Jay Radhe
হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্র জপ করুন এবং সুখী হউন
মহাপবিত্র পুরুষোত্তম মাসে স্পেশাল (শ্রীপরমা) একাদশী ব্রত
১২ আগস্ট, শনিবার 🍌🍋🍉🍇🍍 আপনি পালন করবেন তো❓
Hare Krishna 🙏♥️
#অগ্রীম_একাদশী_বার্তা
30 শে জুন 2023, 13 আষাঢ় 1430 বঙ্গাব্দ রোজ শুত্রুবার পবিত্র শয়ন একাদশী।
পরদিন পারণের সময় সকাল 05:20 থেকে 09:41 এর মধ্যে (বাংলাদেশ সময়)
শয়ন একাদশীর ব্রত মাহাত্ম্য
মহারাজ যুধিষ্ঠির বললেন, হে কৃষ্ণ । আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের একাদশীর নাম কি ? এর মহিমাই বা কি ? তা আমাকে কৃপা করে বলুন ।
শ্রীকৃষ্ণ বললেন, ব্রহ্মা এই একাদশী সম্পর্কে দেবর্ষি নারদকে যা বলেছিলেন আমি সেই আশ্চর্যজনক কথা আপনাকে বলছি ।
শ্রীব্রহ্মা বললেন-হে নারদ ! এ সংসারে একাদশীর মত পবিত্র আর কোন ব্রত নেই । সকল পাপ বিনাশের জন্য বিষ্ণু ব্রত পালন করা একান্ত আবশ্যক । যে ব্যক্তি এই প্রকার সকল অভিষ্ট ফলদাতা একাদশী ব্রত না করে তাকে নরকগামী হতে হয় । আষাঢ়ের শুক্লপক্ষের এই একাদশী 'শয়ন' নামে বিখ্যাত । শ্রীভগবান ঋষিকেশের জন্য এই ব্রত পালন করতে হয় । এই ব্রতের সম্বন্ধে এক মঙ্গলময় পৌরাণিক কাহিনী আছে । আমি এখন তা আপনার নিকট বলছি ।
বহু বছর পূর্বে সূর্যবংশে মান্ধাতা নামে একজন রাজর্ষি ছিলেন । তিনি ছিলেন সত্যপ্রতিজ্ঞ এবং প্রতাপশালী রাজা । প্রজাদেরকে তিনি নিজের সন্তানের মতাে প্রতিপালন করতেন । সেই রাজ্যে কোনরকম দুঃখ, রােগ-ব্যাধি, দুর্ভিক্ষ, খাদ্যাভাব অথবা কোন অন্যায় আচরণ ছিল না । এইভাবে বহুদিন অতিবাহিত হল । কিন্তু একসময় হঠাৎ দৈবদুর্বিপাকে ক্রমাগত তিনবছর সে রাজ্যে কোন বৃষ্টি হলো না । দুর্ভিক্ষের ফলে সেখানে দেবতাদের উপশ্যে দানমন্ত্রের 'স্বাহা’ ‘স্বধা' ইত্যাদি শব্দও বন্ধ হয়ে গেল । এমনকি বেদপাঠও ক্রমশ বন্ধ হল ।
তখন প্রজারা রাজার কাছে এসে বলতে লাগল মহারাজ দয়া করে আমাদের কথা শুনুন । শাস্ত্রে জলকে নার বলা হয় আর সেই জলে ভগবানের অয়ন অর্থাৎ নিবাস । তাই ভগবানের এক নাম নারায়ণ ।
মেঘরূপে ভগবান বিষ্ণু সর্বত্র বারিবর্ষণ করেন । সেই বৃষ্টি থেকে অন্ন এবং অন্ন খেয়ে প্রজাগণ জীবন ধারণ করেন । এখন সেই অন্নের অভাবে প্রজারা ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে । অতএব হে মহারাজ আপনি এমন কোন উপায় অবলম্বন করুন যাতে আপনার রাজ্যের শান্তি এবং কল্যাণ সাধন হয় ।
রাজা মান্ধাতা বললেন, তােমরা ঠিকই বলেছ । অন্ন থেকে প্রজার উদ্ভব । অন্ন থেকেই প্রজার পালন । তাই অন্নের অভাবে প্রজারা বিনষ্ট হয় । আবার রাজার দোষেও রাজ্য নষ্ট হয় । আমি নিজের বুদ্ধিতে আমার নিজের কোন দোষ খুঁজে পাচ্ছি না । তবুও প্রজাদের কল্যাণের জন্য আমি আপ্রাণ চেষ্টা করব ।
তারপর রাজা ব্রহ্মাকে প্রণাম করে সৈন্যসহ বনে গমন করলেন । সেখানে প্রধান প্রধান ঋষিদের আশ্রমে ভ্রমণ করলেন। এভাবে একদিন তিনি ব্রহ্মার পুত্র মহাতেজস্বী ঋষি অঙ্গিরার সাক্ষাৎ লাভ করলেন। তাকে দর্শনমাত্রই রাজা মহানন্দে ঋষির চরণ বন্দনা করলেন । মুনিবর তাকে আশীর্বাদ ও কুশল প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলেন । রাজা তখন তার বনে আগমনের কারণ সবিস্তারে ঋষির কাছে জানালেন । ঋষি অঙ্গিরা কিছু সময় ধ্যানস্থ থাকার পর বলতে লাগলেন, হে রাজন !
