Moromi.tv মরমী টিভি

Moromi.tv মরমী টিভি

Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from Moromi.tv মরমী টিভি, TV Channel, .

06/09/2022

নতুন ব্যাচে ভর্তি বিজ্ঞপ্তিঃ ইফতা অনলাইন কোর্স...............................................................
আলহামদুলিল্লাহ। ২ রা সেপ্টেম্বর জুমআ বার সকাল ৮.০০ টায় অনুষ্ঠিত হয়েছে ইফতিতাহ। নিয়মিত দরস আগামী ৯ ই সেপ্টেম্বর জুমআ বার থেকে ইনশাআল্লাহ।
এই ব্যাচে অল্প সংখ্যক আসনে ভর্তির সুযোগ থাকছে আগামী ৮ ই সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার পর্যন্ত।

তথ্য প্রযুক্তির দিক থেকে এখন বাংলাদেশও অনেক এগিয়ে। সময়ের সাথে সাথে বৃদ্ধি পেয়েছে ব্যস্ততা। ইচ্ছায় কিংবা অনিচ্ছায় ফাতওয়া প্রদানে পূর্ণাঙ্গ পারদর্শী না হলেও দায়িত্বের কারণে অনেক উলামায়ে হযরতকে দিতে হচ্ছে ফাতওয়া। অনিচ্ছুক ভুলত্রুটি থেকে হেফাজতের লক্ষ্যে এবং খেদমতরত উলামায়ে কিরামদেরকে দেশ বরেণ্য মুফতিদের তত্ত্বাবধানে এনে সঠিক নির্দেশনা এবং কিতাবাদির মুতায়ালার ব্যবস্থা করা সময়ের দাবি।

তারই ধারাবাহিকতায় আল জামিয়াতুল ইসলামিয়া দারুল উলূম বাংলাদেশ, উত্তরা, ঢাকা -এর ব্যবস্থাপনায় আগামী ২ সেপ্টেম্বর ২০২২ জুমআ বার থেকে শুরু হতে যাচ্ছে দারুল উলূম দেওবন্দ(ভারত), দারুল উলূম করাচি (পাকিস্তান) এবং মঈনুল ইসলাম হাটহাজারী(বাংলাদেশ) এবং পৃথিবীর খ্যাতিমান আরবী বিশ্ববিদ্যালয় এর সিলেবাসের সমন্বয়ে অনলাইন ইফতা কোর্স ।

📔কেন এই কোর্স?
১. অনলাইনে ছাড়া অফলাইনে এই মানের উস্তাযদের একসাথে পাওয়া সম্ভব নয়।
২. খেদমতে থাকার কারণে সরাসরি ক্লাস করার সুযোগ যাদের নেই।
৩. ক্লাসের বাইরেও যে কোন সময় পৃথিবীর যে কোন সহপাঠীর সাথে কিতাব মুতালা'আ করা যায়।
৪. যে কোন প্রয়োজনে উস্তাযদের সাথে যোগাযোগ করা যায়।

৫. পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের ইফতার/ মুফতির সনদ দেয়া হয়।

المنهج الدراسي للتخصص في الفقه الإسلامي والإفتاء
--------------------------------------------
♦️الفترة الأولى

ا. تفسير آيات الاحكام
للدكتور محمد علي الصابوني (الايات المختارة)
٢. أصول الإفتاء وآدابه
لشيخ الاسلام محمد تقي العثماني
٣. أدلة الحنفية على المسائل الفقهية
للشيخ المحدث الحنفي محمد عبد الله بن مسلم البهلوي
٤. الوجيز في اصول الفقه للدكتور عبد الكريم زيدان

♦️ الفترة الثانية
ا. الفتاوى السراجية للامام سراج الدين الحنفي
٢. بحوث في قضايا فقهية معاصرة
للعلامة المفتي تقي عثماني
٣. الاشباه والنظائر للعلامة الشيخ ابن نجيم و قواعد الفقه للعلامة المفتي عميم الاحسان رحمه الله
٤. الفقه الاكبر للامام الاعظم ابي حنيفة رحمه الله ما شرحه ملا علي
القاري رحمه الله
٥. عقود رسم المفتي

♦️الفترة الثالثة
١. السراجي في الميراث
٢.فقه الاولويات للامام الدكتور يوسف القرضاوي
المقاصد الشرعية،، علوم الحديث
٣. التمرين على الفتاوى
٥. درر المختار
📗 সমাপনী পরীক্ষার পূর্বে স্বহস্তে লিখিত ৩০টি তামরীনে ফাতওয়া জমা দিতে হবে।

🧿 সম্মানিত কোর্স তত্ত্বাবধায়ক ও উস্তায বৃন্দ

১. আল্লামা হাফেজ মাওলানা ক্বারী আতাউল্লাহ হাফেজ্জী( দাঃ বাঃ)
সাহেবজাদা, হাফিজ্জী হুজুর (রহ)
২. মুফতি মাওলানা রফিকুল ইসলাম মাদানী দা.বা.
শায়খুল হাদীস ও প্রধান মুফতি ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বসুন্ধরা ঢাকা।
৩. শায়খুল হাদীস মুফতি বশিরুল্লাহ কাসেমী (দা.বা)
প্রধান মুফতি, জামিয়া ইসলামিয়া দারুল উলূম মাদানীনগর, ঢাকা।
৪.শাইখুল হাদীস আল্লামা মুফতি নেছার আহমাদ লাহোরী দাঃ বাঃ
মুহতামিম, দারুল উলূম বাংলাদেশ
প্রাক্তন মুহাদ্দিস ও মুফতি, জামিয়া হোসাইনিয়া আশরাফিয়া (বড় কাটরা) মাদরাসা, চকবাজার, ঢাকা
৫.শাইখুল হাদিস মুফতি মাও: মামুনুর রশিদ দাঃ বাঃ
নায়েবে মুহতামিম, দারুল উলূম বাংলাদেশ ও
মুহাদ্দিস, জামিআ দারুল উসওয়া, রাজশাহী।
৬. ড. হাফেজ মুফতি যাকারিয়া নূর (দাঃ বাঃ)
খতীব, বাইতুন নূর মসজিদ কমপ্লেক্স, বিজয় নগর, ঢাকা ও সিনিয়র মুফতি, দারুল উলূম বাংলাদেশ।
৭.শাইখুল হাদিস মুফতি রফিকুল ইসলাম মিয়াজী ( দাঃ বাঃ)
খতীব, বারিধারা শাহী জামে মসজিদ, ঢাকা ও মুফতি, দারুল উলূম বাংলাদেশ।
৮. শাইখুল হাদিস মুফতি মুস্তাফিজুর রহমান আল মাক্কী (দা. বা)
মুফতি, দারুল উলূম বাংলাদেশ।
০৯. শাইখুল হাদীস মুফতি মাও: এমদাুল্লাহ (দা.বা)
প্রিন্সিপাল, মারকাজুল কুরআন মাদরাসা, উত্তরখান, ঢাকা।
১০. শায়খুল হাদীস মাও. আহমাদ ইউসুফ ( দা.বা)
লেখক,গবেষক ও অনুবাদক
১১. মুফতি মাও: মো:আহমাদুল্লাহ (দাঃ বাঃ)
শায়খুল হাদীস, জামিয়া ইসলামিয়া, উত্তরখান, ঢাকা।
১২. শাইখুল হাদীস মুফতি আব্দুল কাইয়ুম (দাঃ বাঃ)
শিক্ষা পরিচালক ও প্রধান মুফতি, কাসেমুল উলুম মাদ্রাসা, ফরিদপুর
১৩. শাইখুল হাদিস মুফতি মুনীরুল ইসলাম
মুহাদ্দিস, মদীনাতুল উলূম মাদরাসা, ঢাকা
১৪. শাইখুল হাদিস মুফতি আবুবকর রিশাদ
মুফতি, দারুল উলূম বাংলাদেশ
১৫. মুফতি মাহমুদুল হাসান
মুফতি, দারুল উলূম বাংলাদেশ।

🧿 দাওরা-ই- হাদীস/কামিল উত্তীর্ণ বা সমমানের দেশীয় কিংবা বৈদেশিক ডিগ্রীধারীরা এক বছর মেয়াদী(৩ সেমিস্টার) এ কোর্সে অংশগ্রহণ করতে পারবেন। কোর্স শেষে উত্তীর্ণদের ইফতা সনদ প্রদান করা হবে।

🧿 ক্লাস হবে জুম/ অনলাইন মাধ্যমে। সপ্তাহে ২ দিন জুমআ বার ভোর ৫.৩০ টা থেকে সকাল ৯.০০ টা ও শনিবার ভোর ৫.৩০টা থেকে সকাল ৮.০০টা পর্যন্ত ক্লাস চলবে। এছাড়া প্রয়োজন সংখ্যক আরও বিশেষ ক্লাস রুটিনে উল্লেখ থাকবে। কিতাবাদি মুতালাআ করার জন্য ২৪ ঘণ্টা জুম ওপেন থাকবে।

🧿 প্রতি ৪ মাসে ১ সেমিস্টার এভাবে মোট ৩ সেমিস্টার বা ১ বছর কোর্সের মেয়াদকাল।

🧿 ৩ সেমিস্টারের প্রথম দুই সেমিস্টার শেষে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা অনলাইনে অনুষ্ঠিত হবে আর ৩য় বা সমাপনী সেমিস্টার শেষে লিখিত ও ভাইভ পরীক্ষায় ঢাকাতে স্বশরীরে অংশ গ্রহণ করতে হবে। এজন্য ইফতার সনদে অনলাইন লেখা থাকবে না।

🧿 বিদেশে অবস্থানরত বাংলাদেশী/বিদেশি নাগরিকদের জন্য অনলাইনে পরীক্ষা দেয়ার বিশেষ সুযোগ রয়েছে।

