Galib's Journal
মনের আনন্দে লিখালিখি করতে গিয়েই Galib's Journa
বিক্রি হবো কি দাম দেবে বলো?
দরদাম ঠিকঠাক
ভিটেমাটি ছিড়ে যাক,
জীবনের গল্পে
হারজিত নাটকে,
পুড়েসব একাকার।
হিসাব টা শক্ত,
মেলে না কোন সূত্রে,
ভগ্নাংশটা রয়েই যায়,
দিনরাত হাহাকার
কি যেন বলে সে করে চিৎকার?
কানপেতে শুনে যাই
কি এক গভীর তার দীর্ঘশ্বাস।
নোনা জল ফেলে না
কাউকে সে বলে না,
নেই কোন অভিযোগ
শরীরের কতশত রোগ,
কেউ তা জানে না।
তবু সে ঘুরে ফিরে ফিরে
হাঁট থেকে হাঁটে যায়,
ক্লান্ত কন্ঠে বলে ওঠে আজ,
বিকিকিনির এই হাটে
তুমি যা দেবে তাতেই আমি রাজী,
বিক্রি হবো কি দাম দেবে বলো!
©
শিরোনামহীন
ঘুম জড়ানো চোখে জোর করে চেয়ে থাকা---
তোমার পদধ্বনি শোনার আশায় ।
ঘরের বাইরে গাছেদের ভিড়ে কিসের শব্দ যেন....!
আশাতুর হৃদয় কান পেতে শোনে---
রাতের আকাশে তুমি কি
চাঁদ নিয়ে এলে
আমাকে ভোরের গল্প বলবে বলে....?
আলহামদুলিল্লাহ-প্রকাশিত হলো আমার প্রথম কবিতার বই । কবিতার পৃথিবী সংগঠনের প্রথম যৌথ কাব্যগ্রন্থ কবি মহসীন সৈকত কর্তৃক সম্পাদিত " একঝাঁক জোনাকির স্বপ্ন " প্রকাশিত হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ।
অমর একুশে বইমেলা ২০২৩ এ কারুবাক প্রকাশনীতে পাওয়া যাবে।
রকমারি তে অর্ডারের লিংক -📷https://www.rokomari.com/book/277487/ekjhak-jonakir-swapno
#কবিতারবই
#একুশেবইমেলা
#একঝাঁকজোনাকিরস্বপ্ন
এই প্রিয় শহরে
এই শহরের মানুষ গুলো প্রয়োজনে সম্পর্ক রাখে-
এই শহরের মানুষ গুলি বড্ড আজব,
পাঁচ টাকার জন্য রিকশাওয়ালাকে থাপ্পড় দেয়,
আবার রাতের আধারে বারে গিয়ে পাঁচশ টাকা টিপস দেয়
মানুষ গুলো কেমন যেনো?
অফিস থেকে দীর্ঘ পথ খরচ বাঁচিয়ে হেঁটে এসে
বাবুর জন্য মজা নিয়ে হাসি মুখে ঘরে ফিরে,
আজিব শহরের আজিব মানুষ গুলো
-টিউশনের টাকা বাঁচিয়ে দূর গ্রামে মা'কে টাকা পাঠায় চিকিৎসার জন্য
শহরের মানুষ গুলো অবলীলায় অনেক কষ্টে কেনা প্রিয় সেলফোন টা বিক্রি করে প্রিয়ার টিকালো নাকে একটা নাকফুল এনে দেয়-
আজিব মানুষ গুলো
তোমার সাথে দেখা হবার ভয়ে রাস্তা বদল করে ফেলেছি সেই কবে -
শহরের হাজারো গলি তে কবেই হারিয়ে ফেলেছি নিজেকে
এই শহরে প্রয়োজন ছাড়া কেউ কারো সাথে সম্পর্ক রাখে না,
স্বার্থ ছাড়া আজকাল আর কথা বলে না
প্রতিদিন হাজারো স্বপ্ন ভাঙ্গে এই শহরের হাজারো ও কানাগলিতে
আবার স্বপ্ন গুলো রঙ্গিন ফিতেয় জোড়া দেয় হাজারো স্বপ্নীল চোখ।
©️
ছবি : Arif Hossain
কাঁচের বয়াম
আমার দীর্ঘশ্বাস যদি তোমাকে
বিদীর্ণ না করে
তবে জেনো আমি কোন
দীর্ঘশ্বাস ফেলিনি
আমার দীর্ঘশ্বাস যদি তোমাকে
স্পর্শ না করে –
তবে আমি তা গোপন করেছি
আমি দীর্ঘশ্বাস গুলো
জমা করেছি তোমার জন্য
একটা রঙ্গিন কাঁচের বয়ামে
আমার যত দীর্ঘশ্বাস
দেবো তোমায় উপহার ।।
বয়াম খুলে ছুয়ে দেখো
একটা একটা করে আমার
দীর্ঘশ্বাস গুলো
বন্ধ ঘরের দীর্ঘশ্বাস
মেঘলা দিনের দীর্ঘশ্বাস
কথা দিয়ে না কথা রাখা দীর্ঘশ্বাস
আজন্ম পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়ে
প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ করার দীর্ঘশ্বাস
একজন ব্যথ প্রেমিকের
ব্যকুল হৃদয়ের দীর্ঘশ্বাস
এত এত দীর্ঘশ্বাস
তুমি ছোবে তো?
©️
ফেলে আসা আমাদের দীর্ঘশ্বাস
হুট করে 'ভালোবাসি' বলে ফেলা মানুষটির সাথে
যদি কোন দিন দেখা হয়ে যায় চলতি পথে…..
হয়তো আবার দেখা হবে, কিন্তু আর কথা হবে না,
কি চায়ে’র কাপে একটা চমুক দিয়ে বাকি টুকু তোমাকে দেওয়া হবে না
বাতাসে তোমার এলোমেলো চুলগুলো আর সাজিয়ে দেবো না
হঠাৎ করে বাসন্তী রং এর শাড়ীতে চমকে, মাথায় বেলী ফুলের মালা জড়িয়ে দেবো না
তোমার ছেলেমানুষী অভিমান গুলো ভাঙ্গাতে -
পথের ধারে ‘ফুচকা খাবে?’ আর বলা হবে না
চলতি পথে হঠাৎ নামা বৃষ্টিতে আর তোমায় হাত ধরে রাস্ত মাপা হবে না
শহুরে কোলাহল থেকে দূরে হিমেল বাতাসে ,মেঠো পথ, আর সবুজের ঘ্রাণে হঠাৎ তোমায় নিয়ে আর হারানো হবে না
কোনদিন থিয়েটারে হঠাৎ করে তোমার হাসি টুকু লুকিয়ে আর দেখা হবে না
কি সারাটা রাত তোমাকে না দেখার তৃষ্ণায় তৃষ্ণার্ত আমি
তোমাকে হঠাৎ করে আর ডেকে পাঠাবো না।
ট্রেনটা প্লাটফর্ম ছেড়ে বেরিয়ে গেছে সেই কখন
আমি শুধু কয়েক ফোঁটা শুভকামনা তোমার ট্রেনে ফেলে দিয়েছি
তোমার জন্য ...তুমি ভালো থেকো।!
আমাদের আবার দেখা হবে , এভাবেই ! ইচ্ছা অনিচ্ছাতে...
আমাদের ভালো-মন্দে কিছু যায় আসে না কারো
আমরা হারিয়ে যাবো একদিন
শুধু রয়ে যাবে তোমার-আমার
ফেলে যাওয়া পথের দীর্ঘশ্বাস টুকু ।।
*ছবি -ইন্টারনেট
ফিরে আসা
তোমার গলায় আমার বসন্তের দাগ,
আমার ভালো বাসার গোলাপ তোমার হাতে,
শরীরে তোমার আমার স্বপ্ন মাখা ,
তোমাকে ফিরতেই হবে আমার কাছে
যতদূরে তুমি যাও। আমি যে তোমার নিঃশ্বাসে।
ছবিঋণ: Avanish Trivedi
অবিনাশ এিবেদীর ছবি টা কে দেখে এই লাইন গুলো চলে এলো মনে
©️
ভালোবাসায় কষ্ট নেই
এখন আর ভালোবাসায় কষ্ট নেই
নেই কোন রঙ্গিন প্রজাপতি
হাতে নেই রংধনু
নেই জড়ানো বেলী ফুল
এখন সবটুকুই যেনো ভুল।
আবেক হারানো খেলাঘরে
স্বপ্ন গুলো খেলা করে।।
দেয়ালে মরিচীকা
কষ্ট গুলো ঘুরে একা।
এদিক-সেদিক
ভালোবাসার সবদিক
সব কিছুর দুয়ার খোলা
ভালোবাসার কত দুয়ার
বিকিকিনি হাটে –ঘাটে
বিকোয় সে প্রতিরাতে
এখন আর ভালোবাসায় কষ্ট নেই।
নতুন যাএা’র মুসাফির
খুব প্রত্যুষে,
অনেক আগে কক্সবাজারে একবার সূর্য উদয়
দেখেছিলাম তোমার হাত ধরে,
সে সময়টা নাতো?
