দ্বীনের পথে কুরআন-হাদীসের আলোকে

দ্বীনের পথে কুরআন-হাদীসের আলোকে

রাসুল (সাঃ) বলেছেন, প্রচার করো, যদি একটি মাত্র আয়াতও হয়�

আলহামদুলিল্লাহ ! ইসলামের সঠিক তথ্য সবার মাঝে ছড়িয়ে দেয়াই, জনপ্রিয় এই পেজটির মূল উদ্দেশ্য।

'আপনিও হোন ইসলামের প্রচারক'
মানবতার মুক্তির লক্ষ্যে ইসলামের আলো ছড়িয়ে দিন।

কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবে না
[সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪]

16/05/2024

🔴পাক্কা মুশরেক গিয়াস উদ্দিন তাহেরিকে উচিৎ জবাব দিলেন:
🎙️উস্তাদ আজমল হোসাইন মাদানি হাফিযাহুল্লাহ

15/05/2024

সন্তান বড় হলে, সন্তানের বিছানা আলাদা করা অবশ্য কর্তব্য! কেন করবেন?

রিবা (ছদ্ম নাম)। বয়স সাত। ওয়ানে পড়ে। ধবধবে ফর্সা। মাথা ভর্তি কোকড়ানো চুল। টলটলে চোখ। মনে হয় একটু ছুঁয়ে দিলেই ব্যস। চোখের মায়া আবীর হয়ে হাতে লেগে যাবে। প্রজাপতির রঙের মতো।

ওর মায়ের সাথে সেদিন চেম্বারে এসেছে। প্রসাবে জ্বালা পোড়া। তল পেটে ব্যথা। মায়ের ভাষ্য, ম্যাডাম, পিসাব করনের সময় খালি কান্দে আর লাফায়। পেট চেপে খিচ্চা বইসা থাকে।

পরীক্ষা করে দেখতে চাইলে, প্যান্ট খুলে রিবার মা যা দেখালো তার জন্য প্রস্তুত ছিলাম না, বললেই ভালো। সরাসরি জিজ্ঞেস করলে মা বলবে, কী যে কন, ছোট মানুষ। মনেমনে দু-একটা গালিও যে দিবে না, বলা যায় না।

ডাক্তারদের এ এক জীবন! কত কী যে দেখতে হয়! ঘুরিয়ে প্যচিয়ে জিজ্ঞেস করি, বাড়িতে কে কে আছে?

ওর বাপ আর আমি।

আর কেউ না?

না ম্যাডাম। তবে পাশেই ভাসুরের বাসা।

ও কার সাথে খেলাধুলা করে?

আমার ভাসুরের পোলার সাথে। বয়স এগারো বারো। সিক্সে পড়ে। সারাদিন দৌড়াদৌড়ি ঝাঁপাঝাপি। ভিডিও গেমস, ইউটিউব নাকি কি কয় এসব নিয়া থাকে। সারা বাড়িতে আর বাচ্চাকাচ্চা নাই তো। অরা অরাই খেলে। আমিও তেমন খেয়াল করি না। আহারে বাচ্চারা!

বাড়িতেই তো থাকে সারাদিন। হয় দাদির ঘর, নয় চাচির ঘর। আসলে মাইয়া আমার এই একটাই। মিছা কইয়া লাভ নাই। চাচা চাচিও আদর করে। খুব। মিতুল (ছদ্ম নাম) তো বইন বলতে অজ্ঞান।

কখনো জিজ্ঞেস করেছেন, কি খেলা খেলে?

না ম্যডাম। কী খেলব আর, চোর পলান্তি। পুতুল খেলা। এই সব আরকি। জিগানোর কী আছে?

আছে, এখন জিজ্ঞেস করেন তো।

রিবা, মিতুল ভাইয়ার সাথে কি খেলাধুলা করো বলো তো মা?

বউ জামাই খেলি।

বউ জামাই খেলা কী করে খেলো?

মেয়ে যা বর্ণনা দিলো, শুনে মা মুর্ছা যান আরকি! ছোট বাচ্চার আর দোষ কি? বাচ্চারা অনুকরণ প্রিয়। এটা সবাই জানে। বড়রা অবিবেচকের মতো কাজ করবে আর বাচ্চাকাচ্চা দেখে শুনে চুপ করে বসে থাকবে, এটা ভাবার কারণ নেই। আসলেই নেই।

ওহ, ভালো কথা। রিবা, মিতুল কাকে অনুসরণ করল? বাবা মাকে? টিভি সিনেমাকে? নাকি ইউটিউবকে? কাউকে না কাউকে তো অবশ্যই।

রিবা, এ ধরনের খেলা তো ভালো না মা। এটা পঁচা কাজ। কথা শেষ করতে দেয়না পাকনি বুড়িটা। টাসটাস করে মুখের ওপর বলে ওঠে, বাবা-মা খেলে যে! তাহলে বাবা-মা কি পঁচা?

কী উত্তর দেবে রিবার মা? উত্তর দেয়ার কি মুখ থাকে? মহিলা হতবিহ্বল হয়ে পড়ে। যেনো পায়ের তলায় কোন মাটি নেই। বেচারা!

রিবার মাকে প্রশ্ন করি, আপনারা কি স্বামী-স্ত্রী রিবাকে নিয়ে এক বিছানায় ঘুমান?

হ ম্যাডাম। ছোট বাচ্চা। ওর বাপে কয়, কী বুঝব? ও ঘুমালেই তো কাদা। লোকটার খাই বেশি। বাচ্চা ঘুমালো কি ঘুমালো না। তর সয় না। আমি আগেই কইছিলাম। হাহাকার থই থই কান্না হয়ে ঝরে পড়ে। আহারে!

দেখুন, আমরা বাচ্চাদের যতটা নির্বোধ মনে করি, আসলে ততটা নির্বোধ ওরা না। বরং একটু বেশিই বুদ্ধি রাখে ওরা। শুধু আমরা বড়রাই এ কথাটা মানতে চাই না। আমাদের দিয়ে ওদের হিসেব করি। কিন্তু ওরা হিসেবে বাবা-মা'দের চেয়ে পাকা। যে কাজটা বাবা মা করে, সে কাজটা খারাপ কিভাবে হয়? কাজেই বাবা-মা, বউ-জামাই খেলা তারা খেলতেই পারে। তাদের তো দোষ দেয়া যায় না। একটু ভেবে বলুন তো, যায় কি?

আসলে একটা নির্দিষ্ট সময় পর সন্তানদের বিছানা আলাদা হওয়াই বাঞ্চনীয়। সবার পক্ষে হয়তো, সন্তানদের জন্য আলাদা আলাদা রুম দেয়া সম্ভব না। সে ক্ষেত্রে অন্তত বিছানাটা আলাদা করা যায়। বাবা-মায়ের বিছানাটা কাপড় দিয়ে পার্টিশন দেয়া যায়। মশারির মতো। আর নিতান্তই যদি সম্ভব না হয়, শিশু সম্বলিত সংসারে দম্পতিদের অবশ্যই সর্বোত্তম সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। কী সেটা আমি জানিনা। আর সবার ঘরে নিশ্চয় একরকম ফর্মূলা চলবে না। নিজের ঘর অনুযায়ী নিজেদের ফর্মূলা তৈরী করুন প্রিয় অভিভাবক।

আমরা বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে ঘুরতে যাই। মজার মজার খাবার খাই। দামী দামী গেজেট দেই। নতুন নতুন ট্রেন্ডি জামা কাপড় পরাই। কিন্তু সবচেয়ে দামী যে লেসন সেটাই দেই না। হেলথ এডুকেশন, সেক্স এডুকেশন। কত্ত জরুরি যে এসব জীবনমুখী শিক্ষা। কী আজব আমরা! কবে বুঝব এর গুরুত্ব? আর কত ভুল বার্তা দেহ মনে নিয়ে বড় হবে আমাদের শিশুরা?

বাচ্চাদের কি কি করা উচিৎ আর কি কি না সেটা বলুন। ছোটদের কাজ, বড়দের কাজ কি কি জানান। ধীরে ধীরে নিজের শরীর সম্বন্ধে শিক্ষা দিন। গুড টাচ, ব্যাড টাচ সম্পর্কে জানান। নারী-পুরুষের যৌন জীবন সম্বন্ধে শিক্ষা দিন। ধীরে ধীরে, সহজ করে। কাজের লোক কিংবা ক্যানভাসারের কাছে ভুল জানার চেয়ে, বাবা মার কাছে জানা ভালো নয় কি?

প্রিয় অভিভাবকগন, সন্তানের কথা বিশ্বাস করুন। সন্তানের বন্ধু হোন। ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করুন এবং ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলতে উদ্বুদ্ধ করুন। মনে রাখা ভালো, লালন পালন করাই কিন্তু শেষ কথা না। সন্তানকে সুরক্ষিত রাখাও বাবা-মার পবিত্র দায়িত্ব।

আসুন ঠিকঠাক দায়িত্ব পালন করি। ওদের জীবন্টাকে একটু সহজ করে দেই।

28/03/2024

প্রশ্ন:রমজান মাসে ওমরা করা হজের সমপরিমাণ নেকি হয়।আসলে এর উদ্দেশ্য কি? বিস্তারিত ব্যাখ্যা চাই।
▬▬▬▬▬▬▬▪️🌻▪️▬▬▬▬▬▬▬
উত্তর:সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ তাআলার জন্য এবং মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উপর রহমত ও শান্তি বর্ষিত হোক। ইমাম বুখারী ও মুসলিম ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন,রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একজন আনসারী মহিলাকে বললেন:-আমাদের সাথে হজ করতে কিসে তোমাকে বাধা দিচ্ছে? মহিলা বলল, আমাদের একটি পানি বহনকারী উট ছিল। কিন্তু তাতে অমুকের পিতা ও তার পুত্র (অর্থাৎ মহিলার স্বামী ও ছেলে) আরোহণ করে চলে গেছেন। আর আমাদের জন্য রেখে গেছেন পানি বহনকারী আরেকটি উট, যার দ্বারা আমরা পানি বহন করে থাকি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ আচ্ছা, রমাযান এলে তখন ‘উমরাহ করে নিও। কেননা, রমযানের একটি ‘উমরাহ একটি হাজ্জের সমতুল্য। আর মুসলিমের বর্ণনায় রয়েছে,(আমার সাথে হজ করার সমতুল্য )।(সহীহ বুখারী/১৭৮২ ও মুসলিম হা/১২৫৬)।
অত্র হাদীসে রমাযান মাসে ‘উমরা পালন করতে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে।আর হাদিসে বর্ণিত ফযীলত কে অর্জন করতে পারে সে বিষয়ে আলেমদের মধ্যে থেকে তিনটি মতামত পাওয়া যায়।
▪️প্রথম:-এই হাদিসটি মুহাম্মাদ (ﷺ) যে মহিলাকে বলেছিলেন তার সাথে খাস বা সীমাবদ্ধ। আর এই মতটিকে পছন্দ করেছেন বিখ্যাত তা’বিয়ী সাইদ বিন জুবায়ের। যেমনটি ইবনে হাজার তার “ফাতহুল বারী-৩/৬০৫” গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। আর এই মতের পক্ষে যে সকল দলিল উপস্থাপন করা হয় তার মধ্যে উম্মে মা'ক্বিল এর হাদিসে এসেছে, তিনি বলেন:-হজ্জ তো হজ্জ, আর উমরা তো উমরা-ই। কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এরূপ বলেন। আর আমি অবগত নই যে, এটা কি আমার জন্য খাস, নাকি গোটা উম্মতের জন্যও এরূপ নির্দেশ।(আবু দাউদ/১৯৮৯), ইমাম হাকিম ও যাহাবী বলেন: মুসলিমের শর্তে সহীহ। অপরদিকে ইমাম আলবানী এটিকে তার “যয়ীফ আবি দাউদ” গ্রন্থে দুর্বল বলেছেন।(আবু দাউদ হা/১৯৮৯)
▪️দ্বিতীয়:-এই ফজিলত অর্জিত হবে ঐ সকল লোকদের যারা হজের নিয়ত করবে অতঃপর তা সম্পাদন করা হতে অপারগ হবে। অতঃপর রমজান মাসে উমরার উদ্দেশ্যে বের হবে। ফলে মুহাম্মদ (ﷺ)-এর সাথে পরিপূর্ণ হজের প্রতিদান ওমরা আদায়ের সাথে হজের নিয়ত একত্রিত হওয়ার কারণে সে পেয়ে গেল।
হাফিয যাইনুদ্দীন আবুল ফারজ ‘আব্দুর রহমান বিন শিহাব—যিনি ইবনু রজব আল-হাম্বালী আল-বাগদাদী নামে প্রসিদ্ধ—রাহিমাহুল্লাহ [জন্ম: ৭৩৬ হি.মৃত:৭৯৫ হি:] বলেছেন,