📒 প্রতিটি বিষয়ে জুম ক্লাসে উপস্থিতির জন্য ১০ নম্বর রয়েছে।

📒 প্রতিটি ক্লাসের প্রয়োজনীয় নোট, প্রশ্ন এবং ভিডিও গ্রুপে আপলোড দেয়া হয়।

📒 ভর্তি ফি ১০০০/- মাসিক বেতন ৫০০/- ১ম ও ২য় সেমিস্টার পরীক্ষার ফি ৫০০/- এবং সমাপনী পরীক্ষার ফি ৫০০/- প্রদান করতে হবে।
সেক্ষেত্রে প্রতি সেমিস্টারের (৪ মাস) বেতন একসাথে সেমিস্টার এর শুরুতে প্রদান করতে হবে।

🧿দেশ-বিদেশের যে কোন স্থান থেকে ক্লাসে অংশ নিতে পারবেন Zoom Cloud Meeting App's টি ইনস্টল করে।

আরো বিস্তারিত জানতে......এবং ভর্তি হতে আজই যোগাযোগ করুন-
📞 01825153043
📞 01984562369
📞 01712864956
https://www.facebook.com/দারুল-উলূম-বাংলাদেশ-دار-العلوم-بنغلاديش-101185172596003/
https://www.facebook.com/profile.php?id=100080652972455

24/08/2022

মাসআলাঃ- ইতিকাফরত ব্যক্তি ইস্তেঞ্জার জরুরতে মসজিদের বাইরে যাওয়া জায়েয। আর মসজিদের ইস্তেঞ্জাখানা না থাকলে এজন্য বাসা-বাড়িতে যাওয়াও জায়েয। উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইতিকাফরত অবস্থায় ইস্তিঞ্জার প্রয়োজন ব্যতীত ঘরে প্রবেশ করতেন না।
-সহীহ বুখারী ১/২৭২; সহীহ মুসলিম ১/১৪২; আলমুহীতুল বুরহানী ৩/৩৭৯; আদ্দুররুল মুখতার ২/৪৪৫; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/২১২

24/08/2022

বিয়েতে আল্লাহর সাথে নাফরমানির তালিকা

১. বলা হলো নিজে গিয়ে মেয়ে দেখতে, আমরা শুরু করলাম সবাই মিলে দেখতে!

২. বলা হলো মেয়ে দ্বীনদার কি না দেখতে, আর আমরা শুরু করলাম মেয়ে সুন্দর কি না দেখতে!

৩. বলা হলো ছেলের দ্বীনকে প্রাধান্য দিতে, আর আমরা শুরু করলাম ছেলের টাকা-পয়সাকে প্রাধান্য দিতে!

৪. বলা হলো নিজের পছন্দ মতো মেয়ে দেখে বিয়ে করতে, আর আমরা শুরু করলাম অন্যের মন রাখতে !

৫. বলা হলো মেয়ের মতামত নিয়ে বিয়ে দিতে, আর আমরা শুরু করলাম নিজের ইচ্ছাতে বাধ্য হয়ে বিয়ে দিতে!

৬. বলা হলো কম খরচে বিয়ে করতে, আর আমরা শুরু করলাম আনুষ্ঠানিকতার নামে টাকা অপচয় করতে!

৭. বলা হলো মসজিদে বিয়ে করতে, আর আমরা শুরু করলাম সেন্টারে শুটিং করে বিয়ে করতে!

৮. বলা হলো আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিয়ে করতে, আর আমরা শুরু করলাম নিজের স্বার্থের জন্য বিয়ে করতে!

৯. বলা হলো ছেলে পক্ষ ওয়ালীমা করে মানুষকে খাওয়াতে। আমরা শুরু করলাম মেয়ের বাবার উপর জুলুম করে খাইতে!

১০. বলা হলো স্ত্রীর মোহরানা পরিশোধ করতে, আর আমরা শুরু করলাম যৌতুক নিতে!

১১. বলা হলো দ্রুত বিয়ে করতে, আমরা শুরু করলাম পিছিয়ে বিয়ে দিতে!

১২. বলা হলো বিয়েকে সহজ করতে, আমরা শুরু করলাম কঠিন করতে!

১৩. বলা হলো নতুন বউকে দেখে দু'আ করতে, আমরা শুরু করলাম হাতে টাকা ধরিয়ে দিতে!

১৪. বলা হলো স্বামীকে সম্মান করতে, আর আমরা শুরু করলাম নিজের ইচ্ছাতে নিয়োজিত করতে!

১৫. বলা হলো স্ত্রীকে ভালোবাসতে, আমরা শুরু করলাম শালীর সাথে মিশতে!

১৬. বলা হলো স্ত্রীর সাথে সুন্দর করে কথা বলতে, আমরা শুরু করলাম দাসীর মতো আচরণ করতে!

১৭. বলা হলো দেবর থেকে দূরে থাকতে, আমরা শুরু করলাম দেবরের সাথে ফাজলামিতে মেতে উঠতে!

১৮. বলা হলো স্বামীর জন্য সাজতে, আমরা শুরু করলাম রাস্তার ছেলের কামনার বস্তু হতে!

১৯. বলা হলো স্ত্রীকে পর্দায় রাখতে, আমরা শুরু করলাম তাকে নিয়ে বাজারে বেড়াতে!

২০. বলা হল সামর্থ্যহীন দ্বীনদার পুরুষগণ ফেতনা হতে বাঁচতে কলমা (ইজাব-কবুল) করে রাখবে, আর আমরা শুরু করলাম engagement / Registry (বিজাতীয় প্রথা) করে রাখতে।

আরো এইরকম হাজার ঘটনা আছে যা আমরা সবসময় উল্টোটা করেই থাকি। আমাদের কারণেই বিয়ে দিন দিন কঠিন হয়ে গেছে। বিয়েতে বরকত কমে গেছে। সংসারে অশান্তি লেগেই থাকছে। দিন দিন বাড়ছে তালাকের সংখ্যা।

আল্লাহ আমাদের হেদায়েত দান করুন। আল্লাহুম্মা আমিন।

(সংগৃহীত)

Photos from Basaer Center Bangla Division's post 10/08/2022
Timeline photos 29/07/2022

বিচারপতি মাওলানা মুফতী মুহাম্মাদ তাকী উসমানী (জন্ম: ১৯৪৩) পাকিস্তানের একজন প্রখ্যাত ইসলামী ব্যক্তিত্ব। তিনি হাদীস,ইসলামী ফিকহ,তাসাউফ ও অর্থনীতিতে বিশেষজ্ঞ। তিনি বর্তমানে ইসলামী অর্থনীতিতে সক্রিয় ব্যক্তিদের অন্যতম। তিনি ১৯৮০ সাল থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় শরীয়াহ আদালতের এবং ১৯৮২ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত পাকিস্তান সুপ্রিম কোর্টের শরীয়াহ আপিল বেঞ্চের বিচারক ছিলেন। তিনি ইসলামী ফিকহ্ ,হাদিস,অর্থনীতি এবং তাসাউউফ সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ। তিনি বিখ্যাত তাফসীরগ্রন্থ “মাআরিফুল কোরআন”এর রচয়িতা মুফতি শফী উসমানীর সন্তান এবং বিখ্যাত দুই ইসলামী ব্যক্তিত্ব মাওলানা রফী উসমানী ও মাওলানা ওয়ালী রাজীর ভাই।

(শেয়ার করে অন্যদেরকে জানার সুযোগ করে দিন)