নাকি বেলা দ্বি-প্রহর?
পুরা মাস ভরা পূর্ণিমা'র চাঁদ’ টা
যখন থালার মত, ভাসিয়ে দেয় পৃথিবী,
পূর্ণ মাসের পোয়াতি’র মত চাঁদ টা কে
যখন একঝাঁক বক এসে ঢেকে দেয়,
তোমার মনে আছে গ্রাফিক্স আর্ট'স
কলেজের মাঠে বসে,
আমরা একবার একসাথে সেই অপূর্ব দৃশ্য দেখেছিলাম,
তোমার কোলে মাথা রেখে ।
সময় কি সেটা?
সময় হিসেব টা বড্ড গোলমেলে মিলে কি বলো?
আমার শেষ যাবার সময়-
অনেক কাঠ-খড় পুড়িয়ে ইরানে’র 'কাশান' থেকে আনা
‘গোলাপ’ আতর টা কি দেবে কিছু আমার গায়ে ঢেলে!
তুমি তো জানো সেটা আমার
কত পছন্দের ছিলো?
কত কিছুই তো পছন্দের ছিলো!!
সব ফেলে চলে যেতে হবে তাই না!
কিছুই কি দেবে না সাথে?
কড়িডোরে লাগানো মানিপ্ল্যান্ট টা বড় সুন্দর হয়েছে
পাতাগুলো কেমন নাদুস-নুদুস,
রোজ সকালে পাতা গুলো কে আদর না দিলে
আমার দিন শুরু হতো না,
বড্ড ছুঁতে ইচ্ছে করছে।
কি কারবার সব জায়গা মতই আছে !!
বুক সেলফের বই’ গুলো মাঝে মাঝে ঝেরে রেখো।
আমার অনেক পছন্দের সাদা পান্জাবী গুলো
যেগুলো মাঝে মাঝে আমি ‘আব’ দিয়ে পড়তাম
বড় ভালো লাগতো! দিয়ে দিও যে চায়!
আজ ও আমার সাদা কাপড়ই পড়া
কিন্তু তোমরা কোন সেলাই দিলে না তাতে!!
না আমি কিছু মনে করেনি, মেনে নিয়েছি
না মেনে কি উপায় বলো?
ততক্ষণে আমি বুঝে গেছি
পৃথিবীর বুকে আমার ভূমিকা শেষ।
সবাই ভুলে যাবে একসময়ে
যে আমি নামে ‘কোন এক আমি’ ছিলাম একদিন।
আমি সকালে যে কোরআণ শরীফ ‘টা পড়তাম
মাঝে মাঝে তোমরা পড়ো,
যদি আমার কাছে তার কথা গুলো পৌছে,
আমি যে কান পেতে রবো।
তোমরা আমাকে রেখে চলে এসো না
আমার ‘অনন্ত যাএায়’-কিছু সময় থেকো,
আমি যে বড় একা হয়ে যাবো।
তুমি তো জানো –
আমি মানুষ ছাড়া এক মূহুর্ত থাকতে পারি না,
বন্ধুবৎসল মানুষ আমি ।
বন্ধুহীন চলে যেতে হচ্ছে!
মন খারাপ করা মেঘ জমলে আকাশে,
ঝুম বৃষ্টি নামলে কি আমার কাছে যাবে সেদিন?
আমি বৃষ্টিতে ভিজে যাবো,
গ্রীস্মের রোদে পুড়তে থাকবো,
আকন্ঠ পিপাসার্ত আমি তোমার অপেক্ষায় থাকবো!
তুমি কি একটু এসে ‘সূরা ইয়াসীন’ পড়ে
আমার পিপাসা সেদিন মেটাবে না?
সময়টা তে কি তুমি আমার হাতটা ধরে থাকবে?
তোমার মুক্তো দানা কি আমার হাত ছোবে তখন?
“লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ” পড়তে
আমার শেষ বেলায় সাহায্য করো আমায়,
মিনতি আমার তোমার কাছে!!
শুইয়ে আমায় মাটিতে
মুখটা আমার খুলে দিও
আমার কাবার দিকে,
শুয়ে শুয়ে দেখি যেনো
আমার আল্লাহ- রাসুল কে।
©️
04/09/2022
5:02pm
মোনাজাত
হে গাফুরুর রহীম দয়াময়
শোনো না আমায়।।
মাফ না করে গোর আজাব
ডোকো না তোমার ঔ অন্ধকার
প্রকোষ্টে আমায়।।
তুমি যদি না করো মাফ
কি হবে আমার হেথায়।
ডাকবে যখন সহজ করে দিয়ো তখন
তোমার মুনকার নাকিরের সওয়াল জওয়াব
না দিয়ে লজ্জা আমায়।
আমি গুনাহগার পাপী তোমার
ছিলো না কোন কিছু আমার দেখাবার
তুমি না দিলে বারাংবার,
ইজ্জতের কসম তোমার
ফিরায়ে না আমায় এবার।।
তুমি দয়াময় আলো দিও হেথায়
যে পড়ে এই লাইন খানি তুমি মাফি দিয়ো ও তারে, ও রাহমানুর রাহিম,ও গাফফার, ও সাওার,ইয়া যাল জালালি ওয়াল ইকরাম।।
তোমার ডাকের অপেক্ষায় থাকি
ঘুরি সারাক্ষণ তোমারই নাম গুনে গুনে
তুমি যখন দিবে ডাক
কে আছে তারে রুখিবার,
মিনতি করি দয়াময় তোমার দিদার ও তোমার রাসুলের ছায়া দিয়োগো হেথায়
আমার আর কিছু নাহি চাহিবার সেথায়।
19/08/2022
©️
প্রার্থনা
মধ্য '৫২ এক দারুণ সময়
কি আনন্দের, কি বিষাদের
কি ভাঙার,কি গড়ার
কি প্রেমের, কি বিরহের।।
কোন বাঁধা নেই,কোন মানা নেই,
কোন ভয় নেই তোমার হাত খানি ধরার।
কি চিৎকার করে বলে ওঠার
"লাঙল যার জমি তার"
গোর্কির মা'কে বড় ভালবাসি
কি তোমার মা'কে দেখে ও আনন্দে ভাসি
এই মধ্য ৫২' তে
আমি এখন আকাশের ঠিকানাটাও জানি -জানো চিঠি দিলে ঠিকঠাক
পৌঁছে যায়, এ এক দারুণ অনূভুতি!!
চিৎকার করে বলি তোমাকে ভালোবাসি
আরো চিৎকার করে বলি তোমাকে ঘৃণা করি।।
তোমার হাতে এখন ও দিতে চাই
বর্ষায় ফোটা প্রথম ‘কদমফুল’
সাথে তোমার খোপায়
জড়াতে চাই হাইকোর্ট থেকে কেনা
বেলী ফুল!!
বড্ড রোমান্টিক?
আজব! প্রাণী –
মন যে অষ্ঠাদশে-ই ঘোরে
সিগারেটের শেষ টান টা দিয়ে ফিল্টার টা ষোল বছরের অভিমাণী কিশোরীর মিষ্টি ঠোঁট দুটো 'র মত একটা চুমু দিয়ে ফেলে দিতে চাই -যত দূরে পারি!
তুই কি জানিস এখনও আমি গুলিস্তানের কামানের সামনে তোর অপেক্ষায় মরি?
সবশেষে ক্লান্ত দেহে যখন বিছানায়- মাথাটা রাখি
ভয়টা হয় এই মধ্য '৫২ তে?
T20 ' র জন্য স্কোর ভালোই হয়তো বা
টেষ্টের জন্য শক্ত কোন স্কোর না!
কেন জানি না একটা পুরো ইনিংস
আমি খেলতে চাই - বড্ড লোভ হয় রে!
মাঝ রাতে ঘুম যখন ভাঙ্গে
তৃষার্ত আমি পানি পান করে আবার যখন শুতে যাই, কেবলই মনে হয় ফজরের আজান শুনবো তো আজ!
ঘুম কি ভাঙ্গবে আমার?
খোদা রাসুল আমার দয়াময় তোমার কলেমা নসিব হবে তো শেষসময়?
