Mirpur Ladies collection

Mirpur Ladies collection

Working

15/02/2024

সকালে ঘুম থেকে উঠতে গেলে মেয়ে ও উঠে যায় তখনি শুনতে হয় মেয়ে উঠলে নাকি আমি উঠি।আমি আগে কেনো উঠিনা। আমি বিছানা ছেড়ে নামার সাথে সাথে আমার দেড় বছরের মেয়ে উঠে কান্না জুড়ে দেয়।
রাতে খুব একটা ভালো ঘুম হয়না। মেয়ে বার বার উঠে পড়ে।সকালবেলা শরীর হাত পা ঝিম ঝিম করে।

কিন্তু আমাকে তো নিত্য কাজ করতেই হবে। এইটা কি আর সন্তান বোঝে?
বাধ্য হয়ে মেয়েকে কোলে নিয়েই কাজ শুরু করতে হয়।
অথচ এটা আগে ভাবতেও পারতাম না। অসম্ভব আর অকল্পনীয় একটা ব্যাপার ছিলো। তবে আজকাল এইসব যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে। মনে হয় আমার একার নয়। অনেকেরই।
মেয়ের বাবার কাছে মেয়ে দিলে একটু পর পর মেয়ে আবার রান্না ঘরে চলে আসছে।
-একটু রাখো না মেয়েকে!
- আরে ও থাকছে না তো, আমি কি করতাম?
-কি করতাম মানে? ব্যস্ত রাখো। খেলো ওর সাথে।আর কোনো উত্তর নেই। সে তার মতো মোবাইল নিয়ে বিজি।

আমার আজকাল বড্ড বেশি একঘেয়ে লাগে সবকিছু। সব যেন নিত্যকার, নতুন কিছু নেই, বাচ্চার সব টা একা সামলাতে গিয়ে হাঁফিয়ে উঠি।

মেয়েকে নিয়ে বের হই মেয়ের খাবার দাবার আবার আমাকেই কিনতে হয়।
বাইরে বের হয়ে সবার টাইট ফিট ড্রেস, সুবাসিত পারফিউম দেখে নিজের দিকে তাকালাম, বড্ড এলোমেলো এখন আমি, ড্রেসের জায়গায় জায়গায় ময়লা লেগে আছে। যেন লুকাতে চেয়েও পারছি না সেটা।

যখন আমি কাজ করি তখন মোটামুটি বাচ্চাকে সামলানো হলেও, আমি খেতে গেলে, ওয়াশরুমে যাওয়ার হলে, কিংবা একটু রেস্ট নিতে গেলে তখন কেউ রাখে না।
যেন এইটাই নিয়ম। যদি বলি, একটু সময়ের জন্য রাখতে পারেন না?
তখন বলবে,
মা চিনে গেছে এখন কি আর মা ছাড়া থাকতে চায়।

আমি শব্দ খুঁজে পাই না। এইটা বড্ড রকম সত্য আজকাল, আমরা যতই আজকাল গল্পের গরু আকাশে তুলে দেই না কেন, মানে গল্পে স্বামীদের বড্ড বেশি বুঝদার বানিয়ে ফেলি না কেন, আমাদের দেশের 90 % স্বামী প্রজাতিটা এমনি। শুধু স্বামী নয় পরিবারের অন্য মানুষ গুলোও। আমরা যতই তাদের বুঝাই না কেন, যতই আধুনিকতার দোহাই দেই না কেন, এরা আরামদায়ক পুরানো নিয়মেই বেশ কমফোর্ট।

দেখাযায় মেয়েকে বসিয়ে রান্না করছি, যে যার মতো টিভি দেখছে। এরমধ্যে সে লাফালাফি করতে গিয়ে পড়ে গিয়ে ব্যাথা পেলো। জোরে চিৎকার করাতে আমি এসে দেখি, মেয়ে খুব ব্যাথা পেয়েছে।

সবাই তখন টিভি ফেলে এসে বাচ্চা কোলে না নিয়েই বলতে শুরু করলো,

- কিভাবে পরলো? কোথায় থাকো তুমি? কি এমন কাজ ঘরে যে একটা বাচ্চা দেখে রাখা যায় না? যত্তসব!

অনেক কিছু বলতে গিয়ে ও আবার বলা হয় না,
-তো আপনারা কোথায় ছিলেন? টিভিই তো দেখছিলেন।

না বলি না, জানি এর উত্তরে কি বলবে।
- এইসব মায়ের দায়িত্ব। বাচ্চাকে চোখে চোখে রাখতে হয়।
তখন বাচ্চাকে শেখানো হয় মা পচা তো, মা তোমাকে ভালবাসে না আমার লক্ষীকে একটু দেখলো না আহারে”।

এই বলে মেয়েকে কোলে নিলো, আমি দীর্ঘশ্বাস ফেলে আবার কাজে লেগে যাই।
রাতে মেয়ের বাবা বড় ক্লান্ত বেশে এসে শুরু করে দিলো চিৎকার চেঁচামেচি।
- কি করো বাসায়? দুটো মানুষের কাজ, কিছু কি করতে হয়? শুধু দুইটা রান্না করেই দিন পার করো। তাও যদি বাচ্চা টা দেখে রাখতে না পারো!!!!

