আমাদের কাইতলা
Nearby government services
Satmura, Nabinagar
Brahmanbaria, Nabinagar
You may also like
amader kaitola aponader ka kaitolar pic o onnonu pic & post diay amader mul ordassho.sobayka pathok hoya like & comment diya pasa thakar junno onodud.
পাতিহাঁস
কাইতলা যজ্ঞেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয় (কযহস)
KAITOLA JAJNESWAR HIGH SCHOOL
৩১ শে জানুয়ারি ২০২২ খ্রিঃ
২০ নং কাইতলা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে, বিজয়ী মেম্বার মহোদয়গন #আমাদের_কাইতলার পক্ষ থেকে
আপনাদের জানায় প্রাণঢালা শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। এবং অনেক অনেক শুভকামনা।
অভিনন্দন নৌকার মাঝি!
দ্বিতীয়বার, ২০নং কাইতলা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ এর চেয়ারম্যান হয়েছেন, জনাব মোঃ শওকত আলী।
অনেক অনেক শুভকামনা। আশা করছি বরাবরের ন্যায় আগামী দিনগুলো আমাদের সেবায় এবং অত্র ইউনিয়নের সার্বিক উন্নয়নের আপনার যথার্থ ভূমিকা রাখবেন।
▫️অদেরখালের শাখা▫️
আগে এই খালে এক সময়
রঙবেরঙের নৌকা ভাসতো।
গান বাজিয়ে নেচে-নেচে
রঙিলারা সব মাজারে যেতো।
আর এখন তো শুধু
কচুরিপানা ভাসে আর জমে।
পানার জন্য পানি দেখা যায়না!
মনেহয় সবুজের গালিচা বিছানো।
[মুশাউ]
জনপ্রিয় লাইব্রেরি || কাইতলা বাজার
#ভ্যারাইটিস #প্রোমোদদা #কেরামত #টেলিকম
বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক
কাইতলা
বিঃদ্রঃ দেয়ালে পোস্টার লাগিয়ে কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানের সৌন্দর্য্য অনুগ্রহ করে নষ্ট করবেন না।
Mountains of white clouds 2
শাদা মেঘের পর্বত / Mountains of white clouds
kaitola college para
nature of beauty || blue Sky
কাইতলা মহেশ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়
২০ নং কাইতলা দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ ভবন
আলীম উদ্দিন জোবেদা কলেজ
কাইতলা বাজার বাইতুল মামুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ
#কাইতলা_যজ্ঞেশ্বর_উচ্চ_বিদ্যালয়
ঐতিহ্যবাহী কাইতলা শ্রী শ্রী ষড়ভুজা মৃত্যুনাশিনী কালি মন্দির। প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো এই সার্বজনীন মন্দিরটি ২০১১ সালে পুনঃনির্মান করা হয়। দৃষ্টিনন্দন এই গোলাপি রঙের মন্দিরটি দেখতে এবং পূজো করতে প্রতি বছরই আসেন সনাতন ধর্মালম্বীরা। এটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলা ২০ নং কাইতলা দক্ষিণ এর কাইতলা বাজারে অবস্থিত।
কাইতলা যজ্ঞেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়
(নতুন ভবন, ৪ তলা)
Alimuddin Zubeda Hon's College
সৈয়দবাড়ি।
আলোকচিত্র
বৃষ্টি ভেজা বাজার (কাইতলা)
হাঁসের ঝাঁক || বুড়িনদী
কাইতলা পশ্চিম #শংকরপুর
#আমাদের_কাইতলা'র সবচেয়ে বড় বিল #শংকরপুর ও #গোয়ালী বিল। বিল'টির পশ্চিমের শেষ প্রান্তে #বুড়িনদী বয়ে গেছে #তিতাস অবধি। আর তিতাস #মেঘনায়। বুড়ি নদীর পশ্চিম পাড়ে #লাউর_ফাতেহপুর ইউনিয়ন, দক্ষিণে #মেহারী_ইউনিয়ন এবং উত্তরে #বিটঘর_ইউনিয়নের গ্রামসমূহ।
