Professor Dr. Abubakar Muhammad Zakaria

Dr. Abubakar Muhammad Zakaria is a well Known Renowned Islamic Scholar of Bangladesh. He has a Ph.D.

06/06/2024

ক্বাবীসাহ ইবন জাবের রাহিমাহুল্লাহ বলেন,
আমি মু’আওয়িয়াহ রাদ্বিয়াল্লাহু আনহুর সঙ্গী হয়েছিলাম, আমি তাঁর মতো বিশাল সহিষ্ণু, বেশি নেতৃত্বের যোগ্য, আমিত্ব থেকে বেশি দূরে, বেশি নরম প্রকৃতির কোনো লোককে দেখিনি”
📚সহীহ। বুখারী, আত তারীখুল কাবীর ৭/১৭৫।

21/05/2024

বিশুদ্ধ আকীদা ও মানহাজের গুরুত্ব প্রদান করলে ক্যাঁচাল!
আলিমগণ রাফেযীদের ব্যাপারে সাবধান করলে কাঁচাল হয় না, আমানত আদায় করা হয়।
আলিমগণের বাইরে যারা আছে তারা আবেগপ্রবণ। এদের দ্বারা দীনের ক্ষতি ছাড়া লাভ কবে হয়েছে?

13/05/2024

আকীদায়ে তহাবির দারস - ২

28/04/2024

সন্তানকে দীনী ইলমের মানুষ করার ক্ষেত্রে আল্লাহর রহমতের পরে মায়েদের ভূমিকা বেশি।
ইমাম আহমাদ বলেন, আমার মা আমাকে কুরআন হিফয করিয়েছিলেন যখন আমার বয়স দশ বছর। তিনি আমাকে ফজরের সালাতের আগে জাগাতেন। বাগদাদের শীতের রাতে তিনি আমার জন্য ওজুর পানি গরম করে দিতেন। আমাকে কাপড় পরিয়ে দিতেন। তারপর তিনি তার কাপড় নিতেন। হিজাব পরিধান করে নিজেকে ঢেকে নিতেন। তারপর আমাকে নিয়ে মসজিদে যেতেন, কারণ মসজিদ আমাদের ঘর থেকে দূরে ছিল আর রাস্তা অন্ধকার ছিল।
ইমাম বুখারীর মা তার সন্তানকে নিয়ে অনুরূপ কষ্ট করেছেন।
ইমাম শাফেয়ীর মা ফিলিস্তিন থেকে বাচ্চাকে নিয়ে মক্কায় চলে আসেন।
এভাবেই যুগে যুগে মায়েদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টার ফলে আল্লাহ তাদের সন্তানদেরকে জগদ্বিখ্যাত মনীষায় পরিণত করেছেন।
বর্তমানে আমাদের সন্তানদের জন্য মায়েদের তেমন ভূমিকা কি দেখা যায়?!
হ্যাঁ, যতটুকু দেখা যায় অধিকাংশ মায়েরা তাদের সন্তানদেরকে দুনিয়াদার বানানোর জন্য ত্যাগ স্বীকার করে। অনেকের সন্তান বড় হতে থাকে বুয়াদের কাছে। কারণ তারা বাবাদের কাজে নিজেদের ব্যস্ত করতে শুরু করেছে।
আমি আল্লাহর কাছে দোআ করি তিনি যেন পিতাদেরকে তাদের কাজ আর মায়েদেরকে তাদের কাজ বুঝে নেয়ার তৌফিক দিন। আমীন।

Professor Dr. Abubakar Muhammad Zakaria

21/04/2024

সাবধান!
ঈমানী অবনতি আসে পর্যায়ক্রমে…
🔹 সুন্নাত-নফল ত্যাগ করার মাধ্যমে,
🔹 সালাতের পরের যিকিরগুলো ত্যাগ করার মাধ্যমে..
🔹 সকাল বিকালের যিকির ত্যাগ করার মাধ্যমে…
🔹 কুরআন তেলাওয়াত ত্যাগ করার মাধ্যমে…
এসবের পিছনে সাধারণত একটি যুক্তি বেশি কার্যকর, তা হচ্ছে, এখন সময় নাই বা সময় কম বা অন্য সময় করব..

আর এভাবে চলতে থাকলে একসময়
✅ ফরয সালাতের জামাতে হাযির হওয়া হয়ে যায় কঠিন।
✅ ফরয সালাত হয়ে যায় ভারী।
✅ এক সময় গুনাহগুলো হয়ে যায় স্বাভাবিক।

এ সব অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হলে মন থেকে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাইতে হবে।

শায়খ প্রফেসর ড. আবু বকর Abubakar Muhammad Zakaria হাফিযাহুল্লাহ।

18/04/2024

আরবীয় এক আলেমকে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, যদি আপনি আবার 20 বছর বয়সে ফিরে যেতেন তাহলে কী করতেন?
(উত্তর):
“যদি আমি আবার 20 বছর বয়সী হতাম, আমি ইবনে উসাইমিনের সমস্ত কাজের মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখতাম - যতক্ষণ না আমি সেগুলি পড়া, শোনা এবং সংক্ষিপ্ত করা শেষ করতাম।
আমি তাফসীর দিয়ে শুরু করতাম, এর উপকারিতা শুনতাম এবং এর স্বতন্ত্রতা উপভোগ করতাম।”

তারপর তিনি পরামর্শ দিয়ে বলেন,
আপনার সমস্ত শক্তি দিয়ে পড়ুন, কারণ এমন একটি সময় আসবে যখন আপনাকে বিভ্রান্তি এবং সমস্যায় নিপতিত করা দ্বারা পড়তে বাধা দেওয়া হবে। .. .. .. .. .. ..

তারপর তাকে প্রশ্ন করা হয়, তালেবে ইলম বা দীনী জ্ঞানের অন্বেষী কীভাবে তার ইলম অর্জন শুরু করবে?
উত্তরে তিনি বলেন,
* প্রথমে কুরআন মুখস্থ করবে।
* পরে - বা এটির সাথে -, আমি ইবন_উসাইমিনের বিভিন্ন ব্যাখ্যাগ্রন্থ নিম্নোক্তভাবে অধ্যয়ন করার পরামর্শ দিচ্ছি:
1- মতন মুখস্থ করা
2- ব্যাখ্যাটি কয়েকবার শোনা
3-ব্যাখ্যাটি কয়েকবার পড়া যতক্ষণ না বোঝা অর্জিত হয়
4- প্রতিটি পাঠ্যের ব্যাখ্যার সারসংক্ষেপ নিজে তৈরি করা। এর মাধ্যমে আপনি শাইখের লেখার সাথে জ্ঞানের আনন্দ এবং মাধুর্য খুঁজে পাবেন, আল্লাহ তার প্রতি রহম করুন।

তারপর উক্ত আলেম হাফিযাহুল্লাহ তালেবে ইলমদের জন্য ইবন উসাইমীনের গ্রন্থগুলোকে তিন ভাগে ভাগ করে দেন।
১- প্রথম স্তর, প্রাথমিক স্তরঃ
- শারহুল উসূল আস সালাসাহ।
- শারহু লুমআতিল ইতিক্বাদ।
- শারহু উমদাতিল আহকাম।
- কিতাবুল ইলম।
- শারহু হিলইয়াতু তালিবিল ইলম।
- শারহুল উসূল।
- শারহুল ওরাকাত।
- শারহুল আজুররুমিয়্যাহ
- শারহু উসূলিত তাফসীর।
- তাফসীর জুয আম্মা।
২- দ্বিতীয় স্তর, মাধ্যমিক স্তরঃ
- শারহু কিতাবিত তাওহীদ।
- শারহুল ওয়াসিতিয়্যাহ।
- আশ- শারহুল ওয়াজীয আলা বুলুগিল মারাম।
- আদ-দুরূসুল ফিকহিয়্যাহ।
- তাফসীরুল মুফাসসাল।
৩- তৃতীয় স্তরঃ বিশেষজ্ঞ পর্যায়েঃ
- তাফসীরুল কুরআন।
- শারহুন নূনিয়্যাহ।
- শারহুস সাফারীনিয়্যাহ।
- ফাতহু যিল জালালি ওয়াল ইকরাম।
- শারহুল মুমতি।
- শারহুল বুখারী ওয়া মুসলিম।
- শারহু আলফিয়াতি ইবন মালিক।