আপনি আষাঢ় মাসের শুক্লপক্ষের শয়ন নামে প্রসিদ্ধ একাদশী ব্রত পালন করুন । এই ব্রতের প্রভাবে নিশ্চয়ই রাজ্যে বৃষ্টি হবে । এই একাদশী সর্বসিদ্ধি দাত্রী এবং সর্ব উপদ্রব নাশকারিনী । হে রাজন ! প্রজা ও পরিবারবর্গ সহ আপনি এই ব্রত পালন করুন ।
মুনিবরের কথা শুনে রাজা নিজের প্রাসাদে ফিরে এলেন । আষাঢ় মাস উপস্থিত হলে রাজ্যের সকল প্রজা রাজার সাথে এই একাদশী - ব্রতের অনুষ্ঠান করলেন । ব্রত প্রভাবে প্রচুর বৃষ্টিপাত হল। কিছুকালের মধ্যেই অন্নাভাব দূর হল । ভগবান হৃষিকেশের কৃপায় প্রজাগণ সুখী হল ।
এ কারণে সুখ ও মুক্তি প্রদানকারী এই উত্তম ব্রত পালন করা সকলেরই অবশ্য কর্তব্য । ভবিষ্যপুরাণে যুধিষ্ঠির-শ্রীকৃষ্ণ তথা নারদ-ব্রহ্মা সংবাদ রূপে শয়ন একাদশীর মাহাত্ম্য বর্ণিত হয়েছে ।
একাদশী পারন মন্ত্র :
”একাদশ্যাং নিরাহারো ব্রতেনানেন কেশব ।
প্রসীদ সুমুখ নাথ জ্ঞানদৃষ্টিপ্রদো ভব ।।”
– এই মন্ত্র পাঠ করে নির্দিষ্ট সময়ের মাঝে পারন করতে হয় ।
গীতা মাহাত্ম্যে উল্লেখ আছে-
”যোহধীতে বিষ্ণুপর্বাহে গীতাং শ্রীহরিবাসরে।
স্বপন জাগ্রৎ চলন তিষ্ঠন শত্রুভির্ন স হীয়তে।।”
অর্থাৎঃ শ্রী বিষ্ণুর পর্বদিনে, একাদশী ও জন্মাষ্টমীতে যিনি গীতা পাঠ করেন , তিনি চলুন বা দাড়িয়ে থাকুন, ঘুমিয়ে বা জেগে থাকুন বা যে অবস্থায়ই থাকুন না কেন শত্রু কখনো তার কোন ক্ষতি করতে পারেনা ।
একাদশী ব্রত আপনে পালন করুন অন্যকেও উৎসাহিত করুন।
ভুল ত্রুটি ক্ষমা চোখে দেখবেন কারণ আমি এক অধম।
শয়ন একাদশী মাহাত্মটি শেয়ার করে সবাইকে জানার সুযোগ করে দিবেন সবাই কৃপা করে।।
হরে কৃ্ষ্ণ হরে কৃ্ষ্ণ, কৃ্ষ্ণ কৃ্ষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম, রাম রাম হরে হরে।।
জগন্নাথ দেবের রথের প্রস্তুতি চলছে।
ইসকন প্রচার কেন্দ্র, নীলফামারী।
#হরেকৃষ্ণ🙏🙏
আসছে আগামী ২০/০৬/২০২৩ এ জয় জগন্নাথের রথযাত্রা উৎসব। সবাইকে রথযাত্রার অগ্রীম শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন ❤️❤️
স্নানযাত্রা - বিরহে সেবা আরও অধিক কিছু!
"ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু অত্যন্ত বিশেষভাবে স্নানযাত্রা উদযাপন করতেন। তিনি এই উৎসবটি পছন্দ করতেন, কিন্তু পরে তিনি গভীর বিরহ অনুভব করতেন। আপনারাও কি বিগ্রহগণকে ১৫ দিনের জন্য একা রাখেন? আমরা যদিও কোনভাবে বেঁচে থাকি কিন্তু ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর পক্ষে তা ছিল অত্যন্ত কষ্টদায়ক। আমরা যা করতে পারি তা হলো আমাদের প্রতিদিন জপ করতে হবে।
চিন্ময় জগতে আমরা সর্বদা এটিই করি – তা হলো ভগবানের সেবা। এখানে আমরা ভগবানকে তাঁর 'অর্চা অবতাররূপে' সেবা করারও সুযোগ লাভ করি। উন্নত বৈষ্ণবদের কাছে ভগবানের অর্চা বিগ্রহ ও স্বয়ং ভগবানের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই। ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু প্রতিদিন ভগবান শ্রীজগন্নাথদেবকে দর্শন করতেন এবং স্নানযাত্রায় যখন ভগবানকে স্নান করানো হতো, তা দেখে তিনি অত্যন্ত আনন্দ লাভ করতেন। তারপর স্নানযাত্রা শেষে ভগবানের ঠাণ্ডা লাগে! ১৫ দিন আপনারা তাঁর দর্শন পান না!
আসলে এই সময় তাঁর শ্রীঅঙ্গে কিছু সংস্কার করা হয়। কখনও কখনও তাঁর নতুন অঙ্গরাগ করা হয়। কিন্তু বাইরে ঘোষণা করা হয় যে, তিনি অসুস্থ! তাই তাঁকে বিশেষ ঔষধ দেওয়া হয়েছে। তিনি ফলের রস এবং এইরকম দ্রব্যাদি গ্রহণ করেন। তিনি লক্ষ্মীদেবীকে এই বলে বোঝাতে থাকেন যে, তিনি অল্প কিছুদিনের জন্য বৃন্দাবন যেতে চান। তো, তিনি এই সময়টি লক্ষ্মীদেবীর সাথে একান্তে কাটান এবং তাঁকে রাজি করান। বাহ্যিকভাবে ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু এই সময়ে ভগবান শ্রীজগন্নাথদেবের দর্শন লাভ করতে পারছিলেন না। তাই হঠাৎ তিনি গভীর বিচ্ছেদ বেদনায় বিভোর হয়ে পড়েন।"
~ শ্রীল জয়পতাকা স্বামী
১৭ই জুন, ২০১৯
আগামীকাল ৪ঠা জুন, ২০২৩ রোজ রবিবার শ্রী জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা মহোৎসব!!
আগামীকাল জগন্নাথ দেবের স্নান যাত্রা উৎসব 🌼
জগন্নাথ দেবের জয় 🥀
🍁পানিহাটি চিড়া দধি মহোৎসব🍁
💐🍁💐💞🌿💞💐🍁💐💞🌿💞💐🍁💐
★পানিহাটি চিড়াদধি মহোৎসব কি ?
★ কেন করা হয় ?
★শ্রীরঘুনাথদাস গোস্বামী কে ছিলেন ?