photo by Md. Shahab Uddin
device : samsung galaxy grand prime
ভূমি অফিস || রামনগর, কাইতলা
#২০নং_কাইতলা_দক্ষিণ_ইউনিয়ন
#মসজিদ (২০)
(১) ডালিম চেয়ারম্যান সাহেবের বাড়ীর মসজিদ।
(২) কাইতলা সড়ক বাজার বাইতুল নুর জামে মসজিদ ।
(৩) কাইতলা বাজার বাইতুল মামুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ।
(৪) কাইতলা পশ্চিম পাড়া জামে সংল্গন জামে মসজিদ।
(৫) কাইতলা ইউনিয়ন ভূমি অফিস জামে মসজিদ ।
(৬) কাইতলা পশ্চিম মধ্য পাড়া বায়তুল আমান জামে মসজিদ।
(৭) কাইতলা পশ্চিম পাড়া জমদ্দার,বাড়ী জামে মসজিদ ।
(৮) কাইতলা বাহার জামে মসজিদ।
(৯) কাইতলা কলেজ জামে মসজিদ।
(১০) কাইতলা মধ্যপাড়া সেলামত ক্বারী সাহেবের বাড়ী জামে মসজিদ।
(১১) কাইতলা মধ্যপাড়া শামসুছ জামান প্রধান শিক্ষকের বাড়ী জামে মসজিদ।
(১২) কাইতলা মধ্য পাড়া জামে মসজিদ।
(১৩) কাইতলা পূর্ব পাড়া উ: সমাজের জামে মসজিদ।
(১৪) কাইতলা সৈয়দ পাড়া জামে মসজিদ।
(১৫) কাইতলা পূর্ব পাড়া মধ্য সমাজের জামে মসজিদ।
(১৬) এড: আক্তার হোসেন সাঈদের বাড়ীর জামে মসজিদ।
(১৭) কাইতলা পূর্ব পাড়া সুদন মিয়ার জামে মসজিদ।
(১৮) গোয়ালী সাহেব বাড়ীর জামে মসজিদ।
(১৯) গোয়ালী মোস্তফা আলী সর্দারের বাড়ীর জামে মসজিদ।
(২০) গোয়ালী নাছির উদ্দিন(প্রা: চেয়ারম্যান) সাহেবের জামে মসজিদ।
বিঃদ্রঃ- নাম ভুল থাকলে এবং আরো মসজিদের নাম এই তালিকায় বাদ পড়লে দয়া করে কমেন্ট বা ইনবক্সে জানান।
caption : nature of beuty
location : shangkarpur || kaitola
device : samsung galaxy grand prime
photo by - muhammad shahabuddin
#কবি_জসীম_উদ্দীনের_স্মৃতিধন্য_নবীনগরের_কাইতলা_গ্রাম
“তুমি যাবে ভাই যাবে মোর সাথে
আমাদের ছোটো গাঁয়।
গাছের ছায়ায় লতায় পাতায় উদাসী বনের বায়…” [৫](নিমন্ত্রণ)
এই জনপ্রিয় কবিতাটির রচয়িতা কবি জসীম উদ্দীন।
জসীম উদ্দীন বাংলা সাহিত্যের একজন বিশেষ সম্মানিত ও বহু পুরস্কারে পুরস্কৃত বহুমুখী প্রতিভাবান কবি। তিনি প্রেসিডেন্টের প্রাইড অব পারফরমেন্স পুরস্কার, (পাকিস্তান ১৯৫৮); রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মান সূচক ডি. লিট ডিগ্রি, (ভারত ১৯৬৯); ১৯৭৪ সনে বাংলা একাডেমি পুরস্কার (প্রত্যাখান করেন), স্বাধীন বাংলাদেশের একুশে পদক, (বাংলাদেশ ১৯৭৬) এবং স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার ১৯৭৮ (মরণোত্তর) লাভ করেন। এমন সম্মানিত একজন মানুষ একদিন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর উপজেলার পাড়াগাঁয়ে এসেছিলেন। অথচ তা কোথায়ও লেখা নেই! শুধু মুখ থেকে মুখে। এভাবে কী স্মৃতিরা বাঁচে? হারিয়ে যায় বিস্মৃতির অতলে।
