SKS Legal Services & Associates
Our Law Firm in Bangladesh help you any issue regarding legal problems. We are experts in any litiga Law Consultant Firm
#অমর ২১শে!
মায়ের ডাকে ছুটে গিয়ে যারা কথা রেখেছিল বুকের রক্ত ঢেলে। সেই সকল ভাষা শহীদদের প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।
সবাইকে জানাই মহান বিজয় দিবসের অনেক অনেক শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন। মুুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও সকল মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু
জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা।
#অন্তরঙ্গ_কিংবা_অশ্লীল_ছবির_মাধ্যমে_ব্ল্যাকমেইলের_শিকার_হলে_করণীয়
বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছিলেন, “প্রেমের আনন্দ থাকে স্বল্পক্ষন,কিন্তু বেদনা থাকে সারাটি জীবন।” আসলেই প্রকৃতপক্ষে এই তথ্য প্রযুক্তির যুগে এসে কবি গুরুর উক্তিই যেন ঠিক হলো। কেননা, দেখা যায় যে, আজকাল তরুণ-তরুণী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একে অপরের প্রেমে পড়ে পরবর্তীতে অন্তরঙ্গ ছবি কিংবা ভিডিও আদান-প্রদান করেন। কিন্তু এই প্রেমিক যুগলের কোন প্রকার ধারণাই থাকে না যে,তাদের জন্য অদূর ভবিষ্যতে কি ধরনের বিপদ অপেক্ষা করছে।যখনি তাদের বিচ্ছেদ ঘটে, তখনি একটি পক্ষ তাদের কাছে থাকা অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি কিংবা ভিডিওর মাধ্যমে অনবরত ব্ল্যাকমেইল করতে থাকে।
এবার কিছু ঘটনা দেখে নেয়া যাকঃ
ঘটনাঃ১
গত ২৫ আগস্ট ২০২০ একুশে টেলিভিশন(ETV)এর অনলাইন সংস্করণে “আপত্তিকর ছবি দিয়ে বিবাহিত প্রেমিকাকে ব্ল্যাকমেইল,প্রেমিক গ্রেপ্তার“ শীর্ষক একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। যাতে জানা যায় যে,চট্টগ্রামের সীতাকুন্ডে বিবাহিত প্রেমিকাকে ব্ল্যাকমেইল করতে একটি ভূয়া ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে কিছু আপত্তিকর ও অশালীন ছবি পোস্ট করে ঐ মেয়ের প্রেমিক।ভূক্তভোগিকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে এক পর্যায়ে কিছু ছবিও তুলে রাখে।২০১১ সালে ভূক্তভোগিকে অন্যত্র বিয়ে দিয়ে দাওয়া হলে ঐ প্রেমিক তার কাছে থাকা ভূক্তভোগির আপত্তিকর ছবির বিনিময়ে ৮০,০০০/=(আশি হাজার টাকা)হাতিয়ে নেয়।পরবর্তীতে ওই প্রেমিককে পুলিশ গ্রেপ্তার করে।
ঘটনাঃ২
গত ১৮ জুলাই ২০২৩ অনলাইন ভিত্তিক সংবাদ মাধ্যম ঢাকা পোস্ট এ “প্রেমিকার আপত্তিকর ছবি নিয়ে ব্ল্যাকমেইল, গ্রেপ্তার যুবক” শীর্ষক একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। যাতে উল্লেখ করা হয় যে, প্রেমিক যুগল রেস্টুরেন্টে গেলে প্রেমিক সুকৌশলে প্রেমিকার সাথে কিছু আপত্তিকর ছবি তোলে ।তাদের পরবর্তী সাক্ষাতে ছবি গুলো ছড়িয়ে দেওয়ার হূমকি প্রদানের মাধ্যমে ভূক্তভোগির সাথে শারীরিক সম্পর্কের চেষ্টা করে এবং পরবর্তীতে গ্রেপ্তার হন।
এই রকম অপরাধের ভূক্তভোগী শুধু মাত্র নারীরাই যে হন তা কিন্তু নয়। মাঝে মাঝে অনেক প্রতারক চক্র টার্গেট করেন অনেক বিত্তশালী পুরুষদের।
এখন দেখে নেওয়া যাক সেই ঘটনাঃ
ঘটনাঃ১
গত ১৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২২ নারায়ণগঞ্জ টাইম্স এ “ফেসবুকে পরিচয়,বাসায় ডেকে স্ত্রীর সঙ্গে আপত্তিকর ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইল” শীর্ষক সংবাদ প্রকাশিত হয়। যাতে বলা হয়, ফেসবুকে পরিচয় অতঃপর ক্রমান্বয়ে মন দেওয়া-নেওয়া,বিপত্তি ঘটে যখন প্রেমিকার বাসায় যাওয়া হয়। নারীর সঙ্গে আপত্তিকর ছবি তুলে ফেসবুকে ভাইরাল করার হুমকি দিয়ে দাবি করা হয় মোটা অঙ্কের টাকা। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) তদন্তে গিয়ে দেখতে পান যে, এই চক্রটি এই পর্যন্ত ২৫ জনকে বাসায় ডেকে ব্ল্যাকমেইল করে হাতিয়ে নিয়েছে কোটি টাকা।
ঘটনাঃ২
গত ১৯ আগস্ট ২০২২ দৈনিক আমার সংবাদ এ “প্রেমের ফাঁদে ফেলে আপত্তিকর ছবি তুলে করত ব্ল্যাকমেইল” শীর্ষক সংবাদ প্রকাশিত হয়। যাতে বলা হয়,চক্রের নারী সদস্যরা বাসায় এনে জিম্মি করে আপত্তিকর ছবি তুলে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।যাইহোক পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করেন।
এইবার আশা যাক, এমন পরিস্থিতির শিকার হলে ভুক্তভোগির প্রতিকার কী?
