ইসলামিক জীবন
আলহামদুলিল্লাহ ♥ ইনশাআল্লাহ, সহিহ পদ্ধতিতে হজ্জ ও উমরাহ করার প্রয়াসে... we are in an attempt to perf
মহান আল্লাহ বলেনঃ
❝ যখন তুমি কোন কাজের সিদ্ধান্ত কর, তখন আল্লাহর উপর ভরসা কর❞ (আলে ইমরান ১৫৯)।
তিনি আরো বলেন,
وَمَنْ يَتَوَكَّلْ عَلَى اللهِ فَهُوَ حَسْبُهُ- ‘
যে আল্লাহর উপর ভরসা করে আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট’ (তালাক্ব ৩)।
আল্লাহ অন্যত্র বলেন,
وَمَا تَوْفِيقِي إِلَّا بِاللهِ عَلَيْهِ تَوَكَّلْتُ وَإِلَيْهِ أُنِيبُ ‘
আল্লাহ ছাড়া আমার কোন ক্ষমতা নেই। আমি তার উপর ভরসা রাখি, আমি তার নিকট ফিরে যাব (হূদ ৮৮)।
▌সত্যিকার আলেমের সন্ধানে:
কে এই ডঃ আবুবকর মুহাম্মদ যাকারিয়া? আসুন শাইখের পরিচয় জেনে নেই।
🌼 শাইখ ডঃ আবুবকর মুহাম্মদ যাকারিয়া এর সংক্ষিপ্ত পরিচিতি/ জীবনবৃত্তান্তঃ
Professor Dr. Abubakar Muhammad Zakaria
শাইখ ডক্টর আবুবকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া (হাফিযাহুল্লাহ) পি.এইচ.ডি (আকীদাহ), মদিনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় সৌদি আরব। সহযোগী অধ্যাপক, আল-ফিকহ বিভাহ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া, বাংলাদেশ।
আমরা তাকে চিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আল ফিকহ বিভাগের অধ্যাপক এতটুকুই। কিন্তু বিস্ময়কর ও বিরল প্রতিভার অধিকারী এ ব্যাক্তিত্বের আরো অসংখ্য পরিচয় আছে সেগুলো হলঃ
১. তিনি কামিলে মাদ্রাসা-ই-আলিয়া থেকে সারা বাংলাদেশে ১ম স্থান অর্জন করেছিলেন।
২. তাঁর রচিত, অনুদিত ও সম্পাদিত বইয়ের সংখ্যা প্রায় ১০০০ এর মত।তিনি ইসলামিক ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ এ বেশ কিছু গবেষণা কর্মে অংশগ্রহণ করেছেন । ইফাবা তাঁর একটি বইও প্রকাশ করেছে ।
৩. বাংলাদেশ থেকে যারা মদীনায় পড়তে গিয়েছে তিনি তাদের প্রথম সাঁড়ির একজন । বর্তমানে মদীনাতে প্রতি বছর বাংলাদেশি প্রায় ৫০/৬০ জন ছাত্রকে নেয় । কিন্তু তিনি যখন পড়তে গিয়েছিলেন তখন মাত্র ৪-৫ জন ছাত্রকে নেওয়া হতো । তিনি তাঁর মেধার স্বাক্ষর রেখে মদীনাতে পড়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন।
৪. মদীনায় তিনি যে সকল বড় বড় আলিমদের ছাত্র হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেনঃ
ক) গত শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ ফকিহ, কাবা শরীফের তারাবীহর সাবেক ইমাম,সৌদী আরবের সর্বোচ্চ উলামা পরিষদের সদস্য শাইখ মুহাম্মদ বিন সালিহ আল উসাইমিন রহিমাহুল্লাহ
খ) মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদীস বিভাগের প্রাক্তন প্রধান শাইখ আমান আল-জামী
গ) সৌদি আরবের সর্বোচ্চ উলামা পরিষদের সদস্য শাইখ আবদুল্লাহ বিন আবদুর রহমান আল জিবরীন
ঘ) ৫০ বছরের বেশি আরাফার মাঠে হজের খুতবা প্রদানকারী আলেম বর্তমান গ্র্যান্ড মুফতি শাইখ আবদুল আযিয বিন আবদুল্লাহ আলে শাইখ
ঙ) সৌদী আরবের সর্বোচ্চ উলামা পরিষদের সদস্য শাইখ ড. সালিহ বিন ফাউজান আল ফাউজান
চ) মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন চ্যান্সেলর ও মসজিদে নববীর মুহাদ্দিস শাইখ আবদুল মুহসিন আল আব্বাদ
ছ) শাইখ আবুবকর জাবির আল জাযায়েরী
জ) মসজিদে নববীর ইমাম ও খতিবগণ যাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন মসজিদে নববীর প্রধান ইমাম ও খতিব শাইখ ড. আলী আব্দুর রহমান আল হুযাইফী
ঝ) শাইখ আলী নাসের ফাক্বীহী
ঞ) শাইখ সুলাইমান আল রুহাইলী
ট) শাইখ ইবরাহীম আর রুহাইলী
ঠ) শাইখ আবদুর রায্যাক আল আব্বাদ
ড) শাইখ মুহাম্মদ আস সুদাইস
ঢ) শাইখ সাউদ আব্দুল আযীয আল খালাফ
ণ) শাইখ মুহাম্মদ আস শানকীত্বী
৫. শায়খকে যারা সনদ দিয়েছেন তাঁরা হলেনঃ--
ক) মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আকিদা ফ্যাকাল্টির ডিন শাইখ ড. সালিহ বিন সা'দ আস সুহাইমী
খ) শাইখ আব্দুল্লাহ গুনাইমান
গ) মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হাদীস বিভাগের প্রাক্তন প্রধান শাইখ ড.রাবী বিন হাদী উমাইর আল মাদখালী হাফিঃ এর ছেলে শাইখ মুহাম্মদ বিন রবী আল মাদখালী
ঘ) শাইখ আহমাদ আতিয়্যাহ আল- গামেদী
৬. শায়খের সাথী-বন্ধু যারা মাসজিদুল হারাম কিংবা মসজিদে নববী কিংবা মক্কা ও মদিনার বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে আছেন তাদের মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন-
ক) শাইখ সালেহ আস সিন্ধি
খ) শাইখ আব্দুল কারীম আর রুহাইলী
গ) শাইখ আব্দুল্লাহ শামসান
৭. তিনি মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে অনার্স ফাইনাল পরীক্ষায় ৫ম স্থান অধিকার করেন এবং মাস্টার্সে ১ম স্থান অধিকার করেন ।
৮. তিনি বর্তমানে সৌদী আরবস্থ আকীদা সমিতির সদস্য
৯. মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আকিদা অনুষদের সাবেক ডিন শাইখ ড.সালিহ বিন সা'দ আসসুহাইমির মত বিশ্ববিখ্যাত আকিদার ইমাম থেকে তিনি আকিদার সনদ প্রাপ্ত হন।আলহামদুলিল্লাহ।
১০. বাংলাদেশ সহ সারা পৃথিবীর ১৯০টি দেশের প্রায় ৩৫ হাজার ছাত্র মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে । কিন্তু এর ভিতরে খুব সামান্য সংখ্যক ছাত্রই মাস্টার্স ও পিএইচডি করার জন্য চান্স পেয়েছে।এ পর্যন্ত বাংলাদেশের শত শত মাদানী ছাত্রের মধ্যে মাত্র ৩ জন ছাত্র পিএইচডি করে ডক্টরেট ডিগ্রী অর্জন করতে পেরেছেন।
তাঁরা হচ্ছেন
- শাইখ ড. আবুবকর মুহাম্মদ যাকারিয়া,
- শাইখ ড. মানযূরে ইলাহী ও
- শাইখ ড. মোহাম্মাদ সাইফুল্লাহ।
আর এত কম সংখ্যক ছাত্র পিএইচডিতে চান্স পাওয়ার অন্যতম কারণ ছিল পিএইচডিতে চান্স পাওয়ার জন্য এক বসায় ১০ পারা কুরআনুল কারীম মুখস্ত শোনাতে হতো।