" واعلم أن مَن عجز عن عملِ خيرٍ وتأسف عليه وتمنى حصوله كان شريكا لفاعله في الأجر... – وذكر أمثلة لذلك منها - : وفات بعضَ النساءِ الحجُّ مع النبي صلى الله عليه وسلم ، فلما قدم سألته عما يجزئ من تلك الحجة ، قال : ( اعتمري في رمضان ، فإن عمرة في رمضان تعدل حجة أو حجة معي )

জেনে রাখুন! কোন ব্যক্তি যখন কল্যাণমূলক কাজ হতে অপারগ হবে। এবং তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করবে আর তা পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা করবে। তাহলে সে প্রতিদান পাওয়ার ক্ষেত্রে ঐ কর্ম সম্পাদনকারী ব্যক্তির অংশীদার হবে…..। এর দৃষ্টান্ত অনেক রয়েছে। তার মধ্যে হতে:-মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে কতিপয় মহিলার হজ্জ ছুটে গিয়েছিল। অতঃপর যখন মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আগমন করলেন তখন তারা তাকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলেন। কী কাজ করলে এ হজ্জের সমপরিমাণ হবে বা যথেষ্ট হবে? তিনি বললেন:-রমাযান মাসে উমরা আদায় করো।কারণ রমাজান মাসে উমরা আদায় করা হজ্জের অথবা আমার সাথে হজ্জের সমপরিমাণ নেকি"।(লাত্বায়িফুল মা'আরেফ ইবনু রজব পৃষ্ঠা:২৪৯)।অনুরূপ কথা শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া তার “মাজমু'ল ফাতওয়া”গ্রন্থে,ইমাম ইবনু কাসির তার তাফসির গ্রন্থে বর্ণনা করেছেন। (দেখুন তাফসিরে ইবনে কাসীর খন্ড:১,পৃষ্ঠা:৫৩১“মাজমু'ল ফাতওয়া খন্ড:২৬, পৃষ্ঠা:২৯৩,২৯৪)।
▪️তৃতীয়:-চার মাযহাবের আলেমগনসহ অন্যান্যদের মধ্য হতে আহলুল ইলম যেদিকে মত দিয়েছেন তা হলো:-এই হাদিসে বর্ণিত ফজিলত সাধারণ অর্থে রমজান মাসে ওমরাহকারী প্রত্যেকের জন্য প্রযোজ্য অর্থাৎ রমজান মাসে ওমরা পালনকারী সকল মুসলিম নারী পুরুষই এর অন্তর্ভুক্ত। সুতরাং রমজান মাসে ওমরা পালন করা হজের সমপরিমাণ নেকি। আর এটি সকল মানুষের ওপর প্রযোজ্য। কোন ব্যক্তি বা অবস্থার সাথে সীমাবদ্ধ নয়। দেখুন:(রদ্দুল মুহতার:-খন্ড:২, পৃষ্ঠা:৪৭৩,মাওআয়িবুল জালিল:খন্ড:৩, পৃষ্ঠা:২৯,নববী আল-মাজমু'উ:খন্ড:৭,পৃষ্ঠা:১৩৮,ইবনু কুদামাহ,আল-মুগনী: খন্ড:৩,পৃষ্ঠা:৯১,আল-
মাওসুআতুল ফিক্বহিয়্যাহ: খন্ড:২,পৃষ্ঠা:১৪৪)।
উপরোক্ত তিনটি মতামতের মধ্য হতে সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য মত হলো শেষের অর্থাৎ তৃতীয় মতটি (আল্লাহু আলাম)। আর তা হল যারা রমজান মাসে ওমরা করবে তাদের সকলের জন্য এ ফজিলত। এর পক্ষে বেশ কিছু প্রমাণ রয়েছে: যেমন-

(১)-হাদীসটি সাহাবীদের একটি বড় দল হতে বর্ণিত।
ইমাম তিরমিজি বলেন:-এই অধ্যায়ে ইবনে আব্বাস,
জাবির,আবু হুরায়রা,আনাস ও ওয়াহাব বিন খুম্বাস হতে বর্ণিত হয়েছে। তাদের একাধিক বর্ণনা রয়েছে যা প্রশ্নকারী মহিলার ঘটনাকে উল্লেখ করা হয়নি।
(২)-যুগ যুগ ধরে মানুষদের আমল। সাহাবী,তাবিয়ী, আলেমগণ ও সৎলোকদের মধ্যে হতে সকল মানুষ যারা সর্বদা রমজানে উমরা পালনের জন্য আগ্রহী ছিল যাতে তারা এই সওয়াব অর্জন করতে পারে।
⚫এখানে আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বাকি থাকে।আর তা হচ্ছে রমজান মাসে ওমরা পালন করা হজের সমপরিমাণ নেকি হয় একথা সঠিক কিন্তু তার মানে এই নয় যে,কোন ব্যক্তি রমজান মাসে ওমরা পালন করলে তার জন্য ফরজ হজ্জ আদায়ের জন্য যথেষ্ট হবে এবং তিনি আল্লাহর ফরজ হজ্জ পালনে যিম্মাদারি থেকে মুক্ত হবেন।বরং যে ব্যক্তির উপরে হজ্ব ফরজ হয়েছে তার জন্য আবশ্যক হচ্ছে অনতিবিলম্বে হজ্জ আদায় করা। কেননা প্রত্যেকটি ফরজ আমল অনতিবিলম্বে আদায় করা বাধ্যতামূলক,আল্লাহ তাআলা বলেন: “এবং সামর্থ্যবান মানুষের উপর আল্লাহর জন্য বায়তুল্লাহর হজ্জ করা ফরয। আর যে ব্যক্তি কুফরী করে, তবে আল্লাহ তো নিশ্চয় সৃষ্টিকুল থেকে অমুখাপেক্ষী।”[সূরা আলে ইমরান, ৩:৯৭] নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন: “আল্লাহ তাআলা তোমাদের উপর হজ্জ ফরজ করেছেন। সুতরাং তোমরা হজ্জ আদায় করো।” হজ্জ ফরজ হওয়ার ব্যাপারে মুসলমানদের ইজমা (ঐক্যমত) সংঘটিত হয়েছে।
বিগত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফাক্বীহ, মুহাদ্দিস, মুফাসসির ও উসূলবিদ, আশ-শাইখুল ‘আল্লামাহ, ইমাম মুহাম্মাদ বিন সালিহ আল-‘উসাইমীন (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২১ হি./২০০১ খ্রি.]-কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল: হজ্জ পালন কি অবিলম্বে ফরয; নাকি বিলম্বে?

জবাবে তিনি বলেন:
"الصحيح أنه واجب على الفور، وأنه لا يجوز للإنسان الذي استطاع أن يحج بيت الله الحرام أن يؤخره، وهكذا جميع الواجبات الشرعية، إذا لم تُقيد بزمن أو سبب، فإنها واجبة على الفور "
বিশুদ্ধ মতানুযায়ী হজ্জ অবিলম্বে ফরয। সামর্থ্যবান ব্যক্তির জন্য বায়তুল্লাহর হজ্জ পালনে বিলম্ব করা নাজায়েয। অনুরূপ বিধান শরিয়তের সকল ফরয আমলের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যদি কোন আমল বিশেষ কোন কাল বা কারণের সাথে সম্পৃক্ত না হয় তাহলে সেটা অবিলম্বে আদায় করা ফরয।(উসাইমীন,মাজমূঊ ফাতাওয়া ওয়া রাসাইল,খণ্ড,১৩ পৃষ্ঠা:২১)
সুতরাং "রমজান মাসে ওমরা করা হজ্জের সমতুল্য" এই হাদিস দ্বারা যা বোঝানো হয়েছে তা হল, তারা সওয়াবের দিক থেকে সমান,দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে নয়। তা সত্ত্বেও,রমজানে উমরাহর সওয়াব এবং হজের সওয়াবের মধ্যে সমতা বলতে যা বোঝায় তা পরিমাণের দিক থেকে সমতা, প্রকারের দিক থেকে নয়।নিঃসন্দেহে কর্মের দিক দিয়ে ওমরা পালন করার থেকে হজ্জ পালন করা অধিক শ্রেষ্ঠ। ফলে যে ব্যক্তি রমজান মাসে ওমরা পালন করবে,সে হজের সমপরিমাণ নেকি পেলেও হজের আমল যে বিশেষ ফজিলত ও মর্যাদা নিয়ে আসে যা উমরার মধ্যে নেই। তা হলো আরাফার ময়দানে দোয়া করা,যামারায় পাথর নিক্ষেপ করা,কোরবানি করা ইত্যাদি। ফলে এ দুটি যদিও সংখ্যার দিক থেকে নেকির ক্ষেত্রে সমান। কিন্তু পদ্ধতি ও প্রকারের ক্ষেত্রে সমান নয় বরং ভিন্নতা রয়েছে।কেননা বস্ত্তকে কোন বস্ত্তর সাথে তুলনা করার অর্থ এ নয় যে, এ বস্ত্তটি সর্বাংশে তুল্য বস্ত্তর সমান বরং এক বস্ত্তর সাথে অন্য বস্ত্তর কোন দিক দিয়ে মিল থাকলেই তাকে ঐ বস্ত্তর সাথে তুলনা করা যায়। যদিও সব দিক দিয়ে তার সমতুল্য নয়।আর এটি ইবনে তাইমিয়ার দিক নির্দেশনা যখন তিনি একটি হাদিস সম্পর্কে হাদিসের মধ্যে উল্লেখ রয়েছে যে সুরাতুল ইখলাস একবার পাঠ করা কুরআনের এক তৃতীয়াংশ সমপরিমাণ। শাইখুল ইসলামের ব্যাখ্যাটি বুঝতে হলে একটি বিষয় বুঝতে হবে। আরবীতে জাযা (جزاء) এবং ইহযা (اجزاء) শব্দ দু’টির মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে। ‘জাযা’ বলা হয় আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে কোনো কাজের সওয়াব বা প্রতিদানকে আর ইজযা’ বলা হয় কোনো কাজ অন্য কাজ থেকে অমুখাপেক্ষি করে দেয়া এবং অন্য কাজের জন্য যথেষ্ট হয়ে যাওয়া। শেষোক্ত ব্যাখ্যা অনুযায়ী (অর্থাৎ সূরা ইখলাস সওয়াবের ক্ষেত্রে কোরআনের এক তৃতীয়াংশের সমান) উক্ত হাদীসে সূরা ইখলাস এর জাযা বা সওয়াব কোরআনের এক- তৃতীয়াংশের সমান বলা হয়েছে, একথা বলা হয় নি সূরা ইখলাস কোরআনের এক-তৃতীয়াংশ পড়া থেকে অমুখাপেক্ষি করে দেবে বা এক-তৃতীয়াংশের জন্য যথেষ্ট হয়ে যাবে। বিষয়টি একটি উদাহরণ দিয়ে বুঝা যেতে পারে। কেউ যদি হারাম শরীফে এক নামায পড়ে তাহলে এক লক্ষ নামাযের সওয়াব পাবে তাই বলে কেউ কি এমন মনে করবে যে, যেহেতু এক লক্ষ নামাযের সওয়াব পেয়েছি সুতরাং দশ বছর নামায না পড়লেও চলবে!! কেউ কি এমন মনে করবে? কখনো নয়। তেমনিভাবে সূরা ইখলাস এবং কোরআনের এক-তৃতীয়াংশের বিষয়টি।(আরো বিস্তারিত জানি মাজমূউল ফাতাওয়া, ইবনে তাইমিয়া: ১৭/৭৪-৭৫)
ইসহাক বিন রাহবিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন:- এই হাদিসটি, অর্থাৎ, “রমজানে ওমরাহ হজের সমতুল্য”, এর অর্থ রাসূল (ﷺ) থেকে যা বর্ণিত হয়েছে তার অনুরূপ। যেমন তিনি বলেন যে ব্যক্তি সুরাতুল ইখলাস একবার পাঠ করল, সে কুরআনের এক তৃতীয়াংশ পাঠ করল।(সুনানুন তিরমিজি:২/২৬৮)।(মাসায়িলুল ইমাম আহমদ বিন হাম্বাল রিওয়ায়াতু আবি ইয়া'ক্বুব আল-কু-সাজি) গ্রন্থে এসেছে:-আমি বললাম:-যে ব্যক্তি বলে (রমজান মাসে ওমরা পালন করা ও হজের সমপরিমাণ নেকি), সে ব্যক্তি কি নির্ভরযোগ্য? তিনি বললেন:-অবশ্য, তিনি সিক্বাহ বা নির্ভরযোগ্য। ইসহাক বলেন:- সে নির্ভরযোগ্য। যেমন তিনি বলেন:-এবং এর অর্থ:-যে তার জন্য হজের সমপরিমাণ নেকি লিপিবদ্ধ করা। হজের সাথে তুলনা বা মিলিয়ে দেওয়া কখনোই উদ্দেশ্য নয়।.
ইবনুল জাওযী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেনঃ অত্র হাদীস প্রমাণ করে যে, সময়ের মর্যাদার কারণে কার্যের মর্যাদা বৃদ্ধি পায় যেমন মনোযোগ সহকারে ও ইখলাসের সাথে ‘আমল করার কারণে কাজের মর্যাদা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।(মিশকাতুল মাসাবিহ হা/২৫০৯ এর ব্যাখ্যা দৃষ্টব্য

