Satsang Sevak
যদি সাধনায় উন্নতি লাভ করতে চাও,তবে কপটতা ত্যাগ কর !
#কষ্ট_থেকে_মুক্তির_পথ
জনৈক দাদা আজ ক’দিন থেকেই শ্রীশ্রীঠাকুরের কাছে বারবার তার নানা সমস্যার কথা বলছিলেন এবং শ্রীশ্রীঠাকুর ও তাকে যা’ করণীয় সে-সম্বন্ধে বারবার বলছিলেন। তৎসত্ত্বেও দাদাটি আজও সেই একই কথা জিজ্ঞাসা করায়
শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন- আমার মনে হয় আমার কথাগুলি তোমার মাথায় ধরে নি। আমি যা' বলেছি তা’তুমি করবে না, এবং suffer করবে (কষ্ট পাবে)। আবার বলি, নামধ্যান ঠিকমত কর, কাউকে ফাঁকি দিও না। ভাল ব্যবহার কর। যাতে মানুষের তোমার প্রতি শ্রদ্ধা হয়, তেমন ক'রে চল। তাহলে পেরে যাবে। মানুষ পড়ার সময় তাড়াতাড়ি পড়ে। উঠতে দেরী লাগে। মানুষের দুর্দশা যে তৎক্ষণাৎ দূর হয়, তা' তো না। স্বভাব না বদলালে, কেউ টাকা দিলে, কিম্বা কিছু করলে তাতে দুর্দশা ঘোচে না। চলন-চরিত্র ঠিক করলে ধীরে ধীরে অবস্থারও পরিবর্তন হয়। চল, কর, তবে তো হবে?
-শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র
আলোচনা প্রসঙ্গে ১৫/১.৩.১৯৪৯
জীবন বৃদ্ধির পথে সৎ-অন্বেষণা'র সাথে
#বিধি_বিনায়িত_নীতি
বৈশিষ্ট্য, বয়স ও শারীরিক অবস্থাকে
সমীচীনভাবে বিবেচনা ক’রে ---
কা'র পক্ষে কী উচিত
কা'র পক্ষে কী অনুচিত—
তা' ভেবেচিন্তে
অনুকম্পী, উৎসারণী, হৃদ্য, শুভপ্রসূ
যা'র পক্ষে যেটা হয়
লক্ষ্য রেখো তা'তে,
এই হ'চ্ছে সেই নীতি বা নিয়ম
যা' বিধি-বিনায়িত ;
ব্যতিক্রমে ---
অন্যায় হবে তা’রই
যে তা’কে তাচ্ছিল্য করে ।।
#শ্রীশ্রীঠাকুর
( বিধান-বিনায়ক, ১৮৫ )
#কলিকালের_অমৃত
#শ্রীশ্রীঠাকুর কথাপ্রসঙ্গে আমাদের সবাইকে নিয়মিতভাবে তক্র খাবার খেতে বললেন। ওতে নাকি মস্তিষ্ক, স্নায়ু ও হাড় খুব ভাল থাকে। নিয়মিত খেলে অসুখ-বিসুখ কম হয়। এ অমৃতের মত, দেবতাদের যেমন অমৃত, মানুষের পক্ষে তক্র তাই। তক্র করতে হয় তিন ভাগ দই ও একভাগ জল একত্র মিলিয়ে। ঘেঁটে ননীটা তুলে ফেলে দিতে হয় ।।
"আলোচনা-প্রসঙ্গে" ১৭শ খন্ড পৃষ্ঠা ৩২২
৬ই শ্রাবণ, ১৩৫৬, ইং 22/07/1989
" তাঁকে যদি উপভোগ করতে চাই -
যাজন করতে হবে। আপনারা বিশ্বাস করেন - যতক্ষণ তাঁর কথা বলছি, তিনি এইখানেই আমাদের মধ্যেই কোথাও অবস্থান করছেন। যাজন করলে তাঁকে উপভোগ করা যায়, তাঁর সঙ্গ লাভ করা যায়।
হরিনন্দন প্রসাদদাকে ঠাকুর একদিন বললেন, ‘হরিনন্দন! যখনই আমাকে কেউ ডাকবে— সমর্পণের সাথে, আমি এসে উপস্থিত হব। আমি তা'র পাশে এসে দাঁড়াব।’
হরিনন্দনদা বললেন, 'কেন, সামনে এসে দাঁড়াবেন না কেন?”
ঠাকুর বললেন, ‘প্রয়োজন হ'লে— তা’ও!'
হরিনন্দনদা কাগজ-কলম নিয়ে কথাটা লিখে নিচ্ছিলেন; ঠাকুর বললেন, ‘অ্যাই! এটা প্রাইভেট।' রসিক-শিরোমণি তো! নিজেই নিজের স্বরূপ ব্যক্ত করবেন, আবার বলবেন— ‘প্রাইভেট'।"
-------পরমপুজ্যপাদ শ্রীশ্রীআচার্য্যদেব।।
(আলোচনা,ফাল্গুন, ১৪২৯/ মার্চ, ২০২৩)
পরমপূজ্যপাদ আচার্য্যদেব একবার একটি কনফারেন্সে বলেছিলেন----
'হনুমান যেমন শ্রীরামচন্দ্রের সংস্পর্শে এসে নিজের শক্তি সম্বেন্ধ সচেতন হয়েছিলেন, আমরাও আজ আচার্য্যদেবের প্রেরণায় নিজের ক্ষমতাকে নূতন করে জানতে পারছি।
গঙ্গাধর
■ শ্রীজনার্দন বন্দ্যোপাধ্যায়
সংগ্রহ :আলোচনা/ফাল্গুন 1421/মার্চ 2015/246
শ্রীশ্রী আচার্য্যদেবের কয়েকটা অমৃত কথা
গতকালের।(13/03/2024)
১। একের প্রতি লেগে থাকাটাই সাধনা।
২। নিজের প্রতি খুব বিশ্বাস রাখতে হয়,এই কাজ আমার দ্বারায় সম্ভব।
৩। আমি আর ঠাকুরের মাঝে কাউকে ঢুকাতে নেই।
৪। নিজের জীবনকে আদর্শের সাথে লেগে রাখতে পারলে, নিজের ব্যক্তিত্বকে ধরে রাখা যায়।
৫। কাজের ফাঁকে ফাঁকে যতটুকু সময় হয়ে ওঠে
ততটুকু যেন আমি ঠাকুরের কাজ করতে পারি।
এই চিন্তা ভাবনা যেন সব সময় থাকে।
৬। নিজেকে দুর্বল ভাবতে নেই, দুর্বলতা আমাদেরকে চারিদিকে দুর্বল করে ফেলে।
৭। ছেলেমেয়ের অসুস্থ হয়েছে তাতে কি হয়েছে?
