Nuruzzaman Nahid
তাওহিদ, রিসালাত ও আখিরাতের বিশুদ্ধ ইল?
শিক্ষাজীবন :
হিফজুল কুরআন : জামিআ সওতুল হেরা, টঙ্গী
দাওরায়ে হাদিস : শাইখ যাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, ঢাকা
ইফতা : শাইখ যাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, ঢাকা
উলুমুল হাদিস : শাইখ যাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, ঢাকা
কর্মজীবন :
উস্তায (হাদিস ও ফিকহ) : আল-জামিআ আল-আরাবিয়া দারুল হিদায়া, পোরশা (চলমান)
প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক : মারকাযুল আশরাফ লিল বুহুসিল ইসলামিয়া, গাজীপুর
লেখালেখি :
স
بداية اليوم مع الصلاة لله والصلاة على الحبيب من علامات السعادة والفوزان. ومن أسعد ممن ابتدأ يومه برحمة ربه المنّان ودعاء نبيه الحنّان مع هدوء القلب والإطمئنان!
فمن صلّى الفجر صلّ على الحبيب مائة مرة؛ رحمك الله.
আমার পছন্দের তালিকায় থাকা অন্যতম সেরা বই। সচেতন তালিবুল ইলমদের যে বইটি অবশ্যপাঠ্য হিসেবে পরামর্শ দিই। যারা পড়েন নি; পড়া জরুরি। এই ধরণের একটি বই অপঠিত থাকা স্বাক্ষরতার কলঙ্ক। আশা করি, পড়ে উঠবেন।
বইটি নিয়ে একটা নাতিদীর্ঘ রিভিউ লিখেছিলাম। আজ ব্যক্তিগত ফ্রি ওয়েবসাইটটাতে তুলে রাখলাম। অনেক লেখাই তো হারিয়ে যাচ্ছে। এটা হারাতে চাই না। পড়ে আসতে পারেন।
আহমাদ সাব্বির -এর যাদুকরী হাতে অনূদিত এমন একটি মূল্যবান গ্রন্থ প্রকাশ করে Ahsan Elias ও নাশাত আমাদের কৃতজ্ঞ করেছেন। নাশাতের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি।
মামুনুল হক সাহেবের থাপ্পড় আর ফয়জুল করিম সাহেবের ধাক্কার মাঝের ব্যবধানটা অনেকে ধরতে পারছেন না। বিষয়টা দুঃখজনক। ব্যবধানটা বেশ পরিষ্কার ও স্পষ্ট। মামুনুল হক সাহেব যাকে চড় দিয়েছেন সে তার ছাত্রের সমতুল্য ও নিতান্ত অল্প বয়েসী তরুণ। বিপরীতে ফয়জুল করিম সাহেব যাকে ধাক্কা দিয়েছিলেন তিনি বয়েসে তারচেয়ে বড়।
অল্প বয়েসী তরুণকে, যদি অধিকার থাকে, যেকোনো মুনকার (অপছন্দনীয়) কাজ থেকে বিরত রাখতে ধমক দেওয়া এবং ক্ষেত্র বিশেষে চড়-থাপ্পড় দেওয়া নিন্দনীয় নয়; উল্টো, আজকের মত পরিস্থিতিতে বেশ দরকারি। বিপরীতে, একজন বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষকে ধাক্কা দেওয়া অবশ্যই গর্হিত ও নিন্দনীয় কাজ। জনসম্মুখে এধরণের কাজ হলে মানুষ সমালোচনা করবেই।
সুখের ব্যাপার হলো, ঘটনা পরবর্তী সময়ে ফয়জুল করিম সাহেব মুরুব্বি মানুষটির সাথে যেভাবে শ্রদ্ধা ও ভালবাসার আচরণ করেছেন তা তরুণ প্রজন্মের অনেক উঠতি সেলিব্রেটির জন্য শিক্ষণীয়। তাছাড়া যেভাবে ফেসবুকটাকে ত্রাসের সাম্রাজ্য বানানো হয়েছে তাতে মুরুব্বি মানুষটি আবেগের বশবর্তী হয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত (চুমাটুমা জাতীয়) কিছু করে ফেললে ট্রল-সন্ত্রাসীরা মওকা পেয়ে যেতো। এজন্য বক্তা ও সেলিব্রেটিদের উচিত প্রয়োজনীয় প্রটোকল নিয়ে স্টেজে ওঠা।
জাতীয় সংসদে সিলেটের একজন সংসদ সদস্য মাদরাসাগুলোর সিলেবাসে ঢোল-তবলা বাজানোর মত বই বাধ্যতামূলক করার বিরোধিতা করে বক্তব্য দিয়েছেন। তিনি হাদিস উল্লেখ করে বলেছেন, এটা শয়তানের কর্মকাণ্ড। শিক্ষাবিদ ও দেশপ্রেমী মানুষদের মাধ্যমে সিলেবাস প্রণয়নের দাবি জানিয়েছেন তিনি। স্পিকারের কাছে পাঁচ মিনিট বাড়তি সময় চেয়ে বলেছেন, সংসদে হুজুরদের পক্ষে বলবার মত লোক তো কেবল আমি। অর্থাৎ তিনিও জানেন, ধর্মের কথা বলবার মত লোক এখন আর মহান সংসদে নেই।
যে দেশের নব্বই শতাংশেরও বেশী মানুষ মুসলমান সে দেশে এই অবস্থা কী করে হলো কমবেশী সকলের জানা। সরকার যখন উন্নয়নের আশায় (?) দেশের বুকের ওপর দিয়ে ট্রেন চালিয়ে দেওয়ার অধিকার মহান মুক্তিযুদ্ধের মিত্রবাহিনী বন্ধুরাষ্ট্রকে দিয়েছে জনগন তখন রাজনৈতিক অস্থিরতা থেকে বাঁচতে এবং কুফরি গণতন্ত্রের চর্চা থেকে দূরে থাকতে গিয়ে বিশেষ একটি দলের লোকজনকে স্বেচ্ছাচারিতা করার সবরকম সুযোগ হাতে তুলে দিয়েছে। ফল চোখের সামনে। আলেম তৈরীর কারখানায় জালেম তৈরীর সরঞ্জাম ঢুকে যাচ্ছে; অথচ বলবার মত জনপ্রতিনিধি সেখানে কেবল একজন; অত্যন্ত ভীত কণ্ঠে যিনি খুবই দুর্বল বক্তব্যে বিষয়টি কেবল উপস্থাপন করেছেন। যারা বলে সরকার অন্যের কাছে দেশ বিক্রি করে দিচ্ছে তাদের জানা উচিত প্রথমে তারা নিজেরাই এই বিকিকিনির পথ উন্মুক্ত করেছে। দায় তারা এড়াতে পারেন না।
যাইহোক, সিলেটের যে সংসদ সদস্য মাদরাসার বিষয়টি তুলে ধরেছেন তিনি কি জানেন, স্কুলের নবম শ্রেনীর বইয়ে ‘ট্রান্স-নারীদের’ অন্তর্বাস ক্রয়ের লাতিন এক দোকানের কিউআর কোড যুক্ত করে দেওয়া হয়েছে? তিনি কি জানেন শরীফার এক গল্প বাতিল করে হাজারটা শরীফার হওয়ার সবরকম সরঞ্জাম সুচিন্তিতভাবে সিলেবাসে সেঁধিয়ে দেওয়া হয়েছে? যদি না জেনে থাকেন, কেউ কি চেষ্টা করেছে তাকে জানানোর? তিনি কি সাহস করে মাদরাসার পাশাপাশি এসব ষড়যন্ত্র নিয়েও সরব হবেন?
