Mufti Ekhtiar Arefi

Mufti Ekhtiar Arefi

Motivational speaker

13/11/2023
13/11/2023

বর্তমান দেশের অবস্থা ও আমাদের করণীয় কি বিষয় গুলো জানা খুবই জরুরি। ফিতনা বিষয়ে না জানলে আপনিও ফিতনাই পরেযেতে পারেন।

10/10/2023

ইয়াহুদীদের ব্যপারে কোরআনে কি বলা আছে।

ইহুদিরা মুসলমানদের প্রাণ আল আকসা দখল করে রেখেছে। আশ্রিত ইহুদিরা আজ আশ্রয়দাতাদের বাড়িঘরসহ দেশ জবর দখল করে নিয়েছে। মানবতা ও শান্তির ঠিকাদার পশ্চিমাবিশ্ব দখলদার ইসরাইলকে নগ্নভাবেই সমর্থন, সহযোগিতা ও সাহস দিয়ে যাচ্ছে। একটু আশ্রয়ের জন্য ফিলিস্তিনে এসে ফিলিস্তিন গ্রাস করা ইসরাইল পুরো বিশ্বের মুসলিমদের বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে নিরীহ ফিলিস্তিনিদের হত্যা করে যাচ্ছে। তাদের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, দ্বন্দ্বসংঘর্ষের মোকাবিলার জন্য ইহুদিদের মনস্তাত্ত্বিক, সামাজিক ও অন্যান্য চারিত্রিক গুণাবলি জেনে রাখা মুসলমানদের প্রয়োজন। আল্লাহ পবিত্র কোরআনে ইহুদিদের ওই সকল গুণাবলির তথা বৈপরীত্যের বর্ণনা দিয়েছেন। আজকের আলোচনায় তাদের চরিত্র ও পরিণতি নিয়ে আলোচনা করার চেষ্টা করা হলো।

ইহুদিরা ভীরু ও কাপুরুষ। আল্লাহ তায়ালা বলেন, তারা সবাই মিলেও তোমাদের সাথে লড়াই করবে না। হ্যাঁ, সুরক্ষিত জনপদ কিংবা দুর্গের দেয়ালের আড় থেকেই লড়াই করার সাহস করবে। (সূরা হাশর : ১৪)।
ইহুদিরা সর্বদা নবী-রাসূল এবং আল্লাহর সাথে কৃত চুক্তি ভঙ্গ করেছে। এখনও তারা যে কোনো চুক্তি ও সিদ্ধান্ত ভঙ্গ করতে কুণ্ঠা বোধ করে না। স্বার্থপরতা তাদের বৈশিষ্ট্য। তাই তারা জাতিসংঘসহ সকল আন্তর্জাতিক সংস্থার সিদ্ধান্ত ও প্রস্তবাবলি প্রত্যাখ্যান করে চলেছে। এ সম্পর্কে আল্লাহ বলেন, তাদের চুক্তি ও প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ, আল্লাহর আয়াতের সাথে কুফরী এবং অন্যায়ভাবে নবীদের হত্যা করার কারণে আল্লাহ তাদের অন্তরে গোমরাহির সিল মেরে দিয়েছেন। (সূরা নিসা : ১৫৫)

উপরোক্ত আয়াতে বর্ণিত আল্লাহর প্রিয় নবীদের হত্যা করার জঘন্য তৎপরতা চালিয়ে তারা প্রমাণ করেছে, তাদের স্বার্থের পরিপন্থী যে কোনো লোককে হত্যা করা তাদের দ্বারা সম্ভব। নিষ্ঠুরতা ইহুদিদের প্রধান চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলোর একটি। তারা ২ জন নবীকে হত্যা করেছে এবং আরেকজনকে হত্যার ষড়যন্ত্র করে ব্যর্থ হয়। তাদের এই পৈশাচিক মনোভাব এখনও বিদ্যমান। তারা হযরত ইয়াহইয়া (আ.)-কে হত্যা করে তার ছিন্ন মস্তক তাদের বাদশাহর রক্ষিতাকে উপহার দেয়। স্বয়ং মুসা (আ.)-এর ওপর তারা ভীষণ নির্যাতন চালিয়েছে। হযরত ঈসা (আ.)-কে তারা ক্রশে বিদ্ধ করার চেষ্টা চালিয়েছে। নাম না জানা আরো অনেক নবীকে তারা হত্যা করেছে।

ইহুদিরা পৃথিবীর দেশে দেশে অশান্তি ও গোলযোগ সৃষ্টি করে। মুসলমান ও খ্রিস্টানদের মধ্যে ঢুকে কুমন্ত্রণা দিয়ে তাদের বিভিন্ন সমস্যায় নিক্ষেপ করে ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা চালায়। এ ব্যাপারে আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেছেন, যখনই তারা যুদ্ধের আগুন জ্বালায়, আল্লাহ তা নিভিয়ে দেন এবং তারা যমীনে ফিতনা ফাসাদ ও গোলযোগ সৃষ্টির চেষ্টা চালায়। আল্লাহ বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের ভালোবাসেন না। (সূরা মায়েদা : ৬৪)।

তারা যেহেতু নিজেদের শ্রেষ্ঠ ও আল্লাহর নির্বাচিত উত্তম মানুষ বলে মানে, সেহেতু অন্য ধর্ম ও আদর্শের প্রতি তাদের অসহনশীলতা থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। এটা তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য। এ সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, ইহুদি ও খ্রিস্টানরা সে পর্যন্ত আপনার ওপর সন্তুষ্ট হবে না, যে পর্যন্ত না আপনি তাদের ধর্ম ও মিল্লাতের অনুসরণ করেন। (সূরা বাকারা : ১২০)।

মুসলমানদের শত্রু মনে করা তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের অংশ। ইহুদিরা মুসলমানদেরকে সর্বপ্রধান শত্রু মনে করে। পক্ষান্তরে অন্যদের সাথে তাদের কিছুটা মিত্রতা গড়ে ওঠে। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, হে নবী, আপনি ইহুদি ও মুশরেকদেরকে মুসলমানদের কঠোর শত্রু হিসাবে দেখতে পাবেন। (সূরা মায়েদা : ৮২)।

