Digital Coocing House
Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from Digital Coocing House, Cooking school, .
** চকলেট ওভালটিন কাপ কেক **
চকলেট ওভালটিন কাপ কেক তৈরির পদ্ধতি জেনে নিন –
উপকরণ:
ময়দা ১ কাপ,
ডিম ২টি,
চিনি আধা কাপ,
ওভালটিন ১ টেবিল চামচের একটু কম,
বেকিং পাউডার ১ চা-চামচ,
কোকো পাউডার ও কফি পাউডার ১ টেবিল চামচের একটু কম,
ডার্ক চকলেট (মিমি চকলেট) দেড় কাপ।
প্রণালি:
১টি বাটিতে ২টি ডিমের সাদা অংশ নিয়ে বিট করতে হবে। এমনভাবে বিট করতে হবে, যেন ভালোভাবে ফোম হয়। যখন বাটিটা উল্টিয়ে ধরলেও ফোমটা পড়বে না, তখন বুঝতে হবে ফোমটা ভালো হয়েছে। ফোম ভালো হলে কেক ভালো হবে।
১ বাটিতে ডিমের কুসুম আর আধা কাপ চিনি দিয়ে ব্লেন্ড করতে হবে। ১টি প্লেটে ময়দা, বেকিং পাউডার, কোকো পাউডার, ওভালটিন ও কফি পাউডার চেলে নিতে হবে। এরপর সব মিশ্রণ খুব আলতো করে স্প্যাচুলা দিয়ে মিশিয়ে নিতে হবে। কাপ কেকের পাত্রে সামান্য তেল মেখে ময়দা গড়িয়ে মিশ্রণটি ঢেলে দিতে হবে।
ওভেন ১৬০ ডিগ্রিতে ১০ মিনিট প্রি-হিট করতে হবে। প্রি-হিট হয়ে গেলে কাপ কেকগুলো ২০-২৫ মিনিট বেক করতে হবে। ১টি কাঠি দিয়ে দেখতে হবে কেক হয়েছে কি না। কাঠির গায়ে কিছু না লেগে থাকলে মনে করতে হবে কেক হয়ে গেছে।
মাইক্রো ওভেনে ডার্ক চকলেট গরম করে গলিয়ে নিতে হবে। ডার্ক চকলেটের মিশ্রণ দিয়ে কাপ কেকের ওপর পুরু করে লেয়ার দিতে হবে। সাইডে হালকা করে দিতে হবে। মাল্টি কালারের ডেকোরেশন বল দিয়ে পছন্দমতো সাজিয়ে পরিবেশন করুন।
** নারকেল সাগুর পুডিং **
নারকেল সাগুর পুডিং রান্নার রেসিপি জেনে নিন –
উপকরণ:
ক্যারামেলের জন্য চিনি ৪ টেবিল চামচ,
পানি দুই টেবিল চামচ।
মূল রান্নার উপকরণ:
ডিম ৪টি,
কনডেন্সড মিল্ক দেড় কাপ,
চিনি পৌনে ১ কাপ,
গুঁড়া দুধ আধা কাপ,
নারকেলের দুধ (টিনজাত) দেড় কাপ,
নারকেল কোরানো সিকি কাপ,
সাগুদানা সিকি কাপ।
প্রণালি:
ক্যারামেলের জন্য ৮ ইঞ্চি ব্যাসের পুডিং বানানোর পাত্রে চিনি ও পানি মাঝারি আঁচে গরম করুন। চিনি গলে লালচে হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন। চুলা থেকে নামিয়ে বাটি ঘুরিয়ে ক্যারামেল সমানভাবে পাত্রের তলানি ও পাশে ছড়িয়ে দিন।
মূল রান্নার প্রণালি:
সাগুদানা পানিতে ৩০ মিনিট ভিজিয়ে রেখে পানি ঝরিয়ে নিন। কড়া আঁচে গুঁড়া দুধ, কনডেন্সড মিল্ক আর পানি মিশিয়ে ফুটিয়ে ঠান্ডা করুন। দুধের মিশ্রণে চিনি, ডিম ও নারকেলের দুধ দিয়ে ফেটান। কোরানো নারকেল মিশিয়ে দিন। ক্যারামেল করা পাত্রে দুধের মিশ্রণ ঢালুন। সাগুদানা দিন।