সোশ্যাল মিডিয়াতে অনেকেই নবম শ্রেনীর বইয়ের এই কাণ্ড নিয়ে সরব হয়েছেন। অনেক কন্টেন্ট ক্রিয়েটর ভিডিও তৈরী করেছেন। বিষয়টি এখন সংসদে ওঠা উচিত এবং তীব্র প্রতিবাদ হওয়া উচিত। যে বসার জায়গা দেওয়ার অনুরোধ করে সামনে এসেছিল সে এখন পুরো দস্তুর শোয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। বৃটিশ ও তাদের দোসররা বিগত কয়েক শতাব্দী ধরে এভাবেই আমাদের সমাজ-সভ্যতা-সংস্কৃতি-ধর্মকে শেষ করে দিচ্ছে। ধরণ এক; কিন্তু আমরা তো ইতিহাস থেকে শিক্ষা না নেওয়া জাতি।
পুনশ্চ : শরীফার গল্প পাঠ্যপুস্তক থেকে তুলে দেওয়ায় গাধানিক কষ্ট পেয়েছে। তাদের জন্য সমবেদনা জানাতে ভুলবেন না।
আবদুল্লাহ আল ফারুক ভাইয়ের সাথে কথা হলো। বাদ মাগরিব লিখতে বসেছেন। অনেক দিন বাদে ফোন করেছি; তারপরও চিনতে পারলেন। ব্যস্ত মানুষ; তারওপর কাঁধে তুলে নিয়েছেন মেয়েদের জন্য মানসম্মত মাদরাসা করার অনির্বচনীয় কঠিন দায়। স্বামী-স্ত্রী মিলে পাড়ি দিচ্ছেন দুস্তর পারাবার। মাদরাসার গল্প শুনলাম। শ’ ছুই ছুই শিক্ষার্থী। সম্পূর্ণ অনাবাসিক। গুটি গুটি পা ফেলে পৌঁছে গেছে পঞ্চম শ্রেনীতে। অল্প সময়ে অর্জন করেছে স্থানীয়দের ভালবাসা ও আস্থা। সম্পূর্ণ নতুন ও সুচিন্তিত সিলেবাসে চলছে মাদরাসার পাঠ। আকাঙ্ক্ষা দিগন্তস্পর্শী; রব্বে কারিম তাওফিকদাতা।
এইসব গল্পের ফাঁকে আমার মারকাযুল আশরাফকে মনে পড়ে। মনে পড়ে মায়ের কথা। চারদিন যাবত জ্বরে পুড়ছেন; তবু রসুইঁ ছাড়তে পারছেন না ছাত্র-শিক্ষকদের আহারের ব্যবস্থা করার তাগিদে। মাকে সহযোগিতা করবার জন্য একটা মাত্র মানুষ; আমার ছোট বোন। শারীরিক অসুস্থতার কাছে সেও মাঝে মাঝে অসহায় বোধ করে। সারাাদিন মেয়েশিশুদের ক্লান্তিকর পাঠদানের পর শরীর তার বিদ্রোহ করে উত্তপ্ত উনুনের পাড়ে বসতে; তবু উপায় তো থাকে না। অসুস্থ মায়ের সে একমাত্র ভরসা। দূরে বসে বসে এইসব ভেবে ভেবে দীর্ঘ নিশ্বাস ফেলা ছাড়া কিছুই করবার নেই আমার। দেড় বছর মারকাযে থেকেও উন্নতি-অগ্রগতির কিছুই করতে পারি নি। উল্টো স্ত্রী-সন্তানের ব্যয়ের বোঝা চাপিয়ে দিয়েছিলাম বাবা-মায়ের কাঁধে। তাখাসসুস বিভাগ খুলে বাড়িয়েছিলাম অর্থনৈতিক জটিলতার পরিমাণ। কেউ যখন আগ্রহ নিয়ে মারকাযের কথা জিজ্ঞেস করে চোখের সামনে বেদনাক্লান্ত চলচ্ছবিরা সাঁতরাতে থাকে উদোম হয়ে। অসুস্থ মায়ের জ্বরজীর্ণ পাণ্ডুর মুখ, বাবার ঘামে ভেজা দেহ, বোনের শ্রান্তিরাঙা চোখ আর হা করে থাকা মারকাযের ব্যয়ের খাতা।
এই দেশে লেখকজনের ভবিষ্যত নিতান্ত রূঢ়; কথকজনের জন্য বরাদ্দ বর্তমান ও ভবিষ্যতের সবটুকু আহ্লাদ। দুচারজন লিখিয়ে অগ্রজ যারা মাদরাসা করবার বাসনা নিয়ে পথে নেমেছেন, নিয়মিত মুখোমুখী হন অভাব ও অসহযোগিতার। বিপরীতে বক্তা বা কথকজনদের ভাবুন; শ্রেনীকক্ষের শেষ বেঞ্চ অলংকৃত করা কথকজন আন্তজার্তিক মাদরাসা গড়ে ফেলছেন বেলা ঘুরবার আগে। না পয়সার অভাব হচ্ছে, না প্রচারণার। প্রায় সব এলিট (শব্দটি এক প্রিয় অগ্রজের) বক্তার সুবিশাল প্রতিষ্ঠান থাকলেও শ্রদ্ধাভাজন প্রাজ্ঞ লিখিয়েদের প্রায় কারও কোনো বৃহৎ শিক্ষালয় গড়বার সৌভাগ্য হয় নি। প্রতিষ্ঠান খুলে ফেললেই তো হয় না; দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা লাগে। প্রাসাদোপম বিল্ডিং লাগে। আরাম-আয়েশের আয়োজন লাগে। দরকার হয় মানসম্পন্ন শিক্ষক; সেজন্য চাই মোটা অংকের মাসোহারা দেওয়ার পর্যাপ্ত বন্দোবস্ত। নতুবা শিক্ষক ধরে রাখা যায় না; অভিভাবকদের অভিযোগ ওঠে, ‘খালি হুজুর পাল্টায়’। মোটা মাসোহারা নিয়মিত দিয়ে যেতে পারলে অবশ্য শত অপমানের পরও ওস্তাদ আর পাল্টে যায় না। কিন্তু লেখকজনের সামর্থ কই?