উল্লেখ্য বর্তমানে অনেকেই পিএইচডি করছেন যেমন শায়খ রেজাউল করিম,শেখ সাদী মাদানী,শায়খ আবদুল্লাহ আল কাফী,মিজানুর রহমান ভাই প্রমুখ।আল্লাহ তাদের হিফাজত করুন।
১১. শায়খের আরবী বই মোট ৬ টি। এর মধ্যে একটি বই হচ্ছে তাঁর মাস্টার্সে লেখা, যেটি ১৭০০ পৃঃ ৩ খন্ডে । আরেকটি বই হচ্ছে তাঁর পিএইচডি থিসিস, এটিও ৩ খন্ডে । এই থিসিসটি হিন্দুধর্মের উপরে । মদীনায় তুলনামূলক ধর্মতত্ত্বের উপরে অনেক কাজ হয়েছে । কিন্তু হিন্দু ধর্মের উপরে তখনও কোন কাজ হয়নি তাই তাঁরা হিন্দু ধর্ম সম্পর্কে ভুল পড়াতো।তিনি তাঁর উস্তাদদের বললেন এগুলো তো ভুল,হিন্দুদের আকিদা তো এমন নয়। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের উস্তাদগণ শায়খকে হিন্দু ধর্মের উপরে লেখার অনুরোধ করে, তখন তিনি এই বইটি লিখেন এবং আরব বিশ্বে এটি হিন্দু ধর্মের রেফারেন্স বুকের খালি স্থান পূরণ করে নেয়। আলহামদুলিল্লাহ উল্লেখিত দুটি বইই গোটা আরব বিশ্বে ব্যাপক সমাদৃত । কিছুদিন আগে একটি ভিডিওতে সৌদি এক শায়খকে পিএইচডি থিসিসের বইটির অনেক প্রশংসা করতে দেখা যায় । এ ছাড়াও তাঁর আরো ৪ টি বই রয়েছে।
১২. তাঁর রচিত আরবি একটি বই বিশ্বব্যাপী পরিচিত মাকতাবাতুশ শামিলায় রয়েছে । মাকতাবাতুশ শামিলাতে ইসলামের স্বর্ণযুগের আলিমদের বই থেকে শুরু করে বর্তমান অবধি বিখ্যাত হাজারো আরবী বইয়ের সংগ্রহ রয়েছে । এ পর্যন্ত বাংলাদেশের আরো ২ জন আলিমের বই স্থান পেয়েছে । তাঁরা দুজন হচ্ছে এক সময়কার বাইতুল মুকাররমের খতীব ও ঢাকা আলিয়ার উস্তায মুফতী আমীমুল ইহসান রহ. এবং আরেকজন মুসলিম বিশ্বের নোবেল প্রাইজ খ্যাত বাদশাহ ফয়সাল এওয়ার্ড প্রাপ্ত শায়খ মেহের আলী রহ.। এ দুজনের সাথে তাঁর বইও স্থান পেয়েছে ।
১৩. শায়খের প্রায় ১০০০ সংখ্যক লিখিত,অনুদিত ও সম্পাদিত বই রয়েছে । এই বইগুলোর অধিকাংশই রয়েছে ইসলাম হাউস ডট কম (www.Islamhouse.com) এর বাংলা বিভাগে । ইসলাম হাউস ডট কমের প্রধানদের দিক-নির্দেশনাতেই এখানের অধিকাংশ বই রচিত হয় । ইসলাম হাউস ডট কম হচ্ছে এমন একটি ওয়েবসাইট যেটি পৃথিবীর
১১৫ টি ভাষায় পরিচালিত হচ্ছে।সমগ্র পৃথিবীব্যাপী তাওহীদ প্রচারে যার অবদান অতুলনীয়। বই ছাড়াও এখানে অসংখ্য অডিও, ভিডিও, কুরআন তিলাওয়াত সহ আরো নানান রকমের বিষয় রয়েছে । এখানের অডিও ও ভিডিওগুলোও সম্পাদনা করা হয় এবং সেগুলোর অধিকাংশই শায়খের করা । এটি ইসলাম প্রচার ব্যুরো, রাবওয়াহ, রিয়াদ থেকে পরিচালিত হয় । শায়খ হচ্ছেন বাংলা বিভাগে যারা কাজ করে তাদের একজন।
১৪. মদীনার খাদেমুল হারামাইন শারীফাইন বাদশাহ ফাহাদ কমপ্লেক্স থেকে বাংলায় ফ্রী বিতরণ যোগ্য তাফসীর লেখার জন্য মদীনার শাইখগণ তাঁকে বাছাই করে নিয়েছেন এবং তাফসীরটিতে বর্তমান সৌদি আরবের তৎকালীন ধর্মমন্ত্রী শায়খ সালিহ বিন আবদুল আযিয আলে শাইখ হাফিঃ ভূমিকা লিখে দেন। এ থেকেও বুঝা যায় তিনি কতটা নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বস্ত আলিম হারামাইন শারীফাইন ও সৌদি আরবের উলামাদের নিকট।
বাংলাভাষী কয়েক হাজার মদীনা,মক্কা,রিয়াদ ও কিং আবদুল আযিয ও সউদী আরবের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের মধ্যে ওনাকে বাছাই করে নিয়েছেন মদীনার শায়খগণ।
১৫. তিনি পরিবার থেকে প্রায় ৩০০ কিলোমিটার
দূরে শুধু ইলমের খিদমতের জন্য অবস্থান করেন। বার্ধক্যের কাছাকাছি সময়ে পরিবার পরিজন থেকে দূরে থাকা যে কতটা কষ্টের তা কেবল ভুক্তভোগীরাই জানে।তিনি প্রতি সপ্তাহে এক/দুদিন বিরতিতে আপ-ডাউন সহ প্রায় ৬০০ কিলোমিটার সফর করেন।
১৬. শায়খের ব্যাক্তিগত আচরণের কথা এখানে লিখে শেষ করা যাবে না বরং উনার সাথে মিশেছেন তারাই বলতে পারবেন। শায়খ অত্যন্ত অমায়িক এবং সহজেই মানুষকে আপন করে নেন। শায়খের সাথে আমার প্রথম সাক্ষাৎ হয় আজ থেকে চার-পাঁচ বছর আগে শায়খের কাছে সেই কথাগুলো এখনো মনে আছে।
শায়খকে যখন কিছু দিন আগে আমার দোকানে নিয়ে আসছিলেন সেদিনটি ছিল আমার কাছে জীবনের সবচেয়ে আনন্দের দিনগুলোর অন্যতম। সেদিন যে আমার কি আনন্দ হচ্ছিল তা আমি ভাষায় বুঝাতে পারবনা।
অনেকের কাছেই এসব শুনে আশ্চর্য লাগতে পারে।কিন্তু বাস্তবতা হল আমাদের কাছে জাতীয়ভাবে কেউ চিনেনা ও জীবনে পাসপোর্টও করা লাগেনা, সে হয়ে যায় আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসির,আর বিজ্ঞ আলেমগণ সমাজে অপরিচিত ও অবহেলিত থাকেন।
আবার মাঝে মাঝে মদীনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আকিদা অনুষদের ডিন শাইখ ড.সালিহ বিন সা'দ আসসুহাইমির মত আলেমদের থেকে আকিদার সনদ পাওয়া বিজ্ঞ আলেমদের আকিদা ও মানহাজ নিয়ে কেউ কেউ প্রশ্ন তুলেন ও তাদের আকিদা-মানহাজ স্পষ্ট করার দাবি জানান।মনে হয় যেন হারামাইনের শাইখগণ আকিদা-মানহাজ না জেনেই কাউকে সনদ দিয়ে দেন।
আল্লাহ আমাদের সবার অজ্ঞতাকে দূর করুন ও আলেমদের সম্মানহানি থেকে আমাদের জিহ্বাকে হিফাজত করুন।আল্লাহ আমাদের শাইখের হায়াত বৃদ্ধি করুন,সুস্থ রাখুন,শাইখের ইলমকে স্থায়ী করুন ও আমাদেরকে সে ইলম থেকে উপকৃত হওয়ার তাওফিক দান করুন,শাইখকে ও তাঁর পরিবারকে সকল বিপদাপদ থেকে হিফাজত রাখুন ও মৃত্যু পর্যন্ত সিরাতুল মুসতাকিমের উপর অটল রাখুন,শাইখের উস্তাদদের উত্তম প্রতিদান দান করুন। আমিন।
একটি বৃক্ষের ৫ টি ফল ...মাশাআল্লাহ ।
𖣔 ১) শায়খ আব্দুল্লাহিল কাফি,
𖣔 ২) শায়খ আব্দুল্লাহিল বাকি,
𖣔 ৩) শায়খ আব্দুল্লাহিল হাদী,
𖣔 ৪) শায়খ আব্দুল্লাহ যুবায়ের এবং
𖣔 ৫) শায়খ মোহাম্মাদ রহমাতুল্লাহ বিন আব্দুল জলিল মাদানী
আল্লাহ তা'য়ালা শাইখদের সহ পরিবারের সকলের নেক হায়াত দান করুন । দুনিয়া এবং আখিরাতে কল্যাণ দান করুন আমীন ।
▌আজকাল কিছু নতুন মুফতি এই ফতোয়া দিচ্ছে যে গরুতে ভাগ চলবে না 🎙️ শাইখ মতিউর রহমান মাদানী (হাফি.)