★আজ থেকে প্রায় ৫০০ বছর আগেকার কথা।সে সময় ভারত বিভক্ত হয় নি। বর্তমান বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ মিলে একই সঙ্গে ভারতের ভূখণ্ড ছিল। সেই সময় যশোরের ভৈরব নদ থেকে আরম্ভ করে রূপনারায়ণ নদ পর্যন্ত এক বিশাল ভূখণ্ডের নাম ছিল সপ্তগ্রাম। সে সময় এ সপ্তগ্রাম ছিল এক উল্লেখযোগ্য বন্দর। তাই এ অঞ্চলের গুরুত্ব অনুসারে সেটি ছিল সবচেয়ে ঐশ্বর্যমণ্ডিত। এই সপ্তগ্রামেরই জমিদার ছিলেন শ্রী গোবর্ধন মজুমদার। তার বাৎসরিক আয় ছিল কুড়ি লক্ষ টাকা।আজ থেকে ৫০০ বছর আগের এ কুড়ি লক্ষ টাকাকে আজকের সময়ে দাঁড়িয়ে ভেবে দেখলে আন্দাজ করা যাবে,তখনকার দিনের কুড়ি লক্ষ টাকা এখনকার দিনের প্রায় ২০০ কোটির সমান।এ রকম এক বিশাল ধনী পিতার পুত্ররূপে ১৪৯৫ খ্রিস্টাব্দে হুগলী জেলার অন্তর্গত কৃষ্ণপুর গ্রামে,বৃন্দাবনের ষড় গোস্বামীদের অন্যতম শ্রীল রঘুনাথ দাস গোস্বামী আবির্ভূত হন।
ধনশালী জমিদার পিতার একমাত্র উত্তরাধিকারী হওয়া সত্ত্বেও রঘুনাথ এইসব ঐশ্বর্য ও বিষয় এর প্রতি উদাসীন ছিলেন। তিনি সর্বদাই ভগবানের প্রতি আকর্ষণ অনুভব করতেন,উপযুক্ত ব্যক্তি পেলে ভগবানের কথা জিজ্ঞাসা করতেন। রঘুনাথের বৈরাগ্য দূর করে তাঁকে সংসারমুখী করার উদ্দেশ্যে তাঁর পিতামাতা অবশেষে এক পরমা সুন্দরী কন্যার সাথে তাঁর বিয়ে দিলেন। কিন্তু তাতেও রঘুনাথের সংসারের প্রতি উদাসীনভাব গেল না।
★পানিহাটি চিড়া - দধি মহোৎসব উপলক্ষ্যে বিশেষ প্রতিবেদন; প্রায় ১৫১৩-১৪ খৃষ্টাব্দের কথা। উত্তর চব্বিশ পরগণা জেলায় সোদপুর স্টেশন থেকে অনতিদূরে গঙ্গাতীরে পানিহাটি গ্রাম। এখানে শ্রীল রাঘব পণ্ডিত গোস্বামীর বাড়িতে শ্রীনিত্যানন্দ প্রভূ এসেছেন। সেইদিন ছিল জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লা ত্রয়োদশী তিথি। সপ্তগ্রামের জমিদার শ্রী গোবর্ধন মজুমদারের একমাত্র সন্তান রঘুনাথ দাস, নিত্যানন্দ প্রভুকে দর্শন করবার জন্য ও কৃপা দৃষ্টি লাভের জন্য পানিহাটি আসেন। তিনি দেখলেন গঙ্গার তটে এক বটবৃক্ষের তলে বেদীর উপর শ্রীনিত্যানন্দ প্রভু বসে আছেন তিনি কোটি কোটি সূর্যের মতো জ্যোর্তিময়। তাঁকে পরিবেষ্টন করে বহু ভক্ত বসে আছেন। দূর থেকে রঘুনাথ দাস গোস্বামী শ্রীনিত্যানন্দ প্রভুকে দণ্ডবৎ প্রণাম করে পড়ে রইলেন। কোনো ভক্ত শ্রীনিত্যানন্দ প্রভুকে বললেন, রঘুনাথ আপনাকে প্রণতি নিবেদন করছেন। সে কথা শুনে নিত্যানন্দ প্রভু স্নেহ বিগলিতভাবে রঘুনাথ দাস প্রভুকে উদ্দেশ্য করে বললেন, চোরা,দিলি দরশন। আয়,আয়,আজি তোর করিমু দণ্ডন।