দুএকজন তরুণ বক্তার কথা জানি যারা শুরুতে লেখক হতে চাইলেও সময় গড়াতেই এই ‘ফ্যান্টাসি’র বিপদ বুঝে গেছেন। সময় থাকতে মাহফিলের স্টেজ দখলের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। লেখকজীবনে মাদরাসা করবার জন্য এক টুকরো জমি যার জুটছিল না ভাইরাল বক্তা হয়ে যাওয়ার পর তিন-চারটি মাদরাসা পরিচালনা করে যাচ্ছেন। লেখালেখিতে আমি কাউকে অনুৎসাহিত করছি না; বোঝাতে চাইছি পথটা কণ্টকাকীর্ণ। দিনরাত সৃজনশীলতার সবটুকু ব্যয় করেও প্রাপ্তির খাতা থাকবে নেহাত কম। ক্লান্তি আর অবসাদ বারংবার পা টেনে ধরবে। তারপরও যদি রব্বে কারিমের সন্তুষ্টি লাভের প্রেরণা সামনে এগিয়ে দেয় তো টেকসই হবে উজ্জ্বল ভবিষ্যত। খুব সামান্য হলেও টিকে থাকবে যুগান্তর ধরে। শতবর্ষ পরে বিমুগ্ধ কোনো পাঠক স্বগতোক্তি করবে, ইয়া রব, লেখককের ওপর তোমার করম বর্ষণ করো। তার মাটির শয্যাঘরে ছড়িয়ে দাও জান্নাতি মেহেক।
দিনলিপি : পহেলা জিলকদ ১৪৪৫ হি., শুক্রবার
প্রচণ্ড প্রতিকুলতার মধ্য দিয়ে সূচিত হয়েছিল আমাদের চলতি শিক্ষাবর্ষ। জামিয়ার পথচলার প্রথম বছর। রব্বে কারিমের অপার অনুগ্রহে ও মহান মুরুব্বিদের দুআর ওসিলায় হযরত মাওলানা হাসান জামিল সাহেব হাফিজাহুল্লাহর মাকবুলিয়াতের বরকতে অচিন্তনীয়ভাবে প্রায় সাড়ে চারশ তালিবুল ইলম দাখেলা নিয়েছিল চাল-চুলোহীন জামিয়ায়। তালিবুল ইলমদের মাথা গুজতে দেওয়ার মত আবাসনটুকু ছিল না। তারপর সহস্র প্রতিকুলতা অতিক্রম করে আল্লাহওয়ালাদের দুআ ও নেকনজরের মহার্ঘ সম্পদ সাথে করে আমরা পাড়ি দিয়েছি দুস্তর পারাবার। বছর শেষে বাড়ি ফিরবার সময় তালিবুল ইলমদের মুখের হাসি ও আঁখিযুগলে আনন্দের দ্যুতি আমাদের স্বস্তি দিয়েছে।
আকাঙ্ক্ষা-অনুরূপ না হলেও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া বাংলাদেশের ৪৭তম কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় জামিয়ার শিক্ষার্থীদের ফলাফল উৎসাহব্যঞ্জক ছিল। ফলাফলের চিত্র নিম্নরূপ :
* ফজিলত
✓ পরীক্ষার্থী : ৫৫ জন
✓ মেধাতালিকা : ১জন
✓ মুমতাজ : ৫জন
* সানাবিয়া উলয়া
✓ পরীক্ষার্থী : ৪৮জন
✓ মেধাতালিকা : ৩জন
✓ মুমতাজ : ৫জন
* মুতাওয়াসসিতাহ
✓ পরীক্ষার্থী : ১৩জন
✓ মেধাতালিকা : ৪ জন
✓ মুমতাজ : ৭জন
* ইবতেদায়ী
✓ পরীক্ষার্থী : ৩৩জন
✓ মেধাতালিকা : ৯জন
✓ মুমতাজ : ১১জন
* হিফজুল কুরআন
✓ পরীক্ষার্থী : ২জন
✓ মুমতাজ : ১জন
মোট পরীক্ষার্থী : ১৫১ জন।
মোট মেধাতালিকা : ১৭জন (নজরে সানির পর এই সংখ্যাটা আরও অনেক বাড়বে, ইনশাআল্লাহ)
মোট মুমতাজ : ২৯ জন
নিঃসন্দেহে ইস্তিদাদ অর্জন করা, যোগ্য আলেম হওয়া এবং দ্বীনের প্রকৃত পথপ্রদর্শক হওয়াই আসল কথা; কেন্দ্রীয় পরীক্ষার ফলাফল লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য নয়। হ্যাঁ, অভীষ্ট লক্ষ্যে টিকে থাকতে, স্পৃহা ধরে রাখতে ও নিজেকে যাচাই করতে পরীক্ষা ও ফলাফল বিশেষ নিয়ামক হিসেবে ভুমিকা রাখে। উপরন্তু একটি প্রতিষ্ঠানের লেখাপড়ার মান, উস্তায-ছাত্রদের পরিশ্রম ও সতর্কতা সম্পর্কে শুভানুধ্যায়ীদের অবগত করতে কেন্দ্রীয় পরীক্ষার ফলাফল বিশেষ ভুমিকা রাখে; এই বাস্তবতা অনস্বীকার্য।
সকল সূধীজনের প্রতি আত্মিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। বিশেষত মাদরাসার মুতাওয়াল্লি জনাব নজরুল ইসলাম সাহেব ও ওয়াটা কেমিক্যালের সকল সদস্যের প্রতি আন্তরিক অভিনন্দন। তাদের অক্লান্ত পরিশ্রম, ভালবাসা ও সহযোগিতার কারণেই মাত্র এক বছরে জামিয়া এক বিশাল মহীরুহে পরিণত হতে পেরেছে। মুতাওয়াল্লি সাহেব এবং তার পরিবারের সকলকে আল্লাহ তাআলা সুস্থতা ও স্বাচ্ছন্দ দান করুন। দ্বীনের কাজে আরও বেশী সহযোগী হওয়ার তাওফিক দান করুন।
