Islamic Da'wah
Nearby places of worship
Dhaka
Dhaka, Fatulla
Fulbaria
1219
1207
dhaka
dhaka
1000
Kakrail
dhaka
আসসালামু আলাইকুম,, প্রিয় দ্বীনি ভাই বোনদের নিকট ইসলাম ও দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছানোর জন্য এই পেইজ
অনেকে নিজের জন্য নিজে আল্লাহর দরবারে দু’আ চাওয়ার চেয়ে অন্য কোনো বুযুর্গের কাছে দু’আ চাওয়াকেই বেশি উপকারী মনে করেন!
পিতামাতা, উস্তাদ, আলিম,বা নেককার কোনো জীবিত মানুষের কাছে দু’আ চাওয়া জায়েজ ।
তবে নিজের দু’আ নিজেই করা সর্বোত্তম । আমরা অনেক সময় মনে করি , আমরা গুনাহগার, আমাদের দু’আ কি আল্লাহ শুনবেন?
আসলে গুনাহগারের দু’আই তো তিনি শুনেন। আমার বেদনা,আকুতি,আমি নিজে আমার প্রেমময় মালিকের নিকট যেভাবে জানাতে পারব সেভাবে কি অন্য কেউ তা পারবেন।
এছাড়া দু’আ আমার জন্য সাওয়াব বয়ে আনবে এবং আমাকে আল্লাহর প্রেম ও করুণার পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
আয়েশা (রা.) বলেনঃ আমি প্রশ্ন করলাম, “হে আল্লাহর রাসূল, সর্বোত্তম দু’আ কী? তিনি উত্তরে বললেনঃ
“ মানুষের নিজের জন্য নিজের দু’আ। (১৮৮)
আপনার কুরবানী কি সত্যিই আল্লাহর ভয়ে হচ্ছে...!!
তাহলে আল্লাহর ভয়ে কেন আপনি নামাজ পড়ছেন না,
কেন আপনার নামাজের গুরুত্ব কুরবানী দেয়ার মত হচ্ছে না।
একবার নিজেকে প্রশ্ন করুন এটা ইজ্জত বাঁচানোর জন্য লোক দেখানোর জন্য হচ্ছে না তো..??
যদি আল্লাহর ভয়ে আপনি কুরবানী করেন তাহলে আল্লাহর ভয়ে আপনি নামাজও পড়তেন।
হয়তো কথাগুলো অনেক কঠিন লাগছে শুনতে,
প্রিয় ভাই বোন আমার ,,মৃত্যুর পরে ধরা খেয়ে যাবেন আপনার সমস্ত আমল ধ্বংস হয়ে যাবে নামাজ না পড়লে।
আল্লাহ তায়ালা বলেন,
পাঠ কর তুমি তোমার কিতাব(আমলনামা)।আজ তোমার হিসাব গ্রহণের জন্যে তুমিই যথেষ্ট।"[সূরা বনী ইসরাঈলঃ১৪]
আমরা কি করছি তা আল্লাহ খুব ভালো করেই জানেন।
আল্লাহ আমাদের সবাইকে বোঝার তৌফিক দান করুন আমিন।
আরাফার দিনে (৮ জুলাই) জুহুর থেকে মাগরিবের সময় পযন্ত অনেক দামী সময়।এই সময় হাজীরা আরাফার ময়দানে অবস্থান করবেন। এই সময় আল্লাহ তার বান্দাদের তওবা কবুল করতে থাকেন,গুনাহ মাফ করতে থাকবেন আর দুয়া কবুল করতে থাকবেন ।এই সময় আমরা গুনাহ মাফের জন্য তওবা করব আল্লাহর দরবারে, কান্নাকাটি করব আমাদের গুনাহের কথা স্মরণ করে আর আমাদের জীবনে যা যা লাগবে তার জন্য দুয়া করব।এই সুযোগ টা আমরা সবাই কাজে লাগাবো ইনশাআল্লাহ।
এই দুআ অবশ্যই করব ঃ
১)আরাফার দিনের দু‘আ ১০০ বার
لَا إِلَهَ إِلَّا اللهُ ، وَحْدَهُ لَا شَرِيكَ لَهُ ، لَهُ الْمُلْكُ وَلَهُ الْحَمْدُ ، وهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ
লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহ। লাহুল মুলকু, ওয়া লাহুল হামদু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির।
নেই কোন উপাস্য এক আল্লাহ ব্যতীত। তাঁর শরীক নেই। রাজত্ব তাঁর জন্য। প্রশংসা তাঁর জন্য। তিনি সর্ববিষয়ে ক্ষমতাবান।
২) সূরা ইখলাস ১০০ বার
সূরা আল-ইখলাস
قُلْ هُوَ اللَّهُ أَحَدٌ
اللَّهُ الصَّمَدُ
لَمْ يَلِدْ وَلَمْ يُولَدْ
وَلَمْ يَكُن لَّهُ كُفُوًا أَحَدٌ
কুল হুওয়াল্লা-হু আহাদ। আল্লা-হুসসামাদ। লাম ইয়ালিদ ওয়ালাম ইঊলাদ। ওয়া লাম ইয়াকুল্লাহূকুফুওয়ান আহাদ।
বলুন, তিনি আল্লাহ, এক, আল্লাহ অমুখাপেক্ষী, তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং কেউ তাকে জন্ম দেয়নি এবং তার সমতুল্য কেউ নেই।
১) দরুদে ইব্রাহিম ১০০ বার
দুরূদে ইব্রাহিম
اللّٰهُمَّ صَلِّ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا صَلَّيْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ .. اَللّٰهُمَّ بَارِكْ عَلٰى مُحَمَّدٍ وَّعَلٰى آلِ مُحَمَّدٍ كَمَا بَارَكْتَ عَلٰى إِبْرَاهِيْمَ وَعَلٰى آلِ إِبْرَاهِيْمَ إِنَّكَ حَمِيْدٌ مَّجِيْدٌ
আল্লাহুম্মা সাল্লি আ’লা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আ’লা আলি মুহাম্মাদিন কামা সাল্লাইতা আ’লা ইব্রাহীমা ওয়া আ’লা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্ মাজীদ, আল্লাহুম্মা বারিক আ’লা মুহাম্মাদিওঁ ওয়া আ’লা আলি মুহাম্মাদিন কামা বারাক্তা আ’লা ইব্রাহীমা ওয়া আ’লা আলি ইব্রাহীমা ইন্নাকা হামীদুম্ মাজীদ।
হে আল্লাহ! আপনি আমাদের নবী মুহাম্মাদ (সাঃ) ও তাঁর পরিজনের প্রতি রহমত বর্ষণ করুন, যেভাবে বর্ষণ করেছেন ইব্রাহীম (আঃ) ও তাঁর এর পরিজনের প্রতি, নিশ্চই আপনি প্রশংসিত ও সম্মানিত।
দেশের কোথাও পবিত্র শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখা যায়নি।
আগামীকাল সোমবার রমজান মাসের ৩০ দিন পূর্ণ হবে।
তাই আগামী ৩ মে
'পবিত্র ঈদুল ফিতর' উদযাপিত হবে।
প্রশ্ন: শবে কদরের বিশেষ দুআ এবং তা কখন কিভাবে পড়তে হয়?
▬▬▬▬◆◈◆ ▬▬▬▬
উত্তর:
শবে কদর/লাইলাতুল কদরে রাত জেগে অধিক পরিমাণে নফল সালাত, কুরআন তিলাওয়াত, যিকির-আযকার, দ্বীনী ইলম চর্চা সহ বিভিন্ন ধরণের ইবাদত-বন্দেগীর পাশাপাশি বেশি বেশি দুআ করা উত্তম কাজ। আর সে সব দুআর মধ্যে নিম্নোক্ত দুআটি অধিক পরিমাণে পাঠ করা উচিৎ যা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মা আয়েশা রা. কে শিখিয়েছিলেন।
উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রা:) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হে আল্লাহর রাসূল, আমি যদি জানতে পারি যে, কোন রাতটি লাইলাতুল কদর তাহলে তখন কোন দুয়াটি পাঠ করব? তিনি বললেন, তুমি বল:
اللَّهمَّ إنَّك عفُوٌّ كريمٌ تُحِبُّ العفْوَ، فاعْفُ عنِّي
উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউন কারীমুন তুহিব্বুল আফওয়া ফা’ফু আন্নী।
“হে আল্লাহ, আপনি মহানুভব ক্ষমাশীল। আপনি ক্ষমা করা পছন্দ করেন। অত:এব আপনি আমাকে ক্ষমা করুন।”
(তিরমিযী, অনুচ্ছেদ, কোন দুয়াটি শ্রেষ্ঠ। তিনি বলেন: হাদিসটি হাসান, সহীহ, শাইখ আলবানী রহ. এ হাদিসটিকে সহিহ বলেছেন। দ্র: সহীহুত তিরমিযী, হা/৩৫১৩)।
মুসনাদে আহমাদে كريمٌ ”কারীমুন” শব্দ ছাড়া বর্ণিত হয়েছে। উভয়টি সহীহ।
🔹 এ দুআটি কখন কিভাবে পাঠ করতে হয়?