হিজরী ৮ম শতাব্দীর মুজাদ্দিদ শাইখুল ইসলাম ইমাম তাক্বিউদ্দীন আবুল ‘আব্বাস আহমাদ বিন ‘আব্দুল হালীম বিন তাইমিয়্যাহ আল-হার্রানী আন-নুমাইরি, (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ৭২৮ হি.] বলেছেন:

" معلوم أن مراده : أن عمرتك فى رمضان تعدل حجة معي ، فإنها كانت قد أرادت الحج معه ، فتعذر ذلك عليها ، فأخبرها بما يقوم مقام ذلك ، وهكذا من كان بمنزلتها من الصحابة ، ولا يقول عاقل ما يظنه بعض الجهال أن عمرة الواحد منا من الميقات أو من مكة تعدل حجة معه ، فإنه من المعلوم بالاضطرار أن الحج التام أفضل من عمرة رمضان ، والواحد منا لو حج الحج المفروض لم يكن كالحج معه ، فكيف بعمرة !! وغاية ما يحصله الحديث أن تكون عمرة أحدنا في رمضان من الميقات بمنزلة حجة "

এটা সর্বজনবিদিত যে,"রমজানে আপনার ওমরাহ করা আমার সাথে হজ্জের সমতুল্য",কারণ তিনি রাসূল (ﷺ) এর সাথে হজ করার ইচ্ছা করেছিলেন।কিন্তু কারণবশত আদায় করতে সক্ষম হন নি। ফলে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে তার স্থলাভিষিক্ত আমলের কথা জানিয়ে দিলেন। সাহাবীদের মধ্যে যারা তার মতো একই অবস্থানে ছিলেন তাদের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।আর কোন বিবেক সম্পন্ন ব্যক্তি কখনোই বলবে না যেমনটি কতিপয় মূর্খ ব্যক্তি ধারণা করে থাকে যে আমাদের একজনের উমরা মিকাত থেকে অথবা মক্কা থেকে তার সাথে হজ্জ করার সমপরিমাণ। কারণ এটি নিশ্চিতভাবে জ্ঞাত বিষয় যে পূর্ণ হজ রমজানে ওমরা পালন করার চেয়ে অধিক শ্রেষ্ঠ। আর আমাদের একজন যদি ফরজ হজ পালন করে, তাহলে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে হজ করার মত হবে না। তাহলে ওমরাকে তার সাথে তুলনা করা কিভাবে সম্ভব!!আর হাদিসে যা পাওয়া যায় তার মূল উদ্দেশ্য হলো রমজান মাসে আমাদের একজনের নির্ধারিত সময়ে ওমরা করা (নেকির দিক থেকে) হজের সমতুল্য।(ইবনু তাইমিয়্যাহ মাজমুউ ফাতাওয়া,খন্ড: ২৬,পৃষ্ঠা:-২৯৩/২৯৪)
আরো বিস্তারিত জানতে দেখুন ইসলাম সওয়াল-জবাব ফাতাওয়া নং-১০৪৯২৬।(আল্লাহই সবচেয়ে জ্ঞানী)
________________________
আপনাদের দ্বীনি ভাই
জুয়েল মাহমুদ সালাফি

15/03/2024

সুন্নত পালনার্থে খাদ্যদ্রব্য দিয়ে ফিতরা দিন; টাকা দিয়ে নয়
▬▬▬▬◆◈◆ ▬▬▬▬
প্রশ্ন: যাকাতুল ফিতর (ফিতরা) হিসেবে টাকা দেওয়া সুন্নত না কি খাদ্যদ্রব্য?
উত্তর:
হাদিসে ফিতরা হিসেবে খাদ্যদ্রব্য প্রদানের কথাই বর্ণিত হয়েছে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর যুগে দিনার-দিরহামের প্রচলন ছিল কিন্তু তারা কখনো খাদ্যদ্রব্য ছাড়া দিনার-দিরহাম বা অন্য কিছু দ্বারা ফিতরা প্রদান করেছেন বলে কোন তথ্য পাওয়া যায় না।

কী কী জিনিস দ্বারা এবং কত পরিমাণ ফিতরা দেওয়া সুন্নত?

এর উত্তর সহীহ হাদিসে স্পষ্ট বর্ণিত হয়েছে যার, ফল কথা হল: খেজুর, যব, কিশমিশ, পনীর কিংবা প্রধান খাদ্য দ্রব্য দ্বারা ফিতরা দেওয়া সুন্নত, মূল্য দ্বারা নয়। আর এক জন ব্যক্তিকে এক সা’ ফিতরা দিতে হবে, যার পরিমাণ সাধারণ মানুষের চার পূর্ণ অঞ্জলি সমান। [ফাতাওয়া মাসায়েল, মাওলানা আব্দুল্লাহেল কাফী, পৃষ্ঠা ১৭২-১৭৩] কেজির ওজনে তা আড়াই কিলোর কম নয়।

▪ ইবনে উমর রা. হতে বর্ণিত হয়েছে, তিনি বলেন,
فَرَضَ رَسولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عليه وسلَّمَ زَكَاةَ الفِطْرِ صَاعًا مِن تَمْرٍ، أوْ صَاعًا مِن شَعِيرٍ علَى العَبْدِ والحُرِّ، والذَّكَرِ والأُنْثَى، والصَّغِيرِ والكَبِيرِ مِنَ المُسْلِمِينَ، وأَمَرَ بهَا أنْ تُؤَدَّى قَبْلَ خُرُوجِ النَّاسِ إلى الصَّلَاةِ

‘‘ আল্লাহর রাসুল যাকাতুল ফিতর স্বরূপ এক ’সা কিংবা এক ’সা যব ফরজ করেছেন মুসলিম দাস, স্বাধীন ব্যক্তি, পুরুষ ও নারী এবং ছোট ও বড়র প্রতি। আর তা লোকদের নামাজে বের হওয়ার পূর্বে আদায় করে দিতে আদেশ করেছেন”। [বুখারী, অধ্যায়: যাকাত হাদিস নম্বর ১৫০৩/ মুসলিম নম্বর ২২৭৫]

উক্ত হাদিসে দুটি খাদ্য দ্রব্যের নাম পাওয়া গেল যা, দ্বারা নবীর যুগে ফিতরা দেওয়া হত। একটি হচ্ছে খেজুর অপরটি যব। এবার নিম্নে আর একটি হাদিস পাঠ করুন।

▪ আবু সাঈদ খুদরি রা. বলেন,
- كُنَّا نُخْرِجُ زَكَاةَ الفِطْرِ صَاعًا مِن طَعَامٍ، أوْ صَاعًا مِن شَعِيرٍ، أوْ صَاعًا مِن تَمْرٍ، أوْ صَاعًا مِن أقِطٍ، أوْ صَاعًا مِن زَبِيبٍ

‘‘আমরা-নবীজীর যুগে যাকাতুল ফিতর বের করতাম এক সা’ খাদ্য দ্রব্য কিংবা এক সা’ যব কিংবা এক সা’ খেজুর কিংবা এক সা’ পনীর কিংবা এক সা কিশমিশ’’ [বুখারী- ১৫০৬ মুসলিম-২২৮১]

এই হাদিসে খেজুর ও যব ছাড়া আরও যে কয়েকটি বস্তুর নাম পাওয়া গেল তা হল, কিশমিশ, পনীর এবং খাদ্য দ্রব্য। উল্লেখ থাকে যে, নবীজীর মৃত্যুর পর মুয়াবিয়া রা.এর খেলাফত কালে অনেকে গম দ্বারা ফিতরা দিতেন। [বুখারী হাদিস নম্বর ১৫০৮ মুসলিম ২২৮১ ]

তাই আমরা যদি সুন্নত অনুসরণ করতে চাই তাহলে আমাদের সমাজের প্রচলিত প্রধান খাদ্যদ্রব্য তথা চাল দ্বারা ফিতরা দেওয়া কর্তব্য। ফিতরার মুল্য দ্বারা অথবা সেটাকা দিয়ে পোশাক, চিনি, তেল, মসলা, শেমাই, গোস্ত ইত্যাদি কিনে দেওয়া সুন্নত পরিপন্থী।

তবে একান্ত জরুরি অবস্থায় টাকা দ্বারা ফিতরা দেওয়া যেতে পারে বলে, অনেক আলেম মন্তব্য করেছেন। যেমন: রোগীর চিকিৎসার জন্য জন্য এই মুর্হতে টাকা প্রয়োজন। চাল দিলে সেটা বিক্রয় করে টাকা সংগ্রহ করতে গেলে রোগীর সমস্যা বেড়ে যেতে পারে...বা এ জাতীয় পরিস্থিতে ফিতরার মূল্য দিলেও আদায় হয়ে যাবে। কারণ এখানে বিশেষ পরিস্থিতে মুল্য দ্বারা ফিতরা প্রদান করা হয়েছে।
সুতরাং আমাদের কতর্ব্য খাদ্যদ্রব্য দেওয়া। কেউ যদি তা নিতে না চায় তাহলে এমন ব্যক্তিকে দেওয়া উচিৎ যে তা গ্রহণ করবে।
দুর্ভাগ্য হলেও সত্য যে, আমাদের দেশের হানাফী সামাজ থেকে খাদ্যদ্রব্য দেওয়ার সুন্নতটি প্রায় উঠে যাওয়ার কারণে তারা প্রতি বছর টাকা নির্ধারণ করে থাকেন আর গরীবরাও টাকা ছাড়া অন্য কিছু নিতে চায় না। তবে আল হামদুলিল্লাহ অধিকাংশ আহলে হাদিস সমাজে খাদ্যদ্রব্য দেওয়ার সুন্নতটি এখনো প্রচলিত রয়েছে।
সৌদি আবরেও এখনো ফিতরা হিসেবে চাল দেওয়ার সুন্নতটি চালু আছে। এখানে চেরিটেবল সোসাইটিগুলোতে চাল ও টাকা উভয়টি নেয়া হয়। কিন্তু পরবর্তীতে টাকা দ্বারা চাল কিনে গরীবদের মাঝে বিতরণ করা হয়।
আল্লাহু আলাম
▬▬▬▬◆◈◆ ▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ সেন্টার, সউদী আরব

Photos from দ্বীনের পথে কুরআন-হাদীসের আলোকে's post 11/03/2024

📌সিয়ামের সাথে সংশ্লিষ্ট আমলসমূহ।
কেউ এড়িয়ে যাবেন না। আপনি চাইলে দাওয়াতের নিয়তে,পোস্টটি শেয়ার করে অপরজনকে দেখার সুযোগ করে দিতে পারেন।অথবা ছবিগুলো সেভ করে নিজের টাইমলাইনে পোস্ট করতে পারেন।

09/03/2024

‎যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে সওয়াবের উদ্দেশে সংকল্প সহকারে সিয়াম পালন করবে।

আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
🟠 নবী (সাঃ) বলেছেন,
যে ব্যক্তি লাইলাতুল ক্বদ্‌রে ঈমানের সাথে সাওয়াবের আশায় রাত জেগে ‘ইবাদাত করে, তার পিছনের সমস্ত গোনাহ ক্ষমা করা হবে।
আর যে ব্যক্তি ঈমানসহ সওয়াবের আশায় রমযানে সিয়াম পালন করবে, তারও অতীতের সমস্ত গোনাহ মাফ করা হবে।

সহিহ বুখারী, হাদিস নং ১৯০১
হাদিসের মান: সহিহ হাদিস
সোর্স: আল হাদিস অ্যাপ, irdfoundation․com

27/02/2024

🔴ঈমান ভঙ্গের কারণসমূহ...