যোগ্য ও সচেতন আলেম (রিজাল) গড়ার পাশাপাশি আমাদের আকাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য হলো, ব্যক্তি ও মনন সৃষ্টির আদর্শ বিদ্যাপীঠ দেশের শীর্ষ কওমি মাদ্রাসাগুলোর সোনালী কাফেলায় নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করা। তাই সবকিছুর শুরু ও শেষে আমরা কেবল রব্বে কারিমের শুকরিয়া আদায় করি এবং তাঁর অনুগ্রহ কামনা করি। তার দয়া ও অনুগ্রহ আমাদের একমাত্র সম্বল।
খতমে বুখারীর সূচনা হয়েছিল বরকতের নিয়তে; এখন পরিণত হয়েছে কালেকশান আর চাঁদাবাজির মহোৎসবে। এই জুলুম শত শত গরিব তালিবুল ইলমের নিরব অশ্রুর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দরিদ্র অভিভাবকের মানহানির। মাদরাসার অল্প ওজিফায় জীবন যাপনকারী মুখলিস আলেমও রেহাই পাচ্ছেন না খতমে বুখারী নামক এই জরিমানার হাত থেকে। সন্তানকে দাওরায় হাদিস পড়িয়ে যে অপরাধ তিনি করেছেন তার জরিমানার কবল থেকে। জুলুম যখন ঘনীভূত হয় আজাব তখন তরান্বিত হয়। কখন যেন কঠিন আজাব চলে আহলে মাদারিসের ওপর! আল্লাহ মাফ করুন।
অনেকেই সতর্ক করেছেন, খতমে বুখারী বিদআতে রূপ নিয়েছে। দেশি-বিদেশি অনেক মুরুব্বী বারবার বলেছেন। বিদআত তো গোমরাহী; হারাম। আর প্রতিটি হারামের ভেতর জুলুম ঘাপটি মেরে থাকে। বরকতের নিয়তে শুরু হওয়া আপাত সুন্দর কাজটি তাই জুলুমের মিলনমোহনায় পরিণত হয়েছে। একটু খোঁজ নিলেই জানতে পারবেন, খতমে বুখারীকে ওসিলা ধরে তালিবুল ইলমদের থেকে কী পরিমাণ অর্থ উত্তোলন করা হচ্ছে। রীতিমত বাধ্য করা হচ্ছে। কী পুরুষ মাদরাসা আর মহিলা মাদ্রাসা। সবখানেই একই অবস্থা। যারা "চাঁদা' দিতে অক্ষম ক্লাশের সবচেয়ে ভাল, সম্ভ্রান্ত ও ভদ্র ছাত্র হওয়ার পরও সে লাঞ্চিত হচ্ছে। অনেক অবিবেচক মুহতামিম ও শিক্ষক ছাত্রটির মা-বাবাকে কটাক্ষ করে কৃপণ বলছে। তাকে নিয়ে বিদ্রুপ করছে। আমি দেখেশুনে দায়িত্ব নিয়েই কথাগুলো বলছি। এভাবে জোরজবরদস্তি করে পয়সা তুলে সুবিশাল আয়োজন করে খতমে বুখারীর উৎসব পালন করা হচ্ছে। মাদ্রাসার ফান্ডে জমা পড়ছে বিশাল অংক। বিদআত ফতোয়া দিয়েও তাই এই হারাম কামাই থেকে মুহতামিমদের বিরত রাখা যাচ্ছে না। অথচ নবীজী সুস্পষ্ট ভাষায় বলেছেন, অসন্তোষ থেকে প্রদত্ত এই পয়সা কারও জন্যই খাওয়া হালাল নয়। আলেম-গায়রে আলেম কারো জন্যই নয়। বুখারীর শেষ দরস দিতে আসা শায়খুল হাদিস সাহেবের জন্যও নয়। খতমে বুখারীর দাওয়াত পেয়ে, দরস দিতে হোক বা সঙ্গ দিতে, যারা শরিক হচ্ছেন এবং উদরপূর্তি করে ভোজন সম্পন্ন করছেন একবারও কি হালাল-হারাম বিবেচনায় নিয়েছেন? নেন নি। নেওয়া উচিত। হালাল-হারামের বয়ান করার আগে এটুকু আপনার কর্তব্য।
খতমে বুখারীর সাথে আরও অনেকগুলো অপরাধ জড়িয়ে গেছে। বিশেষত মহিলা মাদ্রাসাগুলো শরিয়তের সকল সীমান্ত অতিক্রম করে ফেলেছে। বলা দরকার। আজ কেবল একটা দিক বললাম।
প্রিয় ছোটভাই Waliullah Faruk Qasemi হাফিজাহুল্লাহর মাদ্রাসার মাহফিল। আজ প্রথম দিন। আল্লাহ চাইলে থাকবো, ইনশাআল্লাহ।
ভেবেছিলাম, দারসের চাপ না কমলে মাহফিলে যাবো না। কমে এসেছে, আলহামদুলিল্লাহ। তারপরও বেশ কয়েকদিন দ্বিধায় ভুগেছি, যাবো কি না। গর্তজীবী মানুষের খুপরি থেকে বেরোনো যে কত কঠিন কেবল ভুক্তভোগী বুঝবে। শেষমেশ আজ ফজরের আগে মনে হলো, ওয়াজ-মাহফিল তো মূল কিছু না; প্রিয় মানুষের ডাকে সাড়া দেওয়াটাই আসল। সুতরাং, ফোন করে যারা জানতে চেয়েছিলেন আসবো কি না; আপনারা আসলে ইনশাআল্লাহ দেখা হবে।
ট্রান্সজেন্ডার নিয়ে কথা বলা উচিত। ভাবছি, বিষয়টা সামনে রেখে কিছু কথা বলবো। সুযোগ যত ছোটই হোক বেকার যেন না যায়।
দ্বিতীয়, তৃতীয় বা চতুর্থ স্ত্রী হিসেবে কেবল ডিভোর্সি ও বিধবা মেয়েদের প্রাধান্য দিতে হবে এমন ধারণা ভুল। নাম্বার যতই হোক, কুমারী বিয়ে করাই উত্তম। তবে, একজন দায়িত্ববান মুমিন হিসেবে নবিজির আচরিত সুন্নাহ মেনে অ-কুমারীকে বিয়ে করলে, ইনশাআল্লাহ, সওয়াবের ভাগদার হবে।