উক্ত দুআটি সিজদা অবস্থায়, দুআ কুনুতে, নামাযের বাইরে হাত তুলে দুআ/মুনাজাত করার সময় এবং সাধারণভাবে বসা অবস্থায়, চলা-ফেরা করার সময় বা কাজের ফাঁকে-ফাঁকে অধিক পরিমাণে পাঠ করা যায়। আল্লাহ তাওফিক দান করুন।
▬▬▬▬◆◈◆ ▬▬▬▬
উত্তর প্রদানে:
আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডেন্স সেন্টার, সৌদি আরব
Collected
প্রশ্ন : আমরা রোজা রেখে অনেক সময় টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করি। যেহেতু টুথপেস্ট মিষ্টিজাতীয়, এতে আমার রোজা ভঙ্গ হয়ে যাবে কি না।
উত্তর : না, এতে সিয়ামের ক্ষতি হবে না। টুথপেস্ট ব্যবহার করলে এটা মাকরুহ হবে কি না, একদল ওলামায়ে কেরাম দ্বিমত করেছেন। কিন্তু বিশুদ্ধ বক্তব্য হচ্ছে, মাকরুহ হবে না। কিছু ওলামায়ে কেরাম বলেছেন এটা মাকরুহ হবে, যেহেতু এর ভেতর স্বাদ আছে। এ স্বাদ জিহ্বায় লাগলে অবশ্যই অনুধাবন করা যায়। এ কারণে এটাকে মাকরুহ বলেছেন। কেউ যদি সেহরি করার পরে ব্রাশ করে নেন, তাহলে আর রোজা রেখে দিনের বেলায় টুথপেস্ট ব্যবহার করে ব্রাশ করার প্রয়োজন নেই, শুধু নরমাল ব্রাশ করে নিলেই হবে।
আলেম ড.মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ
আহলান সাহলান মাহে রমাদ্বান🌺
••• বাংলাদেশে আগামী শনিবার ১৫ শা’বান ১৪৪৩ হিজরী •••
***
*** জনৈক কওমী মৌলভী সাহেব দাবী করে বললেন “ শায়খুল ইসলাম ইব্নে তাইমীয়া রহঃ বলেছেন “ শবেবরাতে নামাজ পড়াটা সাব্যস্ত এবং শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানী রহঃ মুশরিক ও হিংসুটে লোক ছাড়া সকল মুসলিমদের ক্ষমা করার হাদিসটিকে হাসান স্তরের বলেছেন ।”
*** জবাবে বলছি …..
শবেবরাত পালন করা / ঐ রাতে নামাজ পড়া মহানবী সাঃ ও কোন সাহাবীর রাঃ কাছ থেকে প্রমাণিত নয় । বরং সিরিয়ান কিছু তাবেঈ রাঃ, কিছু সালফে সালেহীনগণ রাঃ ব্যক্তিগতভাবে নফল নামাজ পড়েছেন বলে সূত্র পাওয়া যায় । এটা বলেছেন ইমাম ইব্নে রজব রহঃ । ইব্নে তাইমীয়া রহঃ ইমাম আওজাঈ রহঃ’র অভিমত গ্রহণ করেছিলেন ।
مجموع الفتاوى ص ٢٣-١٣١
لطائف المعارف ١٠
الاختيارات ١١
*** আর এ সূত্র ধরে ইব্নে তাইমীয়া রহঃ কেউ কেউ নামাজ পড়েছেন বলে মত প্রকাশ করেছেন । তিনি এটাও বলেছেন যে, জামাতবদ্ধ হয়ে মসজিদে নামাজ আদায় কিংবা ইবাদত করা সম্পূর্ণ বেদাত এবং ১৫ শা’বান রোজা রাখা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ।
*** শায়খ নাসিরুদ্দীন আলবানী রহঃ যে হাদিসটিকে হাসান বলেছেন , সেখানে আমল করার কোন কথা উল্লেখ নেই । অর্থাৎ হিংসুটে ও মুশরিক ছাড়া সকল মুসলমানদের ঐ রাতে ক্ষমা করে দেয়া হয় । শবেবরাতে ইবাদত করলেই ক্ষমা বা নামাজ পড়লেই ক্ষমা করা হবে !“ এমন কোন কিছু নেই ।
*** শবেবরাতে রিজিক বন্টনের কথাগুলো অগ্রহণযোগ্য । কারণ আল্লাহপাক দুনিয়া সৃষ্টির ৫০ হাজার বছর পূর্বে বান্দার তাকদীর লিপিবদ্ধ করেন ।
ছহীহ মুসলিম ২৬৫৩
مجموعة الفتاوى ١٨/٢٣٢
*** আল্লাহপাক প্রতি রাতের শেষ ভাগে প্রথম আকাশে আসেন বান্দার গুনাহ মাফ করার জন্য ।
ছহীহুল বোখারি ১১৪৫
ছহীহ মুসলিম ৭৫৮
সুতরাং ১৫ শা’বানকে সুনির্দিষ্ট করে প্রচলিত আমল শতভাগ বেদাত ।
MQM Saifullah Mehruzzaman
এখনো সময় আছে দুনিয়ামূখী হয়ে দ্বীন কে ভুলে যাবেন না,এই মৃত্যুর মিছিলে আমাদের নাম ও রয়েছে..হয়তো আজ নয়তো কাল-আল্লাহুম্মাগফিরলি
শবে মিরাজ পালন করা বিদআত
▬▬▬◄❖►▬▬▬
মিরাজ দিবস কিংবা শবে মিরাজ উদযাপন করা রজব মাসের অন্যতম বিদআত। জাহেলরা এই বিদআতকে ইসলামের উপর চাপিয়ে দিয়ে প্রতি বছর তা পালন করে যাচ্ছে! এরা রজব মাসের সাতাইশ তারিখকে শবে মিরাজ পালনের জন্য নির্ধারণ করে নিয়েছে। এ উপলক্ষে এরা একটি নয় একাধিক বিদআত তৈরি করেছে। যেমন:
- শবে মিরাজ উপলক্ষে মসজিদ মসজিদে একত্রিত হওয়া।
- মসজিদে কিংবা মসজিদের মিনারে মোমবাতি-আগরবাতি জ্বালানো বা আলোকসজ্জা করা।
- এ উপলক্ষে অর্থ অপচয় করা।
- কুরআন তিলাওয়াত বা জিকিরের জন্য একত্রিত হওয়া।
- 'মিরাজ দিবস' উপলক্ষে মসজিদে বা বাইরে সভা-সেমিনার আয়োজন করে তাতে মিরাজের ঘটনা বয়ান করা ইত্যাদি।
এগুলো সবই গোমরাহি এবং বাতিল কর্মকাণ্ড। এ প্রসঙ্গে কুরআন-সুন্নাহতে ন্যূনতম কিছু বর্ণিত হয় নি।
তবে এ এভাবে দিবস পালন না করে যে কোন সময় মিরাজের ঘটনা বা শিক্ষা নিয়ে আলোচনা করা দোষণীয় নয়।
♻ ক) কোন রাতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইসরা ও মিরাজ সংঘটিত হয়েছিল?