তাদের নির্যাতন, ষড়যন্ত্র ও ফাসাদ থেকে মানুষতো দূরের কথা, স্বয়ং আল্লাহও মুক্ত নন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ইহুদিরা বলে, আল্লাহর হাত বন্ধ। আসলে তাদের হাতই বন্ধ; তাদের এই বক্তব্যের জন্য তাদের ওপর অভিশাপ। বরং আল্লাহর হাত প্রসারিত ও উন্মুক্ত। তিনি যাকে ইচ্ছা তাকে দান করেন। (সূরা মায়েদা : ৬৪)।

বিশ্বাসঘাতকতা ইহুদিদের চরিত্রের আরও একটি বৈশিষ্ট্য। নিজেদের স্বার্থ লিপ্সার বশবর্তী হয়ে তারা সর্বত্রই বিশ্বাসঘাতকতার আচরণ করে। ইহুদি জাতি মূলত বিশ্বাসঘাতক জাতি। বিশ্বাসঘাতকতার জন্য ইহুদিরা বিভিন্ন দেশ থেকে বারবার বিতাড়িত ও বহিষ্কৃত হয়েছে। ইহুদিরা মজ্জাগতভাবে সীমালঙ্ঘনকারী। আল্লাহ তায়ালা বলেন, বনি ইসরাইলের যারা কুফরী করেছিল, তাদের ওপর লানত বর্ষিত হয়েছিল দাউদ এবং ইসা ইবনে মরিয়মের জবানে। এর কারণ তারা ছিলো নাফরমান ও সীমালঙ্ঘনকারী। (সূরা মায়েদা : ৭৮)।

10/10/2023

ফিলিস্তিন নিয়ে কোরআন-হাদিসে কী বলা হয়েছে

মুসলিমদের সব দল, উপদল, মাজহাব— এ ব্যাপারে একমত যে, ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে বায়তুল মুকাদ্দাস, মসজিদে আকসা এবং সমগ্র ফিলিস্তিনের মর্যাদা ও মাহাত্ম্য অনেক উচ্চ।

এর সংরক্ষণ, পবিত্রতা রক্ষা করা শুধু ফিলিস্তিনিদের নয়; বরং সব মুসলিমের ওপর ওয়াজিব। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে ফিলিস্তিনের অসংখ্য ফজিলত বর্ণিত হয়েছে।

এক. ইসরা ও মিরাজের ভূমি

আল্লাহ বলেন, পবিত্র ও মহিমাময় তিনি, যিনি তার বান্দাকে রাত্রে ভ্রমণ করিয়েছিলেন আল-মসজিদুল হারাম থেকে মসজিদুল আকসা পর্যন্ত, যার পরিবেশ আমি করেছিলাম বরকতময়, তাকে আমার নিদর্শন দেখানোর জন্য; তিনিই সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।’ (সুরা বনি ইসরাইল, আয়াত-১)

জেরুজালেম হলো ইসরা বা রাসুলুল্লাহর (সা.) রাত্রিকালীন ভ্রমণের সর্বশেষ জমিন। এখানে তিনি সকল নবীর নামাজের ইমামতি করেন। তার পর তিনি এখান থেকে ঊর্ধ্ব আকাশে ভ্রমণ করেন।

এর দ্বারা আল্লাহতায়ালা ঘোষণা করেন, বিশ্ব ধর্মীয় নেতৃত্ব ইহুদীদের কাছ থেকে নতুন রাসুল, নতুন কিতাব ও নতুন উম্মতের নিকট হস্তান্তর করা হয়। এখানে যদি ফিলিস্তিনিদের গুরুত্ব না থাকত, তা হলে আল্লাহ তার প্রিয় নবীকে মক্কা থেকেই সরাসরি ঊর্ধ্ব আকাশে ভ্রমণ করাতেন।

দুই. প্রথম কিবলা

মসজিদুল আকসা, ফিলিস্তিন হলো মুসলিমদের প্রথম কিবলা। যার দিকে মুখ করে রাসুলুল্লাহ (সা.) ও সাহাবিরা ১০ বছর নামাজ আদায় করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন, ‘তুমি যেখান থেকে বাহির হওনা কেন মসজিদুল হারামের দিকে মুখ ফিরাও এবং তোমরা যেখানেই থাকো না কেন ওর দিকে মুখ ফিরাবে।’( সুরা বাকারা, আয়াত-১৫০)

তিন. নবুয়ত ও বরকতময় ভূখণ্ড

আল-কোরআনের ৫ স্থানে মহান আল্লাহ ফিলিস্তিনকে বরকতময়, পুণ্যময় ভূখণ্ড বলেছেন।

১. সুরা বনি ইসরাইলের প্রথম আয়াতে। ‘যার আশপাশে আমি বরকত নাজিল করেছি।’

২. সাইয়িদুনা ইবরাহিম (আ.)-এর ঘটনা বর্ণনার সময়- ‘আর আমি তাকে ও লুতকে উদ্ধার করে নিয়ে গেলাম সেই ভূখণ্ডে, যেখানে আমি কল্যাণ রেখেছি বিশ্ববাসীর জন্য।’( সুরা আম্বিয়া, আয়াত-৭১)

৩. মুসা (আ.)-এর ঘটনা বর্ণনায়, যখন ফিরাউনের কবল থেকে মুসা (আ.) ও বান ইসরাইলকে উদ্ধার করে আনা হয় এবং ফেরাউন ও তার সৈন্যদলকে পানিতে ডুবিয়ে মারা হয়। আল্লাহ বলেন, ‘যে সম্প্রদায়কে দুর্বল মনে করা হতো, তাদের আমি আমার কল্যাণপ্রাপ্ত রাজ্যের পূর্ব ও পশ্চিমের উত্তরাধিকারী করি; এবং বনি ইসরাইল সমন্ধে আপনার প্রতিপালকের শুভ বাণী সত্যে পরিণত হলো, যেহেতু তারা ধৈর্যধারণ করেছিল। (সুরা আ'রাফ: ১৩৭)

