Nur Uddin Sagor

Nur Uddin Sagor

It's my official page

22/02/2022

খতিয়ান'' কি?
= ''সি এস খতিয়ান'' কি?
= ''এস এ খতিয়ান'' কি?
= ''আর এস খতিয়ান'' কি?
= ''বি এস খতিয়ান'' কি?
=“দলিল” কাকে বলে?
=“খানাপুরি” কাকে বলে?
= ''নামজারি'' কাকে বলে ?
=“তফসিল” কাকে বলে?
=“দাগ” নাম্বার/''কিত্তা'' কাকে বলে?
= “ছুটা দাগ” কাকে বলে?
= ''পর্চা'' কাকে বলে ?
= ''চিটা'' কাকে বলে ?
= ''দখলনামা'' কাকে বলে ?
= “খাজনা” ককে বলে?
= ''বয়নামা'' কাকে বলে ?
= ''জমাবন্দি'' কাকে বলে ?
= ''দাখিলা'' কাকে বলে ?
= ''DCR'' কাকে বলে ?
=“কবুলিয়ত” কাকে বলে ?
= “ফারায়েজ” কাকে বলে?
= “ওয়ারিশ” কাকে বলে?
= ''হুকুমনামা'' কাকে বলে ?
= ''জমা খারিজ'' কাকে বলে ?
= ''মৌজা'' কি/ কাকে বলে ?
= “আমিন” কাকে বলে?
= “কিস্তোয়ার” কাকে বলে?
= “সিকস্তি” কাকে বলে ?
= “পয়ন্তি” কাকে বলে?
''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''''
=খতিয়ানঃ
মৌজা ভিত্তিক এক বা একাধিক ভূমি মালিকের ভূ-সম্পত্তির বিবরণ সহ যে ভূমি রেকর্ড জরিপকালে প্রস্ত্তত করা হয় তাকে খতিয়ান বলে। এতে ভূমধ্যাধিকারীর নাম ও প্রজার নাম, জমির দাগ নং, পরিমাণ, প্রকৃতি, খাজনার হার ইত্যাদি লিপিবদ্ধ থাকে। আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরনের খতিয়ানের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। তন্মধ্যে সিএস, এসএ এবং আরএস উল্লেখযোগ্য। ভূমি জরিপকালে ভূমি মালিকের মালিকানা নিয়ে যে বিবরণ প্রস্তুত করা হয় তাকে “থতিয়ান” বলে। খতিয়ান প্রস্তত করা হয় মৌজা ভিত্তিক।
= সি এস খতিয়ানঃ
১৯১০-২০ সনের মধ্যে সরকারি আমিনগণ প্রতিটি ভূমিখণ্ড পরিমাপ করে উহার আয়তন, অবস্থান ও ব্যবহারের প্রকৃতি নির্দেশক মৌজা নকশা এবং প্রতিটি ভূমিখন্ডের মালিক দখলকারের বিররণ সংবলিত যে খতিয়ান তৈরি করেন সিএস খতিয়ান নামে পরিচিত।
=এস এ খতিয়ানঃ
১৯৫০ সালের জমিদারি অধিগ্রহণ ও প্রজাস্বত্ব আইন পাসের পর সরকার জমিদারি অধিগ্রহণ করেন। তৎপর সরকারি জরিপ কর্মচারীরা সরেজমিনে মাঠে না গিয়ে সিএস খতিয়ান সংশোধন করে যে খতিয়ান প্রস্তুত করেন তা এসএ খতিয়ান নামে পরিচিত। কোনো অঞ্চলে এ খতিয়ান আর এস খতিয়ান নামেও পরিচিত। বাংলা ১৩৬২ সালে এই খতিয়ান প্রস্তুত হয় বলে বেশির ভাগ মানুষের কাছে এসএ খতিয়ান ৬২র
খতিয়ান নামেও পরিচিত।
= আর এস খতিয়ানঃ