Timeline photos 29/07/2022

ইলিয়াস (রহঃ)
সাল ১৮৮৫। এক শিশিরছোঁয়া সকালে পৃথিবী আলোয় উদ্ভাসিত হলেন তিনি। কান্দালার এক ছোট্ট কুঁড়েঘর ঝলমলিয়ে উঠল।
পাতায় পাতায় বয়ে গেল আলোর নাচন। আলোকময় এই শিশুর নাম মুহাম্মদ ইলিয়াস। মেওয়াত-এর নানা বাড়িতেই কাটল তার মধুর ছেলেবেলা। হেসে খেলে একটু যখন বড় হলেন, তখনই চলে গেলেন নিজামুদ্দিনে বাবার কাছে। বাবা তার মাওলানা মুহাম্মদ ইসমাঈল। তিনি দুই বিয়ে করেছিলেন। প্রথম পক্ষের ছিলেন মাওলানা ইলিয়াস। আর মাওলানা ইয়াহিয়া। প্রথম স্ত্রীর মৃত্যুতে দ্বিতীয় বিয়ে করেছিলেন মাওলানা মুহাম্মদ ইসমাঈল।
মাওলানা ইলিয়াসের নানির নাম ছিল আমাতুস সালাম। আম্মিবি নামে তিনি ছিলেন সুপরিচিত। তার ধ্যানময় সালাত পড়ার দৃশ্য আর সুললিত কণ্ঠের তেলাওয়াত ছিল এই পরিবারের ঐতিহ্য। একই ঐতিহ্যের ছোঁয়া পেয়েছিলেন মাওলানা ইলিয়াস সাহেবের গর্বিনি মা শাফিয়া বিবি। তিনিও পুরো কালামে পাক রোজ একবার করে তেলাওয়াত করতেন। নানিজান আম্মিবির সবচেয়ে প্রিয় নাতি ইলিয়াসের পড়লেখার হাতেখড়ি হয় মক্তবে।
শৈশবেই পাক্কা হাফেজে কুরআন হয়ে যান তিনি। পরহেজগার নানিজানের চোখে প্রিয় নবীজির প্রিয় সাহাবাদের আদল ভাসত ইলিয়াসের অবয়বে। প্রিয় নাতির জন্য তিনি মোনাজাত করতেন, তিনি যেন তার সাহাবাদের মতো ইসলাম প্রচারের এক সৈনিক হতে পারেন। রিয়াজুল ইসলাম কান্দালভী ছিলেন মাওলানা সহপাঠী। ছেলেবেলার স্মৃতি চারণায় তিনি বলেন, মাওলানা আমাকে একদিন বললেন, চল তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করি যারা সালাত কায়েম করে না।
১৮০০ শতকে গাঙ্গোহ ছিল সুফি সাধক আর জ্ঞান পুরুষদের এক প্রসিদ্ধ শহর। শতকের শেষের দিকে এ শহরেই জ্ঞান আহরণের জন্য স্থায়ীভাবে চলে এলেন তিনি। ভূবনখ্যাত জ্ঞানীদের সোহবতে খেদমতে থেকে বিশটি বছর কাটিয়ে দিলেন মাওলানা ইলিয়াস রহ.। এই শহরের প্রসিদ্ধ আলেম মাওলানা রশীদ আহমদ গাঙ্গোহীর পরশে খাঁটি এক সৈনিক বনে গেলেন ইলিয়াস। বিশ বছরের টগবগে তরুণ স্বপ্ন বুনতে লাগলেন কাজের। যে কাজ নবীরা করতেন এমন কাজ করতে হবে তাকে।
প্রিয় শিক্ষক মাওলানা রশীদ আহমদ গাঙ্গোহীর কাছে ছাত্র অবস্থায় বয়াতও গ্রহণ করেছিলেন তিনি। একই সঙ্গে পীরের কালব খোলার কুদরতি আর মান শিক্ষার জৌলুস লাভ করেছিলেন বলেই পরবর্তী সময় মানবসেবায় তাবলিগের মতো এতোবড় মেহনতের রূপরেখা তৈরি করতে পেরেছিলেন। মাওলানা ইলিয়াস রহ. এর পীর তার কালবে খোদার জ্যোতির ছোঁয়া আর শিক্ষা দিয়েছিলেন মানবসেবার। তাঁর জীবনের দুই শিক্ষায় তিনি তাবলিগ জামাতের শেকড় গড়েছেন। আজকের বিশ্বব্যাপী প্রচারিত তাবলিগের মূল- মানুষের ভাল’র চেষ্টা করা। মানুষের ভালো তো সেটাই যা মানুষকে খোদার সঙ্গে মিলিয়ে দেয়। তাবলিগিরা খোদার দিকে মানুষকে ডেকে আনার প্রয়াস নিয়ে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছে।
১৯০৫ সালে রশীদ আহমদ গাঙ্গোহী রহ. এর ইন্তেকালের পর দেওবন্দ চলে যান তিনি। এখানে মাওলানা মাহমুদুল হাসান রহ এর কাছে তিরমিজি আর বুখারি শরিফের পাঠ গ্রহণ করেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি ইসলামি আন্দোলনের বীজ রোপন করেন অন্তরে। আর এই আন্দোলনের বায়াত গ্রহণ করেন মাওলানা মাহমুদুল হাসান রহ. এর কাছে।
মাওলানা ইলিয়াসের আধ্যাত্মিক গুরুগণ হচ্ছেন, মাওলানা আবদুর রহীম রায়পুরী ও মাওলানা আশরাফ আলী থানবী রহ.।
১৯১০ সালে মাজাহিরুল উলুম মাদরাসায় তিনি শিক্ষকতা শুরু করেন। ১৯১২ সালের ১৭ অক্টোবর আপন মামাত বোনকে বিয়ে করেন। ১৯১৪ সালে হজের উদ্দেশে যাত্রা করে ১৯১৫ এর ফেব্রুয়ারিতে পবিত্র হজ উদযাপন শেষে দেশে ফেরেন মাওলানা ইলিয়াস। আরব সারা নামের তোরণের কাছে হজরত নিজাম উদ্দিন আউলিয়ার মাজারে প্রায়ই তিনি ধ্যানে বসতেন। এভাবে খোদার ধ্যানই তাকে ইবাদতের ধনী ব্যক্তিতে রূপান্তরিত করেছিল। ১৯৪৪ সালের ১২ জুলাই। শিশিরভেজা সকালের সেই সূর্যটি টুপ করে মিশে গেল পশ্চিমে। পশ্চিমে কাবা। পশ্চিমেই মদিনা মুনাওয়ারা।

(শেয়ার করার বিনীত অনুরোধ রইল)

22/07/2022

বংশের পরিচয় ব্যবহারে। শিক্ষণীয় গল্প।

বাদশাহর দরবারে একটা লোক এসে বললো, জাঁহাপনা, আমার একটা চাকরির ভীষণ প্রয়োজন।
দয়া করে আমাকে একটি চাকরি দিন। বাদশাহ লোকটিকে জিজ্ঞেস করলেন, তোমার কি যোগ্যতা আছে?
লোকটি বললো, হুজুর, আমি মানুষ বা যে কোনো প্রাণীর মুখ দেখে তার বংশ পরিচয় বলে দিতে পারি।
বাদশাহ মনে মনে ভাবলেন, বাহ্, চমৎকার তো!
দেখা যাক লোকটাকে পরীক্ষা করে।
তিনি লোকটিকে তাঁর ঘোড়ার আস্তাবলের ব্যবস্থাপক নিযুক্ত করলেন।
কিছুদিন পর বাদশাহ লোকটিকে দরবারে তলব করে তাঁর সবচেয়ে প্রিয় ঘোড়াটির ব্যাপারে জিজ্ঞেস করলেন, বলো তো আমার ওই ঘোড়াটির জাত কেমন?
লোকটি বাদশাহকে বললো, জাঁহাপনা, ঘোড়াটির জাত ভালো না।
এই কথা শুনে বাদশাহ ভীষণ রেগে গিয়ে তাকে বললেন, কি বলছো তুমি?
আমি জাত দেখে লাখ লাখ টাকা খরচ করে ওকে কিনেছি, পালছি! আর তুমি বলছো ওর জাত ভালো না?
লোকটি তবুও তার কথায় অনড় রইলো।
বাদশাহ তখন সেই ঘোড়াটির বিক্রেতাকে দরবারে ধরে নিয়ে আসার হুকুম দিলেন।
ঘোড়া বিক্রেতা দরবারে হাজির হলে বাদশাহ তাকে বললেন, সত্যি কথা বলো, তা না হলে গর্দান যাবে।
তখন ঘোড়া বিক্রেতা বললো, জাঁহাপনা, আমাকে দয়া করে ক্ষমা করুন।
আসলে এই ঘোড়াটির মা মারা যায় ও যখন খুব ছোট ছিল। তাই তখন থেকে ওকে আমি গরুর দুধ খাইয়ে বড়ো করেছি।
বাদশাহ তখন লোকটিকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি এটা বুঝলে কিভাবে?
লোকটি বললো, জাঁহাপনা, ঘোড়ারা মাথা নিচু করে খাবার নিয়ে মাথা উঁচু করে খায়।
এই ঘোড়াটি গরুর মতো মাথা নিচু করে খাবার খায়। বাদশাহ খুশি হয়ে লোকটিকে কয়েকশো মুরগী উপহার দিলেন।
কিছুদিন পর বাদশাহ লোকটিকে দরবারে তলব করে বললেন, আমার রানীর বংশ কেমন, তা তোমাকে বলতে হবে। লোকটি বললো, জাঁহাপনা, আমাকে কয়েকদিন সময় দিন। কয়েকদিন পর লোকটা এসে বাদশাহর দরবারে উপস্থিত হয়ে বললো, জাঁহাপনা, রানীমাতার বংশের ব্যাপারে কিছু বলার আগে আমাকে কথা দিতে হবে, আমার ওপর রাগ করে কোনো সিদ্ধান্ত নেবেন না৷ আগে যাচাই-বাছাই করবেন।
বাদশাহ বললেন, বেশ তা'ই হবে। লোকটি বললো, রানীমা কোনো রাজবংশের মেয়ে না।
তিনি এক সাধারণ পরিবারের মেয়ে। বাদশাহ এবার সত্যি সত্যিই রেগে গেলেন।
নিজে দেখেশুনে পিতা-মাতার পছন্দসই অন্য রাজ্যের বাদশাহর মেয়ে বিয়ে করেছেন, আর ব্যাটা বলে কি না তিনি রাজবংশেরই মেয়ে না।
যাই হোক, বাদশাহ কথা দিয়েছেন, আগে যাচাই-বাছাই করবেন।
অতএব, বাদশাহ তাঁর শাশুড়িকে চেপে ধরলেন সত্যি বলার জন্য।
এক পর্যায়ে শাশুড়ি ভেঙে পড়ে বললেন, বাবা, সত্যি কথা বলতে কি, তোমার শ্বশুর আর তোমার বাবা মিলে ঠিক করেছিলেন, তোমার সাথে আমার মেয়ের বিয়ে দেবেন।
আমার মেয়েটা ছয় মাস বয়সে মারা গেলে আমরা সেই সময় অন্যের কাছ থেকে ওই বয়সের একটি মেয়েকে নিয়ে এসে লালন-পালন করি।
যাই হোক, বাদশাহ লোকটিকে একপাল ভেড়া, ছাগল ও গরু উপহার দিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি বিষয়টা কিভাবে বুঝলে?
লোকটি বললো, হুজুর, রানীমা যে ভাষায় চাকর-বাকর, কর্মচারিদের সাথে কথা বলেন, যা ব্যবহার করেন, তা রাজকন্যা বা রাজমাতাসুলভ নয়।
তারপর একদিন বাদশাহ লোকটিকে রাজ দরবারে তলব করে বললেন, সবার বংশের কথা তো বললে, এবার আমার নিজের বংশের ব্যাপারে কিছু বলো তো?
লোকটি বললো, জাঁহাপনা, এই বিষয়ে আমি এখনই বলতে পারি। কিন্তু তার আগে আমার জীবনের নিশ্চয়তা দিতে হবে। বাদশাহ বললেন, যাও, দিলাম।
লোকটি তখন বললো, জাঁহাপনা, আপনি কোনো রাজা-বাদশাহর সন্তানই নন।
আপনি একজন কৃষকের সন্তান।
বাদশাহ মনে মনে কিভাবে লোকটার গর্দান নেবেন ভাবতে ভাবতে মায়ের কাছে গিয়ে এই বিষয়ে জানতে চাইলেন।
রাজমাতা তখন বললেন, লোকটি ঠিক বলেছে।
তোমার পিতার কোনো ছেলে সন্তান না জন্মানোর কারণে যখন রাজত্ব জ্ঞাতিদের কাছে হারানোর আশঙ্কা দেখা দেয়, তখন এক কৃষক পরিবার থেকে তোমাকে এনে দিয়েছিলেন বিশ্বস্ত উজির।
বাদশাহ এবার লোকটিকে জিজ্ঞেস করলেন, আমার ব্যাপারে তুমি কিভাবে বুঝতে পারলে?
লোকটি বললো, এটা সহজ ছিল, জাঁহাপনা।
আপনি সত্যিই রাজা-বাদশাহর সন্তান হলে উপহার দিতেন হীরে-জহরত, মণি-মুক্তা সেসব না দিয়ে আপনি উপহার দেন, গরু-ছাগল, হাঁস-মুরগি।
আর রাজপ্রাসাদের অনুষ্ঠানে অতিথিদের রাজকীয় খাবার দিয়ে আপ্যায়ন না করিয়ে এবং ধর্মীয় অনুষ্ঠানে মিষ্টান্ন বিতরণ না করিয়ে সর্বদা খিচুড়ি দিয়ে অতিথিদের আপ্যায়ন করান যা রাজবংশের কোন সন্তানের পরিচয় নয়।