জেনে নিন: পশু জবেহ করার সঠিক পদ্ধতি
▬▬▬▬✿◈✿▬▬▬▬▬
ইসলাম দয়া ও মমতার ধর্ম। যে কারণে ইসলামে পশুর প্রতিও দয়া ও অনুগ্রহ প্রদর্শন করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যেমন: হাদিসে এসেছে,
▪ সাহাবি শাদ্দাদ ইবনে আউস রা. থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
إِنَّ اللَّهَ كَتَبَ الْإِحْسَانَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ، فَإِذَا قَتَلْتُمْ فَأَحْسِنُوا الْقِتْلَةَ، وَإِذَا ذَبَحْتُمْ فَأَحْسِنُوا الذَّبْحَ، وَلْيُحِدَّ أَحَدُكُمْ شَفْرَتَهُ، فَلْيُرِحْ ذَبِيحَتَهُ ِ
“আল্লাহ প্রতিটি বিষয়ে সুন্দর ও দয়া সুলভ আচরণের নির্দেশ দিয়েছেন। অতএব, তোমরা যখন হত্যা করবে তখন সুন্দরভাবে করবে আর যখন জবেহ করবে তখনও তা সুন্দর ভাবে করবে। তোমাদের কেউ (জবেহ করতে চাইলে) যেন ছুরি ধারালো করে নেয় এবং জবাইয়ের পশুটিকে প্রশান্তি দেয়।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ১৯৫৫)
▪ আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রা. থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি একটি ছাগল জবাই করার জন্য মাটিতে শুইয়ে ছুরি ধার করতে লাগল। তখন প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাকে ধমক দিয়ে বললেন,
أتريدُ أن تُميتَها موتاتٍ هلَّا حَدَدْتَ شَفْرَتكَ قبلَ أنْ تُضجِعَها
“তুমি কি একে কয়েকবার মৃত্যু দিতে চাও? তাকে মাটিতে শোয়ানোর আগে কেন তোমার ছুরি ধার দিলে না!”
[মুসতাদরাকে হাকিম, হাদিস : ৭৫৬৩, সহিহ]
◈ পশু জবেহ করা সঠিক পদ্ধতি:
🌀 ১. আল্লামা আব্দুল্লাহ বিন বায রহঃ. বলেন: “(গরু, ছাগল, দুম্বা ইত্যাদি পশু) জবেহ করার সময় ধারালো অস্ত্রের সাহায্যে পশুর খাদ্যনালী, শ্বাসনালী এবং গলদেশের দু পার্শ্বস্থ দুটি মোটা রগ কর্তন করা উত্তম। তবে যদি কেবল খাদ্য ও শ্বাসনালী এবং এক পাশের একটা মোটা রগ কাটা হয় তাহলেও যথেষ্ট। এমনকি শুধু খাদ্য ও শ্বাসনালী কাটা হলেও যথেষ্ট। তবে উক্ত চারটা রগ কর্তন করা অধিক উত্তম।” (শাইখ বিন বায রহ. এর অফিসিয়াল ওয়েব সাইট)
ধারালো অস্ত্র দ্বারা এভাবে কর্তন করার পর পশুকে কিছুক্ষণ ধরে রাখলেই ভেতর থেকে রক্তগুলো বের হয়ে দ্রুতই নিস্তেজ হয়ে যাবে এবং প্রাণ ত্যাগ করবে।
🌀 ২. প্রাণ ত্যাগ করার পূর্বে পশুর অন্য কোনো অঙ্গ কেটে কষ্ট দেওয়া হারাম। যেমন: ঘাড় মটকানো, পায়ের রগ কাটা, চামড়া ছাড়ানো ইত্যাদি।
🌀 ৩. অনুরূপভাবে, দেহ আড়ষ্ট হয়ে এলে চামড়া ছাড়াতে শুরু করার পর যদি পুনরায় লাফিয়ে ওঠে, তাহলে প্রাণ ত্যাগ করার কাল পর্যন্ত আরও কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে হবে। যেহেতু পশুকে কষ্ট দেয়া আদৌ বৈধ নয়।
🌀 ৪. পশু পালিয়ে যাওয়ার ভয় থাকলেও ঘাড় মটকানো যাবে না। বরং তার বদলে কিছুক্ষণ ধরে রাখা অথবা হাঁস-মুরগীকে ঝুড়ি ইত্যাদি দিয়ে চেপে রাখা যায়।
🌀 ৫. জবেহ করার সময় পশুর মাথা যাতে বিচ্ছিন্ন না হয় তার খেয়াল করা উচিত।কিন্তু যদি অসতর্কতা বশত: যদি মাথা কেটে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তাহলেও হালাল হওয়ার ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।
তবে আল্লাহর নামে ধারালো অস্ত্রের সাহায্যে প্রথমে বর্ণিত পদ্ধতির আলোকে জবেহ করার পর প্রাণ ত্যাগের পূর্বে যদি পশুর শরীরের কোথাও ছুরি ঢুকানো হয়, ছুরি দ্বারা গুঁতা দেয়া হয় বা আঘাত করা হয় তাহলে তাতে পশুটি হারাম হবে না। কিন্তু এভাবে করলে পশুটিকে কষ্ট দেয়ার কারণে গুনাহ হবে।
আল্লাহ ক্ষমা করুন। আমীন।
🌀 ৬) পশুকে শুইয়ে জবেহ কারী কেবলা মুখি হয়ে এবং পশুর মাথাটা কেবলার দিকে একটু ঘুরিয়ে জবেহ করা উত্তম। তবে আবশ্যক নয়। অর্থাৎ কিবলা ছাড়া অন্য দিকে মুখ করে আল্লাহর নামে জবেহ করলেও তা হালাল হবে। (আল্লামা বিন বায. রহ.)
🌀 ৭) আল্লাহর নামে জবেহ করা:
আল্লাহ তাআলা বলেন:
وَلاَ تَأْكُلُوا مِمَّا لَمْ يُذْكَرِ اسْمُ اللَّهِ عَلَيْهِ
‘‘(জবেহ করার সময়) যে পশুর উপর আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা হয় না, তোমরা তা ভক্ষণ কর না।” (সূরা আনআম: ২১)
🌀 ৮)জবেহ করার সময় ”বিসমিল্লাহ আল্লাহু আকবার” বলে পশুর কাঁধের পার্শ্বে পা দ্বারা চেপে ধরে ধারালো অস্ত্র দ্বারা শক্তি দিয়ে গলায় ছুরি চালাবে।
হাদিসে বর্ণিত হয়েছে:
عن أنس بن مالك -رضي الله عنه- قال: ضحى النبي صلى الله عليه وسلم بكبشين أملحين، ذبحهما بيده، وسمى وكبر، ووضع رجله على صفاحهما [رواه البخاري ومسلم] وفي لفظ البخاري أقرنين قبل أملحين.
আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন: আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজ হাতে দুটি সাদা-কালো বর্ণের দুম্বা কুরবানি করেছেন।
(জবেহ করার সময়) তিনি ’বিসমিল্লাহ ও আল্লাহু আকবার’ বলেছেন এবং পা দিয়ে সেগুলোর কাঁধের পার্শ্বদেশ চেপে রাখেন। (বুখারি: ৫৫৬৫, মুসলিম: ১৯৬৬)
বুখারিতে ‘সাদা-কালো’ শব্দের পূর্বে ‘শিং ওয়ালা’ কথাটি উল্লেখ আছে।
উল্লেখ্য যে, কোন মুসলিম জবেহ করার সময় অসাবধানতা বশত: মুখে বিসমিল্লাহ-আল্লাহু আকবার উচ্চারণ করতে ভুলে গেলে উক্ত জবেহকৃত প্রাণী হারাম হবে না। কেননা, মুসলিমেরর অন্তরে আল্লাহর নাম রয়েছে। কিন্তু ইচ্ছাকৃতভাব তা পরিত্যাগ করা বৈধ নয়।
আল্লাহু আলাম।
▬▬▬▬✿✿✿▬▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
(লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সউদী আরব)
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব
জুমু'আহ-র সুন্নাহসমূহ:
১| গোসল করা। (বুখারিঃ ৮৭৭)
২| ফজরের সালাতে সূরা আস- সেজদা ও সূরা ইনসান পড়া। ( বুখারিঃ ৮৯১)
৩| সূরা কাহাফ পাঠ করা। ( বায়হাকি: ৩/ ২৪৯)
৪| দরূদ পাঠ করা। ( আবু দাউদঃ ১০৪৭)
৫| বেশি করে দু'আ করা বিশেষ করে আসরের শেষের দিকে। ( আবু দাউদঃ ১০৪৮)
৬| জুমু'আহ সালাতের জন্য তাড়াতাড়ি যাওয়া। ( বুখারিঃ ৮৮১)
৭| উত্তম পোশাক পরিধান করা ও সুগন্ধি লাগানো। (বুখারিঃ ৮৮৬, ৮৮০)
৮| মসজিদে প্রবেশ করে "তাহ্যিয়াতুল মাসজিদ"-এর সলাত আদায় করা তারপর বসা! (বুখারীঃ ১১৬৭)
৯| নীরব থাকা ও খুতবা শোনা। ( বুখারিঃ ৯৩৪)
১০| ২/৪ রাকাত নফল সালাত আদায় করা জুমু'আহ সালাতের পর। ( মুসলিমঃ ৯৩৪)
আল্লাহর রাসূল বলেনঃ মানুষের মধ্যে সেই অপারগ যে আল্লাহর নিকট দুয়া করতে অপারগ, এবং মানুষের সেই প্রকৃত কৃপণ যে মানুষকে সালাম দিতে কৃপনতা করে। ইবনু হিব্বান হাদিসটি বর্ননা করেছেন এবং আলবানি হাদিসটি সহিহ বলেছেন।
জিলহজ্জ মাসে তাকবীর পাঠের পদ্ধতি:
___________________________________
জিলহজ্জ মাসের চাঁদ উঠার পর থেকেই উঁচু আওয়াজে বেশী বেশী তাকবীর পাঠ করা সুন্নত।
ফরজ নামাযের পর, মসজিদে, বাজারে এবং রাস্তায় চলার সময় এ তাকবীর বেশী করে পাঠ করা। মহিলাগণ নিচু আওয়াজে তাকবীর পাঠ করবে। তবে দলবদ্ধভাবে সমস্বরে তাকবীর পাঠ করা সুন্নতের পরিপন্থী। কারণ সাহাবীদের থেকে দলবদ্ধভাবে তাকবীর পাঠ করার কোন প্রমাণ পাওয়া যায়না। অথচ তারা ছিলেন সৎকাজে আমাদের চেয়ে অনেক অগ্রগামী।
এই তাকবীর দু ধরণের:
➤(ক) অনির্দিষ্ট তাকবীর: التكبير المطلق
সময় ও স্থান নির্ধারণ না করে বাড়ী, মসজিদ, রাস্তা ও বাজারে উঁচু আওয়াজে তাকবীর পাঠ করা।
জিল হজ্জের প্রথম দিন থেকে ঈদের দিন পর্যন্ত এ তাকবীর চলতে থাকবে। ইমাম বুখারী (রহিমাহুল্লাহ) বলেন, ইবনে উমর ও আবু হুরায়রা (রা:) এই দিন গুলোতে তাকবীর বলতে বলতে বাজারে যেতেন। তাদেরকে তাকবীর বলতে শুনে লোকেরাও তাকবীর পাঠ করত।
➤(খ) নির্দিষ্ট তাকবীর: التكبير المقيد অর্থাৎ নির্দিষ্টভাবে পাঁচ ওয়াক্ত নামাযের পর তাকবীর পাঠ করা:
এই তাকবীর জিল হজ্জ মাসের ৯ তারিখ ফজরের নামাযের পর থেকে শুরু করে আইয়ামে তাশরীক তথা জিল হজ্জ মাসের ১৩তারিখ সূর্য অস্ত যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত চলতে থাকবে।
➤ তাকবীরের শব্দ:
اللهُ أكبر اللهُ أكبر لا إلهَ إلَّا الله واللهُ أكبر اللهُ أكبر ولله الحَمْد
বাংলা উচ্চারণ:
আল্লাহু আকবার
আল্লাহু আকবার
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ
ওয়াল্লাহু আকবার
আল্লাহু আকবার
ওয়া লিল্লাহিল হামদ।
______________________
লেখক: শাইখ আব্দুল্লাহ আল কাফী বিন আব্দুল জলীল।
আলহামদুলিল্লাহ 🌺🌼 ব্রিটিশ হাজিদের অভ্যর্থনা
প্রথম ফ্লাইট
আমাদের দাওয়াত কিসের দাওয়াত ?
আমাদের উদ্যেশ্য কি ?
আমাদের আদর্শ কে ?
Sheikh Motiur Rahman Madani
▬▬🍂▬▬🔸🔸🔸🔹🔹🔹🔸🔹🔸🔹
কেউ কোন ক্ষতি করতে পারবে না যদি আল্লাহ(ﷻ) না লিখে রাখেন- এর ব্যাখ্যা কি?
-ড. আবু বকর মুহাম্মদ যাকারিয়া মাদানী হাফিজাহুল্লাহ
(Abubakar Muhammad Zakaria)
খাবারঃ একাকী না খেয়ে একত্রে খাবার খাওয়ার চেস্টা করুন
জান্নাতে যাবার পূর্বে একটি স্টেশানঃ ⛩️
▌কান্তারা' কি জেনে নিন:
⚫ কান্তারা হল একটি চেকপোস্ট। কোনো মানুষের যখন সারাজীবনের হিসাব নিকাশ নেয়ার পর জান্নাতের ফায়সালা পেয়ে যাবে, এবার সে জান্নাতের দিকে ছুটবে।
যেতে যেতে মাঝখানে একটা চেকপোস্ট পড়বে।
সেখানে মানুষের উপর সে যে যুলুম করেছিল!সেটার ফিনিশিং হবে। দুনিয়াতে কাউকে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছিল, কারো থেকে টাকা মেরে দিয়েছিল, কাউকে ওজনে কম দিয়েছিল, কাউকে থাপ্পড় মেরেছিল, কাউকে গালি দিয়েছিল, কাউকে এমন কথা বলেছিল যে তার মাথাটা সবার সামনে নিচু হয়ে গিয়েছিল; মোটকথা, অন্যায়ভাবে মানুষকে কষ্ট দিয়েছে।
মানুষ মানুষের উপর যত যুলুম করেছে। যখন কেউ কান্তারা নামক জায়গাতে পৌঁছবে, তখন সে দেখবেন-তার সমস্ত পাওনাদারেরা সেখানে তার জন্য অপেক্ষা করছে!
এবং তারা আল্লাহ সুবহানাহু তা'আলার কাছে বিচার দিবে যে-
হে আল্লাহ, এই লোকটা আমাকে অন্যায়ভাবে থাপ্পড় মেরেছিল।একজন বলবে যে,আমার টাকা ধার নিয়ে আর দেয়নাই।একজন বলবে, আমার রক্ত বের করে দিয়েছিল।একজন বলবে, আমাকে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সমাজে ছোট করে দিয়েছিল, আমি এর বিচার/প্রতিকার পাইনি।
তখন আল্লাহ সুবহানাহু তা'আলা এগুলোর সমাধান করবেন এই স্টেশনটাতে।আল্লাহ তা'আলা বলবেন, এখন তুমি তোমার আমল দিয়ে-তুমি যে তাহাজ্জুদ পড়েছ, দ্বীন চর্চা করেছ, হজ্জ-ওমরা করেছ, সলাত, সিয়ামগুলো করেছ সেগুলোর সাওয়াব গুলো তাদের দিতে থাকো। এভাবে পাওনাদার সবাইকে নিজের আমল দ্বারা পরিশোধ করা হবে। একসময় দেখা যাবে যে তার সব সাওয়াব শেষ হয়ে গিয়েছে, কিন্তু পাওনাদার এখনো রয়ে গেছে।
তখন আল্লাহ তা'আলা বিচার করবেন যে,যেহেতু দেয়ার কিছুই নেই, এবার তুমি তাদের পাপের বোঝাটা মাথায় নাও; তাহলে ওরা হালকা হবে জান্নাতে চলে যাবে।
তখন এই ব্যক্তি কি করবে? আসলে সে কিন্তু জান্নাতে যাওয়ার সাওয়াব পেয়েছিল। কিন্তু মানুষের উপর যেসব অবিচারগুলো করেছিল তার দেনা-পাওনা পরিশোধ করতে করতে তার সমস্ত সাওয়াব শেষ হয়ে যাবে এবং অন্যদের গুনাহের বোঝা মাথায় নিয়ে নিঃস্ব,অসহায়ের মতো সে জাহান্নামে যাবে!