একবার জরিপ হওয়ার পর তাতে উল্লেখিত ভুলত্রুটি সংশোধনের জন্য পরবর্তীতে যে জরিপ করা হয় তা আরএস খতিয়ান নামে পরিচিত। দেখা যায় যে, এসএ জরিপের আলোকে প্রস্তুতকৃত খতিয়ান প্রস্তুতের সময় জরিপ কর্মচারীরা সরেজমিনে তদন্ত করেনি। তাতে অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি রয়ে গেছে। ওই ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করার জন্য সরকার দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরেজমিনে ভূমি মাপ-ঝোঁক করে পুনরায় খতিয়ান প্রস্তুত করার উদ্যোগ নিয়েছেন। এই খতিয়ান আরএস খতিয়ান নামে পরিচিত। সারাদেশে এখন পর্যন্ত তা সমাপ্ত না হলেও অনেক জেলাতেই আরএস খতিয়ান চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত হয়েছে।
সরকারি আমিনরা মাঠে গিয়ে সরেজমিনে জমি মাপামাপি করে এই খতিয়ান প্রস্তুত করেন বলে তাতে ভুলত্রুটি কম লক্ষ্য করা যায়। বাংলাদেশের অনেক এলাকায় এই খতিয়ান বি এস খতিয়ান নামেও পরিচিত।
= বি এস খতিয়ানঃ
সর্ব শেষ এই জরিপ ১৯৯০ সা পরিচালিত হয়। ঢাকা অঞ্চলে মহানগর জরিপ হিসাবেও পরিচিত।
= “দলিল” কাকে বলে?
যে কোন লিখিত বিবরণ আইনগত সাক্ষ্য হিসাবে গ্রহণযোগ্য তাকে দলিল বলা হয়। তবে রেজিস্ট্রেশন আইনের বিধান মোতাবেক জমি ক্রেতা এবং বিক্রেতা সম্পত্তি হস্তান্তর করার জন্য যে চুক্তিপত্র সম্পাদন ও রেজিস্ট্রি করেন সাধারন ভাবেতাকে দলিল বলে।
= “খানাপুরি” কাকে বলে?
জরিপের সময় মৌজা নক্সা প্রস্তুত করার পর খতিয়ান প্রস্তুতকালে খতিয়ান ফর্মের প্রত্যেকটি কলাম জরিপ কর্মচারী কর্তৃক পূরন করার প্রক্রিয়াকে খানাপুরি বলে।
= নামজারি কাকে বলে ?
ক্রয়সূত্রে/উত্তরাধিকার সূত্রে অথবা যেকোন সূত্রে জমির নতুন মালিক হলে নতুন মালিকের নাম সরকারি খতিয়ানভুক্ত করার প্রক্রিয়াকে নামজারী বলা হয়।
= “তফসিল” কাকে বলে?
জমির পরিচয় বহন করে এমন বিস্তারিত বিবরণকে “তফসিল” বলে। তফসিলে, মৌজার নাম, নাম্বার, খতিয়ার নাম্বার, দাগ নাম্বার, জমির চৌহদ্দি, জমির পরিমাণ সহ ইত্যাদি তথ্য সন্নিবেশ থাকে।
= “দাগ” নাম্বার কাকে বলে? / কিত্তা কি ?
দাগ শব্দের অর্থ ভূমিখ-। ভূমির ভাগ বা অংশ বা পরিমাপ করা হয়েছে এবং যে সময়ে পরিমাপ করা হয়েছিল সেই সময়ে ক্রম অনুসারে প্রদত্ত ওই পরিমাপ সম্পর্কিত নম্বর বা চিহ্ন।
যখন জরিপ ম্যাপ প্রস্তুত করা হয় তখন মৌজা নক্সায় ভূমির সীমানা চিহ্নিত বা সনাক্ত করার লক্ষ্যে প্রত্যেকটি ভূমি খন্ডকে আলাদা আলাদ নাম্বার দেয়া হয়। আর এই নাম্বারকে দাগ নাম্বার বলে। একেক দাগ নাম্বারে বিভিন্ন পরিমাণ ভূমি থাকতে পারে। মূলত, দাগ নাম্বার অনুসারে একটি মৌজার অধীনে ভূমি মালিকের সীমানা খূটিঁ বা আইল দিয়ে সরেজমিন প্রর্দশন করা হয়। দাগকে কোথাও কিত্তা বলা হয়।
= “ছুটা দাগ” কাকে বলে?
ভূমি জরিপকালে প্রাথমিক অবস্থায় নকশা প্রস্তুত অথবা সংশোধনের সময় নকশার প্রতিটি ভূমি এককে যে নাম্বার দেওয়া হয় সে সময় যদি কোন নাম্বার ভুলে বাদ পড়ে তাবে ছুটা দাগ বলে। আবার প্রাথমিক পর্যায়ে যদি দুটি দাগ একত্রিত করে নকশা পুন: সংশোধন করা হয় তখন যে দাগ নাম্বার বাদ যায় তাকেও ছুটা দাগ বলে।
= পর্চা কীঃ / “পর্চা” কাকে বলে?