পুডিংয়ের বাটি আর একটি বড় পাত্রে বসিয়ে দিন। বড় পাত্রে পুডিংয়ের পাত্রের অর্ধেক উচ্চতা পর্যন্ত পানি দিন। বড় পাত্র ঢেকে ভারী কিছু দিয়ে চাপা দিন, যেন ঢাকনা না খোলে। পুডিংয়ের পাত্রসহ বড় পাত্রটি একটি কড়া আঁচের চুলায় বসান। পানি ফুটে উঠলে ঢিমা আঁচে দুই–আড়াই ঘণ্টা সেদ্ধ করুন। এর মধ্যে পানি শুকিয়ে যাওয়ার উপক্রম হলে বারবার পানি দিন। পুডিং নামিয়ে পাখার বাতাসে ঠান্ডা করুন।
ফ্রিজে পুডিং ছয় ঘণ্টা রেখে ঠান্ডা করুন। ঢাকনা সরিয়ে ছুরি দিয়ে সাবধানে পুডিং পাত্রের কিনার থেকে পুডিং আলাদা করুন। এবার উপুড় করে পরিবেশন পাত্র বসান। ভালোভাবে পরিবেশন পাত্রের দিকে পুডিং পাত্র চাপা দিয়ে চট করে উল্টে দিলেই পুডিং পরিবেশন পাত্রে চলে আসবে। এবার পরিবেশন করুন।
** আস্ত ফুলকপির চপ **
আস্ত ফুলকপির চপ তৈরির রেসিপি জেনে নিন –
উপকরণ
ফুলকপির জন্য:
ফুলকপি ৬ ইঞ্চি ব্যাসের ১টি,
লবণ ২ চা-চামচ।
আলুর জন্য উপকরণ:
আলুসেদ্ধ চটকানো ২ কাপ,
ঘি ২ টেবিল চামচ,
লবণ আধা চা-চামচ বা স্বাদমতো এবং
গোলমরিচের গুঁড়া আধা চা-চামচ।
কিমার জন্য উপকরণ:
হোয়াইট সস পরিমাণমতো,
কিমা ১ কাপ,
রান্নার তেল ২ টেবিল চামচ,
টমেটো কেচাপ ২ টেবিল চামচ,
রসুনবাটা ১ চা-চামচ,
লবণ আধা চা-চামচ,
চিনি ১ চা-চামচ ও
গোলমরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ।
মূল রান্নার উপকরণ:
ডিম ২টি বিস্কুটের গুঁড়া ৩ কাপ,
রান্নার তেল ৩ কাপ ও
লেটুসপাতা ৪টি।
প্রণালি
পানিতে লবণ দিয়ে আস্ত কপি সেদ্ধ করুন। রং গাঢ় সবুজ এবং একটু শক্ত থাকতেই চুলা থেকে নামিয়ে ফেলুন। কপির পানি ঝরিয়ে রেখে দিন। ঘি, লবণ ও গোলমরিচের গুঁড়া দিয়ে আলু মাখান। কড়া আঁচে রান্নার তেল গরম করুন। রসুনবাটা দিয়ে ভাজা ভাজা করুন। কিমা দিন।
কিমা ভাজা ভাজা হয়ে খয়েরি রং হলে অবশিষ্ট লবণ, চিনি, কেচাপ ও গোলমরিচের গুঁড়া দিয়ে নাড়ুন। হোয়াইট সস দিয়ে মেশান। চুলা বন্ধ করুন। আধা সেদ্ধ আস্ত ফুলকপির ফোকর দিয়ে ঠেসে কিমা দিন। ফুলকপি তালের আকার নেবে। এবার আলতো করে মাখানো আলুর একটি পাতলা স্তর দিয়ে সারা ফুলকপি মুড়ে দিন।
ডিম ফেটে তাতে আলতো করে ফুলকপির চাপ গড়িয়ে নিন। বিস্কুটের গুঁড়ায় গড়িয়ে নিন। আবার ডিমে গড়িয়ে বিস্কুটের গুঁড়ায় গড়িয়ে নিন। কড়া আঁচে তেল গরম করুন। ফুলকপির চপটি খুব ভঙ্গুর, তাই খুব সাবধানে ঝাঁজরি চামচে তুলে তেলে ডুবিয়ে ভাজুন। ভাজার সময়ও সাবধান থাকবেন।
