Hasanul Haq Inu
Nearby public figures
Bangabandhu Avenue, Dhaka
Dhaka 8101
Bangabandhu Avenue, Dhaka
Dhaka
Bongobondhu Avenue, Dhaka
Keraniganj, Dhaka
Dhaka
Dhaka 1000
Purana Paltan, Dhaka
Purana Paltan, Ramna
Purana Palton Dhaka, Dhaka
Ramna
Purana Paltan. Paltan Plaza, Dhaka
Purana Palton, Dhaka
Dhaka
You may also like
Contact information, map and directions, contact form, opening hours, services, ratings, photos, videos and announcements from Hasanul Haq Inu, Politician, Jasod office, 35-36 bangabondhu Avenue, Fulbaria.
২৭ জুন ২০২৩
ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে জাসদের শুভেচ্ছা বার্তা
বিশ্বের মুসলমান সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি এক শুভেচ্ছা বার্তায় বাংলাদেশসহ বিশ্বের মুসলমান সম্প্রদায়ের সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তারা বলেন, মুসলমানদের প্রিয় বস্তুকে আল্লাহর উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করার ঈদুল আযহার মর্মবানীকে ধারণ করে সমাজের অসহায়-নিরুপায় মানুষ ও মানবতার জন্য নিজেদের উৎসর্গ করার মানসিকতা অর্জনের মধ্য দিয়েই ঈদুল আযহার মহিমা প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। তারা ঈদুল আযহার উৎসর্গ ও উৎসবের আনন্দ সমাজের অসহায়-নিরুপায় মানুষের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেয়ার আহ্বান জানান।
The city of Setenil in Spain, one of the strangest cities, its inhabitants live under the largest rock in the world since it was built by the Muslims in the days of Andalusia. Residents there enjoy a cold in the summer and warm in the winter, because the roofs of their homes are the same rock that prevents the pe*******on of heat or coldness.
আজ বিকাল ৪-৪০টা থেকে ৫-১৫টার মধ্যে সংসদে রাস্ট্রপতির ভাষণের উপর আনিত ধন্যবাদ প্রস্তাবের বিষয়ে বক্তব্য রাখব। সংসদ টিভি ও বিটিভিতে লাইভ সম্প্রচার হবে।
হাসানুল হক ইনু এমপি
দেশ রুপান্তরের সম্পাদক অমিত হাবিবের মৃত্যুতে জাসদের শোক
জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি এবং সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি আজ ২৮ জুলাই ২০২২ রাতে এক শোক বার্তায়, দৈনিক দেশ রুপান্তরের সম্পাদক, প্রথিতযশা সাংবাদিক অমিত হাবিবের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেনএবং পরিবার ও তার সহকর্মীদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। তারা বলেন, অমিত হাবিব একজন সৃজনশীল সাংবাদিক ছিলেন, তারা লেখনীতে রাষ্ট্র-সমাজের অসংগতির কথা জোরালো ভাবে উঠে আসত । নির্ভিক সাংবাদিক অমিত হাবিবের কলম সত্য ও ন্যায়ের কথা বলত। তারা বলেন, বাংলাদেশের গণমাধ্যমের জগত অমিত হাবিবের অভাব সহজে পুরনীয় নয়।
২১ জুলাই মুক্তিযুদ্ধে মৃত্যুঞ্জয়ী সেক্টর কমান্ডার, সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থানের মহানায়ক, জাসদ নেতা, মহান বিপ্লবী শহীদ কর্নেল তাহের বীরউত্তমের ৪৬তম হত্যাবার্ষিকী: তাহের দিবসে জাসদের কর্মসূচিঃ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ আগামী ২১ জুলাই মুক্তিযুদ্ধে মৃত্যুঞ্জয়ী সেক্টর কমান্ডার, ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বরের ঐতিহাসিক সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থানের মহানায়ক, জাসদ নেতা, মহান বিপ্লবী শহীদ কর্নেল তাহের বীরউত্তমের ৪৬তম হত্যাবার্ষিকী: তাহের দিবস উপলক্ষ্যে ঢাকাসহ দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে।
কেন্দ্রীয় কর্মসূচি
২১ জুলাই ২০২২, বৃহস্পতিবার
ভোর ৬ টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ এবং কালো পতাকা উত্তোলন।
সকাল ১০ টায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে শহীদ কর্নেল তাহেরের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করে শ্রদ্ধা নিবেদন।
সকাল ১১ টায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে শহীদ কর্নেল তাহের মিলনায়তনে আলোচনাসভা। সভাপতি: দলীয় সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি। আলোচক: সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক কমরেড দিলীপ বড়ুয়া, জাসদ সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি, বাংলাদেশের ওর্য়ার্কাস পার্টির সাধারণ সম্পাদক কমরেড ফজলে হোসেন বাদশা এমপি , জাসদের কার্যকরী সভাপতি এড. রবিউল আলম, গণতন্ত্রী পার্টি সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন, সাবেক অতিরিক্ষ এটর্নীি জেনারেল এড. এম কে রহমান, জাসদের স্থায়ী কমিটির সদস্য ও শহীদ কর্নেল তাহেরের অনুজ অ. ড. আনোয়ার হোসেনসহ দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ এবং ১৪ দলের শরিক দলসমূহের নেতৃবৃন্দ ও জাতীয় পর্যায়ের বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবীগণ।
জেলা-উপজেলায় কর্মসূচি
তাহের দিবস উপলক্ষ্যে দলের জেলা ও উপজেলা কমিটিসমূহ কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অনুরূপ কর্মসূচি পালন করবে।
শহীদ কর্নেল তাহেরর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন
মুক্তিযুদ্ধে মৃত্যুঞ্জয়ী সেক্টর কমান্ডার, সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থানের মহানায়ক, জাসদ মহান বিপ্লবী শহীদ কর্নেল তাহের বীর উত্তমকে হত্যার ৪৬তম হত্যাবার্ষিকী: তাহের দিবসে আগামী ২১ জুলাই ২০২২, সকাল ১১ টায় জাসদ কেন্দ্রীয় কার্যকরী কমিটি, নেত্রকোনা জেলা কমিটি এবং ময়মনসিংহ জেলা ও মহানগর কমিটির পক্ষ থেকে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার কাজলা গ্রামে শহীদ কর্নেল তাহেরের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।
দলের সাধারণ সম্পাদকের আহবান
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি আগামী ২১ জুলাই ২০২২ মুক্তিযুদ্ধে মৃত্যুঞ্জয়ী সেক্টর কমান্ডার, সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থানের মহানায়ক, মহান বিপ্লবী শহীদ কর্নেল তাহের বীরউত্তমের ৪৬তম হত্যাবার্ষিকী: তাহের দিবস যথাযথ মর্যাদায় পালনের জন্য দলের সকল জেলা ও উপজেলা কমিটির প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
I am deeply shocked and saddened at the killing of Shinzo Abe, great friend of Bangladesh.
