Tamim's Art Gellary

Tamim's Art Gellary

Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from Tamim's Art Gellary, Artist, .

24/03/2024

ফজরের নামাজের পর সূরা ইয়াসিন পড়ার ফজিলত:
ফজরের নামাযের পর মহান আল্লাহর স্মরণের আহ্বান জানিয়ে হাদিস শরীফে এটি উল্লেখ করা হয়েছে। আরইমাম আল-তিরমিযী তার "জামী'তেআনাস বিন মালিক (রাঃ) এরহাদীস থেকে বর্ণনা করেছেন, বলেছেন: আল্লাহর রসূল (সাঃ) বলেছেন:

} مَنْصَلَّىالْغَدَاةَفِيجَمَاعَةٍثُمَّقَعَدَيَذْكُرُاللهَحَتَّىتَطْلُعَالشَّمْسُثُمَّصَلَّىرَكْعَتَيْنِكَانَتْلَهُكَأَجْرِحَجَّةٍوَعُمْرَةٍ؛تَامَّةٍتَامَّةٍتَامَّة {

অর্থাৎ,"যে ব্যক্তি সকালের সালাত জামাতের সাথে আদায় করে, তারপর সূর্য উদিত হওয়া পর্যন্ত আল্লাহকে স্মরণ করে, তারপর দুই রাকাত সালাত আদায় করে, এটি তার জন্য হজ্জ ও ওমরার সওয়াবের মত হবে।সমান সমান।"
তদনুসারে, ফজরের নামাযের পরে সূরা ইয়া-সীন পাঠ করাকে সর্বশ্রেষ্ঠইবাদত হিসাবে বিবেচনা করা হয়, কারণ এটি পবিত্র কুরআন পাঠ করা এবং সাধারণতএটি পড়ার জন্য শরিয়তের নির্দেশ উল্লেখ করা হয়েছে।

উপরোক্ত ভিত্তিতে ফজরের নামাযের পর সূরা ইয়াসীন পাঠে কোন দোষ নেই। তবে এই শর্তে যে এটি এমনভাবে করা হয় যা মহান আল্লাহর ইবাদতকারী এবং অপর কোরান পাঠকদেরকে বিরক্ত না করে:
অদৃশ্যের বার্তাদাতা মহান নবী (সাঃ) বলেছেন : «لَا يَجْهَرْ بَعْضُكُمْ عَلَى بَعْضٍ بِالْقُرْآنِ»
"তোমরা একে অপরকে উচ্চস্বরে কুরআন পাঠ করো না।" ইমাম মালেক ‘আল-মুওয়াত্তা’ গ্রন্থে এবং ইমাম আহমদ ‘আল-মুসনাদ’ গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন।

22/03/2024

জুমার দিনে ‘সূরা কাহাফ’ তেলাওয়াতের ফজিলত
- যে ব্যক্তি জুমার দিন সূরা আল কাহাফ পড়বে, তার (ঈমানের) নূর এ জুমাহ হতে আগামী জুমাহ পর্যন্ত চমকাতে থাকবে। (মিশকাত ২১৭৫)।
- যে ব্যক্তি সূরা আল কাহাফ এর প্রথম দশটি আয়াত মুখস্থ করবে তাকে দাজ্জালের অনিষ্ট হতে নিরাপদ রাখা হবে। (মুসলিম) (মিশকাত)।
- ‘যে ব্যক্তি সূরা কাহাফ পাঠ করবে, কিয়ামতের দিন তার জন্য এমন একটি নূর হবে, যা তার অবস্থানের জায়গা থেকে মক্কা পর্যন্ত আলোকিত করে দিবে। আর যে ব্যক্তি উহার শেষ দশটি আয়াত পাঠ করবে, তার জীবদ্দশায় দাজ্জাল বের হলেও সে তার কোনো ক্ষতি করতে পারবে না।’ (সিলসিলায়ে সহীহা -২৬৫১)।
- যে ব্যক্তি জুমার রাত্রিতে সূরা কাহাফ পাঠ করবে, তার জন্য স্বীয় অবস্থানের জায়গা হতে পবিত্র মক্কা পর্যন্ত একটি নূর হবে।’ (সহীহ তারগীব ওয়াত্ তারহীব - ৭৩৬)।
- জুমার দিনে সূরা কাহফ পাঠ করিলে কিয়ামত দিবসে তার পায়ের নীচ থেকে আকাশের মেঘমালা পর্যন্ত নূর আলোকিত হবে এবং দুই জুমার মধ্যবর্তী গুনাহ মাফ হবে। (আত তারগীব ওয়াল তারহীব- ১/২৯৮)
- জনৈক ব্যক্তি সূরাহ আল কাহফ পড়ছিল। তখন লোকটি তাকিয়ে দেখতে পেল একখণ্ড মেঘ তাকে পরিবেষ্টন করে নিয়েছে। বারা ইবনু আযিব বর্ণনা করেছেন যে, লোকটি বিষয়টি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসালাম এর কাছে বললেন। তিনি তাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, হে অমুক তুমি সূরাটি পড়তে থাক। কারণ এটি ছিল আল্লাহর রহমাত বা প্রশান্তি যা কোরআন তেলাওয়াতের কারণে বা কোরআন তেলাওয়াতের জন্য অবতীর্ণ হয়েছিল। (মুসলিম- ১৭৪২)।
অর্থাৎ এটা হলো আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে ওই ‘সাকীনা’ বা প্রশান্তি যা কোরআন পাঠের সময় অবতীর্ণ হয়ে থাকে।

22/03/2024

#সিয়াম_পালনকারীকে_আল্লাহ_কী_কী_পুরস্কার_দেবেন,,,⁉️

সিয়াম পালনকারীকে যেসব পুরস্কার ও প্রতিদান আল্লাহ তা‘আলা দেবেন তার অংশ বিশেষ এখানে উল্লেখ করা হল :

[১] আল্লাহ স্বয়ং নিজে সিয়ামের প্রতিদান দেবেন।

হাদীসে কুদসীতে আছে, আল্লাহ তা‘আলা বলেন :

كُلُّ عَمَلِ بَنِىْ آَدَمَ لَهُ إِلاَّ الصِّيَامَ فَإِنَّهُ لِيْ وَأَنَا أَجْزِئ بِهِ

‘‘মানুষের প্রতিটি ভাল কাজ নিজের জন্য হয়ে থাকে, কিন্তু সিয়াম শুধুমাত্র আমার জন্য, অতএব আমি নিজেই এর প্রতিদান দেব। (বুখারী : ১৯০৪)

[২] সিয়াম অতি উত্তম নেক আমল

আবূ হুরাইরাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র একটি হাদীসে তিনি বলেছিলেন :

يَا رَسُوْلَ اللهِ مُرْنِيْ بِعَمَلٍ، قَالَ عَلَيْكَ بِالصَّوْمِ فَإِنَّهُ لاَ عَدْلَ لَهُ

‘‘হে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম! আমাকে একটি অতি উত্তম নেক আমলের নির্দেশ দিন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি সিয়াম পালন কর। কেননা এর সমমর্যাদা সম্পন্ন কোন আমল নেই।’’ (নাসাঈ : ২২২২)

অন্যান্য ইবাদত মানুষ দেখতে পায়। কিন্তু সিয়ামের মধ্যে তা নেই। লোক দেখানোর কোন আলামত সিয়াম পালনে থাকে না। শুধুই আল্লাহকে খুশী করার জন্য তা করা হয়। তাই এ ইবাদতের মধ্যে রয়েছে বিশুদ্ধ ইখলাস।

হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

يَدَعُ شَهْوَتَهُ وَطَعَامَهُ مِنْ أَجْلِيْ

‘‘সিয়াম পালনকারী শুধুমাত্র আমাকে খুশী করার জন্যই পানাহার ও যৌন উপভোগ পরিহার করে।’ (১৮৯৪)

[৩] ক- জান্নাত লাভ সহজ হয়ে যাবে।

সহীহ ইবনু হিববান কিতাবে আছে আবূ উমামা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে জিজ্ঞাসা করলেন-

