Feni, Chittagong, Bangladesh
Feni, Chittagong, Bangladesh
বলতে পারেন বিশ ভাষায় বোঝেন পঞ্চাশের বেশি ।
ফুসফুসতাড়িত বাতাস মুখবিবরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ছুঁয়ে পটকার মতো আওয়াজ হলে তাকে ‘কথা’ বলে। পৃথিবীর মানুষ নিজ নিজ ভাষায় কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করে। তাই বলে কি অন্য ভাষার প্রতি অনুরাগ থাকতে নেই! ভাষা নিশ্চিতভাবে সর্বময় যোগাযোগের শক্তিশালী মাধ্যম। অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের ক্ষেত্রে ভাষাই ব্রহ্মাস্ত্র।
ভাষার প্রতি অগাধ অনুরাগের একজন ইসফানদিয়র আরিওন। ফেনীর ছাগলনাইয়ায় জন্ম নেওয়া ৩৬ বছর বয়সী এই লেখক কথা বলতে পারেন বিশ ভাষায়, বুঝতে পারেন পঞ্চাশটির বেশি ভাষা; যার অধিকাংশই শিখেছেন একক প্রচেষ্টায়।
ইসফানদিয়র আরিওনের দাবি, তিনি অনর্গল লিখতে পড়তে বলতে পারেন বাংলা, ইংরেজি, আরবি, হিন্দি, উর্দু, ফারসি, জার্মান, সংস্কৃত প্রভৃতি। বলতে ও পড়তে পারেন ওড়িয়া, অসমীয়া, ভোজপুরি, গুজরাটি, ফরাসি, ইতালিয়ান, হিস্পানি, রুশ, হিব্রু, গ্রিক, চীনা ও জাপানি ভাষা।
একাধিক ভাষা শেখার পাশাপাশি তিনি বিভিন্ন প্রাচীন লিপির পাঠোদ্ধারে পারদর্শী। প্রাচীন বিলুপ্ত ভাষা যেগুলোর দেখা এখন পাওয়া যায় কেবল বিভিন্ন লিপিতে, সেই সব ভাষায়ও রয়েছে তার দক্ষতা। তিনি ভাওয়াল স্টেটের নায়েবের লেখা ইংরেজি হস্তলিপির পাঠোদ্ধার করেছেন।
প্লেটো ও ক্রাতিলাসের ডায়ালগ অনুবাদের সময় অনুবাদক আমিনুল ইসলাম ভূঁইয়াকে গ্রিক লিপি থেকে পাঠোদ্ধার করে সাহায্য করেছেন তিনি।
বাংলা একাডেমির পুঁথিসংগ্রহশালায় প্রাপ্ত আরবি হরফে লিখিত বাংলার পাঠোদ্ধারও করেছেন। এ ছাড়া ব্রাহ্মী, গুপ্ত, খরোষ্ঠী, কুশান, তিব্বতি, সিলটি, চাকমা, পল্লবা, থাই, খমের, সিরিলিক, আরামি, আমহারি, গেজ, পাহলভি, আক্কাদি, বর্মি, শাহমুখী, গুরুমুখী, বোঝেন পঞ্চাশের বেশি সিন্ধি, পশতুন, দিভেহি, হায়ারোগ্লিফিক লিপিও তিনি পড়তে পারেন।
অধিকাংশ ভাষা যেমন আরিওন নিজেই শিখেছেন, তেমনি ‘ইসফানদিয়র আরিওন’ নামটিও নিজেই গ্রহণ করেছেন। তার পিতৃদত্ত নাম মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। আরবি-ফারসি ভাষা শেখার সময় শাহনামায় একটি চরিত্রের দেখা পান, যার নাম ইসফানদিওর। শব্দটি পাহলভি সেপানতোদাতা শব্দটি থেকে এসেছে। এর অর্থ পবিত্র সত্তা দ্বারা, আর আরিওন গ্রিক শব্দ, যার অর্থ গীতিময়। এই দুইয়ে মিলে তার নামের পুরো অর্থ দাঁড়ায় পবিত্র সত্তা দ্বারা গীতিময়।
ভাষার প্রতি আরিওনের আগ্রহের সৃষ্টি শৈশব থেকেই। আরবি ভাষার সঙ্গে পরিচয় তখনই। পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় আরবি লিপির প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন। ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে পড়ার সময় আরবি শব্দ, বাক্যের অর্থ জানতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। শুরুটা হয়েছিল সাধারণ বিষয় যেমন ফুল, ফলসহ দৈনন্দিন জীবনে ব্যবহৃত বিভিন্ন জিনিসের আরবি নাম জানার চেষ্টার মাধ্যমে। ছেলের এমন আগ্রহ দেখে বাবা একদিন বললেন, ‘তুমি যদি সপ্তম শ্রেণিতে ভালো ফল করো, তাহলে আরবি ডিকশনারি কিনে দেব।’ ইসফানদিয়র আরিওন বাবার শর্ত পূরণ করেন। বাবাও তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করেন। তাকে কিনে দেন একটি বাইলিঙ্গুয়াল ডিকশনারি, যেখানে আরবি শব্দের ইংরেজি অর্থ দেওয়া ছিল। এ অভিধানটি পাওয়ার পরে আরবির চর্চা বাড়িয়ে দেন ইসফানদিয়র আরিওন।