উনিশ শতকের শুরুতে আধুনিকতার নামে পশ্চিমা সাহিত্যের লুহাওয়ার ধাক্কায় হারিয়ে যেতে বসে আমাদের নিজস্ব ইতিহাস ও ঐতিহ্যের ধারা। বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় দশকে এ ভাঙ্গা-গড়ার খেলা থেকে যিনি ছিলেন নির্বিকার তিনি হলেন কবি জসীম উদ্দীন। সারা জীবনভর কবি তাঁর লেখনির মাঝে মাঠের রাখাল,দিনমজুর, সাপুড়ে,বেদে সহ পল্লী জীবনের সহজ সরল মানুষের হাসি কান্না আনন্দ বেদনা প্রেম বিরহের চালচিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন।তাঁর কবিতায় দোল খায় চিরন্তন গ্রাম্য বাংলার কুমড়োর ডগা,কচি পাতা, ছোট্টো নদীর ঝিলমিল ঢেউ। কবি ‘পল্লী’ উপাধিতে বিপুল খ্যাতি ও পরিচিতি লাভ করেছিলেন সত্য।কিন্তু তাঁর অনুপম কাব্য গাঁথা কতো যে আধুনিক তা গবেষণা না করলেও অতি সহজে বুঝা যায়।
সময়টা ১৯৬৭ সালের ফাল্গুনের শেষ কিংবা চৈত্র মাস। নবীনগর উপজেলার কাইতলার উদ্দেশ্যে তিনি গাড়িতে করে প্রথমে গোকর্ণ ঘাট আসেন।তখন কাইতলা পর্যন্ত গাড়িতে আসার মত রাস্তা ছিলনা। তাই গোকর্ণ ঘাট থেকে লঞ্চে করে ময়দাগঞ্জ বাজার। সেখান থেকে ঘোড়ার পিঠে চড়ে কাইতলায় আসেন। ময়দাগঞ্জ থেকে আসার পথে রাস্তায় কবিকে একনজর দেখতে মানুষের ভীড় ছিল চোঁখে পড়ার মত।
বিকাল বেলা কাইতলা হাইস্কুলের মাঠে কবিকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানো হয়। সামিয়ানা টাঙিয়ে নিচে খড় বিছিয়ে দর্শনার্থীদের বসার জন্য সুব্যবস্থা করা হয়।দুপুর হতেই দূরদূরান্তের গ্রামগুলো থেকে বহু মানুষজন কবিকে একনজর দেখার জন্য স্কুল মাঠে এসে জমায়েত হতে থাকে। স্কুলের মাঠের অধিকাংশ জায়গা উৎসুক মানুষে পরিপূর্ণ। মাইকে ঘোষণা হচ্ছে, “পল্লী কবি জসীম উদ্দীন অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই আমাদের মাঝে এসে উপস্থিত হবেন।আপনারা এদিক সেদিক ঘুরাফেরা না করে পেন্ডেলের নীচে এসে বসে পড়ুন।” ঘোষণা শুনে সকল দর্শকবৃন্দ শামীয়ানার নীচে চুপচাপ বসে পড়ল। কিছুক্ষণ পর উপস্থিত দর্শক এদিক-সেদিক তাকায়।পল্লী কবির দেখা নেই। আসার নাম নেই! দর্শকদের শান্তনা দিয়ে বারবার ঘোষণা আসে, “এক্ষুনি কবি আমাদের মাঝে চলে আসবেন আপনারা ধৈর্য সহকারে বসুন।” কিন্তু কবি আর আসেনা। কবিকে অভ্যর্থনা জানাতে অনুষ্ঠানস্থলে শিক্ষকমন্ডলী সহ গ্রামের গণ্যমান্য ব্যক্তিগণ উপস্থিত থেকে অপেক্ষা করছেন। পরক্ষণে তাঁরা জানতে পান কবি স্কুলে আসার পথে স্কুলের উত্তর পার্শ্বের কামার বাড়িতে গিয়েছেন।
➤নভোদীপ কর্মকারের কামারশালায় পল্লী কবি জসীমউদ্দীন:
কাইতলা স্কুলে আসার পথে নভোদীপ কর্মকারের হাপর টানা ও হাতুড়িতে লোহা পেটানোর শব্দ শুনে স্কুলের উত্তর পার্শ্ববর্তী সেই কামারশালায় গিয়ে কিছুসময় তিনি বসে থাকেন। তিনি হাপরের বাতাসে কয়লার আগুনে পোড়ানো লাল রঙের লোহা এবং উড়ে উড়ে বেড়ানো অগ্নি স্ফুলিঙ্গগুলো দেখে পুলকিত হন।ভাবুক মনে তার কবিতার খাতায় কিছু একটা(কবিতা) লেখেন। তবে সেখানে বসে কী কবিতা লিখেছেন তা জানা সম্ভব হয়নি। কাইতলা যজ্ঞেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক মরহুম এম এস জামান স্যারের মুখে বেশ কয়েকবার এ গল্প আমি শুনেছি।