১৬ই আগষ্ট ২০২২
১লা ভাদ্র ১৪২৯
১৭ মহররম ১৪৪৪
সময়: রাত ২.২৭
কবিতার পৃথিবী সংগঠনের দ্বিতীয় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে ২০ জুলাই থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত কবিতা ও গল্প প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। সেই প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা এবং কবিতার পৃথিবী’র ২য় প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষে শাওল হার্ট সেন্টার ( ইস্কাটনে) সেমিনার হলে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এবং সৌভাগ্য ক্রমে আমি আমার “শরীর” কবিতা’র- জন্য প্রথম পুরস্কার পাই (আলহামদুল্লিলাহ) যে কোন পুরস্কার’ই প্রতিটি মানুষের জন্য আনন্দ বয়ে আনে আমি ও তার ব্যাতিক্রম নই ,কিন্ত আমার ব্যক্তিগত কারণে আমি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পারি নাই, পরবতী দিন বিকেলে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও এডমিন প্রশাসন Mohosin Saikatপুরস্কার আমার হাতে তুলে দিতে আমার বাসায় আসেন, যারপরনাই কৃতজ্ঞতা জানানোর ভাষা আমার জানা নেই।এই ধরণের সংগঠন এখন শুধুমাএ এখন পাগল মানুষ’রাই করতে পারে, যার কবিতার জন্য একবুক পাগলামি, একবুক ভালবাসা বিরাজ করে, এই অস্তির সময়ে কবিতার সংগঠন পরিচালনা করা এবং নিয়মিত কবিতার বই বের করা ও অনুষ্ঠান করে মানুষ ডেকে এনে কবিতা পাঠ/ আলোচনা ও খাওয়া দাওয়া করানো- এখন কে করে বা ক’জনা করে আমার জানা নেই তবে Mohosin Saikatযেটা করছে তার প্রশংসা সূচক বাক্য আমার জানা নেই তারপরও অনেক শুভেচ্ছা কৃতজ্ঞতা সেই সাথে সংগঠনের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন যারা তাদের কথা না বললেই না তারা হলেন কবিতার পৃথিবী গ্রুপের এডমিন ( পরিকল্পনা ও পরিচালনা) Shaila Bilkis বিভিন্ন দায়িত্বে যারা আছে তাদের মধ্যে Salma Pervin, Anisa Huq Anne, Kazi Kanak Siddiqua,ও Khaled Mahmud Khan সবাই কে শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা এবং সদ্য যোগ দেওয়া কবিতার পৃথিবী গ্রুপের এডমিন প্যানেলে - সিনিয়র এডমিন হিসেবে কবি জনাব Mohon Raihan কে সবিশেষ শুভেচ্ছা অনেক শুভকামনা সবার জন্য।
অনুষ্ঠানের কিছু ছবি সংযুক্ত।
বাউল মন
সব মানুষের মধ্যে একটা বাউল মন বাস করে বা বৈরাগ্য মন বাস করে , তাই প্রায়ই কাউ না কাউকে বলতে শোনা যায় এই সংসার জীবন আর ভালো লাগে না,এবার সব ছেড়ে জঙ্গলে বসবাস করবো, এই মনটাই বাউল মন , বৈরাগ্য মন ।
মাঝে মাঝে মনে হয় সব ছেড়ে ছুড়ে দূরে কোথাও হারিয়ে যাই। কিন্তু সেটা হয় না, সম্ভবও না , সমাজ যেমন এই বৈরাগ্য কে সাপোট করে না তেমনি করেনা আমাদের ইসলাম ধর্মে। ধর্মে কখনোই বলে না তুমি সব ছেড়ে বৈরাগ্য ধারণ কর বরং বলে তুমি ধর্ম কর্মের মাঝেই আমাকে সৃষ্টিকর্তা কে ডাকো। আমাদের নবী রাসুল তাই শিক্ষা দিয়ে গেছেন আমাদের।
তারপরও এই মন হারাতে চায় এবং কিছু মানুষ সত্যি সত্যি গৃহত্যাগী হয় বৈরাগ্য ধারণ করে। মানুষের এই যে বৈরাগ্য মন এটা মানুষের একটা সহজাত প্রবৃওি। বেশীর ভাগ মানুষ এটাকে পাওা দেয় না , কিছু মানুষ এর ফাদে পরে যায়, বৈরাগ্য’র নামে একূল-ওকূল দূ-কূল হারায়-জীবন আসলে একটা বুকে পোষা নদীর মত, যার একূলে থাকলে ও কূলে টানে, আর ঔ কূলে থাকলে ঔ কূলে টানে , এ টানাটানি চলে আমৃত্যু,যে এই টানাটানি কে গুরুত্ব দেয় তার জীবনে দুঃখ তত বেশী-শেষ পর্যন্ত মনটা বাউল হয়েই গেলো কি করা “বাউল মন মন রে মন কেন এত কথা বলে।“
শরীর
কথা বলতে দাও
আগুনের গোলা হয়ে ঝরে পড়বো
লিখতে দাও
গ্লোক এর মত তীব্র হয়ে বিদ্ধ হবো, তোমার গায়ে
আর
যদি মেরো ফেলো
হাজার তারা হয়ে ঝলসে দেবো
তোমার দু’চোখ
অভিশাপ ও দিতে পারবে না
কোটি কোটি তারা কে তুমি কিছুই বলতে পারবে না।
পদ্মনীধি লেনের বাসায় “বকরি ঈদ”
(কোরবাণীর পশু দেখা পর্ব-ঈদের আগের দিন)
জানে জিগার মেহমুদ দূত মারফত খবর পাঠিয়েছে আমার কাছে ‘বকরি ঈদে’র আগের দিন
“বকরি ঈদে”র অতি প্রয়োজনীয় অনুসঙ্গ কোরবাণী’র পশু কেনা হয়ে গেছে -তা দেখে আসার আমন্ত্রণ!
কিঞ্চিৎ বিরক্ত হইলেও কোরবাণী’র পশু দেখার আমন্ত্রণের অনেক কারণ আছে
যা হয়তো আমি না দেখলে জানতামই না কোন দিন।
‘বকরি ঈদে’র আগের দিন পড়ন্ত বিকেলে
আমি যখন মেহমুদের “পদ্মনীধি লেনে’’র বাসার সামনে দাড়ালাম
তখন দেখলাম পাড়ার সব ছেলেপেলে’রা বাসার সামনে জড়ো হয়েছে
আমি নানান আশংকা বুকে নিয়ে দাড়ালাম লাল ইটের দো’তালা বাসার’টার সামনে
দোতালা’র বারান্দা থেকে আমাকে দেখেই মেহমুদ একরকম ছুটে এসে আমায় জড়িয়ে ধরলো!
-কিরে বাসার সানে এত জটলা কিসের?
মেহমুদ হেসে বললো আর বলিস না, পাড়ার ছেলে পেলেরা কোরবাণীর পশু দেখতে বেরিয়েছে!
-আমি বোকার মত বলেই ফেললাম “এ আর দেখার কি আছে”? ওরা কি আগে কোরবাণী’র পশু দেখেনি?
মেহমুদ আমার প্রশ্নের উওর না দিয়ে রহস্যময় হাসি দিয়ে বললো চল,
তোকে আগে দেখিয়ে আনি- কোরবাণী’র পশু গুলো-
তারপর দুই ইয়ার মিলে দোতালায় বারান্দায় বসে চা-নাস্তা করা যাবে?
ভিড় ঠেলে আমাকে নিয়ে মেহমুদ ওদের বিশাল বাড়ীর ইট বিছানো রাস্তা ধরে উওর দিকে কোণায় গিয়ে যখন দাড়ালাম
-তখন আমি হতবিহবল হয়ে চেয়ে রইলাম!
আর আমার কিছুক্ষণ আগে করা প্রশ্নের জন্য নিজেই নিজের কাছে অনুতপ্ত হলাম!
-মনে মনে ক্ষমা প্রার্থনা ও করলাম মেহমুদের কাছে
মেহমুদ আমার মনোভাব বুঝতে পেরে বললো এ বছর ব্যবসা খারাপ রে আমাদের, না হলে আরো কয়েকটা পশু কেনার ইচ্ছে ছিলো?
-বলে কি ব্যাটা?
এত রীতিমত কোরবাণীর গরু-ছাগলের হাট বসিয়ে দিয়েছে বাসার ভেতরই!
বিরাট করে সামিয়ানা টাঙ্গানো -তার নীচে দাড়িয়ে সগৌরবে জাবর কাটছে তিনটা সাদা রংএর “মিরকাদিমের গরু”, পাহাড়ের মত উঁচু একটা অষ্ট্রেলিয়ান ষাঁড়, দুইটা হরিয়ানা ষাঁড়,পাশেই দাড়ানো তিনটা বেচারা মার্কা দেশী ষাঁড়, কোণায় একটা গাভী ও আছে দেখলাম!!
আর উল্টো দিকের কোণায় দাড়ানো সাতটি হৃষ্টপুষ্ট ছাগল অনবরত চেঁচাচ্ছে ম্যা-ম্যা বলে!!
আমি বিস্ময়ে বলে উঠলাম এগুলো সব তোরা কোরবাণী দিবি না অন্য কারো কোবাণী’র পশু আছে এখানে?
- আবারও একটা ভুল করে ফেললাম!!
মেহমুদ স্মিত হেসে বলে উঠলো নারে ব্যাটা এ গুলো আমারই কোরবাণী দেবো আমার দাদা –দাদী সহ পূর্ব পুরুষের নামে, বহু যুগের চল এটা আমাদের দাদার সময় তো সতোরা’টা মীর কাদিমের গরুই কোরবাণী হতো- এখন আর পারি না রে “ব্যাবসার অবস্থা খারাপ” বলে-
আমার মুখে আর কথা নেই!!
