Mohammad Yakub. মোহাম্মাদ ইয়াকুব
Promise to spread Islam
⛔️একবার এক পর্যটক মেক্সিকোয় গেলেন; জেলেদের মাছের খুব প্রশংসা করলেন। তারপর বললেন,
“আচ্ছা, মাছ ধরতে আপনাদের কত সময় লাগে?”
“বেশিক্ষণ না” জেলেদের এক কথার উত্তর।
“তাহলে আপনারা আরও বেশি সময় দিয়ে আরও বেশি মাছ ধরেন না কেন?” লোকটা প্রশ্ন করেন। জেলেরা বলেন, "আমরা যে মাছ ধরি তাতে আমাদের প্রয়োজন মিটে যায়"।
“তাহলে মাছ ধরার পর বাকি সময়টা আপনারা কী করেন?” লোকটা জিজ্ঞাসা করে। জেলেরা জবাব দেয়,
“আমরা ঘুমাই, মাছ ধরি, বাচ্চাদের সাথে খেলা করি, বৌয়ের সাথে খাই, সন্ধ্যায় বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেই, মজা করি, হাসি, গলা ছেড়ে গান গাই…”। পর্যটক তাদেরকে থামিয়ে বলেন,“আমি হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ করেছি। আমি আপনাদেরকে বুদ্ধি দিয়ে সাহায্য করতে পারি। আপনাদেরকে আরও বেশি সময় দিয়ে মাছ ধরতে হবে, বাড়তি মাছগুলো বিক্রি করে মাছ ধরার বড় নৌকা কিনতে হবে। ”
“তারপর?” জেলেদের প্রশ্ন।
“আপনারা বড় নৌকার সাহায্যে বেশি মাছ ধরবেন, বেশি আয় করবেন। সেটা দিয়ে আরও বড় দুটা, তিনটা বা আরও বেশি নৌকা কিনবেন। একসময় মাছ ধরার নৌবহর বানিয়ে ফেলবেন। তখন মধ্যসত্ত্বভোগী ব্যবসায়ীদের কাছে মাছ বিক্রি না করে, সরাসরি মাছ প্রসেসিং ফ্যাক্টরির সাথে বেচাকেনা করবেন। এক সময় নিজেরাই মাছ প্রসেসিং ফ্যাক্টরি খুলে বসবেন। তারপর অনেক ধনী হয়ে গ্রাম ছেড়ে মেক্সিকোর রাজধানী, আমেরিকার লসএঞ্জেলেস বা নিউ ইয়র্কে চলে যাবেন। সেখান থেকে আপনারা মেগা প্রজেক্ট চালু করবেন। ”
“এসব করতে কত সময় লাগবে?” জেলেদের প্রশ্ন।
“কুড়ি/পঁচিশ বছর তো লাগবেই।” জবাব দেয় পর্যটক।
“তারপর” জেলেরা প্রশ্ন করে।
লোকটা হেসে জবাব দেয়, “ব্যবসায় যখন আরও বড় হবে তখন আপনারা শেয়ার বাজারে যাবেন, মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার আয় করবেন।”
“মিলিয়র ডলার! ধরুন পেলাম মিলিয়ন ডলার। কিন্তু, তারপর?” জেলেরা সবিস্ময়ে প্রশ্ন করে। পর্যটক তখন জবাব দেন, “আপনারা তখন অবসরে যাবেন। শান্ত গ্রামে ফিরে এসে সমুদ্রের ধারে ঘুমাবেন, বাচ্চাদের সাথে খেলা করবেন, বৌয়ের সাথে খাবার খাবেন, সন্ধ্যায় বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিবেন, মজা করবেন…,”। তখন জেলেরা বলেন,
“সেই কাজটাই তো আমরা এখন করছি। তাহলে এই বিশ/পঁচিশ বছরের এই কষ্টের জীবনের মানে কী l
আবু হুরায়রা (রা) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন:
"প্রকৃত বীর সে নয়, যে কাউকে কুস্তীতে হারিয়ে দেয়। বরং সেই আসল বীর, যে রাগের সময় নিজেকে নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারে।"
- [বুখারীঃ ৬১১৪; মুসলিমঃ ২৬০৯]
আমরা যাঁদের উত্তরসুরী-
একজন মাত্র আলেমের কাছে ভারতবর্ষের আশি কোটি মুসলমান যেভাবে ঋণী...!!
ভারতবর্ষে ইসলামকে মিটিয়ে দিয়ে নিজের আধিপত্য ও বিশাল সাম্রাজ্য টিকিয়ে রাখতে মোগল সম্রাট বাদশাহ হুমায়ুনের ইন্তেকালের পর অবুঝ বয়সে ক্ষমতার মসনদে আসীন হওয়া কথিত বাদশাহ আকবার যখন তাঁর পাশে থাকা পথভ্রষ্ট বুদ্ধিজীবিদের কুপরামর্শে নতুন ধর্ম দ্বীনে ইলাহী চালু করলো, তখন সামান্য একটি খানকাহ থেকে তরুণ যুবক হযরত আহমাদ আলফেসানী গর্জে উঠে হুংকার ছুড়লেন! না, ইসলামকে বাদ দিয়ে দিল্লীর শাহীমসনদে অন্যকোন ধর্ম চলবে না! ভাগ্যের নির্মম পরিহাস আকবার তার নতুন ধর্মের মাত্র সতেরজন অনুসারী রেখে পরপারে চলে যান! মসনদে আসেন তাঁর পুত্র জাহাঙ্গীর! ছেলে পিতার পদাংক অনুসরণ করে আগের সবকিছুই বহাল রাখায় এবারো গর্জে উঠেন, আহমাদ আলফেসানী (রাহ্)!
