Kamal Hossain TET Coaching

সময় খারাপ যাচ্ছে কিন্তু জীবনটাকে খারাপ হতে দেবেন না।
------------------------------------------
আপনার জীবনটা 14 দিনের লকডাউন না বা 21 দিনের বা 59 দিনেরও নয় ,জীবনটা সারা জীবনের জন্য আপনার কাছে আশীর্বাদ। নিরাশাবাদী রা সব সময় সফলতার মধ্যে ব্যর্থতার গন্ধ পায় কিন্তু আপনারা আশাবাদী পরীক্ষার্থী । তাই পৃথিবীর সমস্ত আশাবাদীর বা পজেটিভ মনের মানুষের মত আপনারাও বারবার ব্যর্থতার খাঁজে খাঁজে সফলতার সৌগন্ধ এর তৃপ্তি অনুভব করবেন। তাহলে দেখবেন পড়াশুনার মাধ্যমে নিজেকে ডুবিয়ে দিয়েছেন এই ঘরবন্দি অবস্থার মধ্যে। আশাবাদী চাকরির পরীক্ষার্থীদের কাছে এটা খুবই সুসময় বলে মনে করি, কারণ এখন পড়ার যথেষ্ট সময় আছে, ঘরে বসে লেখালেখির অঢেল সময় ও আছে। তাই সুশৃঙ্খল পরীক্ষার্থীর মত আপনারাও সময়ের সদ্ব্যবহার করুন অর্থাৎ সময়কে যদি বেশি করে সময়ের মর্যাদা দিয়ে ভরিয়ে দেন তাহলে সময়ও আপনাকে দুঃসময়ে সফলতায় ভরিয়ে দেবে দেবে। জীবন থেমে থাকে না।কিন্তু আপনি নিজেই আপনার জীবনকে থামিয়ে দিলে আপনার জীবন স্থবির হয়ে যাবে। পৃথিবীর ইতিহাসে এমন বাস্তব উদাহরণ প্রচুর কিন্তু নিরাশাবাদী রা সুন্দর সচ্ছল গতিময় জীবন টাকে কু চিন্তার প্রভাব দিয়ে থামিয়ে দেয়। গতিময় পড়াশোনা টাকে গতিহীন করে তোলে ভবিষ্যতের নানা সাত-পাঁচ ভেবে। আপনারা সবাই ভাববেন বা অনুভব করবেন যে এই দুঃসময়ে সারা পৃথিবীর এবং পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত চাকরির পরীক্ষার্থীর ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য। তাহলে আপনার মন খারাপের কি আছে এই ভেবে যে আপনার জীবনে আর কোনদিন চাকরি হবে না । কারণ যা ঘটছে বা ঘটেছে তা সমস্ত পশ্চিমবঙ্গবাসীর উপরে কমবেশি প্রভাব ফেলেছে।
সমস্ত ধর্মগ্রন্থ বলে"" দুর্যোগের প্রতিকূলতা একদিন না একদিন কেটে যাবে এবং জীবন আবার আগের থেকে অনেক বেশী সুন্দর এবং মধুময় হয়ে উঠবে যদি ধৈর্য ধরে থাকেন,""। কয়েক বছর আগে সারা পশ্চিমবঙ্গের চাকরিপ্রার্থীরা এটাই ভেবে হতাশ হয়েছিলেন যে পশ্চিমবঙ্গে আর চাকরি হবে না, কারণ দীর্ঘ পাঁচ বছর স্কুল সার্ভিসের কোন নিয়োগ নেই, পিএসসি এর তেমন কোনো খবর নেই কিন্তু এই লোক ডাউনের ঠিক ২০-৩০ দিন আগে আপনারা নিজেই পত্র-পত্রিকার মাধ্যমে জানতে পেরেছিলেন যে স্কুল সার্ভিস কমিশন আবার নতুন ভাবে নতুন উদ্যমে নতুন কৌশল নিয়ে শুরু হতে চলেছে এবং পিএসসির নতুন চেয়ারম্যান আসার পরে প্রায় পাঁচ মাস আগে থেকে প্রতিমাসে নোটিশ বার করছিলেন, কবে কোন পরীক্ষা হবে এবং কবে কোন পরীক্ষার রেজাল্ট বার হবে অর্থাৎ আবার নতুনভাবে পশ্চিমবাংলা চাকরির পরীক্ষার জন্য নতুনভাবে সেজে উঠেছিল কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সাধারণ কাজকর্ম যেমন স্থবির হয়ে আছে ঠিক তেমনি সরকারি চাকরির পরীক্ষা থাকবে খুব স্বাভাবিক কিন্তু মনে রাখবেন সব কিছুর শুরু ও শেষ আছে ,আর শেষের ও শুরু আছে অর্থাৎ আপনারা অনুভব