Aleef Agro
Nearby grocery stores
https://maps. app. goo. gl/k8UD1wpboZaCBPav 7
6206
Dhaka
6260
Rohanpur Gomostapur Chapainawabganj
6720
Chapai Nawabganj
Baneswar
Kaiser Memorial Auditorium Road
Rajshahi
6062
A project of Agriculture, Dairy and Fisheries.
সমসাময়িক পরিস্থিতিতে সফলভাবে টিকে থাকতে হলে, একজন কৃষি উদ্যোক্তাকে পণ্য উৎপাদনের পাশাপাশি নিজেকেই মজুদদার হতে হবে, প্রক্রিয়াজাত পণ্য তৈরীর কারিগরি জ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা নিজের থাকতে হবে, খুচরা বিক্রেতা হতে হবে এবং নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থা থাকতে হবে।
সামগ্রিক বিনিয়োগ এবং নিয়ন্ত্রণ এককভাবে সম্ভব না হলে, যৌথ কিংবা সমিতি আকারে উদ্যোগ নিতে হবে। সর্বোপরি খাদ্যপণ্যের পুষ্টিগুণ ও নিরাপদতা নিশ্চিত করতে হবে।
স্বাদ বোঝার জন্য আমাদের বাগানে নেই, এমন ভিন্ন জাতের কয়েকটি চারা বাড়ির পেছনে লাগিয়েছিলাম - কাটিমন, ব্যানানা (মহাচানক) এবং গৌড়মতি।
চারা লাগানোর পর ১ম ও ২য় বছর মুকুল এলেও, ইচ্ছে করে ভেঙ্গে দিয়েছি, ফল নেইনি। পরীক্ষামূলক তৃতীয় বছর ৪/৫ টি ফল রেখেছিলাম। ৪র্থ বছর প্রায় ১৪ টি ফল এসেছিল, যদিও শেষ পর্যন্ত ৯টি আম টিকে ছিল।
আমের পরিপক্বতা এলে আব্বা নিজ হাতে ৪টি কাটিমন পেড়ে আমাকে দিয়েছিলেন। আজ ৩ দিন পর সেগুলো থেকে দুটো আম নিজ হাতে কাটলাম এবং খেলাম।
আমার দেখায় কাটিমন আমের বৈশিষ্ট্যঃ
দেখতে অপূর্ব, সুঘ্রাণযুক্ত। এর ত্বক প্রায় কাগজের মত পাতলা এবং বীজ বা আঁটি ছোট ও পাতলা হওয়ায় সঙ্গতকারনে ভক্ষন যোগ্য অংশ বেশী, প্রায় ৮০%। খুব রসালো নয়, আবার শুষ্কও নয়, খুব সামান্য আঁশযুক্ত।
খেয়ে ধারণা করছি (মিষ্টতা) ব্রিকস মান হবে ২০-২২।
আমার গাছে আমগুলোর গড় ওজন পেলাম ৩৫০ গ্রাম, তার মানে দাঁড়ায় প্রতি ৩টি আমে ওজন হবে ১ কেজি।
ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরা
জানতাম ঔষধি গুণসম্পন্ন উদ্ভিদ, কিন্তু এতটা !!! 😲
আপনার হৃদযন্ত্রকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে অ্যালোভেরার জুস। অ্যালোভেরা কোলেস্টেরলের মাত্রা কমিয়ে দেয়। এটি ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণ করে রক্ত সঞ্চালন স্বাভাবিক রাখে এবং রক্তে অক্সিজেন বহন করার ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। দূষিত রক্ত দেহ থেকে বের করে রক্ত কণিকা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। ফলে দীর্ঘদিন আপনার হৃদযন্ত্র সুস্থ ও সক্রিয় থাকে।
অ্যালোভেরা মাংসপেশীর ব্যথা কমাতে সাহায্য করে থাকে। এমনকি ব্যথার স্থানে অ্যালোভেরা জেলের ক্রিম লাগালে ব্যথা কমে যায়।
অ্যালোভেরার জুস দাঁত এবং মাড়ির ব্যথা উপশম করে থাকে। দাঁতে কোন ইনফেকশন থাকলে তাও দূর করে দেয়। নিয়মিত অ্যালোভেরার জুস খাওয়ার ফলে দাঁত ক্ষয়রোধ করা সম্ভব।
ওজন কমাতে অ্যালোভেরা জুস বেশ কার্যকরী। ক্রনিক প্রদাহের কারণে শরীরে মেদ জমে। অ্যালোভেরা জুসের অ্যান্টি ইনফ্লামেনটরি উপাদান এই প্রদাহ রোধ করে ওজন হ্রাস করে থাকে। পুষ্টিবিদগণ এই সকল কারণে ডায়েট লিস্টে অ্যালোভেরা জুস রাখার পরামর্শ দিয়ে থাকেন।
হজমশক্তি বৃদ্ধিতে অ্যালোভেরা জুসের জুড়ি নেই। এটি অন্ত্রের উপকারী ব্যাকটেরিয়া বৃদ্ধি করে অন্ত্রে প্রদাহ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া রোধ করে, যা হজমশক্তি বাড়িয়ে থাকে। অ্যালোভেরা ডায়রিয়ার বিরুদ্ধেও অনেক ভাল কাজ করে।
অ্যালোভেরা জুস রক্তে সুগারের পরিমাণ ঠিক রাখে এবং দেহে রক্ত সঞ্চালন বজায় রাখে। ডায়াবেটিস শুরুর দিকে নিয়মিত এর জুস খেলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব। সুতরাং খাওয়ার আগে বা খাওয়ার পরে নিয়মিত অ্যালোভেরা জুস পান করুন, তাহলে আপনার ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে থাকবে।
ত্বকের দাগ, ব্রণ, এবং শুষ্কতা দূর করতে অ্যালোভেরা অনেক কার্যকরী। এর অ্যান্টি ইনফ্লামেনটরি উপাদান ত্বকের ইনফেকশন দূর করে ব্রণ হওয়ার প্রবণতা কমিয়ে দেয়। ঘৃতকুমারীর পাতার শাঁস বেঁটে ফোঁড়ায় লাগালে যন্ত্রণা কমে যায়। পোড়াস্থানে লাগালে উপকার পাওয়া যায়।
অ্যালোভেরা হলো অ্যান্টি ম্যাইকোবিয়াল এবং অ্যান্টি ফাঙ্গাল উপাদানসমৃদ্ধ একটি গাছ। অ্যালোভেরা জুস নিয়মিত পান করলে রোগ-প্রতিরোগ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং দেহের টক্সিন উপাদান দূর করে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
অ্যালোভেরায় আছে ভিটামিন সি, যা মুখের জীবাণু দূর করে মাড়ি ফোলা, মাড়ি থেকে রক্ত পড়া বন্ধ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, অ্যালোভেরার জেল মাউথ ওয়াশ এর বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার করা যায়।
অ্যালোভেরার গুনাগুন বলে শেষ করা যায় না, মাথায় খুশকি দূর করতে এর কোন তুলনা নেই। এমনকি ঝলমলে চুলের জন্যেও অ্যালোভেরা অনেক উপকারী। সুতরাং চুলের যত্নে অ্যালোভেরা হোক নিত্যসঙ্গী।
অনেকের মুখে ঘা হয়, আর এই মুখের ঘা দূর করতে অ্যালোভেরা অত্যন্ত কার্যকরী। ঘায়ের জায়গায় অ্যালোভেরার জেল লাগিয়ে দিলে মুখের ঘা ভাল হয়।
গবেষণায় দেখা গেছে যে, অ্যালোভেরায় রয়েছে অ্যালো ইমোডিন, যা স্তন ক্যান্সার বিস্তারকে রোধ করে। এছাড়াও অন্যান্য ক্যান্সার প্রতিরোধে অ্যালোভেরা অনেক কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
অ্যালোভেরার অনেক গুনাগুনের মধ্যে আর একটি হল রক্তচাপ (ব্লাড প্রেসার) কমাতে এর কোন তুলনা নেই। অ্যালোভেরার ঔষধি গুণ রক্তচাপ কমায় এবং রক্তে কোলেস্টেরল ও চিনির মাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় আনতে সাহায্য করে।
কিছু ক্ষতিকর পদার্থ দেহের মধ্যে প্রবেশ করে নানা ধরনের রোগের সৃষ্টি করতে পারে। অ্যালোভেরার রস পান করলে দেহে ক্ষতিকর পদার্থ প্রবেশ করতে পারে না। আর যদি প্রবেশ করেও ফেলে, তাহলেও অ্যালোভেরার জুস পানে তা অপসারণ হতে সাহায্য করে। এই ক্ষেত্রে অ্যালোভেরার জুসের গুণ অপরিসীম।
দেহের দুর্বলতা দূর করতে অ্যালোভেরার জুসের গুণ অনেক। আপনি যদি অ্যালোভেরার জুস নিয়মিত পান করেন তাহলে দেহের ক্লান্তি দূর হবে এবং দেহকে সতেজ ও সুন্দর রাখবে।
অ্যালোভেরার ভেতরের জেল নিয়মিত পান করলে পেটের সমস্যা দূর হয়। আর যদি সুষম খাদ্যের পাশাপাশি নিয়মিত অ্যালোভেরার রস পান করেন তাহলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হওয়া সম্ভব।
হাঁপানি ও এলার্জি প্রতিরোধে ঘৃতকুমারী বৈজ্ঞানিকভাবে কার্যকরী। ঘৃতকুমারীর পাতার রস যকৃতের জন্য উপকারী।
এছাড়া অ্যালোভেরা জেলে প্রায় ২০ রকম অ্যামিনো অ্যাসিড আছে যা ইনফ্লামেশন এবং ব্যাকটেরিয়া রোধ করে হজম, বুক জ্বালাপোড়া রোধ করে থাকে।
প্রয়োজন বুঝে আমার ৩টি টবে এলোভেরা লাগিয়েছি।
আলহামদুলিল্লাহ !