২০১৮ সালের ৪৬ নং আইন “ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮“ এর ধারা-২৫(১)(ক) এই সমস্যা সংক্রান্ত প্রতিকার প্রদান করে। যাতে বলা হয়েছে যে, “কেউ জ্ঞাতসারে কোন তথ্য-উপাত্ত প্রেরন করলে,যাহা আক্রমনাত্মক বা ভীতি তৈরি করে অথবা প্রচারকারী জানেন যে উক্ত তথ্য-উপত্তটি মিথ্যা । তা সত্ত্বেও কোন ব্যক্তিকে বিরক্ত, অপমান, অপদস্থ বা হেয় প্রতিপন্ন করার অভিপ্রায়ে এমন কোন তথ্য-উপাত্ত প্রেরণ, প্রচার কিংবা প্রকাশ করলে উক্ত ব্যক্তি (প্রচারকারী) অনধিক ৩ (তিন) বছরের কারাদণ্ডে বা অনধিক ৩ (তিন) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয়দণ্ডে দন্ডিত হবেন।
যদি এই অপরাধ তিনি পুনরায় করেন তাহলে অনধিক ৫(পাঁচ) বছরের কারাদণ্ডে বা অনধিক ১০(দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে বা উভয়দণ্ডে দন্ডিত হবেন।
তাছাড়া ২০১২ সালের ৯ নং আইন “পর্ণোগ্রাফি নিয়ন্ত্রন আইন-২০১২“ এর ধারা-৮(২) এই সমস্যা সংক্রান্ত প্রতিকার প্রদান করে।যাতে বলা হয়েছে যে, কোন ব্যক্তি পর্ণোগ্রাফির মাধ্যমে অন্য কোন ব্যক্তির সামাজিক বা ব্যক্তি মর্যাদা হানি করলে বা ভয়-ভীতির মাধ্যমে অর্থ আদায় বা অন্য কোন সুবিধা আদায় বা কোন ব্যক্তির জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতসারে ধারণকৃত কোন পর্ণোগ্রাফির মাধ্যমে উক্ত ব্যক্তিকে মানসিক নির্যাতন করলে তিনি(অপরাধকারী) সর্বোচ্চ ৫ (পাঁচ) বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২(দুই) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।
গত ২৯ এপ্রিল ২০২৩ চ্যানেল২৪ অনলাইন সংস্করনে বলা হয়েছে যে, বিটিআরসি এর হিসাব অনুযায়ী দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১২ কোটি ৬১ লাখের বেশি। পরিসংখ্যান দেখে বোঝা যায় যে, আমরা প্রতি মুহুর্তেই উন্নত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। তবে ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে অপরাধের মাত্রাও বৃদ্ধি পাচ্ছে।
তাই নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহারে ও ইন্টারনেটের যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিতকল্পে সাধারণ জনগণের মাঝে জনসচেতনতা বৃদ্ধি করা উচিত। উক্ত কর্মকাণ্ডে সরকারের পাশাপাশি সকল বেসরকারী সংস্থাকেও এগিয়ে আসতে হবে। তাহলেই আগামী প্রজন্মকে একটি সুন্দর ও সুস্থ সমাজ উপহার দিতে পারব।
★জমি রেজিস্ট্রির আগে এই বিষয়গুলো জানা খুব জরুরী,
সারা জীবনের সঞ্চয় দিয়ে অনেক মানুষ শেষ বয়সে এসে এক খন্ড জমি কিনে যাতে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তার মাথা গুজার একটু জায়গা থাকে। কিন্তু জমি কিনেই ঝামেলায় পড়েছেন অনেকে। কেউ আবার হয়েছেন সর্বশান্ত।
মূলত জমি সংক্রান্ত বিষয়ে স্বল্প জ্ঞান ও অসতর্কতার কারণেই মানুষ এই ঝামেলায় পড়ে। তাই জমি কেনার আগে অবশ্যই সতর্ক হতে হবে। চলুন তবে জেনে নেয়া যাক জমি রেজিস্ট্রির আগে যে বিষয়গুলো জানা জরুরি-
★অবশ্যই গুরুত্বের সঙ্গে খেয়াল রাখতে হবে জরিপের মাধ্যমে প্রণিত রেকর্ড। খতিয়ান ও নকশা যাচাই করে নিতে হবে।
★ জমির মৌজা, খতিয়ান নম্বর, দাগ নম্বর ও উক্ত দাগে জমির মোট পরিমাণ দেখে নিতে হবে।
★ জমি কেনার আগে উক্ত জমির সিএস রেকর্ড, এসএ রেকর্ড, আরএস রেকর্ড এবং মাঠ পর্চাগুলো ভালোভাবে দেখে নিতে হবে।
★ বিক্রেতা যদি জমিটির মালিক ক্রয়সূত্রে হয়ে থাকেন তাহলে তার কেনার দলিল রেকর্ডের সঙ্গে মিল করে যিনি বেচবেন তার মালিকানা সঠিক আছে কিনা তা নিশ্চিত হতে হবে।
★ জমির বিক্রিকারী উত্তরাধিকারসূত্রে জমিটি পেয়ে থাকলে সর্বশেষ জরিপের খতিয়ানে তার নাম আছে কিনা তা ভালো ভাবে খতিয়ে দেখতে হবে। যদি সর্বশেষ খতিয়ানে বিক্রেতার নাম না থাকে, তাহলে তিনি যার কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে জমিটি পেয়েছেন তার মূল মালিকের সংঙ্গে বিক্রেতার নামের যোগসূত্র কিংবা রক্তের সস্পর্ক আছে কিনা বিষয়টি ভালো ভাবে যাচাই করে নিতে হবে।
যদি মাঠ পর্চার মন্তব্য কলামে কিছু লেখা থাকে যেমন (AD) তাহলে বুঝতে হবে উক্ত খতিয়ানের বিরুদ্ধে সত্যায়ন বা শুদ্ধতার পর্যায়ে আপত্তি রয়েছে, সেক্ষেত্রে জমি ক্রয়ের আগে জরিপ অফিসে জমিটির সর্বশেষ অবস্থা জেনে নিতে হবে।
★ তবে উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত জমি বিক্রিকারীর শরিকদের সঙ্গে জমি বিক্রিকারীর সম্পত্তি ভাগাভাগির বণ্টননামা বা ফারায়েজ দেখে নিতে হবে।
★ জমি বিক্রিকারীর নিকট থেকে সংগৃহীত দলিল, বায়না দলিল, খতিয়ান, মাঠ পর্চা ইত্যাদি কাগজপত্র সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি অফিসে গিয়ে তলবকারী বা স্বত্বলিপি রেজিস্ট্রারের কাছে গিয়ে কাগজপত্রের সঠিকতা যাচাই করে নিতে হবে।
★ জমি কেনার ক্ষেত্রে যিনি জমি কিনবেন তাকে মনে রাখতে হবে যে ১৯১৩ সালের সরকারি পাওনা/দাবি আদায় আইনের ৭ ধারায় বলা আছে সার্টিফিকেট মামলাভুক্ত সম্পত্তি বিক্রয়যোগ্য নয়।
#আইন #জমি #ভূমি #মামলা ।
মোবাইল নং- 01626944666
#খুব_সতর্কতার_সাথে_কাজ_করুন
না জেনে, না বুঝে কারো ব্যাংক লোনের গ্যারান্টর হবেন না । লোন / ঋণ পরিশোধের আর্থিক সামর্থ্য বা সঙ্গতি কতটুকু আছে তাহা জেনে বুঝে দায়িত্ব নিন। অন্যথায় আপনার সারাজীবনের অর্জিত সম্পত্তি / শেষ বয়সের আর্থিক নিরাপত্তা টুকু নিলামে উঠতে পারে। ধন্যবাদ।
#কাবিননামা_বা_বিবাহ_রেজিস্ট্রেশন_কেন_জরুরী?
বিবাহ শব্দটির সাথে আমাদের জীবন সামাজিকভাবে এবং ধর্মীয়ভাবে ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত। বিয়ে বলতে বোঝায় আচরণত ভাবে বা আইনগতভাবে স্বীকৃত একজন নারী ও একজন পুরুষের ভিতর দৈহিক এবং সামাজিক সম্পর্ক যার সাথে বেশ কিছু দায়িত্ব এবং কর্তব্য যুক্ত। এই দায়িত্ব এবং কর্তব্যের মধ্যে মূল বিষয় থাকে সন্তান জন্মদান এবং তাদের লালন-পালন। অর্থাৎ বিবাহ বা বিয়ে হল একটি সামাজিক বন্ধন বা বৈধ চুক্তি যার মাধ্যমে দু’জন মানুষের মধ্যে দাম্পত্য সম্পর্ক স্থাপিত হয়।
আমাদের ব্যক্তিজীবনে বিবাহ সম্পর্কিত কিছু সামাজিক ও পারিবারিক সমস্যা আমরা প্রায়শই মোকাবেলা করি যেমন : দেনমোহর, কাবিননামা, বিবাহ রেজিস্ট্রেশন ইত্যাদি। আমাদের সামাজিক প্রেক্ষাপট এবং সার্বিক দিক বিবেচনা করে আজকে আমাদের আলোচনার বিষয় বিবাহ রেজিস্ট্রেশন ও তালাকনামা রেজিষ্ট্রেশনের প্রয়োজনীয়তা কেন গুরুত্বপূর্ণ।
কাবিন বা কাবিননামা অথবা নিকাহনামা কি