কারণ, একটু ভেঙে গেলেই সব আলু বেরিয়ে যাবে। ওইভাবে চামচে রেখে ভেজে আরেকটা চামচ দিয়ে তেল উঠিয়ে বাকি অংশ ভেজে নিন। লাল করে ভাজা হলে আলগোছে তুলে লেটুস বিছানো পরিবেশন পাত্রে সাজিয়ে রাখুন। ইচ্ছা হলে ৪ বা ৮ টুকরা করে নিতে পারেন।
** সুজি–নারকেল বরফি **
সুজি–নারকেল বরফি তৈরির পদ্ধতি জেনে নিন –
উপকরণ
সুজি আধা কাপ,
নারকেল কোরানো ২ কাপ,
ঘি ৩ টেবিল চামচ,
পানি আধা কাপ,
চিনি দেড় কাপ,
দুধ আধা কাপ,
জাফরান সামান্য,
ঘি ১ চা-চামচ (পাত্রের গায়ে লাগানোর জন্য),
কাজুবাদামকুচি ২ চা-চামচ,
সাজানোর জন্য এলাচির গুঁড়ো ১ চা-চামচ।
প্রণালি
প্রথমে চুলায় প্যান দিয়ে কোরানো নারকেল টেলে নিতে হবে। হালকা রং ধরলে নামিয়ে নিন। এবার প্যানে সামান্য ঘি দিয়ে সুজি টেলে নিন। একটু লালচে রং হয়ে এলে নামিয়ে নিতে হবে। এবার চুলায় অন্য একটি প্যান দিয়ে তাতে চিনি ও পানি দিন। শিরা তৈরি করুন।
শিরা আঠা আঠা হলে টেলে রাখা কোরানো নারকেল দিয়ে ঘন ঘন নাড়তে থাকুন। ঘন দুধ ও জাফরান দিয়ে দিন। নাড়তে থাকুন। যতক্ষণ না নারকেল থেকে অতিরিক্ত পানি বেরিয়ে যাচ্ছে, ততক্ষণ নাড়তে থাকুন। নারকেল শুকিয়ে এলে টেলে রাখা সুজি ও ঘি দিয়ে ঘন ঘন নাড়তে থাকুন।
কাজুবাদামকুচি এবং এলাচির গুঁড়ো ছড়িয়ে দিয়ে নেড়ে নামিয়ে নিন। একটি ট্রেতে ভালো করে ঘি মাখাতে হবে। রান্না করা নারকেল মিশ্রণটি ঢেলে দিন। এরপর হাত দিয়ে চাপ দিয়ে সমানভাবে ট্রেতে বসিয়ে দিন। ঠান্ডা হয়ে এলে বরফি আকারে কেটে পরিবেশন করুন।
পেঁয়াজ ছাড়াও যেভাবে রান্না সুস্বাদু করা যায়
মুকুল হায়দার: অনেকে পেঁয়াজ ছাড়া রান্না চিন্তাই করতে পারেন না। তবে আপনি জানেন কি? পেঁয়াজ ছাড়াও রান্না হবে সুস্বাদু। এখন প্রশ্ন হলো কীভাবে?সাম্প্রতিক সময়ে পেঁয়াজের লাগামছাড়া দাম দেখে হতাশ হয়ে পড়ছেন অনেকেই। সেক্ষেত্রে প্রয়োজন সঠিক কৌশলটি জেনে রাখা।
আসুন জেনে নেই তবে পেঁয়াজের বিকল্প কী হতে পারে-
১. পেঁয়াজ ব্যবহার না করে রসুনের ব্যবহারের দিকে একটু জোর দিতে হবে। গরম তেলে রসুন ও শুকনা মরিচের ফোঁড়ন দারুণ সুবাস তৈরি করে। ডাল কিংবা বিভিন্ন ধরনের ভাজি এভাবেই তৈরি করা যাবে।
২. পেঁয়াজের বদলে স্প্রিং অনিয়ন কিংবা পেঁয়াজ কলি রান্নায় ব্যবহার করলে তরকারিতে পেঁয়াজের স্বাদ ও গন্ধ পাওয়া যাবে।