يَا رَسُوْلَ اللهِ دُلُّنِيْ عَلَى عَمَلٍ أَدْخُلُ بِهِ الْجَنَّةَ قَالَ عَلَيْكَ بِالصَّوْمِ فَإِنَّهُ لاَ مِثْلَ لَهُ

আবূ উমামা রাদিয়াল্লাহু আনহু বললেন, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন একটি আমল বলে দিন যার কারণে আমি জান্নাতে যেতে পারি। তিনি বললেন, তুমি সিয়াম পালন কর। কেননা এর সমমর্যাদাসম্পন্ন কোন ইবাদাত নেই। (নাসাঈ : ২২২১)

খ. সিয়াম পালনকারীকে বিনা হিসেবে প্রতিদান দেয়া হয়

অন্যান্য ইবাদতের প্রতিদান আল্লাহ তা‘আলা তার দয়ার বদৌলতে ১০ থেকে ৭০০ গুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেন। কিন্তু সিয়ামের প্রতিদান ও তার সাওয়াব এর চেয়েও বেহিসেবী সংখ্যা দিয়ে গুণ দিয়ে বাড়িয়ে দেয়া হবে। হাদীসে কুদসীতে আল্লাহ বলেন,

كُلُّ عَمَلِ ابْنِ آدَمَ يُضَاعَفُ الْحَسَنَةُ بِعَشْرِ أَمْثَالِهَا إِلَى سَبْعِ مِائَةِ ضِعْفٍ قَالَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ (إِلاَّ الصَّوْمَ فَإِنَّهُ لِيْ وَأَنَا أَجْزِي بِهِ(

‘‘মানব সন্তানের প্রতিটি নেক আমলের প্রতিদান দশ থেকে সাতশত গুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়ে থাকে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন, কিন্তু সিয়ামের বিষয়টি ভিন্ন। কেননা সিয়াম শুধুমাত্র আমার জন্য, আমিই এর প্রতিদান দেব। (মুসলিম : ১১৫১)

অর্থাৎ কি পরিমাণ সংখ্যা দিয়ে গুণ করে এর প্রতিদান বাড়িয়ে দেয়া হবে এর কোন হিসাব নেই, শুধুমাত্র আল্লাহই জানেন সিয়ামের পুণ্যের ভান্ডার কত সুবিশাল হবে।

[৪] জাহান্নাম থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য সিয়াম ঢাল স্বরূপ

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :

اَلصِّيَامُ جُنَّةٌ يَسْتَجِنُّ بِهَا الْعَبْدُ مِنَ النَّارِ

‘‘সিয়াম ঢাল স্বরূপ। এ দ্বারা বান্দা তার নিজেকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করতে পার।’’ (আহমাদ : ১৫২৯৯)

[৫] জাহান্নাম থেকে বাঁচার জন্য সিয়াম একটি মজবুত দূর্গ

হাদীসে আছে,

اَلصِّيَامُ جُنَّةٌ وَحِصْنُ حَصِيْنٌ مِنَ النَّارِ

‘‘সিয়াম ঢালস্বরূপ এবং জাহান্নাম থেকে বাঁচার এক মজবুত দূর্গ।’’ (আহমাদ : ৯২২৫)

[৬] আল্লাহর পথে সিয়াম পালনকারীকে আল্লাহ জাহান্নাম থেকে দূরে রাখেন।

এ বিষয়ে নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :

ا- مَا مِنْ عَبْدٍ يَصُوْمُ يَوْمًا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ إِلاَّ بَاعَدَ اللهُ بِذَلِكَ وَجْهَهُ عَنِ النَّارِ سَبْعِيْنَ خَرِيْفًا

(ক) ‘‘যে কেউ আল্লাহর রাস্তায় (অর্থাৎ শুধুমাত্র আল্লাহকে খুশী করার জন্য) একদিন সিয়াম পালন করবে, তদ্বারা আল্লাহ তাকে জাহান্নামের অগ্নি থেকে সত্তর বছরের রাস্তা পরিমাণ দূরবর্তীস্থানে রাখবেন। (বুখারী : ২৮৪০; মুসলিম : ১১৫৩)

ب-مَنْ صَامَ يَوْمًا فِيْ سَبِيْلِ اللهِ بَاعَدَ اللهُ وَجْهَهُ عَنِ النَّارِ سَبْعِيْنَ خَرِيْفًا

(খ) ‘‘যে ব্যক্তি একদিন আল্লাহর পথে সিয়াম পালন করবে আল্লাহ তার কাছ থেকে জাহান্নামকে সত্তর বছরের রাস্তা দূরে সরিয়ে নেবেন। (মুসলিম : ১১৫৩)

ج-عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ قَالَ يَا رَسُولَ اللهِ مُرْنِي بِأَمْرٍ يَنْفَعُنِي اللهُ بِهِ قَالَ عَلَيْكَ بِالصِّيَامِ فَإِنَّهُ لاَ مِثْلَ لَهُ

(গ) আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, তিনি বলেন, ‘‘আমি আল্লাহর রাসূলকে বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! আমাকে এমন একটি কাজের নির্দেশ দিন যার দ্বারা আমি লাভবান হতে পারি। তিনি বললেন, তুমি সিয়াম পালন কর। কেননা এর সমকক্ষ (মর্যাদা সম্পন্ন) কোন ইবাদত নেই। (নাসাঈ : ২২২১)

[৭] ইফতারের সময় বহু লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন।

হাদীসে আছে :

إِنَّ للهِ تَعَالَى عِنْدَ كُلِّ فِطْرٍ عُتَقَاءُ مِنَ النَّارِ، وَذَلِكَ كُلّ لَيْلَةٍ

ইফতারের মূহূর্তে আল্লাহ রাববুল ‘আলামীন বহু লোককে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দিয়ে থাকেন। মুক্তির এ প্রক্রিয়াটি রমাযানের প্রতি রাতেই চলতে থাকে। (আহমাদ : ৫/২৫৬)

[৮] সিয়াম পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহর কাছে মিশ্কের চেয়েও উত্তম (সুগন্ধিতে পরিণত হয়)।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :

وَالَّذِيْ نَفْسِ مُحَمَّدٍ بِيَدِهِ لَخُلُوْفُ فَمِ الصَّائِمِ أَطْيَبُ عِنْدَ اللهِ مِنْ رِيْحِ الْمِسْكِ.

যার হাতে মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম’র জীবন সে সত্তার শপথ করে বলছি, সিয়াম পালনকারীর মুখের গন্ধ আল্লাহ তা‘আলার কাছে মিশকের ঘ্রাণের চেয়েও প্রিয় হয়ে যায়। (বুখারী : ১৯০৪; মুসলিম : ১১৫১)

[৯] সিয়াম পালনকারীর জন্য রয়েছে দু’টি বিশেষ আনন্দ মুহূর্ত।

রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :

لِلصَّائِمِ فَرْحَتَانِ فَرْحَةٌ عِنْدَ فِطْرِهِ وَفَرْحَةٌ عِنْدَ لِقَاءِ رَبِّهِ

সিয়াম পালনকারীর জন্য দু’টো বিশেষ আনন্দ মুহূর্ত রয়েছে : একটি হল ইফতারের সময়, আর দ্বিতীয়টি হল তার রবের সাথে সাক্ষাতের সময়। (বুখারী : ৭৪৯২; মুসলিম : ১১৫১)

[১০] সিয়াম কিয়ামাতের দিন সুপারিশ করবে

হাদীসে আছে,

اَلصِّيَامُ وَالْقُرْآنُ يَشْفَعَانِ لِلْعَبْدِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَقُولُ الصِّيَامُ أَيْ رَبِّ مَنَعْتُهُ الطَّعَامَ وَالشَّهَوَاتِ بِالنَّهَارِ فَشَفِّعْنِي فِيهِ وَيَقُولُ الْقُرْآنُ مَنَعْتُهُ النَّوْمَ بِاللَّيْلِ فَشَفِّعْنِي فِيهِ قَالَ فَيُشَفَّعَانِ

