporation (IFC) and the UK's DFID. The customs authority will be the lead agency to implement the electronic gateway.

The NSW came at a time when Bangladesh scored 34.9 in the “Distance to Frontier” indicator in the Doing Business Index 2018, far below the South Asian regional average of 57.8 and behind countries such as Sri Lanka, India and Pakistan.

The measurement is based on a scale from 0 to 100, where 0 represents the lowest performance and 100 represents the highest performance.

Estimates suggested that modern customs and border clearance procedure can reduce the cost of trading for the lower middle-income countries such as Bangladesh, said Khondaker Muhammad Aminur Rahman, a member for customs audit, modernisation and international trade of the NBR.

Md Shafiul Islam Mohiuddin, president of the Federation of Bangladesh Chambers of Commerce and Industry, said, “As I understand, we will get a relief from submitting multiple documents thanks to the introduction of the NSW.”

“We look forward to its speedy and effective implementation,” he said. NBR Chairman Md Mosharraf Hossain Bhuiyan also spoke. The NBR and the IFC jointly organised the event.

19/04/2021

Nilufar Alam Poppy ceo and founder Active Communication

19/04/2021

স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশ পুনর্গঠনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান

১২ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শাসনভার গ্রহণের পর দেশ পুনর্গঠনে মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁর এই স্বদেশ নির্মাণের কর্মযজ্ঞ নিচে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলোঃ

ক. সংবিধান প্রণয়ন : বঙ্গবন্ধু উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন যে স্বাধীন দেশের জন্য একটি সুন্দর সংবিধান প্রয়োজন। যার মাধ্যমে দেশে আইনের শাসনের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা ও আনুগত্য পুনরায় প্রতিষ্ঠা সম্ভবপর হবে। স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের জন্য সংবিধান প্রণয়নের লক্ষ্যে ১১.০১.১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু 'শাসনতন্ত্র আদেশ '৭২ জারি করেন। ২৩ মার্চ সংবিধান রচনার উদ্দেশ্যে জারি করেন গণপরিষদ আদেশ। নির্বাচনের পর ১৬.১২.৭২ তারিখে মাত্র ১১ মাসের মধ্যে সংবিধান প্রণয়ন করতে সক্ষম হন। এই শাসনতন্ত্রের মূল স্তম্ভ ছিল জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতা।

খ. জাতীয়করণ কর্মসূচি : ১৯৭০ সালের নির্বাচনের ইশতেহারে বঙ্গবন্ধু সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি প্রবর্তনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। এছাড়া ১৯৬৯ সালে ছাত্রদের ১১ দফা দাবির ৫ নং দাবিতে পাট, বস্ত্র, চিনিকল ও ব্যাংক বীমা প্রতিষ্ঠানসমূহের সম্মতি জ্ঞাপন করেন। সেই প্রেক্ষাপটে ১৯৭২ সালের ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের মাধ্যমে প্রদত্ত ভাষণে জাতীয়করণ কর্মসূচি ঘোষণা করেন। জাতীয়করণ নীতি সফল করতে সরকার ব্যাংক, জীবন ও সাধারণ বীমা, পাট-বস্ত্ৰ-চিনি শিল্পসহ পরিত্যক্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ বিমান ও জাহাজ কর্পোরেশন প্রভৃতিকে চিহ্নিত করা হয়। অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে নিয়ে উল্লেখিত প্রতিষ্ঠানসমূহ জাতীয়করণের আওতায় আনেন।

১. ব্যাংকসমূহ (বিদেশি ব্যাংকের শাখা বাদে)

২. সাধারণ ও জীবন বীমা (বিদেশি বীমাগুলার শাখাসমূহ বাদে)

৩. সকল চটকল

৪. সকল বস্ত্র ও সুতাকল

৫. সকল চিনিকল

৬. অভ্যন্তরীণ ও উপকূলীয় বিনিয়োগের বৃহদাংশ

৭. ১৫ লক্ষ টাকা মূল্যের ও তদূর্ধ্ব সকল পরিত্যক্ত ও অনুপস্থিত মালিকানাভুক্ত সম্পত্তি

৮. বাংলাদেশ বিমান ও শিপিং কর্পোরেশনকে সরকারি সংস্থা হিসেবে স্থাপন করা হয়েছে

৯. সমগ্র বহির্বাণিজ্যকে রাষ্ট্রীয়করণের মাধ্যমে বাংলাদেশের নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে।

