Riana's Dreams

Riana's Dreams

Check out this page for my romantic stories.

14/09/2023

Tabassum Riana's Story
All Stories Link

a. Mafia Boss Series
1.My Mafia Boss (Season 1)
https://www.facebook.com/groups/748051775595200/permalink/2101842823549415/?mibextid=Nif5oz

2.My Mafia Boss Husband (Season 2)
https://www.facebook.com/groups/748051775595200/permalink/2101868070213557/?mibextid=Nif5oz

3.Married to the Dark King (Season 3, Part 1)
https://www.facebook.com/groups/748051775595200/permalink/2101894993544198/?mibextid=Nif5oz

4. The Mysterious Man (Season 3, Part 2)
https://www.facebook.com/groups/748051775595200/permalink/2101971506869880/?mibextid=Nif5oz

5. The Cobra King (Season 4)
https://www.facebook.com/groups/748051775595200/permalink/2101972400203124/?mibextid=Nif5oz

6. The Man in Night (Season 5, Part 1)
https://m.facebook.com/groups/748051775595200/permalink/1885993155134384/?mibextid=Nif5oz

7. The Man in Night (Season 5, Part 2)
https://m.facebook.com/groups/748051775595200/permalink/1912482495818783/?mibextid=Nif5oz

b. দেহশাত গার্দ
https://m.facebook.com/groups/748051775595200/permalink/2040089506391414/?mibextid=Nif5oz

c. Rongdhonu
1. রংধনু (season 1)
https://www.facebook.com/groups/748051775595200/permalink/1429761664090871/
2.রংধনু (season 2)
https://m.facebook.com/groups/748051775595200/permalink/1872932946440405/

d.দ্বিধা
1. দ্বিধা (Season 1)
https://m.facebook.com/groups/748051775595200/permalink/2040693976330967/?mibextid=Nif5oz
2. দ্বিধা (Season 2) https://m.facebook.com/groups/748051775595200/permalink/2040698142997217/?mibextid=Nif5oz

e. কানা মাছি ভোঁ ভোঁ
https://m.facebook.com/groups/748051775595200/permalink/2101973140203050/?mibextid=Nif5oz

f. অনুগল্প সমূহ
https://m.facebook.com/groups/748051775595200/permalink/2093307361069628/?mibextid=Nif5oz

