Biomed Online Pharmacy
Nearby clinics
Dhaka, Mirpur
Panthopath
City Tower
Health and Hope Hospital 152/2/G Green Road
Panthapath
Green Road
Panthapath
Green Road
1205
Panthapath
Panthapath
Panthapath
Green Road
Nahar Plaza Green Road Signal
Green Road
Biomed is Bangladesh’s premier marketplace where users can find medicines and health care product.
খাওয়ার স্যালাইনের বিকল্প আর কী খাবেন ?
ডায়রিয়া ও কলেরায় পানিশূন্যতা ঠেকাতে দারুণ কার্যকর এক উপায় খাওয়ার স্যালাইন। আরও অনেক ক্ষেত্রেও খাওয়ার স্যালাইনের ব্যবহার আছে। প্রচুর বমি, ঘাম, ডায়রিয়া হলে অনেক পানি ও লবণ শরীর থেকে বের হয়ে যায়। ফলে দেহে দেখা দেয় পানিশূন্যতা। এ অবস্থায় খাওয়ার স্যালাইন খেলে পানি ও লবণ উভয়ের ঘাটতিই পূরণ হয়। স্যালাইনে থাকা গ্লুকোজ বা চিনি শরীরে বাড়তি শক্তি জোগাতেও সাহায্য করে। কিন্তু অনেকে স্যালাইন মেশানো পানি খেতে পারেন না, বিশেষ করে শিশুরা। কেউ যদি স্যালাইন খেতে না পারে, তখন তাদের বিকল্প কিছু খাবার দেওয়া হয়, যা দিয়ে স্যালাইনের অভাব পূরণ হবে। চলুন তেমন কিছু খাবার সম্বন্ধে জেনে নেওয়া যাক-
ডাবের পানি
ডাবের পানি শরীরে প্রবেশ করা মাত্র পানির ঘাটতি মেটাতে শুরু করে। সেই সঙ্গে এতে থাকা ইলেকট্রোলাইট কম্পোজিশন ডায়রিয়া, বমি এবং অতিরিক্ত ঘামে শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া খনিজের ঘাটতি মেটাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। রিবোফ্লাবিন, নিয়াসিন, থিয়ামিন ও পাইরিডক্সিনের মতো উপকারী উপাদানে ভরপুর ডাবের পানি। তাই প্রতিদিন পান করলে শরীরে এতটা শক্তি বৃদ্ধি পায় যে জীবাণুরা আর ক্ষতি করার সুযোগ পায় না। সেই সঙ্গে ডাবের পানিতে উপস্থিত অ্যান্টি-ভাইরাল এবং অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল উপাদান নানাবিধ সংক্রমণের হাত থেকে বাঁচাতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
চিড়া পানি
চিড়া পানি ভিটামিন বি কমপ্লেক্সের ভালো উৎস। ডায়রিয়া ও আমাশয়ে চিড়া ভেজানো পানি খুবই উপকারী। চিড়া ভেজালে প্রায় চার গুণ বেড়ে যায়। ১০০ গ্রাম চিড়ায় আছে ৩৪৬ ক্যালরি, ৬.৬ গ্রাম আমিষ, ৭৭.৩ গ্রাম শর্করা, ২.০২ মিলিগ্রাম লোহা ও ২৩৮ মিলিগ্রাম ফসফরাস। চিড়ায় আঁশের পরিমাণ অনেক কম থাকে বলে অন্ত্রের প্রদাহ এবং ডাইভারটিকুলাইসিস রোগ প্রতিরোধে উপকারী। খাওয়ার আগে চিড়া বিশুদ্ধ পানিতে ধুয়ে নিন। তিনবার ধোয়ার পর আবার কিছুটা পানিতে ভিজিয়ে নিন। এরপর স্বাদমতো লবণ ও চিনি দিয়ে চটকে পরিবেশন করুন। স্যালাইন না খেলেও চলবে।
ভাতের মাড়
ভাতের মাড়ে রয়েছে হরেক রকমের পুষ্টি উপাদান। গবেষণায় দেখা গেছে, ভাতের মাড়ে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে ভিটামিন বি এবং ভিটামিন ই রয়েছে। এতে শর্করা, আয়রন, ফসফরাস এবং অন্যান্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে। চীনা বিজ্ঞানী মি. লিন ফেলে দেওয়া ভাতের মাড় নিয়ে গবেষণা করে জানাচ্ছেন, ভাতের মাড়ে ১০ গুণ লোহা, ৪ গুণ ক্যালসিয়াম, ১২ গুণ ম্যাঙ্গানিজ, ৪ গুণ তামা এবং ২ গুণ মেলানিয়াম রয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে টোকোট্রিনল এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদান। তাই অল্প হলুদ গুঁড়া ও লবণ দিয়ে খেলে শরীরের পানিশূন্যতা রোধ হবে।
কাঁচকলার স্যুপ
