A hadith for life
Human life is very busy.. In this busy life read atleast one hadith daily and learn about Islam..
পরলোকগত কুয়েতি লেখক আব্দুল্লাহ যারাল্লাহ র মৃত্যুর আগে লিখে যাওয়া কিছু অনুভূতি -
"মৃত্যু নিয়ে আমি কোনো দুশ্চিন্তা করবো না, আমার মৃতদেহের কি হবে সেটা নিয়ে কোন অযথা আগ্রহ দেখাবো না। আমি জানি আমার মুসলিম ভাইয়েরা করণীয় সবকিছুই যথাযথভাবে করবে।"
يُجَرِّدُونَنِي مِنْ مَلَابِسِي
তারা প্রথমে আমার পরনের পোশাক খুলে আমাকে বিবস্ত্র করবে,
يَغْسِلُونَني
আমাকে গোসল করাবে,
يَكْفِنُونَنِي
(তারপর) আমাকে কাফন পড়াবে,
يُخْرِجُونَنِي مِنْ بَيْتِي
আমাকে আমার বাসগৃহ থেকে বের করবে,
يَذهَبُونَ بِي لِمَسَكِنِي الجَدِيدِ (القَبْرُ)
আমাকে নিয়ে তারা আমার নতুন বাসগৃহের (কবর) দিকে রওনা হবে,
وَسَيَأتِي كَثِيرُونَ لِتَشْيِيْعِ الجَنَازَتِي
আমাকে বিদায় জানাতে বহু মানুষের সমাগম হবে,
بَلْ سَيَلْغِي الكَثِيرُ مِنهُم أَعْمَالَهُ وَمَوَاعِيدَهُ لِأَجْلِي دَفْنِي
অনেক মানুষ আমাকে দাফন দেবার জন্য তাদের প্রাত্যহিক কাজকর্ম কিংবা সভার সময়সূচী বাতিল করবে,
وَقَدْ يَكُونُ الكَثِيرُ مِنهُم لَمْ يَفَكِّرْ في نَصِيحَتِي يَوماً مِنْ الأيّامِ
কিন্তু দুঃখজনকভাবে অধিকাংশ মানুষ এর পরের দিনগুলোতে আমার এই উপদেশগুলো নিয়ে গভীর ভাবে চিন্তা করবে না,
أَشْيَائِي سَيَتِمُّ التَّخَلُّصُ مِنهَا
আমার (ব্যক্তিগত) জিনিষের উপর আমি অধিকার হারাবো,
مَفَاتِيحِي
আমার চাবির গোছাগূলো,
كِتَابِي
আমার বইপত্র,
حَقِيبَتِي
আমার ব্যাগ,
أَحْذِيَتِي
আমার জুতোগুলো,
وإنْ كانَ أَهْلِي مُوَفِّقِينَ فَسَوفَ يَتَصَدِّقُونَ بِها لِتَنْفَعَنِي
হয়তো আমার পরিবারের লোকেরা আমাকে উপকৃত করার জন্য আমার ব্যবহারের জিনিসপত্র দান করে দেবার বিষয়ে একমত হবে,
تَأَكِّدُوا بِأَنَّ الدُّنيا لَنْ تَحْزَنْ عَلَيَّ
এ বিষয়ে তোমরা নিশ্চিত থেকো যে, এই দুনিয়া তোমার জন্য দু:খিত হবে না অপেক্ষাও করবে না,
وَلَنْ تَتَوَقَّفْ حَرَكَةُ العَالَمِ
এই দুনিয়ার ছুটে চলা এক মুহূর্তের জন্যও থেমে যাবে না,
وَالاِقْتِصَادُ سَيَسْتَمِرُ
অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কিংবা ব্যবসাবাণিজ্য সবকিছু চলতে থাকবে,
وَوَظِيْفَتِي سَيَأتِي غَيرِي لِيَقُومَ بَها
আমার দায়িত্ব (কাজ) অন্য কেউ সম্পাদন করা শুরু করবে,
وَأَمْوَالِي سِيَذْهَبُ حَلَالاً لِلوَرَثِةِ
আমার ধনসম্পদ বিধিসম্মত ভাবে আমার ওয়ারিসদের হাতে চলে যাবে,
بَينَمَا أنا سَأُحَاسِبُ عَليها
অথচ এর মাঝে এই সম্পদের জন্য আমার হিসাব-নিকাশ আরম্ভ হয়ে যাবে,
القَلِيلُ والكَثِيرُ.....النَقِيرُ والقَطمِيرُ......
ছোট এবং বড়….অনুপরিমাণ এবং কিয়দংশ পরিমান, (সবকিছুর হিসাব)
وَإن أَوَّلَ ما مَوتِي هو اِسمِي !!!!
আমার মৃত্যুর পর সর্বপ্রথম যা (হারাতে) হবে, তা আমার নাম!!!
لِذَلكَ عِنْذَما يَمُوتُ سَيَقُولُونَ عَنِّي أَينَ "الجُنَّةُت"...؟
কেননা, যখন আমি মৃত্যুবরণ করবো, তারা আমাকে উদ্দেশ্য করে বলবে, কোথায় “লাশ”?
وَلَن يَنَادُونِي بَاِسمِي....
কেউ আমাকে আমার নাম ধরে সম্বোধন করবে না,
وَعِندَما يُرِيدُونَ الصَّلاةَ عَلَيَّ سِيَقُلُونَ اُحْضُرُوا "الجَنَازَةَ" !!!
যখন তারা আমার জন্য (জানাযার) নামাজ আদায় করবে, বলবে, “জানাযাহ” নিয়ে আসো,
وَلَن يُنَادُونِي يِاسْمِي ....!
তারা আমাকে নাম ধরে সম্বোধন করবে না….!
وَعِندَما يَشْرَعُونَ بِدَفنِي سَيَقُولُونَ قَرِّبُوا المَوتَ وَلَنْ يَذكُرُوا اِسمِي ....!
আর, যখন তারা দাফন শুরু করবে বলবে, মৃতদেহকে কাছে আনো, তারা আমার নাম ধরে ডাকবে না…!
لِذَلِكَ لَن يَغُرَّنِي نَسبِي وَلا قَبِيلَتِي وَلَن يَغُرَّنِي مَنْصَبِي وَلا شَهرَتِي ....
এজন্যই দুনিয়ায় আমার বংশপরিচয়, আমার গোত্র পরিচয়, আমার পদমযার্দা, এবং আমার খ্যাতি কোনকিছুই আমাকে যেন ধোঁকায় না ফেলে,
فَمَا أَتْفَهُ هَذِهِ الدُّنْيَا وَمَا أَعْظَمَ مُقَلِّبُونَ عَليهِ .....
এই দুনিয়ার জীবন কতই না তুচ্ছ, আর, যা কিছু সামনে আসছে তা কতই না গুরুতর বিষয়…
فَيا أَيُّهَا الحَيُّ الآنَ ..... اِعْلَمْ أَنَّ الحُزْنَ عَليكَ سَيَكُونُ على ثَلَاثَةٍ أَنْواعٍ:
অতএব, (শোন) তোমরা যারা এখনো জীবিত আছো,….জেনে রাখো, তোমার (মৃত্যুর পর) তোমার জন্য তিনভাবে দু:খ করা হবে,
1ــ النَّاسُ الَّذِينَ يَعْرِفُونَكَ سَطْحَيّاً سَيَقُولُونَ مِسْكِينٌ
১. যারা তোমাকে বাহ্যিক ভাবে চিনতো, তারা তোমাকে বলবে হতভাগা,
2ــ أَصْدِقَاؤُكَ سَيَحْزُنُونَ سَاعَات أَو أَيَّامَاً ثُمَّ يَعُودُونَ إِلَى حَدِيثِهِم بَلْ وَضَحِكَهُم.....
২. তোমার বন্ধুরা বড়জোর তোমার জন্য কয়েক ঘন্টা বা কয়েক দিন দু:খ করবে, তারপর, তারা আবার গল্পগুজব বা হাসি ঠাট্টাতে মত্ত হয়ে যাবে,
3ــ الحُزْنُ العَمِيقُ فِي البَيْتِ سَيَحْزُنُ أَهْلِكَ أُسْبُوعاً.... أُيسْبُوعَينِ شَهراً ....شَهرَينِ أَو حَتَّى سَنَةً وَبَعْدَهَا سَيَضْعُونَكَ فِي أَرْشِيفِ الذَّكَرِيّاتِ !!!