ভূমি জরিপকালে চূড়ান্ত খতিয়ান প্রস্তত করার পূর্বে ভূমি মালিকদের নিকট খসড়া খতিয়ানের যে অনুলিপি ভুমি মালিকদের প্রদান করা করা হয় তাকে “মাঠ পর্চা” বলে। এই মাঠ পর্চা রেভিনিউ/রাজস্ব অফিসার কর্তৃক তসদিব বা সত্যায়ন হওয়ার পর যদি কারো কোন আপত্তি থাকে তাহলে তা শোনানির পর খতিয়ান চুড়ান্তভাবে প্রকাশ করা হয়। আর চুড়ান্ত খতিয়ানের অনুলিপিকে “পর্চা” বলে।
= চিটা কাকে বলে?
একটি ক্ষুদ্র ভূমির পরিমাণ, রকম ইত্যাদির পূর্ণ বিবরণ চিটা নামে পরিচিত। বাটোয়ারা মামলায় প্রাথমিক ডিক্রি দেয়ার পর তাকে ফাইনাল ডিক্রিতে পরিণত করার আগে অ্যাডভোকেট কমিশনার সরেজমিন জমি পরিমাপ করে প্রাথমিক ডিক্রি মতে সম্পত্তি এমনি করে পক্ষদের বুঝায়ে দেন। ওই সময় তিনি যে খসড়া ম্যাপ প্রস্তুত করেন তা চিটা বা চিটাদাগ নামে পরিচিত।
= দখলনামা কাকে বলে?
দখল হস্তান্তরের সনদপত্র। সার্টিফিকেট জারীর মাধ্যমে কোনো ব্যক্তি কোনো সম্পত্তি নিলাম খরিদ করে নিলে সরকার পক্ষ সম্পত্তির ক্রেতাকে দখল বুঝিয়ে দেয়ার পর যে সনদপত্র প্রদান করেন তাকে দখলনামা বলে।
সরকারের লোক সরেজমিনে গিয়ে ঢোল পিটিয়ে, লাল নিশান উড়ায়ে বা বাঁশ গেড়ে দখল প্রদান করেন। কোনো ডিক্রিজারির ক্ষেত্রে কোনো সম্পত্তি নিলাম বিক্রয় হলে আদালত ওই সম্পত্তির ক্রেতাকে দখল বুঝিয়ে দিয়ে যে সার্টিফিকেট প্রদান করেন তাকেও দখলনামা বলা হয়। যিনি সরকার অথবা আদালতের নিকট থেকে কোনো সম্পত্তির দখলনামা প্রাপ্ত হন, ধরে নিতে হবে যে, দখলনামা প্রাপ্ত ব্যক্তির সংশ্লিষ্ট সম্পত্তিতে দখল আছে।
= “খাজনা” ককে বলে?
সরকার বার্ষিক ভিত্তিতে যে প্রজার নিকট থেকে ভূমি ব্যবহারের জন্য যে কর আদায় করে তাকে খাজনা বলে।.
= বয়নামা কাকে বলে?
১৯০৮ সালের দেওয়ানি কার্যবিধির ২১ আদেশের ৯৪ নিয়ম অনুসারে কোনো স্থাবর সম্পত্তির নিলাম বিক্রয় চূড়ান্ত হলে আদালত নিলাম ক্রেতাকে নিলামকৃত সম্পত্তির বিবরণ সংবলিত যে সনদ দেন তা বায়নামা নামে পরিচিত।
বায়নামায় নিলাম ক্রেতার নামসহ অন্যান্য তথ্যাবলি লিপিবদ্ধ থাকে। কোনো নিলাম বিক্রয় চূড়ান্ত হলে ক্রেতার অনুকূলে অবশ্যই বায়নামা দিতে হবে।
যে তারিখে নিলাম বিক্রয় চূড়ান্ত হয় বায়নামায় সে তারিখ উল্লেখ করতে হয়।
= জমাবন্দিঃ
জমিদারি আমলে জমিদার বা তালুকদারের সেরেস্তায় প্রজার নাম, জমি ও খাজনার বিবরণী লিপিবদ্ধ করার নিয়ম জমাবন্দি নামে পরিচিত। বর্তমানে তহশিল অফিসে অনুরূপ রেকর্ড রাখা হয় এবং তা জমাবন্দি নামে পরিচিত।
= দাখিলা কাকে বলে?
সরকার বা সম্পত্তির মালিককে খাজনা দিলে যে নির্দিষ্ট ফর্ম বা রশিদ ( ফর্ম নং১০৭৭) প্রদান করা হয় তা দাখিলা বা খাজনার রশিদ নামে পরিচিত।
দাখিলা কোনো স্বত্বের দলিল নয়, তবে তা দখল সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ বহন করে।