৩. সয়াবিন তেলে রান্না না করে অলিভ অয়েল ব্যবহারকরতে পারেন। এই তেল খাবারে স্বাদ বাড়াবে।
৪. পেঁয়াজের বদলে বেল পেপার কিংবা ক্যাপসিকাম ব্যবহার করতে পারেন। ক্যাপসিকাম খাবারের স্বাদ বাড়াবে। ভাজি, মাছ বা মাংসের ঝোলে ক্যাপসিকামের ঝাঁঝালো স্বাদ ও গন্ধ কিন্তু দারুণ।
৫. মাংস কিংবা মাছের ঝোল ঘন করতে পেঁয়াজের বদলে পরিমাণমতো পেঁপে বাটা ব্যবহার করতে পারেন। এতে মাছ-মাংসের আঁশটে গন্ধ দূর হবে ও ঝোলও ঘন হবে।
৬. রান্নায় টমেটো বাটার ব্যবহার খুব সহজেই যেকোন খাবারকে সুস্বাদু করে তুলবে। যেকোন ধরনের খাবার রান্নাতেই টমেটো মানিয়ে যায়।
বাড়ছে পেঁয়াজের ঝাঁজ, পেঁয়াজের অজানা তথ্য
পেঁয়াজ নেই, এমন কোন রান্না ঘর হয়তো খুঁজে পাওয়া যাবে না। কারণ কোন রান্না শুরু করার আগে, কড়াইতে তেল দেয়ার পরপরই সাধারণত: যে উপাদানটি ব্যবহার করা হয় সেটি পেঁয়াজ। শুধু অন্য রান্নার অনুষঙ্গ নয়, কাঁচা খেতেও পেয়াজ বেশ সুস্বাদু। এছাড়া সরাসরি কাঁচা পেঁয়াজ, ভর্তা, আচার এবং সালাদ হিসেবেও পেঁয়াজের কদর কম নয়।
পেঁয়াজের রয়েছে বেশ কিছু স্বাস্থ্যগুণও। সব কিছু মিলিয়ে বাংলাদেশ তো বটেই বিশ্বের প্রায় সব দেশেই চাহিদা রয়েছে পেঁয়াজের। তবে, বেশ কয়েক দিন ধরেই বাংলাদেশে পেঁয়াজের বাজারে ঝাঁজ বাড়ছে।
রোববার, ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় তাদের রপ্তানি নীতি সংশোধন করে পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়ার পর বাংলাদেশের বাজারে ঘণ্টার সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে পেয়াজের দাম।
পেঁয়াজ আসলে কী?
পেঁয়াজ আসলে কোন সবজি নয়। এটি আসলে একটি মশলা জাতীয় উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম এলিয়াম সেপা। এই বর্গের অন্যান্য উদ্ভিদের মধ্যে রয়েছে রসুন, শ্যালট, লিক, চাইব এবং চীনা পেঁয়াজ। রসুনের মতোই এর গোত্র হচ্ছে লিলি।
পেঁয়াজ কোথায় উৎপন্ন হয়?
এটি এমন একটি উদ্ভিদ যা বিশ্বের প্রায় সব দেশেই উৎপাদিত হয়। তবে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি পেঁয়াজ উৎপাদিত হয় ভারত এবং চীনে।
শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের হর্টিকালচার বিভাগের শিক্ষক এ এফ এম জামাল উদ্দিন বলেন, 'সেসব দেশগুলোতেই প্রধানত পেঁয়াজ হয় যেখানে বেশি বৃষ্টি হয় না। পাশাপাশি হাল্কা শীত থাকে। সেজন্যই বাংলাদেশে পেঁয়াজ হয় শীতকালে। সেসময় দামও কম থাকে'।
বাংলাদেশে কী ধরণের পেঁয়াজ উৎপাদিত হয়?
