মুসলিম - The Sign of Peace
রাসুলুল্লাহ(সঃ) বলেছেন,
প্রচার করো আমার পক্ষ থেকে একটি মাত্র আয়াত হলেও।
সহিহ হাদিসঃ ৩৪৬১
সৎ সঙ্গী পাওয়ার দোয়া
শাইখ মতিউর রহমান মাদানী (হাফিয্বাহুল্লাহ)
𖣔আলকামাহ (রহ.) একবার সিরিয়ায় গেলেন। যখন মসজিদে প্রবেশ করলেন, তখন তিনি দু’আ করলেন, হে আল্লাহ্! আমাকে একজন নেক্কার সঙ্গী মিলিয়ে দিন। [বুখারী : ৩৭৪৩]
”اللَّهُمَّ يَسِّرْ لي جَلِيسًا صَالِحًا“
ফলে তিনি সাহাবী আবু দারদাহ (রাঃ) এর সাক্ষাৎ লাভ করেন।
[বুখারী : ৩৭৪৩]
আমি একবার আমার শাইখকে অভিযোগ করলাম-
শাইখ! আমি বই পড়ি,কিন্তু শেষ করার পর আমার কিছুই মনে থাকে না।
শাইখ আমার দিকে একটি খেজুর বাড়িয়ে দিয়ে বললেন- "এটা চিবিয়ে খাও।" আমি তাই করলাম।
শাইখ: এখন শারিরীক কোন বৃদ্ধি টের পাচ্ছো?
আমি: না তো!
শাইখ: তুমি অনুভব না করলেও খেজুরটি কিন্তু আলাদা আলাদা হয়ে তোমার রক্ত, মাংস, হাড্ডি, চামড়া, চুল ও নখে পরিণত হয়েছে।
ঠিক এমনিভাবে আমরা যখন কোন বই পড়ি তখন তা আমাদের অগোচরেই আমাদের ভাষাকে শক্তিশালী করে,জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করে,চরিত্রকে শুদ্ধ করে,লেখনী ও বাচনভঙ্গি উন্নত করে।
-শাইখ সালমান আল আওদাহ (হাফি.)
আমার প্রভু! ক্ষমা কর এবং করুণা কর, কেননা তুমি দয়াকারীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ!
(আল কুরআন 23:118)
▌উসমান ইবনে হাকিম رحمه الله বলেন—
❝তার সাথে বন্ধুত্ব কর যে দ্বীনের ক্ষেত্রে তোমার উপরে এবং দুনিয়াবি জীবনে তোমার চেয়ে নিম্ন পর্যায়ের।❞
● [ابن ابي دنيا صفحة ٤٥]
স্বীয় ঘরকে শয়তানের অনুপ্রবেশ থেকে সংরক্ষণের আমল সমূহ কি কি?
শয়তান থেকে ঘরকে সংরক্ষণের কতিপয় আমল নিম্নে পরিবেশিত হল:
১. ঘরে প্রবেশ করার সময় "বিসমিল্লাহ" বলে প্রবেশ করা। (মুসলিম)
২. ঘরে প্রবেশ করে সেখানে অবস্থানরত লোকদেরকে সালাম দেয়া।
আল্লাহর বাণীঃ“ তবে যখন তোমরা গৃহে প্রবেশ করবে তখন তোমরা তোমাদের স্বজনদের প্রতি সালাম করবে অভিবাদন স্বরূপ যা আল্লাহর নিকট হতে কল্যাণময় ও পবিত্র”। (সূরা নূর-৬১)
নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃতুমি যখন তোমার ঘরে প্রবেশ করবে তখন সালাম দিবে তা তোমার জন্য এবং তোমার পরিবারের জন্য বরকত হবে”। (তিরমিযী)
৩. পানাহারের সময় দোয়া পাঠ করাঃ
রাসূলুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
“ যখন কোন ব্যক্তি তার ঘরে প্রবেশ করার সময় এবং খাবার খাওয়ার সময় দোয়া পাঠ করে তখন শয়তান বলেঃ আজ এখানে তোমাদের রাত্রিযাপন এবং নৈশ ভোজের কোন সুযোগ নেই”। (মুসলিম)
৪. ঘরে সূরা বাকারা তেলওয়াত করা।
রাসূলুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