14/09/2023

Tabassum Riana
Part:91
মায়ের কথায় কিছুটা হাসলো রুয়েল।শুনেছিলো রিংকি হাসপাতালে যাবে সেখানে খুব দরকারি মিটিং আছে তাই ফিরতে দেরি হবে।কথা গুলো ফোনে কাকে যেন বলছিলো রিংকি আর তখনই রুয়েল শুনতে পায়।তাই বলল,
''মা ও চলে আসবে মিটিং আছে একটু সময় লাগবে।"
আনিলা বললেন,
''বাবা বৌ অসুস্থ তাই ভয় করছে আমার ওর ফোনটাও তো অফ আসছে।"
রুয়েল হেসে বলল,
''চিন্তা করোনা মা চলে আসবে।তোমরা খেয়েছো?"
আনিলা বললেন,
''এখনো খাইনি।রিংকিটার জন্য চিন্তা লাগছে একটু দেখিস খোঁজ নিয়ে।"
সময় গড়িয়ে সন্ধ্যা হলো।আজ কিছুটা আগেই ফিরে এলো ঘরে।রিংকিকে কয়েকবার কল দিয়েছিলো রুয়েল কিন্তু ফোন ধরেনি মেয়েটা।তাই ভাবছে ওকে নিয়ে বেরুবে আজ তারপর যতোবার সরি বলার বলবে একটাই তো বৌ ওর।বৌটাকে না মানালে ওর বাচ্চাটাও কষ্ট পাবে।কথাগুলো ভেবে আনমনে হেসে উঠে রুয়েল।বাসায় ঢুকতেই দেখলো আনিলা সোফায় বসে তার পাশে সাবিনা।রুয়েল কে দেখতেই কান্না জুড়ে দিলেন আনিলা।বলতে লাগলেন,
''রিংকি আসেনাই।ফোন অফ আসছে দেখে হাসপাতালের রিসিপশনে কল দিলাম।জানতে পেলাম সকালে হাসপাতালে গিয়ে বেরিয়ে গিয়েছে ও।কথাটা শুনে রুয়েল আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারেনা।ওভাবেই বেরিয়ে যায় ও হাসপাতালের উদ্দেশ্যে।ওখানে গেলে ওর খোঁজ পাওয়া যাবে হয়ত।হাসপাতালে গিয়ে শুনলো আরেক কাহিনী।রিংকি রিজাইন লেটার দিয়ে বেরিয়ে গেছে।রুয়েল তৎখনাৎ নিজের লোকদের চারপাশে খবর নিতে বলে।নিজে ও বেরিয়ে স্ত্রীকে খুঁজতে।বেশ কিছুসময় খোঁজাখুঁজি করে রেলস্টেশনে চলে আসে ও।একে ওকে জিজ্ঞেস করার মাঝেই খেয়াল করলে বেঞ্চিতে জুবুথুবু হয়ে বসে আছে রিংকি।একটু সামনে এগুতেই খেয়াল করলো কাঁদছে মেয়েটা।রুয়েল দ্রুতপদে এগিয়ে ওর সামনে দাঁড়াতেই রিংকি একটাবার ওর দিকে তাকিয়ে রুয়েলের কোমড় জড়িয়ে কাঁদতে আরম্ভ করে।রুয়েল কিছু বলছেনা শুধু বৌয়ের মাথায় হাত বুলাচ্ছে।রিংকি কেঁদে কেঁদে বলতে লাগলো, ''যেতে পারিনি আমি ভেবেছিলাম অনেক দূর চলে যাবো।আর কখনো ফিরবোনা কিন্তু পারিনি আমি । কেউ নেই আমার তোমরা ছাড়া আমি কেন এত অসহায়?কেন আমার কপালটা এমন হলো?রুয়েল ওর পাশে বসে বলল,
''কেন যেতে তুমি?আমার ওপর এত অভিমান জমে যাবে বুঝতে পারিনি।বুঝলে অভিমান জমার সুযোগ ছিলোনা।মাফ করে দাও রিংকি আমার ভুল হয়ে গেছে।এক্চুয়ালি খুব সিরিয়াস একটা কেসে আটকেছিলাম আজকেই কেসের কাজ শেষ হলো।আমার মনে হতো মা খালা ভাবি সুমনা ঝুমু সবাই আছে তোমাকে দেখার জন্য।তাই নিশ্চিন্তে কাজ করে যাচ্ছিলাম।কিন্তু আমার বৌটা অসুস্থ সে আমার সন্তানের মা হতে চলেছে সেটা আমার দায়িত্ব তার খেয়াল রাখা।আজ আমার এত বড় পরিবার না থাকলে তোমার খেয়াল তো আমাকে রাখতে হতো।আমার ঠিক হয়নি তোমাকে অবহেলা করা মাফ করে দিও প্লিজ বৌ।"
রুহী বলতে লাগলো,
''এভাবে বলোনা তুমি ব্যাস্ত ছিলে। আমার কি হয়ে গেছে কেন এমন করলাম জানিনা।তিনটা ট্রেন চলে গেলো আমি উঠে যেতে পারিনি।খুব ভয় করছিলো রুয়েল।কোথাও না কোথাও আমি তোমাকে আশা করছিলাম যে তুমি আমাকে নিয়ে যাবে এসে।"
রুয়েল রিংকির কপালে চুমু দিয়ে বলল,
''আসতে হতোই। পাঁচটা না দশটা না একটা মাত্র বৌ আমার।"
রিংকি চোখ মুছে বলল,
''আগেকার রাজাদেরও এত গুলো বৌ থাকতোনা?দশটা বিয়ে মানে তুমি বোঝো?একটা প্রেগন্যান্ট ওয়াইফ কে সামলাতে কতশত চিন্তা করতে হচ্ছে।আর দশটা হলে তো পাগলা গারদে থাকতে এতদিন।"
রুয়েল হেসে বলল,
''ফান করেছি।এত গুলো বিয়ে করবো পাগল?তোমাকে আমি দশটা বৌয়ের দশহাজার ভাবে ভালোবাসবো আজীবন।"
রিংকি রুয়েলকে জড়িয়ে ধরে শক্ত করে।খুব শান্তি লাগছে ওর।