সবকিছু ঠিক থাকলে রোজার ঈদের পরে মে মাসের চতুর্থ সপ্তাহ থেকে আম দেয়া যাবে ইন শা আল্লাহ।
আশা করছি মে মাসের ৪র্থ সপ্তাহ থেকে পর্যায়ক্রমে দেশী জাতের আম গোপালভোগ, ক্ষিরসাপাত, ল্যাংড়া, ফজলি, আম্রপালি সরবরাহ করা যাবে। সাধারণত আবহাওয়ার (রোদ ও বৃষ্টির) ওপর নির্ভর করে একটি জাত পরিপক্ব হবার ৭-১০ দিন পর পরবর্তী জাতটি পরিপক্ব হয়।
আম পুরোপুরি পরিপক্ব না হলে, এর প্রকৃত স্বাদ, ঘ্রাণ, মিষ্টতা কোনোটাই মেলে না। কিছু বাগানি/বিক্রেতা দুটো কারনে অপরিপক্ক আম অগ্রীম বিক্রি করতে চান।
১. ঝড়ে আম ঝরে পড়া কিংবা বৃষ্টিতে আমে পোকা হলে ব্যবসায়িক ক্ষতিতে পড়ার আশঙ্কায়।
২. সময়ের আগে আম দিতে পারলে, অতিউৎসাহী কিছু ক্রেতার নিকট থেকে আমের মূল্য বেশী পাবার আশায়।
রিজিকের মালিক আল্লাহ, তাই উপরোক্ত দুটো বিষয়ে আমি বরাবরই আল্লাহর ওপর ভরসা করে থাকি।
দেশের সকল মৎস্যজীবিদের প্রাণের উৎসব
"মৎস্যচাষী মিলনমেলা ২০২১"
আসুন, পারস্পরিক অভিজ্ঞতা ও তথ্য বিনিময়ের মধ্য দিয়ে নিজেদেরকে আরও সমৃদ্ধ করার সুযোগ নিই।
বিফ ফ্যাটেনিং বা গরু মোটাতাজা কি ভাবে করবেন ? আসুন, সোজাসাপটা পদ্ধতি শিখে নিই !
অনেকেই গরু মোটাতাজা করণ বা বিফ ফ্যাটেনিং করার জন্য সহজ একটা গাইডলাইন খুঁজে থাকেন। আজকের এই পোস্টে আমি সেটাই দিয়ে দিচ্ছি এবং অবশ্যই সেটা আমার দৃষ্টিকোণ থেকে!
বিফ ফ্যাটেনিং বা গরু মোটাতাজা করণ একটা শিল্প। এটা সম্পূর্ণই কৌশল ভিত্তিক। আপনি যদি মোটাতাজা করণের কৌশল গুলি না জানেন তাহলে যতই ভালো জাতের গরু নির্বাচন করেন বা গরুকে খাওয়ান না কেনো আপনি ভালো ফলাফল আশা করতে পারবেন না। আর এইসব কৌশল গুলি আহামরি কিছু নয়। তবে ভালো ফ্যাটেনিং ফার্মার হতে চাইলে আপনাকে অন্তত কিছুটা হলেও গরুর রোগ-বালাই সম্পর্কিত জ্ঞান,গরুর খাদ্য উপাদান গুলির পুষ্টিমান, বিভিন্ন গরুর জাতের বৈশিষ্ট্য , বাজার ব্যবস্থা ইত্যাদি সম্বন্ধে ধারণা থাকতে হবে বা ধারণা নিতে হবে।
যাক, এবার মূল আলোচনায় আসি।
আমি গরুর আবাসন ব্যবস্থা নিয়ে তেমন বিশদ আলোচনায় যেতে চাই না, শুধু বলবো গরুর ঘর বা শেড টা যাতে উত্তর-দক্ষিণ মুখী এবং ঘরের মেঝের ঢাল যাতে ঠিক থাকে যাতে ঘরে পানি না দাঁড়ায় এবং শুকনো থাকে। তাছাড়া গরুর ঘরটি যাতে কিছুটা হলেও রোদ পায় এবং ঘরের ভিতরটা যাতে স্যাঁতসেতে না থাকে।
এতোটুকু হলেই চলবে !
এবার আসি কি ধরণের গরু আপনি মোটাতাজা করার জন্য বাছাই করবেন সেই বিষয়ে। এই ক্ষেত্রে আপনি বড় ফ্রেমের দেশাল বা দেশী ষাঁড় এবং বলদ, সিন্ধি-শাহীওয়াল ক্রস, শাহীওয়াল ক্রস, শাহীওয়াল, শাহীওয়াল-ফ্রিজিয়ান ক্রস, দেশী-ফ্রিজিয়ান ক্রস, ফ্রিজিয়ান, জার্সি-শাহীওয়াল ক্রস এসব জাতগুলি বেছে নিতে পারেন মোটাতাজা করার জন্য। গরু বাছাইয়ের সময় কিছু বিষয়ের প্রতি অবশ্যই নজর রাখবেন,
১। গরুর ফ্রেম বা খাঁচা জাতে বড় হয়।
২। গরুর চোখ উজ্জ্বল ও নাক জাতে ভেঁজা থাকে।
৩। গরুর অস্থি-সন্ধি বা পায়ের গিঁড়া এবং লেজের গোঁড়া যাতে মোটা হয়।
৪। গরুর মুখ যাতে বেঁটে থাকে এবং মাথা বড় হয় এবং গরুটি যাতে ২৪-৩০ মাস বয়সের অথবা দুই বা চার দাঁতের হয়।
৫। গরুর পৃষ্ঠদেশ এবং বুক বা শিনা যাতে প্রশস্ত থাকে।
৬। গরুর খুর যাতে অশ্ব-খুর সদৃশ হয় এবং পিছনের পা দুইটি যাতে একটি আরেকটির সাথে লেগে না থাকে দাঁড়ানো অবস্থায়।
৭। সর্বোপরি গরুটি এমন হতে হবে যাতে গরুর পাজরের হাঁড় দৃশ্যমাণ হয়,গায়ে মাংস কম থাকে এবং আপাত দৃষ্টিতে গরুটি নিরোগ মনে হয়।
জাত যেটাই হোক, মোটামুটি উপরের বৈশিষ্ট্য গুলি থাকলেই সেই গরুটা মোটাতাজা করে লাভবান হওয়া যাবেই। তবে জাতের বোশিষ্ট্য থেকে আমরা আরো বেশী ফলাফল লাভ করতে পারি।এই জন্য জাত বিচার করে গরু মোটাতাজা করার জন্য সংগ্রহ করলে আরো বেশী লাভবান হওয়া যায়!