jugantor
প্রচ্ছদ
আজকের পত্রিকা
শেষ পাতা
সাক্ষাৎকার: হাসানুল হক ইনু
নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র করছে বিএনপি
শেখ মামুনুর রশীদ
০৯ জানুয়ারি ২০২২, ১২:০০ এএম | প্রিন্ট সংস্করণ
বিএনপি মূলত আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করতে চায়। এ কারণে তারা সংলাপ বর্জন করেছে। জাতীয় সরকার গঠনের কিংবা অস্বাভাবিক সরকারের দাবি জানিয়ে দেশকে কার্যত সাংবিধানিক ধারার বাইরে নিয়ে যাওয়ার অপচেষ্টা করছে। এসব কথা বলেন সাবেক তথ্যমন্ত্রী ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি। যুগান্তরের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, অতীত অভিজ্ঞতা বলে, শুধু ভালো নির্বাচন দেশে রাজনৈতিক শান্তি প্রতিষ্ঠার একমাত্র শর্ত না, আরও কিছু শর্ত আছে। এসব শর্ত পূরণ করা না গেলে ভোটের মাঠে যারা পরাজিত হবেন, তারা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করবে। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রও করবে।
এজন্য সবার আগে প্রয়োজন ৫০ বছর ধরে চলতে থাকা অমীমাংসিত বিষয়গুলোর মীমাংসা হওয়া। এটা না হওয়া পর্যন্ত দেশে এক হাজার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসবে না। দীর্ঘ আলাপচারিতায় নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের চলমান সংলাপ, বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের এই সংলাপ বর্জন, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, সরকারের সফলতা-ব্যর্থতা, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন ইনু। সম্প্রতি মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের ন্যাম ভবনে তার কার্যালয়ে সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন শেখ মামুনুর রশীদ। আলাপচারিতার চুম্বকীয় অংশ নিচে দেওয়া হলো-
রাষ্ট্রপতির সঙ্গে চলমান সংলাপ প্রসঙ্গে হাসানুল হক ইনু বলেন, ইসি গঠনের সাংবিধানিক ক্ষমতা একমাত্র মহামান্য রাষ্ট্রপতির। এজন্য তিনি বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে মতবিনিময় করার যে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, তা ওনার মহানুভবতা। আমি এজন্য তাকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। রাষ্ট্রপতি এটা না করলেও তার কোনো ক্ষতি ছিল না। বরং তার এই সংলাপে বসার উদ্যোগ ইসি গঠন প্রক্রিয়াকে অংশগ্রহণমূলক করতে সাহায্য করছে। বিএনপিসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের এই সংলাপে অংশ না নেওয়াটা সত্যিই দুঃখজনক। অতীতে রাষ্ট্রপতি কর্তৃক মনোনীত ইসি কখনো ভালো কাজ করেছে, কখনো একটু খারাপ কাজ করেছে। সুতরাং রাষ্ট্রপতির মনোনীত ইসি একেবারেই অর্থহীন-এই ভাবনাটা সঠিক মনে করি না।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, রাষ্ট্রের প্রতীক হচ্ছেন রাষ্ট্রপতি। এই প্রতিষ্ঠানকে সমুন্নত রাখা সবারই কর্তব্য। সংলাপ কখনো শতভাগ সফল হয় না। কখনো শতভাগ ব্যর্থও হয় না। কখনো এক বা দুইবার ফল আসেনি। তারপরও চেষ্টা করতে দোষ নেই। আমরা সংবিধানের নির্দেশনা অনুযায়ী ইসি গঠনে আইন প্রণয়নের কথা বলেছি। অতীতেও একাধিকবার এই দাবি জানিয়েছি। যেহেতু আইনটি হয়নি বা সরকার এই আইনটি করার উদ্যোগ নেয়নি, এর জন্য আমরা সরকারের সমালোচনা করতে পারি। কিন্তু রাষ্ট্রপতির আহ্বানকে উপেক্ষা করতে পারি না। এটা করা ঠিকও হবে না।
হাসানুল হক ইনু বলেন, ধরেন ইসি খুব ভালো হলো। যারা নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠন করবেন, তারা ইসিকে সাধুবাদ জানাবেন। কিন্তু যারা পরাজিত হবেন, তারা ফলাফল মানবেন কি না, এর কোনো নিশ্চয়তা নেই। না আওয়ামী লীগ, না বিএনপি, না অন্য কোনো রাজনৈতিক দল।
তিনি আরও বলেন, অতীত অভিজ্ঞতা কী বলে, ইসির অধীনে নব্বইয়ের পর নির্বাচনে অংশ নিয়ে যারা পরাজিত হয়েছেন, তারা ফলাফল মেনে নেননি। একানব্বইয়ের পর চারটি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন হয়েছে। চারটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ইসি গঠন করেছে। কিন্তু প্রতিবারই পরাজিতরা ইসির ভূমিকাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। নির্বাচন নাকচ করেছে। এমনকি ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে। এ থেকে একটি বিষয় পরিষ্কার হয়েছে যে নির্বাচনের পর কখনো বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হয়নি। প্রতিবারই দেখা গেছে, পরাজিতরা সরকার উৎখাতে এবং সংসদকে অকার্যকর করার জন্য আন্দোলন-সংগ্রাম করেছে, হইচই করেছে।
এই অচলায়তন থেকে উত্তরণের পথ কী-এমন প্রশ্নের জবাবে প্রবীণ এই বামপন্থি নেতা বলেন, দুঃখজনক হলেও সত্যি স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর হয়ে গেলেও ঐতিহাসিক কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এখন পর্যন্ত ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা হয়নি। যেমন: স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ, জাতির পিতা, সংবিধানের চার মূলনীতি প্রভৃতি। এর ফলে কেউ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করে, কেউ যুদ্ধাপরাধীদের লালন করে। কেউ বঙ্গবন্ধুকে জাতির পিতা বলে। আরেক পক্ষ ইতিহাস থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুছে ফেলার চেষ্টা, বঙ্গবন্ধুকে নির্বাসনে পাঠায়। এক পক্ষ সংবিধানের চার মূলনীতিকে সামনে রেখে পথ চলে, আরেক পক্ষ সামরিক শাসনকে মহিমান্বিত করে। এসব জাতীয় ইস্যুতে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা না হলে, বছরের পর বছর চলতে থাকা এসব অমীমাংসিত বিষয়গুলোর মীমাংসা না হলে, দেশে এক হাজার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলেও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা আসবে না। দেশে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারবেন না। আমি একটা বিষয় পরিষ্কার করে বলতে চাই, সেটি হচ্ছে-জাতীয় ও মৌলিক বিষয়গুলোয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করা গেলেই কেবল রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা অর্জন করা সম্ভব হবে।
হাসানুল হক ইনু বলেন, আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত হয়েছে। অনেকেই এ নিয়ে বিতর্ক শুরু করেছেন। প্রশ্ন হচ্ছে-আগামী নির্বাচনের পর যে সরকার গঠিত হবে, সেই সরকার যদি চিহ্নিত চোরদের কিংবা দণ্ডিত অপরাধীদের বিচার করে; অন্যদিকে আরেক পক্ষ যদি সরকারে এসে রাজাকারদের ক্ষমতার ভাগীদার বানায়, বঙ্গবন্ধুকে উড়িয়ে দেয়, বঙ্গবন্ধুকে নির্বাসনে পাঠায়, তাহলে সংকটের সমাধান হবে না বরং বাড়বে।
মাঠের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে যাবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। রাষ্ট্রপতির সংলাপও তারা ইতোমধ্যে বর্জন করেছে। কী হতে যাচ্ছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে, কী মনে হয় আপনার-এমন প্রশ্নে জাসদ সভাপতি বলেন, যারা সরকারের পদত্যাগ চায়, জাতীয় সরকার চায়, কিংবা অসাংবিধানিক সরকার চায়, যারা সংলাপ বর্জন করছে, তারা আসলে আগামী দিনে একটি ভালো ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের জন্য লড়াই করছে না। তাদের মূল লক্ষ্য স্বাধীনতাবিরোধীদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দিয়ে, তাদের সঙ্গে নিয়ে যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করা, পাকিস্তান পন্থাকে অনুসরণ করা, সাম্প্রদায়িক চর্চাকে অনুকরণ করা, মীমাংসিত বিষয়গুলোকে আবারও নতুন করে অমীমাংসিত করে তোলা। সর্বোপরি তাদের নেতা-নেত্রীদের অপরাধ থেকে রক্ষা করা।
বিএনপির বাইরে অনেক বাম প্রগতিশীল ঘরানার রাজনৈতিক দলও রাষ্ট্রপতির সংলাপে অংশ নেয়নি। এটাকে কী বলবেন-জবাবে হাসানুল হক ইনু বলেন, কেউ বুঝে আবার কেউ না বুঝে সংলাপ বর্জন করেছেন। সবার লক্ষ্য এক না হলেও না বুঝে কেউ কেউ হয়তো পাকিস্তান পন্থার ফাঁদে পা দিয়েছেন। এতে মূলত স্বাধীনতার সপক্ষের শক্তিই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। দিনশেষে লাভবান হবে একাত্তরের পরাজিত শক্তিরাই।
বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করে বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। এবার কী করবে তারা, শেষ মুহূর্তে কি দলটি আগামী নির্বাচনে অংশ নেবে, কী মনে হয় আপনার-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, নির্বাচন তাদের লক্ষ্য না। নির্বাচন বানচালই তাদের লক্ষ্য। অস্বাভাবিক সরকার তাদের লক্ষ্য। এজন্যই শুরুতে রাষ্ট্রপতির সংলাপ প্রশ্নবিদ্ধ করার চেষ্টা করেছে বিএনপি। তাদের ভাষায় সংলাপ আইওয়াশ মাত্র, এটা বিএনপির কাল্পনিক ভাবনা। সংবিধানে আইন প্রণয়নের কথা বলা আছে, কিন্তু দুঃখজনক হলেও আইনটি হয়নি। এ অবস্থায় সাংবিধানিক ক্ষমতা বলেই রাষ্ট্রপতি ইসি গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন। এজন্য আমাদের সবার রাষ্ট্রপতির ওপরই আস্থা রাখতে হবে। যারা রাষ্ট্রপতির ওপর আস্থা রাখছেন না, তারা হয় বুঝে, না হয় না বুঝে নির্বাচন বানচালের চক্রের পথে পা দিচ্ছেন।
অভিযোগ রয়েছে, দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনে প্রশাসন পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করে। এ কারণেই হয়তো রাজনৈতিক দলগুলো নির্দলীয় সরকার, কিংবা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। এই চাওয়াটা কি অমূলক, কী মনে হয়-জবাবে হাসানুল হক ইনু বলেন, সব নির্বাচনেই প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ছিল। হয়তো মাত্রার হেরফের ছিল। রাতের ভোট বন্ধে প্রশাসনের নিরপেক্ষ অবস্থান থাকতে হবে। আমরা মনে করি, ভোটের কারচুপিতে প্রশাসনের যুক্ত হওয়া উচিত না। এটি একটি গুরুতর অপরাধ। আবার এটাও ঠিক যে সব রাজনৈতিক পক্ষকে নির্বাচনের মাঠে থাকতে হবে। সব পক্ষ ভোটের মাঠে সক্রিয়ভাবে থাকলে প্রশাসন সেভাবে পক্ষপাতিত্ব করতে পারে না। তাদের মনে ভয় কাজ করে।
জাসদ সভাপতি বলেন, এতকিছু সত্ত্বেও আমি মনে করি, যা করার সংবিধানের ভেতরে থেকেই করতে হবে। এর বাইরে গিয়ে কিছু করা যাবে না। সংবিধানের বাইরে গিয়ে চক্রান্তের রাজনীতির সূত্রপাত করলে দেশে আবার নতুন করে অস্থিতিশীলতারই জন্ম দেবে।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অনেকেই সংসদ-সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এবার দেখা যাচ্ছে স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও একই ধারাবাহিকতা। গণতন্ত্রকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য নিশ্চয়ই এটি একটি নেতিবাচক দিক, কী বলেন আপনি-এমন প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, সব দল নির্বাচনে অংশ নিলে নিশ্চয়ই এমন ঘটনা ঘটত না। এ কথা যেমন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বেলায় সত্য, তেমনই ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের জন্যও প্রযোজ্য। আমি আগেই বলেছি, সব দল ও তাদের প্রার্থী ভোটের মাঠে থাকলে প্রশাসন বাধ্য হয়ে নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করত। তেমনই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হওয়ারও সম্ভাবনা থাকে না।
আওয়ামী লীগ একটানা তেরো বছর রাষ্ট্রক্ষমতায়। প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসাব মিলিয়েছেন কখনো-জবাবে তিনি বলেন, ২০০৯ সালের পর থেকে বিএনপির টার্গেট হচ্ছে দেশে একটি অস্বাভাবিক সরকার গঠন করা। পঁচাত্তর-পরবর্তী জিয়া-এরশাদের শাসনামলের ভাবনা মাথায় রেখে তারা এখনো পাকিস্তানের ট্রেনেই আছে। এই ট্রেন থেকে আজও নামতে পারেনি। এ কারণেই দলটি নতুনভাবে আবার সক্রিয় হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের কার্যক্রমের বিরোধিতা করছে। এখনো তারা স্বাধীনতাবিরোধী, পরাজিত শক্তি যুদ্ধাপরাধী, জামায়াতের পার্টনারশিপ ছাড়তে পারেনি। এখনো তারা সাংবিধানিক সরকার উৎখাত করে অসাংবিধানিক সরকার চায়। সংবিধানের বাইরে দেশকে ঠেলে দিতে চায়।
হাসানুল হক ইনু বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গত তেরো বছর বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় পথ চলছে। সংবিধানের চার মূলনীতি অনুসরণ করে পথ চলছে। এই তেরো বছরে শেখ হাসিনাকে পাকিস্তানপন্থাকে মোকাবিলা করতে হয়েছে। স্বাধীনতাবিরোধী জামায়াত, জঙ্গিবাদ মোকাবিলা করতে হয়েছে, সন্ত্রাসী হামলা মোকাবিলা করতে হয়েছে। বাংলাদেশ ও পাকিস্তানপন্থার যুদ্ধাবস্থার মধ্যে দেশকে এগিয়ে নিতে হয়েছে শেখ হাসিনাকে। গত তেরো বছরে এটাই আমাদের বড় অর্জন, বড় প্রাপ্তি।
কিন্তু এই সময়ের মধ্যে দুর্নীতি, অর্থ পাচার, সর্বত্র দলীয়করণ, আমলানির্ভরতার অভিযোগটাকে কীভাবে দেখবেন-জবাবে তিনি বলেন, এটা শাসন-প্রশাসনের ব্যর্থতা। সুশাসনের ঘাটতি। দুর্নীতিবাজদের সিন্ডিকেট এবং দলবাজদের গুন্ডাবাজি। এই দুটি বিষয় আপদ হিসাবে দেখা দিলেও শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে শক্তভাবে আছে। দুর্নীতিবাজদের সিন্ডিকেট এবং দলভাজদের গুন্ডাবাজির আপদ-আগামী দিনে এই চ্যালেঞ্জ শেখ হাসিনার সরকার কীভাবে মোকাবিলা করবে, তার ওপর সুশাসনের মাত্রা নির্ধারিত হবে।
জাসদ ১৪ দলীয় জোটে আছে। জোট সরকারের মন্ত্রী ছিলেন। এখন সংসদীয় কমিটির সভাপতি। জোটের ভেতরে কেন আছেন-এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, ২০০৮ সাল থেকে দেশের রাজনীতিতে ঘটে যাওয়া ঘটনাবলির যদি ধারাবাহিকতা দেখি তাহলে বলব, ওই সময়ে যে কারণে ১৪ দলীয় জোট গঠিত হয়েছিল, সেই কারণটি এখনো বিদ্যমান। যে বিরুদ্ধ রাজনৈতিক সে াতের বিপরীতে ১৪ দলের যাত্রা, সেই বিরুদ্ধ রাজনৈতিক সে াতে দেশ এখনো জর্জরিত। আগের দুটি নির্বাচন বিএনপি বানচাল করতে চেয়েছে। একটিতে অংশ নেয়নি। আরেকটিতে শেষ মুহূর্তে এসে অংশ নেয়। এবারও তাদের প্রধান লক্ষ্য আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বানচাল করা। এর বিপরীতে ১৪ দলকে রাজনৈতিক কারণেই সক্রিয় রাখতে হবে। জোটকেও অটুট রাখতে হবে। আর জোটে থাকলে সেখানে চাওয়া-পাওয়ার স্বপ্ন, আশা-বেদনা-সংকট থাকবেই। এসব থাকা সত্ত্বেও আমি মনে করি, ১৪ দলের ঢালটাকে আরও জোরদার করা প্রয়োজন।
Jugantor | Most Popular Bangla News | Entertainment | Breaking News Jugantor is the Most Popular Bangla Newspaper in Bangladesh. It covers Breaking News, Politics, Economies, National, International, Live Sports, Entertainment, Lifestyle, Tech, Education, Photo, Video, BD News & More. Stay with us for get more Latest News.
বাংলাদেশ-ভারত কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি: মৈত্রী দিবস উপলক্ষ্যে আজ ৬ ডিসেম্বর ২০২১ বিকালে দিল্লীতে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব ওয়ার্ল্ড এফেয়ার্স আয়োজিত আলোচনা দেয়া আমার বক্তব্যের ভিডিও।
হাসানুল হক ইনু
সভাপতি, জাসদ
আজ ২২মে ২০২১ শনিবরার রাত ৮টায় ekattor.tv-তে একাত্তরমঞ্চ লাইভ অনুষ্ঠানে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে কথা বলব। দেখার আমন্ত্রণ থাকলো।
হাসানুল হক ইনু এমপি
সভাপতি, জাসদ
২৩ এপ্রিল ২০২১
হেফাজতের আমির বাবুনগরির লকডাউনের সাথে মিলিয়ে জেলে যাবার বক্তব্য অত্যন্ত নিম্মমানের চতুরতা, ধূর্ততা, চালাকি, ধরিবাজি, চটকদারিতা, অসততা, মিথ্যাচার, ভন্ডামি ও দ্বৈততায় পরিপূর্ণ: জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি আজ ২৩ এপ্রিল ২০২১ এক বিবৃতিতে বলেছেন, হেফাজতের আমির বাবুনগরির 'লকডাউন তুলে নেয়ার বিনিময়ে সবাইকে সাথে নিয়ে জেলে যাবো' বক্তব্য অত্যন্ত নিম্মমানের চতুরতা, ধূর্ততা, ধরিবাজি, চটকদারিতা, অসততা, মিথ্যাচার,ভন্ডামি আর দ্বৈততার বহিঃপ্রকাশ। তারা বলেন, বাবুনগরি লকডাউনকে এমনভাবে চিন্থিত করেছে যে, লকডাউন বাংলাদেশ সরকারের আবিস্কার। সরকার লকডাউন দিয়েছে দেশের সাধারণ মানুষকে কষ্ট দিতে, হেফাজতি নেতাদের গ্রেফতার করতে আর মুসলমানদের ইবাদত বন্ধ করতে। লকডাউন নিয়ে বাবুনগরি বক্তব্য জাজ্বল্যমান মিথ্যাচার ছাড়া আর কিছুই নয়। লকডাউন বাংলাদেশ সরকারের আবিস্কার না। শুধু বাংলাদেশেই লকডাউন দেয়া হয়নি। ভয়াবহ বৈশ্বিক মহামারি করোনার সংক্রমণ বিস্তার রোধ করে মানুষের জীবন বাঁচাতে সৌদি আরব, মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার সকল মুসলিমদেশ, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, পাকিস্তানসহ সারা দুনিয়ার দেশে দেশে দফায় দফায় লকডাউন হয়েছে। লকডাউনে মসজিদুল হারামসহ মুসলিম দেশগুলিতে কখনও মসজিদ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। কখনও পরিস্থিতি একটু নিয়ন্ত্রণে থাকলে বৈজ্ঞানিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে খোলা রাখা হয়েছে। লকডাউন মুসলমানগণ ইবাদত-বন্দেগি, নামাজপড়া, রোজা