এদিকে ঘরে যাবার কথা বললেই খুঁজে খুঁজে কাজ বের করে নিচ্ছে রোয়েন।দশটা পর্যন্ত কাজ করার পর রোয়েন রামীনকে ডেকে বলল,
''তিনটা দিন আমাদের দায়িত নেয় তুই।তিনদিন পর আমি আসবো।"
রুহী অবাক হয়ে বলল,
''মানে কি?"
রুহীর কথার জবাব না দিয়ে রামীনের সাথে কি যেন বলে রোহাকে কোলে নিয়ে রুহী কে বলল,
''চলো বের হই।"
রুহী বলতে লাগলো,
''অফিস কেন আসবোনা আমরা?কই যাবো আমরা?রোয়েন বলুন না।"
রোহাকে বেবি সিটে বসিয়ে রোয়েন ড্রাইভিং করতে থাকে।গাড়ি ঘরের দিকে না নিয়ে অন্যদিকে যেতে থাকে রোয়েন।রুহী বলতে লাগলো,
''কিছু বলেননা কেন?কই যাচ্ছি আমরা?"
রোয়েন হেসে বলল,
''তোমাকে জঙ্গলে ফেলে দিবো।তারপর আমরা বাপ মেয়ে পুরো বিছানায় গড়াগড়ি করে ঘুমাবো।"
রুহী রেগে বলল,
''ফাজলামো না।বলুন কই যাই আমরা?"
রোয়েন হেসে বলল,
''আপাতত নারায়নগঞ্জ তারপর বাকিটা সারপ্রাইজ তাই আর কিছু বলতে পারছিনা।"
রুহী বেশ খুশি হয় তবে মিথ্যা রাগ দেখিয়ে বলল,
''মানে কি?ধ রোহা কত ছোট ওর খাবার ওর কত কাজ থাকে।তিনদিন কি করবো আমি ওকে নিয়ে?"
রোয়েন বলতে লাগলো,
''রুহী আমি হুট করে কোন প্ল্যান করিনা।সবরকম ব্যাবস্থা আছে সো এঞ্জয় করো "
রুহী আর কিছু বললনা।লোকটার সারপ্রাইজ মানেই অসাধারণ কিছু তার মতো।"
রাস্তায় তেমন একটা জ্যাম না থাকায় দুঘন্টায় পৌছে যায় ওরা নারায়নগঞ্জে তারপর আরো একঘন্টা রাইভ করে বক্তাবলি ট্রলারঘাটে চলে এলো।রোহাকে বেবিকারে শুইয়ে রুহীকে নিয়ে হেঁটে যেতে থাকে সামনে।তারপর রোয়েন কে দেখে একজন এগিয়ে এলো।লোকটার সাথে কি কথা বলে টাকার বেশ মোটা একটা বান্ডিল দিয়ে বলল,
''সব ঠিক আছে তো?বেবি আছে আমাদের সাথে।"
লোকটা বলল,
''জি স্যার সব ওকে।ভাবিকে নিয়ে আসুন আমার সাথে।"
ওরা যেতে থাকে লোকটার সাথে।কিছুসময় পরই ওরা একটা বড় ইয়টের সামনে এসে থামে।সেটাকে ফুল আর লাইট দিয়ে সাজানো।রুহীর দিকে হাত বাড়িয়ে রোয়েন বলল,
''ওয়েলকাম রুহী টু আওয়ার লাক্সারি ইয়ট হানিমুন।"
রুহী অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখতে থাকে সব।তারপর রোয়েনের হাত ধরে ভেতরে প্রবেশ করে।ভেতরে ভীষন সুন্দর করে সাজানো সব।রোহার খাবার ডায়পার সবই আছে।সেই সাথে ওদের আলাদা কাপড়চোপড় ও।রুহী বলল,
''এত কিছু কেন?"
রোয়েন বলল,
''আমরা কয়েকটা মাস খুব বাজে সময় কাঁটিয়েছি।তাই চাইছিলাম নিজেরা রিফ্রেশ হয়ে নতুন করে সব শুরু করি।"
রুহী রোয়েনকে জড়িয়ে বলল,
''রোয়েন কেন এত ভাল আপনি?অনেক ভালবাসি আপনাকে।"
রোয়েন রুহীর মাথায় চুমু দিয়ে বলল,
''আমিও প্রচন্ড ভালবাসি তোমায় রুহী।এখন চলো ফ্রেশ হয়ে ডিনার করবো।"
রুহী হেসে রুমে প্রবেশ করে।তারপর রোহাকে খাইয়ে ফ্রেশ হয়ে নেয় ওরা।
রুহী আজ কালো রং এর শাড়ী পরেছে আর রোয়েন কালো সুট।তারপর চলে আসে ওদের ডাইনিং জোনে।সেখানটাও সুন্দর করে সাজানো রয়েছে।রুহীর হাত ধরে ওকে নিয়ে খাওয়ার টেবিলে চলে আসে রোয়েন।রুহী খেয়াল করে সব কিছুই ওর পছন্দ অনুযায়ী হয়েছে।খাবার খেয়ে রোয়েন উঠে রুহীকে নিয়ে ইয়টের কোনায় চলে আসে যেখানে বসে ওরা শীতলক্ষ্যা নদীর সৌন্দর্য উপভোগ করতে পারবে।রোহাকে ঘুমপাড়িয়ে বেবি মনিটর সেট করে দিয়ে ওরা বেরিয়েছে।তাই আপাতত চিন্তা নেই।রুহীকে পিছন থেকে জড়িয়ে বসে পড়ে ওরা।
রুহী আবেগী কন্ঠে বলল,
''বিশ্বাস হচ্ছেনা রোয়েন।এসময় এত সুন্দর দৃশ্য দেখতে পারবো সত্যি বিশ্বাস হচ্ছেনা।"
রোয়েন রুহীর কাঁধে চুমু দিয়ে বলল,
''সব তোমার জন্য রুহী।বিশ্বাস করতে পারো তুমি।এসব ডেকোরেশন এই ইয়ট তোমার জন্য ভাড়া করেছি।"

চলবে........