17/04/2024

শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহ বলেন,
“ইয়াহূদীদের যদি ইরাক বা অন্য কোনো জায়গায় রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা পায়, তাহলে রাফেযীরা হবে তাদের সবচেয়ে বড় সাহায্যকারী; কারণ তারা সর্বদা কাফির তথা মুশরিক, ইয়াহূদী, নাসারাদের সাথে অন্তরঙ্গ বন্ধুত্ব রাখে, আর তারা মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ও শত্রুতায় ইয়াহূদী, নাসারা ও মুশরিকদের সাহায্য করে থাকে।”
- মিনহাজুস সুন্নাহ ৩/৩৭৮।

17/04/2024

দীনী ইলম অর্জনের জন্য তিনটি জিনিস জরুরী:
1- ইলম অর্জনে ইখলাস বা নিষ্ঠা থাকা। কেবল আল্লাহ্কে খুশি করার জন্যই দীনী ইলম শেখা।
2- ইলম অর্জনে কোমলতা অবলম্বন করা। ছোট থেকে বড় ধারাবাহিকতা রক্ষা করা। শুরুতে কোনো বিষয়ের ছোট বই তারপর তারচেয়ে একটু বড় মাঝারি ধরনের বই, তারপর উক্ত বিষয়ে বড় বই পড়া।
3- ইলম অর্জনে লেগে থাকা। কখনো অর্জন থেকে বিরত না হওয়া। সময়, শ্রম, মেধা এ পথে পরিচালিত করা।

13/04/2024

সাবধান!
মঙ্গল অমঙ্গলের একমাত্র মালিক আল্লাহ।
আল্লাহ ব্যতীত অন্য কোনো কিছু থেকে/ কারো থেকে মঙ্গলের আশা করলে/ কোনো সৃষ্টির দিকে মঙ্গলের সম্পৃক্ততা করা হলে, তাদের থেকে মঙ্গল লাভের আশায় কিছু করা হলে ঈমান নামক অমূল্য সম্পদটি নষ্ট হয়ে যাবে।
ঈমান হারানোর সাথে সাথে আরো যা হারাবেন তা হচ্ছে,
১- আপনি কাফির ও মুশরিক হয়ে যাবেন।
২- আপনার আগের সালাতগুলো নষ্ট হয়ে যাবে।
৩- আপনি যদি আগে হজ করে থাকেন তবে হজটি বাতিল হয়ে যাবে।
৪- আপনার রাখা সাওমগুলো নষ্ট হয়ে গেছে।
৫- আপনার আগে করা যত ভালো কাজের সাওয়াব, যেমনঃ দান, সাদাকাহ, পিতা-মাতার সেবা, জনগণের জন্য অনুদান, মসজিদ-মাদরাসায় দান, এসব কিছু বিনষ্ট হয়ে যাবে।
৬- তাওবা করে দীনে ফিরে না আসলে আপনার স্ত্রী তালাক হয়ে যাবে।
৭- তাওবা করে দীনে ফিরে না এসে উক্ত অবস্থায় সন্তান হলে সেগুলো হারাম সন্তান হবে।
৮- তাওবা করে দীনে ফিরে না এসে এ অবস্থায় মারা গেলে আপনি অমুসলিম হিসাবে মারা গেলেন। আপনার জানাযা পড়া কোনো মুসলিমের জন্য জায়েয হবে না। মুসলিম কবরস্থানে দাফন করা যাবে না। আপনার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা কোনো মুসলিমের জন্য জায়েয হবে না।
৯- তাওবা করে দীনে ফিরে না এসে এ অবস্থায় আপনার কোনো মুসলিম আত্মীয় মারা গেলে আপনি তার ওয়ারিশ হবে না।
১০- তাওবা করে দীনে ফিরে না এসে এ অবস্থায় মারা গেলে সে কাউকে ওয়ারিশ করবে না, তার সম্পদ রাষ্ট্রীয় সম্পদ হয়ে যাবে।
👉বলতে পারেন যে, কুরআন ও হাদীস থেকে এ বক্তব্যের পক্ষে প্রমাণ দেন।
প্রমাণ হচ্ছে,
আল্লাহ তাআলা তার প্রিয় নবী মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে এ ঘোষণা করতে নির্দেশ দিয়েছেন,
(قُلْ لَا أَمْلِكُ لِنَفْسِي نَفْعًا وَلَا ضَرًّا إِلَّا مَا شَاءَ اللَّهُ)
সূরা আল আ’রাফঃ ১৮৮।
“হে নবী আপনি বলে দিন, আমি আমার নিজের জন্য কোনো মঙ্গল কিংবা অমঙ্গলের মালিক নই। তবে আল্লাহ যা চান (সেটাই শুধু হবে)”
সুতরাং ক্ষতি কিংবা মঙ্গলের মালিক কেবল আল্লাহ তাআলা।
আল্লাহ তাআলা মুশরিকদের চরিত্র সম্পর্কে বলেন,
(وَيَعْبُدُونَ مِنْ دُونِ اللَّهِ مَا لَا يَضُرُّهُمْ وَلَا يَنْفَعُهُمْ وَيَقُولُونَ هَؤُلَاءِ شُفَعَاؤُنَا عِنْدَ اللَّهِ)
সূরা ইউনুসঃ ১৮
“আর তারা আল্লাহ ব্যতীত এমন কিছুর ইবাদত করে যা তাদের অমঙ্গল কিংবা মঙ্গল করতে পারে না। আর তারা বলে এরা আমাদের জন্য সুপারিশকারী হবে আল্লাহর কাছ থেকে (তার ব্যবস্থা করবে)।”
সুতরাং মঙ্গল আর অমঙ্গলের মালিক একমাত্র আল্লাহ। সৃষ্টির কেউ কোনো মঙ্গল অমঙ্গলের মালিক নয়।
👉বলতে পারেন, আমরা তো সূর্য থেকে উপকৃত হচ্ছি, চাঁদ দ্বারা উপকৃত হচ্ছি, তাহলে সেটা কীভাবে?
উত্তরঃ তাদেরকে আল্লাহ যে উপকারের জন্য নিয়োজিত করেছেন সেটা আপনি অবশ্যই পাবেন, সেটা পেতে হলে সেগুলোর স্রষ্টার কাছে চাইবেন, তখন সেটা হবে ঈমান। আর তা না করে সেগুলোর কাছে চাইলে তা হবে শির্ক। আল্লাহ বলেন,
﴿وَمِنۡ ءَايَٰتِهِ ٱلَّيۡلُ وَٱلنَّهَارُ وَٱلشَّمۡسُ وَٱلۡقَمَرُۚ لَا تَسۡجُدُواْ لِلشَّمۡسِ وَلَا لِلۡقَمَرِ وَٱسۡجُدُواْۤ لِلَّهِۤ ٱلَّذِي خَلَقَهُنَّ إِن كُنتُمۡ إِيَّاهُ تَعۡبُدُونَ﴾ «فصلت 37»
“আর তার নিদর্শনের অন্যতম হচ্ছে, সূর্য ও চন্দ্র, তোমরা এগুলোর প্রতি বিনয়াবনত হয়ো না, বরং বিনয়াবনত হও এমন সত্তার জন্য যিনি এগুলো সৃষ্টি করেছেন।”
সূরা হা-মীম আস-সাজদাহঃ ৩৭।
👉 বলতে পারেন, মানুষ তো একে অন্যের উপকার করতে পারে সে হিসাবে আমরা কি মঙ্গল চাইতে পারি না?
উত্তরঃ
প্রথমত, মানুষ আপনাকে এমন কিছু দিতে পারে যেটার মালিকানা তার রয়েছে। কিন্তু প্রভাত, সূর্য, চাঁদ, ইত্যাদি কোনো কিছুর মালিক নয়, এগুলোকে আল্লাহ যে কাজে নিয়োজিত করেছেন সেটাই তারা করে। নিজেদের পক্ষ থেকে কিছু করার ক্ষমতা তাদের নেই।
দ্বিতীয়ত, এগুলো মানুষের মত জীবিত সত্তা নয় যে অন্যের ডাকে সাড়া দিবে। এরা কিছুই শুনতে পায় না।
তৃতীয়ত, জীবিত ও উপস্থিত মানুষও কাউকে কিছু দিতে হলে ইচ্ছা ও ক্ষমতা থাকতে হয়। তারপরও তাদের কাছে মঙ্গল বা অমঙ্গলের আশা করা শির্ক। তাদের হাতে থাকা কিছু দিতে হলে সেটাও আল্লাহ মঞ্জুর করতে হবে, আর সেটা দেয়ার জন্য তাদের ইচ্ছাশক্তি থাকতে হবে। যা বাতাস, আকাশ, চাঁদ, সূর্য ইত্যাদী প্রাকৃতিক বস্তুসমূহে নেই।
সুতরাং কোনোভাবেই মঙ্গল বা অমঙ্গল আল্লাহ ছাড়া কারো কাছে চাওয়া যাবে না।
আল্লাহ আমাদেরকে ঈমান সংরক্ষণ করার তৌফিক দিন। আমীন।

