Crush & Confession
আসসালামু আলাইকুম 👋
😘 তোমাকে স্বাগতম 💥
🍀 আমার পেজে 🥰
🥀 সবাই সাপোর্ট করবেন প্লিজ 🙏💐
- মানসিক শান্তি'ই বড় শান্তি->!!🩷'🌻
আবেগ গুলো বুকে পুষে স্বপ্ন দেখি রোজ,,, হইতো কোন রাজকুমারী নেবে আমার খোজ।
︵ 🙂- ভেঙ্গে যাওয়া বিশ্বাস, আর ফেলে আসা সময়..!🌸🥀
- কোন দিন ফিরে আসে না..!🖤🥀🦋
︵ 💚🥀
@followersg@highlight
💚🌻
- নিজেকে কখনো অসুন্দর মনে করবেন না।
- কারণ আল্লাহর সৃষ্টি কখনো
অসুন্দর হয় না। 🙂??🖤
@highlightt
シ︎𝐒𝐚𝐝 𝐢𝐬 𝐦𝐨𝐨𝐝 𝐧𝐨𝐭 𝐦𝐞𝐭𝐭𝐚𝐫 シ︎
❥︎❥︎𝐇𝐚𝐩𝐩𝐲 𝐢𝐬 𝐭𝐡𝐞 𝐛𝐞𝐬𝐭 𝐦𝐚𝐝𝐞𝐜𝐢𝐧𝐞 𝐨𝐟 𝐥𝐢𝐟𝐞 ❥︎❥︎🌸😇
シ︎দুঃখ আর কষ্ট কোনো বেপার নাহ シ︎
❥︎❥︎জীবনে হাসি খুশি থাকাটাই সবচেয়ে বড় ওষুধ ❥︎❥︎🌸😇
ForYou
Happy Friend Vlogs@followersForYouHappy Friend VlogsHappy Friend VlogsHappy Friend Vlogs
•
"🐰🍒___তোমার মন টা দাও, আমি বিক্লি করে চকলেট খাবো🥺😚👉👈🐸🤣??🤣🤣🤣🤣🤣
•
Funnypostt
༆༉"ღ"🥰🥀-ღ💜🌻
জীবনে যাই হোক কখনো হাসতে ভুলে যেও না🦋࿐
কারন হাসিটা তোমার শক্তি আর সাহস যোগাবে!-💚
︵❛❛༎💚🌺︵❛❛༎💚🌺
︵❝།།💚🌺
_" বুঝলে প্রিয় 🙂
-পরিচয় অল্প দিনের হলেও🙂
-ভালোবাসাটা অনেক গভীর হয়ে গেছে ༎🖤🌸
.
"তোমার স্টোরি'তে লাভ রিয়েক্ট দিসি.! কারণ..?
স্টোরি'তে দেওয়া গানটা ভালো লাগছে,, তোমারে না..🙃😊
বাংলাদেশ 🇧🇩 বনাম 🇱🇧 লেবানন
⏱️ বিকাল- ৫:৪৫ মিনিট
🏟️বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনা
📺 সম্প্রচার - টি স্পোর্টস
বাংলাদেশ ফুটবল দলের জন্য দোয়া ও শুভকামনা রইল 🥰।
@followers
ইন্ডিয়া হারলে বাংলাদেশের পোলাপাইন এত খুশি কেন হয়?🤔
জানতে চাওয়া আমার এ নিষ্পাপ মন😎
,সোনার ভরী ৯৩,০০০/-
মাংসের কেজি ৮০০/-
মুরগী ২৬০/-
বিয়েটা পালিয়ে করা ছাড়া আর কোনো উপায় নাই 🤣🤣
আপাতত : সবকিছু তেই ব্যর্থ আমি,,! 🥺😿
তুমি সুন্দর কারণ, আমি তোমাকে সুন্দর চোখে দেখি, 😊🖤
🥀প্রিঁয়োঁლ࿐
𝄞জীবনটাকে আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করো🦋
কখনো ব্যর্থ༊হবে না❤🥀
☞︎𝐈𝐧 𝐬𝐡𝐚 𝐀𝐥𝐥𝐚𝐡
আর কিছু হারানোর নেই,
এবার আমি হাড়িয়ে গেলে
গল্প শেষ..!💔😌
-Nothing left to lose,
Now I'm lost
The story is over..!💔😞
প্রিয়৴৴িয়৴৴
টাকা যা বলে মানুষ তাই শোনে,
জীবন কে মানুষ টাকা নামে ডাকে 💸💰
টাকা শুধু একটা শব্দ না..!
এর মধ্যে লুকিয়ে আছে,
বন্ধুত্ব, ভালোবাসা, আত্মীয়তা 💔🙂
আপনি আমার গল্পের সেই মহারানী 👑
-যাকে আমি প্রতিটা মুহূর্তে
অনুভব করি❤️🌺
You are the queen of my story 👑
-Whom I am every moment
Feel it 🌺❤️
মৃত মানুষ হারানোর চেয়ে...?
জীবিত মানুষ হারানোর যন্তনা বেশি ....!
তুমি আমার প্রেম নও,
তুমি আমার মায়ায় জড়ানো ভালোবাসা 🌺
স্মৃতির কাছে আটকে থাকে অদৃশ্য এক
ছায়া ...💔🫠
মানুষটি হাড়িয়ে গেলেও ফুরায় না তার
মায়া....🫠💔
-অযোগ্য কে যোগ্য বানানো সম্ভব,
-তবে বিশ্বাসঘাতক কে বিশ্বাস্ত বানানো অসম্ভব
-💔💔-
এক বিঘা জমি বিক্রি করে ১GB
MB
কিনছি 🙂
বলেন তো আমি কোন sim use করি🥱
তুমি ছাড়া মানসিক শান্তি দেবে এমন
মানুষ আর নাই...!! 😭
দুনিয়ায় সকল নিয়ম ভেঙ্গে হলেও
আমি শুধু তোমাকেই চাই..!! 😘🌺
আপনার পেইজটি ঘুরে দেখলাম মাশাল্লাহ অনেক ভালো লাগলো, আরো সামনে এগিয়ে যান দোয়া করি!!
শুভকামনা রইলো
আমার পাশের ফ্ল্যাটের রোখসানা ভাবি যখন তখন টাকা উড়ায়। আমি শুধু অবাক হয়ে দেখি আর শুনি। বিগত তিন বছর ধরে আমরা ভাড়াটিয়া হিসাবে পাশাপাশি বাস করছি। সেই শুরু থেকেই দেখে আসছি ওনার এমন স্বভাব। আরে টাকা ইনকাম করে ভালো কথা, তাই বলে এভাবে বেহিসাবি খরচ করতে হবে!