কাবিন একটি ফারসি শব্দ এটি মুসলমানদের বিয়েতে কন্যাকে দেয়া হয় মোহারানাকে কাবিন ধরা হয়। এই কাবিন থেকেই কাবিননামার উৎপত্তি। কাবিননামা (বিশেষ্য) বিয়ের চুক্তিপত্র। (ফারসি) কাবীন+নামাহ; কাবিননামা বলতে বিবাহ সম্পাদনের লিখিত চুক্তি বোঝায়। একে নিকাহনামা বলেও উল্লেখ করা হয়।
বিবাহ সম্পাদনের জন্য বা বিবাহ বৈধ হওয়ার জন্য ‘কাবিননামা’ অপরিহার্য নয়। কাবিননামা একটি আইনি বাধ্যবাধকতা। বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী সরকার কর্তৃক মনোনীত কাজী সরকার নির্ধারিত ছকে কাবিননামা সম্পাদন করে থাকেন। স্ত্রীর প্রাপ্য দেনমোহর আদায়, স্ত্রীর ভরণপোষণ, উত্তরাধিকার নির্ণয়, সন্তানের পিতৃত্ব ইত্যাদি ক্ষেত্রে যথাযথভাবে নিবন্ধিত কাবিননামা একটি আইনি দলিল।
সরকার কর্তৃক নিয়োগকৃত বিবাহ রেজিষ্ট্রেশনের জন্য কাজির ম্যারিজ রেজিস্ট্রারে লিখিত বর, কণে, উকিল ও সাক্ষীদের স্বাক্ষর সম্বলিত নির্ধারিত চুক্তিনামাকেই কাবিন বলা হয়। আইনানুযায়ী কাবিনের সত্যায়িত নকলের কপি কাজি সাহেব বর-কণে পক্ষকে চাহিদা সাপেক্ষে দিয়ে থাকেন।
বিবাহের কাবিনের প্রয়োজনীয়তা কি
মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী বিবাহ নিবন্ধন বা কাবিননামা বর-কনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। নিবন্ধন বা কাবিননামা ব্যতীত বিবাহ প্রমাণ করা কঠিন হয়ে যায় ফলে মেয়েদের প্রতারিত হবার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয় সবচেয়ে বেশি দেনমোহর, ভরণপোষণ, উত্তরাধিকার নির্ণয়, সন্তানের অভিভাবকত্ব ইত্যাদি দাবির ক্ষেত্রে বিবাহ নিবন্ধন বা বিবাহের কাবিননামা বিচারিক আদালতে আইনগত দলিল হিসেবে বিবেচিত হয়।
তাছাড়া পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে কাবিননামার গুরুত্ব ব্যাপক। বিশেষ করে কাবিননামায় বয়স উল্লেখ করতে হয় বিধায় বাল্য বিবাহ রোধও সম্ভব। এটি বিবাহিত ছেলে-মেয়ে উভয়ের ভবিষ্যত আইনগত অধিকার সংরক্ষণ করে। বিবাহ সম্পর্কে উভয় পক্ষ থেকেই যে কোন সময় জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে, তখন কাবিননামা প্রমাণ পত্র হিসেবে কাজ করে।
বিবাহ নিবন্ধনের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে রাষ্ট্রীয়ভাবেই বিবাহ নিবন্ধন কার্যক্রমকে অত্যাবশক করা হয়েছে। নিম্নে বিবাহ রেজিষ্ট্রেশনের বিধানটি কেন রাখা হয়েছে তার কয়েকটি উদ্দেশ্য আলোচনা করা হলো:
বিবাহের বৈধতা প্রমানে বিবাহ রেজিষ্ট্রেশন জরুরী। কোন পক্ষ বিবাহের সত্যতা অস্বীকার করতে তা প্রমানের জন্য;
স্ত্রী’র অধিকারের আইনি স্বীকৃতি প্রদান তথা স্বামীর কাছ থেকে স্ত্রী ভরনপোষণ আদায় করতে;
পিতৃত্বের পরিচয় ও বৈধতা নির্ধারণ করা;
বাল্যবিবাহ রোধ করা;
স্ত্রীর অনুমতি ছাড়া স্বামী পুনরায় বিবাহ করলে স্ত্রী স্বামীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে কাবিননামা প্রয়োজন;
স্ত্রী নিকাহ্ নামায় উল্লেখিত দেনমোহর আদায় করতে পারেন; যে ক্ষেত্রে দেনমোহর নির্দিষ্ট করা নাই, সেক্ষেত্রে স্ত্রী ন্যায় সংগত পরিমাণ দেনমোহর আদায় করতে;
স্বামী বা স্ত্রীর মৃত্যু ঘটলে দুইজনের মধ্যে যিনি বেঁচে থাকবেন, তিনি মৃতের সম্পত্তি থেকে বৈধ অংশ আদায় করতে পারবেন।
স্বামী-স্ত্রী উভয়ে আদালত তথা বিচারিক কার্যক্রমে অধিকার নিশ্চিত করতে এ কাবিন বা বিবাহ নিবন্ধনের তথ্য প্রয়োজন হয়। যা স্বামী-স্ত্রীর জন্য একটি আবশ্যকীয় প্রমাণ। সুতরাং বর-কনের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে শান্তি ও সহাবস্থান এবং সত্যতা নিরূপনে কাবিনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
বিয়ে বা ডিভোর্স রেজিস্ট্রি সংক্রান্ত আইনসমূহ
বিয়ে বা ডিভোর্স রেজিস্ট্রি করার জন্য আমাদের দেশে আইন আছে। এই আইনের বিধান মতে প্রত্যেকটি বিবাহ নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক এবং এই উদ্দেশ্যে সরকার ম্যারেজ রেজিস্ট্রার নিয়োগ করিবেন। প্রত্যেক বিবাহ রেজিস্ট্রার সরকারের নির্ধারিত পদ্ধতিতে প্রতিটি বিবাহ এবং তালাক এর পৃথক নিবন্ধন বজায় রাখবেন।
মুসলিম বিবাহ ও তালাক (রেজিষ্ট্রেশন) আইন, ১৯৭৪ এর ৩ ধারা অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতিটি বিবাহ রেজিষ্ট্রেশন করা বাধ্যতামূলক। মুসলিম বিবাহ ও তালাক(রেজিষ্ট্রেশন) আইন, ১৯৭৪ এর ৫ ধারা অনুযায়ী বিয়ে সম্পাদনের পর তাৎক্ষণিক বা ৩০ দিনের মধ্য বিয়ে রেজিষ্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। এটাই বিয়ে রেজিস্ট্রিকরণ আইন। এই আইনটি ১৯৭৪ সালে কার্যকরী হয়। এছাড়াও আরও একটি বিধিমালা আছে যার নাম মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) বিধিমালা, ২০০৯।
রেজিস্ট্রেশনের সময়সীমা /রেজিস্ট্রেশনের সময় ও ব্যর্থতায় শাস্তি
রেজিস্ট্রেশন বিয়ের দিন করা সব থেকে যুক্তিযুক্ত। এতে করে পরবর্তীতে কোনো বাড়তি ঝামেলা যদি হয় সেটি থেকে মুক্ত থাকা যায়। আমাদের দেশের মুসলিম বিবাহ ও তালাক(রেজিষ্ট্রেশন) আইন, ১৯৭৪ এর ৫ ধারা অনুযায়ী বিয়ের দিন অথবা বিয়ের ৩০ দিনের মাঝে রেজিস্ট্রি করা যায়।
বিয়ের দিন কোনো কারণে রেজিস্ট্রি করা না হলে অনেক সময় পরে কাজি অফিসে গিয়ে রেজিস্ট্রি করা হয়ে ওঠে না। তাই যখনই বিয়ে পরানো হবে সেই সাথে সাথেই রেজিস্ট্রি করে ফেলা ভালো।
তবে আমাদের দেশে মুসলিম বিয়ে রেজিষ্ট্রেশন না করা হলে সেটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়। কেউ বিয়ে রেজিষ্ট্রেশন না করলে উক্ত অপরাধের শাস্তি হচ্ছে সর্বোচ্চ ২ বছর কারাদণ্ড বা ৩০০০ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড বা উভয়।
বিবাহ রেজিষ্টেশন সংক্রান্ত কিছু জিজ্ঞাসা ও উত্তর
বিবাহ ও বিবাহ নিবন্ধন সম্পর্কিত কিছু বাস্তব প্রশ্ন নিম্নে আলোচনা করা হলো
কাবিনানামা না থাকলে বা রেজিষ্ট্রেশন করা না হলে বিয়ে অবৈধ বলে গণ্য হবে কিনা?
না বিয়েটি অবৈধ হবে না। কারন শরীয়া আইনের অন্যান্য শর্ত পূরণ করে বিয়ে সম্পূর্ণ হলে, বিয়ে নন-রেজিস্ট্রেশনের কারনে বিয়ে অবৈধ হবে না। তবে নন-রেজিস্ট্রেশনের কারনে বিয়ে হয়েছে কিনা সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে। এক্ষেত্রে ৫১ ডিএলআর ১৯৯৯(HCD)২৯২, মোঃ চান মিয়া বনাম রূপনাহার মামলায় হাইকোর্টের অভিমত প্রণিধানযোগ্য।
উক্ত মামলায় হাইকোর্ট সিদ্ধান্ত দেয় যে- অন্যকোনভাবে বিয়ে বৈধ হলে, কাবিননামা না থাকলে বা বিয়ে রেজিষ্ট্রেশন না হলে উক্ত বিয়েকে অবৈধ বলে গণ্য হবে না।অর্থাৎ শরীয়া আইনের অন্যান্য শর্ত পূরণ করা হলে বিয়ে বৈধ এবং বিয়ে নন-রেজিষ্ট্রেশনের কারনে অবৈধ হয় না।
বিয়ের রেজিষ্ট্রেশন কি বিয়েকে বৈধ করে?