গণিতের বিভিন্ন পরিভাষার আরবি শব্দ দেখে নিয়ে গণিতের চর্চা করতেন আরবি ভাষায়। এই চর্চার ফলে আরবিতে তার দক্ষতা বাড়ে। যখন আরবি ভাষা কিছুটা পড়তে, বুঝতে ও লিখতে সক্ষম হলেন, তখন এই দক্ষতা আরও বাড়াতে অনুবাদে আত্মনিয়োগ করেন। মেধাবী আরিওন এসএসসি ও এইচএসসিতে ভালো ফল করে ভর্তি হন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট)। কিন্তু বুয়েট তাকে টানেনি। পরের বছর ভর্তি হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগে। ভাষা শেখার অত্যুগ্র আগ্রহ থেকে শিখতে শুরু করেন ফরাসি, জার্মান ও রুশ ভাষা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে উচ্চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান জার্মানিতে।
জার্মানিতে অবস্থানকালেই ফরাসি, জার্মান ও রুশ ভাষায় উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। তবে প্রবাসে উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণের অভিজ্ঞতা থেকে বুঝতে পারলেন তিনি নিজে নিজেই দ্রুত শিখতে পারেন। কারও সাহায্য ছাড়া নিজে নিজেই পড়তে শিখলেন কোরিয়ান, চীনা ও জাপানিজ ভাষা। সঙ্গে চলল অনুবাদ ও সৃজনশীল লেখা। আরবি ভাষার উপন্যাস ‘মাত্তাসিমুল হিজরাত ইলাসসিমাত’ নোয়াখালী ও ফেনীর আঞ্চলিক ভাষায় অনুবাদ করেন। বাংলায় নাম দেন ‘উত্তরে খেপের মৌসুম’। আরবি সাহিত্যিক ইবনে তোফায়েলের লেখা ‘হাই ইবনে ইয়াকজান’ অনুবাদ করেন আরিওন। বাংলা ভাষায় অনুবাদ করেছেন নবম শতাব্দীতে রচিত ইবনে খুরাদাদবিহর ভৌগোলিক ও ভ্রমণবিষয়ক বই ‘কাতিব আল মাসাল্লিক ওয়া ইমাল্লিক’। অনুবাদের পাশাপাশি সৃজনশীল লেখার ভুবনে রয়েছে আরিওনের পদচারণ। আরবি, ফারসি ও উর্দু ভাষায় ৫০-৬০টি মৌলিক কবিতা লিখেছেন তিনি।
তরুণ প্রজন্মের কাছে ভিনদেশি ভাষার প্রতি অনুরাগের দৃষ্টান্ত হতে পারেন ইসফানদিয়র আরিওন।
শেষে ভাষা নিয়ে অষ্টাদশ শতকের দুই প্রান্তের দুই মনীষীর কথা তুলে ধরা যাক এবার। কবি রামনিধি গুপ্ত মাতৃভাষার প্রতি অনুরাগ থেকে লিখেছিলেন ‘নানান দেশের নানান ভাষা বিনে স্বদেশী ভাষা, পুরে কি আশা’। তবে জার্মান কবি ইয়োহান ভল্ফগাং ফন গ্যেটে মাতৃভাষার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলতে চান অন্য কথা, ‘যে বিদেশি ভাষা সন্বন্ধে অজ্ঞ, সে নিজের ভাষা সম্পর্কে কিছুই জানে না।’
বাগদাদের এক গ্রামে এক গরীব লোক বাস করতেন।এক দিন লোকটির সাধ জাগলো বাদশার দরবারে গিয়ে তাঁর সাথে সাক্ষাত করবে।তখনকার যুগের রেওয়াজ ছিলো বাদশাহের সাথে দেখা করতে গেলে কিছু হাদিয়া নিয়ে যাওয়া। যাতে বাদশাহ খুশী হয়ে তার উপর সদয় দৃষ্টি দেন।