Professor Dr. Abubakar Muhammad Zakaria হাফিযাহুল্লাহ

26/03/2024

ঈমান কীসের নাম, এ মাসআলায় আহলুস সু্ন্নাত ওয়াল জামা‘আত ও অন্যান্যদের অবস্থান:
আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত তথা উম্মতের সালাফে সালেহীন, সাহাবায়ে কিরাম, তাবে‘ঈনে ‘ইযাম এবং যারা পথে চলেছেন আর যারা তাদের পদাঙ্ক অনুসরণ করেছেন এমন সকলের নিকট ঈমান বলতে যা বুঝায় তা হচ্ছে,
১- ঈমান কথা ও কাজের নাম।
২- ঈমানে মুখের কথা ও অন্তরের কথার সমন্বয় হবে। মুখের কথা হচ্ছে, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ উচ্চারণ, আর অন্তরের কথা এটার অর্থ, রুকন ও শর্তসমূহের বিশ্বাস লালন করা।
৩- ঈমান মুখের কাজ, অন্তরের কাজ ও অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কাজের মিশ্রণ। মুখের কাজ যেমন, সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ ইত্যাদির যিকির করা। আর অন্তরের কাজ যেমন তাওয়াক্কুল করা, ভয় পাওয়া, আশা করা, ভালোবাসা ইত্যাদি। আর অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের কাজ যেমন, সালাত, সাওম, হজ্জ, যাকাত আদায় ইত্যাদি।
৪- আর ঈমান আনুগত্য করলে বাড়ে, আর অবাধ্যতা করলে কমে যায়।
৫- যাবতীয় আনুগত্যের বিষয় ঈমানের অন্তর্ভুক্ত।
৬- ঈমানে ইনশাআল্লাহ বলা যাবে, কারণ সকল আমল করা সকলের পক্ষে সম্ভব নয়।
ইমাম লালেকাঈ তাঁর সনদসহ ইমাম বুখারী রাহিমাহুল্লাহ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন, আমি হাজার বা তার চেয়ে বেশি আলেম থেকে হাদীস লিখেছি, তবে আমি কেবল তাদের থেকেই হাদীস লিখেছি যারা বলে, ঈমান কথা ও কাজের নাম। তাদের থেকে হাদীস নিইনি যারা বলে ঈমান হচ্ছে কথার নাম। লালেকাঈ, শারহু উসূলি ই‘তিকাদি আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামা‘আহ ৩/৮৮৯, নং ১৫৯৭; ইবন হাজার এ বর্ণনাটিকে সহীহ বলেছেন, দেখুন, ফাতহুল বারী ১/৪৭।
ইমাম ইবনুল জাওযী রাহিমাহুল্লাহ ইমাম আহমাদ থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, সত্তর জন তাবে‘ঈ, মুসলিমগণের ইমাম, বিখ্যাত ফকীহগণ এ ব্যাপারে ইজমা‘ বা ঐকমত্য করেছেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে জিনিসের ওপর বিশ্বাস ও আমলের জন্য আমাদেরকে প্রদান করে দুনিয়া থেকে চলে গেছেন তন্মধ্যে রয়েছে, ঈমান কথা ও কাজের নাম, আনুগত্যের মাধ্যমে বৃদ্ধি পায়, আর অবাধ্যতার মাধ্যমে হ্রাস পায়। দেখুন, ইবনুল জাওযী, মানাকিবুল ইমাম আহমাদ পৃ. ১৭৬।
এ ব্যাপারে বাহ্যিক দৃষ্টিতে খারেজী ও মু‘তাযিলারা সালাফে সালেহীনের মতের অনুসরণ করেছে। কারণ তারা বলেছে, ঈমান আকীদা, কথা ও কাজের নাম। কিন্তু বাস্তবে তারা আহলুস সুন্নাত, সালাফে সালেহীনের বিরোধিতা করেছে কয়েকদিক দিয়ে, তা হচ্ছে, তারা বলে,
১- ঈমান একটি জিনিসের নাম। ঈমানের কোনো অঙ্গ বা অংশবিশেষ হয় না।
২- ঈমান বাড়ে না, আর ঈমান কমে না।
৩- ঈমানের কোনো এক অংশ চলে গেলে পুরোটা চলে যায়।
৪- ঈমানের মধ্যে ইনশাআল্লাহ বলা জায়েয নাই।
আর মুরজিয়া মতবাদের লোকদের সাথে আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের বাহ্যিকভাবে একটি মিল লক্ষ্য করা যায় যে, তারা উভয়েই কবীরা গুনাহকারীকে কাফির বলে না। কিন্তু বাস্তবে তাদের মধ্যে ব্যাপক পার্থক্য বিদ্যমান, যেমন,
১- ঈমান একটি জিনিসের নাম। ঈমানের কোনো অঙ্গ বা অংশবিশেষ হতে পারে না। যদিও সে একটি জিনিস নির্ধারণের ব্যাপারে তারা প্রচুর মতভেদ করেছে।
কারও কারও কাছে শুধু মা‘রিফাত তথা চেনা জানা (জাহমিয়্যাহ সম্প্রদায়)। এ কথার দাবী অনুযায়ী ফির‘আউন ঈমানদার।
কারও কারও নিকট অন্তরের বিশ্বাস (মুরজিয়া, আশআরী ও মাতুরিদী ফির্কা)। এ কথার দাবী অনুযায়ী ইবলিস ঈমানদার।
কারও কারও নিকট শুধু মৌখিক স্বীকৃতি (কাররামিয়্যাহ সম্প্রদায়)। এ কথার দাবী অনুযায়ী মুনাফিকরা ঈমানদার।
২- ঈমান বাড়েও না কমেও না।
৩- আমল বা কর্ম কখনো ঈমানের অংশ নয়।
৪- ঈমানের কোনো অংশ চলে যেতে পারে না।
৫- গুনাহ ঈমানের কোনো ক্ষতি করবে না। কেউ ঈমান নিয়ে মারা গেলে তার জন্য জান্নাত অবধারিত।
৬- মূল ঈমানের দিক থেকে মানুষরা সকলেই সমান।
৭- ঈমানের ব্যাপারে ইনশাআল্লাহ বলা জায়েয নাই।
এর বাইরে আরেকটি গোষ্ঠী রয়েছে, যাদের অবস্থান আহলুস সুন্নাতের অভ্যন্তরে ধরা হয়, তারা হচ্ছেন ‘মুরজিয়াতুল ফুক্বাহা’ বা ফকীহগণের মাঝে যারা ‘ইরজা’ মতবাদে বিশ্বাসী। ইমাম আবু হানীফা ও তার অনুসারীদেরকে এ গোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত ধরা হয়। তাদের মতে,
১- ঈমান আকীদা ও কথার নাম।
২- ঈমান বাড়েও না কমেও না।
৩- আমল ঈমানের মূল রুকন নয়, তবে তা শর্ত বা অতিরিক্ত রুকন।
৪- মূল ঈমানে মানুষরা সকলেই সমান।
৫- ঈমানে কোনো ইস্তেসনা ইনশাআল্লাহ বলা চলবে না।
ইবন আবিল ইয্য বলেন, ‘আমাদের অনেক আলেমের মত হচ্ছে তাই যা ইমাম ত্বাহাওয়ী বলেছেন, তা হচ্ছে ঈমান মুখের স্বীকৃতি ও অন্তরের বিশ্বাসের নাম। ইবন আবিল ইয্য আল-হানাফী, শারহুল আকীদাতিত ত্বাহাওয়িয়্যাহ ২/৪৫৯।
আবুল লাইস আস-সামারকান্দী আল-মাতুরিদী বলেন, “সুতরাং যে কেউ দৃঢ়ভাবে তা অন্তরে গ্রহণ করবে, আর তার স্বীকৃতি দিবে, সেই মুমিন। কারণ সে সঠিকটির উপর দৃঢ়তা অবলম্বন করেছে। কেননা ঈমান তো মুখের স্বীকৃতি ও অন্তরের বিশ্বাসেরই নাম। সুতরাং যে কেউ অন্তর দিয়ে সত্যায়ন করবে, মুখে স্বীকৃতি দিবে সেই মুমিন। দেখুন, আবুল লাইস আস-সামারকান্দী আল-মাতুরিদী, শারহুল ফিকহিল আকবার, পৃ. ৯; আরও দেখুন, আবু মানসূর আল-মাতুরিদী, আত-তাওহীদ পৃ. ৩৭৩-৩৮১।
এ হচ্ছে ঈমানের ব্যাপারে মানুষদের মূল মতাদর্শ। আলেমগণ এ ব্যাপারে প্রচুর গ্রন্থ লিপিবদ্ধ করেছেন। যেমন,
১- ইবন আবী শাইবাহ, আল-ঈমান।
২- আবু উবাইদ, আল-ঈমান।
৩- ইবন আবি আমর আল-আদনী, আল-ঈমান।
৪- আবু ইয়া‘লা, মাসায়িলুল ঈমান।
৫- শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ, আল-ঈমান, আল-ঈমান আওসাত্ব, আল-ঈমান আল-আসগার।
ঈমানের ব্যাপারে বিভন্ন ফির্কার মতভেদ বিস্তারিত জানতে দেখুন,
-ইবন বাত্তাহ, আল-ইবানাহ ২/৭৬০-৮৮১।
-আল-খাল্লাল, আস-সুন্নাহ ১/৫৬২।
-লালেকাঈ, শারহু উসূলি ই‘তিকাদি আহলিস সুন্নাতি ওয়াল জামা‘আহ ৩/৮০৯-৮৩০।
-আজুররী, আশ-শরী‘আহ পৃ. ১১১-১৩৬।
-সাবূনী, আকীদাতুস সালাফ পৃ. ৬৭-৭১।
-বাইহাক্বী, আল-ই‘তিক্বাদ ৭৯-৮৫।
-আল-বাকেল্লানী, আত-তামহীদ, পৃ. ৩৮৮-৩৯০।
-আল-বাকেল্লানী, আল-ইনসাফ পৃ. ৮৪-৮৯।
-আবু সা‘ঈদ আন-নাইসাপূরী, আল-গুনইয়াতু ফী উসূলিদদীন, পৃ. ১৭৩-১৭৫।
-বাগদাদী, উসূলিদ-দীন পৃ. ২৫২-২৫৩।
-ইবন হাযম, আল-উসূল ওয়াল ফুরূ‘ পৃ. ৮-১৫।
-ইবন তাইমিয়্যাহ, মাজমূ‘আতুর রাসায়িল ওয়াল মাসায়িল ৩/৮।
-ইবন আবিল ইয্য আল-হানাফী, শারহুল আকীদাতিত ত্বাহাওয়িয়্যাহ ২/৪৫৯-৪৮৭।
-ইবন হাজার, ফাতহুল বারী ১/৪৬-৪৭।
-আইনী, উমদাতুল কারী ১/১০২-১১১।
-সাফারীনী, লাওয়ামি‘উল আনওয়ার ১/৪০৩-৪২৬।
- আল-হাফেয আল-হেকামী, মা‘আরিজুল কবুল ২/১৭, ৪৫০-৪০৮।