বাদশাহ জাহাঙ্গীর হযরত মুজাদ্দিদে আলফেসানী (রাহ্) কে রাজবিদ্রোহী খেতাব দিয়ে গ্রেফতার করে অন্ধকারাচ্ছন্ন কারাগারে নিক্ষেপ করলে মুহুর্তের মাঝে পুরো ভারতবর্ষ গরম হয়ে উঠলো, বিদ্রোহ করলো জাহাঙ্গীরের মন্ত্রী পরিষদ, কয়েকদিনের মাঝেই রাজকীয় সম্মানে মুক্ত করে আনা হল হযরত আহমাদ আলফেসানীকে! দিল্লির সিংহাসন থেকে জাহাঙ্গীরকে ক্ষমতাচ্যুত করেই ক্ষান্ত হয়নি উল্টো তাকে কয়েদখানায় বন্ধি করা হলো! অবশেষে আহমাদ আলফেসানীর নির্দেশে তাকে মুক্ত করে শাহী মসনদ ফিরিয়ে দেওয়া হলে জাহাঙ্গীর মুজাদ্দিদে আলফেসানীকে প্রধান ধর্ম উপদেষ্টা নিযুক্তি করলে তাঁর হুকুমে আকবারের প্রবর্তিত দ্বীনে ইলাহী বাতিলসহ সকল ধর্মবিরোধী আইনকে উঠিয়ে দিয়ে নতুনভাবে মোগল সাম্রাজ্যকে ঢেলে সাজান!
যুগশ্রেষ্ঠ ওলিয়ে কামেল হযরত মুজাদ্দিদে আলফেসানী (রাহ্) এর সংস্পর্শে এসে জাহাঙ্গীর এতোটাই ধর্মপরায়ণ হয়ে উঠেন যে, একদিন তাঁর স্ত্রী বিশ্বসুন্দরী নুরজাহান শাহী প্রাসাদের অন্দরমহলে রুপচর্চা করার সময় এক হিন্দু উন্মাদ ভূলবশত তাঁর খাসকামরায় ঢুকে পড়লে সুন্দরী নুরজাহান রাগে ক্ষোভে নিজ পিস্তল দিয়ে তাকে গুলি করে হত্যা করে! জাহাঙ্গীরের নতুনভাবে চালুকরা শরীয়া আইনে নিহত হিন্দু পাগলের আত্বীয়স্বজন নুরজাহানের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করলে ইসলামী আদালত নুরজাহানকে প্রানদন্ডের নির্দেশ প্রধান করলে রানী হতবাক হয়ে একবার জাহাঙ্গীরের দিকে তাকান আরেকবার বিচারপতির দিকে তাকান!
নুরজাহান আদালতের রায় শুনে জাহাঙ্গীরকে একান্তে পেয়ে "ওগো স্বামিনী" তোমার কি আমার অতীতের কোন কথাই মনে নেই? আমাদের প্রেম-ভালবাসা, সংসার সবকিছুই ভুলে গেলে? আমার মোহনিয়া রুপলাবন্য সবই ঐ উন্মাদ লোকটার সামনে হেরে গেল! আমার প্রানের চেয়েও কি ঐ উন্মাদ লোকটার জীবন তোমার কাছে বেশী মূল্যবান হয়ে গেল? না স্বামী না, তুমি আমাকে এমন কঠিন শাস্তি দিতে পারো না! জাহাঙ্গীর নুরজাহানের আবেগআপ্লুত কথামালা শুনে শুধু এইটুকুই বললো, দেখ নুরজাহান! আল্লাহর আইনে কে ধনী আর কে গরীব সেটার কোন পার্থক্য করা হয় না, বরং ইনসাফের দৃষ্টিতে যে দোষী তাকেই উপযুক্ত শাস্তি প্রধান করা হয়! এখানে আমার কোনকিছুই করার বা বলার নেই! রানী নুরজাহান স্তব্ধ হয়ে গেল, বিচারপ্রার্থী হিন্দু লোকটির আত্বীয়স্বজন ইসলামের এমন ইনসাফময় বিচারদেখে জাহাঙ্গীরের কাছে এসে রানীজীকে ক্ষমা করে দিলেন! অপরুপা সুন্দরী নুরজাহান উন্মাদ লোকটির পরিবারকে বিপুল পরিমাণ অর্থসম্পদ দিয়ে বিদায় করলেন!
জাহাঙ্গীর এতোটাই উদারমনা হয়ে গেলেন যে তিনি প্রজাসাধারণের দুঃখদুর্দশা লাগব করার জন্যে শাহী সিংহাসনের পাশে একটি শিকল বেঁধে এইবলে ঘোষনা দিলেন যে, এখন থেকে তোমাদের যে কোন সমস্যা সরাসরি বলার জন্য এই শীকলে টান দিবে, তাহলে আমি নিজে এসে তোমাদের সমস্যা ও অভিযোগের কথা শুনবো! জাহাঙ্গীর হযরত মুজাদ্দিদে আলফেসানীর কথানুযায়ী আস্তে আস্তে পুরো ভারতবর্ষকে ইসলামী সালতানাতের রুপ দিতে লাগলেন!