13/09/2023

Tabassum Riana
Part:90
ঝুমুকে বাকিদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছে রুহী।ঝুমু সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলছে।রফিক শামীমকে মৃদু স্বরে বলল,
''স্যারের বোনটা ভারি মিষ্টি।"
শামীম একটু হেসে বলল,
''জি বাবা।"
বলেই জিভে কামড়ে আড়চোখে শ্বশুরের দিকে তাকাতেই দেখলো রফিক চোখ রাঙ্গিয়ে তাকিয়ে আছে ওর দিকে।শামীম বার কয়েক ঢোক গিলে বলল,
''স্যার ডাকছে আমি আসি।"
বলেই দৌড়ে চলে গেলো সেখান থেকে।রুহী ঝুমুকে ওর রুম দেখিয়ে বলল,
''তুমি বসো আমি কেবিনে যাচ্ছি।কিছু লাগলে তোমার ভাইয়ার রুমে আসবে ওকে?"
ঝুমু হেসে সায় দিলো।রুহী রোহা বুকের সাথে জড়িয়ে রেখেছে বেবি ক্যারিয়ার বেল্টের সাহায্যে।বাচ্চাটা বেবি প্যাসিফায়ার মুখে রেখে ঘুমে কাতর।রুহী ওভাবেই নিজেদের কেবিনে চলে এলো।ওদের রুমে রোহা আর আরাভের জন্য দুটো দোলনা দেয়া হয়েছিলো।দোলনা দুটোই আছে তবে ছেলেটাই নেই।রোয়েন ও দোলনাটাকে সরালোনা চোখের সামনে থেকে।ডেলিভারির পর রুহী আজ প্রথম এসেছে অফিসে।এসে দুটো দোলনা দেখে মনটা খারাপ হয়ে যায় ওর।
চোখজোড়া ভিজে আসে।হাতের কোনা দিয়ে চোখ মুছে রোয়োনের দিকে না ফিরে বলল,
''একটা দোলনা সরিয়ে নাও।"
রোয়েন বসে থেকেই বলল,
''দরকার কি?আমার ছেলেটার শূন্যতা অনুভব হয়না কেন যেন।মনে হয় যেন ও আমার কাছে আছে।"
রুহী নিজেকে কোনরকমে সামলে বলল,
"'ও নেই রোয়েন।দোলনাটা থাকলে আমি নিজেকে ঠিক রাখতে পারবোনা।"
রোয়েন কোনরকমে উঠে দাঁড়িয়ে রুহীর পিছনে এসে ওর কাঁধে হাত রেখে বলল,
''রোহাকে শুইয়ে দাও।কাউকে ডেকে সরিয়ে দিচ্ছি এটা।"
রুহী বেল্ট খুলে মেয়ে কে দোলনায় শুইয়ে দিয়ে পিছে ফিরে রোয়েনের দিকে তাকায়।রুহীর দুগালে হাত রেখে ওর গালে লেগে থাকা অশ্রু মুছে দিতে দিতে বলল,
''আল্লাহ চাইলে আরাভ ফিরে আসবে রুহী।"
রোয়েনকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে রুহী।আজ বড় শান্তি লাগছে।রুহীর চুলে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে রোয়েন বলল,
''রুহী কাজে লেগে পড়ো আমি দোলনাটা সরিয়ে দিতে বলি।"
রুহী সরে এসে নিজের ডেস্কে বসে পড়ে।এদিকে রিংকির শরীর একদমই ভালো যাচ্ছেনা তাই আজকাল ঘরেই থাকে বেশিরভাগ সময়ে।তিনমাস শেষ হয়ে চারমাসে পড়েছে সবে।কিছু খেতে পারেনা।জোর করে খেলেই বমি করে ঘর ভরিয়ে ফেলে।রুয়েল খুব একটাসময় দিতে পারছেনা রিংকিকে।ইদানীং নতুন একটা কেসে আটকা পড়েছে ও।সকালে যায় আর ফিরে রাত করে।এসেই ঘুমে কাতর রুয়েল বৌয়ের খবর নেয়ার সময়টাও হয়না।তবে আনিলা আর সাবিনা দুজনেই রিংকির খেয়াল রাখছে।তবুও রিংকির কষ্ট হয় কারন তাঁরা মায়ের অভাব পূরন করতে পারছে তবে স্বামীর অভাব কি করে পূরন হবে।রুয়েলের ভালবাসা সাপোর্ট কিছুই পাচ্ছেনা রিংকি।ঘুমের মাঝে রুয়েল জড়িয়ে ধরলে ও সরে যায় রিংকি।খুব রাগ হয় ওর জানাসত্ত্বে ও রুয়েল কাজে ব্যাস্ত থাকে।কেন যেন অভিমান গুলো অভিযোগে পরিনত হচ্ছে।একপাশ হয়ে শুয়ে নীরব কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে রিংকি।ও মানুষটাকে খুব করে পাশে চায় যা হচ্ছে না এখন।
ঘুম ভাঙ্গে রুয়েলের রাত করে।উঠে বসে ফোন হাতে নিয়ে দেখতে পায় ভোর তিনটা বাজছে। পাশে রিংকি ঘুমে কাতর।রুয়েল বুঝতে পারে রিংকির কষ্ট গুলো কিন্তু কি করবে ও?কেসটা সলভ হতে সময় লাগবেনা তেমন।কিন্তু ওর স্ত্রীর প্রতি দায়িত্ব থেকে সরে পড়ছে ও তা বুঝতে পেরে বুকের বাঁপাশটায় যন্ত্রনা হয় রুয়েলের।রিংকির গালে চুমু দিয়ে ওকে জড়িয়ে শুয়ে পড়ে রুয়েল।এরই মাঝে কয়েকটা দিন পেরিয়ে গেলো।ঝুমু কে ভার্সিটিতে ভর্তি করিয়ে দিয়েছে রোয়েন।ভার্সিটি চলাকালী সময়ে হাফ ডে অফিস করে ঝুমু।রফিক ওকে দিয়ে যায় আবার মাঝে মাঝে ড্রাইভার ও দিয়ে যায় আবার নিয়ে যায়।ক্লাশ শেষ করে নিচে আসে ঝুমু।অপেক্ষা করছিলো গাড়ির।আজ অনেকটা সময় পেরিয়ে গেছে গাড়ি আসার নাম নেই।ঝুমু চিন্তিত মুখে কল করতে থাকে ড্রাইভারকে আবার কখনো রফিককে।তখনই ওর সামনে এসে দাঁড়ায় একটা বাইক।বাইক থামিয়ে একজন বলল,
''ঝুমু তুমি এখানে?"
সামনে তাকিয়ে ঝুমু একটু হাসলো।তারপর বলল,
''ভাইয়া আমাকে অনার্সে ভর্তি করিয়েছে এই ভার্সিটিতে।ড্রাইভারের অপেক্ষা করছিলাম।"
রামীন বলল,
''অফিসে যাচ্ছি তোমাকে পৌছে দেই আসো।"
ঝুমু বলল,
''ভাইয়া ড্রাইভার আসবে তো।"
রামীন বলল,
''আসার হলে চলে আসতো।চলো আমার সাথে।আমি ও তোমার ভাইয়া রোয়েন রুয়েলের মতো।"
ভাইয়া শুনে ঝুমুর মুখটা কালো হয়ে এলো।তবু ও হাসি মুখে বাইকে উঠে বসে।রামীনের কাঁধে হাত রাখতেই বুকের ভেতরটা মোচড় দিয়ে উঠে ওর।তার শরীর থেকে একটা সুন্দর ঘ্রান আসছে যা ওর ভালো লাগছে খুব।রামীন এটা ওটা জিজ্ঞেস করছিলো ঝুমুকে কিন্তু মেয়েটা নিজের জগতে আটকে আছে।ওর কানে কোন কথা যাচ্ছেনা।
রামীন বলল,
''বাসায় চলে এসেছি,যাও এখন।"
ঝুমু মৃদু হেসে নেমে হেঁটে যেতে শুরু করে।হঠাৎ থেমে পিছে তাকায় তবে ততক্ষন রামীন চলে গেছে।অফিসে পৌছে রোয়েনের কেবিনে আসে রামীন।রুহী আর রোয়েন কাজে মগ্ন।রামীন এসে রোয়েনের সামনে বসে বলল,
''বললাম না চলে আসবো।"
রুহী সালাম দিয়ে বলল,
''ভালো আছেন ভাইয়া?"
রামীন বলল,
''ওয়ালাইকুম আসসালাম। আলহামদুলিল্লাহ তুমি কেমন আছো?"
রুহী হেসে বলল,
''আলহামদুলিল্লাহ ভাইয়া।আজ অনেক দিন পর দেখা হলো।"
রাৃীন কিছু না বলে রোহাকে কোলে তুলে নেয় দোলনা থেকে।এদিকে রোয়েন বন্ধুকে দেখছে।সে যতোই ভাল থাকার চেষ্টা করুক না কেন ভাল নেই রামীন তা রোয়েন জানে।রোয়েন বলল,
''মেয়েটাকে রেখে কেবিনে যা।আমি আসছি একটু পর কথা আছে।"
রামীন রোহাকে দুতিনটে চুমু দিয়ে রুম থেকে বেরুতেই ঝুমুকে দেখতে পায়।মেয়েটা কালো লম্বা কোটে দাঁড়িয়ে কথা বলছে রফিকের সাথে।রফিক ড্রাইভারকে নিয়ে গাজীপুর গিয়েছিলো তাই আসতে পারেনি জানালো।ঝুমু মেয়েটা বেশ সুন্দরী আর সরল।রামীন এগিয়ে এলো ওদের কাছে।তারপর ঝুমুকে বলল,
''এখানে তুমি?"
পাশ থেকে রফিক বলল,
''জব করে এখানে।সিন্থিয়া চলে গেছে তাই স্যার নিয়ে এসেছে ওকে।"
ঝুমু হেসে বলল,
''আমরা কলিগ ভাইয়া।"
রামীন হেসে বলল,
''হুম।যাও কাজে আমি ও যাই।গল্প করতে দেখলে তোমার ভাই মারবে আমাদের।"
ঝুমু হেসে বলল,
''কখনো না।ভাইয়া অসাধারন মানুষ।কাউকে মারতে পারেনা।আর আপনাকে তো কখনো না।"
তখনই রামীন নিজের গালের কাঁটা দাগ দেখিয়ে বলল,
''মারতে পারেনা মানুষের গালে কেঁটে দিতে পারে।"
বলেই শব্দ করে হাসতে হাসতে চলে যায় সেখান থেকে।"
ঝুমু অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে রামীনের যাওয়ার পথে।লোকটা বড় অদ্ভুত তবে অসাধারন সুন্দর মনের মানুষ।
ঝুমু চলে যায় নিজ কেবিনে।এদিকে সেদিন সকালে ঘর থেকে বেরিয়ে যায় রিংকি।ওর গন্তব্য সে নিজে ও জানেনা।সবাাইকে বলে ছিলো হাসপাতালে যাচ্ছে।কিন্তু না আজ রিজাইন দিয়ে চলে যাবে কোথাও।ওর রুয়েলের এমন আচরন ভালো লাগছেনা। আর মানতে ও পারছেনা তার এই ব্যাস্ততা।বিকেলে ঘোর কাঁটে আনিলা আর সাবিনার।রিংকির দুপুরে আসার কথা ছিলো।সময় পেরিয়ে যাবার পর ফোন দিয়ে যখন ফোন বন্ধ পেলো রিংকির তখনই হুঁশ হলো ওনাদের।রিংকি খুব মনমরা হয়ে ছিলো অনেকটাদিন।তারা জানতে চেয়ে ও জানতে পারেননি কিছু।আর আজ যখন মেয়েটা আসলোনা ঘরে তখন দুজনেই ভয় পেয়ে গেলেন।আনিলা কিছু না ভেবে রুয়েলকে কল দিলেন।কল রিসিভ হতেই আনিলা বলতে লাগলেন,
''বাবা রিংকি ঘরে ফেরেনি ওর ফোন অফ আসছে।"
চলবে....