যে রাতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের ইসরা ও মিরাজ সংঘটিত হয়েছিল সেটি নির্ধারণের ক্ষেত্রে পূর্ব যুগ থেকেই ওলামাগণের মাঝে মত পার্থক্য রয়েছে। অর্থাৎ এ ব্যাপারে সুস্পষ্ট কোন হাদীস না থাকায় আলেমগণ বিভিন্ন জন বিভিন্ন মতামত ব্যক্ত করেছেন।
▪ ইবনে হাজার আসকালানী রহ. বলেন, মিরাজের সময় নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে।
কেউ বলেছেন, নবুওয়তের আগে। কিন্তু এটা একটি অপ্রচলিত মত। তবে যদি উদ্দেশ্য হয়, যে সেটা স্বপ্ন মারফত হয়েছিল সেটা ভিন্ন কথা।
অধিকাংশ আলেমগণের মত হল, তা হয়েছিল নবুওয়তের পরে। তবে নবুওয়তের পরে কখন সেটা নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে।
কেউ বলেছেন: হিজরতের এক বছর আগে। ইবনে সা’দ প্রমুখ এ মতের পক্ষে। ইমাম নওবী রহ. এই মতটির পক্ষে জোর দিয়ে বলেছেন। তবে ইবনে হাজাম এর পক্ষে আরও শক্ত অবস্থান নিয়ে বলেন, এটাই সর্ব সম্মত মত। এই মতের আলোকে বলতে হয় মিরাজ হয়েছিল রবিউল আওয়াল মাসে।
কিন্তু তার কথা অগ্রহণ যোগ্য। কারণ, এটা সর্ব সম্মত মত নয়। বরং এক্ষেত্রে প্রচুর মতবিরোধ রয়েছে। এ প্রসঙ্গে বিশটির অধিক মত পাওয়া যায়।
-ইবনুল জাওযী বলেন, হিজরতের আট মাস আগে মিরাজ হয়েছিল। এ মতানুসারে সেটা ছিল রজব মাসে।
-কেউ বলেন, হিজরতের ছয় মাস আগে। এ মত অনুযায়ী সেটা ছিল রমাযানে। এ পক্ষে মত দেন আবুর রাবী বিন সালেম।
-আরেকটি মত হল, হিজরতের এগার মাস আগে। এ পক্ষে দৃঢ়তার সাথে মত ব্যক্ত করেন, ইবরাহীম আল হারবী। তিনি বলেন, হিজরতের এক বছর আগে রবিউস সানীতে মিরাজ সংঘটিত হয়।
-কারো মতে, হিজরতের এক বছর তিন মাস আগে। ইবনে ফারিস এ মত পোষণ করেন।
এভাবে আরও অনেক মতামত পাওয়া যায়। কোন কোন মতে রবিউল আওয়াল মাসে, কোন মতে শাওয়াল মাসে, কোন মতে রমাযান মাসে, কোন মতে রজব মাসে।
▪ আর তাই শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন,
"ইবনে রজব বলেন, রজব মাসে বড় বড় ঘটনা ঘটেছে মর্মে বিভিন্ন বর্ণনা পাওয়া যায় কিন্তু কোনটির পক্ষেই সহীহ দলীল নাই। বর্ণিত হয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম রজবের প্রথম রাতে ভূমিষ্ঠ হয়েছেন, সাতাইশ বা পঁচিশ তারিখে নবুওয়ত প্রাপ্ত হয়েছেন অথচ এ সব ব্যাপারে কোন সহীহ দলীল পাওয়া যায় না।" [লাতাইফুল মায়ারেফ, ১৬৮ পৃষ্ঠা]
▪ আবু শামাহ বলেন, গল্পকারেরা বলে থাকে যে, ইসরা ও মিরাজের ঘটনা ঘটেছিল রজব মাসে। কিন্তু ইলমে জারহ ওয়াত তাদীল সম্পর্কে বিশেষজ্ঞ আলেমগণের মতে এটা ডাহা মিথ্যা। (আল বায়িস: ১৭১)
♻ খ) শবে মিরাজ পালন করার বিধান:
সালফে সালেহীনগণ এ মর্মে একমত যে, ইসলামী শরীয়তে অনুমোদিত দিন ছাড়া অন্য কোন দিবস উদযাপন করা বা আনন্দ-উৎসব পালন করা বিদআত। কারণ, রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন,
(( من أحدث في ديننا ما ليس منه فهو رد))
“যে ব্যক্তি দ্বীনের অন্তর্ভুক্ত নয় এমন নতুন জিনিষ চালু করল তা পরিত্যাজ্য। [বুখারী, অধ্যায়: সন্ধি-চুক্তি।]
আর সহীহ মুসলিমের বর্ণনায় রয়েছে:
(( من عمل عملاً ليس عليه أمرنا فهو رد ))
“যে ব্যক্তি এমন আমল করল যার ব্যাপারে আমার নির্দেশ নাই তা প্রত্যাখ্যাত। [মুসলিম, অধ্যায়: বিচার-ফয়সালা]
সুতরাং মিরাজ দিবস অথবা শবে মিরাজ পালন করা দ্বীনের মধ্যে সৃষ্ট বিদআতের অন্তর্ভুক্ত সাহাবীগণ, তাবেঈনগণ বা তাদের পদাঙ্ক অনুসরণকারী সালফে সালেহীনগণ তা পালন করেন নি। অথচ সকল ভাল কাজে তারা ছিলেন আমাদের চেয়ে অনেক বেশি অগ্রগামী।
▪ ইবনুল কাইয়েম জাওযিয়া রহ. বলেন,
ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন, পূর্ববর্তী যুগে এমন কোন মুসলমান পাওয়া যাবে না যে শবে মিরাজকে অন্য কোন রাতের উপর মর্যাদা দিয়েছে। বিশেষ করে শবে কদরের চেয়ে উত্তম মনে করেছে এমন কেউ ছিল না। সাহাবায়ে কেরাম এবং তাদের একনিষ্ঠ অনুগামী তাবেঈনগণ এ রাতকে কেন্দ্র করে বিশেষ কোন কিছু করতেন না এমনকি তা আলাদাভাবে স্মরণও করতেন না। যার কারণে জানাও যায় না যে, সে রাতটি কোনটি।
নি:সন্দেহে ইসরা ও মিরাজ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদার প্রমাণ বহন করে। কিন্তু এজন্য এর মিরাজের স্থান-কালকে কেন্দ্র করে বিশেষ কোন ইবাদত করার বৈধ নয়। এমনকি যে হেরা পর্বতে ওহী নাযিলের সূচনা হয়েছিল এবং নবুওয়তের আগে সেখানে তিনি নিয়মিত যেতেন নবুওয়ত লাভের পর মক্কায় অবস্থান কালে তিনি কিংবা তাঁর কোন সাহাবী সেখানে কোন দিন যান নি। তারা ওহী নাজিলের দিনকে কেন্দ্র করে বিশেষ কোন ইবাদত-বন্দেগী করেন নি বা সেই স্থান বা দিন উপলক্ষে বিশেষ কিছুই করেন নি।
যারা এ জাতীয় দিন বা সময়ে বিশেষ কিছু ইবাদত করতে চায় তারা ঐ আহলে কিতাবদের মত যারা ঈসা আলাইহিস সালাম এর জন্ম দিবস (Chisthomas) বা তাদের দীক্ষাদান অনুষ্ঠান (Baptism) পালন ইত্যাদি পালন করে।
💠 উমর ইবনুল খাত্তাব রা. দেখলেন, কিছু লোক একটা জায়গায় নামাজ পড়ার জন্য হুড়াহুড়ি করছে। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এটা কী? তারা বলল, এখানে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাজ পড়েছিলেন। তিনি বললেন, তোমরা কি তোমাদের নবীদের স্মৃতি স্থলগুলোকে সাজদার স্থান বানাতে চাও? তোমাদের পূর্ববর্তী জমানার লোকেরা এ সব করতে গিয়েই ধ্বংস হয়ে গেছে। এখানে এসে যদি তোমাদের কারো নামাযের সময় হয় তবে সে যেন নামাজ পড়ে অন্যথায় সামনে অগ্রসর হয়। [মুসান্নাফ ইবনে আবী শায়বা, ২য় খণ্ড, ৩৭৬, ৩৭৭]
▪ ইবনুল হাজ্জ বলেন,
“রজব মাসে যে সকল বিদআত আবিষ্কৃত হয়েছে সগুলোর মধ্যে সাতাইশ তারিখের লাইলাতুল মিরাজের রাত অন্যতম।”[আল মাদখাল, ১ম খণ্ড, ২৯৪পৃষ্ঠা]
পরিশেষে বলব, যেহেতু রজব মাসে নফল নামায, রোযা করা, মসজিদ, ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট দোকান-পাট ইত্যাদি সাজানো, সেগুলোকে আলোক সজ্জা করা কিংবা ছাব্বিশ তারিখের দিবাগত রাত তথা সাতাইশে রজবকে শবে মিরাজ নির্ধারণ করে তাতে রাত জেগে ইবাদত করার ব্যাপারে কোন গ্রহণযোগ্য প্রমাণ নাই। তাই আমাদের কর্তব্য হবে সেগুলো থেকে দূরে থাকা। অন্যথায় আমরা বিদয়াত করার অপরাধে আল্লাহ তায়ালার দরবারে গুনাহগার হিসেবে বিবেচিত হব। অবশ্য কোন ব্যক্তি যদি প্রতি মাসে কিছু নফল রোযা রাখে সে এমাসেও সেই ধারাবাহিকতা অনুযায়ী এ মাসে রোযা রাখতে পারে, শেষ রাতে উঠে যদি নফল নামাযের অভ্যাস থাকে তবে তবে এ মাসের রাতগুলিতেও নামাজ পড়তে পারে।
আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সকল অবস্থায় তাওহীদ ও সুন্নাহর উপর আমল করার তাওফিক দান করুন এবং শিরক ও বিদয়াত থেকে হেফাজত করুন। আমীন।
▬▬▬◄❖►▬▬▬
উৎস: আল বিদা' আল হাওলিয়াহ
লেখক: শাইখ আব্দুল্লাহ বিন আব্দুল আযীয আত তুওয়াইজিরী
অনুবাদ ও সংক্ষেপায়ন: আব্দুল্লাহিল হাদী বিন আব্দুল জলীল মাদানী
দাঈ, জুবাইল দাওয়াহ এন্ড গাইডন্সে সেন্টার, সৌদি আরব
কিভাবে তুমি একজন মুসলিমের ক্ষতি করো?! 💔
ইমাম ফুদ্বাইল ইবন ইয়্যাদ্ব (রাহিমাহুল্লাহ) বলেন,"আল্লাহর কসম! অপ্রয়োজনে কুকুর অথবা শূকরের ক্ষতি করাও জায়েজ নেই, তাহলে কিভাবে তুমি একজন মুসলিমের ক্ষতি করো?
