Tepantar Gram
Experience eco-friendly living along with community engagement in a vibrant and serene habitat.
শিশুদের দৌড়। সম্ভাবনার দৌড়।আনন্দের দৌড়।
এবার দুজন: দুর্যোধন ও সত্যজিৎ মুর্মু। গতবারের রোহিত, আকাশ, জগৎকে ধরলে পাঁচজন হলো যারা গ্রাম ছেড়ে বেরিয়ে একলব্য ও নবোদয় বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করতে গেলো। আবাসিক এই বিদ্যালয়ে পড়াশোনা ও খেলাধুলা করার সুযোগ পাবে ৭ বছর। সুস্থ শরীরে ওরা বড় হোক। অনুসন্ধিৎসু মন তৈরী হোক। শিখতে থাকুক প্রতিদিন।
উইলিয়াম, প্যাট্রিক, সুজন, রাফেলা - চারজনের কেউ জার্মানি, কেউ বা পেরু আবার কেউ আমেরিকান। স্নাতকে কারো এঞ্জিনিয়ারিং, কারো আনথ্রোপলোজি, কারো ইকোনমিক্স। ভিন্ন দেশ, ভিন্ন ভাষা, ভিন্ন শিক্ষা নিয়ে মিলিত হলো ইংল্যান্ডের, অক্সাফোর্ড ইউনিভারসিটিতে। বিষয় ভূগোল আরো নির্দিষ্টভাবে বলতে গেলে জলবায়ুর পরিবর্তন। মাস্টার ডিগ্রি শেষে বিশেষ project নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে।জলস্তরের পরিবর্তনে সাধারণ মানুষের ভাবনা ও মোকাবিলা করার পদ্ধতি জানতেই এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলোর মতো ভারতবর্ষে আসা। জল, জীবন, নদী নিয়ে সমীক্ষা, আলোচনা ও গবেষণা। দক্ষিণবঙ্গে বাঁকুড়া, পুরুলিয়ায় সমীক্ষা করতে এসে থাকা খাওয়া তেপান্তরে। চলো শিখির বাচ্চাদের সাথে দোভাষীর মাধ্যমে কথাবার্তা ও ছবি তোলা।জলপ্রদর্শকের দায়িত্বে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের Oceanography-র অধ্যাপক সুগত হাজরা।
অনুপ ব্যানার্জী, সত্তর উর্ধ অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংক আধিকারিক। স্ত্রী দুরারোগ্য ক্যান্সার রোগে শয্যাশায়ী।বাড়ি হাওড়ার বালি, হাসপাতাল পিয়ারলেস, গড়িয়া। হাসপাতাল বাড়ি করতেই করতেই সময় কাটে নিঃসন্তান এই ভদ্রলোকের। তিনি এখন পর্যন্ত তেপান্তর যেতে পারেন নি, কিন্তু নিত্য খোঁজ রাখেন।সেদিন হটাৎ করে আমার সল্টলেকের অফিসে এসে হাজির। গাড়ি ভর্তি বই, খাতা, আঁকার সরঞ্জাম এবং নবোদয় বিদ্যালয় ও সৈনিক স্কুলের প্রবেশিকা পরীক্ষার নমুনা প্রশ্নপত্র। হাতে তুলে দিয়ে বললেন এগুলো একটু চলো শিখির বাচ্চাদের দেবেন। জেলবন্দি শিক্ষার কু প্রভাব জেলার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ার আশংকা আজ সবার- বাদ যাননি এই প্রৌঢ় ভদ্রলোকও।
গান, কবিতা, নাচের মাধ্যমে সরলা,ফুলমনি, মোনালিসা, বিরসা, সাগুনদের স্বাধীনতা উদযাপন