বাংলাদেশে যে সব এলাকায় শীত বেশি থাকে সেসব এলাকায় পেঁয়াজ বেশি জন্মায়।
জামাল উদ্দিন বলেন, "বাংলাদেশ এলিয়াম সেপা বা পেঁয়াজ যা মূলত একটি বাল্ব সেটাই উৎপাদিত হয়ে থাকে। আমাদের দেশের পেঁয়াজ তেমন বড় হয় না"।
আকারে বড় না হলেও বাংলাদেশের পেঁয়াজের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, এটি ঝাঁজালো বেশি হয়। কারণ এতে এলিসিনের মাত্রাটা বেশি থাকে। যা রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। এর জন্য আমাদের রান্নাটাও অনেক বেশি মজা হয়।
হর্টিকালচারের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন বলেন, বাংলাদেশে পেঁয়াজের চাহিদা বেশি থাকায় সারা বছর পেয়াজ উৎপাদনের চেষ্টা করা হচ্ছে। এর জন্য বৃষ্টি নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে পলি-টানেল বা গ্রিন হাউজ তৈরি করে পেঁয়াজ উৎপাদনের চেষ্টা করা হচ্ছে।
পেঁয়াজের খাদ্যগুণ কী কী?
পুষ্টিবিদ চৌধুরী তাসনিম বলেন, পেঁয়াজ আসলে মশলা জাতীয় খাবার। এর মূল উপাদান পানি, কার্বোহাইড্রেট ও ফাইবার। তবে পেঁয়াজে পানির পরিমাণ সবচেয়ে বেশি-প্রায় ৮৫ শতাংশ। এছাড়াও পুষ্টিগুণ বলতে গেলে, ভিটামিন সি, বি এবং পটাসিয়াম থাকে।
তিনি বলেন, "পেঁয়াজের খোসা ছাড়ালে যে গাঢ় বেগুনি রঙের একটি আস্তরণ পাওয়া যায় এতে বেশি পরিমাণে এ্যান্টি-অক্সিডেন্ট থাকে। জ্বালাপোড়া বা প্রদাহ নিবারণ করে এমন উপাদানও রয়েছে পেঁয়াজে। এটি হাড়েরও সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে"।
জামাল উদ্দিন বলেন, শরীরে পটাসিয়াম এবং মিনারেল বা খনিজের চাহিদা পূরণের একটি ভালো উৎস পেয়াজ। এই উপাদানগুলোই পেয়াজে অনেক বেশি পরিমাণে থাকে।
প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে। ডায়েটারি ফাইবার থাকে অনেক বেশি যা প্রায় ১২ শতাংশ। পেয়াজে মধ্যে কোন ফ্যাট নাই। এছাড়া পেঁয়াজে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি এবং আয়রন পাওয়া যায়।
রান্নায় পেঁয়াজ কী স্বাদ যোগ করে?
পুষ্টিবিদ চৌধুরী তাসনিম , "পেয়াজ যেহেতু সালফার উপাদান থাকে তাই এটি রান্নায় এক ধরণের ঝাঁজালো স্বাদ যোগ করে"।
তবে নিজস্ব স্বাদ যোগ করার ছাড়াও রান্নায় পেঁয়াজের সব চেয়ে বড় কাজ হচ্ছে, রান্নার অন্যান্য উপকরণের স্বাদ অনেক বেশি বাড়িয়ে দেয়।
তিনি বলেন, "পেয়াজ তিতা, টক, মিষ্টি বা ঝাল এমন ধরণের কোন স্বাদ যোগ করে না। তবে সালফার কম্পোনেন্ট থাকায় পেয়াজ খাবারের যেকোনো স্বাদকে অনেক বেশি তীব্র করে"।
বেশিক্ষণ রান্না করলে পেঁয়াজে থাকা ভিটামিন নষ্ট হলেও অন্য উপাদানগুলো ঠিক থাকে।
পেঁয়াজ দীর্ঘক্ষণ রান্না করলে খাদ্যগুণ কি নষ্ট হয়ে যায়?