= DCR কাকে বলে?
ভূমি কর ব্যতিত আন্যান্য সরকারি পাওনা আদায় করার পর যে নির্ধারিত ফর্মে (ফর্ম নং ২২২) রশিদ দেওয়া হয় তাকে DCR বলে।
=“কবুলিয়ত” কাকে বলে?
সরকার কর্তৃক কৃষককে জমি বন্দোবস্ত দেওয়ার প্রস্তাব প্রজা কর্তৃক গ্রহণ করে খাজনা প্রদানের যে অঙ্গিকার পত্র দেওয়া হয় তাকে কবুলিয়ত বলে।
= “ফারায়েজ” কাকে বলে?
ইসলামি বিধান মোতাবেক মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি বন্টন করার নিয়ম ও প্রক্রিয়াকে ফারায়েজ বলে।
= “ওয়ারিশ” কাকে বলে?
ওয়ারিশ অর্থ উত্তরাধিকারী । ধর্মীয় বিধানের অনুয়ায়ী কোন ব্যক্তি উইল না করে মৃত্যু বরন করলেতার স্ত্রী, সন্তান বা নিকট আত্মীয়দের মধ্যে যারা তার রেখে যাওয়া সম্পত্তিতে মালিক হওয়ার যোগ্যতাসম্পন্ন এমন ব্যক্তি বা ব্যক্তিগণকে ওয়ারিশ বলে।
= হুকুমনামা কাকে বলে?
আমলনামা বা হুকুমনামা বলতে জমিদারের কাছ থেকে জমি বন্দোবস্ত নেয়ার পর প্রজার স্বত্ব দখল প্রমাণের দলিলকে বুঝায়। সংক্ষেপে বলতে গেলে জমিদার কর্তৃক প্রজার বরাবরে দেয়া জমির বন্দোবস্ত সংক্রান্ত নির্দেশপত্রই আমলনামা।
= জমা খারিজ কিঃ
জমা খারিজ অর্থ যৌথ জমা বিভক্ত করে আলাদা করে নতুন খতিয়ান সৃষ্টি করা। প্রজার কোন জোতের কোন জমি হস্তান্তর বা বন্টনের কারনে মূল খতিয়ান থেকে কিছু জমি নিয়ে নুতন জোত বা খতিয়ান খোলাকে জমা খারিজ বলা হয়। অন্য কথায় মূল খতিয়ান থেকে কিছু জমির অংশ নিয়ে নতুন জোত বা খতিয়ান সৃষ্টি করাকে জমা খারিজ বলে।
= “মৌজা” কাকে বলে?
CS জরিপ / ক্যাডষ্টাল জরিপ করা হয় তখন থানা ভিত্তিক এক বা একাধিক গ্রাম, ইউনিয়ন, পাড়া, মহল্লা অালাদা করে বিভিন্ন এককে ভাগ করে ক্রমিক নাম্বার দিয়ে চিহ্তি করা হয়েছে। আর বিভক্তকৃত এই প্রত্যেকটি একককে মৌজা বলে।। এক বা একাদিক গ্রাম বা পাড়া নিয়ে একটি মৌজা ঘঠিত হয়।
= “আমিন” কাকে বলে?
ভূমি জরিপের মাধ্যমে নক্সা ও খতিয়ান প্রস্তত ও ভূমি জরিপ কাজে নিজুক্ত কর্মচারীকে আমিন বলে।
= “কিস্তোয়ার” কাকে বলে?
ভূমি জরিপ কালে চতুর্ভুজ ও মোরব্বা প্রস্তত করার পর সিকমি লাইনে চেইন চালিয়ে সঠিকভাবে খন্ড খন্ড ভুমির বাস্তব ভৌগলিক চিত্র অঙ্কনের মাধ্যমে নকশা প্রস্তুতের পদ্ধতিকে কিস্তোয়ার বলে।
= “সিকস্তি” কাকে বলে?
নদী ভাংঙ্গনের ফলে যে জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে যায় তাকে সিকন্তি বলে। সিকন্তি জমি যদি ৩০ বছরের মধ্যে স্বস্থানে পয়ন্তি হয় তাহলে সিকন্তি হওয়ার প্রাক্কালে যিনি ভূমি মালিক ছিলেন তিনি বা তাহার উত্তরাধিকারগন উক্ত জমির মালিকানা শর্ত সাপেক্ষ্যে প্রাপ্য হবেন।
= “পয়ন্তি” কাকে বলে?
নদী গর্ভ থেকে পলি মাটির চর পড়ে জমির সৃষ্টি হওয়াকে পয়ন্তি বলে।
-------------------------
©Masudur Rahman Masud