13/09/2023

Tabassum Riana
Part:89
রামীন কে ধরে চেয়ারে বসায় রোয়েন।ছেলেটা পাগলের মতো চিৎকার করে জেসমিনকে দোষারোপ করছে ওর হৃদয়কে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করবার জন্য প্রলাপ করছে আহজারি করছে এক বুকফাঁটা ব্যার্থ প্রেমিকের মতো।রামীন থেকে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করে ও ব্যার্থ রোয়েন।কারন ওর প্রানপ্রিয় যে কিছু বলার অবস্থাতেই নেই।কোনমতে একটু খাইয়ে দিয়ে রামীনকে বিদায় দিয়ে রুমে আসে রোয়েন।রোহা কে ঘুমপাড়াচ্ছিলো রুহী।রোয়েনকে রুমে আসতে দেখে উঠে বসে ও।মানুষটার চেহারা দেখে বুক ধক করে উঠে ওর।এতক্ষন রামীন ভাইয়ের আহাজারি শুনতে পাচ্ছিলো ও।কিন্তু মেয়েকে রেখে উঠে যেতে ও পারছিলোনা রুহী।রোহা নানি দাদী কারো কাছে থাকতে চাইছিলোনা।একাধারে কেঁদেই যাচ্ছিলো।তাই রুহীকে সামলে নিতে হয় মেয়েকে।রোয়েন রুমে এসেই বিছানায় ধপ করে বসে মাথা নিচের দিকে এলিয়ে দেয়।লোকটাকে এভাবে বসতে দেখে অনেক বেশি চিন্তা হতে থাকে রুহীর।এমনিতে একটু আগে রামীন ভাইয়ের আহজারি শুনতে পেয়েছিলো ও।আর এখন স্বামীর এমন আচরন ওকে দ্বিগুন চিন্তিত করে তুলেছে। বিছানা থেকে নেমে রোয়েনের পাশে এসে বসে ওর কাঁধে হাত রেখে রুহী বলল,
''রোয়েন?কি হয়েছে?"
মাথা তুলে রোয়েন বলল,
''জ্যাস বিয়ে করে ফেলেছে।"
রুহী ভ্রু কুঁচকে বলল,
''কি বলেন?ওনি তো রামীন ভাইকে ভালবাসে।"
রোয়েন রুহীর দিকে ফিরে বলল,
"আমি ও তো তাই ভাবছি।জ্যাস এমন মেয়ে না আমার জানামতে।কিন্তু ছবিটা দেখার পর বিশ্বাস না চাইতে ও করতে হচ্ছে।"
রুহী রোয়েনকে পাশ থেকে জড়িয়ে বলতে লাগলো,
"'রামীন ভাইয়ের জন্য কষ্ট হয় খুব।এত ভালো একজন মানুষ সবাই কে ভালো রাখতে পারে হাসাতে জানে আর সেই মানুষটার সাথেই কিনা এমন অন্যায় হয়।"
রোয়েন রুহীর কাঁধে মাথা রেখে বলল,
''জানিনা রুহী। আমার ইচ্ছে হচ্ছে নিমিষে ওর সব কষ্ট নিঃশেষ করে দিতে যদি পারতাম তাহলে নিজেকে যোগ্য বন্ধু ভাবতাম।"
রুহী বলতে লাগলো,
''কি করবেন ভেবেছেন?"
রোয়েন বলল,
''জ্যাসের সাথে কথা বলবো আমি।ও কেন করেছে এমনটা জানতে হবে আমার।তারপর ভাববো কি করবো না করবো।"
রুহী মৃদু হেসে রোয়েনের গালে ঠোঁট ছুঁয়ে বলল,
''শুয়ে পড়ুন আপাতত।আমি আপনার চুল হাতিয়ে দেই।"
রোয়েন মাথা নেড়ে রুহীকে বুকে নিয়ে শুয়ে বলল,
''লাগবেনা।তুমি আমার বুকে থাকো আমি খুব ভালো বোধ করি এভাবে।"
রুহী রোয়পনকে শক্ত করে জড়িয়ে ঘুমিয়ে যায়।পরদিন সকালে জ্যাসের নম্বরে কল দেয় রোয়েন।নাস্তার টেবিলে বসে খেতে খেতে জ্যাসকে কল দেবার কথা মনে হয়।তৎখনাৎ নম্বরে কল দিয়ে ও দেয়।ফোন রিসিভ হতেই অপরপাশ থেকে জেসমিন কল ধরে বলল,
''কিরে কেমন আছিস?"
রোয়েন বলল,
''সেটা পরে বলি।তুই আগে বল কেমন যাচ্ছে তোর সময় কাল?"
জেসমিন হেসে বলল,
''এই তো ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে।"
রোয়েন হেসে বলল,
''বর বুঝি আরামেই রেখেছে?"
জেসমিন একটু থেমে বলল,
''তুই কিভাবে জানলি?"
রোয়েন বলল,
''তোর এটা জানা বেশি ইম্পর্ট্যান্ট মনে হচ্ছে যে কি করে জানলাম আমি?একটা মানুষ যে তোর জন্য হৃদয় পুড়াচ্ছে তার কোন দাম নেই?'
জেসমিন বলল,
''প্লিজ এসব বাদ দে।ড্যানি ঘুমোচ্ছে আমি ও ঘুমাবো।এসব নিয়ে পরে কথা বলবো।"
রোয়েন কিছু বলার আগেই জেসমিন কল কেঁটে দিলো।ফোন সামনে এনে থমকে বসে রইলো রোয়েন।তারপর কোনরকমে খাবার শেষ করে বেরিয়ে যায় অফিসের পথে।যাবার সময় রোহাকে আদর করতে ভুলে গেলোনা রোয়েন।
অফিসে এসেই খেয়াল করলো রামীন আসেনি।দুপুর পর্যন্ত বন্ধুর অপেক্ষা করলো।ফোনে ও অনেক বার কল দিয়ে ব্যার্থ হলো।তারপর কোন চিন্তা না করে রওনা হলো রামীনের বাসার উদ্দেশ্যে।ঘরে পৌছুতেই দেখে রামীন চেয়ারে বসে কফি খাচ্ছে। ওর শরীরে একটা শর্ট প্যান্ট ছাড়া কিছু নেই,চুল একদমই আউলানো।চোখজোড়া ও কেমন লালচে হয়ে আছে যেন সারারাত ঘুম হয়নি।রোয়েন পাশে এসে বসে রামীনের কাঁধে হাত রাখে।তখনই রোয়েনকে অবাক করে রামীন রোয়েনের বুকে পড়ে কাঁদতে লাগলো বাচ্চাদের মতো।রোয়েন বন্ধুর পিঠে হাত রেখে ধরে আসা কন্ঠে বলল,
''এমন করছিস কেন?সব ঠিক হয়ে যাবে।"
রামীন সরে এসে চোখ মুছে বলল,
''আশা রাখছি না আমি।আমি একাই বেশ আছি ভালো আছি খুব।"
রোয়েন দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে রামীনের কাঁধে হাত রাখে আর রামীন তাচ্ছিল্যের হাসি দিয়ে বলল,
''একটা হেল্প করবি?"
রোয়েন মাথা নেড়ে জানতে চায় কি সাহায্য চায় রামীন?রামীন বলল,