11/03/2024

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, তোমাদের পূর্ববর্তী জাতীদের মধ্য হতে এক লোক একটি মরা মানুষের মাথার খুলির পাশ দিয়ে যাচ্ছিল, সে খুলিটির দিকে গভীর দৃষ্টিতে তাকিয়ে নিজের মনে কিছু কথা বলল, তারপর বলল, হে রব্ব, আপনি তো আপনিই আর আমি তো আমিই। আপনি বারবার ক্ষমা নিয়ে প্রত্যাবর্তন করেন আর আমি বারবার গুনাহ নিয়ে প্রত্যাবর্তন করি। আপনি ক্ষমা করতে অভ্যস্ত আর আমি গুনাহ করতে অভ্যস্ত। অতঃপর লোকটি সাজদায় পড়ে গেল। তখন তাকে জানানো হলো, তোমার মাথা উঠাও, তুমি গুনাহ নিয়ে এসেছ আর আমি ক্ষমা নিয়ে এসেছি।অতঃপর লোকটি তার মাথা উঠালো ও তাকে ক্ষমা করে দেয়া হলো।
- সিলসিলা সহীহাহ ৩২৩১।

31/01/2024

আবু হুরাইরা (রা) বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ) বলেছেন

“যদি কয়েকজন মানুষ কোথাও একত্রে বসে কিন্তু সে বৈঠকে তারা আল্লাহর যিকির না করে তবে তা তাদের জন্য ক্ষতিকর হবে। যদি কোনো মানুষ সামান্য পরিমাণও হাঁটে এবং হাঁটার মধ্যে সে আল্লাহর যিকির না করে, তাহলে তা তার জন্য ক্ষতিকর হবে। যদি কোনো মানুষ বিছানায় শোয় এবং শোয়া অবস্থায় আল্লাহর যিকির না করে তাহলে তা তার জন্য ক্ষতিকর হবে।”

হাইসামী হাদীসটির সনদ সহীহ বলে উল্লেখ করেছেন।

সহীহ ইবনু হিব্বান ৩/১৩৩, মাওয়ারিদুয যামআন ৭/৩১৭-৩২২, নাসাঈ, আস-সুনানুল কুবরা ৬/১০৭, বাইহাকী, শু’আবুল ঈমান ১/৪০৩, নাসাঈ, আমালুল ইয়াওমি, পৃ. ৩১২, মাজমাউয যাওয়াইদ ১০/৮০।

30/01/2024

দুনিয়ার ইতিহাসে স্থায়ীভাবে জায়গা করে কী লাভ যদি আপনি আখেরাতে জান্নাতে স্থায়ীভাবে জায়গা করে নিতে না পারেন?
দুনিয়ায় কোনো জনপদের রাস্তা আপনার নামে হয়ে কী লাভ যদি আপনি আখেরাতের জান্নাতের রাস্তা পার হওয়ার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলেন?
দুনিয়ার কোনো জায়গায় আপনার মূর্তি স্থাপন করে কী লাভ যদি আখেরাতে সেটা আপনার জান্নাতে যাওয়ার পথে বাঁধা হয়ে পড়ে?
দুনিয়ার আপনার প্রাসাদসম বাড়ী থেকে কী লাভ যদি মৃত্যুর পরে আপনি সাড়ে তিন হাত বাড়ীতে শান্তিতে থাকতে না পারেন?
দুনিয়াতে প্রসিদ্ধি পেয়ে কী লাভ যদি চিরস্থায়ী জীবনে আপনি জান্নাতে প্রবেশ না করতে পারার অপমানে জর্জরিত হয়ে যান?
দুনিয়াতে গর্ব অহংকারের জীবন যাপন করে কী লাভ যদি আখেরাতে আপনি তার শাস্তিস্বরূপ হাশরের মাঠে পদতলে পিষ্ট হতে থাকবেন?
দুনিয়াতে এত সুন্দর নাদুস নুদুস চেহারা দিয়ে কী লাভ করবেন যদি আখেরাতে সে চেহারা জাহান্নামের আগুনে দগ্ধ করাতে বাধ্য হন?