৩. যারা খুব গভীর ভাবে দু:খিত হবে, তারা তোমার পরিবারের মানুষ, তারা এক সপ্তাহ, দুই সপ্তাহ, একমাস, দুইমাস কিংবা বড় জোর একবছর দু:খ করবে। এরপর, তারা তোমাকে স্মৃতির মণিকোঠায় যত্ন করে রেখে দেবে!!!
اِنْتَهَتْ قِصَّتُكَ بَينَ النَّاسِ وَبَدَأَتْ قِصَّتُكَ الحَقِيْقِيّةِ وَهِيَ الآخِرةُ ....
মানুষদের মাঝে তোমাকে নিয়ে গল্প শেষ হয়ে যাবে, অত:পর, তোমার জীবনের নতুন গল্প শুরু হবে, আর, তা হবে পরকালের জীবনের বাস্তবতা,
لَقدْ زَالَ عِندَكَ:
তোমার নিকট থেকে নি:শেষ হবে (তোমার):
1ــ الجَمَالُ
১. সৌন্দর্য্য
2ــ والمَالُ
২. ধনসম্পদ
3ــ والصَحَّةُ
৩. সুস্বাস্থ্য
4ــ والوَلَدُ
৪. সন্তান-সন্তদি
5ــ فَارقَت الدَّور
৫. বসতবাড়ি
6ــ القُصُورُ
৬. প্রাসাদসমূহ
7ــ الزَوجُ
৭. জীবনসঙ্গী
وَلَمْ يَبْقِ إِلَّا عَمَلُكَ
তোমার নিকট তোমার ভালো অথবা মন্দ আমল ব্যতীত আর কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না,
وَبَدَأَتِ الحَيَاةُ الحَقِيقَيَّةُ
শুরু হবে তোমার নতুন জীবনের বাস্তবতা,
وَالسُّؤَالُ هُنا : ماذا أَعْدَدْتَ لِلقُبَرِكَ وَآخِرَةَكَ مِنَ الآنَ ؟؟؟
আর, সে জীবনের প্রশ্ন হবে: তুমি কবর আর পরকালের জীবনের জন্য এখন কি প্রস্তুত করে এনেছো?
هَذِهِ حَقِيقَةٌ تَحْتَاجُ إلى تَأمَّلٍ
*ব্স্তুত: এই জীবনের বাস্তবতা সম্পর্কে তোমাকে গভীর ভাবে মনোনিবেশ করা প্রয়োজন,*
لِذَلِكَ أحرصُ عَلى :
এজন্য তুমি যত্নবান হও,
1ــ الفَرَائِضِ
১. ফরজ ইবাদতগুলোর প্রতি
2ــ النَّوَافِلِ
২. নফল ইবাদতগুলোর প্রতি
3ــ صَدَقَةُ السِّرِّ
৩. গোপন সাদাকাহ’র প্রতি
4ــ عَمَلُ الصَّلِحِ
৪. ভালো কাজের প্রতি
5ــ صَلاةُ اللَّيلِ
৫. রাতের নামাজের প্রতি
لَعَلَّكَ تَنْجُو....
যেন তুমি নিজেকে রক্ষা করতে পারো….
إِنْ سَاعَدْتَ عَلى تَذْكِيرِ النَّاسِ بِهَذِهِ المُقَالَةِ وَأنتَ حَيُّ الآنَ سَتَجِدُ أَثَرَ تَذكِيرِكَ في مِيزَانِكَ يَومَ القِيامَةِ بِإِذْنِ اللهِ .....
এই লিখাটির মাধ্যমে তুমি মানুষকে উপদেশ দিতে পারো, কারণ তুমি এখনো জীবিত আছো, এর ফলাফল আল্লাহ’র ইচ্ছায় তুমি কিয়ামত দিবসে মিজানের পাল্লায় দেখতে পাবে,
قال الله تَعالى : ((فَذَكِّرْ فَإِنَّ الذِّكْرَ تَنْفَعُ المُؤمِنِينَ))
আল্লাহ বলেন: ((আর স্মরণ করিয়ে দাও, নিশ্চয়ই এই স্মরণ মুমিনদের জন্য উপকারী))
لِمَاذَا يَخْتَارُ المَيِّتِ "الصَّدَقَةَ لو رَجَعَ للدُّنيا....
তুমি কি জানো কেন মৃতব্যক্তিরা সাদাকাহ প্রদানের আকাঙ্খা করবে, যদি আর একবার দুনিয়ার জীবনে ফিরতে পারতো?
كَمَا قَالَ تَعَالى: ((رَبِّ لَو لا أَخَّرْتَنِي إلى أَجَلٍ قَرِيبٍ فَأَصَّدَّقَ....))
আল্লাহ বলেন: ((হে আমার রব! যদি তুমি আমাকে আর একটু সুযোগ দিতে দুনিয়ার জীবনে ফিরে যাবার, তাহলে আমি অবশ্যই সাদাকাহ প্রদান করতাম….))
ولَمْ يَقُلْ :
তারা বলবে না,
لِأعتَمَرَ
উমরাহ পালন করতাম,
أو لِأُصَلَّي
অথবা, সালাত আদায় করতাম,
أو لِأصُومُ
অথবা, রোজা রাখতাম,
قالَ العُلَماءُ : ما ذَكَرَ المَيِّتُ الصَّدَقَةَ إلا لِعَظِيمِ مَا رَأى مِن أَثَرِها بَعدَ مَوتِهِ
আলেমগণ বলেন: মৃতব্যক্তিরা সাদাকাহ’র কথা বলবে, কারণ তারা সাদাকাহ প্রদানের ফলাফল তাদের মৃত্যুর পর দেখতে পাবে,
فَأَكْثِرُوا مِنَ الصَّدَقَةِ وَمِن أَفضَلِ ما تَتَصَدَّقُ بِهِ الآنَ 10 ثَوَان مِنْ وَقْتِكَ لِنشَرِ هذا الكَلامَ بِنِيَّةِ النَّصْحِ فَالكَلمَةُ الطَّيِّبَةُ صَدَقَةٌ.
আর, গুরুত্ববহ এই সাদাকাহ’র কাজটি তুমি এই কথাগুলো ছড়িয়ে দিয়ে মাত্র ১০ সেকেন্ড সময় ব্যয় করে করতে পারো, যদি তোমার উদ্দেশ্য হয় এর মাধ্যমে মানুষকে উপদেশ প্রদান করা। কারণ, উত্তম কথা হল এক ধরণের সাদাকাহ।-সংগৃহীত
(Copied and circulated as part of Dawaah)
*যদি হয় জীবনের শেষ রামাদান...*
(ঘটনাটি ছাপা হয়েছিল একটি ইংরেজি ম্যাগাজিনে)।
একটু পরেই আযান হবে। মিনার থেকে ভেসে আসবে মুয়াজ্জিনের সকরুণ সুর। এই সুর প্রতিধ্বনিত হবে *মসজিদে নববীর* প্রতিটি দেয়ালে।
*আজকেই রামাদানের শেষ দিন।* অশেষ রহমতের মাসের শেষ সূর্যটা ইতোমধ্যে অস্ত চলে গেছে। অপেক্ষা আর কেবল খানিকটা সময়ের। *মুয়াজ্জিনের আযান হলেই পরিসমাপ্তি ঘটবে রামাদান মাসের।*
*মসজিদে নববীর বারান্দার এক কোণে বসে আছে একজন মুসল্লী।* চেহারায় উদাসীনতার ছাপ। চোখ ছলছল। আগামীকাল ঈদ হবে। শহরজুড়ে থাকবে খুশির জোয়ার। মানুষের হৃদয়ে বইবে আনন্দের প্লাবন। কথা ছিলো, লোকটিও ঈদের খুশিতে মাতোয়ারা হবে। আনন্দে আত্মহারা হবে তার দেহ-মন। কিন্তু, *তার হৃদয়ের ভিতরে বিচ্ছেদের অন্তর্দহন।* প্রিয় বস্তুকে হারিয়ে ফেলার পরে হৃদয় যেভাবে হাহাকার করে উঠে, প্রিয়তমার বিয়োগে যেমন করে কেঁপে উঠে প্রেমিকের মন- ঠিক সেভাবেই *লোকটির হৃদয়ের গভীরে এক কঠিন বিচ্ছেদ বিয়োগের উথাল-পাতাল অবস্থা।*
মুয়াজ্জিন ‘আল্লাহু আকবার’ বলে গলা ছাড়ার সাথে সাথে লোকটা হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো। *সে এক হৃদয়বিদারক দৃশ্য!* শেষ ইফতার আজ। মুখে কোনোভাবে একটা খেঁজুর গুজে দিয়ে কান্না থামানোর বৃথা চেষ্টা করে যাচ্ছে লোকটি। পারছেনা। *বুকের কোথায় যেন লুকিয়ে থাকা সব আবেগ, সব কান্না আজ বাঁধ ভাঙা জোয়ারের মতো ছুটে আসছে।* এই কান্না যেন থামবার নয়। এই আঁখিজল যেন ফুরোবার নয়। কোন সে কষ্ট যা তাকে এমন খুশির মুহুর্তেও বিষাদে জর্জরিত করে দিচ্ছে? কোন সে বিয়োগ-ব্যাথা যা তার হৃদয়কে করছে ক্ষত-বিক্ষত? কোন সে জিনিস যা হারিয়ে ফেলার শোকে আজ শোকাতুর তার অন্তর?