Photos from Nur Uddin Sagor's post 20/12/2021

#প্যারাডক্স
একে বাংলায় বলে কূটাভাস।এটি এমন একটা সমস্যা যা আপাত দৃষ্টিতে খুব সহজ মনে হলেও আদতে খুবই জটিল। এর যুক্তিগুলো পরস্পর বিরোধী তাই কখনোই সঠিক সিদ্ধান্তে আসা যায় না।প্যারাডক্সের সবচেয়ে সহজ উদাহরণ হচ্ছে ধরুন আপনাকে বলা হলো-

১।নিচের বাক্যটি মিথ্যা।

২।উপরের বাক্যটি সঠিক নয়।

🤔তখন আপনি কী সিদ্ধান্তে আসবেন?

এটাকে বলে লায়ার প্যারাডক্স।

প্যারাডক্স বিষয়টা অধিকাংশ মানুষের কাছে দুর্বোধ্য। পড়েও এই বিষয়টা ব্যাখ্যা করতে পারে না এমন মানুষের সংখ্যাই বেশি।

প্যারাডক্সকে এককথায় বুঝাতে গেলে বলতে হয় এটা একপ্রকার বিভ্রান্তি যার উত্তর জানা যাবে না বা এই মুহর্তে জানা সম্ভব নয়।

প্যারাডক্সের উদাহরণ দিতে গিয়ে অধিকাংশ লোক সক্রেটিসের একটা বিখ্যাত উক্তি ব্যবহার করে।

উক্তিটি হলো: " I know that I don't know anything. "

খুব সাধারণ একটা উক্তি। তাই না?

আসুন ব্যাখ্যা করি।

বাংলা অর্থ : "আমি জানি যে আমি কিছুই জানি না"

সক্রেটিস বলছেন তিনি কিছুই জানেন না। কিন্তু তিনি এটা জানেন যে তিনি কিছুই জানেন না। তাহলে "তিনি কিছু জানেন না" -একথাটা ঠিক নয়। আবার যদি "তিনি কিছুই জানেন না(I don't know anything)"-কে ঠিক ধরে নিই তবে "তিনি জানেন (I Know) কথাটা ঠিক না।

এটাকে বলা হয় সক্রেটিস প্যারাডক্স।সক্রেটিসের প্যারাডক্স আসলে একটা ডাবল লায়ার প্যারাডক্স।

আরো কিছু উদাহরণ দিই-

★এটাকে BARBER PARADOX (RUSSELL'S PARADOX) বলা হয়। আমেরিকান গণিতবিদ Bertrand Russell এটা তৈরি করেছেন।

একটা গ্রামে একজন নাপিত বাস করে। ১. সে তাদের দাঁড়ি কামায় যারা নিজেদের দাঁড়ি নিজেরা কামায় না। ২. যারা নিজেরা নিজেদের দাঁড়ি কামায় তাদের দাঁড়ি সেই নাপিত কামিয়ে দেয় না।

এখন প্রশ হলো নাপিতের দাঁড়ি কে কামায়? সে নিজে না অন্যকেউ?

অন্যকেউ কামালে ১ নং বাক্যের সাথে আর নিজে কামালে ২ নং বাক্যের সাথে সংঘর্ষ হয়। একটু মন দিয়ে ভাবলেই বুঝতে পারবেন।

★এবার আরও একটা লায়ার প্যারাডক্সের উদাহরণ দিই।
ধরুন, আমি আপনাকে বললাম, "I am a liar." এখন আপনি কি আমার কথাটা বিশ্বাস করবেন নাকি করবেন না?