আমরা যারা আশ্রমে থাকি আমাদের ছেলেমেয়েও অসুস্থ হয়, তার উপর বিশ্বাস রাখতে হয় ভালো ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসা করে নিতে হয়,একটি মায়ের উদ্দেশ্যে।
৮।ভক্তিকে ভাগ করতে নেই।ভক্তি এক জায়গায় ঠিক রাখতে হয়।
৯। একের সাধনা করতে পারলে গ্রহদোষ রাহুদোষ শনিগ্রহ, কোন খারাপ গ্রহ আক্রমণ করতে পারেন না।
১০। সৎসঙ্গ জগতটাই ভালোবাসার জগত, ভালোবেসে আদায় করে নিতে তার কাজ। একটা মানুষেরকেও জীবনে হারাতে নেই।
মানুষের চাষ করো
 ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄ ̄
সুহৃদদা-আপনাকে অনেকে ভগবান ব'লে মনে করেন। আমার মনে হয় তারা আপনার কাছে এসে এমন ভালবাসা পায় যাতে ঐ-রকম ভাবে।
শ্রীশ্রীঠাকুর-তুমি ভগবানই কও, অবতারই কও, শিব চক্রবর্ত্তী মশায়ের বড় ছেলে অনুকূল চক্রবর্ত্তীই কও, আর মেথর-ডোমই কও, আমি যা' আমি তাই। আমি শুধু তোমাদের বলি-তোমরা বাঁচ, তোমরা বাড়, সুখে সুদীর্ঘজীবী হ'য়ে বেঁচে থাক। এমন কাজ ক'রো না, এমন কথা ব'লো না, এমন চিন্তা ক'রো না যাতে তোমাদের জীবন-বৃদ্ধি ক্ষুন্ন হ'তে পারে। তোমরা অমৃতের সন্তান। সেই রকম তোমাদের যে পূর্বপুরুষ ছিল, তোমরাও তেমনি হ'য়ে ওঠ। আর যা'-কিছুই বল, তার সাথে স্মৃতিবাহী চেতনা থাকা চাই। তাহ'লে ঐ যে কী আছে-
"আকাশে পাখী কহিছে গাহি
মরণ নাহি, মরণ নাহি।"
ঐ-রকম হ'য়ে ওঠে। (চিত্তদাকে বলছেন) চাষবাস যা' করি তার সাথে যদি মানুষের চাষ না করি, তাহ'লে কিছুই হ'ল না। মানুষই যদি না বাঁচে তবে চাষই করবে কে, বাসই বা করবে কে? ধানের চাষ ক'রে ফল পেতে কয়েক মাস লাগে, আর মানুষের চাষ ক'রে ফল পেতে লাগে ষোল থেকে কুড়ি বছর।
-শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র
দীপরক্ষী, প্রথম খণ্ড (২৭শে মে, ১৯৫৩)
----------------------------------------------------------------
তোমারেই করিয়াছি, জীবনের ধ্রুব তারা
এ সমুদ্রে আর কভু, হব না কো পথ হারা।
💙💙
#সৎসঙ্গ
আমি ::-- দাদা যদি কখনো যদি সম্ভব হয় তবে একবার সৎসঙ্গ বিহার কাটোয়া শ্রী মন্দিরে পদার্পণ করবেন ।
#পূজনীয়_অবিন_দা::-- আমি তো একজনের আদর্শে, নির্দেশে, প্রেরণা ই বড়ো হয়ে উঠছি, তার ইচ্ছা ও বলার বাইরে কোনো কিছু করার অধিকার আমার নেই, যাওয়ার সময় যখন হবে তিনি যখন বুঝবেন যে আমার যাওয়ার প্রয়োজন আছে তখন তার নির্দেশ ক্রমে আমি অবশ্যই যাবো।
18/06/2011
Time-- 09:12 P.M
স্থান -- বড়দা বাড়ি, হসপিসের দোতালা
#পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীঅবিন দাদা যখন কারও সমস্যার নিবেদন শুনেন তিনি এই সমস্যার সাথে নিজেকে একাত্ম করে নেন যেটা আমার কাছে ভীষণ প্রীতিপ্রদ মনে হয়েছে। কখনও বলেননা যে, 'আপনার', 'তোমার' বা 'তোর' সমস্যা। বলেন, 'আমাদের এই সমস্যাটা আছে আমরা এভাবে চেষ্টা করবো। গিয়ে দেখ, কী হয়, নতুবা আমি আছি তো, চলে এসো আমার কাছে।' আমাকে কোন একটা ব্যাপারে বললেন, "দেখা যাক কী হয়, পরে আমরা অন্যভাবে দেখবো।" শুনে মনপ্রাণ ভরে যায়। আমার ক্ষুদ্র সমস্যা যখন সর্বশক্তিমানের বৃহৎ মনের সমস্যা হয়ে যায় তখন ভাবনার আর কী থাকে? প্রত্যেকটি সমস্যা এত মনোরঞ্জক ভাবে হাসতে হাসাতে সমাধান দেন, কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে দেখলে মনের সব দুঃখভার যেন কোথাও উবে যায়। যারা প্রত্যক্ষ করেছেন, সকলেই বুঝতে পারবেন আমি কী বলতে চাইছি।
কত ভক্ত কত কত জিনিস তাঁকে উপহার স্বরূপ দেন সবকিছু আবার দুহাতে বিলিয়ে দেন ছোট কচিকাঁচাদের মধ্যে। কতভাবে যে প্রেমের সাগর প্রেম বিলাচ্ছেন দেখলে নয়নযুগল সার্থক হয়ে যায়। সব কিছুর মালিক হয়েও নির্মোহানন্দ ভাবে থাকেন। দেখে মন গাইতে ইচ্ছে করে,-
"খেলিছো এই বিশ্ব লয়ে, বিরাট শিশু, আনমনে খেলিছো।" এই বিরাট শিশুর দর্শন পেয়ে ধন্য আমরা।
©Sujit Chakraborty..
" তোদের ঠাকুর যে ঈশ্বর বা পুরুষোত্তম, - তার কোন প্রমান আছে? কিসের ভিত্তিতে তোরা উনাকে ঈশ্বর বলিস?"...আমার ঘনিষ্ঠ এক বন্ধুর প্রশ্ন।
তুই শ্রীশ্রীঠাকুরকে যদি ঈশ্বর বা পুরুষোত্তম বলে না মানিস,- কোন অসুবিধা নেই৷ আমরা মানি,- সেটা আমাদের ব্যাপার। আমি যদি প্রশ্ন করি,- তোর বাবা যে সত্যি সত্যি তোর বাবা,- তার কোন প্রমান আছে? তুই নিশ্চয়ই ডি.এন.এ টেস্ট করে তার প্রমান আমায় দিতে যাবিনা৷ বা,- তুই নিশ্চই তোর মা'কে " লাই ডিটেকশন মেশিন' এ বসিয়ে এর সত্যতা যাচাই করতে যাবিনা। তেমনি শ্রীশ্রীঠাকুরকে কেন আমি ঈশ্বর বলে মানি তার প্রমানও আমি দিতে যাব না৷ কোন প্রয়োজন নেই।
অনেক শাস্ত্রে, অনেক ঋষিদের বানীতে শ্রীশ্রীঠাকুরের পুরুষোত্তম রূপে আবির্ভাবের কথা উল্লেখ আছে শুনি। পূর্ববর্তী অনেক অবতারদের ভবিষ্যৎ বানীও রয়েছে শ্রীশ্রীঠাকুরের আবির্ভাব সংক্রান্ত, - শুনেছি। এসব রেফারেন্সে আমার কোনকালে কোনরকম আগ্রহ ছিলনা,- তাই তোকেও বলতে পারব না। শ্রীশ্রীঠাকুর তাঁর ঠাকুরত্ব প্রমান করার জন্য সেসব শাস্ত্রের বানী বা পূর্ববর্তী অবতারদের ভবিষ্যৎ বানী প্রিন্ট করে সবার কাছে বিলি করেননি৷ বা সেইসব শাস্ত্রীয় উক্তি উল্লেখ না থাকলে যে শ্রীশ্রীঠাকুরকে আজকে কোটি কোটি মানুষ পূজা করতনা,- অমনটাও নয়। কোন মহাপুরুষ, বিখ্যাত ব্যাক্তি ও পন্ডিতের রিকমেন্ডেশন বা সার্টিফিকেট প্রয়োজন হয়নি,- শ্রীশ্রীঠাকুরকে বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠিত হতে। তিনি স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠিত। চাঁদ সূর্যের আলো প্রতিফলিত করে নিজে প্রকাশিত হয়,- সূর্য আপন আলোতেই ভাস্বর। তেমনি শ্রীশ্রীঠাকুরও।
তুই ঈশ্বর, পুরুষোত্তম, ভগবান, অবতার এইসব তাত্ত্বিক শব্দ বাদ দে। বরং তুই শ্রীশ্রীঠাকুরকে একজন মানুষ বলে তো গ্রহন করতে পারিস।
★ এমন একজন মানুষ যিনি বাংলাদেশের একটা ছোট্ট গ্রামে বড় হয়েছেন, যার কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রী নেই, যিনি সারাজীবন একটা আস্ত বই পুরো পড়েননি,- অথচ তাঁর জীবন ও বানী নিয়ে দেশে বিদেশে বহু স্কলাররা পি.এইচ.ডি করছে।