[সিয়ারু আ'লামিন আন-নুবালা : ৮/৩২৭] 💔
মিথ্যুক বা মিথ্যাবাদী থেকে দূরে থাকুন
মিথ্যাকে সব পাপের জননী বলা হয়। একটি মিথ্যা থেকে শতশত পাপের সূত্রপাত হয়। মিথ্যাবাদীকে আল্লাহ প্রচণ্ড ঘৃণা করেন। আল কোরআন ও হাদিসে মিথ্যুক এবং মিথ্যাবাদীর ভয়ানক পরিণতির কথা বলা হয়েছে।
পবিত্র কোরআন ও হাদিসে মিথ্যাবাদীর অত্যন্ত ভয়ানক পরিণতির কথা বর্ণিত হয়েছে। পবিত্র কোরআন বলছে, মিথ্যাবাদীদের ওপর আল্লাহর লানত নেমে আসে।
(সুরা আলে ইমরান, আয়াত : ৬১)।
আল্লাহ বলেন, ‘যে বিষয়ে তোমার কোনো জ্ঞান নেই তার অনুসরণ কর না। ’ (সূরা বনি ইসরাইল, আয়াত : ৩৬)। রাসূল (সা.) বলেন, ‘মানুষ যখন মিথ্যা কথা বলে, তখন মিথ্যার দুর্গন্ধে ফেরেশতারা মিথ্যাবাদী থেকে এক মাইল দূরে চলে যায়। ’
(তিরমিজি : ১৯৭২)
পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ সীমা লঙ্ঘনকারী ও মিথ্যাবাদীকে সুপথ প্রদর্শন করেন না।'
(সুরা : মুমিন, আয়াত : ২৮)
রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে বিষয়ে তোমার সন্দেহ হয় তা পরিত্যাগ করো। যে বিষয়ে সন্দেহ নেই তা গ্রহণ করো। কেননা সত্য হচ্ছে প্রশান্তি আর মিথ্যা হচ্ছে সন্দেহ।'
(তিরমিজি, হাদিস : ২৫১৮)
=====================================
মিথ্যাবাদী ও মিথ্যায় বিশ্বাসীদের উপর আল্লাহর লানত:
======================================
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ
''একজন মানুষের মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতোটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শুনবে বা শুনে তাই বলবে বা প্রচার করে বেড়ায়।''
[সহীহ মুসলিম: ১:১০]
আল্লাহর বানীঃ
===========
"লানাতুল্লাহি আলাল কাজিবিন"
অর্থাৎ মিথ্যাবাদীদের উপর আল্লাহর লানত বা অভিশম্পাত [২:৮৯; ৩:৬১]।
"লানাতুল্লাহি আলাজ্জলিমিন"
অর্থাৎ জালিমদের উপর আল্লাহর লানত বা অভিশম্পাত [৭:৪৪]।
>মিথ্যাবাদী ও মিথ্যায় বিশ্বাসীরা যালিম।
হে আল্লাহ! মিথ্যাবাদী ও মিথ্যায় বিশ্বাসীদের ফিতনাহ থেকে তোমার রহমতের ছায়াতলে আশ্রয় চাই। আমিন।
দুআ হল উচ্চগতি সম্পন্ন জেট বিমানের মত। আর এই বিমানের এর ফুয়েল হল আল্লাহর সম্পর্কে ভাল ধারণা রাখা এবং ইয়াকিন। গুনাহমুক্ত থাকার উদাহরণ এই বিমানের মেইন্টেনেন্স।
আপনার কোন দামি বিমান, কিন্তু আপনি ফুয়েল দিতে পারেন না, দুআর সময় আল্লাহর উপর উচ্চ আশা রাখতে পারেন না, ইয়াকিন আনতে পারেন না, তাহলে এই দুআ কীভাবে ফ্লাই করবে?
ফুয়েল থাকলে, যদি নিজেকে গুনাহমুক্ত না করেন, বিমানের যন্ত্রপাতির ঠিকঠাক মেইন্টেনেন্স রক্ষণাবেক্ষণ না করেন, তাহলে দুআ, সুধারণা, ইয়াকিনের মত বিষয়গুলো তাদের সর্বোচ্চটুকু দিতে পারবে না।
াকিন
আল্লাহ যা নির্ধারণ করেছেন তা ঘটবেই❤
যা আপনার জন্য সেটা আপনারই হবে💓
ঈদ মুবারাক!
তাক্বাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম।
এই ঈদে পশু কুরবানীর সাথে নিজের ভেতর থেকে অহংকার , হিংসা , রাগ , অভিমান,অন্যের প্রতি ক্ষোভ , ঘৃণা সবকিছু কুরবানী করে দিবেন
ইংশা আল্লাহ
মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন নিজের এবং সবার হেদায়েতের জন্য
সাথে আমাকেও দোয়া তে রাখবেন❤️
আল্লাহ পাক আমাদের সবার কুরবানী কবুল করুক
এবং দ্বীনের পথে চলার তৌফিক দেক আমিন ।
অতিরিক্ত গরমকে নিয়ে বাজে মন্ত্রব্য বা কৌতুক না করে আল্লাহকে ভয় করুন ।
কারণ এ গরম জাহান্নাম এর উত্তাপ থেকেই হয় ।
যেখানে একটু সময় ফ্যান, এসি ছাড়া থাকতে পারেন না ।
বিদ্যুৎ চলে গেলেই একটু বাতাস খুজেন ।
কোথায় গেলে গরম কমবে ।
এই গরমে সেখানে জাহান্নাম কেমন হবে ভাবেন তো ?
আর এই গরম এর উত্তাপ জান্নাম থেকেই আসতেছে ।
যেমন রাসুল সা. এর কিছু হাদীস থেকে স্বশ্টই পাওয়া যায়।
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
নাবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ যখন গরম বেড়ে যায় তখন তোমরা তা কমে এলে (যুহরের) সলাত আদায় করো। কেননা, গরমের প্রচন্ডতা জাহান্নামের উত্তাপের অংশ।
[বুখারী পর্ব হাদীস নাম্বার ৫৩৬ ]
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেনঃ জাহান্নাম অভিযোগ করে আল্লাহর কাছে বলল, হে আমার প্রভু! আমার এক অংশ অন্য অংশকে খেয়ে ফেলছে। সুতরাং আমাকে শ্বাস-প্রশ্বাস গ্রহণের অনুমতি দিন। তাই আল্লাহ তা’আলা তাকে দুবার শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুমতি দান করলেন। একবার শীত মৌসুমে আরেকবার গ্রীষ্ম মৌসুমে। তোমরা শীতকালে যে ঠান্ডা অনুভব করে থাকো তা জাহান্নামের শ্বাস-প্রশ্বাসের কারণ। আবার যে গরমে বা প্রচন্ড উত্তাপ অনুভব করে থাকো তাও জাহান্নামের শ্বাস-প্রশ্বাসের কারণে।
[ সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ১২৯০ ]
গরম তো সহ্য করতেই হবে তাইনা ?
তাই হাসি ঠাট্টা না গরমকে সহ্য করে জাহান্নাম এর ভয় করে আল্লাহর কাছে ফিরে আসি ।
যে জাহান্নাম এর নিশ্বাস এর এই অবস্হা।
তাহলে সে জাহান্নাম কেমন হবে ?
Collected
ঈদ মুবারাক🌙
তাক্বাব্বালাল্লাহু মিন্না ওয়া মিনকুম!
🍁প্রশ্নঃ
• লাইলাতুল কদরের নামাজ কিভাবে পরবো?
• নিয়তে কি বলবো?
• নামাজের দোয়া টা কি?
• সূরা কদর টা কি পড়তেই হবে?
• নামাজে সূরা কদর পড়ার নিয়ম কি?
• কদরের দোয়া ও মুনাজাত কি?