এ সম্পর্কে রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- "তোমরা কি জানো যে নিঃস্ব, হতভাগা কে?" তখন সাহাবায়ে কেরাম বলেছিল,আমাদের মধ্যে নিঃস্ব,অসহায় বলতে আমরা বুঝি-যার দিনার, দিরহাম/টাকা-পয়সা নাই।
রসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন বলেছিলেন- "আমার উম্মাতের মধ্যে নিঃস্ব হল-যে ব্যক্তি দুনিয়াতে সলাত, সিয়াম, যাকাত, হজ্জ-ওমরা সবই করেছিল। অথচ দুনিয়াতে কাউকে থাপ্পড় মেরেছে, কাউকে রক্ত বের করে দিয়েছে, কাউকে মিথ্যা অপবাদ দিয়েছে, কারো টাকা মেরে দিয়েছে ইত্যাদি। আল্লাহ যেদিন ফায়সালা করবেন, সেদিন তাদের আমল দিয়ে পরিশোধ করবেন আর যখন আমল শেষ হয়ে যাবে তখন তাদের পাপের বোঝাগুলো এই ব্যক্তির মাথায় দেয়া হবে। এবং অসহায়, নিঃস্ব হয়ে সে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে।"
এই ফায়সালাটা যেই জায়গায় হবে সে জায়গাটার নামই "কান্তারা।"
আল্লাহ আমাদের সবাইকে কান্তারার কঠিন পরিস্থিতি থেকে হেফাজত করুন এবং মৃত্যুর আগে দুনিয়াতেই মানুষের দেনা পাওনা যদি কিছু থেকে থাকে আমরা যেন তা পরিশোধ করে নিতে পারি সেই তৌফিক দান করুন। আল্লাহ তা'আলা আমাদের সবাইকে হেফাজত করুন, বোঝার তৌফিক দান করুন।আল্লাহ আমাদের সবাইকে মাফ করে দিন। আমীন ইয়া রব্বুল আলামিন।
শায়খ আব্দুল্লাহ আল বাকী হাফিজাহুল্লাহ
ক্বারী আব্দুর রহমান আল ওসী 🌼🌺🌼
to Jannah
▌প্রশ্নঃ আদিম যুগের মানুষরা কাপড় পড়তো না, আগুন জালাতে জানতো না, কথাও বলতে জানতো না, তারা ছিল অসভ্য ও বর্বর। কেন তারা এমন ছিল? আসলে এ কথাগুলো কি সঠিক?
উত্তরঃ “আদিম যুগের মানুষ আগুন জ্বালাতে জানতো না, কথা বলতে জানতো না, কাপড় পড়তো না, তারা ছিলো অসভ্য ও বর্বর…।” এগুলো ঐ সকল নাস্তিক ও ডারউইনবাদীদের কথা যারা মনে করে যে, মানুষ বানর থেকে এসেছে! যারা নবী-রাসূলকে বিশ্বাস করে না। আসমানি গ্রন্থকে বিশ্বাস করে না।
আদিম যুগের মানুষ সম্পর্কে ইসলামী মতঃ
প্রকৃতপক্ষে এ সবকথা তাদের কাল্পনিক মিথ্যাচার ছাড়া কিছু নয়। বরং সঠিক কথা হল, আল্লাহ তাআলা মানুষকে দুনিয়ার বুকে প্রেরণ করার পর তাদেরকে কোন পথ নির্দেশক ছাড়া এমনি এমনি ছেড়ে দেন নি। বরং তিনি তাদের পরিচালনা, পথ নির্দেশ এবং শিক্ষা-দীক্ষার জন্য যুগে যুগে বহু নবী- রাসূলদেরকে পাঠিয়েছেন।
আর নবী-রাসলূগণ আল্লাহর পক্ষ থেকে শিক্ষাপ্রাপ্ত। তারা ছিলেন সুসভ্য ও মানব জাতির শ্রেষ্ঠ শিক্ষক-এতে কোন সন্দেহ নাই।
সর্ব প্রথম মানব আদম (আঃ) যেমন ছিলেনঃ
আদম আলাইহি সালাম ছিলেন প্রথম মানুষ এবং প্রথম নবী। তিনি মানব জাতির পিতা। তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে জ্ঞান-গরিমা ও সভ্যতা শিখেই দুনিয়ায় আগমন করেছেন।
✪ আদম আলাইহিস সালাম এর ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা বলেন:
“আর আল্লাহ তা’আলা শিখালেন আদমকে সমস্ত বস্তু-সামগ্রীর নাম। তারপর সে সমস্ত বস্তু-সামগ্রীকে ফেরেশতাদের সামনে উপস্থাপন করলেন। অতঃপর বললেন, আমাকে তোমরা এগুলোর নাম বলে দাও, যদি তোমরা সত্য হয়ে থাক। তারা বলল, তুমি পবিত্র! আমরা কোন কিছুই জানি না, তবে তুমি যা আমাদিগকে শিখিয়েছ (সেগুলো ব্যতীত) নিশ্চয় তুমিই প্রকৃত জ্ঞানসম্পন্ন, প্রজ্ঞাবান। তিনি বললেন, হে আদম, ফেরেশতাদেরকে বলে দাও এসবের নাম। তারপর যখন তিনি বলে দিলেন সে সবের নাম..।”
সূরা বাক্বারা: ৩১, ৩২, ও ৩৩
✪ ইবনে আব্বাস রা., ইকরিমা প্রমূখ বর্ণনা করেন, আদম আলাইহিস সালাম দুনিয়ার বুকে আসার পর প্রায় সুদীর্ঘ এক হাজার বছর পর্যন্ত মানুষ একমাত্র আল্লাহর ইবাদত করত। পৃথিবীতে শিরকের অস্তিত্ব ছিল না।
এক হাজার বছর পর সর্ব প্রথম নূহ আলাইহি সালাম এর উম্মতের মধ্যে পাঁচজন সৎ লোকদেরকে সম্মান করার ক্ষেত্রে সীমালঙ্ঘণ করার কারণে তাদের মূর্তি তৈরি করা হয় এবং কাল পরিক্রমায় মানুষের মধ্যে দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞতা ছড়িয়ে পড়া এবং শয়তানী প্ররোচনার ফলে অনেক মানুষ মূর্তি পূজা শুরু করে।
(সূরা নূহ এর ২৫ নং আয়াতের তাফসীর। দেখুন, তাফসীরে ত্ববারী, ইবনে কাসীর ইত্যাদি)
তাহলে আদম আলাইসিস সালাম এর দুনিয়াতে আগমণ করার পর যেখানে দীর্ঘ একহাজার বছর পর্যন্ত মানুষ কেবল আল্লাহর ইবাদত করতো সেখানে তাদের ব্যাপারে এ সব অসভ্যতা, বর্বরতা, কথা বলতে না পারা ইত্যাদি অভিযোগ কত বড় মিথ্যাচার ও কল্পনা প্রসূত তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
কুরআনে আগুনের ব্যবহারঃ
✪ কুরআনে আদম আঃ. এর দু ছেলে হাবিল-কাবিলের ঘটনার তাফসীরে আগুনের উল্লেখ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে সূরা মায়েদাহ এর ২৮ নং আয়াতের তাফসীর পড়ুন।
✪ কুরআনের বিভিন্ন স্থানে আগুনের ব্যবহার আলোচিত হয়েছে। যেমন দেখুন, সূরা ত্বহা এর ১০, সূরা নামল এর ৭, সূরা ক্বাসাস এর ২৯ নং আয়াত।
✪ আরও দেখুন ইবরাহীম আলাইহিস সালাম কর্তৃক মেহমানদেরকে গরুর বাছুর ভুনা করে আপ্যায়নের ঘটনা-সূরা হুদ এর ৬৯ নং আয়াত।
আদিম মানুষের কথা বলার জ্ঞানঃ
✪ ‘আদিম যুগের মানুষরা কথা বলতে জানতো না’-এর চেয়ে হাস্যকর ও উদ্ভট কথা আর কী হতে পারে?