বিয়ের বৈধতার সাথে রেজিষ্ট্রেশন এর সম্পর্ক নাই, তবে বিবাহ প্রমানের সাথে সম্পর্কিত। কাবিননামা না থাকলে বা বিয়ে রেজিস্ট্রেশন করা না হলে উক্ত বিয়ে অবৈধ নয়। এক্ষেত্রে ২১ ডিএলআর ২১৩ ডা. এ আই এম আবদুল্লাহ বনাম রোকেয়া খাতুন মামলায় হাইকোর্ট সিদ্ধান্ত দেন যে – বিয়ের নন-রেজিস্ট্রেশন বিয়ের বৈধতাকে আঘাত করে না। কিন্তু বিয়ের নন-রেজিস্ট্রেশন বিয়ে নিয়ে সন্দেহের উদ্রেক সৃষ্টি করে।
শরিয়াহ অনুযায়ী বিবাহ রেজিষ্ট্রেশন কি বাধ্যতামূলক?
না, শরীয়াহ আইন অনুযায়ী তা বাধ্যতামূলক নয়। শরীয়া আইন অনুযায়ী কাবিননামা অত্যাবশকীয় উপাদান নয় বিধায় এটির অনুপস্থিতর কারনে বিয়ে অনিয়মিতও হয় না। তবে কাবিননামা না থাকলে বিয়ে আসলে হয়েছে কিনা সেটা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে, সন্দেহের সৃষ্টি করতে পারে।
কাবিননামা না থাকলে কিভাবে বিয়ে প্রমাণ করা যাবে?
বিয়ে যে হয়েছে তার সুনির্দিষ্ট ও সুনিশ্চিত প্রমাণ হচ্ছে কাবিননামা। কোন পক্ষ যদি দাবী করে- তার বিয়ে হয়েছে কিন্তু কাবিননামা নেই৷ সেক্ষেত্রে বিয়ে হয়েছে সেটা প্রমানের ভার তার। এক্ষেত্রে বিয়ের শর্তসমূহ পূরণ হয়েছে বা বিয়ে হয়েছে তার স্বপক্ষে তাকে সাক্ষ্য দিয়ে প্রমাণ করতে হবে।
আনোয়ার হোসেন বনাম মমতাজ বেগম ৫১ ডিএলআর (HCD) ৪৪৪ মামলায় হাইকোর্ট আনরেজিষ্টার্ড বা অনিবন্ধিত বিয়ের ক্ষেত্রে বিয়ের অত্যাবশকীয় উপাদান গুলো সাক্ষ্য দিয়ে সুস্পষ্ঠভাবে প্রমাণের কথা উল্লেখ করতে হবে। ইজাব, কবুল ও বিবাহের সাক্ষীর উপস্থিতি যদি সাক্ষ্য দিয়ে প্রমাণ করা যায়, তাহলে বিয়ে রেজিষ্ট্রেশন করা না হলেও উক্ত বিয়ে বৈধ।
কাবিন বা কোন প্রমানাদি ছাড়া দীর্ঘ সময় এক সাথে থাকা কী বিয়ে হিসেবে গণ্য হবে?
অবশ্যই না। কাবিননামা না থাকার কারনে, কেউ যদি বলে- তারা দীর্ঘদিন একসাথে থাকে বা লিভ টুগেদার করে। এই একসাথে থাকা বা লিভ টুগেদার বিয়ের প্রমাণ নয় এবং কাবিননামা কে এটা দিয়ে খন্ডন করা যাবে না। কাবিননামার অনুপস্থিতিতে বিয়ে প্রমাণের জন্য তাকে অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে শরীয়তের শর্তসমূহ- প্রস্তাব প্রদান ও প্রস্তাবে সম্মতি বা কবুল, পক্ষদের স্বাধীন সম্মতি এবং সাক্ষীর উপস্থিতি।নসুতরাং বলা যায়, কাবিননামা না থাকলে বা বিয়ে রেজিস্ট্রেশন না করলে বিয়ে অবৈধও হয়না, অনিয়মিতও হয়না।
স্ত্রীর কাছে কোন কাবিন নামা নাই, শুধু বিয়ের তারিখ আর এলাকার নাম জানেন তার ক্ষেত্রে কাবিন নামা তোলার উপায় কি এবং সে কি তার বিয়ের প্রমানের দায়িত্বত কার?
একজন স্বামী বা স্ত্রীর অধিকার তার বিবাহের কাবিনামা পাওয়ার। কোন কারনে যদি তা তাদের কাছে না থাকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট কাজী অফিস থেকে তা সংগ্রহ করতে হবে। এবং কোণ পক্ষ যদি তাদের বিয়ে অস্বীকার করে তাহলে যে পক্ষ বিয়ে আছে দাবী করে এটা তাকেই প্রমান করতে হবে। এক কথায় বিয়ে প্রমানের বোর একটি প্রমান হলো কাবিন।
পরিশেষে বলা যায় বিয়ে রেজিষ্ট্রেশন না করা হলে বিবাহ সম্পাদন এবং বৈবাহিক সম্পর্ক উদ্ভূত অধিকার ও কর্তব্য সংক্রান্ত ঝামেলা ক্ষেত্রে সন্দেহের অবকাশ সৃষ্টি হয়। বিয়ে রেজিষ্ট্রেশন না করলে এটি একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
বর্তমান বাংলাদেশের বিবাহ রেজিষ্ট্রেশন পদ্ধতিগতভাবে কিছুটা জটিল। স্বামী-স্ত্রী উভয়ে আদালত তথা বিচারিক কার্যক্রমে অধিকার নিশ্চিত করতে এ কাবিন বা বিবাহ নিবন্ধনের তথ্য প্রয়োজন হয়। যা স্বামী-স্ত্রীর জন্য একটি আবশ্যকীয় প্রমাণ বা রক্ষা কবজ।
বিয়ে রেজিষ্ট্রেশন পদ্ধতিকে প্রযুক্তির মাধ্যমে সহজীকরণ করা খুবই জরুরি। সুতরাং বর-কনের ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে শান্তি ও সহাবস্থান এবং সত্যতা নিরূপনে বিবাহ নিবন্ধনের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।
আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত বর্ধিত করা হলো
#তল্লাশী_ও_আটকে_নাগরিক_অধিকার_এবং_আইনশৃঙ্খলা_বাহিনীর_করণীয়
দেশের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতায় পুরো দেশে জননিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বিভাগীয় ও জেলা শহরসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় আইনশৃঙ্খলা বাহীনির অতিরিক্ত চেকপোস্ট বসিয়ে পথচারী, যানবাহন ও যাত্রীদের, সন্দেহজনক প্রতিষ্ঠান ও বাড়ীতে তল্লাশি অভিযান চলছে। দৈনন্দিন জীবনে প্রায় সময়ে দেখা যায় যে চলাফেরায় দেহ এবং সঙ্গে থাকা জিনিসপত্র, ব্যাগ, মোবাইল (ম্যাসেজ, হোয়াটসঅ্যাপ, কললিস্ট) তল্লাশি কিংবা রাস্তায়, অফিসে, বাড়ীতে পুলিশের এই তল্লাশি বা আটক অভিযান। মূলত দেশের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড ও নাশকতা ঠেকাতে তথা সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বা পুলিশ সন্দেহজনক মালামাল বা ব্যক্তিকে বা প্রতিষ্ঠানে তল্লাশি বা প্রয়োজনে আটক করে।
দেশের বিদ্যমান আইন বিশ্লেষণে বলা যায়, পুলিশ বা আইন শৃঙ্খলা বাহিনী ইচ্ছে করলেই যে কোন ব্যক্তিকে, যে কোন সময়ে তল্লাশি বা গ্রেফতার করতে পারেন। তার জন্য অবশ্য কিছু বিধিনিষেধও রয়েছে। সাধারণ মানুষ বিষয়টি সম্পর্কে সঠিকভাবে জানে না। যার ফলে এই কাজে কিংবা পরিস্তিতিতে অনেক সময়ে পুলিশি হয়রানি ও জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়।
এসময়ে নাগরিকদের উচিত আতঙ্কিত না হয়ে একটু সতর্কতা অবলম্বন করা। তিনি যদি কোনো অপরাধ না করে থাকেন তাহলে ভয় না করে সেটি আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বুঝিয়ে বলতে হবে। তল্লাশিতে তাদের সহযোগীতা করতে হবে। তাদের যুক্তিসংগত প্রশ্নের সোজাসুজি উত্তর দেওয়া ভাল। এমন কোন আচার-আচরণ করা বা কথা বলা যাবে না যাতে পুলিশের সন্দেহ সৃষ্টি হয়।