গ. কৃষি ক্ষেত্রে পদক্ষেপ : জন্মের সময় বাংলাদেশ একটি কৃষিপ্রধান দেশ ছিল। দেশের শতকরা ৮৫ জনই কোনো না কোনোভাবে কৃষির সঙ্গে জড়িত ছিল। দেশের রাজস্ব আয়ের বড় অংশ আসত কৃষি থেকে। কৃষক সমাজের দুর্দশা দূর করে চাষিদের স্বল্পমেয়াদি সাহায্য দানের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ২৫ বিঘা পর্যন্ত জমির খাজনা তিনি মওকুফ করেন। সারা বছর ধরে সেচের কাজ চালানো, উন্নতমানের বীজ বপন, সার, কীটনাশক, ওষুধ এবং প্রতিটি চাষিকে পর্যাপ্ত ঋণদানের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন বঙ্গবন্ধু সরকার। কৃষকদের মধ্যে ১ লক্ষ ৫০ হাজার গাভী ও ৩০ কোটি টাকার কৃষিঋণ বিতরণ করা হয়। তামাদি ঋণ বাবদ ১০ কোটি টাকা রিলিফ হিসেবে বিতরণ করা হয়। লবণের ওপর থেকে কর তুলে নেয়া হয়। সরকারিভাবে খাদ্য মজুদের লক্ষ্যে ১৯৭২ সালে ১০০টি খাদ্যগুদাম তৈরি করা হয়। কৃষকদের উদ্বুদ্ধকরণের জন্য জাতীয় পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়। ভূমিহীন ও স্বল্প জমির অধিকারী চাষিদের মাঝে ঋণ দানের ব্যবস্থা করা হয়। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পকে বেকার সমস্যা সমাধানের উপযোগী করে গড়ে তোলা হয়।

ঘ. অর্থনৈতিক সংস্কার : ১৯৪৭ সাল থেকেই বঙ্গবন্ধুর রাজনীতির অন্যতম লক্ষ্য ছিল পূর্ব বাংলাকে অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী করা। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য নিরসনে আন্দোলন-সংগ্রাম অব্যাহত রেখেছেন। ১৯৬৬ সালে ৬ দফা কর্মসূচিতে বঙ্গবন্ধু এই বৈষম্যের সুনির্দিষ্ট রূপরেখা তুলে ধরেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করার লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু প্রথমে পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। ১৯৭৩-৭৮ সাল পর্যন্ত প্রথম পাঁচসালা পরিকল্পনার সময় নির্ধারণ করা হয়। প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় জনসাধারণকে বিশেষ করে রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের সমাজতান্ত্রিক আদর্শের ধ্যানধারণায় উদ্বুদ্ধ হওয়ার বিষয়ে জোর দেয়া হয়।

কৃষিপ্রধান বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিবর্তন ও সমাজ ব্যবস্থাতেও কৃষি অনাদিকাল ধরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। কৃষির উন্নতির জন্য বঙ্গবন্ধু গ্রাম-প্রকল্প প্রণয়ন করেছিলেন। গ্রাম-প্রকল্পে চারটি মূলনীতি রাখা হয়েছিল। যথা- উৎপাদন বৃদ্ধি, সুষম বণ্টন, কর্মসংস্থান ও গ্রামের সামগ্রিক উন্নয়ন। এই প্রকল্পের অধীনে ২৯৯ থেকে ৫০০ একর পর্যন্ত ভূমি নিয়ে একটি গ্রাম সমবায় সমিতির গঠনের প্রস্তাব রাখা হয়েছিল। সমিতি চাষাবাদ বৃদ্ধির জন্য সরকার কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করে। পদক্ষেপসমূহ:

ক. সমিতির খামারবাড়ির জন্য গুদাম, গােলাঘর ও মাড়াই উঠান ইত্যাদির জন্য অর্থ অনুদান প্রদান।

খ. সমিতির প্রয়োজনীয় কৃষি উপকরণের সরবরাহ এবং সংরক্ষণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা ও প্রয়োজনবোধে ঋণের ব্যবস্থা করা।

গ. দক্ষ ব্যবস্থাপনার জন্য উপযুক্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মী নিয়োজিত করা।

গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নতির লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু সমন্বিত পল্লী উন্নয়ন কর্মসূচি IRDP এর ওপর গুরুত্বারোপ করেন এবং বগুড়ায় পল্লী উন্নয়ন একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। বঙ্গবন্ধু অর্থনীতির ক্ষেত্রে গতিশীলতা আনয়নের লক্ষ্যে শিল্প ঋণ সংস্থা ও বাংলাদেশ শিল্প ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। এ সময় তিনি কৃষি ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। কৃষি ব্যাংকের ৩৩৫টি শাখা স্থাপন করেন। এছাড়া বিভিন্ন ব্যাংকের ১০৫০টি শাখা দেশের বিভিন্ন স্থানে স্থাপন করেন। সে সময় ঘোড়াশাল সার কারখানা, আশুগঞ্জ কারখানার কাজ, নতুন শিল্প ও কারখানা চালু এবং পুরানো শিল্প কারখানা চালুর উদ্যোগ নেয়া হয়। কিন্তু ১৯৭৩ সালে বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়ে যায়। ফলে তেলের ওপর নির্ভরশীল শিল্পায়িত দেশসমূহ তাদের উৎপাদিত জিনিসপত্রের দাম বাড়িয়ে দেয়। এমতাবস্থায় বাংলাদেশকে উচ্চ মূল্যে দ্রব্য আমদানি করতে হয়। সেই সঙ্গে দেশের অভ্যন্তরেও জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যায়। এমতাবস্থায় বাংলাদেশে দেখা দেয় অনাবৃষ্টি ও প্রাকৃতিক বৈরিতা। ফলে দেশের কৃষি অর্থনীতি অনেকটা নাজুক পরিস্থিতির মধ্যে নিমজ্জিত হয়। এত বৈরী পরিবেশ সত্ত্বেও সরকার সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্রের অর্থনীতির গতিশীলতা রাখতে সচেষ্ট ছিল।

ঙ. যোগাযোগ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে পদক্ষেপ : মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশে সড়ক, রেল ও নৌ যোগাযোগ প্রায় সম্পূর্ণরূপে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। ধ্বংসপ্রাপ্ত সকল সড়ক সেতু পুনর্নির্মাণ করা হয়। ৯৭টি সড়ক সেতু নির্মাণ করা হয়। বর্তমানে যমুনা নদীর (টাঙ্গাইল-সিরাজগঞ্জ) ওপর যে বঙ্গবন্ধু সেতু রয়েছে তা ১৯৭৪ সালের ৪ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু সরকার সেতুর সপ্তাব্যতা রিপোর্ট প্রণয়ন করে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ধ্বংসপ্রাপ্ত রেলওয়ের বিভিন্ন ব্রিজসহ ভৈরব সেতু এই সরকার মেরামত করে চলার উপযোগী করে। তাছাড়া নির্মাণাধীন রেলসেতুগুলো ১৯৭৩ সালের মধ্যে কাজ সম্পন্ন হয়। বঙ্গবন্ধুর সময় ঢাকা- চট্টগ্রাম সরাসরি রেল যোগাযোগ চালু হয়।

বঙ্গবন্ধুর আমলে শিপিং কর্পোরেশন চালু হয়। খাদ্য ও মালামাল পরিবহনের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ নৌকা ও কার্গো তৈরি করা হয়। ১৯৭৪ সালের মধ্যে ১৪টি সমুদ্রগামী জাহাজ সংগ্রহ করা হয়। তাছাড়া নদীতে সারা বছর নাব্যতা ধরে রাখার জন্য নদী খনন কার্যক্রম সে সময় করা হয়। বঙ্গবন্ধুর সময় ১৯৭২ সালেই দেশের অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান যোগাযোগ চালু হয়। এ সময় তেজগাঁও ও যশোর বিমানবন্দর চালু হয়। ১৯৭৩ সালের ১৮ জুন ঢাকা-লন্ডন আন্তর্জাতিক রুটে বিশ্বমানের প্রথম ফ্লাইট চালু হয়। বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে কুর্মিটোলা আন্তর্জাতিক (বর্তমানে হযরত শাহজালাল বিমানবন্দর) বিমানবন্দরের কাজ শুরু হয়।

যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশের বিদ্যুতের ভগ্নদশা ছিল। দেশের বিভিন্ন স্থানে বিদ্যুৎ লাইন ও পোলগুলো বিনষ্ট হয়েছিল। বঙ্গবন্ধুর সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদন ও বিতরণের ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জন করে। বিদ্যুৎ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত পদক্ষেপগুলো বঙ্গবন্ধু সরকার গ্রহণ করে :

ক. ১৫০০ কিলোমিটার নতুন বিদ্যুৎ লাইন স্থাপন।

খ. ৪০০ ধ্বংসপ্রাপ্ত সাব স্টেশন পুনর্নির্মাণ।

গ. ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বাড়িয়ে ১৯৭২ সালের ডিসেম্বর মাসে ৫০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করা।