নভোদীপ কর্মকারের কামারশালায় কবির অবস্থানের কথা জানতে পেরে অনুষ্ঠানস্থল থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষ ছোটছোট ছেলে মেয়েদের নিয়ে দলবেঁধে কামার বাড়িতে গিয়ে উপস্থিত হন ।মুখরিত ছেলে মেয়েদের দেখে কবির ধ্যান ভাঙ্গে। এবার কবি নিজেই মন্থরগতিতে ছেলে মেয়েদেরকে নিয়ে অনুষ্ঠানের পথে চলেন। কবির বগলের নিচে কচিকাঁচা ছেলেমেয়েদের হাত চেপে হাততালি দিতে দিতে নিজের লেখা কবিতা (মামার বাড়ি)
“আয় ছেলেরা, আয় মেয়েরা,
ফুল তুলিতে যাই
ফুলের মালা গলায় দিয়ে
মামার বাড়ি যাই।
—————
—————
কাঁদি-ভরা খেজুর গাছে
পাকা খেজুর দোলে
ছেলেমেয়ে, আয় ছুটে যাই
মামার দেশে চলে।”
বলতে বলতে মঞ্চে এসে বসেন। এ সময় কবিকে অভ্যর্থনা জানাতে রাস্তার দু’পাশে দাঁড়িয়ে থাকা ছেলেমেয়েরাও কবির সাথে তাল মিলিয়ে হাততালি দিতে থাকে।
অনুষ্ঠানে কবির প্রতি মানপত্র পাঠ করে শোনানো হয়।বিমুগ্ধ কবি তার প্রতিত্তোরে কাইতলা গ্রামের জনগণ ও উপস্থিত সকলের প্রতি আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। অতঃপর কবি তাঁর ‘পল্লী জননী’ কবিতাটি পাঠ করেন।পল্লী জননী কবিতা লেখার পটভূমিও বর্ণনা করেন।
➤কবির প্রতি মানপত্র পাঠ:
কবি যখন কাইতলা আসেন বাংলা সাহিত্যে তখন কবির অবদান অনেক। চারদিকে তখন তাঁর অনেক সুনাম। তাই কবিকে সম্মাননা/সংবর্ধনা জানানোর জন্যই আমন্ত্রণ জানানো হয়। এ প্রসঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও আমার প্রাথমিক শিক্ষা জীবনের স্কুল শিক্ষক জনাব, ছৈয়দ জাকির হোসেন কিরণ (৭৫) বলেন, “তিনি তখন অনেক সম্মানিত মানুষ, কাইতলার লোকজনও সংস্কৃতিমনা ছিল,তাই কবিকে সম্মান জানাতেই দাওয়াত করা হয়েছিল।”
ঐ অনুষ্ঠানে কবির প্রতি একটি মনোমুগ্ধকর মানপত্র পাঠ করা হয়েছিল। এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মধ্য থেকে কেউ একজন মান পত্রখানা পাঠ করেছিল বলে জানিয়েছেন উক্ত স্কুল থেকে ৬৯ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী জনাব নাইমুল হক (মাষ্টার)। স্কুলটির বর্তমান প্রধান শিক্ষক জনাব আলহাজ্ব লিয়াকত আলী স্যারের নিকট কবি জসীম উদ্দীনের কাইতলা স্কুলে শুভাগমন উপলক্ষে স্কুলের নথিশাখায় কোনো প্রকার ডকুমেন্টস/ মান পত্রের ডুপ্লিকেট কপি আছে কীনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এত পুরান ঘটনা তুমি যে নতুন করে এটা নিয়া ভাবতেছ তাই আশ্চর্য। তোমাকে নিয়ে আমরা গর্ববোধ করি। অনেক উচ্চে যাবা তুমি। তখনকার কেউ এমন করে ভাবে নাই। ত আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর সকল কাগজ পত্র দেখছি কিন্তু কবি জসীম উদ্দীনের আগমনের কোন প্রমাণপত্র পাই নাই।” তিনি আরো বলেন, “প্রমাণপত্র থাকুক আর না থাকুক তিনি এসেছিলেন এটা সত্য।”
➤কবি কণ্ঠে পল্লী জননী কবিতা পাঠ:
কবিকে সংবর্ধনা দেওয়া অনুষ্ঠানে তিনি তাঁর লেখা পল্লী জননী কবিতাটি পাঠ করেন। বল্লভপুর গ্রামের বাসিন্দা অব: সরকারি প্রাঃ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জনাব নাইমুল হক (৮০) বলেন, “তখন আমরা কাইতলা হাইস্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র। আমাদের পাঠ্যবইয়ে ও সিলেবাসে পল্লী জননী কবিতাটি ছিল। কবি প্রথমে পল্লী জননী কবিতা লেখার ঘটনা বলেন।অতঃপর অত্যন্ত দরদী গলায় তিনি তা পাঠ করেন।”