পুলিশি তল্লাশি বা আটক তথা অহেতুক হয়রানি থেকে মুক্ত থাকার জন্য নাগরিকদের কিছু পূর্ব প্রস্তুতিও রাখতে হবে। যেমন নিজের পেশাগত পরিচয়পত্র ও জাতীয় পরিচয়পত্র সঙ্গে রাখা। এ ছাড়া চেনাজানা দায়িত্বশীল ব্যক্তির নাম, ফোন নম্বর ও ঠিকানা সঙ্গে রাখা। বেআইনি কোন কর্মকান্ডে জড়িত না হওয়া এবং বেআইনি কোন বস্তু বা মালামাল না রাখা। দেশের বিদ্যমান আইন-কানুন মেনে চলা।
মূলতঃ ফৌজদারি কার্যবিধির ধারা ১০১, ১০২ ও ১০৩- এ পুলিশের তল্লাশির দায়িত্ব এবং নাগরিকের অধিকার সম্পর্কে বলা হয়েছে। এর বাইরেও বেশকিছু আইনি বিধান রয়েছে। যা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তল্লাশি ও আটক সম্পর্কে বলা হয়েছে।
সাধারণত যদি কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হয়, তখন আসামী গ্রেফতারের উদ্দেশ্যে পুলিশ তল্লাশি করতে পারে। কোর্ট থেকে ম্যাজিস্ট্রেট যদি কারও বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট জারি করে, তবে পুলিশ উক্ত ব্যক্তি বা বিষয়বস্তুর সন্ধানে তল্লাশি চালাতে পারে। ওয়ারেন্ট হলে তা লিখিত ও ম্যাজিষ্ট্রেট কর্তৃক স্বাক্ষরিত হবে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে যদি পুলিশ জানতে পারে যে, কোনো সুনির্দিষ্ট কোনো জায়গায় বা প্রতিষ্টান, বাসা-বাড়িতে বেআইনি কর্মকান্ড হচ্ছে বা হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা আছে অথবা আগ্নেয়াস্ত্র বা বিষ্ফোরক পদার্থ মজুদ আছে তখন পুলিশ তল্লাশির জন্য সেই সন্দেহজনক জায়গায় যেতে পারে। উক্ত সন্দেজনক বস্তু জব্দ বা হেফাজতে এবং ব্যাক্তিকে আটক করতে পারে। এছাড়া কোনো মামলার পলাতক আসামীকে খুঁজে বের করার জন্য পুলিশ তল্লাশি করতে পারে।
যদি পুলিশ কাউকে বা কোনো স্থান বা বাসা বাড়িতে তল্লাশি করতে আসে, তাহলে তল্লাশির পূর্বে পুলিশ অবশ্যই ওই এলাকার গণ্যমান্য দুই বা ততোধিক ব্যক্তিকে ডাকবেন। নিজেদের পরিচয় দিবেন অর্থাৎ কোন থানা বা সংস্থা থেকে এসেছেন, কেন এসেছে, কোন পদ মর্যাদা অফিসার বা সদস্য প্রভৃতি। তাদের সামনে-উপস্থিতিতে তল্লাশি বা আটক অভিযান পরিচালনা করবেন এবং উক্ত তল্লাশিতে সাক্ষী হতে বলবেন। এক্ষেত্রে প্রয়োজনে তাঁদের একজনের প্রতি লিখিত আদেশ দিতে পারবেন। কারো বিরুদ্ধে ‘তল্লাশি পরোয়ানা’ থাকলে স্থানীয় ব্যক্তি বা বাসিন্দাকে উপস্থিত থাকার জন্য লিখিত আদেশ দেয়া হতে পারে। যদি তল্লাশিকালে স্থানীয় এলাকার সম্মানিত সাক্ষী না পাওয়া গেলে ভিন্ন স্থান থেকে সাক্ষী নেয়া যেতে পারে।
ফৌজদারি কার্যবিধি ১০২ ধারা অনুযায়ী, কোনো ঘর বা বাড়ির মালিক পুলিশকে সার্চ করার অনুমতি দিতে বাধ্য, এ সময় তিনি পুলিশকে সকল প্রকার যুক্তিসঙ্গত সুযোগ সুবিধা দেবেন। যদি তল্লাশিযোগ্য কোনো স্থান-জায়গা বন্ধ বা তালাবদ্ধ থাকে বা বাধাহীনভাবে-মুক্তভাবে প্রবেশ করা না যায়, তাহলে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা বা পুলিশ ভেতরের বা বাইরের দরজা-জানালা ভেঙে প্রবেশ করতে পারবেন। পুলিশ তল্লাশির সময় যেখানেই যাবে সেখানে সাক্ষীকে উপস্থিত রাখতে হবে।
এছাড়াও তল্লাশিকৃত স্থানের দখলকারী ব্যক্তি অথবা তার পক্ষে অন্য কোনো ব্যক্তিকে তল্লাশির সময় উপস্থিত থাকার অনুমতি দিবে পুলিশ। যেখানে পুলিশ তল্লাশি করবেন উক্ত স্থানে বা আশপাশে তল্লাশি করতে পারবেন। তল্লাশির সময় জব্দকৃত সব জিনিসের কোনটি কোন স্থানে তথা কিভাবে পাওয়া গেছে তা উল্লেখ করে একটি জব্দ তালিকা তৈরি করবেন। তল্লাশি শেষে আটক জিনিসগুলো উপস্থিত সাক্ষীকে দেখাবেন। তালিকাটিতে সাক্ষীদের স্বাক্ষর নেবেন।স্থানীয় সম্মানিত সাক্ষী চাইলে এই তালিকার একটি কপি তাকেও সরবরাহ করা যাবে। উক্ত স্থান বা প্রতিষ্ঠানের মালিক-দখলকারী ব্যক্তি বা তার পক্ষে প্রতিনিধি অনুরোধ করলে সাক্ষীদের স্বাক্ষরযুক্ত আটককৃত মালামালের তালিকার একটি নকল দিতে হবে।
উল্লেখ যে, তল্লাশিতে সাক্ষীদেরকে যদি আদালত বিশেষভাবে সমন দিয়ে তলব না করে তাহলে উক্ত সাক্ষীদের আদালতে হাজির হতে নির্দেশ দেওয়া যাবে না। যদি কোনো ব্যক্তির দেহে বেআইনি বস্তু লুকিয়ে আছে বলে সন্দেহ হলে পুলিশ তার দেহও তল্লাশি করতে পারবে।
ফৌজদারি কার্যবিধির ১০৩(৪) ধারায় বলা হয়েছে, কার্যবিধি ১০২(৩)ধারা অনুসারে কোন ব্যক্তির দেহ তল্লাশি করা যাবে। বলা হয়েছে,
‘যে বস্তু সম্পর্কে তল্লাশি হওয়া উচিত, উক্ত স্থানে বা স্থানের নিকট কোন ব্যক্তি উক্ত বস্তু তাহার দেহে লুকাইয়া রাখিতেছে বলিয়া যদি যুক্তিসঙ্গতভাবে সন্দেহ করা যায়, তাহালে উক্ত ব্যক্তির দেহ তল্লাশি করা যাবে।’
অর্থাৎ যে জিনিসটি পুলিশ তল্লাশি করছে তা যদি ওই ব্যক্তির শরীরের ভেতর লুকিয়ে রেখেছে বলে সন্দেহ হয়, তাহলে ওই ব্যক্তিকে পুলিশ সন্দেহ করতে পারবে। সংশ্লিষ্ট ধারায় আরো বলা হয়েছে, সন্দিগ্ধ ব্যক্তি যদি মহিলা হয় তাহলে ৫২ ধারার নির্দেশাবলী অনুসরণ করতে হবে। ৫২ ধারা অনুযায়ী স্ত্রী লোককে অবশ্যই মহিলা পুলিশ দিয়ে তার দেহ তল্লাশি করতে হবে। সেখানে মহিলা পুলিশ না থাকলে স্থানীয় কোন মহিলা দিয়ে দেহ তল্লাশি করা যাবে এবং তা অবশ্যই কঠোর শালীনতার মধ্য দিয়ে করতে হবে।
সন্দিগ্ধ কোনো স্থান বা বাড়ির তল্লাশির জন্য যেমন দুই বা ততোধিক গণ্যমান্য ব্যক্তি সাক্ষী হিসেবে থাকতে হয় ঠিক তেমনি ব্যক্তির তল্লাশির ক্ষেত্রেও তা অবশ্যই পালনযোগ্য। ব্যক্তির কাছ থেকে আটককৃত জিনিসের তালিকা করবে পুলিশ এবং ওই ব্যক্তি চাইলেই একটি নকল তাকে দিতে হবে।
উল্লেখ্য, ১০৩ ধারায় আরো উল্লেখ করা হয়েছে যে, লিখিত আদেশ দ্বারা আহবান জানানো সত্ত্বেও যদি কেউ যুক্তিসঙ্গত কারণ ছাড়া তল্লাশিতে উপস্থিত না থাকে ও সাক্ষী হতে অস্বীকার বা অবহেলা করে তবে সে দণ্ডবিধির ১৮৭ ধারায় বর্ণিত অপরাধ করেছেন বলে ধরা হবে। দণ্ডবিধির ১৮৭ ধারা মতে,