''কয়েকটাদিন আমি অফিসে আসবো না এমনকি তোরা কেউ যোগাযোগ করতে পারবিনা।"
রোয়েন রেগে কটমটে কন্ঠে বলল,
''পাগল হয়ে গেছিস?কি বলছিস এসব?ছুটি চাস ঠিক আছে তাই বলে যোগাযোগ করবিনা এটা কেমন কথা?"
রামীন হেসে বলল,
''ভয় পাস না এমন কিছু করবোনা যার জন্য পরকালে তোর খোদার সাথে চোখ মেলাতে পারবোনা।নিশ্চিন্ত থাকতে পারিস আমি চলে আসবো।"
রোয়েন রেগে দেখে যাচ্ছিলো রামীনকে তবে কিছুই বলেনি মুখে।রামীনের সাথে কিছুটা সময় কাঁটিয়ে ওর গতিবিধি বুঝে বেরিয়ে আসে রোয়েন।তারপর নিজের কিছু লোককে ওর ওপর নজর রাখতে বলে ঘরে ফিরে আসে রোয়েন।বাড়ি ফিরে দেখে ঝুমু রোহাকে কোলে নিয়ে হাঁটাহাঁটি করছে।
রোয়েন কে দেখতেই ঝুমু বলল,
''মা আমাকে বের করে দিয়েছে রুম থেকে।রোহা ঘুমুচ্ছিলোনা তাই ওকে নিয়ে হাঁটছি ভাইয়া।তবে ও এতক্ষন খালার সাথে ছিলো।খালা বাথরুমে গেছেন তাই নিচে নিয়ে এসেছি।রিংকি ভাবি ও অসুস্থ তাই ওনার কাছে দেয়নি কেউ।"
রোয়েন রোহাকে কোলে নিয়ে বলল,
''রুহী কই?"
ঝুমু বলল,
''বড় ভাবি তো মায়ের সাথে আপনাদের রুমে।বলল বিরক্ত না করতে।"
রোয়েন অবাক হয়ে জানতে চাইলো,
''কে বলল রুহী নাকি মা?"
ঝুমু বলল,
''মা বলছে।"
রোয়েন রোহাকে নিয়ে উপরে যেতে যেতে বলল,
''খাবার গরম করতে বলো সুমনাকে।খিদে পেয়েছে খুব।"
রোয়েন রোহাকে নিয়ে রুমের বাহিরে এসে দাঁড়ায়।রুমের দরজা কিছুটা ভিড়ানো।ভেতরে কি হচ্ছে দেখতে তেমন একটা বেগ পেতে হলোনা রোয়েনকে।দেখতে পেলো ওর মা রুহীর চুলে তেল লাগিয়ে দিচ্ছে।আর দুজনে খোশ গল্পে মেতে উঠেছে।এরই মাঝে রুহী বলতে লাগলো,
''মা তোমার ছেলে এখনো ফেরেনি ফোন করতে হবে ওকে।আমার ফোনটা আশেপাশে তো দেখছিনা।"
তখনই রোয়েন রুমে প্রবেশ করে বলল,
''কাউকে কল করতে হবেনা রুহী।"
আনিলা ছেলেকে দেখে উঠে দাঁড়িয়ে বললেন,
''বাবা কখন আসলি তুই?"
রোয়েন খানিকটা হেসে বলল,
''একটু আগেই এলাম মা।তোমরা খেয়েছো?"
খেলাম তবে বৌ এখন ও খায়নি।কতোবার বললাম খেতে বসলোনা।তোর জন্য অপেক্ষা করেছে।জলদি ফ্রোশ হয়ে খেয়ে নেয় আর রোহাকে আমার কাছে দে।ও ঘুমিয়ে গেলে রুমে দিয়ে যাবো।তোরা খেয়ে নেয় জলদি।"
বলেই নাতনিকে কোলে নিয়ে রুমে চলে যান আনিলা।রুহী রোয়েনের চোখে চোখ রাখতেই দেখলো গতরাত থেকে আজ তার চোখজোড়া আরো বেশি হতাশায় পরিপূর্ণ।
উঠে হেঁটে হেঁটে মানুষটার কাছে এসে দাঁড়ায় রুহী।তারপর জিজ্ঞেস করলো,
''রামীন ভাইয়ার সাথে দেখা হয়েছে?"
রোয়েন মাথা ঝাঁকিয়ে বলল,
''হুম।আজ আসেনি অফিসে তাই আমি ওর বাসায় চলে যাই।মন থেকে পুরো ভেঙ্গে পড়েছে রামীন।আর জ্যাস ও তো রামীনের কোন কথাই শুনতে চাইলোনা।কি হচ্ছে এসব বুঝতে পারছিনা আমি।"
রুহীর মন ভীষন খারাপ হলো রামীনের কথা শুনে।আর ও নিজে ও অবাক জেসমিনের কথায়।এই মানুষটা কেন এমন করলো?সেদিন রাতে খেয়ে দেয়ে রুহী রিংকির রুমে আসে।রুয়েল একটু আগেই ঘরে ফিরে রোয়েন রুহীর সাথে রাতের খাবারটা শেষ করে রুমে এসেছে।তখনই রুমে আসে রুহী।রোহাকে রিংকি নিয়ে এসেছিলো নিজের ঘরে।রিংকিকে দুধ আর ঔষধ দিয়ে মেয়েকে নিয়ে রুমে চলে আসে রুহী।সেদিন রাতে যে যার মতো শুয়ে পড়ে।পরদিন সকালে রোয়েন ঝুমুকে ডেকে পাঠালো।নাস্তা শেষ করতেই জানতে পারে ওদের টিমের সিন্থিয়া গ্রামে চলে যাবে।ঢাকায় আর আসা হবেনা মেয়েটার।সিন্থিয়ার কাজ ছিলো নতুন মেম্বার যোগ দিলে তাদের কাজ বুঝিয়ে দেয়া।
তাই এখন কাউকে লাগবে যে সিন্থিয়ার কাজটা করতে পারবে।তাই তখনই ঝুমুর কথা মাথায় আসে রোয়েনের।মেয়েটার কাজ করার স্পৃহা আছে আর ও ভালো বোঝাতে পারবে বলে মনে হয়েছে। তাই দেরি না করেই ঝুমুকে ডেকে পাঠায় রোয়েন।ঝুমু আসতেই রোয়েন বলল,
''জব করবে?"
ঝুমু বলল,
''জি ভাইয়া করবো।কিন্তু আমার তো কোয়ালিফিকেশন নেই তেমন।ইন্টার পাশ করে অনার্সে ভর্তি হতে পারিনি।"
রোয়েন হেসে বলল,
''পড়াশুনা করতে চাও?"
ঝুমু মাথা ঝাঁকায়।রোয়েন হেসে বলল,
''ঠিক আছে কাল রেডি থেকো।আজই ভালো একটা কলেজে ভর্তির ব্যাবস্থা করছি তোমার।তবে আমার একটা হেল্প করতে হবে।পারবে?"
ঝুমু জিজ্ঞাসু দৃষ্টিতে চায় রোয়েনের দিকে।রোয়েন বলল,
''আমার অফিসে তোমাকে লাগবে।একজন এমপ্লয়ি চলে গেছে।আর্জেন্টলি একজনকে লাগবে আমার।আর এ মুহূর্তে তোমাকে বিশ্বাস করতে পারছি আমি।যেহেতু অনেক বছর আমার মায়ের সাথে তুমি ছিলে।"
ঝুমু বলল,
''করবো ভাইয়া।কবে থেকে জয়েন করবো আমি?"
রোয়েন বলল,
''আজই আসো।কাজ ও বুঝাতে হবে তোমাকে।"
রোয়েন হেসে বলল,
''ওকে রুহীর সাথে চলে এসো ও নিজে ও জয়েন করবে আজ।"
বলেই বেরিয়ে যায় রোয়েন।
চলবে.....