উনি একটা প্রাইমারী স্কুলে শিক্ষকতা করেন। ফ্যামিলি বলতে হাজব্যান্ড আর ওনার দুই ছেলে। দুজনই হাই স্কুলে পড়ে। বড়টা ক্লাস টেনে আর ছোটটা ক্লাস সেভেনে। সেদিন অনলাইনে একটা শাড়ি দেখলাম। শাড়ির ডিজাইনে আমার চোখ আটকে গেল। ভাবিকে ডেকে জিজ্ঞেস করলাম, সামনেই তো ১লা বৈশাখ, কিনবেন নাকি ভাবি? চলেন দুজনে দুইটা অর্ডার করি। শাড়ি দেখে উনিও স্বীকার করলেন শাড়িটা আসলেই অনেক সুন্দর। কিন্তু কিনতে রাজি হলেন না। বললেন টাকার সমস্যা।
কথাটা মানতে কষ্ট হলেও বিশ্বাস করলাম। কেননা ওনার মুখে মিথ্যা কথা শুনিনি কখনো। রোখসানা ভাবি খুব বড় ঘরের মেয়ে শুনেছি। মানে উচ্চবিত্ত পরিবারের মেয়ে। পরিবারের অমতে ভালোবেসে রাসেল ভাইকে বিয়ে করেছে। রাসেল ভাই একটা বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা। খুব হিসাব নিকাশ করে চলে দুজন। কিন্তু মাঝে মাঝে দেখি হিসাবের বাইরেও টাকা খরচ করে।
এইতো কিছুদিন আগেও দেখলাম চার বছরের মেয়ের জন্য একটা ফ্রক কিনে এনেছে। আমাকে ডেকে জিজ্ঞেস করলো কেমন হয়েছে। আমি জামাটার গেটআপ দেখে বুঝলাম দাম বেশ ভালোই হবে। ভালোমন্দ কিছু না বলেই জিজ্ঞেস করলাম, ভাবি কার জন্য কিনেছেন? আপনার ছেলেরা তো আর ফ্রক পরে না। উনি মুচকি হেসে ভেতরে চলে গেলেন।
পরদিন ছাদে দেখি রোখসানা ভাবির কাজের বুয়ার মেয়েটা সেই ফ্রক পরে খেলছে। কিছুটা অবাক হলাম। বুঝতে পারলাম নিজের জন্য শাড়ি কিনতে কেন টাকার সংকট পরেছে। প্রতি মাসে বেতন পেয়ে ওনার মায়ের জন্য টাকা পাঠায়। একমাত্র মায়ের সাথেই তার যোগাযোগ আছে। ভাই-বোনদের সাথে কোন সম্পর্কই নেই। অথচ ওনার মায়ের তেমন টাকার প্রয়োজন হয়না। তবুও মাকে টাকা দিতে ওনার নাকি ভালো লাগে। গত মাসেও শ্বাশুড়ির চিকিৎসা বাবদ টাকা পাঠিয়েছে। রাসেল ভাইও দেয়, কিন্তু উপযাচক হয়ে উনিও দেয়।
এ পর্যন্ত হলেও মানা যায়। এই শুক্রবারে দেখি আরেক কান্ড। সকাল সকাল ভাবির বাসা থেকে রান্নাবান্নার বেশ ঘ্রাণ পাচ্ছি। প্রতি শুক্রবারই অবশ্য এমনটা হয়। সপ্তাহের এই একটা দিনেই মূলত ওনার বাসায় একটু ভালোমন্দ রান্না হয়। তাছাড়া তো আর সময় নেই তার। দরজার বাইরে বেশ হৈ চৈ শুনতে পাচ্ছি। দরজাটা একটু ফাঁকা করতেই দেখি ফকির, মিসকিনের মেলা। দশ বারো জন হবে। তাদের আপ্যায়নের জন্য রাসেল ভাই রাস্তা থেকে ধরে এনেছে। স্ত্রীর এসব পাগলামিতে স্বামীও বেশ সায় দেয় দেখছি।
এসব আদিখ্যেতা দেখতে আমার আর ভালো লাগে না। অতিষ্ঠ হয়ে গেছি আমি। খাওয়াদাওয়া শেষে ফকির মিসকিনগুলো দু'হাত তুলে মোনাজাত করে চলে গেল। আমি তখনো ঠায় দাঁড়িয়ে। দুপুরের খাওয়ার আগে আমার বাসাতেও খাবার পাঠিয়েছে রোখসানা ভাবি। দেখলাম চার পাঁচটা আইটেম। জাস্ট খিচুড়ি বা বিরিয়ানি করলেও পারতো। অযথা ঝামেলা বাড়িয়েছে। আমি আর কিছু না ভেবে খেতে শুরু করলাম।
রাতে শুতে যাবো এমন সময় কান্নার শব্দ ভেসে আসলো কানে। একটু গভীরভাবে কান পেতে শুনলাম ওটা রোখসানা ভাবির কণ্ঠ। এতো রাতে ভাবির কান্না শুনে আমরা ছুটে গেলাম ওনার বাসায়। গিয়ে দেখি ভাবি পাগলের মত কাঁদছে। কারণ জানতে চাইলাম বললো, ছোট ছেলেটার শরীরটা বেশি ভালো যাচ্ছিলো না বেশ কয়েক মাস যাবৎ৷ এতোদিন শুনেছি শুধু মাথাব্যাথা। কিছুদিন ধরে মাথাব্যথার সাথে বমিও হয়। সিটি স্ক্যানের রিপোর্ট দেখে আজকে জানতে পেরেছে ওর মস্তিষ্কে ব্রেন টিউমার ধরা পরেছে। কথাটা শুনে আকস্মিকভাবে আহত হলাম। আমি ভাবির পাশে বসে একটু সান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করলাম।
ভাবিদের এখন একটাই সমস্যা সেটা টাকার। অপারেশনে যে পরিমাণ টাকা লাগবে তার পুরোটা ম্যানেজ করা তাদের জন্য বেশ কষ্টসাধ্য হবে। ওনাদের সাথে মিশে এতোদিনে যা বুঝেছি ওনারা ধার দেনা করে চলতে পছন্দ করেনা। কারো কাছে সাহায্যের জন্য হাত পাতা তো দূরের কথা।
ভাই ভাবি দুজনই বেশ দিশেহারা হয়ে পরেছে। কোথায় যাবে কি করবে কিছুই বুঝে উঠতে পারছে না। এমতাবস্থায় আমরাও চাইলাম কিছু টাকা দিয়ে সাহায্য করতে। ভাবি রাজি হলেন না।
কিছুদিনের মধ্যেই ভাবির চেহারা বদলে গেছে। একেবারে বিষন্ন আর মরা মরা লাগে। চেহারায় কোন লাবন্যতা নেই। চোখ দেখলেই বোঝা যায় দিন রাত চেখের পানি ফেলে।
পরদিনই ভাবিরা ছেলেকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করালেন। বাসাটা কেমন নিরব আর নিস্তেজ লাগছে। সন্ধার পর হঠাৎ কলিং বেলের আওয়াজ পেলাম। দরজা খুলতেই দেখলাম বেশ লম্বা আর কালোমতো দেখতে একটা লোক দাঁড়িয়ে। কাকে চাই জিজ্ঞেস করতেই বললো রোখসানা ভাবিদের সাথে দেখা করতে এসেছে। একজন আগন্তুককে ঘরে আসতে বলতেও দ্বিধা বোধ হচ্ছে। তবুও ডেকে ড্রয়িং রুমে বসালাম, কারন আমার হাজব্যান্ড আবিদ বাসায় ছিল।
ভাবির সাথে তার সম্পর্ক কি তা জানতে চাইলে উনি বললেন রোখসানা ভাবি ওনার বোন হন। কিন্তু আমি যতটুকু জানি রোখসানা ভাবির ভাই বোনদের সাথে কোন যোগাযোগ নেই দীর্ঘদিন। সুতরাং উনি যে মিথ্যা বলছেন এটা আমি বুঝে ফেললাম। ওনার মতলব জানতে আরো কিছু প্রশ্ন করলাম৷ উনি ঠিকঠাক বলতে চাচ্ছিলেন না। এক পর্যায়ে বলা শুরু করলেন। বছর পাঁচেক আগে রোখসানা ভাবির সাথে তার পরিচয় হয়। ভাবির স্কুলের সামনে ওনার একটা দোকান ছিল। দূর্ঘটনাবশত হঠাৎ একদিন আগুন লেগে দোকানটা পুরে ছাই হয়ে যায়। লোকটার অবস্থা তখন বেগতিক। এরপর এই রোখসানা ভাবি তার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন। তার বেতন থেকে হাজার দশেক টাকা লোকটার হাতে গুজে দিয়ে বলেছিলেন, এটা দিয়ে আবার শুরু করেন ভাই।
লোকটা ভাবির সেই উপকারের কথা ভুলে যায়নি। আজ তাই তার ছেলের অসুখের কথা শুনে ছুটে এসেছে। শুধু তাই না তার এক টুকরো জমি বন্ধক রেখে কিছু টাকাও নিয়ে এসেছে। কথাগুলো শুনে ক্ষণিকের জন্য আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। আমার চোখের কোণে পানি জমে গেছে।
আমি লোকটাকে হাসপাতালের ঠিকানা লিখে দিলাম। উনি চলে গেলেন। ভাবিকে ফোন করে জানতে পারলাম রাসেল ভাই গত দুই মাস যাবৎ যে লোনের জন্য ব্যাংকে ঘোরাঘুরি করছিল শেষমেশ ব্যাংক সেটা একসেপ্ট করেছে। সাথে সাথে দুই রাকাত নফল নামাজ পরে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানালাম।