লোকটা কাঁদছে, কারণ- আজ রামাদান শেষ হয়ে গেলো। গুণে গুণে ত্রিশটা দিন চলে গেলো চোখের পলকে। এই মাসে অবিরাম রহমত বর্ষণ হয়।
অথচ, *রহমত পাওয়ার মতন কোন আমল কি সে করেছে? করলেও তা কি আল্লাহর সুবহানাহু ওয়া’তায়ালা কবুল করেছেন?* এই মাসে অসংখ্য পাপী বান্দাদের মাফ করে দেওয়া হয় যারা আন্তরিকভাবে আল্লাহর কাছে মাফ চায়। *মাফ পেয়ে যাওয়া সেই বান্দাদের তালিকায় কি তার নাম উঠেছে?* যদি না উঠে, তাহলে পরেরবার উঠানোর সুযোগ কি সে পাবে?
*রামাদান মাস নিজেকে পরিশুদ্ধ, নিজের গুনাহগুলো ধুয়েমুছে নেওয়ার সবচেয়ে সেরা মাস। এই সেরা মাসটি আজ বিদায় নিচ্ছে। সে কি পেরেছে নিজেকে পরিশুদ্ধ করতে?* নিজের বিগত দিনের পাপগুলো, গুনাহগুলো, অন্যায়গুলোকে ধুয়েমুছে দিতে? *এমন অপরাধবোধ, এমন ভয় ভয় চিন্তা থেকেই লোকটি কাঁদছে*...
*লোকটির জায়গায় নিজেকে কল্পনা করার চেষ্টা করলাম।* চিন্তা করলাম- জীবনের কতোগুলো রামাদান আমি পশ্চাতে ফেলে এসেছি। প্রতিটি রামাদান ছিলো আমার জন্য একেকটি সুযোগ। পাপ আর পঙ্কিলতার গহ্বর থেকে নিজেকে মুক্ত করার সুবর্ণ সেই সুযোগগুলোর কতো যাচ্ছেতাই ব্যবহারই না আমি করেছি।
*আমাদের রামাদানগুলোর অর্ধেক সময় ঘুমের মধ্যেই কেটে যায়।* বাকি অর্ধেক কেটে যায় ইফতারি আর সেহেরির বাহারি আয়োজন এবং ঈদের শপিং করতে করতে। জীবনের এই যে এতোগুলো রামাদান পার করে এলাম, কোন এক রামাদানের জন্য কি আমার একটিবারের জন্যও মন খারাপ হয়েছে? দুঃখবোধ হয়েছে? কান্না পেয়েছে? পাপ মোচন করাতে পেরেছি কি না- এই অনুশোচনাবোধ থেকে কখনো কি আমি নিজেকে প্রশ্ন করেছি? মনে পড়েনা।
রামাদান আমাদের কাছে অন্য দশটা সাধারণ মাসের মতোই।
রামাদানেও মিথ্যা কথা বলি, লোক ঠকাই, মানুষকে ধোঁকা দিই, মানুষের হক নষ্ট করি, অন্যকে কষ্ট দিয়ে বেড়াই।
রামাদান আমাদের মাঝে যে বিশাল রহমত আর মাগফিরাতের ডালা নিয়ে আসে, তার কতোটুকু আমরা কুড়িয়ে নিতে পারি?
*এই মাস হলো কুরআন নাযিলের মাস।* আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া’তায়ালা, যিনি সমগ্র আসমান-যমীনের রব, মালিক- তিনি অনুগ্রহ করে আমাদের জন্য একটি জীবনবিধান নাযিল করেছেন এই মাসেই।
*সারা বিশ্বজাহানের যিনি প্রভু, তিনি আমার জন্য তাঁর কথা, তাঁর বাণী সবচেয়ে সম্মানিত ফেরেশতার মাধ্যমে, সবচেয়ে সম্মানীত নবীর কাছে পাঠিয়েছেন- এই ব্যাপারটা আমাকে কি একেবারেই রোমাঞ্চিত, বিমোহিত করে না?* যে মাসটাতে কুরআন নাযিল হয়েছে, সেই মাসে কুরআনের সাথে আমার সম্পর্ক কতোটুকু হয়?
*রাসূল সাল্লাললাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ভয় জাগানিয়া একটি হাদীস আছে।* যতোবার এই হাদীসটা আমার সামনে আসে, ততোবারই আমি ভিতর থেকে কুঁকড়ে যাই। হাদীসটা এরকম,
একবার রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মসজিদের মিম্বারের প্রথম সিঁড়িতে পা রাখার সাথে সাথে বললেন, ‘আমীন’। এরপর দ্বিতীয় সিঁড়িতে পা রাখলেন এবং বললেন, ‘আমীন’। তৃতীয় সিঁড়িতে পা রাখার সাথে সাথে বললেন, ‘আমীন’। সাহাবীরা জিজ্ঞেস করলো, ‘হে আল্লাহর রাসূল। আপনাকে তিন তিনবার আমীন বলতে শুনলাম। ইতোপূর্বে আপনাকে আর এরকম বলতে শুনিনি আমরা’। তখন আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘আমি যখন প্রথম সিঁড়িতে পা রাখলাম, তখন জিবরাঈল বললো, *‘ধ্বংস হোক সে ব্যক্তি যে রামাদান মাস পেলো অথচ নিজের গুনাহুগুলো মাফ করিয়ে নিতে পারলো না’।* জিবরাঈলের এই কথা শুনে আমি বললাম, ‘আমীন’। এরপর জিবরাঈল আবার বললো, ‘ধ্বংস হোক সেই ব্যক্তি, যার সামনে আপনার নাম উচ্চারিত হলো কিন্তু সে আপনার উপর দরূদ পাঠ করলো না’। আমি বললাম, ‘আমীন’। এরপর জিবরাঈল আবার বললো, ‘ধ্বংস হোক সেই ব্যক্তি, যে বাবা-মা দুইজনকে, অথবা যেকোন একজনকে জীবিত অবস্থায় পেয়েও (তাদের সেবা করে) জান্নাত লাভ করতে পারলো না’। আমি বললাম, ‘আমীন’।
জিবরাঈল আলাইহিস সালাম হলেন ফেরেশতাদের মধ্যে সবচেয়ে সম্মানীত, উঁচু পর্যায়ের ফেরেশতা, যাকে দিয়ে আল্লাহতায়ালা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে ওহী পাঠিয়েছেন। *সেই জিবরাঈল আলাইহিস সালাম তাদের জন্য বদদোয়া করছেন যারা রামাদান মাস পেয়েও নিজের গুনাহগুলো মাফ করিয়ে নিতে পারেনা। আরো ভয়ঙ্কর ব্যাপার হচ্ছে, সেই বদদোয়াতে ‘আমীন’ বলেছেন স্বয়ং রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম।* তাহলে, এই বদদোয়া বিফলে যাওয়ার কি বিন্দু পরিমাণও সুযোগ আছে? নেই।
তার মানে, *রামাদান মাস হলো ‘উইন অর লস’ এর মাস। হয় জেতো, নয় হারো।* এই দুটো ছাড়া আর কোন অপশন খোলা নেই।
আমি এমন অনেককেই চিনি যারা গত রামাদানে বেঁচে ছিলো কিন্তু এই রামাদানে তারা কবরের বাসিন্দা।
এমন অনেক মহিলাই এখন অন্ধকার কবরের অধিবাসী হয়ে আছে যারা গতবছর রামাদানের সময়গুলো টিভি সিরিয়াল দেখতে দেখতে পার করেছে। এমন অনেক যুবক আছে যারা গতবছর রামাদানের রাতগুলো ফুটবল ম্যাচ, ক্রিকেট ম্যাচ দেখতে দেখতে পার করেছে, কিন্তু আসন্ন রামাদানের আগেই তারা দুনিয়ার পাঠ চুকিয়ে চলে গেছে ওপারে।
তারা চাইলেও আর কখনো রামাদান মাস পাবেনা। কখনো চাইলেও রামাদানের একটি রাতে কুরআন তিলাওয়াত করার সুযোগ পাবেনা। রামাদানের কোন এক রাতে দুই রাক’আত কিয়ামুল লাইল পড়ার সুযোগ আর কোনোদিন তাদের দেওয়া হবেনা। বুক চাপড়াতে চাপড়াতে ক্ষত-বিক্ষত হলেও একটিবারের জন্যও তাদেরকে আর লাইলাতুল কদরের রাতে সালাত পড়ার, কুরআন তিলাওয়াত করার, যিকির করার সুযোগ দেওয়া হবেনা। কোন ধনাঢ্য ব্যক্তিকে দেওয়া হবেনা তার অপরিশোধিত যাকাত আদায় করে যাওয়ার সুযোগ। কোন স্বাস্থ্যবান ব্যক্তিকে দেওয়া হবেনা তার মিস করে যাওয়া সিয়ামগুলো পালন করে যাওয়ার সুযোগ। নিদেনপক্ষে, তাওবাটুকু করে যাওয়ার সুযোগটাও কাউকে আর দেওয়া হবেনা। কারণ, সময় ফুরিয়ে গেছে...