ঘ. খুলনা-রাজশাহী ও সিদ্ধিরগঞ্জে পাওয়ার স্টেশন পুনঃসংস্কার।

ঙ. ৫ হাজার বিদ্যুৎ পোল সরবরাহ।

চ. শিক্ষা ক্ষেত্রে পদক্ষেপ : ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকে পূর্ব পাকিস্তানের স্কুল-কলেজের সংখ্যা হ্রাস পেতে থাকে। সে সময় বঙ্গবন্ধু ছাত্রদের নিয়ে আন্দোলন গড়ে তোলেন। বিশেষ করে ১৯৬২-৬৪ সাল পর্যন্ত ছাত্র আন্দোলনে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগ ছাত্রদের উজ্জীবিত ও অনুপ্রেরণা জোগাত। উল্লেখ্য, তখন পাকিস্তানে রাজনীতি ও রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ছিল। ১৯৭০ সালের নির্বাচনের পূর্বেও তিনি ছাত্রদের ১১ দফায় শিক্ষার প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। স্বাধীন বাংলাদেশের সংবিধানে ১৭ নং অনুচ্ছেদে সার্বজনীন শিক্ষার কথা বলা হয়। ১৯৭২ সালের ১৫ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধু সরকার এক ঘোষণায় যুদ্ধকালীন ৯ মাসের (মার্চ-ডিসেম্বর) সব শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের বেতন মওকুফ করে। একই সঙ্গে শিক্ষকদের ৯ মাসের বেতন পরিশোধ করা হয়। ২০ জানুয়ারি (১৯৭২) শিক্ষামন্ত্রী ইউসুফ আলী শিক্ষা ব্যবস্থা পুনর্গঠনের লক্ষ্যে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা দেন। এ সময় পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত বিনা মূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করা হয়। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম বাজেটে প্রতিরক্ষা খাতের চেয়ে শিক্ষা খাতে ৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা বেশি বরাদ্দ দেয়া হয়। সে সময় মাদ্রাসা শিক্ষার জন্য ১.২৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়।

১৯৭২ সালে ২৬ জুলাই বঙ্গবন্ধু ড. মুহাম্মদ কুদরত-এ-খুদাকে সভাপতি করে একটি শিক্ষা কমিশন গঠন করেন। এই শিক্ষা কমিশনের ফলে শিক্ষা ক্ষেত্রে আমুল পরিবর্তন সাধিত হয়। এই কমিশনের অর্ডিন্যান্সের ফলে ১৯৭৩ সালে বিশ্ববিদ্যালয় স্বায়ত্তশাসন লাভ করে। ফলে স্বাধীন চিন্তা ও মুক্তবুদ্ধি চর্চার পথ সুগম হয়। বঙ্গবন্ধু ৩৬,১৬৫টি প্রাথমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ১,৫৭,৭৪২ জন শিক্ষকের চাকরি জাতীয়করণ করেন। এ সময় প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজ মিলিয়ে ১ হাজার ৩০০ শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়। সে সময় নতুন শিক্ষা বোর্ড গঠন করা হয়। একই সঙ্গে ৯০০ কলেজ তবন ও ৪০০ হাই স্কুল পুনর্নির্মাণ করা হয়। বঙ্গবন্ধু সরকার জাতিসংঘের সহায়তায় ৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকার পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করে। প্রচলন করেন সদ্য স্বাধীন দেশে গণমুখী ও সার্বজনীন শিক্ষা ব্যবস্থার।

ছ. খাদ্য ঘাটতি পূরণে পদক্ষেপ : মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে কৃষি ও শিল্প খাতে উৎপাদন ব্যাপকভাবে ব্যাহত হয়। ফলে ১৯৭২ সালে অনাবৃষ্টি এবং বিধ্বস্ত শিল্প ও কৃষি ব্যবস্থাকে পুনরায় সক্রিয় করে তোলার জন্য উৎপাদন ব্যবস্থা ব্যাহত হয়। ফলে এ সময় দেশে খাদ্যদ্রব্যে অপ্রতুলতা দেখা দেয়াটা অস্বাভাবিক ছিল না। সে সময় বঙ্গবন্ধু সরকার খাদ্য সমস্যা দূরীকরণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। এ সময় আমদানি করা হয় ২৭ লক্ষ টন খাদ্যশস্য। ঐ সময় প্রায় ২৩,১০,৭২১ টন খাদ্য বন্টন করা হয়। রেশনে প্রায় ৯৫ জনকে খাদ্য সরবরাহ করা হয়। ১৯৭২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ৩,০০,০০০ টন খাদ্য সরবরাহ করা হয়। এতসব উদ্যোগ সত্ত্বেও দেশি-বিদেশি চক্রান্ত, মজুদদার, মুনাফাখোর, অসাধু চোরাচালানি গোষ্ঠীর কারসাজি এবং পাকিস্তানপন্থী আমলা ও অন্যান্য গোষ্ঠীর অসহযোগিতার কারণে বঙ্গবন্ধু গৃহীত পরিকল্পনা নানাভাবে বিঘ্নিত হয়।