পেঁয়াজে নানা ধরণের ভিটামিন ও প্রাকৃতিক তেল থাকে যা রান্নার পর নষ্ট হয়ে যায় বলে ধারণা করা হয়।
তবে পুষ্টিবিদরা বলছেন, পেয়াজে ভোলাটাইল কিছু উপাদান রয়েছে যেগুলো নাকে-মুখে লাগে সেগুলো হয়তো নষ্ট হয়। কিন্তু পেঁয়াজের অন্য উপাদানগুলো নষ্ট হয় না।
খোলা রান্না করলে বা কেটে খোলা রাখলে পেয়াজের খাদ্যগুণ নষ্ট হয় না। তবে সালফার কম্পোনেন্ট কমে আসে। রান্নার পর খোলা অবস্থায় রাখলে কোন সমস্যা হয় না।
পুষ্টিবিদ চৌধুরী তাসনিম বলেন, "বেশিক্ষণ ধরে রান্না করা হলে ভিটামিন ও পটাসিয়াম কমে আসতে পারে। এছাড়া বাকি সব খাদ্য উপাদান নষ্ট হয় না"।
তবে উচ্চ তাপমাত্রায় রান্না করলে খাদ্যগুণ নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা থাকে বলে মধ্যম তাপমাত্রায় পেঁয়াজ রান্না করার পরামর্শ দেন তাসনীম চৌধুরী। পেঁয়াজের গুনাগুণ পেতে হলে কাঁচা পেয়াজে খাওয়ার অভ্যাস বেশি করতে হবে বলেও জানান তিনি।
পেঁয়াজ কাটলে চোখ দিয়ে পানি পড়ে কেন?
পেঁয়াজ কেটেছেন কিন্তু চোখে পানি আসেনি এমনও কাউকে খুঁজে পাওয়া বেশ দুরূহ। কৃষিবিদ জামাল উদ্দিন বলেন, "পেঁয়াজের ভলাটাইল কম্পাউন্ড যা এলিসিন নামে পরিচিত, এটি পেঁয়াজের ঝাঁঝের জন্য দায়ী। আর কাটার সময় এটি চোখে লাগে বলেই চোখ জ্বালাপোড়া করে এবং পানি পড়ে"।
তিনি বলেন, জাপান বা অন্য দেশে পেঁয়াজ বড় মাপের হয় এবং সেগুলোতে এলিসিনের মাত্রা কম থাকার কারণে সেখানে পেঁয়াজ কাটলে চোখ জ্বলে না। এসব দেশে পেয়াজ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কাঁচা খাওয়া হয় সবজি হিসেবে।
পেঁয়াজের ঔষধি গুণ কী?
বিবিসি গুড ফুড তাদের প্রতিবেদনে বলছে, ঐতিহাসিকভাবে পেঁয়াজের রয়েছে ঔষধি ব্যবহার। প্রাচীন আমলে কলেরা এবং প্লেগের প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহার করা হতো পেঁয়াজ। রোমান সম্রাট নিরো ঠাণ্ডার ওষুধ হিসেবে পেঁয়াজ খেতেন বলেও শ্রুতি রয়েছে।
বাংলাদেশে শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক জামাল উদ্দিন বলেন, পেঁয়াজে থাকা এলিসিন নামের উপাদান অ্যান্টি-ফাঙ্গাল এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল হিসেবে কাজ করে।
অনেক সময় এটি কিছু কিছু ক্যান্সার প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। হৃদরোগের ঝুঁকি হ্রাস, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখা, ব্লাড প্রেশার নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষেত্রে পেঁয়াজের ব্যবহার দেখা যায়।
তিনি বলেন, পেঁয়াজ কাঁচা খেলে সর্দি-কাশি খুব কম পরিমাণে হয়। এটা মানুষের শরীরকে রোগ-প্রতিরোধক হিসেবে হিসেবে করে।
পেঁয়াজের গন্ধ দূর করবেন কীভাবে?