প্রখ্যাত ইতিহাসবিদ মাওলানা আকরাম (খাঁ) তাঁর রচিত একটি ইতিহাস গ্রন্থে লেখেন, সেদিন যদি ঐ মহামনিষী হযরত আহমাদ মুজাদ্দিদে আলফেসানী জাহাঙ্গীর এবং তাঁর সভাসদবৃন্দের মাঝে এমন বিপ্লবী পরিবর্তন না আনতেন এবং ইসলামী শরীয়াহ চালু না করতেন! তাহলে বাদশাহ শাহজাহান থেকে আওরঙ্গজেব আলমগির (রাহ্) ও বাহাদুর শাহ জাফর পর্যন্ত কেউই আর মুসলিম থাকতেন না! ভারতবর্ষে ইসলামের নামনিশানা কোনকিছুই অবশিষ্ট থাকতো না! আর আমরাও মুসলিমজাতি হিসাবে পরিচয় দিতে সক্ষম হতাম না! সুতরাং ইতিহাসের হাজার হাজার গ্রণ্থাদী পাঠ করলে সহজেই বুঝে আসে মোগলসাম্রাজ্য থেকে আজকের ভারতবর্ষে কোটি কোটি মুসলমানের অস্তিত্বের পিছনে যার অবদান অনস্বীকার্য, তিনি হচ্ছেন সে যামানার শ্রেষ্ঠ আলেমেদ্বীন হযরত মুজাদ্দিদে আলফেসানী (রাহ্)! আমার শায়েখ আমার ওস্তাদে মুহতারাম, হযরত আমিনী (রাহ্) তাঁর ক্লাসে প্রায়শই বলতেন, ভারতবর্ষের মুসলমানরা চামড়া দিয়ে জুতা বানিয়ে দিলেও হযরত আলফেসানী (রাহ্) এর ঋণ কোনদিনো পরিষোধ করতে পারবে না! আফসোস আজ অলিগলিতে কতো আলেম পাওয়া যায়! কিন্তু এমন বিপ্লবী আল্লাহর শক্তিতে বলিয়ান আহমাদ আলফেসানীর মতো একজন আলেমও কি খুঁজে পাওয়া যায়.......??
চোখ বন্ধ করে কিসের হালকায়ে জিকির করো ?
চোখ খুলে দেখো মুসলিম উম্মাহর উপর কারবালা চলছে,
দ্বীনের দ্বা'য়িদের কে জবেহ করা হচ্ছে,তাদেরকে হাতে পায়ে শিকল পড়িয়ে জেলে আবদ্ধ করে রাখা হচ্ছে, কোনদিন আহ শব্দও মুখ থেকে বের করছো না,
তোমাদের কোন ইবলিশের সাথে সম্পর্ক ?
দুনিয়ার জ্ঞানবিজ্ঞান অর্জনের জন্য বহু ব্যয় করে, বহুদেশ ঘুরলাম। বাড়ির সামনে ভাঙা মসজিদে সম্পূর্ণ বিনাব্যয়ে পরিচালিত কুরআনী হালাকায় হাঁটুমুড়ে বসার সুযোগ করে উঠতে পারলাম না। এর চেয়ে লজ্জাজনক বিষয় আর হতে পারে না।
গাজি হাসান পাশা।
উসমানী খেলাফতের সর্বশেষ সিংহ।
যিনি আমেরিকাকে ট্যাক্স দিতে বাধ্য করেছিলেন।
হ্যা, আপনি ঠিকই শুনেছেন, আমেরিকাও একসময় উসমানী খেলাফতকে ট্যাক্স দিতে বাধ্য ছিলো।
১৭৭৬ সালের মধ্যবর্তি সময়ের
কথা। আমেরিকা সবে মাত্র রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে । তখন উসমানী খেলাফতের নৌ বাহিনীর প্রধান ছিলেন এডমিরাল গাজি হাসান পাশা। যার নাম শুনামাত্র বিভিন্ন দেশের নৌ বাহিনীর অন্তরাত্মা কেঁপে উঠতো। তিনি সব সময় সাথে সিংহ নিয়ে চলাফেরা করতেন। তার দক্ষ নেতৃত্বে তখনও উসমানী খেলাফতের নৌ বাহিনী বিপুল বিক্রমে রাজত্ব করতো আটলান্টিক মহাসাগর, কৃষ্ণ সাগর, এবং ভূমধ্যসাগরে। এই তিনটি সাগল ছিলো উসমানীদের বাড়ীর পুকুর। খেলাফতের অনুমতি ছাড়া কোনো রাষ্ট্রের জাহাজ প্রবেশ করতে পারতোনা।