আগামীকাল রাত আটটায় ভাবির ছেলের মাথায় অস্ত্রোপচার হবে। আমি আগের রাতে একটুও ঘুমাতে পারিনি। শুধু ভেবেছি যদি তারপরও ছেলেটা সুস্থ না হয়! এতো চিন্তার ভীড়েও আমার অস্থির মনে উদয় হলো ভালো মানুষদের কাজের প্রতিদান কখনো খারাপ কিছু হতে পারেনা। এটা সৃষ্টিকর্তার এক অপূর্ব লীলা।
সাতদিন পর আজ রোখসানা ভাবির হাসিখুশি ছেলেটিকে দেখে আবারও আমার চোখ অশ্রুসিক্ত হয়ে উঠলো।
---------(সমাপ্ত) ----------
অণুগল্প - ্রতিদান
লেখনীতে - সায়মা আক্তার
(কেমন লাগলো অবশ্যই মন্তব্য করবেন। ধন্যবাদ)
যারা এখনো আমাদের গ্রূপে জয়েন না হয়ে গল্প পড়ছেন তারা এখনোই আমাদের গ্রূপে জয়েন হয়ে নিন আমাদের গ্রুপ টা পাবলিক করা আমাদের গ্রূপের গল্প গল্প মন ছুঁয়ে যাবে নীল লেখায় চাপ দিয়ে জয়েন হন 👉👉 📕 Crush & Confession 📗
বাসর রাতের শেষ ভাগে এসে জামাই আমার ফুপিয়ে কান্না করতেছে। তার চোখ ভর্তি পানি দেখে আমার কেবলি হাসি পাচ্ছে।
আমি রাত্রি। আজ আমার জীবনের প্রথম মধুময় রাত। গায়ের রঙ চাপা হলেও; ভালবাসার দাবী নিয়ে অবিবাহিত জীবন পথে কয়েক জন পুরুষ এসেছিলো। শুদ্ধতম বন্ধনের মানুষটির জন্য, তাদেরকে হাসি মুখে ফিরিয়ে দিয়েছি। আজ পারিবারিক ভাবে জুনাইদের সাথে আমার বিয়ে হলো। জুনাইদ যেদিন আমায় প্রথম দেখে গেলো, সেদিন থেকে ছেলেটি আস্ত প্রেমিক হয়ে গেলো। বলা নেই কওয়া নেই পরেদিন শেষ বিকেলে বাইকে ছড়ে চলে এলো! লজ্জায় শ্যামা মেয়ে আমি রক্ত জবা হয়ে উঠি। আড় চোখে একবার তাকিয়ে, ঠোঁটে হাসি লেগে থাকা ছেলেটির মাঝে নিজকে সপে দেই। জুনাইদের আগ্রহ উত্তেজনার দুইদিনের মাঝে ঘটা করে আমাদের আংটি বদল হয়। আংটি বদলের এক সপ্তাহ পর বিয়ে হয়। এই গোটা একটি সাপ্তাহ রাতে দু'জন চোখের পাতা এক করিনি। কথা বলে কাটিয়ে দিয়েছি সাত সাতটি রাত।
ওর প্রিয় রঙ লাল, আমার কালো। খুব ইচ্ছে ছিলো, গতানুগতিক ধারা উলটে দিয়ে; বিয়ের দিন কালো শাড়ি পরবো। কিন্তু আমার সাহেবের পছন্দের কাছে হেরে গেলাম। ও আমায় জোর করেনি, শুধু বলেছে ' বিয়ের দিন লাল শাড়িতে তোমারে যা লাগবে না'! উত্তরে বললাম কি লাগবে শুনি? সদ্য ফোঁটা লাল গোলাপ দেখেছো? দুষ্টু হেসে উত্তরে বললাম না তো। সেও হেসে বললো, আচ্ছা, আচ্ছা; আয়নায় দেখাবো তোমারে। কখন দেখাবে? প্রথম রাতে।
তার প্রিয় রঙে'র লাল শাড়ি পরে, তার'ই অপেক্ষায় বসে আছি। বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি, অবসান ঘটিয়ে চলে এলো তার নববধূর কাছে। রুমে ঢুকে দরজার ছিটকেনি লাগিয়ে পর্দার ফাঁকফোকর ভালো করে দেখে, হাতের পাগড়ি রেখে; নত মস্তকে বসে থাকা আমার সামনে এসে দাঁড়ালো। ঘোমটার অল্প আস্তরণের ভেতর থেকে দেখলাম তার মুগ্ধ চাহনি। সেই চিরচেনা হাসি হেসে পাশে বসে বললো অবশেষে তুমি শুধুই আমার হলে। তার এ কথা শুনে ইচ্ছে করছিলো, সব লাজুকলতা'র গলা চেপে দিয়ে তার বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ি! কিন্তু পারিনি, আড়ষ্ট আমি আরো কুঁকড়িয়ে গেলাম। আমাকে সহজ করার জন্য প্রেমিক পুরুষের ন্যায় ফোন কলের কথোপকথন সরাসরি নিয়ে এলো। মুখে হাসি রেখে গম্ভীর কণ্ঠের ভাব ধরে বলে 'রাত্রি তোমার হাত ধরতে অনুমতি লাগবে'? হু বলে মাথা হ্যা সূচক নাড়িয়ে তার ডান হাত ধরে বললাম, জরিমানা হিসেবে এবার একশত একবার ভালোবাসি বলো। সুখকর এ শাস্তি কেনো? এই যে অনুমতি নিলে। হাত শক্ত করে ধরে চোখ বন্ধ করে; উফফ শব্দ করে মেকি বিরক্তির ভাব ধরে বলে, এই মেয়ে আমার সাধের রাত খেয়ে দিলো রে। তুমি গুনতে থাকো। বেশি হলে শোধ করে নেবো। কম হলে আগামী কাল পুষিয়ে দেবো।
কিন্তু আমাদের একসাথে আগামী কাল এলো না। শেষ রাতে তার ফুপিয়ে কান্না করা'কে মজার চলে নিয়েছে। কানের কাছে ফিসফিসিয়ে বলেছি ভার্জিনিটি ক্ষয়ে যাওয়ায় দুঃখ পেয়ে কষ্টের জলে ভাসছো? অহেতুক বকবক করেও ওকে আমি স্বাভাবিক করতে পারিনি। চারপাশে ফজরের আজানের ধ্বনি ভেসে আসছে। হাত ধরে টেনে বললাম, জুনাইদ চিন্তা হচ্ছে তো। হঠাৎ কি হলো তোমার?
হাত ঝেড়ে ফেলে দিয়ে রুম থেকে বের হয়ে গেলো। বিস্ময়ে দু'চোখ দরজায় কাটকে যায়। চোখ দু'টো জ্বালা করতে থাকে। পানি জমতে থাকে। ঝাপসা চোখ নিয়ে অজু করে ফজর আদায় করলাম। সিজদায় পড়ে এক জীবনের জন্য তাকে'ই চাইলাম। ওর ক্ষানিক অবহেলায় ভেতর পুড়ে যাচ্ছে। 'ঠিক হয়ে যাবে' বলে নিজেক সান্ত্বনা দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকাল হলো সবাই মিলে নাস্তা করলাম। চারপাশের লোকেরা নতুন বউ দেখতে আসছে। ভাবিরা হাসি তামাশা করছেন। সকাল দশটা পেরিয়ে গেলো তার দেখা নেই। বাধ্য হয়ো শ্বাশুড়ি মা'কে জিজ্ঞেস করলাম, মা আপনার ছেলে নাস্তা করেছে? উত্তর এলো 'না'। আরো বললো ওকে সকাল থেকে উনি দেখেননি। তাকে কল করার জন্য রুমে গেলাম। রুমে গিয়ে দেখি ফোন বিছানায় পড়ে আছে।
দুপুরের খাবারের সময় বাসায় এসেছে। ওকে দেখে বন্ধ হয়ে যাওয়া দমে পানি এলো। সবাই সহ একসাথে বসে ভাত খাচ্ছিলাম। ইচ্ছে করছিলো তার সামনে দৌড়ে গিয়ে দাঁড়াই।
ফ্রেশ হয়ে খেতে বসে জুনাইদ বললো, মা আমরা একটু পর ও বাড়ি যাবো। বাবার বাড়ি যাওয়ার কথা শুনেও মনে উচ্ছাস জমলো না। কেনো যেনো যেতে ইচ্ছে করছিলা। রুমে এসে থম ধরে বসে রইলাম। খেয়ে এসে তৈরি হওয়ার জন্য আমাকে তাড়া দিতে লাগলো। স্থির চোখে তার দিকে তাকিয়ে বললাম, আমার চোখের দিকে তাকিয়ে কথা বলো। সঙ্গে সঙ্গে ও আমার চোখের দিকে তাকিয়ে বললো দ্রুত করো। কিন্তু তার মুখে সেই চিরচেনা হাসি নেই, কেমন যেনো ফেকাসে দেখাচ্ছে। উত্তরে বললাম, বিয়ের পরের দিন যাওয়ার নিয়ম নেই, তিনদিন হলে যেতে হয়। ধুরো, তুমি আছো মুরব্বিদের যুগে। বোরকা পরে নাও তো।
আমার কেনো যেনো বুকের ভেতর ফেটে যাচ্ছে। ইচ্ছে করছে ওর বুকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ফুঁপিয়ে কান্না করি। কান্নার জলে তার শার্ট ভিজিয়ে দেই। কিন্তু তার সরে সরে থাকা'তে নিজেকে এগিয়ে নিতে পারলাম না।
শেষ বিকেলে রক্ত রাঙা সূর্যকে সাক্ষী রেখে জুনাইদ আমাকে চিরদিনের জন্য বাবার বাড়ি রেখে গেলো। যা আমার কল্পনায়ও ছিলো না। আমাকে রেখে বাজার যাওয়ার অযুহাতে সে আমার জীবন থেকে চলে গেলো।
রাতে এলো না, ফোনে কল যাচ্ছে না। শ্বাশুড়ি'কে ফোন দিয়েও কোন খাবর ফেলাম না। পরের দিন সে নিজ থেকে বড় দুলাভাই'কে ফোন দেয়। তার না কি আমাকে পছন্দ হচ্ছে না। আমি কালো। দুলাভাই বললো, বিয়ের আগে তিনদিন এসে দেখে গেলেন; সেই তিনদিন কালো দেখেননি?