কাঁচকলায় রয়েছে উচ্চমাত্রার ভিটামিন এ, ভিটামিন বি৬ ও ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও ফসফেট। এতে কার্বোহাইড্রেট কমপ্লেক্স স্টার্চ হিসেবে থাকে। কাঁচকলার ভিটামিন বি৬ রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরি করে, যা রক্তে অক্সিজেন পরিবহন করে। এর মধ্যে থাকা ভিটামিন বি৪ রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। এ জন্য রোগীর পথ্য হিসেবে কাঁচকলা বেশ পরিচিত। কাঁচকলা পেটের ভেতরের খারাপ ব্যাকটেরিয়া দূর করে। আঁশযুক্ত সবজি হওয়ায় এটি খুব সহজে হজমযোগ্য। তা ছাড়া কাঁচকলায় থাকা এনজাইম ডায়রিয়া এবং পেটের নানা সংক্রমণ দূর করে।
পিংক সল্ট
এই লবণ হিমালয় পর্বত থেকে তৈরি হয়। উৎপাদিত অঞ্চলে লবণটি হোয়াইট গোল্ড নামে সুপরিচিত। হিমালয়ান সল্ট প্রধানত সোডিয়াম ক্লোরাইড নিয়ে গঠিত। তবে এতে সালফেট, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম, পটাসিয়াম, ফসফরাস, কপার, জিংক, সেলেনিয়াম, আয়োডিন, ফ্লোরাইডসহ প্রায় ৮০টির মতো উপাদান থাকে। এই লবণের খনিজ উপাদানগুলো মানুষের শরীরের কোষে খুব সহজেই শোষিত হতে পারে। তবে সাধারণ লবণের তুলনায় কম সোডিয়াম থাকলেও এতে ৯৮ শতাংশ সোডিয়াম ক্লোরাইড থাকে। যেমন সিকি চা-চামচে ৫৭৫ মিলিগ্রাম সোডিয়াম থাকে। তবে দৈনিক ১ হাজার ৫০০ মিলিগ্রামের বেশি সোডিয়াম গ্রহণ করা ক্ষতির কারণ হতে পারে। তাই পিংক সল্ট খেতে হবে চিকিৎসক অথবা পুষ্টিবিদের পরামর্শ অনুযায়ী। যাঁরা স্যালাইন খেতে চান না, তাঁরা মাল্টা বা কমলার রসের সঙ্গে এক চিমটি পিংক সল্ট মিশিয়ে খেতে পারেন।
Glaucoma আক্রান্ত হলে বুঝবেন কীভাবে ?
কোনো পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তি যদি বলেন, তিনি পাশের দিকে দেখতে পারছেন না। কেবল সামনের দিকটাই স্পষ্ট দেখছেন। তা হলে বুঝতে হবে, ওই ব্যক্তির অনেকটা ক্ষতি হয়ে গেছে।
এই ক্ষতির কারণ Glaucoma। আট থেকে আশি—যেকোনো বয়সী মানুষের চোখেই থাবা বসাতে পারে Glaucoma । ঠিক সময়ে ধরা না পড়লে এবং চিকিৎসা শুরু না করলে চিরতরে দৃষ্টিশক্তিও কেড়ে নিতে পারে এই রোগ। তাই চিকিৎসকেরা একে ‘সাইলেন্ট থিফ’ বলে থাকেন।
চোখের মধ্যে যে অংশ দিয়ে তরল চলাচল করে, তার পথ বন্ধ হয়ে গেলে তরল জমে চোখের ওপর চাপ সৃষ্টি করে। বিশেষ করে অপটিক স্নায়ুতে চাপ বাড়তে থাকলে ধীরে ধীরে দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ হতে থাকে। পরে এটাই অন্ধত্ব ডেকে আনে।
প্রাথমিকভাবে ক্ষতিটা শুরু হয় পরিধির চারপাশ থেকে। তাই গ্লুকোমায় আক্রান্ত রোগীদের ‘সাইড ভিশন’ নষ্ট হতে থাকে। চোখের ভেতর পানি তৈরি হতে থাকে, অথচ বেরোনোর জায়গা পায় না।
এর ফলেই তা দুর্বল জায়গায় চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ব্যক্তিদের গ্লুকোমা হওয়ার আশঙ্কা অনেক বেশি। এ ছাড়া দীর্ঘদিন কোনো স্টেরয়েড–জাতীয় ওষুধ সেবন করলে, চোখে কোনো আঘাত পেয়ে থাকলে গ্লুকোমায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে।
প্রাথমিক লক্ষণগুলো কী :
দৃষ্টিশক্তি ঝাপসা হয়ে যাওয়া।
চোখ থেকে অত্যধিক পানি পড়া।
চোখ লাল হয়ে যাওয়া।
আলোর দিকে তাকালে চোখে ভীষণ ব্যথা হওয়া।
চোখের পাতা এঁটে যাওয়া, চোখ খুলতে না পারা।
চোখের চিকিৎসক একবার পাওয়ার সেট করে দেওয়ার পরে সাধারণত আর এক-দেড় বছরের মধ্যে তা বৃদ্ধির সম্ভাবনা থাকে না। তবে যদি মাস কয়েক যাওয়ার পর থেকেই দেখতে অসুবিধা হয়, কিংবা ঘন ঘন পাওয়ার বাড়ে, তাহলে সন্দেহ করতে হবে, তা গ্লুকোমার কারণে হতে পারে। এই রোগে আক্রান্ত হলে সম্পূর্ণ সারানো সম্ভব নয়। তবে সময়মতো ধরা পড়লে চিকিৎসার মাধ্যমে অসুখের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব।
ডেঙ্গু পরিস্থিতিতে আপনি কতটা সচেতন?