শোন তুই কাল সকাল সকাল ঈদের জামাত পরে আমাদের বাসায় চলে আসবি- কসাইটুলী’তে কসাই খবর দেওয়া আছে সব মিলিয়ে ওরা আসবে জনা বিশেক, এসে পড়িস যত তাড়াতাড়ি পারিস!
আমি ঘাড় কাৎ করলাম অসহায় ভঙ্গিতে-
তখন মসজিদ থেকে মাগরিবের আজান ভেসে আসছে –
“ আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ‘আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ ‘আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’
আমরা দুই ইয়ার মসজিদের দিকে পা’বাড়ালাম।
(বকরি ঈদের দিন)
ঈদের দিন সকালে নামাজ পড়ে নিজ আত্মীয় স্বজনের সাথে একটু দেখা সাক্ষাৎ করে
যখন মেহমুদের বাসার গিয়ে দাড়ালাম তখন বেলা দ্বিপ্রহর
মেহমুদ কে আগেই ছিলো বলা ইয়ার’ আসতে একটু দেরী’ই হবে আমার
আমি যখন ওদের বাড়ীর উঠান পেরিয়ে কোরবাণী’র স্থানে তখন ওদের কোরবাণী’র পশু গুলো জবাই হয়ে
মাংশ বানানো ও প্রায় শেষের দিকে
খানদানি মানুষের সবই প্রায় গোছানোই থাকে
চারিদিকে’র মানুষ দেখলেই বোঝাই যায় এরা এ কাজে অত্যান্ত দক্ষ কারিগর সব
না হলে এত গুলো পশু কোরবাণী করে স্বল্প সময়ে কার্য সমাধা করা চাট্রি খানি কথা না?
অবশ্য মেহমুদ আগেই বলেছিলো খুব ভোরেই ঈদের জামাত পড়ে তারা পশু কোরবাণী শুরু করে দেয়-
কেননা ওর বাবার নির্দেশই আছে দুপুরে কোরবাণীর মাংশ দিয়ে খাওয়া-দাওয়া করে একটা “ভাতঘুম” তাকে দিতেই হবে, অতএব তার আগেই সব কার্য শেষ করা চাই
তাদের ব্যাবসায়িক কর্মকান্ডে অনেক মানুষ অতএব তার এই চাওয়াটা অযৌক্তিক কিছু না!
সে যাই হোক-
মেহমুদ আমাকে দেখেই উচ্ছাসিত কন্ঠে বললো “দোস্তো তুমি আইছো?”বলে দুই বন্ধু ঈদের মোলাকাত করি
আমার সামনে দাড়ানো-সাদা ধবধপে পান্জাবী- ও পায়জামা পড়া রোশনাই চেহারার মধ্য বয়েসী এক ভদ্রলোক বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন –আমার দিকে চোখ গেলেই আমি গিয়ে ‘কদমবুসি’ করতেই বুকে জড়িয়ে কোলাকুলি করলো স্মিত হেসে মেহমুদের বাবা, আবার ব্যস্ত হয়ে পড়েন বিভিন্ন দিক নির্দেশনা’র কাজে।
আমি কিছুসময়েই বুঝে গেলাম কোরবাণী’র নিয়মানুযায়ী তিন ভাগ করে মাংশ ‘বেটে’ দেওয়া হচ্ছে আর কাজ টি মেহমুদের বাবা ততোধিক আন্তরিকতার সাথে করছে তার বিভিন্ন অধীনস্থদের নিয়ে।
কিছুক্ষণ পর পর বিভিন্ন বয়সী ছেলে এসে মেহমুদের বাবা’কে কদমবুসি ‘ঈদি’ নিয়ে খিলখিল করতে করতে অন্দর মহলের দিকে মিলিয়ে যাচ্ছে- আমাকে ও হতাশ করেনি মেহমুদের বাবা!,আমারও পাজ্ঞাবী’র পকেটে দু’খানা কড়কড়ে পঞ্চাশের নোট জানান দিচ্ছে মেহমুদের বাবা’র ভালবাসা!
আমি আর আর মেহমুদ বসার ঘরে এসে যখন বসলাম তখন সারা বাড়িতে মাংশ রান্নার সুঘ্রানে মাতোয়ারা
এযেনো ঘ্রাণেই অর্ধভোজন,হবেই বা না কেন? বন্ধু মেহমুদে’র মা’ যে মুর্শিদাবাদের বনেদী বাড়ির মেয়ে –
রান্নায় তাই নবাবী এতিহ্য বরাবরই উপস্থিত।
বসার ঘরে একটা সেন্টার টেবিলে’র উপর পিতলের খোরমাদানীতে খোরমা রাখা আর পাশেই আতর দানে হরেক রকমের আতর দিল্লি থেকে আনা –আমি একটা খোরমা মুখে দিতেই বন্ধু আমার আতর দান টা আমার দিতে এগিয়ে ধরলো
ওহ! কোনটা ছেড়ে কোন আতর দিবো - আসিম, আতিফা, বাখুরখজ, জিজিয়ান, জান্নাতুল ফেরদৌস, জান্নাতুল নাঈম, মোখাল্লাত মালকি, খালতাত আল মুলুক, খালতাত আল জাওয়াহের আরো হরেক রকমের আতর সাজানো আতরদানিতে।
জানিস এই যে দেখছিস সেন্টার টেবিলের টপটা এটা হচ্ছে ‘মোরাবাদের’ কাজ করা পিতলের তৈরী আমি চোখ তুলে তাকতেই মেহমুদ একটা খোরমা মুখে দিয়ে চোখবুজে কথা গুলো বলছিলো।
আমি যখন আতরের গন্ধে মাতোয়ারা তখনই আমাদের খাবার টেবিলে ডাক পড়লো দুই ইয়ারের-
“বকরি ঈদ” বলে কথা!!
টেবিলে আইটেম দেখেই আমার পেট ভরে গেলো আহা!
কত রং বে রংএর বাশন-কোসনে আর কি তার পরিবেশনা?
এ ধরনের বাশন-কোশন আমি শুধু সে সময় মেহমুদের বাসাতেই দেখতাম।
বাসমতী চালের জাফরানি পোলাও, আফগানি মাটন পোলাও, সাদা পোলাও
গরুর মাংসের শাহি রেজালা, কড়াই গোস্ত, ঝুরা মাংস, মাংসের পিঠালি, ভুনা মাংস, সাথে আছে বড় এক টুকরা কাটা মসলার মাংস, আরো আছে গরুর মাংসের টিকিয়া, ছেঁচা মাংস, গরুর ঝাল কালিয়া
মাংশের কোপ্তাই তিন রকমের। কাঁচা গোশতের কোপ্তা, সিদ্ধ গোশতের কোপ্তা, কাঁচা-সিদ্ধ গোশতের মিশ্রিত কোপ্তা।
খাশির লেগ রোষ্ট, খাশির মাংসের গ্লাসি, কাটা মসলায় খাসির মাংস, খাসির ঝাল-মাংস, খাসির কোরমা, খাসির কলিজা ভুনা, মাটন রেজালা,খাশির মগজ ভূনা
কাবাবের বেশ ক’পদ -গরুর হাঁড়ি কাবাব, গরুর চাপ কাবাব, বিফ বটি কাবাব, গরুর মাংসের শিক কাবাব, গরুর মাংসের কাঠি কাবাব,জালি কাবাব, শামি কাবাব, ক্ষিরি কাবাব ও আছে সুন্দর করে সাজানো একটা প্লেটে!
সাথে হজমের জন্য আছে নদীর ওপার থেকে আসা কারিগরের তৈরী বিশেষ ফরমূলায় কেশর জাফরাণী বোরহাণী
যার স্বাদ ভাষায় প্রকাশ করা আমি নাদানের পক্ষে সম্ভব নয় কোনভাবেই
মিষ্টান্ন বা কম কিসে? আছে পাশের টেবিলে রাখা সাত পদ।
জর্দা সেমাই, ঘিয়ে ভাজা লাচ্ছা, মাওয়া’র জর্দা ,মালাই ফিন্নি-পায়েস ও ছানার পায়েস আলাদা কারুকাজ করা ভিন্ন ভিন্ন গোলাকার বাটিতে,পাশে রাখা আছে ঘরে তৈরী শাহী টুকরা ও রসবালি, বাদ যায়নি ঘরে পাতা মিষ্টি দধি ও
আহা! দেখলেই পরাণ জুড়ায়!
মেহমুদ কে প্রশ্ন “এত খাবার” করতেই বললো আরে মানুষ তো এখন আসেনি রে , সবার আসা শুরু হবে এই একটু পর হতেই এবং যেই আজ আমাদের বাসায় আসবে সবার খেয়ে যেতেই হবে এটাই নিয়ম আমাদের বাড়ীর।
কি যানি বাপু খানদানী বাড়ীর খানদানি নিয়ম-কানুন।
এরই ফাকে জানলাম শরীফা বেগমদের বাড়ী থেকে গরুর দুই খানা পেছনে’র রান আর একখানা সামনের রান সাথে আস্তো একটা জবাই করা ছাগল ও এসেছে বিলি বন্টন হিসেবে, শুনে তো চোখ ছানাবড়া, বলে কি?