★রহমান সাহেবের ছেলে কিডন্যাপড হয়েছে। উনি চিন্তিত হয়ে বসে আছেন। এমন সময় টেলিফোন বেজে উঠলো।

: রহমান সাহেব?
: বলছি। আপনি কে?
: আপনার ছেলে আমাদের কাছে।
: প্লিজ, তাকে ছেড়ে দিন। যা চান তা দিব।
: আপনার ছেলেকে ছেড়ে দিবো যদি আপনি সঠিকভাবে বলতে পারেন আপনার ছেলেকে আমরা ছেড়ে দিবো নাকি দিবো না।

রহমান সাহেব বললেন," আপনারা আমার ছেলেকে ছেড়ে দিবেন না।"

এখন কথা হলো তারা তাঁর ছেলেকে ছেড়ে দিবে নাকি দিবে না? প্যারাডক্সটা বুঝতে হলে একটু মাথা ঘামাতে হবে।

রহমান সাহেব বলেছেন ছেড়ে দিবে না।

কিন্তু কিডন্যাপার বলেছে সঠিকভাবে বলতে পারলে ছেলেকে ছেড়ে দিবে। কিন্তু ছেড়ে দিলে আবার রহমান সাহেবের কথাটা সঠিক থাকে না।

আর ছেড়ে না দিলে রহমান সাহেবের কথা সঠিক হয়। এক্ষেত্রে কিডন্যাপার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সঠিক হলে ছেড়ে দিবে। কিন্তু ছেড়ে দিলে আবার সঠিক না হওয়ার প্রসঙ্গ চলে আসে।

☞মনে করুন, আমি একটা কাগজে ইংরেজি হরফে লিখে দিলাম:"I can not write in English."

☞"সবনিয়মের ব্যতিক্রম আছে"

বাক্যটিও একটা প্যারাডক্স। নিয়ম করে ব্যতিক্রম হওয়াটাও একটা নিয়ম।

☞এই উদাহরণটি গ্রান্ডফাদার প্যারাডক্স।ধরুন আপনি টাইম ট্রাভেল করে অতিতে ফিরে গেলেন। এমন এক সময় পৌঁছালেন যখন আপনার বাবার জন্মই হয় নি। এবার আপনি আপনার দাদাকে খুঁজে বের করে আপনার পিতার জন্মের পূর্বেই যদি তাঁকে হত্যা করেন তাহলে হিসাব অনুযায়ী আপনার পিতার জন্মই হয় নি। আর আপনার পিতার জন্ম না হলে আপনারও জন্ম হবে না। এখন আপনার যদি জন্মই না হয় তাহলে অতিতে গিয়ে আপনার দাদাকে হত্যা করল কে?🤔

কী? প্যারাডক্স এর অর্থের সাথে মিল পাচ্ছেন?😁

☞এবার আসি সরাইটিজ প্যারাডক্সে।ধরা যাক, একটি চাল পড়ে আছে মাটিতে। আপনি নিশ্চয়ই একে চালের স্তূপ বলবে না। এবার আপনি সেখানে আরেকটি চাল যোগ করলেন। তারপরেও কি কেউ একে চালের স্তূপ বলা যাবে? সাধারণ জ্ঞানসম্পন্ন যে কেউ ই একে চালের স্তূপ বলবে না।

এবার ধরুন আপনি প্রতিবার এভাবে একটি করে চাল যোগ করে যাচ্ছেন। সাধারণভাবে মাত্র একটা চালের কম-বেশি ধর্তব্যের মধ্যে পড়ে না। N সংখ্যক চালকে একত্রে রাখা হলে যদি চালের স্তূপ না হয়, তাহলে একটা বাড়িয়ে N+1 সংখ্যক চাল নিয়েও স্তূপ হবে না।আবার যদি বিপরীতভাবে চিন্তা করেন যে যদি N সংখ্যক চালের সমাবেশকে স্তূপ বলা যায়, তাহলে তার থেকে একটা চাল কমিয়ে N-1 করা হলেও স্তূপ হবে। একটা চালে কি আর "স্তূপ নয়" থেকে "স্তূপ আছে" তৈরি করতে পারে? অথচ চোখের সামনে হামেশাই যে তো চালের স্তূপ হতে দেখা যায়।