*আজ আমরা যারা বেঁচে আছি, এই রামাদানটাই হতে পারে আমাদের জীবনের শেষ রামাদান।* হতে পারে এটাই আমাদের জীবনে আসা শেষ সুযোগ। হতে পারে আল্লাহর পক্ষ থেকে পাওয়া এটাই আমাদের জন্য শেষ সময়। যদি এই রামাদান আমাদের জীবনের শেষ রামাদান হয়, তাহলে এই রামাদান ঠিক কিভাবে কাটানো উচিত? রামাদানের একটা মাসকে কিভাবে মূল্যায়ণ করা উচিত? ফরয সালাত, সিয়াম, কিয়ামুল লাইল, কুরআন তিলাওয়াত, দান-সাদাকা, যাকাত-ফিতরা- সবকিছু ঠিক কিভাবে করা উচিত? জীবনের শেষ সুযোগটুকু কি আমরা কাজে লাগাবো না? যদি ব্যর্থ হই, তাহলে কি হবে? তাহলে আফসোস করে বলতে হবে,
*‘হায়! যদি আমি আখিরাতের জন্য কিছু আমল করতাম’। (সূরাহ আল ফাজর, আয়াত : ২৪)*
🎀আসসালামু আলাইকুম 🎀
🌙✨
تَقَبَّلَ اللهُ مِنَّا وَ مِنْكُم
💕"তাকাব্বাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম"
অর্থ:আল্লাহ আমাদের সবার নেক ইবাদত-বন্দেগী কবুল করুন!
ঈমানের ক্ষেত জুড়ে তাকওয়ার বীজ,
সিয়ামের বারিতে সিক্ত -সজীব।
দহনে দহনে গড়ি ফুলেল বাগান,
মুমিনের ঈদ মানে-জান্নাতী রাইয়্যান।
🌙 ঈদ মোবারক🌙
ছোট একটি মোনাজাত
ইয়া রহমান, ইয়া রহিম, ইয়া জাল জালালি ওয়াল ইকরাম,"ইয়া গাফফার" ইয়া সাত্তার, "ইয়া জব্বার "ইয়া ওয়াদুদ" ইয়া আজিজু "ইয়া আজিম "ইয়া হান্নানু "ইয়া মান্নানু, হে আমার রব,"হে আমার সৃষ্টি কর্তা।
আপনার পবিত্র নামগুলোর উছিলায়, আপনার তাওহীদের সাক্ষী " লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু" এর উছিলায়, আপনার বন্ধু ও হাবীব হযরত মুহম্মদ (সঃ) এর উম্মত হিসেবে আমাদের সকলের মনের নেক ইচ্ছা গুলো পূরণ করে দেন।
অভাব,ঋণ দূর করে দিন। যারা যারা বিপদে আছে তাদের সকল কে আপনি বিপদ থেকে মুক্ত করে দিন।
আমাদের মানসিক কষ্ট দুঃখ দূর করে দিন।আমাদের রিযিকে বরকত দান করুন।বাবা মা পরিবারের সকলকে নেক হায়াত দান করুন।
সকলে বলুন আমিন। 🤲🤲
একটি অসাধারন শিক্ষানীয় গল্প:-
একদিন একটা গরীব ছেলে রাস্তায় হাঁটছিলো। সে তার লেখাপড়ার খরচ জোগাড় করার জন্য ঘরে ঘরে গিয়ে বিভিন্ন জিনিস বিক্রি করতো। ছেলেটার গায়ে ছিলো একটা জীর্ন মলিন পোষাক। সে ভীষণ ক্ষুধার্ত ছিলো। সে ভাবলো যে পরে যে বাড়ীতে যাবে, সেখানে গিয়ে সে কিছু খাবার চাইবে। কিন্তু সে যখন একটা বাড়ীতে গেল খাবারের আশা নিয়ে, সে ঘর থেকে একজন সুন্দরী মহিলা বেরিয়ে এলেন। সে খাবারের কথা বলতে ভয় পেলো। সে খাবারের কথা না বলে শুধু এক গ্লাস জল চাইলো। মহিলা ছেলেটার অবস্থা দেখে বুঝলেন যে সে ক্ষুধার্থ। তাই তিনি ছেলেটাকে একটা বড় গ্লাস দুধ এনে দিলেন। ছেলেটা আস্তে আস্তে দুধটুকু খেয়ে বলল" আপনাকে আমার কত টাকা দিতে হবে এই দুধের জন্য?" মহিলা বলল "তোমাকে কোন কিছুই দিতে হবে না। ছেলেটা বলল "আমার মা আমাকে বলেছেন কখনো করুণার দান না নিতে। তাহলে আমি আপনাকে মনের অন্ত:স্থল থেকে ধন্যবাদ দিচ্ছি।" ছেলেটার নাম ছিলো স্যাম কেইলি। স্যাম যখন দুধ খেয়ে ঐ বাড়ি থেকে বের হয়ে এল, তখন সে শারীরিকভাবে কিছুটা শক্তি অনুভব করলো। স্যাম এর বিধাতার উপর ছিলো অগাধবিশ্বাস । তাছাড়া সে কখনো কিছু ভুলতো না।
অনেক বছর পর ঐ মহিলা মারাত্মকভাবে অসুস্থ হয়ে পরলো। স্থানীয় ডাক্তাররা তাকে সুস্থ করতে চেষ্টা করেও ব্যার্থহল । তখন তাকে পাঠানো হলো একটা বড় শহরের নামকরা হাসপাতালে যেখানে দুলর্ভ ও মারাত্মক রোগ নিয়ে গবেষণা ও চিকিৎসা করা হয়।
ডা: স্যাম কেইলি কে এই মহিলার দায়িত্ব দেওয়া হলো। যখন ডাঃ স্যাম কেইলি শুনলেন যে মহিলা কোন শহর থেকে এসেছেন, তার চোখের দৃষ্টিতে অদ্ভুত একটা আলো যেন জ্বলে উঠলো। তিনি তাড়াতাড়ি ঐ মহিলাকে দেখতে গেলেন। ডাক্তারের এপ্রোন পরে তিনি মহিলার রুমে ঢুকলেন এবং প্রথম দেখাতেই তিনি মহিলাকে চিনতে পারলেন। তিনি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলেন যে , যেভাবেই হোক তিনি মহিলাকে বাঁচাবেনই। ঐ দিন থেকে তিনি ঐ রোগীর আলাদাভাবে যত্ন নেওয়া শুরু করলেন। অনেক চেষ্টার পর মহিলাকে বাঁচানো সম্ভব হলো। ডাঃ স্যাম কেইলি হাসপাতালের একাউন্টেন্টকে ঐ মহিলার চিকিৎসার বিল দিতে বললেন, কারণ তার সাইনছাড়া ঐ বিল কার্যকর হবে না। ডাঃ স্যাম কেইলি ঐ বিলের কোণায় কি যেনো লিখলেন এবং তারপর সেটা ঐ মহিলার কাছে পাঠিয়ে দিলেন। মহিলা ভীষণ ভয় পাচ্ছিলেন বিলটা খুলতে কারণ তিনি জানেন যে এতো দিনে যে পরিমাণ বিল এসেছে তা তিনি সারা জীবনেও জীবনেও শোধ করতে পারবেন না।
অবশেষে তিনি বিলটা খুললেন এবং বিলের পাশ দিয়ে লেখা কিছু কথা তার দৃষ্টি আকর্ষণ করলো। তিনি পড়তে লাগলেন "আপনার চিকিৎসার খরচ হলো পুরো এক গ্লাস দুধ" এবং বিলের নিচের সাইন করা ছিলো ডাঃ স্যাম কেইলির নাম। মানুষকে সাহায্য করুন, যতটা
আপনার পক্ষে সম্ভব। হয়তো এই অল্প সাহায্যের ফল হিসেবে আপনি এমন কিছু পাবেন যা কখনো আপনি চিন্তাই করেননি!