"মানুষের চরিত্র বুঝা যায় তার কর্মে"

22/07/2022

এই যে বোন শুনছেন,
আমি লক্ষ্য করে দেখেছি যেসব মেয়েরা অনেকগুলো ছেলের মধ্যেখানে বসে গল্প আর আড্ডাবাজিতে মেতে ওঠে, কারণে-অকারণে হাসতে হাসতে পাশে বসে থাকা কোনো ছেলেবন্ধুর গায়ের উপর পড়ে যেতে উপক্রম হয় এই টাইপের মেয়েদেরকে ছেলেরা শুধু মেয়েবন্ধু হিসেবেই গ্রহণ করে। কখোনো তাদের "বধূ" বানাতে চায়না। আপনি কি জানেন সব পুরুষেরাই যে বিবাহের উদ্দেশ্যে রক্ষণশীল পরিবারের "ভদ্র" মেয়েদেরকেই অধিক পছন্দ করে ? তা নিজের চরিত্র যেমনি হোক না কেনো !
এর দ্বারাও কি আমার বোনেরা, আপনারা কিছুই বুঝেন না ? এর মানে হচ্ছে সহজপ্রাপ্য জিনিসের কোনো মূল্য নেই। যখনই আপনি পুরুষ প্রজাতির কাছে সহজলভ্য হয়ে গেলেন তখনই তারা আপনাকে বধূর মর্যাদা দেওয়ার পরিবর্তে শুধুই তাদের আড্ডাবাজির সদস্য হিসেবেই রাখাটাকেই যথেষ্ঠ মনে করল। জানেন কি ? তাই বলছি, দয়া করে ঝিনুকের ভিতরে "মুক্তো" হয়েই থাকুন, "ঝিনুক" হবেন না!
©Helal Hossain

19/07/2022

এক ভাই আমার উপর বিরক্ত,,,,
কিছু কথা আমি তিনবার কেন বলি?
আরেক ভাই লেখাটার জবাব চেয়েছে।
যদিও সব কথা আমি তিনবার বলি না, গুরুত্বপূর্ণ কথাগুলোই শুধু তিনবার বলি।

এক.
নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এমনটি করতেন,

عَنْ أَنَسٍ ـ رضى الله عنه أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ إِذَا سَلَّمَ سَلَّمَ ثَلاَثًا، وَإِذَا تَكَلَّمَ بِكَلِمَةٍ أَعَادَهَا ثَلاَثًا‏
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ:
যে ,নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) যখন সালাম করতেন , তখন তিনবার সালাম দিতেন এবং যখন কথা বলতেন তখন তিনবার তার পুনরাবৃত্তি করতেন।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬২৪৪

উদ্দেশ্য হলো,
শ্রোতা না বুঝা পর্যন্ত এক কথা একাধিক বার বলাটা দোষের নয়।

দুই.
তাছাড়া তিনবারের আলাদা মহত্ত্ব আছে নিঃসন্দেহে,
এই যে নিচের হাদীস টা দেখেন,

وَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ‏ إِذَا اسْتَأْذَنَ أَحَدُكُمْ ثَلاَثًا فَلَمْ يُؤْذَنْ لَهُ، فَلْيَرْجِعْ ‏
রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেনঃ যদি তোমাদের কেউ তিনবার প্রবেশের অনুমতি চায়। কিন্তু তাতে অনুমতি দেয়া না হয় তবে সে যেন ফিরে যায়।
সহিহ বুখারী, হাদিস নং ৬২৪৫

তিন.
তিনবারের কি আজিব বৈশিষ্ট্য !জীবনটাই নিরাপদ।

‏ مَنْ قَالَ بِسْمِ اللَّهِ الَّذِي لاَ يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَىْءٌ فِي الأَرْضِ وَلاَ فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ لَمْ تُصِبْهُ فَجْأَةُ بَلاَءٍ حَتَّى يُصْبِحَ وَمَنْ قَالَهَا حِينَ يُصْبِحُ ثَلاَثَ مَرَّاتٍ لَمْ تُصِبْهُ فَجْأَةُ بَلاَءٍ حَتَّى يُمْسِيَ ‏
যে ব্যক্তি সন্ধ্যায় তিনবার বলবে: আল্লাহর নামে যাঁর নামের বরকতে আসমান ও যমীনের কোন বস্তুই ক্ষতি করতে পারে না, তিনি সর্বশ্রোতা ও মহাজ্ঞানী।” সকাল হওয়া পর্যন্ত তার প্রতি কোন হঠাৎ বিপদ আসবে না। আর যে তা সকালে তিনবার বলবে সন্ধ্যা পর্যন্ত তার উপর কোন হঠাৎ বিপদ আসবে না।
সুনানে আবু দাউদ, হাদিস নং ৫০৮৮

18/07/2022

খতিব উবায়দুল হক রাহ.। তাঁর পর তাঁর স্থানে যে শূন্যতা দেখা দিয়েছে, তা আজও পূরণ হয়নি। খুব তাড়াতাড়ি হবে বলেও মনে হচ্ছে না। এ দেশে দীন ইসলামের ইতিহাস লেখা হলে এই নামটাও সবিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে লিখতে হবে৷ দারুল উলুম করাচির উস্তাদ ছিলেন তিনি। দেশেও কয়েকটা মাদরাসার শাইখুল হাদিস পদ অলঙ্কৃত করে রেখেছিলেন। তাঁকে ছোটবেলায় দেখেছি বহুবার। সেসব এখন কেবলই স্মৃতি।

আজ এই কিংবদন্তি মনীষীকে নিয়ে মুরতাদ নিঝুম মজুমদারের বিদ্রূপাত্মক পোস্ট চোখে পড়ল৷ আমরা যদি আমাদের আকাবিরের ইজ্জত হেফাজত করি, আল্লাহ পরবর্তী প্রজন্মের দ্বারা আমাদের ইজ্জত হেফাজত করবেন। সুতরাং ইসলামের জন্য যাদের জীবন অতিবাহিত হয়েছে, তাদের অবমূল্যায়ন দেখে মুসলমানরা নীরব থাকতে পারে না। এসব বেয়াদবির শাস্তি দুনিয়া ও আখিরাতে তারা ঠিকই পাবে। আল্লাহ তাদের উভয় জাহানেই চরমভাবে লাঞ্ছিত করবেন ইনশাআল্লাহ।

15/07/2022

সময় থাকলে ইতিহাসটি পড়ুন!!!

ইজরায়েলে যারা শাসন করে তারা মূলত ইউরোপীয় ইহুদী। এদেরকে বলা হয় আশকেনাজি জুইশ। এরা ইউরোপ থেকে এসে ফিলিস্তিনী ভূখণ্ডে গেঁড়ে বসা ইহুদী।
কিছু আরব ইহুদী আছে, যারা আগে থেকেই ফিলিস্তিনে ছিল। আর কিছু অন্যান্য আরব দেশ থেকে এসেছে। এদেরকে বলা হয় মিজরাহি জুউশ। হিস্পানিক কিছু জুইশ আছে।
তবে এলিট শ্রেণী হচ্ছে- আশকেনাজি জুইশ। এরাই মূলত জার্মান আর ফ্রান্স থেকে বিতাড়িত হয়ে ফিলিস্তিনীদের জমি দখল করেছে।

এরা অসম্ভব উগ্র, জেনোফোবিক এবং ধণী। ইজরায়েলের এলিট শ্রেণী হচ্ছে এরা। এদের কালচারের সাথে আরব ইহুদীদের কালচার কোনোভাবেই মিলেনা।

ইহুদী ধর্ম অনুযায়ী মেসিয়াহ (মুসলমানদের কাছে দাজ্জাল) না আসা পর্যন্ত ইহুদীদের জন্য আলাদা দেশ গঠন করা পুরোপুরিভাবে নিষিদ্ধ।
এই কারণেই অন্যান্য দেশের অর্থোডক্স ইহুদী এবং ইহুদী ধর্মগুরুগণ ইজরায়েলের বিরোধী।
কারণ এই রাষ্ট্র ইহুদী ধর্মমতেও নিষিদ্ধ।