সিয়াম ও কুরআন কিয়ামাতের দিন মানুষের জন্য এভাবে সুপারিশ করবে যে, সিয়াম বলবে হে আমার রব, আমি দিনের বেলায় তাকে (এ সিয়াম পালনকারীকে) পানাহার ও যৌনতা থেকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবূল কর।

অনুরূপভাবে কুরআন বলবে, হে আমার রব, আমাকে অধ্যয়নরত থাকায় রাতের ঘুম থেকে আমি তাকে বিরত রেখেছি। তাই তার ব্যাপারে তুমি আমার সুপারিশ কবূল কর। তিনি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, অতঃপর উভয়ের সুপারিশই কবূল করা হবে। (আহমাদ : ২/১৭৪)

[১১] সিয়াম হল গুনাহের কাফফারা

(ক) আল্লাহ তাআলা বলেন,

﴿ ... إِنَّ ٱلۡحَسَنَٰتِ يُذۡهِبۡنَ ٱلسَّيِّ‍َٔاتِۚ ١١٤ ﴾ [هود: ١١٤]

নিশ্চয়ই নেক আমল পাপরাশি দূর করে দেয়। (সূরা হুদ : ১১৪)

(খ) নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

فِتْنَةُ الرَّجُلِ فِي أَهْلِهِ وَمَالِهِ وَوَلَدِهِ وَجَارِهِ تُكَفِّرُهَا الصَّلَاةُ وَالصَّوْمُ وَالصَّدَقَةُ (بخارى ومسلم(

পরিবার পরিজন, ধন-সম্পদ ও প্রতিবেশিদের নিয়ে জীবন চলার পথে যেসব গুনাহ মানুষের হয়ে যায় সালাত, সিয়াম ও দান খয়রাত সেসব গুনাহ মুছে ফেলে দেয়। (বুখারী : ৫২৫; মুসলিম : ১৪৪)

[১২] সিয়াম পালনকারীর এক রমযান থেকে পরবর্তী রমাযানের মধ্যবর্তী সময়ে হয়ে যাওয়া ছগীরা গুনাহগুলোকে মাফ করে দেয়া হয়।

ক- আল্লাহ তাআলা বলেন,

﴿ إِن تَجۡتَنِبُواْ كَبَآئِرَ مَا تُنۡهَوۡنَ عَنۡهُ نُكَفِّرۡ عَنكُمۡ سَيِّ‍َٔاتِكُمۡ وَنُدۡخِلۡكُم مُّدۡخَلٗا كَرِيمٗا ٣١ ﴾ [النساء: ٣١]

‘‘তোমরা যদি নিষিদ্ধ কবীরা গুনাহ থেকে বিরত থাক তাহলে তোমাদের ছগীরা গুনাহগুলোকে মুছে দেব এবং (জান্নাতে) তোমাদেরকে সম্মানজনক স্থানে প্রবেশ করাব। (সূরা নিসা : ৩১)

খ- রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন :

اَلصَّلَوَاتُ الْخَمْسُ وَالْجُمُعَةُ إِلَى الْجُمُعَةِ وَرَمَضَانُ إِلَى رَمَضَانَ مُكَفَّرَاتٌ لِمَا بَيْنَهُنَّ إِذَا اجْتَنِبَتِ الْكَبَائِرُ

পাঁচ ওয়াক্ত সালাত এর মধ্যবর্তী সময় ও এক জুমুআ থেকে অপর জুমুআ এবং এক রমযান থেকে অপর রমযান পর্যন্ত মধ্যবর্তী সময়ের মধ্যে হয়ে যাওয়া ছগীরা গুনাহগুলোকে (উল্লেখিত ইবাদতের) কাফ্ফারাস্বরূপ মুছে দেয়া হয় সে যদি কবীরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকে। (মুসলিম : ২৩৩)

[১৩] সিয়াম পালনকারীর পূর্বেকার গুনাহ মাফ করে দেয়া হয়।

নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন,

مَنْ صَامَ رَمَضَانَ إِيمَانًا وَاحْتِسَابًا غُفِرَ لَهُ مَا تَقَدَّمَ مِنْ ذَنْبِهِ

যে ব্যক্তি ঈমানের সাথে সাওয়াব হাসিলের আশায় রমযানে সিয়াম পালন করবে, তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে। (বুখারী : ৩৮; মুসলিম : ৭৬৯)

[১৪] সিয়াম যৌনপ্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণে রাখে

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন,

يَا مَعْشَرَ الشَّبَابِ مَنْ اسْتَطَاعَ مِنْكُمْ الْبَاءَةَ فَلْيَتَزَوَّجْ فَإِنَّهُ أَغَضُّ لِلْبَصَرِ وَأَحْصَنُ لِلْفَرْجِ وَمَنْ لَمْ يَسْتَطِعْ فَعَلَيْهِ بِالصَّوْمِ فَإِنَّهُ لَهُ وِجَاءٌ

হে যুবকেরা! তোমাদের মধ্যে যে সামর্থ রাখে সে যেন বিবাহ করে। কেননা বিবাহ দৃষ্টি ও লজ্জাস্থানের হেফাযতকারী। আর যে ব্যক্তি বিবাহের সামর্থ রাখেনা সে যেন সিয়াম পালন করে। কারণ এটা তার জন্য নিবৃতকারী। (অর্থাৎ সিয়াম পালন যৌন প্রবৃত্তি নিবৃত করে রাখে) (বুখারী : ১৯০৫; মুসলিম : ১৪০০)

[১৫] সিয়াম পালনকারীরা রাইয়ান নামক মহিমান্বিত এক দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করবে।

إِنَّ فِي الْجَنَّةِ بَابًا يُقَالُ لَهُ الرَّيَّانُ يَدْخُلُ مِنْهُ الصَّائِمُونَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ لاَ يَدْخُلُ مِنْهُ أَحَدٌ غَيْرُهُمْ يُقَالُ أَيْنَ الصَّائِمُونَ فَيَقُومُونَ لاَ يَدْخُلُ مِنْهُ أَحَدٌ غَيْرُهُمْ فَإِذَا دَخَلُوا أُغْلِقَ فَلَمْ يَدْخُلْ مِنْهُ أَحَدٌ

জান্নাতে একটি দরজা রয়েছে। যার নাম রাইয়্যান। কিয়ামতের দিন শুধু সিয়ামপালনকারীরা ঐ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে। তাদের ছাড়া অন্য কেউ সেই দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। সেদিন ঘোষণা করা হবে, সিয়াম পালনকারীরা কোথায়? তখন তারা দাঁড়িয়ে যাবে ঐ দরজা দিয়ে প্রবেশ করার জন্য। তারা প্রবেশ করার পর ঐ দরজাটি বন্ধ করে দেয়া হবে। ফলে তারা ব্যতীত অন্য কেউ আর সেই দরজা দিয়ে জান্নাতে ঢুকতে পারবেনা। (বুখারী : ১৮৯৬; মুসলিম : ১১৫২)

18/03/2024

কেমন লাগলো কমেন্টে জানাবেন ইং শা আল্লহ্।
সকল অবিবাহিত বোনদের জন্য অন্তরের অন্তঃস্থল দু'আ থাকলো,, আল্লাহ সকলকে চক্ষুশীতলকারী একজন জীবনসঙ্গী দান করুন। আমীন।

আমার বিয়েটা হয়েছিলো দারুণ ভাবে। আমাকে দেখতে এসেই বিয়েটা হয়েছিলো। তেমন কোনো আয়োজনও করতে হয়নি। ছোটবেলা থেকেই খুব চাইতাম আমার বিয়েটা হবে খেজুর ছিটিয়ে। দারুণ না? মসজিদের বিয়ে গুলো আসলেই সুন্দর হয়।
আমার চাওয়া গুলোর মধ্যে অন্যতম হলো আমি চাইতাম আমার মাহরামের উপস্থিতিতে আমার বিয়েটা হবে মসজিদে। রব কবুল করেছেন আলহামদুলিল্লাহ।