করলেন যে চাকরির পরীক্ষা হয়তো আর জীবনে দিতে পারবেন না যারা বিএড বা ডিএড ডিগ্রিধারী কিন্তু স্কুল সার্ভিস কমিশনের এবং প্রাইমারি সার্ভিস এর বিজ্ঞপ্তি কয়েক মাসের মধ্যে হত। ঠিক তেমনি ভাবে রাজ্য সরকার ও উঠে পড়ে লেগেছিল গ্রুপ সি এবং গ্রুপ ডি পরীক্ষা রিক্রুটমেন্ট এর ব্যাপারে। তাই এখন নীরবে বা চুপি চুপি সফলতার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে চলুন দেখবেন কিছুদিন পরে আপনার সফলতা সাড়া ফেলে দিয়েছে আপনার এলাকায়। নিজের প্রতি বিশ্বাস হারানো টা সবচেয়ে বড় ভুল হবে আপনার কারণ এই নিজের প্রতি বিশ্বাস হারানোর হল ""আপনাকে মরতেও দেবেনা, আপনাকে বাঁচতেও দেবে না ,এমন কষ্টকর মাঝা মাঝি অবস্থায় ফেলে আপনার জীবনটাকে ছারখার করে দেবে ,আর যেটা কে বলে থাকি ডিপ্রেশন বা হতাশ'''। এই ব্যাপারে যদি প্রাচীনকালের মনিঋষিদের কাছ থেকে প্রাপ্ত একটি বাস্তব অভিজ্ঞতার কথা বলি তাহলে আপনারা সাহস পেতে পারেন। এক অসহায় মহিলা দুইজন বাচ্চাকে নিয়ে এদিক ওদিক ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন, কোন বাসস্থান পাচ্ছিলেন না, কোনো কূলকিনারা খুঁজে পাচ্ছিলেন না, কি করবেন বা কেমন ভাবে দিন যাপন করবেন। এই অবস্থায় হতাশ হয়ে যখন অনুভব করছেন যে তিনি তার দুই বাচ্চাকে নিয়ে আত্মহত্যা করবেন । একটি গাছের তলায় বসে তিনি এটাই ভাবছিলেন হঠাৎ দেখলেন সেই গাছের ডাল ভেঙে পড়ে গেছে কিন্তু তার সামান্য অংশ লেগেছিল মূল ডালের সঙ্গে এবং তিনি লক্ষ্য করলেন নিচে যে ডাল টি পড়ে গেছে সেটা কিন্তু শুকিয়ে গেছে, তার ডালপালা পাতা সবকিছু শুকিয়ে গেছে কিন্তু যে অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে সেই গাছের ডালের সংযোগস্থলে আবার নতুন করে পাতা বার হয়েছে নতুন করে আবার জীবন উঁকি দিচ্ছে সেই ক্ষতস্থান থেকে, সেই বিপন্ন হয়ে যাওয়া জীবন থেকে। আর তখনই এই হতাশ মহিলা বাঁচার জন্য আকাশের কিনারা দেখতে পেলেন এবং নিজে এবং নিজের ছেলেদের মধ্যে এই বেঁচে-থাকার জীবনীশক্তির সঞ্জীবনী মন্ত্র ছড়িয়ে দিলেন এবং পরবর্তীতে ওই মহিলা একজন মহান যোগী হয়েছিলেন। তাই এই লকডাউন অবস্থায় যারা পিএসসি দেবেন, রেল দেবেন, সেগুলো বারবার পড়ে যান এবং লিখে যান, নিজে নিজে পরীক্ষায় বসুন এবং যারা স্কুল সার্ভিস বা প্রাইমারি সার্ভিস দেবেন তারা হাতের কাছে যেসব বইপত্র আছে সেগুলোর ধুলোগুলো আবার ঝেড়ে নিন এবং দুই মলাটের মধ্যে সাদা পাতার উপরে যে কালো কালো শব্দ গুলো আছে ওগুলো কে আবার নিজে রা ভালবাসতে শিখুন। কারণ মনে রাখবেন আপনার সফলতা কোনো দুশ্চিন্তার উপর নির্ভর করবে না, আপনার সফলতা কোন বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে আড্ডা উপর নির্ভর করবে না, আপনার সফলতা সব সময় সোশ্যাল মিডিয়ার মধ্যে বুদ হয়ে থাকার উপর নির্ভর করবে না, আপনার সফলতা নির্ভর করবে এই দুই মলাটের মাঝে সাদা পাতার উপরে কালো অক্ষরগুলোর উপরে।
এই সময়ের পড়াশুনাটা আপনার সারাজীবন বদলে দিতে পারে।