ধর্মীয় দেশ দাবী করলেও ইজরায়েল মূলত কোনো ইহুদী দেশ নয়, এটা একটা জায়োনিস্ট দেশ। সহজ ভাষায় বললে- জায়োনিজম হচ্ছে ইহুদী জাতীয়তাবাদের একটি পলিটিক্যাল টার্ম।
জায়োনিস্ট হওয়ার জন্য ইহুদী হওয়া শর্ত নয়। অর্থাৎ ইহুদী নন এমন ব্যক্তিরাও জায়োনিস্ট হতে পারেন। আবার ইহুদী মানেও জায়োনিস্ট নয়।
জায়োনিজমকে বাংলায় সম্ভবত ইহুদীবাদ বলা হয়। হিন্দু আর হিন্দুত্ববাদ যেমন এক নয়, অনেকটা সেরকম। ইহুদী ধর্মকে বলা হয় জুদাইজম।

তো জায়নবাদের প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছে স্টেট অব ইজরায়েল জাতির পিতা থিউডর হার্ৎজেল। যার স্বপ্ন ছিল তার মুভমেন্টের সমর্থক ইহুদীদের জন্য আলাদা একটা দেশ হবে এবং সেটা হবে ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমিতে।
সে আবার অবশ্য তার জীবদ্দশায় ইজরায়েল দেখে যেতে পারেনাই। তবে সে নানাভাবে চেষ্টা করেছিল।
ওসমানী খলীফা আব্দুল হামীদকে সে চিঠি লিখে প্রস্তাব দিয়েছিল যেন ইহুদীদের জন্য বাইতুল মোকাদ্দাসের কাছে কিছু জমি বরাদ্ধ দেয়া হয়।
বিনিময়ে তুরস্কের সব ঋণ পরিশোধ করে দেয়া হবে। খলীফা এই প্রস্তাব নাকচ করে দিলে ১৯০১ সালের মে মাসে থিওডর তার ক্লোজফ্রেন্ড পোলিশ ফিলিপ নিউলিন্সকিকে দিয়ে আবার প্রস্তাব পাঠায়। এবারে খলীফার জন্য বিপুল পরিমাণ স্বর্ণ সহ নানা উপহারের প্রস্তাব দেয়া হয়।
উল্লেখ্য যে, অন্যান্য ব্যবসা এবং সুদের ব্যবসা করে ইহুদীরা অনেক আগে থেকেই প্রচুর সম্পদের মালিক। ব্যাংকিং কনসেপ্ট জিনিসটাই ইহুদীদের থেকে তাদের সুদের ব্যবসা থেকে এসেছে। এই কারণে তাদের সম্পত্তি ছিল অঢেল।

খলীফা আব্দুল হামীদ বলেছিলেন- ফিলিস্তিনের ভূমি আমার একার সম্পদ নয় যে আমি লিখে দেব। প্রতিটা মুসলমানের রক্তের ফোঁটাতে এর মালিকানা। আমি বেঁচে থাকতে সেটা হতে দিতে পারিনা।

খলীফা আব্দুল হামীদ মারা গেছেন, ওসমানী খেলাফত ধ্বংস হয়েছে। খেলাফত বিলুপ্ত হয়েছে। বৃটিশরা যুদ্ধে জিতেছে। থিউডর হার্ৎজেল মারা গেছে। কিন্তু তার আইডিওলজি দিনে দিনে শক্তিশালী হয়েছে। তার স্বপ্নের দেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

বৃটিশরা ইউরোপ থেকে মার খাওয়া ইহুদীদের জন্য জায়গা বরাদ্ধ করে দিল ফিলিস্তিনে। থিউডরের স্বপ্নের সেই দেশ প্রতিষ্ঠিত হলো ফিলিস্তিনীদের রক্তের উপর। লাখ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হলো। ঘরবাড়ী এবং জীবন হারালো।
জায়োনিস্টদের তখন সশস্ত্র মিলিশিয়া ছিল।
তারা ফিলিস্তিনীদের হত্যা করতো, গ্রামের পর গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়ে সেই ভূমি দখল করতো।
এবং তারা বিশেষভাবে বৃটিশদের সহায়তা পেত।

ইহুদীদের জন্য প্রতিষ্ঠিত এই ইজরায়েলেও ইহুদীরাই বৈষম্যের শিকার হয়। যারা কালো ইহুদী তারাও বৈষম্যের শিকার হয়। এ নিয়ে তারা অনেকবার রাস্তায় নেমেছে। সবচেয়ে বেশী শিকার হয় আরব ইহুদীরা। কারণ তাদের ভাষা আরবী, তাদের বেশভূষা আরব মুসলমানদের মত। আরবী বলার কারণে তাদের চাকরী হয়না, আরবদের মত পোষাক পরায় চাকরী হয় না।
ধর্মে ইহুদী হওয়ার পরও জাতিতে একই না হওয়ায় তারা নানা বৈষম্য, বুলিং এবং হেনস্থার শিকার হয়। তাদের বলা হয় আরবদের ঘৃণা করতে। তো যারা পূর্বে আরব দেশে ছিল, তারা অর্থ্যাৎ বৃদ্ধরা বিষয়টা মেনে নিতে পারেনা। তারা প্রতিবাদ করে। কোনো লাভ হয় না।

তো যারা নিজ ধর্ম ইহুদীদের সাথেই এমন করে, তারা আরব মুসলমানদের সাথে কেমন আচরণ করবে সেটা সহজেই অনুমেয়। আবার আমরা তো দেখতেও পাই।

ইজরায়েল শুরু থেকেই বৃটিশ এবং আমেরিকানদের প্রত্যক্ষ সাপোর্ট পেয়ে আসছে। আরব ইজরায়েল যুদ্ধে আমেরিকান সৈন্যরা ইজরায়েলের পক্ষে যুদ্ধ করেছে বলেও বলা হয়।

এখনো যখন ইজরায়েল ফিলিস্তিনীদেরকে হত্যা করে, নারী-শিশুদেরও হত্যা করে, ধরে নিয়ে যায় এ নিয়ে জাতিসংঘ ইজরায়েলের বিরুদ্ধে কোনো প্রস্তাব আনলে আমেরিকা ভেটো দেয়। সরাসরি ইজরায়েলকে রক্ষা করে।
জাতিসংঘের আইন, আন্তর্জাতিক আইন, মানবাধিকার, যুদ্ধাপরাধ আইন সব কিছুই তারা নিয়মিত লংঘন করে। কিন্তু তাতে তাদের কোনো কিছুই হয় না। কারণ আমেরিকা আছে। তারা প্রকাশ্যেই ইজরায়েলকে রক্ষা করে নেয়, একদম নগ্নভাবে।

ইজরায়েলের কোনো সীমানা নেই। কারণ, তারা প্রতিদিনই দখল করে চলেছে।
যেকোনো দিন ইহুদী সেটেলার এসে আপনাকে বলবে এই ঘর আমার। এরপর ইজরায়েলী পুলিশ এসে আপনাকে বের করে দেবে, পুরুষদের জেলে নিয়ে যাবে। তারপর বুলডোজার এসে আপনার ঘর গুঁড়িয়ে দেবে। এরপর সরকারী টাকায় সেখানে ইহুদীদের জন্য ঘর বানানো হবে।
নিজেদের শত শত বছরের ভিটেবাড়ি থেকে উচ্ছেদ হওয়া ফিলিস্তিনীরা এক দিনেই উদ্বাস্তু হয়ে গেল। রিফিউজি হিসেবে কোথাও আশ্রয় নিতে হবে।
এভাবে তারা প্রতিদিন ঘরবাড়ী দখল করে নেয় আর ফিলিস্তিনীরা উদ্বাস্তু হয়।
ইহুদীদের জন্য ঘরবাড়ী বানানোর জন্য যে টাকা খরচ হয়, তার জন্যও আমেরিকা থেকে সরকারী এবং বেসরকারিভাবে টাকা আসে।
আবার প্রতিবছর ইজরায়েলের জন্য প্রায় ৪ বিলিয়ন ডলার সামরিক সহায়তা আসে।
পশ্চিমের দেশগুলোতে ইজরায়েলীদের জন্য প্রায় ভিসা ফ্রী। নামী দামী ইউনিভার্সিটি গুলোতে তারা স্কলারশিপ পায়। এর বাইরে আবার প্রায় সব বড় বড় কোম্পানীর বিলিয়ন ডলারের ইনভেস্টমেন্ট আছে ইজরায়েলে। তারা শিক্ষাখাতে ইনভেস্ট করে, গবেষণা খাতে ইনভেস্ট করে, ট্যুরিজম খাতে ইনভেস্ট করে।

অন্যদিকে ফিলিস্তিনীরা আগামীকাল পর্যন্ত তাদের বাড়ীটা থাকবে কিনা জানে না। প্রাণ থাকবে কিনা সেটাও জানেনা। স্কুলটা থাকবে কিনা তাও জানেনা। রাত বিরাতে এসে তল্লাশী চালিয়ে ইজরায়েলী পুলিশ যাকে তাকে ধরে নিয়ে যায়। অল্পবয়সী শিশু হলেও কোনো রক্ষা নাই।

ফিলিস্তিনীদের সেনাবাহিনী কিংবা পুলিশ ফোর্স রাখারও পারমিশন নাই। ফিলিস্তিনী সিকিউরিটি ফোর্স নামে একটা বাহিনী আছে, তাদের ভারী কোনো অস্ত্র রাখার অনুমতি নাই।
ইজরায়েলের সাথে এক চুক্তিতে এটা মেনে নেয় ইয়াসির আরফাতের পিএলও।
ফলে মাহমুদ আব্বাস নামের প্রেসিডেন্ট হলেও কাজে কোনো ক্ষমতা তার নাই।