সেদিন ছিলো শুক্রবার। আমাকে দেখতে আসবে এতোটুকু জানতাম। খুব স্বাভাবিক ভাবেই হাঁটাচলা করছিলাম।সবাই আমার দিকে কেমন আঁড়চোখে তাকাচ্ছিলো।সবার ড্যাবড্যাব চাহনিতে আমার ভীষণ অস্বস্তি হতে লাগলো। কি ভয়ানক পরিস্থিতির শিকার হয়েছিলাম সেদিন! দেখতে আসার দিন কিংবা বিয়ের কথা হয় এমন সময়ে মেয়েদের অনেক কিছুর সম্মুখীন হতে হয়। লজ্জা মেয়েরা একদম নুইয়ে যায়। সবার সাথে তখন দূরত্ব চলে আসে। আগের মতন চঞ্চলতাটাও আর থাকে না।

মেহমান চলে এসেছেন। আমি খুব স্বাভাবিক ভাবে গিয়ে তাদের সালাম দিলাম এবং কথাবার্তা বললাম। নতুন মানুষ। উনাদের সাথে মিশতে আমার কিছুটা সময় লাগবে। লজ্জা পাচ্ছিলাম ভীষণ। পুরুষদের নাস্তা শেষে আব্বু মেহমান খানা থেকে ভেতরের দিকে আসলেন। তিনি আম্মুকে ডেকে বললেন,
'এইযে উম্মে তুবা! আপনার মেয়েকে জলদি প্রস্তুত করিয়ে দিন।'

অন্যসব মহিলাদের মতো আমার আম্মু প্রশ্ন করে বসলেন না। কারণ আমার আব্বু অতিরিক্ত কথা বলা পছন্দ করেন না। তিনি সবসময় বলেন 'তোমরা ইসরাফ(সীমালঙ্ঘন) করো না। কারণ আল্লাহ তায়ালা ইসরাফকারীদের অপছন্দ করেন।'
আম্মু এসে আমাকে তৈরি হতে বললেন। বুকের ভেতর ধুকপুক আওয়াজ হচ্ছে। আমার অবস্থা কেবল আমিই টের পাচ্ছি। বোরকা পরে পেছনে তাকানোর পর দেখলাম আব্বু দাঁড়িয়ে আছে। মুখে লেগে আছে হাসি। ডান হাতটা আমার দিকে এগিয়ে দিয়ে বললেন,
'চলেন তুবাম্মু! আপনার জন্য রব কি ফয়সালা করেন সেটা পরে দেখা যাবে।'

কোনো শব্দ করলাম না। ভয় হচ্ছে আমার। শরীরে কাঁপুনি হচ্ছে। খুব জ্বরে আক্রান্ত হলে মানুষ যেমন কাঁপে আমিও তেমন কাঁপতে লাগলাম। আব্বু আমাকে নিয়ে এলেন সামনের রুমে। এখানে একজন মানুষ ছাড়া আর কেউই ছিলো না। লম্বা মতো একজন মানুষ গায়ে সাদা জুব্বা। উস্তাযদের সামনে ছাত্ররা যেমন মাথা নিচু করে বসে থাকে তিনিও তেমন করে বসে ছিলেন। আব্বু আমাকে একটা চেয়ার টেনে বসতে বললেন। আব্বু উনার উদ্দেশ্য বললেন,
'মুহাম্মদ! আপনাদের কথা বলে নেওয়া জরুরি। আপনি আমার কন্যার থেকে যা জেনে নেওয়ার নিতে পারেন ইনশাআল্লাহ। আপনাদের দু'জনের কথা বলার উপরই সবকিছু নির্ভর করে।'

তিনি মাথা নেড়ে ক্ষীণ কন্ঠে বললেন,
'জ্বি ইনশাআল্লাহ।'

আব্বু কিছুটা দূরে গিয়ে দাঁড়ালেন। তিনি থাকলে হয়তো আমরা কোনো কিছু জানতে ইচ্ছে করা সত্ত্বেও জানতে চাইবো না এই ভেবে। আমি কেঁপেই যাচ্ছি। আমার হাঁটু খুব জোরে জোরে কাঁপছে। তিনি মুচকি হেসে বললেন,
'এহেম! এতো ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ভাইবাতেও মানুষ এতো ভয় পায় না।'
আমার তো কেঁদে দেওয়ার অবস্থা। ভয়ে কোনসময় জ্ঞান হারিয়ে পড়ে যাই।
'আপনার নাম আমি জানি। তাই জিজ্ঞেস করে আর সময় নষ্ট করবো না। আমাদের বাঙালি এমন একটা জাতি যারা কারো নাম জানা সত্ত্বেও জিজ্ঞেস করে তোমার নাম কি? যেমন ধরুন আমার নাম জানা সত্ত্বেও জিজ্ঞেস করবে 'মুহাম্মদ তোমার নাম কি?'

সত্যিই খুব হাসি পাচ্ছিলো। নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পেরে কিছুটা শব্দ করে হেসে দিলাম। মাথা নিচু করে রাখায় আমি উনার মুখ দেখছিলাম না। কিছু জিজ্ঞেস করলে মাথা নেড়ে জবাব দিচ্ছিলাম। কিছুক্ষণ নীরবতা অবলম্বন করার পর তিনি আমাকে বললেন,
'জনাবা এমন একটি কথা বলুন যেটা আপনি আপনার হবু স্বামীকে বলবেন। আর আপনি মনে করেন এটা বলা অত্যন্ত জরুরি।'

দীর্ঘশ্বাস ফেলে বললাম,
'কথাটা আমার পর্দা প্রসঙ্গে। আমার পর্দার ব্যাপারে ছোটবেলা থেকে আব্বু আমাদের পর্দার ব্যাপারে অত্যন্ত কঠোর ছিলেন। বালেগা হওয়ার পর থেকে নন মাহরামের সামনে আর যাইনি। আমার যবে থেকে পর্দার হুকুম হয় তবে থেকে কোনো পুরুষ আমাকে দেখেনি। বাহিরে বের হওয়ার সময় আব্বু সাথে থাকতেন আমাদের সুপারম্যান হয়ে। তিনি সবসময় আমাদের পর্দার ব্যাপারে অত্যন্ত সচেতন। পর্দার হুকুম হয়ে যাওয়ার পর আমাদের নন মাহরামগণ কখনোই আমাদের বিরক্ত করেননি, তারা বুঝতো ডাকলেও আমরা এখন সামনে যাবো না। এজন্য কখনো কোনো বাজে পরিস্থিতির শিকার হতে হয়নি। আমি চাই ভবিষ্যতেও যেনো না হয়। আমার যাওজ যেনো আমার পর্দা নিয়ে সচেতন থাকেন। আমার যাতে কোনোরূপ অসুবিধা না হয় সেই বিষয়ে খেয়াল রাখেন। ছোটবেলা থেকে আমরা একরকম পরিবেশে বড় হয়েছি। এখানে কোনো কঠোরতা নেই। ইসলাম সহজ! আমার নতুন পরিবেশ কেমন হবে আল্লাহু আ'লাম। সেখানে আমার সুবিধা এবং অসুবিধা খেয়াল রাখার দায়িত্ব আমার যাওজের। আমার পর্দা যাতে কোনোভাবেই ছুটে না যায় এমন দায়িত্ব অবশ্যই আমার ভবিষ্যত যাওজকে নিতে হবে। আচ্ছা আমি যদি আপনার আহলিয়া হই তবে আপনি কি আমার পর্দা রক্ষার দায়িত্ব নিবেন?

তিনি মুচকি হেসে বললেন,
' ইনশাআল্লাহ! আমার আহলিয়া যিনি হবেন তার পর্দা যাতে ছুটে না যায় এর জন্য আমি যথেষ্ট ব্যবস্থা নিবো ইনশাআল্লাহ। মৃত্যু পর্যন্ত তার পর্দা রক্ষার জিম্মাদার হবো।'

আমি চুপ করে রইলাম। তিনি আবারও নীরবতা কাটিয়ে বললেন,
'আপনার আর কোনো প্রশ্ন নেই?'

মাথা হালকা নেড়ে বললাম,
'না।'

তিনি মৃদু আওয়াজে বলতে শুরু করলেন,
'আমি আমার পরিবারের সাথে থাকি। আমার পরিবারে আমি, আব্বু-আম্মু এবং আমার দুই ভাই-বোন আছে আলহামদুলিল্লাহ। আমার পরিবারের সাথে থাকতে আপনার কোনো আপত্তি নেই তো?'