রাখা, কোরান শরীফপড়া বন্ধ করেননি। লকডাউন ও স্বাস্থ্যবিধি মেনেই ঘরেই নিরবচ্ছিন্নভাবে ইবাদত করছেন। তারা বলেন, সুনির্দিষ্ট ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত আসামীকে গ্রেফতার করার সাথে লকডাউনকে মিলিয়ে দেয়াও বাবুনাগরির নিকৃষ্ট চতুরতা, চালাকিপনা, ধূর্ততা, ধরিবাজি মার্কা কথা। তারা বলেন, লকডাউনে কি ফৌজদারি মামলায় সুনির্দিষ্টভাবে অভিযুক্ত আসামি গ্রেফতারে রাষ্ট্রীয় আইনে এমনকি ইসলামে কোনো বাঁধা আছে? তারা বলেন, বাবুনগরির দেশের সাধারণ মানুষের দুঃখ-কষ্ট নিয়ে কথা বলা মায়াকান্না ও ভন্ডামি ছাড়া কিছুই নয়। বাবুনগরি, মামুনুলরা মানুষের ধর্মবিশ্বাসকে পূঁজি করে মানুষের সাদকা-যাকাত-দানের টাকায় ব্যক্তিগত ভোগ-বিলাস-আমোদ-প্রমোদেই জীবন কাটায় তার প্রমাণ মানুষের সামনে প্রকাশিত হয়ে গিয়েছে। তারা বলেন, দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল যখন লকডাউনে কর্মহীন আয়হীন নিরুপায় অসহায় মানুষের জন্য সরকারের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা, নগদ সহায়তা প্রদানের পদক্ষেপ আরও সম্প্রসারণ ও ত্রুটিমুক্ত করার দাবি করে আসছে তখন হেফাজত মুখ বন্ধ করে রাখে। হেফাজত লকডাউনে কষ্টেপরা মানুষদের জন্য সাদকা-যাকাত দেয়ার আহবানও জানায়নি। হেফাজত ব্যস্ত আছে বিএনপি-জামাতের ভাড়াটে খেলোয়ার হিসাবে রাজনৈতিক ক্ষমতার খেলায় আর সরকারের সাথে দেনদরবার করে নিজেদের অপরাধ আড়াল করায়। তারা বলেন, বাবুনগরির লম্বা লম্বা চতুর, ধূর্ত, চালাকি, ধরিবাজি, চটিকদারি কথা বাদ দিয়ে, আত্মগোপনে না থেকে সুনির্দিষ্ট ফৌজিদারি মামলায় অভিযুক্ত হেফাজতি তান্ডবিরা আদালত বা পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করে আইনের প্রতি তাদের শ্রদ্ধার প্রমাণ দিক। তারা বলেন, একইমুখে লকডাউন তুলে নেয়ার বিনিময়ে নিজ থেকে জেলে যাবার কথা বলে সেইমুখেই সুনির্দিষ্ট ফৌজিদারি মামলায় অভিযুক্ত হয়ে গ্রেফতারকৃত আসামিদের মামলা প্রত্যাহার ও মুক্তির দাবি করে বাবুনগরি নিজেই প্রমাণ দিয়েছে তার নিকৃষ্টতা দ্বৈততা ও ভন্ডামির। তারা বলেন, কয়লা ধুইলে যেমন ময়লা যায় না, বাবুনগরির সাম্প্রদায়িক ও অন্য ধর্মের মানুষদের প্রতি বিদ্বেষী মনের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে মুসলিম ভিন্ন অন্য ধর্মের অফিসারদের নিয়ে চরম সাম্প্রদায়িক, বিদ্বষী কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। জাসদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, হেফাজতসহ রাজনৈতিক মোল্লাদের চতুরতা, ধূর্ততা, চালাকি, ধরিবাজি, চটিকদারিতা, অসততা, ভন্ডামি, দ্বৈততা ও মিথ্যাচারে পরিপূর্ণ রাষ্ট্রদ্রোহীর বিরুদ্ধে সকল দেশপ্রেমিক, গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল, মানবতাবাদী, শোভন রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তি, ব্যক্তি ও মহলকে সোচ্চার হবার আহবান জানান।
২১এপ্রিল ২০২১
হেফাজত নেতাদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতা ও সরকার উৎখাতের সুনির্দিষ্ট অভিযোগে মামলা দায়ের, বিচার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি: জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি আজ ২১ এপ্রিল ২০২১বুধবার এক বিবৃতিতে তান্ডবি হেফাজতি রাজনৈতিক মোল্লাদের বিরুদ্ধে জ্বালাও-পোড়াও-ভাংচুর-লুটপাট-আগুণ সন্ত্রাস-রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তিগত সম্পদ ক্ষতি ও ধ্বংস -সহিংসতা-নাশকতা-অন্তর্ঘাতের অভিযোগের দায়েরকৃত মামলার সাথে বাংলাদেশ রাষ্ট্র-সংবিধানকে অস্বীকার এবং বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুর্যাল ভাংচুরের সুনির্দিষ্ট অপরাধে রাষ্ট্রদোহীতা এবং সরকার উৎখাতের অপচেষ্টার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে সুনির্দিষ্ট মামলা দায়ের, দ্রæত বিচার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দাবি করেছেন। বাংলাদেশ, বাংলাদেশ রাষ্ট্র, সংবিধান ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অস্বীকারকারী রাষ্ট্রদ্রোহীদের ১৯৭১ সালের যুদ্ধাপরাধীদের মতই কঠিন শাস্তি প্রাপ্য। জাসদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি, হেফাজতসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের 'সরকার গণহারে আলেম ওলামাদের গ্রেফতার করছে' বলে প্রদত্ত বক্তব্যকে সম্পূর্ণ মিথ্যাচার দাবি করে বলেছেন, বিএনপি, হেফাজত ও তাদের রাজনৈতিক পার্টনাররা দেখাতে পারবে দেশের কোনো মসজিদের একজন খতিব, ইমাম, মোয়াজ্জিন, খাদেমকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দেশের সকল মসজিদেই সরকারী নির্দেশণা ও স্বাস্থ্য্যবিধি মেনে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ, জুম্মার নামাজ, তারাবির নামাজ আদায় হচ্ছে। হেফাজতি তান্ডবি রাজনৈতিক মোল্লারা ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করে, ধর্ম নিয়ে ব্যবসায় করে এরা মসজিদে ইমামতিও করে না, মানুষকে ধর্মের শিক্ষাও দেয় না। এরা ধর্মের নামে মাদ্রাসার নিরীহ ছাত্রদের নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ ও ব্যক্তিগত ভোগে ব্যবহার করে। তারা বলেন, যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে যেমন ঐতিহাসিক গণআন্দোলন পরিচালিত হয়েছিল ঠিক তেমনই রাষ্ট্রদ্রোহী হেফাজতি তান্ডবি রাজনৈতিক মোল্লাদের বিচারের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ গণআন্দোলন গড়ে তোলার জন্য দেশের সকল দেশপ্রেমিক, গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল, মানবতাবাদী রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তির প্রতি আহবান জানান।
আজ ২০ এপ্রিল ২০২১ রাত ১২টায় ৭১টিভির
৭১ জার্নালে কথা বলব। সময় পেলে দেখার আমন্ত্রণ রইলো।
হাসানুল হক ইনু
সভাপতি, জাসদ
সহিংসতা-নাশকতা-জ্বালাও-পোড়াও-ধ্বংসাত্মক তান্ডবের সুনির্দিষ্ট ফৌজদারি অভিযোগে হেফাজতি রাজনৈতিক মোল্লাদের গ্রেফতার মানে আলেম-ওলেমা গ্রেফতার নয়: জাসদ
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি আজ ২০ এপ্রিল ২০২১ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে বিএনপি, হেফাজতসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের 'সরকার গণহারে আলেম-ওলেমাদের গ্রেফতার করছে' বক্তব্যের প্রতিবাদ করে বলেছেন, সহিংসতা-নাশকতা-জ্বালাও-পোড়াও-ধ্বংসাত্মক তান্ডবের সুনির্দিষ্ট ফৌজিদারি অভিযোগে হেফাজতি রাজনৈতিক মোল্লাদের গ্রেফতার মানে গণহারে আলেম-ওলেমা গ্রেফতার নয়। তারা বলেন, সমগ্র দেশবাসীর চোখের সামনে বায়তুল মোকাররম মসজিদ, হাটহাজারি মাদ্রাসাসহ কয়েকটি মাদ্রাসা থেকে এবং ফেসবুকে লাইভ ও ইউটিউব ব্যবহার করে এই হেফাজতি রাজনৈতিক মোল্লারা প্রকাশ্যে জ্বালাও-পোড়াও-সহিংসতা-নাশকতার উস্কানি ও হকুম দিয়েছে। ব্রাক্ষ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে হেফাজতি মোল্লারা প্রকাশ্যে বঙ্গবন্ধুর মুর্যাল, এসপির কার্যালয়, পুলিশের থানাসহ সরকারী অফিস-আদালত-স্থাপনা, ঐতিহ্যবাহী সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠান, রেলস্টেশন, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ঘরবাড়ি, এমবুলেন্সসহ সরকারি-বেসরকারি যানবাহনে হামলা, ভাংচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করেছে। জাসদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, আইন সবার জন্য সমান। সুনির্দিষ্ট ফৌজদারি অপরাধের সাথে যুক্ত থাকার হাতে নাতে প্রমাণ থাকার পরও অপরাধীকে গ্রেফতার করা যাবে না কেন? কওমি মাদ্রাসার পরিচালক, প্রিন্সিপাল, শিক্ষক নামধারী হেফাজতি রাজনৈতিক মোল্লারা কি দেশের সংবিধান-আইন-আদালতের উর্ধে? তারা বলেন, একজন কোরানে হাফেজ ফৌজদারি অপরাধ করলে কি তাকে গ্রেফতার করা যাবে না? তারা বলেন, হেফাজতি মোল্লারা রাজনৈতিক মোল্লা। এরা আলেম, ওলামা, ইসলামি চিন্তাবিদ, ইসলামি দার্শনিক, ইসলামি পন্ডিত, ধর্মীয় নেতা না, এমনকি এরা ধর্মপ্রচারকও না। এরা রাজনীতি করে। এরা রাজনৈতিক মোল্লা। জাসদ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বলেন, হেফাজতি রাজনৈতিক মোল্লাদের গ্রেফতারের বিরোধীতা করে বিএনপি আবারও প্রমাণ করলো বিএনপিই সংশোধন হয়নি, বদলায়নি। বিএনপি সহিংসতা-নাশকতা-অন্তর্ঘাত-আগুন সন্ত্রাসের রাজনৈতিক পথেই আছে এবং হেফাজত বিএনপির ভাড়াটে রাজনৈতিক খেলোয়াড়। বিএনপি ও হেফাজত আগুনসন্ত্রাস-সহিংসতা-নাশকতা-অন্তর্ঘাতের মাধ্যমে অশান্তি-অস্থিতিশীলতা-অস্বাভাবিক পরিস্থিতি তৈরি সরকার উৎখাতের দিবাস্বপ্ন দেখছে। তারা বলেন, হেফাজতি রাজনৈতিক মোল্লারা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করে যতই নাকে খত দিক, দুঃখ প্রকাশ করুক, মাফ চাক না কেন এদের ছাড় দেয়া হবে সরকার ও দেশের জন্য আত্মঘাতি। কারণ রাজনৈতিক মোল্লারা রেজিস্টার্ড বেঈমান ও বিশ্বাসঘতক। এরা পাকিস্তানের দালালি আর বাংলাদেশের বিরোধীতার রাজনীতি কোনো দিনই ছাড়বে না। বার বার প্রমাণ হয়েছে এরা সুযোগ পেলেই বাংলাদেশ রাষ্ট্র-সংবিধান-বঙ্গবন্ধু-জাতীয় পতাকা-জাতীয় সঙ্গীত-মুক্তিযুদ্ধ-স্বাধীনতার বিরোধীতা করবে ১৯৭১ সালের মতই। জাসদ নেতৃদ্বয় বলেন, শুধু সরকার ও প্রশাসনের উপর নির্ভর করে না থেকে সকল দেশপ্রেমিক গণতান্ত্রিক অসাম্প্রদায়িক প্রগতিশীল মানবতাবাদী রাজনৈতিক ও সামাজিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধভাবে রাজনৈতিক মোল্লা এবং এদের রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষক ও পার্টনারদের বিরুদ্ধে মাঠে রাজনৈতিক শক্তি সমাবেশ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