ইজরায়েল দখল করতে করতে ফিলিস্তিনকে এমনভাবে দখল করেছে- একপাশে গাযা উপত্যকা, অন্যপাশে পশ্চিম তীর। মাঝখানে ইজরায়েল।
ব্যাপারটা অনেকটা পূর্ব পাকিস্তান আর পশ্চিম পাকিস্তানের মত পশ্চিম তীর আর গাযা, মাঝখানে ভারতের মত ইজরায়েল।
মনে করার সুবিধার্তে, গাযা হচ্ছে বাংলাদেশ, পশ্চিম তীর পাকিস্তান। মাঝখানে ভারত হচ্ছে ইজরায়েল।
(ভৌগোলিক অবস্থান বা ম্যাপ বুঝার সুবিধার্তে বললাম)।

ইজরায়েলীরা পৃথিবীর ১৬০টি দেশে প্রায় ভিসা ফ্রী ঘুরতে পারলেও ফিলিস্তিনীরা এক জায়গায় থেকে অন্য জায়গায় যেতে ইজরায়েলের অনুমতি নিতে হয়। ফিলিস্তিনের গাযা উপত্যকা থেকে যদি কেউ ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে যেত চায়, তাহলে অনেকদিন আগে এপ্লাই করতে হয়। তাও ৯০% ক্ষেত্রে অনুমতি পাওয়া যায় না। জিজ্ঞাবাদে ইজরায়েল সন্তুষ্ট হলেই কেবল অনুমতি দেয়।
বেশীরভাগ গাযাবাসী কখনো আল আকসা মসজিদ চোখে দেখেনি। কারণ আল আকসা পশ্চিমতীরে।

পিএলও আর হামাস হচ্ছে ফিলিস্তিনের দুটি রাজনৈতিক দল। হামাস সংখ্যাগরিষ্ঠ গাযাতে আর পিএলও পশ্চিম তীরে।

তবে ২০০৬ সালে পুরো ফিলিস্তিনের নির্বাচনে হামাস পিএলওর উপরে জয়লাভ করে ফিলিস্তিনের ক্ষমতায় আসে। ইসমাইল হানিয়া প্রধানমন্ত্রী হয়। মাহমুদ আব্বাস প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা দখল করে নেয়।
অনেকটা পাকিস্তানের নির্বাচনের মত। শেখ মুজিবুর রহমান নির্বাচিত হয়েও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হতে পারেননি। ইসমাইল হানিয়ার ক্ষেত্রেও তাই ঘটে।

এরপর থেকে ইসমাইল হানিয়া তার এলাকা গাযাতেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে থাকেন।
বাংলাদেশ পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হয়ে যাওয়ার মত। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে ফিলিস্তিন নিজেই তো স্বাধীন নয়।

মাহমুদ আব্বাসের পিএলও ইজরায়েলী সকল শর্ত মেনে ফিলিস্তিন তথা পশ্চিমতীরকে ডিমিলিটাইরাইজড করলেও গাযার হামাস সেটা মেনে নেয়নি।
পশ্চিম তীরে ইজরায়েলী শর্ত অনুযায়ী কোনো সেনাবাহিনী নেই। সিকিউরিটি ফোর্স আছে, যাদের নামে মাত্র একটা পুলিশ ফোর্স আছে। যেটা আছে তাদেরও শর্ত হচ্ছে ইজরায়েলী পুলিশকে সাহায্য করতে হবে। তাদের কোনো ভারী অস্ত্র নেই। হাল্কা অস্ত্র যা আছে, সেটাও ইজরায়েলের দেয়া। ওদের গাড়ীও ইজরায়েলের দেয়া। যা ইজরাইল সবসময় ট্র‍্যাক করে।
কোনো ফিলিস্তিনীকে জোর করে বেআইনিভাবে ধরে নিয়ে গেলেও ফিলিস্তিনী সিকিউরিটি ফোর্স কিছু করতে পারেনা।
এজন্য পশ্চিম তীরের যেকোনো বাড়ীতে ইজরায়েলী পুলিশ চাইলে যেকোনো সময় তল্লাশী চালাতে পারে। আমরা যে পাথর ছুড়ার দৃশ্য দেখি, এগুলা বেশীরভাগই পশ্চিম তীরের। কারণ তাদের অস্ত্র রাখার অনুমতি নেই।
ইচ্ছে হলেই যে ঘরবাড়ি থেকে বের করে দিয়ে দখল করে নেয়, সেটাও পশ্চিমতীরে। কারণ পশ্চিমতীর ইজরায়েলী অকিউপ্যাশনে।
এখানকার বাসিন্দারা মোটামুটি চলাচলের স্বাধীনতা পেলেও ঘরবাড়ী কখন বেদখল হয়ে যাবে বলতে পারেনা।
এতে ফাতাহ বা পিএলও কিছু করতে পারেনা।

অন্যদিকে হামাস শাসিত গাযা উপত্যকা ইজরায়েলের কোনো শর্ত মানেনা। তাদের মিলিটারী আছে। তাদের অঞ্চলে ইজরায়েলী পুলিশ ঢুকতে পারেনা। তারা নিজেরাই সেখানকার নিরাপত্তা দেয়। তাদের আর্টিলারি ইউনিট আছে। তাদের কাছে ভারী অস্ত্র আছে। যার বেশীরভাগ তারা নিজেরাই তৈরী করে।
এখানে ইজরায়েলী সেটেলাররা তো দূরের কথা, ইজরায়েলী পুলিশ, ইজরায়েলী আর্মীও ঢুকতে পারেনা।

ইজরায়েলের শর্ত মেনে না নেয়ায় গাযা উপত্যকাকে ইজরায়েল চারিদিক থেকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে। গাযার দুইদিকে ইজরায়েল, একদিকে মিশর আরেকদিকে সমুদ্র।
তাদের উপর ইজরায়েল ল্যান্ড, এয়ার এন্ড সী ব্লক দিয়ে রেখেছে। গাযা উপত্যকাকে বলা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে বড় জেল খানা।
মিশর সীমান্তে আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসি দেয়াল তুলে দিয়েছে। ফিলিস্তিনীদের চলাচলের জন্য মাটির নীচে সুড়ঙ্গ ছিল, সেগুলো সে বন্ধ করে দিয়েছে।
মুহাম্মদ মুরসী ক্ষমতায় আসার পর যখন মিশর সীমান্ত ফিলিস্তিনীদের জন্য খুলে দেয়, তখন ইজরায়েল মুরসীকে সবচেয়ে বড় থ্রেট হিসেবে নেয়।
ইজরায়েল, সৌদি ও আমিরাত জোট মুরসীকে হটিয়ে সিসিকে ক্ষমতায় আনে।
সে সময়ে সিসিকে সবার আগে অভিনন্দন জানায় সৌদি আরব।
যদিও ইজরায়েলের উদ্দেশ্য আর তাদের উদ্দেশ্য ছিল ভিন্ন, লক্ষ্য ছিল একই।
কপাল পুড়ে ফিলিস্তিনীদের।
এরপর থেকেই ফিলিস্তীনের জন্য সেই সীমান্ত বন্ধ হয়ে যায়। সুড়ঙ্গ পথ ব্যবহারের জন্য মিশর সীমান্তে যে ঘরবাড়ি গুলো ছিল, বুলডোজার দিয়ে সেসব বাড়ীও ভেঙে দেয় মিশর।

হামাস শাসিত গাযায় শিক্ষার হার ৯৯%। ইজরায়েলী হামলায় ঘরবাড়ি ভেঙে গেলে সবার আগে তারা স্কুল গুলোকে ঠিক করে। তাদের একটা আন্তর্জাতিক মানের ইউনিভার্সিটি আছে।
গাযায় একটা বিমানবন্দর ছিল, গাযা ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট নামে, যা ইজরায়েল ধ্বংস করে দেয়।
পুরো ফিলিস্তিনে আর কোনো এয়ারপোর্ট নেই।

ফিলিস্তিনী প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সাথে ইজরায়েলের ফুল স্কেলে দুইবার যুদ্ধ হয়। এতে ইজরায়েলী আর্মীর ব্যাপক প্রাণহানি ঘটে। ২০১৪ সালের যুদ্ধে ইজরায়েলী সেনাদের ব্যাপক প্রাণহানি ঘটলে ইজরায়েল পিছু হটে। জুলাইয়ের ৮ তারিখ থেকে আগস্টের ২৬ তারিখ পর্যন্ত স্থায়ী এই যুদ্ধে প্রায় ১শ ইজরায়েলী সেনা নিহত হয়, অপরদিকে দুই হাজার ফিলিস্তিনী শহীদ হয়।
কিন্তু ইজরায়েলের জন্য এটাও ছিল বিশাল ধাক্কা।

গাযা উপত্যকায় খাবার, নিত্যপ্রয়োজনীয় অষুধ সহ চোরাই পথে আনতে হয়।
ইরান চোরাইপথে অস্ত্র আর কাতার টাকা দেয়।
এর বাইরে তুরস্ক সমুদ্র সীমা আর ইজরায়েলী সীমা ব্যবহার করে জাহাজভর্তি খাবার, অষুধ ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য গাযায় পৌঁছে দেয়। একবার তুরস্কের একটা জাহাজ ডুবিয়ে দিয়েছিল ইজরায়েল।
সৌদি আরব সহ অন্যান্য আরবদেশ গুলো তাদের দানের একটা বড় অংশ ফিলিস্তিনে পাঠায়। তবে সেটা গাযায় নয় বরং পশ্চিমতীরে যায়।