আল্লাহ তাআলা সৃষ্টিগতভাবেই মানুষকে ভাষাজ্ঞান দান করেছেন। দেখুন, সুরা আর রহমান এর ২ ও ৩ নং আয়াত।
আদিম মানুষের লজ্জাস্থান ঢাকার জ্ঞানঃ
✪ জান্নাতে থাকা অবস্থায় লজ্জাস্থান ঢেকে রাখার বিষয়টি কুরআনে আদম ও হাওয়ার ঘটনায় উল্লেখিত আছে। দেখুন সূরা আরাফ এর ২৩ নং ও সূরা ত্বাহা এর ১২১ নং আয়াত।
তবে হয়ত আমাদের মত কাপড় ছিলো না; ছিলো অন্য কিছু যা দ্বারা তারা নিজেদের লজ্জা নিবারণ করতো।
এই সভ্যতা ও শালীনতা মানব সৃষ্টির সূচনা লগ্ন থেকেই বিদ্যমান। বরং উলঙ্গ চলাফেরা ও লজ্জাহীনতা আধুনিক যুগের অসভ্যতা।
মোটকথা, প্রত্যেক যুগেই মানুষ তৎকালীন সভ্যতা অনুযায়ী বিশ্বে রাজত্ব করেছে এবং বিশ্বকে পরিচালিত করেছে। তবে যুগের বিবর্তনে সভ্যতা, জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা এবং নব নব আবিষ্কার ও টেকনোলোজি দ্বারা বিশ্ব সমৃদ্ধ হয়েছে। বিকশিত হয়েছে মানব সভ্যতা। পৃথিবী ধ্বংসের পূর্ব পর্যন্ত এর ব্যাপ্তি বৃদ্ধি পেতেই থাকবে আশা করা যায়।
সুতরাং ডারউইন পন্থী ও আল্লাহর দুশমন নাস্তিকদের কাল্পনিক মিথ্যাচারে বিশ্বাস করা থেকে আমাদেরকে বাঁচতে হবে; বাঁচাতে হবে আমাদের সন্তানদেরকে। আল্লাহ হেফাজত করুন। আমীন।
উত্তর প্রদানেঃ আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানি। দাঈ, জুবাইল দওয়াহ সেন্টার।
🍂 ইফতার করতে হয় সূর্যাস্তের সময়ের পর পরই
সূর্য অস্ত যাবার সাথে সাথেই ইফতার করা ইসলামী শরী‘অতের নির্দেশ।
রাসূলুল্লাহ বলেছেন: “যতদিন পর্যন্ত লোকেরা দ্রুত (সূর্যাস্তের সাথে সাথে) ইফতার করবে, ততদিন তারা কল্যাণের উপর থাকবে।”
(সহীহুল বুখারী- হা. ১৯৫৭, সহীহ মুসলিম হা. ১০৯৮)
হাদীসে কুদসীতে রয়েছে- আল্লাহ তা'আলা বলেন: “সেই সব বান্দা আমার নিকট প্রিয় যারা সময় হওয়ার সাথে সাথে ইফতার করে।” (তিরমিযী- হা. ৭০০)
🍂 ইফতারের দু'আঃ
ইফতারের পূর্বে এ দু'আ পড়া যায়,
«اللهم لك صمت وعلى رزقك أفطرت
উচ্চারণ : আল্লা-হুম্মা লাকা সুমতু ওয়া‘আলা- রিক্কিকা আফত্বারতু।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমারই জন্য সিয়াম রেখেছিলাম এবং তোমার প্রদত্ত রিক দ্বারা ইফতার করছি।
(মিশকা-তুল মাসাবীহ- তাক্বীক্ব: আলবানী, হা. ১৯৯৪) উক্ত হাদীসটি মুরসাল, তবে কেউ কেউ যঈফ, কেউ কেউ হাসান বলেছেন। আল্লামা মুহাম্মদ সালেহ আল উসাইমীনসহ অনেকে আমলযোগ্য বলেছেন।
এরপর "বিসমিল্লাহ" বলে ইফতার শুরু করা ও"আলহামদুলিল্লাহ" বলে ইফতার শেষ করা
ইফতার শেষে নিম্নের দু'আ পড়া সুন্নাত :
«ذهب القمأ وابتلت العروق، وثبت الأجر إن شاء الله».
উচ্চারণ : যাহাবায যামা-উ ওয়াবতাল্লাতিল ‘উরূকু, ওয়া সাবাতাল আজরু ইনশা-আল্লাহ। অর্থ: পিপাসা বিদূরিত হলো, শিরাসমূহ সিক্ত হলো, প্রতিদান অবধারিত হলো –ইনশা-আল্লাহ ।
(আবূ দাউদ- হা. ২৩৫৭, মিশকাতুল মাসা-বীহ- তাক্বীক্বকৃত, হা. ১৯৯৩, হাসান)
তথ্যসূত্রঃ Bangladesh Jamiyat Ahl Al-Hadith
▌সাহরী খাওয়ার পূর্বে নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা বিদআত এবং নিয়তের সঠিক পদ্ধতি
▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬▬
প্রশ্ন: সাহরি খাওয়ার পূর্বে নিয়ত মুখে উচ্চারণ করার বিধান কি এবং আমরা কিভাবে নিয়ত করব?
উত্তর: সাহরি খাওয়ার পূর্বে নিয়ত মুখে উচ্চারণ করা বিদআত। কেননা, হাদিসে নিয়ত করার কথা এসেছে কিন্তু মুখে উচ্চারণ করার কথা আসে নি। সালাত, সওম, যাকাত, হজ্জ, ওযু, গোসল ইত্যাদি কোনো ক্ষেত্রেই নয়।
সুতরাং নিয়তের নামে গদ বাধা কতগুলো আরবী বা বাংলা বাক্য উচ্চারণ করা দ্বীনের মধ্যে নতুন সংযোজন ছাড়া অন্য কিছু নয়। যার কারণে এ সকল গদ বাধা বাক্য মুখে উচ্চারণ করা জঘণ্য বিদআত হিসেবে অবশ্যই পরিত্যাজ্য। কেননা প্রতিটি বিদআতই ভ্রষ্টতা আর প্রতিটি ভ্রষ্টতার পরিণতি জাহান্নাম। (আল্লাহ আমাদেরকে জাহান্নামের শাস্তি থেকে রক্ষা করুন। আমীন।)
আমাদেরকে জানতে হবে যে, সাহরি খাওয়া একটি ইবাদত। আর যে কোনো ইবাদত কবুল হওয়ার জন্য নিয়ত থাকা অপরিহার্য শর্ত। কারণ, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
« إِنَّمَا الأَعْمَالُ بِالنِّيَّاتِ »
“সকল আমল নিয়তের উপর নির্ভরশীল।” (সহীহ বুখারীর প্রথম হাদিস)
তাই রোযা রাখার জন্য নিয়ত থাকা অপরিহার্য। তাই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন:
مَنْ لَمْ يُبَيِّتْ الصِّيَامَ قَبْلَ الْفَجْرِ فَلَا صِيَامَ لَهُ
“যে রাতে (ফজরের আগে) রোযা রাখার নিয়ত করে নি তার রোযা হবে না।” (সুনান নাসাঈ, আল্লামা আলবানী হাদিসটিকে সহীহ বলেছেন।) কিন্তু জানা দরকার, নিয়ত কি বা কিভাবে নিয়ত করতে হয়?
🌀 নিয়ত কি বা কিভাবে নিয়ত করতে হয়?