রান্না শেষ করে যখন আমি একটু বিছনায় শুয়ে রেস্ট নিচ্ছি। তখনি মেয়েকে আমার কাছে আনা বড্ড সাধারণ নিয়ম।
মেয়ে এসে কান্না জুড়ে দেওয়ায় আবার উঠে বসলাম।

কোলে নিয়ে হাঁটছি, খাওয়ানোর চেষ্টা করছি। না সে কিছুতেই খাবে না। এই দিকে ওষুধ খাওয়াতে হবে।
একটু জোর করাতেই মেয়ে আবার কান্না শুরু করলো, সবাই আবার হুমড়ি খেয়ে পরলো,

-কেমন মা? অসুস্থ বাচ্চাকে আবার কান্না করাই।এখনি কেনো ঔষধ খাওয়াতে হবে। বাচ্চাকে জোর করলে কি খায়? আদর করে খাওয়াতে হয়।

-তো, আপনারা একটু চেষ্টা করেন আদর করে খাওয়ানোর।
আহ্, এইটা তো মায়ের দায়িত্ব, মা কি শুধু বললে হওয়া যায় নাকি? কষ্ট করতে হয়। আমরাও করেছি
না? বাচ্চারা বড় হলে কি আর মনে রাখে?

এইসব আমি রোজ শুনি, তাই এইসব নীতি বাক্যে খুব একটা অনুপ্রেরিত হই না আমি। কারণ যারা সাহায্য না করে কথা শোনাতে পটু তাদের মূল হাতিয়ার এইসব নীতি বাক্য।

মা হলেই মা টা আর মানুষ থাকে না, যেন সব কাজে সমান তালে পারদর্শী, রান্না বান্নায় মাফ নাই, তবে বাচ্চার খেয়াল রাখা আবশ্যক, সাহায্যের বেলায় কেউ নেই তবে তোমার শান্ত থাকা আবশ্যক। তুমি না মা!!!
রাগারাগি? মাথা গরম? মন খারাপ? ক্লান্তি? ঘুম? ৫ মিনিট দরজা বন্ধ করে ওয়াশরুমে?
এইসব আবার কি? তুমি না মা?

আমি আজকাল এইসব বাহানার আর উত্তর দিতে পারি না। এমন না যে আমি সব চুপ করে সয়ে যাই। একদম না। অনেক বলেছি, রাগারাগি করেছি, তখন পরিবর্তন টা দিন দুয়েকের হয়। আবার যখন চলতে শুরু করে গাড়ি তখন সে ধাঁচেই এঁটে বসে থাকে ওরা।
আমার চোখে দেখা প্রায় সব পরিবারের চিত্রই এমন। ব্যতিক্রম অবশ্যই আছে।

রাতে ওয়াশরুমে যাওয়া যেন আরেক যুদ্ধ। রাতে বিছানায় যেতে যেতে ভীষণ ক্লান্ত আমি, মেয়ের ঘুম নেই,মেয়ের বাবা তো আরো বেশি ক্লান্ত।কারন সে সারাদিন অফিস করে।মাস শেষে ইনকাম আছে তাই তার কাজের নাম আছে।আমার কাজের কোনো নাম নেই ইনকাম ও নেই।তাই আমার ক্লান্তি ও কারো চোখে পড়েনা।

সে পাঁচ মিনিটে ক্লান্ত হয়ে শুয়ে পড়লো, ভালো বাবার মতো বলতে ভুলল না,
- ওর দিকে খেয়াল রেখো ব্যাথা না পায়।

আমি ঘুম ঘুম চোখে মেয়েকে বুকে নিয়ে শুয়ে আছি।মেয়ে ঘুমিয়ে পড়াতে ওকে শুয়েই দিয়ে ঘুমিয়ে পড়লেই মেয়ে আবার উঠে যায়। রাত 2 টা, ৩ টা, ৫ টা, ৬ টা ঘড়ির সময় দেখতে দেখতে সকাল হয়ে যায়। সকালে উঠে যদি কাউকে বলি তাদের উত্তরের ভঙ্গিটা এমন হয়,
-এ আর এমন কি? তুমি না মা!

সকালে ওয়াশরুমে যেতেই মেয়ের উঠে পরা, দরজা বারি দিয়ে চিৎকার করা, কান্না দিয়ে শুরু হয় আবার একটা নতুন দিন।

এ আর এমন কি? তুমি না মা?

#তুমি_না_মা?

Want your public figure to be the top-listed Public Figure in Dhaka?
Click here to claim your Sponsored Listing.

Videos (show all)

Category

Website

Address


Dhaka Mirpur
Dhaka
1216