জ. ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম : মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানি হানাদারদের অত্যাচারে লক্ষ লক্ষ নর-নারী বাস্তুহারা হয়। প্রায় অর্ধকোটি বাড়িঘর আগুনে ভস্মীভূত করা হয়। তখন সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের লোকদের বাড়িঘর ভাংচুর ও ভস্মীভূত করা হয়। প্রায় ১ কোটি মানুষ শরণার্থী হয়ে ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করে। দেশ স্বাধীন হবার পর বঙ্গবন্ধু সরকারের জন্য অন্যতম বড় চ্যালেঞ্জ ছিল প্রাণ ও পুনর্বাসন সুষ্ঠভাবে সম্পাদন করা। বঙ্গবন্ধু সরকার বাস্তুহারাদের পুনর্বাসনের জন্য ১৯,০৮,৭২,০০০ টাকা, ১,৪১,৮১,৮৮৫ মণ খাদ্যশস্য ও পুনর্বাসন কাজের জন্য ২৫,৫৪,৭৮৯ টাকা ব্যয় করা হয়। এছাড়া প্রাথমিক পুনর্বাসন কাজেও ২৫,৬৯,৩০,০০০ টাকা ব্যয় করা হয়। সে সময় ক্ষতিগ্রস্তদের বাসগৃহ নির্মাণ করা হয়েছে ৯,০০,০০০টি এবং সমস্ত ভস্মীভূত ঘরবাড়ি পুনর্নির্মাণ করা হয়।

এ সময় বাংলাদেশ অনুদান এবং ত্রাণ ও পুনর্বাসনের জন্য প্রায় ১০০ কোটি ডলার (বর্তমান হিসাবে প্রায় ৩০০০ কোটি টাকা) মূল্যের সাহায্য লাভ করে। এই কমিটিগুলোর মাধ্যমে সারাদেশে ত্রাণসামগ্রী বিতরণ করা হয়। কর্মীদের মধ্যে উৎসাহ এবং নেতৃত্ব প্রদানের অভাব না থাকলে রাজনৈতিক সংগঠনের মাধ্যমে এই সুবিশাল কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা খুব একটা খারাপ পরিকল্পনা ছিল না। এভাবে আমলাতান্ত্রিক প্রশাসনযন্ত্রের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ হিসেবে জাতি পুনর্গঠনের প্রথম ধাপেই এ ধরনের কমিটি গঠনের পদক্ষেপ সরকারি কর্মকাণ্ড পরিচালনায় রাজনৈতিক এলিটদের প্রাধান্য প্রতিফলিত করে।

ঝ. নারীদের কল্যাণে গৃহীত ব্যবস্থা : বঙ্গবন্ধুর সরকার ছিল নারীদের সমঅধিকারে বিশ্বাসী। নারী শিক্ষা ও তাদের অধিকারের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি বঙ্গবন্ধু হাতে নেন। ১৯৭২ সালে তিনি নারী পুনর্বাসন বোর্ড প্রতিষ্ঠিত করেন। চাকরির ক্ষেত্রে নারীদের জন্য ১০ ভাগ কোটা সংরক্ষণের ব্যবস্থা করেন। নারীদের রাষ্ট্রের মূলধারার কাজে সম্পৃক্ত করার লক্ষ্যে বদরুন্নেসা আহমেদ ও নূরজাহান মুরশিদকে মন্ত্রিসভায় অন্তর্ভুক্ত করেন। ড. নীলিমা ইব্রাহিমকে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেন।

ঞ. জনস্বাস্থ্যে পদক্ষেপ : স্বাস্থ্য সম্পর্কে দেশের অধিকাংশ অসচেতন পরিবারদের স্বাস্থ্যসেবায় বঙ্গবন্ধু সরকার পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। দেশ স্বাধীনের পর ৭,৪৮২ জন ডাক্তার, ৮২১ জন নার্স ও ১০৯২ জন ধাত্রী নিয়োগ করা হয়। পাকিস্তান আমলে পূর্ব বাংলায় যেখানে হাসপাতালে ৮,৫৪৯টি শয্যা ছিল, সেখানে স্বাধীন হবার পর ১২,৬০৬টি শয্যায় উন্নীত করা হয়। এ সময় কলেরা-বসন্তের প্রতিষেধক টিকা ৪,৩২,৩৭,০২০ জনকে দেয়া হয়। এ সরকার সে সময় স্বাস্থ্য উন্নয়ন খাতে ১১,৯৫,৬৭,০০০ টাকা ব্যয় করে।