ইমাম নববী রাহ. বলেন: "মনের মধ্যে কোন কাজের ইচ্ছা করা বা সিদ্ধান্ত নেয়াকেই নিয়ত বলা হয়।" সুতরাং রোযা রাখার কথা মনে মধ্যে সক্রিয় থাকাই নিয়তের জন্য যথেষ্ট। মুখে উচ্চারণ করার প্রয়োজন নেই। কেননা, ইসলামী শরীয়তে কোন ইবাদতের নিয়ত মুখে উচ্চারণের কথা আদৌ প্রমাণিত নয়।
অথচ আশ্চর্য জনক হলেও সত্য যে, আমাদের দেশে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে ওযুর নিয়ত, নামাযের নিয়ত, সেহরি খাওয়ার নিয়ত ইত্যাদি চর্চা করা হয়। নামায শিক্ষা, রোযার মাসায়েল শিক্ষা ইত্যাদি বইয়ে এ সব নিয়ত আরবিতে অথবা বাংলা অনুবাদ করে পড়ার জন্য জনগণকে শিক্ষা দেয়া হয়! কিন্তু আমাদের একথা ভুলে গেলে চলবে না যে, দ্বীনের মধ্যে এভাবে নতুন নতুন সংযোজনের পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ ব্যাপারে সতর্ক করে গেছেন। তিনি বলেন:
« مَنْ أَحْدَثَ فِى أَمْرِنَا هَذَا مَا لَيْسَ مِنْهُ فَهُوَ رَدٌّ »
“যে আমাদের এই দ্বীনে এমন নতুন কিছু তৈরি করল যা তার অন্তর্ভুক্ত নয় তা পরিত্যাজ্য।” (বুখারী ও মুসলিম)
তাই মুসলমানদের কর্তব্য হল, দলীল-প্রমাণ ছাড়া গদ বাধা নিয়ত (নাওয়াই আন.....) সহ সব ধরণের বিদআতি কার্যক্রম পরিত্যাগ করা এবং সুন্নতকে শক্তভাবে ধারণ করা।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করার এবং বিদআত বর্জন করার তওফিক দান করুন। আমীন।
◍ ◍ ◍ ◍ ◍ ◍ ◍ ◍ ◍ ◍ ◍
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
লিসান্স, মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, সউদী আরব
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সউদী আরব।
fb/AbdullaahilHadi
________________________
সৌদিতে আজ(১/৪/২২) রাতে তারাবিহ, কাল (২/৪/২২) রমাদান,
💗
আলহামদুলিল্লাহ।
এসব দেখে আর সহ্য হয় না, ইয়া আল্লাহ আমাদের সঠিক পথে নিয়ে যান। আমীন
▬▬🍂▬▬🔸🔸🔸🔹🔹🔹🔸🔹🔸🔹
ইসলাম কখনোই শিশুশ্রমকে সমর্থন করে না। কেননা আল্লাহ তাআলা শ্রমিকের শক্তি-সামথ্য এবং গুণ-বৈশিষ্ট্য ঘোষণা করেই তা সুস্পষ্ট করে দিয়েছেন। শ্রমিক হিসেবে সেসব শক্তি-সামথ্য ও বৈশিষ্ট্য শিশুদের মাঝে নেই।
আল্লাহ তাআলা বলেন-إِنَّ خَيْرَ مَنِ اسْتَأْجَرْتَ الْقَوِيُّ الْأَمِينُ‘নিশ্চয়ই তোমার মজুর (শ্রমিক) হিসেবে উত্তম হবে সেই ব্যক্তি, যে শক্তিশালী ও বিশ্বস্ত।’ (সুরা আল-কাসাস : আয়াত ২৬)
ইসলামের দিকনির্দেশনাবাবা-মা কোনো অপ্রাপ্ত বয়স্ক শিশুদের উপার্জনের জন্য বাধ্য করতে পারবেন না।
শিশুরা শারীরিক ও মানসিকভাবে শ্রমের জন্য উপযুক্ত নয়। শিশুশ্রমের ফলে তাদের মননশীলতা ও দৈহিক ক্ষতি হয়। আজ যারা শিশু, ভবিষ্যতে তারাই যুবক। আর তারাই হবে সুশোভিত, সুন্দর ও গৌরবময় আগামীর পথনির্দেশক।
মহান আল্লাহ তাআলা বলেন-الْمَالُ وَالْبَنُونَ زِينَةُ الْحَيَاةِ الدُّنْيَا ‘ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি পার্থিব জীবনের শোভা।’ (সুরা কাহফ : আয়াত ৪৬)
হাদিসের একাধিক বর্ণনায় তা ওঠে এসেছে-
১. ‘শিশুরা হলো জান্নাতের প্রজাপতি।’ (মিশকাত)
২. ‘তোমরা তোমাদের সন্তানদের মহৎ করে গড়ে তোলো এবং তাদের উত্তম আদব তথা শিষ্টাচার শিক্ষা দাও।’ (মুসলিম)
৩. ‘সন্তানকে আদব তথা শিষ্টাচার শিক্ষা দেওয়া সম্পদ দান করার চেয়েও উত্তম।’ (বায়হাকি)
৪. ‘তোমরা নিজেদের সন্তানদের স্নেহ কর এবং তাদের আদর্শ শিক্ষায় শিক্ষিত করে গড়ে তোল।’
৫. তিনি আরও বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি শিশুদের স্নেহ করে না, সে আমাদের অন্তর্ভুক্ত নয়।’ (আবু দাউদ)
বুঝার ও শিখার আছে অনেক কিছু 💗
দান সদাকাহ করতে হবে পবিত্র ইনকাম থেকে
▬▬🍂▬▬🔸🔸🔸🔹🔹🔹🔸🔹🔸🔹
আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ
যে ব্যক্তি হালাল কামাই থেকে একটি খেজুর পরিমাণ সদাকাহ করবে, (আল্লাহ তা কবূল করবেন) এবং আল্লাহ কেবল পবিত্র মাল কবূল করেন আর আল্লাহ তাঁর ডান হাত [1] দিয়ে তা কবূল করেন। এরপর আল্লাহ দাতার কল্যাণার্থে তা প্রতিপালন করেন যেমন তোমাদের কেউ অশ্ব শাবক প্রতিপালন করে থাকে, অবশেষে সেই সদাকাহ পাহাড় বরাবর হয়ে যায়।
[1] কুরআনের বিভিন্ন আয়াত ও হাদীস থেকে জানা যায়, আল্লাহর হাত আছে, পা আছে। কিন্তু এই হাত পা কেমন সে সম্পর্কে আমরা কোন ধারণাও করতে পারি না চিন্তাও করতে পারি না। সৃষ্টিজগতে তাঁর কোন তুলনা নেই। কেননা আল্লাহ তা‘আলা নিজের সম্পর্কে বলেছেন, {لَيْسَ كَمِثْلِهِ شَيْءٌ وَهُوَ السَّمِيعُ الْبَصِيرُ} (الشورى: من الآية১১) তাঁর সদৃশ কোন কিছুই নেই, তিনি সবকিছু শুনেন ও দেখেন। (সূরা শুরা ১১) কুদরাতি হাত বা কুদরাতি পা বা কুদরাতি চক্ষু ইত্যাদি অর্থ করা আল্লাহর গুণাবলীর বিকৃতি সাধন করার শামিল।
সুলায়মান (রহ.) ইবনু দ্বীনার (রহ.) থেকে হাদীস বর্ণনায় ‘আবদুর রহমান (রহ.)-এর অনুসরণ করেছেন এবং ওয়ারকা (রহ.) ইবনু দ্বীনার থেকে তিনি সাঈদ বিন ইয়ামার থেকে আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ)-এর সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হাদীসটি বর্ণনা করে বলেছেন এবং মুসলিম ইবনু আবূ মারয়াম, যায়দ ইবনু আসলাম ও সুহায়ল (রহ.) আবূ সালিহ (রহ.)-এর মাধ্যমে আবূ হুরাইরাহ্ (রাঃ)-এর সূত্রে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম হতে হাদীসটি বর্ণনা করেন।
(সহিহ আল বুখারী ১৪১০, ৭৪৩০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ১৩২৪)
আল্লাহকে ডাকুন, আল্লাহ আপনার ডাকে সাড়া দিবেন ইনশাআল্লাহ 💗
আসুন আমরা কুরআন পড়ি বুঝে বুঝে।
একটি রাত ও যেন মিস না করি।
মহান আল্লাহ আমাদের সেই তৌফিক যেন দেন। #আমীন
সবাই শেয়ার করি
আল্লাহ আমার রব
এই রবই আমার সব ❤
শরিয়তের দৃষ্টিতে ভাঙ্গা পাত্রে পানাহার করার বিধান এবং একটি কুসংস্কার: ‘ভাঙ্গা পাত্রে পানাহার করলে আয়ু কমে যায়’!