“তখন গ্রামে বিদ্যুৎ ছিলনা।সন্ধ্যার সাথে সাথেই লোকজন রাতের খানাপিনা শেষ করে ঘুমিয়ে যেত।সন্ধ্যার পরপরই পল্লী এলাকায় ভূতুড়ে পরিবেশ নেমে আসতো। একদিন গভীর রাতে কিছু দূরের এক বাড়িতে তিনি প্রদীপের আলো দেখতে পান। কৌতুহলী কবি কাউকে না জানি সেই বাড়ির দরজা পর্যন্ত যান। কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন।সে রাতে ছনের ঘরের ভাঙ্গা বেড়ার ফাঁক দিয়ে অসুস্থ সন্তানের সুস্থতায় চিন্তাক্লিষ্ট এক গবীর অসহায় মায়ের বাস্তব অবস্থা স্বচোঁখে দেখেন। আর সেই রাতেই বেদনার্ত মন নিয়ে কবি লিখলেন ‘পল্লী জননী’ কবিতা।
“রাত থম থম স্তব্ধ, ঘোর-ঘোর-আন্ধার,
নিশ্বাস ফেলি, তাও শোনা যায়, নাই কোথা সাড়া কার।
রুগ্ন ছেলের শিয়রে বিসয়া একেলা জাগিছে মাতা,
করুণ চাহনি ঘুম ঘুম যেন ঢুলিছে চোখের পাতা।
শিয়রের কাছে নিবু নিবু দীপ ঘুরিয়া ঘুরিয়া জ্বলে,
তারি সাথে সাথে বিরহী মায়ের একেলা পরাণ দোলে।
——————–
——————–
ঘরের চালেতে ভুতুম ডাকিছে, অকল্যাণ এ সুর,
মরণের দুত এল বুঝি হায়। হাঁকে মায়, দুর-দুর।
পচা ডোবা হতে বিরহিনী ডা’ক ডাকিতেছে ঝুরি ঝুরি,
কৃষাণ ছেলেরা কালকে তাহার বাচ্চা করেছে চুরি।
ফেরে ভন্ ভন্ মশা দলে দলে বুড়ো পাতা ঝরে বনে,
ফোঁটায় ফোঁটায় পাতা-চোঁয়া জল গড়াইছে তার সনে।
রুগ্ন ছেলের শিয়রে বসিয়া একেলা জাগিছে মাতা।
সম্মুখে তার ঘোর কুজঝটি মহা-কাল-রাত পাতা।
পার্শ্বে জ্বলিয়া মাটির প্রদীপ বাতাসে জমায় খেলা,
আঁধারের সাথে যুঝিয়া তাহার ফুরায়ে এসেছে তেল।”[৩]
➤কবি কণ্ঠে কবর কবিতা পাঠ:
কবিকে তার লেখা শিল্পোত্তীর্ণ ‘কবর’ কবিতা আবৃত্তি করে শুনানোর অনুরোধ করা হয়। এবং কবর কবিতা লেখার পটভূমিও জানতে চাওয়া হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধা হুমায়ুন কবীর বলেন কবি বলেছেন, “তিনি একদিন পাশের গ্রামের রাস্তা ধরে যাওয়ার পথে দেখলেন, লাঠি হাতে সাদা পাঞ্জাবি পরিহিত একজন বয়স্ক মুরুব্বি তার শহুরে নাতিকে পারিবারিক কবরগুলো দেখাচ্ছেন। কবি কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে দেখলেন বৃদ্ধ তার নাতিকে বলছে- তোর নানি অনেক ভাল মানুষ ছিল, অসময়ে আমাকে একা রেখে সে চলে গেলো। নাতি এটা ওটা প্রশ্ন করে আর নানা উত্তর দেয়। এই ঘটনা কবির কঁচিমনে গভীর দাগকাটে।আর ঐ ঘটনাকে উপজীব্য করেই তিনি রচনা করেন তাঁর অমর সৃষ্টি কবর কবিতা।
অতপর কবি অভিনয় করে কবর কবিতাটি পাঠ শুরু করেন।কবি কবিতা পাঠ করছেন,আমার চোখে পানি চলে আসে, কবির চোঁখেও পানি।আমি কাঁদি,কবিও কাঁদেন।সেইদিন বহু লোক চোঁখের পানি ধরে রাখতে পারেনি । সেখানে একটা শোকাবহ ও বেদনাদায়ক পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল।
“এই খানে তোর দাদির কবর ডালিম-গাছের তলে,
তিরিশ বছর ভিজায়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে।
এতটুকু তারে ঘরে এনেছিনু সোনার মতন মুখ,
পুতুলের বিয়ে ভেঙে গেল বলে কেঁদে ভাসাইত বুক।
এখানে ওখানে ঘুরিয়া ফিরিতে ভেবে হইতাম সারা,
সারা বাড়ি ভরি এত সোনা মোর ছড়াইয়া দিল কারা!