এবার আসি গরু খামারে সংগ্রহ করে আনার পর আপনি কি কি করবেন সেই বিষয়ে।
আপনি যদি গরু কোনো গৃ্হস্থ্যের ঘর থেকে সংগ্রহ করেন তাহলে সেটাকে ভালো ভাবে পটাশের পানি দিয়ে পরিষ্কার করে আপনার গোয়াল ঘরে প্রবেশ করিয়ে দিবেন। কিন্তু যদি হাট থেকে গরু সংগ্রহ করেন তাহলে সেটাকে পটাশের পানি দিয়ে ভালোভাবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে গোয়াল ঘর বা শেডে প্রবেশ করাবেন। এরপর পানিতে কিছু ইলেক্ট্রোলাইট বা স্যালাইন মিশিয়ে গরুকে খেতে দিবেন। যদি দূর থেকে গরু পরিবহন করে আনেন তাহলে গরুকে তার লাইভওয়েট অনুযায়ী ফাস্টভেট বা প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খাইয়ে দিবেন যাতে ব্যাথা বা ব্যাথা থেকে সৃষ্ট জ্বরের উপশম হয়। পানি কোন অবস্থাতেই অতিরিক্ত পরিমাণে খেতে দিবেন না প্রথমেই। পানি খাওয়ানোর ১/২ ঘন্টা পরে খড় বা কাঁচা ঘাস অল্প পরিমাণে খেতে দিবেন গরুকে। এর ঠিক ৬-৮ ঘন্টা পর দানাদার খাদ্য খেতে দিবেন।
★গরু গোয়ালঘরে প্রবেশ করানোর ঠিক দিন পর গরু যদি সুস্থ থাকে তাহলে FMD বা ক্ষুরা রোগের ভ্যাক্সিন দিয়ে দিবেন প্রত্যেকটা গরুকে। এর ঠিক একসপ্তাহ পর কৃমিনাশক ওষুধ দিয়ে দিবেন প্রতিটা গরুকে।নিয়মমাফিক লিভার টনিক দিবেন কৃমিনাশক ওষুধপাতি দেয়ার পর। কৃমিনাশক ওষুধ দেয়ার ঠিক তিন দিন পর গরুকে ক্যাটাফজ বা ভিটাফজ অথবা এমাইনোভিট জাতীয় ভিটামিন সাপ্লিমেন্টারী ইঞ্জেকশন দিবেন গরুর লাইভওয়েট অনুযায়ী নির্দেশিকা অনুসারে। এই ইঞ্জেকশন দেয়ার ঠিক ছয় দিন পরে এন্থ্রাক্সের (Anthrax) টিকা এবং দুয়েকদিন আগেপিছে করে আইভার ম্যাক জাতীয় বহি ও অন্ত পরজীবির জন্য ইঞ্জেকশন দিয়ে দিবেন চামড়ার নীচে ওষুধ কোম্পানির নির্দেশিকা অনুযায়ী পরিমাণে। প্রথমবার ভিটামিন সাপ্লিমেন্টারী ইঞ্জেকশণ দেয়ার ১৫ দিন পর আবার ভিটামিন সাপ্লিমেন্টারী ইঞ্জেকশন রিপিট ডোজ করবেন এবং এর পর প্রতি মাসে সেটা রিপিট ডোজ করবেন। মনে রাখবেন প্রচুর পরিমাণে কাঁচা ঘাস থাকলে ভিটামিন সাপ্লিমেন্টারী ইঞ্জেকশন তেমন একটা প্রয়োজন পরে না। তবে এই চার মাস সময় কালের মধ্যে অন্তত দুইবার এডি৩ই ইঞ্জেকশন টা দিলে গরুর আকৃতি কিছুটা হলেও বাড়ে!
★প্রথম প্রথম গরুকে দানাদার খাদ্য যখন পরিবেশন করবেন তখন সেটার পরিমান আস্তে আস্তে বাড়াবেন। গরু গোয়ালঘরে প্রবেশ করানোর ১ সপ্তাহের মধ্যে গরুকে তার দৈহিক ওজন বা লাইভওয়েট অনুযায়ী খাদ্য প্রদান করবেন যতটুকু পরিমান নির্দিষ্ট করা থাকবে!
আমি সাধারণত ৪ মাসের স্লট বা ভাগে যেসব গরু মোটাতাজা করে থাকি তাদের জন্য তিনটি পর্যায়ে দানাদার খাদ্যের পরিমাণ নির্দিষ্ট করে দেই। আমি নীচে পয়েন্ট আকারে পর্যায় গুলির নাম এবং সেই সময় গরু কতটুকু করে দানাদার খাদ্য পাবে সেগুলি উল্লেখ করে দিচ্ছি।
★স্টার্টার লেভেলঃ আমি প্রথম মাসকে স্টার্টার লেভেল ধরি৷ এই সময়ে গরুকে ১০০ কেজি লাইভওয়েটের জন্য ১ কেজি সুষম দানাদার খাদ্য সরবরাহ করবেন সাথে ৪ কেজি কাঁচা ঘাস এবং ১ কেজি ভিজানো ছোটো ছোটো আকারে কাটা খড় যেটা সামান্য চিটাগুড় দিয়ে মেশানো থাকবে।
★গ্রোয়ার লেভেলঃ গ্রোয়ার লেভেলের ব্যাপ্তিকাল হলো দুই মাস। এই সময়ে গরুকে ১০০ কেজি লাইভওয়েটের জন্য ১.২৫ কেজি সুষম দানাদার খাদ্য সরবরাহ করবেন সাথে ৪ কেজি কাঁচা ঘাস এবং ১ কেজি ভিজানো ছোটো ছোটো আকারে কাটা খড় যেটা সামান্য চিটাগুড় দিয়ে মেশানো থাকবে।
★ফিনিশার লেভেলঃ ফিনিশার লেভেলের সময়কাল হলো একমাস। এই মাসেই গরুকে বাজারে বিক্রয় উপযোগী করে ফেলতে হবে। এই সময়ে গরুকে ১০০ কেজি লাইভওয়েটের জন্য ১.৫ কেজি সুষম দানাদার খাদ্য সরবরাহ করবেন সাথে ৪ কেজি কাঁচা ঘাস এবং ১ কেজি ভিজানো ছোটো ছোটো আকারে কাটা খড় যেটা সামান্য চিটাগুড় দিয়ে মেশানো থাকবে। এই সময়ে গরুর দানাদার খাদ্যে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ একটু বাড়িয়ে দিতে পারেন যদি কোরবানি মৌসুম সামনে থাকে। কারণ, গরুর বাহিরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এই সময়ে গরুর শরীরে একটু চর্বি যোগ করতে হয় এবং অনেকেই সেটা চায়! আবার গরুর স্বাস্থ্য যদি পেটানো বা মাংসল চান, তাহলে আবার এই কাজটা করা যাবে না!
★এইবার আসি গরুর দানাদার খাদ্যের তালিকা কেমন হবে সেটা নিয়ে। আমি দুইটা তালিকা দিচ্ছি নীচে। একটা আমি বর্তমানে ফলো করছি, আরেকটা আগে ফলো করতাম। তবে বর্তমানে যেটা আমি ফলো করছি সেটা সাশ্রয়ী এবং এর ফলাফল ভালো। অনেকে গরুর খাদ্য তৈরীতে ঝামেলা করতে চান না, তাদের জন্য দ্বিতীয় তালিকাটি। এখন সিদ্ধান্ত আপনাদের উপর কে কোনটা অনুসরণ করবেন!
*১ নং খাদ্য তালিকাঃ
------------------ ------------------
ঈস্ট ফারমেন্টেড ভুট্টার গুড়া ৫০%
কুরা ১৫%
ফারমেন্টেড এংকর বা মটর ডালের গুঁড়া ২০%
মশুরির ভুষি ৮%
সরিষার খৈল ৫%
লাইমস্টোন পাউডার ২%
----------------------------------------------
মোট ১০০%
*২ নং খাদ্য তালিকাঃ
------------------ ------------------
ভুট্টার গুড়া সিদ্ধ করা ৪০%
এংকর ডালের গুড়া সিদ্ধ করা ২০%
মশুরের ভুষি ১০%
গমের ভুষি ১০%
সরিষার খৈল ৫%
মিহি কুরা ১৩%
লাইমস্টোন পাউডার ২%
--------------------------------------------------
মোট ১০০%
এছাড়াও প্রতিটি গরুকে মাথাপিছু ১০০-১৫০ গ্রাম চিটাগুড় এবং ২৫/৩০ গ্রাম লবণ দানাদার খাদ্যের সাথে মিশিয়ে দিবেন।
যদি আপনাদের কাছে কাঁচা ঘাস না থাকে সেই ক্ষেত্রে ১০০ কেজি লাইভওয়েটের গরুর জন্য দৈনিক ১.৫ কেজি খড় প্রসেস করে দিবেন। কিভাবে প্রসেস করবেন সেটা সংক্ষেপে বলে দিচ্ছি আমি। ১০ কেজি খড়ে ২ কেজি ফারমেন্টেশন করা ভুট্টা ৩-৪ লিটার পানি এবং ৫০০ গ্রাম চিটাগুড় মিশিয়ে মোটা পলিব্যাগের মধ্যে এয়ারটাইট করে ৪৮ ঘন্টা রেখে দিন। এর পর সেটা বের করে গরুকে খেতে দিন। খুব ভালো ফল পাবেন এতে।