মেহমুদ আমার মনোভাব বুঝতে পেরে বললো আমাদের বাসা থেকে দোস্তো আব্বা এ ভাবেই পাঠিয়েছে বিলি-বন্টন আমাদের এটাই রীতি
মনে মনে বললাম হুম তোমাদের রীতি আমার মনে ধরায় ভীতি!
দুই ইয়ার খাওয়া-দাওয়া করে মেহমুদের দোতালার দক্ষিণের রুমে বসে শাহী মিষ্টি পান চিবুতে চিবুতে আর ক্যাপষ্টানে’র সুখ টানে দিতে দিতে খোশ গল্পে মেতে রইলাম বিকেল অব্দি
বিকেলে চকের মেলায় শরীফা বেগমের সাথে ব্যাপক মজা করে দুই বন্ধু যখন বাড়ীর পথ রলাম তখন আকাশে চাঁদ শুক্লপক্ষের হেলে পড়েছে-
বাড়ী ফিরতে ফিরতে মনে এলো সূর নিজের অজান্তেই গুনগুনিয়ে উঠলাম-
“হাওয়া মে উড়তা যায়ে,,মোরা লাল দুপট্টা মলমল কা, ইধার উধার লেহেরায়ে
মোরা লাল দুপট্টা মলমল কা, মোরা লাল দুপট্টা মলমল কা-হো জী, হো জী
ঈদ দিন-১০/০৭/২০২২
এই সিরিজের অন্য লেখা গুলো পড়ুন -https://cutt.ly/jLf7Jv6
আমার ওয়েবসাইট ভিজিট করুন-https://galibsjournal.com/
Personal Blog-Galibs Journal ভিন্ন স্বাদের লেখা পড়তে ক্লিক করুন।
পদ্মনীধি লেনের বাসায় “বকরি ঈদ”
(কোরবাণীর পশু দেখা পর্ব-ঈদের আগের দিন)
জানে জিগার মেহমুদ দূত মারফত খবর পাঠিয়েছে আমার কাছে ‘বকরি ঈদে’র আগের দিন
“বকরি ঈদে”র অতি প্রয়োজনীয় অনুসঙ্গ কোরবাণী’র পশু কেনা হয়ে গেছে -তা দেখে আসার আমন্ত্রণ!
কিঞ্চিৎ বিরক্ত হইলেও কোরবাণী’র পশু দেখার আমন্ত্রণের অনেক কারণ আছে
যা হয়তো আমি না দেখলে জানতামই না কোন দিন।
‘বকরি ঈদে’র আগের দিন পড়ন্ত বিকেলে
আমি যখন মেহমুদের “পদ্মনীধি লেনে’’র বাসার সামনে দাড়ালাম
তখন দেখলাম পাড়ার সব ছেলেপেলে’রা বাসার সামনে জড়ো হয়েছে
আমি নানান আশংকা বুকে নিয়ে দাড়ালাম লাল ইটের দো’তালা বাসার’টার সামনে
দোতালা’র বারান্দা থেকে আমাকে দেখেই মেহমুদ একরকম ছুটে এসে আমায় জড়িয়ে ধরলো!
-কিরে বাসার সানে এত জটলা কিসের?
মেহমুদ হেসে বললো আর বলিস না, পাড়ার ছেলে পেলেরা কোরবাণীর পশু দেখতে বেরিয়েছে!
-আমি বোকার মত বলেই ফেললাম “এ আর দেখার কি আছে”? ওরা কি আগে কোরবাণী’র পশু দেখেনি?
মেহমুদ আমার প্রশ্নের উওর না দিয়ে রহস্যময় হাসি দিয়ে বললো চল,
তোকে আগে দেখিয়ে আনি- কোরবাণী’র পশু গুলো-
তারপর দুই ইয়ার মিলে দোতালায় বারান্দায় বসে চা-নাস্তা করা যাবে?
ভিড় ঠেলে আমাকে নিয়ে মেহমুদ ওদের বিশাল বাড়ীর ইট বিছানো রাস্তা ধরে উওর দিকে কোণায় গিয়ে যখন দাড়ালাম
-তখন আমি হতবিহবল হয়ে চেয়ে রইলাম!
আর আমার কিছুক্ষণ আগে করা প্রশ্নের জন্য নিজেই নিজের কাছে অনুতপ্ত হলাম!
-মনে মনে ক্ষমা প্রার্থনা ও করলাম মেহমুদের কাছে
মেহমুদ আমার মনোভাব বুঝতে পেরে বললো এ বছর ব্যবসা খারাপ রে আমাদের, না হলে আরো কয়েকটা পশু কেনার ইচ্ছে ছিলো?
-বলে কি ব্যাটা?
এত রীতিমত কোরবাণীর গরু-ছাগলের হাট বসিয়ে দিয়েছে বাসার ভেতরই!
বিরাট করে সামিয়ানা টাঙ্গানো -তার নীচে দাড়িয়ে সগৌরবে জাবর কাটছে তিনটা সাদা রংএর “মিরকাদিমের গরু”, পাহাড়ের মত উঁচু একটা অষ্ট্রেলিয়ান ষাঁড়, দুইটা হরিয়ানা ষাঁড়,পাশেই দাড়ানো তিনটা বেচারা মার্কা দেশী ষাঁড়, কোণায় একটা গাভী ও আছে দেখলাম!!
আর উল্টো দিকের কোণায় দাড়ানো সাতটি হৃষ্টপুষ্ট ছাগল অনবরত চেঁচাচ্ছে ম্যা-ম্যা বলে!!
আমি বিস্ময়ে বলে উঠলাম এগুলো সব তোরা কোরবাণী দিবি না অন্য কারো কোবাণী’র পশু আছে এখানে?
- আবারও একটা ভুল করে ফেললাম!!
মেহমুদ স্মিত হেসে বলে উঠলো নারে ব্যাটা এ গুলো আমারই কোরবাণী দেবো আমার দাদা –দাদী সহ পূর্ব পুরুষের নামে, বহু যুগের চল এটা আমাদের দাদার সময় তো সতোরা’টা মীর কাদিমের গরুই কোরবাণী হতো- এখন আর পারি না রে “ব্যাবসার অবস্থা খারাপ” বলে-
আমার মুখে আর কথা নেই!!
শোন তুই কাল সকাল সকাল ঈদের জামাত পরে আমাদের বাসায় চলে আসবি- কসাইটুলী’তে কসাই খবর দেওয়া আছে সব মিলিয়ে ওরা আসবে জনা বিশেক, এসে পড়িস যত তাড়াতাড়ি পারিস!
আমি ঘাড় কাৎ করলাম অসহায় ভঙ্গিতে-
তখন মসজিদ থেকে মাগরিবের আজান ভেসে আসছে –
“ আল্লাহু আকবার, আল্লাহু আকবার, ‘আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ ‘আশহাদু আল্-লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’
আমরা দুই ইয়ার মসজিদের দিকে পা’বাড়ালাম।
(বকরি ঈদের দিন)
ঈদের দিন সকালে নামাজ পড়ে নিজ আত্মীয় স্বজনের সাথে একটু দেখা সাক্ষাৎ করে
যখন মেহমুদের বাসার গিয়ে দাড়ালাম তখন বেলা দ্বিপ্রহর
মেহমুদ কে আগেই ছিলো বলা ইয়ার’ আসতে একটু দেরী’ই হবে আমার
আমি যখন ওদের বাড়ীর উঠান পেরিয়ে কোরবাণী’র স্থানে তখন ওদের কোরবাণী’র পশু গুলো জবাই হয়ে
মাংশ বানানো ও প্রায় শেষের দিকে
খানদানি মানুষের সবই প্রায় গোছানোই থাকে
চারিদিকে’র মানুষ দেখলেই বোঝাই যায় এরা এ কাজে অত্যান্ত দক্ষ কারিগর সব
না হলে এত গুলো পশু কোরবাণী করে স্বল্প সময়ে কার্য সমাধা করা চাট্রি খানি কথা না?
অবশ্য মেহমুদ আগেই বলেছিলো খুব ভোরেই ঈদের জামাত পড়ে তারা পশু কোরবাণী শুরু করে দেয়-
কেননা ওর বাবার নির্দেশই আছে দুপুরে কোরবাণীর মাংশ দিয়ে খাওয়া-দাওয়া করে একটা “ভাতঘুম” তাকে দিতেই হবে, অতএব তার আগেই সব কার্য শেষ করা চাই
তাদের ব্যাবসায়িক কর্মকান্ডে অনেক মানুষ অতএব তার এই চাওয়াটা অযৌক্তিক কিছু না!