বাঁশখালীতে শ্রমিক হত্যার নিন্দা
নিহতদের উপযুক্ত ক্ষতিপুরন ও আহতদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদানের দাবি: জাসদের
জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি আজ ১৭ এপ্রিল ২০২১ শনিবার এক বিবৃতিতে চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে নির্মানাধীন কয়লা বিদ্যুত কেন্দ্রে বকেয়া বেতনের দাবিতে আন্দোলনরত শ্রমিকদের ওপর পুলিশের নির্বিচার গুলিবর্ষণে ৫জন শ্রমিক নিহত এবং অনেক শ্রমিক আহত হওয়ার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। জাসদের নেতৃদ্বয় নিহত শ্রমিকদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ, আহতদের সুচিকিৎসা, শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ করার দাবি জানান। তারা অবিলম্বে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করে নিরীহ শ্রমিক ও গ্রামবাসীদের উপর গুলিবর্ষণ ও নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি প্রদানের দাবি জানান।
আজ ১২ এপ্রিল ২০২১ রাত ৯টায় বিটিভি ওর্য়াল্ডে(BTV World) বিটিভি সংলাপে(BTV SONGLAP) কথা বলব।
সময় করে দেখার আমন্ত্রণ।
হাসানুল হক ইনু এমপি
হেফাজতের তান্ডবের প্রতিবাদে আগামীকাল ২৮ মার্চ ২০২১ রবিবার সকাল ১১-৩০টায় জিপিওর সামনে জাসদ চত্ত্বরে জাসদের প্রতিবাদ সমাবেশ
রোডম্যাপ অনুযায়ী ভ্যাক্সিন প্রদান নিশ্চিত করবে সরকার
বহু উন্নত শক্তিশালী দেশ ও রাষ্ট্র যখন করোনার ভ্যাক্সিন সংগ্রহ ও ভ্যাক্সিন প্রদান নিয়ে হিমশিম খাচ্ছে তখন বাংলাদেশ বিভিন্ন উৎস থেকে সাফল্যের সাথে ভ্যাক্সিন সংগ্রহ করে চলেছে। তারপরও কিছু রাজনৈতিক নেতা, জ্ঞানীগুণী বুদ্ধিজীবী ও ফতোয়াবাজরা কে আগে ভ্যাক্সিন গ্রহণ করবে, ভ্যাক্সিন গ্রহণের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে মনগড়া গল্প, ভ্যাক্সিনের বিরুদ্ধে ধর্মের নামে মনগড়া ফতোয়া দিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি, মিথ্যাচার করা, বালখিল্য কথাবার্তা খুবই দুঃখজনক। বিজ্ঞানি, গবেষক, বিশেষজ্ঞ ও চিকিৎসকগণের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থকর্মীসহ করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধের সম্মুখ সারির যোদ্ধা, করোনার সবচাইতে বেশি ঝুঁকিতে থাকা নাগরিকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ভ্যাক্সিন নিশ্চিত করাই সরকারের দায়িত্ব। আমি আশা করি, সরকার ঘোষিত রোডম্যাপ অনুযায়ী ভ্যাক্সিন প্রদান নিশ্চিত করবে।
কর্নেল তাহেরের নামে সরকারি স্থাপনার নামকরণ করুন
শহীদ কর্নেল আবু তাহের বীরউত্তমের ৮২তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি'র বিবৃতি
জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার এমপি আজ এক বিবৃতিতে ১৪ নভেম্বর ২০২০ শহীদ কর্নেল আবু তাহের বীরউত্তমের ৮২ তম জন্মদিন উপলক্ষ্যে তাঁর পরিবার-পরিজন-সহযোদ্ধা-সুহৃদ ও দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, ১৯৩৮ সালের ১৪ নভেম্বর জন্ম গ্রহণ করেন আবু তাহের। ১৯৫২-র ভাষা আন্দোলনের কিশোরকর্মী আবু তাহের যৌবনে যোগ দেন সশস্ত্রবাহিনীতে বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য সামরিক ব্যুৎপত্তি অর্জন করতে; তাঁর এ পরিকল্পনা সফল হয়; মুক্তিযুদ্ধে তিনি ১১ নম্বর সেক্টরকে নেতৃত্ব দেন। দুঃখজনকভাবে মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে ঢাকা দখলের মরীয়া যুদ্ধে নিজের জন্মদিনে কামালপুর সমুখসমরে মাইনের আঘাতে তাঁর ডান পা দেহবিচ্ছিন্ন হয়; কিন্তু তাঁর যুদ্ধপরিকল্পনা ও যুদ্ধকৌশলে ১১ নম্বর সেক্টর ৭ ডিসেম্বরের মধ্যে হানাদার মুক্ত হয় এবং ১৪ ডিসেম্বর ১১ নম্বর সেক্টরের যোদ্ধাগণ মিত্রবাহিনীর সাথে প্রথম ঢাকায় প্রবেশ করেন এবং কর্নেল তাহেরের বড় ভাই আবু ইউসুফ খান বিজয়ের প্রতীক হিসেবে জেনারেল নিয়াজীর স্টাফ কারের পতাকাটি তুলে নেন। মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে তিনি জাসদে যোগদান করেন এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সহসভাপতি মনোনীত হন; পরে বিপ্লবী গণবাহিনীর প্রধানের দায়িত্ব পান। হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্রের পাকিস্তানপন্থার রাজনীতির অবসানে তাঁর নেতৃত্ব, বিপ্লবী সৈনিক সংস্থার উদ্যোগে, বিপ্লবী গণবাহিনীর সহায়তায় ও জাসদের সমর্থনে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর ঐতিহাসিক মহান সিপাহী-জনতার অভ্যুত্থান সংঘটিত হয়। পাকিস্তানপন্থার প্রতিভূ জিয়া সে অভ্যুত্থান বানচাল করে দেন এবং পরে গোপন বিচার প্রহসনের মাধ্যমে কর্নেল আবু তাহের বীরউত্তমকে ১৯৭৬ সালের ২১ জুলাই ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করেন ও জাসদ নেতাদের বিভিন্ন মেয়াদী কারাদণ্ড দেন।
কর্নেল তাহেরের আত্মদানের ৩৫ বছর পর তাঁর পরিবার ও জাসদ নেতৃবৃন্দের বেশ কয়েকটি রিট আবেদনের রায়ে ২০১১ সালের ১১ মার্চ মহামান্য আদালত— [১] কর্নেল তাহেরের বিচারকে অবৈধ, [২] গোপন সামরিক আদালতের সে বিচারকে লোক দেখানো প্রহসন, [৩] তাহেরের ফাঁসিকে ঠান্ডা মাথার পরিকল্পিত হত্যা, [৪] জিয়াকে তাহের হত্যার প্রধান পরিকল্পনাকারী, [৫] জিয়াকে ঠান্ডা মাথার খুনী, [৬] কর্নেল তাহেরকে মহান দেশপ্রেমিক, [৭] তাহেরের সহঅভিযুক্তগণ মহান দেশপ্রেমিক ও [৮] কর্নেল তাহেরকে একজন শহীদ ঘোষণা করার পাশাপাশি, [৯] সংশ্লিষ্ট ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ প্রদানের, [১০] কর্নেল তাহেরের নামে ঢাকায় একটি সরকারি স্থাপনা বা সড়কের নামকরন করার, ও [১১] সর্বোপরি তাহের হত্যা প্রক্রিয়ায় জড়িত জীবিত দোষীদের আইনের আওতায় আনার নির্দেশ প্রদান করেন।
জনাব ইনু ও জনাব শিরীন কর্নেল আবু তাহেরের ৮২তম জন্মদিনে আদালতের রায় বাস্তবায়নের জন্য, বিশেষত কর্নেল তাহেরের নামে ঢাকায় একটি সরকারি স্থাপনা বা সড়কের নামকরন করার জন্য, সরকার ও সংশ্লিষ্ট সকল মহলের কাছে অনুরোধ জানান।
জাতীয় উল্লম্ফনের জন্য চাই সুশাসন ও আইনের শাসন | বাংলাদেশ প্রতিদিন পুঁজিবাদ ও একচেটিয়া পুঁজিবাদের মুনাফা-লালসার উন্নয়ন-কৌশলের ফলে পৃথিবীর প্রাকৃতিক প্রতিবেশ-ব্যবস্থা মহাবিপর্য.....
সম্পূর্ণ ভিডিও
চ্যানেল আই তৃতীয় মাত্রা’র 6269 নম্বর পর্বে ০১ অক্টোবর ২০২০ রাত ১টায় আলোচক হিসেবে কথা বলেছি। সাথে ছিলেন সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ এবং সাবেক তথ্যমন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা।
আজ ৩০সেপ্টেম্বর ২০২০ দিবাগত রাত ১টায় চ্যানেল-আই'র 'তৃতীয় মাত্রা'য় কথা বলব। দেখার আমন্ত্রণ।
আজ ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ সোমবার রাত ১১টায় Channel 24-এর মুক্তবাক অনুষ্ঠানে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু কথা বলব। দেখার অনুরোধ থাকলো।
গত ১২সেপ্টেম্বর ২০২০ শুক্রবার, ৪র্থ বাংলাদেশ স্কুল অব ইন্টারনেট গর্ভনেন্স এর অনলাইন সভায় প্রদত্ত বক্তব্যের সম্পুর্ণ ভিডিও
4th Bangladesh School of Internet Governance || Computer Jagat Two day’s 4th bdSIG concluded Internet is a Fundamental Human Right and should be included in the Constitution- Hasanul Haq Inu, MP The two-day 4th bdSIG sta...
বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু প্রণব মুখার্জি
হাসানুল হক ইনু
‘ভারতরত্ন’ প্রণব কুমার মুখোপাধ্যায় [প্রণব মুখার্জি] গত ৩১ আগস্ট দিল্লির সেনা হাসপাতালে চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টার পরও সবাইকে ছেড়ে মহাপ্রয়াণের পথে চলে যান। তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় পরদিন ১ সেপ্টেম্বর পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায়।
পাঁচ দশকের রাজনৈতিক জীবনে তিনি সর্বস্তরের রাজনৈতিক নেতা-কর্মীর শ্রদ্ধার পাত্র ছিলেন। রাজনীতি, সমাজনীতি, কূটনীতি থেকে শুরু করে সাহিত্য-সংস্কৃতি- সব ক্ষেত্রেই তাঁর অবাধ স্বচ্ছন্দ ও বিচরণ ছিল। কারাবরণকারী সংগ্রামী ব্রিটিশবিরোধী কংগ্রেসি কামদাকিঙ্কর মুখোপাধ্যায়ের পুত্র প্রণব মুখার্জির জন্ম ১১ ডিসেম্বর, ১৯৩৫ খ্রিস্টাব্দে; পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম জেলার কীর্ণাহার শহরের কাছে মিরাটি গ্রামে। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর স্নেহধন্য প্রণব মুখার্জি ১৯৬৯ সালে ভারতের রাজ্যসভায় প্রবেশ করার পর থেকে তাঁকে আর পেছন ফিরে তাকাতে হয়নি। প্রথম বাঙালি হিসেবে তিনি ২০১২ সালে ভারতের ১৩তম রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব গ্রহণ করেন। ২০১৭ সালের ২৫ জুলাই অবসরে যান।
‘ভারতরত্ন’ প্রণব মুখার্জি উপমহাদেশের রাজনীতিতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। ইতিহাসের নানা টানাপড়েনে তিনি সব সময় ছিলেন ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্ব রক্ষার ও তাকে অগ্রসর করার পক্ষে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রণব মুখার্জির বলিষ্ঠ ভূমিকা চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্রণব মুখার্জির মৃত্যুতে ভারত হারাল এক মহান রাষ্ট্রনায়ক; উপমহাদেশ হারাল একজন রাজনৈতিক অভিভাবক; বাংলাদেশ হারাল একজন অকৃত্রিম সুহৃদ, বন্ধু ও আপনজন; এবং আমি হারালাম একজন প্রজ্ঞাবানের সাহচর্য। প্রণব মুখার্জির মহাপ্রয়াণে একটি যুগের অবসান হলো।
প্রণব মুখার্জি খুবই বিনয়ী ছিলেন। স্বাধীনতার পর তাঁর সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। রাজনীতিতে আমি তখন কোনো গুরুত্বপূর্ণ পদেও নেই। তার পরও যতবার ভারতে গিয়েছি ততবার তাঁর সঙ্গে দেখা হয়েছে- দিল্লি ও কলকাতায় তাঁর নিজ বাসভবনে আর মন্ত্রীর সরকারি বাসা ১৩ তালকাটোরা রোডে। এমনকি রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরও রাষ্ট্রপতি ভবনে বেশ কয়েকবার তাঁর সঙ্গে দেখা হয়। তিনি সময় দিতেন; সেসব সৌজন্য সাক্ষাতের মতো আনুষ্ঠানিক ছিল না; প্রতিবারই এক ঘণ্টার বেশি বৈঠক হতো। তিনি ভালো শ্রোতা ছিলেন। আমি কথা বলে আনন্দ পেতাম ও সন্তুষ্ট হতাম। ফোনে তাঁকে পাওয়া যেত সরাসরি। নিজেই ফোন ধরতেন। আমার এখনো বেশ মনে আছে, লোকসভা নির্বাচনের দিন পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গিপুরে শেষ বিকালে প্রণব দাদা নিজেই ফোন ধরলেন। বললেন ভোটের ব্যবধান ভালো, বিজয়ের দিকে যাচ্ছেন। এত ব্যস্ততার মধ্যেও তিনি ফোন ধরবেন, বিশ্বাস হচ্ছিল না। কিন্তু ফোন ধরলেন, কথা বললেন। এটা যে কেবল আমার বেলায় প্রযোজ্য, তা নয়। অনেকেই তাঁকে ফোনে পেতেন। এই হচ্ছেন প্রণব মুখার্জি; নিরহংকার সজ্জন একজন ব্যক্তি। তাঁর কাছে পৌঁছানো যায়। সহজেই তাঁকে কাছে পাওয়া যায়, সহজেই তাঁর কাছে যাওয়া যায়, সহজেই দেখা-সাক্ষাৎ করা যায়।
অনানুষ্ঠানিক ও ঘরোয়াভাবে অনেকবার দেখা-সাক্ষাৎ হলেও শুধু একবার দিল্লিতে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রণব মুখার্জির সঙ্গে আমার একই মঞ্চে থাকার সৌভাগ্য হয়েছিল, ২০১৭ সালের জুনের প্রথম সপ্তাহে রাষ্ট্রপতি ভবনের মিলনায়তনে। একসময়ের ভারতের বিদেশ সচিব মুচকুন্দ দুবের বাউল লালন শাহর শতাধিক গানের হিন্দি তরজমার বই ও গানের সিডির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভারতের মহামান্য রাষ্ট্রপতি প্রধান অতিথি হন এবং আমি ছিলাম বিশেষ অতিথি। ২০১৮ সালে শেষবার তাঁর সঙ্গে দেখা হয় ঢাকায়। বাংলা একাডেমির অনুষ্ঠানে এসেছিলেন। চমৎকার ভাষণ দেন। হোটেল সোনারগাঁওয়ে দলের নেতৃবৃন্দসহ দেখা করি তাঁর সঙ্গে। যতবার দেখা হয়েছে ততবারই একটা বিষয় আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে- অসাম্প্রদায়িকতা ও ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক। তিনি সব সময় বলতেন, অসাংবিধানিক প্রক্রিয়া যে কোনো দেশের জন্য ও উপমহাদেশের জন্য একটা অভিশাপ।
প্রণব মুখার্জি বই পড়তে ভালোবাসতেন। বাংলাদেশের লেখকদের বই পড়তেন ও সংগ্রহ করতেন। তিনি বইয়ের নাম ও লেখকের নাম বলতেন। প্রতিবারই আমি কিছু বই নিয়ে যেতাম এবং তাঁকে উপহার দিতাম। শেষবার তাঁকে শতাধিক বই একসঙ্গে দিয়ে আসি। তিনি অনেকক্ষণ ধরে বইগুলো নেড়েচেড়ে দেখেন। খুব খুশি হয়েছিলেন। তিনি বলতেন, A Politician must read poetry to keep his mind alive and Sensitive. অর্থাৎ ‘একজন রাজনীতিককে অবশ্যই কবিতা পড়তে হবে মনকে জীবন্ত ও সংবেদনশীল রাখতে।’ আবার বলতেন, Education without values is like a flower without fragrance. অর্থাৎ, ‘মূল্যবোধ ছাড়া শিক্ষা গন্ধহীন ফুলের মতো।’ এসব তিনি বলার জন্য বলেননি; বিশ্বাস থেকে বলতেন; নিজ জীবনেও তা লালন করতেন। তাই তিনি রাজনীতির বটবৃক্ষ, আবার জ্ঞানের মহিরুহও। তাই অনেকে তাঁকে দার্শনিক রাজনীতিকও বলে থাকেন।
বাংলাদেশের জন্য প্রণব মুখার্জির অনেক দরদ ছিল। তবে আমার বিবেচনায় চারটি বিষয়ে তাঁর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল।
প্রথমত, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে তাঁর ভূমিকা প্রশংসনীয়। প্রণব মুখার্জি তাঁর লেখা ‘দ্য ড্রামাটিক ডিকেড : দ্য ইন্দিরা গান্ধী ইয়ারস’ বইয়ে বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ প্রশ্নে বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। ভারতের ভিতরে এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও বাংলাদেশের পক্ষে ইন্দিরা গান্ধীর জোরালো কূটনৈতিক যুদ্ধে ৩৬ বছর বয়সী প্রণব মুখার্জি সম্মুখযোদ্ধার ভূমিকা রাখেন। কিন্তু ’৭১ সালের জুনে রাজ্যসভায় বাংলাদেশকে স্বীকৃতি প্রদানের জন্য তাঁর ওকালতির বিষয়টি বিশেষভাবে সবার নজর কাড়ে। বইটিতে তিনি লিখেছেন, ‘১৯৭১ সালে রাজ্যসভার বাজেট অধিবেশনে আমি বাংলাদেশ সমস্যা নিয়ে আলোচনার উদ্যোগ নিই। আমি বলেছিলাম, ভারতের উচিত বাংলাদেশের প্রবাসী মুজিবনগর সরকারকে অবিলম্বে স্বীকৃতি দেওয়া। আমি সংসদকে এও স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলাম যে, বিশ্ব ইতিহাসে এ ধরনের ঘটনায় হস্তক্ষেপ করার বহু নজির আছে।’ পরে ভারত তা-ই করে।