ডেঙ্গু ভাইরাসজনিত সংক্রামক রোগ, যা সাধারণত স্ত্রী মশা থেকে মানবদেহে বাহিত হয়। চার ধরনের ভাইরাস এই সংক্রমণের জন্য দায়ী। প্রধানত বাংলাদেশ, ভারত ও সিঙ্গাপুরের মতো গ্রীষ্ণমণ্ডলীয় দেশ বা অঞ্চলগুলোতে ভাইরাসজনিত এই রোগের প্রকোপ বেশি। যে অঞ্চলের জলবায়ুতে গ্রীষ্মকালের প্রভাব বেশি, সে অঞ্চলকে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চল বলে। এই দেশ বা অঞ্চলসমূহের শহর এবং উপশহরগুলোতেই ডেঙ্গু বেশি সংক্রমিত হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, বর্তমানে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী প্রায় ১০-৪০ কোটি মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন এবং পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন।
ডেঙ্গু যেভাবে সংক্রমিত হয় :
ডেঙ্গু কয়েকভাবে সংক্রমিত হতে পারে। এর মধ্যে ভাইরাস বাহক মশার কামড়ে সংক্রমণ তো হয়ই, এ ছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তিকে কামড়ে দেওয়ার ফলে ভাইরাস বাহক হয়ে ওঠা মশার কামড় অন্যতম। অন্তঃসত্ত্বা মায়ের মাধ্যমে গর্ভাবস্থায় নবজাতকও ভাইরাসের কবলে পড়ে। আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত নেওয়া, অঙ্গদান ইত্যাদি কারণেও ডেঙ্গুর ভাইরাস সংক্রমিত হয়।
আক্রান্ত হয়েছেন কি না, তা বুঝবেন যেভাবে:
বেশির ভাগ আক্রান্তের ক্ষেত্রে ডেঙ্গুর খুব সামান্য কিছু উপসর্গ দেখা দেয়। কোনো কোনো ক্ষেত্রে উপসর্গই দেখা যায় না। আক্রান্ত ব্যক্তি সাধারণত ১ থেকে ২ সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে ওঠেন। আক্রান্ত হলে হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার দরকারও হয়। তবে সংক্রমণ মারাত্মক পর্যায়ে চলে গেলে তা হয়ে পড়ে মৃত্যুর কারণ।
আক্রান্ত হওয়ার ৪-১০ দিনের মধ্যে এই রোগের লক্ষণগুলো দেখা যায়। লক্ষণ দেখা দেওয়ার ২-৭ দিনের মধ্যে শরীর থেকে তা আবার চলেও যায়।
সাধারণ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে যেসব লক্ষণ দেখা যায়—
তীব্র জ্বর (শরীরের তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট হতে পারে)
প্রচণ্ড মাথাব্যথা
অক্ষিকোটরে অর্থাৎ চোখের পেছনে ব্যথা
মাংসপেশি ও অস্থিসন্ধিতে ব্যথা
বমি বমি ভাব
বমি
বিভিন্ন গ্রন্থি ফুলে ওঠা
শরীরে ফুসকুড়ি
ডেঙ্গুতে দ্বিতীয়বার আক্রান্ত হলে তা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। রোগ মারাত্মক পর্যায়ে চলে গেলে নিচের লক্ষণগুলো দেখা দেয়—
তলপেটে তীব্র যন্ত্রণা
একনাগাড়ে বমি
দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস
নাক অথবা মাড়ি থেকে রক্ত পড়া
ক্লান্তিতে ভেঙে পড়া
ভীষণ অস্থিরতা
বমি অথবা মলের সঙ্গে রক্ত আসা
ত্বক ঠান্ডা এবং ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া
দুর্বলতা বোধ করা
ডেঙ্গুর চিকিৎসা
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, ডেঙ্গু রোগের নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই আক্রান্ত ব্যক্তিকে বাড়িতে রেখে বেদনানাশক দিয়ে সারিয়ে তোলার চেষ্টা করা হয়। প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ দিয়ে রোগীর ব্যথা দূর করা হয়। অন্তত একবার আক্রান্ত ব্যক্তি পুনরায় আক্রান্ত হলে তাকে টিকা দেওয়া হয়।