সে যাই হোক-
মেহমুদ আমাকে দেখেই উচ্ছাসিত কন্ঠে বললো “দোস্তো তুমি আইছো?”বলে দুই বন্ধু ঈদের মোলাকাত করি
আমার সামনে দাড়ানো-সাদা ধবধপে পান্জাবী- ও পায়জামা পড়া রোশনাই চেহারার মধ্য বয়েসী এক ভদ্রলোক বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছেন –আমার দিকে চোখ গেলেই আমি গিয়ে ‘কদমবুসি’ করতেই বুকে জড়িয়ে কোলাকুলি করলো স্মিত হেসে মেহমুদের বাবা, আবার ব্যস্ত হয়ে পড়েন বিভিন্ন দিক নির্দেশনা’র কাজে।
আমি কিছুসময়েই বুঝে গেলাম কোরবাণী’র নিয়মানুযায়ী তিন ভাগ করে মাংশ ‘বেটে’ দেওয়া হচ্ছে আর কাজ টি মেহমুদের বাবা ততোধিক আন্তরিকতার সাথে করছে তার বিভিন্ন অধীনস্থদের নিয়ে।
কিছুক্ষণ পর পর বিভিন্ন বয়সী ছেলে এসে মেহমুদের বাবা’কে কদমবুসি ‘ঈদি’ নিয়ে খিলখিল করতে করতে অন্দর মহলের দিকে মিলিয়ে যাচ্ছে- আমাকে ও হতাশ করেনি মেহমুদের বাবা!,আমারও পাজ্ঞাবী’র পকেটে দু’খানা কড়কড়ে পঞ্চাশের নোট জানান দিচ্ছে মেহমুদের বাবা’র ভালবাসা!
আমি আর আর মেহমুদ বসার ঘরে এসে যখন বসলাম তখন সারা বাড়িতে মাংশ রান্নার সুঘ্রানে মাতোয়ারা
এযেনো ঘ্রাণেই অর্ধভোজন,হবেই বা না কেন? বন্ধু মেহমুদে’র মা’ যে মুর্শিদাবাদের বনেদী বাড়ির মেয়ে –
রান্নায় তাই নবাবী এতিহ্য বরাবরই উপস্থিত।
বসার ঘরে একটা সেন্টার টেবিলে’র উপর পিতলের খোরমাদানীতে খোরমা রাখা আর পাশেই আতর দানে হরেক রকমের আতর দিল্লি থেকে আনা –আমি একটা খোরমা মুখে দিতেই বন্ধু আমার আতর দান টা আমার দিতে এগিয়ে ধরলো
ওহ! কোনটা ছেড়ে কোন আতর দিবো - আসিম, আতিফা, বাখুরখজ, জিজিয়ান, জান্নাতুল ফেরদৌস, জান্নাতুল নাঈম, মোখাল্লাত মালকি, খালতাত আল মুলুক, খালতাত আল জাওয়াহের আরো হরেক রকমের আতর সাজানো আতরদানিতে।
জানিস এই যে দেখছিস সেন্টার টেবিলের টপটা এটা হচ্ছে ‘মোরাবাদের’ কাজ করা পিতলের তৈরী আমি চোখ তুলে তাকতেই মেহমুদ একটা খোরমা মুখে দিয়ে চোখবুজে কথা গুলো বলছিলো।
আমি যখন আতরের গন্ধে মাতোয়ারা তখনই আমাদের খাবার টেবিলে ডাক পড়লো দুই ইয়ারের-
“বকরি ঈদ” বলে কথা!!
টেবিলে আইটেম দেখেই আমার পেট ভরে গেলো আহা!
কত রং বে রংএর বাশন-কোসনে আর কি তার পরিবেশনা?
এ ধরনের বাশন-কোশন আমি শুধু সে সময় মেহমুদের বাসাতেই দেখতাম।
বাসমতী চালের জাফরানি পোলাও, আফগানি মাটন পোলাও, সাদা পোলাও
গরুর মাংসের শাহি রেজালা, কড়াই গোস্ত, ঝুরা মাংস, মাংসের পিঠালি, ভুনা মাংস, সাথে আছে বড় এক টুকরা কাটা মসলার মাংস, আরো আছে গরুর মাংসের টিকিয়া, ছেঁচা মাংস, গরুর ঝাল কালিয়া
মাংশের কোপ্তাই তিন রকমের। কাঁচা গোশতের কোপ্তা, সিদ্ধ গোশতের কোপ্তা, কাঁচা-সিদ্ধ গোশতের মিশ্রিত কোপ্তা।
খাশির লেগ রোষ্ট, খাশির মাংসের গ্লাসি, কাটা মসলায় খাসির মাংস, খাসির ঝাল-মাংস, খাসির কোরমা, খাসির কলিজা ভুনা, মাটন রেজালা,খাশির মগজ ভূনা
কাবাবের বেশ ক’পদ -গরুর হাঁড়ি কাবাব, গরুর চাপ কাবাব, বিফ বটি কাবাব, গরুর মাংসের শিক কাবাব, গরুর মাংসের কাঠি কাবাব,জালি কাবাব, শামি কাবাব, ক্ষিরি কাবাব ও আছে সুন্দর করে সাজানো একটা প্লেটে!
সাথে হজমের জন্য আছে নদীর ওপার থেকে আসা কারিগরের তৈরী বিশেষ ফরমূলায় কেশর জাফরাণী বোরহাণী
যার স্বাদ ভাষায় প্রকাশ করা আমি নাদানের পক্ষে সম্ভব নয় কোনভাবেই
মিষ্টান্ন বা কম কিসে? আছে পাশের টেবিলে রাখা সাত পদ।
জর্দা সেমাই, ঘিয়ে ভাজা লাচ্ছা, মাওয়া’র জর্দা ,মালাই ফিন্নি-পায়েস ও ছানার পায়েস আলাদা কারুকাজ করা ভিন্ন ভিন্ন গোলাকার বাটিতে,পাশে রাখা আছে ঘরে তৈরী শাহী টুকরা ও রসবালি, বাদ যায়নি ঘরে পাতা মিষ্টি দধি ও
আহা! দেখলেই পরাণ জুড়ায়!
মেহমুদ কে প্রশ্ন “এত খাবার” করতেই বললো আরে মানুষ তো এখন আসেনি রে , সবার আসা শুরু হবে এই একটু পর হতেই এবং যেই আজ আমাদের বাসায় আসবে সবার খেয়ে যেতেই হবে এটাই নিয়ম আমাদের বাড়ীর।
কি যানি বাপু খানদানী বাড়ীর খানদানি নিয়ম-কানুন।
এরই ফাকে জানলাম শরীফা বেগমদের বাড়ী থেকে গরুর দুই খানা পেছনে’র রান আর একখানা সামনের রান সাথে আস্তো একটা জবাই করা ছাগল ও এসেছে বিলি বন্টন হিসেবে, শুনে তো চোখ ছানাবড়া, বলে কি?
মেহমুদ আমার মনোভাব বুঝতে পেরে বললো আমাদের বাসা থেকে দোস্তো আব্বা এ ভাবেই পাঠিয়েছে বিলি-বন্টন আমাদের এটাই রীতি
মনে মনে বললাম হুম তোমাদের রীতি আমার মনে ধরায় ভীতি!
দুই ইয়ার খাওয়া-দাওয়া করে মেহমুদের দোতালার দক্ষিণের রুমে বসে শাহী মিষ্টি পান চিবুতে চিবুতে আর ক্যাপষ্টানে’র সুখ টানে দিতে দিতে খোশ গল্পে মেতে রইলাম বিকেল অব্দি
বিকেলে চকের মেলায় শরীফা বেগমের সাথে ব্যাপক মজা করে দুই বন্ধু যখন বাড়ীর পথ রলাম তখন আকাশে চাঁদ শুক্লপক্ষের হেলে পড়েছে-
বাড়ী ফিরতে ফিরতে মনে এলো সূর নিজের অজান্তেই গুনগুনিয়ে উঠলাম-
“হাওয়া মে উড়তা যায়ে,,মোরা লাল দুপট্টা মলমল কা, ইধার উধার লেহেরায়ে
মোরা লাল দুপট্টা মলমল কা, মোরা লাল দুপট্টা মলমল কা-হো জী, হো জী
ঈদ দিন-১০/০৭/২০২২
এই সিরিজের অন্য কবিতা গুলো পড়ুন-https://urlzs.com/srLwY
Personal Blog-Galibs Journal জীবন টা একটা সূর্যের মত । একটা সাদা সূর্য - সাদা সূর্য রং পাল্টাতে থাকে । সাদা থেকে রুপালি । রুপালি থেকে সোনালি । আস.....
এটা একটা সিরিজ গদ্য কবিতা, দুই বন্ধু'র দারুন রসায়নের কিছুক্ষণ এখানে তুলে ধরার প্রয়াস রইল আপনাদের কাছে, এখানে ভিন্ন ভিন্ন সময়ে দুই বন্ধু'র বিভিন্ন সময়ের কথোপকথন, আশাকরি আপনাদের ভালো লাগবে ।
বন্ধু হে আমার ! Galibs Journal এটা একটা সিরিজ গদ্য কবিতা, দুই বন্ধু'র দারুন রসায়নের কিছুক্ষণ এখানে তুলে ধরার প্রয়াস রইল আপনাদের কাছে, এখানে ভিন্ন...