“সবকিছুরই একটি চুড়া থাকে আর কোরআনের চুড়াহল সূরা বাকারা, শয়তান যখন সূরা বাকারার তেলাওয়াত শুনে তখন সে ঐ ঘর থেকে বের হয়ে যায় যেখনে তা তেলওয়াত করা হয়”। (হাকেম)
৫. গান-বাজনা এবং গান-বাজনার সরন্জাম থেকে ঘরকে পরিচ্ছন্ন রাখা। কেননা আ্আল্লাহর যিকির যেমন শয়তানকে দূরে রাখে তেমনিভাবে গান এবং বাদ্য যন্ত্রের আওয়াজ রহমতের ফেরেশ্তাগণকে দূরে রাখে। আর ঘর থেকে যখন ফেরেশ্তাগণ বের হয়ে যায় তখন ওখনে শয়তান তার রাজত্ব কায়েম করে।
আল্লাহর বাণীঃ“ তোর আহ্বানে তাদের মধ্যে যাকে পারিস তাকে সত্যচুত কর” । (সূরা বানী ইসরাঈল- ৬৪)
মুজাহিদ এই আয়াতের তাফসীরে বলেছেনঃ গান-বাজনা হল শয়তানের আওয়াজ।
৬. ছবি এবং বিভিন্ন জীব জন্তুর মূর্তি থেকে ঘরকে পরিচ্ছন্ন রাখা।
রাসূলুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ"যে ঘরে মূর্তি বা ছবি থাকে সেখানে ফেরেশ্তা প্রবেশ করে না”। (মুসলিম)
৭. ঘরকে কুকুর ও প্রাণীর ছবি থেকে পরিচ্ছন্ন রাখা।
রাসূলুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ
“ যে ঘরে (প্রাণীর) ছবি এবং কুকুর থাকে সেঘরে ফেরেশ্তা প্রবেশ করে না”। (বোখারী)
লেখক: শাইখ আব্দুল্লাহিল হাদী ইউসুফ
পুরুষের এইরকম গাইরত থাকতে হয়। গাইরতহীন পুরুষ মানুষই না......
মুগীরা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, 'সা'দ ইবনু উবাদা (রদিয়াল্লাহু আনহু)) বলেছেন, ‘আমি যদি আমার স্ত্রীর সঙ্গে কোনো পরপুরুষকে দেখি, তবে আমি তরবারির ধারালো দিক দিয়ে তাকে আঘাত করবো।' তার এ উক্তি নবিজি -এর নিকট পৌঁছলে তিনি বললেন, ‘তোমরা কি সা'দের আত্মমর্যাদাবোধ দেখে অবাক হচ্ছো? আমি ওর তুলনায় বেশি আত্মসম্মান রাখি। আর আল্লাহ আমার থেকেও বেশি (গাইরত) আত্মসম্মানের অধিকারী।
বুখারি-৬৮৪৬, মুসলিম-১৪৯৯
বই-আত্মার ওষুধ
ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম রাহিমাহুল্লাহ
হাকীম আত-তিরমিযী রাহিমাহুল্লাহ বলেন,
"পাঁচজনের কল্যাণ পাঁচ জায়গায়:
1- বালকের কল্যাণ মক্তবে।
2- যুবকের কল্যাণ ইলমে।
3- বৃদ্ধের কল্যাণ মসজিদে।
4- নারীর কল্যাণ গৃহে।
5- ক্ষতিকর ব্যক্তির কল্যাণ কারাগারে।
- যাহাবী, আস সিয়ার 13/441
© প্রফেসর ডঃ আবু বকর জাকারিয়া
জগদ্বিখ্যাত ক্বারি আল-মিনশাবি ও শায়খ হুসারি মারা গেছেন। কিন্তু লোকেরা এখনও তাদের কাছ থেকে আল্লাহর কিতাব শুনছে এবং শিখছে।
একইভাবে অনেক শিল্পী মারা গেছে এবং মানুষ এখনও তাদের কাছ থেকে হারাম শুনছে।
ফেরেশতারা এখনও তাদের প্রত্যেকের জন্য একটি হিসাব লিখছেন।অতঃপর কেয়ামতের দিন তারা প্রত্যেকেই দুনিয়াতে যা রোপণ করেছে তার ফল পাবে।
অতএব, আপনি এখনই নিজের হিসাব চেক করুন!