ডেঙ্গু প্রতিরোধ এবং নিয়ন্ত্রণ
ডেঙ্গু রোগের জন্য দায়ী মশা দিনের বেলা কামড়ায়। তাই ডেঙ্গুর ঝুঁকি থেকে নিরাপদ থাকতে চাইলে যা যা করতে হবে—
এমন পোশাক পরতে হবে, যা শরীরের বেশির ভাগ অংশই ঢেকে রাখে
দিনের বেলা ঘুমানোর সময়ে মশারি টানিয়ে ঘুমাতে হবে
জানালায় নেট বা তারজালি ব্যবহার করা যেতে পারে
হাতে-পায়ে মশা প্রতিরোধী ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করা যেতে পারে
ঘরে কয়েল বা মশা প্রতিরোধী উদ্বায়ী পদার্থ ব্যবহার করা যেতে পারে
আবাসস্থলের আশপাশে আবদ্ধ পানি অপসারণ করতে হবে
এরপরও কেউ ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হলে যা করবেন—
পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে
প্রচুর পানি বা তরল খাবার খেতে হবে
ব্যথা কমাতে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ দিতে হবে
আইবুপ্রোফেন এবং অ্যাসপিরিনের মতো নন-স্টেরয়ডাল ওষুধ সেবন থেকে বিরত থাকতে হবে
অন্যান্য সব লক্ষণের দিকে খেয়াল রাখতে হবে এবং জটিলতা দেখা দিলে দ্রুত অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
কর্মোদ্যম বাড়াতে চান? এই ৭ বিষয় মেনে চলুন
তুমুল প্রতিযোগিতার এই পৃথিবীতে বাড়ছে কাজের চাপ, বাড়ছে ব্যস্ততা। কাজের মধ্যে ডুবে থাকতে থাকতে একঘেয়েমিও পেয়ে বসে। কমতে থাকে কর্মোদ্যম। এমন পরিস্থিতি এড়াতে চাই জীবনধারার পরিবর্তন।
১. কাজের বিভাজন
কর্মক্ষেত্রে এবং পারিবারিক ও সামাজিক পরিসরে নিজের কাজগুলোকে গুরুত্ব অনুসারে ভাগ করে নিন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও জরুরি কাজগুলোর প্রতি বিশেষ যত্নবান হোন। এগুলো দিনের প্রথম ভাগেই সেরে ফেলতে চেষ্টা করুন। সব কাজ একার পক্ষে সামলানো সম্ভব না হলে অন্যদের সাহায্য নিন। কর্মক্ষেত্রেও আপনার সহযোগীর প্রয়োজন হতে পারে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে তা জানান।
২. মানসিক চাপ সামলান
কাজের চাপে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে মনে। কর্মব্যস্ততায় হয়তো পরিবার বা বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটানো হচ্ছে না। এতেও মন হতে পারে ভারাক্রান্ত। অপরাধবোধেও ভুগতে পারেন কেউ। তাই মনের যত্ন নিন। মনকে একদিকে নিবদ্ধ রাখুন। শিথিলকরণ ব্যায়ামের সহায়তা নিতে পারেন। প্রিয় মানুষদের সঙ্গে সময় কাটান। পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটালে মানসিক চাপ কমে।
৩. খাবার থেকে শক্তি
এমন খাবার বেছে নিন, যা থেকে শর্করা শোষিত হতে লম্বা সময় লাগে। খাবারে প্রয়োজনীয় মাত্রায় আমিষ রাখুন। অলিভ অয়েলের রান্না খেতে পারেন। হোল গ্রেইন বা গোটা শস্য বেছে নেওয়া ভালো। অর্থাৎ রিফাইনড বা পরিশোধিত শস্যদানা এড়িয়ে চলা ভালো। খাদ্যতালিকায় আঁশসমৃদ্ধ সবজি রাখুন। সকালের নাশতা একটু ভারী হলেই ভালো। সকালের খাবার বাদ দেবেন না। দীর্ঘ সময় খালি পেটে থাকবেন না। ডায়েট কন্ট্রোল করলেও সারা দিনের প্রয়োজনীয় ক্যালরিটা গ্রহণ করুন ধাপে ধাপে। কাজের জায়গায় বাদাম রেখে দিতে পারেন। ক্যাফেইন উদ্যম বাড়ায়। তবে অতিরিক্ত চা-কফি খাবেন না। সকালের কাজ সেরে বেলা ১১টা নাগাদ ১ কাপ চা খেতে পারেন। সতেজ থাকবেন।
৪. পানিশূন্যতা এড়িয়ে চলুন
পানি খেতে হবে খানিক পরপর। পানিশূন্যতার অন্যতম লক্ষণ ক্লান্তি বা অবসন্নতা। তাই নিজেকে পানিশূন্য হতে দেওয়া যাবে না।