★কারণ, মহাপ্রভু হচ্ছেন শ্রীনিত্যানন্দ প্রভুর সম্পত্তি। কিন্তু রঘুনাথ দাস গোস্বামী নিত্যানন্দ প্রভুর অনুমোদন ব্যতীতই শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর সেবা অনুরাগী হয়েছিলেন। শ্রীনিত্যানন্দ প্রভু হচ্ছেন আদি গুরু, তাই পরমেশ্বর ভগবান শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুকে পেতে হলে তাঁর প্রতিনিধি শ্রীনিত্যানন্দ প্রভুর মাধ্যমে পেতে হবে। এখন শ্রীরঘুনাথ দাস গোস্বামী নিত্যানন্দ প্রভুর কাছে গেলেন, তিনি দণ্ড দেবেন বললেন। দণ্ড অন্য কিছু নয়, বরং তার কৃপা, সেই কৃপা কৃষ্ণপ্রাপ্তির উপায় শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুকে পাওয়ার উপায়। শ্রীনিত্যানন্দ প্রভুর কৃপা না হলে আমরা কখনও শ্রীশ্রীরাধাকৃষ্ণকে বা শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুকে পেতে পারি না। যেহেতু শ্রীনিত্যানন্দ প্রভু হচ্ছেন আদি গুরু।
★শ্রীনিত্যানন্দ মহাপ্রভু বলিলেন,- রঘুনাথ তুই এতদিন চোরের মতন পালিয়ে থেকে অবশেষে আজ আমাকে দর্শন দিলি। দাঁড়া আজ তোকে আমি দণ্ড দেব। রঘুনাথকে নিত্যানন্দ প্রভু কাছে ডাকলেও তিনি নিত্যানন্দ প্রভুর কাছে যেতে ইতস্তত করছিলেন। তখন নিত্যানন্দ প্রভু জোর করে তাকে ধরে আনলেন এবং নিত্যানন্দ প্রভু শ্রীচরণপদ্ম তার মস্তকে স্থাপন করে বললেন,-
''নিকটে না আইস,চোরা ভাগ দূরে দূরে।
আজি লাগ পাইয়াছি,দণ্ডিমু তোমার।।
চিড়া দধি ভক্ষণ করাহ মোর গণে।
শুনিয়া আনন্দ হইল রঘুনাথের মনে।।‘’ আর সেই শাস্তিটি হলো,আমার সমস্ত নিজ জনদের আজ তোকে "চিড়া-দধি" খাওয়াতে হবে। সেই কথা শুনে রঘুনাথ দাস অত্যন্ত আনন্দিত হয়ে তৎক্ষণাৎ তার অঙ্গরক্ষক দেরকে পাঠিয়ে চিড়া, দধি, দুধ, সন্দেশ, চিনি ও কলা প্রভৃতি দ্রব্য কিনে আনলেন এবং বিভিন্ন গ্রাম থেকে সেইসব দ্রব্য এনে সাজালেন, চারশোটি গোল হোলনা আনলেন। পাঁচ সাতটি বিশাল বিশাল মাটির পাত্র আনালেন। সেগুলিতে এক ব্রাহ্মণ চিড়া ভিজাতে লাগলেন। দুধ গরম করে এনে তাতে চিড়া ভেজানো হলো। কোনো পাত্রে দধি, চিনি, কলা মেশানো হলো। অন্য পাত্রে ঘন দুধের সাথে কলা, চিনি, ঘি ও সামান্য কর্পূর মিশানো হলো।
এভাবে সাতটি বড় বড় পাত্র এনে নিত্যানন্দ প্রভুর সামনে রাখা হলো। বটবৃক্ষের তলে বেদীর উপর শ্রীনিত্যানন্দ প্রভু বসে আছেন, তাঁর চতুর্দিকে তাঁর নিজজন বড় বড় সমস্ত লোকেরা মণ্ডলী রচনা করে বসে আছেন। চিড়াদধি উৎসবের কথা শুনে যত ব্রাহ্মণ, পুরোহিত, পণ্ডিত এসেছিলেন শ্রীনিত্যানন্দ প্রভু তাদের সবাইকে চাতালের উপর বসালেন। সবাইকে দুটি করে হোলনা দিয়েছিল যার একটিতে দুধ চিড়া, অন্যটিতে দধি চিড়া দেওয়া হয়েছিল। চাতালের তলায় মণ্ডলাকারে অসংখ্য ভক্ত বসেছিল। অনেক অনেক ব্রাহ্মণ চাতালে জায়গা না পেয়ে চাতালের নিচে বসলেন। সেখানে অনেকে স্থান না পেয়ে জলের ধারে বসেছিলেন। সেখানেও অনেকে স্থান না পেয়ে জলে নেমে গিয়ে হোলনাগুলো জলের উপর ভাসিয়ে ধরে রাখার চেষ্টা করলেন।