মাঝেমধ্যে গরুকে জিংক সাপ্লিমেন্টারী দিতে পারেন যাতে গরুর গায়ের রং সুন্দর হয় এবং তার খাদ্য চাহিদা যাতে বাড়ে।
আরেকটা কথা গরু পালনের সময় যদি গরুর দৈহিক ওজন নিয়মিত সপ্তাহান্তে রেকর্ড করতে পারেন তাহলে লাভ-লসের ধারণাটা মাথায় থাকবে আপনার। কাজেই সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতেও আপনার সুবিধা হবে।
কলম করার কৌশল ও খুটিনাটি বিষয়
আমরা যারা বাগান করতে চাই তাদের সবার পক্ষে সব সময় হয়তো সব চারা ক্রয় করা সম্ভব হয়না। তাই গাছে কলম বা গ্রাফটিং বা কাটিং করে উন্নতজাতের সুস্থ সবল চারা আমরা নিজেরাই করতে পারি। এতে করে আমাদের অর্থের সাশ্রয় হবে। চলুন কলম বা গ্রাফটিং বা কাটিং নিয়ে কিছু আলোচনা করা যাক।
জোড় কলম/গ্রাফটিং
সাধারণ ভাবে একটি গাছ থেকে আরেকটি গাছের জন্ম হওয়ার পদ্ধতিকে গাছের বংশ বিস্তার বলে। অন্য কথায়, যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গাছ যৌন কোষ বা তার অংগজ কোষ থেকে নুতন স্বতন্ত্র গাছ সৃষ্টি করে তাকে বংশ বিস্তার বলে। বংশ বিস্তার দুই প্রকার যথা:
১। যৌন বংশ বিস্তার ও ২। অযৌন বংশ বিস্তার।
ফল গাছ রোপনের মূল উদ্দেশ্য হলো ভাল, উন্নতমান ও মাতৃগুন সম্পন্ন ফল পাওয়া। এ কারণে, ফল গাছ রোপনের ক্ষেত্রে যৌন পদ্ধতির তুলনায় অযৌন পদ্ধতির চারা/ কলম গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এ পদ্ধতিতে উৎপাদিত চারা/কলম রোপন করলে মাতৃ গুণাগুণ সম্পন্ন ফল পাওয়া যায়, গাছে তাড়াতাড়ি ফল ধরে এবং গাছ ছোট হয় বিধায় অল্প পরিসরে অনেক গাছ রোপন করা যায়। অযৌন বংশ বিস্তার পদ্ধতি গুলোর মধ্যে ক্লেফ্ট গ্রাফটিং বা ফাটল জোড় কলম একটি অন্যতম পদ্ধতি।এ পদ্ধতিতে একাধিক ফল গাছে কলম করা যায়। অন্যান্য জোড় কলম গুলোর তুলনায় ফাটল জোড় কলম একটি অন্যতম পদ্ধতি কারণ এ পদ্ধতিতে কর্তিত স্থানের দুই পাশ দিয়ে জোড়া লাগে বিধায় জোড়াটি সবল হয় এবং সহজে জোড়া স্থানটি ভাংগার সম্বাবনা থাকে না। তুলনামুলক ভাবে এ পদ্ধতি অন্যান্য জোড় কলম পদ্ধতি গুলোর তুলনায় সহজ, সফলতার হার বেশী এবং খরচও কম পড়ে।
উপকরণ
এ কলম করতে গ্রাফটিং চাকু, ব্লেড, সিকেচার, পলিথিন ক্যাপ, পলিথিন ফিতা, সুতলী, পরিবেশ সহনশীল একটি ষ্টক গাছের চারা, কাংখিত গাছের ডগা বা সায়ন এবং দক্ষ মালি ইত্যাদি।
কলম করার উপযুক্ত সময়
মে থেকে জুলাই মাস পর্যন্ত কলম করার উপযুক্ত সময়। কারন এ সময় বাতাসে আদ্রতা ও গাছের কোষের কার্যকারিতা বেশী থাকে। ফলে তাড়াতাড়ি জোড়া লাগে এবং সফলতার হারও বেশী পাওয়া যায়।
স্টক তৈরী
অনাকাংখিত কিন্তু পরিবেশ উপযোগী গাছের বা স্থানীয় জাতের বীজ হতে চারা তৈরী করতে হবে যাতে কাংখিত জোড়া লাগানো সম্ভব হয়।
স্টক চারা তৈরীর ধাপ সমুহ:
১) পরিনত গাছ হতে সুস্থ ও সবল বীজ সংগ্রহকরা।
২) স্টক চারাটি সরাসরি মাটি বা পলিব্যাগে তৈরী করা।
৩) যদি চারাটি মাটিতে তৈরী করা হয় তবে মাটি ভাল ভাবে কুপিয়ে ঝুরঝুরা করে আগাছা পরিস্কার করে প্রয়োজনীয় জৈব সার মিশিয়ে বেড আকারে করতে হবে। বেডটির প্রস্থ্য যেন ১ মিটার এর বেশী না হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এর পর বেডে ২৫ সেমিঃ পর পর লাইন করে প্রতি লাইনে ২০ সেমিঃ পর পর চারা/ বীজ রোপন করতে হবে এবং কলম করার পূর্ব পর্যন্ত স্টক চারা গুলোর সকল প্রকার পরিচর্যা নিশ্চিত করতে হবে।
৪) চারা পলিব্যাগে তৈরী করলে ২০ সেমিঃ x ১২ সেমিঃ পলিব্যাগ নিতে হবে। দোঁয়াশ মাটির সাথে অর্ধেক পচা গোবর ও কম্পোস্ট মিশিয়ে পলিব্যাগ ভরতে হবে।
৫) প্রতি ব্যাগে একটি করে বীজ বা চারা রোপন করতে হবে। চারা গজানোর পর পলিব্যাগ গুলো যেন কাত হয়ে না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে অন্যথায় চারার গোড়া বাঁকা হয়ে যাবে।
৬) এবার ব্যাগটি বেডে ২৫ x ২০ সেমিঃ দুরত্বে রোপন করতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে পলিব্যাগটি যেন মাটির সমান্তরালে থাকে। এতে খরা মৌসুমে পানি সেচ কম লাগে এবং চারাটি সুস্থ ও সবল হয়।
৭) সুস্থ, সবল এবং নিরোগ চারা পাওয়ার জন্য আগাছা, রোগ ও পোকা-মারড় দমন করতে হবে। প্রয়োজনে গাছে সার ও সেচ দিতে হবে।
স্টক চারার বয়স ও সায়ন নির্বাচন
১) আম:
ক) স্টক চারাটির বয়স ৯-১২ মাস হবে।
খ) উৎকৃষ্ট ও কাংখিত মাতৃগাছ থেকে সুস্থ ও সবল সায়ন নিতে হবে।
গ) সায়নটি লম্বায় ১৫-১৮ সেমিঃ হবে।
ঘ) সায়নটির ডগায় একটি সুপ্ত কুড়ি থাকতে হবে।
ঙ) সায়নটির রং গাঢ় সবুজ থেকে কালচে সবুজ হবে এবং
চ) সায়নটি সংগ্রহের পর পরই সমস্ত পাতা অপসারন করে ভিজা ন্যাকড়া ও পলিথিন দিয়ে পেচিয়ে রাখলে সায়নটির সতেজতা অক্ষুন্ন থাকে।
ছ) আমের সায়ন মাতৃগাছে সংযুক্ত থাকা অবস্থায় পাতা কেটে ফেলাকে ডিফলিয়েশন বলে। ১০ দিন পূর্বের ডিফলিয়েশন করা সায়ন দিয়ে কলম করলে তাড়াতাড়ি জোড়া লাগে এবং সফলতার হারও বেশী হয়।
২) কাঠাল:
ক) স্টক চারাটির বয়স ২-৩ সপ্তাহ হতে হবে।
খ) সমব্যাস সম্পন্ন ১-২ মাস বয়সের কাংখিত গাছের ডগা সায়ন হিসেবে নিতে হবে।
গ) সায়নটির শীর্ষ কুঁড়ি কয়েক দিনের মধ্যে বিকশিত হবে এমনটি হতে হবে। যার রং গাঢ় সবুজ কিন্ত টিপ দিলে শক্ত মনে হবে।
ঘ) সায়নটি সংগ্রহের পর পরই সমস্ত পাতা অপসারন করে ভিজা ন্যাকড়া ও পলিথিন দিয়ে পেচিয়ে রাখলে সায়নটির সতেজতা অক্ষুন্ন থাকে।
ঙ) সায়নটি দৈঘ্যে প্রায় ১০ সেমিঃ হবে।
৩) জলপাই:
ক) স্টক চারাটির বয়স ৬-৮ মাস হতে হবে।
খ) পরিপূর্ন ও বিকশিত এবং কাংখিত গাছের ডগার শীর্ষ থেকে কচি ১০-১৫ সেমিঃ অংশ কেটে ফেলে দিয়ে নিচের ১৫-১৮ সেমিঃ ডগাটি সায়ন হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।