আকাশের নতুন জগৎ, জগতের নতুন আকাশ:
আকাশ মুর্মু, জগৎ কিস্কু দুজনেই একই গ্রাম থেকে ক্লাস সিক্স এ পড়তে যাচ্ছে একলব্য স্কুলে।বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুর এ ১৯ একর জায়গার উপর প্রতিষ্ঠিত এই স্কুলটি সম্পূর্ণ আবাসিক এবং কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক সহায়তায় পরিচালিত। ক্লাস সিক্স থেকে টুয়েলভ পর্যন্ত ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা ৪২২। এর মধ্যে ছাত্র ২১৩, ছাত্রী ২০৯। ২০ জন শিক্ষক দিনে স্কুলে পড়ায় আর ৪ জন শিক্ষক রাতে হোস্টেলে।এছাড়াও দাবা থেকে ফুটবল কোচিং, কম্পিউটার থেকে জয়েন্ট এন্ট্রান্স কোচিং সব কিছুরই আলাদা শিক্ষক/শিক্ষিকা রয়েছেন।পশ্চিমবঙ্গ মধ্য শিক্ষা পর্ষদের সিলেবাস অনুযায়ী পড়াশোনা, মাধ্যম ইংরেজী। উচ্চমাধ্যমিকে প্রায় সবাই ফার্স্ট ডিভিশনএ। ইঞ্জিনিয়ারিং, ডাক্তারিতেও চান্স পায় বেশ কিছু ছেলে মেয়ে। সর্বোপরি সমস্ত খরচ বহন করে কেন্দ্রীয় সরকার। ছাত্র ছাত্রী দের কোনো খরচা লাগে না।
চলো শিখির তিনজন ছাত্র এবার ক্লাস ফাইভ থেকে সিক্সে উঠেছিলো তার মধ্যে একজন রোহিত আগেই নবোদয় বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছে এবার আকাশ, জগৎ। যে ভাবনা নিয়ে চলো শিখি আজ থেকে বছর দেড়েক আগে শুরু হয়েছিলো তা আস্তে আস্তে সাফল্যের মুখ দেখছে। রূপবতী, সোমনাথদের নিরলস প্রচেষ্টা, দেবশ্রী, দীপান্বিতা দের নজরদারী, পর্যটকদের শুভেচ্ছা এবং গ্রামবাসীদের সহযোগিতায় চলো শিখি পরের বছর আরো বেশী সংখ্যাক ছাত্র ছাত্রীকে এই সব আবাসিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করতে পারবে এই বিশ্বাস রাখে।
আর দু চার বছর পর হয়তো কোদাল,ঝুড়ি নিয়ে বেরিয়ে পরতো অন্যের জমিতে কাজ করতে। দিনশেষে ১৫০ টাকা আয়। কিন্তু এ যাত্রায় উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত খেলাধুলা আর পড়াটা নিশ্চিন্ত করা গেল। রোহিত কিস্কু। বাবা মা দুজনেই কৃষি শ্রমিক, দুজনেই সদ্য স্বাক্ষর। জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষায় উত্তীর্ন হয়ে ক্লাস সিক্সএ ভর্তি হতে চলেছে রোহিত। এলাকার প্রথম বালক যে বাড়ির বাইরে থেকে পড়াশোনা করতে যাচ্ছে।রোহিতের সাথে পরীক্ষায় বসেছিল একই গ্রামের জগৎ। প্রথম লিস্টে নাম না বেরোলেও আশা করা যায় পরে নাম উঠবে।