পৃথিবীতে অনেক খারাপ মানুষ আছে, কিন্তুএকটাও খারাপ বাবা নেই, কেন? শ্রাস্ত্রে বলা হয় “পিতাই স্বর্গ, পিতাই ধর্ম এবং পিতাই তপস্যা”। অর্থাৎ পিতা প্রসন্ন হলে দেবতাও প্রীত হোন। তাই সন্.....
ঈদের দিনে’র গল্প
হারিয়ে যাওয়া এক ঈদে জানে জিগার মেহমুদের সাথে ঈদের নামাজ পরেই চললাম মেহমুদদের পদ্মনীধি লেনের বাসায়।
খানদানি মানুষ মেহমুদ বাসায় রীতিমত উৎসব কি খানা-পিনায় কি আপ্যায়নে -বৈঠক খানায় বসতেই এলো তিন রকমের শরবত
বাদাম কেশরের শরবত, মাঠা ও রুহ আফজার শরবত সাথে আছে ঘরে পাতা দধির লাচ্ছির শরবত।
আর আছে ঈদের অতি আবশ্যক কিছু মিষ্টান্ন, তিন রকম সেমাই,
জর্দা সেমাই, লাচ্ছা সেমাই ,হাতে কাটা সেমাই
কিছু মুখে দিয়ে একটু বসতেই দুই ইয়ারের ডাক পরলো খাবারের
সে এক বিশাল আয়োজন আমার চৌদ্দ গোষ্ঠি ও দেখে নাই এত আয়োজন এক সাথে
মেহমুদের দিকে অসহায়ের দৃষ্টি তে তাকাতেই বললো -
এ আর এমন কি রে ব্যাটা?
এখন তো আয়োজন তেমন করতে পারিনে টাকা পয়সার টানাটানি তে-
বলে কি ব্যাটা, ঘোর লাগা চোখে দেখতে থাকি একে একে
সাদা পোলাও , এক পাশে তেহারী আর ওপর পাশে সগৌরবে খাসির কাচ্চির ডিস
সাথে সালুনের বড় বাটিতে খাসির রেজালা’ র টুকরো গুলো লকলক করছে
পাশেই পরে আছে মোরগ-মসল্লাম তার সাথে বড় বড় আকারের কোপ্তা’র বাটি
টেবিলের অপর প্রান্তে ক্ষিরি কাবাব, কাটা মসলার মাংস আর বড় মাংস
ঝকঝকে কারুকাজ কাজ প্লেটের পাশে একগ্লাশ করে জাফরানী রোরহানী
রোরহানী’র দিকে নজর পরতেই মেহমুদ বললো জানিস এই জাফরানী বোরহানী-তুই কোথাও পাবি না , নদীর ওপার থেকে এক লোক এসে বানিয়ে দিয়ে যায় আমাদের যে কোন অনুষ্ঠানে তুই এক চুমুক দিলেই এর প্রেমে পরে যাবি- আসলেই তাই খাবারের সাথে যখন এক চুমুক
রোরহানী ঠোটে ছোয়ালাম সত্যিই এই স্বাদের বোরহানী আমি আগে কখনো খাইনি পরে ও না আর?
কোন রকম কিছু কিছু খেয়ে জান টা নিয়ে উঠতে যাবো এমন সময় মেহমুদ বললো কিছূই তো খেলি না
চিৎকার দিয়ে বললো আরে উঠিস না উঠিস না ,
মিষ্টি কিছু না খেলে খাবার পর, খাবার ভালো হজম হবে না রে,
খানসমাকে ইশারা দিতেই হরেক রকম মিষ্টান্ন এসে হাজির
কত তার নাম কত কারুকাজ করা বাসনে তার পরিবেশনা,
শাহী মিঠার ঠুকরা, মাওয়ার জর্দা, ঘন দুধের স্বর পরা ফিন্নি-পায়েস এক বড় গোল বাটিতে
কিছু মুখে না দিলে মেহমুদ কষ্ট পাবে তাই কোন রকম একটু মুখে ছুয়ে হাত ধুয়ে এসে বসলাম-
মেহমুদের দক্ষিণের ঘরে দুই বন্ধু মিষ্টি পান মুখে দিয়ে, ক্যাপষ্টানে একটা সুখ টান দিতেই মেহমুদ বললো জানিস আজ বিকেলে চকের মেলায় শরিফা বেগম আসবে ,
দুধে আলতা গায়ের রং এর শরীফা বেগম মেহমুদে’র প্রেয়সী আমি কিঞ্চিত উৎসাহ হইয়া বলিলাম
চল তবে আর দেরী কেন মেলায় গিয়েই বাকি গপসপ করি।
শেষাংশ
বহুবছর বাদ আজ কি মনে হলো ঈদের নামাজ পরে ফেরার সময় শরীফা বেগমের ছেলের হাত ধরে
এসে দাড়ালাম মেহমুদদের খানদানি বাসার সামনে, কিছু আজ আর মেলে না, বিশাল এক এপ্যাটমেন্টের সামনে দাড়িয়ে এক অস্হতি বোধ করলাম
কিছুই আজ আর অবশিষ্ট নেই, শুধু স্মৃতির বিড়াল গুলো ঘুরে বেড়ায় এ মাথা থেকে অন্য মাথায়।।
©️
ঈদ দিন ৩/৫/২০২২
তুমি কি মধ্যাহ্নে?
ভাগ দৌড়ের এ জীবনে, মধ্যাহ্নে এসে একটু এলোমেলো হয়ে যায় পথ চলা। বদলে যায় অনেক দিনের অভ্যাস, কিছু শারীরিক কিছু মানসিক সমস্যা মধ্যাহ্নে তাকে বির্পযস্ত করে তোলে, সে বাধা পরে যায় নানান বিধি-নিষিধের ঘেরা টোপে, এটা করা যাবে না, ওটা করা যাবে না, এটা তোমার জন্য না, এ নানান না এর মধ্যে জীবন ঘুরপাক খায়। নিজের দিকে তাকাও তুমি এখন আর আগের তুমি নেই, তোমার যেন কি হয়েছে, অথচ মধ্যাহ্নে এসে সে এখন ফিনিক্স পাখির মত নিজেকে বদলাতে চায়, ফিনিক্স পাখির মত বদলিয়ে একজোড়া ধারালো নখ চায়, সে ধাবা তো মেলে অভ্যাসবশতঃকিন্তুু ধাবায় আগের নখ গুলোর মত ধারালো হয় না, সে বাই ফোকাল ছাড়া একজোড়া নেএ ও চায়, সে কেশ ও চায় কুচকুচে কালো তার চাওয়ার ফর্দ এখন অনেক লম্বা।
সূর্য এখন তার মাথার ঠিক উপরে,
গণগণে তাপ দেয়, আলো দেয়, কিন্তুু সূর্য এখন আর নেশা ধরায় না, বরং সে একটু বিরক্তি প্রকাশ করে, প্রখর রোদে সে হেটেছে কত পথ, এখন সে পথ মেপেমেপে হাঁটে, পথ কেবলই তার কাছে দীর্ঘ হয়ে যায়, অথচঃ সে, পথে এখন ও মিছিল করে রাজপথ কাঁপাতে চায়, কিন্তুু সে এখন মিছিল দেখলে একটু দূরে সরে যায়, তার নিজের মধ্যে ভাঙ্গাগড়ার খেলাচলে, খুব কাছের মানুষ ও টের পায় না, সে এত পরিবর্তন হঠাৎ করে মানতে চায় না, মানতে পারে না, বিদ্রোহ করে উঠতে চায় দেহ-মন, কিন্তুু সূর্য যখন পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়ে সে সংকিত হয়, সে প্রার্থনা করে সৃষ্টিকর্তার কাছে নতুন একটা সূর্যের জন্য।
#২৬শেমার্চ
#অগ্নিঝরামার্চ
#শহীদবুদ্ধিজীবীডঃফজলুররহমানখান
একজন শহীদ বুদ্ধিজীবী ডঃফজলুর রহমান খান, আমাদের #মুক্তিযুদ্ধ ও আমরা..