দেখিনি তখন, তখন তো তাকে বিশ্ব সেরা রূপবতী মনে হয়েছে। এখন সোজা কথা তার সাথে আমি সারাজীবন সংসার করতে পারবো না। দুলাভাই রেগে খুব গালাগালি করলেন।
তাকে ছাড়া এক সপ্তাহ কেটে গেলো। তার একটাই কথা সে আমাকে নিবে না, নিবেই না। আমার একটাই দোষ, আমি কালো। তার পরিবারের লোকেরাও অনেক বুঝিয়েছে, কিন্তু সে তার কথায় অটল। এবার তাকে জেল ফাঁসি যা-ই দেওয়া হোক, সে তাই মেনে নিবে; শুধু আমাকে ছাড়া।
আমার পরিবারের লোকেরা অপমানিত হয়ে ক্ষেপে গেলো। হয়ে গেলো আমাদের বিচ্ছেদ। বিচ্ছেদের দিন শুধু একটি কথা-ই বলেছি 'জীবনে যখন থাকবেই না, তাহলে ভালোবাসতে শিখিয়েছিলে কেনো'? তাকে আরো অনেক কথা বলার ছিলো। কিন্তু এই একটা প্রশ্নের উত্তর'ই তো সে দিতে পারলো না। সেদিন নিজেকে শক্ত রেখেছি। চোখের জল লোকচক্ষু'তে পড়তে দেইনি। কিন্তু তারপর থেকে আর পারিনি নিজেকে শক্ত রাখতে। এক রুমের বাসিন্দা হয়ে গেলাম। রুমের বাহিরে শব্দ না যাওয়ার মতো করে হাউমাউ করে কেঁদেছি। পরিবারের লোকেরা আমার ভালোথাকার জন্য এখানে সেখানে ঘুরতে নিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু সে ভেতর থেকে নড়ছেনা। ঠায় বসে আছে হৃদয়ের মাঝ বরাবর। বসে বসে ছুরি দিয়ে খোঁচাচ্ছে আর হাসছে!
ছয় মাস সুস্থ মানুষ ছিলাম৷ এর পর আমার নাম হয়েছে 'মেয়েটি পা*গল'।
©রোকসানা আক্তার আলো*
যারা এখনো আমাদের গ্রূপে জয়েন না হয়ে গল্প পড়ছেন তারা এখনোই আমাদের গ্রূপে জয়েন হয়ে নিন আমাদের গ্রুপ টা পাবলিক করা আমাদের গ্রূপের গল্প গল্প মন ছুঁয়ে যাবে নীল লেখায় চাপ দিয়ে জয়েন হন
Crush & Confession
রাত দুইটার সময় মেয়েটি আমাকে হাতের মুঠোয় চেপে ধরল। একটু আগেই নেশাখোর ভ্যান ড্রাইভার মজনু রেল স্টেশনের আশেপাশে খুঁজে বেড়াচ্ছিল কোনো মেয়ে পাওয়া যায় কি-না। অবশেষে খুঁজে পেয়ে মাতাল হয়ে দেহের চাহিদা মিটিয়ে আমাকে পতিতার হাতে তুলে দিলো। ও হ্যাঁ, আমি একটি একশত টাকার নোট। মেয়েটি আমার দিকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো। এরই মধ্যে মজনু বলল, বিশ টাকা বেশি নিয়ে গেলি। জবা আর কুসুম কিন্তু আশি টাকা নেয়। একশ টাকা দিলে বিশ টাকা ফেরত দেয়।
মেয়েটি মুচকি হেসে আমাকে হাতের মুঠোয় চেপে ধরে হাঁটতে লাগলো।
বহু বছর ধরে আমি একজনের কাছ থেকে আরেকজনের কাছে যাচ্ছি। তা বছর পনেরোর মতো তো হবেই। যখন আমাকে নতুন তৈরী করা হলো, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে গাড়িতে করে আমাকে নিয়ে আসা হলো নরসিংদী ইউ,এম,সি জুট মিলের ভিতর। সেখানে প্রতি সপ্তাহের বৃহষ্পতিবার শ্রমিকদের সাপ্তাহিক বেতন পরিশোধ করা হয়। সেখান থেকেই আমি প্রথমে মানুষের হাতে আসি। এক শ্রমিক তখন সাড়ে ছয়শত টাকা বেতন পেয়েছিল। আমার সাথে ছিল আমার বড়ো ভাই পাঁচশত টাকার নোট। আর ছোটো ভাই পঞ্চাশ টাকার নোট। লোকটি বাজার করলো পাঁচশত টাকার নোট ভাঙ্গিয়ে। বাজার করার পর আসার পথে একজোড়া জুতোও কিনল। আমি তখনো লোকটির বুক পকেটে। বাড়িতে এসে ডাক দিলো, শ্রাবণ। কোথায় তুই? দেখে যা তোর জন্য নতুন জুতো এনেছি।
বুঝতে পারলাম লোকটার ছেলের নাম শ্রাবণ। ছেলেটি জুতো পেয়ে অনেক খুশি। জুতো কোলে নিয়ে ছেলেটি তার মায়ের কাছে গিয়ে বললো, এই যে আমার নতুন জুতো।
তিনজনের মুখেই তৃপ্তির হাসি। ছেলেটির মা একটু এগিয়ে এসে বলল, সব টাকা শেষ করে ফেললে না-কি? পাশের বাড়ির ভাবীর কাছ থেকে একশত টাকা ধার এনেছিলাম মনে আছে তোমার?
লোকটি বুক পকেট থেকে আমাকে বের করলো।
-এই যে তোমার একশত টাকা। ভাবীকে দিয়ে দিও। আমার কাছে আর বিষ খাওয়ার পয়সাও নাই।
মহিলা যখন শ্রাবণকে ডাকলো, শ্রাবণ নতুন জুতো পরে হাজির। সামনে এসে বলল, এই যে মা আমার নতুন জুতো।
-দেখেছি বাবা। একটা কাজ করো, এই টাকাটা জোনাকির মা'কে দিয়ে বলবা মা দিয়েছে। শ্রাবণ প্রথমেই আমাকে একটি চুমো দিলো। তারপর আমাকে তার হাফপ্যান্টের পকেটে ঢুকিয়ে নাচতে নাচতে জোনাকিদের বাড়ি যাচ্ছে। কিন্তু শ্রাবণের পকেট ছেঁড়া। আমি তার নাচনে পকেট থেকে মাটিতে আছড়ে পড়লাম। আমার খুব ইচ্ছে করছিল, শ্রাবণকে ডেকে বলি শ্রাবণ এই যে আমি এখানে রাস্তার ধারে। আমাকে তুমি নিয়ে যাও, নয়তো অন্য কেউ নিয়ে যাবে। কিন্তু আমি কথা বলতে পারি না। তাই শ্রাবণের কাছ থেকে আমি আলাদা হয়ে গেলাম। সে আমাকে প্রথম চুমো দিয়েছে, আমি তার কাছ থেকে আলাদা হতে চাইনি।
আমাকে কুড়িয়ে পেয়েছে এক মহিলা। তার কাপড়ের আঁচলে আমাকে গিট্টু দিয়ে রেখেছে। আমার কষ্ট হচ্ছে, কিন্তু তবুও প্রকাশ করতে পারছি না। একটু পরই দেখি শ্রাবণের মা তাকে মারতে মারতে এদিকে নিয়ে আসছে। আর বলছে কোনদিক দিয়া গেছোস বল। নাই দিনের টাকা এখন কই পাব? বল কোথায় ফেলছস?
শ্রাবণ কেঁদেই চলেছে। যে আমাকে প্রথম চুমু দিলো, সে আমাকে হারিয়ে কান্না করছে। অথচ আমি তাকে হারাতে চাইনি।
যে মহিলা আমাকে কুঁড়িয়ে পেয়েছিল সে আমাকে দিয়ে চুড়িওয়ালার কাছ থেকে বিশ টাকার চুড়ি কিনেছিল। চুড়ি বিক্রেতা আবারো বিক্রি করার জন্য যখন নতুন চুড়ি কিনতে গেল তখন আমাকে অন্যান্য টাকার সাথে দিয়ে দিল চুড়ির বড়ো দোকানটিতে। সেই থেকে বছর পনেরো ধরে আমি একজন থেকে অন্যজনে ঘুরে বেড়াচ্ছি। কখনো ভালো মানুষের কাছে কখনো খারাপ মানুষের কাছে। কখনো পুলিশের কাছে কখনো বা চোর ডাকাতের কাছে। কখনো নারীর কাছে কখনো পুরুষের কাছে। কত জেলা ঘুরে এসেছি আমি। শেষ পর্যন্ত এসে পৌঁছলাম এই পতিতার কাছে। যে আমাকে মধ্যরাতে হাতের মুঠোয় করে কোথায় যেন যাচ্ছে। সে কি ভোর হওয়া অবধি আর কারো জন্য অপেক্ষা করবে না? না-কি আমাকে দিয়েই তার আজকের রুটি রোজগাড় শেষ?