11/09/2023

Tabassum Riana
Part:88
আজ অনেকদিন পর রোয়েনের মায়াবতী রুপে সেজেছে রুহী।গায়ে সাদা শাড়ী জড়িয়েছে সেই সাথে চোখের নিচে মোটা করে কালো কাজল, কপালে ছোট কালো টিপ আর ঠোঁটে টুকটকে লাল লিপস্টিক।তারপর হাতজোড়া ভর্তি করলো বিয়েতে পাওয়া লাল কাঁচের চুড়ি।মানুষটা এসেছে অনেক আগেই।তাকে খেতে দিয়ে রুহী রুমে এসেই মেয়েকে খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছে।আজ রাতে না উঠলে হলো।তারপর সাজতে বসেছে আয়নার সামনে।চুল গুলো ভালো ভাবে আঁচড়ে বারকয়েক দেখে নিলো নিজেকে।তারপর বিছানায় বসে অপেক্ষা করতে থাকে মানুষটার জন্য।কিছুক্ষনের মাঝে রুমের দরজাটা খুলে রোয়েন ভিতরে প্রবেশ করে ধীর স্বরে ফোনে কথা বলতে বলতে ওয়াশরুমে চলে যায়।ওয়াশরুমের ভেতর থেকে ও কথা শোনা যাচ্ছিলো রোয়েনের।আর ফোনের অপরপাশের মানুষটা কে সেটা বুঝতে দেরি হলো না রুহীর।রামীন ভাইয়ার সাথে কথা বলছে রোয়েন।কথা শেষ করে ওয়াশরুম থেকে বেরিয়ে এসে চারিদিকে চোখ বুলিয়ে দোলনায় ঘুমিয়ে থাকা রোহাকে দেখতে পসয় রোয়েন।দোলনার দিকে এগুতে এগুতে বিড়বিড় করে বলতে থাকে,
'' ওকে দোলনায় দিলো কেন বেয়াদবটা?"
বলে মেয়েকে কোলে নিয়ে খাটের দিকে এগুতেই দেখলো রুহী বিছানায় বসে ভ্রু কুঁচকে তাকিয়ে ওর দিকে।অতঃপর রুহীকে সাদা শাড়ীতে দেখে রোয়েন মেয়েকে নিয়ে পিছিয়ে গিয়ে বলতে লাগলো,
''থাক আম্মাজান মাঝে মাঝে দোলনায় ঘুমালে ঘুম ভালো হবে।পাপা মাম্মা জ্বালাবেনা আপনাকে।"
রোয়েনের এই কাজে প্রচন্ড হাসি চলে আসে রুহীর।খিলখিলিয়ে হাসতে হাসতে বিছানায় শুয়ে পড়ে রুহী।ওর হাসির দমকে শাড়ীর আঁচল খানিকটা আলগা হয়ে একটু সরে আসে।আর সেখানে চোখ পড়ে রোয়েনের।রুহী কিছু একটা বলার জন্য উঠে বসতে গেলে রোয়েন পাশে বসে থামিয়ে দিয়ে রুহীর খালি পেটে হাত বুলিয়ে দিতে শুরু করে।রুহী কাঁপন ধরা কন্ঠে বলল,
''কি করছেন আপনি?একটা কথা ছিলো।"
রুহীর ঠোঁটে আঙ্গুল রেখে ফিসফিসিয়ে বলল,
''শশশ ডোন্ট টক,রোহা উঠে যাবে।"
রুহী রোয়েনের আঙ্গুলের ডগায় আলতো চুমু দিয়ে বলল,
''বলতে দিন।"
রুহীর পেটে আলতো চুমু দিয়ে বলল,
''এখন না কাল বলো।"
রুহী আবার বলতে গেলে রোয়েন এবার শক্ত করে জড়িয়ে ধরে ওর ওপর উঁবু হয়ে।রুহী আর কিছু বলতে পারেনা।শুধু অস্ফুট শব্দ করে স্বামীর ভালবাসায় মাখা ছোঁয়া উপভোগ করতে থাকে।মাঝ রাতে রোহার কান্নায় দুজনে সরে আসে একে অপর থেকে।রোয়েন থেকে সরে এসে রুহী বলতে লাগলো,
''রোহাকে একটু দেখুননা আমি ওয়াশরুমে যাবো।"
রোয়েন উঠে মেয়েকে কোলে নিয়ে ওর কান্না থামাতে চেষ্টা করে।কিন্তু রোহা সে তো কান্না থামানোর নাম ও নিচ্ছেনা।শেষমেষ রুহী ওকে খাইয়ে ঘুমপাড়িয়ে রোয়েনের পাশে শুয়ে পড়ে।
সেদিন থেকে আরো অনেকটা দিন পেরিয়ে যায়।রোয়েন রুহীর সময় বেশ ভালভাবেই কেঁটে যাচ্ছিলো পুরো পরিবার বিশেষ করে আনিলার সাথে।রোয়েন রুয়েল দুজনেই মাকে পেয়ে ভীষন খুশি।সারাদিনের ব্যাস্ততা সেড়ে দুজনে মাকে ঘিরে বসে থাকে।এমনকি দুই ভাই আনিলার দুই উরুতে মাথা রেখে বাচ্চাদের মতো শুয়ে মায়ের কথা শুনে।আর এসব দেখে রুহী রিংকি আর সাবিনা রহমান হেসে খুন।ওদের বেশ ভাল লাগে কারন দুজনে অবশেষে নিজেদের মাকে পেয়েছে।ছোটবেলায় কেউই তো মায়ের প্রকৃত ভালবাসা পায়নি।তবে এখন তার ঘাটতি কিছুটা তো কমছে।এদিকে আনিলার সাথে আসা মেয়ে ঝুমু বেশ মিলে গেছে ওদের সাথে।সবার ভালবাসা ওকে নিজের জীবনের সবচেয়ে কালোরাত্রির সময় টা একটু হলে ও ভুলে যেতে সাহায্য করছে।ওর সারাদিন কেঁটে যায় রুহী আর রোহার সাথে।রুহী আর রিংকিকে ভাবি আর রোয়েন আর রুয়েল কে ভাইয়া ডাকে ঝু্মু।সবাই ওকে বেশ আদর ও করে। এরই মাঝে রোয়েনের মনে হতে থাকে রামীন আর আগের মতো নেই।কেমন যেন ভেতর থেকে মরে গেছে বন্ধুটা।এই তো সেদিন রুহী অফিসের সবাই কে সেই সাথে রোয়েনের সব বন্ধুদের দাওয়াত করেছিলো।সেই সুবাদে রামীন ও আসে রোয়েনের বাসায়।সবাই খেয়াল করেছে রামীন কেমন চুপ চাপ হয়ে গেছে।ওর মাঝে সেই দূরন্তপনার মানুষটা নেই।চেহারাটায়ও কেমন কালচে বর্ন ধারন করেছে।রোয়েন এই ব্যাপারটা কয়েকদিন ধরে খেয়াল করেছিলো তাই রুহীকে দিয়ে সবাইকে দাওয়াত করলো যেন ওকে বেশি সময়ের জন্য পায়।কারন রামীন আজকাল অফিসে ও তেমন আসেনা।আসলে ও কারোর সাথে তেমন কথা ও বলেনা।খুব জলদি চলে ও যায় কোন এক বাহানা করে।
রোয়েন ব্যাপারটা নিয়ে কথা বলতে চেয়ে ও পারছেনা।কারন রামীন ওকে সেই সুযোগ টাই দিচ্ছেনা।সেদিন সন্ধ্যায় রোয়েন রামীনকে প্রায় টেনে নিয়ে আসে ছাদে।ও চলে যেতেই নিচ্ছিলো।তার আগে সবাই চলে গিয়েছিলো।কিন্তু রুহীর আবদারে ওকে বেশ কিছুক্ষন থাকতে হয়।এতক্ষন রোহাকে কোলে নিয়ে আদর করছিলো রামীন।তারপর চলে যেতে চাইতেই রোয়েন ওকে ছাদে এনে দরজা আটকে শক্ত কন্ঠে বলতে লাগলো,
''কি হইছে তোর?"
রামীন রোয়েনের দিকে তাকাতে পারেনা।বলতে লাগলো,
''কই কি হবে?"
রোয়েন বলল,
''বেকুব পেয়েছিস?নিজের কি হাল করে রেখেছিস আর বলছিস কিছু হয়নি।"
রামীন হেসে বলল,
''আরে গন্ডার কিছু হয়নি।"
রোয়েন এবার সজোরে ঘুসি মারে রামীনের পেটে তারপর ওর শার্টের কলার ধরে মাটিতে শুইয়ে চেঁপে ধরে বলতে লাগলো,
''আর একটা কথাও লুকিয়েছিস তাহলে তোর আমার সব সম্পর্ক এখানে শেষ।"
রামীন কি বলবে বুঝতে পারছেনা।এই বন্ধুকে কখনো হারাতে চায় না।এই বন্ধুর জন্য নিজের ভালবাসার মানুষটাকে ছেড়ে দিলো আর তাকে কি করে হারাবে রামীন?কাঁদতে লাগলো রামীন।রামীনকে কাঁদতে দেখে চমকে উঠে রোয়েন।বলতে লাগলো,
''কি হয়েছে তোর?বলতো।"
রামীন রোয়েনকে জড়িয়ে কাঁদছে কিছু বলছে ও না।রোয়েন আবার ও বলল,
''কি হয়েছে বল না।"
রামীন এবার চুপ থাকতে পারলোনা।বলতে লাগলো,
''ভালবাসা বলতে কিছু নাইরে দোস্ত।ভালবাসা মিথ্যা নারীর ভালোবাসা মিথ্যা।ভালবাসা সবার কপালে থাকে না রোয়েন আমার নেই।"
রোয়েন অস্থির ভাবে বলল,
''কি হয়েছে বলবি তো?"
রামীন সরে এসে নিজের ফোন থেকে একটা ছবি বের করে রোয়েনের সামনে ধরে।যা দেখে রোয়েন কোন কিছু বলার ভাষা হারিয়ে ফেললো।
রামীনের দিকে তাকায় ও।যেন বিশ্বাস করতে পারছেনা।আজ ও নিজে ও নারীর ভালবাসাকে মিথ্যা বলতে আরেকবার বাধ্য হতো যদি জীবনে রুহী না থাকতো।রোয়েন কম্পন কন্ঠে জিজ্ঞেস করলো,
''কাহিনী সত্যি?"
রামীন বিদ্রুপ হেসে বলল,
''তোর মনে হচ্ছে আমি ফাজলামো করছি।লোকটার নাম ড্যানিয়েল।জ্যাস সিটিজেনশিপ পেতেই ড্যানিয়েলকে বিয়ে করেছে।"
রোয়েন কি বলবে ভেবে পাচ্ছেনা।ও নিজে ও বুঝতে পারছেনা জেসমিন কেন এমন করলো?
চলবে.....

