Project Heal

মাঠের ফসলে প্রযুক্ত বিষের জ্বালায় দেশি এপিস সেরানা ইন্ডিকা ছটফট করে মরছে। পুরুলিয়া থেকে সহকর্মী ও ভাই অমিতের পাঠানো ভিডিও। সমস্ত সংবেদনশীল মানুষের কাছে এই ভিডিও পৌঁছে দিতে চাই। দেড় কিলোমিটারের মধ্যে উচ্ছে করলা ঝিঙা চাষ হচ্ছে। এই সব সব্জিতে ব্যাপক পরিমাণে পতঙ্গনাশক ব্যবহার করা হয়। মৌমাছির এধরণের গোল হয়ে ঘোরা আর ছটফটানি বলে দিচ্ছে বিষের জ্বালায় তাদের অসহ্য মৃত্যুযন্ত্রণার কথা৷ আজকের দিনের সব নিভে গেলো এই ভিডিওটা দেখে। আপনারা জানেন আমরা এর আগে মধুবন থেকে এই বিষয়ে ভিডিও পোস্ট করেছি। লাগাতার এই নিয়ে নানা জায়গায় কথা বলছি। আমরা বারবার বলছি ঝলমলে মধুর বাজারের ভীড়ে মধুকরদের অবস্থার কথা।

অনেক কথা লিখতে ইচ্ছা করছিলো কিন্তু পারছিনা। শুধু এইটুকু বলবো, যে পৃথিবীতে মৌমাছি এইভাবে মরছে সেই পৃথিবীতে মানুষের জীবন আরো আরো দুর্বিষহ হয়ে উঠবে।

কীটনাশকের দেশ কাল সীমানা হয় না। কীটনাশক ও আধুনিক চাষবাস কোনো অরাজনৈতিক বিষয় নয়৷

মৌমাছিদের মৃতদেহ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবে। দেখতে হবে শরীরে কত লোড আছে, কী লোড আছে।

আমরা অনেক জায়গায় "না" বলা শিখছি। কনসেন্ট এর কথা বলছি। একটা স্বাধীন দেশে এত কীটনাশক কি আমাদের কনসেন্ট নিয়ে ছড়ানো হয়? আমাদের ভোট দেওয়া সরকার যে দেশি বিদেশি কোম্পানীকে এই বিষ আদি বেচার ছাড়পত্র দিয়ে দেয় সেসব কি আমাদের কনসেন্টে দেওয়া হয়? অথচ ফসলগুলো খাই তো আমরাই রোজ, না?

কীটনাশক কোম্পানীর বিপুল লাভ কার/কাদের পকেট ভরায়? জেলায় জেলায় কারা রাসায়নিক সার বিষ, বাঁজা বীজ সরবরাহ করে? এতে সরকারের ভূমিকা কী?

আমরা জানবো না?

Courtesy : Nilanjan Mishra

ক্যামিকাল সার ও কীটনাশক মুক্ত পাট শাক। আলহামদুলিল্লাহ।
যারা পাইকারী চাবে নিতে চান দ্রুত যোগাযোগ করুন।

আমরা আমাদের এই জমিটাতে ট্রাক্টর দিতে চেয়েছিলাম না। বাধ্য হয়ে দিচ্ছি তবে আর কখনোই দেব না। কেন বাধ্য হয়ে দিচ্ছি আর কেন কেন দেব না এর পেছনের কারন জানতে চাইলে ভিডিওটি দেখতে অয়ারেন।

আমরা জমিতে বাধ্য হয়ে ট্রাক্ট্রর দিয়ে চাষ দিচ্ছি। আর কখনোই এমন চাষ এই জমিতে দেব না।
কেন বাধ্য হয়েছি, আর কেওন চাষ দেব না জনাতে চাইলে ভিডিওটি দেখতে পারেন

মাটির pH খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। pH এর উপর মাইক্রোঅরগানিজমদের গ্রোথ এবং উদ্ভিদের পুষ্টি গ্রহনের বিষয় গুলো নির্ভর করে। pH ৬.৫-৭ উত্তম। তবে pH যদি একটু এসিডিক ও হয় কিন্তু মাটিতে যদি প্রয়োজনীয় মাইক্রো অরগানিজম গুলো থাকে যেমন PSB, KMB ইত্যাদি তবে তাতেও ভালো কাজ হয়। সমস্যা হলো এই মাইক্রো অরগানিজম গুলোই আমাদের মাটিতে যথেষ্ট পরিমানে নেই।
আমাদের Project Heal এর জমির পিএইচ গড়ে ৫.৫-৬ এর মধ্যে। যেটা এসিডিক। সমাধানের জন্য অনেকের কাছ থেকে পরামর্শ নেবার চেষ্টা করেছি। সবাই ডলোমাইট দেবার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। কেউ কেউ ডলোমাইট এবং ব্লিচিং পাউডার দিতে বলেছেন। তবে আমরা যেহেতু ক্যামিক্যাল ইউজ ই করতে চাচ্ছি না, তাই এগুলো আর ভাবনাতেই আনিনি। কারন এগুলো ভালো, মন্দ সকল মাইক্রো অরগানিজম গুলোকে মেরে ফেলে এবং মাটির গুনাগুন নষ্ট করে দেয়।
এই সমস্যা সমাধানের জন্য স্টাডি করতে গিয়ে আমরা ২ টা ন্যাচারাল সলুশন বের করেছি। সেগুলোই সামনে এপ্লাই করবো ইনশাআল্লাহ।