কুয়েতি ক্বারি শায়খ আহমাদ নুফাইসের টুইট
#আরবি_থেকে_আলী_হাসান
“আমি ধনী ব্যক্তিদের সাথে উঠাবসা করতাম। এজন্য সর্বদা আমার মনে এ দুশ্চিন্তা আসতো যে, অমুকের কাপড় তো আমার কাপড়ের চেয়ে অনেক সুন্দর-দামী। আর অমুকের বাহন (ঘোড়া,গাধা) আমার বাহনের চেয়ে উত্তম।
অতঃপর আমি গরীব,ফকিরদের সাথে উঠাবসা শুরু করলাম, আর এতে আমি মনের ভেতর এক প্রফুল্ল প্রশান্তি লাভ করি।”
___________
🎙️ইমাম আউন বিন আবদুল্লাহ রহিমাহুল্লাহ
📖 আল-উযলাতুল খত্তাবী: ২৮
শায়খুল ইসলাম ইবনু তাইমিয়া রহিমাহুল্লাহ বলেন :
ভালো হৃদয়ের মানুষগুলো সবসময়ই পরোপকার ও ক্ষমা করা মাঝে আনন্দ পায়, পক্ষান্তরে দুষ্টু হৃদয়ের মানুষগুলো দুশমনি ও দুষ্টুমি করার মাধ্যমেই শান্তি পায়।
মাজমু ফাতওয়া
ইলম'!
এটাই প্রকৃত ভালোবাসার স্বাদ আস্বাদন।
শাইখ আলবানী رحمه الله এর স্ত্রী উম্মুল ফাদ্বল বলেন, ‘‘এরকম বহুবার হয়েছে যে, আমি ঘুম থেকে জেগে দেখি তিনি বিছানায় নেই। আমি তাকে খুঁজি এবং দেখি তিনি বাতি জ্বালিয়ে কিতাব সমূহে ডুবে আছেন।
তাকে দেখে আমি অবাক হই এবং তিনি আমাকে বলেন, "এসব আমার ভালবাসা!’'
আল্লাহ তাকে রহম করুন।
বইঃ [বিংশ শতাব্দীর তিন কিংবদন্তী, পৃঃ ১২১]
(Collected)
একজন জ্ঞানী মানুষকে জিজ্ঞাসা করা হলো, ‘আপনি কীভাবে বন্ধুত্বের প্রতিদান দেন?’ উত্তরে তিনি বলেন, ‘বন্ধুর অনুপস্থিতিতে আমি তার জন্য দু‘আ করি।’
ইসলামের একটি মহান সৌন্দর্য হলো, আপনি পৃথিবীর প্রতিটি মানুষকে দু‘আর মাধ্যমে সাহায্য করতে পারবেন, যদিও সামনাসামনি সাহায্য করার সুযোগ অথবা যোগ্যতা না থাকে। অধিকন্তু, আপনার দু‘আর প্রতিউত্তরে ফেরেশতারা আপনার জন্য একই দু‘আ করবে। মানে, আপনি অপর মুসলিমের জন্য যা চাবেন, ফেরেশতারাও আল্লাহর নিকট আপনার জন্য বলবেন, ‘তোমার জন্যও অনুরূপ (হোক)।’ [মুসলিম, আস-সহিহ: ২৭৩৩] আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
"শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়াহ (رحمه الله) বলেছেনঃ
অন্তরকে সৃষ্টি-ই করা হয়েছে আল্লাহর স্মরণের জন্য।"
মাজমূ' আল ফাতাওয়া (৯/৩১২)
আমাদের সমাজ গুলোতে মনে করে নারীদের জন্য পশু-পাখি জবেহ করার অনুমতি নেই, যেমনটি ছোটকালে লক্ষ্য করতাম।
প্রশ্ন: নারীদের জন্য কি পশু জবেহ করা জায়েয? এবং নারী কর্তৃক জবেহকৃত পশুর মাংস খাওয়া কি জায়েয?