গ) সায়নটি সংগ্রহের পর পরই সমস্ত পাতা অপসারন করে ভিজা ন্যাকড়া ও পলিথিন দিয়ে পেচিয়ে রাখলে সায়নটির সতেজতা অক্ষুন্ন থাকে।
৪) পেয়ারা:
ক) স্টক চারাটির বয়স ৯-১২ মাস হতে হবে। স্টক হিসেবে পলি পেয়ারার চারা ব্যবহার করলে উইল্ট প্রতিরোধী গাছ তৈরী করা সম্ভব।
খ) পেয়ারা ডালের ডগার কচি অংশে ৪টি ধার/খাজ থাকে। এই ধার বা খাজের ঠিক নিচের গোলাকার অংশটিকে সায়ন হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।
গ) সায়নটি লম্বায় ১৫-১৮ সেমিঃ হওয়া ভাল।
ঘ) সায়নটি সংগ্রহের পর পরই সমস্ত পাতা অপসারন করে ভিজা ন্যাকড়া ও পলিথিন দিয়ে পেচিয়ে রাখলে সায়নটির সতেজতা অক্ষুন্ন থাকে।
৫) কামরাংগা:
ক) স্টক চারাটির বয়স ৬-৮ মাস হতে হবে।
খ) সায়নের ব্যাস স্টক চারার সম আকারের হলে ভাল হবে।
গ) পরিপূর্ন ও বিকশিত এবং কাংখিত গাছের ডগার শীর্ষ থেকে ১০-১৫ সেমিঃ কচি অংশ কেটে ফেলে দিয়ে নিচের ১৫-১৮ সেমিঃ ডগাটি সায়ন হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।
ঘ) একটি ডগা হতে একাধিক সায়ন সংগ্রহ করা যেতে পারে।
ঙ) সায়নটি সংগ্রহের পর পরই সমস্ত পাতা অপসারন করে ভিজা ন্যাকড়া ও পলিথিন দিয়ে পেচিয়ে রাখলে সায়নটির সতেজতা অক্ষুন্ন থাকে।
৬) আমলকি:
ক) স্টক চারাটির বয়স ৬-৮ মাস হতে হবে।
খ) সায়নের ব্যাস স্টক চারার সম আকারের হলে ভাল হবে ।
গ) পরিপূর্ন ও বিকশিত এবং কাংখিত গাছের ডগার শীর্ষ থেকে ১০-১৫ সেমিঃ কচি অংশ কেটে ফেলে দিয়ে নিচের ১৫-১৮ সেমিঃ ডগাটি সায়ন হিসেবে ব্যবহার করতে হবে।
ঘ) একটি ডগা হতে একাধিক সায়ন সংগ্রহ করা যেতে পারে।
ঙ) সায়নটি সংগ্রহের পর পরই সমস্ত পাতা অপসারন করে ভিজা ন্যাকড়া ও পলিথিন দিয়ে পেচিয়ে রাখলে সায়নটির সতেজতা অক্ষুন্ন থাকে।
৭) লেবু:
ক) স্টক চারার বয়স ৬-৮ মাস হতে হবে।
খ) সায়নের ব্যাসার্ধ্য স্টক চারার সম আকারের হলে ভাল হবে।
গ) লেবু ডালের ডগার কচি অংশে ৪টি ধার/খাজ থাকে। এই ধার বা খাজের ঠিক নিচের গোলাকার অংশটিকে সায়ন হিসেবে ব্যবহার করা হয়।
ঘ) সায়নটি লম্বায় ১৫-১৮ সেমিঃ হওয়া ভাল।
ঙ) সায়নটি সংগ্রহের পর পরই সমস্ত পাতা অপসারন করে ভিজা ন্যাকড়া ও পলিথিন দিয়ে পেচিয়ে রাখলে সায়নটির সতেজতা অক্ষুন্ন থাকে।
৮) কুল বা বরই:
ক) স্টক চারাটির বয়স ১.৫-২.০ মাস হতে হবে।
খ) সায়নের ব্যাস স্টক চারার সম আকারের হলে ভাল হবে ।
গ) সায়নের রং সবুজ বা সবুজাব হবে। ডগাটির আগাথেকে ১০-১৫ সেমিঃ কচি অংশ বাদ দিয়ে নিচের ১৫-১৮ সেমিঃ অংশ সায়ন হিসেবে নিতে হবে।
ঘ) সায়নটি সংগ্রহের পর পরই সমস্ত পাতা অপসারন করে ভিজা ন্যাকড়া ও পলিথিন দিয়ে পেচিয়ে রাখলে সায়নটির সতেজতা অক্ষুন্ন থাকে।
কলম/ গ্রাফটিং করার পদ্ধতি ও কৌশল
ক) সাধারনত স্টক গাছের গোড়া হতে ১৫-২০ সেমিঃ উপরে গ্রাফ্টিং করা হয়।
খ) খেয়াল রাখতে হবে যেন জোড়া স্থানটির নিচে অবশ্যই যেন কিচু পাতা থাকে।
গ) এবার সিকেচার দিয়ে নিদ্দিষ্ট উচ্চতায় স্টক গাছের মাথাটি সমভাবে কেটে অপসারন করতে হবে।
ঘ) এবার চাকু দিয়ে স্টক গাছের মাথাটি ২-৩ সেমিঃ লম্বালম্বি ভাবে চিরে দিতে হবে এবং সায়নের গোড়ার উভয় পাশ একই ভাবে ২-৩ সেমিঃ তেরছা কাট দিতে যেন গোঁজ বা তিলকের মত হয়।
ঙ) এবার স্টক গাছের কর্তিত অংশে সায়নের কর্তিত অংশ সমান ভাবে প্রবিস্ট করাতে হবে।
চ) অতপর জোড়া লাগানোর যায়গাটি পলিথিন ফিতা দিয়ে পেচিয়ে শক্ত ভাবে বেধে দিতে হবে।
ছ) এবার একটি পলিথিন ক্যাপ বা টুপি দিয়ে সায়নের মাথা হতে জোড়ার নিচ পর্যন্ত ঢেকে বেধে দিতে হবে।
ব্যতিক্রম: যেহেতু কাঠলের ২-৩ সপ্তাহের স্টক চারায় গ্রাফটিং করা হয় তাই স্টক চারায় কোন পাতা থাকেনা এবং কলমটি চাকুর পরিবর্তে ব্লেড দিয়ে করতে হয়।
পরবর্তী পরিচর্যা
ক) কলম করার সময় অতিরিক্ত রোদ থাকলে উপরে হালকা ছায়ার ব্যবস্থা করলে সফলতার হার বেড়ে যায়।
খ) স্টক গাছে অনাকাংথিত কুশি বের হওয়ার পর পরই ভেংগে দিতে হবে।
গ) কলমের বেড/ব্যাগে প্রয়োজনীয় রসের ব্যাবস্থা নিশ্চিত করতে হবে।
ঘ) সায়নের মাথায় কুঁড়ি গজানোর সাথে সাথেই পলিথিনের ক্যাপটি খুলে দিতে হবে।
ঙ) জোড়াটি স্থায়ী হয়ে গেলে অথাৎ কলম করার প্রায় তিন মাস পর পলিথিনের ফিতাটি খুলে দিতে হবে।
চ) বেডের/ ব্যাগের আগাছা, রোগ ও পোকা-মাকড় দমনের ব্যবস্থা নিতে হবে।
ছ) চারার বাড়-বাড়তি কম হলে উপরি সার প্রয়োগ করতে হবে অথবা ফলিয়ার স্প্রে করতে হবে। প্রতি লিটার পানিতে ২ গ্রাম হারে ইউরিয়া মিশিয়ে পাতায় স্প্রে করতে হবে।
আপনারা বিষয়গুলো যদি যথাযথভাবে পালন করেন তাহলে অবশ্যই কৃতকার্য হবেন তাতে কোন সন্দেহ নেই।
কাটিং
কাটিং
সংগা:
কাটিং হল অযৌন বংশবিস্তারের সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি। গাছের বিভিন্ন অংগ, যেমন – কান্ড, শিকড়, পাতা, পত্রকুড়ি প্রভৃতি মাতৃগাছ থেকে আলাদা করে রাসায়নিক, যান্ত্রিক পদ্ধতিতে বা পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে শিকড় গজানোর মাধ্যমে মাতৃগাছের অনুরুপ নতুন গাছ উৎপাদনকে কাটিং বলে।
কাটিং-সুবিধা/অসুবিধা
কাটিং এর সুবিধাঃ
১. অংগজ বংশবিস্তার পদ্ধতি সমূহের মধ্যে এ পদ্ধতিতে সবচেয়ে সহজে ও কম খরচে অধিক চারা উৎপাদন করা যায়।
২. জোড় কলমের মত এতে কোন জোড় অসামঞ্জস্যতা হয় না।
৩. এ পদ্ধতিতে অল্প জায়গায় অনেক চারা উৎপাদন করা যায়।
৪. এতে তেমন খুব একটা কারিগরি দক্ষতার প্রয়োজন হয় না।
৫. মাতৃগাছের গুণাগুণ অক্ষুন্ন রেখে নতুন চারা দ্রুত উৎপন্ন করা যায়।
৬. একটি মাত্র গাছ থেকে অসংখ্য গাছ জন্মানো সম্ভব হয়।
৭. বসত বাড়ীতে হেজ বা বেড়া নির্মাণে ও ফল গাছের বংশবিস্তারে এটি একটি বহুল প্রচলিত ও জনপ্রিয় পদ্ধতি।
কাটিং এর অসুবিধাঃ
১. উপযুক্ত পরিবেশ ও ব্যবস্থাপনার অভাবে অনেক সময় কর্তিত অংশের মূল গজায় না।