৫. নিজেকে সময় দিন
কেবল দায়বদ্ধতা থেকেই সব কাজ করবেন না। নিজের জন্য একটু হলেও সময় রাখুন রোজ, ভালো লাগার কাজে সময় কাটান।
৬. ব্যায়াম ও ঘুম
ব্যায়াম করুন নিয়মিত। শারীরিক পরিশ্রম ভালো ঘুমও নিশ্চিত করে। কাজের জন্য ঘুমের সময় কমিয়ে আনা উচিত নয়।
৭. ধূমপান, মদ্যপান বর্জন
ধূমপান, তামাক ও মদ্যপানে কর্মোদ্যম কমে। তাই এগুলো এড়িয়ে চলুন। আগে থেকে এ ধরনের অভ্যাস থাকলে ধীরে ধীরে ছেড়ে দিতে চেষ্টা করুন।
#বর্ষাকালের_রোগবালাই_এবং_স্বাস্থ্য_সচেতনতা
আকাশ ভরা গনগনে রোদ। রোদের প্রতাপ যেতে না যেতেই মেঘে মেঘে ছেয়ে যায় আকাশ, প্রবল বর্ষায় ডুবতে থাকে চরাচর। বছরের এই সময়ে এভাবেই রোদ-বৃষ্টির খেলা চলে। আবহাওয়ার এই তারতম্যে শরীরকে ক্ষনে ক্ষনে নতুন পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিতে হয়।
বর্ষা ঋতুতে খাল-বিলে জঞ্জালের পাহাড়, পথে নর্দমার কাঁদা, গর্তে জমে থাকা বৃষ্টির পানি, কখনও জমে থাকা পানিতে মশার বসতি, দূষিত পানিতে সয়লাব চারদিক-খুবই পরিচিত দৃশ্য। এ সময় অনুজীবদের আবির্ভাব ঘটে অস্বাভাবিক হারে। শ্বাসযন্ত্রের রোগ, পেটের রোগ, ভাইরাস জাতীয় রোগ, ইত্যাদির জন্য অনুকূল পরিবেশ বর্ষাকাল। এই সময় রোগগুলো মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে।
তাই এই সময় নিজের ও পরিবারের সদস্যদের দিকে খেয়াল রাখতে হবে একটু বেশি। সতর্কতার সাথে দেখ-ভাল করা চাই-ই চাই। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের অসুখ-বিসুখ হওয়ার প্রবণতা থাকে বেশি। যে কোন রোগবালাই হলে মন খারাপ থাকে, ফলে বাদল দিনের কদম ফুল দেখার আনন্দ যেমন বিলীন হয়ে যায় তেমনি প্রচন্ড গরমের পর স্বস্তির এক পশলা বৃষ্টি তখন বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
বর্ষার যেসব রোগ হতে পারে তার মধ্যে অন্যতম ফ্লু জাতীয় রোগ, শ্বাসযন্ত্রের রোগ তথা হাপাঁনি, সিওপিডি, ব্রঙ্কাইটিস, নিউমোনিয়া। বর্ষাকালে এই বার বার ভেজা, ভ্যাপসা ও ঠান্ডা আবহাওয়াতে হাপাঁনি, শ্বাসকষ্ট বাড়তেই পারে কারও কারও। বৃষ্টিতে ভিজে গায়ে কাপড় শুকালে ঠান্ডা লাগতে পারে। তাই এই সময় প্রত্যেকের উচিত ভারী কাপড় পরিহার করে হালকা-ঢিলেঢালা সুতি পোষাক পরিধান করা।
বর্ষাকালের অধিকাংশ রোগই পানিবাহিত। তাই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে খাবার গ্রহনের কারণে বর্ষাকালের এই সময়ে অনেকের হজমে গোলমাল দেখা দেয়। প্রথম বৃষ্টি যখন আসে ঘন গৌরবে তখন পেটের অসুখ, ডায়রিয়া, এমিবিয়াসিস, হেপাটাইটিস বা জন্ডিস হতে পারে। এছাড়াও আমাশয়, উদরাময়, টাইফয়েড জ্বর দেখা যায় বেশি বর্ষা মৌসুমে। দূষিত পানি ও খাদ্য এসব রোগ ঘটানোর পেছনে মূল কারণ হিসাবে কাজ করে। তাই সঠিকভাবে ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি পালন এসময় খুবই জরুরী।
বৃষ্টির এই সময়ে হতে পারে ত্বকের রোগ ডার্মাটাইটিস। ছত্রাকের কারণে বেশি হয় ত্বকের রোগ। এলার্জিও হতে পারে। রাইনাইটিস, এটোপিক ডার্মাটাইটিস, নেত্রবর্ণ প্রদাহ (চোখ উঠা) দেখা যায় বর্ষাকালে বেশি। মশাবাহিত রোগ : ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু বর্ষার অসুখ।
তাই আসুন সংক্ষেপে জেনে নিই কবি সাহিত্যিকের এই বাদল দিনে, বর্ষা মৌসুমে কী করে রক্ষা করতে পারি নিজেদের?