উত্তর:
ইবনু কা‘ব ইবনু মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি তার পিতা হতে বর্ণনা করেন যে, তার কতকগুলো ছাগল-ভেড়া ছিল, যা সাল্‘ নামক স্থানে চরে বেড়াতো। একদিন আমাদের এক দাসী দেখলো যে, আমাদের ছাগল ভেড়ার মধ্যে একটি ছাগল মারা যাচ্ছে। তখন সে একটি পাথর ভেঙ্গে তা দিয়ে ছাগলটাকে যবেহ করে দিল। কা‘ব তাদেরকে বললেন, তোমরা এটা খেয়ো না, যে পর্যন্ত না আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে জিজ্ঞেস করে আসি অথবা কাউকে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট জিজ্ঞেস করতে পাঠাই। তিনি নিজেই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -কে এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করেছিলেন অথবা কাউকে পাঠিয়েছিলেন। তিনি [নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ] তা খাওয়ার হুকুম দিয়েছিলেন। উবাইদুল্লাহ বলেন, এ কথাটা আমার কাছে খুব ভাল লাগল যে, দাসী হয়েও সে ছাগলটাকে যবেহ করল। (৫৫০১, ৫৫০২, ৫৫০৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২১৩৯, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২১৫৬)
বুখারী ২৩০৪
হাদিসের মানঃ সহিহ
ইমাম বোখারি রহ. বলেছেন : 'সাহাবি আবু মুসা আশআরী রা. নিজের মেয়েদের নির্দেশ দিয়েছেন তারা যেন নিজ হাতে নিজেদের কোরবানির পশু জবেহ করেন।'
[ফাতহুল বারী ১০/২১]
"পুরুষের মতো নারীরও পশু জবেহ করার অনুমতি রয়েছে, যেমনটি সহীহভাবে রাসূলুল্লাহ ﷺএর সুন্নাহ থেকে বর্ণিত। নারী কর্তৃক জবেহকৃত পশু থেকে খাওয়াও জায়েয, যদি সে মুসলিম হয় অথবা আহলে কিতাবী হলে যতক্ষণ না এটি ইসলামী শরঈ অনুযায়ী জবেহ হয় {তাহলে খাওয়া জায়েয}। উল্লেখ্য যে নারীর জন্য পশু জবেহ করার অনুমতি রয়েছে এমনকি যখন জবেহ করার মতো পুরুষ উপস্থিত থাকে। অতএব পুরুষের উপস্থিতি নারী কর্তৃক জবেহকৃত প্রাণী হালাল হবার কোনো শর্ত নয়।"
[মাজমু ফাতওয়া লি ইবনে বায, খণ্ড 23 পৃষ্ঠা 82]।
"ইমাম ইবনে তাইমিয়্যাহ রহিমাহুল্লাহও এ সম্পর্কে মত দিয়েছেন। অর্থাৎ জায়েয বলেছেন যদিও সেই নারী ঋতুমতি অবস্থায় থাকে।"
..
অনূদিত
প্রশ্ন: সময়ের বরকত কি উঠে যাচ্ছে?
--------------------
উত্তর:
কিয়ামতের পূর্বে সময়ের বরকত উঠে যাওয়া প্রসঙ্গে হাদিস বর্ণিত হয়েছে। যেমন:
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم " لاَ تَقُومُ السَّاعَةُ حَتَّى يُقْبَضَ الْعِلْمُ، وَتَكْثُرَ الزَّلاَزِلُ، وَيَتَقَارَبَ الزَّمَانُ، وَتَظْهَرَ الْفِتَنُ، وَيَكْثُرَ الْهَرْجُ ـ وَهْوَ الْقَتْلُ الْقَتْلُ ـ حَتَّى يَكْثُرَ فِيكُمُ الْمَالُ فَيَفِيضُ ".
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কিয়ামত কায়েম হবে না, যে পর্যন্ত না ইল্ম উঠিয়ে নেওয়া হবে, অধিক পরিমাণে ভূমিকম্প হবে, সময় সংকুচিত হয়ে আসবে, ফিতনা প্রকাশ পাবে এবং হারজ বৃদ্ধি পাবে। হারজ অর্থ খুনখারাবী। তোমাদের সম্পদ এত বৃদ্ধি পাবে যে, উপচে পড়বে।