'জ্বি-না। আপত্তি নেই। বরং আমি সবসময় চাইতাম ভরপুর একটা পরিবার। আমার শ্বশুর-শাশুড়ি থাকবেন। আমার দ্বিতীয় আব্বু-আম্মু। তাঁরা আমাকে মেয়ে রূপে গ্রহণ করবেন। আর আমি তাঁদের যত্ন নিবো কখনো মায়ের মতো আবার কখনো মেয়ের মতো।'

তিনি হেসে বললেন,
'মাশাআল্লাহ মহাশয়া। আমার আম্মু আপনার অপেক্ষায় আছেন! আপনি কি যেতে রাজি আছেন?'

কথাগুলো শুনে আমি আর স্বাভাবিক ভাবে বসে থাকতে পারলাম না। সেখান থেকে উঠে চলে এলাম নিজের রুমে। ভীষণ লজ্জা লাগছিলো। আমার এভাবে চলে আসার ব্যাপারটা অবশ্য তিনি বিয়ের পর অনেকবার বলে বলে আমায় রাগিয়েছিলেন। রেগে যাওয়ার পর সবসময় বলতেন,
'রাগলে আপনাকে কি সুন্দর লাগে। একদম টমেটোর মতো হিহিহিহি।'

আসরের নামাজের পর আব্বু আমার দরজায় এসে সালাম দিলেন। আমি তাঁকে ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দিলাম। তিনি এসে আমার পাশে বসলেন।
আব্বুর দিকে একবার তাকালাম। আজকের চাহনিটা অন্যরকম। ভেতরটা কেমন করে উঠলো।
তিনি আমার ডান হাত মুঠোয় ভরে বললেন,
'তুবাম্মু! তোমার জন্য আমি একজন সুপাত্র পেয়েছি। আমি তোমাকে তোমার যোগ্য পাত্রের হাতে তুলে দিতে চাই। আমার বিশ্বাস তোমার আব্বুর পর সেই একমাত্র লোক যে তোমাকে ভালো রাখতে পারবে, মৃত্যু পর্যন্ত তোমার পাশে থাকবে আর তোমার হাত ধরে জান্নাতে নিয়ে যাবে।'

কথাগুলো বলে আমার আব্বু কান্না করে দিলেন। আহ তখন আমার ভেতরটা তোলপাড় হয়ে যাচ্ছিলো। আমার পিতার চোখের পানি আমাকে ভেতর থেকে শেষ করে দিচ্ছিলো। আজ আর মায়ের মতো শাসনের স্বরে বলতে পারলাম না 'এভাবে কাঁদবেন না।' আমি নিজেও কান্নায় ভেঙ্গে পড়লাম। আব্বু চোখের পানি মুছতে মুছতে বলল,
'আমি কি এগোবো আম্মু?'

চুপ থাকলাম। এসময় কি বলা যায় ভাবতে থাকলাম। আব্বু মাথায় হাত দিয়ে মুচকি হেসে বললেন,
' আস-সুকুতু আলামাতুর রেজা! আমি কি তবে এটাই বুঝে নিবো আম্মু?'

এবারও চুপচাপ রইলাম। হাসিও আসছিলো আবার কান্নাও পাচ্ছিলো। আব্বু আমার কপালে চুমু খেয়ে বললেন,
'দু'আ চাই আম্মাজান। আপনার নিকাহ সম্পন্ন করে আবার আসছি। আপনার নিকাহর খেজুর নিয়ে আসবো। আপনি সেটা সবাইকে ভাগ করে খাওয়াবেন।'

যেদিন আমার বিয়ে হয় সেদিনই আমাকে শ্বশুর বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। আমার মনে আছে আমার যাওজ আমাকে আমার শাশুড়ির কাছে নিয়ে গিয়ে বলেন,
'আম্মু আপনার জন্য একটা মেয়ে এনেছি। আপনার জন্য একটা বান্ধবী এনেছি। এই নিন আপনার সেই হাদিয়া। একেও আপনার মতো গড়ে নিন।'
শাশুড়ি সেদিন শুরুতেই আমার হাত জোড়া ধরে বলল,
'আহলান ওয়া সাহলান আম্মা। আজ থেকে এটা আপনার বাড়ি আর আমি আপনার মা। আমাকে বান্ধবী হিসেবেও গ্রহণ করতে পারেন। কারণ সবাই চলে যাওয়ার পর আমরা দুজনই তো দুজনার সাথী হবো।'
আব্বু-আম্মুর বদলে আব্বু-আম্মু পেয়েছি। আমার বিয়ের পর থেকে শাশুড়ির মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আমাদের কখনো দুই কথা হয়নি আলহামদুলিল্লাহ। তিনি সর্বদা আমার একজন বন্ধু হয়েই ছিলেন।

প্রণয়নের রাতে আমার যাওজ আমার হাত তাঁর বুকে চেপে ধরে বলল,
'আজ থেকে আপনার দুঃখের ভাগ আমি নিবো আর আমার সুখের ভাগ আপনি নিবেন। আপনার চোখের পানি মুছে দেওয়ার দায়িত্ব নিলাম আমার প্রিয়। শুধু কথা দিতে হবে আমায় কখনো ছেড়ে যাবেন না। আমরা একজন হয়তো বিচ্ছেদ ঘটিয়ে আগেই রবের ডাকে সাড়া দিবো। কিন্তু এই বিচ্ছেদ থাকবে খানিক্ষণ। আমরা জান্নাতে আবার মিলিত হবো।

এরপর তিনি কিছুক্ষণ বিরতি নিয়ে আবার বলতে আরম্ভ করলেন,
'আপনি না হয় আমার খাদিজা হলেন আবার কখনো আয়িশা। আমি খুব অস্থির হলে ছুটে আসবো আপনার ধারে। তখন আম্মিজান খাদিজার মতো আমায় সাহস দিবেন। আমার হাতে হাত চেপে বলতে পারবেন না 'হে বন্ধু! ভয় নেই আপনার। আমি আছি তো পাশে।' বলেন না থাকবেন পাশে?

চোখ থেকে টুপটুপ করে পানি পড়ছে। তিনি আমার চোখের পানি মুছে দিয়ে বলল,
'চোখের পানি কখনো নিজে মুছবেন না। কখনো কান্না আসলে আমার সামনে বসে বসে কাঁদবেন। তারপর যখন আপনার কান্না শেষ হবে তখন আমি না হয় আপনার চোখ মুছে দিবো। দয়া করে এই দায়িত্ব পালনের সুযোগটা অন্তত আমায় দিন।'

তেপ্পান্ন বছর সংসার করেছি এই মানুষটার সাথে।
আমাদের দিনগুলো খুবই সুন্দর ছিলো। আব্বুর কথাটা মনে পড়ে 'আমি তোমার জন্য সুপাত্র পেয়েছি'। আমার যাওজ ছিলেন অত্যন্ত ভালো মানুষ। এই তেপ্পান্ন বছরে কখনো আমার পর্দা ছুটেনি আলহামদুলিল্লাহ। বরং আমার যাওজ-ই আমাকে সকল বিষয়ে আরো বেশি তাগিদ প্রদান করতেন, আমাকে আগলে রাখতেন। পথে বের হলে খুবই সাবধানে আমাকে নিয়ে হাঁটতেন যাতে কোনো নন মাহরামের সাথে আমার শরীর না লেগে যায়।

প্রায় সময় আমি এবং উনি একসাথে হাঁটতে বেরোতাম। তো একদিন আমি উনার সাথে হাঁটতে বেরিয়েছিলাম। পথে একটা মেয়েকে দেখিয়ে আমি আমার যাওজকে বললাম,
'মেয়েটাকে দেখুন...'