দ্বিতীয়ত, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ড এবং সামরিক শাসকদের ক্ষমতা জবরদখলের ঘটনা বাংলাদেশকে পাকিস্তানপন্থা ও সাম্প্রদায়িকতার পথে ঠেলে দেয়। বারবার সামরিক শাসনের ছোবলে ক্ষতবিক্ষত বাংলাদেশ সব দিক দিয়ে পিছিয়ে পড়তে থাকে। সর্বশেষ ২০০৭-০৮ সালে জেনারেল মইন উদ্দিন ও ফখরুদ্দীনের আধাসামরিক শাসনকালে প্রণব মুখার্জি ছিলেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ২০০৭-০৮ সালের জরুরি অবস্থার সময়কার পরিস্থিতি বর্ণনা করতে গিয়ে উল্লিখিত বইয়ে তিনি লিখেছেন, ‘... আমি যখন পররাষ্ট্রমন্ত্রী; বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন দেওয়ার ব্যাপারে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ওপর আন্তর্জাতিক চাপ সৃষ্টি করতে ভারত সহায়তা করেছিল।’ পরের ইতিহাস সবার জানা। ২০০৮ সালের শেষে অবাধ নির্বাচনের ব্যবস্থা হয়। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, এরশাদের জাতীয় পার্টি, জাসদসহ মহাজোট বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়ে ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে সরকার গঠন করে। বাংলাদেশের নতুন যাত্রা- পাকিস্তানপন্থা থেকে ফেরত যাত্রা- শুরু হয়। বাংলাদেশ আবার ’৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশের পথে চলতে শুরু করে। সংবিধানে চার মূলনীতি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়, যুদ্ধাপরাধের বিচার ও সাজাসহ সাম্প্রদায়িক জঙ্গি সন্ত্রাস দমন হয়। সীমান্ত-সন্ত্রাসের সব চক্রান্ত স্তব্ধ করে দেওয়া হয়। অসাংবিধানিক সামরিক শাসনের ধারা থেকে নির্বাচন ও সাংবিধানিক ধারায় প্রত্যাবর্তন বাংলাদেশের জন্য অবশ্যই একটা মোড় বদলের ইতিবাচক ও ফলপ্রসূ রাজনৈতিক বিষয়।
তৃতীয়ত, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বেশ কিছু দ্বিপক্ষীয় সমস্যা আছে যার নিষ্পত্তি দরকার। কিছু নিষ্পত্তি হয়েছে। এসব ঝুলে থাকা সমস্যার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে উজান থেকে বয়ে আসা ৫৪টি আন্তর্জাতিক নদ-নদীর পানি বণ্টন; এর মধ্যে আবার সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে বহমান গঙ্গা-পদ্মার পানি ব্যবস্থাপনা। আমি সব সময় বলি, ভারত-বাংলাদেশের সহযোগিতায় অনেক সমস্যার সমাধান হয়েছে, কিন্তু ওগুলো হচ্ছে সহযোগিতার ছোট ছোট জানালা খোলার ঘটনা; সহযোগিতার সোনার সদর দরজা খোলার সোনার চাবি হচ্ছে গঙ্গা-ব্রহ্মপুত্র-মেঘনার পানি ব্যবস্থাপনার ঐক্যবদ্ধ স্থায়ী সমাধানের চুক্তি। গঙ্গা-পদ্মার পানি বণ্টনের সমাধান- সে সোনার চাবিটা হাতে নেওয়ার প্রথম উদ্যোগ। দেশ স্বাধীনের পর বঙ্গবন্ধুর সরকার একটা পদক্ষেপ নেয়। পরে সামরিক শাসক জেনারেল জিয়াউর রহমান আরেকটা উদ্যোগ নেন। কিন্তু ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আসার পর গঙ্গা-পদ্মার পানি বণ্টন বিষয়ে দীর্ঘস্থায়ী ও একটি কার্যকর চুক্তি সম্পাদনে সফল হন। যে কোনো দুই দেশের বিরাজিত সমস্যা সমাধানে প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য, ব্যক্তি-ব্যক্তি সম্পর্ক ও প্রচেষ্টা দরকার হয়। গঙ্গা-পদ্মার পানি বণ্টনের চুক্তি সম্পাদনে প্রণব মুখার্জির ভূমিকা ছিল খুবই ইতিবাচক; এতে অনুঘটক হিসেবে তিনি সফলতা প্রদর্শন করেছেন। আমি মনে করি প্রণব মুখার্জির প্রচেষ্টা বাংলাদেশ-ভারত দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরও গভীর করতে সাহায্য করেছে।
চতুর্থত, সন্ত্রাসবাদ একটা বিশ্ব-বিপদ। উপমহাদেশেও তা আতঙ্ক ছড়ায়। আন্তসীমান্ত সন্ত্রাসও [cross-border terrorism] দুই দেশের শান্তি বিনষ্ট করে। ’৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু হত্যার পর জেনারেল জিয়াউর রহমান ও জেনারেল এরশাদের উপর্যুপরি সামরিক শাসন এবং বেগম খালেদা জিয়া ও জামায়াতের শাসনকাল সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গি সাম্প্রদায়িকতাকে লালন-পালন করত এবং তাদের সময় আন্তসীমান্ত সন্ত্রাসকেও উৎসাহিত করা হতো। এটা বাংলাদেশের জন্য ভালো নয়; প্রতিবেশীর জন্যও ভালো নয়। রাষ্ট্রীয় ও অরাষ্ট্রীয় [non-state] উভয় ধরনের সন্ত্রাসবাদ শান্তির শত্রু। সন্ত্রাসবাদের বিপদ ও হুমকি থেকে উপমহাদেশকে মুক্ত করার জন্য প্রণব মুখার্জি সব সময় জোরালোভাবে সোচ্চার ছিলেন। বিশেষ করে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের ভিতর আন্তসীমান্ত-সন্ত্রাস একটা বিষাক্ত কাঁটা; এটা উপড়ে ফেলা কর্তব্য। তাহলে দুই দেশের অবিশ্বাসের জায়গাটা কমে যাবে, বিশ্বাসের খুঁটি আরও পোক্ত হবে। তাই প্রণব মুখার্জি বলেছেন, Let us not forget that terrorism knows no borders. All of us are vulnerable to terrorist attacks. অর্থাৎ ‘আমাদের ভুলে যাওয়া উচিত নয় যে, সন্ত্রাসবাদের কোনো সীমান্ত নেই। আমরা সবাই সন্ত্রাসী হামলার মুখে বিপন্ন।’
দ্বিপক্ষীয় প্রতিবেশী-সম্পর্ক বিষয়ে প্রণব মুখার্জি বলেছেন, Neighbours may have disagreements; tension can be a subject of frontiers. But sponsorship of terrorism through non state actors is a matter of deep concern to the entire nation. অর্থাৎ, ‘প্রতিবেশীর মধ্যে ভিন্নমত থাকতে পারে; উত্তেজনা একটি সীমান্ত-বিষয়ও হতে পারে। কিন্তু অরাষ্ট্রীক [non-state actors] চক্রের পৃষ্ঠপোষকতার মধ্য দিয়ে পরিচালিত সন্ত্রাসবাদ সমগ্র জাতির জন্য গভীর উদ্বেগের বিষয়।’ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ পরিচালিত হওয়ার পর থেকে এ ধরনের সন্ত্রাসবাদের বিষাক্ত কাঁটা উপড়ে ফেলার সুযোগ আসে। প্রণব মুখার্জি সন্ত্রাসবাদমুক্ত ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক গড়তে বিশেষ ভূমিকা রাখেন; যা উভয় দেশের জন্য মঙ্গলজনক হয়েছে।
সন্ত্রাসবাদ শুধু উপমহাদেশ নয়, পুরো বিশ্বের জন্য বিপদ; সেজন্য উভয় দেশের একসঙ্গে কাজ করা দরকার। প্রণব মুখার্জি তাই বলেছেন, the age of war is not over. We are in the midst of the fourth world war; the Third was cold war. The war against terrorism is the fourth, and it is a world war because it can raise its evil head anywhere in the world. অর্থাৎ, ‘যুদ্ধের কাল শেষ হয়ে যায়নি। আমরা চতুর্থ বিশ্বযুদ্ধের মধ্যে আছি; তৃতীয়টি ছিল শীতলযুদ্ধ। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধটি হচ্ছে চতুর্থ বিশ্বযুদ্ধ এবং এটা একটা বিশ্বযুদ্ধ এজন্য যে, এ অশুভ যুদ্ধ মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে পারে বিশ্বের যে কোনো জায়গায়।’ ঠিক কথা। তাই ভারত, বাংলাদেশসহ সব শান্তিকামী দেশ ও জনগণের ঐক্য দরকার সন্ত্রাসবাদ দমনে।
প্রণব মুখার্জি দুই দেশের সম্পর্ক নিয়ে মাথা ঘামাতেন নিরন্তর। সম্পর্ক রক্ষা ও গড়ার দৃষ্টিভঙ্গি কী হওয়া উচিত সে বিষয়ে তাঁর স্পষ্ট পরামর্শ ছিল। তিনি বলেছেন, We can change our friend if we so desire. We cannot change our neighbours. They are going to stay where they are. It is for us to decide whether we will live in perpetual tensions without neighbours or in peace. The choice is ours. অর্থাৎ, ‘চাইলে আমরা বন্ধু পরিবর্তন করতে পারি। আমরা প্রতিবেশী পরিবর্তন করতে পারি না। তারা যেখানে আছেন সেখানেই থাকবেন। এটা আমাদেরই ঠিক করতে হবে যে, আমরা প্রতিবেশীহীন চিরস্থায়ী উত্তেজনার মধ্যে থাকব, নাকি তাদের নিয়ে শান্তিতে থাকব। পছন্দ আমাদের নিজেদের ব্যাপার।’ এটা খুব বাস্তববাদী বক্তব্য। আমি এর সঙ্গে যুক্ত করে বলি- হ্যাঁ, স্ত্রী বা স্বামী বদল করা যায়, কিন্তু প্রতিবেশী বদল করা যায় না; প্রতিবেশীর সঙ্গে শান্তিতে বসবাস করার সংস্কৃতি রপ্ত করা তাই আমাদের অবশ্য-কর্তব্য।