(সহীহ বুখারী (ইফাঃ) অধ্যায়ঃ ১৫/ বৃষ্টির জন্য দু'আ (كتاب الاستسقاء) পরিচ্ছদঃ ৬৬১. ভুমিকম্প ও কিয়ামতের আলামত সম্পর্কে যা বর্ণিত হয়েছে। হাদিস নম্বরঃ [979])
“সময় সংকুচিত হয়ে আসবে” এ কথার অর্থ:
-------------------------
❑ ইমাম নওবী রহ. বলেন “সময় সংকুচিত হয়ে আসবে” এ কথার
অর্থ হল,“সময় থেকে বরকত উঠে যাবে।”
❑ ইবনে হাজার আসকালানী রাহ. বলেন:
“সঠিক কথা বল, সব কিছু থেকে বরকত উঠে যাবে। এমনকি সময় থেকেও। এটি কিয়ামত সন্নিকটে আসার আলামত।”
❑ কাযী ইয়াযও উক্ত মতকে সমর্থন করেছেন।
❑ ইমাম ইবনুল কাইয়েম রাহ. বলেন: সব কিছু থেকে (এমনকি সময় থেকেও) বরকত চলে যাওয়ার একটি কারণ হল, পাপচার।
সুতরাং ‘সময়ের বরকত উঠে গেছে’ বলে বসে না থেকে আমাদের কর্তব্য হল, সুপরিকল্পিতভাবে সময়ের সর্বোচ্চ ব্যবহার করা। পরিকল্পিতভাবে অধিক পরিমানে দ্বীন ও দুনিয়া কল্যাণকর কাজ করা এবং সময়ের অপচয় রোধ করা।
সেই সাথে পাপচার থেকে দূরে থাকা। তাহলে ইনশআল্লাহ, আল্লাহর রহমতে আমরা অল্প সময়েও অনেক কল্যাণকর কাজ আঞ্জাম দিতে সক্ষম হবো। আল্লাহ তাওফিক দান করুন। আমীন।
--------------------------
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
জুবাইল সৌদি আরব
গণকের প্রতারণা/ধোকা
اِلَّا مَنِ اسۡتَرَقَ السَّمۡعَ فَاَتۡبَعَهٗ شِهَابٌ مُّبِیۡنٌ ﴿۱۸﴾
অর্থঃ কিন্তু কেউ চুরি করে(১) শুনতে চাইলে(২) প্রদীপ্ত শিখা(৩) তার পশ্চাদ্ধাবন করে। সূরাঃ আল-হিজর (আয়াতঃ ১৮)
(১) অর্থাৎ যেসব শয়তান তাদের বন্ধু ও পৃষ্ঠপোষকদেরকে গায়েবের খবর এনে দেবার চেষ্টা করে থাকে, যাদের সাহায্যে অনেক জ্যোতিষী, গণক ও ফকির বেশধারী বহুরূপী অদৃশ্য জ্ঞানের ভড়ং দেখিয়ে থাকে, গায়েবের খবর জানার কোন একটি উপায়-উপকরণও আসলে তাদের আয়ত্বে নেই। তারা চুরি-চামারি করে কিছু শুনে নেবার চেষ্টা অবশ্যি করে থাকে।
(২) হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ “মাঝে মাঝে ফিরিশতারা আকাশের নীচে মেঘমালার স্তর পর্যন্ত অবতরণ করত এবং আসমানের সংবাদাদী নিয়ে পরস্পর আলোচনা করত। শয়তানরা শূন্যে আত্মগোপন করে এসব সংবাদ শুনত এবং গণকদের কাছে তা গোপনে পৌছিয়ে দিত। গণকরা এগুলোর সাথে শত মিথ্যা নিজেদের পক্ষ থেকে জুড়ে দিয়ে তা বলে বেড়ায়।” [বুখারীঃ ৩২১০, ২২২৮] পরে উল্কাপাতের মাধ্যমে তা বন্ধ করে দেয়া হয়। অন্য এক হাদীসে এসেছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আল্লাহ যখন আসমানে কোন বিষয়ের ফয়সালা করেন তখন ফেরেশতাগণ তার নির্দেশের আনুগত্য স্বরূপ তাদের ডানাগুলোকে মারতে থাকে তাতে পাথরের উপর জিঞ্জির পড়ার মত শব্দ অনুভূত হয়। তারপর যখন তাদের অন্তর থেকে ভয়ভীতি দূর হয় তখন তারা বলতে থাকেঃ তোমাদের প্রভু কি বলেছেন? তারাই আবার বলেঃ হক্ক বলেছেন, তিনি বড়, মহান। কান লাগিয়ে কথাচোরগণ এ কথোপকথন শুনতে পায়।