দয়া বা অনুগ্রহের চিন্তা থেকে কাউকে বিয়ে করা ইমম্যাচিউরিটি। বরং মাকাসিদে শরিয়ারও খেলাফ। বিয়ে করা উচিত সুন্নাহ অনুসরণের প্রেরণা থেকে। নিয়ামতের শোকরগোজারির তাড়না থেকে। আল্লাহর কোনো বান্দির দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেওয়ার নিমিত্তে। দয়া বা অনুগ্রহের চিন্তা থেকে যে বিয়ে সম্পন্ন হয় সেখানে স্ত্রীর কোনো মূল্য থাকে না। আদতে ওইসব বিয়ের মাধ্যমে আল্লাহর এক বান্দিকে অপদস্থ করা হয়। আমৃত্যু তাকে অপমানকর অনুভূতির কবরে নামিয়ে দেওয়া হয়।
একাধিক বিয়ের কথা উঠলেই পশ্চিম ও তাদের অনুসারীদের ইমম্যাচিউরিটি নগ্ন হয়ে ধরা পড়ে। হাস্যকর যুক্তি আর বালখিল্যতাপূর্ণ প্রস্তাব তাদের মানসিক দৌর্বল্য প্রকট করে তোলে। সারাদিন ব্যক্তিস্বাধীনতার হুক্কাহুয়া করা প্রগতিশীলরাও তখন অন্যের ওপর আপন মর্জি চাপিয়ে দিতে মরিয়া ওঠে। এদের এসব ডাবল স্ট্যান্ডার্ট দেখে সচেতন মুসলমানরা করুনা বোধ করেন।
সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। এমন একটি প্লাটফর্ম দরকার ছিল। আশা করবো কার্যকর ফল বেরিয়ে আসবে এবং সংগঠন স্থিতিশীল হবে।
তবে, মুফতি বোর্ড নামটা সুন্দর লাগছে না। ভিন্ন নাম ভাবা গেলে ভাল হতো। ফিকহ বোর্ডও হতে পারতো।
এক বন্ধুবর মুফতি সাহেব তার কর্মস্থল মসজিদে আগত রমজানে খতম তারাবি পড়ানোর জন্য হাফেজ নিয়োগের এই বিজ্ঞপ্তি পোস্ট করেছেন। পোস্টের কমেন্ট বক্সে একজন মন্তব্য করেছেন :
"একজন হাফেজের শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদপত্র সহ যাবতীয় তথ্য সবকিছুই তারা নিবে অথচ হাদিয়াটা কত সেটা তো উল্লেখ করল না????'
আমি বেশ কিছুক্ষণ মন্তব্যকারীর প্রশ্ন নিয়ে ভাবলাম। কোনো অযৌক্তিকতা আছে কী? "হাদিয়া' শব্দটা ছাড়া আর কিছুই আমার অযৌক্তিক মনে হলো না। হালাল-হারামের প্রশ্ন এড়িয়ে গেলে প্রশ্নটি যৌক্তিক এবং নিয়োগের সময় যোগ্যতার শর্তারোপিত হলে "পারিশ্রমিক' পরিষ্কার থাকা বাঞ্ছনীয়। নতুবা, যিনি শ্রম দেন তার প্রতি জুলুমের পথ খুলে যায়। এজন্য শ্রমিক নিয়োগের সময় পারিশ্রমিক স্বচ্ছভাবে উল্লেখ করা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান। উল্লেখ না করলে শ্রমচুক্তি শুদ্ধ হবে না।
হালাল-হারামের প্রশ্ন তুলতে গেলে ইন্টারভিউয়ের ওপর প্রশ্ন ওঠাও অনিবার্য। উদ্দেশ্য যদি কেবল কুরআন খতম করা ও শোনা হয়ে থাকে তো ইন্টারভিউয়ের এসব তামাশা কি প্রয়োজনীয়? এলাকার হাফেজ সাহেব দিয়েই তো উদ্দেশ্য অর্জিত হতে পারে; বিশ্ববিখ্যাত দেশবরেণ্য আন্তর্জাতিক মানের হাফেজ কী দরকার! নাকি নাম ফুটানোও উদ্দেশ্য থাকে? বরং, বিশ্ববিখ্যাত হাফেজ সাহেব যে এলাকায় জন্মেছেন তারাই বেশী হকদার তাকে পাওয়ার। আরো ভাল করে বললে, যত ক্ষুদ্র ও ভাঙাচোরাই হোক, যে মসজিদে তার বাবা-দাদা নামাজ পড়েছেন সেখানেই এলাকার প্রতিবেশীদের কুরআন কারীমের খতম শোনানো উচিত তার। কিন্তু, হিসেব যেহেতু চলে কথিত "হাদিয়া'র অঙ্ক হিসেব করে তাই তামাশাপূর্ণ ইন্টারভিউয়ের এই জিল্লতি ও আপনজনদের বঞ্চনা। না হাফেজ সাহেব আর না মসজিদ কমিটি; কেউই হারামের ফতোয়ার তোয়াক্কা করেন না। তাই হালাল-হারামের আলাপ এড়িয়ে অন্তত যৌক্তিক আলোচনা মানার মানসিকতা তৈরি করা উচিত।
এই ছবিটা বারবার সামনে আসছে। অনেক ভাই সচেতনতা সৃষ্টির জন্য ইখলাসের সহিত স্ক্রিনশটটি বারবার ইনবক্সে দিচ্ছেন। ধারনা করছি, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই মুসলমান ভাইদের কল্যানকামিতা থেকে এই কাজ তারা করছেন। কিন্তু, এসব বারবার দেখতে দেখতে মনে হলো, কিছু কথা বলা উচিত।