23/01/2024

যারা ট্রান্স*জেন্ডার হওয়া জায়েয মনে করবে তারা কা*ফের,
যারা এ আইনের প্রস্তাব করবে,পাশ করবে তারাও কা*ফের!
🎙️প্রফেসর ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া হাফিয্বাহুল্লাহ্

Photos from Professor Dr. Abubakar Muhammad Zakaria's post 15/01/2024

আলহামদুলিল্লাহ, আবু বকর আস-সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু আনহু মাদরাসায় শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণের মাধ্যমে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মহান আল্লাহ কবুল করুন, আমিন।

11/01/2024

মুতূন কি? মদীনা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির জন্য কি মুতূন মুখস্থ করা লাগে? আবু বকর আস-সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু আনহু মাদরাসায় ছোট থেকে শিক্ষার্থীদের মুতূন মুখস্থ করানো হবে ইনশা আল্লাহ।

07/01/2024

চার বছর আগের পুরাতন স্মৃতি। কিন্তু দাওয়াতের পথে উৎসাহব্যঞ্জক একটি কাজ। যদিও মিশলাহ কোনো টিভি অনুষ্ঠানের বাধ্য-বাধকতা না থাকলে আমি সাধারণত পরি না। মিশলাহ বড় আলেমদের বেশি মানায়, আমাদেরকে তা অহংকারী বানাতে পারে..
গত ২৫/ ১২/২০১৯ মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় গিয়েছিলাম। তারা সাদর সম্ভাষন পর্ব শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোগ্রাম খচিত একটি “আবায়া” বা মিশলাহ গিফট প্রদান করে।

Photos from Professor Dr. Abubakar Muhammad Zakaria's post 28/12/2023

আলহামদুলিল্লাহ, আবু বকর আস-সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু আনহু মাদরাসায় শায়খ প্রফেসর ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া হাফিযাহুল্লাহ নিজে উপস্থিত থেকে ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের ভাইভা নিচ্ছেন।
আপনার প্রিয় সন্তানকে আহলুল ইলমদের সহবতে রেখে যোগ্য আলিম করে গড়ে তুলুন।

27/12/2023

“সঠিক বুঝ এবং সৎ নিয়ত হলো আল্লাহ্‌র সবচেয়ে বড় নেয়ামত যা তিনি তাঁর বান্দাকে দিয়েছেন। প্রকৃতপক্ষে ইসলামের পর কোনো বান্দাকে এর চেয়ে উত্তম বা সম্মানিত কিছু দেওয়া হয়নি। বরং এ দুটি হলো ইসলামের দুটি স্তম্ভ এবং তাদের উপরই ইসলামের অবস্থান। যে দুটির মাধ্যমে একজন বান্দা (আল্লাহর) ক্রোধান্বিতদের পথ থেকে নিরাপদ থাকে, যাদের উদ্দেশ্য কলুষিত, আরো নিরাপদ থাকে বিপথগামীদের পথ থেকে, যাদের বোধশক্তি নষ্ট হয়েছিল।
আর যাদের সঠিক বোধগম্যতা রয়েছে এবং যাদের নিয়ত ভাল, তারা নেয়ামতপ্রাপ্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে ধন্য। তারাই হলো সরল পথের লোক, প্রত্যেক সালাতে যাদের পথে পরিচালিত করার জন্য রব্বের কাছে দোআ করতে আমাদেরকে আদেশ করা হয়েছে।
- সঠিক বুঝ এমন এক আলো যার মাধ্যমে একজন লোক স্বচ্চ-কলুষিত, সত্য-মিথ্যা, হেদায়েত-গোমরাহী, ভ্রান্ত ও নির্ভুল পথের মধ্যে পার্থক্য করার যোগ্যতা লাভ করে।
- আর সৎ উদ্দেশ্য এমন এক নূর, যা একজন লোককে সত্যের অন্বেষণ এবং গোপনে ও প্রকাশ্যে রব্বের তাকওয়া অবলম্বন করতে সাহায্য করে। আর এটি কারো মধ্যে থাকলে তা তাকে কামনা-বাসনার অনুসরণের উপাদান কেটে দেয়, পার্থিব জীবনকে প্রাধান্য দেওয়া থেকে বাঁচায়, সৃষ্টির প্রশংসা কামনা করা এবং তাকওয়া পরিত্যাগ করা থেকে রক্ষা করে।”
# ইমাম ইবনুল কাইয়্যেম, ই’লামুল মুওয়াক্কে’ঈন ১/৭০।

25/12/2023

আবু বকর আস-সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু আনহু মাদরাসা আলিম তৈরির প্রজেক্ট।

শায়খ ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া হাফিযাহুল্লাহ।

25/12/2023

যুবক দা’ঈদের মাঝে কয়েকটি জিনিস প্রবল,
১) নিজের বুঝকে সেরা মনে করা।
২) কুদওয়া বা অনুসরনীয় ব্যক্তিত্ব খোঁজে ভুল করা।
৩) জ্ঞান অর্জন হয়ে গেছে মনে করা।
৪) প্রসিদ্ধি লাভের চেষ্টা করা।

প্রফেসর ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া হাফিযাহুল্লাহ।

22/12/2023

আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) বলেন, ‘একদা আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর সাথে হাঁটছিলাম। তখন তাঁর গায়ে একখানা গাঢ় পাড়যুক্ত নাজরানী চাদর ছিল। এক বেদুঈন তাঁকে পেয়ে চাদর ধরে সজোরে টান দিল। আনাস বলেন, আমি নবী করীম (সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাঁধের উপর তাকিয়ে দেখলাম যে, জোরে চাদর খানা টানার কারণে তাঁর কাঁধে চাদরের পাড়ের দাগ বসে গেছে। তারপর বেদুঈনটি বলল, হে মুহাম্মাদ! তোমার কাছে আল্লাহর দেয়া যে সম্পদ আছে, তা থেকে আমাকে দেয়ার জন্য আদেশ কর। তখন নবী করীম (সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) তার দিকে তাকিয়ে হেসে ফেললেন এবং তাকে কিছু দান করার জন্য আদেশ করলেন’।

বুখারী হা/৬০৮৮, ৩১৪৯, ৫৮০৯; মিশকাত হা/৪১৫০।

একবার এক বেদুঈন মসজিদে প্রস্রাব করে দিল। লোকেরা উঠে তার দিকে গেল। রাসূলুল্লাহ (সাল্লল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বললেন, তার প্রস্রাব করায় বাধা দিও না। অতঃপর তিনি এক বালতি পানি আনালেন এবং তাতে ঢেলে দিলেন’।

বুখারী হা/৬০২৫; মুসলিম হা/২৮৪; মিশকাত হা/৪৯২।

21/12/2023

যুগের আবর্তনে সমকালীন বিশ্বেও আমরা দেখতে পাই মানুষের জীবন নিয়ে গন্তব্যহীনতা, উদ্দেশ্যহীনতা, উদাসীনতা; দেখতে পাই ভুল উদ্দেশ্যে ও ভুল গন্তব্যে বহুদূর যাওয়া; দেখতে পাই উদ্দেশ্য সচেতন হয়েও সঠিক পথে যাওয়ার প্রত্যয় ও যোগ্যতা না থাকা। এ সবের মূলে রয়েছে স্রষ্টাপ্রদত্ত সেই তেলাওয়াত-জ্ঞান-শিক্ষা-তাযকিয়ার অভাব: যার মূল উৎস আল্লাহর বাণী কুরআন ও রাসূলের বিশুদ্ধ সুন্নাহ। আর এর সমাধানও রয়েছে সেই পথেই, যে পথে সালাফে-সালেহীন ও তাদের প্রকৃত অনুসারীরা গড়ে ওঠে বিশ্ব জুড়ে আদর্শ হয়েছিলেন।

20/12/2023

দেশি-বিদেশি শ্রেষ্ঠ ইসলামী শিক্ষায়তনগুলোর পাঠ্যক্রম সমন্বয় করে এক ভিন্নধর্মী এক কারিকুলাম ও- সিলেবাস নিয়ে কাজ করছে আবু বকর আস-সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু আনহু মাদরাসা, আপনার সন্তানকে যোগ্য, দক্ষ ও মুত্তাকী আলেম হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্য নিয়ে। এ-জন্য প্রয়োজন আপনার দু'আ ও সাহায্য; প্রয়োজন পরিশুদ্ধ নিয়ত নিয়ে আপনার সন্তানের শিক্ষা ও তারবিয়াতের জন্য সবচেয়ে কল্যাণকর পথ অবলম্বন।

20/12/2023

আত-তাদমুরিয়্যাহ (দারস-২৫)
ইবন তাইমিয়্যাহ রহিমাহুল্লাহ
আল ফিকহ ও আকীদা বিভাগ (২য় বর্ষ)
আস সুন্নাহ ট্রাস্ট, ঝিনাইদহ।