🎙️প্রফেসর ড. আবুবকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া হাফিয্বাহুল্লাহ্
◾শাইখ মতিউর রহমান আল-মাদানি হাফিয্বাহুল্লাহ্

14/01/2024

মেয়েটা হিজাব পরত। হিজাব নিয়ে প্রশংসা করতে আসা ছেলেটা কেবল তার পোশাক খুলেনি, সম্ভ্রমটুকু নিয়ে হারিয়ে গেল।

13/01/2024

📌দৈনন্দিনের ছোট ৪টি আমল:

🔘আমলঃ- ১
🔘প্রত্যেক ওযুর পর কালেমা শাহাদত পাঠ করুন।

🔘ফজিলতঃ-
"যে ব্যাক্তি ওযু করার পড় কালিমায়ে শাহাদাত পাঠ করবে ঐ ব্যাক্তির জন্য জান্নাতের ৮টি দরজা খুলে দেওয়া হয় এবং যে কোন দরজা দিয়ে জান্নাতে প্রবেশ করতে পারবে:

(সহিহ মুসলিম, হাদিস নং-২৩৪)

🔘আমলঃ-০২
🔘প্রত্যেক ফরজ নামাজ শেষে "আয়াতুল কুরসি' পাঠ করুণঃ-

🔘ফজিলতঃ-
"যে ব্যাক্তি প্রত্যেক ফরয নামাযের পর একবার আয়তুল কুরসি পাঠ করবে, জান্নাতে যেতে মৃ'ত্যু ছাড়া তার আর কোন বাধা নাই।

(সিলসিলাহ সহিহাহ, হাদিস নং- ৯৭২)

🔘আমলঃ-০৩
🔘প্রত্যেক ফরজ নামাজ শেষেঃ-

🔘৩৩ বার সুবহানাল্লাহ,
🔘৩৩ বার আলহামদুলিল্লাহ্,
🔘৩৪ বার আল্লাহু আকবার

এবং ১বার এই দোয়াটি পড়া
لَا اِلَهَ اِلَّا اللهُ وَحْدَهُ لَا شَرِيْكَ لَهُ لَهُ الْمُلْكَ وَ لَهُ الْحَمْدُ وَ هُوَ عَلَى كُلِّ شَيْئٍ قَدِيْر
উচ্চারণঃ লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারীকা লাহু, লাহুল মুলকু ওয়ালাহুল হামদু ওয়াহুয়া ‘আলা কুল্লি শাই’ইন কাদীর:

ফজিলত: অতীতের সমস্ত ছগীরা গোনাহ মাফ করে দেওয়া হবে, যদিও তা সমুদ্রের ফেনারাশি পরিমাণ ও হয়।

(সহিহ মুসলিম, হাদিস নং- ১২২৮)

🔘আমলঃ-০৪
🔘প্রতিরাতে সূরা মুলক পাঠ করুণ:
ফজিলত: নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহে ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, ‘সূরাহ মুলক (তিলাওয়াতকারীকে) কবরের আ*জা*ব থেকে রক্ষা করবে।

(সহিহ তারগিব,হাকিম ৩৮৩৯,)

আসুন আমরা দৈনন্দিন এই ফজিলতপূর্ন আমলগুলো করার অভ্যাস গড়ে তুলি, নিজেও আমল করি, অপর একজন ভাই-বোন কেও আমলগুলো চর্চা করার জন্য তাগিদ দেই।

আল্লাহ আমাদের সবাইকে কবুল করুন, আমিন!!

11/01/2024

📌 এবার সত্য কথা বলা শুরু করলেন আবরার সাহেবরা। তাবীজ বিক্রি করে আর ৪০’শা-মিলাদ করে বেশি দিন ভাত খাওয়া যাবেনা।

ইনশা আল্লাহ এভাবেই একদিন প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে। মহান আল্লাহ বলেন, “আর বল, ‘হক এসেছে এবং বাতিল বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয় বাতিল বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল’।” [সূরা ইসরাঃ ৮১]

23/12/2023

✅🟥▋বিদ‌আতীদের সাথে ওঠাবসা ও মেলামেশার ক্ষেত্রে সালাফদের সতর্কতা ও বিদ‌আতীদের বিরুদ্ধে পুর্বসুরিদের কঠোর উক্তি ❓

বিদআতীর প্রতি সালাফদের ভূমিকা :
সলফে সালেহীনগণ বিদআত ও বিদআতীদের প্রতি অতি কঠোর ছিলেন। বিদআতকে প্রতিহত এবং বিদআতীর প্রতিবাদ করতে তাঁরা কখনো দ্বিধা করতেন না। আব্দুল্লাহ ও বলেন, এক সম্প্রদায় আসবে যারা এই সুন্নাহসমূহকে প্রত্যাখ্যান। করবে, অতএব যদি তোমরা তাদেরকে উপেক্ষা কর (কোন বাধা না দাও), তবে। তারা মহাসঙ্কট উপস্থিত করবে।”

বিরুদ্ধবাদীদের মতামত খণ্ডন করা সালাফদের সুন্নাত-নীতি। সালাফগণ বিরুদ্ধবাদীদের মতামত খণ্ডনে অনেক কিতাব লিখেছেন। ইমাম আহমাদ ইবনে হামবাল (রহ.) নাস্তিকমনা ও বিদাতীদের মতামত খণ্ডনে, শায়খুল ইসলাম ইমাম ইবন তাইমীয়া (রহ.) দার্শনিক যুক্তিবাদী, সুফীবাদী ও কবর পূজারীদের মতামত খণ্ডনে, ইমাম ইবনুল ক্বাইয়্যিম (রহ.) হকের উম্মোচন ও প্রচারের জন্য অনেক সমালোচনা গ্রন্থ লিখেছেন যাতে মুসলিম উম্মাহ পথভ্রষ্ট হয়ে বিপথগামী বিরুদ্ধবাদীদের অনুসরণ না করে। এগুলো মূলতঃ উম্মাহর কল্যাণ কামিতারই বহিঃপ্রকাশ।

বিদ‘আতীদের রদ করা আল্লাহ’র রাস্তায় জিহাদ করার শামিল। শাইখুল ইসলাম ইমাম ইবনু তাইমিয়্যাহ (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, “বিদ‘আতীদের রদকারী একজন মুজাহিদ। এমনকি ইয়াহইয়া বিন ইয়াহইয়া বলেছেন, ‘সুন্নাহকে ডিফেন্ড করা সর্বোত্তম জিহাদ’।”
[নাক্বদ্বুল মানত্বিক্ব, পৃষ্ঠা: ১২; গৃহীত: শাইখ খালিদ বিন দ্বাহউয়ী আয-যাফীরী (হাফিযাহুল্লাহ), ইজমা‘উল ‘উলামা ‘আলাল হাজরি ওয়াত তাহযীরি মিন আহলিল বিদা‘; পৃষ্ঠা: ১০৪]
সালাফগণ এর উপর আমল করতে গিয়ে
বিদ’আতীদের থেকে কোন হাদীস গ্রহণ
করতেন না। যেমন, মুহাম্মদ ইবনু সিরীন বলেন,
এক সময়ে মানুষ হাদীসের সূত্র সম্পর্কে
জিজ্ঞেস করত না। যখন ফিতনা শুরু হল অর্থাৎ
যাছাই-বাছাই না করে মানুষ সত্য-মিথ্যা বলা
শুরু করল তখন শ্রোতারা বলল, আপনারা সূত্র
সহকারে বলুন। যদি বর্ণনাকারীগণ সুন্নাতের
অনুসারী হতেন, তাহলে তাদের হাদীছ গ্রহণ
করা হত। আর যদি বিদ’আতী হতেন, তাহলে
তাদের হাদীছ বর্জন করা হত। (মুসলিম, ১ম
খন্ড, পৃঃ৪৬)

💥 উমার বিন খাত্তাব (রাঃ) বলেন, 'রায়-ওয়ালাদের থেকে দুরে থেকো। কারণ তারা সুন্নাহর দুশমন। হাদীস মুখস্থ করতে অপারগ হয়ে নিজেদের রায় (জ্ঞান) দ্বারা কথা বলে (দ্বীনী বিধান দেয়)। ফলে তারা নিজেরা ভ্রষ্ট হয় এবং অপরকেও ভ্রষ্ট করে।
ইয়াহয়্যা বিন ইয়া’মুর আব্দুল্লাহ বিন উমার (রাঃ)-কে বললেন, 'আমাদের দিকে কিছু লোক বের হয়েছে, যারা কুরআন (বেশী বেশী) পাঠ করে এবং ইলম অনুসন্ধান করে বেড়ায়। অতঃপর তাদের আরো অন্যান্য অবস্থা বর্ণনা করে বললেন, তারা ধারণা করে যে, তকদীর বলে কিছু নেই এবং সমস্ত বিষয় সদ্য উদ্ভূত, (অর্থাৎ আল্লাহ তাআলার পূর্বে কিছুরই তকদীর (ভাগ্য) নির্ধারিত করেননি এবং কিছু ঘটার পুর্বে তিনি তার অবস্থা সম্পর্কে অবহিত নন।) একথা শুনে ইবনে উমর (রাঃ), তাঁকে বললেন, 'ওদের সহিত তোমার সাক্ষাৎ হলে ওদেরকে খবর দাও যে, ওদের সহিত আমার কোন সম্পর্ক নেই এবং আমার সহিত ওদের কোন সম্পর্ক নেই।

🔴 #আহালুল_বিদআতের_সাথে_সালাফদের_ব্যবহার

◾[১]--
شرح أصول اعتقاد أهل السنة والجماعة (4/ 706)
أَخْبَرَنَا الْحَسَنُ بْنُ عُثْمَانَ قَالَ: أَخْبَرَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَمْدَانَ قَالَ: ثنا أَحْمَدُ بْنُ الْحَسَنِ قَالَ: ثنا عَبْدُ الصَّمَدِ مَرْدَوَيْهِ قَالَ: سَمِعْتُ الْفُضَيْلَ يَعْنِي ابْنَ عِيَاضٍ يَقُولُ: مَنْ جَلَسَ مَعَ صَاحِبِ بِدْعَةٍ فَاحْذَرْهُ، وَمَنْ جَلَسَ مَعَ صَاحِبِ الْبِدْعَةِ لَمْ يُعْطَ الْحِكْمَةَ، وَأُحِبُّ أَنْ يَكُونَ بَيْنِي وَبَيْنَ صَاحِبِ بِدْعَةٍ حِصْنٌ مِنْ حَدِيدٍ، آكُلُ عِنْدَ الْيَهُودِيِّ وَالنَّصْرَانِيِّ أَحَبُّ إِلَيَّ مِنْ أَنْ آكُلَ عِنْدَ صَاحِبِ بِدْعَةٍ
ফুদাঈল বিন ঈয়াদ রাহিমাহুল্লাহ (মৃ-১৮৭ হি.) বলেন,
❝যে ব্যাক্তি বিদ'আতীর সাথে বসে তার থেকে সতর্ক থাকো এবং যে ব্যাক্তি বিদ'আতীর সাথে বসে সে (তো এমন এক ব্যাক্তি যে)প্রজ্ঞা প্রাপ্ত নয়।(আর) আমি ভালোবাসি যে আমার এবং বিদ'আতির মাঝে একটা লোহার দূর্গ(আমি লোহার দূর্গে থাকি) থাকুক। ঈয়াহুদী ও খ্রিষ্টানদের সাথে খাওয়ার খাওয়া একজন বিদ'আতীর সাথে খাওয়ার গ্ৰহণের থেকে আমার কাছে বেশি প্রিয় ❞
[আল-লালাকাঈ,১১৪৯ ; শারহু উসূলি ই'তিক্বাদু আহালুস সুন্নাহ ওয়াল জাম'আত (৪/৭০৬)]