লোকটি বাড়ি থেকে বের হওয়ার আগে তার স্ত্রীর সাথে পরামর্শ করলো আমি তো বাদশার দরবারে যাচ্ছি এখন তাঁর জন্য তোহফা হিসেবে কি নেই..? লোকটির বসবাস ছিল ছোট্ট একটা গ্রামে।দুনিয়ার কোন খবরই তাদের ছিলো না। তার স্ত্রী তাকে পরামর্শ দিয়ে বললো আমাদের ঘরে কলসিতে যে পানি আছে সেটা নিয়ে যাও। রাজ দরবারের লোকজন এমন শীতল আর মিষ্টি পানি পাবে কোথায়..? লোকটিও তার স্ত্রীর কথা যৌক্তিক মনে করে ঐ পানি নিয়েই রাজ দরবারের দিকে রওয়ানা দিল।
লোকটি পায়ে হেঁটেই কলসি মাথায় নিয়ে রওয়ানা হলো। দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে গিয়ে কলসির উপর ধুলাবালি জমে গেল, ভিতরের পানিও ময়লা আর দূর্গন্ধময় হয়ে গেল। বেচারা গ্রামের অতি সহজ সরল লোক, এসব খেয়াল না করেই রাজ দরবারে উপস্থিত হয়ে খলিফার সামনে কলসি পেশ করলো।
খলিফা জানতে চাইলেন এতে কি আছে..? লোকটি বলল, হুজুরের জন্য আমার পুকুরের ঠান্ডা মিঠা পানি এনেছি। ভাবলাম আপনার দরবারে এমন পানি কোথায় পাবেন ? দয়া করে এটা কবুল করুন।
খলিফা বললেন, আচ্ছা ঢাকনা সরাও তো, দেখি! ঢাকনা সরানো হল,
পানি গন্ধ হয়ে গেছে। খলিফা ভাবলেন বেচারা নিঁখাদ ভালবাসা নিয়ে এমন করেছে।তার মন ভাঙা ঠিক হবে না। তাই খলিফা লোকটির কলস ভরে আশরাফি দিতে নির্দেশ দিলেন।
লোকটিও খুব খুশি! লোকটি যখন রাজ দরবার থেকে ফিরে যাওয়ার অনুমতি চাইলো তখন খলিফা এক সিপাহীকে বললেন তাকে কিছুদূর এগিয়ে দিয়ে এসো, আর শোন, তাকে দজলা নদীর তীর দিয়ে নিয়ে যাবে। কিছুদূর আসার পর দজলার অথৈ পানি দেখে গ্রামের লোকটি বললো ওখানে কি..? সিপাহী বলল, ওটা নদী। চলো নদীর পানি দেখবে চলো। নদীর কাছে গিয়ে গ্রাম্য লোকটি নদীর স্বচ্ছ সুন্দর পানি দেখলো এবং কিছুটা পানও করল। আর ভাবতে লাগলো... হায়!
খলিফার দরবারের কাছে এত সুন্দর পানি আর আমি তার জন্য ময়লা পানি এনেছিলাম। তাহলে খলিফা আমার পানি গ্রহণ করেছে শুধু তার দয়া আর উদারতার খাতিরে!! আমার পানির তার কোন প্রয়োজনই ছিলোনা। উপরন্তু আমার কলসি ভরে আশরাফি দিয়ে দিলেন!!
শিক্ষনীয় এটাই যে, আল্লামা জালাল উদ্দিন রুমী (রহঃ) প্রায়ই এই ঘটনা শুনিয়ে বলতেন,
আমাদের ইবাদতগুলিও ঠিক এমনি। যা আল্লাহর কোন কাজেই আসেনা। তিনি আমাদের ইবাদতের মুখাপেক্ষী নন এবং আমাদের ইবাদতও ঐ লোকের কলসির পানির মত স্বচ্ছ ও নির্ভেজাল নয়,
বরং তা দুর্গন্ধযুক্ত। কিন্তু শুধমাত্র আল্লাহর প্রতি ভালবাসার কারণে আমরা সেই ইবাদত করে থাকি বলে আল্লাহ আপন দয়ায় তার বদলা দিয়ে থাকেন।
আল্লাহ আমাদের সকলকে তার ইবাদত সুন্দর ভাবে আমল করার তাউফিক দান করুন "" আমিন""
The area in green has a bigger population than the area in red!
লাল অংশটা রাশিয়া ১৭,০৯৮,২৫০ বর্গ কিলোমিটার।
সবুজ ১,৪৭,৬৩০ বর্গ কিলোমিটার।
এটা দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠ গোলরক্ষক রুপনা চাকমার বাড়ি!
যে রুপনা চাকমা গোলবারে দাড়িয়ে একের পর এক প্রতিপক্ষের শট আটকে দেয়, তাঁর ঘরের ভাঙা চাল বৃষ্টির জল আটকাতে পারে না।
ছাদখোলা বাসে অভিবাদন দিয়ে যেন আমরা ভুলে না যাই রুপনাদের ছাদওয়ালা বাসস্থান বেশি দরকার…
Click here to claim your Sponsored Listing.
Videos (show all)
Contact the organization
Website
Address
Feni
3900