এক বোনের স্বামী
নন মাহরাম মেহমানে ভর্তি বাসায় যখন মাঝে মাঝে রান্নাঘরেই দুপুরের খাবারটা সেরে নেই আমি; আর উনি অতিথি অ্যাপায়নের ব্যস্ততার মাঝেও ঠিক এসে জিজ্ঞেস করেন "দই দিবো নাহ সেভেন আপ খাবেন?" তখন মনে হয় পৃথিবীতে বুঝি আমার মতো ভাগ্যবতী আর কেউ নেই! কয়জন পারে সবটা সামলে নিয়ে স্ত্রীর প্রতি পূর্ণ খেয়াল রাখতে?
পরিবারের অন্য সদস্যরা যখন বলে- “তোর জ্যাঠা/মামা তো বাবার মতোই, তাদের সামনে যেয়ে অন্তত একটু সালাম দিলে কি এমন ক্ষতি হয়?” তখন মানুষটার জোর গলায় ‘প্ৰয়োজন নাই’ বলাটা আমাকে এক অন্য রকম সুখ দেয়। এ যেনো এক জান্নাতী সুখ!
কয়জন পারে কাউকে তোয়াক্কা না করে স্ত্রীর পর্দা রক্ষার দায়িত্ব টা ঠিক পরিপূর্ণ ভাবে পালন করতে?
এ যেনো এমন এক অব্যক্ত বাক্য—
“আমার আহলিয়াকে কেবল আমি দেখবো, তার অবয়ব একমাত্র আমার দৃষ্টির মধ্যেই সীমাবদ্ধ, অন্য কেউ দেখবে তার প্রশ্নই আসে না!”
[ইসলাম নারীকে কতোটা দামী মনে করে! কতোটা সম্মান দিয়েছে! যদি প্রত্যেকটা নারী তা বুঝতো তাহলে এমন একজন জীবনসঙ্গী পাওয়ার জন্য প্রতিনিয়ত রবের দরবারে কেঁদে কেঁদে বুক ভাসাতো।]
বারাকাল্লাহু ফিহ্।
লেখাঃ সংগৃহীত
রমাদানের শেষ দশকের জন্য দশটি টিপসঃ
ইবনুল জাওযি রাহিমাহুল্লাহ বলেন,
“ যখন ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতায় ঘোড়া বুঝতে পারে তার শেষ সীমান অতি নিকটবর্তী, তখন সে নিজের সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা দিয়ে দৌড় প্রতিযোগিতায় জেতার আপ্রাণ চেষ্টা চালায়। তুমি একটা চতুষ্পদ জন্তু থেকে বোকা হোয়ো না। নিশ্চিত ভাবেই প্রতিটি কাজের মূল্যায়ন তার সমাপ্তির উপর নির্ভরশীল। তাই তুমি যদি রমাদানের সূচনায় ভালো করতে না পারো তাহলে এর বিদায়ের সময় গুলো থেকে সর্বোচ্চ উপকৃত হতে চেষ্টা কোরো। ”
১. রমাদানের এই দশ রাত সারা বছরের মধ্যে শ্রেষ্ঠ রাত আর এর মধ্যে একটি রাত হাজার মাসের চাইতেও উত্তম। এই সময়ে করা প্রতি কাজের বিনিময় অন্য সময়ের তুলনায় গুনে গুনে বহুগুনে বেশি পাবেন। আমরা যেন এই সময় গুলো থেকে সর্বোচ্চ এডভ্যান্টেজ নিতে চেষ্টা করি। যদি আপনি রমাদানের প্রথম বিশ দিন সেইভাবে প্ল্যানিং অনুয়ায়ী কাটাতে পারেন নি তাহলে আপনার জন্য এই দশ দিন সেটা রিকভার করার জন্য রয়েছে অফুরন্ত সুযোগ। আল্লাহর রাসূল এই সময়ে নিজের পাজামার ফিতা শক্ত করে বেঁধে নিতেন আর সারারাত জেগে ইবাদত করতেন। আমরা ও যেন তাই চেষ্টা করি।
এই সময় ব্যাপী এই দু'আ সবচাইতে বেশি পাঠ করবেন।
اللهم إنك عفو تحب العفو فاعفواعني
(আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুওউন,তুহিব্বুল আফওয়া ফা'অফু আন্নি)
যাদের মুখস্থ নেই মুখস্থ করে নিবেন। ছোট এবং সহজ দুয়া।
২. যেহেতু লাইলাতুল কদরের ডেইট ফিক্সড করে দেওয়া হয়নি।সেক্ষেত্রে লাইলাতুল কদর পেতে হলে শেষ দশকের প্রতিটি রাত জেগে ইবাদত করুন। রাতের ঘুম টোটালি পরিহার করুন। দিনে ঘুমিয়ে পুষিয়ে নিবেন ইনশাআল্লাহ্।
ডিপলি চিন্তা করুন আপনাকে এক রাতে ইবাদাত করার বিনিময়ে হাজার মাসের সওয়াব দেওয়া হবে যা বছরের হিসেবে ৮৪বছর কয়েক মাস। সুবহানআল্লাহ্! আপনি সে ব্যাপারে তেমন সিরিয়াস না! চিন্তা করুন এর বিনিময়ে আপনাকে যদি কেউ এই অফার দিত এক রাতে ইবাদত করার বিনিময়ে কোটি টাকা প্রদান করা হবে সেক্ষেত্রে কি আপনি এমন অলস, নির্বিকার থাকতেন?