প্রতিবেশীর সঙ্গে শান্তিতে বসবাস করার সংস্কৃতিটি ভারত-বাংলাদেশ উভয় সরকারেরই রপ্ত করা উচিত। মনে রাখতে হবে, ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কের বাঁধন ’৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে ঝরা রক্তে; এ বাঁধন ছিন্ন হতে পারে না। তা ছাড়া ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক উপমহাদেশের শান্তি-স্থিতি-উন্নয়নের একটা গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। ২০১৭ সালের জুনে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে মুচকুন্দ দুবে’র লালনের হিন্দি অনুবাদের বইয়ের উদ্বোধনকালে মহামান্য রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি বলেন, ‘অসাম্প্রদায়িকতা, মানবতা ও ধর্মনিরপেক্ষতাই ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কের প্রকৃত মেলবন্ধন হওয়া উচিত; লালন শাহ তাঁর যোগ্য প্রতিনিধি।’ প্রণব মুখার্জি আজ নেই; কিন্তু তাঁর দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য ও উক্তি ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ককে আরও উচ্চতর থেকে উচ্চতর পর্যায়ে নিয়ে যেতে বাতিঘরের মতো পথ দেখাবে। রাজনৈতিক-সামাজিক অঙ্গনে প্রণব মুখার্জির বিচরণ পাঁচ দশক ধরে। আমার পক্ষে তাই তাঁর যথার্থ মূল্যায়ন করা সম্ভব নয়। তাঁর পরও আমার উপলব্ধিতে, তথ্য-উপাত্ত দেখে তাঁকে যেভাবে বুঝেছি সে বোঝাগুলো হচ্ছে তাঁর প্রতি আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি।
প্রণব মুখার্জি সারা জীবন অসাম্প্রদায়িকতা, গণতন্ত্র ও মানবতাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতেন। সমাজবাদী অর্থনীতিতে অনুরক্ত ছিলেন। দক্ষিণ এশিয়ায় সমমর্যাদার ভিত্তিতে সম্মানজনক পররাষ্ট্রনীতি ও কূটনীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন।
গণতন্ত্রকে তিনি সংখ্যাগুরুর আধিপত্য হিসেবে দেখতেন না; পরমতসহিষ্ণুতার ও বিরুদ্ধমত তুলে ধরার স্বাধীনতা মনে করতেন। তিনি বলেন, The defining feature of any democracy is that it replaces the rule of men by the rule of Law and achieves this by creating institutions of government and processes for their functioning. অর্থাৎ, ‘যে কোনো গণতন্ত্রের নির্ধারক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এই যে, তা ব্যক্তি-শাসনকে আইনের শাসনে পরিণত করে এবং তা অর্জন করা হয় সরকারি প্রতিষ্ঠান তৈরি ও তা কার্যকরের প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে।’ আবার আর এক বক্তব্যে তিনি বলেন, Democracy breaths through a vibrant parliament, an independent judiciary, a responsible media, a vigilant civil society. It survives through accountability, not profligacy. অর্থাৎ, ‘গণতন্ত্র শ্বাস-প্রশ্বাস নেয় প্রাণবন্ত সংসদ, একটি স্বাধীন বিচারব্যবস্থা, একটি দায়িত্বশীল গণমাধ্যম এবং এক সজাগ নাগরিক সমাজের মধ্য দিয়ে। তা বেঁচে থাকে জবাবদিহির ভিতর দিয়ে, স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে নয় ...।’
উপমহাদেশে গণতন্ত্রের অনেক সংগ্রাম হয়েছে; কিন্তু এখনো গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ যথাযথভাবে শিকড় গাড়েনি। প্রণব মুখার্জির কথার সুর ধরে আমিও বলি, গণতন্ত্র হচ্ছে আইনের শাসন, স্বশাসন ও সুশাসন। আর আইনের শাসন মানেই হচ্ছে গণতন্ত্রের সীমা আছে। আমি তাই বলি, গণতন্ত্র হচ্ছে মশারি ঢাকা একটা আরামদায়ক বিছানা, যেখানে শুয়ে বসে বাইরের সব কিছু দেখা যায়, বাইরে থেকেও সব দেখা যায়, কিন্তু পোকা-মাকড়-মশা-মাছি বিছানায় ঢুকতে পরে না।
প্রণব মুখার্জি গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও দুর্নীতি- এ তিনের পারস্পরিক সম্পর্কের বিষয়টি চমৎকারভাবে নির্ধারণ করে বলেছেন, There can be no democracy without secularism. অর্থাৎ, ‘ধর্মনিরপেক্ষতা ছাড়া কোনো গণতন্ত্র নেই।’ এবং, Corruption is a cancer that erodes democracy and weakens foundation of our state. অর্থাৎ, ‘দুর্নীতি হচ্ছে ক্যানসার যা গণতন্ত্রের ক্ষয় সাধন করে এবং আমাদের রাষ্ট্রীয় ভিত দুর্বল করে দেয়।’ সুতরাং উপমহাদেশে যারা এক মুখে গণতন্ত্রের কথা বলেন, আর আরেক মুখে ধর্মনিরপেক্ষতাকে বর্জন করেন; আবার যারা দুর্নীতিকে অর্থনীতির সহসঙ্গী মনে করে নীরব থাকেন; তারা আর যাই হোন, গণতন্ত্রী নন। তাদের হাতে গণতন্ত্র কখনই নিরাপদ নয়। এসব মুখোশধারী উপমহাদেশে বিভাজনের রাজনীতি করেন এবং অশান্তির বীজ বপন করেন।
বৈষম্য ও দারিদ্র্য সমাজ ও গণতন্ত্রকে নড়বড়ে করে তোলে। তাই গণতন্ত্র মজবুত হবে যদি বৈষম্য কমে যায়, দারিদ্র্য উচ্ছেদ হয়। প্রণব মুখার্জি তাই বলেন, Poverty has no religion, hungry has no creed, and despair has no geography... We must not be satisfied with mere poverty alleviation. We must commit ourselves to the goal of poverty elimination. অর্থাৎ, ‘দারিদ্র্যের কোনো ধর্ম নেই, ক্ষুধার কোনো মতবাদ নেই এবং হতাশার কোনো ভূগোল নেই। আমাদের কেবল দারিদ্র্য দূরীকরণে সন্তষ্ট থাকা উচিত নয়, আমাদের প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে দারিদ্র্য নির্মূলের লক্ষ্যে।’ অন্য আর এক জায়গায় তিনি বলেন, There is no humiliation more abusive than hunger. Trickle down theories do not address the legitimate aspirations of the poor... অর্থাৎ, ‘ক্ষুধার মতো অবমাননাকর নিপীড়ন আর নেই। অর্থনীতির চুইয়ে পড়া তত্ত্ব গরিবদের ন্যায্য আকাক্সক্ষাকে ধারণ করে না।’ এসব প্রণব মুখার্জির জীবনের কথার কথা নয়। তিনি বাস্তবে তার চর্চাও করতেন। রাজনৈতিক ক্ষমতাকে দম্ভ মনে করতেন না এবং প্রদর্শনের বিষয়ও ভাবতেন না। জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পর্ককে তিনি বেশি গুরুত্ব প্রদান করতেন।
প্রণব মুখার্জি সমঝোতার কারিগর ছিলেন। সংকট মোচনে সবাই তাঁর পরামর্শ চাইতেন। তিনি ছিলেন ক্ষমতা ও জনগণের মেলবন্ধনের প্রতীক। সামাজিক বাঁধন রক্ষার অনুঘটক। রাজনৈতিক ক্ষমতাকে দায়িত্ব ও কর্তব্য মনে করতেন। রাজনৈতিক সাংবিধানিক প্রক্রিয়াকে প্রাধান্য দিতেন।
প্রণব মুখার্জি চলনে-বলনে-চেহারায়-কাপড়ে-চোপড়ে একেবারে খাঁটি বাঙালি ছিলেন। বাঙালিয়ানার মূর্ত প্রতীক ছিলেন। তিনি আপাদমস্তক একজন রাজনীতিক হলেও জ্ঞানমন্দিরের বাসিন্দা ছিলেন। প্রণব মুখার্জি ক্ষমতার প্রাসাদে অধিষ্ঠান করলেও তাঁর বিচরণ ছিল সাধারণ জনতার হৃদয়ে। তাঁকে স্পর্শ করা যেত। প্রণব মুখার্জির প্রতিভা ছিল। ইন্দিরা গান্ধীর হাতের ছোঁয়ায় সে প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটতে শুরু করে। সেই দীপ্তি নিয়েই মহাপ্রয়াণের পথে চলে গেছেন তিনি। প্রণব মুখার্জি অমর থাকবেন।
লেখক : সভাপতি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জাসদ।
বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু প্রণব মুখার্জি | বাংলাদেশ প্রতিদিন ‘ভারতরত্ন’ প্রণব কুমার মুখোপাধ্যায় [প্রণব মুখার্জি] গত ৩১ আগস্ট দিল্লির সেনা হাসপাতালে চিকিৎসকদের সব প্রচেষ্টা.....
Click here to claim your Sponsored Listing.
Category
Website
Address
Jasod Office, 35-36 Bangabondhu Avenue
Fulbaria
Fulbaria
বিশ্বাস করুন আমি কবি হতে আসিনি আমি নেতা হতে আসিনি আমি মানুষকে প্রেম দিতে এসেছি রুপান্তর 🇧🇩