# ফুটানো পানি পান করতে হবে, সম্ভব হলে ফিল্টার করে নিতে পারি। বর্ষায় বারবার হাত ধোয়ার অভ্যাস করুন। রাস্তার ধারে ফুটপাতে অস্বাস্থকর পরিবেশে তৈরী ফলের জুস; লাচ্ছি, শরবত যথাসম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।
# সুষম খাদ্য, প্রচুর ফলমূল ও শাকসবজি খাওয়া, যেগুলোতে বেশি আছে ভিটামিন ‹সি’ (যেমন:পেয়ারা,মাল্টা, লেবু, আনারস)। তবে ফল ও শাকসবজি বাজার থেকে আনার পর মনে করে প্রথমেই খুব ভালো করে ধুয়ে নিতে হবে, কারণ এগুলোতে জীবাণুর লার্ভা, ভাইরাস ও রাস্তার ধূলাবালি লেগে থাকে।
# নিশ্চিত করতে হবে বৃষ্টি ও ঠান্ডা থেকে নিজেকে রক্ষা করতে। ছাতা ও বর্ষাতি ব্যবহার করা চাই। বৃষ্টির মধ্যে রেইনকোট পরে বেরুনো উচিত। ভেজা কাপড় বাসায় এসেই চটজলদি বদলে ফেলতে হবে।
# ত্বক যতদূর সম্ভব শুকানো রাখা। বর্ষাকালে বাজারের ভালো ব্র্যান্ডের ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করা উচিত। পাউডার ত্বকের ছত্রাক জাতীয় রোগ প্রতিরোধ করে।
# বর্ষাকালে রাস্তাঘাট নর্দমার কাঁদা ও গর্তে জমে থাকা ময়লা পানিতে সয়লাব থাকে। আজকাল অল্প বৃষ্টিতে শহরের রাস্তাগুলো হাঁটু পানিতে তলিয়ে যায়। যা হাটার সময় আমাদের গায়ে লাগে এবং জুতায় প্রবেশ করে। এই কাঁদা ও ময়লা পানি ব্যাকটেরিয়া ও ছত্রাকের বেড়ে উঠার জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরী করে। তাই বাইরে থেকে আসা মাত্রই পা ভালো করে সাবান দিয়ে ধোয়ার পাশা-পাশি জুতাও পরিস্কার করে শুকাতে দিতে হবে। ডায়াবেটিস রোগীদের বর্ষাকালে পায়ের অতিরিক্ত যত্ন নিতে হবে ডায়াবেটিক ফুট থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য।
# দূষিত পানি দিয়ে জামা-কাপড়, থালা-বাসন কখনোই ধুবেন না।
# মনে রাখবেন, ডেঙ্গুর মতো ভেক্টর বা মশাবাহিত রোগগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করা অত্যন্ত দুঃসাধ্য এবং নির্মূল করা প্রায় অসম্ভব। এডিস মশা ডোবা-নালায় নয়, বরং ঘরের ভেতরে বা আশেপাশে ৩ দিনের বেশি জমে থাকা স্বচ্ছ পানিতে বংশ বিস্তার করে। সুউচ্চ ভবনের শীর্ষ তলায় থাকার অর্থ এই নয় যে আপনি এডিস মশা থেকে নিরাপদে আছেন। এই মশা বহুতল ভবনেও পৌঁছাতে পারে। বাসার বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা পরিষ্কার পানি সরিয়ে আপনার বাড়িতে মশার প্রজনন রোধ করুন। বাসার ফুলের টবে, টায়ারে, বাসার ছাদে যেন পানি না জমে থাকে, খেয়াল রাখবেন যেন পরিস্কার থাকে বাড়ির আঙিনা। জমে থাকা পানি থেকে জন্ম হয় এডিস মশার। বর্ষার সময় ডেঙ্গু জ্বর থেকে রক্ষা পেতে মশারির নীচে শোয়া উচিত।
সাবধান, টাইফয়েড বাড়ছে
টাইফয়েড বা এন্টারিক ফিভার পানিবাহিত সংক্রামক রোগ। স্যালমোনেলা টাইফি নামক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে এটি হয়ে থাকে। স্যালমোনেলা দূষিত পানি ও খাবার গ্রহণের মাধ্যমে এই জীবাণু শরীরে প্রবেশ করে। যেকোনো বয়সেই টাইফয়েড হতে পারে, তবে শিশু এবং কম রোগ প্রতিরোধক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তির আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেশি। বাংলাদেশে গ্রীষ্ম ও বর্ষায় সবচেয়ে বেশি এ রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা যায়।