২. অনেক সময় কাটিং মাটি বাহিত বিভিন্ন রোগ দ্বারা আক্রান্ত হয়ে মারা যায়।
৩. কোন কোন সময় শিকড় গজানোর পর মাটির প্রতিকূল অবস্থার কারণে শিকড় নষ্ট হয়ে যায়।
৪. কাটিং থেকে জন্মানো ফল গাছ অতি সহজেই ঝড় বাতাসে উপড়ে যেতে পারে। কারণ এতে কোন প্রধান মূল তৈরী হয় না।
৫. সব গাছে কাটিং সফল হয় না বা কোন কোন ফল গাছে এর সফলতার হার এত কম যে সেক্ষেত্রে এ পদ্ধতি অনুমোদন করা যায় না। যেমন- বীজবিহীন এবং এলাচি লেবুতে কাটিং এর সফলতার হার অনেক বেশি অথচ কাগজি লেবুতে কাটিং সফল হয় না।
কাটিং এর প্রকারভেদ
শিকড় কাটিং:
পরিণত গাছের শিকড় বা শিকড়াংশ মাতৃগাছ থেকে আলাদা করে নিয়ে বিশেষ ব্যবস্থায় চারা উৎপাদন পদ্ধতিকে শিকড় কাটিং বলে। এই পদ্ধতিতে ১৫-২০ সেঃ মিঃ লম্বা এবং পেন্সিল বা আঙ্গুলের মতন মোটা শিকড়ের অংশ তির্যকভাবে কেটে মাটিতে পুতে রাখতে হয়।
এ কলম করার ক্ষেত্রে মাটিতে পরিমিত আদ্রতা নিশ্চিত করতে হবে। কিছুদিন পর কাটিং থেকে শিকড়সহ নতুন শাখা বের হয় এবং নতুন গাছের জন্ম দিবে। এই পদ্ধতিতে পেয়ারা, বেল, ডালিম, লেবু, বাগান বিলাস, এলামন্ডা ইত্যাদি ফল ও ফুলের চারা উৎপাদন করা যায়। এই পদ্ধতিতে গাছের বংশবিস্তার আমাদের দেশে বর্ষাকালে করা হয়। গাছ নতুন ভাবে যখন ডালপালা ছাড়া শুরু করে তার পূর্বেই এই শিকড় সংগ্রহ করতে হয়। কারণ এই সময় শিকড়ে প্রচুর পরিমাণ খাদ্য মজুদ থাকে। এতে কাটিং এ সফলতার হার বেড়ে যায়।
শাখা কাটিং:
গাছের ডাল থেকে যে কাটিং করা হয় তাকে ডাল কাটিং বলা হয়। ভাল কলম পাওয়ার জন্য ডাল কর্তনকে ৪ ভাগে ভাগ করা হয়। যেমন – শক্ত ডাল কাটিং, আধাশক্ত ডাল কাটিং, কচি ডাল কাটিং এবং কোমল ডাল কাটিং ।
১. শক্ত শাখা কাটিং
জলপাই, ডালিম, জামরুল, পাতাবাহার, জবা, গন্ধরাজ, মুসান্ডা ইত্যাদি গাছের ক্ষেত্রে ৬-১২ মাস বয়সের আঙ্গুল অথবা পেন্সিলের ন্যায় মোটা ডাল নির্বাচন করা হয়। এ সব গাছের ক্ষেত্রে আধা শক্ত ডাল ব্যবহার করেও চারা উৎপাদন করা যায় তবে তা শক্ত ডালের ন্যায় ভালো চারা উৎপাদিত হয় না।
২. আধা শক্ত শাখা কাটিং
লেবু, আঙ্গুর, গোলাপ ইত্যাদি। এ সকর ডাল পেন্সিলের ন্যায় চিকন অথবা সামান্য মোটা হতে পারে। শক্ত ডাল বা কচি ডাল দিয়েও এ সকল গাছের চারা উৎপাদন করা যায় তবে সে সকল চারা আধাশক্ত ডালের ন্যায় ভাল হয় না।
৩. কচি শাখা কাটিং
আপেল, নাশপাতি, রঙ্গন, ডুরান্ডা ইত্যাদি গাছের জন্য কচি ডাল ব্যবহার করা হয়। এ সকল গাছের ক্ষেত্রে আধা শক্ত ডাল চারা উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। তবে কচি ডালের ন্যায় ভাল হয় না।
৪. কোমল শাখা কাটিং
চন্দ্রমল্লিকা, ডালিয়া, গাঁদা, মিষ্টি আলু ইত্যাদি গাছের ক্ষেত্রে ডালের মাথার দিকের কোমল ডাল বা নতুন গজানো ডগা কাটিং হিসাবে ব্যবহার করা হয়। এ সকল গাছের ক্ষেত্রে কচি বা আধাশক্ত ডাল চারা উৎপাদনের জন্য ব্যবহার করা যায়। তবে তা কোমল ডালের ন্যায় ভালো চারা উৎপাদিত হবে না।
শক্ত বা আধাশক্ত শাখা কাটিং এর জন্য ডাল নির্বাচনের শর্তাবলী
ক) কাটিং এর জন্য ডাল নির্বাচনের সময় অবশ্যই সুস্থ্য, সবল, ডাল নির্বাচন করতে হবে।
খ) নির্বাচিত ডালের পাতাগুলো ধারালো সিকেচার দিয়ে কেটে ফেলতে হবে।
গ) কাটিং এর জন্য ব্যবহৃত ডালে কমপক্ষে তিনটি গিট বা কুঁড়ি (Bud) থাকতে হবে।
ঘ) গাছের দক্ষিন ও পূর্ব দিকের ডালে কাটিং ভাল হয, সফলতার হার বেশী। কারণ দক্ষিন ও পূর্ব দিকের ডালে সূর্যের আলো বেশী পড়ে এবং মজুদ খাদ্যের পরিমান বেশী থাকে।
ঙ) কাটিং এর জন্য বৈশাখ হতে আষাঢ় মাস উত্তম তবে শীতকাল ছাড়া সারা বছরই ডাল কর্তন কলম করা যায়।
চারা তৈরী পদ্ধতি
কাটিং এর জন্য ডাল তৈরীকরণ
কাটিং এর জন্য নির্বাচিত ডালটির উপরের অংশের কাটটি গিটের উপরে গোল করে এবং নিচের অংশের কাটটি গিটের নিচে তেছরা করে কাটতে হবে। এতে কাটিংটির আগা-গোড়া সহজেই চেনা যাবে এবং তেছরা কাটা অংশে বেশী পরিমাণ শিকড় গজানোর সুযোগ পায় । সাধারণত ৬-১২ মাস বয়সের ১৫-২০ সে: মি: লম্বা এবং পেন্সিল বা আঙ্গুলের মত মোটা ডালের অংশ কাটিং হিসেবে কর্তন করা হয়।
চারা তৈরী
ক) কাটিং এর জন্য তৈরিকৃত ডালগুলো উঁচু বীজতলা, টব বা কাঠের ট্রেতে রোপন করা যাবে। বেলে-দোয়াঁশ মাটির সাথে প্রচুর পরিমান পচা গোবর মিশিয়ে বীজতলা তৈরী, টব বা কাঠের ট্রেতে ভর্তি করে কাটিং রোপন করতে হবে।
খ) বীজতলার দৈঘ্য ৩ মিটার ও প্রস্থ ১ মিটার হতে হবে এবং বেডটি উত্তর – দক্ষিন দিকে লম্বা লম্বি হবে।
গ) বীজতলায় ২০ সেমি: পর পর লাইন তৈরী করে প্রতি লাইনে ২০ সেমি: পর পর কাটিং লাগাতে হবে। কাটিং লাগানোর সময় গচি দিয়ে ছিদ্র করে কাটিং এর তেরছা অংশ মাটিতে বসাতে হবে।
ঘ) কাটিং ৪৫ কৌনিক ডিগ্রীতে উত্তর মুখী করে বেডে বসাতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে যেন ১টি গিট সহ এক তৃতীয়াংশ মাটির ভিতরে প্রবেশ করে।
ঙ) কাটিং বসানোর পর কাটিং এর গোড়ার মাটি ভাল ভাবে চেপে দিতে হবে যেন ভিতরে ফাঁকা না থাকে।
চ) এবার পানি দিয়ে বেডটি ভাল ভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে।
ছ) হালকা ছায়ার ব্যবস্থা করতে হবে ও মাঝে মাঝে সেচ দিতে হবে।
জ)এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে কাটিং হতে কুঁড়ি ও শিকড় গজাবে। তিন মাসের মধ্যে গজানো কাটিং বেড হতে তুলে পটিং করা যাবে, রোপন বা বিক্রয় করা যাবে। কাটিং বেড হতে উঠানোর ৩-৪ ঘন্টা আগে বীজতলার মাটি পানি দিয়ে ভাল ভাবে ভিজিয়ে দিতে হবে। অতপরঃ নিড়ানীর সাহায্যে কাটিং এর গোড়া হতে ৩-৪ ইঞ্চি দুর দিয়ে মাটির বলসহ কাটিংটি উঠাতে হবে। সাথে সাথে পটে / পলিব্যাগে পটিং বা বাগানে রোপন করতে হবে। বিক্রয় করতে হলে কাটিং এর গোড়ার মাটির বলটি নলি সুতা দিয়ে পেঁচিয়ে হালকা ছায়া যুক্ত স্থানে ১০-১৫ দিন হার্ডেনিং করে বিক্রয় করতে হবে। হার্ডেনিং এর সময় গাছের প্রয়োজন অনুযায়ী দিনে ১-২ বার হালকা সেচ দিতে হবে।