৪. হজরত সুলায়মান (আ.)-এর ঘটনায়। মহান আল্লাহ তাকে রাজ্য দান করেছিলেন এবং সব কিছুকে তার অধীনস্থ করে দিয়েছিলেন। আল্লাহ বলেন, ‘আর সুলায়মানের বশীভূত করে দিয়েছিলাম উদ্দাম বায়ুকে; সে তার আদেশক্রমে প্রবাহিত হতো সেই ভূখণ্ডের দিকে যেখানে আমি কল্যাণ রেখেছি; প্রত্যেক বিষয় সম্পর্কে আমিই সম্যক অবগত।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত-৮১)

৫. সাবা-এর ঘটনায় আল্লাহ তাদের কীভাবে সুখ-শান্তিতে রেখেছিলেন। আল্লাহ বলেন, ‘ওদের ও যেসব জনপদের প্রতি আমি অনুগ্রহ করেছিলাম সেগুলোর মধ্যবর্তী স্থানে দৃশ্যমান বহু জনপদ স্থাপন করেছিলাম এবং ওইসব জনপদে ভ্রমণের যথাযথ ব্যবস্থা করেছিলাম এবং ওদেরকে বলেছিলাম— ‘তোমরা এসব জনপদে নিরাপদে ভ্রমণ কর দিনে ও রাতে।’ ( সুরা সাবা: আয়াত-১৮)

আল্লামা মাহমুদ আলুসী তাফসিরে রুহুল মাআনীতে উল্লেখ করেছেন, এই জনপদ বলতে শামকে ঝানো হয়েছে। আব্দুল্লাহ ইবন আব্বাস বলেন, এ জনপদ হলো,বায়তুল মুকাদ্দাস। (রুহুল মা'আনী, ২২/১২৯)

প্রাচীন শামদেশ (Levant) হলো— বর্তমান সিরিয়া, জর্ডান, লেবানন ও ঐতিহাসিক ফিলিস্তিন।

চার. তৃতীয় সম্মানিত শহর

হাদিসের আলোকে প্রমাণিত যে তিনটি শহর সম্মানিত— মক্কা, মদিনা ও ফিলিস্তিন বা বায়তুল মুকাদ্দাস।

সহিহ বুখারিও মুসলিমে হজরত আবু সাইদ খুদুরি (রা.) হতে বর্ণিত রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তিনটি মসজিদ ব্যতীত অন্য কোনো (জায়গা ইবাদাতের) উদ্দেশ্যে ভ্রমণে বের হওয়া যাবে না- মসজিদুল হারাম, মসজিদুল আকসা এবং আমার এই মসজিদ। (হাদিস, ৭০৭)

অন্য হাদিসে এসেছে, মসজিদুল আকসায় ১ রাকাত নামাজ আদায় অন্যান্য মসজিদের তুলনায় ৫০০ গুণ, মসজিদুল হারাম এবং মসজিদুন নববী ব্যতীত। (বুখারি, মুসলিম)

এসব কারণে ফিলিস্তিনকে ভালোবাসা, তাদের পাশে থাকা ঈমানের দাবি।

10/10/2023

‏يا حي يا قيوم برحمتك أستغيث أصلح لي شأني كُله ولا تَكِلْني إلى نفسي طرفة عين

‏يا حي يا قيوم برحمتك أستغيث أصلح لي شأني كُله ولا تَكِلْني إلى نفسي طرفة عين

‏يا حي يا قيوم برحمتك أستغيث أصلح لي شأني كُله ولا تَكِلْني إلى نفسي طرفة عين

28/07/2023

হিজরী বর্ষের সর্বপ্রথম মাস- মুহাররামুল হারাম তথা মুহাররম মাস। হাদীসের ভাষায়- শাহরুল্লাহ আলমুহাররাম। আল্লাহ তাআলা বছরের যে ক’টি মাসকে বিশেষ মর্যাদায় মহিমান্বিত করেছেন মুহাররম তার অন্যতম। পবিত্র কুরআন মাজীদে আল্লাহ তাআলা বলেন-

اِنَّ عِدَّةَ الشُّهُوْرِ عِنْدَ اللهِ اثْنَا عَشَرَ شَهْرًا فِیْ كِتٰبِ اللهِ یَوْمَ خَلَقَ السَّمٰوٰتِ وَ الْاَرْضَ مِنْهَاۤ اَرْبَعَةٌ حُرُمٌ ؕ ذٰلِكَ الدِّیْنُ الْقَیِّمُ. فَلَا تَظْلِمُوْا فِیْهِنَّ اَنْفُسَكُم ...

আল্লাহ যেদিন আসমান যমীন সৃষ্টি করেছেন সেদিন থেকেই মাসসমূহের গণনা আল্লাহ তাআলার নিকট তাঁর বিধান মতে বারটি। তন্মধ্যে চারটি মাস সম্মানিত। এটাই সহজ-সরল দ্বীন (-এর দাবি) অতএব তোমরা এ দিনগুলোতে নিজের উপর জুলুম করো না।... -সূরা তাওবা (৯) : ৩৬

এ চার মাস কী কী? হাদীস শরীফে তা বলে দেওয়া হয়েছে। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন- সময়ের হিসাব যথাস্থানে ফিরে এসেছে, আসমান-যমীনের সৃষ্টির সময় যেমন ছিল। (কারণ, জাহেলী যুগে আরবরা নিজেদের স্বার্থ ও মর্জিমতো মাস-বছরের হিসাব কম-বেশি ও আগপিছ করে রেখেছিল।) বার মাসে এক বছর । এর মধ্য থেকে চারটি মাস সম্মানিত। তিনটি মাস ধারাবাহিক- যিলকদ, যিলহজ্ব ও মুহাররম। আরেকটি হল রজব, যা জুমাদাল আখিরাহ ও শাবানের মধ্যবর্তী মাস। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৪৬৬২

হাদীসে এ মাসকে শাহরুল্লাহ তথা আল্লাহর মাস বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। হযরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

أَفْضَلُ الصِّيَامِ، بَعْدَ رَمَضَانَ، شَهْرُ اللهِ الْمُحَرّمُ، وَأَفْضَلُ الصَلَاةِ، بَعْدَ الْفَرِيضَةِ، صَلَاةُ اللّيْلِ.