11/09/2023

Tabassum Riana
Part:87
আনিলা ফিরে এসেছে বড় ছেলের বাসায়। সাথে ছিলো সেই মেয়েটা রুয়েল আর রিংকি।রামীন নাকি গাড়ি থেকে নেমে নিজের বাসায় চলে গিয়েছে।সবাই অনেক বার থাকতে বলেছিলো ওকে কিন্তু থাকেনি ও।রুহী রোয়েন আর সাবিনা রহমান আনিলা আর বাকিদের অপেক্ষাতেই ছিলো।বাসা গুছিয়েছে রুহী আর সুমনা মিলে আর রোয়েন রফিককে নিয়ে বাজার করেছে সেই সকালেই।এরপরই কাপড় কোমড়ে গুঁজে রান্নাবান্না শুরু করে রুহী।সকালে রোহাকে খাইয়ে দিয়ে নিজে ও নাস্তা সেড়ে নিয়েছিলো ও।তারমাঝেই রোয়েন বাজারে চলে যায়।আজ মা আসবে বলেই নিজে বাজার করতে চলে গেছে।ততক্ষনে সুমনা সহ ঘর গুছিয়ে নেয় রুহী।আজ ওর পরিবার পরিপূর্ণ হতে চলেছে।রোয়েন বাজার থেকে ফিরেই মেয়েকে কোলে নিয়ে রুয়েলকে কল দিয়ে জেনে নেয় কতক্ষন লাগবে ওদের।রুয়েল জানিয়ে দেয় দুপুর দুটো বাজে এয়ারপোর্টে পৌছাবে।মেয়ের জন্য একটা ঝুনঝুনি নিয়ে এসেছিলো রোয়েন।সেটা বাজিয়ে রোহাকে বলছিলো,
''আম্মু কেমন লাগছে খেলনাটা?এনেছিতো তোর ভালোর জন্য মা।সারারাত এটা বাজিয়ে ঘুমের বারোটা বাজাবি সেটাতো জানা কথা।"
রোহা কতটুকু বুঝলো কে জানে।হাসতে থাকে রোয়েনের কোলে থেকে।মেয়ের সাথে কথা বলতে বলতে পাকঘরে রুহীর সামনে এসে দাঁড়ায় রোয়েন।রুহী তখন পোলাউ নাড়ছিলো।রোয়েনের কথা শুনতে পেয়ে সামনে তাকিয়ে হেসে বলল,
''কি হলো?বাবা মেয়ের এত কি কথা হচ্ছে রোয়েন?"
রোয়েন হেসে বলল,
''তোমাকে কেন বলবো?আমাদের বাবা মেয়োর সিক্রেট এটা তাই না মা?"
বলেই মেয়ের গালে চুমু দিয়ে সুমনাকে বলল,
''ওকে খালার কোলে দিয়ে মায়ের জন্য যে রুমটা ঠিক করেছি সেখানে বিছানার ওপর দুটো ব্যাগ দেখবি।একটা বেডশীট আছে আর পর্দা আছে।চেঞ্জ করে ফেল জলদি করে।"
রুহী অবাক হয়ে বলল,
''নতুন চাদর বিছিয়েছি।"
রোয়েন চোখ রাঙ্গিয়ে বলল,
''বেশি বুঝবেনা রুহী।"
বলেই সুমনার কোলে রোহা কে তুলে দেয় রোয়েন।রোহাকে নিয়ে সুমনা রোয়েন রুহীর আড়াল হতেই রোয়েন পাকঘরে এসে রুহীর কোমড়ে গুঁজে দেয়া শাড়ীর কোনাটুকু খুলে দিয়েই রুহীর খালি কোমড়ে হাত গলিয়ে অপর হাতে কোমড়ের অপরপাশে হাত চেঁপে ধরে রুহীকে কিছুটা ওপরে তুলে কেবিনেটের ওপর বসিয়ে ওর কপালে গালে আলতোভাবে ঠোঁট ছুঁয়ে দিতে থাকে।রোয়েনের হঠাৎ এমন আদরে অবাক হয়ে গেলো রুহী।রোয়েনের দুকাঁধে হাত রেখে বলল,
''কি করছেন?কেউ চলে আসবে তো।"
রুহীর ঠোঁটে শেষ চুমু দিয়ে খানিকটা সরে এসে বলল,
''কতমাস পর আদর করতে এসেছি।এতদিনে সুযোগ পেয়েছি আর এখন থামাচ্ছো কেন রুহী?"
রুহী মৃদু হেসে বলল,
''আই লাভ ইউ রোয়েন।আমি ও চাই আপনার আদর পেতে তবে এখন না।কেউ চলে আসতে পারে তারওপর ওরা আসবে রান্না বান্না শেষ করতে হবে।"
রোয়েন সরে এসে নিজের শার্টের কলার ঠিক করতে করতে বলতে লাগলো,
''যাহ ছেড়ে দিলাম বাচ্চা মানুষ,রাতে দেখে নিবো তোমায়।"
রুহী গাল ভেংচি কেঁটে রান্নায় মন দিলো।দুপুর আড়াইটায় রুয়েল রিংকি চলে এলো আনিলা আর ঐ মেয়েটাকে নিয়ে।আনিলা বাসায় আসতেই যেন পুরো পরিবেশটা উৎসব মুখর হয়ে গেলো।রোয়েন কে দেখে জড়িয়ে ধরেন আনিলা সাথে রুহীকে ও।তারপর একে একে সবার সাথে কথা বলে বোনের রুমে চলে যান সেখানে রোহা ঘুমিয়ে আছে শুনে।
তারপর আরকি গোসল সেড়ে নাতনীর পাশে শুয়ে চোখের পানি ঝড়াতে লাগলেন।কারন এখানে আরাভের ও থাকার কথা ছিলো কিন্তু জানোয়ার গুলোর কারনে বাচ্চাটাকে অকালে প্রান দিতে হলো।একটু পরই রুহী রুমে এসে বলল,
''খালাম্মু খেতে চলো।ও একটু আগেই ঘুমিয়েছে উঠতে সন্ধ্যা হবে।"
আনিলা হেসে বললেন,
''ভালোই তো।রাতে ঘুম হয় ওর?"
রুহী বলতে লাগলো,
''সেটা হয় নাকি?সন্ধ্যায় উঠে একটু খেয়ে আবার ঘুম দিবে সেই ঘুমে ম্যাডাম একটা বাজে উঠবে আর ঘুমাবে না।আরাভ টা আবার ভালো ঘুমায় একদম জ্বালায় না।"
কথাটা শেষ করতেই রুহীর গলা আটকে এলো।ও কি মাত্র ওর ছেলের নাম নিলো?চোখজোড়া ছলছল করে উঠে রুহীর।আনিলা ও ছলছল চোখে মেয়েকে দেখছেন।রুহীর মুখ দেখে ওনার যেন কলিজা ফেটে যাচ্ছিলো তাই বিলম্ব না করে ওকে বুকে টেনে নেন। রুহী কাঁদতে শুরু করে আনিলার বুকে পড়ে।আনিলা ও কাঁদতে শুরু করেন নাতি হারানো বেদনায়।সেদিন দুপুরের খাবার শেষে যে যার রুমে চলে গেলো।রুহী ঘুমন্ত রোহাকে নিয়ে এলো ঘরে।রোয়েন বাহিরে চলে গেছে খেয়েই।রিংকি ও খুব ক্লান্ত তাই রুয়েল ওকে রুমে নিয়ে দরজা লাগিয়ে দিয়েছে।নতুন মেয়েটাকে ঘুমাতে দিয়ে রুমে চলে এসেছে রুহী।
এদিকে অফিসে এসে রফিককে ডেকে পাঠায় রোয়েন।রফিক আসতেই রোয়েন বলল,
''তোমাকে আর অফিসে আসতে হবেনা।"
রফিক ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করে কেন স্যার?কোন ভুল হয়েছে আমার?প্লিজ স্যার এমন করবেননা।আপনাকে আমি ছাড়তে পারবোনা।স্যার আমার ভুলটাকি বলেন তো?আমি শুধরে নিবো কিন্তু আপনাকে ছাড়তে পারবোনা।"
রোয়েন রেগে বলল,
''কে বলছে আমাকে ছাড়তে?ঘরে থেকে কাজ করবে।আর কত কাজ করবে বলো তো?তোমার ছেলে বিদেশে থেকে কি করছে?কোন সাহায্য করছে?তোমার বয়স হয়েছে এখন আর আসতে হবে না ঘরে থেকে কাজ করতে পারবে।"
রফিকের মনে হঠাৎ রোয়েনের জন্য সম্মান অনেকখানি বেড়ে গেলো।এসে রোয়েনের পায়ের কাছে বসতে নিতেই রোয়েন বলল,
'পাগল হয়ে গেছো রফিক?কি করছো এসব?"
রফিক বলতে লাগলো,
''স্যার আপনি সবসময় আমাদের জন্য অনেক চিন্তা করে গেছেন।কিন্তু এখানে আমার দায়িত্বটা পালন কে করবে?নতুন লোক দেখেছেন?নাকি রামীন স্যার দেখবে?"
রোয়েন বলল,
''লোক দেখেছি সে একটু পরেই জয়েন করবে।তাকে তুমি ভালো করেই চেনো।"
রফিক অবাক হয়ে বলল,
''আমি চিনি?"
রোয়েন বলল,
''হুম চিনো।আসলে দেখবে সে কে।"
রফিক বলল,
''তাহলে কাজ গুলো গুছিয়ে নেই গিয়ে।"
বলেই রফিক বেরুতেই দেখলো ওর ডেস্কে একজন কি যেন খুঁজছে।অবাক হয়ে ডেস্কের কাছে গিয়েই বললেন,
''কে আপনি?এটা আমার ডেস্ক?কি খুঁজছেন?"
তখনই শামীম বলল,
''বাবা আমার একটা ফাইল ছিলো আপনার এখানে সেটাই খুঁজছি।কথাটা বলে মাথা তুলে শ্বশুরের দিকে তাকায় শামীম।তারপর রফিককে সালাম দিয়ে বলল,
''ভালো আছেন বাবা?"
রফিক কি বলবে বুঝতে পারছেনা।তারপর শামীম আবার ও কাজ করবে এখানে?শামীম বলল,
''আপনি বসুন আমি স্যারের সাথে দেখা করে আসি।"
বলেই রোয়েনের রুমের দিকে এগিয়ে গেলো শামীম।শামীম বসে আছে রোয়েনের সামনে।রোয়েন বলতে লাগলো,
''দেরি করেই ডেকে ফেললাম তোমাদের। বৌ বাচ্চা ভালো আছে?"
শামীম বলল,
''আলহামদুলিল্লাহ স্যার।"
রোয়েন বলল,
''ঐদিন বেশিই বলেছিলাম মাফ করে দিও।"
শামীম হেসে বলল,
"স্যার প্লিজ মাফ চেয়ে ছোট করবেননা।সবই তো পরিকল্পনা মোতাবেক হয়েছে।প্রথমে খারাপ লাগছিলো পরে ফোনে আপনার কথা শুনে শান্তি পেয়েছি।এটলিস্ট একসুযোগে আরাভ বাবার খুনি শাস্তি পেলো এটাই অনেক।"
চলবে....

Videos (show all)

Hi everyone! 🌟 You can support me by sending Stars – they help me earn money to keep making content that you love.Whenev...

Website