কুড়িজন পরিবেশনকারী সবাইকে চিড়াদধি দিতে লাগলেন। সবাইকে চিড়াদধি দেওয়া হলেও কেউই ভোজন করছিলেন না। কারণ সেই সমস্ত ভক্তের মনোভিলাষ এই যে, নিত্যানন্দ প্রভু আগে ভোজন শুরু করবেন, তারপর তাঁর নির্দেশক্রমে আমরা ভোজন শুরু করব। ঠিক সেই সময় সেখানে এসে পৌঁছালেন রাঘব পণ্ডিত গোস্বামী। তিনি সেই বিশাল মহোৎসব দেখে অত্যন্ত আনন্দিত হয়ে হাঁসতে লাগলেন। তিনিও নানা রকমের প্রসাদ নিয়ে এসে নিত্যানন্দ প্রভুকে বললেন,-‘’আপনার জন্য আমি গৃহে ভোগ নিবেদন করেছি, আর এখানে উৎসব! এদিকে আমার ঘরে প্রসাদ রয়েছে।‘’ নিত্যানন্দ প্রভু বললেন, তোমার ঘরে আমি রাত্রে প্রসাদ পাবো। আমি জাতিতে গোপ তাই নদীর তীরে এই গোপদের সঙ্গে পুলিন ভোজন করতে আমার খুব আনন্দ হয়। এই দুটি হোলনা নিয়ে তুমি আমাদের সাথে প্রসাদ পাও।
অসংখ্য ভক্তমণ্ডলীর কাছে চিড়াদধি থাকলেও কেউই ভোজন করছিলেন না। নিত্যানন্দ প্রভুর ধ্যানের মাধ্যমে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুকে নিয়ে এলেন। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু এলেন আর নিত্যানন্দ প্রভু দাঁড়িয়ে পড়লেন। প্রত্যেকের চিড়াদধি পর্যবেক্ষণ করতে লাগলেন। প্রতিটি পাত্র থেকে এক এক গ্রাস করে চিড়া তুলে নিয়ে তিনি শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর মুখে দিতে লাগলেন। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুও মৃদু মৃদু হেঁসে এক এক গ্রাস চিড়া তুলে নিয়ে নিত্যানন্দ প্রভুর মুখে দিলেন। এভাবে তাঁরা হাঁসতে হাঁসতে পরস্পর পরস্পরকে খাওয়াতে লাগলেন। এভাবে নিত্যানন্দ প্রভু সব মণ্ডলে বেড়াতে লাগলেন এবং সমস্ত বৈষ্ণবগণ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সেই লীলা দর্শন করতে লাগলেন।
কোন কোন ভাগ্যবান সেই ব্যাপার লক্ষ্য করছিলেন। অনেকেই বুঝতেই পারছিলেন না নিত্যানন্দ প্রভু কি করছেন? কারণ অনেকেই চৈতন্য মহাপ্রভুকেই দেখতে পাচ্ছেন না। তারপর নিত্যানন্দ প্রভু আসনে বসলেন, মহাপ্রভুকে বসালেন। আনন্দে নানা ভাবাবেশে নিত্যানন্দ প্রভু সবাইকে নির্দেশ দিলেন হরিনাম উচ্চারণ করতে করতে তোমরা সকলে ভোজন কর। তখন হরি ধ্বনিতে আকাশ বাতাস পরিপূর্ণ হলো। নিত্যানন্দ প্রভু আগে মুখে গ্রাস তুললেন, তখন অন্যরা ভোজন করতে শুরু করলেন। সেই সময় ভোজনকারী বৈষ্ণবগণের প্রত্যেকের মনে পানিহাটি কিংবা গঙ্গাতটের কথা মনে হলো না, মনে হলো শ্রীবৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ ও বলরামের সাথে তারা সব গোপসখা যমুনার তীরে পুলিনভোজন করছেন।