‘কোনো ব্যক্তি সরকারি কর্মকর্তাকে সরকারি কোনো কাজে সহযোগিতায় ইচ্ছাকৃতভাবে অস্বীকৃতি জানালে বা বাধা দিলে তাকে একমাস পর্যন্ত যে কোনো মেয়াদের বিনাশ্রম কারাদণ্ড অথবা দুইশত টাকা পর্যন্ত যে কোনো পরিমাণ জরিমানা দণ্ডে বা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত করা হবে।’
নিয়ম অনুযায়ী কাউকে তল্লাশি বা আটক করার পর ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট পুলিশকে নিজের থানায় রিপোর্ট করতে হয়। উক্ত ব্যক্তির কাছে যদি অবৈধ কোনো কিছু পাওয়া না যায় তাহলে, “অবৈধ কিছু পাওয়া যায়নি” এই মর্মে তল্লাশীকারী পুলিশকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে লিখিত একটি অনুলিপি দিতে হয় এবং এ ক্ষেত্রে রিপোর্টে দুজন দায়িত্বশীল ব্যক্তিকে সাক্ষী থাকতে হয়।
সুতরাং এ বিষয়ে নাগরিকদের লক্ষ্য রাখতে হবে যে, পুলিশ বা আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকরী অফিসার অথবা কোনো ম্যাজিস্ট্রেট কর্মকর্তা তল্লাশির সময়ে স্থানীয় এক বা দু’জন সম্মানিত ব্যক্তি সে স্থানে উপস্থিত আছে কি-না এবং তাদের দেখিয়ে সব মালামাল তল্লাশি করা হচ্ছে কি-না। তল্লাশির সময়ে কাউকে সন্দেহ হলে বা অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আটক কিংবা গ্রেপ্তার করতে পারে। তল্লাশি করার পর ফৌজদারি কার্যবিধি অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট পুলিশকে নিজের থানায় রিপোর্ট করতে হয়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছে যদি অবৈধ কোনো কিছু পাওয়া না যায় তাহলে, “অবৈধ কিছু পাওয়া যায়নি” এই মর্মে তল্লাশীকারী পুলিশকে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে লিখিত একটি অনুলিপি দিতে হবে এবং রিপোর্টে দুজন দায়িত্বশীল ব্যক্তিকে সাক্ষী থাকতে হবে।
সম্প্রতি পথচারী ও সন্দেহজনক ব্যক্তির মোবাইলের ছবি, ম্যাসেজ, হোয়াটসঅ্যাপ, কললিস্ট তল্লাশি করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। মোবইল ফোনে ব্যক্তিগত ও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা, তথ্য বা ছবি থাকতে পারে, যা ঘাঁটাঘাঁটি করা একজন ব্যক্তির গোপনীয়তার অধিকারের চরম লঙ্ঘন। এছাড়াও একজন ব্যক্তির গোপনীয়তার সাথে তার মর্যাদার সম্পর্ক জড়িত।
বাংলাদেশের সংবিধানের ৪৩ অনুচ্ছেদেও বলা হয়েছে, ‘রাষ্ট্রের নিরাপত্তা, জনশৃঙ্খলা, জনসাধারণের নৈতিকতা বা জনস্বাস্থ্যের স্বার্থে আইনের দ্বারা আরোপিত যুক্তিসঙ্গত বাধানিষেধ-সাপেক্ষে প্রত্যেক নাগরিকের চিঠিপত্রের ও যোগাযোগের অন্যান্য উপায়ের গোপনতা রক্ষার অধিকার থাকিবে।’ এখানে যোগাযোগের অন্যান্য উপায়ের মধ্যে টেলিফোন, মোবাইল ফোন ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।
১৯৪৮ সালে ঘোষিত জাতিসংঘ মানবাধিকার ঘোষণার ১২ নম্বর আর্টিকেলে বলা হয়েছে, ‘কারো ব্যক্তিগত গোপনীয়তা কিংবা তার গৃহ, পরিবার ও চিঠিপত্রের ব্যাপারে খেয়াল-খুশি মতো হস্তক্ষেপ কিংবা তার সুনাম ও সম্মানের ওপর আঘাত করা চলবে না। এ ধরনের হস্তক্ষেপ বা আঘাতের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় লাভের অধিকার প্রত্যেকেরই রয়েছে।’
সুতরাং গোপনীয়তা একজন ব্যক্তির সংবিধান স্বীকৃত অন্যতম একটি মৌলিক অধিকার। আদালতের আদেশ ছাড়া কোনভাবেই সেটা সার্চ করার এখতিয়ার কারও নেই। তল্লাশির ক্ষেত্রে পুলিশ নিয়ম না মানলে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি সংশ্লিষ্ট পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে মানহানি ও ক্ষতিপূরণের মামলা করতে পারবেন। যদি পুলিশ বা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কোন নাগরিক কে আটক কিংবা গ্রেপ্তার করে তা অবশ্যই হতে হবে সুনির্দিষ্ট, বিশ্বাসযোগ্য ও যুক্তিসঙ্গত তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে। উক্ত ব্যক্তির যথাযত মর্যাদা ও সম্মান বজায় রেখেই করতে হয়। উক্ত ব্যক্তি যদি শিশু হয় তাহলে তার অভিবাবক বা বিশ্বাস ও আস্তা রাখে এমন বয়স্ক লোকের সামনে করতে হবে।
সাধারণত পুলিশ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছাড়া কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেন না। কিন্তু অনেক সময় বিধিসাপেক্ষ বিনা পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেপ্তার করতে পারে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারার ১ নং উপধারা মতে, একজন পুলিশ অফিসার ম্যাজিস্ট্রেটের ওয়ারেন্ট ছাড়াই কিছু কিছু ক্ষেত্রে একজন ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করতে পারেন। উল্লেখযোগ্য হল যেমন- যার কাছে ঘর ভাঙার যন্ত্র বা বস্তু আছে, সেই ব্যক্তি যাকে ‘ঘোষিত অপরাধী’ বলা হয়। এদের ধরার জন্য সংবাদপত্র বা গেজেটে ঘোষণা দেয়া হয়, যে ব্যক্তির কাছে চোরাইমাল আছে বলে সন্দেহ করা হয়, পুলিশের আইনানুগ কাজে যারা বাধা দেয় বা পুলিশের হেফাজত থেকে যারা পালিয়ে যেতে চেষ্টা করে, যারা প্রতিরক্ষা বাহিনী থেকে পলাতক, বাংলাদেশের বাইরে যারা অপরাধ করে, তাদের যদি বাংলাদেশে পাওয়া যায়, গুরুতর অপরাধে দণ্ডিত ব্যক্তিরা খালাস পাওয়ার পরও তাদের যেসব নিয়ম মেনে চলতে হয়, সেগুলো যারা ভঙ্গ করে, যেসব আসামিকে বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তারের জন্য অন্য থানা থেকে অনুরোধ করা হয় প্রভৃতি।
যেকারণেই আটক কিংবা গ্রেপ্তার করা হউক না কেন। উক্ত নাগরিকের কাছে পুলিশ নিজের পরিচয় দিবেন। আসামীকে আটক বা গ্রেফতারের কারণ জানাবেন। যদি আসামী গ্রেপ্তার এড়াতে চেষ্টা করে তাহলে আসামীর পলায়ন প্রতিরোধ করা জন্য যতটুকু বল প্রয়োগ করা প্রয়োজন ঠিক ততটুকু বল প্রয়োগ করতে হবে। গ্রেফতারকৃত আসামী যদি মহিলা, শিশু, বৃদ্ধ বা অসুস্থ হয় তাহলে তাকে হাতকড়া পড়ানো যাবে না। মনে রাখতে হবে, থানায় বা পুলিশি হেফাজতে নাগরিক কে অত্যাচার করে পুলিশ কর্তৃপক্ষ কোনো জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে না।