একটি ইনটারেস্টিং প্যারাডক্স দিয়ে শেষ করি।

ইন্টারেস্টিং নাম্বার প্যারাডক্স

এই প্যারাডক্সটি আসলেই ইন্টারেস্টিং। আপনি প্রতিটি সংখ্যাতেই ইন্টারেস্টিং কোন ফ্যাক্ট খুঁজে পাবেন। যেমন আমরা গণনা করি ১ থেকে, আর ১ হল প্রথম অশূন্য সংখ্যা। এরপর ২ হল সবচেয়ে ছোট মৌলিক সংখ্যা। ৩ হল প্রথম মৌলিক বিজোড় সংখ্যা। ৪ হল ক্ষুদ্রতম কম্পোজিট সংখ্যা। একইভাবে আপনি প্রতিটি সংখ্যাতেই কোন না কোন বিশেষ বৈশিষ্ট্য খুঁজে পাবেন। এভাবে এগুতে এগুতে ধরুন আপনি এমন কোন সংখ্যা পেলেন যার প্রকৃত অর্থে কোন বিশেষ বৈশিষ্ট্য নেই, তাহলে বিশেষ বৈশিষ্ট্য না থাকাটাই হবে সংখ্যাটির বিশেষ বৈশিষ্ট্য। অর্থাৎ বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছাড়া কোন সংখ্যাই নেই।

উপরের উদাহরণগুলো থেকে আশাকরি বুঝতে পারছেন যে প্যারাডক্স হলো এমন এক বা একাধিক বাক্য বা ঘটনা যা পরস্পরের কন্ট্রাডিকশনারি। একই পরিস্থিতিতে দুটো ঘটনা সম্ভব নয়।

Fb source: Tahamina Taha
Original source : Quora

09/12/2021

""তোমাকে ঘিরে পথগুলো সব সরে যায়
রাত্রির এই একা ঘর ঝুলে আছে শূন্যের কাঁটাতারে''

17/10/2021

""আমায় প্রবোধ দেওয়ার তরে,
ভোরের হাওয়া, ব'লো তা'রে-
যে পাষানির মন গলে না
আমার শত অশ্রু-ধারে, -
সুখে তুমি ঘুমাও নিতি
দুলে দুলে আরাম-দোলায়,
কার নয়নে ঘুম নাহি আর-
উদয় কি হয় স্মরণ-পারে?''

বই: রুবাইয়াৎ-ই-হাফিজ
লেখক: কাজী নজরুল ইসলাম

09/10/2021

""মানুষের মুল্য খুবই সামান্য। দশ হাজার টাকা হারিয়ে গেলে কুড়ি বছর পরেও সেই টাকার শোকে মানুষ কাতর হয়। মানুষ হারিয়ে গেলে কুড়ি দিন পরই আমরা মোটামুটিভাবে তাকে ভুলে যাবার চেষ্টা করি।''

""বড়রা তাদের জরুরী কথার আশে পাশে ছোটদের চায়না। অথচ ছোটদের সমস্ত জরুরী কথায় বড়দের থাকতে হয়।''

""মানুষের বেঁচে থাকার জন্যে অপেক্ষা নামের ব্যাপারটির খুব প্রয়োজন। অপেক্ষা হচ্ছে মানুষের বেঁচে থাকার টনিক।''

""মৃত মানুষদের জন্য আমরা অপেক্ষা করি না। আমাদের সমস্ত অপেক্ষা জীবিতদের জন্যে।''

বই: অপেক্ষা
লেখক: হুমায়ূন আহমেদ

01/07/2021

তুমি আমাকে ঘৃণা করো?
সেই ভালো,অন্তত স্মরণ তো করো!

29/06/2021

"ও যেন কালবোশেখীর মেঘের মত,যত ভয় করে,তত দেখতেও ইচ্ছে করে।"

"ছেঁচা জল আর মিছে কথা নাকি গায়ে বড় লাগে।"

"কালির লেখা মুছে যায়,জলের লেখা মোছে না।"

"চোখে এক কণা বালি পড়লেই যদি চোখ এত জ্বালা করে-চোখে যার চোখ পড়ে তার যন্ত্রণা বুঝি অনুভূতির বাইরে।"

কাজী নজরুল ইসলামের 'শিউলি-মালা' গল্পগ্রন্থ থেকে।

29/06/2021

মানুষরে প্রতিযোগিতার দৌড়ে নামাতে ভাল্লাগে।
দেখলে খিলখিল করে হাসি পায়

29/06/2021

"কালির লেখা মুছে যায়,জলের লেখা মোছে না।"

বইঃ শিউলি-মালা
লেখকঃ কাজী নজরুল ইসলাম

Website