🍂____________
🍁উত্তরঃ
• লাইলাতুল কদরের আলাদা কোন নামাজ নেই। এশার পর তারাবি ও মাঝ রাতে তাহাজ্জুদ পড়বেন। ২/২ রাকাত করে যত খুশি তত। বিতর নামাজ পরে নিবেন সবার শেষে।
• কোন নিয়ত নেই “নাওয়াইতু আন উসল্লি ” এই রকম ।
মনে মনে ভাবলেই হবে আপনি এখন তারাবি বা তাহাজ্জুদ পড়ছেন।
• নামাজের আলাদা কোন দুয়া বা মুনাজাত নেই।
• সুরাহ আল কদর পড়া জরুরি না। না পড়লেও সমস্যা নেই।
যেই সূরা গুলো জানেন সেগুলা দিয়েই নামাজ পড়বেন।
• সূরা আল কদর পড়ার বাধ্যতামূলক কোন নিয়ম নেই।
অনেকে ৩ বার করে পড়েন।
👉এইসব আমল সহিহ বা বাধ্যতামূলক নয়।
• লাইলাতুল কদরের যেমন আলাদা কোন নামাজ নেই তেমন দুয়া ও মুনাজাত ও নেই।
নিজের মত করে দুয়া করবেন।
👉আর সারাদিন রাত এই দুয়া করবেন বেশি বেশি
ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺇِﻧَّﻚَ ﻋَﻔُﻮٌّ ﺗُﺤِﺐُّ ﺍﻟْﻌَﻔْﻮَ ﻓَﺎﻋْﻒُ ﻋَﻨِّﻲ
#উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুউউন তুহিব্বুল আফওয়া ফা'ফু আন্নি।
👉🍁হে আল্লাহ্! নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল। ক্ষমা করাটা আপনি পছন্দ করেন। সুতরাং আমাকে ক্ষমা করে দিন।
🌼যারা এতোদিন ভুল জেনে আসছেন বা আমল করে আসছেন, তারা আজ থেকে ভুল শুধরাতে পারেন।
*ইনশাআল্লাহ! ❤
যখন আল্লাহর কাছে মন থেকে কিছু চাইবেন,দুয়া করবেন তখন অলৌকিক (miracle) এ বিশ্বাস রাখুন।পরিবেশ,পরিস্থিতি, আর সময়ের কারনে আপনি হয়তো ধরেই নিয়েছেন আল্লাহর কাছে যা চেয়েছেন তা কখনো পাওয়া আপনার পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু আপনি ভুলে গেছেন আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তায়ালা পরিবেশ, পরিস্থিতি আর সময়ের মুখাপেক্ষী নন। বরং আসমান -জমিনে যা কিছু আছে সব কিছুই আল্লাহর মুখাপেক্ষী।
তাছাড়া দুয়া করার সময় এই বিশ্বাস রাখবেন, আপনার দু'আ অবশ্যই কবুল হবে। আল্লাহ্ যদি দু'আই কবুল না করবেন তাহলে তিনি আপনাকে দু'আ করার শক্তিই দিতেন না। আল্লাহর কাছে দু'আ করতে পারাটা ইটসেল্প একটা নিয়ামত (Blessing)। এই ইয়াকীন রাখবেন আল্লাহ্ নিশ্চয়ই আপনার ডাকে সাড়া দিবেন।
সহীহ হাদিস এসেছে,"অন্যমনস্ক, অমনোযোগী এবং গাফেল অন্তরের দুয়া আল্লাহ্ কবুল করেন না।"
শবে বরাত বিষয়ক সহীহ, যয়ীফ ও জাল হাদীস
‘মধ্য শাবানের রজনী’ বা ‘শবে বারাত’ বিষয়ক সকল সহীহ, যয়ীফ ও জাল হাদীস সনদ-সহ বিস্তারিত আলোচনা করেছি ‘‘কুরআন-সুন্নাহর আলোকে শবে বরাত: ফযীলত ও আমল’’ নামক গ্রন্থে। এখানে আমি এ বিষয়ক জাল হাদীসগুলো আলোচনা করতে চাই। প্রসঙ্গত এ বিষয়ক সহীহ ও যয়ীফ হাদীসগুলোর বিষয়েও কিছু কথা আসবে।
১. মধ্য শাবানের রাত্রির বিশেষ মাগফিরাত
এ বিষয়টি সহীহ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত। হাদীস শরীফে বলা হয়েছে:
إِنَّ اللَّهَ لَيَطَّلِعُ فِي لَيْلَةِ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ فَيَغْفِرُ لِجَمِيعِ خَلْقِهِ إِلا لِمُشْرِكٍ أَوْ مُشَاحِنٍ
‘‘মহান আল্লাহ মধ্য শাবানের রাতে তাঁর সৃষ্টির প্রতি দৃকপাত করেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ব্যতীত সকলকে ক্ষমা করে দেন।’’
এ অর্থের হাদীস কাছাকাছি শব্দে ৮ জন সাহাবী: আবূ মূসা আশআরী, আউফ ইবনু মালিক, আব্দুল্লাহ ইবনু আমর, মুয়ায ইবনু জাবাল, আবু সা’লাবা আল-খুশানী, আবূ হুরাইরা, আয়েশা ও আবূ বাকর সিদ্দীক (রাঃ) থেকে বিভিন্ন সনদে বর্ণিত হয়েছে।[1] এ সকল হাদীসের সনদ বিষয়ক বিস্তারিত আলোচনা উপর্যুক্ত গ্রন্থে করেছি। এগুলোর মধ্যে কিছু সনদ দুর্বল ও কিছু সনদ ‘হাসান’ পর্যায়ের। সামগ্রিক বিচারে হাদীসটি সহীহ। শাইখ আলবানী বলেন, ‘‘হাদীসটি সহীহ। তা অনেক সাহাবী থেকে বিভিন্ন সনদে বর্ণিত হয়েছে, যা একটি অন্যটিকে শক্তিশালী হতে সহায়তা করে।...[2]
এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, এ রাত্রিটি একটি বরকতময় রাত এবং এ রাতে আল্লাহ তাঁর বান্দাদেরকে ক্ষমা করেন। কিন্তু এ ক্ষমা অর্জনের জন্য শিরক ও বিদ্বেষ বর্জন ব্যতীত অন্য কোনো আমল করার প্রয়োজন আছে কি না তা এই হাদীসে উল্লেখ নেই।
২. মধ্য শাবানের রাত্রিতে ভাগ্য লিখন
কিছু কিছু হাদীসে উল্লেখ করা হয়েছে যে, এ রাত্রিতে ভাগ্য অনুলিপি করা হয় বা পরবর্তী বছরের জন্য হায়াত-মউত ও রিযক ইত্যাদির অনুলিপি করা হয়। হাদীসগুলোর সনদ বিস্তারিত আলোচনা করেছি উপর্যুক্ত পুস্তকটিতে। এখানে সংক্ষেপে বলা যায় যে, এ অর্থে বর্ণিত হাদীসগুলো অত্যন্ত দুর্বল অথবা বানোয়াট। এ অর্থে কোনো সহীহ বা গ্রহণযোগ্য হাদীস বর্ণিত হয় নি।
এখানে উল্লেখ্য যে, কুরআন কারীমে মহান আল্লাহ বলেন:
إِنَّا أَنْزَلْنَاهُ فِي لَيْلَةٍ مُبَارَكَةٍ إِنَّا كُنَّا مُنْذِرِينَ فِيهَا يُفْرَقُ كُلُّ أَمْرٍ حَكِيمٍ
‘‘আমি তো তা অবতীর্ণ করেছি এক মুবারক রজনীতে এবং আমি তো সতর্ককারী। এ রজনীতে প্রত্যক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় স্থিরীকৃত হয়।’’[3]
এ বাণীর ব্যাখ্যায় তাবিয়ী ইকরিমাহ, বলেন, এখানে ‘মুবারক রজনী’ বলতে ‘মধ্য শা’বানের রাতকে’ বুঝানো হয়েছে। ইকরিমাহ বলেন, এ রাতে গোটা বছরের সকল বিষয়ে ফয়সালা করা হয়।[4]