তিনি আমাকে পুরো কথা বলতে না দিয়ে বললেন,
'যে চোখে আমি আপনাকে দেখি সে চোখে আমি কোনো মহিলাকে দেখতে পারবো না। আমি আমার এই চোখ দিয়ে কেবল আমার ঘরের চাঁদকেই দেখবো যাকে আমার রব আমার করে পাঠিয়েছেন। যার দিকে তাকালে আমার চোখজোড়া অপবিত্র হবে না আমি কেবল তাকেই মুগ্ধ হয়ে দেখবো। আপনি দয়া করে আর কখনো আমাকে কাউকে দেখতে বলবেন না, কখনো কোনো নন মাহরাম মহিলার কথা আমাকে শুনাবেন না। আমি আপনাকে নিয়ে বেশ ভালো আছি! আপনি কেবল আপনাকে দেখতে বলবেন, আপনি কেবল আপনাকে শুনতে বলবেন।'

আমার যাওজ হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। অস্থির হয়ে গেলাম। জীবনের শেষ সময়ে তিনি চাইতেন আমি সারাক্ষণ তাঁর পাশে বসে থাকি, কথা বলি, গল্প বলি। তিনি আমাদের বিয়ের প্রথম প্রথম দিনগুলোর গল্প বলা শুরু করলেন। আমাকে আবারও ফিরিয়ে নিলেন অতীতে। তাঁর অবস্থার অবনতি! পুত্ররা নিয়ে গেলো হসপিটালে। সাথে তিনি আমাকে নিতে বললেন। পুরো গাড়িতে আমরা দু'জন অনেক কথা বললাম। আমাদের জীবনের শেষ কথা ছিলো সেগুলো। তিনি যে আমার কাছে আর কখনো ফিরে আসবেন না আমি ভাবতেও পারিনি। পুত্রদের হাতে আমায় তুলে দিয়ে ছলছল চোখে বললেন,
'আপনাদের আম্মাকে আপনাদের কাছে আমানত দিয়ে গেলাম। আপনারা আমার আমানতের খেয়ানত করবেন না। আপনাদের আম্মার পর্দা যেনো ছুটে না যায় খেয়াল রাখবেন। কখনো ব্যথা দিয়ে কথা বলবেন না। আপনাদের আম্মার জন্য আমি জান্নাতে অপেক্ষা করবো। আপনারা উনার সবদিকে খেয়াল রাখবেন।'

হসপিটালে উনাকে ভর্তি করানো হলো। ডাক্তাররা আর আশা দিতে পারছে না। অনেক কান্নাকাটি করেছি রবের কাছে। তিনি চেয়েছিলেন আমি যেনো তাঁর সাথে হসপিটালে থাকি। কিন্তু সুযোগ হলো না। সবই রবের ফয়সালা। বাসায় ফেরার সময় আমার প্রিয়তম যাওজ আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বললেন,
'আপনি যদি থাকেন পাশে, ফের প্রণয় হবে মোদের জান্নাতে।

আর কথা হয়নি আমাদের। আমাদের আর একসাথে হাসাও হয়নি। আমার যাওজ চলে গেলেন রবের কাছে। হ্যাঁ এই মানুষটার সাথে আমি থেকেছি তেপ্পান্নটা বছর। আর এর প্রতিটি দিন ছিলো অসাধারণ।

[আমাদের তেপ্পান্ন বছর]

_সংগৃহিত!

18/03/2024

৩০ দিন রোজা রাখার পর যদি জানতে পারেন আপনার একটা রোজাও কবুল হয়নি!
প্রতিদিন ১৩ ঘণ্টার বেশি না খেয়ে রোজা রাখলেন। লুকিয়েও কিছু খাননি। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে কষ্ট করেছেন, তবুও রোজা ভাঙ্গেননি।
কিন্তু, মাস শেষে যদি জানার সুযোগ থাকতো, আর আপনি জানতে পারলেন আপনার একটা রোজাও হয়নি, তখন কেমন লাগবে? রোজা রেখেছেন, সওয়াব পাননি। বিনিময়ে শুধু ক্ষুধার্তই থেকেছেন! আমাদের সমাজের অনেকেরই এমন হয়!
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন: “কত রোজাদার আছে যাদের রোজার বিনিময়ে ক্ষুধা ছাড়া আর কিছুই জোটে না!” [সুনানে ইবনে মাজাহ: ১৬৯০]
তারা কারা? রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন: “যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও সে অনুযায়ী আমল বর্জন করেনি, তাঁর এ পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই।” [সহিহ বুখারী: ১৯০৩]
অর্থাৎ, রমাদান মাস শুধুমাত্র উপোষ থাকার মাস না। কেবল না খেয়ে থাকলেই রোজা হবে না। রোজার সওয়াব পেতে হলে আপনাকে চরিত্রবান হতে হবে। মিথ্যা বলা ত্যাগ করতে হবে, আমানত রক্ষা করতে হবে, কাউকে গালি দেয়া যাবে না, গীবত করা যাবে না।
অথচ আমরা অহরহই এমন করি।
বাইরে কাজকর্ম করে বাসায় এসে কোনো কিছু এলোমেলো দেখলে স্বামী রাগারাগি করে, স্ত্রীকে বকা দেয়, গালি দেয়। রিক্সা ভাড়া ঠিক না করে রিক্সায় চড়ে নামার সময় ঝগড়া করে। সময় কাটানোর জন্য বন্ধুদের সাথে বসে বসে গীবত করে। রোজা রেখে মিথ্যা বলে, ঘুষ খায়।
আপনি হয়তো ভাবছেন রোজা রাখছেন। কিন্তু, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলছেন- এগুলো রোজা না, এমন রোজার আল্লাহর কোনো প্রয়োজন নেই। আল্লাহ এমন রোজা কবুল করেন না। তাহলে কীভাবে পরিপূর্ণভাবে রোজার সওয়াব পাওয়া যাবে? নিজের চরিত্রকে উন্নত করা। সচ্চরিত্রবান হওয়া।
রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন: “যে ব্যক্তি তার চরিত্রকে সৌন্দর্যমন্ডিত করেছে, আমি তার জন্য জান্নাতের সর্বোচ্চ স্থানে একটি ঘরের জিম্মাদার।” [সুনানে আবু দাউদ: ৪৮০০]

Ikhlas - ইখলাস

16/03/2024

যারা কুরআন খতম করছেন তাদের জন্য বেশ উপকারী একটি পরামর্শ হচ্ছে— প্রতিদিনের তিলাওয়াতের সময় সাথে বড় একটি বোতলে পানি প্রস্তুত রাখবেন । যেদিন যতটুকু পড়বেন, পড়া শেষে কারো সাথে কথাবার্তা বলার আগেই উক্ত পানিতে ফুঁ দিয়ে রাখবেন ।

এভাবে পুরা খতমের ফুঁ দেয়া পানি বাসায় হেফাজত করবেন । বিভিন্ন রোগব্যাধি, বাচ্চাদের ভয় পাওয়া, পেটে ব্যথা, জ্বীন, জাদু, বদনজর ইত্যাদি ইত্যাদি অনেক চিকিৎসার ক্ষেত্রেই এই পানি বহুত কাজে আসবে— ইনশাআল্লাহ্।

ফিল্টার করা পানি নিলে ভালো হয় । যাতে পরবর্তীতে পানি শীঘ্রই নষ্ট না হয়ে যায় । সর্বোপরি কেমন কাটছে আপনার রমজান?

~Mufti Muhammad Al Amin~

16/03/2024

একজন সাধারন মানুষ অপকর্ম করলে মানা যায় ধর্মীয় জ্ঞানের অভাবে করেছে।
কিন্তু!
আল্লাহর পবিত্র কোরআন বুকে ধারন যারা অপকর্ম করে তাদের অপকর্ম মেনে নেওয়া যায়? এরা সবই জানে সবই বুঝে তবুও কিভাবে করে এসব! আল্লাহর আজাবের আয়াতগুলো স্বরণ হয়না তখন!