প্রকৃতপক্ষে এখনো আমরা আল্লাহর সাথে ব্যবসা বুঝে উঠতে পারে নি।
৩. এই রাতকে ভাগ্যরজনী বলা হয়। আলিমদের মতে এই রাতে বান্দার আগামী এক বছরের তাকদীর লিপিবদ্ধ করা হয়।
তাই দুয়ার মাধ্যমে আল্লাহর কাছ থেকে নিজের উত্তম রিযিক,নিজের ব্যাপারে উত্তম ফায়সালা আর নিজের যা কিছু দরকার তা চেয়ে নিতে আমরা যেন ভুল না করি।
৪. যেসমস্ত বিষয় গুলো দুয়া করব সেইটা আগে থেকেই যেন আমরা নোট করে নেই। অনেক সময় আল্লাহর কাছ হাত তুললে দুই তিন মিনিট বলার পর আমাদের দুয়ার আর অবজেক্ট থাকে না। নোট করে নিলে এইটা দুয়া করার ক্ষেত্রে অনেক সহায়ক হবে ইনশাআল্লাহ্।
৫. এই কয়েকটা দিন অন্তত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুক,হোয়াটস এপ,ইমো সহ যাবতীয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে ডিস্টেইন্স মেইন্টেন করে চলার চেষ্টা করি। বিনা প্রয়োজনে ইউটিউব ঘাটাঘাটির বদ অভ্যাস যাদের আছে তারা সেটা ত্যাগ করব ইনশাআল্লাহ্।
৬. মনে রাখবেন এই রাত এত মহিমান্বিত হওয়ার মূল কারণ এই রাতে কুর'আন নাযিল হয়েছে। তাই এই সময়ে বেশি পরিমাণ কুর'আন তিলাওয়াত করবেন। সাথে কুর'আনের তাদ্দাবুর,তর্জমা পড়তে চেষ্টা করবেন।
সাথে তাওবাহ, ইস্তিগফার,যিকির তো থাকবেই বিইযনিল্লাহ্।
৭. দুনিয়াবি দৈনন্দিন কাজকর্ম গুলো করার ক্ষেত্রে সবর করুন আর মনে মনে আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করুন। নিয়্যাত ঠিক রেখে দুনিয়াবি প্রয়োজনীয় কাজ কর্মে লিপ্ত হলে সেখান থেকে ও মিলবে আল্লাহর সন্তুষ্টি।
যথাসম্ভব কাজ গুলোকে সংক্ষিপ্ত করে নিবেন। ভাই বোনেরা, ভুলেও এই সময় মার্কেটে কিংবা শপিং মল অন্য কোথায় ও বের হবেন না।
৮. সংখ্যায় যাই হোক এই দশদিনের সময়ে নিজের দান সদকার হাত প্রসারিত করুন। আপনি তাহলে নিশ্চিত হয়ে যাবেন আপনার দান লাইলাতুল কদরের মধ্যেই হয়েছে বিইযনিল্লাহ্।
৯. যাদের সম্ভব হয় ইতিকাফ করতে পারেন। অনেক ভাই বোন ইতিকাফ করার ইচ্ছা থাকলে ও পড়াশোনা জব বা বিভিন্ন ব্যস্ততায় সম্ভব হয়ে উঠেনি। এইবার সেই প্রেক্ষাপটে অনেকের অফিস, স্কুল, কলেজ,ভার্সিটি বন্ধ সেই ক্ষেত্রে ইতিকাফেরে সিদ্ধান্ত আল্লাহর উপর তাওয়াককুল করে নিয়ে ফেলুন। জীবনে একবার লাইলাতুল কদর নসীব হলে আর কি লাগে বলুন?
১০. নিজে আমল করার পাশাপাশি নিজের ভাই বন্ধু পরিবার সহ সবাইকে উৎসাহিত করুন।এই দশটি দিনকে সিরিয়াসলি নেওয়ার জন্য। আমরা জানিনা আগামী রমাদান আমরা আদৌ পাবো কিনা। চিন্তা করুন কত মানুষ পরিকল্পনা করে রেখেছিল এই রমাদানে গতবারের তুলনায় বেশি ইবাদত করার জন্য অথচ আজ তারা মাটির নিচে। তাদের সেই সুগোটি আর নেই। আমাদের যাদের এখনো সুযোগ আছে আমরা যেন সময় থাকতে তা কাজে লাগাই বিইজনিল্লাহ্। ©
শীঘ্রই শুরু হতে যাচ্ছে রামাদানের শেষ দশক। সেই সাথে শুরু হতে যাচ্ছে মহিমান্বিত সেই রজনী, অর্থাৎ লাইলাতুল ক্বদরকে খুঁজে পাওয়ার মিশন।
সালাত, যিকর, সাদাকাহ, দুআ, কুরআন তিলাওয়াত ইত্যাদি যেটাই করা হবে না কেন এই রাতে, সাওয়াব বেড়ে যাবে হাজার গুণ! এত সুবর্ণ সুযোগ কি হাতছাড়া করা যায়?
এই দশদিন ইবাদাত করবেন আপনার নিজের সামর্থ অনুযায়ী। তা সফলভাবে যেন করতে পারেন সেজন্য থাকছে কিছু টিপস-
🌙 দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্নতা :
কোয়ালিটিফুল ইবাদাতের জন্য প্রথমেই দুনিয়াবি চিন্তা ও অপ্রয়োজনীয় কাজ থেকে আলাদা হয়ে যাওয়া উচিত।
• বেস্ট হল মসজিদে ইতিকাফ করা। তবে ইচ্ছা থাকলেও সেই সুযোগ হয়তো হবে না অনেকেরই। সেক্ষেত্রে সম্ভব হলে বাসার ভেতরে আলাদা রুমে, একাকী ইবাদত করতে পারেন। এটা ইতিকাফ না, তবে মনোযোগ ধরে রাখতে সহায়ক হতে পারে।
• তাও না সম্ভব হলে দুনিয়াবি আলাপ থেকে এই কটা রাত যথাসম্ভব দূরে থাকুন, অন্তত মেসেজিং থেকে।
• মহিলাদের পক্ষে বিচ্ছিন্ন হওয়াটা কষ্টকর, সংসারের কাজ থাকেই। সেসব কাজ যথাসম্ভব দিনের বেলা গুছিয়ে নিবেন।
• ছোট বাচ্চার মায়েরা ওদের একটা ইতিকাফ টেন্ট বানিয়ে দিয়ে ওদের সেখানে বিজি রাখতে পারেন, যাতে হৈ হুল্লোড় কম করে। আর রাতের বেলা জলদি সন্তানদের ঘুম পাড়ানোর পর একটু নিরিবিলি ইবাদাত করতে পারেন।
🌙 সালাত :
ফরজ ও সুন্নাহ সালাতের পাশাপাশি নফল সালাতের প্রতিও গুরুত্ব দিবেন।
• শেষ রাতে কিয়ামুল লাইল পড়বেন, অন্তত দুই রাকাত হলেও। পরিপূর্ন বিশ্বাস ও সাওয়াবের আশা নিয়ে সালাত পড়লে তা পূর্বের সমস্ত গুনাহ মাফের উসিলা হতে পারে। (সুনান নাসাঈ)
• সালাত জামাতে পড়ার মাধ্যমে সাওয়াব ২৭ গুণ করে ফেলতে পারেন।
• রাতে ওযুর পর দু রাকাত নফল সালাত পড়তে পারেন, এই সালাতের ফজিলত অনেক।
• রুকু ও সিজদাহ দীর্ঘ করার চেষ্টা করবেন রাসূল (সাঃ) এর মত। নতুন কিছু তাসবীহ মুখস্ত করে নিন আগে।
• চেষ্টা করবেন সালাতে সর্বোচ্চ ফোকাস (খুশু) ধরে রাখতে।
🌙 কুরআন :
কুরআন নাযিলের মাসে কুরআনের সাথে অধিক সময় কাটাবেন অবশ্যই।
• কুরআন তিলাওয়াত করুন বেশি বেশি। প্রতিটি হরফের জন্য ১০ নেকি! তিলাওয়াত করতে না পারলে অন্তত অডিও শুনুন।
• তিলাওয়াতের পাশাপাশি অর্থও পড়ুন। সালাতে পড়ার সূরাগুলোর প্রতিটি শব্দের অর্থ জানুন, বিশেষ করে সূরা ক্বদরের। সম্ভব হলে সেগুলোর তাফসীরও পড়বেন এবং গভীরভাবে চিন্তা করবেন।
• নতুন কোন সূরা বা কুরআনের ছোট্ট কোন দুআ মুখস্ত করতে পারেন।
🌙 যিকর :
যখনই সময় পাবেন যিকর করবেন। চলতে-ফিরতে, শুয়ে-বসে কিংবা রান্না করতে করতেও যিকর করা যায়। কিছু মাসনূন যিকরের উদাহরণ দেয়া হল-
• ওযুর পর শাহাদাহ বাক্য- পড়লে জান্নাতের সব দরজা উন্মুক্ত হয়ে যাবে