★ এমন একজন মানুষ যিনি আজ নরদেহে নেই,- কিন্তু তবুও রোজ হাজার হাজার মানুষ তাঁর আদর্শ গ্রহন করে জীবনে শান্তি-স্বস্তির অধিকারী হচ্ছে।
★ সাধারণত দেখা যায় কোন মহাপুরুষ যতদিন জীবিত আছেন ততদিন তাঁর সংগঠন ফুলেফেঁপে উঠছে। কিন্তু শ্রীশ্রীঠাকুর এমন একজন মানুষ যিনি নরদেহে থাকতে তাঁর প্রতিষ্ঠিত সৎসঙ্গ যে কলেবরে বৃদ্ধি পেয়েছিল,- তাঁর দেহত্যাগের পর সৎসঙ্গের গতি আরো তীব্রভাবে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। এই অদ্ভুত মানুষটি সম্পর্কে একটু ভাবতে তো পারিস।
★ এমন একজন মানুষ যিনি কোনরকম অলৌকিকতায় বিশ্বাস করতেন না, যিনি বিজ্ঞান ও যুক্তির বাইরে কোন কথা বলেননি, যিনি বনেজঙ্গলে গিয়ে সাধনা করেননি, কোন অলংকার গায়ে জড়াননি, রঙ-বেরঙের বস্ত্র পরিধান করেননি,- অথচ কোটি কোটি মানুষের কাছে তিনি ঠাকুর রূপে পূজিত হচ্ছেন।
★ এমন একজন মানুষ যার বিরুদ্ধে শত বৎসর পূর্বে যেমন বহু লোক, বহু গুষ্টি প্রতিনিয়ত বিরুদ্ধাচারণ করেছেন, তাঁর দেহ ত্যাগের এতগুলো বছর পরে বর্তমানেও বহু লোক বিরুদ্ধাচারণ করছে, কুৎসা রটাচ্ছে। কোন সাধারণ মানুষ সম্পর্কে নিশ্চই এত সমালোচনা হয়না,-এতটুকু বুঝার মত বুদ্ধি তো নিশ্চই আছে !! এত যে বিরুদ্ধাচারণ, - তবুও তাঁর সৎসঙ্গের গতি শত বছর পূর্বে যেমন ছিল,- বর্তমানেও প্রবল বেগে এগিয়ে চলছে। এত বিরুদ্ধ প্রচার সত্ত্বেও তাঁর অনুগামীদের মনে তাঁর প্রতি ভক্তি-বিশ্বাস-নির্ভরতার সামান্যতম ঘাটতি দেখা যায় নি। বরং দিন দিন তা গভীরভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এই রহস্যময় মানুষটি সম্পর্কে কৌতূহল তো পোষন করতেই পারিস।
★ শ্রী রামচন্দ্র কত হাজার বৎসর পূর্বে আবির্ভূত হয়েছিলেন? শ্রীকৃষ্ণের বয়স কত হাজার বছর জানিস? বর্তমানে আমাদের রাজ্যে বা সারা দেশে শ্রীরামচন্দ্রের ও শ্রীকৃষ্ণের ঠিক কয়টা মন্দির আছে আমি ঠিক জানিনা।
শ্রীশ্রীঠাকুরের বয়স মাত্র ১৩৬ বছর। এই এত অল্প বয়সেই ভারত-বাংলাদেশ-নেপাল-আমেরিকা-আরব-জার্মান-ইংল্যান্ড ইত্যাদি দেশে-বিদেশে কয়েক হাজার মন্দির গড়ে উঠেছে শ্রীশ্রীঠাকুরের পূজার জন্য। সারা দেশ ঘুরতে হবে না। একবার আগরতলা থেকে সাব্রুম যাবি,- আবার আগরতলা থেকে ধর্মনগর যাবি। রাস্তার পাশে শ্রীশ্রীঠাকুরের কয়টা মন্দির দেখিস,- শুধু গুনে যাবি। এতগুলি মন্দিরের একটাও কিন্তু রাজা মহারাজাদের পয়সায় বা সরকারি কোষাগাড়ের পয়সায় নির্মিত হয়নি। সাধারণ মানুষদের কষ্টার্জিত আয় থেকে স্বত:স্বেচ্ছ ভক্তি অর্ঘ্য দিয়ে অগুনতি এই বিশাল বিশাল মন্দির নির্মিত হয়েছে। কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে যে শ্রীশ্রীঠাকুরের মন্দির গড়ে উঠেছে, - সেই অন্তরের মন্দিরের বহিঃপ্রকাশই এই বিশাল বিশাল সুদৃশ্য অট্টালিকার মন্দির। যে মানুষটি ১৩৬ বছর বয়সেই এই কান্ড ঘটিয়েছেন,- সেই মানুষটিকে একবার জানার চেষ্টা তো করতেই পারিস।
★ তুই বিভিন্ন মন্দিরে কেন মাথা ঠুকিস? লক্ষী-কালী-দুর্গা-সরস্বতী ইত্যাদি দেবদেবীর পূজো কেন করিস? কোন না কোন প্রত্যাশা নিয়েই তো করিস!! যদি জানতিস,- লক্ষী পূজা করে কোন ধনটন পাওয়া যাবেনা তবে কি লক্ষী পূজা করতিস? যদি জানতিস কালী মায়ের কাছে পাঁঠা বলি দিয়ে কোন লাভ হয়না,মনোস্কামনা পূরন হয়না,- তবে এত দাম দিয়ে পাঁঠা কিনে বলি দিতিস?
শ্রীশ্রীঠাকুর সত্যানুসরনের প্রথমেই সাবধান করে দিয়েছেন,-" অর্থ, মান, যশ ইত্যাদি পাওয়ার আশায় আমাকে ঠাকুর সাজিয়ে ভক্ত হয়োনা। " তিনি স্পষ্ট বলে দিয়েছেন,- এইসব মনোস্কামনা পূরনের ধান্ধা নিয়ে তাঁর কাছে গেলে কোন লাভ হবে না৷
কি অদ্ভুত!! তারপরও রোজ লক্ষ লক্ষ মানুষ ঘুম থেকে উঠেই নিজেদের কষ্টার্জিত আয় থেকে ভক্তিভরে ইষ্টভৃতি নিবেদন করছে। রোজ তাঁর পূজা করছে।
এই অদ্ভুত ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষটিকে জানার ইচ্ছা হয়না?
★ তোর আমার চেয়ে বিদ্যায়-বুদ্ধিতে-জ্ঞানে-অভিজ্ঞতায়-পান্ডিত্যে বড় অমন লক্ষ লক্ষ মানুষ যার পায়ে নিজেদের সমর্পন করে সারা জীবন কাটিয়ে দিচ্ছে - সেই মানুষটি কি পুরুষোত্তম, না অবতার, না কি ঈশ্বর এইসব তাত্ত্বিক প্রশ্নের উত্তর খুঁজে সময় ব্যয় করে কি লাভ?
তাঁকে একবার গ্রহন করে তাঁর বিধানমত চলে দেখতেই পারিস,- এই মানুষটি আসলে কে? কি রহস্য রয়েছে তাঁর মধ্যে!!
*****************
ডা: রাজেশ চৌধুরী
আগরতলা
২৩-০২-২৪
" #পড়াশোনার_জন্য_যে_জিনিসটা_সবচেয়ে বেশী প্রয়োজন সেটা হল,- আনন্দ। যে ছাত্র পড়াশোনায় আনন্দ পায় না,- তার রেজাল্ট কখনো ভাল হয় না। ছেলে পরীক্ষায় কত নম্বর পেল সেটার জন্য এত চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। সে যাতে মা বা
বাকে ভালবাসে আর ঠাকুরকেন্দ্রিক হয়,- সেটা লক্ষ রাখতে হয়৷ তাহলে সেই ছেলে বড় হবেই। " 🙏🙏
~ পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীআচার্য্যদেব🙏🙏
কথাপ্রসঙ্গে পূজ্যপাদ অবিনদাদা তাঁর হাতের জলের বোতলটি দেখিয়ে বললেন,-" ধরুন,- আপনার হাতে এমন একটি জলের বোতল আছে আর তাতে একটু জল আছে। এই বোতলটিতে পুনরায় টেপ থেকে জল ভরতে হলে আপনি কি করেন? যে জলটুকু বোতলে বাকি আছে সেটুকু খেয়ে বোতলটা পুরোপুরি খালি করে নেন তো?
তেমনি আমার নিজের সবটুকু ঠাকুরকে না দিলে ঠাকুর আমায় ভরে দিতে পারেন না। নিজের বলে কিছু রাখতে নেই। সবই তাঁর, - সবটুকু তাঁকে সঁপে দিতে হয়। তখন তিনি আমায় পূর্ন করে দেন।
আর যদি নিজের কাছে কিছুটা আগলে ধরে রাখি,- তখন ঠাকুর ভাবেন, - তার তো আছেই। আমার এখন না হলেও চলবে তার৷
************************
একটি মেয়ে পূজ্যপাদ অবিনদাদার কাছে এসে জিজ্ঞেস করেন,-" আমি স্বস্ত্যয়নী কেন নেব? কি প্রয়োজন? "
তিনি মেয়েটিকে জিজ্ঞেস করেন,-" তুমি যখন ছোট ছিলে তখন তোমার মা তোমায় এত সেবাযত্ন কেন করেছেন?"