ট. মুক্তিযোদ্ধাদের পুনর্বাসন : মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়ে যারা দেশকে স্বাধীন করেছেন অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তাদের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। শহীদ ও আহত মুক্তিযোদ্ধা পরিবারকে রাষ্ট্র কর্তৃক সাহায্যের ব্যবস্থা করা হয়। যে সকল ছাত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল তাদের পড়ালেখার জন্য রাষ্ট্র তাদের সহায়তা করে। তাছাড়া প্রাপ্তবয়স্ক মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত করার ব্যবস্থা বঙ্গবন্ধু সরকার করে। ২৪ জানুয়ারি (১৯৭২) টাঙ্গাইলে অস্ত্র আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু মুক্তিযোদ্ধাদের নিকট থাকা অস্ত্র সমর্পণের জন্য আহ্বান জানান। সেই অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্দেশ্যে বলেন, আগামী তিন বছর আমি তোমাদের কিছু দিতে পারব না। তিন বছর নতুন যুদ্ধ চলবে। সেই যুদ্ধ দেশ গড়ার যুদ্ধ। অস্ত্র হবে লাঙল আর কোদাল। এছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে সংস্কারকাজে মুক্তিযোদ্ধাদের স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজে লাগান।



ঠ. সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ক্ষেত্রে গৃহীত পদক্ষেপ : সদ্য স্বাধীন রাষ্ট্রে অন্যান্য ক্ষেত্রের ন্যায় বঙ্গবন্ধু সাহিত্য-সংস্কৃতি এবং সামাজিক ও ক্রীড়া ক্ষেত্রেও বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। স্বাধীন দেশের যুব সম্প্রদায়ের মধ্যে নৈতিকতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে ১৯৭২ সালের ১৫ জানুয়ারি সরকারি আদেশের মাধ্যমে মদ, জুয়া, হাউজি ও ঘোড়দৌড় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। বঙ্গবন্ধুর শাসনামলে ৯টি রাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক চুক্তি সম্পাদন করে। ঢাকার রামপুরায় অবস্থিত বাংলাদেশ টেলিভিশনের বর্তমান ভবনটি বঙ্গবন্ধু সরকারের আমলে কাজ শুরু হয়। সে সময় বঙ্গবন্ধু ঢাকায় শিল্পকলা একাডেমি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭২ সালে বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ভারতে অবস্থান করছিলেন। বঙ্গবন্ধু সরকার কাজী নজরুল ইসলামকে দেশে এনে জাতীয় কবির মর্যাদা দেন। বঙ্গবন্ধু সরকার সংস্কৃতি কর্মীদের জন্য বিভিন্ন আইন চালু করেন। সংস্কৃতিকর্মীদের কাজের পরিধির কথা চিন্তা করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তৈরি করেন। এছাড়া অসহায় ও দুস্থ শিশুদের জন্য ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু সমাজসেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেন। বঙ্গবন্ধু সরকার ক্রীড়া ক্ষেত্রে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। স্বাধীন বাংলায় ফুটবল দলের সদস্যদের তাঁর সরকার বিশেষভাবে সম্মানিত করেন। উল্লেখ্য মুক্তিযুদ্ধকালে স্বাধীন বাংলা ফুটবল দল মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনসচেতনতা ও অর্থ সংগ্রহে অসামান্য ভূমিকা রাখে। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু ক্রীড়া সেবী কল্যাণ ফাউন্ডেশন গঠিত হয়। বঙ্গবন্ধু সরকার দায়িত্ব নেয়ার পরপরই বাংলাদেশে ইসলাম ধর্মের প্রচার, প্রসার ও প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি স্থাপন করেন। যদিও আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ '৫০-এর দশক থেকেই এই দলটিকে ধর্মহীনতার অভিযোগে অভিযুক্ত করে। মুসলিম লীগ ও জামায়াতে ইসলামী রাজনৈতিকভাবে পর্যুদস্ত হয়ে মূলত আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায়। বঙ্গবন্ধু সব মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের পুনর্গঠন করেন। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম জমায়েত বিশ্ব ইজতেমা বর্তমানে ঢাকার টঙ্গীতে তুরাগ নদীর দুই পাড়ে অনুষ্ঠিত হয়। তাবলীগ জামায়েত এবং এই বিশ্ব ইজতেমার জায়গা সংরক্ষণে বঙ্গবন্ধু যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেন। ১৯৭৫ সালের ২০ মার্চ বঙ্গবন্ধু সরকার ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠার জন্য অধ্যাদেশ জারি করেন। এছাড়া হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ও অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের জন্য তিনি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

ড. মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিসৌধ সংরক্ষণ : ৩০ লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে এবং হাজারো ক্ষয়ক্ষতির মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। যার নেতৃত্ব দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু ও তার দল আওয়ামী লীগ। তাই বঙ্গবন্ধু সরকার গঠন করেই মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানানোর জন্য বিভিন্ন স্থানে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করেন। ১৯৭২ সালের ৯ মার্চ সাভার ও মেহেরপুরের মুজিবনগরে স্মৃতিসৌধ নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন করেন। ১৯৭২ সালের ১৬ ডিসেম্বর সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ১৯৭২ সালের ২২ ডিসেম্বর ঢাকার মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিস্তম্ভের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।