মুফাস্সিরগণ ইকরিমার এ মত গ্রহণ করেন নি। ইমাম তাবারী বিভিন্ন সনদে ইকরিমার এ ব্যাখ্যা উদ্ধৃত করার পরে তার প্রতিবাদ করেছেন। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, ইকরিমার এ মত ভিত্তিহীন। তিনি বলেন যে, সঠিক মত হলো, এখানে ‘মুবারক রজনী’ বলতে ‘লাইলাতুল ক্বাদ্র’-কে বুঝানো হয়েছে। আল্লাহ যে রাত্রিতে কুরআন অবতীর্ণ করেছেন সে রাত্রিকে এক স্থানে লাইলাতুল কাদ্র: ‘তাকদীরের রাত’ বা ‘মর্যাদার রাত’ বলে অভিহিত করেছেন[5]। অন্যত্র এ রাত্রিকেই ‘লাইলাতুম মুবারাকা’ বা ‘বরকতময় রজনী’ বলে অভিহিত করেছেন। এবং এ রাত্রিটি নিঃসন্দেহে রামাদান মাসের মধ্যে; কারণ অন্যত্র আল্লাহ ঘোষণা করেছেন যে, তিনি রামাদান মাসে কুরআন নাযিল করেছেন।[6] এথেকে প্রমাণিত হয় যে, মুবারক রজনী রামাদান মাসে, শাবান মাসে নয়।[7]
পরবর্তী মুফাস্সিরগণ ইমাম তাবারীর সাথে ঐকমত্য পোষণ করেছেন। তাঁরা বলেছেন যে, ‘মুবারক রজনী’ বলতে এখানে ‘মহিমান্বিত রজনী’ বা ‘লাইলাতুল ক্বাদ্র’ বুঝানো হয়েছে। তাঁদের মতে ‘লাইলাতুম মুবারাকা’ এবং ‘লাইলাতুল কাদ্র’ একই রাতের দুটি উপাধি। দুটি কারণে মুফাস্সিরগণ ইকরিমার তাফসীরকে বাতিল ও অগ্রহণযোগ্য বলে মনে করেছেন:
(ক) ইকরিমার মতটি কুরআনের সুস্পষ্ট বাণীর সাথে সাংঘর্ষিক। কুরআনে বলা হয়েছে যে, আল্লাহ রামাদান মাসে কুরআন নাযিল করেছেন। অন্যত্র বলেছেন যে, একটি মুবারক রাত্রিতে ও একটি মহিমান্বিত রাত্রিতে তিনি কুরআন নাযিল করেছেন। এ সকল আয়াতের সমন্বিত সুস্পষ্ট অর্থ হলো, আল্লাহ রামাদান মাসের এক রাত্রিতে কুরআন নাযিল করেছেন এবং সে রাতটি বরকতময় ও মহিমান্বিত। মুবারক রজনীকে শবে বরাত বলে দাবী করলে এ আয়াতগুলোর স্পষ্ট অর্থ বিভিন্ন অপব্যাখ্যার মাধ্যমে বাতিল করতে হয়।
(খ) বিভিন্ন সাহাবী ও তাবিয়ী থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, তাঁরা ‘মুবারক রজনী’-র ব্যাখ্যায় বলেছেন যে, এ রাতটি হলো ‘লাইলাতুল কাদ্র’ বা ‘মহিমান্বিত রজনী’। সাহাবীগণের মধ্য থেকে ইবনু আববাস (রা) ও ইবনু উমার (রা) থেকে অনুরূপ ব্যাখ্যা বর্ণিত হয়েছে। তাবিয়ীগণের মধ্যে থেকে আবু আব্দুর রহমান আল-সুলামী (৭৪ হি), মুজাহিদ বিন জাব্র (১০২ হি), হাসান বসরী (১১০ হি), ক্বাতাদা ইবনু দি‘আমা (১১৭ হি) ও আব্দুর রহমান বিন যায়েদ বিন আসলাম মাদানী (১৮২ হি) বিশেষ ভাবে উল্লেখযোগ্য। তাঁরা সকলেই বলেছেন যে, লাইলাতুম মুবারাকাহ অর্থ লাইলাতুল কাদ্র।[8]
৩. মধ্য-শাবানের রাত্রিতে দোয়া-মুনাজাত
মধ্য শাবানের রজনীর ফযীলত বিষয়ে বর্ণিত তৃতীয় প্রকারের হাদীসগুলোতে এ রাত্রিতে সাধারণভাবে দোয়া করার উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। এ রাতে দোয়া করা, আল্লাহর কাছে নিজের প্রয়োজন মেটানোর জন্য আকুতি জানানো এবং জীবিত ও মৃতদের পাপরাশি ক্ষমালাভের জন্য প্রার্থনার উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। এ অর্থে কোনো সহীহ বা গ্রহণযোগ্য হাদীস নেই। এ অর্থে বর্ণিত হাদীসগুলোর মধ্যে কিছু হাদীস দুর্বল এবং কিছু হাদীস জাল।
৪. অনির্ধারিত সালাত ও দোয়া
মধ্য শাবানের রাত্রি সম্পর্কে বর্ণিত কিছু হাদীসে এ রাত্রিতে সালাত আদায় ও দোয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এ সকল হাদীস এ রাত্রির সালাতের জন্য কোনো নির্ধারিত রাক‘আত, নির্ধারিত সূরা বা নির্ধারিত পদ্ধতি উল্লেখ করা হয় নি। শুধু সাধারণভাবে এ রাত্রিতে তাহাজ্জুদ আদায় ও দোয়া করার বিষয়টি এ সকল হাদীস থেকে জানা যায়। এ অর্থে বর্ণিত হাদীসগুলো প্রায় সবই বানোয়াট। দু-একটি হাদীস দুর্বল হলেও বানোয়াট নয়।
৫. নির্ধারিত রাক‘আত, সূরা ও পদ্ধতিতে সালাত
শবে বরাত বিষয়ক অন্য কিছু হাদীসে এ রাত্রিতে বিশেষ পদ্ধতিতে, বিশেষ সুরা পাঠের মাধ্যমে, নির্দ্দিষ্ট সংখ্যক রাকআত সালাত আদায়ের বিশেষ ফযীলতের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মুহাদ্দিসগণের সর্বসম্মত মত অনুযায়ী এই অর্থে বর্ণিত সকল হাদীস বানোয়াট। হিজরী চতুর্থ শতকের পরে রাসুলুলাহ (ﷺ) -এর নামে বানিয়ে এগুলো প্রচার করা হয়েছে। এখানে এ জাতীয় কয়েকটি জাল ও বানোয়াট হাদীস উল্লেখ করছি।
৬. ৩০০ রাক‘আত, প্রতি রাক‘আতে ৩০ বার সূরা ইখলাস
‘‘যে ব্যক্তি মধ্য শাবানের রাতে প্রত্যেক রাকআতে ৩০বার সুরা ইখলাস পাঠের মাধ্যমে ৩০০ রাকআত সালাত আদায় করবে জাহান্নামের আগুন অবধারিত এমন ১০ ব্যক্তির ব্যাপারে তার সুপারিশ গ্রহণ করা হবে।’’ হাদীসটি ইবনুল ক্বাইয়িম বাতিল বা ভিত্তিহীন হাদীস সমূহের মধ্যে উল্লেখ করেছেন।[9]
৭. ১০০ রাক‘আত, প্রতি রাক‘আতে ১০ বার সুরা ইখলাস
মধ্য শাবানের রজনীতে এ পদ্ধতিতে সালাত আদায়ের প্রচলন হিজরী চতুর্থ শতকের পরে মানুষের মধ্যে প্রসিদ্ধি লাভ করে। মুহাদ্দিস ও ঐতিহাসিকগণ উল্লেখ করেছেন যে, ৪৪৮ হি. সনে বাইতুল মুকাদ্দাসে প্রথম এ রাত্রিতে এ পদ্ধতিতে সালাত আদায়ের প্রচলন শুরু হয়।[10] এ সময়ে বিভিন্ন মিথ্যাবাদী গল্পকার ওয়ায়িয এ অর্থে কিছু হাদীস বানিয়ে বলেন। এ অর্থে ৪টি হাদীস বর্ণিত হয়েছে যার প্রত্যেকটিই বানোয়াট ও ভিওিহীন।
এর প্রথমটি আলী (রা)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নামে প্রচারিত: যে ব্যক্তি মধ্য শাবানের রাতে ১০০ রাকআত সালাত আদায় করবে, প্রত্যেক রাকআতে সুরা ফাতিহা ও ১০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করবে সে উক্ত রাতে যত প্রয়োজনের কথা বলবে আল্লাহ তায়ালা তার সকল প্রয়োজন পূরণ করবেন। লাওহে মাহফুযে তাকে দুর্ভাগা লিপিবদ্ধ করা হলেও তা পরির্বতন করে সৌভাগ্যবান হিসেবে তার নিয়তি নির্ধারণ করা হবে, আল্লাহ তায়ালা তার কাছে ৭০ হাজার ফিরিশতা প্রেরণ করবেন যারা তার পাপরাশি মুছে দেবে, বছরের শেষ পর্যন্ত তাকে সুউচ্চ মর্যাদায় আসীন রাখবে, এছাড়াও আল্লাহ তায়ালা ‘আদন’ জান্নাতে ৭০ হাজার বা ৭ লাখ ফিরিশতা প্রেরণ করবেন যারা জান্নাতের মধ্যে তার জন্য শহর ও প্রাসাদ নির্মাণ করবে এবং তার জন্য বৃক্ষরাজি রোপন করবে...। যে ব্যক্তি এ নামায আদায় করবে এবং পরকালের শান্তি কামনা করবে মহান আল্লাহ তার জন্য তার অংশ প্রদান করবেন।