মেয়েটি আঁচলে মুখ ঢেকে একটি বাড়িতে ঢুকে পড়ল। হারিকেন জ্বালিয়ে একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলল। একটি বাচ্চা ছেলে শুয়ে আছে বিছানায়। সাথে আরেকটি লোক। লোকটি মনে হয় মেয়েটির স্বামী। কিন্তু তার এক পায়ে ব্যান্ডেজ করা। হয়তো কোনো দুর্ঘটায় পা ভেঙ্গেছে। সেররে উঠতে দুই চারদিন সময় লাগবে। এটা একটা ভাড়া বাড়ি। বাইরে একটা রিক্সা রাখা। রিক্সাটি মনে হয় এই লোকটিরই। এমন ভাড়াটিয়া বাড়ির মানুষের কাছেও আমি বহুবার পৌঁছে ছিলাম বিগত পনেরো বছরে।
লোকটি কাজে যেতে পারছে না, ঘরে খাবার নেই। গরীব মানুষ, পেট তো খাবার চায়। মানুষ মানুষকে দুয়েক বেলার জন্য সাহায্য করে, সবসময় করে না। "মেয়েটি মনে হয় তিনবেলার খাবারের জন্য একবেলা ইজ্জত বিক্রি করল।"
আমাকে পরদিনই এক মুদির দোকানে নিয়ে মেয়েটি এক কেজি চাল আর এ পোয়া ডাল নিয়ে গেল। এই মেয়েটির সাথে আর কোনোদিন দেখা হবে কি না জানি না। এই দোকানটি যেখানে অবস্থিত, এর আশেপাশের রাস্তাঘাট আমার খুব পরিচিত লাগছে। গতকাল রাতে মজনু ভ্যান চালিয়ে কোথা থেকে কোথায় নিয়ে এলো আমি জানি না। রাতের বেলা চিনতে না পারলেও এখন মনে হচ্ছে পরিচিত জায়গা। সেই পনেরো বছর আগে এই রাস্তা দিয়ে মানুষজন আমাকে পকেটে নিয়ে চলাফেরা করেছে।
দুইদিন পর একটি ছেলে এলো দোকানে সিগারেটের জন্য। পাঁচশত টাকার নোট দিলো। দোকানদার বাকি টাকা ফেরত দেয়ার সময় আমাকেও ছেলেটির হাতে দিয়ে দিলো। ছেলেটি টাকা গোনার সময় আমাকে উলটিয়ে পালটিয়ে বলল, আওলাদ ভাই যত পুরাণ টাকা সব কি আমার জন্য রাখো?
আমার মন খারাপ হলো কিছুটা। একসময় আমিও নতুন চকচকে ছিলাম। পনেরো বছর পেরিয়ে গেছে। আর কত নতুন থাকবো আমি?
ছেলেটি আমাকে নিয়ে চলে আসার সময় দোকানদান আওলাদ ডেকে বলল, শ্রাবণ কাল না-কি তোর ফ্লাইট? একবার বললিও না।
-যাবার সময় সবাইকে বলেই যাব আওলাদ ভাই।
আমার যদি কান্না করার জন্য চোখ থাকতো আমি সত্যিই কেঁদে দিতাম। এটা সেই শ্রাবণ যে পনেরো বছর আগে আমাকে চুমু খেয়েছিল। যার কাছ থেকে আমি আলাদা হতে চাইনি। শ্রাবণ আমাকে চিনবে না। পনেরো বছরে তরতাজা যুবক হয়ে উঠেছে। ইচ্ছে করছে ডেকে বলি, শ্রাবণ দেখ আমি তোর সেই হারিয়ে যাওয়া একশত টাকা। দেখ আমার বুকে আঁকা আছে সেই স্মৃতিসৌধটি। দেখ লেখা আছে, বাংলাদেশ ব্যাংক
ইহার বাহককে চাহিবা মাত্র
একশত টাকা দিতে বাধ্য থাকিবে।
শ্রাবণ আমার গায়ের নাম্বারটিও তো তোর মনে নেই। ঙ ঘ ০২০৩১২১
শ্রাবণ আমাকে চিনতে না পারলেও আমি তার সাথে থাকতে পারব বহুদিন। সে আরব একটি দেশ বাহরাইনে চলে এসেছে। আমি তার পকেটে আছি সযতনে। আসার সময় ভাগনিকে আর খালাত ভাইকে নতুন একশত টাকার নোট দিলেও পুরাতন আমাকে রেখে দিয়েছিল তার মানিব্যাগে। এই বাহরাইনে বাংলাদেশের টাকা চলে না। বাহরাইনের দিনারে লেনদেন হয়। তাই এখনো আছি শ্রাবণের মানিব্যাগে, থাকব বহুদিন।
গল্পঃ াকা
লেখনীর শেষ প্রান্তে,,,,,,,
,,,,,,,,ওমর ফারুক শ্রাবণ
যারা এখনো আমাদের গ্রূপে জয়েন না হয়ে গল্প পড়ছেন তারা এখনোই আমাদের গ্রূপে জয়েন হয়ে নিন আমাদের গ্রুপ টা পাবলিক করা আমাদের গ্রূপের গল্প গল্প মন ছুঁয়ে যাবে নীল লেখায় চাপ দিয়ে জয়েন হন 👉👉 📕 Crush & Confession 📗
রাত ১2 টা হঠাৎ করে আমার রুমে আব্বুর প্রবেশ।
কি হইছে এতো রাতে আমার রুমে আসলা কেন আব্বু??
কি খুঁজছো?😮
-ঝাড়ু টা কইরে??
রুম টারে তো বস্তী
বানায় রাখছস একটু পরিষ্কার ও করস না।
,[[ "কি ব্যাপার আব্বু এতো রাতে আমার রুমে ঝাড়ু খুঁজে কেন?? নিজেকে ভালো করে দেখলাম...
কই আমার কোনো দোষ তো নাই। তাহলে ঝাড়ু খুঁজে কেন?? হঠাৎ মনে পড়ল পাশের বাসার বড় আপুকে আজ প্রপোজ করছিলাম।
মনে হয় নালিশ
আসছে। আল্লাহ!!
নিজেরে নিজে বুদ্ধি দিলাম, " মিস্টার পিলু দৌড় দেও নাইলে
আজ নিস্তার নাই]]
" . > দাঁড়াও আব্বুজান,আমি খুঁজে দিচ্ছি, ওইযে ওই খানেই তো ছিলো,,,,,-নাহ তুই শুইয়াই থাক।
আমি নিজে খুজইজ্জা লইতাছি। (( আবার নিজেরে বললাম "বিছানা ছেড়ে দৌড় মার পিলু নাইলে কপাল খারাপ আছে তোর বাপ এতো ভালো না যে রাত ১২ টায় তোর রুম পরিষ্কার করে দিবে " .))
- >আররেহ্ নাহ্ আমার মতো একজন যুবক ছেলে থাকতে তুমি কষ্ট করবা কিসের জন্য??
আমি এই খুঁজে দিচ্ছি দাঁড়াও। ( বিছানা থেকে দড়জার কাছে যেতে যেতে বললাম এখানেই ছিলো গেলো কই!!
এই কথা বলাও শেষ,,, দরজা
খুলে দৌড় মারাও শেষ,,,,
-ওই পিলুর বাচ্চা,,, কই যাস দাঁড়া দাঁড়া নাইলে কিন্তু তোর কপাল খারাপ আছে বইলা দিলাম,,,,😃
- আমাকে কি বালিশ পাইছ??
নরম পাইয়া ইচ্ছামত পিটাইয়া গাল লাল করবা??
এই কথা বলতে বলতে মেইন গেট খুলছিলাম এর মইধ্যেই দুড়ন্ত বাবার উড়ন্ত ঝাড়ুর বাড়ি পিঠে লেগে গেলো।
-
- > ওরে মারে বাঁচাও বাঁচাও ছিনতাই কারী ধরছে আমারে বাঁচাও ,,, আমার চিৎকার শুনে ছোট চাচায় তার বাসার মাছ কাটার বটি নিয়ে লাফাইয়া বের হয়েছে..
-
-> -কইরে কই কই হালার পুতে কই?? এতো বড় সাহস আমার বাড়িতে ঢুইক্কা আমার ভাতিজা রে এটাক করে কই হালার পুতে??
,
-ওই বেদ্দপ??
কি কইলি আমি
ছিনতাই কারী??
পিলুর মা,,, বাসাই যাইয়্যা সাইজ করা রড টা নিয়া আসো তো ওর ঠ্যাং ভাইংগা ফালাব। তোমার পোলায় আজকা আমারে
বলে ছিনতাইকারী ,,,,,
এর মধ্যেই আম্মাজান বের হলো... -
- >কি হইছে এতো রাতে চিল্লাচিল্লি করো কেন তোমরা??
> তোমার গুনধর ছেলে আইজকা ঐ আরিফ ভাইয়ের মেয়ে মিলাকে নাকি গোলাপ
দিছে..
আমার মান সম্মান আছে কিছু বাকি??