রমযানের পর সবচে উত্তম রোযা হল আল্লাহর মাস মুহাররমের রোযা। আর ফরয নামাযের পর সবচে উত্তম নামায হল রাতের নামায (অর্থাৎ তাহাজ্জুদের নামায)। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৬৩

আরো ইরশাদ হয়েছে-

وَأَفْضَلُ الْأَشْهُرِ شَهْرُ اللهِ الَّذِي تَدْعُونَهُ الْمُحَرّمُ.

(রমযানের পর) শ্রেষ্ঠ মাস হচ্ছে আল্লাহর মাস, যাকে তোমরা মুহাররম বলে থাক। -সুনানে কুবরা, নাসাঈ, হাদীস ৪২১৬

প্রকৃতপক্ষে সকল মাসই তো আল্লাহর মাস। তথাপি এ মাসকে বিশেষভাবে ‘আল্লাহর মাস’ বলে ব্যক্ত করার মাঝে রয়েছে বিশেষ তাৎপর্য। যেমন পৃথিবীর সকল মসজিদই আল্লাহর ঘর। কিন্তু কাবা শরীফকে বিশেষভাবে বাইতুল্লাহ বা আল্লাহর ঘর বলার হেকমত কী? কারণ এর রয়েছে বিশেষ মর্যাদা। তেমনি বছরের অন্যান্য মাস অপেক্ষা মুহাররমের রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব।

আল্লাহ তাআলা কুরআন মাজীদে হিজরী সময়ের গুরুত্ব সম্পর্কে বলেছেন-

یَسْـَٔلُوْنَكَ عَنِ الْاَهِلَّةِ قُلْ هِیَ مَوَاقِیْتُ لِلنَّاسِ وَ الْحَجِّ.

লোকেরা আপনার কাছে নতুন চাঁদ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে। আপনি তাদেরকে বলে দিন, এটা মানুষের (বিভিন্ন কাজ-কর্মের) হিসাব এবং হজ্বের সময় নির্ধারণ করার জন্য। -সূরা বাকারা (২) : ১৮৯

মুসলমানদের বহু দ্বীনী বিষয়, বিশেষ করে হজ্বের মতো মহিমান্বিত আমল নির্ভরশীল চাঁদের হিসাবের উপর। আরবী মাস-বছরকে ঘিরে ইসলামের বহু বিধান আবর্তিত হয়। এই আরবী হিজরী চান্দ্রবর্ষের প্রথম মাসটিই হচ্ছে মুহাররম। মুহাররমকে ঘিরেও রয়েছে শরীয়তের সুন্দর সুন্দর বিধান ও আমল। ফলে দ্বীনী দায়িত্ববোধ থেকেই হিজরী মাস-বর্ষের গণনা এবং এর শুরু-শেষের হিসাবের প্রতি যত্নবান হওয়া মুমিনের জন্য সবিশেষ কাম্য।

নতুন চাঁদ নতুন প্রত্যয়, দুআ পড়ে নিই নতুন বছরের

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নতুন চাঁদ দেখে এই দুআ পড়তেন-

اللهُمَّ أَهِلَّهُ عَلَيْنَا بِالْيُمْنِ وَالْإِيمَانِ، وَالسَّلامَةِ وَالْإِسْلامِ، رَبِّي وَرَبُّكَ اللهُ.

আয় আল্লাহ, আপনি এই হিলালকে আমাদের জন্য ঈমান ও ইসলাম এবং শান্তি ও বরকতের সঙ্গে উদিত করুন। আমার ও তোমার রব আল্লাহ। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৩৪৫১; মুসনাদে আহমাদ, হাদীস ১৩৯৭

এ দুআটি যে কোনো মাসের নতুন চাঁদ দেখে পড়ার জন্য। এ হিসাবে যদি মুহাররমের চাঁদ দেখে এ দুআ পড়া হয় তাহলে নতুন চাঁদের সাথে সাথে নতুন বছরের দুআও হয়ে যাবে।

অবশ্য ইমাম আবুল কাছেম বাগাভী রাহ. (৩১৭ হি.) ‘মু‘জামুস সাহাবা’ কিতাবে সহীহ সনদে নতুন মাস ও নতুন বছরের শুরুতে পড়ার একটি দুআ উল্লেখ করেছেন। সাহাবী আবদুল্লাহ বিন হিশাম রা. বলেন, সাহাবায়ে কেরাম নতুন মাস বা নতুন বছর শুরুর এ দুআটি তেমন গুরুত্ব দিয়ে শিখতেন, যেভাবে কুরআনুল কারীম শিখতেন। দুআটি হল-

اللّهُمَّ أَدْخِلْهُ عَلَيْنَا بِالأَمْنِ وَالِإيْمَانِ وَالسَّلَامَةِ وَالإِسْلَامِ وَجِوَارٍ مِنَ الشَّيطَانِ وَرِضوَانٍ مِنَ الرَّحْمنِ.

(قال الحافظ ابن حجر في الإصابة : وهذا موقوف على شرط الصحيح.)