হাদীসটি সর্বসম্মতভাবে বানোয়াট ও জাল। এর বর্ণনাকারীগণ কেউ অজ্ঞাত পরিচয় এবং কেউ মিথ্যাবাদী জালিয়াত হিসেবে পরিচিত।[11]
এ বিষয়ক দ্বিতীয় জাল হাদীসটিতে জালিয়াতগণ ইবনু উমার (রা)-এর সূত্রে রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর নামে বলেছে: ‘‘যে ব্যক্তি মধ্য শাবানের রাতে এক শত রাকআত সালাতে এক হাজার বার সুরা ইখলাস পাঠ করবে তার মৃত্যুর পূর্বে আল্লাহ তা‘য়ালা তার কাছে ১০০ জন ফিরিশতা প্রেরণ করবেন, তন্মধ্যে ত্রিশজন তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দিবে, ত্রিশজন তাকে জাহান্নমের আগুন থেকে নিরাপত্তার সুসংবাদ প্রদান করবে, ত্রিশজন তাকে ভুলের মধ্যে নিপতিত হওয়া থেকে রক্ষা করবে এবং দশজন তার শত্রুদের ষড়যন্ত্রের জবাব দেবে।’’
এ হাদীসটিও বানোয়াট। সনদের অধিকাংশ রাবী অজ্ঞাতপরিচয়। বাকীরা মিথ্যাবাদী হিসাবে সুপরিচিত।[12]
এ বিষয়ক তৃতীয় জাল হাদীসটিতে মিথ্যাবাদীগণ বিশিষ্ট তাবিয়ী ইমাম আবু জাফর মুহাম্মাদ আল বাকির (১১৫ হি) থেকে রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর বরাতে বর্ণনা করেছে: ‘‘যে ব্যক্তি মধ্য শাবানের রাতে ১০০ রাকআত সালাতে ১০০০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করবে তার মৃত্যুর পূর্বেই মহান আল্লাহ তার কাছে ১০০ ফিরিশতা প্রেরণ করবেন। ৩০ জন তাকে জান্নাতের সুসংবাদ দিবে, ৩০ জন তাকে জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তি দিবে, ৩০ জন তার ভুল সংশোধন করবে এবং ১০ জন তার শত্রুদের নাম লিপিবদ্ধ করবে।’’
এ হাদীসটিও বানোয়াট। সনদের কিছু রাবী অজ্ঞাতপরিচয় এবং কিছু রাবী মিথ্যাবাদী হিসাবে সুপরিচিত।।[13]
১০০ রাকআত সংক্রান্ত এ বিশেষ পদ্ধতিটি হিজরী চতুর্থ শতাব্দী থেকে বিভিন্ন গল্পকার ওয়ায়িযদের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের কাছে প্রসিদ্ধি লাভ করে এবং যুগে যুগে তা বৃদ্ধি পেতে থাকে। এক পর্যায়ে ভারতীয় ওয়ায়িযগণ এ সালাতের পদ্ধতির মধ্যে প্রত্যেক দু রাকআতের পরে ‘‘তাসবীহুত তারাবীহ’’র প্রচলন করেন এবং ১০০ রাকআত পূর্ণ হওয়ার পর কতিপয় সাজদা, সাজদার ভিতরে ও বাহিরে কতিপয় দোয়া সংযুক্ত করেছেন।
আল্লামা আব্দুল হাই লাখনবী (১৩০৬ হি) বানোয়াট ও ভিত্তিহীন হাদীস সমুহের মধ্যে এ হাদীসটি উল্লেখ করেছেন। যার সারমর্ম হলো, মধ্য শাবানের রাতে পঞ্চাশ সালামে ১০০ রাকআত সালাত আদায় করতে হবে। প্রত্যেক রাকাতে সুরা ফাতিহার পর ১০ বার সুরা ইখলাস পাঠ করতে হবে। প্রত্যেক দুই রাকআত পর ‘তাসবীহুত তারাবীহ’ পাঠ করবে, এর পর সাজদা করবে। সাজদার মধ্যে কিছু নির্ধারিত বানোয়াট দোয়া পাঠ করবে। অতঃপর সাজদা থেকে মাথা তুলবে এবং নবী (ﷺ) এর উপর দুরূদ পাঠ করবে ও কিছু নির্ধারিত বানোয়াট দোয়া পাঠ করবে। অতঃপর দ্বিতীয় সাজদা করবে এবং তাতে কিছু নির্ধারিত বানোয়াট দোয়া পাঠ করবে।[14]
৮. ৫০ রাক‘আত
ইমাম যাহাবী এ হাদীসটি ভিত্তিহীন ও বানোয়াট হাদীস হিসেবে হাদীসটির বর্ণনাকারী অজ্ঞাত রাবী মুহাম্মাদ বিন সাঈদ আলমীলী আত তাবারীর জীবনীতে উল্লেখ করেছেন। উক্ত মুহাম্মাদ বিন সাঈদ এ হাদীসটি তার মতই অজ্ঞাত রাবী মুহাম্মদ বিন আমর আল বাজালী এর সনদে আনাস (রা) থেকে মারফু হিসেবে বর্ণনা করেনঃ যে ব্যক্তি মধ্য শাবানের রাতে ৫০ রাকআত সালাত আদায় করবে, সে ব্যক্তি আল্লাহ তা‘আলার কাছে যত প্রকার প্রয়োজনের কথা বলবে তার সবটুকুই পূরণ করে দেয়া হবে। এমনকি লাওহে মাহফুযে তাকে দুর্ভাগ্যবান হিসেবে লিপিবদ্ধ করা হলেও তা পরিবর্তন করে তাকে সৌভাগ্যবান করা হবে। এবং আল্লাহ তা‘আলা তার কাছে ৭ লাখ ফেরেশতা প্রেরণ করবেন যারা তার নেকী লিপিবদ্ধ করবে, অপর ৭ লাখ ফেরেশতা প্রেরণ করবেন যারা তার জন্য বেহেশতে প্রাসাদ নির্মাণ করবে ..... এবং ৭০ হাজার একত্ববাদীর জন্য তার সুপারিশ গ্রহণ করা হবে...। ইমাম যাহাবী এ মিথ্যা হাদীসটি উল্লেখ করে বলেন, যে ব্যাক্তি এ হাদীসটি বানোয়াট করেছে আল্লাহ তা‘আলা তাকে লাঞ্চিত করুন।[15]
৯. ১৪ রাক‘আত
ইমাম বায়হাকী তাঁর সনদে আলী (রা) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন: আমি রাসূলুল্লাহ্ ﷺ-কে মধ্য শাবানের রাতে ১৪ রাকআত সালাত আদায় করতে দেখেছি। সালাত শেষে বসে তিনি ১৪ বার সূরা ফাতিহা, ১৪ বার সূরা ইখলাস, ১৪ বার সূরা ফালাক, ১৪ বার সূরা নাস, ১ বার আয়াতুল কুরসী এবং সূরা তাওবার শেষ দু আয়াত তিলাওয়াত করেন, এ সব কাজের সমাপ্তির পর আমি তাঁকে এগুলো সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলাম। তিনি বললেন: তুমি আমাকে যে ভাবে করতে দেখেছ এভাবে যে করবে তার আমলনামায় ২০টি কবুল হজ্জের সাওয়াব লেখা হবে এবং ২০ বছরের কবুল সিয়ামের সাওয়াব লিখা হবে। পরদিন যদি সে সিয়াম পালন করে তবে দু বছরের সিয়ামের সাওয়াব তার আমলনামায় লেখা হবে।
হাদীসটি উল্লেখ করার পর ইমাম বায়হাকী বলেন: ইমাম আহমাদ বলেছেন যে, এ হাদীসটি আপত্তিকর, পরিত্যক্ত, জাল ও বানোয়াট বলে প্রতীয়মান। হাদীসটির সনদে অজ্ঞাত পরিচয় বর্ণনাকারীগণ রয়েছে।[16]
অন্যান্য মুহাদ্দিস হাদীসটিকে জাল বলে গণ্য করার বিষয়ে ইমাম বাইহাকীর সাথে ঐকমত্য পোষণ করেছেন। আল্লামা ইবনুল জাওযী ও ইমাম সুয়ুতী বলেন: হাদীসটি বানোয়াট, এর সনদ অন্ধকারাচ্ছন্ন। .... সনদের মধ্যে মুহাম্মাদ বিন মুহাজির রয়েছেন। ইমাম আহমাদ বিন হাম্বাল বলেন: মুহাম্মদ বিন মুহাজির হাদীস বানোয়াট-কারী।[17]
১০. ১২ রাক‘আত, প্রত্যেক রাক‘আতে ৩০ বার সূরা ইখলাস