ডঃ ফজলুর রহমান খান শিক্ষাবিদ, শহীদ বুদ্ধিজীবী। জন্ম ১৯৩৯ সালের ২ মার্চ নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ থানার কাজিয়াটি গ্রামে। ফজলুর রহমান ১৯৫৪ সালে মোহনগঞ্জ হাইস্কুল থেকে ম্যাট্রিক এবং ১৯৫৬ সালে আনন্দমোহন কলেজ থেকে আই.এস.সি, ১৯৬০ সালে বি.এস.সি (সম্মান) এবং ১৯৬২ সালে এমএসসি ডিগ্রি লাভ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মৃওিকা বিজ্ঞান বিভাগ থেকে। ১৯৬৩ সালেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগে প্রভাষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন, এরপর তিনি ১৯৬৪ সালে উচ্চ শিক্ষার্থে ইংল্যান্ড যান। ১৯৬৪-১৯৬৮ সাল পর্যন্ত লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ে A Study on the Nutrient Metabolism in Soil at High Moisture Level বিষয়ে গবেষণা কর্মে পি.এইচ.ডি ডিগ্রী লাভ করেন। ওই বছরই তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সিনিয়র লেকচারার পদে উন্নীত হন।
১৯৭১ সালে ফজলুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীলক্ষেত আবাসিক এলাকার ২৩নং ভবনে বাস করতেন।
'৭১-এর ২৫ মার্চ সন্ধ্যায় অন্য দিনগুলোর মতোই ড. ফজলুর রহমান খান এবং জবান আলী যান ড. শামীমুজ্জামান বসুনিয়ার বাসায় (ছোট ভায়রা)। সেদিন ফজলুর রহমান ও জবান আলীকে রাতটা তাঁর বাসায় থেকে যেতে বলেন ড. বসুনিয়া। কিন্তু ভাগ্নে কাঞ্চন বাসায় একা থাকবে ভেবে সেদিন ভাত না খেয়েই জবান আলীকে নিয়ে নিজের বাসায় চলে আসেন ফজলুর রহমান। কাঞ্চন সেদিন সন্ধ্যায় গিয়েছিলেন আজিমপুরে তাঁর বাবার বাসায়। তাকেও রাতটা সেখানেই থাকতে বলা হয়। কিন্তু মামা একা থাকবে ভেবে কাঞ্চনও চলে আসেন মামার ইকবাল হলের ২৩/এফ নম্বর ফ্ল্যাটটিতে।
২৫ মার্চের রাতে পাকিস্তানি সৈন্যরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যলয় এলাকা আক্রমন করে। রাত ১২ টার পর পাকিস্তানি সৈন্যরা ফজলুর রহমানের বাড়িতে ঢুকে তাকে গুলি করে হত্যা করে। সেই সময় তার সাথে থাকা তার ভাগ্নে কাঞ্চন ও সৈন্যদের গুলিতে নিহত হন। গুলি খেয়ে ও বেঁচে
যান তার সাথে থাকা শুশ্বর বাড়ীর গৃহভৃত্য জবান। ঔ সময় তার স্ত্রী ফরিদা খান ইংল্যান্ড ছিলেন পি.এইচ.ডি ডিগ্রী অর্জনের জন্য। ১৯৬৮ সালে ফরিদা খান এবং ডঃফজলুর রহমান পরিণয় সূএে আবদ্ধ হন এবং ১৯৭০ সালে তিনি ও ইংল্যান্ড যাএা করেন পি.এইচ.ডি লাভের উদ্দেশ্যে।
এই ফরিদা খান ই যার ডাক নাম শিরী আমাদের শিরী আপা আমার মামাতো বোন। তিনি যদি ঐ দিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাস ভবনে থাকতেন, তাহলে আমরা হয়তো তাকেও হারাতাম।
(১৯৭১-২০২২) ৫১ বছর যিনি শুধু স্মৃতি নিয়ে বেঁচে আছেন।
এ রকম অনেক শহীদ বুদ্ধিজীবীদের পরিবারের মত, শুধু স্মৃতি হাঁতড়ে বেঁচে থাকা।
#পাকিস্তান সেনাবাহিনীর "অপারেশন সার্চলাইট "গণহত্যার
নীল নকশা।অপারেশন সার্চলাইটের একটি অংশ ছিল সিলেকটেড জেনোসাইড।নির্বাচিত বিশিষ্ট জনদের হত্যার তালিকা।যেই হত্যার তালিকা তৈরী করে ছিলেন পাকিস্তানি বেসামরিক প্রশাসনের প্রধান জেনারেল রাওফরমান আলী। তার ডায়রিতে পরবর্তীতে পাওয়া যায় সমস্ত বুদ্ধিজীবীদের নাম।হাতের লেখা রাওফরমান আলীরই।সেই তালিকা ধরেই এক এক করে বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করা হয়।
২৫শে মার্চের সেই নৃশংসতা চেঙ্গিস খান ও হালাকু খানের বুখারা ও বাগদাদের নৃশংসতাকে ও ছাড়িয়ে গিয়েছিলো। সেইদিনের সেই নৃশংসতা শুধু বুদ্ধিজীবীই না, সাধারণ মানুষ ও রেহাই পায়নি, যেমন ঢাকার সদর ঘাটে ছিন্নমূল মানুষ এখন যেমন রাতে থাকে তখনও ছিলো সেই রাতে কেউ জীবত ছিলো না, ঘুমঘোরে সেই মানুষগুলো লাশ হয়ে গেছে, যেমন গেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাএাবাস গুলোতে ছাএরা, রোকেয়া হলের চারতলার ছাদে জনৈক ছাএীর ক্ষত-বিক্ষত লাশ, এই সদর ঘাটে এমন হয়েছে কয়েকটি শিশুর লাশ পাওয়া গিয়েছিলো, শরীর ঠিক আছে,শরীরের কোথাও কোন আঘাতের চিহ্ন নেই, শুধু মাথা থেথলানো,দেখে বোঝা যায় মায়ের কোল থেকে টেনে নিয়ে পা ধরে পাকা রাস্তায় আছড়িয়ে মারা হয়েছে। ঔই সময়ের মিউনিসিপ্যালিটির সুইপার/সুপারভাইজার সাক্ষী,গাড়ি,গাড়ি ভর্তি মানুষের লাশ তারা নীরবে তুলে গেছে,না হলে তাদের ও লাশ হতে হতো।
#ইতিহাস সাক্ষী ঔ সময়ে ঢাকায় অবস্থিত বিহারীরাও পাকিস্তানিদের সাথে তাল মিলিয়ে নৃশংসতা করেছে। যা লিখে শেষ করা যাবে না। বাসায় ঢুকে লুটতরাজ করে, পুরুষদের মেরে নারীদের পাশবিক অত্যাচার করে মেরে ফেলে শিশুদের তুলে এনে সবাই মিলে উল্লাস করে করে হত্যা করেছে।
এ লেখা গুলো কোন কিছুই বানিয়ে বা বাড়িয়ে লেখা না। সব ঘটনা গুলো কোন না কোন বই বা প্রবন্ধ থেকে নেওয়া। শুধু আমরা কেউ জানি, কেউ বা জানতে চাই না।
এখন কেউ যখন বলে সেদিন #গণহত্যা হয় নাই, যুদ্ধ হয় না নাই, তবে সে সময় কি হয়ে ছিল? প্রসঙ্গ ক্রমে আর দু'একটি ঘটনা না লিখলেই না, খুলনার চুনক নগরে গণহত্যায় চার ঘন্টায় ২০ হাজার মানুষ মেরে ছিলো পাকিস্তানি সৈন্যরা, শেরপুরের সোহাগপুর গ্রামের একটি পাড়ার নাম বেণু পাড়া, বেণু পাড়ার প্রতিটি পুরুষ মানুষ মেরে ফেলে,মোট ১৮৭ জন পুরুষ, একদিনে বেণু পাড়া হয়ে যায় বিধবা পল্লী।
এ রকম হাজারো জানা অজানা ঘটনার মাধ্যমে আমাদের #স্বাধীনতা অর্জন।
মুক্তিযুদ্ধের এই ইতিহাস, এই নৃশংসতা সবার জানা উচিত,জানা উচিত কোন ধারাবাহিকতায় আমরা স্বাধীন হলাম কেমন করে, প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম সবার জানা দরকার এই সোনালী ইতিহাস।
সেদিন সেই কৃষক, সেই ছাএ,সেই ছাএী, সেই পুলিশ, সেই রিকশা চালক, সেই অফিসের কেরাণী, সেই কিশোর, সেই বুদ্ধিজীবী'রা প্রাণ দিয়েছিলো
বলেই আমরা আজ বলতে পারছি "স্বাধীন বাংলাদেশ"।
"আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি",,,,,
*সহায়ক গ্রন্থ ও পএ/পএিকা-
**বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ: দলিল পএ
**চুনকনগর গণহত্যা দিবস-সুরঞ্জিত বৈদ্য- দৈনিক ইওেফাক, ২০ মে ২০১৩
**সোহাগপুরের বিধবাদের চোখে আনন্দাশ্রু- প্রথম আলো, ১০ মে ২০১৩
**বাংলা উইকিপিডিয়া https://rb.gy/yew6nj
**ছবিঋন: প্রথম আলো
Click here to claim your Sponsored Listing.
Videos (show all)
Category
Contact the public figure
Telephone
Website
Address
Mirpur
1216
Dhaka
Mirpur
- পৃথিবীর সবচেয়ে সেরা "ফিলিংস" হচ্ছে..! - প্রিয়জনের হাত ধরে রাস্তায় হাঁটা..!🖤🌸
Mirpur
সকলে পেইজটিকে ফলো করি এবং ইসলাম প্রচার করতে সাহায্য করি �
Dhaka
Mirpur
Hi.This is Niamul islam I am a vlogger I have a YouTube channel Please follow me to get my video's E
Mirpur Shopping Complex, Mirpur 1 Dhaka
Mirpur
Hi ! excuse me, congratulations at this page! how can we help you?