অর্থাৎ কোন প্রকার শারিরীক-,মানসিক নির্যাতন বা নিষ্ঠুর ব্যবহার করা যাবে না। আর তাদের কাছে প্রদত্ত কোনো স্বীকারোক্তি সাক্ষ্য প্রদানের ২৫ ধারা অনুসারে আদালতের কাছে গ্রহণযোগ্যও নয়। আর যদি জিজ্ঞাসাবাদের সময় নির্যাতন করা হয়, তাহলে তা সম্পূর্ণ অবৈধ ও বেআইনি। কখনই কোনো সাদা কাগজে দস্তখত করা যাবে না। অভিযোগ ছাড়া কাউকে যুক্তিসংগত সময়ের বাইরে তথা অনির্দিষ্টকালের জন্য থানায় আটক রাখা যায় না। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে ছেড়ে দিতে হবে। অথবা কোনো আইনের আওতায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতে হাজির করলে তখন ম্যাজিস্ট্রেট সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র ও অপরাধ বিবেচনায় প্রয়োজনে আটকাদেশ দিতে পারেন।
#বরিশালে_এক_বছর_সাজা_খেটে_মুক্তি_পেলো_৯টি_ছাগল
বরিশাল নগরীর মুসলিম কবরস্থানের ভিতর প্রবেশ করে ঘাস ও গাছ পাতা খাওয়ার অপরাধে এক বছর বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) খোয়ারে আটকে ছিল ৯টি ছাগল। নব নির্বাচিত সিটি মেয়রের নির্দেশনায় শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) মুক্তি পেয়ে তরুণ উদ্যোক্তা মালিকের কাছে ফিরে গেছে তারা।
২০২২ সালের ৬ই ডিসেম্বর বিসিসির তৎকালীন মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর নির্দেশক্রমে নগরীর তরুণ উদ্যোক্তা শাহরিয়ার সাচিব রাজিব এর উন্নত প্রজাতির ১৫টি ছাগল আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়।
জানা গেছে, ১৫টি ছাগল বিনা অনুমতিতে নগরীর মুসলিম কবরস্থানের গেইট খোলা পেয়ে ভিতরে প্রবেশ করে ঘাস ও গাছের পাতা খেয়ে ফেলে। এই অপরাধেই ছাগলগুলোকে আটক করা হয়েছে বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন তৎকালীন দায়িত্বশীল প্রশাসনিক কর্মকর্তা।
অভিযোগ আছে, বন্দী অবস্থায় কয়েকটি ছাগল বাচ্চা দিয়েছে। এরই মধ্যে অযত্নে আর অবহেলায় বেশ কয়েকটি বাচ্চা মারা যায়। ছাগলগুলো আটকের পর থেকে সিটি করপোরেশনসহ প্রশাসনের দ্বারে দ্বারে ঘুরেও ভুক্তভোগী ওই পরিবারটি মাসের পর মাস পেরিয়ে গেলেও ফিরে পায়নি তার পালিত ছাগলগুলো।
অবশেষে আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি নজরে আসে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের নব-নির্বাচিত মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত এর।
পরে তার নির্দেশনায় বৃহস্পতিবার (২৩ নভেম্বর) বিসিসি কর্তৃপক্ষ আটককৃত গবাদি পশুগুলো মালিক রাজিবের কাছে হস্তান্তর করেন। হস্তান্তরকালে বিসিসির প্রশাসনিক কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন, রোড ইন্সপেক্টর রেজাউল কবির ও ইমরান হোসেন খান উপস্থিত ছিলেন।
“দলিল যার জমি তার” আসলে কি তাই?
বাংলাদেশে Land Ownership Dispute বা জমি মালিকানা বিরোধ চলে আসছে। যেখানে পৃথিবীর অন্যান্য দেশে জমি নিয়ে বিরোধ ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে বাংলাদেশে তার বিপরীত।
আমরা শৈশব থেকে পাঠ্যপুস্তকে দেখে এসেছি “জোর যার মুল্লুক তার” এবং আশ্চর্যজনকভাবে অনেক ক্ষেত্রেই সেই ব্রিটিশ আমল থেকে এই নীতিকে তারা সাপোর্ট করে আসছে যেমন Adverse Possession যার মাধ্যমে জমির প্রকৃত মালিক (বাদী) যদি ১২ বছরে তার সম্পত্তি দখল নিয়ে কোন আইনি প্রক্রিয়ায় না যায় তাহলে দখলকৃত (বিবাদী) ব্যক্তির সম্পত্তি অর্জিত হবে এবং অনুরূপভাবে ১৯০৮ সালের তামাদি আইনের ২৮ ধারায় সম্পত্তির অধিকার বিলুপ্তির ব্যাপারে বলা হয়েছে।
সম্প্রতি পাশ হওয়া ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩ এ ভূমি সংক্রান্ত অনেক জটিলতা সমাধান করবে, তবে শর্ত থাকে যে, এই আইনের বিধানাবলি অন্যান্য আইনের কোনো বিধানের ব্যত্যয় না হয়ে এর অতিরিক্ত হবে। বর্তমানে প্রচলিত জমি সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে আইনের যে শূন্যতা ছিল তা অনেকাংশে নতুন ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন দ্বারা পূর্ণ হবে।
এই আইনের ৪ ধারায় ভূমি হস্তান্তর, জরিপ, রেকর্ড হালনাগাদ করণ বা ব্যবস্থাপনা বিষয়ে কখন প্রতারণা হবে সে বিষয়ে বিস্তারিত বলা হয়েছে। যেমন কোন ব্যক্তি তথ্য গোপন করে কোন ভূমি সম্পূর্ণ বা অংশবিশেষ অন্য কোন ব্যক্তি বরাবর হস্তান্তর বা সমর্পণ করলে আগে যেখানে দলিল বাতিলের মামলা করতে হত এখন নতুন আইন অনুযায়ী থানাতে মামলা দায়ের করতে পারবেন, যদি থানা মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানাই তাহলে কোর্টে সরাসরি আইনজীবীর মাধ্যমে মামলা দায়ের করতে পারবেন এবং পুলিশ চাইলে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করতে পারবেন আদালতের অনুমতি ছাড়া। আগে যেখানে জমি সংক্রান্ত মামলায় Ad valorem Court fee দেওয়া লাগতো তা এখন ফৌজদারী মামলা রূপে মিনিমাম Court Fee দিয়ে মামলা দায়ের করা যাবে।
এই আইনের বিশেষত্ব হলো এই আইনে মামলা করলে তা Cognizable offence (আমল যোগ্য অপরাধ) এবং Non bailable (জামিন অযোগ্য), Non Compoundable (আপোষ অযোগ্য)।
আমার আইনগত পেশা জীবনে অনেক মামলায় দেখেছি ভুয়া ওয়ারিশ সার্টিফিকেট নিয়ে এক ভাইয়ের সম্পত্তি আরেক ভাই বিক্রি করে দিয়েছেন বা এক ভাই তার অংশের চেয়ে বেশি অংশ বিক্রি করে দিয়েছেন এখন নতুন আইনের ৪(১)গ ধারা অনুযায়ী সরাসরি ফৌজদারী মামলা করতে পারবেন।
এক্ষেত্রে অভিযোগ প্রমাণিত হলে উক্ত আইনের ৪(২) অনুযায়ী সর্বোচ্চ (৭) সাত বছর কারাদন্ড ও অর্থ দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। ৪(১) ধারায় আরো বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি মিথ্যা বিবরণ সংবলিত কোন দলিলের স্বাক্ষর বা সম্পাদন করলে এমনকি কর্তৃপক্ষকে যেমন AC Land বা Sub Registrar অফিসে মিথ্যা তথ্য প্রদান করলে একই দন্ডে দণ্ডিত হবেন।