সেই সময় আমেরিকা মস্তানি করে তাদের পাঁচটি জাহাজ সৈন্য সহ ভূমধ্যসাগরে প্রবেশ করে। সাথে সাথে খেলাফতের নৌ বাহিনীর প্রধান গাজি হাসান পাশা তাদের দাওয়া করতে এবং আটক করতে নির্দেশ দেন। টানা পাঁচ ঘন্টা যুদ্ধের পর আমেরিকা নৌ বাহিনী পরাজয় বরন করে এবং উসমানী খেলাফতের নৌ বাহিনীর হাতে বন্দী হয়। গাজি হাসান পাশা আটককৃত আমেরিকার সৈনিক এবং যুদ্ধ জাহাজ আলজেরিয়ার উপকূলে বেধে রাখেন। তখন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জর্জ ওয়াশিংটন উসমানী খলিফার কাছে তাদের সৈন্য এবং জাহাজ ফেরত চান। তখন খলিফা জর্জ ওয়াশিংটনের কাছে বিশাল মুক্তিপণ দাবী করেন। এবং জর্জ ওয়াশিংটনকে সরাসরি নিজে এসে একটা চুক্তিপত্রে সাক্ষর করতে বলেন। বাধ্য হয়ে জর্জ ওয়াশিংটন নিজে এসে খলিফার সাথে চুক্তিপত্রে সাক্ষর করেন। এটাই আমেরিকার ইতিহাসে একমাত্র বিদেশি ভাষায় সাক্ষরিত চুক্তি। এই চুক্তি অনুযায়ী আমেরিকা উসমানী খেলাফতকে টানা আঠারো বছর ট্যাক্স দেয়।
ঢাকা মেডিকেল কলেজে পড়বার সময় আমার মা আমাকে সপ্তাহে ১০০ টাকা দিতেন যাতায়াত ভাতা আর ৫০০ টাকা দিতেন মাসে অন্যান্য খরচের জন্য। সব মিলিয়ে ৯০০ টাকা। আমার সারা মাসে যাতায়াতের টাকা লাগত ৩০০ ।
সরাসরি মিনিবাসে চানখারপুল বা বখশিবাজার যেতে আসতে মীরপুর থেকে দিনে ১০ টাকা। মুড়ির টিন (বড় বাস) চড়লে ৬ টাকা , ছাত্র আই ডি কার্ড দেখালে হাফ ভাড়া, ৩ টাকা। তাই প্রতিবার মাসএর শেষ সপ্তাহের শুরুতে ১০০ টাকা পেলেই আমি চলে যেতাম নিউমার্কেট। হেঁটে যেতাম যাতে পয়সা বাঁচে,আর জমানো পুরো টাকা দিয়ে বই কিনতাম।
একবার সেরকম বই কিনে পকেটে আছে ১২ টাকা। রিকশা দিয়ে বাড়ী ফেরার সিদ্ধান্ত নিলাম। তখন ২য় বর্ষে পড়ি। রিকশাওয়ালা অতিরিক্ত ভাড়া চাইতে থাকায় আমি হেঁটে কলাবাগান চলে আসলাম। কলাবাগান থেকে আমার বাসার রিকশা ভাড়া ছিল আট টাকা। কেন যেন কোন রিকশা সেদিন আর যেতে রাজী হয় না।
আমি রাগ করে হেঁটে চলে এলাম আসাদগেট। এবার একজন রাজী হলো যেতে কিন্তু ভাড়া তখনো বেশী। পকেটের ১২ টাকাই সে চায়, আমি সিদ্ধান্ত নিলাম হেঁটেই বাড়ী ফিরবো।
ঠিক কলেজ গেট আর শ্যামলীর সংযোগস্থলে আসতেই দেখি রাস্তায় দাঁড়িয়ে এক দিনমজুর কাঁদছেন আর বলছেন,
“আল্লাহ তোমার দুনিয়ায় কি কেউ নাই আমাকে একবেলা ভাত খাওয়ায়।”
আমি তার সাথে কথা বলে মনে হলো তিনি সত্যি কথা বলছেন। সকালে এসেছিলেন তুরাগ নদীর ওপার থেকে বসিলা হয়ে। দেরী হয়ে যাওয়ায় কাজ পান নি। কাঁদতে কাঁদতে বললেন:
“আজকে না খেলে তো কালকেও কাজ করতে পারবো না।”
উল্টোদিকের হোটেলে তাকে নিয়ে যেতে তিনি বললেন , কই মাছ দিয়ে ভাত খাবেন। হোটেলওয়ালা বললো, ভাত আর কই মাছ ১২ টাকা দাম। পকেটের সব টাকা দিয়ে তাকে ভাত আর কই মাছ খাওয়ালাম। তিনি হাততুলে আমাকে দোয়া করলেন, আমার স্পষ্ট মনে আছে।
“আল্লাহ,আমার ভাইটার জীবনে যেন কোনদিন ভাতের অভাব না হয়।”
আমি বাকি রাস্তা হেঁটে মীরপুরে আমার বাড়ীতে ফিরলাম।
আমার পকেটে বহুদিন টাকা ফুরিয়ে গেছে। (যখন এভাবে বই বা খেলনা কিনেছি) এমনকি বিদেশেও একবার এমন হয়েছিল। পকেটে টাকা নাই। থাকতে হবে আরো দুই দিন। খিদে লাগার সাথে সাথে কেউ না কেউ , আমাকে খাবার সেধেছে। আমার জীবনে এখনো ভাতের অভাব হয় নাই।
সেদিন কেন এতটা পথ হেঁটেছিলাম?