সোনালি ঊষার সোনামুখ তার আমার নয়নে ভরি
লাঙল লইয়া খেতে ছুটিলাম গাঁয়ের ও-পথ ধরি।
যাইবার কালে ফিরে ফিরে তারে দেখে লইতাম কত
এ কথা লইয়া ভাবি-সাব মোরে তামাশা করিত শত।
এমনি করিয়া জানি না কখন জীবনের সাথে মিশে
ছোট-খাট তার হাসি ব্যথা মাঝে হারা হয়ে গেনু দিশে।
বাপের বাড়িতে যাইবার কাল কহিত ধরিয়া পা
আমারে দেখিতে যাইও কিন্তু উজান-তলীর গাঁ।
শাপলার হাটে তরমুজ বেচি পয়সা করি দেড়ী,
পুঁতির মালার একছড়া নিতে কখনও হত না দেরি।-
————————————-
হাত জোড় করে দোয়া মাঙ দাদু, আয় খোদা! দয়াময়।
আমার বুজীর তরেতে যেন গো ভেস্ত নসিব হয়।
হেথায় ঘুমায় তোর ছোট ফুপু, সাত বছরের মেয়ে,
রামধনু বুঝি নেমে এসেছিল ভেস্তের দ্বার বেয়ে।
ছোট বয়সেই মায়েরে হারায়ে কী জানি ভাবিত সদা,
অতটুকু বুকে লুকাইয়াছিল কে জানিত কত ব্যথা!
ফুলের মতন মুখখানি তার দেখিতাম যবে চেয়ে,
তোমার দাদির ছবিখানি মোর হদয়ে উঠিত ছেয়ে।
বুকেতে তাহারে জড়ায়ে ধরিয়া কেঁদে হইতাম সারা,
রঙিন সাঁঝেরে ধুয়ে মুছে দিত মোদের চোখের ধারা।
একদিন গেনু গজনার হাটে তাহারে রাখিয়া ঘরে,
ফিরে এসে দেখি সোনার প্রতিমা লুটায় পথের পরে।
সেই সোনামুখ গোলগাল হাত সকলি তেমন আছে।
কী জানি সাপের দংশন পেয়ে মা আমার চলে গেছে।
আপন হস্তে সোনার প্রতিমা কবরে দিলাম গাড়ি,
দাদু! ধরধর বুক ফেটে যায়, আর বুঝি নাহি পারি।
এইখানে এই কবরের পাশে আরও কাছে আয় দাদু,
কথা কস নাকো, জাগিয়া উটিবে ঘুমভোলা মোর যাদু।
আস্তে আস্তে খুঁড়ে দেখ দেখি কঠিন মাটির তলে,
দীন দুনিয়ার ভেস্ত আমার ঘুমায় কিসের ছলে !