আল্লাহ আমাদের লেবাসধারী থেকে হেফাজত করুন।

বোনদেরকে বলি হাফেজ আলেম শুনলেই বিয়ের জন্য পাগল হয়ে যাবেন না। কষ্টিপাথরে যাচাই করবেন আসলেই সে প্রকৃত দ্বীনদার কিনা। নয়তো সারাজীবন এর প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে।

14/03/2024

👉❤খেঁজুর দিয়ে ইফতার করা সুন্নাহ❤👈

হযরত আনাস (রঃ) বলেন,
রসূল (সঃ) তাজা পাঁকা খেঁজুর দিয়ে ইফতার করতেন। তাজা খেঁজুর না থাকলে যেকোনো খেঁজুর দিয়ে করতেন। আর তাও যদি না থাকত, তাহলে কয়েক ঢোক পানি পান করে নিতেন। ____[তিরমিযি ৬৯৬]

14/03/2024

ডিভাইসের অসিলায় এখন একজন স্বামী পাওয়া মুস্কিল।
এখন তো স্ত্রী বিক্রেতাই বেশী।
বিশেষ করে ব্লগার রা।
বীরপুরুষ সুপুরুষ তো আমি তাকেই বলি যে একজন স্ত্রীকে নিজের জিম্মাদারিতে নিরাপদ আর শান্তিতে রাখে।
স্ত্রীকে অমূল্য রত্ন ভেবে পরপুরুষ এর লোলুপ দৃষ্টি থেকে লুকিয়ে রাখবে।
নিজে বাহিরে রিজিক অন্বেষণ করবে আর স্ত্রীকে ঘরের জিম্মাদারিতে রাখবে।
হালাল রিজিক খাওয়াবে।
ঘরে পর্দা আর ইবাদাত করার মুয়াফেক পরিবেশ তৈরী করে রাখবে।
স্ত্রীর অন্তর প্রশান্ত রাখতে নিজের দৃষ্টিকে পরনারী থেকে হেফাজত রাখবে।
স্ত্রীর কাছে বিশ্বস্ত থাকবে কমফোর্ট থাকবে।
স্ত্রীর ভালো লাগা খারাপ লাগার অর্থ বুঝবে।
পরিশেষে একজন পরিপূর্ণ মানুষকে জীবনসঙ্গী হিসেবে পেতে হয় যার মধ্যে দ্বীনদারিত্বটাই প্রধান।
একজন দ্বীনদার স্বামী পেলে দুনিয়াটাই জান্নাত হয়ে যায়।
আর একজন বদ্দিন স্বামী পেলে দুনিয়াটাই জাহান্নাম হয়ে যায়।
আর অবশ্যই স্ত্রীর মন মাইন্ডেও এমন স্বামীর আনুগত্য আর গায়রাতে ভরপুর মুহাব্বাত থাকতে হবে তবেই সোনায় সোহাগা হবে।
শরিয়তের বাহিরে যেতে চাওয়া,স্বামীর ইনকামকে উপযুক্ত মনে না করা,নিজেকে নিয়ে গায়রাত না থাকা,ইন্ডিপেন্ডেন্ট লেডি হতে চাওয়া,ফরজকে এভয়েড করা এই মেয়েগুলোর কথা আমি বলিনি।
বলেছি প্রকৃত স্ত্রী হয়ে থাকতে চাওয়া বোনদের কথা।
যারাও মনের মধ্যে পরহেজগারিতা লালন করেও কাপরুষ এর হাতে পরে।

দুর্ভাগ্য তো তাদের যারা স্ত্রীর রিজিকের দায়িত্ব নিতে পারেনা নিজের অযোগ্যতায় বিধায় বিয়ে করে স্ত্রীকে নিলামে বিক্রি করে পরপুরুষ এর চোখে।
পর্দানশীন দ্বীনদার বোনদের আল্লাহ এমন স্ত্রী বিক্রেতা থেকে হেফাজত রাখুন।

Tuhfa Rukaiya

19/11/2023

Why Liza apur pokkho theke hadiya mahshaallah attw sundor lagce mahshaallah 🥰🥰🥰🥰🥰love u apuuiiiii 😍

16/10/2023

তাহাজ্জুদের নামায পড়লে জ্বীনে ভয় দেখায়, এটি একটি মিথ্যা কথা। বরং সহিহ হাদিসে এসেছে, "সেই সময়ের (তাহাজ্জুদের) সলাতে ফেরেশতাগণ সূর্যোদয় পর্যন্ত উপস্থিত থাকেন।" (তিরমিযি, হাদিস নং ৩৫৭৯; নাসাঈ, হাদিস নং ৫৭২)

তাহাজ্জুদের নামায পড়লে শরীরের রোগ দূর হয়! হাদিসে এসেছে, "...এ নামায গোনাহ থেকে বাঁচিয়ে রাখবে এবং শরীর থেকে রোগ দূর করবে।" (তিরমিযি, হাদিস নং ৩৫৪৯; বায়হাকি, হাদিস নং ৪৮৩৩)

আপনি যদি তাহাজ্জুদ সলাত আদায়কারী হন তবে আপনার জন্য সুসংবাদ! আল্লাহ নিজেই তাঁর কিতাবে আপনার প্রশংসা করেছেন। আল্লাহ বলেন, "যে ব্যক্তি রাতের বেলা সাজদাহরত বা দাঁড়ানো থাকে, আখিরাতের ভয় করে এবং নিজ প্রতিপালকের অনুগ্রহ প্রত্যাশা করে, সে কি তার সমান, যে এমনটি করে না?" (সূরা যুমার, আয়াত ৯)

যারা নিজের নফসকে গোনাহ থেকে কন্ট্রোল করতে সক্ষম হন না তাদের জন্য এই সলাত। আল্লাহ বলেন, "নিশ্চয়ই রাত্রীজাগরণ প্রবৃত্তি দমনে অত্যন্ত কার্যকর।" (সূরা মুযযাম্মিল, আয়াত ৬)

তাহাজ্জুদের দ্বারা জান্নাত লাভ হয়। রাসূল (সা.) বলেন, "হে লোকসকল! তোমরা সালামের প্রচলন কর, খাদ্য খাওয়াও, আত্মীয়তা রক্ষা কর এবং মানুষ যখন ঘুমিয়ে থাকে তখন সলাত (নামায) আদায় কর। তাহলে তোমরা নিরাপদে জান্নাতে প্রবেশ করবে।" (তিরমিযি ৪/৫৬২-৫৬৩, সহিহ)

02/10/2023

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু ""----
----------------------------------------------
ফরজ গোসল এর সঠিক নিয়ম
====================
না জানার কারনে অসংখ্য মুসলিম ভাই-বোনের সালাত সহ নানা আমল কবুল হয় না,যেটা চরম এক ভয়ানক,. যেটা ইমানের জন্য ধ্বংসাত্নক।নাউজুবিল্লাহ 😭

যেসব কারনে গোসল ফরজ হয়ঃ
=========================
১. স্বপ্নদোষ বা উত্তেজনাবশত বীর্যপাত হলে
২. নারী-পুরুষের মিলনে (সহবাসে বীর্যপাত হোক আর নাই হোক)
৩. মেয়েদের হায়েয-নিফাস শেষ হলে
৪. কেউ ইসলাম গ্রহন করলে
ফরজ গোসল এর সঠিক নিয়মঃ
=============================
আমাদের মধ্যে অনেকেই ফরয গোসলের সঠিক নিয়ম জানেন না; আবার সংকোচে কাউকে জিজ্ঞেস ও করতে পারেন না। এই জন্য ফরজ গোসলের নিয়ম সহিহ হাদিস অনুসারে সংক্ষেপে দেওয়া হল।
১।
মনে মনে গোসলের নিয়ত করা (নিয়ত পড়া নয়)।
২।
‘বিসমিল্লাহ’ বলে গোসল শুরু করা
৩।
দুই হাত কবজি পর্যন্ত ধোওয়া (বুখারী ২৪৮)
৪।
পানি ঢেলে বাম হাত দিয়ে লজ্জাস্থান পরিষ্কার করা (বুখারী ২৫৭)
৫।
বাম হাতটি ভালভাবে ঘষে ধুয়ে নেওয়া (বুখারী ২৬৬)
৬।
নামাজের ওজুর মতো ভালভাবে পূর্ণরূপে ওজু করা। (দুই হাত তিনবার ধোওয়া, কুলি করা, নাকে পানি দেওয়া, মুখ ও কনুই পর্যন্ত হাত ধোওয়া। মাথা মাসেহ করতে হবে না।) এক্ষেত্রে শুধু পা দুটো বাকি রাখলেও চলবে, যা গোসলের শেষে ধুয়ে ফেলতে হবে। (বুখারী ২৫৭, ২৫৯, ২৬৫)
৭।
মাথায় পানি ঢেলে চুলের গোড়া ভালভাবে আঙ্গুল দিয়ে ভিজানো। (বুখারী ২৫৮)
মহিলাদের বেনী না খুলেও গোড়া ভালভাবে ভিজলেই হবে। (মুসলিম ৩৩০)
৮।
পুরো শরীরে পানি ঢালা; প্রথমে ডানে, পরে বামে। (বুখারী ১৬৮)
৯।
গোসলের জায়গা থেকে একটু সরে গিয়ে দুই পা ধোওয়া।(বুখারী ২৫৭)
মনে রাখতে হবেঃ
===================
১. পুরুষের দাড়ি ও মাথার চুল ভালোভাবে ভিজাতে হবে।
২. মহিলাদের শুধু চুল ভেজানোই যথেষ্ট।
৩. এ নিয়মে গোসলের পরে নতুন করে ওজুর দরকার নেই যদি ওজু ভেঙ্গে না যায়।
৪. শরীরের কোন অংশ যেন শুকনো না থাকে।
আল্লাহ আমাদের সঠিক ভাবে কুর’আন ও সহীহ সুন্নাহ মেনে চলার তাওফীক দিন এবং পুর্বের না জেনে ভুল গুলোকে ক্ষমা করুন আমিন।