এখন বুঝি , আমি স্বেচছায় হাঁটি নাই। সেই দিনমজুরের দোয়া কবুল হয়েছিল। আমি হেঁটেছিলাম , কারন আল্লাহ সেদিন আমার মাধ্যমে তাকে ভাত পাঠিয়েছিলেন।
তাকে আরেকবার খুঁজে পেলে আমার জন্য দোয়া করতে বলতাম।
-ডাঃ আব্দুর নূর তুষার।
বিশ্বনবী মুহাম্মদ সা. এর পিতা আব্দুল্লাহ, একদিন মক্কার বাজারে গিয়েছিলেন কিছু কেনা-কাটা করার জন্য I এক জায়গায় তিনি দেখলেন, এক লোক কিছু দাস- দাসী নিয়ে রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে বিক্রি করছে I
আব্দুল্লাহ দেখলেন সেখানে দাঁড়িয়ে আছে, একটা ছোট নয় বছরের কালো আফ্রিকান আবিসিনিয়ার মেয়ে I মেয়েটাকে দেখে আব্দুল্লাহর অনেক মায়া হলো, একটু রুগ্ন হালকা-পাতলা কিন্তু কেমন মায়াবী ও অসহায় দৃষ্টি দিয়ে তাঁকিয়ে আছে I
তিনি ভাবলেন ঘরে আমেনা একা থাকেন, মেয়েটা পাশে থাকলে তার একজন সঙ্গী হবে I এই ভেবে তিনি মেয়েটাকে কিনে নিলেন I
মেয়েটিকে আব্দুল্লাহ ও আমেনা অনেক ভালোবাসতেন I স্নেহ করতেন I এবং তারা লক্ষ্য করলেন যে, তাদের সংসারে আগের চেয়েও বেশি রাহমাত ও বরকত চলে এসেছে I
এই কারণে আব্দুল্লাহ ও আমেনা মেয়েটিকে আদর করে নাম দিলেন "বারাকাহ"I
এই গল্প, বারাকার গল্প I
তারপর একদিন আব্দুল্লাহ, ব্যবসার কারণে সিরিয়া রওনা দিলেন I আমেনার সাথে সেটাই ছিল উনার শেষ বিদায় I
উনার যাত্রার দুই এক দিন পর আমেনা একরাতে স্বপ্নে দেখলেন, আকাশের একটা তারা যেন খুব আলো করে তার কোলে এসে পড়লো I
পরদিন ভোরে তিনি বারাকাকে এই স্বপ্নের কথা বললেন I
উত্তরে বারাকা মৃদু হেসে বললেন, "আমার মন বলছে আপনার একটা সুন্দর সন্তানের জন্ম হবে"
আমেনা তখনও জানতেন না তিনি গর্ভ ধারণ করেছেন কিন্তু কিছুদিন পর তিনি বুঝতে পারলেন, বারাকার ধারণাই সত্যি I
আব্দুল্লাহ আর ফিরে আসেন নি, সিরিয়ার পথেই মৃত্যুবরণ করেছেন I
আমেনার সেই বিরহ ও কষ্টের সময়ে, বারাকা ছিলেন একমাত্র সবচেয়ে কাছের সঙ্গী I
একসময় আমেনার অপেক্ষা শেষ হয় এবং তিনি জন্ম দিলেন আমাদের প্রিয় নবীকে I
শেখ ওমর সুলাইমানের বর্ণনা অনুযায়ী, সর্বপ্রথম আমাদের নবীকে দেখার ও স্পর্শ করার সৌভাগ্য হয়েছিল যে মানুষটির, সে হলো এই আফ্রিকান ক্রিতদাসী ছোট কালো মেয়েটি I
আমাদের নবীকে নিজ হাতে আমেনার কোলে তুলে দিয়েছিলেন, আনন্দে ও খুশিতে বলেছিলেন,
"আমি কল্পনায় ভেবেছিলাম সে হবে চাঁদের মত কিন্তু এখন দেখছি, সে যে চাঁদের চেয়েও সুন্দর "
এই সেই বারাকা I নবীজির জন্মের সময় উনার বয়স ছিল তের বছর I ছোটবেলায় শিশু নবীকে আমেনার সাথে যত্ন নিয়েছেন, গোসল দিয়েছেন, খাওয়াতে সাহায্য করেছেন,আদর করে ঘুম পাড়িয়েছেন I
মৃত্যুর সময় আমেনা, বারাকার হাত ধরে অনুরোধ করেছিলেন তিনি যেন তাঁর সন্তানকে দেখে শুনে রাখেন I
বারাকা তাই করেছিলেন Iবাবা-মা দুজনকেই হারিয়ে, ইয়াতিম নবী চলে আসলেন দাদা আবদুল মোত্তালিবের ঘরে I
উত্তরাধিকার সূত্রে নবী হলেন বারাকার নতুন মনিব I
কিন্তু তিনি একদিন বারাকাকে মুক্ত করে দিলেন, বললেন,
-"আপনি যেখানে ইচ্ছে চলে যেতে পারেন , আপনি স্বাধীন ও মুক্ত I"
সেই শিশুকাল থেকেই নবী এই ক্রীতদাস প্রথাকে দূর করতে চেয়েছিলেন Iবারাকা নবীকে ছেড়ে যেতে রাজি হলেন না I রয়ে গেলেন I মায়ের ছায়া হয়ে পাশে থেকে গেলেন I
এমনকি নবীজির দাদা উনাকে বিয়ে দেয়ার জন্য বেশ কয়েকবার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু তিনি কিছুতেই রাজি হলেন না I উনার একই কথা, -"আমি আমেনাকে কথা দিয়েছি, আমি কোথাও যাবো না"
তারপর একদিন খাদিজা (রাঃ) এর সাথে নবীজির বিয়ে হলো I বিয়ের দিন রাসূল (সাঃ) খাদিজা (রাঃ) এর সাথে বারাকাকে পরিচয় করিয়ে দিলেন I তিনি বললেন, "উনি হলেন আমার মায়ের পর আরেক মা "
বিয়ের পর রাসূল (সাঃ) একদিন বারাকাকে ডেকে বললেন,
-"উম্মি ! আমাকে দেখাশুনা করার জন্য এখন খাদিজা আছেন, আপনাকে এখন বিয়ে করতেই হবে I" (নবীজি উনাকে উম্মি ডাকতেন, নাম ধরে ডাকতেন না )
তারপর রাসূল (সাঃ) ও খাদিজা মিলে উনাকে উবাইদ ইবনে জায়েদের সাথে বিয়ে দিয়ে দিলেন I কিছুদিন পর বারাকার নিজের একটা ছেলে হলো, নাম আইমান I এরপর থেকে বারাকার নতুন নাম হয়ে গেলো "উম্মে আইমান"I
একদিন বারাকার স্বামী উবাইদ মৃত্যু বরণ করেন, নবীজি গিয়ে আইমান ও বারাকাকে সাথে করে নিজের বাড়ি নিয়ে আসেন এবং সেখানেই থাকতে দিলেন I
কিছুদিন যাওয়ার পর নবীজি একদিন বেশ কয়েকজন সাহাবীকে ডেকে বললেন,
"আমি একজন নারীকে জানি, যার কোন সম্পদ নেই, বয়স্ক এবং সাথে একটা ইয়াতিম সন্তান আছে কিন্তু তিনি জান্নাতি, তোমাদের মধ্যে কেউ কি একজন জান্নাতি নারীকে বিয়ে করতে চাও?"