আর এসব কান লাগিয়ে শ্রবণকারীগণ একটির উপর একটি থাকে। বর্ণনাকারী সুফিয়ান তার হাত দিয়ে ইঙ্গিত করে দেখিয়ে দিলেন। তিনি তার ডান হাতের আঙ্গুলগুলোকে ফাঁক করলেন এবং একটির উপর আর একটি স্থাপন করলেন। তারপর কখনো কখনো উজ্জল আলোর শিখা সে কান লাগিয়ে শ্রবণকারীকে তার সাথীর কাছে কথা পৌছানোর পূর্বেই আঘাতে করে জালিয়ে দেয়। আবার কখনো কখনো আলোর শিখা তার কাছে পৌঁছার আগেই সে তার নীচের সাথীকে তা পৌঁছিয়ে দেয়। এভাবে পৌছাতে পৌছাতে যমীন পর্যন্ত পৌঁছে দেয়। তারপর যাদুকর বা গণকের মুখে রেখে দেয়। তখন সে যাদুকর তথা গণক সে সংবাদের সাথে শতটি মিথ্যা মিশ্রিত করে বর্ণনা করে। আর এভাবেই তার কোন কোন কথা সত্যে পরিণত হয়। তারপর লোকেরা বলতে থাকেঃ সে কি আমাদেরকে বলেনি যে, অমুক অমুক দিন এই সেই হবে, তারপর আমরা কি সঠিক পাইনি? আসলে সেটা ছিল ঐ বাক্য যা আসমান থেকে শোনা গিয়েছিল। [বুখারীঃ ৪৭০১]
(৩) شهاب এর আভিধানিক অর্থ উজ্জ্বল আগুনের শিখা। এখানে বলা হয়েছে, (شِهَابٌ مُبِينٌ) কুরআনের অন্য জায়গায় এজন্য (شِهَابٌ ثَاقِبٌ) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। [সূরা আস-সাফফাতঃ ১০] আবার কোথায়ও বলা হয়েছে, (شِهَابًا رَصَدًا) [সূরা আলজিনঃ ৯] আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু আনহুমা থেকে বর্ণিত আছে যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সাহাবীদের এক সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন। ইতিমধ্যে আকাশে তারকা খসে পড়ল। তিনি সাহাবীদেরকে জিজ্ঞেস করলেনঃ জাহেলিয়াত যুগে অর্থাৎ ইসলাম-পূর্বকালে তোমরা তারকা খসে যাওয়াকে কি মনে করতে? তারা বললেনঃ আমরা মনে করতাম যে, বিশ্বে কোন ধরণের অঘটন ঘটবে অথবা কোন মহান ব্যক্তি মৃত্যুবরণ কিংবা জন্মগ্রহণ করবেন। তিনি বললেনঃ এটা অর্থহীন ধারণা। কারো জন্ম-মৃত্যুর সাথে এর কোন সম্পর্ক নেই। এসব জ্বলন্ত অঙ্গার শয়তানদেরকে বিতাড়নের জন্য নিক্ষেপ করা হয়। [মুসলিমঃ ২২২৯]
তাফসীরে জাকারিয়া
Bangla Hadith
▌বিটিএস থেকে সাবধান!
·
জর্ডানের বিশিষ্ট সালাফি বিদ্বান শাইখ আলি বিন মুখতার আর-রমলি হাফিযাহুল্লাহ বলেছেন—
❝কোরিয়ান বিটিএস দল সম্পর্কে আমার কাছে সংবাদ পৌঁছেছে, এরা পাপাচারী ও নাস্তিক গোষ্ঠী। এদের গান ও শ্লোগানগুলোতে এরা যা বলে, তারমধ্যে অন্যতম কথা হলো— “আমি নিজের জন্যই ‘আমিন’ বলব, আমার কাছে নেই কোনো ধার্মিকতার বালাই, কারণ আমি নিজেই ইলাহ।” এই গোষ্ঠী পাপাচারিতা ও নাফরমানি অতিক্রম করে সুস্পষ্ট কুফরে চলে গেছে। এদেরকে ভালোবাসা, কিংবা এদেরকে শোনা (এদের গান বা আলোচনা শোনা), অথবা এদের প্রতি মুগ্ধতা রাখা, কিংবা এদের ব্যাজ প্রদর্শন করা, অথবা যে কোনো উপায়ে এদেরকে উৎসাহ দেওয়া কোনো মুসলিমের জন্য জায়েজ নয়। যে ব্যক্তি এদের কথাবার্তা আওড়াবে, কিংবা এদের প্রতি মুগ্ধতা রাখবে, সেও ওদেরই মতো। আমার কাছে আরও সংবাদ পৌঁছেছে, মুসলিম সন্তানদের অনেকেই এদের ফলো করে এবং এদেরকে ভালোবাসে। ‘কেয়ামতের দিন ব্যক্তি তাদের সাথেই থাকবে, যাদেরকে সে ভালোবাসে (সহিহ বুখারি, হা: ৬১৬৯; সহিহ মুসলিম, হা: ২৬৪০)’।❞