অনলাইনের সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, এখানে কখন কার কথা দলিল বনে যায় তার কোনো ঠিকঠিকানা নেই। ধরুন, দীনি কোনো বিষয়ে গ্রহণযোগ্য কোনো শাস্ত্রজ্ঞ আলেম ফেসবুকে কোনো কথা তুললেন। বিষয়টি যদি পাঠকবন্ধুদের চিন্তা-ভাবনার সাথে সাযুজ্যপূর্ণ হয়, আপনি দেখবেন, "ঠিক বলেছেন, মুহতারাম' আর "সহমত, শাইখ' লিখে মন্তব্যঘর ভরে ফেলা হয়েছে। একই আলেম যদি দলিল-প্রমাণ উল্লেখপূর্বক বন্ধুদের "খাহেশাত' বিরোধী কোনো কিছু লিখে ফেলেন তো সেখানে "আপনার আরও গবেষণা করা উচিত' ধরণের অমূল্য উপদেশমালার বাজার বসে যাবে। বিপরীতে কোনো গায়রে আলেম ব্যক্তি যদি দলিল-প্রমাণ খণ্ডন ব্যতিরেকেই সেই শাস্ত্রজ্ঞ আলেমকে নিয়ে ট্রল পোস্ট করেন, আপনি দেখবেন, মনের জ্বালা উগড়ে দিয়ে ওই আলেমকে সেই পোস্টে "জাহেল' ঘোষণা দেওয়া হবে এবং পোস্টদাতাকে "সহমত, শাইখ' বলে সাদরে বরণ করা হবে। উপরন্তু, অনেক সময় ওই ধরনের "হাস্যকর' ট্রল পোস্টকে "দলিলসমৃদ্ধ' লেখনীর তকমা দিয়ে দেওয়া হবে; বিনা দলিলে।
গুজব পোস্টগুলো এখানে বেশী রিচ করে। এই স্ক্রিনশটটার কথাই ধরুন; পোস্ট কে করেছে তার কোনো হদিস আছে? নেই। যে পোস্ট করেছে সে কোন ধর্মের সেটা বোঝাও সম্ভব নয়। সর্বোচ্চ ধারণা করা যেতে পারে; দলিল না থাকলে সেই ধারণাও তো অমূলক। অমূলক ধারণার ওপর একটা ফেইক আইডিকে কট্টর হিন্দুর লেখনী ধরে নিয়ে তার স্ক্রিনশটকে ভাইরাল করা হলো। এটা কি ইসলামি ফিকহের মূলনীতি অনুসারে গ্রহণযোগ্য হবে? হবে না। ফিকহের মূলনীতি হলো ফাসিকের প্রদত্ত খবরকে আগে যাচাই করতে হবে। এখানে তো আইডি নামটাই কাফেরের; যাচাই করা ছাড়া এটা কীভাবে ছড়ানো বৈধ হয়? বরং এভাবে সাধারন্যে ওয়াসওয়াসা বৃদ্ধি করা হয়। অনন্যোপায় হলে (এবং বিকল্পহীন এই ভূমিতে বারবার অনন্যোপায় হতেই হবে) ভুক্তভোগী গুনাহের ওয়াসওয়াসা সহ খেতে ও গ্রহণ করতে শুরু করবে এবং একসময় সকল গুনাহের প্রতি বেপরোয়া ভাব চলে আসবে। সাময়িক লাভ মনে হলেও দীর্ঘস্থায়ী ক্ষতির কারণ হয়ে যাবে এই "ইখলাসপূর্ণ' প্রচারণা।
স্ক্রিনশটটির আলোকে হিন্দুর দোকানের মিষ্টিকে অবৈধ বলা যাবে? যাবে না। ফিকহের মূলনীতি হলো,
أصل الأشياء الإباحة
সুতরাং, নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়ার আগে একে অবৈধ বলা সম্ভব নয়। যদি নিশ্চিত প্রমাণ থাকে এবং শরয়ি মানদণ্ডে প্রমাণিত হয় তাহলেই কেবল সচেতনতার জন্য এভাবে প্রচার বৈধ হবে এবং খাওয়া পরিত্যাগ করা বাধ্যতামূলক হবে। অন্যথায়, ব্যক্তিগত পর্যায়ে "বেছে' চলতে পারে; অন্যকে বিরত থাকতে জোর করা, খাওয়ার কারণে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করা বা অপপ্রচার চালানো সম্পূর্ণ অনুচিত কর্ম। আমার আবেগের বিপরীত হলেও এটাই বাস্তবতা। শরিয়তকে আবেগের ওপর প্রাধান্য দেওয়া অপরিহার্য।
সুতরাং, ভাইয়েরা আমার, সম্ভব হলে অকুস্থলে গিয়ে যাচাই করুন, প্রমাণ সংগ্রহ করুন এবং উলামায়ে কেরামের সাথে কথা বলে সুস্পষ্ট ফতোয়া সংগ্রহ করুন। তারপর প্রচারণায় নামুন। এসব না করে কেবল অচেনা লোকের স্ক্রিনশট পেয়ে প্রচারণায় নেমে পড়া নবীজীর ভাষা অনুযায়ী "মিথ্যুক' হওয়ার জন্য যথেষ্ট।
বাঙালির উর্দু দক্ষতা
(মজা না পাইলে এমবি ফেরত)
উর্দু কা জয় বাংলা কর দিয়া:
১. করাচিতে একবার এক বাঙালি ছাত্রকে পুলিশ ধরে আইডি কার্ড দেখতে চাইলে সে বেশ ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বলে, সারা করাচি বাঙালি সে ভর গিয়া, সেরেফ মুঝে কিউ ধর গিয়া।
রাবী: আহমাদ ইউসুফ শরীফ ভাই। সনদ নির্ভরযোগ্য। হাসান সনদে বর্ণিত ঘটনা।
২. ফিদায়ে মিল্লাত আসআদ মাদানী সিলেটের এক মাদরাসায় আসলেন, ছাত্র একজনকে পেয়ে জিজ্ঞেস করলেন ত্বলাবা কা হাল কিয়া হ্যে?
সে উত্তর দিল, মোটামুটি হ্যে...