হে আল্লাহ! আপনি আমাদের মাঝে এ মাস/বছরের আগমন ঘটান- শান্তি ও নিরাপত্তা এবং ঈমান ও ইসলামের (উপর অবিচলতার) সাথে; শয়তান থেকে সুরক্ষা ও দয়াময় আল্লাহর সন্তুষ্টির সাথে। (দ্রষ্টব্য : মুজামুস সাহাবাহ ৩/৫৪৩, বর্ণনা ১৫৩৯; আলইসাবাহ ৪/২৫৬)

এ দুআর ক্ষেত্রে স্পষ্ট বলা হয়েছে- এটি নতুন বছরের দুআ। আর সাহাবায়ে কেরামও এ দুআটির প্রতি খুব গুরুত্ব দিতেন।

অতএব ঈমান-ইসলাম, শান্তি-নিরাপত্তা ও রহমত-বরকতের সাথে কীভাবে আমার নতুন বছরটি অতিবাহিত হতে পারে- এ ব্যাপারে সচেষ্ট থাকাই হচ্ছে নতুন চাঁদের বার্তা। বিশেষ করে শয়তানের পথ পরিহার করে আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টির পথ অবলম্বন করা এবং নিজের ঈমানী যিন্দেগী প্রাণবন্ত করে তোলাই হবে আমার আগামী দিনের প্রত্যয়। তাই এখনই সংকল্পবদ্ধ হই- আমার ঈমান-আমল, স্বভাব-চরিত্র, চিন্তা-দর্শন, মন-মানসিকতা, বোধ-উপলব্ধি সর্বোপরি একজন মুমিন-মুসলমান হিসাবে আমার জীবন যাপন যেন বিগত দিনের তুলনায় আরো বেগবান, ফলপ্রসূ, সমৃদ্ধ এবং সাফল্যমণ্ডিত হয়।

এ মাসে মনোযোগী হই রোযার প্রতি

পূর্বেই আমরা যে হাদীসটি উল্লেখ করে এসেছি- হযরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

أَفْضَلُ الصِّيَامِ، بَعْدَ رَمَضَانَ، شَهْرُ اللهِ الْمُحَرّمُ، وَأَفْضَلُ الصَلَاةِ، بَعْدَ الْفَرِيضَةِ، صَلَاةُ اللّيْلِ.

রমযানের পর সবচে উত্তম রোযা হল আল্লাহর মাস মুহাররমের রোযা। আর ফরয নামাযের পর সবচে উত্তম নামায হল রাতের নামায (অর্থাৎ তাহাজ্জুদের নামায)। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৬৩

এ হাদীস থেকে মুহাররমের ব্যাপারে দুটি কথা পাওয়া যায় :

এক. মুহাররম মাস আল্লাহর মাস। সম্মানিত ও মহিমান্বিত মাস।

দুই. এর সম্মান রক্ষা এবং এ থেকে যথাযথ উপকৃত হওয়ার একটি মাধ্যম হচ্ছে, এ মাসে রোযা রাখার প্রতি যত্নবান হওয়া।

কাজেই মুহাররম মাসে রোযা রাখার প্রতি আমরা মনোযোগী হতে পারি। বিশেষ করে দশ মুহাররম আশুরার রোযার কথা তো হাদীসে গুরুত্বের সাথেই উল্লেখ করা হয়েছে। এর প্রতিও আমরা বিশেষভাবে খেয়াল রাখব।

এ মাসে গুরুত্ব দেই তাওবার প্রতি

তাওবা-ইস্তিগফার যে কোনো সময়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ আমল। বান্দা আল্লাহর দরবারে ধরনা দেবে এবং নিজের অতীতের জন্য ক্ষমা চাইবে- এতেই তো তার বন্দেগীর শান। তবে কিছু কিছু মুহূর্ত এমন রয়েছে, যখন তাওবার পরিবেশ আরো অনুকূল হয়। বান্দার উচিত আল্লাহর দেওয়া সেই প্রত্যাশিত মুহূর্তগুলো লুফে নেওয়া এবং আল্লাহমুখী হয়ে জীবনকে আরো সুন্দর করা। মুহাররমের এ মাসটি, বিশেষ করে এর দশ তারিখ- ‘ইয়াওমে আশুরা’ এমনই একটি উপযুক্ত সময়।

মুহাররমের ফযীলতের একটি দিক হচ্ছে, এর সাথে তাওবা কবুল হওয়া এবং আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে মুক্তি, নিরাপত্তা এবং গায়েবী সাহায্য লাভ করার ইতিহাস জুড়ে আছে। এজন্য এ সময়ে এমন সব আমলের প্রতি মনোনিবেশ করা উচিত, যাতে আল্লাহর রহমত বান্দার প্রতি আরো বেশি ধাবিত হয়। বিশেষভাবে এ সময়ে তাওবা-ইস্তিগফারের প্রতি পূর্ণ মনোযোগী হওয়া চাই।

এক সাহাবী নবীজীর কাছে এসে জিজ্ঞাসা করলেন-

يَا رَسُولَ اللهِ، أَيّ شَهْرٍ تَأْمُرُنِي أَنْ أَصُومَ بَعْدَ شَهْرِ رَمَضَان.

ইয়া রাসূলাল্লাহ! রমযানের পর আপনি কোন্ মাসে রোযা রাখতে বলেন? নবীজী বললেন-

إِنْ كُنْتَ صَائِمًا بَعْدَ شَهْرِ رَمَضَانَ فَصُمُ الْمُحَرّمَ، فَإِنّهُ شَهْرُ اللهِ، فِيهِ يَوْمٌ تَابَ فِيهِ عَلَى قَوْمٍ، وَيَتُوبُ فِيهِ عَلَى قَوْمٍ آخَرِينَ.

قال الترمذي : هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ.