20/12/2023
19/12/2023

সময়ের এ ক্রান্তিলগ্নে মূল সমস্যা তথ্যের বা প্রযুক্তির অভাব নয়, সঠিক ঈমান ও বিশুদ্ধ মূল্যবোধের অবক্ষয়। সমাধানেরও মূল উপায় একটিই: এমন এক প্রজন্ম গড়ে তোলা, যারা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের সে পথের পথিক নয় শুধু বরং পথপ্রদর্শক হবে, আহ্বানকারী হবে। যারা দীনের ধারক বাহক হবে, একবিংশ শতাব্দীর নতুন ভবিষ্যত পৃথিবীতে যারা দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে পদচিহ্ন রেখে যেতে পারবে।

19/12/2023

আত-তাদমুরিয়্যাহ (দারস-২৪)
ইবন তাইমিয়্যাহ রহিমাহুল্লাহ
আল ফিকহ ও আকীদা বিভাগ (২য় বর্ষ)
আস সুন্নাহ ট্রাস্ট, ঝিনাইদহ।

17/12/2023

আমাদের সন্তানকে আলোকিত প্রজন্মের একজন করে গড়ে তুলতে প্রয়োজন সঠিক শিক্ষা: বিশুদ্ধ তারবিয়াত ও ইলম। কোমলমতি শিশু থেকে কিশোর হয়ে যুবক হয় যে বয়সটিতে, এ সময়টুকুর সঠিক দিকনির্দেশনা সবচেয়ে জরুরি।

যোগ্য মুত্তাকী আলেম এক প্রজন্ম গড়ার সে উদ্দেশ্যে শায়খ ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া হাফিযাহুল্লাহ প্রতিষ্ঠিত করেছেন আবু বকর আস-সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু 'আনহু মাদরাসা, কুমিল্লা।