এছাড়া অল্প সময়ের মধ্যে বঙ্গবন্ধু সরকার আরো অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করে। উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপসমূহ:

১. খাদ্য সরবরাহের জন্য ২৬০০ রেশন ডিলার স্থাপন। ১৯৭০ সালে ছিল ৪০০ রেশন ডিলার।

২. রেশনে খাদ্যের ভর্তুকি দেয়া হয় শতকরা ৫০ থেকে ২৫ ভাগ।

৩. ঢাকা থেকে বিভিন্ন জেলা শহরে যোগাযোগের জন্য ধ্বংসপ্রাপ্ত ২৭৪টি পাকা ব্রিজের মধ্যে ২৩০টি সম্পূর্ণ নির্মাণ ও ৪৪টি আংশিক সংস্কার করা হয়। আরাে ৩৫টি নতুন কালভার্ট ও ছোট পাকা সেতু নির্মাণ করা হয়।

৪. ১৫১ মাইল হাইওয়ের ৮ মাইল নতুন করে এবং ১৩২ মাইল জরুরি ভিত্তিতে সংস্কার করা হয়।

৫. ৩০ মাইল রেললাইন সম্পূর্ণ নতুন পুনঃস্থাপন করা হয়।

৬. রেল ইঞ্জিন ও বগি মেরামত করে সচল করা হয়েছে যথাক্রমে ৩টি ও ৭০টি। ২টি রেল ইঞ্জিন এবং ৭৫টি বগি সংগ্রহ করা হয়।

৭. দূরপাল্লার জন্য ৭৫টি বাস সংগ্রহ করা হয়। অভ্যন্তরীণ রুটের জন্য ২০টি নতুন বাস নামানো হয়। ১০০টি নতুন বাস এক মাসের মধ্যেই সরবরাহের জন্য রিঅ্যাসেম্বল করা হয়।

৮. ৯৯টি খাদ্যশস্য বহনকারী ট্রাকের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

৯. বাস-ট্রাকের বডি সংযোজনের জন্য চট্টগ্রামে গান্ধারা ইউনিটকে প্রগতি নামে জরুরি ভিত্তিতে সচল করা হয়েছে।

১০. ২০ কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামে ও লালমনিরহাট রেল ওয়ার্কশপ পুনঃসংস্কার করা হয়।

১১. ৪০৩টি নতুন কার্গো ইঞ্জিন আমদানি করা হয়েছে, ১৩০টি কার্গো নদীতে নামানো হয়েছে। ৩০০ যাত্রীবাহী নতুন লঞ্চের ব্যবস্থা করা হয়েছে।

১২. ঢাকা-চট্টগ্রামের জন্য ৫টি বেক্রেশিং কোস্টার সংগ্রহ করা হয়েছে।

১৩. ৯টি নতুন শ্যালো অয়েল ট্যাংকার সংগ্রহ করা হয়েছে।

১৪. ১৮টি নতুন অয়েল ট্যাংক লরী সংগ্রহ করা হয়েছে।

১৫. ১৯৭টি অকেজো ভারী শিল্পপ্রতিষ্ঠান সংস্কার করে চালু করা হয়। এর

মধ্যে ৯০টি প্রতিষ্ঠানের শতকরা ৮০ ভাগই সংস্কার করার প্রয়োজন পড়ে। এতে ব্যয় হয় ৩ কোটি ডলার।

১৬. ২৩৭টি রাষ্ট্র মালিকানাধীন ভারী শিল্প কারখানার জন্য প্রয়োজন ছিল ১০ হাজার দক্ষ শ্রমিক (বিহারিরা শ্রমিক ছিল)। বিভিন্ন শিল্প কারখানায় ১৫ হাজার শ্রমিককে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।

১৭. কারখানা পুনরায় চালু করার জন্য ৩৪টি কোটি টাকার কাঁচামাল আমদানি করা হয়েছে।

১৮. উৎপাদিত দ্রব্য বাজারজাত করার জন্য ৫ কোটি টাকা ব্যায়ে বিভিন্ন সেল গঠন।

১৯. শ্রমিকদের পুনর্বাসনের জন্য ২৮ কোটি টাকা ব্যয়।

২০. ৯০০ কলেজ ভবন সংস্কার খরচ ১১ কোটি ২৫ হাজার টাকা, ধ্বংসপ্রাপ্ত ৪০০ হাইস্কুল পুনর্নির্মাণে ব্যয় করা হয়েছে ৩ কোটি টাকা (শতকরা ৬০ ভাগ সংস্কার ও ৪০ ভাগ পুনর্নির্মাণ)।

২১. শিক্ষকদের ৯ মাসের বকেয়া বেতন বাবদ প্রদান করা হয়েছে ৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা।

