Bhola Tune BD

এই জুতাটি এখন বাংলাদেশের সবচেয়ে নিখুঁত ছবি।

#আগুন লাগার পর শিশু নারী শ্রমিকেরা জুতোয় নিজের নাম লিখে জানালা দিয়ে ছুড়ে মেরেছিলো। বেওয়ারিশ হয়ে দাফন হতে না চাওয়া এই শ্রমিকেরা মরতে মরতে জানিয়ে গিয়েছে যে তারা ওই তালা বন্ধ দরজার ওপারে বেঁচে থাকা মানুষ ছিল। মালিক, মালিকের পোষা রাষ্ট্র, সরকার, তার প্রতিষ্ঠান কেও কখনও এই শিশুদের বেঁচে থাকার রসদ দেয়নি, কিন্তু স্বপ্ন কাড়ার, মৃত্যুর প্রতিটা পথ বোনার নিয়ম, অনিয়মেরে দলিল লিখে গেছে। এই শিশুদের শৈশব নেই, দাসত্ব আছে। পিঠে ব্যাগ আর লম্বা দুই বেণী বুকের কাছে ঝুলিয়ে মাথা দোলাতে দোলাতে স্কুল যাওয়া নেই, কিন্তু কাঁধের ওপর ভাইয়ের চিকিৎসার দেনা শোধ করার বোঝা আছে। বিকেলের রোদে পুতুল খেলা নেই, বরং তারা ফড়িং হয়ে লাফানোর বিকেল বেঁচে মিথ্যা ফলের রসে ভেজাল রং মিশিয়ে। জনসন কিংবা মেরিল বেবী লোশন তাদের গায়ে মিষ্টি দুধেলা গন্ধ মাখে না, তবে তাদের কয়লা পোড়া শরীর আছে। রাতের বেলায় নরম তুলতুলে বালিশে মা এর বলা রূপকথারা তাদের জন্য ভিড় জমায় না, কিন্তু ভোর রাতে তাদের মায়ের বুক ফাটা তড়পানো আছে -"আমার মায়ের হাড্ডিগুলা খুইজ্জা দেন স্যার।"
ভুলে যাবার এই সময়ে হাড় মজ্জা কয়লা হতে হতে এই শিশুরা শেষ চেষ্টা করে গেছে তাদেরকে মনে রাখানোর। এই জুতা রাষ্ট্রের যোগ্য উপহার। শিশু শ্রমিকের এই জুতা সংসদভবন, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো, সজীব গ্রূপের প্রতিটি কারখানা, মালিকের বাসভবনের সামনে ঝুলতে থাকুক। এই জুতা স্বাক্ষী যে এই শিশুদের নাম ছিল, শিশুর সমান বয়স ছিল, বন্ধ দরজার ওপারে ওরা কাঠ কয়লার চাইতেও কম মূল্যে কয়লা হয়েছে। এই জুতা স্বাক্ষী যে শ্রমিকের জীবনের দরজা রাষ্ট্রীয় পাহারায়, সরকারী তোষামোদে, জনগণের টাকায় চলা প্রতিষ্ঠানের গাফিলতিতে সবসময় বন্ধ থাকে। এই জুতা স্বাক্ষী যে শ্রমিকের থেঁতলানো, বুলেটে ঝাঁঝরা, কিংবা আগুনে পোড়া শরীরের গ্যারান্টির ওপর দাঁড়ানো থাকে দেশের ৮% জিডিপি।
আমরা পরে আছি খেলা নিয়ে।
আমরা পরে আছি -- --- --।