এইকথা শুনে জায়েদ ইবনে হারিসা (রাঃ) নবীজির কাছে এসে বিয়ের প্রস্তাব দিলেন I নবীজি উম্মে আইমানের সাথে কথা বলে বিয়ের আয়োজন করলেন I
বিয়ের দিন রাসূল (সাঃ) জায়েদকে বুকে জড়িয়ে আনন্দে ও ভালোবাসায়, ভেজা চোখে, কান্না জড়িত কণ্ঠে বললেন,
"তুমি কাকে বিয়ে করেছো, জানো জায়েদ ?"
-হাঁ, উম্মে আইমানকে I জায়েদের উত্তর I নবীজি বললেন, -"না, তুমি বিয়ে করেছো, আমার মা কে "
সাহাবীরা বলতেন, রাসূল (সাঃ) কে খাওয়া নিয়ে কখনো জোর করা যেত না I উনি সেটা পছন্দ করতেন না I কিন্তু উম্মে আইমান একমাত্র নারী, যিনি রাসূল (সাঃ) কে খাবার দিয়ে "খাও".." খাও".. বলে তাড়া দিতেন I আর খাওয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত পাশে বসে থাকতেন I নবীজি মৃদু হেসে, চুপ চাপ খেয়ে নিতেন I
রাসূল (সাঃ) উনার দুধ মাতা হালিমাকে দেখলে যেমন করে নিজের গায়ের চাদর খুলে বিছিয়ে তার উপর হালিমাকে বসতে দিতেন ঠিক তেমনি মদিনায় হিজরতের পর দীর্ঘ যাত্রা শেষে উম্মে আইমান যখন ক্লান্ত হয়ে পড়েছিলেন নবীজি উনার গায়ের চাদরের একটা অংশ পানিতে ভিজিয়ে, উম্মে আইমানের মুখের ঘাম ও ধুলোবালি নিজ হাতে মুছে দিয়েছিলেন এবং বলেছিলেন, "উম্মি ! জান্নাতে আপনার এইরকম কোন কষ্ট হবে না"
নবীজি মৃত্যুর আগে সাহাবীদের অনেক কিছুই বলে গিয়েছিলেন I সেই সব কথার মধ্যে একটা ছিল, উম্মে আইমানের কথা Iবলেছেন, "তোমরা উম্মে আইমানের যত্ন নিবে, তিনি আমার মায়ের মত I তিনিই একমাত্র নারী, যিনি আমাকে জন্ম থেকে শেষ পর্যন্ত দেখেছেন I আমার পরিবারের একমাত্র সদস্য, যিনি সারাজীবন আমার পাশে ছিলেন I"
সাহাবীরা সেই কথা রেখেছিলেন I গায়ের রং নয়, এক সময়ের কোন ক্রিতদাসী নয়, তাঁর পরিচয় তিনি যে নবীর আরেক মা I মায়ের মতোই তাঁরা, এই বৃদ্ধা নারীকে ভালোবেসে আগলে রেখেছিলেন I
সূত্র: ইবনে হিশাম ও শেখ ওমর সুলাইমান,
আলেম যখন শাসকের ঝোল খায়,
জিহ্বা পুড়ে যায়।
পোড়া জিহ্বা দিয়ে হক্ব কথা উচ্চারিত হয় না।
—আল্লামা শানকিত্বী রহ.।
নবীরা যেখানে মারা যায় সেখানেই দাফন হয়।
মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীব
Part 01
ইত্তেফাক মিডিয়া
যে মজলিশ আক্ষেপের কারন হবে।
বান্দা যখন বাম হাতে আমলনামা পাবে।
মাওলানা হাসান জামিল।
পার্ট ৫
শেষ পর্ব
,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,,
ভিডিওটি ভালো লাগলে লাইক কমেন্ট শেয়ার করে পাশেই থাকুন।
কেয়ামতের ময়দানে সমস্ত অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ যখন সাক্ষী দিবে
মাওলানা হাসান জামিল
পার্ট 4
গুনাহ করলেই শুধু বিপদ আসে না,
আল্লাহু ওয়ালাদেরকেও বিপদ দেন মর্যাদা বাড়ানোর জন্য
Maulana Hasan Jamil
Part 03