• দুরূদ- একবার পড়লে দশবার রহমত নাজিল হয়
• লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, ওয়াহদাহু লা শারিলাহু, লাহুল মূলক ওয়া লাহুল হামদ, ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইইন ক্বদীর- একশবার পড়লে দশজন ক্রীতদাস মুক্তির সাওয়াব
• সুবহানাল্লাহি ওয়াবিহামদিহি, সুবহানাল্লাহিল আজিম- একশো বার পড়লে সমুদ্রের ফেনার মত গুনাহও মাফ হবে
• সালাত শেষে সুবহানাল্লাহ (৩৩), আলহামদুলিল্লাহ (৩৩), আল্লাহু আকবর (৩৩)- গুনাহ মাফ হয়
• লা হাওলা, ওয়ালা কুওয়াতা ইল্লা বিল্লাহ- জান্নাতের একটি অলংকার এটি।
• আস্তাগফিরুল্লাহ- রাসূল (সাঃ) দৈনিক অন্তত ৭০-১০০ বার আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইতেন
• সকাল সন্ধ্যার যিকিরসমূহ (দেখুন হিসনুল মুসলিম)- এগুলো প্রতিদিন পড়লে সমূহ বিপদ ও শয়তানের হাত থেকে আল্লাহ রক্ষা করবেন।
🌙 সাদাকা :
প্রতি রাতেই অল্প অল্প করে সাদাকাহ করার চেষ্টা করবেন।
• কত টাকা সাদাকা করবেন আগেই নির্দিষ্ট করে ফেলুন। যেহেতু বেজোড় রাতে এবং শেষের দিকে লাইলাতুল ক্বদর হওয়ার সম্ভাবনা বেশি তাই দশদিনের জন্য এভাবে টাকা ভাগ করতে পারেন- ১৫০, ১০০, ১৫০, ১০০, ২৫০, ১০০, ২৫০, ১০০, ২৫০, ১০০। এটা একটা উদাহরণ মাত্র। আপনার সুবিধা অনুযায়ী ভাগ করুন।
🌙 দুআ :
দুআ হল লাইলাতুল ক্বদরের মূল আকর্ষণ। এটিও কিন্তু এক প্রকার ইবাদাত, তাই এতে পর্যাপ্ত সময় দিন।
• দুআ লিস্ট তৈরি না করে জলদি করুন। নিজের ও আপনজনদের কি চাওয়া সব লিখে ফেলুন। মুসলিম উম্মাহকে ভুলবেন না।
• একটি দুআর শর্টলিস্ট রাখবেন। দুআ কবুলের সময় গুলোতে পড়ার জন্য। (যেমন- ইফতারের আগে, বৃষ্টির সময়, ভালো কাজের পর, আজানের পর ইত্যাদি)
• কুরআনের ও হাদিসের দুআ গুলো সব পড়বেন, প্রয়োজনে দেখে দেখে। এগুলোর মধ্যেই মোটামুটি আমাদের যা প্রয়োজন তা মোটাদাগে আছে।
• আল্লাহর সুন্দরতম নামগুলোর সাহায্যে, একাগ্রতার সাথে, কিবলামুখী হয়ে এবং দুহাত তুলে চাইবেন। নিশ্চয়ই কবুল হবে। আর কবুল না হওয়ার হলে বুঝবেন এর থেকেও উত্তম কিছু আল্লাহ আপনার জন্য লিখে রেখেছেন।
• লাইলাতুল ক্বদরের একটি বিশেষ দুআ আছে যেটা বেশি বেশি পড়বেন-
اللّٰهُمَّ إِنَّكَ عَفُوٌّ تُحِبُّ الْعَفْوَ فَاعْفُ عَنِّيْ
(আল্লাহুম্মা ইন্নাকা 'আফুউন, তু'হিব্বুল 'আফওয়া, ফা'ফু 'আন্নী)
হে আল্লাহ! তুমি ক্ষমাকারী, তুমি মাফ করতেই পছন্দ কর, অতএব তুমি আমাকে মাফ করে দাও।
🌙 ইলম অর্জন
লাগাতার ইবাদাত কষ্টকর হতে পারে, মাঝে মধ্যে দ্বীনি জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমেও সাওয়াব পেতে পারেন।
• ভালো কোন বই পড়ুন। কাগজের বই, পিডিএফ না। ফোন থেকে দূরে থাকাই উত্তম।
• সেটাও কষ্ট হলে ভালো কোন লেকচার শুনুন। লেকচারটি আগেই সেইভ করে রাখতে পারেন, যেন তখন ইন্টারনেট চালু করার প্রয়োজন না হয়।
🌙 অন্যান্য
সাওয়াব অর্জনের উপায় কি শুধু উপরের গুলোই? না। বরং আরো অনেক উপায়েই হতে পারে যদি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য করা হয়।
• সন্তানের যত্ন নেয়া, মা বাবার খেয়াল রাখা, পরিবারের জন্য রান্না করা, ছোট খাটো গৃহস্থালি কাজ করা ইত্যাদি যাই করবেন, আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য করবেন।
• দিনের বেলা আত্মীয়ের খোঁজ নিন। কারো উপর রাগ পোষণ করে থাকবেন না। আত্মীয়তার বন্ধন ছিন্ন করলে আপনার দুআ কবুল নাও হতে পারে।
• অন্তত শেষ দশদিন নিজের জিহবা ও পেটকে লাগাম দিন। কম খেলেই বেশি ইবাদাত করতে পারবেন, বিশ্বাস করুন!
• তারাবীর আগে একটু এক্সারসাইজ বা স্ট্রেচিং করে নিন। দেখবেন অনেক এনার্জি পাবেন।
• নিজেকে পরিপাটি ও সজ্জিত করা, উত্তম পোশাক পড়ার মাধ্যমেও সাওয়াব পেতে পারেন। রাতের সালাতের আগে মিসওয়াক করে, আতর মেখে নিজেকে প্রস্তুত করে নিবেন, কারণ আপনি দুনিয়ার মালিকের সামনে দাঁড়াতে যাচ্ছেন!
• ঘরটিকেও সুন্দর করে পরিষ্কার করে গুছিয়ে নিবেন। ফেরেশতারা যে মেহমান হতে পারে আপনার ঘরে!
• যেহেতু রাতে ঘুম কম হবে, দুপুরে একটু কায়লুলা বা পাওয়ার ন্যাপ নিলে ভালো হবে। তবে আবার বেশি ঘুমাবেন না।
• ছোট খাটো কোন নতুন সুন্নাহ পালনের টার্গেট নিতে পারেন। বাড়ির অন্যদেরকেও এ ব্যাপারে উৎসাহিত করতে পারেন যেন আপনার সাওয়াব আরো বৃদ্ধি পায়।
• অসুস্থতার কারণে কিছুই করতে না পারলে শুয়ে শুয়ে আল্লাহর দেয়া নিয়ামত নিয়ে ভাবুন, ইস্তিগফার এবং যিকর করুন। তবু আশা হারাবেন না। আপনার সাথে আপনারই তুলনা হবে, আর কারো সাথে না।
রাসূল (সাঃ) কোমর বেঁধে (দৃঢ়ভাবে) ইবাদাত করতেন রামাদানের শেষের দশদিন। পরিবারের অন্যদেরকেও জাগিয়ে দিতেন। আমরাও তাঁর মত চেষ্টা করবো নিজেদের সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে ইবাদাত করার, আপনজনদের সঙ্গে নিয়ে। হতে পারে এটাই আমাদের জীবনের শেষ লাইলাতুল ক্বদর।
আল্লাহ আমাদের সকলকে লাইলাতুল ক্বদর মিলিয়ে দিন ও সে রাতের প্রচেষ্টা কবুল করে নিন। আমিন।
©
সিজদায় গেলে আমরা এক ধরণের স্বস্তি অনুভব করি কিন্তু কেন ?
আল্লাহ তাআলা কুরআনে বলেন:
ٱلَّذِىٓ أَحْسَنَ كُلَّ شَىْءٍ خَلَقَهُۥۖ وَبَدَأَ خَلْقَ ٱلْإِنسَٰنِ مِن طِينٍ
"যিনি তাঁর প্রত্যেকটি সৃষ্টিকে সৃজন করেছেন উত্তমরূপে।
"(সুরা সিজদাহ ,আয়াত ৭)''
আমাদের মাথার খুলির ভিতরে মস্তিষ্কের প্রকৃত ওজন ১২০০ - ১৪০০ গ্রাম। এই পরিমাণ ওজন আমরা মাথার ভিতরে অনুভব করি না কেন? এর কারণ হলো, এটা মাথার ভিতরে সেরেব্রোস্পাইনাল নামের এক প্রকার তরলে ভাসে। সুবহানাল্লাহ!