◾[২]--
حلية الأولياء وطبقات الأصفياء (7/ 33)
حدثنا محمد بن علي، ثنا جعفر بن محمد بن رزق، ببغداد , ثنا محمد بن عبد النور المقرئ، قال: أخبرنا الحسن بن الربيع، عن يحيى بن عمر، قال: سمعت [ص:34] سفيان الثوري، يقول: «من أصغى بسمعه إلى صاحب بدعة وهو يعلم أنه صاحب بدعة خرج من عصمة الله ووكل إلى نفسه»
সুফিয়ান আস-সাওরি রাহিমাহুল্লাহ (মৃ-১৬১ হি) বলেন,
❝ যে ব্যাক্তি বিদ'আতীর কথা শ্রবণ করলো সে আল্লাহর সুরক্ষা থেকে বের হয়ে গেলো, এবং সে (নিজেকে) বিদ'আতের সাথে ন্যাস্ত করলো❞
[আবু নুয়াঈম থেকে বর্ণিত আল-হিলঈয়াত আল ওয়ালিয়া ওয়াতাকাত আল আসফিয়া,৭/৩৩ এবং ইবনে বাত্তাহ, নং ৪৪৪]

◾[৩]--
الاعتقاد للبيهقي (ص: 239)
أَخْبَرَنَا أَبُو عُثْمَانَ بْنُ سَعِيدِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ مُحَمَّدِ بْنِ عَبْدَانَ قَالَ: سَمِعْتُ أَبَا الْعَبَّاسِ الْأَصَمَّ يَقُولُ: سَمِعْتُ الرَّبِيعَ بْنَ سُلَيْمَانَ يَقُولُ: سَمِعْتُ الشَّافِعِيَّ يَقُولُ: لَأَنْ يَلْقَى اللَّهُ الْعَبْدَ بِكُلِّ ذَنْبٍ مَا خَلَا الشِّرْكَ خَيْرٌ مِنْ أَنْ يَلْقَاهُ بِشَيْءٍ مِنَ الْهَوَى

ইমাম আস-শাফেঈ রাহিমাহুল্লাহ (মৃ-২০৪ হি.) বলেন,
❝ শির্ক ছাড়া আর সকল পাপ নিয়ে আল্লাহর আছে উপস্থিত হওয়া যেকোনো বিদ'আতী আক্বীদা নিয়ে আল্লাহর কাছে উপস্থিত হওয়া থেকে উত্তম ❞
[বায়হাকি,আল-ই'তিকাদ,পৃ-২৩৯]

◾[৪]--
الإبانة الكبرى لابن بطة (2/ 459)
حَدَّثَنَا أَبُو عَلِيٍّ مُحَمَّدُ بْنُ أَحْمَدَ بْنِ إِسْحَاقَ الْبَزَّازُ قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو جَعْفَرٍ مُحَمَّدُ بْنُ نَصْرٍ الصَّايِغُ قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ بْنُ يَزِيدَ الصَّايِغُ مَرْدَوَيْهِ قَالَ: وَقَالَ الْفُضَيْلُ: لَا تَجْلِسْ مَعَ صَاحِبِ بِدْعَةٍ , فَإِنِّي أَخَافُ أَنْ تَنْزِلَ عَلَيْكَ اللَّعْنَةُ
ফুদাঈল বিন ঈয়াদ রাহিমাহুল্লাহ বলেনঃ
বিদ'আতির সাথে বসো না ,কারণ আমি ভয় পাই যে তোমার উপর লানত নাযিল হবে।
[ইবনে বাত্তাহ, আল-ইনাবাহ (২/৪৫৯)]

◾[৫]--

شرح أصول اعتقاد أهل السنة والجماعة (1/ 155)
وَأَخْبَرَنَا الْحَسَنُ , قَالَ: أَخْبَرَنَا أَحْمَدُ بْنُ حَمْدَانَ , قَالَ: حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ الْحُسَيْنِ , قَالَ: حَدَّثَنَا عَبْدُ الصَّمَدِ , قَالَ: سَمِعْتُ الْفُضَيْلَ بْنَ عِيَاضٍ يَقُولُ: «أَدْرَكْتُ خِيَارَ النَّاسِ , كُلُّهُمْ أَصْحَابُ سُنَّةٍ , وَيَنْهَوْنَ عَنْ أَصْحَابِ الْبِدَعِ»

ফুদাঈল বিন ঈয়াদ রাহিমাহুল্লাহ (মৃ-১৮৭ হি.) বলেন,
❝ আমার সাক্ষাত হয়েছে সুন্নাতের অনুসারী শ্রেষ্ঠ মনিষিদের সাথে এবং তারা বিদ'আতীদের সাথে মিশতে নিষেধ করতেন ❞
[আল-লালাকাঈ,২৬৭]

◾[৬]--
الشريعة للآجري (1/ 452)
أَخْبَرَنَا الْفِرْيَابِيُّ قَالَ: حَدَّثَنَا أَبُو تَقِيٍّ هِشَامُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ الْحِمْصِيُّ قَالَ: حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ حَرْبٍ، عَنْ أَبِي سَلَمَةَ سُلَيْمَانَ بْنِ سُلَيْمٍ، عَنْ أَبِي حُصَيْنٍ، عَنْ أَبِي صَالِحٍ، عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ: لَا تُجَالِسْ أَهْلَ الْأَهْوَاءِ، فَإِنَّ مُجَالَسَتَهُمْ مَمْرَضَةٌ لِلْقُلُوبِ

রাসুলুল্লাহ ﷺ-এর সাহাবী ইবনে আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেছেন, ❝আহালুল হাওয়া (প্রবৃত্তির অনুসারী/বিদ'আতী) এর সাথে বসবে না,কারণ তাদের (সাথে) সমাবেশ -অন্তরের রোগ।❞
[আজূর্রি আস শারিয়াহ(১/১৯৬, নং ১৩৯); লালাকাঈ ,শারহু উসূলি ই'তিক্বাদু আহালুস সুন্নাহ ওয়াল জাম'আত(২/৪৩৮); আশ-শারিয়াতু লিলাযরীঈ(১/৪৫২)]

◾[৭]--

أَخْبَرَنَا سَعِيدُ بْنُ عَامِرٍ، عَنْ أَسْمَاءَ بْنِ عُبَيْدٍ، قَالَ: دَخَلَ رَجُلَانِ مِنْ أَصْحَابِ الْأَهْوَاءِ عَلَى ابْنِ سِيرِينَ فَقَالَا: يَا أَبَا بَكْرٍ نُحَدِّثُكَ بِحَدِيثٍ؟ قَالَ: «لَا»، قَالَا: فَنَقْرَأُ عَلَيْكَ آيَةً مِنْ كِتَابِ اللَّهِ؟ قَالَ: «لَا، لِتَقُومَانِ عَنِّي أَوْ لَأَقُومَنَّ»، قَالَ: فَخَرَجَا، فَقَالَ: بَعْضُ الْقَوْمِ. يَا أَبَا بَكْرٍ، وَمَا كَانَ عَلَيْكَ أَنْ يَقْرَآ عَلَيْكَ آيَةً مِنْ كِتَابِ اللَّهِ تَعَالَى؟ قَالَ: «إِنِّي خَشِيتُ أَنْ يَقْرَآ عَلَيَّ آيَةً فَيُحَرِّفَانِهَا، فَيَقِرُّ ذَلِكَ فِي قَلْبِي -إسناده صحيح
আসমা বিন উবাঈদ বলেছেন: দুইজন বিদ'আতি লোক ইবনে সিরীন (রাহিমাহুল্লাহ) এর কাছে এসে বললো- হে আবু বকর! আমরা কি তোমাকে কিছু হাদিস শুনাবো? তিনি বললেন-"না" , তারা (পুনরায়) বললো-তাহলে আমরা আপনার জন্য আল্লাহর কিতাব হতে কিছু আয়াত তেলাওয়াত করি? ,তিনি(ইবনে সিরীন) বললেন,❝না! বরং হয় তোমরা (এখান থেকে) চলে যাও ,না হয় আমি চলে যাবো। ❞ তখন তারা চলে গেলো। (তখন) তিনি (ইবনে সিরীন) বললেন-আমি ভয় পাচ্ছিলাম যেসে আমার জন্য কিছু আয়াত পড়বে এবং তার অর্থ বিকৃত করবে এবং তা আমার অন্তরে চিরস্থায়ী হয়ে যাবে।
[দারেমী,হা/৪১১]

🔴 গ্রন্থঃ সুনান আদ-দারেমী হাদিস নম্বরঃ ৪০৫
প্রবৃত্তির অনুসারী, বিদ’আতী ও কলহপ্রিয় (তর্ক-বিতর্কপ্রিয়) লোকদের বর্জন করা প্রসঙ্গে :--
আবু ক্বিলাবাহ বলেন: তোমরা প্রবৃত্তির অনুসারীদের নিকট বসবে না এবং তাদের সাথে ঝগড়ায় লিপ্ত হবে না। কেননা, আমি এ ব্যাপারে আশংকামুক্ত নই যে, তারা তোমাদেরকে তাদের বিভ্রান্তিতে নিমজ্জিত করবে না। কিংবা তোমাদের চেনা-জানা বিষয়গুলিকেও তারা তোমাদের নিকট সন্দেহপূর্ণ করে তুলবে।[1]
[1] তাহক্বীক্ব: এর সনদ সহীহ।

◾ ইয়াহিয়া বিন সা’ইদ আল-কাতাআন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, “যখন সুফিয়ান আস-সাওরী বাছরাতে এসেছিলেন তিনি আর-রাবী' বিন সুবআলিহ ও তার ব্যাপারে লোকেদের প্রাক্কলন সম্পর্কে খোজ নিতে লাগলেন।”
-তিনি তাদের জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তার মাজহাব কি?’,
-এবং তারা(লোকেরা) বলল, ‘তার মাজহাব হলো সুন্নাহ’।
-তিনি তারপর জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তার সাহচর্য কারা?
-তারা উত্তর দিল, ‘কাদেরীরা’ (তাকদীর অস্বীকারকারীরা)
-এতে তিনি বললেন, ‘এই ক্ষেত্রে সে-ও একজন কাদেরী’।
[আল-ইবানাহ (২/৪৫৩)]

◾ ইবনে আউন (রাহিমাহুল্লাহ) বলেছেন, “যারা বিদ'আতিদের সাথে বসে তারা আমাদের কাছে বিদ’আতিদের থেকে-ও অধিক দুঃসহ”৷
[আল-ইবানাহ (২/২৭৩)]

প্রবৃত্তিবাদী ও বিদাতীদের থেকে সতর্ক করার বিষয়ে সালাফদের নিকট থেকে অনেকগুলো আছার রয়েছে। হক অন্বেষু সম্মানিত পাঠক আপনার অবগতির জন্য এখানে কিছু আছার উল্লেখ করা হলো:

◾ইবরাহীম নাখয়ী (রহ.) বলেন, বিদাতীদের নিকট বসো না, তাদের সাথে কথা বলো না। আমি আশংকা করি যে তারা তোমাদের অন্তরকে প্রভাবিত করে ফেলবে। (‘আল-বিদা‘ ওয়ান নাহয়্যু আনহা’’ পৃ. ৫৬, আল-ই‘তিছাম ০১/১৭২)