জালিয়াতগণ আবু হুরাইরা (রা) পর্যন্ত একটি জাল সনদ তৈরী করে তাঁর সূত্রে রাসূলুল্লাহ (ﷺ) থেকে বর্ণনা করেছে: ‘‘যে ব্যক্তি মধ্য শা’বানের রাতে ১২ রাকআত সালাত আদায় করবে, প্রত্যেক রাকাতে ৩০ বার সূরা ইখলাস পাঠ করবে, সালাত শেষ হওয়ার পূর্বেই বেহেশতের মধ্যে তার অবস্থান সে অবলোকন করবে এবং তার পরিবারের সদস্যদের মধ্য থেকে জাহান্নাম নির্ধারিত হয়েছে এমন দশ ব্যক্তির ব্যাপারে তার সুপারিশ গ্রহণ করা হবে।’’
এ হাদীসের সনদের অধিকাংশ বর্ণনাকারীই অজ্ঞাত। এছাড়াও সনদের মধ্যে কতিপয় দুর্বল ও পরিত্যাজ্য বর্ণনাকারী রয়েছে।[18]
উপরের আলোচনার মাধ্যমে আমাদের কাছে সুস্পষ্ট ভাবে প্রতিভাত হয়েছে যে, মধ্য শা’বানের রাতে নির্দ্দিষ্ট পদ্ধতিতে নির্দ্দিষ্ট সূরার মাধ্যমে নির্দ্দিষ্ট রাকআত সালাত আদায় সংক্রান্ত হাদীস সমূহ বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। মুহাদ্দিসগণ এ ব্যাপারে সকলেই একমত। কিন্তু কতিপয় নেককার ও সরলপ্রাণ ফকীহ ও মুফাস্সির তাঁদের রচনাবলিতে এগুলোর জালিয়াতি ও অসারতা উল্লেখ ছাড়াই এসকল ভিত্তিহীন হাদীস স্থান দিয়েছেন। এমনকি কেউ কেউ এগুলোর উপর ভিত্তি করে ফতোয়া প্রদান করেছেন ও তদনুযায়ী আমল করেছেন, যা পরবর্তীতে এ রীতি প্রসারিত হওয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করেছে।
মোল্লা আলী ক্বারী (১০১৪ হি) মধ্য শাবানের রাতে সালাত আদায়ের ফযীলত সংক্রান্ত হাদীসগুলোর অসারতা উল্লেখপূর্বক বলেন, সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হলো যে, যারা সুন্নাতের ইলমের সন্ধান পেয়েছেন তারা এগুলো দ্বারা প্রতারিত হন কি করে! এ সালাত চতুর্থ হিজরী শতকের পর ইসলামের মধ্যে অনুপ্রবেশ করেছে যার উৎপত্তি হয়েছে বায়তুল মুকাদ্দাস থেকে। এব্যাপারে অসংখ্য জাল হাদীস তৈরী করা হয়েছে যার একটিও সঠিক বা নির্ভরযোগ্য নয়।[19] তিনি আরো বলেন, হে পাঠক, এ সকল ভিত্তিহীন মিথ্যা হাদীস ‘কুতুল কুলুব’, ‘এহয়িয়াউ উলুমিদ্দীন’ ও ইমাম সা‘লাবীর তাফসীর গ্রন্থে উল্লেখ থাকার কারণে আপনারা প্রতারিত ও বিভ্রান্ত হবেন না।[20] ইসমাঈল বিন মুহাম্মদ আজলুনীও (১১৬২ হি) অনুরূপ মন্তব্য করেছেন।[21]
আল্লামা শাওকানী (১২৫০ হি) শবে বরাতের রাত্রিতে আদায়কৃত এ সালাত সংক্রান্ত হাদীসের ভিত্তিহীনতা উল্লেখ পূর্বক বলেন, এ সকল হাদীস দ্বারা এক দল ফকীহ প্রতারিত হয়েছেন। যেমন ‘এহয়িয়াউ উলূমিদ্দীন’ গ্রন্থকার ইমাম গাযালী ও অন্যান্যরা। এমনিভাবে কতিপয় মুফাস্সিরও প্রতারিত হয়েছেন। এ সালাতের বিষয়ে বিভিন্ন ধরনের জাল হাদীস রচিত হয়েছে। এ সকল হাদীস মাউযূ বা বানোয়াট হওয়ার অর্থ হলো, এই রাত্রিতে নির্ধারিত পদ্ধতিতে নির্ধারিত রাক‘আত সালাত আদায়ের প্রচলন বাতিল ও ভিত্তিহীন। তবে কোনো নির্ধারিত রাক‘আত, সূরা বা পদ্ধতি ব্যতিরেকে সাধারণ ভাবে এ রাত্রিতে ইবাদত বা দোয়া করার বিষয়ে দুই একটি যয়ীফ হাদীস রয়েছে।’’[22]
[1] ইবনু মাজাহ, আস- সুনান ১/৪৪৫; বাযযার, আল-মুসনাদ ১/১৫৭, ২০৭, ৭/১৮৬; আহমাদ ইবনু হাম্বল, আল-মুসনাদ ২/১৭৬; ইবনু আবি আসিম, আস-সুন্নাহ,পৃ ২২৩-২২৪; ইবনু হিববান, আস-সহীহ ১২/৪৮১; তাবারানী, আল-মুজাম আল-কাবীর, ২০/১০৮, ২২/২২৩; আল-মুজাম আল-আওসাত, ৭/৬৮; বায়হাক্বী, শু’আবুল ঈমান, ৩/৩৮১; ইবনু খুযায়মা, কিতাবুত তাওহীদ ১/৩২৫-৩২৬। [2] আলবানী, সাহীহাহ (সিলসিলাতুল আহাদীসিস সাহীহাহ) ৩/১৩৫। [3] সূরা (৪৪) দুখান: আয়াত ৩-৪। [4] তাবারী, তাফসীর ২৫/১০৭-১০৯। [5] সূরা (৯৭) কাদ্র: আয়াত ১। [6] সূরা (২) বাকারা: আয়াত ১৮৫। [7] তাবারী, তাফসীর ২৫/১০৭-১০৯। [8] নাহহাস, মা’আনিল কুরআন ৬/৩৯৫; যামাখশারী, আল-কাশশাফ ৩/৪২৯; ইবনুল আরাবী, আহকামুল কুরআন ৪/১৬৯০; ইবনু আতিয়্যাহ্, আল- মুহাররার আল ওয়াজীয ৫/৬৮-৬৯; কুরতুবী, তাফসীর ১৬/১২৬; আবু হাইয়্যান, আল-বাহর আল-মুহীত ৮/৩২-৩৩; ইবনু কাছীর, তাফসীর ৪/১৪০; সুয়ূতী, আদদুররুল মানসূর ৫/৭৩৮-৭৪২; আবুস সু’উদ, তাফসীর-ই-আবিস সু’উদ ৮/৫৮; শাওকানী, ফাতহুল ক্বাদীর ৪/৫৭০-৫৭২; আলুসী, রূহুল মা’আনী ১৩/১১০; থানবী, তাফসীর-ই আশরাফী ৫/৬১৫-৬১৬; শানক্বীতী, মুহাম্মদ আমীন, আদওয়া আল- বায়ান ৭/৩১৯; সাবুনী, মুহাম্মদ আলী, সাফওয়াতুত তাফাসীর ৩/১৭০-১৭১; মুফতী শফী, মা’আরেফ আল-কুরআন ৭/৮৩৫-৮৩৬। [9] ইবনুল কাইয়িম, নাক্বদুল মানকুল ১/৮৫। [10] মোল্লা আলী ক্বারী, মিরক্বাতুল মাফাতীহ ৩/৩৮৮। [11] ইবনুল জাওযী, আল-মাওদু‘আত ২/৪৯-৫০; সুয়ুতী, আল-লাআলী, ২/৫৭-৫৮; ইবনু আর্রাক, তানযীহ, ২/৯২-৯৩; মোল্লা ক্বারী, আল-আসরার, পৃ- ৩৩০-৩৩১; আল মাসনু’, পৃ- ২০৮-২০৯; শাওকানী, আল ফাওয়ায়েদ ১/৭৫-৭৬। [12] ইবনুল জাওযী, আল-মাউদূ‘আত, ২/৫০-৫১; ইবনু হাজার, লিসানুল মীযান ৫/২৭১; সুয়ূতী, আল লাআলী, ২/৫৯; ফাকিহানী, মুহাম্মদ বিন ইসহাক্ব, আখবারু মাক্কাহ ৩/৮৬-৮৭। [13] ইবনুল জাওযী, আল-মাউদূ ‘আত, ২/৫১; সুয়ূতী, আল-লাআলী, ২/৫৯। [14] আব্দুল হাই লাখনবী, আল-আসার আল-মারফুআ, পৃ- ১১৩-১১৪। [15] যাহাবী, মীযানুল ই’
Click here to claim your Sponsored Listing.
Videos (show all)
Category
Website
Address
Dhaka
Dhaka
Ramakrishna Math & Ramakrishna Mission, Dhaka is a branch centre of worldwide spiritual and philanthropic twin organizations Ramakrishna Math and Ramakrishna Mission (generally ...
Chandrima Model Town
Dhaka, MUHAMMADPUR
Syed Muhaimenul Bari Orphange
Dhaka
Dhaka, 7822
‘তারাই প্রকৃত মুমিন যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান আনার পরে আর কোন সন্দেহ পোষণ করে না’।