এদিকে সেখানে মহোৎসব হচ্ছে শুনে দূরের, পাশের সমস্ত গ্রাম থেকে অনেক ভক্ত বহুল পরিমাণে চিড়া, দই, সন্দেশ, প্রভূতি নিয়ে এসে পৌঁছাল। যে যা নিয়ে এল, রঘুনাথ দাস গোস্বামী তাদের সমস্ত মূল্য দিয়ে সেগুলি ক্রয় করলেন এবং তাদেরই সেগুলি খাওয়ালেন। অসংখ্য ভক্ত সেখানে মজা দেখতে আসতে লাগল, তাদেরকেও চিড়া দধি কলা খাওয়ানো হলো। তাঁর কাছে চারটি কুণ্ডীতে অবশেষ প্রসাদটি রঘুনাথ গোস্বামীকে দিয়েছিলেন, বাকী তিনটি কুণ্ডী থেকে অবশেষ প্রসাদ একটু একটু করে নিয়ে এক ব্রাহ্মণ অন্য সমস্ত ভক্তকে দিতে লাগলেন। রঘুনাথ দাস গোস্বামীও প্রভুর দেওয়া অবশেষ প্রসাদ তাঁর ভক্তদের বন্টন করতে লাগলেন। তারপর একটু বিশ্রাম নিয়ে সন্ধ্যা কালে শুরু হলো শ্রীনিত্যানন্দ প্রভুর মহা হরিনাম সংকীর্ত্তন।
ভগবৎ প্রেমে যেন জগত প্লাবিত করছেন। অনেকেই সেখানে নিত্যানন্দ প্রভুর সঙ্গে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুকে নাচতে দেখলেন, আবার অনেকে মহাপ্রভুকে দেখেননি। তাঁরা জানেন, মহাপ্রভু তো জগন্নাথপুরী ধামে রয়েছেন। যাই হোক, সেই চিড়া দধি মহোৎসবে রঘুনাথ দাস গোস্বামী সহ সমস্ত ভক্ত পরম আনন্দে বিহ্বল হলো। সেই চিড়াদধি মহোৎসব স্মৃতি অনুসারে প্রতি বছর জ্যৈষ্ঠ মাসের শুক্লা ত্রয়োদশী তিথিতে এই পানিহাটিতে সেই বটবৃক্ষতলে চিড়াদধি মহোৎসব হয়।
।। হরে কৃষ্ণ ।। গৌর প্রেমানন্দে হরি বোল।।
আগামী ৩১ মে ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ, বুধবার শ্রীশ্রী পাণ্ডবা নির্জলা একাদশী।
সবাই কৃপা করে একাদশী ব্রত পালন করবেন।
- সত্যিই যদি সন্তানকে বড় করে নিজের কাছে রাখতে চান তাহলে জড়জাগতীক শিক্ষার আগে সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষা দিন।-❤️🚩
hare Krishna 🙏
আগামী ১৫মে, সোমবার মহাপবিত্র “অপরা একাদশী ব্রত”।
আপনি নিজে পালন করুন ও অন্যকে পালনে উৎসাহিত করুন।
হরেকৃষ্ণ।
👇শ্রীশ্রী নৃসিংহদেবের শুভ আবির্ভাব তিথি মহোৎসব ২০২৩খ্রি:👇
🙏 আপনারা অবশ্যই উপবাস থাকবেন ও অভিষেকে অংশগ্রহণ করবেন।
✍️তারিখ: ৪ মে, বৃহস্পতিবার, সন্ধ্যা পর্যন্ত নির্জলা উপবাস
মহাপবিত্র শ্রীমোহিনী একাদশী ব্রত পালন করুন ও অন্যকে উৎসাহিত করুন।
👇শ্রীশ্রী নৃসিংহদেবের শুভ আবির্ভাব তিথি মহোৎসব ২০২৩খ্রি:👇
🙏 আপনারা অবশ্যই উপবাস থাকবেন ও নিকটস্থ ইসকন মন্দিরে অভিষেকে অংশগ্রহণ করবেন।
✍️তারিখ: ৪ মে, বৃহস্পতিবার, সন্ধ্যা পর্যন্ত নির্জলা উপবাস
শ্রী শ্রী রাধা-মদনমোহন ও গৌরসুন্দরের শ্রীবিগ্রহ ৭ম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী ২০২৩।
আয়োজনে:- শ্রী শ্রী রাধা-মদনমোহন জিউ মন্দির তারাগঞ্জ, রংপুর।
মহাপূন্য প্রদায়ী অক্ষয় তৃতীয়াকে “অক্ষয়” করে রাখতে, এদিন আপনি যা করবেন👇