ওই দূর বনে সন্ধ্যা নামিয়ে ঘন আবিরের রাগে,
অমনি করিয়া লুটায়ে পড়িতে বড় সাধ আজ জাগে।
মজিদ হইতে আযান হাঁকিছে বড় সুকরুণ সুরে,
মোর জীবনের রোজকেয়ামত ভাবিতেছি কত দূরে।
জোড়হাত দাদু মোনাজাত কর, আয় খোদা! রহমান।
ভেস্ত নসিব করিও সকল মৃত্যুব্যথিত প্রাণ।”[৩]
১৯২৫ সালে কবি জসীম উদ্দীন রচিত ‘কবর’ কাবিতাটি প্রথম ‘কল্লোল’ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়।তখন কবি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বি.এ. ক্লাশের ছাত্র। কবিতাটি তাঁর ‘রাখালী’ কাব্যগ্রন্থে স্থান পায়।
ছন্দ- ষান্মাত্রিক মাত্রাবৃত্ত; প্রতি চরণে ৩টি পূর্ণ পর্ব ও ১টি অপূর্ণ পর্ব আছে; পূর্ণ পর্বের মাত্রা ৬ ও অপূর্ণ পর্ব ২ মাত্রার; মাত্রা বিন্যাস- ৬+৬+৬+২=২০
কবি ছাত্র থাকা অবস্থায়ই কবিতাটি প্রবেশিকা (এস.এস.সি.) পাঠ্যতালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়।
➤কবির (কণ্ঠে) উপস্থিত কবিতা রচনা:
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে কবিকে উপস্থিত একটি নতুন কবিতা বলার অনুরোধ করা হয়।অভিধানের সেরা শব্দগুলো যাঁর চিরচেনা,নতুন নতুন কবিতার ভাব যাঁর মাথায় সারাক্ষণ খেলা করে,তাঁর কথাই তখন হয়ে উঠে পাঠকপ্রিয় কবিতা। তিনি সেদিন ঠিকই ৮/১০ চরণের একটি কবিতা মুখে মুখে উপস্থিত দর্শকদের শুনিয়ে মুগ্ধ করেছিলেন। কবিতাটি ছিল ঠিক এমন-
“কাইতলা পড়ি মোরা ইসলামি মিশনে”
ডাকে পাখি, মৌমাছি উড়ে ফুলে পবনে
জমিদার বাড়ি পুকুর দীঘি গাছের সারী
হাটবাজার মন্দির মসজিদ কত এখানে।
“কাইতলা পড়ি মোরা ইসলামি মিশনে।” কেবল এ চরণটিই জনাব আলহাজ্ব নাইমুল হক স্যারের স্মৃতিতে আছে। বাকী তিনটি চরণ/লাইন আমার (নিজের) লেখা। তবে উল্লেখিত শব্দগুলো এবং কাব্যের মূল ভাব কবি জসীম উদ্দীনের মুখনিঃসৃত কবিতায় ছিল বলে নিশ্চিত করেছেন জনাব আলহাজ্ব নাইমুল হক স্যার।
➤কবির সম্মানে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় আমন্ত্রিত সাংস্কৃতিক কর্মী:
,✪ গোয়ালী গ্রামের মরহুম আবন মিয়া। কেউ কেউ বলতেন আবু। ওনি জারি সারি গান করতেন।নিঃসন্তান আবন মিয়ার পালক মেয়েকে মোঃ সানু মিয়ার নিকট বিয়ে দেন। কবি জসীম উদ্দীনের আগমন উপলক্ষে কবির সম্মানে আয়োজিত সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় জারি গান পরিবেশনের জন্য ওনাকে আমন্ত্রন করা হয়েছিল ।
✪ গুড়িগ্রামের কনু শেখ। একসময় পুথি পাঠের জন্য নূরনগর এলাকায় ওনার বেশ সুনাম ছিল। পুথি পাঠকের সাথে দোহারীও থাকত। কবি জসীম উদ্দীনের আগমন উপলক্ষে পুথি পাঠ করে শোনানোর জন্য কনু শেখও সদলবলে আমন্ত্রিত ছিলেন।
➤পল্লী কবি জসীমউদ্দিন ও কাইতলা জমিদার বাড়ি:
জসীম উদ্দীন (১৯০৩ – ১৯৭৬) একজন বাঙালি কবি, গীতিকার, ঔপন্যাসিক ও লেখক। ‘পল্লীকবি’ উপাধিতে ভূষিত, জসীম উদ্দীন আবহমান বাংলার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে লালিত প্রথম পূর্ণাঙ্গ আধুনিক কবি।ঐতিহ্যবাহী বাংলা কবিতার মূল ধারাটিকে নগরসভায় নিয়ে আসার কৃতিত্ব জসীম উদ্দীনের।তাঁর কবিতা বিভিন্ন ভাষায় অনূদিত হয়েছে।
পল্লী কবি জসীমউদ্দিন আনুমানিক ১৯৬৭ সালে কাইতলা এসেছিলেন। তিনি কাইতলা যজ্ঞেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয় পরিদর্শন করেন।ডাঃ মহানন্দ পোদ্দার ও কাইতলা যজ্ঞেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক জনাব আব্দুল খালেক সাহেবের আমন্ত্রণে তিনি কাইতলা এসেছিলেন।পোদ্দার বাড়িতে বিশ্রাম ও আপ্যায়নের ব্যবস্থা করা হয়।সেই সময় তিনি কাইতলা জমিদার বাড়িতেও যান এবং অস্তমিত জমিদার বাড়ির সৌন্দর্য ঘুরে ঘুরে দেখেন বলে জানা যায়।[৪]