এ দেশের লাখো তরুনের হৃদয়ের স্পন্দন মাওলানা মামুনুল হক,মাওলানা শাখাওয়াত হুসেইন রাজীরা তিনটি রমজান কারাগারে কাটিয়েছেন।
এবারকার ঈদ নিয়ে পাচটি ঈদে কারাগারে থাকতে হচ্ছে।
রাজনৈতিক অনেক শত্রুও তাদের জন্য সহমর্মিতা দেখাচ্ছেন।
কিন্তু স্বজাতিয় কিছু আলেমরা প্রকাশ্যে উচ্ছাস প্রকাশ করছেন।
কারাবন্দী আলেমদের সাইজ করায় উল্লাস ব্যক্ত করে নিজেদের হিংসার সাইজ প্রকাশ করছেন।
ইনশাআল্লাহ। মামুন ভাই সহ কারাবন্দী আলেমরা এদেশের মানুষের হৃদয় সিংহাসন বিজয় করে অচিরেই মুক্তি পাবেন।
কিন্তু এসব হিংসুক আলেমদের সারা জীবনই কারাগারে কাটাতে হবে।
সেই কারাগার কাশিমপুর নয়।
হিংসাপুর।
কাসিমপুর কারাগারের চতুর্দিকে লোহার শিকল দিয়ে ঘেরা।
হিংসাপুর কারাগারের চতুর্দিকে হিংসার আগুন দিয়ে ঘেরা।
হে আল্লাহ! হিংসুকদের অনিষ্ট হতে মাজলুম আলেমদের হেফাজত কর।
@শাহ মমশদ আহমদ
আল্লাহেক রাজী রাখার পদ্ধতী
মাওলানা হাসান জামিল
Part 02
নেক্কার রুহকে ফেরেশতারা যেভাবে স্বাগত জানায়
মাওলানা হাসান জামিল
Part 01
যে কাজ করলে গুনাহের দাগ পরিষ্কার হতে থাকে
মাওলানা আব্দুল বাসেত খান
Part 02
যার সাথে ব্যবসা করলে কখনোই লস হয় না
মাওলানা আব্দুল বাসেত খান
Part 01
ওলামায়ে কেরাম নিজের জীবন দিবে,
তবুও আদর্শ বিসর্জন দিবে না
মুফতি আলী হাসান ওসামা
Part 05 (Complete)
বিচ্ছিন্ন যে হয় নেকরে তাকে খেয়ে ফেলে
মুফতী আলী হাসান উসামা
part 04
ইসলামের জন্য যারা তাজা রক্ত ঢেলে দেয়,
আরেক দল তাদেরকে বলে ওহাবী
মুফতি আলী হাসান ওসামা
part 03
কোমরের মধে্ গরুর রশি বাধলেই
কারো ইজ্জত শেষ হয়ৈ যায় না।
মুফতি আলী হাসান উসামা
Part 02
যারা আমার পরিচয় ভুলিয়ে দিতে চায়
মুফতী আলী হাসান উসামা
Part 01
মুমিন বান্দার সাতটি করণীয় কাজ
-------------------------------
মুফতী রাফি বীন মুনির
যাদেরকে মেরুদন্ডহীন শিক্ষিত বলা হয়।
আল্লামা মুফতী মাসউদুল করীম দাঃ বাঃ
নাতে রাসূল (সা:),
------------------
মন উজার করা সুর
যে সন্তানকে কবরে হাফেজ বানাবেন স্বয়ং আল্লাহ্
ঈমাম বোখারীর সাথে যার মিলে যায় সে জান্নাতি!
মাওলানা আব্দুল মান্নান ওসমানী
--------------------------------------------
ইত্তেফাক মিডিয়া
নামায তিন রাকাত, ভন্ড পীরের দাবি
!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!
মাওলানা হামিদ জাহেরী
হেদায়াতের পথ চারটি
-=-=-=-=-=-=-=-
আল্লামা ওলিপুরি
এতায়াতিদের নতুন কথা,
নামাযের চেয়ে দাওয়াতের সাওয়াব বেশী!
আল্লামা সাজিদুর রহমান
যে বলবে লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ
সে জান্নাতি
সমসাময়িক বিষয় নিয়ে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বয়ান,
মাওলানা হাসান জামিল
এক মামুনকে জেলে রাইখ্যা আর দেশে অশান্তির সৃষ্টি করবেন না!