◾আবু কিলাবাহ বলেন, হে আইউব আস-সাখতিয়ানী, তোমার শ্রবণে প্রবৃত্তিবাদীদেরকে স্থান দিও না। আল-লালকাঈ ০১/১৩৪

◾ফুযাইল ইবনে ‘ইয়ায বলেন, রাস্তায় কোন বিদাতী দেখতে পেলে অন্য রাস্তায় যাও। (আল-ইবানা ২/৪৭৬)

◾শায়খুল ইসলাম ইবনু তাইমীয়া (রহ.) বলেন--
বিদাতীদের অনিষ্ট বিষয়ে বলেন, যদি কেউ তাদের মুক্বাবিলা না করত তাহলে দীন ধ্বংস হয়ে যেত। যুদ্ধক্ষেত্রে শত্রুদলের আক্রমণ থেকে তাদের আক্রমণ মারাত্মক। কেননা তারা বিজয়ী হলে শুধু আনুগত্যই করে নিতে পারে; মন-মানসিকতা এবং দীন ধ্বংস করতে পারে না। পক্ষান্তরে বিদাতীরা প্রথমেই মন-মানসিকতা নষ্ট করে দেয়। মাজমূ‘ ফাতওয়া ২৮/২৩২।

◾যেমন আবুল জাওযা বলেন,
কোন প্রবৃত্তি-পূজারী (বিদআতী) আমার প্রতিবেশী হওয়া অপেক্ষা শুকর ও বানর দল প্রতিবেশী হওয়া আমার নিকট অধিক পছন্দনীয়। কতক সলফ এমন গ্রাম বা শহর বসবাস করা পরিত্যাগ করেছেন যেখানে বিদআত প্রসার ও দৃঢ়তা লাভ করেছে এবং প্রতিবেশী এমন গ্রাম বা শহরে বাস করেছেন যা পূর্বাপেক্ষা অধিক সুন্নাহর অনুসারী। যেমন, হুরাইম বিন আব্দুল্লাহ, হানযালাহ এবং আদী বিন হাতেম প্রভৃতি সলফগণ (বিদআতের শহর) কুফা ত্যাগ করে কুকীসিয়ায় গিয়ে বসবাস করেছেন এবং বলেছেন, 'আমরা এমন শহরে বসবাস করব না, যে শহরে উসমান (রাঃ)-কে গালি দেওয়া হয়।”

◾ফুযাইল বিন ইয়ায রহ বলেন: 'পথে চলতে গিয়ে যদি তুমি কোন বিদ'আতীর দেখা পাও তাহলে সে পথ ছেড়ে অন্য পথ ধর। আর বিদ'আতীর আমল কখনো আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, সুতরাং যে বিদ'আতীকে সাহায্য করল সে যেন ইসলামকে নিঃশেষ করে দিতে সাহায্য করল।'
[তালবীসে ইবলিস, ২১]

ফুযাইল বিন ইয়া বলেন, 'কারো নিকটে কোন ব্যক্তি (ইম তলবের ব্যাপারে) পরামর্শ নিতে এলে সে যদি কোন বিদআতী (আলেমের) ঠিকানা বলে দেয় তবে নিশ্চয় সে ইসলামকে ধােকা দেয়। বিদআতীদের নিকট যাতায়াত করা হতে সাবধান হও। কারণ, তারা হক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। সত্যপক্ষে যে ব্যক্তি কোন বিদআতীকে তার পথপ্রদর্শক, মুরশিদ ওস্তাদ মেনে। নেয়, তার সর্বনাশ অবশ্যম্ভাবী। কারণ,
কাক যদি কারো পথের হয় রাহবার
চলাইবে সেই পথে যে পথে ভাগাড়।

তিনি আরো বলেন, যে ব্যক্তি কোন বিদআতীর তা'যীম ও সম্মান করল, সে যেন ইসলামকে ধ্বংস করার উপর সাহায্য করল, যে ব্যক্তি কোন বিদআতীর সাক্ষাতে হাসল, সে যেন মুহাম্মাদ (সা.)-এর অবতীর্ণ শরীয়তকে গুরুত্বহীন মনে করল, যে ব্যক্তি তার স্নেহ-পুত্তলী (কন্যার বন্ধন) বিবাহ কোন বিদআতীর সাথে (বা ঘরে) দিল, সে যেন তার আত্মীয়তার (পিতা-কন্যার) বন্ধন ছেদন করল এবং যে ব্যক্তি কোন বিদআতীর জানাযায় অংশ গ্রহণ করল, সে আল্লাহর গযবে থাকে; যতক্ষণ না সে ফিরে আসে। (শারহুসসুন্নাহ)।

🔴 ইমামে আহলুস সুন্নাহ আহমাদ ইবন হান্বল থেকে মানহাজ শিখুন।

১. তিনি বিদাতী পথভ্রষ্টদের সাথে ঐক্য করেননি।
২. তিনি বিদাতী জাহমীদের বিরুদ্ধে কঠোর ছিলেন।
৩. তিনি তাদের রদ করতেন ও তাদের ব্যাপারে জিরো টলারেন্স ছিলেন।
৪. তাঁর শাসক যখন সেই বিদাতীদের অংশ হলো, মুসলিম শাসকের অনুগত্য করেছেন, বিদ্রোহ করেননি।
৫. হাজত খেটেছেন কিন্তু শাসকের উন্মুক্ত সমালোচনা করেননি।
৬. জালিম বিদাতীদের থেকে মুক্তির জন্য আল্লাহ্-র কাছে আশ্রয় প্রার্থনা করতেন।

খলিফা মামুন, বা সেসময়ের বিদাতীদের কেউ চিনে না,
গুরুত্ব দেয়না। দুনিয়া ইমাম আহমাদকে চিনে। কারন যে রব্বুল আ'লামীনের ইজ্জতকে উঁচু করতে লড়াই করে, তার ইজ্জত রব্বুল আ'লামীন নিজে থেকে দেন।
যারা নিজেদের ইমাম আহমাদের মানহাজের বলি, তারা তাঁর মানহাজে গুরুত্বারােপ করি। হাহুতাশ আমাদের দ্বারা মানায় না। বিজয় আহলুস সুন্নাহর হবে, হত থাকবে। গয়রে আহলুস সুন্নাহের বিজয় ক্ষণস্থায়ী। বিইদ্বনিল্লাহ্।

❝ মুনাফিকরা এবং আহলে-বিদয়াতিরাও কিতাবুল্লাহ থেকে দলিল গ্রহন করে-ব্যখ্যা প্রদান করে। সুতরাং, কিতাব ও সুন্নাতের শুধুমাত্র ওই বুঝটাই প্রাধান্য পাবে যেটা সালাফে-সালেহীদের থেকে প্রমানিত আছে। ❞
📜 [ইযওয়াউল মাসাবীহ- ১/৩২৫]

🔴 ▌মুহাদ্দিসুল ‘আসর, আল-ফাক্বীহ, আল-মুজাদ্দিদ, ইমাম মুহাম্মাদ নাসিরুদ্দীন আল-আলবানী (রাহিমাহুল্লাহ) [মৃত: ১৪২০ হি./১৯৯৯ খ্রি.] বলেছেন—

❝আমরা একাকী মারা যাব, এমতাবস্থায় বিদ‘আতীদের সাথে আমাদের কোনো সম্পর্ক থাকবে না, জোট থাকবে না, আমরা একটি মাসআলাহ’র ক্ষেত্রেও আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরুদ্ধাচরণ করব না। উক্ত অবস্থা আমাদের নিকট এ অবস্থার চেয়ে উত্তম যে, আমরা ভ্রষ্টতার ওপর জমায়েত হব, এমন একটি মানহাজের ওপর ঐক্যবদ্ধ হব, যে মানহাজকে তারা স্বীকৃতি দেয় এবং জেনেশুনে তারা এ ক্ষেত্রে শরিয়তের বিরোধিতা করে, অসংখ্য শরিয়ত-নির্দেশিত বিষয়ে।
(তথ্যসূত্র: সিলসিলাতুল হুদা ওয়ান নূর, ৪০১ নং অডিয়ো ক্লিপ।)

◾হাসান বলেন,
'ইচ্ছার পূজারীদের নিকট বসো না, তাদের সহিত কোন তর্ক করো না এবং তাদের নিকট হতে কিছু শ্রবণও করো না।

◾মামার বলেন, ইবনে ত্বাউস বসে ছিলেন। ইতিমধ্যে মু'তাযিলার একটি লোক তাঁর নিকট এসে অনেক কিছু বলতে লাগল। তা দেখে ইবনে ত্বউস আঙ্গুল দ্বারা। দুই কান বন্ধ করে নিলেন এবং তাঁর ছেলেকেও বললেন, “বেটা! কানে শক্ত করে। আঙ্গুল রেখে নাও। ওর কোন কথাই শুনো না।”

◾ইব্রাহিম বিন মাইসারাহ বলেন, 'যে ব্যক্তি কোন বিদআতীকে তা'যীম বা শ্রদ্ধা করে সে অবশ্যই ইসলাম ধ্বংসে সহায়তা করে। আল্লাহ তাআলা বলেন,

يَوْمَ تَبْيَضُّ وُجُوهٌ وَتَسْوَدُّ وُجُوهٌ

অর্থাৎ, সেদিন কতকগুলো মুখমন্ডল সাদা (উত্তঞ্জল) হবে এবং কতকগুলো মুখমন্ডল হবে কালো। (সুরা আলে ইমরান ১০৬ আয়াত)

ইবনে আব্বাস (রাঃ) এই আয়াতের ব্যাখ্যায় বলেন, সেদিন যাদের মুখমন্ডল উজ্জল হবে তাঁরা আহলে সুন্নাহ অল-জামাআহ (হাদীস ও সাহাবার অনুসারীদল) এবং উলামা। আর যাদের মুখমন্ডল কালো হবে তারা হল, বিদআতী ও ভ্রষ্টের দল। (তফসীর ইবনে কাষীর)

🔷 বিদআতিদের সংস্পর্শ চুলকানি থেকেও অধিক সংক্রমক

❖ ইবনে মাসউদ রা. বলেন, ‘যে ব্যক্তি নিজ
দ্বীনকে মর্যাদা দিতে চায়, সে যেন
বিদ’আতীদের সংস্রব থেকে দূরে থাকে। কারণ,
তাদের সংস্রব চুলকানী থেকেও অধিক
সংক্রামক!
[ইবনে আযযাহ/৫৬ পৃষ্ঠা]

❖ হাসান বসরী বলেন, ‘বিদ’আতীদের সাথে
ওঠাবসা করো না। কারণ, তাদের সাথে ওঠাবসা
করায় অন্তরের রোগ সৃষ্টি হয়’
[ইবনে
আযযাহ/৫৪ পৃষ্ঠা]

❖ আবুল কাসেম নাসর আবাযী বলেন, ‘আমার কাছে
খবর এসেছে যে, হারেস মুহাসেবী কিছু
বিদ’আতী কথাবার্তা বললে আহমাদ বিন হাম্বল
(রহ) তার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে…. অতঃপর
যখন সে মারা যায়, তখন মাত্র চারটি লোক
তার জানাযা পড়ে’ [আত তাহযীব ২/১১৭]

❖ এক বিদ’আতী আইয়ুব সাখতিয়ানীকে বলল,
‘আমি আপনাকে একটি বিষয়ে জিজ্ঞাসা করতে
চাই’। আইয়ুব পিছন ফিরে পালিয়ে যেতে যেতে
বললেন, ‘না। অর্ধেক শব্দও নয়। আধা শব্দও
নয়’।
[আল ইবানাহ ২/৪৪৭]

❖ ইমাম হাসান বসরী (রঃ) বলেন, কোন খেয়াল-খুশীর অনুসারী ব্যক্তি (বিদআতীর) নিকট বসো না, কারণ, সে এমন কিছু তোমার অন্তরে ভরে দেবে যার অনুসরণ করে তুমি ধ্বংস হয়ে যাবে অথবা তুমি তার প্রতিবাদ ও বিরোধিতা করবে যাতে তোমার হৃদয় ব্যাধিগ্রস্ত হবে। আবু কিলাবাহ বলেন, প্রবৃত্তির অনুসরণকারী (বিদআতী)দের সাথে বসো না এবং তাদের সঙ্গে কোন বিষয়ে ঝগড়া বা বিতর্ক করো না, কারণ আমার আশঙ্কা হয় যে, তারা তোমাদেরকে তাদের ভ্রষ্টতায় ডুবিয়ে ফেলবে এবং যা তোমরা জানতে তাতে বিভ্রম ও সংশয় সৃষ্টি করবে।