·
সূত্র: শাইখের অফিসিয়াল অ্যাকাউন্টে ২৯শে আগস্ট, ২০২২ খ্রিষ্টাব্দ তারিখের টুইট; টুইট লিংক: https://mobile(ডট)twitter(ডট)com/alqayim/status/1564233862926028800।
·
অনুবাদক: মুহাম্মাদ আব্দুল্লাহ মৃধা
www.facebook.com/SunniSalafiAthari
হাসি-ঠাট্টাচ্ছলে মানুষকে ব্যঙ্গ করা হারাম। যে এটা করবে এবং যে এর আদেশ দিবে উভয়ের শাস্তি হবে। কারণ এটা কষ্ট দেওয়ার অন্তর্ভুক্ত।
- ইবন তাইমিয়্যা (রাহিমাহুল্লাহ)
[আল-মুস্তাদরাক ‘আলা মাজমুইল ফাতাওয়া: ৫/২০৫]
তাড়াহুড়া আসে শাইত্বনের পক্ষ থেকে তবে এই পাঁচটি বিষয় ব্যতীত -
১। মেহমান আসলে দ্রুত খানাপিনার ব্যবস্থা করা।
২। কেউ মৃত্যুবরণ করলে দ্রুত দাফন সম্পন্ন করা।
৩। বিয়ের বয়স হলেই কুমারী মেয়ের বিয়ে দেওয়া।
৪। ধারদেনা তা দ্রুত পরিশোধ করা।
৫। গুনাহ হয়ে গেলে দ্রুত তাওবাহ-ইস্তেগফার করা।
-
তথ্যসূত্রঃ হিলিয়াতুল আউলিয়া, ৮/৮২
সালাফে সালেহীন মৃত্যুর সময় একে অপরকে আকীদার মৌলিক বিষয়গুলো স্মরণ করিয়ে দিতেন। ইমাম সুহনূন এর এমন একটি ঘটনা দেখুন,
ইয়াহইয়া ইবন আউন বলেন, ইবনুল কাস্সার যখন অসুস্থ, তখন আমি ও সুহনূন তার কাছে গেলাম। সুহনূন তাকে বললেন, ‘কীসের এত দুশ্চিন্তা?” তিনি বললেন, ‘মরণ আর আল্লাহর সাথে সাক্ষাত।' সুহনূন তাকে বললেন, ‘তুমি কি শেষ দিন, পুনরুত্থান ও হিসাব-নিকাশে বিশ্বাস করো না? তুমি কি বিশ্বাস করো না যে এই উম্মতের সর্বোত্তম ব্যক্তি হলেন আবু বকর ও উমর, কুরআন আল্লাহর বাণী এবং সৃষ্ট বস্তু না? তুমি কি বিশ্বাস করো না যে আল্লাহকে কেয়ামতের দিন দেখা যাবে, তিনি আরশের উপর উঠেছেন? তুমি কি বিশ্বাস করো না যে শাসকরা অত্যাচার করলেও তাদের বিরুদ্ধে তরবারী দিয়ে বের হওয়া যাবে না?” তিনি বললেন, ‘হ্যাঁ, আল্লাহর কসম।’ সুহনূন বললেন, “তাহলে তুমি চাইলে মরে যেতে পারো। চাইলেই তুমি মরে যেতে পারো।'
Collected: Abubakar Muhammad Zakaria হাফিঃ
স্বলাতে চোখ বন্ধ করা মাকরুহ,বিশেষ করে সেজদায় একদম নয়।
- سمعت إسحاق يقول: " لا تغمض عينك وأنت تصلي فإنه يكره، لأن اليهود يفعلون ذلك " (1).
ইমাম ইসহাক্ব রহ বলেনঃ
স্বলাতরত অবস্থায় তোমার দু'চোখ বন্ধ করবে না,কারণ তা মাকরুহ।কেননা ইহুদিরা তা করে থাকে।
[الكرماني، حرب بن إسماعيل، مسائل حرب الكرماني من أول كتاب الصلاة - ت الغامدي، ١٩٥/١]
অনুবাদকঃ ইকবাল আওযাই
▌ইমাম ইবনুল কাইয়্যিম রহিমাহুল্লাহ বলেন:
মানুষের সাথে উত্তম নম্র-ভদ্র এবং কোমল আচরণ করার চেয়ে অন্তরের জন্য অধিক উপকারী কিছু নেই।
📚(মাদারিজুস সালেকীন ২/৫১১)
🖊️বঙ্গানুবাদ: খন্দকার খালেদ
قال الامام ابن_القيم رحمه الله تعالى:
" فليس للقلب انفع من معاملة الناس باللطف وحب الخير لهم ".