তুমি যদি রমযানের পর রোযা রাখতে চাও তাহলে মুহাররমে রোযা রেখ। কেননা মুহাররম হচ্ছে আল্লাহর মাস। এ মাসে এমন একদিন আছে, যেদিন আল্লাহ তাআলা (অতীতে) অনেকের তাওবা কবুল করেছেন। ভবিষ্যতেও অনেকের তাওবা কবুল করবেন। -জামে তিরমিযী, হাদীস ৭৪১

মুহাদ্দিসীনে কেরাম এ দিনটি আশুরার দিন হওয়ার সম্ভাবনা উল্লেখ করেছেন। দ্রষ্টব্য : লাতাইফুল মাআরেফ, পৃ. ৭৬

বান্দা তার নিজের ভাষায় রবের কাছে আকুতি পেশ করবে, এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু আল্লাহ তাআলার অপার অনুগ্রহ, তিনি সেই আকুতি পেশ করার অর্থবহ শব্দ-বাক্যও বান্দাকে শিখিয়ে দিয়েছেন। কুরআন-সুন্নাহ্য় বর্ণিত সেই মাসনূন দুআগুলোর মর্ম ও ব্যঞ্জনা প্রতিটি মুমিনের হৃদয় ছুঁয়ে যায়, যদি সে উপলব্ধির সাথে সেগুলো পাঠ করে। কুরআনে কারীমে আম্বিয়ায়ে কেরামের দুআ উল্লেখ করা হয়েছে, যে ওসিলায় তাঁরা আল্লাহ পাকের বিশেষ রহমত প্রাপ্ত হয়েছেন। মুমিনের জন্য সেগুলো অনেক বড় সম্বল। হাদীসেও অনেক দুআ-ইস্তিগফার বর্ণিত হয়েছে। এর মধ্যে ‘সায়্যেদুল ইস্তিগফার’কে আমরা আমাদের ওজীফা বানাতে পারি। সায়্যেদুল ইস্তিগফার হচ্ছে-

اللّهُمّ أَنْتَ رَبِّي لاَ إِلهَ إِلّا أَنْتَ، خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ، وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ، أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ، أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيّ، وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي، فَإِنّهُ لاَ يَغْفِرُ الذّنُوبَ إِلّا أَنْتَ.

হে আল্লাহ! আপনি আমার প্রতিপালক। আপনি ছাড়া কোনও মাবুদ নেই। আপনি আমাকে সৃষ্টি করেছেন। আমি আপনার বান্দা। আমি যথাসাধ্য আপনার সাথে কৃত অঙ্গীকার ও আপনার প্রতিশ্রুতির উপর রয়েছি। আমি আমার কৃতকর্মের অনিষ্ট থেকে আপনার আশ্রয় গ্রহণ করছি। আমার প্রতি আপনার নিআমতের কথা স্বীকার করছি। আপনার কাছে আমি আমার গোনাহের কথা স্বীকার করছি। কাজেই আপনি আমাকে ক্ষমা করে দিন। নিশ্চয় আপনি ছাড়া আর কেউ গুনাহ ক্ষমা করতে পারে না। -সহীহ বুখারী, হাদীস ৬৩০৬

এছাড়া কুরআন-হাদীসে আরো অনেক তাৎপর্যমণ্ডিত দুআ-ইস্তিগফার উল্লেখিত হয়েছে। আমরা সেগুলোও ওজীফা হিসাবে গ্রহণ করতে পারি। অন্তত মাঝে মাঝে হলেও উপলব্ধির সাথে সেগুলো পাঠ করা চাই।

দশ মুহাররম ‘ইয়াওমে আশুরা’ : গুরুত্ব ফযীলত এবং ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট

মুহাররম মাসের সবচে মহিমান্বিত দিন হচ্ছে ‘ইয়াওমে আশুরা’ তথা মুহাররমের দশ তারিখ। হাদীসে আশুরার দিনের অনেক ফযীলত বিবৃত হয়েছে। এমনকি ইসলামপূর্ব আরব জাহেলী সমাজে এবং আহলে কিতাব- ইহুদী-নাসারাদের মাঝেও ছিল এ দিনের বিশেষ গুরুত্ব ও মর্যাদা।

উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা সিদ্দীকা রা. বলেন-

كَانُوا يَصُومُونَ عَاشُورَاءَ قَبْلَ أَنْ يُفْرَضَ رَمَضَانُ، وَكَانَ يَوْمًا تُسْتَرُ فِيهِ الكَعْبَةُ، فَلَمّا فَرَضَ اللهُ رَمَضَانَ، قَالَ رَسُولُ الله صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ: مَنْ شَاءَ أَنْ يَصُومَهُ فَلْيَصُمْهُ، وَمَنْ شَاءَ أَنْ يَتْرُكَهُ فَلْيَتْرُكْهُ.

(জাহেলী সমাজে) লোকেরা রমযানের রোযা ফরয হওয়ার পূর্বে আশুরার দিন রোযা রাখত। এ দিন কাবায় গেলাফ জড়ানো হত। এরপর যখন রমযানের রোযা ফরয হল তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, যে এ দিন রোযা রাখতে চায় সে রাখুক। যে না চায় না রাখুক। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৫৯২

এ হাদীসদ্বয় থেকে বুঝে আসে- জাহেলী সমাজে এ দিনের বিশেষ গুরুত্ব ছিল। এ দিনে তারা কাবা শরীফে গেলাফ জড়াত। এ দিন তারা রোযা রাখত। নবীজীও এ দিন রোযা রাখতেন। হিজরতের পরও এ দিন রোযা রাখতেন। রমযানের রোযা ফরয হওয়ার পূর্বে এ দিনের রোযা ফরয ছিল। রমযানের রোযা ফরয হওয়ার পর এ দিন রোযা রাখা এখন মুস্তাহাব।

এরপর যখন রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হিজরত করে মদীনা মুনাওয়ারায় চলে আসেন দেখেন, মদীনার আহলে কিতাব ইহুদীরাও এ দিনে রোযা রাখছে। এ দিনকে তারা বিশেষভাবে উদ্যাপন করছে। নবীজী তাদের জিজ্ঞাসা করলেন-

مَا هَذَا الْيَوْمُ الّذِي تَصُومُونَهُ؟

এ দিনে তোমরা কী জন্য রোযা রাখছ? তারা বলল-

هَذَا يَوْمٌ عَظِيمٌ، أَنْجَى اللهُ فِيهِ مُوسَى وَقَوْمَهُ، وَغَرّقَ فِرْعَوْنَ وَقَوْمَهُ، فَصَامَهُ مُوسَى شُكْرًا، فَنَحْنُ نَصُومُهُ.