তিনি আরো বলেন, খেয়াল-খুশীর অনুগতরা ভ্রান্ত ও ভ্রষ্ট এবং দোযখই তাদের প্রত্যাবর্তনস্থল বলে মনে করি। কোন ব্যক্তি বিদআত রচনা করলেই সে তরবারি হালাল করে নেয়।

❖ আইয়ুব সাখতিয়ানী বলেন, বিদআতী যত বেশী ইজতিহাদ করবে, তত বেশী আল্লাহ থেকে দুর হতে থাকবে। এবং তিনি বিদআতীদেরকে খাওয়ারেজ বলতেন। (ইতিসাম ১/৮৩)

ইয়াহয়্যা বিন কাষীর বলেন, যদি বিদআতীকে কোন রাস্তায় দেখ, তাহলে তুমি। ভিন্ন রাস্তা ধরে চলো, (এবং তার সহিত সাক্ষাৎও করো না।)

🔷 সুফইয়ান সাওরী (রঃ) বলেন, 'ইবলীসের নিকট পাপের চেয়ে বিদআতই অধিকতর পছন্দনীয়। কারণ, পাপ হতে তওবার আশা থাকে, কিন্তু বিদআত হতে তওবার কোন সম্ভাবনা থাকে না। (অর্থাৎ, তওবার তওফীকই লাভ হয় না। কারণ, বিদআতী তার বিদআতকে দ্বীন মনে করে থাকে।) ইবনে আবী আসেম প্রভৃতি বর্ণনা করেন যে, নবী ঐ বলেছেন, “শয়তান বলে। আমি মানুষকে বিভিন্ন পাপ দ্বারা সর্বনাশগ্রস্ত করেছি, কিন্তু ওরা আমাকে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ ও ইস্তিগফার দ্বারা ধ্বংস করেছে। অতঃপর যখন আমি তা লক্ষ্য করলাম, তখন ওদের মধ্যে কুপ্রবৃত্তি প্রক্ষিপ্ত করলাম। সুতরাং ওরা পাপ করবে; কিন্তু আর ইস্তিগফার করবে না। কারণ, তারা ধারণা করবে যে, তারা ভালো কাজই করছে।”

🔷 ইমাম ইবনুল কাইয়েম (রঃ) বলেন, সাধারণ পাপীর ক্ষতি তার নিজের উপরই বর্তায়, কিন্তু বিদআতীদের ক্ষতি ও অনিষ্ট শ্রেণী (বহু মানুষের) উপর ব্যাপক হয়। বিদআতীর ফিৎনা হয় মূল দ্বীনে অথচ সাধারণ পাপীর ফিৎনা তার প্রবৃত্তিতে হয়।। বিদআতী সহজ ও সরল পথের উপর বসে মানুষকে সে পথে চলা হতে বিরত করে, কিন্তু পাপী সেরূপ করে না। বিদআতী আল্লাহর গুণগ্রাম ও তার পরিপূর্ণতায় আঘাত হানে, অথচ পাপী তা করে না। বিদআতী রসুল প্লঃ কর্তৃক আনীত শরীয়তের পরিপন্থী হয়, কিন্তু পাপী তা হয় না। বিদআতী মানুষকে আখেরাতের সঠিক পথ হতে বিচ্যুত করে, কিন্তু পাপী নিজেই স্বীয় পাপের কারণে মৃদুগামী হয়। (আলজাওয়াবুল কাফী

সুতরাং বিদআতীরা কেবল গোনাহর জন্য গোনাহগারই হয় না বরং তারও অধিক কিছু হয় (যেমন পূর্বে আলোচিত হয়েছে। কারণ, গোনাহগার যখন গোনাহ করে, তখন তাতে অপরের জন্য শরীয়ত-বিধায়ীর প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে কোন আদর্শ বা চিরপালনীয় রীতির রূপ দান করে না; যেমন বিদআতী করে থাকে। অতএব তার দুষ্কৃতি সাধারণ দুষ্কৃতির চেয়ে বহু গুণে বড়। আল্লাহ পাক বলেন,

أَمْ لَهُمْ شُرَكَاءُ شَرَعُوا لَهُم مِّنَ الدِّينِ مَا لَمْ يَأْذَن بِهِ اللَّهُ ۚ وَلَوْلَا كَلِمَةُ الْفَصْلِ لَقُضِيَ بَيْنَهُمْ ۗ وَإِنَّ الظَّالِمِينَ لَهُمْ عَذَابٌ أَلِيمٌ

অর্থাৎ, ওদের কি এমন কতকগুলি অংশীদার আছে যারা ওদের জন্য বিধান। দিয়েছে এমন ধর্মের, যার অনুমতি আল্লাহ লংঘনকারীদের জন্য মর্মন্তুদ শান্তি রয়েছে। (সুরা শূরা ২১ আয়াত)

আবু তালেব বলেন, “আমি আব্দুল্লাহকে সেই ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম, যে। (কুরআন সম্বন্ধে) কিছু মন্তব্য করতে বিরত থাকে এবং বলে বলছি না যে, কুরআন মখলুক (সৃষ্টি) নয়। এমন ব্যক্তির সাথে যদি রাস্তায় আমার সাক্ষাৎ হয় এবং সে আমাকে সালাম দেয়, তবে আমি তার উত্তর দেব কি? তিনি বললেন, 'তার সালামের উত্তর দিও না এবং তার সহিত কথাও বলো না। তুমি তাকে সালাম দিলে (বা সালামের উত্তর দিলে) লোক তাকে চিনবে কি করে? আর সেই বা জানবে কি করে যে, তুমি তাকে মন্দ জানছ? অতএব যদি তুমি তাকে সালাম না দাও তাহলে অপমান স্পষ্ট হয়, জানা যায়, তুমি তাকে মন্দ জেনেছ এবং লোকেও তাকে (বিদআতী বলে) চিনতে পারে।” বিশেষ করে যে বিদআতে কুফর হয় সেই বিদআতের বিদআতীদের সহিত সলফ ও তার উলামাদের এই পদক্ষেপ ও ভূমিকা ছিল এবং বর্তমানেও তাই হওয়া দরকার।

যেহেতু বিদআত রচনা করে বিদআতীরা প্রকৃত ইসলাম হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। সেই বিদআত ত্যাগ না করা পর্যন্ত তাদের সহিত কোন প্রকার আপোস সম্ভব নয়। ইজতিহাদী আহকাম বা গৌণ বিষয়ে মতান্তরকে দুরে ফেলে আকীদাহ ও মৌলিক বিষয়ে একমত হয়ে একতা সম্ভব। (অবশ্য ইসলামের সকল নীতিই মৌলিক, তাতে গৌণ কিছু নেই।) হানাফী-শাফেয়ী, মালেকী-হাম্বলী প্রভৃতি ইজতিহাদী পৃথক পৃথক মযহাবের মাঝে ঐক্য সম্ভব; যদি সকলে সহীহ সুন্নাহর অনুসারী হয়। নির্দিষ্ট কোন মহাবের (সহীহ সুন্নাহর বিপরীত) তাকলীদ করা ওয়াজেব জ্ঞান যদি ত্যাগ করা হয় এবং কেবল আনুগত্য ও অনুসরণ তাঁর করা হয়, যাঁর সমস্ত সাহাবা, তাবেঈন এবং সকল ইমামগণ করেছেন।

আর সামান্য ইজতিহাদী বিষয়ের মতপার্থক্যকে এক ওজর ও অজুহাত বলে মানা যায়। যাতে সকলের নিকট হতে পরস্পর সহিষ্ণতার সহিত সম্প্রীতি ও আপোস সৃষ্টি করতে সাহায্য পাওয়া যায়; আর সেটাই ওয়াজেব।। কিন্তু যার মতান্তর মৌলিক বিষয়ে কেন্দ্রীভূত তার সহিত ন্যায়ের আপোস সম্ভব নয়। যেহেতু এ মতভেদ সামান্য নয়। এ পার্থক্য হক ও বাতিলের, ঈমান ও কুফরের, আর ঈমান ও কুফরের মাঝে আপোস আদৌ সম্ভব নয়। যারা হযরত

আবু বাকর, উমার, উষমান, আয়েশা প্রভৃতি সাহাবা (রাঃ)-কে গালি দেয় ও কাফের বলে, যারা বলে, এ কুরআন সে কুরআন নয়, যারা আল্লাহ ছাড়া অন্যের সামনে। সিজদাবনত হয়, যারা কবরের নিকট নিজেদের প্রয়োজন ভিক্ষা করে, যারা কাবীরাহ। গোনাহগারকে কাফের মনে করে, যারা তকদীরকে অবিশ্বাস করে, যারা আল্লাহর বিভিন্ন সিফাতকে অস্বীকার করে, যারা মারেফতীর দাবী করে মরমিয়া সেজে শরীয়ত ত্যাগ করে, যারা গায়বী খবর জানার দাবী করে, যারা বাউলিয়া হয়ে খানকার মধ্যে ইসলামকে সীমাবদ্ধ করে ইত্যাদি। এমন মযহাবধারীরা নিজেদের মযহাবে থেকে সালাফীদের সহিত (বাহ্যিক) আপোস করতে চাইলে অথবা কেউ সালিস করতে চাইলে তা সুদূর পরাহত এবং এক স্বপ্ন।

আন্তরিক ও বাহ্যিক ঐক্য প্রতিষ্ঠিত করতে হলে তাদেরকে নিজেদের সুন্নাহ পরিপন্থী ঐ সালিস বা আপোসে রাজি হলে তাকে সালাফিয়াত বা সুন্নিয়াত ত্যাগ করতে হবে। কারণ, সলফ ও আহলে সুন্নাহর আকীদাহ, নোংরাকে নোংরা ও মন্দকে মন্দ জানা এবং তার কর্তার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা আর খাঁটি তওহীদবাদী হক-পন্থীদের সাথেই অন্তরঙ্গ সম্প্রীতি গড়া এবং তা ওয়াজেব। সুতরাং কোন সালাফী ঐ সালিস বা আপোসে সম্মত হলে এবং ঐ জাতীয় দলে শামিল হলে ওতে বাতিল থাকা সত্ত্বেও ওর প্রতি অন্তরঙ্গ সম্প্রীতি রাখবে এবং তা ছাড়া বিরোধী অন্যান্য সবকিছুর প্রতি (সুন্নাহ হলেও) বিদ্বেষ পোষণ করবে এবং ভাববে এটাই সঠিক ও বাকী বেঠিক। অনেক ক্ষেত্রে অন্যায়কে অন্যায় জানা সত্ত্বেও কোন স্বার্থে তার প্রতিবাদ করতে নীরব হবে। ফলে ঈমান ও কুফর তার নিকট একাকার হয়ে সালাফিয়াত বা সুন্নিয়াত চুরমার হয়ে যাবে। যেহেতু অন্যায়ের সাথে আপোস করে সালাফিয়াত থাকে না। কারণ, হক এক ও অদ্বিতীয়। যেমন আল্লাহ তাআলা বলেন,

فَمَاذَا بَعْدَ الْحَقِّ إِلَّا الضَّلَالُ

অর্থাৎ, হক ও সত্য ত্যাগ করার পর বিভ্রান্তি ছাড়া আর কি? (সুরা ইউনুস ৩২ আয়াত) আর সে হকের পথ সরল। বাকি ডানে বামে সবই বাঁকা পথ। যাতে ভ্রান্তি ও ভ্রষ্টতা ছাড়া কিছু নেই। যেমন সরল রেখার আয়াত ও হাদীসে পুর্বে আলোচনা করা হয়েছে।