ছাইড়া দেন ভালো হবে ছাইড়া দেন ভালো হবে
♦আল্লামা আব্দুল হামিদ মধুপুরী হুজুর { দাঃ বাঃ }
মানবতার ফেরিওয়ালা মুফতি শহিদুল ইসলাম রাহ. গত হয়ে গেলেন। আপনজনদের কাঁদিয়ে প্রিয় রবের সান্নিধ্যে চলে গেলেন। অনেকেই তার মানবসেবা-সংক্রান্ত কাজগুলোর কথা উল্লেখ করে স্মৃতিচারণ করেছেন। প্রায় সকলের আলোচনা এ বিষয়টির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। কিন্তু এ ছাড়াও তার যে ছিল এক ভীষণ আলোকিত অতীত, সেটা আলোচনার বাইরেই রয়ে গেল।
তাকে নিয়ে বলতে চাইলে বিশাল ইতিহাস রচিত হয়ে যাবে। দ্বীনের জন্য তার অবদানের কমতি নেই। ষড়যন্ত্রমূলক মামলা কাঁধে নিয়েও দেশের বাইরে পালিয়ে থাকতে হয়েছে বহুবছর। তার উল্লেখযোগ্য অবদানগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল, বেদখল হওয়া জামিয়া রহমানিয়া সাত মসজিদ মাদরাসার পুনরুদ্ধার। সে এক রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের কথা। আমাদের দাদা উস্তাদ শাইখুল হাদিস আল্লামা আজিজুল হক রাহ.-এর স্মৃতিবিজড়িত প্রতিষ্ঠান থেকে তাদেরই উচ্ছেদ করে কিছু অসৎ স্বার্থপর মানুষ তার দখল নিয়ে নেয়। সে সময় যাদের অবদানে তা পুনরুদ্ধার হয়, তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন খেলা*ফ*ত মজলিসের এই মরহুম এমপি সাহেব। আল্লাহ তাঁকে উত্তম প্রতিদান দান করুন।
আজও জামিয়া রহমানিয়া বেদখল হয়ে আছে। এর প্রতিটা ইট ও বালুও যেন শাইখুল হাদিস রাহ. ও তার পরিবারের শোকে কাতর হয়ে আছে। ভুল তথ্য ছড়িয়ে ও কোমলমতি শিশুদের সামনে মিথ্যে ইতিহাস প্রচার করে বাস্তবতা বেশিদিন গোপন রাখা যায় না। মাদরাসায় ছাত্ররা ভর্তি হয় ইলম শিখতে; শাইখুল হাদিস রাহ. ও তার পক্ষাবলম্বীদের ব্যাপারে ভুল তথ্য ও মিথ্যা ইতিহাস শিখতে নয় এবং জঘন্য উপস্থাপনের দ্বারা রক্তে উলামাবিদ্বেষ ধারণ করতে নয়।
শাইখুল হাদিস রাহ.-এর বীর সন্তান কারামুক্ত হলে নিজে এ ব্যাপারে নীরব থাকলেও আত্মমর্যাদাবান তালিবুল ইলমদের দ্বারা ইনশাআল্লাহ আবারও ফিরবে প্রতিষ্ঠানটি তাঁর স্বনামধন্য অভিভাবকদের হাতে - এমনটাই লোকমুখে প্রচলিত আছে। আগেরবারও শাইখুল হাদিস পরিবার অমত করেছিল দখলদারদের হাত থেকে প্রতিষ্ঠান পুনরুদ্ধারের ব্যাপারে। নিঃসন্দেহে এটা তাদের উদারতা ও মহানুভতারই বহিঃপ্রকাশ। কিন্তু এক শহিদুল ইসলাম রাহ. না থাকলে কী হয়েছে; জামিয়া রহমানিয়ার অসংখ্য শার্দূল তো আজও জীবিত আছে। তাদের শৌর্য ও গায়রত হয়তো বেদখল প্রতিষ্ঠানকে আবারও উদ্ধারে ভূমিকা রাখবে, অন্যায়ের প্রতিবাদে নীরব থাকার গ্লানি মুছে দেবে - এমনটাই নিরপেক্ষজনদের ধারণা ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রত্যাশা।
Ali Hasan Osama
লালমনিরহাট জেলা খতমে নবুওয়াত সম্মেলনে বক্তব্য দিচ্ছেন বেফাক মহা সচিব শায়খুল হাদীস আল্লামা মাহফুজুল হক।
রাসুলুল্লাহ ﷺ বলেন,
আল্লাহ তাআলার নিয়ম হলো, দুনিয়ার যেকোনো জিনিসের উত্থান ঘটার পর তিনি এর পতনও ঘটান। [সহিহ বুখারি : ৬১৩৬]
এ থেকেই লোকে বলে, প্রত্যেক উত্থানের পর পতন রয়েছে। এটা প্রাণী, ব্যক্তি, দল, সংগঠন, সরকার, রাষ্ট্র ও ব্যবস্থা সবকিছুর ব্যাপারেই প্রযোজ্য। যার উত্থান আছে, তার পতনও আছে। মানুষের যেমন বয়স থাকে, ছোট হয়ে জন্মে, এরপর কৈশোর পেরিয়ে তারুণ্য, যৌবন্য পেরিয়ে পৌঢ়ত্ব, বার্ধক্য পেরিয়ে অচলাবস্থা, অবশেষে মৃত্যু; একইভাবে সাম্রাজ্য ও ব্যবস্থাগুলোর ক্ষেত্রেও বিষয়টা এমনই ঘটে। ইবনে খালদুন তার আল-মুকাদ্দিমায় বিষয়টা অনেক সুন্দরভাবে বিস্তৃত আকারে বুঝিয়েছেন।
সুতরাং অহংকার ও অহমিকা কোনো মাখলুকের জন্যই সাজে না। বিনয়ের চাইতে উত্তম গুণ কিছু হতে পারে না। দাসত্ব ও বন্দেগিও বিনয়েরই ফল। উত্তম চরিত্রের ভিত্তিও হলো এই বিনয়। মায়ার পৃথিবীকে নিয়ে খুব বেশি স্বপ্ন সাজিয়ে লাভ নেই। কারণ, নিঃশেষ ও পতনেই এর সমাপ্তি। চিরসুখের জায়গা কেবল জান্নাতই। তাই সব স্বপ্ন জান্নাতকে ঘিরে সাজানোই বুদ্ধিমত্তার পরিচায়ক।
Click here to claim your Sponsored Listing.
Videos (show all)
Category
Contact the organization
Telephone
Address
Uttara
1230