তোমার গুণধর ছেলে আমারে আজকে বলে ছিনতাই কারী... আমার আপন ভাই আর একটু হইলে আমাকে বটি দিয়া মাছের মত কাইট্টা ফালাইতো।
এলাকার লোকজন
আমাকে পিডাইয়া আলু ভত্তা করতো এই রাত্রে কি তারা দেখত যে আমি কেডা???
ছোট চাচা বটি নিয়া দৌড় দিল, ধর হারামি ডারে ধর ওরে আজকা পুস্কুনি তে চুবামু,,,
>পুকুরে না ওইটাারে ধর, ধরে ছাদের উপর বাইন্ধা রাখ ১ দিন, খাওয়া বন্ধ।
আমি দৌড় দিব এমন সময় আম্মা বলল -ওই দাড়া, দৌড় দিবি না দিলে কিন্তু খবর আছে,
>দৌড় না দিয়া তো, এই ডাকাইত ফেমিলির হাতে আমার নিষ্পাপ প্রান বিসর্জন দিব তাই না??? আব্বাজান :-খাড়া কিন্তু,
যা, বেশি
পিডামু না আমি একটা থাপ্পড় দিমু আর তোর চাচায় একটা আর তর মায় একটা,,,. >তোমার কথা আমি বিশ্বাস করব?? বলদ পাইছো??
আগের বার ও এই
কথা বলছিলা।
পড়ে গন ধোলাই
দিছিলা,,, -যা এইবার আর বেশি পিটাব না। তাও থাম।
এই রাত্রে আর দৌড়াইতে
পারব না,,, .
>কসম দাও একটা করে
থাপ্পড় দিবা সবাই..
আগের বারের
মতো গন ধোলাই দিবা না,,,
-আচ্ছা কসম, পি/টা/ব না (বাপ জান) .
-কি আর করব, নিরীহ প্রানীর মতো সেইলেন্ডার করলাম তবে তিন টা থা/প্পড় যা খাইছিলাম তা জীবনেও ভুলমু না,,,,
বিয়ে টা করা হোক,বউ এর ভুল ধরে এই তিনটা থাপ্পড় এর দু:খ ওর উপর ঝাড়ব।
একটা বউ খুঁজতে গিয়েই আজ আমার এই দশা...😂😂
রেস্টুরেন্টে বিলের জায়গায় পেইড দেখেই ম্যানেজারকে জরুরী তলব করলো তিথি। পাঁচ হাজার টাকা বিল পরিশোধ হয়ে যাওয়ার ব্যাপারটা ছোটো খাটো নয়। তিথি এই পর্যন্ত কয়েকবার কাগজটা পড়ে দেখেছে। সবকিছুই ঠিকঠাক। তার মানে এটা তারই অর্ডার ছিলো। এতোক্ষণ ভাবছিলো অন্যকারো বিল এনে ভুল করে তাকে দিয়েছে। কিন্তু এমনটা হয়নি সেটা এখন বিশ্বাস করতে পারলো।
" কোন সমস্যা হয়েছে ম্যাডাম?"
ম্যানেজার বেশ বিনয়ী। খুব একটা বয়স নয়। তবুও বয়সে বড় একজন লোক এমন বিনয়ী হয়ে কথা বললে তার সাথে খারাপ ব্যাবহার করা যায়না। তবুও তিথি কিছুটা কড়া মেজাজে বললো
" আমার বিলটা কে পে করলো সেটা আমি জানতে চাই।"
ম্যানেজার পেছনে তাকালেন। একটু তাকিয়ে থেকে আঙ্গুলের ইশারায় বললেন
" ঐ টেবিলে বসে ছিলেন স্যার। মনে হয় চলে গেছেন।"
" ডিজগাস্টিং! একজন মানুষ আমার বিল পে করে দিলো আর আপনারা আমার অনুমতি না নিয়েই বিল নিয়ে নিলেন? ব্যাপারটা কেমন হলো না?"
ম্যানেজার ভড়কে গিয়েও নিজেকে সামলে নিয়ে বললেন
" উনি যে বললো এটা গিফট হিসেবে দিয়েছেন। "
"উনি যা ইচ্ছা বলুক। আপনার উচিৎ ছিল আমাকে ইনফর্ম করা। আপনারা এতো কেয়ারলেস কিভাবে হতে পারেন?"
" উনি বলেছিলো আপনার পরিচিত। আপনার কাছের লোক। আর আমরা সেটা বিশ্বাস করতে বাধ্য হয়েছি কারণ উনি আপনাদের পাঁচ জনের ডিটেইলস একদম ঠিক বলেছিলেন। এভাবে কারো ডিটেইল বলতে পারা মানুষটা কিভাবে অপরিচিত হয় ম্যাডাম।"
তিথি কিছু বলতে গিয়েও থেমে গেলো। হাফ ছাড়তেই ম্যানেজার বলল
" উনি আমাদের রেগুলার কাস্টমার। কাছেই ওনার অফিস। ফেরার পথে আমাদের হট কফি খেয়ে যান। ওটা নাকি ওনার খুব পছন্দ। আসলে আমরা যে গার্নাশ টা দেই সেটাই উনি পছন্দ করেন। আর চিনিটা..।"
ম্যানেজারকে মাঝপথেই থামিয়ে দিলে তিথি। উনি রীতিমত মার্কেটিং শুরু করেছেন। না থামালে হয়তো আরো ডিটেইল বলতো। কিছুটা বিরক্ত হয়ে জানতে চাইল
" কখন আসেন উনি?"
" সন্ধ্যার পর। প্রতিদিন একই সময়ে আসেন। পাঁচ দশ মিনিট লেট হতে পারে। "
তিথি এবার বেশ বিরক্ত হয়ে বলল
" ঠিক আছে।"
ম্যানেজার কথা না বাড়িয়ে চলে গেলো। তিথি বন্ধুদের নিয়ে বেরিয়ে এলো। বাড়ি পৌছেও তার মাথায় ঐ বিষয় টাই ঘুরছে। কাল আবার রেস্টুরেন্টে যেতে হবে। ঐ ব্যাক্তিকে খুঁজে বের করতেই হবে।
___
গত আধা ঘণ্টা ধরে বসে আছে তিথি। ম্যানেজারকে কয়েকবার জিজ্ঞেস করেছে ঐ ব্যাক্তি এসেছে কিনা। কিন্তু প্রতিবারই উত্তর নাবোধক এসেছে। তিথি বিরক্ত হলো। ম্যানেজার কয়েকবার বলেছেন উনি নাকি একই সময়ে আসেন। আজ কেন দেরি করছেন বুঝতে পারছেন না। তিথি পুরো প্রস্তুতি নিয়ে এসেছে টাকা ফেরত দিয়ে কিছু কথা শুনিয়ে চলে যাবে। কিন্তু সে সুযোগটা আর হয়তো হবে না। রাস্তায় দৃষ্টি তাক করলো। বাইরে অন্ধকার ঢলে পড়েছে। রাস্তা নিয়ন বাতির আলোয় ঝলমল করছে। গাড়ির বহরও বেড়েছে। সব অফিস ফেরত গাড়ি। মোবাইলে সময়টা দেখেই ওয়েটারকে ইশারা করলো বিলটা দিয়ে যেতে। আজ আর অপেক্ষা করবে না। কাল আবার একবার এসে দেখে যাবে। ওয়েটার একটা পেস্ট্রি আর একটা হট চকোলেট এর বিল নিয়ে এলো। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হলো এবারও বিলটা পেইড। তিথি তৎক্ষনাৎ আশেপাশে তাকাল। কিন্তু সেরকম কাউকেই চোখে না পড়ায় আবার ওয়েটারকে ডাকল। গতকালের ঘটনা টা পর ওয়েটার খুব ভয়েই আছে। তাই দ্রুত তিথির কাছে চলে এলো। তিথি উত্তেজিত হয়ে বলল
" আবারও আমার বিল পেইড অথচ আপনারা বলছেন উনি নাকি আসেন নি। তাহলে এবার বিলটা কে দিলো?"