10/09/2023

⭕ ফরজ নামাজ আদায় করার পর গুরুত্বপূর্ণ কিছু সুন্নত আমলসমূহ নিম্নে উপস্থাপণ করা হলো। তাই ফজিলতপূর্ণ এই আমলগুলো আপনারা সকলেই নিয়মিত আমল করার চেষ্টা করবেন ইন শা আল্লাহ 💝✅

🔸 ১ বার “আল্ল-হু আকবার” পাঠ করা। [বুখারী- ৮৪২]

🔹 ৩ বার “আস্তাগফিরুল্ল-হ” পাঠ করা। [মুসলিম- ১৩৬২]

🔸 ১ বার “আল্ল-হুম্মা আংতাস সালাম, ওয়া মিনকাস্ সালাম, তাবারকতা ইয়া যাল জালালি ওয়াল ইক্বরম”
পাঠ করা। [মুসনাদে আহমাদ- ২২৪৬১]

🔹 ১ বার “আয়াতুল কুরসী” পাঠ করা। [নাসাঈ- ৯৮৪৮]

🔸 “সুবহা-নাল্ল-হ” “আলহামদুলিল্লাহ” “আল্ল-হু আকবার” ৩৩+৩৩+৩৩ বার পাঠ করে, ১ বার “লা ইলাহা ইল্লাল্ল-হু ওয়াহদাহু লা- শারিকালাহু লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া 'আলা কুল্লি শাইইন ক্বদীর” পাঠ করা। [সহীহ মুসলিম- ১৩৮০]

🔹 ফজর এবং মাগরিবের ফরজ নামাজের পর ৭ বার “আল্ল-হুম্মা আজিরনী মিনান্না-র” পাঠ করা। [সুনানুল কুবরা লিন নাসাঈ- ৯৮৫৯]

🔸 ফজর এবং মাগরিবের নামাজের পর ৩ বার “আঊযুবিল্লাহিস সামি'য়্যিল 'আলীমি মিনাশ শাইত্ব-নির রজীম” পাঠ করে, “সূরা হাশরের” শেষ ৩ আয়াত পাঠ করা। [সুনানে তিরমিযি- ১৩৭২]

🔹 ফজর নামাজ আদায় করার পর ৩ বার পাঠ করা, “সুবহা-নাল্ল-হি ওয়াবিহামদিহী 'আদাদা খলক্বিহী, অরিদ্ব- নাফসিহী অযিনাতা 'আরশিহী, অমিদা-দা কালিমা-তিহ্”। [সহীহ মুসলিম, হাদীস নং- ২৭২৬]

🔸 ফজর নামাজ আদায় করার পর ৩ বার “আল্ল-হুম্ম ইন্নি আসআলুকা, 'ঈলমান না-ফি'য়ান, ওয়া রিজক্বন ত্বয়্যিবান, ওয়া 'আমালান মুতাক্বব্বালা” পাঠ করা। [ইবনে মাজাহ- ৯২৫]

🔹 প্রত্যেক ফরজ নামাজের পর একাধিকবার পাঠ করা “আল্ল-হুম্মা আ'ইন্নি 'আলা জিকরিকা, ওয়া শুকরিকা, ওয়া হুসনি 'ইবাদাতিক। [আবু দাউদ- ১৫২২]

🔸 ফজর এবং মাগরিবের নামাজের পরে ৩ বার “রদ্বীনা- বিল্লা-হি রব্বা-, ওয়াবিল ইসলামি দ্বীনা- ওয়াবি মুহাম্মাদিন রসূলা- [ﷺ]” পাঠ করা। [সুনানে আবু দাউদ- ৫০৭৪]

🔹 ফজর এবং মাগরিবের নামাজের পর ১ বার “সাইয়্যিদুল ইস্তিগফার” পাঠ করা। [মিশকাত- ২৩৩৫]

🔲 “আল্ল-হুম্মা আংতা রব্বী, লা- ইলাহা ইল্লা আংতা খলাক্বতানী, ওয়া আনা ‘আবদুক, ওয়া আনা ‘আলা ‘আহদিকা ওয়া ওয়া‘দিকা মাসতাত্ব‘তু, আ‘ঊযুবিকা মিং শার্রিমা ছনা‘তু। আবূউ লাকা বিনি‘মাতিকা ‘আলাইয়া ওয়া আবূউ লাকা বিযাম্বী, ফাগফিরলী ফাইন্নাহূ লা- ইয়াগফিরুয্ যুনূবা ইল্লা আংত্”।

⭕ জিনের আছর, বদনজর, কু-ফ-রী কালাম, জাদু টোনা এবং বিষধর প্রাণীর ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে রাসূল সল্লল্লহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম ফজর এবং মাগরিবের নামাজের পর নিম্নোক্ত দোয়াগুলো পাঠ করতেন।

🔸 সূরা “ইখলাস”, “ফালাক” এবং “নাস” ১ বার করে পাঠ করা। তবে ফজর এবং মাগরিবের নামাজের পর প্রতিটি সূরা ৩ বার করে পাঠ করা। [আবু দাউদ- ১৫২৩]

🔹 ফজর এবং মাগরিবের নামাজের পর ৩ বার পাঠ করা “আ'উযু বিকালিমা-তিল্লা-হিত্তা-ম্মা-তি, মিং- শাররি মা খলাক্ব”। [তিরমিযি- ৩৫৫৯]

🔸 ফজর এবং মাগরিবের নামাজের পর ৩ বার পাঠ করা, “বিসমিল্লা-হিল্লাযী লা- ইয়াদুররু মা'আসমিহী, শাইউং ফিল আরদ্বী ওয়ালা- ফিসসামা-ই, ওয়াহুওয়াস সামি'উল 'আলীম”। [তিরমিযি- ৩৩৩৫]

🔹 ফজর এবং মাগরিবের নামাজের পর ৭ বার পাঠ করা “হাসবিয়াল্ল-হু লা- ইলা-হা ইল্লাহু, 'আলাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়াহুয়া রব্বুল 'আরশীল 'আউযীম”। [আবু দাউদ- ৩২১]

⭕ [ ' ] এই চিহ্নটি দ্বারা আরবী হরফ “আইনের” উচ্চারণ উদ্দেশ্য। তাই এই চিহ্নের জায়গাগুলোতে গলার ভিতর থেকে “আইনের” উচ্চারণ করতে হবে। আর [ - ] এই চিহ্নটি দ্বারা ১ আলিফ টান দিয়ে পড়াকে বুঝানো হয়েছে।

🔲 মহান আল্লাহ তা'য়ালা আমাদের সবাইকে নিয়মিত আমলগুলো করার তৌফিক দান করুন, আমিন

Website