~~~
ঘটনার রাবি সিকাহ৷
৩. দেওবন্দে আরেকটি প্রসিদ্ধ ঘটনা আছে। এক লোক দারুল উলুমের এক উস্তাদের সঙ্গে সাক্ষাত করতে এলে তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, খাইরিয়্যত সে হে? লোকটি জবাব দিলো, নেহি, কলকাত্তা সে.. (হাসান আজিজ)
৪. ভার্সিটির বড় ভাইদের মুখে শোনা ঘটনা। আমাদের ভার্সিটিতে প্রায় ১০/১২ বছর আগে এক পাকিস্তানি জামাত আসছিলো। বর্ষা মৌসুম, জামাতের এক সাথী কোনোদিন ব্যাঙ দেখে নাই। আমাদের এক ভাইকে জিজ্ঞেস করতেছেন, "ইয়ে কিয়া হ্যায়?" ঐ ভাই বললেন- "ইয়ে ব্যাঙ হ্যায়!"
"ব্যাঙ কিয়া হ্যায়?" "আরে ব্যাঙ তো ব্যাঙ হ্যায়"
বেচারা তো বুঝেই না। পরে ভাই বলতেছিলেন- "ব্যাঙ উও হ্যায় যো ঘ্যাং ঘ্যাং করতা হ্যায়"
বি. দ্র. সবগুলোই সংগৃহীত।
জাঁকিয়ে শীত নেমেছে। কম্বলের ওম ছেড়ে বেরুতে ইচ্ছে করছে না। উপরন্তু, বরফগলা হিমশীতল পানি দিয়ে অজু করতে হবে ভাবতেই গায়ে কাঁটা দিচ্ছে। মনে মনে ভাবছেন, আহা, এযাত্রায় পানির হাত থেকে বাঁচা গেলে বেশ হতো। এমন ভীষণ শীতকাতরদের জন্য একখানা "অনুপ্রেরণামূলক' হাদিস :
ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ، ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ اﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ اﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ: «ﺃﻻ ﺃﺩﻟﻜﻢ ﻋﻠﻰ ﻣﺎ ﻳﻤﺤﻮ اﻟﻠﻪ ﺑﻪ اﻟﺨﻄﺎﻳﺎ، ﻭﻳﺮﻓﻊ ﺑﻪ اﻟﺪﺭﺟﺎﺕ؟» ﻗﺎﻟﻮا ﺑﻠﻰ ﻳﺎ ﺭﺳﻮﻝ اﻟﻠﻪ ﻗﺎﻝ: «ﺇﺳﺒﺎﻍ اﻟﻮﺿﻮء ﻋﻠﻰ اﻟﻤﻜﺎﺭﻩ، ﻭﻛﺜﺮﺓ اﻟﺨﻄﺎ ﺇﻟﻰ اﻟﻤﺴﺎﺟﺪ، ﻭاﻧﺘﻈﺎﺭ اﻟﺼﻼﺓ ﺑﻌﺪ اﻟﺼﻼﺓ، ﻓﺬﻟﻜﻢ اﻟﺮﺑﺎﻁ.
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত, নিশ্চয়ই নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আমি কি তোমাদের এমন আমলের কথা বলে দেবো না যার মাধ্যমে গুনাহ মাফ করা হয় এবং মর্যাদা বৃদ্ধি করা হয়? সাহাবীরা বললেন, অবশ্যই, হে আল্লাহর রাসূল। নবীজি বললেন,
১. অপছন্দ সত্ত্বেও (কষ্টকর হওয়ার পরেও) অজু পরিপূর্ণ করা।
২. মসজিদের প্রতি পদক্ষেপ অধিক হওয়া।
৩. এক নামাজের পর আরেক নামাজের জন্য অপেক্ষা করা। এটা হলো রিবাত (সীমান্ত প্রহরা)। (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং - ২৫১)
চলতি মাসের নাসিহাহ - Naseehah পত্রিকা প্রকাশিত হয়েছে। পুরো আয়োজনটি সাজানো হয়েছে আকসা ও ফিলিস্তিন নিয়ে। আমার লেখাটি শুরুতেই পেয়ে যাবেন। ভাষায় বেশ আবেগ ও উত্তেজনা আছে। নিয়ন্ত্রণ করতে পারি নি। আগ্রহীরা পড়ে দেখতে পারেন। লিংক কমেন্টে দিয়ে দিচ্ছি।
হয়তো শরিয়ত নয়তো শা*হা*দা*ত
এমনিতে ওয়াজ-বয়ান খুব একটা শোনা হয় না। অসুস্থতায় পড়ে শুয়ে শুয়ে করার মত এই কাজটি পাওয়া গেল। বেশ কয়েকদিন যাবত রফিকুল ইসলাম নেত্রকোনাকে নিয়ে কথাবার্তা হচ্ছে। নদীতে ডুব-সাঁতারের ভিডিও দেখে মনক্ষুণ্ণ হচ্ছেন। একজনকে নিয়ে আলোচনা শুরু হলে যা হয়, তার সবরকম ভিডিও সামনে আসতে থাকে। ফলে অনুসন্ধান ছাড়াই তার বেশকিছু মাহফিল-ভিডিওর শর্ট ক্লিপ সামনে চলে আসে। শুয়ে শুয়ে দেখি আর আগামী নিয়ে চিন্তা করি।
আজ একটা শর্ট ক্লিপ দেখলাম তার। শিরোনাম বোধহয় ছিল .....বাসী সবাইকে শেখালেন রফিকুল ইসলাম মাদানী। ভেবেছিলাম, দোয়া-কালাম কিছু শিখিয়েছে হয়তো। ভিডিওতে দেখা গেলো, সে আসলে স্লোগান শেখাচ্ছে। "হয়তো শরিয়ত নয়তো শা*হা*দা*ত'। এটার আরবি অনুবাদও শেখাচ্ছিল সে। বেশ চমৎকার লাগলো।
যেকোনো মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয় স্লোগান থেকে। একটা পাওয়ারফুল স্লোগান পুরো জাতির রক্তে আগুন ধরিয়ে দিতে সক্ষম। অধঃপতিত বাংলাদেশী মুসলিম জাতির স্বাধীনতা অনেক আগেই শৃঙ্খলিত হয়েছে গণতন্ত্র ও পুজিবাদের বেড়িতে। বাকস্বাধীনতা, মানবাধিকার ইত্যাদি প্রতারণামূলক চটকদার শব্দের ধোঁকায় লুণ্ঠিত হয়েছে চিন্তা করার সুস্থ বিবেক। বীর মুসলিম তারুণ্য পরিণত হয়েছে গণতন্ত্রের সেবাদাসে। আপন সামর্থ্য, সক্ষমতা, শিক্ষা, দীক্ষা, অনুভব, অভিজ্ঞতা গণতান্ত্রিক নৈরাজ্যের পদতলে সমর্পণ, নিবেদন করে ইহকালীন মহার্ঘ লভিত হয়েছে বলে আত্মপ্রসাদে ভুগছে। এইসময় এমন স্লোগান আরও আরও দরকার।
তন্ত্র-মন্ত্রের দিন শেষ
শরীয়তের বাংলাদেশ
পদ্মা মেঘনা যমুনা
গণতন্ত্র মানি না
দিকে দিকে এ কী শুনি
খি*লা*ফা*তে*র জয়ধ্বনি
দীনের দাওয়াত নিয়ে যে সকল মুহতারাম আলিম বিভিন্ন প্রোগ্রাম করছেন দেশজুড়ে এই স্লোগানগুলো উপস্থিত শ্রোতাদের শিখিয়ে দিতে পারেন। নিজেও বানিয়ে নিতে পারেন নতুন নতুন স্লোগান। ইনশাআল্লাহ, পরিবর্তন আসবে; আসতে শুরু করেছে।
বিয়ের আগে অবশ্যই পাত্র-পাত্রী সম্পর্কে ভালো করে খোঁজ নিন। ইদানিং বিয়েতে প্রতারণার পরিমাণ অনেক বেড়ে গেছে। অন্ধবিশ্বাস ভাল নয়।
উস্তাযে মুহতারাম, ফকিহুল আসর, শাইখুল হাদীস আল্লামা মুফতি মিজানুর রহমান সাঈদ হাফি.