13/10/2023

সুলতান সালাহুদ্দীন আইয়্যূবী ও আশআরী মতবাদ

সুলতান সালাহুদ্দীন আইয়্যূবী রাহিমাহুল্লাহ আশআরী মতবাদের ওপর বড় হয়েছিলেন এবং এ মতবাদের ওপরই তিনি সারা জীবন অতিবাহিত করেছেন এটিই অধিকাংশ আলেমের মত।
সুলতান সালাহুদ্দীন আইয়্যূবী রাহিমাহুল্লাহ ছিলেন মুসলিম বীর, মহান নেতা, যিনি মিসর থেকে বাতেনী শিয়া ফির্কার লোকদেরকে সমূলে উৎপাটন করেছিলেন, তাদের মতবাদকে গুড়িয়ে দিয়েছিলেন। আল-আযহার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিয়াদের উৎখাত করে সে জায়গায় আশ‘আরীদের কিতাব দিয়ে ইলমী হালাকা চালু করেছিলেন।
সুলতান সালাহুদ্দীন আইয়্যূবী রাহিমাহুল্লাহ সম্পর্কে এটিই বিশুদ্ধ যে, তিনি শাফে‘ঈ মাযহাবের অনুসারী ছিলেন, আকীদাতে আশআরী ছিলেন। ইমাম সুয়ূত্বী রাহিমাহুল্লাহ তার ‘আল-ওয়াসায়িল ইলা মুসামারাতিল আওয়ায়িল’ গ্রন্থে (প. ১৫) বলেন, ‘সুলতান সালাহুদ্দীন আইয়্যূবী রাহিমাহুল্লাহ মুআযযিনদেরকে নির্দেশ দিতেন যেন আশআরী আকীদা প্রচার-প্রসার করে, সেটা তার সময় থেকে আজ পর্যন্ত চালু আছে।’ [অর্থাৎ সুয়ূত্বীর সময় ৯১১ পর্যন্ত চালু ছিল]
শাইখ মুহাম্মাদ ইবন ‘আল্লান আস-সিদ্দীকী, আশ-শাফে‘ঈ বলেন, ‘অতঃপর যখন সুলতান সালাহুদ্দীন ইবন আইয়্যূব ক্ষমতায় গেলেন, তিনি মানুষদেরকে আশ‘আরী আকীদা গ্রহণে বাধ্য করলেন, মুআযযিনদের নির্দেশ দিলেন যেন আশআরী আকীদা প্রচার-প্রসার করে, যা তখন ‘মুর্শিদিয়া’ নামে খ্যাত ছিল। তারা সেটা প্রতি রাতেই করতেন’।
সুলতান সালাহুদ্দীন রাহিমাহুল্লাহ এ আকীদায় থাকার বিষয়টি নিয়ে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই; কারণ তিনি এ আকীদার ওপর বড় হয়েছিলেন, যখন তিনি দামেশকে সুলতান নূরুদ্দীন ইবন যিঙ্কী এর অধীন চাকুরী করতেন। সে সময় ছোট বয়সে সুলতান সালাহুদ্দীন সে আকীদার গ্রন্থটি মুখস্থ করেছিলেন, যা তার জন্য আবুল মা‘আলী মাস‘ঊদ ইবন মুহাম্মাদ ইবন মাস‘উদ আন-নাইসাপূরী লিখেছিলেন আর তিনি তা তৎকালীন শিশুদের মুখস্থ করাতেন।
বস্তুত এভাবেই বনু আইয়্যূব এর সকল সুলতানরা আশআরী আকীদার ধারক-বাহক হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করে আর তাদের পুরো যুগ ধরেই তা চলতে থাকে, পরবর্তীতে মামলুকরাও ওয়ারিস সূত্রে তা প্রাপ্ত হয়, তারপর বনী উসমান তথা উসমানীয় খিলাফতের লোকেরাও সেটাকেই আকীদা হিসেবে গ্রহণ করে নেয়।
তাদের মধ্যে প্রসিদ্ধ ছিলেন, আল-মালেক আল-কামিল আল-আইয়্যূবী, যিনি দিমইয়াত্ব থেকে ক্রুসেডারদের হটাতে সক্ষম হয়েছিলেন। অনুরূপভাবে সুলতান আল-আশরাফ খলীল ইবন মানসূর সাইফুদ্দীন ক্বালাঊন, যিনি ক্রুসেডারদেরকে পুরো শাম দেশ থেকে বিতাড়িত করেছিলেন। বরং সকল মামলুক শাসকরাই এ আকীদায় বিশ্বাস করতেন। এমনকি উসমানীয় খিলাফতের বিখ্যাত সুলতান ‘মুহাম্মাদ আল-ফাতেহ’ আল-উসমানী, তিনিও একই আকীদা বিশ্বাস ধারণ করতেন।
উপরোক্ত আলোচনা থেকে বুঝা গেল যে সুলতান সালাহুদ্দীন আশ‘আরী মতবাদের লোক ছিলেন। তখনকার সময়ে মিসর ও সিরিয়ায় এ আকীদাই প্রসিদ্ধ ছিল; তারপরও ইমাম ইবন কুদামাহ রাহিমাহুল্লাহ তাাদের সাথে যুদ্ধ করতেন। আর তাদেরকে উদ্দেশ্য করেই তার ‘লুম‘আতুল ই‘তিক্বাদ’ গ্রন্থটি রচনা করেন।
তবে কোনো কোনো গবেষক বলেন, সুলতান সালাহুদ্দীন আইয়্যূবী রাহিমাহুল্লাহ আশআরী আকীদার ছিলেন না। কারণ তিনি কালাম শাস্ত্রের কিতাবাদী জ্বালিয়ে দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন।
বস্তুত এটি কোনো প্রমাণ নয়; কারণ তিনি কালাম শাস্ত্রে যারা বাড়াবাড়ি করে দার্শনিকদের মত সীমালঙ্গন করত তাদের পুস্তুকাদি জ্বালিয়ে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন, সাধারণ আশআরী আকীদার কিতাব নয়।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে, যদি সুলতান সালাহুদ্দীন আইয়্যূবী রাহিমাহুল্লাহ তিনি আশ‘আরী আকীদার লোক ছিলেন সেটা প্রমাণিত হয়, আর তার সাথে অনেক আলেম যুদ্ধ করেছেন সেটাও সাব্যস্ত হয়, অনুরূপভাবে আল্লাহ তা‘আলা তাকে বিজয় দিয়েছেন সেটাও সর্বজনবিদিত। তাহলে তা দ্বারা কি এটা প্রমাণিত হয় না যে আশ‘আরী মতবাদ হক্ব?
বস্তুত এখানেই হচ্ছে যত বুঝার ভুল।
প্রথমত: সালাহুদ্দীন আইয়্যূবী রাহিমাহুল্লাহ নিঃসন্দেহে একজন বীর মুজাহিদ ছিলেন, যুদ্ধের দিকপাল ছিলেন, কিন্তু তিনি আলেমগণের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন না। আর বাদশাহদের কর্মকাণ্ড দিয়ে শার‘ঈ কাজের দলীল নেয়া যায় না। এর প্রমাণ হচ্ছে,
১- ‘আব্বাসী খলীফা মু‘তাসিম’ তিনি বিখ্যাত ‘আম্মুরিয়া’ বিজয়ের বীরপুরুষ ও খৃষ্টানদের পতাকা অবনমিতকারী ছিলেন। কিন্তু তিনি ছিলেন মু‘তাযিলা আকীদার প্রচার-প্রসারকারী। আল্লাহ তাকে বিজয় দিয়েছেন। সুতরাং তার বিজয়ের ওপর নির্ভর করে মু‘তাযিলা মতবাদকে সত্য বলার বিষয়টি কি আশ‘আরীরা মেনে নিবে?
বরং আমরা মু‘তাযিলাদেরকে আশ‘আরীদের থেকে বেশি বিবেকবান দেখতে পাই; কারণ তারা আব্বাসী খলীফা মামুন তাদের পক্ষে থাকাকে হকের মানদণ্ড নির্ণয় করেনি।
২- সুলতান তুগরিলবিক, যিনি নাসারাদের পর্যুদস্ত করেছিলেন। আল্লাহ তাকে নাসারাদের উপর বিশাল বিজয় দিয়েছিলেন; কিন্তু আমরা দেখতে পাই তৎকালীন আশআরীরা তাকে মিম্বরে উঠে লা‘নত করতো।
৩- আল-মালিক আল-আশরাফ ইবন আল-মালিক আল-আদেল, যিনি সুলতান সালাহুদ্দীন এর ভাই ছিলেন, তিনি আশ‘আরী মতবাদ বিরোধী ছিলেন। আল্লাহ তা‘আলা তাকেও অনেক বিজয় দিয়েছিলেন।
৪- সুলতান মুহাম্মাদ আল-ফাতিহ, যিনি মাতুরিদী ও সুফী হিসেবে বিখ্যাত ছিলেন, তিনি আশ‘আরী মতবাদের লোক ছিলেন না, তাহলে তার বিজয়কে কী হিসেবে নেয়া হবে?
বস্তুত বিজয় লাভের বিষয়টি বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে; সেটাকে হকের মানদণ্ড নির্ধারণ করা যাবে না। কখনও কখনও ঈমান ও তাকওয়ার কারণে বিজয় আসে, যেমন রাসূল ও সাহাবায়ে কিরামের যুগে। কখনও কখনও যুলুমকে প্রতিরোধ করার জন্য আল্লাহ তা‘আলা মাযলুমের পক্ষ নিয়ে কাউকে দিয়ে বিজয়ের ব্যবস্থা করেন। কখনও কখনও যুদ্ধের সেনাপতির ইখলাস ও তার সাথীদের সততা ও ঐকান্তিক চাওয়াকে মূল্যায়ণ করে আল্লাহ তা‘আলা বিজয় দান করেন, সুতরাং সামরিক বিজয় লাভ করলেই সেটাকে বিশুদ্ধ আকীদার মানদণ্ড নির্ধারণ করার কোনো সুযোগ নেই। যদি তাই হতো তবে নবী-রাসূল ও সাহাবায়ে কিরামের সময়ে তাদের সকল যুদ্ধে জয়লাভ করা অবশ্যম্ভাবী হতো; কিন্তু তাদের যুদ্ধের মাঝেও বিভিন্ন কারণে বিপর্যয় এসেছিল।
দ্বিতীয়ত: সালাহুদ্দীন আইয়্যূবীর সাথে আলেমগণ যুদ্ধ করেছেন, এর দ্বারাও প্রমাণিত হয় না যে সালাহুদ্দীন আইয়্যূবী রাহিমাহুল্লাহর সম্পূর্ণ আকীদা বিশুদ্ধ ছিল; কারণ এখানে আমাদেরকে জানা দরকার, আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা‘আত তাদের শাসকদের সাথে কী আচরণ করেন।
আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের আলেমগণ তাদের শাসকের সাথে ভারসাম্যপূর্ণ আচরণ করেন; তাদের সাথে যুদ্ধ করেন, তাদের ঝাণ্ডার নিচে একত্রিত হয়ে তাদের চেয়েও খারাপ আকীদার লোকদের বিরুদ্ধে লড়াই করেন। তাদের শ্রেষ্ঠত্ব ও নেতৃত্বকে মেনে নেন। তবে তারা মনে করেন যে এরা যুদ্ধের জন্য যথাযথ মানুষ হলেও তারা ইলম ও বুঝের ক্ষেত্রে অপূর্ণ; তাদের থেকে ইলম ও সমঝ নেয়ার চিন্তা তারা করে না। তারা এদের অধীন যুদ্ধ করার কারণ কখনও কখনও এটাও হতে পারে যে, এসব আলেমদের অনেকের কাছেই বিশুদ্ধ আকীদার অনেক কিছু স্পষ্ট ছিল না। আবার কখনও কখনও তারা আল্লাহর পথের লড়াই বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করে তাদের সাথে অংশগ্রহণ করেছেন। আবার কখনও কখনও তারা চিন্তা করেছেন দীনী স্বার্থের কথা; কারণ কাফিরদের কুফরীর বড় বিপদের সামনে মুসলিমদের বিভিন্ন ফির্কার ছোট বিপদকে তারা তাদের সাথে অবস্থান করে সংশোধনযোগ্য মনে করেছিলেন।
তাছাড়া পূর্বোক্ত আলেমগণের একটি বিরাট গোষ্ঠী নিজেদেরকে আশ‘আরী মতবাদের দিকে সম্পৃক্ত করতেন, কিন্তু তারা সালাফে সালেহীনের আকীদার বিরোধী ছিলেন না। বরং তারা ইমাম আশ‘আরীকে ইমাম আহমাদ ইবন হাম্বলের মতাদর্শের অনুসারীই মনে করতেন। তারা মনে করতেন ইমাম আশআরী যেহেতু ইমাম আহমাদের মতই প্রচার করেন, সেহেতু তার দিকে নিজেদের সম্পৃক্ত করার অর্থই হচ্ছে হকের দিকে নিজেদের সম্পৃক্ত করা। সেজন্য হতে পারে সুলতান সালাহুদ্দীন রাহিমাহুল্লাহ আশ‘আরী আকীদার দিকে নিজেকে সম্পৃক্ত করতেন আর অন্যান্য অনেক আলেমও নিজেদের আশ‘আরী বলতেন, কিন্তু তারা আকীদায় আশ‘আরীদের যেসব ভুল রয়েছে সেগুলোতে বিশুদ্ধ মতই গ্রহণ করতেন। যার বড় দৃষ্টান্ত হচ্ছে ইমাম বাইহাক্বী ও ইমাম ইবন হাজার রাহিমাহুমাল্লাহ। তাদের সময়ে তারা যেসব মাসআলায় ইজতিহাদ করেছেন, সেখানে যদি ভুলও হয়ে থাকে, যেহেতু তাদেরকে সেটা সংশোধন করার জন্য কেউ দাঁড়িয়েছে তেমন প্রমাণ আমাদের কাছে নেই, তাই আমরা তাদেরকে মা‘যূর মনে করব। আর পূর্ববর্তী আলেমগণ যারা কোনো মতবাদের সাথে সম্পৃক্ত হয়ে মারা গেছেন তাদের ব্যাপারে এটিই আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের মানহাজ।
শাইখুল ইসলাম ইবন তাইমিয়্যাহ রাহিমাহুল্লাহ বলেন, ‘‘যারাই উক্ত আকীদার কোনো কিছুতে বিরোধিতা করে (দুনিয়া থেকে চলে গেছে) তারাই অত্যাবশ্যকরূপে ধ্বংসপ্রাপ্ত হবে এমনটি নয়। কারণ এ ব্যাপারে বিরোধে লিপ্ত ব্যক্তি হতে পারেন একজন মুজতাহিদ, তিনি ইজতিহাদ করে ভুল করেছে, যার গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করবেন। অথবা হতে পারে তার কাছে এ ব্যাপারে এমন জ্ঞান পৌঁছেনি, যা প্রমাণ হিসেবে তার বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারে। অথবা হতে পারে তার এমনসব নেক আমল রয়েছে, যার কারণে তার এসব গুনাহ ক্ষমা হয়ে যাবে। সুতরাং ব্যাখ্যাকারী, তাওবাহকারী, নেক আমলের মাধ্যমে গুনাহ নিশ্চিহ্ণকারী ও ক্ষমাপ্রাপ্ত লোক যদি আল্লাহর পক্ষ থেকে শাস্তির ধমকি দেয়া ভাষ্যসমূহের অন্তর্ভুক্ত হতে বাধ্য না হয়, তাহলে এরাও ধমকির অধীন না হওয়ার বিষয়টি আরও বেশি প্রমাণিত।’ [মাজমূ‘ ফাতাওয়া: ৩/১৭৯]
সুতরাং বুঝা গেল যে, অমুক শাসক অমুক মতবাদের লোক ছিলেন, সেটা দিয়ে উক্ত মতবাদ হক্ব হওয়ার পক্ষে দলীল দেয়া যাবে না। কারণ এসব শাসক সৃষ্টির জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে দলীল নয়, বরং দলীল হবে আলেমগণ ও তাদের পক্ষ থেকে প্রদান করা দলীল।
শাসকরা সাধারণত তাদের একান্ত মানুষদের কথা ও পরামর্শ অনুসারে চলেন, যেমনটি আমরা দেখতে পাই খলীফা মামুনকে, তিনি আহমাদ ইবন আবী দুআদ প্রমুখের কথা অনুসারে চলতেন। ঠিক একই পদ্ধতিতে সালাহুদ্দীন আল-আইয়্যূবী রাহিমাহুল্লাহ নিজে যা কিছু ছোট বয়সে জেনেছেন, যার ওপর বড় হয়েছেন, যাদের সাথে তার সকাল সন্ধা উঠা-বসা ছিল তারা সকলেই ছিলেন আশআরী মতবাদের ধারক ও বাহক। সে হিসেবে তিনি তাদের মতবাদে থাকার বিষয়টি স্বাভাবিক। কিন্তু সেটাকে আশ‘আরী মতবাদের হক হওয়ার প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করার সুযোগ কোথায়। এটি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য বিষয় হতে পারে না। দেখার বিষয় হবে, কুরআন, সুন্নাহ ও সাহাবায়ে কিরামের মানহাজের সাথে একাত্মতা ও মিল। এটিই হবে হক্বের মানদণ্ড। এর ভিত্তিতেই শুদ্ধ কিংবা ভুল হওয়া নির্ভর করবে। আর জিহাদ, সেটি হতে পারে কোনো খারেজী লোকের দ্বারা সম্পন্ন হয়েছে, অথবা কোনো মু‘তাযিলী লোক করেছে, অথবা কোনো সুফী ব্যক্তি নেতৃত্ব দিয়েছে, অথবা হতে পারে আশ‘আরী ব্যক্তি হাল ধরেছে, অথবা কোনো মাতুরিদী ব্যক্তির হাতে তা সম্পন্ন হয়েছে। আবার হতে পারে সত্যিকারের আহলুস সুন্নাত ওয়াল জামা‘আতের লোকের মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা তা দাঁড় করিয়েছেন।
‘আল্লাহ আমাদের বুঝার তৌফিক দান করুন’।