জয় নৃসিংহ শ্রী নৃসিংহ।
জয় জয় জয় শ্রীনৃসিংহ ॥
উগ্রং বীরং মহাবিষ্ণুং
জ্বলন্তং সর্বতোমুখম্।
নৃসিংহং ভীষণং ভদ্রং
মৃত্যোর্মৃত্যুং নমাম্যহম্ ॥
বরুথিনী একাদশীর মাহাত্ম্য:
যুধিষ্ঠির মহারাজ শ্রীকৃষ্ণকে বৈশাখ মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশীর নাম ও মহিমা সম্বন্ধে জিজ্ঞাসা করলে শ্রীকৃষ্ণ বললেন, ইহলোক ও পরলোকে বৈশাখ মাসের কৃষ্ণপক্ষীয়া একাদশী ‘বরুথিনী’ নামে বিখ্যাত। এই ব্রত পালনে সর্বদা সুখ লাভ হয় এবং পাপক্ষয় ও সৌভাগ্য প্রাপ্তি ঘটে। দুর্ভাগা স্ত্রীলোক এই ব্রত পালনে সর্বসৌভাগ্য লাভ করে থাকে। ভক্তি ও মুক্তি প্রদানকারী এই ব্রত সর্বপাপহরণ এবং গর্ভবাস যন্ত্রণা বিনাশ করে। এই ব্রত প্রভাবে মান্ধাতা, ধুন্ধুমার আদি রাজারা দিব্যধাম লাভ করেছেন। এমনকি মহাদেব শিবও এই ব্রত পালন করেছিলেন। দশ হাজার বৎসর তপস্যার ফল কেবলমাত্র এক বরুথিনী ব্রত পালনে লাভ হয়। যে শ্রদ্ধাবান ব্যক্তি এই ব্রত পালন করেন তিনি ইহলোক ও পরলোকে সমস্ত প্রকার আকাঙ্ক্ষিত ফল লাভ করেন।
অশ্বদান, গজদান, ভূমিদান, তিলদান, স্বর্ণদান, অন্নদান, কন্যাদান, গোদানকে অন্নদান, গোদান এই সমস্ত প্রকার দান থেকে বিদ্যাদান শ্রেষ্ঠ। কিন্তু এই বরুথিনী ব্রত পালনে সেই বিদ্যাদানের সমান ফল লাভ হয়ে থাকে।
পাপমতি যে সব মানুষ কন্যার উপার্জিত অর্থে জীবনধারণ করে, পুণ্যক্ষয়ে তাদের নরকযাতনা ভোগ করতে হয়। তাই কখনও কন্যার উপার্জিত অর্থ গ্রহণ করা উচিত নয়। যে ব্যক্তি বিভিন্ন স্বর্ণালঙ্কার সহ কন্যাদান করেন তাঁর পুণ্যের হিসাব স্বয়ং চিত্রগুপ্তও করতে অসমর্থ হন। কিন্তু ‘বরুথিনী’ ব্রত পালনকারী কন্যাদান থেকেও বেশি ফল লাভ করে।
ব্রতকারী ব্যক্তি দশমীর দিনে কাঁসার পাত্রে ভোজন, মাংস, মসুর, ছোলা, শাক, মধু, অন্যের প্রদত্ত অন্নগ্রহণ, দুইবার আহার ও মৈথুন পরিত্যাগ করবে। দ্যূতক্রীড়া, নেশাজাতীয় দ্রব্য, দিবানিদ্রা, পরনিন্দা-পরচর্চা, প্রতারণা, চুরি, হিংসা, মৈথুন, ক্রোধ ও মিথ্যাবাক্য একাদশীর দিনে বর্জনীয়। কাঁসার পাত্রে ভোজন, মাংস, মসুর, মধু, তেল, মিথ্যাভাষণ, ব্যায়াম, দুইবার আহার ও মৈথুন এসব দ্বাদশীর দিনে পরিত্যাজ্য।
এই বিধি অনুসারে বরুথিনী ব্রত পালনে সকল প্রকার পাপের বিনাশ এবং অক্ষয় গতি লাভ হয়। যিনি হরিবাসরে রাত্রিজাগরণ করে ভগবান জনার্দনের পূজা করেন, তিনি সর্বপাপ মুক্ত হয়ে পরমগতি লাভ করেন। তাই সূর্যপুত্র যমরাজের যাতনা থেকে পরিত্রাণের জন্য পরম যত্নে এই একাদশী ব্রত পালন করা কর্তব্য। বরুথিনী একাদশীর ব্রতকথা শ্রদ্ধাভরে পাঠ বা শ্রবণ করলে সহস্র গোদানের ফল লাভ হয় এবং সর্বপাপ থেকে মুক্ত হয়ে বিষ্ণুলোকে গতি হয়।