মেয়েটি নিশ্চুপ।
তিনি নিজেই পুনরায় বললেন,-" কারন,- মা তোমায় ভালবাসেন। এই ভালবাসার টানেই তিনি তোমায় রাত জেগে সেবাযত্ন করেছেন।
তেমনি,- তুমি স্বস্ত্যয়নী ব্রত নেবে কারন তুমি ঠাকুরকে ভালবাস। তিনি খুশী হবেন,- এই কারনেই স্বস্ত্যয়নীর বিধি পালন করে চলবে।"
************************
একজন গুরুভাইকে কথায় কথায় বললেন,-" যুক্তি দিয়ে কারো মন পরিবর্তন করা যায়না। প্রেম দিয়ে পারা যায়। তাই প্রেম দাও, প্রেমের সাথে কথা বল, প্রেমের স্পর্শ দিয়ে লেখ,- মানুষ প্রভাবিত হবেই।
**********************
একজন নব্য ডাক্তার পূজ্যপাদ অবিনদাদার কাছে এসে নিবেদন করল,-" আমার বন্ধু একটি এমন মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছে,- যাকে বিয়ে করলে তার ভাল হবে না বুঝতে পারছি৷ কিন্তু তাকে এই সম্পর্ক থেকে কিভাবে ফেরাব? সে তো আমার কথা মানবে না। "
পূজ্যপাদ অবিনদাদা তাকে বললেন,-" তোমার বন্ধুর সাথে সময় কাটাও, একসাথে রেস্টুরেন্টে গিয়ে কফি খাও, তাকে ভালবাস। এমন ভালবাসা দাও যাতে তার কাছে তুমি ঐ মেয়েটির চেয়ে বেশী গুরত্বপূর্ণ হয়ে উঠ। তবেই তাকে ফেরাতে পারবে। "
*********************
সংকলকঃ
ডাঃ রাজেশ চৌধুরী
আগরতলা
কথা হ'চ্ছে এমন সময় কালীষষ্ঠীমা এসে হাজির হলেন।
শ্রীশ্রীঠাকুর প্রসঙ্গ পরিবর্ত্তন ক'রে হাসিখুশি হ'য়ে বললেন----- এই দেখ, পয়মন্ত মানুষ আ'সে গেছে। দেখলিই শালা পরাণ ঠাণ্ডা।
কালীষষ্ঠীমা------- যারে দেখলি পরাণ ঠাণ্ডা হয়, তার কাছেই তো মানুষ আসে। আমিও তো ঠান্ডা হবার জন্যি আপনার কাছে ছুটে-ছুটে আসি। সংসারের যে ঝামেলা!
শ্রীশ্রীঠাকুর------- (সহাস্যে) আমি কালীষষ্ঠী, কালীষষ্ঠী ক'রে হা-পিত্তেশ ক'রে ব'সে থাকি, কালীষষ্ঠীর কি সময় আছে, সে আমার কাছে এসে ব'সে থাকবে? তার কত কাজ!
কালীষষ্ঠীমা----- না ঠাকুর! মস্করার কথা না। যখনই রাগ-ধাগ ক'রে আপনার কাছে কিছু বলতি আসি, আপনি হাসায়ে-রসায়ে ভুলায়ে দেন।কিন্তু সংসারের বড় জ্বালা। যতই করা যাক, খুশি করা যায় না কাউকে ।
শ্রীশ্রীঠাকুর----- একজনের খুশির জন্য সব না করলি কি জনে-জনে খুশি করা যায়? আমি কালীষষ্ঠী, কালীষষ্ঠী করি, কালীষষ্ঠীর পাত্তা পাই না, কালীষষ্ঠী ছাওয়াল-ছাওয়াল করে, কলবাড়ী-কলবাড়ী করে, সেগুলি গোছায়ে আওতার মধ্যি আনতি পারে না।................. এইতো দেখ দুনিয়ার হাল, এখন কি করবা বল?
কালীষষ্ঠীমা------- কতবার শুনিছি আপনার মুখে। বুঝিও সব। কিন্তু আমরা হলাম যে জ্ঞানপাপী। ঘর-সংসারের 'পর-ই তো আমাদের টান বেশী। আপনার উপর সেই টানটা হ'লে তো দুঃখ অনেক কমে যেত।
শ্রীশ্রীঠাকুর--------- আমি ঘর-সংসার, বিষয়-আশয় কোনটা বাদ দিতে কই না। ওগুলি যদি ইষ্টের জন্য হয়, তাহ'লে কোন ভাবনা নেই। তোমার মধ্যে যদি সেই ধাঁজ থাকে, তবে ছেলেপেলেদের মধ্যেও ঢুকে যাবে।সংসার ভাল ক'রে করতে পারবা, অথচ জড়ায়ে প'ড়ে হাবুডুবু খাবা না। (একটুক্ষণ চুপ ক'রে থেকে পরে বললেন) ----- তুই যদি ভাল গিন্নী না হতিস্, তাহ'লে কাচ্চাবাচ্চাদের নিয়ে সংসারটা কি এইভাবে তুলে ধরতি পারতিস্? আর, তোর ছাওয়ালরাও কিন্তু তোকে ভালবাসে খুব। তোর 'পর টান না থাকলি এতখানি পারত না।
কালীষষ্ঠীমা------ সবই আপনার দয়া।
[সূত্র---আলোচনা প্রসঙ্গ--দ্বিতীয় খণ্ড]
প্রশ্রয়দাতা
************
পরমপূজ্যপাদ শ্রীশ্রীআচার্য্যদেব কথায় কথায় আমায় বললেন,-" একজন মানুষ কোন কারনে দোষ করতেই পারে, জন্মগত বা পরিবেশগত কারনে অন্যায় করতেই পারে। কিন্তু তার আত্মা তো নিস্পাপ। ঠাকুর তো এইবার তাঁর আত্মাগুলিকে কুড়িয়ে নিতে এসেছেন। তিনি কাউকে ব্রাত্য করেন নি। তাই আমরাও কাউকে ত্যাগ করতে পারিনা। সবাইকে নিয়ে চলতে হয়, সহ্য করতে হয়। ক্ষমা করা মানে,- কাউকে দয়া করা নয়। বরং ক্ষমা করা মানে ক্ষমতাশালী হওয়া। আমি তোমার বাজে ব্যাবহার সহ্য করার ক্ষমতা অর্জন করলাম। ক্ষমা করলে অন্যের কি উপকার হয় জানিনা,- কিন্তু নিজের মন শান্ত হয়। আর শান্ত মনেই ঠাকুর থাকেন। "
তিনি নিজের জীবনের জীবনের একটি অভিজ্ঞতা বললেন,-" একবার একজন খুব কাছের লোক আমায় এমন একটা কথা বলল,- আমার মনে খুব খারাপ লাগল। সারাদিন মনটা খুব খারাপ হয়ে আছে,- শুধু মনে আসছে,- সে কেন আমার সাথে এই খারাপ আচরণটা করল? গাড়ী করে যাচ্ছি,- হঠাৎ মনে হল,- আমার মাথায় তো ঠাকুর নেই। শুধু ঐ লোকটির কথাটাই মাথায় ঘুরছে। সাথে সাথে স্থির করলাম,- মাথায় ঠাকুর ছাড়া অন্য কোন চিন্তা যেন স্থান না পায়। আমার মন শান্ত হল। "