ইজরায়েল হামাসকে বার বার বলছে- তোমরা যদি আমাদের শর্ত মেনে নাও, সেনাবাহিনী বিলুপ্ত করো, অস্ত্র সমর্পণ করো, নিরস্ত্র হও তাহলে তোমাদের অবরোধ আমরা তুলে নেব। তোমরা যেখানে চাও যেতে পারবে। আমাদের এখানে চাকরী করতে পারবে। যা কিনতে চাও, তা কিনতে পারবে।
মাহমুদ আব্বাসের পিএলও পশ্চিমতীরে এই শর্ত মেনে নিলেও ইসমাইল হানিয়া আর খালিদ মিশালের গাযা উপত্যকার হামাস সেটা মেনে নেয়নি। যার কারণে তারা অবরুদ্ধ।
এই কারণে পশ্চিমতীরের ফিলিস্তিনীরা ইজরায়েলের দিকে ঢিল আর পাথর ছুঁড়লেও গাযা উপত্যকার ফিলিস্তিনীরা অস্ত্র নিয়ে যুদ্ধ করে, ইজরায়েলের দিকে মিসাইল ছুঁড়ে।

যদিও ইজরায়েলী অত্যাধুনিক ডিফেন্স সিস্টেম আইরন ডোম ফিলিস্তিনীদের এই মিসাইল আকাশে থাকতেই ধ্বংস করে।
তবে এইবার ইজরায়েলের আইরন ডোম হামাসের মিসাইল গুলো সব আটকে দিতে সক্ষম হয়নি।
অনেক গুলো মিসাইল ইজরায়েলের নানা শহরের রাস্তা এবং ভবনে আঘাত হেনেছে। এতে ইজরায়েল সহ তার মিত্ররা বেশ অবাক হয়েছে।
যদিও এ ব্যাপারে ইসমাইল হানিয়ে গত বছর বলেছিলেন।

আইরন ডোম কতটা আঘাত ঠেকাতে সক্ষম সেটা নিয়ে এখন প্রশ্ন উঠেছে।
কারণ হামাসের মিসাইল গুলো কোনো অত্যাধুনিক মিসাইল নয়। এগুলো তারা পাইপ এবং অন্যান্য পরিত্যক্ত জিনিসপত্র থেকে বানায়।
এই হ্যান্ডমেইড রকেট গুলো আঘাত হানার পর আইরন ডোম কতটা সেফ সেটা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।

প্রায় চার বিলিয়ন ডলার বার্ষিক সামরিক সহায়তা, বিলিয়ন ডলারের শিক্ষা এবং রিসার্চের ইনভেস্টমেন্ট, প্রায় ভিসা ফ্রী ট্রাভেল, নামী ইউনিভার্সিটিতে স্কলারশিপ, আমেরিকা, কানাডা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, ইউরোপের একনিষ্ঠ সাপোর্ট এত কিছু পাওয়া ইজরায়েলের সাথে অবরুদ্ধ ফিলিস্তিনের তুলনা করার সময় আপনারা যারা "ইজরায়েল জ্ঞান বিজ্ঞানে কত এগিয়েছে অথচ ফিলিস্তিন জ্ঞান বিজ্ঞানে আগায় নাই কেন?" বলেন, আপনাদের লজ্জা হওয়া উচিৎ।

Photos from ইসলামি আইন ও শরিয়ত's post 15/07/2022
12/07/2022

🍁🍁🍁তালাক সম্পর্কিত কিছু ভুলত্রুটি

💞💞💞মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুল মালেক

এ সংখ্যায় শুধু এ বিষয়ে আলোচনা করাই মুনাসিব মনে হল। একটি কথা তো বারবার লেখা হয়েছে, ওলামা-মাশায়েখও আলোচনা করে থাকেন যে, অতীব প্রয়োজন (যা শরীয়তে ওজর বলে গণ্য) ছাড়া স্বামীর জন্য যেমন তালাক দেওয়া জায়েয নয় তেমনি স্ত্রীর জন্যও তালাক চাওয়া দুরস্ত নয়। তালাকের পথ খোলা রাখা হয়েছে শুধু অতীব প্রয়োজনের ক্ষেত্রে ব্যবহারের জন্য। বর্তমান সমাজে, বিশেষ করে আমাদের এতদাঞ্চলে কোনো পরিবারে তালাকের ঘটনা যে কত ফাসাদ-বিশৃঙ্খলা, জুলুম-অত্যাচার এবং ঝগড়া-বিবাদের কারণ হয় তা আর বলে বোঝানোর প্রয়োজন নেই। তালাক প্রদানের ক্ষমতাকে শরীয়তের নির্ধারিত নীতিমালার বাইরে ব্যবহার করা নিঃসন্দেহে আল্লাহর বিধানের সাথে বালখিল্যতার শামিল।

এজন্য কেউ দাম্পত্য জীবনে পা রাখার চেষ্টা করলে তার অপরিহার্য কর্তব্য হবে, বিয়ের আগেই দাম্পত্য জীবনের নিত্য প্রয়োজনীয় মাসআলাগুলোর সাথে তালাকের বিধানসমূহ জেনে নেওয়া।

তালাক অত্যন্ত স্পর্শকাতর একটি বিষয়। কেউ এই ক্ষমতার অপব্যবহার করলে কিংবা ভুল পন্থায় তা প্রয়োগ করলে সে একদিকে যেমন গুনাহগার হবে অন্যদিকে তালাকও কার্যকর হয়ে যাবে। তাই প্রতিটি বিবেচক স্বামীর দায়িত্ব হল, তালাকের শব্দ কিংবা এর সমার্থক কোনো শব্দ মুখে উচ্চারণ করা থেকে সতর্কতার সাথে বিরত থাকা।

অবশ্য অতীব প্রয়োজনে তালাক প্রদানে বাধ্য হলে স্ত্রীর পবিত্র অবস্থায় শুধু এক তালাক দিয়ে ক্ষান্ত হওয়া উচিত। এভাবে বলবে যে, ‘তোমাকে তালাক দিলাম।’ তালাকের সাথে ‘বায়েন’ শব্দ কিংবা ৩ সংখ্যা ব্যবহার করবে না। কেউ ‘বায়েন’ শব্দ বলে ফেললে (চাই তা এক বা দুই তালাক হোক না কেন) নতুন করে শরীয়তসম্মত পন্থায় বিবাহ দোহরানো ছাড়া স্ত্রীর সাথে পুনরায় মিলনের পথ বন্ধ হয়ে যাবে।

অনুরূপভাবে তিন তালাক দিয়ে ফেললে-একই মজলিসে পৃথক পৃথকভাবে তিন তালাক দেওয়া হোক কিংবা একই শব্দে তিন তালাক দেওয়া হোক- যেমন বলল, তোমাকে তিন তালাক দিলাম। অথবা আগে কখনো দুই তালাক দিয়েছিল আর এখন শুধু এক তালাক দিল। সর্বমোট তিন তালাক দেওয়া হল। যেকোনো উপায়ে তিন তালাক দেওয়া হলে বৈবাহিক সম্পর্ক সম্পূর্ণরূপে শেষ হয়ে যায়। এ অবস্থায় শুধু মৌখিকভাবে স্ত্রীকে বিবাহে ফিরিয়ে আনার যেমন কোনো সুযোগ থাকে না তেমনি নতুন করে বিবাহ দোহরানোর মাধ্যমেও ফিরিয়ে নেওয়ার পথ খোলা থাকে না।

একসাথে তিন তালাক দেওয়া কিংবা বিভিন্ন সময় তালাক দিতে দিতে তিন পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়া একটি জঘণ্য অপরাধ ও ঘৃণিত কাজ। আল্লাহ তাআলা এর শাস্তি হিসেবে এই বিধান দিয়েছেন যে, তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে পুনরায় একসাথে বসবাস করতে চাইলে স্ত্রীর ইদ্দত অতিবাহিত হওয়ার পর অন্যত্র তার বিয়ে হওয়া এবং সে স্বামীর সাথে তার মিলন হওয়া অপরিহার্য। এরপর কোনো কারণে সে তালাকপ্রাপ্তা হলে কিংবা স্বামীর মৃত্যু হলে ইদ্দত পালনের পর এরা দুজন পরস্পর সম্মত হলে নতুন করে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারে।

এজন্য শরীয়ত আগেই সাবধান করে দিয়েছে যে, প্রথমত তালাকের কথা

চিন্তাও করবে না। তবে অতীব প্রয়োজনে কখনো তালাক প্রদানের প্রয়োজন হলে শুধু সাদামাটা তালাক দাও, শুধু এক তালাক। যেন উভয়ের জন্যই নতুন করে চিন্তা-ভাবনার সুযোগ থাকে এবং পুনরায় ফিরে আসার পথ খোলা থাকে। এরপর আবারো কোনো সমস্যা দেখা দিলে এভাবেই শুধু এক তালাক দিবে। এখনও ফিরে আসার পথ খোলা থাকবে।

কিন্তু এরপর যদি আবার কখনো শুধু এক তালাকই দেওয়া হয় এবং সব মিলে তিন তালাক হয়ে যায় এ অবস্থায় আর তাকে ফিরিয়ে আনারও সুযোগ থাকবে না, নতুন করে বিয়ে করার বৈধতাও বাকি থাকবে না।

আজকাল স্বামী-স্ত্রী তালাকের বিধান জানা ও সে অনুযায়ী আমল করার পরিবর্তে নিজেদের মনে এমনসব ভুল ও বানোয়াট মাসআলা স্থির করে রাখে যে, আল্লাহ মাফ করুন।

১. তিন তালাক ছাড়া কি তালাক হয় না

যেমন, কেউ মনে করে যে, শুধু এক বা দুই তালাক দেওয়ার দ্বারা তো তালাকই হয় না। তালাকের জন্য একসাথে তিন তালাক দেওয়াকে তারা অপরিহার্য মনে করে।