বর্তমান সময়ে এটা প্রায়ই দেখা যায় ভয়-ভীতি প্রদর্শন করে বা প্রতারণার উদ্দেশ্যে সাদা/ অলিখিত স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে বেআইনি উদ্দেশ্য হাসিল করতে চায় এক্ষেত্রে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন ২০২৩ এর ৫(১) এ ভূমি জালিয়াতি সম্পর্কে সুস্পষ্ট ভাবে বলা হয়েছে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি দলিলের কোন অংশ সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে পরিবর্তন করে সংক্ষেপে বলতে গেলে যে উদ্দেশ্যে দলিলটি করা হয়েছে সেই উদ্দেশ্যে ব্যতীত অন্য কোন উদ্দেশ্যে দলিলটি ব্যবহার করা হলে তা উক্ত আইনে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি ৭ বছর এবং অর্থদণ্ড।
উল্লেখ্য যে, এ আইনের অধীন দায়েরকৃত মামলায় কোনো দলিল প্রতারণা বা জালিয়াতির মাধ্যমে সৃজিত বা প্রস্তুতকৃত মর্মে প্রমাণিত হইলে, সংশ্লিষ্ট আদালত উক্ত মামলার রায় বা আদেশের কপি সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্তৃপক্ষ বরাবর প্রেরণ করিয়া উহা প্রতারণা বা জালিয়াতির মাধ্যমে সৃজিত বা প্রস্তুতকৃত মর্মে সংশ্লিষ্ট নথি, রেজিস্টার বা রেকর্ডপত্রে লিপিবদ্ধ করিবার আদেশ প্রদান করিবেন। তার জন্য আলাদা কোন দেওয়ানী মামলা করার প্রয়োজন নেই। এতে করে একদিকে যেমন বিচার প্রার্থীদের সময় এবং খরচ কমবে অন্যদিকে আদালতে মামলা যট কমবে।
এই আইনের আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো যদি কর্তৃপক্ষকে যেমন AC Land বা Sub Registrar অফিসে কোন ব্যক্তি দলিল উপস্থাপন করে এবং উক্ত অফিস যদি উপস্থাপনকৃত দলিলটি জাল বিশ্বাস করার যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উক্ত বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য উল্লেখ করে তা বিচারার্থ উপযুক্ত ফৌজদারি আদালতে প্রেরণ করবে।
উক্ত আইনের ৬(৩) ধারায় বলা হয়েছে কোনো ব্যক্তির নামে ভূমির State Acquisition and Tenancy Act, 1950 (Act No. XXVIII of 1951) এর section 143 বা 144 এর অধীন প্রণীত বা হালনাগাদকৃত বলবৎ সর্বশেষ খতিয়ান না থাকিলে এবং অনুরূপ খতিয়ান ও হালনাগাদ ভূমি উন্নয়ন কর পরিশোধের প্রমাণক প্রদর্শনে ব্যর্থ হইলে, তিনি উক্ত ভূমি বিক্রয়, দান, হেবা বা অন্য কোনোভাবে হস্তান্তর, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি সম্পাদন বা দলিল রেজিস্ট্রেশন করিতে পারিবেন না, তাই জমি হস্তান্তর বা বিক্রয় এর ক্ষেত্রে অবশ্যই হালনাগাদকৃত সর্বশেষ খতিয়ান থাকতে হবে।
বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের একজন আইনজীবী হিসেবে অনেক মামলায় দেখেছি অনেক বিক্রেতা জমি বিক্রি করার পরে উপযুক্ত কারণ ছাড়া ভূমির দখল স্থানান্তর করেন না, এক্ষেত্রে এই আইনের ৯ ধারায় বলা হয়েছে এটি একটি অপরাধ এবং তার জন্য সর্বোচ্চ (২) দুই বছর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড হতে পারে এবং মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক প্রতিকার পাওয়া যাবে।
অনেক সময় দেখা যায় জমির সীমানা নিয়ে প্রায় দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলা থাকে এবং সীমানায় অবস্থিত স্থাপনা বৃক্ষ বা ফসলের ক্ষতি সাধন করে। নতুন আইন অনুযায়ী তা একটি অপরাধ এবং এই অপরাধের জন্য সর্বোচ্চ (২) দুই বছর কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড হতে পারে এবং মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক প্রতিকার পাওয়া যাবে।
উপরোক্ত আলোচনায় বলা যায়, নতুন আইন প্রয়োগের ফলে ভূমি সংক্রান্ত প্রতারণা এবং জালিয়াতি অনেকাংশই হ্রাস পাবে দলিলের প্রকৃত মালিকের দাবির প্রতিকার সহজ হবে। যদি কেউ প্রতারণা বা জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে জমি দাবি করে তাহলে এক্ষেত্রে একটি মামলায় নিষ্পত্তি এবং প্রতারক এর বিরুদ্ধে শাস্তি নিশ্চিত করা হয়েছে যা পূর্বে ছিল না এবং পৃথক মামলা করতে হতো।
দলিল যার জমি তার তখনই যখন এই আইনের ব্যবহার এবং প্রয়োগ সঠিকভাবে করতে পারবে। নতুন এই আইন নিঃসন্দেহে ভূমি সংক্রান্ত মামলা জটিলতা অনেকাংশে কমিয়ে তার প্রতিকার সহজ করে দিয়েছে।
Click here to claim your Sponsored Listing.
Videos (show all)
Category
Contact the practice
Telephone
Address
Dhaka
1217
Flat No. G3, (lift 3), Building No. 285/2, Dom Inno Apartment, (Inner Extension Building At The Backside), Dhanmondi 15 No. West, , (The Road Beside Keari Plaza)
Dhaka, 1209
‘Legal Lawbrella’ is a full-service law firm. Its area of practice includes Foreign Investment &
50/13-D, Matikata, Uddayan Tower, Dhaka Cantonment
Dhaka, 1206
Our services: Income Tax Return & Services VAT Return & Services
Room No : 208, Supreme Court Bar Building
Dhaka
Advocate, Supreme Court of Bangladesh
44/3, Chamelibagh (3rd Floor), Shantinagar
Dhaka, 1217
A House of Legal Services
House # 10, (2nd Floor), Road #9, Section # 2, Mirpur
Dhaka, 1216
Talent Sourcing and Corporate Solutions are a full range of Legal and Human Resources Consultancy Firm in Bangladesh.
Golden Nest, House-27(Ground Floor), Road-12, Block-F, Niketan, Gulshan/1
Dhaka, 1212,
We Provide legal training for law students, law graduates, lawyers and oher professionals.
11/1, Shahid Abdul Matin Road, Kalabagan 1st Lane
Dhaka, 1205
Team DMS in Association with Dr. Khaled H. Chowdhury & Associates (Dispute Management Specialists) a
Dhaka, 1207
3S Chambers, a niche legal chamber with an experience of a decade, provides a high level of quality of services to its clients and strives to reach clients’ goals and business stra...