▬▬▬◆◯◆▬▬▬
➧ প্রশ্ন: “ভাঙ্গা পাত্রে খাওয়া-দাওয়া করা কি জায়েজ? আর একটি কথা সমাজে প্রচলিত আছে যে, ভাঙ্গা পাত্রে খাবার খেলে আয়ু কমে যায়” ইসলামের দৃষ্টিতে এ কথার সত্যতা কতটুকু?
উত্তর:
ভাঙ্গা পাত্রে খাবার খাওয়া জায়েজ তবে ভাঙ্গা পাত্রের ভাঙ্গা স্থানে মুখ লাগিয়ে পান করার ব্যাপারে হাদিসে নিষেধাজ্ঞা এসেছে।
❖ ভাঙ্গা পাত্রে খাবার খাওয়া জায়েজ সংক্রান্ত হাদিস:
عَنْ أَنَسٍ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ عِنْدَ بَعْضِ نِسَائِهِ، فَأَرْسَلَتْ إِحْدَى أُمَّهَاتِ الْمُؤْمِنِينَ مَعَ خَادِمِهَا قَصْعَةً فِيهَا طَعَامٌ، قَالَ: فَضَرَبَتْ بِيَدِهَا فَكَسَرَتِ الْقَصْعَةَ، قَالَ ابْنُ الْمُثَنَّى: فَأَخَذَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ الْكِسْرَتَيْنِ فَضَمَّ إِحْدَاهُمَا إِلَى الْأُخْرَى، فَجَعَلَ يَجْمَعُ فِيهَا الطَّعَامَ، وَيَقُولُ: غَارَتْ أُمُّكُمْ زَادَ ابْنُ الْمُثَنَّى كُلُوا فَأَكَلُوا حَتَّى جَاءَتْ قَصْعَتُهَا الَّتِي فِي بَيْتِهَا، ثُمَّ رَجَعْنَا إِلَى لَفْظِ حَدِيثِ مُسَدَّدٍ قَالَ كُلُوا وَحَبَسَ الرَّسُولَ وَالْقَصْعَةَ حَتَّى فَرَغُوا فَدَفَعَ الْقَصْعَةَ الصَّحِيحَةَ إِلَى الرَّسُولِ وَحَبَسَ الْمَكْسُورَةَ فِي بَيْتِهِ
আনাস রা. সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর কোনও এক স্ত্রীর ঘরে অবস্থান করছিলেন। এ সময় উম্মাহাতুল মু‘মিনীন রাসূলের জনৈক স্ত্রী তার খাদেমকে দিয়ে এক পেয়ালা খাবার পাঠালেন। বর্ণনাকারী বলেন, [রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যার ঘরে ছিলেন] সেই স্ত্রী (রাগান্বিত হয়ে) পেয়ালাটি হাতের দ্বারা আঘাত করে ভেঙ্গে ফেলেন।
ইবনুল মুসান্না বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ভাঙ্গা টুকরা দু’টো উঠিয়ে নিয়ে একটিকে অপরটির সাথে জোড়া দিলেন এবং পড়ে যাওয়া খাবারগুলো উঠাতে লাগলেন এবং বললেন, “তোমাদের মায়ের আত্ম মর্যাদাবোধ জেগেছে (রাগ হয়েছে)।”
ইবনুল মুসান্নার বর্ণনায় রয়েছে: “তোমরা এগুলো খাও। তাদের খাওয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত তিনি খাদেমসহ পেয়ালাটি আটকিয়ে রাখলেন। অতঃপর অক্ষত পেয়ালাটি তিনি খাদেমের হাতে তুলে দিলেন আর ভাঙ্গা পেয়ালাটি তাঁর ঘরে রেখে দিলেন। [সহীহ ইবনু মাজাহ/২৩৩৪]
এ হাদিস থেকে প্রমাণিত হল যে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং সাহাবিগণ ভাঙ্গা প্লেটে খাবার খেয়েছেন।
❖ পানপাত্রের ভাঙ্গা স্থানে মুখ দিয়ে পান করা নিষেধ সংক্রান্ত হাদিস:
পানপাত্রের ভাঙ্গা স্থানে মুখ দিয়ে পান করার ব্যাপারে হাদিসে নিষেধাজ্ঞা বর্ণিত হয়েছে। যেমন:
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ الْخُدْرِيِّ، أَنَّهُ قَالَ نَهَى رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم عَنِ الشُّرْبِ مِنْ ثُلْمَةِ الْقَدَحِ وَأَنْ يُنْفَخَ فِي الشَّرَابِ
আবু সাঈদ আল-খুদরী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, “রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) পাত্রের ভাঙ্গা স্থান দিয়ে পানি পান করতে এবং পানীয়ের মধ্যে ফুঁ দিতে নিষেধ করেছেন।” (সুনানে আবু দাউদ/৩৭২২-সহিহ)
ইমাম আবু জাফর ত্বহাবি রাহ, শারহু মাআনিল আসার গ্রন্থে এ হাদিসের ব্যাখ্যায় বলেন,
وقد قال قوم: إنما نهى عن ذلك لأنه الموضع الذي يقصده الهوام فنهى عن ذلك خوف أذاها
একদল মুহাদ্দিস বলেছেন, এই নিষেধের কারণ হল, পাত্রের ভাঙ্গা স্থানে পোকামাকড় স্থান নেয়। এগুলো যেন কোন ক্ষতি না করে সে জন্য তিনি তা নিষেধ করেছেন।” আর এটা বিজ্ঞান সম্মত কথা যে, গ্লাস, মগ ইত্যাদির ভাঙ্গা স্থানে জীবাণু সৃষ্টি হয়। সুতরাং সেখানে মুখ লাগলে মুখের মধ্যে জীবাণু প্রবেশ করে অসুখ-বিসুখ সৃষ্টি হতে পারে।
সাধারণ অবস্থায় খাওয়া-দাওয়ার ক্ষেত্রে যথাসম্ভব ভালো, উপযুক্ত ও রুচিসম্মত পাত্র ব্যবহার করা উচিৎ। কেননা ভাঙ্গা, ফাটা, ছিদ্র ইত্যাদি পাত্রে খাবার খাওয়া হলে তা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে বা খাওয়ার সময় হাত বা মুখ ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। বিশেষ করে এ জাতীয় পাত্রে মেহমানদেরকে আপ্যায়ন করাকে সমাজে সম্মানহানিকর হিসেবে বিবেচনা করা হয়। অত:এব, পানাহারের ক্ষেত্রে ভাঙ্গা-ফুটা ও অনিরাপদ পাত্র ব্যবহার থেকে বিরত থাকা উচিৎ।
তবে দারিদ্র্যতার কারণে অথবা বিশেষ পরিস্থিতির শিকার হয়ে যদি জোড়া-তালি দেয়া বা টুকটাক ভাঙ্গা-ফাটা পাত্রে পানাহারের প্রয়োজন হয় তাহলে তাতে শরিয়তে কোন বাধা নেই।
❑ ‘ভাঙ্গা পাত্রে পানাহার করলে আয়ু কমে যায় বা ঘরে অকল্যাণ নেমে আসে’ এটি বাতিল ও কুসংস্কার পূর্ণ কথা:
‘ভাঙ্গা পাত্রে পানাহার করলে আয়ু কমে যায় বা ঘরে অকল্যাণ নেমে আসে’ এ জাতীয় কথাবার্তা শরিয়ত সমর্থন করে না। অনুরূপভাবে “ভাঙ্গা আয়নায় মুখ দেখা অশুভ। এতে চেহারা নষ্ট হয়ে যায়।” “ভাঙ্গা কুলায় লাথি মারলে জমির ফসল কমে যায়।” এ সকল কথাবার্তা ১০০% কুসংস্কার, বাতিল ও শরিয়ত পরিপন্থী বিশ্বাস। ইসলামের সাথে এগুলোর কোন সম্পর্ক নাই। সুতরাং এ জাতীয় মূর্খতা পূর্ণ কথা-বার্তায় বিশ্বাস রাখা হারাম।
▬▬▬◆◯◆▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল, সৌদি আরব
Click here to claim your Sponsored Listing.
Alhamdolillah ♥♥♥
Alhamdolillah
Videos (show all)
Category
Telephone
Website
Address
Narsingdi
ইসলামের শাশ্বতবাণী সবার কাছে পৌছাতে পেইজে লাইক, কমেন্ট, শেয়ার দিয়ে সহযোগিতা করতে আহবান করছি।