অনেক সময় পেঁয়াজ কাটলে বা কাঁচা পেঁয়াজ খেলে হাতে এবং নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ হয়। এর জন্য অনেক সময়ই পেঁয়াজকে এড়িয়ে চলি আমরা। তবে কিছু পদ্ধতি অবলম্বন করলেই পেঁয়াজের এই দুর্গন্ধ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
হাতে গন্ধ হলে পেঁয়াজ কাটার পর প্রথমে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে। তার পর লবণ দিয়ে হাত কচলে আবার ধুয়ে ফেলতে হবে। এবার সাবান এবং গরম পানি দিয়ে হাত ধুয়ে নিলে থাকবে না কোন গন্ধ।
নিঃশ্বাসের গন্ধ দূর করতে হলে ধনিয়াপাতা বা একটি আপেল খেয়ে নিলে দূর হবে তাও। বিবিসি।
সিঙ্গারা কোন দেশি? জানেন কোথায় জন্ম এই সুস্বাদু পদটির?
বাঙালি-অবাঙালি নির্বিশেষে সিঙ্গারা ভালবাসেন এ হাজার হাজার ভোজন রসিক মানুষ। তবে জানেন তো, এই সিঙ্গারা আদতে কোনও বাঙালি ‘খাবার’ নয়!
একদল ইতিহাসবিদের মতে, ফার্সি শব্দ ‘সংবোসাগ’ থেকেই এই সিঙ্গারা শব্দের উৎপত্তি। তাদের দাবি, গজনবী সাম্রাজ্যে সম্রাটের দরবারে এক ধরনের নোনতা মুচমুচে খাবার পরিবেশন করা হতো। যার মধ্যে কিমা, শুকনো বাদাম জাতীয় অনেক কিছু দেওয়া হতো। এটাই নাকি সিঙ্গারার আদি রূপ।
বিখ্যাত ইরানি ইতিহাসবিদ আবুল ফজল বায়হাকির দাবি, ইরান থেকেই নাকি সিঙ্গারা ভারতীয় উপমহাদেশে এসেছে। অর্থাৎ, তার মতে সিঙ্গারার জন্মস্থান ইরান। আবুল ফজল বায়হাকির ‘তারিখ-এ-বেহাগি’ বইয়েও ‘সাম্বোসা’র উল্লেখ করা হয়েছে। আবুল ফজলের দাবি অনুযায়ী, ইরানের এই ‘সাম্বোসা’ই সিঙ্গারার আদি রূপ। আমির খসরুর রচনাতেও এর উল্লেখ রয়েছে।
তবে সিঙ্গারার জন্মস্থান নিয়ে মতভেদ আর বিতর্ক থাকলেও এ অঞ্চলে আসার পর যে এর স্বাদ আর উপকরণে আমূল পরিবর্তন এসেছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই! যেমন, ষোড়শ শতকে পর্তুগিজরা ভারতের মাটিতে পা রাখার পর এ দেশের মানুষের পরিচয় হয় ‘আলু’ নামের চমৎকার এক সবজির সঙ্গে।
পরবর্তিকালে এই সবজিকে এ দেশের মানু যে কতটা আপন করে নিয়েছে, তা বলাই বাহুল্য! ষোড়শ শতকের পর থেকে সিঙ্গারার মূল উপকরণ হয়ে ওঠে এই আলু। এ দেশে মাংসের সিঙ্গারা, ফুলকপির সিঙ্গারা, পনিরের সিঙ্গারা, ক্ষিরের সিঙ্গারা ইত্যাদি নানা রকমের বা নানা স্বাদের সিঙ্গারার চল থাকলেও ভেতরে আলুর দেয়া সিঙ্গারাই সবচেয়ে জনপ্রিয়। তাই তো আলু ছাড়া সিঙ্গারার কথা আমরা ভাবতেই পারি না!