অতএব বলাই বাহুল্য যে, একজন সালাফী বা আহলে সুন্নাহ কোন বিদআতীর দলে একাকার হতে পারে না। (অবশ্য কূটনীতির ক্ষেত্রে ভিন্ন কথা) আহলে সুন্নাহ ও সালাফী একতার ডাক দেয়, ইসলামী রাষ্ট্র রচনা করতে চায় এবং ঐক্য ও মিলনকে ওয়াজেবও মনে করে। তবে ন্যায় ও তাওহীদের উপর কিতাব ও সুন্নাহর উপর এবং জামাআত ও সাহাবাগণের সমঝের উপর। কিতাব ও সুন্নাহর ডাকে জামাআত ও সাহাবাগণের সমঝের আওয়াজ ভিন্ন অন্য কোন ঐক্যের প্রতি সালাফীরা আহবান করে না এবং মিথ্যা আহবানে সাড়া দেয় না। যেহেতু একতা কেবল কিতাব ও সুন্নাহর (শুদ্ধ ও সঠিক জ্ঞানের) প্লাটফর্মে সম্ভব। শির্ক ও বিদআতের ‘জগাখিচুড়ি’ ময়দানে সম্ভব নয়। কেউ যদি সলফ বা আহলে সুন্নাহর রীতি-নীতি অবলম্বন করে এবং শির্ক ও বিদআত বর্জন করে একতা প্রতিষ্ঠার জন্য বাতিলকে স্বীকৃতি দিয়ে। কোন সালাফী আপন (কুরআন ও সহীহ সুন্নাহ তথা সাহাবার) নীতি ও বিশ্বাসের একটি হরফও ছাড়তে বিন্দুমাত্র রাজী নয়।

পক্ষান্তরে ঐ ধরনের আপোস ও ঐক্যের মানুষদেরকে ঐক্যবদ্ধ দেখলেও তাদের। আপোষের আন্তরিক ও মানসিক মিল থাকে না। ফলে ঐ মরিচীকাকে দুর হতে পানি মনে হলেও নিকটে বা বাস্তবে তা নয়। যে অট্টালিকা কাঁচা-পাকা-ভুয়া প্রভৃতি ইষ্টক দ্বারা নির্মিত, তা যে তিষ্ঠিতে পারে না অথবা অদুরেই সদ্যপাতী হয়, তা সকল স্থপতির জ্ঞান অবশ্যই আছে।

আব্দুল্লাহ বিন উমার (রাঃ) যার হলফ করেন, তাঁর শপথ! যদি ওদের কারো উহুদ (পর্বত) সমপরিমাণ সোনা থাকে এবং তা দান করে তবে আল্লাহ ততক্ষণ পর্যন্ত তা কবুল করবেন না, যতক্ষণ পর্যন্ত না সে তকদীরের উপর ঈমান এনেছে। ' (মুসলিম)।

কাতাদাহ বলেন, কেউ যখন কোন বিদআত রচনা করে, তখন (আহলে সুন্নাহর) উচিত, তা সকলের সম্মুখে উল্লেখ করা যাতে সকলে তা হতে বাঁচতে পারে।

সলফে সালেহীনগণ এইভাবে বিদআতের খন্ডন, প্রতিবাদ ও প্রতিকার করেছেন। তাঁরা কেবল ভ্রষ্ট বিদআতীদের মত ও পথের খন্ডন করে এবং তাদের বাতিল ও বিভ্রান্তি বর্ণনা করেই তাদের মুকাবিলা করেননি; বরং সকল মানুষকে তাদের মজলিসে বসতে সতর্ক করেছেন, তাদের সহিত কথা বলতে সাবধান করেছেন। তাদের প্রতি স্মিত মুখ হতে, তাদেরকে সালাম করতে এবং তাদের সালামের উত্তর দিতেও বাধা দিয়েছেন। বরং অনেকে তাদের সহিত একত্রে এক পরিবেশে বাস করতেও অপছন্দ ও হুশিয়ার করেছেন।

এতে বুঝা যায় যে, অন্যায়ের সহিত কোন আপোস নেই। পাপকে ঘৃণা কর। পাপীকে নয় বলে তাদের সহিত কোন বন্ধুত্ব নেই। যে যা করছে করুক, নামে মুসলিম হলেই হবে বলে তার কুফর ও বিদআতের প্রতি ভক্ষেপ না করে অনবধানতায় ঐক্য সৃষ্টি করার কথা যুক্তিযুক্ত নয়। তবে পূর্বোক্ত উক্তিগুলির এ অর্থ নয় যে, তাদের নিকট বসে তাদেরকে সত্যের দিকে আহবান করা হবে না বা সঠিক পথনির্দেশ করে তাদের ভুল সংশোধন করা হবে না অথবা তাদের বিভ্রান্তি ও সন্দেহ নিরসন করার উদ্দেশ্যে কোন ঠান্ডা বিতর্ক করা হবে না। বরং তাদের সহিত প্রজ্ঞা, যুক্তি, দলীল ও সদুপদেশের সাথে আলোচনা করতে হবে এবং তাদেরকে সত্য পথের সন্ধান দিয়ে ভ্রান্ত পথ হতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করতে হবে। কারণ তা ভালো কাজের আদেশ ও মন্দ কাজে বাধা দান করার অন্তর্ভুক্ত; যা দাওয়াতি কাজের বিভিন্ন মৌলনীতি ও ভিত্তির অন্যতম। যার আদেশ আল্লাহ তাঁর কিতাবে ঘোষণা করেছেন; তিনি বলেন,

وَلْتَكُن مِّنكُمْ أُمَّةٌ يَدْعُونَ إِلَى الْخَيْرِ وَيَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَيَنْهَوْنَ عَنِ الْمُنكَرِ ۚ وَأُولَٰئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُونَ

অর্থাৎ, তোমাদের মধ্যে এমন একটি দল থাকা উচিত, যারা (লোককে) কল্যাণের দিকে আহবান করবে এবং সৎকাজের নির্দেশ দিবে ও মন্দ কার্যে বাধা দান করবে। আর এরাই হবে সফলকাম। (সুরা আলে-ইমরান ১০৪ আয়াত)

সুতরাং বিদআতীদের বিদআতে প্রতিবাদ করা, তাদের সহিত প্রতর্কে তাদেরকে পাস্ত করা এবং তাদেরকে সৎপথের নির্দেশনা দেওয়া যাদের ক্ষমতায় আছে তারা অবশ্যই তাদের মজলিসে বসে সে উদ্দেশ্য সাধন করবে। কিন্তু যাদের সে ক্ষমতা নেই, দিতে গিয়ে হারিয়ে যাওয়ার যাদের ভয় আছে এবং তাদের বিভ্রান্তিমূলক ও সুশোভিত কথায় প্রভাবান্বিত হওয়ার যাদের আশঙ্কা আছে, তারা যেন তাদের বৈঠকে না বসে।

🔴••• সুফইয়ান আস-সাওরী (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,
যে ব্যক্তি একজন বিদ'আতীর সাথে বসে সে তিনটি বিষয়ের (যেকোনো) একটি থেকে মুক্ত নয়ঃ
১) হয়তো সে তার নিজ ব্যতিত অন্য আরেকজনের জন্য ফিতনা হয়ে দাঁড়ায়,
২) অথবা ভ্রান্ত মতবাদের কিছু তার অন্তরে পতিত হয়, সুতরাং এর মাধ্যমে সে পিছলে যায় এবং আল্লাহ তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করান,
৩) অথবা সে বলে, 'তারা (বিদ'আতীরা) কী বলে তা নিয়ে আমি চিন্তিত না কারণ আমি আমার (বিভ্রান্ত না হওয়ার) ব্যাপারে নিশ্চিত।' কিন্তু যে কেউ তার দ্বীনের ব্যাপারে নিজেকে নিরাপদ মনে করে, চোখের পলকে তা তার থেকে ছিনিয়ে নেয়া হবে।"
📖 [ইমাম ইবন ওয়াদ্দাহর আল-বিদ'আহ, পৃষ্ঠা নং: ৫৪]

••• উসমান বিন যায়েদাহ বলেন, সুফিয়ান আমাকে উপদেশ দিয়ে বলেন, ‘বিদআতীদের সাথে ওঠা-বসা করো না।’
📖 [আল ইবানাহ ২/৪৬৩, ৪৫২]

••• ফিরয়াবী বলেন, ‘সুফিয়ান সওরী আমাকে অমুক বিদআতীর সংশ্রবে যেতে নিষেধ করেছেন।’
📖 [আল ইবানাহ ৪৫৩]

••• ইবনুল মুবারক বলেন, ‘খবরদার কোন বিদআতীর সাথে বসো না।’
📖 [আল ইবানাহ ৪৫৪]

••• আইয়ুব সাখতিয়ানীকে একটি লাশ গোসল দেওয়ার জন্য ডাকা হল। তিনি লোকেদের সাথে বের হলেন। অতঃপর লাশের চেহারার ঢাকা সরিয়ে তিনি মুর্দাকে চিনতে পারলেন। তিনি বললেন, ‘তোমরা তোমাদের লাশের দিকে অগ্রসর হও (তোমাদের লাশ তোমরা নিজেরা দেখে নাও)। আমি তার গোসল দেব না। আমি তাকে বিদ'আতীর সাথে চলাফেরা করতে দেখেছি।’
📖 [আল-ইবানাহ ২/৪৭৮, ৫০৩]

বিদআতীকে নছীহত (সদুপদেশ) করা এবং তার বিদআতের প্রতিবাদ করা ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে বিদআতীদের সাথে সাক্ষাৎ করতে যাওয়া, তাদের সাথে চলা-ফেরা করা হারাম। কেননা এতে করে তাদের সাথে মেলা-মেশাকারীদের মধ্যে খারাপ আকীদা ও আমলগুলোর প্রভাব পড়তে পারে এবং অন্যদের মাঝেও তাদের বিদআত প্রবেশ করতে পারে।

বিদআতীদের থেকে সাবধান ⚠️⚠️⚠️⚠️

Videos (show all)

🔴পাক্কা মুশরেক গিয়াস উদ্দিন তাহেরিকে উচিৎ জবাব দিলেন: 🎙️উস্তাদ আজমল হোসাইন মাদানি হাফিযাহুল্লাহ#highlight #instagood #mo...
🔴ঈমান ভঙ্গের কারণসমূহ...🎙️প্রফেসর ড. আবুবকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া হাফিয্বাহুল্লাহ্ ◾শাইখ মতিউর রহমান আল-মাদানি হাফিয্বাহুল্...
📌 এবার সত্য কথা বলা শুরু করলেন আবরার সাহেবরা। তাবীজ বিক্রি করে আর ৪০’শা-মিলাদ করে বেশি দিন ভাত খাওয়া যাবেনা।ইনশা আল্লাহ ...
▌১১২ টি কবিরা গুনাহ, কিভাবে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবেন?.জেনে নিন। .🎙ডক্টর মুহাম্মদ ইমাম হোসেন হাফিয্বাহুল্লাহ
⭕ নিজের স্বামীর সম্পদ বাড়াতে,       স্বামীকে সুস্থ রাখতে ও হায়াতে বরকত হওয়ার       জন্য স্ত্রীর করণীয় ||🎙️শায়খ ড. মুযাফফ...
যেখানে অধিকাংশ মানুষ সলাতকে সাপ্তাহিক একটা অনুষ্ঠানে পরিনত করে ফেলেছে, এদিকে খেলা চলাকালীন সলাত আদায় করছে মেহেদী হাসান ম...
🔴রেফারেন্স নেই, নোট নেই, পৃষ্ঠা নম্বর নেই এমন কোনো বই পড়বেন না!______________________________🎙️শাইখ ড. খন্দকার আব্দুল্লা...
▋স্বামীর কাপড় ধুয়ে দেওয়া সংসারের কাজ করায় স্ত্রীর দায়িত্ব!🎙️শাইখ মতিউর রহমান মাদানী হাফিয্বাহুল্লাহ।
فَإِذَا دَخَلْتُم بُيُوتًا فَسَلِّمُوا عَلَى أَنفُسِكُمْ تَحِيَّةً مِّنْ عِندِ اللَّهِ مُبَارَكَةً طَيِّبَةً كَذَلِكَ يُ...
এই বাচ্চাটির নাম খলিফা আলী । বয়স ৪ বৎসর । আলী তার বাবার সাথে ওমরাহ করতে এসে কাধে উঠে মধুর সুরে আযান দিচ্ছিলো । -তাওয়াফরত...