কাটিং এর উপরের কাটা অংশে ছত্রাক নাশক লাগালে রোদ ও রোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। নিচের কাটা অংশে হরমোন ( আই,বি,এ = ইনডোল বিউটারিক এসিড, বাজারে বাণিজ্যিক নাম সুরাটেক্স) ব্যবহার করলে খুব সহজেই শিকড় গজায়।
পাতা কাটিং:
কিছু কিছু গাছ আছে যেমনঃ পাথর কুচি, মিষ্টি আলু, লেবু, ফনিমনসা, ইত্যাদির পাতা কাটিং হিসাবে ব্যবহার করলে সহজে চারা উৎপাদন করা যায়। এ পদ্ধতিতে সম্পুর্ণ পাতা বা পাতার বিভিন্ন অংশ, যেমনঃ পত্রফলক, বোটাসহ পাতা প্রভৃতি মাতৃগাছ হতে আলাদা করে নতুন চারা উৎপাদনকে পাতা কাটিং কলম বলে। পাতার গোড়া বা অন্যান্য অংশ থেকে শিকড় ও পাতা বা কান্ড জন্মে নতুন চারা উৎপন্ন হয়। পত্র কলমের জন্য অধিক আদ্রতার দরকার হয়।
পত্রকুঁড়ি কাটিং:
কিছু কিছু গাছ আছে যাদের পত্রকুঁড়ি কাটিং হিসাবে ব্যবহার করে সহজে চারা উৎপাদন করা যায়। এ পদ্ধতিতে পাতা, পাতার বোটা, ছোট একটুকরা কান্ড ও পত্রাক্ষে অবস্থিত একটি সুপ্ত কুঁড়ির সমন্বয়ে গঠিত হয় পত্রকুঁড়ি কলম। যেমন – চা, এলাচি লেবু ইত্যাদি। যেসব গাছের পাতা থেকে শিকড় বাহির হয় কিন্তু কান্ড বাহির হয় না এমন গাছের জন্য পত্রকুড়ির কাটিং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শীতের শেষ দিকে সাধারণতঃ পত্রকুঁড়ি কলম করা হয়ে থাকে। এ পদ্ধতিতে এক মৌসুমেই প্রতিটি কুঁড়ি হতে একটি নতুন চারা উৎপাদন করা যায়।
কষ্ট করে পড়ার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ। 😂🤣
আলহামদুলিল্লাহ্ ! মনের প্রশান্তি তো এখানেই, সামান্য কিছু নিরাপদ খাদ্য পণ্য উৎপাদন ও সরবরাহকারী হিসেবে নিজ পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে আল্লাহ আপনাদের সরবরাহ করার সুযোগ দিয়েছেন।
সম্ভাব্য ২০ জুন হতে ল্যাংড়া ও বোম্বাই আম দেয়া যাবে ইন শা আল্লাহ। দুই জাতের আম ৫+৫=১০ কেজি দেয়া হয়না, এক জাত নূন্যতম ১০ কেজি নিতে হবে।
১০ ও ২০ কেজি এই দুই সাইজের কাটনে আম দেয়া হচ্ছে।
স্থানীয় কুরিয়ার পয়েন্ট থেকে সংগ্রহ করলে খরচসহ
ঢাকায় প্রতি কেজি আম ৮০/- টাকা।
ঢাকার বাইরে প্রতি কেজি আম ৯০/- টাকা।
হোম ডেলিভারি নিলে প্রতি কেজি ১০০/- টাকা।
*শুধুমাত্র ঢাকা শহরে হোম ডেলিভারি দেয়া হয়।
বিঃদ্রঃ আম ক্রয় সংশ্লিষ্ট কোনো ধরনের আলোচনা বা জিজ্ঞাসা কমেন্টসে না করার অনুরোধ করছি। কিছু জানতে বা বুঝতে কথা বলুন সরাসরি 01716255830 নম্বরে অথবা ইনবক্সে।
বাণিজ্যিক মাছ চাষে প্রাকৃতিক খাবার
মাছ চাষে প্রায় ৭০% খরচ হয় এর খাদ্যের যোগানে। তারপরেও সঠিক পুষ্টিমান ও নিরাপদ খাদ্য পাওয়ায় রয়েছে অনিশ্চয়তা। এই সংকট নিরসনে ও সাশ্রয়ী মূল্যে মাছের খাবার নিশ্চিত করতে সবচেয়ে নির্ভরশীল হলো প্রাকৃতিক খাদ্য। এই প্রকৃতিকে ব্যবহার করেই আমরা মাছ চাষকে করে তুলতে পারি লাভজনক। আর প্রকৃতিতে উৎপন্ন ফাইটোপ্লাঙ্কটন আর জুপ্লাঙ্কটন হলো এই খাবারের উৎস।
প্রথমে আমরা বোঝার চেষ্টা করি প্রাকৃতিক খাবার কেন খাওয়াবোঃ
খরচঃ
মাছ প্রাকৃতিক খাবার খেলে, সম্পুরক খাবারের উপর চাপ কমবে। প্রাকৃতিক খাবার উৎপাদনে খরচ কম বিধায় মাছ চাষে খাদ্য খরচ কম হবে।
উৎপাদনঃ
হাতে তৈরি বা রেডিফিডে কোন খাদ্য উপাদান কম হলে মাছ তা প্রকৃতি থেকে গ্রহণ করার সুযোগ পায়, তাই উৎপাদন ব্যহত হয় না।
রোগ প্রবণতাঃ
পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্যের অভাব হলে মাছের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায়, এতে মাছের বৃদ্ধি থমকে যেয়ে, উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হয় এবং দ্রুতই রোগাক্রান্ত হয়ে মাছ মারা যেতে পারে।
পরিবেশঃ
পুকুরের ভৌত পরিবেশ পরিবর্তনেও প্রাকৃতিক খাবার দারুণ গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে।
সংকটঃ
সংকট কালে যখন পুকুর পারে নিয়মিত যাওয়া যাচ্ছেনা, তখন এই প্রাকৃতিক খাবারই হয়ে উঠতে পারে মাছের খাবারের অন্যতম উৎস।
প্রাকৃতিক খাবার কখন খাওয়াবোঃ
প্রায় সারা বছরই পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য প্রয়োজন। পর্যবেক্ষণ করে বুঝে তার পর প্রয়োজনীয় পরিমাণ প্রাকৃতিক খাবার তৈরি করা উচিৎ।
প্রাকৃতিক খাবার কতটুকু প্রয়োগ করবোঃ
কতটা খাবার প্রয়োগ করতে হবে তা নির্ভর করবে পুকুরে কি পরিমাণ খাবার মজুদ আছে তার উপর।
পুকুরের প্রাকৃতিক খাবার কি পরিমাণ আছে, তা মাপার বা বোঝার কিছু পদ্ধতিঃ
> সেকি ডিস্ক ৩০-৩৫ সেমি নিচে ডুবিয়ে এর সচ্ছতা অনুযায়ী পুকুরের প্রাকৃতিক খাবার নিরুপন করা যায়।
> এছাড়া গামছার দুই ধারে ধরে কিছু পানি তুলেও প্রাকৃতিক খাবার মাপা যায়।
> গ্লাসে পুকুরের পানি নিয়েও ব্যাপারটি বুঝতে সুবিধা হয়।
> কনুই পর্যন্ত পুকুরের পানিতে ডুবিয়ে হাতের তালুর দিকে তাকিয়ে দেখলেই সচ্ছতা অনুযায়ী পুকুরের প্রাকৃতিক খাবার কেমন তা বুঝে নেয়া যায়।
> মোটামুটি পুকুরের পানির সচ্ছতাই প্রাকৃতিক খাবারের সাধারণ মাপ কাঠি। যা অপেক্ষা কৃত বেশি সচ্ছ হলে বুঝতে হবে পুকুরে প্রাকৃতিক খাবারের অভাব আছে।
প্রাকৃতিক খাবার প্রয়োগে সাবধানতাঃ
সাধারণত সূর্যোজ্জল দিনেই পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য উৎপাদনের পদক্ষেপ নেয়া ভালো। মেঘলা আবহাওয়ায় পুকুরে সার দেয়া খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
মাছের পুকুরে প্রাকৃতিক খাবার তৈরির পদ্ধতিঃ
পুকুরের পানিতে বিভিন্ন জৈব, অজৈব পদার্থ প্রয়োগ ও রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রাকৃতিক খাদ্যের অভাব পূরণ করা হয়। ফাইটোপ্লাঙ্কটনের আধিক্য জনিত কারণে পানি সবুজ রং ধারণ করে, জুপ্লাঙ্কটন বেশি হলে পানি বাদামী রং দেখায়।