এটি একটি মর্যাদাপূর্ণ দিবস। আল্লাহ তাআলা এ দিনে হযরত মূসা আ. ও তাঁর কওমকে (ফেরাউনের কবল থেকে) মুক্তি দিয়েছেন। এবং ফেরাউনকে তার দলবলসহ (দরিয়ায়) নিমজ্জিত করেছেন। এরপর হযরত মূসা আ. এ দিনে শুকরিয়া আদায় স্বরূপ রোযা রাখতেন। তাই আমরাও রোযা রাখি।

নবীজী এ শুনে বললেন-

فَنَحْنُ أَحَقّ وَأَوْلَى بِمُوسَى مِنْكُمْ.

হযরত মূসা আ.-এর অনুসরণের ক্ষেত্রে তো আমরা তোমাদের চেয়ে অধিক হকদার। এরপর নবীজী নিজেও রোযা রাখলেন এবং অন্যদের রোযা রাখতে বললেন। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৩০; সহীহ বুখারী, হাদীস ১১২৫, ৩৯৪৩

ইহুদীদের নিকট এ দিনটি এতটাই গুরুত্বপূর্ণ ছিল, এ দিনটিকে তারা ঈদের মতো উদ্যাপন করত। হযরত আবু মূসা রা. থেকে বর্ণিত-

كَانَ يَوْمُ عَاشُورَاءَ يَوْمًا تُعَظِّمُهُ الْيَهُودُ، وَتَتّخِذُهُ عِيدًا، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ: صُومُوهُ أَنْتُمْ.

আশুরার দিন এমন একটি দিন, যে দিনকে ইহুদীরা সম্মান করত এবং এ দিনকে ঈদ হিসাবে গ্রহণ করত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমরা এ দিনে রোযা রাখ। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৩১

রোযা ও তাওবা : আশুরার বিশেষ আমল

আশুরার দিনের মূল ইবাদত হচ্ছে এ দিনের রোযা রাখা। পূর্ববর্তী হাদীসগুলোতে আমরা মাত্রই যা দেখে এলাম। এ দিনের রোযার ফযীলতের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেন-

صِيَامُ يَوْمِ عَاشُورَاءَ، أَحْتَسِبُ عَلَى اللهِ أَنْ يُكَفِّرَ السَّنَةَ الَّتِي قَبْلَهُ.

আশুরার দিনের রোযার ব্যাপারে আমি আল্লাহর নিকট প্রত্যাশা রাখি, তিনি পূর্বের এক বছরের (সগীরা) গুনাহ মাফ করে দেবেন। -সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৬২

হযরত ইবনে আব্বাস রা. বলেন-

مَا رَأَيْتُ النَّبِيَّ صَلّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلّمَ يَتَحَرّى صِيَامَ يَوْمٍ فَضّلَهُ عَلَى غَيْرِهِ إِلّا هَذَا اليَوْمَ، يَوْمَ عَاشُورَاءَ، وَهَذَا الشّهْرَ يَعْنِي شَهْرَ رَمَضَانَ.

অর্থাৎ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আশুরার দিনের চেয়ে গুরুত্ব দিয়ে অন্য কোনো দিন রোযা রাখতে দেখিনি এবং রমযান মাস অপেক্ষা অন্য কোনো মাসে এত গুরুত্ব দিয়ে রোযা রাখতে দেখিনি। -সহীহ বুখারী, হাদীস ২০০৬; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৩২

সাহাবায়ে কেরাম এ দিনে বাচ্চাদেরকেও রোযা রাখতে অভ্যস্ত করতেন। বিখ্যাত নারী সাহাবী হযরত রুবায়্যি‘ বিনতে মুআববিয রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আশুরার দিন সকালে আনসারদের এলাকায় লোক মারফত এ খবর পাঠালেন-

যে আজ সকালে খেয়েছে সে যেন সারাদিন আর না খায়। আর যে সকালে খায়নি সে যেন রোযা পূর্ণ করে।

ঐ নারী সাহাবী বলেন, এরপর থেকে আমরা নিজেরাও এ দিনে রোযা রাখতাম এবং আমাদের বাচ্চাদেরও রোযা রাখাতাম। তাদের জন্য আমরা খেলনা বানিয়ে রাখতাম। তারা খাবারের জন্য কান্নাকাটি করলে তাদেরকে খেলনা দিয়ে শান্ত করতাম। ইফতার পর্যন্ত এ নিয়ে তার সময় কেটে যেত। -সহীহ বুখারী, হাদীস ১৯৬০; সহীহ মুসলিম, হাদীস ১১৩৬

(সুবহানাল্লাহ! সাহাবায়ে কেরাম সন্তানদেরকে সেই শিশুকাল থেকেই কীভাবে তরবিয়ত করতে থাকতেন! আর মুমিন মায়েরা নিজেদের সন্তানদেরকে আমলে অভ্যস্ত করে গড়ে তোলার প্রতি কতটা সজাগ-সচেতন ছিলেন!!)

অতএব এ দিনে রোযা রাখার ব্যাপারে আমরা খুব ইহতিমাম করব।

23/06/2023

কারও মৃত্যু যদি সমুদ্রের গভীর তলদেশে ও অথৈ পানির গহীনে লেখা থাকে, তাহলে সে মৃত্যুর মুখোমুখি হতে কোটি টাকা খরচ করে হলেও সেখানে পৌঁছে যাবে। আর সেখানেই তার সঙ্গে সাক্ষাৎ ঘটবে- মৃত্যুদূত মালাকুল মউতের।

আল্লাহ তাআলা আমাদের সবাইকে ঈমান ও ইসলামের সঙ্গে সুন্দর-উত্তম মৃত্যু দান করুন।

09/06/2023
21/04/2023

ঈদ মোবারক

14/04/2023
14/04/2023
Photos from Shahid Jame Masjid's post 14/04/2023
11/04/2023
11/04/2023
09/04/2023
10/02/2023