মার্চ ২০২২ এ ২৫ জন বাচ্চা নিয়ে তেপান্তরে শুরু হয়েছিল 'চলো শিখি'। প্রথম ১ বছরের লক্ষ্য ছিল অপুষ্টি দূর করে সুস্থ সবল করে গড়ে তোলা, সঙ্গে ভয় ভীতি কাটিয়ে প্রশ্ন করতে শেখানো এবং সামান্য পড়াশোনা।সংখ্যা ও অক্ষরের প্রতি আগ্রহ দেখে রোহিতের প্রতি নজর আসে সবার। সমবয়সী ভালো স্কুলে গড়পড়তা শহুরে বাচ্চাদের “বারো হাজার বারো'শ বারো” লিখতে যখন ঠোক্কর খেতে হয় তখন রোহিত একেবারেই “তেরোহাজার দুশ বারো” লিখে তাক লাগিয়ে দেয়। মেধা ও আগ্রহ দেখে দীপান্বিতা, দেবশ্রী নবোদয় বিদ্যালয়ের বিষয়ে কথা বলে ওদের বাবা মার্ সাথে।বাবা মা রাজি হলে শুরু হয় প্রস্তুতি। বইপত্র, অনলাইন প্রশিক্ষণ, ফরম ফিল আপ ইত্যাদি। সবশেষে পরীক্ষা ও ফলাফল।
রোহিতের সাফল্যের এই কৃতিত্ব একেবারেই রোহিতের নিজস্ব।আমাদের কাজ ছিল ওর ইচ্ছে আর জেদের সলতেটা নিয়মিত তেলে ভেজানো।
'চলো শিখি' আমাদের শিখিয়েছে অনেক কিছু। দুদিনের জন্য বেড়াতে এসে পর্যটকরা এই কাজে আগ্রহ দেখিয়েছেন, কেউ কেউ কর্মসূচির সাথে নিজেদের যুক্ত করেছেন। নাচ গান শেখানোর পাশাপাশি দিয়েছেন অজস্র উপহার। বাড়ি ফিরেও নিয়মিত খোঁজখবর ও শুভেচ্ছা আমাদের এগোবার সাহস জুগিয়েছে। ফলস্বরূপ এবছর বাচ্চার সংখ্যা বেড়ে ৩০। যে গ্রামে সবার ঘরে এখনও বিদ্যুতের আলো ঢোকেনি রোহিত বড় হয়ে সেই গ্রামকেই আলোকিত করুক নিজের মেধা, যুক্তি, বুদ্ধি দিয়ে-শুভেচ্চা রইলো রোহিতের প্রতি।
ছাদ বা কার্নিশে রোদে দেওয়া বয়াম থেকে আচার চুরি করে খাওয়া একধরনের লোকাচার।রোদ পড়লে ঠাকুমা আচারের বয়াম নামাতে গেলে নজরে আসে অর্ধেক খালি। আচার ব্যবহার ভুলে ঠাকুমার লেকচারে টক ঝাল মিষ্টির কি অপূর্ব ব্যবহার! গুড় মশলায় মাখামাখি কুল, তেঁতুল, জলপাইও পারলে বয়াম থেকে বেরিয়ে দৌড় দেয়।দুপুরে না ঘুমিয়ে ঠাকুমা তক্কে তক্কে থাকে চোর কখন আসবে? আচার চোরকে আজ পাকড়াও করবেই।বেশ কিছুক্ষন পরে দেখে দাদু গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে চলেছে বয়ামের দিকে, চারদিকে চোখ ঘুরিয়ে যেই দাদু বয়ামের মুখের কাপড় খুলে আচারে হাত ঢুকিয়েছে পেছন থেকে ঠাকুমার চিৎকার।"অনেক কাপড় খুলেছো আর খুলতে দেবো না" ।
তেপান্তর জীবনের সাথে সাথে মুখের স্বাদও ফিরিয়ে আনতে চায়। আম, কুল, তেঁতুল, জলপাই,গুড়/চিনি, মশলা মিশিয়ে যুগ যুগ ধরে চলে আসা ক্ষুদামন্দা দূর করা অপূর্ব স্বাদের সেই আচার। নির্ভেজাল, প্রিজারভেটিভ বিহীন টক, ঝাল, মিষ্টির কোনো নায়িকা নয়- জাস্ট আচার ,না বিচারের জন্য জাস্টিস গাঙ্গুরির এজলাসে যাওয়ার দরকার নেই। আপনার এজলাসে আপনার জিভই বিচারক।
এই যে হেথায়
পলাশ ছায়ায়
স্বপ্নমধুর মোহে.....