প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ও প্রধান মুফতি
শাইখ যাকারিয়া ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার ঢাকা।
একাধারে হযরতওয়ালা হারদূঈ মুহিউস সুন্নাহ মাওলানা আবরারুল হক রহ. ও পীর জুলফিকার আহমদ নক্শবন্দী দা.বা. এর সুযোগ্য খলিফা। রব্বে কারিম তার ছায়াকে আমাদের ওপর দীর্ঘস্থায়ী করুন।
শারীরিক হরেক রকম অসুস্থতা ও দুর্বলতা সত্ত্বেও দেশের প্রতিটি পথে-প্রান্তরে হকের দাওয়াত নিয়ে নিরন্তর ছুটে চলেন। আরাম-আয়েশের সবরকম ইন্তেজাম পায়ে ঠেলে প্রত্যন্ত অঞ্চলের ভাঙাচোরা মেঠোপথ বেয়ে শরীরের ওপর বেরহমি করে নিয়মিত হাজির হন টিমটিম করে জ্বলতে থাকা গ্রামীণ মাদরাসাগুলোর অনাড়ম্বর সভা-মাহফিলে। সহস্র ব্যস্ততার ভিড়েও দারসে হাদিসের এই প্রোজ্জল নক্ষত্র ঠিক ঠিক হাজির হন তৃষিত তালি*বা*নে ইলমের পিয়াস মেটাতে। রাত্রির শেষ প্রহরে যখন নিদ্রাগত পুরো জগত-সংসার কলম হাতে তখন তিনি শুধরে দিতে থাকেন হবু মুফতিদের আনাড়ি হাতের "তামরিন'গুলো। লিখে যেতে থাকেন সংকটাপন্ন মুসলিম জনগোষ্ঠীর উত্তরণের উপায়। শেষ রাত্রির নিরব নৈশব্দে তার শালপ্রাংশু হাত বেয়ে নেমে আসে গুরুত্বপূর্ণ সব আরবি-বাংলা রচনা। যার খুব কম সংখ্যকের কথাই আমরা জানতে পেরেছি।
যে মহান মানুষটির শিষ্যত্ব তিনি লাভ করেছেন তার ব্যক্তিত্বের জলওয়া নিয়ত প্রতিবিম্বিত হয় তার মাঝে। শাইখুল ইসলাম মুফতি তাকি উসমানি সাহেবের রঙ আবির ছড়ায় তার ব্যক্তিত্বের দ্যুতিতে। সাথে মিশে থাকে দু দুজন আল্লাহওয়ালার দুআ ও ভালবাসার সুরভী। সবটুকু মিলে যেন হাকিমুল উম্মত থানভি রাহিমাহুল্লাহর আলোকিত সৌরভ প্রদীপ্ত হয়ে ওঠে তার মাঝে। তিনি আমার উস্তায। জীবনের পাঁচটি বসন্ত আমি কাটিয়েছি তার নরম-কোমল ছায়া সুনিবিড় আশ্রয়ে। নেবার পাত্র আমার ছিল নিতান্ত ক্ষুদ্র; তাই একরাশ মুগ্ধতা ছাড়া আর কিছুই প্রায় হৃদয়বন্দি করতে পারি নি। আমার এই অভাববোধ আমৃত্যু ঘুচবে না।
ছাত্রজীবন থেকে আকাঙ্খা পুষে রেখেছি মন-অন্দরে, তাকে নিয়ে লেখবো হৃদয়ের কথা। অক্ষমতার দ্বিধাটুকু কাটিয়ে উঠতে পারলে সেই মাহেন্দ্রক্ষণের মোলাকাত হবে অবশ্যই। কামনা শুধু, হারায়ে না ফেলি যেন এই গরবের ধন।
চতুর্ভুজের পঞ্চম সংখ্যায় প্রকাশিত লেখাটা পড়ে আমার এক প্রিয় পাঠিকা জানিয়েছেন, "অনেকদিন পর ওর লেখায় প্রাণ খুঁজে পেলাম।' আরেক পাঠিকা বলেছেন, "লেখাটা বেশ মায়াবী ছিল।'
এখনো কোনো পাঠকের মন্তব্য পাই নি। প্রিয় কিছু মানুষ, যেমন : সাইফ সিরাজ , Saber Chowdhury , Hasan Aziz এবং জুবায়ের রশীদ এর মন্তব্যের অপেক্ষায় আছি। সুখের ব্যাপার হলো এদের সবার লেখাই আপনি চতুর্ভুজে পাবেন।
এখনও পড়ে না থাকলে, লিংক কমেন্টে রইল।
Click here to claim your Sponsored Listing.
Videos (show all)
Category
Contact the public figure
Address
Duttapara
Gazipur, 1712
Tuhin sarwar, an international media platform journalist in Bangladesh!
Gazipur
Always focus on three things . Yourself ‚ Your Happiness ‚ Your Life. The world will adjust itself.
Gazipur, 1704
This is a personal blog page of mine nothing else. Everything will store here just as a memories of my life. I love memories.