ভুমি কম্প থেকে বাঁচতে চান তাহলে সমাজ কে নিচের কাজ গুলো থেকে বিরত রাখুন।

أَأَمِنتُم مَّن فِي السَّمَاء أَن يَخْسِفَ بِكُمُ الأَرْضَ فَإِذَا هِيَ تَمُورُ
তোমরা কি ভাবনামুক্ত হয়ে গেছ যে, আকাশে যিনি আছেন তিনি তোমাদেরকে ভূগর্ভে বিলীন করে দেবেন,না অতঃপর তা কাঁপতে থাকবে। [সুরা মুলক: ১৬]

أَمْ أَمِنتُم مَّن فِي السَّمَاء أَن يُرْسِلَ عَلَيْكُمْ حَاصِبًا فَسَتَعْلَمُونَ كَيْفَ نَذِيرِ
না তোমরা নিশ্চিন্ত হয়ে গেছ যে, আকাশে যিনি আছেন, তিনি তোমাদের উপর প্রস্তর বৃষ্টি বর্ষণ করবেন, অতঃপর তোমরা জানতে পারবে কেমন ছিল আমার সতর্কবাণী। [সুরা মুলক: ১৭]
কখন ভুমিকম্প হবে রাসুল(সাঃ)বলেছেন
________________________________________ইমরান ইবন হুসায়ন রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ এই উম্মতের জন্য ভূমিধ্বস, চেহারা বিকৃতি এবং পাথর বর্ষণের আযাব রয়েছে। জনৈক মুসলিম ব্যক্তি তখন বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ, কখন হবে তা?
তিনি বললেন, গায়িকা ও বাদ্যযন্ত্রের বিসত্মার ঘটবে এবং মদ্যপান দেখা দিবে।(সহিহ আত্ তিরমিজি :: ফিতনা অধ্যায় অধ্যায় ৩৩ :: হাদিস ২২১২)
আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর (রাঃ) বলেন রাসুল(সাঃ) বলেছেন ভুমি ধস ও ভুমি কম্প শুরু হবে সাহাবাগন প্রশ্ন করলেন কখন? রাসুল (সাঃ) বললেন যখন গায়ক গায়িকাদের প্রচার ঘটবে নারীপুরুষ যখন ব্যবিচার করা হালাল মনে করবে ও সুদ খাবে এবং হেরেমের ভেতর যখন শিকার করা বৈধ মনে করবে এবং রেশমের পোশাক পরবে এবং যখন সমকামিতা চালু হবে(জামেউল আহাদীস হাদিস নং-৩৯৮০৮)
এবার চিন্তা করুন সমাজে এই কাজ গুলো আছে কি না থাকলে সমাজ কে এগুলো থেকে বিরত রাখুন ।
অবশ্যই পোষ্টটি শেয়ার করবেন

20/01/2023

ক্বিরাত সম্মেলনে বাইতুল মোকাররমে

Photos from M***i Ekhtiar Arefi's post 14/01/2023

হিদায়াতের পথে হোক আরো অগ্রগামী আল্লাহ আমাদের সবাইকে কোরআন সুন্নাহর প্রকৃত অনুসারী হওয়ার তাওফীক দান করুন আমীন

01/12/2022
Want your public figure to be the top-listed Public Figure in Dhaka?
Click here to claim your Sponsored Listing.

Videos (show all)

ক্বিরাত সম্মেলনে বাইতুল মোকাররমে
গনতন্ত্র ও আমাদের আলেম উলামা।
হোসেনী দালান ও তাজিয়া মিছিলে যাওয়া কি জায়েজ ?
কোরবানি এবং সামাজিক স্ট্যাটাস M***i Ekthiar Arefi
মৃত্যু ব্যক্তির নামে কোরবানি M***i Ekhtiar Arefi
পশু জবাই করার সময় ৭ জনের নাম পড়া M***i Ekthiar Arife
কোরবানী ও আকীকা
সারাদেশে বন্যা ও ত্রান বিতরণ ও সাংবাদিক ভাইয়েরা
শেখ রামাদান খান এর বাসায় খূব দারুন মূহুর্তে। আমাদের সাথে আছেন শাহিন মোল্লা ও আবু মূসা ও শেখ আবু হুসাম মানসূর ও শেখা রাম...
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে আলেমদের করনীয়।
মাসজিদে নববীর লাইব্রেরীতে আমরা

Telephone

Address


Shahid Jame Masjid
Dhaka
1100
Other Motivational Speakers in Dhaka (show all)
Sejala Dil Anwar- Shoccho Sejala Dil Anwar- Shoccho
Dhaka

No more musics. Allah forgive me. I just want to lov u. O my Allah my Čreator my lord please help m

Shan Chowdhury Shan Chowdhury
South Baridhara R/A
Dhaka, 1212

This is Shan Chowdhury. Motivational Speaker. My profession is Chemical & Fashion Design & Technology

অনিক ভাই ওপিসিয়াল অনিক ভাই ওপিসিয়াল
Dhaka

অনিক ভাই ওপিসিয়াল

Kazi Shahajada Kazi Shahajada
Dhaka, 1208

সাধারণের মাঝে বেঁচে থাকতে শিখুন। স্রোতের বিপরীতে চলাটা কষ্টকর হলেও নিজের মন ও বিবেকের কাছে আনন্দের।

জীবনের গল্প জীবনের গল্প
Dhaka

support Humanity

Ashar Alo Ashar Alo
Savar, Dhaka
Dhaka, 1340

Mashiyat Alam Suchi Mashiyat Alam Suchi
Netrokona
Dhaka, 2400

আসসালামুয়ালাইকুম,,,�

M***i Azmi M***i Azmi
House#70, Road#20, Sector#112, Uttara
Dhaka, 1230

qsfoundation

L i f e L i f e
Dhaka

Please like this page

Sheikh Mohammad Imran Hossain Sheikh Mohammad Imran Hossain
Dhanmondi Shat Masjid Road
Dhaka

Healthy food supplement for balancing weight

Monir Hosain Monir Hosain
Rowmari
Dhaka, 5650

উপহাস নয় আফসোস হয়ে দাঁড়ায়াবো একদিন ইনশাল্লাহ।

Nashihat 24 hours Nashihat 24 hours
Dhaka, ALLAHAMARSHOBE★&%$

Nashihat 24 hours guideline