➤কবিকে স্বচোখে যাঁরা দেখেছেন:
✪ কসবা-বাদৈর ইউনিয়নের বর্ণী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা (অব: বন্দর কর্মকর্তা) হুমায়ুন কবীর(৭৫) তখন জমশ্বেরপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে সেভেনের ছাত্র। তিনি তাঁর স্মৃতিচারণে আমাকে বলেন, “আমার গৃহশিক্ষকের (দশম শ্রেণির লজিং মাষ্টার)অনুপ্রেরণা পেয়ে কবিকে দেখার জন্য কাইতলা স্কুলে যাই। বিকালে কবি কাইতলা স্কুলে আসার পথে কামার বাড়ীতে ঢুকে পড়েন।মাইকে ঘোষণা করা হল,আপনারা অপেক্ষা করুন,কবি এসে গেছে,কিছুক্ষণ দেরী হবে।ছোট ছিলাম বলে অনেক কিছু মনে নেই।তবে প্রায় আধা ঘন্টার মত দেরী হওয়ায়,স্কুুল কমিটির লোকজন,তাকে আনার জন্য কিছু পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র ছাত্রী লাইন ধরে নিয়ে গেলেন কবির কাছে।তখন কবি শিশুদের দেখে কামার বাড়ীর মনযোগ নষ্ট হওয়ায়,তিনি শিশুদেরকে নিয়ে নাচনের ভান করে,হাতে তালি দিতে দিতে, বাচ্চাদেরকে আনন্দ দেয়ার জন্য,তারই কবিতা ‘আয় ছেলেরা আয় মেয়েরা,গাইতে গাইতে ষ্টেজে উঠে এসে বসলেন।জীবনে এই প্রথম পাঠ্য বইয়ের কবিতার লেখক কে নিজ চোঁখে
দেখছিলাম।এই আয়োজনটা করেছিল,কাইতলা স্কুলের মেট্রিক পরীক্ষার্থীগণ।সেই ছাত্ররাই কবিকে অনুরোধ করেছিল,কোন্ লক্ষ্য নিয়ে বা কেন কবর কবিতাটি লেখেছিলেন? কবি আবেগপ্রবণ হয়ে সেই কবর কবিতাটি পড়ে শেষ করলেন এবং কেন লেখে ছিলেন তা বললেন।তখন ছাত্ররা কেঁদেছিল।যেহেতু তাদের পাঠ্য ছিল।আমিও কেঁদেছিলাম।”
✪ কাইতলা গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ তফাজ্জল হোসেন (৮০) বলেন, আমরা তখন ছোট।কবিকে দেখেছি।ওনাকে মানপত্র দেওয়া হয়েছিল। বিশেষ কোন স্মৃতি এখন আর মনে পড়ছেনা।
✪ কাইতলা যজ্ঞেশ্বর উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী শিক্ষক জনাব মোঃ সাইদুল হক (৫৫) বলেন,”আমি তখন খুবই ছোট। প্রাথমিকে পড়ি। কবিকে কাইতলা বাজারের বিভিন্ন গলিতে গলিতে ঘুরতে দেখেছি।তিনি মাছ বাজার,সবজী বাজার ও গ্রাম্য ফলফলাদির বাজারে এটা সেটার বাজার দর জানতে চেয়েছেন।এতটুকুই আমার মনে পড়ে।”
➤তথ্য সংগ্রাহক ও লেখক:
এস এম শাহনূর
#তথ্যঋণ:
[১] স্মৃতিকথা।। জসীম উদদীন
[২] প্রফেসর শাহা আলম
বিভাগীয় প্রধান,ইংরেজি বিভাগ,
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজ।
[৩] রাখালী।। জসীম উদ্দীন
[৪] বিখ্যাতদের স্মৃতিবিজড়িত কাইতলা জমিদার বাড়ি।।এস এম শাহনূর
[৫] ধানক্ষেত।। জসীম উদ্দীন
Click here to claim your Sponsored Listing.
Contact the organization
Telephone
Website
Address
South Kaitala, Nabinagar
Brahmanbaria
Brahmanbaria
Pdf files of science related bangla books, science fiction books and Magazines are available here
Brahmanbaria, DEKHA10000
Hi This is Sadi Ahmed I'm viogger l Hev a new You Tube channels plz Follow me to get my videos every time
Madrasha Road
Brahmanbaria
Sadharan Bima Corporation (popularly known as SBC) is the one and only state-owned non-life insurer