আমরা দেখি,- শিবের গলায় সাপ ঝুলে আছে। অর্থাৎ শিবগুনসম্পন্ন পুরুষ যিনি তিনি কাউকে বাদ দেন না। ঐ সাপ হ'ল খল হিংস্র ব্যাক্তির প্রতীক। সাপের মত চরিত্রওয়ালা লোক যারা- মহাদেব তাদের প্রেমে বশীভূত ক'রে কাছে রেখে দেন, যা'তে তারা বাইরে যেয়ে বৃহত্তর সমাজের ক্ষতি করতে না পারে। আবার তাদের ভিতরে ও যে সত্তাপ্রীতি আছে তা' উস্কে দিয়ে ঐ অমনতরদের দ্বারা লোকমংগল যতটুকু করানো সম্ভব তাও করিয়ে নেন। এই হল শিবভাবের বৈশিষ্ট্য। আচার্য্যদেবও তাই করেন। তিনিই শিবগুনসম্পন্ন পুরুষ।
হেমকবি তার শেষ জীবনে একটা কথা বলেছিলেন,-" জগতে বহু মহাপুরুষ এসছেন, সাধু-গুরু এসছেন। তারা কতশত মানুষকে আশ্রয় দিয়েছেন। কিন্তু এই জগতে প্রশ্রয় যদি কেউ দিয়ে থাকেন,- তবে তিনি শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূল চন্দ্র। "
হেমকবি আচার্য্যদেবকে দেখে যান নি,- তাই তিনি শুধু শ্রীশ্রীঠাকুরের কথাই বললেন। তিনি যদি আজকে জীবিত থাকতেন,- আর আচার্য্যদেবের সঙ্গ করার সুযোগ পেতেন তবে তিনি আচার্য্যদেব সম্পর্কেও একই মন্তব্য করতেন। আমরা যারা আচার্য্যদেবের সন্নিকটে যাই,- আমাদের অজস্র চারিত্রিক দোষগুলির সবগুলোই তিনি জানেন। কোনকিছুই তাঁর চোখে গোপন নেই। তারপরও তার সামনে গেলে তিনি এতটাই ভালবাসা দেন, গূরত্ব দেন,- মনে হয় বিশ্বের সবচেয়ে দামী ও গুরত্বপূর্ণ ব্যাক্তিটি যেন আমিই। আমার মত অতি সাধারণ মানুষটিও তাঁর দৃষ্টিতে ভীষণ গুরত্বপূর্ণ। আমার সকল মলিনতা, সকল পাপ, সকল চারিত্রিক ত্রুটি সহ তিনি আমাকে গ্রহন করেন, আশ্রয় দেন। এটাকেই প্রশ্রয় বলে। অমন লক্ষ কোটি মানুষকে প্রশ্রয় দিয়ে দিয়ে তিনি আগলে রেখেছেন।
কিন্তু তাঁর এই ভালবাসা ও প্রশ্রয়কে granted ধরে নিয়ে আমরা যদি নিজের চারিত্রিক দোষগুলিকে আরো শান দিতে থাকি, তাঁকে বোকা ভেবে কপটতা ও ধুর্ততাকে আরো প্রশ্রয় দিতে থাকি,- তবে একসময় প্রকৃতি রুষ্ট হয়ে উঠে। প্রকৃতি বড় নিষ্ঠুর। এই প্রকৃতির কোপে পড়ে যন্ত্রনা ভোগ করলে তখন তিনিও আমার জন্য কষ্ট পান। অসহায় পিতার মত অবস্থা হয় তার।
আবার,- কখনো কখনো তাঁর এই প্রশ্রয়, ভালবাসা, অহেতুক দয়া, তার গূরত্বারোপ, - আমার মনে অহংবোধের জম্মও দিতে পারে। মনে হতে পারে,-" আমি তো বিশাল এক কেউকেটা!! তিনি আমায় কাছে ডাকেন,- মানে আমি কত জ্ঞানীগুণী, পূন্যবান!! আমাকে ছাড়া কি তাঁর চলবে?" এই অহংবোধ এক নিমেষে আমাকে গভীর অন্ধকারে টেনে নিতে পারে। তিনি মূর্খ্যকে দিয়েও বহু জ্ঞানের কথা বলাতে পারেন, খোঁড়াকে দিয়ে হিমালয় জয় করাতে পারেন। তাই অহংকার করার কিছুই নেই। তাঁর হাত আমার মাথায় আছে বলেই আমি এই করছি-সেই করছি। যেইমাত্র এই হাতটা সরে যাবে আমার অবস্থা চার্জশূন্য মোবাইলের মত হবে। তখন এত দামী জিনিসটা একটা প্লাস্টিকের বাক্স মাত্র। তিনি আছেন বলেই আমি আছি।
মহাদেবের গাত্রবর্ন ' রজতগিরিনিভ', অর্থাত রূপালী পর্ব্বতের ন্যায় শুভ্রবর্ন। কেন? সাদা হল সমস্ত রংগের সমাহার। সমস্ত বর্ন, সকল বিভিন্নতা তার মধ্যে এসে সমন্বয় লাভ করে। সকল তত্ত্ব ও তথ্যের সার্থক সমাহার তিনি। তারই প্রতীক ঐ শ্বেতবর্ন। আচার্য্যদেবও তাই। তাঁর সন্নিধানে এসে জ্ঞানী-অজ্ঞানী, পাপী-পূন্যবান, ধনী-গরিব সব বিভেদ মুছে যায়, সকল বিভিন্নতা তাঁর পদপ্রান্তে এসে সমন্বয় লাভ করে।
তিনিই জীবন্ত শিব, তিনিই সেই পরম প্রশয়দাতা। তিনিই সকল বিচ্ছিন্নতার সমন্বয়কারী।
*******************
©ডাঃ রাজেশ চৌধুরী
২৩-১২-২৩
#কষ্ট_থেকে_মুক্তির_পথ
জনৈক দাদা আজ ক’দিন থেকেই শ্রীশ্রীঠাকুরের কাছে বারবার তার নানা সমস্যার কথা বলছিলেন এবং শ্রীশ্রীঠাকুর ও তাকে যা’ করণীয় সে-সম্বন্ধে বারবার বলছিলেন। তৎসত্ত্বেও দাদাটি আজও সেই একই কথা জিজ্ঞাসা করায়
শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন- আমার মনে হয় আমার কথাগুলি তোমার মাথায় ধরে নি। আমি যা' বলেছি তা’তুমি করবে না, এবং suffer করবে (কষ্ট পাবে)। আবার বলি, নামধ্যান ঠিকমত কর, কাউকে ফাঁকি দিও না। ভাল ব্যবহার কর। যাতে মানুষের তোমার প্রতি শ্রদ্ধা হয়, তেমন ক'রে চল। তাহলে পেরে যাবে। মানুষ পড়ার সময় তাড়াতাড়ি পড়ে। উঠতে দেরী লাগে। মানুষের দুর্দশা যে তৎক্ষণাৎ দূর হয়, তা' তো না। স্বভাব না বদলালে, কেউ টাকা দিলে, কিম্বা কিছু করলে তাতে দুর্দশা ঘোচে না। চলন-চরিত্র ঠিক করলে ধীরে ধীরে অবস্থারও পরিবর্তন হয়। চল, কর, তবে তো হবে?
-শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্র
আলোচনা প্রসঙ্গে ১৫/১.৩.১৯৪৯
তথাকথিত ধর্মাচরন ও শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূল চন্দ্র
*****************************************
ধর্ম, ঈশ্বর, ঠাকুর,দেবতা ইত্যাদি ব্যাপারগুলি নিয়ে আমাদের অধিকাংশের মনেই এক অদ্ভুত, কিম্ভুতকিমাকার ধারনা রয়েছে। এই ভ্রান্ত ধারনার কারনেই কিছু শিক্ষিত লোক ধর্মের নামে নাক শিটকায়, - আবার কিছু লোক ধর্মান্ধতায় উম্মাদ হয়ে হিংসা ও ঘৃনায় লিপ্ত হচ্ছে।
' ধর্ম' ও ' সম্প্রদায়' ব্যাপার দুটিকে গুলিয়ে সম্প্রদায়টাকেই ধর্ম মনে করছি। আমি যত বড় মুসলিম বিদ্বেষী তত বড় হিন্দু, মুসলিমরা ভাবছে আমি যত বেশী হিন্দুকে ধর্মান্তরিত করে মুসলমান বানাতে পারব,- আমি তত বড় মুসলিম। খৃষ্টানরা পাহাড়ে- জংগলে সহজ সরল হিন্দু জনজাতি যুবক-যুবতীকে তাদের পিতৃপুরুষদের সংস্কৃতি-কৃষ্টি পরিত্যাগ করিয়ে ' খৃষ্টান ' বানিয়ে ভাবছে আমরা বিশাল বড় যীশু ভক্ত বনে গেলাম। এক ভ্রান্ত ধারনার বশবর্তী হয়ে উম্মাদনায় মেতে উঠেছে সবাই। তার কারন, আমরা যুগোপযোগী পুরুষোত্তমকে, জীবন্ত আদর্শকে পেছন ফিরে প্রবৃত্তিপূরনী চিন্তা- কার্যে লিপ্ত।
ঈশ্বর, ঠাকুর,দেবতাকে আমরা ভেবে নিয়েছি নিজেদের মনোস্কামনা পূরনের যন্ত্র হিসাবে। যা খুশী তা করব আমি, যেমন খুশী তেমনি চলব,- বছরে একবার মা কালীর সামনে জোড়া পাঠা বলি দিলেই আমার সব পাপ মুক্তি, আমার মনের ইচ্ছা মা- কালী পূরন করে দেবেন। সারাবছর পড়াশুনার সাথে যোগাযোগ নেই, -বছরে একবার ঘটা করে সরস্বতী পূজা দিলেই পরীক্ষায় পাশ!! মেলাঘরে পাগলী মাসির কাছে এক হাড়ি পেড়া নিয়ে উনার মুখে ছোয়াতে পারলেই, উনি আমার মুখের উপর থুতু ছুড়ে দিলেই আমি বড়লোক হয়ে যাবে, আমার মনোস্কামনা পূরন হয়ে যাবে। খাওয়ার ঠিক নেই, সদাচার নেই, চলন ঠিক নেই,- সপ্তাহে একবার বিপদনাশিনীর ব্রত করলেই সব বিপদ দূর হয়ে যাবে। আমরা নিজেদের ভাবি খুব চালাক,- আর ঠাকুর-দেবতাদেরকে ভাবি মূর্খ!! মানত করার নামে ঈশ্বরকে ঘুষ দেবার লোভ দেখাই। যেন উদয়পুরের মা কালী পাঠার মাংস খাওয়ার লোভে আমার মনের ইচ্ছা পূরন করে দেবেন। যাকে আমি জগতমাতা বলি, করুনাময়ী বলি,- তাঁর সামনে নিরীহ, অবলা জীবকে খুন করে তাঁর দয়া প্রার্থনা করি। অদ্ভুত আমাদের ধর্মবোধ!!
আমরা খুব শিক্ষিত, খুব বুদ্ধিমান হয়ে ও, - এই ভ্রান্ত ধর্মবোধের কাছে অসহায়।
শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূল চন্দ্র বলেন, " ধর্ম কখনো বহু হয় না, ধর্ম একই আর তার কোন প্রকার নেই।
মত বহু হতে পারে, এমনকি যত মানুষ তত মত হ'তে পারে, কিন্তু তাই ব'লে ধর্ম্ম বহু হতে পারে না।
হিন্দুধর্ম,মুসলমানধর্ম্ম, খৃষ্টানধর্ম্ম, বৌদ্ধ ধর্ম্ম ইত্যাদি কথা আমার মতে ভুল, বরং ও- সবগুলি মত।
কোনও মতের সঙ্গে কোনও মতের প্রকৃতপক্ষে কোনও বিরোধ নেই, ভাবের বিভিন্নতা, রকমফের- একটাকেই নানাপ্রকারে একরকম অনুভব। "
ধর্ম্ম কি? তাঁর কথায়,-" বাঁচতে নরের যা যা লাগে/ তাই নিয়েই তো ধর্ম জাগে।"
" অন্যে বাঁচায়, নিজে থাকে/ ধর্ম বলে জানিস তাকে।"
" ধর্ম্মে সবাই বাঁচে- বাড়ে/ সম্প্রদায়টা ধর্ম না'রে।"
আমরা "আশীর্বাদ" বলতে বুঝি,- ঈশ্বরের অলৌকিক দয়া। প্রার্থনা বলতে বুঝি,- ঈশ্বরের কাছে কাতরভাবে কিছু চাইব,- আর তিনি আমার মনোস্কামনা পূরন করে দেবেন। আমাদের ধারনা,- প্রার্থনা হল কিছু না করে পাওয়ার রাস্তা।কিন্তু শ্রীশ্রীঠাকুর বলেন " আশীর্বাদ " মানে হচ্ছে " অনুশাসনবাদ", আর " প্রার্থনা" মানেই হচ্ছে " প্রকৃষ্টরূপে চলা"। অর্থাৎ আমি যা পেতে চাই,- তা পেতে হলেই ঈশ্বরের অনুশাসনবাদ মেনে সেই পথে প্রকৃষ্টরূপে চললেই আমার প্রার্থনা পূরন হয়। সেখানে বুজরুকির কোন ব্যাপার নেই, না করে পাওয়ার কোন ধান্ধা নেই।
অনেকের কাছেই শুনি অমুক মন্দিরের " মা কালী" খুব জাগ্রত, অমুক দেবতা খুব জ্যান্ত। তাদের কাছে নাকি যা মানত করা যায়,- তাই পূরন হয়। এটা মূর্খামি ছাড়া আর কিছুই নয়। একটা কাঠের টেবিলকে সামনে রেখে যদি আমি একশটা মানত করি,- তার মধ্যে অন্ততঃ আট- দশটা পূরন হয়ে যেতেই পারে কাকতালীয় ভাবে। আমি সেই কাঠের টেবিলটিকে ও " জাগ্রত' ভাবতে অসুবিধা কি?
আর্য্য ঋষিরা আমাদের সুষ্ঠু চলনার জন্য কতগুলি অনুশাসনকে মূর্তির রূপ দিয়েছেন,- যাতে আমরা সেই মূর্তিকে পূজা করে তাঁর অন্তর্নিহিত অনুশাসনবাদকে জীবনে মেনে চলে সাফল্যের অধিকারী হয়ে উঠি।
যেমন ছাত্ররা পড়াশোনায় সাফল্যের জন্য সরস্বতী পূজা করে। সেই সরস্বতী মূর্তির মধ্যেই রয়েছে ছাত্রদের পড়াশোনায় সাফল্যের জন্য অনুশাসনের চাবিকাঠি। সরস্বতীর বাহন হল হাঁস। অন্য কোন প্রানী যেমন,-কুকুর, বেড়াল, মুরগী ইত্যাদি ও হতে পারত সরস্বতীর বাহন। হাঁসকেই কেন সরস্বতীর বাহন করা হল? কারন হাঁসের একটি বিশেষ গুন হল,- এক বাটি দুধ খেতে দিলে হাঁস তার মধ্য থেকে ছানা খেয়ে নেয়,- জল পড়ে থাকে। তেমনি একজন বিদ্যার্থী বই পড়ে তার মধ্য থেকে নির্যাসটা গ্রহন করবে। সবটা বই মূখস্থ করতে হয় না। মা সরস্বতীর পরিধেয় হল শুভ্র বসন। উজ্জ্বল লাল, নীল, কাল বস্ত্র উনার পরিধেয় হয় না কখনো। কারন সাদা রঙ হল শান্তির প্রতীক। যে বিদ্যা গ্রহন করবে তার পরিবেশ, মন শান্ত হউয়া প্রয়োজন। অস্থির মন নিয়ে বিদ্যা অর্জন হয় না। সরস্বতীর হাতে থাকে বীনা। বীনা হল ছন্দের প্রতীক, গতিময়তার প্রতীক। যে বিদ্যাভ্যাস করবে তার অভ্যাস- অনুশীলন যেন বীনার ছন্দের মতই ছন্দশীল, গতিময় হয়। আজকে একটু পড়লাম,- আবার এক সপ্তাহ পর আরেকটু পড়লাম,- এমন হলে বিদ্যা অর্জন হয় না। শ্রীশ্রীঠাকুর সরস্বতীর মূর্তির ব্যাখ্যা এমন ভাবেই দিলেন।
দূর্গা পূজা আসন্ন। ক্লাবে ক্লাবে যুবকরা চাঁদা সংগ্রহে ব্যাস্ত। বউরা নতুন শাড়ী কিনতে ব্যাস্ত। উঠতি যুবকরা এবার পূজায় কোন ব্র্যান্ডের মাল খাবে সেই পরিকল্পনায় মশগুল। অসুরদলিনী অসুর দমন না করে,- পাড়ায়- পাড়ায়, ক্লাবে- ক্লাবে নতুন অসুর সৃষ্টি করেন। কি লাভ এই দূর্গা পূজা করে? এমন কি কখনো হয়েছে যে,- দূর্গা পূজা করে কোন ছেলে- মেয়ে নিজের চলন- চিন্তা- আচরনকে উন্নত করতে পেরেছে, কোন ছেলে মা দূর্গার প্রতি ভক্তির কারনে মদ খাওয়া ছেড়ে দিয়েছে, কোন স্বামী- স্ত্রী ঝগড়াঝাটি বর্জন করে সংসারে শান্তি বজায় রাখতে শিখছে, কোন ছেলে মা- বাবাকে প্রনাম করতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে?