যেভাবে জীবাণু ছড়ায়
অপরিচ্ছন্নতা, ঘনবসতি, সঠিক সময়ে সঠিক নিয়মে হাত না ধোয়া, দূষিত পানি বা খাবার খাওয়া, রেস্তোরাঁয় অস্বাস্থ্যকর এবং কম সেদ্ধ খাবার খাওয়ার কারণে এই রোগ বেশি হয়। এ ছাড়া টাইফয়েড জ্বর হতে আরোগ্য লাভ করার পর অনেকের শরীরের পিত্তথলিতে এই জীবাণু সুপ্ত অবস্থায় থেকে যেতে পারে এবং পরে বাহক হিসেবে তিনি রোগ ছড়াতে পারে। যেসব এলাকায় এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি থাকে, সেখানে ভ্রমণ করলেও টাইফয়েড হতে পারে। আক্রান্ত রোগীর মলের মাধ্যমে জীবাণু পরিবেশে ছড়ায় এবং অস্বাস্থ্যকর–অপরিষ্কার খাবার, পানি বা হাতের মাধ্যমে সংক্রমিত হয়।
রোগের লক্ষণ
টাইফয়েডের জীবাণু আক্রান্ত ব্যক্তির পরিপাকতন্ত্রে প্রবেশ করে রক্তে ছড়িয়ে পড়ে। জীবাণু শরীরে প্রবেশের ১০ থেকে ২০ দিনের মধ্যে সাধারণত রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়। জ্বর এ রোগের প্রধান লক্ষণ। পরে নানা অঙ্গ আক্রমণ করে। সময়ের সঙ্গে এর লক্ষণসমূহ পরিবর্তিত হয়।
প্রথম সপ্তাহ: প্রথম চার-পাঁচ দিন জ্বর ক্রমাগত বৃদ্ধি পায়, যা কখনো বাড়ে (১০৪ ডিগ্রি বা অধিক ফারেনহাইট) কখনো কমে। তবে কখনোই সম্পূর্ণ ছেড়ে যায় না।
জ্বরের সঙ্গে ক্ষুধামন্দা, ডায়রিয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য, মাথাব্যথা, শরীর ব্যথা, বমি, কাশি থাকতে পারে।
দ্বিতীয় সপ্তাহ: রোগীর পেটে গোলাপি রঙের ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে। প্রচণ্ড জ্বরের সঙ্গে কাশি, হৃৎস্পন্দন কমে যাওয়া, পেটে ব্যথা, পেট ফুলে যাওয়া, প্রলাপ বকা, রক্তশূন্যতা ও শারীরিক দুর্বলতা দেখা দিতে পারে।
তৃতীয় সপ্তাহ: এ সময় যদিও জ্বর কমে আসে কিন্তু চিকিৎসা না হলে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে।
টাইফয়েডে পরিপাকতন্ত্র ছিদ্র এবং রক্তক্ষরণ হতে পারে। অগ্ন্যাশয়ে প্রদাহ, মেরুদণ্ডে সংক্রমণ, মস্তিষ্কে প্রদাহ, প্লীহা বড় হয়ে যাওয়া, পিত্তথলিতে সংক্রমণ, নিউমোনিয়া, শরীরের বিভিন্ন স্থানে ফোড়া এবং স্নায়বিক সমস্যা সমস্যা দেখা দিতে পারে।
চিকিৎসা
অ্যান্টিবায়োটিক যথেচ্ছ সেবনের কারণে আমাদের দেশে টাইফয়েড জ্বর অ্যান্টিবায়োটিকরোধী হয়ে পড়ছে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী রক্ত পরীক্ষা করে অ্যান্টিবায়োটিক এবং অন্যান্য ওষুধ গ্রহণ করতে হবে। চিকিৎসক যেভাবে যত দিন বলবেন, ঠিক সেভাবেই ওষুধ খেতে হবে বা ইনজেকশন নিতে হবে। সঠিক নিয়মে না খেলে বিভিন্ন জটিলতাসহ রোগী বাহক হিসেবেও রোগ ছড়াতে পারে। টাইফয়েডের রোগীকে পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে। বেশি বেশি তরল, ভিটামিনযুক্ত এবং উচ্চ ক্যালরিসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা উচিত। জ্বর বেশি থাকলে নরম গামছা বা তোয়ালে ভিজিয়ে বারবার শরীর মুছে দিতে হবে। তেল-মসলা-ভাজা খাবার পরিহার করতে হবে। প্রতিবার টয়লেট ব্যবহারের পর হাত সাবান দিয়ে ভালো করে ধুতে হবে।