তেপান্তর দোল -২০২৩
তৃস্তা মুখার্জি
HAPPY HOLI!
ঘুম থেকে উঠে স্নিকার-শুট পরে সেজেগুজে শীতের ভোরে কার্বন মনোক্সাইড গিলে ঢেকুর তুলতে তুলতে বাড়ি ফিরে হাতঘড়িতে কতটা ঝরলো তার হিসেব যখন মেলাচ্ছেন তখন কার্বন মনোক্সাইড, কার্বনিক অক্সাইড হয়ে আপনার ফুসফুসে বুক ডন দিচ্ছে।ক্যালোরি বার্ন করতে গিয়ে আরো কিছু আর্ন করে বাড়ি ফিরলেন।লেকের পাড়ে আফটার ওয়াক পুদিনা পাতার রস একগ্লাস, অতঃপর কচুরী,জিলিপি তো এখন জীবনের নতুন স্বরলিপি।
চেনা সভ্যতার ম্যারাথন দৌড় ছেড়ে একবারটি চলে আসুন তেপান্তরের শিশুদের দৌড় দেখতে।চাক্ষুস করুন চিরাচরিত চিরহরিৎ থাকার সূত্র।দশ পাক দৌড়ে এক গ্লাস বিশুদ্ধ খেজুরের রস।সারাদিন অক্সিজেন আর ওয়াটার অফ পাতকুঁয়া। মাঝে লুচি, সাদা আলুর চচ্চড়ি, খেজুর গুড়, দিশী মুরগী, পুকুরের মাছ, বাগানের ফুলকপি, শিম, মটরশুঁটি আরো যা মন চায়। দিনের শেষে নজর রাখুন ক্যালরি বাড়া কমার লেখচিত্রে। সবুজ মানচিত্রে খাটিয়া পেতে ঝরা পাতার শব্দ আর ঘুঘুর ডাকে আকাশ দেখতে দেখতে চোখ বন্ধ হয়ে এলেও চোখ খুললেই দেখবেন আপনাকে গোল করে চৈ চৈ রব।
তেপান্তরের আশেপাশের গ্রাম এবং 'চলো শিখি'র বালক বালিকাদের (৬-১১ বছর বয়স পর্যন্ত) নিয়ে দৌড় ও খেলাধুলা।
• প্রতিযোগীর সংখ্যা: ৯৫ জন
• তারিখ- ২২ শে জানুয়ারী ২০২৩, রবিবার
• স্থান: রাম মোড়ের কাছে খেলার মাঠ
• অনুষ্ঠান শুরু: সকাল ৯ টা
• অংশগ্রহকারী সমস্ত বালক বালিকাদের 'চলো দৌড়াই' লেখা গেঞ্জী ও হাফপ্যান্ট দেওয়া হবে
• অংশগ্রহকারী প্রত্যেকের জন্য থাকবে পুরস্কার।
• প্রত্যেক বিভাগে জয়ী প্রথম তিনজনকে দেওয়া হবে আকষর্ণীয় পুরস্কার।
• অংশগ্রহণকারী সমস্ত প্রতিযোগীদের সকালে ডিম্ সেদ্ধ, কলা ও দুপুরে মুরগীর মাংস ভাত খাবারের ব্যবস্থা থাকছে।
নববর্ষ উদযাপন করতে এসে ভোলেনি আশেপাশের মানুষদের সমস্যার কথা, তাই ১লা জানুয়ারীতে একদল পর্যটকের থেকে একদল গ্রামবাসী উপহার পেলো ভালোবাসা মেশানো কম্বল
নতুন বছর হোক এক খ্যাপামির বছর
Click here to claim your Sponsored Listing.
Videos (show all)
Category
Contact the hotel
Telephone
Website
Address
Block : Chatna. Arrah Panchayet . Gram : Hariharkundi
Bankura
722137