শ্রীশ্রীঠাকুর বলেন,- মা দূর্গা হল আমার ঘরে যে মা আছেন,- তাঁর প্রতীক। দূর্গার দশ হাত কেন? আমার মায়ের তো দশ হাত নেই!! কিন্তু আমার মা সংসারের দশদিক খেয়াল রাখেন। স্বামী সেবা, শ্বশুর- শ্বাশুড়ির সেবা, সন্তান শুশ্রুষা, গবাদি পশুর যত্ন রাখা, পাড়া প্রতিবেশীর খোঁজ রাখা ইত্যাদি সংসারের দশদিকেই খেয়াল রাখা আমার মায়ের চরিত্র,- তাই দূর্গা মায়ের দশ হাত। তাঁর পদতলে অসুর আর বাহন হল সিংহ। তার মানে আমার মায়ের সতীত্বের তেজ এমনই যে অসুরের মত দুষ্ট চরিত্রের পুরুষ তার কাছে এসে পদাবনত হয়। সিংহের মত হিংস্র, দুষ্ট মানুষকে ও তিনি তার বুদ্ধি ও বিচক্ষনতা দিয়ে বশ করে রাখেন। দূর্গা মূর্তির মাথার পেছন দিকে থাকে মহাদেবের প্রতিকৃতি। অর্থাৎ এত কিছু সামলে ও তার আসল গুন হল স্বামীনিষ্ঠা। স্বামীই তাঁর ধ্যান- জ্ঞান- চিন্তা। এমন চলনার ফলেই সেই মায়ের গর্ভে লক্ষী, সরস্বতী, কার্তিক, গনেশের মত গুনধর সন্তানের জন্ম হয়। অর্থাৎ সম্পূর্ণ দূর্গাপ্রতিমাটিই হল একজন আদর্শ মায়ের চলনা কেমন হউয়া উচিত,- তার অনুশাসনবাদ। দুর্গাপূজার মধ্য দিয়ে আমি আমার ঘরের মায়ের স্বরূপ চিনতে পারি, তাঁর প্রতি আরো শ্রদ্ধাশীল, আরো সেবাপরায়ন হয়ে উঠি৷ তবেই দূর্গা পূজার সার্থকতা।
তেমনি হিন্দুদের প্রত্যেকটি দেবদেবীর মূর্তির মধ্যেই রয়েছে বাঁচা- বাড়ার জন্য অনুশাসনবাদের প্রতিচ্ছবি। যুগপোযোগী জীবন্ত আদর্শকে ধরে, তাকে অনুসরনের মধ্য দিয়ে এই মূর্তি পূজা করলে তবেই সেই পূজার সার্থকতা। নতুবা, সেই ভ্রান্ত ধর্মাচার আমাদের ধ্বংসের পথেই নিয়ে যায়।
****************************
ডাঃ রাজেশ চৌধুরী
আগরতলা
১৩/০৯/১৯
#এই DP WORK-এর প্রেক্ষাপটটা আপনাদের বলি। কিছু মানুষ আছেন, যারা প্রায়-সময়ই বলেন, এত দীক্ষা দিয়ে কী হবে, অনেকেই তো ইষ্টভৃতি ছেড়ে দিয়েছেন, কা'রও সাথে তো যোগাযোগ রাখা হয় না- এইরকম বহু কথা। এইসব শুনে ঘরে বসে-বসে দুঃখের সাথেই আমি ঋত্বিক বইটা দেখছিলাম। আমি প্রায় সময়ই ঋত্বিক বইয়ের পাতা ওল্টাই। সেই সময় আমি এই বাণীটি পেলাম— “শোন ঋত্বিক...”। ঠাকুর এই দায়িত্বটা ‘আমাদের' দিয়েছেন। তখন আমি ভাবতে লাগলাম, কীভাবে এই জিনিসটা সবাই ব্যবহার করতে পারে, সবাই যাজন করতে পারে। ঠাকুরের বাণীতে বলা এই বিষয়টিকেই আমি কম্পিউটারাইজড ক'রে দিয়েছি মাত্র, এর বেশি কিছুই করি নি। ঠাকুরের দেওয়া এই দায়িত্বটা আমরা সবাই মিলে পালন করব। প্রতিটি সৎসঙ্গীকে কাজে লাগান, — কাউকে ছাড়বেন না। তাঁদের বলুন— বাইক, সাইকেল এইসবের দরকার নেই। বাড়ী থেকে পায়ে হেঁটে যেটুকু যেতে পারে সেটুকু গিয়ে যাজন করে আসুন। এটাই আমাদের করণীয়, আর-কিছুই নয়।"
~পুজ্যপাদ অবিনদাদা ।।
জয়গুরু
আমি গত (25/11/22) একটি সৎসঙ্গে ছিলাম। সেখানে ডিপি ওয়ার্ক নিয়ে আলোচনা হচ্ছিল । যিনি আলোচনা করছিলেন তিনি দেওঘরে গিয়েছিলেন এবং সেখান থেকে পূজনীয়া বড় বৌরানী মা'র একটি কথা আমাকে খুব অবাক করে তুলল ভাবি তো করে তুললো এবং আমার দুচোখ দিয়ে জল পরিপূর্ণ হয়ে উঠল।
ওই দাদা বললেন যে, পূজনিয়া বড় বৌরানী মা গদগদ কন্ঠে বলছেন আমার ছেলেটা ( আমাদের পূজ্যপাদ অবিন দা) সারাদিন রাত্রে কেবলমাত্র ১ থেকে ২ ঘন্টা ঘুমায় আর আর সারাদিন পড়ে আছে এই ডিপি কাজ নিয়ে। তোরা কি কেউ পারিস নে এই ডিপি কাজটি খুব তাড়াতাড়ি, মনোযোগ সহকারে, করে তাকে একটু শান্তি দিতে ।
(সংগৃহীত)
বেশ তো আছি ভালোই আছি ,মানব কেন তাঁকে.…..………………
নদী যদি বলে সাগরের পানে ছুটবনা তা কি হয়? ভাবছিলাম শুধু। প্রকৃতির যত কিছু দেখি সব ই কেমন যেন সুশৃঙ্খল ---উল্টো-পাল্টা হলেই তা অসুন্দর!