সাধারণত আমরা জানি, কোনো জিনিস পানিতে ডুবে থাকলে তার ওজন কমে যায় এবং তা তখন খুবই কম অনুভূত হয়,সেরেব্রোস্পাইনাল ফ্লুইডে ব্রেইন ভাসতে থাকে ফলে ব্রেইনের ওজন ১২০০ গ্রামের জায়গায় ৫০ গ্রাম অনুভূত হয়।
সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো সিজদায় গেলে আমরা এক ধরণের স্বস্তি অনুভব করি, এর কারণ আমরা যখন হাটু গেড়ে সামনে ঝুকে যাই তখন আমাদের সেরেব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড মাথার সামনে চলে আসে। ব্রেইনের উপর মাসাজ প্রদান করে এবং ব্রেইনে তখন রক্ত চলাচল খুব ভালো হয় বলে স্বস্তি অনুভূত হয়।
সুবহান আল্লাহ!
১৭ ই রমাদান (ইয়ামুল ফুরকান)।
কাবার গিলাফটা মুঠো করে আঁকড়ে ধরলেন আবু জাহেল। তীব্র কন্ঠের দুআ-- “হে কাবা ঘরের রব্ব! যদি মুহাম্মদের ধর্ম মিথ্যা হয়ে থাকে তবে তাদের ধ্বংস করে দাও অথবা আমরা যদি মিথ্যার উপর থাকি তবে আমাদের ধ্বংস করে দাও।"
যুদ্ধ শুরু হলো। ভয়ংকর এক যুদ্ধ। স্থান মক্কা থেকে ১২০ আর মদিনা থেকে প্রায় ৮০ মাইল দূরের মধ্যবর্তী একটি স্থান, বদর। মুসলিমদের পক্ষ থেকে যুদ্ধ পরিচালনা করছেন সরাসরি মুহাম্মাদ(সা.)। তাঁর সাথে সৈন্য সংখ্যা ৩১৩। উট ৭০ এবং ঘোড়া মাত্র দুটি। অপরদিকে অমুসলিমদের সেনাপতি উতবা বিন রাবিআ। তাদের সৈন্য সংখ্যা এক হাজার। ঘোড়া ১০০, ৬০০ লোহার বর্ম আর অসংখ্য উট।
আল আরিসা নামের একটি পাহাড়ের নিচে মুসলিমরা ঘাঁটি গাঁড়লেন। পানির কূপগুলো এর কাছাকাছি হওয়ায় তার নিয়ন্ত্রণও পেয়ে গেলেন তারা। সেনা সমাবেশের জন্য মুহাম্মাদ(সা.) এমন একটি জায়গা বাছাই করলেন যেখানে সূর্যোদয়ের পর যুদ্ধ হলে কোনো মুসলিম সেনার চোখে সূর্যের আলো পড়বে না।
১৭ রামাদান, দ্বিতীয় হিজরি। ৩১৩ জন সাহাবা রাত কাটাচ্ছেন ‘আল আরিসার’ পাদদেশে। কেউ কেউ তাবুতে, কেউ কেউ খোলা আকাশের নিচে। চারদিকে রাতের মরুভূমির হিম শীতল পরিবেশ। এই মুসলিমদের ব্যাপার- স্যাপারটা একটু অন্য রকম। সামনে ভয়াবহ যুদ্ধ। হেরে গে্লে আয়-রোজগার, দেশ, বংশ, অস্তিত্ব সবই শেষ। তবু তারা কেমন যেন নিশ্চিন্ত মুখে ঘুরে বেড়াচ্ছে। রাত বেড়ে আসতেই চাদর টেনে ঘুমোতেও চলে গেলো সবাই।
শুধু জেগে রইলেন একজন। মুহাম্মাদ(সা.)। সারা রাত কখনও সিজদায়, কখনও দাঁড়িয়ে কাঁদতে লাগলেন ব্যাকুল কন্ঠে। কখনও সালাতে দাঁড়াচ্ছেন। কখনও শুন্যে হাত তুলে ধরছেন। একটা সময় সর্বশক্তিমানের হাতে নিজেকে সপে দিয়ে কান্নার দমকে অস্থির কণ্ঠে দুয়া করতে লাগলে--
"হে আকাশ ও জমিনের মালিক, তুমি দেখেছো, এই জালিম সেনাবাহিনীর অত্যাচার । তাদের জুলুমের সাক্ষী তুমি। তারা আমাদেরকে আমাদের দেশ থেকে বের করে দিয়েছে, আজ এসেছে আমাদেরকে সমূলে শেষ করে দিতে ।
হে দয়ালু সত্তা, আমাদের অপরাধ তো কেবল এইটুকুই যে, আমরা শুধু তোমার উপর ঈমান এনেছি ।
আজ যদি এই মরুভূমিতে এই দলটি হেরে যায়, ধ্বংস হয়ে যায়, তাহলে এই পৃথিবীতে তোমার নাম নেয়ার মত আর কেউ বাকী থাকবে না ।
এই মানুষগুলো শুধু তোমার উপর ভরসা করে এখানে আমার সাথে চলে এসেছে । এদেরকে তুমি নিরাশ করো না । আজ তোমার সাহায্য ছাড়া, তোমার দয়া ছাড়া এই যুদ্ধে আমরা টিকতে পারবো না। আমরা তোমার সাহায্যের দিকেই তাকিয়ে আছি।"
অস্থির, ব্যাকুল কন্ঠে চিৎকার করে চলেছেন আল্লাহর রাসুল(সা.)। তাঁর গায়ের চাদরটা খুলে পরে যাচ্ছে বারবার। তাঁর এই অবস্থা দেখে ছুটে আসলেন রাসুলের(সা) এর সবসময়কার সাথী আবু বাকর(রা.)। শান্তনা দিলেন-- “হে আল্লাহর রাসুল(সা.), আপনি শান্ত হোন । নিশ্চয়ই, আপনার রব আপনাকে ত্যাগ করবেন না।”
তাঁর রব তাকে ত্যাগ করলেন না। তাঁর রব দুয়া কবুল করলেন। আবু জাহেল এবং রাসুল(সা.) দুজনেরই দুয়া। ৭০ জন নিহত এবং ৭০ জন কে বন্দী করার মধ্যে দিয়ে বিজয় আসলো ৩১৩ জনের ছোট্ট মুসলিম দলটির।
১৭ ই রমাদানের দিনটিকে বলা হল ইয়ামুল ফুরকান বা সত্য মিথ্যার পার্থক্যকারীর দিন। এরপর কেটে গেছে অনেকগুলো রমাদান। অনেকগুলো ১৭ তারিখ। স্রেফ হাসি তামাশা আর ইফতার পার্টিতে ব্যস্ত মুসলিমরা সবাই আছে ঠিকঠাক। শুধু নেই দৃঢ়তাটুকু, সত্যকে সত্য আর মিথ্যাকে মিথ্যা বলতে পারার সাহসটুকু। নেই একটা কন্ঠ। একটা আওয়াজ!
অনেক দূরে হেবরন কিংবা ইদলিবে রক্ত বয়ে যায়। সস্তা রক্ত। লোকে বলে মুসলিমদের নাকি সেসব। আমরা দূরে বসে ছবি-ভিডিও দেখি। মাঝে মাঝে আক্ষেপের দীর্ঘশ্বাস ফেলি। ব্যাকুল কন্ঠে দুয়াটুকু করার মত পবিত্র মানুষটাও হতে পারলাম না...আফসোস...
সংগৃহীত
Click here to claim your Sponsored Listing.
Videos (show all)
Category
Website
Address
North Chalaban, Vai Vai Market Road, Dakshin Khan
Uttarati, 1230
কল্পনাকে কলমের কালিতে রূপ দেয়ার ব্যর্থ শৈল্পে থাকে লুকিয়ে বাস্তবতা ছুঁয়ার অকৃত্রিম চেষ্টা।
Uttarati, 1230
আমাদের পেইজটি ভালো লাগলে অবশ্যই লাইক ,কমেন্ট এবং শেয়ার করে পাশে থাকবেন ।
HOUSE 28, Road 17, SECTOR 12
Uttarati, 1230
আমার তুমুল ইচ্ছে করে ভাল কিছু লিখতে। কিন্তু, আজও হয়ে উঠেনি তা! তাই চেষ্ঠা করেই যাই...