📚[مدارج السالكين(٥١١/٢)]
এক পরহেজগার বোনের আল্লাহ ভীতি
ইমাম আহমদের ছেলে আব্দুল্লাহ বলেন,
একদিন আমি বাবার সাথে বাড়িতে বসে ছিলাম। একজন দরজায় কড়া নাড়ল। বাবা বললেন, “উঠে দেখ তো কে আসল?”
আমি বেরিয়ে দেখি এক মহিলা। তিনি বললেন, “আপনার বাবার কাছে ঢোকার অনুমতি নিন।”
আমি গিয়ে অনুমতি চাইলে বাবা ঢুকতে বললেন।
মহিলা ঢুকে সালাম দিয়ে বসলেন।
তারপর বললেন, “আবু আব্দিল্লাহ, আমি রাতের বেলা চেরাগের আলোতে সুতা কাটি। কখনো বা চেরাগ নিভে যায়। তখন চাঁদের আলোতে সুতা কাটি। আমার জন্য কি (বিক্রির সময়) চেরাগের আলোতে কাটা সুতা আর চাঁদের আলোতে কাটা সুতা আলাদা করতেই হবে?”
বাবা বললেন, “যদি দুইটার মধ্যে পার্থক্য থাকে, তাহলে তো স্পষ্ট করতে হবে।”
মহিলার প্রশ্ন, “অসুস্থ ব্যক্তির গোঙানি কি শেকায়েত (আল্লাহর বিপক্ষে অভিযোগ) বলে গণ্য হবে?”
বাবা বললেন, “আশা রাখি সেটা শেকায়েত হবে না, তবে সেটা আল্লাহর কাছে নিজের কষ্ট ব্যক্ত করার নাম।”
প্রশ্নের উত্তর পেয়ে তিনি চলে গেলেন।
বাবা আমাকে বললেন, “বাবা, এই রকম প্রশ্ন করতে আমি কোনো মানুষকে দেখিনি। তুমি দেখ তো এই মহিলা কোথা থেকে আসল?”
আমি মহিলার পিছু নিয়ে দেখলাম তিনি বিশর ইবনুল হারেসের (বিশর হাফী) বাড়িতে ঢুকলেন। বুঝতে পারলাম এটা তার বোন।
আমি ফিরে এসে বাবাকে জানালাম।
বাবা বললেন, “বিশরের বোন ছাড়া এমন (পরহেজগার) হওয়া অসম্ভব।”
[ইবনুল জাওযী, ”আহকামুন নিসা”]
©️ Abdullah Mojumdar
Courtesy: Do Halal Design DHD
এত তুচ্ছ আমি এত তাচ্ছিল্য আমি --------- কথাগুলো সত্যিই অন্তরকে কাঁপিয়ে তুলে |
জামসেদ মজুমদার (হাফিয্বাহুল্লাহ)
ঋতুবতী মহিলাদের জন্যে তার স্বামীর মাথা ধুয়ে দেয়া, তার চুল আঁচড়িয়ে দেয়া জায়িয; তার উচ্ছিষ্ট পবিত্র; তার কোলে মাথা রেখে হেলান দেয়া ও সেখানে কুরআন পাঠ করা জায়িয।
৫৭৯-(১৪/৩০০) আবূ বকর ইবনু আবূ শাইবাহ, যুহায়র ইবনু হারব (রহঃ) ..... আয়িশাহ (রাযিঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি ঋতুবতী অবস্থায় পানি পান করতাম এবং পরে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে অবশিষ্টটুকু প্রদান করলে আমি যেখানে মুখ লাগিয়ে পান করতাম তিনিও পাত্রের সে স্থানে মুখ লাগিয়ে পান করতেন। আবার আমি ঋতুবতী অবস্থায় হাড় খেয়ে তা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে দিলে আমি যেখানে মুখ লাগিয়েছিলাম তিনি সেখানে মুখ লাগিয়ে খেতেন। তবে যুহায়র কর্তৃক বর্ণিত হাদীসে “পান করার" উল্লেখ নেই। (ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ৫৮৩, ইসলামিক সেন্টারঃ ৫৯৯)
সহীহ মুসলিম (হাঃ একাডেমী)
অধ্যায়ঃ ৩। হায়য ঋতুস্রাব (كتاب الحيض)
হাদিস নম্বরঃ ৫৭৯
হাদিসের মানঃ সহিহ