ওয়েটার বেশ নরম হয়ে বলল
" আমি কিছু জানিনা ম্যাডাম।"
তিথি সর্বোচ্চ পরিমান রেগে গেলো। টেবিল ছেড়ে উঠে ম্যানেজারের কাছে গিয়ে বলল
" আপনি বলছেন উনি আসেনি। তাহলে বিলটা কে দিলো? "
" আমি দিয়েছি।"
গলার আওয়াজ শুনেই পেছনে তাকাল তিথি। সুদর্শন যুবক ফরমাল ড্রেসে দাড়িয়ে আছে। স্কাই ব্লু শার্ট টা বেশ মানিয়েছে। তিথির ধারণা সব সুদর্শন পুরুষ এই রংয়ের শার্ট পরে।
" জি ম্যাম। এই স্যার আপনার বিল পে করেছিলো। "
তিথি চেহারার দিকে একবার তাকিয়ে স্তব্ধ হয়ে গেল। যা বলার প্রস্তুতি নিয়ে এসেছে কিছুই বলতে পারলো না। ব্যাগ থেকে টাকা বের করে ম্যানেজারের দিকে বাড়িয়ে দিয়ে বলল
" বিলটা আমি পে করবো।"
" সরি ম্যাম। একই বিল দুবার কিভাবে নেই। আমাদের এমন কোন রেকর্ড নেই।"
তিথি আর কিছুই বলতে পারলো না। উল্টো ঘুরে ফিরে যাওয়ার জন্য পা বাড়ালো।
" আমি এই বিলের সাথে আরো দুই কাপ কফির বিল পে করেছি। আপনি যদি ফিরে যান তাহলে আমার কফির বিলটা জলে ভেসে যাবে।"
দাঁড়িয়ে গেলো তিথি। রাতুল তার সামনে গিয়ে দাড়ালো। বলল
" বিলটা জলে ভেসে যাওয়ার আফসোস থাকবে না কিন্তু আফসোস টা হবে অন্য কিছুর জন্য।"
তিথি কথা বলল না। রাতুল আবার বলল
" আমি কাউকে রিকুয়েষ্ট করিনা। তবে আপনার জন্য, একটু বসুন না প্লিজ। "
তিথি একপলক তাকিয়ে বসে পড়লো। কাচের দেয়াল ঘেঁষে চেয়ারটায় বসে বাইরে তাকিয়ে আছে। রাতুল তার সামনের চেয়ারে বসলো। পকেট থেকে ফোনটা বের করে টেবিলে রেকে বলল
"সরি! আজ আসতে দেরি হয়ে গেলো। একটা মিটিং ছিলো। সেটা শেষ করতেই দেরি হয়ে গেলো। আপনাকে অনেকক্ষণ অপেক্ষা করতে হলো। যদি জানতাম কেউ অপেক্ষা করছে তাহলে তো মিটিং ফেলেই চলে আসতাম।"
তিথি আড় চোখে একবার তাকালো। আবার মুখ ফিরিয়ে নিলো। রাতুল বলল
" আপনি প্রায় এখানে আসেন নাকি? আমি তো প্রতিদিন আসি। আগে কখনো দেখা হয়নি।"
" আমি সন্ধ্যার পর এখানে আসি না। তাই এতোদিন দেখা হয়নি।"
"ওহ! কালই আপনাকে প্রথম দেখলাম। বন্ধুদের সাথে। "
তিথি কিছু টা সন্দিহান হয়ে বলল
" আপনি কিভাবে জানলেন ওরা আমার বন্ধু হয়।"
রাতুল পানির বোতল খুলে গ্লাসে ঢেলে এক চুমুক খেয়ে বললো
" নিশ্চয় এটা অসম্ভব কিছু না। ইচ্ছা করলেই জানা সম্ভব। আর আপনার সম্পর্কে জানার আগ্রহ টা আমার একটু বেশি।"
তিথি কোন উত্তর না দিয়ে আবারো রাস্তায় তাকালো। রাতুল চেয়ার ছেড়ে উঠে এসে তিথির পাশের চেয়ারটায় বসে তিথির কাঁধের পাশ দিয়ে হাতটা লম্বা করে রেখে আয়েশ করে বসলো। তিথি কিছু না বললেও সে নড়েচড়ে বসলো। রাতুল তিথির আঙ্গুলে দেখিয়ে বলল
" আংটিটা কি হবু বরের দেয়া?"
তিথি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকাতেই রাতুল মোবাইলে সেলফি মুডে থাকা ক্যামেরায় ক্লিক করতেই মুঠোবন্দি হয়ে গেল এক অসাধারণ মুহূর্ত। রাতুলের হাসি আর তিথির রাগ। মিশ্র অনুভূতির প্রকাশ। রাতুল মুচকি হেসে বলল
" এই ছবিটা আপনার হবু বরকে পাঠালে কেমন হবে? "
তিথি এবার রেগে বলল
" আশ্চর্য! এতো বিরক্তিকর একটা মানুষ কিভাবে হতে পারে। "
রাতুল হেসে ফেললো। বলল
" সরি। মজা করছিলাম। আমি এমন কিছুই করবো না। এটা আমাদের সিক্রেট। কেউ জানবে না। ভয় পাবেন না। "
তিথি খুব বিরক্ত হলো। ওয়েটার কফি নিয়ে আসলো। এক কাপ কফি তিথির দিকে বাড়িয়ে দিয়ে রাতুল বলল
" আপনি খুব রেগে আছেন। গরম কফি খেয়ে মাথা ঠান্ডা করুন।"
তিথি কোন কথা না বলে কফির কাপে এক চুমুক দিয়ে পাশে রাখলো। রাতুল নিজের কাপটা তুলে তাতে চুমুক দিতে গিয়ে থেমে গেলো। সেটা তিথির সামনে রেখে তিথির কাপটায় চুমুক দিয়ে বলল
" নাইস কফি। প্রতিদিনের এক ঘেয়েমি টেস্ট টা আজ একটু চেঞ্জ হয়েছে। বেশ ভালো লাগছে।"
এবার তিথি ফিরে তাকাতেই রাতুল হেসে ফেললো। তিথি স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে। এই মোহ জাগানো হাসি তার বুকের ভেতর টা ক্ষত বিক্ষত করে দিয়েছিলো গত সপ্তাহে। সেই ক্ষত সারাতেই আঙ্গুলে পরে আছে রাতুলের মায়ের দেয়া আংটি।
গত সপ্তাহে পারিবারিক সম্বন্ধের মাধ্যমে দেখতে আসে তিথিকে। রাতুল এবং তার মা। আর একবার তিথিকে দেখে রাতুলের মায়ের এতো ভালো লেগে যায় যে কোন প্রস্তুতি ছাড়া এসেও শেষ পর্যন্ত নিজের হাতের আংটি খুলে পরিয়ে দিয়ে যায় পুএবধূ হিসেবে বরাদ্দ রাখার জন্য।
" আমাকে আপনি বেশ পছন্দ করেন তাই না?"
তিথি ভ্যাবাচেকা খেয়ে গেলো। রাতুল মুচকি হেসে বলল
" আবার প্রেমেও পড়ে যেতে পারেন। অস্বাভাবিক কিছু না। আমি মানুষটাই এমন।"
তিথি এবার বিরক্ত হয়ে বলল
" আপনার মতো এমন একটা বিরক্তিকর মানুষকে পছন্দ করার কোন কারণ নেই। আর প্রেমে পড়া তো দূরের কথা। ইনফ্যাক্ট আমি আপনার সাথে থাকবো কিনা সেটা এখন ভাবতে হবে। "
রাতুল জোরেশোরে হেসে উঠলো। বললো
" থাকতে তো হবেই।"
" আমি যদি না চাই তবে আমাকে কে বাধ্য করবে?"
রাতুল কিছু টা ঝুকে পড়ে তিথির দিকে। চোখে চোখ রেখে বলল
" আমি রাখতে জানি মেয়ে। তাই তুমি, তুমি থাকতে বাধ্য। "
সমাপ্ত
#সন্ধ্যা_বেলার_কফি
আদিবা রহমান
আমার হাসবেন্ড আশরাফ ঢাকাতে চাকরি করে।বিয়ের পর পর শুনেছি আশরাফ নাকি বাহিরের খাবার খেতে পারে না। বাহিরের খাবার খেয়ে দুইবার হাসপাতালে ভর্তি ছিলো।তাই বিয়ের একমাস পরে অনেকটা জোর করে শ্বাশুড়ি মা আমাকে আশরাফের কাছে পাঠিয়ে দেন। সংসারের স ও বুঝতাম না।তারপরও একটা সংসার গুছিয়েছি।কেউ একটু সাহায্য করে নাই। আশরাফ খুব ছুটি পেতো না যার কারণে দুই ঈদ বাদে আমাদের বাড়ি যাওয়া হতো না।
তিন দিন হউক চার দিন হউক যখন বাড়ি যেতাম আমার শ্বাশুড়িকে রান্না করতে দিতাম না। আমি রান্না করতে গেলে ওনি বার বার রান্নাঘরে যেতো। আড়চোখে আমার দিকে তাকিয়ে থাকতো। আমি এসব স্বাভাবিক ভাবেই নিতাম। আমি মা হারা ছিলাম। আমার নয় বছর বয়সে একটা এক্সিডেন্টে আমার মা স্পট ডেথ আর বাবা তার এক পা হারিয়ে ফেলে। আমার বাবা আমাকে বড় করেছে। সেজন্য শ্বাশুড়ি কে বার বার মা বলে ডাকতাম। কিন্তু ওনি সহজে সারা দিতো না।পাঁচ ছয়বার ডাকার পর সারা দিতো। কপাল কুঁচকে তাকাতো। এমন মুখভঙ্গি করতো যেন আমার ডাকে ওনি বিরক্ত।
আমি বাড়ি গেলে ওনি এখানে সেখানে যাওয়া কমিয়ে দিতো। সারাক্ষণ ঘরেই থাকতো। আমি ভাবতাম হয়তো অনেকদিন পর পর বাড়ি যাই বলে আমাকে সঙ্গ দেয়। কিন্তু আমার ভুল ভাঙ্গে শ্বাশুড়ি আর ননদের ফোনালাপ শুনে। শ্বাশুড়ি মা ননদকে বলছে, "
--- তোর ছোট ভাবি বাড়ি আসলে আমার ভয় হয়। যদি এটা সেটা সরিয়ে নেয়?সেজন্য আমি বাড়ি থেকে বের হই না।"
ফোনের ওপাশ থেকে ননদ কি বলেছে জানি না কিন্তু আমার আর কিছু শুনার সাহস ছিলো না। তখন বুঝেছি কেন ওনি আমাকে বিয়ের একমাস পরে আশরাফের কাছে পাঠিয়েছেন।ওনি নিজের মেয়েকে এক নজরে দেখতেন আর ছেলের বউকে অন্য নজরে।ওনার এই বৈষম্যপূর্ণ আচরণ খুব পীড়া দিতো। কি হয় একটু ছেলের বউকে মেয়ের নজরে দেখলে?