প্রায় ১৫ প্রকার ন্যাচারাল উপাদান দিয়ে তৈরী হচ্ছে ন্যাচারাল পেস্ট কন্ট্রোল। আশা করছি ভালো কাজ করবে ইনশাআল্লাহ।

দুইদিন পর ঈদ, ঈদের পরে আমাদের Project Heal এর কার্যক্রম অফিশিয়ালি শুরু হবে। তাই বলে আমাদের স্টাডি/আরএনডি থেমে নেই।
ভিডিওতে দেখেন কলা। টক্সিসিটি মুক্ত কলা। তাও আবার দেশী কলা। হাইব্রীড না। সেটাও এখনো ছোট। এর কাদি আরো বড় হবে। টক্সিসিটি মুক্ত খাদ্য উৎপাদনের উপর কনফিডেন্স বাড়ছে। ইনশাল্লাহ সবার দোয়া থাকলে আমরা পারবো।
প্রাথমিকভাবে আমরা কলা লাগানোর সুযোগ পাবো না। আমাদের Project Heal এর প্রাথমিক ট্রায়াল সাকসেসফুল হলে আমরা কলাও রোপন করবো। টক্সিসিটি মুক্ত কলা।
সাথেই থাকবেন।

মাটি টেস্ট করতে পাঠানো হচ্ছে ল্যাব এ। আমরা দেখতে চাই মাটিতে কি পরিমান অর্গানিক ম্যাটার আছে, ব্যাক্টেরিয়া ও ফাঞ্জাই এর রেশিও কেমন আছে।
এই ২ টা জিনিস খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
চাষ যোগ্য মাটিতে কমপক্ষে ৫% অর্গানিক ম্যাটার থাকা উচিত। মাটিতে ব্যাক্টেরিয়া থেকে ফাঞ্জাই এর পরিমান বেশি থাকা উচিত। রেশিও ১:১ থাকলেও ভালো।
কিন্তু মাটিতে ক্যামিকাল সার, কিটনাশক দিয়ে মাটির বারোটা বাজিয়ে দিয়েছি আমরা। অর্গানিক ম্যাটার দেশের জমি গুলোতে ০.৫%-১% এর বেশি পাওয়া মুশকিল। ব্যাকটেরিয়া, ফাঞ্জাই নিয়ে তো কোন চিন্তা ভাবনাই নেই।
আগামী একবছর এই ২টো জিনিস বাড়ানোর টার্গেট আমাদের। দেখাযাক কতটুকু বাড়ে। ল্যাব টেস্টের রেজাল্ট পাবার পর আমরা সেই অনুযায়ী একশন নিব।

আপনাদের বলেছিলাম, আমার সোনামনি 'মুফলিহা'র জন্য ক্যামিকাল ও টক্সিসিটি মুক্ত, নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনের জন্য চলছে বিভিন্ন পর্যায়ের স্টাডি।
থিউরোটিক্যাল অনেক স্যাডিজ শেষ হয়েছে। এবার তা প্র্যাক্টিক্যালি ইম্পিলমেনট করার পালা। আগামী এক বছর এই গবেষনা কার্যক্রম চলবে।
অনেকেই বলেছেন চাষবাসে লস। এগুলো করে তেমন লাভ পাওয়া যায় না। আমাদের লাভ পাওয়া সেকেন্ডোরী উদ্দেশ্য। প্রযেক্ট সাকসেসফল হলে লাভ ও পাওয়া যাবে। কিন্তু মাটি , বাতাস, পরিবেশ ভালো থাকলে আমরা সবাই ভালো থাকবো।
এই স্ট্যাডি শুধুমাত্র নিরাপদ ফল, শাক, সবজিই দিবে না বরং এতে পরিবেশ কাম ব্যাক করবে। আমরা যা খাই তার ইম্প্যাক্ট আমাদের শরীরে, মন ও চিন্তা ও তার বিকাশেও পরে।
তাই আমরা এই প্রযেক্ট এর নাম দিয়েছি Project Heal (এই বিষয়ে আপডেট পেতে পেজে ফলো দিয়ে রাখতে পারেন) । যা আমকে আপনাকে ও পরিবেশকে ন্যাচারালি হিল করবে।

প্রাথমিক ভাবে আমাদের এই স্ট্যাডি গাজীপুরের মাওনায় প্রায় তিন বিঘা জমির উপরে চলবে। যা ইদের পরেই শুরু হবে। আপাতত মাটি পরীক্ষা করতে পাঠানো হয়েছে।

এই প্রযেক্টে আমাদেরকে তাদের উপযুক্ত পরামর্শ দিচ্ছেন বিশ্বসেরা গবেষক গন। এর মধ্যে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক ড. আব্দুর রহীম স্যার (যার প্রায় তিনশত প্যাটেন্ট আছে) স্যার আমাদেরকে তার মূল্যবান পরামর্শ দিচ্ছেন । এই স্ট্যাডিকে পাবলিশ করার জন্য থাকবেন তরুন বিজ্ঞানী মোঃ আশরাফুল আলম। এছাড়া সার্বক্ষনিক পরামর্শ দিয়ে আমাদের পাশ থাকবেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. Mamun Al-Rashid স্যার।

আশা করি এই প্রযেক্টে আপনাদের সবাইকে আমরা পাশেই পাবো।