🖋️প্রফেসর ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া।

Want your school to be the top-listed School/college in Tongi?
Click here to claim your Sponsored Listing.

Videos (show all)

আকীদায়ে তহাবির দারস - ২
যারা ট্রান্স*জেন্ডার হওয়া জায়েয মনে করবে তারা কা*ফের,যারা এ আইনের প্রস্তাব করবে,পাশ করবে তারাও কা*ফের!🎙️প্রফেসর ড. আবু ব...
মুতূন কি? মদীনা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তির জন্য কি মুতূন মুখস্থ করা লাগে? আবু বকর আস-সিদ্দীক রাদিয়াল্লাহু আনহু মাদরাসায় ছোট থে...
আত-তাদমুরিয়্যাহ (দারস-২৫)ইবন তাইমিয়্যাহ রহিমাহুল্লাহআল ফিকহ ও আকীদা বিভাগ (২য় বর্ষ)আস সুন্নাহ ট্রাস্ট, ঝিনাইদহ।
আত-তাদমুরিয়্যাহ (দারস-২৪)ইবন তাইমিয়্যাহ রহিমাহুল্লাহআল ফিকহ ও আকীদা বিভাগ (২য় বর্ষ)আস সুন্নাহ ট্রাস্ট, ঝিনাইদহ।
নারীদের চেহারা ঢাকার ব্যাপারে সকল ফিকহী মাযহাবের মতামত উল্লেখপূর্বক চমৎকার  উপস্থাপন।ড. আবু বকর মুহাম্মাদ যাকারিয়া হাফিয...
আত-তাদমুরিয়্যাহ (দারস-২৩)ইবন তাইমিয়্যাহ রহিমাহুল্লাহআল ফিকহ ও আকীদা বিভাগ (২য় বর্ষ)আস সুন্নাহ ট্রাস্ট, ঝিনাইদহ।
আত-তাদমুরিয়্যাহ (দারস-২২ )ইবন তাইমিয়্যাহ রহিমাহুল্লাহআল ফিকহ ও আকীদা বিভাগ (২য় বর্ষ)আস সুন্নাহ ট্রাস্ট, ঝিনাইদহ।
সিফাতে সালবিয়্যাহ সম্পর্কিত কিছু নীতিমালা
আত-তাদমুরিয়্যাহ (দারস-২১ )ইবন তাইমিয়্যাহ রহিমাহুল্লাহআল ফিকহ ও আকীদা বিভাগ (২য় বর্ষ)আস সুন্নাহ ট্রাস্ট, ঝিনাইদহ।

Telephone

Address


Tongi
1703

Other Educational Consultants in Tongi (show all)
Radius Academic Care Radius Academic Care
Modhumita Road
Tongi, 1230

"Education is the passport to the future, for tomorrow belongs to those who prepare for it today"

Easy-Peasy Fiverr English Test Easy-Peasy Fiverr English Test
National Tubes Limited Quarters
Tongi, 6100

Fiverr English Test has been the buzzwords nowadays whenever we set for publishing gig on Fiverr. Ma

مركز البيان بنغلاديش Markazul Bayan Bangladesh مركز البيان بنغلاديش Markazul Bayan Bangladesh
Tongi, 1348

উচ্চতর ইসলামী শিক্ষা, গবেষণা ও প্রশিক?

টিউটর'স টিউটর'স
বাসা#০১ (তৃতীয় তলা), বনমালা মেইন রোড (সফিউদ্দিনের বিপরীতে), টংগী, গাজীপুর
Tongi

যে কোনো ক্লাসের জন্য হোম টিউটর খুঁজে দেই আমরা সাথে আছে সিনিয়র টিউটর'সদের বিষয়ভিত্তিক স্পেশাল কোর্স

Feroza Akter Feroza Akter
Collage Road, Middle Auchpara, Tongi Gazipur
Tongi, 1711

My Name Is "Feroza akter"! I"m a Senior teacher of Safiuddin Sarkar Academy And Collage...!!!

Green bud totorial Green bud totorial
Tongi
Tongi, 1710

Enhance latent talent that encourage you to deliver better something reliable and ethical.

Sohag'S Accounting Care Sohag'S Accounting Care
Tongi College Gate
Tongi

Hi,I'm Sohag.This page is Education page.Everybody Like,Follow My page. I Will Try help them. Thanks

Rimi's Private Rimi's Private
Kazi Nazrul Islam Road
Tongi

Fardin Ahmed Rizvi Fardin Ahmed Rizvi
Tongi, Dhaka Division
Tongi, 1700

This page is all about Entertainment & Educational Consultant.

Rainbow Cadet Admission Care Rainbow Cadet Admission Care
Avijan/197, Shafiuddin Sarker Academy Road, Auchpara
Tongi, 1704

A completely exceptional institution. Directly supervised by Ex Cadet and BCS passed Teachers.

Civil Engineering Basic Civil Engineering Basic
Dhaka
Tongi, 1750

Civil Engineering all kind of information hear

Tongi Pilot School And Girls College Tongi Pilot School And Girls College
Auchpara, Nisat Nagar, Tongi West, Gazipur
Tongi, 1711