মনে রাখবেন, এই ধারণা সম্পূর্ণ ভুল। তালাক দেওয়ার সঠিক পদ্ধতি হল, শুধু এক তালাক দেওয়া। পরবর্তীতে আবারও প্রয়োজন হলে শুধু এক তালাকই দিবে। এরচেয়ে বেশি দিবে না। কিন্তু তিন তালাক দিয়ে ফেললে তাদের দাম্পত্য সম্পর্ক বহাল রাখার সকল পথ বন্ধ হয়ে যাবে।

একই মজলিসে কিংবা একই শব্দে তিন তালাক দেওয়া হারাম ও কবীরা গুনাহ। কিন্তু কেউ এমনটি করলে তালাক কার্যকর হবে এবং তাদের বৈবাহিক সম্পর্ক সম্পূর্ণভাবে শেষ হয়ে যাবে।

২. তালাকের সাথে কি বায়েন শব্দ ব্যবহার করা জরুরি

অনেকে মনে করে, শুধু তালাক বললে তালাক হয় না; বরং তালাকের সাথে ‘বায়েন’ শব্দও যোগ করা অত্যাবশ্যক।

এটিও ভুল ধারণা। শুধু তালাক শব্দ দ্বারাই তালাক হয়ে যায়। এর সাথে ‘বায়েন’ শব্দ যোগ করার কোনো প্রয়োজন নেই। উপরন্তু এ শব্দের সংযোজন নাজায়েয। তবে কেউ যদি এক তালাক বায়েন বা দুই তালাক বায়েন দেয় তবে সে মৌখিকভাবে রুজু করার (পুনরায় স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করার) পথ বন্ধ করে দিল। এখন শুধু একটি পথই খোলা আছে। আর তা হল, নতুনভাবে শরীয়তসম্মত পন্থায় বিবাহ দোহরানো। অথচ শুধু তালাক বললে এক তালাক বা দুই তালাক পর্যন্ত মৌখিক রুজুর পথ খোলা থাকে। এজন্য স্বামীর উচিত, যত উত্তেজিতই হোক না কেন, কোনো অবস্থাতেই যেন তিন তালাক না দেয়। এমনকি তা কখনো মুখেও না আনে। অথচ অনেকে তো তিন তালাক দেওয়ার পরও পৃথকভাবে ‘বায়েন’ শব্দ যোগ করেন। যেন সব কটি তালাক দেওয়ার পরও তার মন ভরল না। না হলে তিন তালাক দেওয়ার পর আর কী বাকি থাকে যে, ‘বায়েন’ শব্দ বলতে হবে?!

মনে রাখবেন, তিন তালাক দেওয়াই এক গুনাহ, এরপর ‘বায়েন’ শব্দ যোগ করে সে আরো বেশি গুনাহগার হল।

৩. একসাথে তিন তালাক দিলে কি তালাক হয় না

অনেকে এই ভুল ধারণাও প্রচার করে রেখেছে যে, একসাথে তিন তালাক দেওয়া হলে তালাক হয় না কিংবা শুধু এক তালাক হয়।

এটিও একটি মারাত্মক ভুল। একসাথে তিন তালাক দেওয়া জায়েয না হলেও কেউ যদি এই নাজায়েয কাজ করে তাহলে তার স্ত্রীর উপর তিন তালাক ঠিকই পতিত হয়। এক্ষেত্রে তার মৌখিকভাবে রুজু করার অধিকার অবশিষ্ট থাকে না। এমনকি নতুন করে বিবাহ দোহরিয়ে নেওয়ার দ্বারাও তারা একে অপরের জন্য হালাল হতে পারে না। তাই সকল স্বামীরই কর্তব্য, প্রথম থেকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকা। মুখ দিয়ে কখনো তিন তালাক কিংবা তালাক, তালাক, তালাক শব্দ উচ্চারণ না করা। আর আগেই দুই তালাক দিয়ে থাকলে এখন আর তৃতীয় তালাকের চিন্তাও না করা।

৪. গর্ভাবস্থায় তালাক দিলে কি তালাক পতিত হয় না

অনেকে এই মাসআলা বানিয়ে রেখেছে যে, গর্ভাবস্থায় স্ত্রীকে তালাক দেওয়া হলে তা কার্যকর হয় না। এটিও সম্পূর্ণ অবাস্তব কথা। গর্ভাবস্থায় হোক বা অন্য যেকোনো অবস্থাই হোক তালাক দেওয়া হলে তা পতিত হয়ে যায়। এজন্য সঠিক মাসআলা শেখা সকলের দায়িত্ব। অজ্ঞতার ধোকায় থাকার কারণে হারাম কখনো হালাল হতে পারে না।

৫. তালাক পতিত হওয়ার জন্য কি সাক্ষীর উপস্থিতি জরুরি

অনেকের ধারণা, স্বামী তালাকের সময় কোনো সাক্ষী না রাখলে তালাক পতিত হয় না। আগেরটার মতো এটাও মানুষের মনগড়া মাসআলা। কোন মূর্খ এই কথা বলেছে জানা নেই। সাক্ষীর প্রয়োজন তো হয় বিবাহের সময়। তালাক পতিত হওয়ার জন্য এক বা একাধিক কোনো সাক্ষীরই প্রয়োজন নেই। স্বামী যদি রাতের অন্ধকারে একা একা বসে তালাক দেয় তাহলেও তালাক হয়ে যায়।

৬. রাগের অবস্থায় তালাক দিলে কি তালাক হয় না

তালাক তো দেওয়াই হয় রাগ হয়ে। কয়জন আছে, শান্তভাবে তালাক দেয়? আসলে তো এমনই হওয়া উচিত ছিল যে, যদি বাস্তবসম্মত ও অনিবার্য প্রয়োজনে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হয় তাহলে বড়দের সঙ্গে পরামর্শ করে একে অন্যের কল্যাণকামী হয়ে বুঝে-শুনে, সঠিক মাসআলা জেনে নিয়ে মাসআলা অনুযায়ী তালাক প্রদানের মাধ্যমে বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন করবে।

কিন্তু আফসোস! অধিকাংশ মানুষ মাসআলা জানার চেষ্টাও করে না, আর না তাদের মধ্যে এই সুবুদ্ধি আছে যে, বড়দের সাথে পরামর্শ করবে, চিন্তা-ভাবনা করবে। নিজের ইচ্ছাবিরোধী কোনো কিছু পেলেই রাগের বশে তালাক দিয়ে ফেলে। আর তা এক বা দুইটি নয়; এক নিঃশ্বাসে তিন তালাক।

যখন রাগ প্রশমিত হয় তখন অনুতপ্ত হয় এবং বিভিন্ন ধরনের কথা বানাতে থাকে। বলে, আমি রাগের মাথায় বলে ফেলেছি, তালাক দেওয়ার ইচ্ছা ছিল না। এসব লোকের জেনে রাখা উচিত যে, তালাক পতিত হওয়ার জন্য নিয়তের কোনো প্রয়োজন নেই। এটা কোনো ইবাদত নয় যে, এর জন্য নিয়ত করতে হবে। নিয়ত থাক বা না থাক সর্বাবস্থায় তালাক শব্দ বলে ফেললে বা কাগজে লিখে দিলেই তালাক হয়ে যায়। তেমনিভাবে রাগের অবস্থায় তালাক দিলেও তালাক হয়ে যায়, এমনকি হাস্যরস বা ঠাট্টাচ্ছলে তালাক দিলেও তা পতিত হয়ে যায়।

অবশ্য কেউ যদি প্রচন্ড রেগে যায় ও রাগের ফলে বেহুঁশ হয়ে পড়ে আর এ অবস্থায় সে কী বলেছে তার কিছুই মনে না থাকে তাহলে ঐ অবস্থার তালাক কার্যকর হবে না।

শেষকথা এই যে, দাম্পত্য জীবন আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে অনেক বড় ও বিশেষ একটি নেয়ামত। স্বামী-স্ত্রী সকলের কর্তব্য, এই নেয়ামতের যথাযথ মূল্যায়ন করা এবং একে অপরের সকল অধিকার আদায় করা। স্ত্রীর জন্য উচিত নয়, কথায় কথায় স্বামীর কাছে তালাক চাওয়া। আবার স্বামীর জন্যও জায়েয নয় আল্লাহ তাআলার দেওয়া ক্ষমতার অপব্যবহার করা।

বিয়ে, তালাক ও দাম্পত্য জীবনের সকল বিধান ও মাসআলা শিক্ষা করা স্বামী-স্ত্রী উভয়ের জন্য জরুরি। বিশেষ করে স্বামীর কর্তব্য হল, তালাকের মাসআলা ও এর পরিণতি সম্পর্কে অবগত না হয়ে মুখে কখনো তালাক শব্দ উচ্চারণ না করা। আর যদি কোনো কারণে তালাক দেয় এবং এমনভাবে দেয় যে, এখন আর তাদের একসাথে থাকা শরীয়তে বৈধ নয় তাহলে তাদের আল্লাহকে ভয় করা উচিত। বিভিন্ন টাল-বাহানা, অজুহাতের আশ্রয় নিয়ে কিংবা ভুল কথার উপর ভিত্তি করে অথবা মূল ঘটনা গোপন রেখে একসাথে বাস না করা উচিত। বিয়ে শুধু একটি সময়ের বিষয় নয়, সারা জীবনের বিষয়।

বাস্তবেই যদি তালাক হয়ে যায় এবং শরীয়তের দৃষ্টিতে বৈবাহিক সম্পর্ক শেষ হয়ে যায় এরপরও স্বামী-স্ত্রী হিসেবে একসাথে বাস করে তাহলে তা হবে কবীরা গুনাহ এবং উভয়েই যেন ব্যভিচারের গুনাহয় লিপ্ত।

আল্লাহ তাআলা সকলকে হেফাযত করুন এবং তাকওয়া ও পবিত্রতা দান করুন। আমীন।

Website