নিচে কম খরচে প্রাকৃতিক খাবার তৈরির কয়েকটি সহজ, লাগসই এবং জনপ্রিয় পদ্ধতি দেয়া হলোঃ
প্রাকৃতিক খাবার তৈরি প্রক্রিয়া # ০১
উপাদান ও পরিমাণ
খৈল ৫ কেজি
গোবর ২০ কেজি
পানি ৪০ লিটার
গাঁজন কাল ৫ দিন
প্রয়োগের সময়
সকাল ৯-১১ টা (রৌদ্রজ্বল সময়ে)
জায়গার পরিমাণ
১ বিঘা বা ৩৩ শতকের জন্য।
প্রয়োগ পদ্ধতি
সব উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে ৫দিন পরে, এই উপাদান গুলোর সাথে, ৫ কেজি ডিএপি/ড্যাপ সার পানিতে গুলিয়ে ভালো ভাবে মিশিয়ে, সারা পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হয়।
প্রাকৃতিক খাবার তৈরি প্রক্রিয়া # ২
উপাদান ও পরিমাণ
খৈল ৫-৬ কেজি
ব্রাণ১৫-১৮ কেজি
চিটাগুড় -৮-১০ কেজি
ইষ্ট ৬০০-৭০০গ্রাম
পানি ১০০ লিটার
গাঁজন কাল ৪৮-৭২ ঘন্টা
প্রয়োগের সময়
সকাল ৯-১১ টা (রৌদ্রজ্বল সময়ে)
জায়গার পরিমাণ
১ একর বা ১০০ শতকের জন্য
প্রয়োগ পদ্ধতি
সব উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে ৪৮-৭২ ঘন্টা সময় পরে প্রয়োগের পরে হররা টেনে দিতে হয়।
প্রাকৃতিক খাবার তৈরি প্রক্রিয়া # ৩
উপাদান ও পরিমাণ
ব্রাণ/আটা ২০০ গ্রাম
চিটাগুড় ৫০ গ্রাম
ইষ্ট ৫ গ্রাম
পানি ১ লিটার
গাঁজন কাল ২৪-৪৮ঘন্টা
প্রয়োগের সময়
সকাল ৯-১১ টা (রৌদ্রজ্বল সময়ে)
জায়গার পরিমাণ
১ শতকের জন্য।
প্রয়োগ পদ্ধতি
সব উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে প্রথম বারে শুধু পানি এবং ৪৮ঘন্টা পরে সব উপাদান একসঙ্গে নিয়ে, ছিটিয়ে পুকুরে প্রয়োগ করতে হয়।
প্রাকৃতিক খাবার তৈরি প্রক্রিয়া # ৪
উপাদান ও পরিমাণ
খর ১ কেজি
ইউরিয়া ১০০ গ্রাম
টিএসপি ১০০ গ্রাম
ডিএপি ৫০ গ্রাম
প্রয়োগের সময়
যেকোনো রৌদ্রজ্বল দিনে
জায়গার পরিমাণ
১ শতকের জন্য
প্রয়োগ পদ্ধতি
শুকনো/ভিজা খড় বান্ডিল/টুকরো আকারে পুকুরের এক জায়গায়/বিভিন্ন জায়গার পানিতে রেখে, সারা পুকুরে সার পানিতে গুলিয়ে ছিটিয়ে দিতে হবে।
প্রাকৃতিক খাবার তৈরি প্রক্রিয়া # ৫
উপাদান ও পরিমাণ
খৈল ৫ কেজি
ব্রাণ ৫ কেজি
গোবর ২০ কেজি
চিটাগুড় ৪ কেজি
লবণ ৪ কেজি
ইষ্ট ৫০০ গ্রাম
পানি ৫০ লিটার
গাঁজন কাল ৬ দিন
প্রয়োগ এরিয়া
১বিঘা/৩৩ শতকের জন্য
প্রয়োগের সময়
সকাল ৯-১১ টা (রৌদ্রজ্বল সময়ে)
প্রয়োগ পদ্ধতি
সব উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে ৫/৬ দিন পচানোর পরে ১/২ করে দুই দিনে প্রয়োগ করতে হয়।
প্রাকৃতিক খাবার তৈরি প্রক্রিয়া # ৬
উপাদান ও পরিমাণ
ব্রাণ ১০০ কেজি
চিটাগুড় ১০ কেজি
ইষ্ট ১ কেজি
পানি পরিমাণ মতো
গাঁজন কাল ৪৮ ঘন্টা
প্রয়োগ এরিয়া
১ একর/১০০ শতকের জন্য
প্রয়োগের সময়
সকাল ৯-১১ টা(রৌদ্রজ্বল সময়ে)
প্রয়োগ পদ্ধতি
সব উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে ৪৮ ঘন্টা পচানোর পরে রৌদ্রময় দিনে প্রয়োগ করতে হয়।
প্রাকৃতিক খাবার তৈরি প্রক্রিয়া # ৭
উপাদান ও পরিমাণ
আটা ৫ কেজি
ইউরিয়া ১২৫-২৫০ গ্রাম
পানি পরিমাণ মতো
গাঁজন কাল ১২ ঘন্টা
প্রয়োগ এরিয়া
১ বিঘা/৩৩ শতকের জন্য
প্রয়োগের সময়
সকাল ৯-১১ টা(রৌদ্রজ্বল সময়ে)
প্রয়োগ পদ্ধতি
সব উপাদান একসঙ্গে মিশিয়ে ১২ ঘন্টা পরে রৌদ্রময় দিনে প্রয়োগ করতে হয়। এতে পানিতে দ্রুত সবুজ বর্ণ চলে আসে।
প্রাকৃতিক খাবার তৈরি প্রক্রিয়া # ৮
উপাদান ও পরিমাণ
ইউরিয়া ১৫০-২০০ গ্রাম
ডিএপি ১০০ গ্রাম
পানি পরিমাণ মতো
প্রয়োগ এরিয়া
প্রতি শতকের জন্য
প্রয়োগের সময়
সকাল ৯-১১ টা(রৌদ্রজ্বল সময়ে)
প্রয়োগ পদ্ধতি
পুকুরে যথেষ্ট জৈব পদার্থের (জৈব পদার্থের যোগান হিসেবে বিভিন্ন ধরনের কম্পোস্ট, কবুতর বা কোয়েলের লিটার এগুলো জীবানু মুক্ত করে ব্যাবহার করা যাবে) উপস্থিতিতে রৌদ্রময় দিনে প্রয়োগ করতে হয়।
প্রাকৃতিক খাবার প্রয়োগে সতর্কীকরণঃ
উপরের পদ্ধতি গুলো থেকে একসময় একটা পদ্ধতি প্রয়োগ করতে হবে। একাধিক পদ্ধতি একসঙ্গে প্রয়োগ করা ঝুঁকিপূর্ণ।
পুকুর পর্যবেক্ষণ করে সুবিধা জনক যে কোনো একটি পদ্ধতি প্রয়োগ করুন আর পুকুরে পানির ইচ্ছেমতো রঙ বুঝে নিন সাথে প্রয়োজনীয় পরিমাণ ফাইটোপ্লাঙ্কটন আর জুপ্লাঙ্কটনতো থাকছেই।
সাধারণত শীত কালে জলকরের পানি কমে আসে। তখন তাপমাত্রা কম থাকাতে মাছ খাবার কম গ্রহণ করে। আবার ঠিক মতো রোদ না পাওয়ার কারনে পর্যাপ্ত ফাইটোপ্লাঙ্কটন উৎপাদন হয় না। জুপ্লাঙ্কটনের খাবার হলো ফাইটোপ্লাঙ্কটন।যার অভাবে জুপ্লাঙ্কটন বেঁচে থাকতে পারে না। এমতাবস্থায় পুকুরে পরিবেশ ঠিক রাখা খুবই মুশকিল হয়ে পরে। তাই এই সময় পরিমিত প্রাকৃতিক খাবার প্রয়োগ করতে হবে।
সবার জন্য শুভকামনা। মাছ চাষ সফল হোক।
Click here to claim your Sponsored Listing.
Videos (show all)
Category
Contact the business
Telephone
Website
Address
Shibganj, Chapainawabganj
Rajshahi
6340
Zero Point
Rajshahi
আমি আল আমিন আমি কাজ করছি খাবার,পোশাক সহ সকল ধরনের পণ্য নিয়ে যা কিছু আপনাদের প্রয়োজন!
ভদ্রা, পদ্মা আবাসিক সাব পোস্ট অফিসের বিপরীতে
Rajshahi, 6207
দেশের যেকোন প্রান্ত থেকে ঘরে বসে কিনে
Rajshahi
Rajshahi
aikhane Rajshahi r famous fruits as like mango and others product as like pure khejur gurr paoa jai
Chotobongram
Rajshahi, 6203
Make sure your order before 1-2 days for fresh homemade customized CAKES, CHOCOLATES, CAKESICLES. H
Nishendara, Bogura
Rajshahi
A health food store is a type of grocery store that primarily sells health foods, organic foods, loc
Rajshahi, 6100
This is our small effort to deliver the mango of Rajshahi to the people of Bangladesh. Completely formalin and chemical free sweet mango supplied directly from the garden. Buy Rajs...