***এখন কার যুগ হচ্ছে কেউ কাউকে মানবনা। সেদিন ক্রিকেট খেলা হচ্ছিল একটা আউট হয়েছে না হয়নি তার ডিসিশন এর জন্য আম্পায়্যার্ এর দিকে খেলোয়াড় রা তাকিয়ে আছে ---অর্থাৎ তার যা সিদ্ধান্ত তা খেলোয়াড় রা মানতে বাধ্য!ভাবি তো আমরা একবার! এক্ষেত্রে প্রত্যেক খেলোয়াড এর সিদ্ধান্ত ই সঠিক বিবেচনা করে এগোনো যায় তাহলে ক্রিকেট খেলাই ভন্ডুল হয়ে যাবে। -----সেই শেষ পর্যন্ত কাউকে মানতে হবে এই সিদ্ধান্তেই আমাদের ফিরতে হল।
***একটা জাহাজ বা ট্রেন বা প্লেন কত গুলো জীবন কে বয়ে নিয়ে পৃথিবীর এপ্রান্ত থেকে ঐ প্রান্ততে ছুটে বেরাচ্ছে সেই নির্ভর করতে হচ্ছে জাহাজের ক্যাপটেন ,বা ট্রেনের ড্রাইভার বা পাইলট এর উপর। কোন এক চরম মুহূর্ত তে তার উপরেই সব কিছু নির্ভর করে। ----এক্ষেত্রে ও সেই একজন কেই শেষ পর্যন্ত মানতে হচ্ছে।
--- সব থেকে বড় কথা আমাদের শরীর যে উত্তজনায় সাড়া দিচ্ছে , কেউ গায়ক হচ্ছে ---তার কাজ হচ্ছে গলায় কিন্তু মুল ভাবনা ভাবছে কিন্তু মাথা----কেউ হয়ত আ্যাথেলিট তাকে চ্যাম্পিয়ন হতে সাহায্য করছে তার পা ---ব্রেন থেকে সেই বার্তা না গেলে কিন্তু পা একটুও এগোবেনা। কাউকে পারব মাথা কেটে দিয়ে পা গুলোকে দৌড় করাতে!!ব্রেন কাজ না করলে পা ও প্যারালাইসিস হয়ে যায়-----সেই সারা শরীরের কাজ চালাতে হলে মাথা কে ঠিক রাখতেই হবে । নয়তো সারা শরীর অকেজো। ----অর্থাৎ এক্ষেত্রেও আমাদের প্রতিটি অঙ্গকে মাথার বশ্যতা স্বীকার করতেই হল।
****বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড তে যতই গ্যালাক্সি সৃষ্টি হোক না সবার কেন্দ্র তে একটা সূর্য আছে। এখন পৃথিবী বা বৃহস্পতির ইচ্ছে হয় আজথেকে নির্দিষ্ট কক্ষপথ এ না চলে ইচ্ছে মত যেদিকে ইচ্ছা ঘুরব। তাহলে এদের অস্তিত্ব মহাশূন্যে বিলীন হয়ে যাবে।
****ঠিক তেমন আমরা যে সংসার রচনা করি!যেখানে আমাদের ছেলে মেয়েরা ভূল করলে আমরা তাদের শাসন করে সঠিক পথে আনার চেষ্টা করি । তেমনি আমাদের জীবনেও একজন জীবন্ত আদর্শ লাগে যেখানে আমি ভূল করলেও কেউ একজন শাসন করে,ভালবেসে,আশ্রয় দিয়ে প্রশ্রয় দিয়ে আমাকে সঠিক পথে নিয়ে আসবে। কিন্তু তিনি তখনি শাসন করবেন যখন আমি তাকে মানব । যেমন কোন কোন ছেলে -মেয়ে বড় হলে বাবা-মা কে মানতে চায়না ---তারা বাবা-মার শাসনের গন্ডির বাইরে গিয়ে উশৃঙ্খল জীবন যাপন করে নিজেদের ধংস মুখে নিয়ে যায়!অসহায় বাবা --মা য়ের চোখের জল ফেলা ছাড়া কোন উপায় থাকেনা!তেমনি আমরা বাবা -মায়েরাও ভূল করি কিন্তু আমার জীবন্ত আদর্শের কাছে নিজেকে যুক্ত করে উম্মুক্ত না করলেও তিনি আমার ভালো কিছুতেই করতে পারেননা। এখানেই দীক্ষা গ্রহনের সার্থকতা ।
***একটা পরিবার সুন্দর হলে সেই ছেলে -মেয়ে গুলো সুন্দর হবে। সেই ছেলেমেয়ে গুলো যখন সমাজে আর পাঁচজন ছেলেমেয়ে দের সাথে মিশবে তারা অন্তত একটা সুস্হ পরিবেশ সৃষ্টি করার চেষ্টা করবে। এমন করেই একটা দেশ তখন সুন্দর হবে। অর্থাৎ আমি দেশের সর্বোচ্চ শাসক হই আর সাধারন পুলিস হই আমি যদি ভাল মানুষ না হই তাহলেই সব কিছু আসতে আস্তে শেষ করে ফেলব। তাই আমাকেই আগে ঠিক হতে হবে। আর ঠিক হতে গেলে যিনি সঠিক বা পারফেক্ট তাঁকে মেনে চলতে হবে।
@সুদীপা দাস (কোলকাতা)
শ্রীশ্রীঠাকুর সকালে গোলতাঁবুতে বসে আছেন। অনেকেই উপস্থিত আছেন। গীতার ভাবার্থ সম্বন্ধে প্রশ্নোত্তর চলছিল।
প্রশ্ন— ব্যক্তিধৰ্ম্ম, রাষ্ট্রধর্ম্ম, কুলধৰ্ম্ম এগুলি কি আলাদা এবং এগুলি ঠিক থাকার লক্ষণ কী?
শ্রীশ্রীঠাকুর— ব্যক্তিধৰ্ম্ম, কুলধৰ্ম্ম, রাষ্ট্রধর্ম সবই এক, যখন সেগুলি ব্যষ্টি ও সমষ্টিগতভাবে মানুষের ধর্ম্মদ অর্থাৎ মানুষের বাঁচাবাড়া অর্থাৎ অস্তিবৃদ্ধির পরিপোষক। আর, সেগুলি পরিপন্থী যেখানে, সেখানেই খারাপ হ'য়ে ওঠে।
প্রশ্ন— হিংসা তো পাপ, কিন্তু এখানে তো হিংসার সমর্থন পাওয়া যাচ্ছে।
শ্রীশ্রীঠাকুর— শ্রীকৃষ্ণ হিংসাকে হিংসা করতে বলেছেন। হিংসায় অহিংস হওয়া পাপ ছাড়া কিছুই নয়। মানুষের অস্তিবৃদ্ধিকে যা'নষ্ট করে তাতে অহিংস হওয়া পাপ, সেই হ'ল পরম হিংসা।
প্রশ্ন— আমরা তো জানি, অহিংসাই ধৰ্ম্ম।
শ্রীশ্রীঠাকুর— আমাকে যদি কেউ নষ্ট করার জন্য চেষ্টা করে, আমার অন্তরে যে বাঁচার ঐকান্তিক সম্বেগ সেই সম্বেগই আবার তাকে নিরোধ করতে চায়।
প্রশ্ন—কোনটাকে ধৰ্ম্মযুদ্ধ ও কোনটাকে অধৰ্ম্মযুদ্ধ বলা যায়?
শ্রীশ্রীঠাকুর— যে যুদ্ধ বাঁচার জন্য, লোককে বাঁচাবার জন্য, বাঁচাবাড়ার আদর্শকে রক্ষা করবার জন্য করা হয় সেই যুদ্ধ ধর্মযুদ্ধ। আবার যে যুদ্ধ ঐশ্বর্য্য–লালসায় প্রলুব্ধ হ'য়ে অন্যকে হনন করতে চায়, তা অধৰ্ম্মযুদ্ধ।
প্রশ্ন— তাহ'লে বাঁচতে গেলেই তো যুদ্ধ এসে পড়ে। কোনটা ধৰ্ম্মযুদ্ধ, কোনটা অধৰ্ম্মযুদ্ধ বুঝব কী করে?
শ্রীশ্রীঠাকুর— সে বোঝাই যায়। আপনি যদি বাঁচেন এবং আমাকে যদি বাঁচান, তাহলে সে বাঁচা এবং বাঁচানর জন্য তো লড়াই বাধে না।
আলোচনা-প্রসঙ্গে (দ্বাবিংশ খন্ড)
৮ই ফাল্গুন, ১৩৫৯, শুক্রবার (ইং ২০। ২। ১৯৫৩)
Click here to claim your Sponsored Listing.
Videos (show all)
Category
Address
Guwahati
MG Road
Guwahati, 781001
Under the guidance of Terapanth Mahila Mandal Guwahati.
Guwahati
The purpose of this group is to spread Gospel of Jesus Christ,who took our sin,died and washed all our sin and made us righteous. (Romans 3: 24)
Guwahati, 781001
The purpose of this page is to make people understand about God consciousness
Nilachal Hill
Guwahati
The Kamakhya Temple কামাখ্যা দেৱালয় also known as Kamrup-Kamakhya temple, Kamakhya Devalaya, is a Hindu temple dedicated to the Mother Goddess Kamakhya. It is one of the Oldest of...
GS Road, Near Big Bazaar, SATSANG VIHAR, Bhangagarh, Guwahati 781005
Guwahati, 781034
Satsang is a philanthropic organization founded by Sree Sree Thakur Anukulchandra. It is one of the major spiritual and cultural movements started in the early 20th century.
Guwahati, 781381
গোপাল থান আঞ্চলিক নাগাৰা নাম দল । স্থান- কৰৰা মৰানৈ পাৰ । যোগাযোগ নং- ৯১০১১৪৭১১৫ আৰু ৯৯৫৭৩৩২৮৫৬
Guwahati
यह धार्मिक पेज श्री श्याम बाबा की आराधना एवं प्रचार प्रसार हेतु है