আমার বড় মেয়েটা যখন পেটে আসে তখন এতোটাই অসুস্থ ছিলাম যে প্রতি সপ্তাহে একটা স্যালাইন দেওয়া লাগতো। কোনো খাবার খেতে পারবো থাক দূরের কথা গন্ধই সহ্য করতে পারতাম না। আশরাফ আমাকে গ্রামে পাঠাতে চেয়েছিলো।কিন্তু শ্বাশুড়ি মা একেবারে নিষেধ করে দেয়। সে কোনো পোয়াতি মেয়ের সেবা করতে পারবে না। অথচ আমার ননদের দুটো বাচ্চা এখানেই হয়েছে। আশরাফ সারাদিন অফিস করে এসে আবার রাতে নিজের রান্না করতো।আমার সেবা করতো।ওর ক্লান্ত মুখের দিকে তাকালে খুব কষ্ট হতো। আমি যখন নিরবে কান্না করতাম তখন আশরাফ আমার চোখের পানি মুছে কপালে চুমু দিয়ে বলতো,
--- "কেউ থাকুক আর না থাকুক আমি সবসময় তোমার পাশে আছি।"
এটা শুনলেই নিজেকে ভাগ্যবতী মনে হতো। আমার প্রেগ্ন্যাসি জার্নিতে স্বামী ব্যতীত কাউকে পাশে পাইনি। হয়তো মা থাকলে আমার সেবা করতো।আর বাবা তো অসুস্থই। যখন লেবার পেইন হয় তখনও হাসপাতালে আমি কল করি।সিজারের সময়ও ওনারা কেউ আসেনি।
একজন নতুন মা হিসেবে মেয়ের সব কাজ করা আমার জন্য খুব কষ্টকর ছিলো।তার ওপর আবার সিজার।খুব প্রেশার পড়তো।আশরাফ অফিস থেকে এসে আবার মেয়েকে সামলাতো।
দেশে করোনা আসলো আশরাফের চাকরী চলে গেলো। চলে এলাম গ্রামে। শ্বশুর শ্বাশুড়ির সাথে একঘরে থাকতাম।একসাথে খাবার খেতাম। আশ্চর্যজনক ব্যপার হলো রান্নার সময় আমার শ্বাশুড়ি মাছ থেকে শুরু করে মাংসের টুকরো গুনে গুনে দিতেন। যদি রান্নার করতে করতে খেয়ে ফেলি তাই। এসব দেখলে শুধু কান্না পেতো। মেয়েদের জীবনটা এমন কেন? আশরাফ আর শ্বশুর কিছুই বলতো না। কারন ওনার কথার বাইরে কেউ কথা বললে চিল্লাচিল্লি করে বাড়ি মাথায় তুলতো। ওনার ব্যবহারে সবাই অতিষ্ঠ ছিলো। কয়েকমাস যাওয়ার পর দেশের অবস্থা শিথিল হলো।বাবা কিছু টাকা দিলো আশরাফকে দেশের বাহিরে যাওয়ার জন্য।কাগজপত্র রেডি সেই মুহূর্তে জানতে পারলাম আমি আবারও প্রেগন্যান্ট। একমাসের মাথায় আশরাফ চলে গেলো।
এবারও আমার অবস্থা খারাপ। গতবার তো আশরাফ ছিলো কিন্তু এইবার পুরাই একা হয়ে গেছি। বমি করতে করতে যখন ক্লান্ত হয়ে যেতাম আবার আমিই সেই বমি পরিষ্কার করতাম। শ্বাশুড়ি মা নাক সিটকাতেন। ভেবেছিলাম বিয়ের পর মা পাবো কিন্তু আমি তা পাইনি। ওনার কথার অবাধ্য কখনো হইনি তবুও ওনার মন পাইনি। ওনার ধ্যানজ্ঞান সব মেয়ে ছিলো।
ডেলিভারির চারদিনের মাথায় ওনি আমাদের আলাদা করে দিলেন। আমাদের নাকি রান্না করে খাওয়াতে পারবেন না। তখন আমার শরীর পুরোপুরি দূর্বল উঠে বসতেও পারতাম না। তার ওপর দুইটা বাচ্চা। আমার মাও নেই। অথচ আমার ননদ যদি বলতো আমি মাছ দিয়ে ভাত খাবো ওনি তৎক্ষনাৎ অন্য তরকারি রান্না করে দিতো। রান্না মজা না বলে রাগারাগি করতো।সেই দিনগুলোর কথা মনে হলে এখনো কান্না পায়। ঠিকমতো যত্ন আর পুষ্টিকর খাদ্যের অভাবে আমার ছেলেটা অসুস্থ হয়ে জন্ম নিলো। দুইদিন পর পর ডাক্তারের কাছে দৌড়াতাম। বিনিময়ে শুনতে হতো আমি নাকি বিদেশি টাকা নিয়ে দৌড়াই শপিং করার জন্য। দাঁতে দাঁত চেপে সহ্য করি করতাম কারণ আমার পক্ষে কথা বলার কেউ নাই। আশরাফ কে বললে ও বলতো সহ্য করো আমি নিরুপায়।
আমার এখনো মনে আছে একবার আমি আর আমার দুই সন্তান ঘরে জ্বরে কাতরেছি। কেউ একটু উঁকিও দেয় নাই। সারাদিন রান্না হয় নাই কেউ এসে জিজ্ঞেস করে নাই কি খাইছি। পরে আশরাফ তার এক বন্ধুকে বলে তার ওয়াইফকে আমার এখানে পাঠায়। আমি না হয় পরের মেয়ে কিন্তু ছেলেমেয়ে দুটো তো ওনার বংশধর। ওদের একটু খবর নিলে খুব ক্ষতি হতো?
গাছের ফলমূলের সিংহভাগই ওনার মেয়ের ঘরের নাতিকে দিতো।আমার মেয়ের একটা কি দুইটা দিয়ে বলতো আর নাই। তাহলে গাছে যে এতো ফল আসতো সেগুলো কই? মেয়ে বউয়ের মাঝে বৈষম্য মেনে নেওয়া যায় তাই বলে নাতিনাতনিদের মাঝেও? সবই তো ওনার র'ক্ত। ওনার উষ্কানিতে দুই দিন পর পর আমার ননদ ঝগড়া করে এবাড়িতে চলে আসে। ওনার এই ব্যবহার গুলো আমার ক্ষতের সৃষ্টি করেছে। এখন বুঝি আমার বড় জা কেন একেবারে এখান থেকে চলে গেছে আর কেন আসে না।ওনার বৈষম্যপূর্ন ব্যবহার যে কারোরই মন ভেঙে যাবে। দিনশেষে সব দোষ হয় বউদের। বউরা নাকি শ্বশুর শ্বাশুড়ির সেবা করে না। এমন ব্যবহার করেও বউয়ের কাছে সেবা আশা করা যায়? শ্বাশুড়ি তো আমাকে মেয়ে মনে করলো না। আমি তো ভরা পরিবার চেয়েছিলাম। একজন মা চেয়েছিলাম। পেলাম না তো। ওনি মাঝে মাঝে আকারে ইঙ্গিতে খুব খুব বাজে বাজে কথা বলে। বুঝেও না বুঝার ভান করি। কারণ আমি মানিয়ে নিয়েছি। আমি জানি ওনি যতোদিন বেঁচে থাকবেন ততদিন এমন করবেন।
------ #সমাপ্ত #অণুগল্প ------
গল্প : #বৈষম্য
রূপন্তি রাহমান (ছদ্মনাম)
ভুলত্রুটি মার্জনীয়। গল্পের আংশিক কাল্পনিক হলেও সম্পূর্ণ গল্প বাস্তব।কেমন লাগলো জানাবেন।ধন্যবাদ।
Click here to claim your Sponsored Listing.
Videos (show all)
Category
Contact the business
Telephone
Address
Nageswari Kurigram
Dhaka
5660