২২. জাতিসংঘের সহায়তায় ৬ কোটি ৩৫ লাখ টাকার পাঠ্যপুস্তক সরবরাহ করা হয়েছে (স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে রচিত)।

২৩. নতুন ৯ হাজার ৩০০ শিক্ষক নিয়োগ (প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও কলেজের শিক্ষক)।

২৪. প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারীকরণের পদক্ষেপ নেয়া হয়।

২৫. নতুন শিক্ষা বোর্ড গঠন।

২৬. ১৫০০ কিলোমিটার বিদ্যুৎ লাইন নতুন করে স্থাপনে খরচ পড়েছে ৩ কোটি টাকা।

২৭. কাপ্তাই-বিদ্যুৎ সংস্কার ২ কোটি ২৩ লাখ টাকা।

২৮. ৪০০ ধ্বংসপ্রাপ্ত সাবস্টেশন পুনর্নির্মাণে খরচ পড়েছে ৫ কোটি ৩২ লাখ টাকা। ১৯৭২ সালের নভেম্বরে সব কটি ধ্বংসপ্রাপ্ত সাবস্টেশন নির্মিত হয়ে যায়।

২৯. ২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বাড়িয়ে ১৯৭২ সালের ডিসেম্বরে ৫০০ মেগাওয়াটে উন্নীত করা হয়। সোভিয়েত রাশিয়ার সহযোগিতায় এ কাজ সম্পন্ন হয়।

৩০. খুলনা, রাজশাহী ও সিদ্ধিরগঞ্জের পাওয়ার স্টেশন পুনঃসংস্কারে ৮ কোটি টাকা ব্যয় করা হয়।

৩১. ৫ হাজার বিদ্যুৎ পুল সরবরাহ করা হয়।

৩২. বিহারিদের অনুপস্থিতিতে ৯ হাজার বিদ্যুৎ শ্রমিক নিয়োগ করা হয়।

৩৩. ঢাকাসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা শহরগুলোতে পানি সরবরাহের কাজ প্রায় নতুন করে শুরু করতে হয়। ঢাকায় ৯টি পানি সংরক্ষণ ও সরবরাহ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়। ব্যয় হয়েছে ২ কোটি ৭০ লাখ টাকা।

৩৪. শুধু ঢাকা শহরেই দেড় ইঞ্চি ও ২ ইঞ্চি ব্যাসের সরবরাহ লাইন (জি

আই পাইপ) স্থাপন করতে হয় ১১০০ কিলোমিটার। টঙ্গীন্যাশনাল টিউবস উৎপাদিত পাইপ ব্যবহার করা হয়েছিল।

৩৫. পানি সরবরাহ ক্ষেত্রে সারা দেশে ১৭০০ দক্ষ শ্রমিক কর্মচারী নিয়োগ করা হয়।

৩৬. ১৯৭৩ সালের মার্চ মাস পর্যন্ত চট্টগ্রাম এবং মোংলা বন্দর সম্পূর্ণ সচল করা হয়। মাইন মুক্ত করতে গিয়ে সোভিয়েত রাশিয়ার দুজন বিশেষজ্ঞ নিহত হন।

৩৭. বন্দর উন্নয়নের সাথে সাথে চট্টগ্রামে একটি মৎস্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র স্থাপন করা হয়।

৩৮. বন্দরের ক্রেনসহ আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি ও বন্দর অভ্যন্তরীণ পরিবহনের জন্য ব্যয় করা হয় ৪০ কোটি টাকা।

৩৯. এ বন্দর থেকে ৮০০ কোটি টাকার মাল বিদেশে রপ্তানি করা হয়।

৪০. সর্বমোট ৬টি পণ্যবাহী সামুদ্রিক জাহাজ ও একটি অয়েল ট্যাংকারের ব্যবস্থা করা হয়।

৪১. অভ্যন্তরীণ রুটে ঢাকা-চট্টগ্রাম প্রতিদিন ২টি, ঢাকা-সিলেট ২টি, ঢাকা-যশোর ২টি, ঢাকা-ঈশ্বরদী ১টি করে ফ্লাইট এবং ঢাকা-কলকাতা ফ্লাইট চালু করা হয়। আন্তর্জাতিক লাইনে একটি বোয়িং সংগ্রহ করা হয়।
ঢাকা তেজগাঁও বিমানবন্দর, চট্টগ্রাম, যশোর বিমানবন্দর পুনঃসংস্কার।

সূত্রঃ বঙ্গবন্ধুর শাসনামল- মো. আরিফুর রহমান

Photos from Our Global TV Business & Trade's post 19/04/2021

Videos (show all)

Eid Mubarak
Nilufar Alam Poppy ceo and founder Active Communication

Website