প্রতিরোধ যেভাবে
পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন থাকাই টাইফয়েড থেকে বাঁচার প্রধান উপায়। এ ছাড়া নির্ধারিত ভ্যাকসিন বা টিকা গ্রহণ করা যেতে পারে।
বাচ্চাদের ৯ থেকে ১২ মাস বয়সের মধ্যে কনজুগেট ভ্যাকসিনের কেবল একটি ডোজই পর্যাপ্ত।
২ বছরের বড় বাচ্চাদের পলিস্যাকারাইড ভ্যাকসিন এক ডোজ এবং ৩ বছর পরপর বুস্টার দেওয়া যেতে পারে।
ভ্যাকসিন সব সময় শতভাগ কার্যকর হয় না, তাই ভ্যাকসিনের পাশাপাশি যেসব পদক্ষেপ নিতে হবে
খাবার প্রস্তুত-গ্রহণ-পরিবেশনের আগে এবং শিশু বা অসুস্থ রোগীকে খাওয়ানোর পূর্বে খুব ভালোভাবে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে।
সব সময় ফোটানো বা পরিশোধিত পানি পান করা উচিত।
শাকসবজি, ফলমূল, ডিম, মাছ, মাংস এবং রান্নার বাসনপত্র ধোয়ার জন্য সব সময় পরিষ্কার পানি ব্যবহার করতে হবে।
যেকোনো খাবার ভালোভাবে রান্না বা সেদ্ধ করে তারপর খাওয়া উচিত।
রাস্তার পাশের দোকানের খাবার খাওয়া এবং পানি বা শরবত পান করা যাবে না।
টয়লেট সব সময় পরিষ্কার রাখতে হবে। টয়লেট ব্যবহারের পর সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত পরিষ্কার করতে হবে এবং বাচ্চাকেও শেখাতে হবে।
ভ্রমণ করার সময় বিশুদ্ধ পানি এবং স্বাস্থ্যসম্মত খাবার নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না ফলে টাইফয়েডে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
নারীর শরীরে পুরুষ হরমোন
মেয়েদের শরীরে পুরুষ হরমোন অর্থাৎ অ্যান্ড্রোজেনের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে গেলে ডিম্বাশয়ের আশপাশে ছোট ছোট সিস্ট তৈরি হয়। ফলে ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু বড় হয়ে একসময় বের হওয়ার কথা থাকলেও আর বের হতে পারে না।
অ্যান্ড্রোজেনের এই আধিক্যের কারণে পুরুষের মতো মুখে অবাঞ্ছিত লোম, অনিয়মিত মাসিক, বন্ধ্যাত্ব ইত্যাদি নানা সমস্যা হতে পারে। আলট্রাসনোগ্রামে ওভারি বা ডিম্বাশয়ে ছোট ছোট সিস্ট দেখা যায়। এ জন্য সব মিলিয়ে এই রোগের নাম পলি সিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম বা পিসিওএস।সাধারণত ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সী নারীদের এই রোগের প্রবণতা বেশি।
যেসব লক্ষণ দেখা যায়
পিসিওএসে আক্রান্ত নারীদের মধ্যে যেসব লক্ষণ দেখা যায় তার মধ্যে রয়েছে—
অনিয়মিত মাসিক। অনেকের পরপর বা একাধিকবার পিরিয়ড মিস হয়।
অস্বাভাবিক ওজন বেড়ে যাওয়া। আক্রান্ত অন্তত ৫০ শতাংশ নারীই মোটা হয়ে থাকেন।
মুখসহ পিঠ ও বুকে প্রচুর ছোট ছোট ব্রণ দেখা যায়। অনেক সময় ত্বকের বিভিন্ন জায়গায় পিগমেন্টেশন বা কালো দাগ দেখা যায়।
বন্ধ্যাত্ব: পিসিওএস থাকলে ডিম্বাণু নিঃসরণ চক্র অনিয়মিত হয়, ফলে গর্ভধারণে অসুবিধা হয়। গর্ভধারণ হলেও গর্ভপাতের ঝুঁকি থেকেই যায়।
শরীরে অবাঞ্ছিত লোম ওঠা ও চুলপড়া। অনেকের ক্ষেত্রে পুরুষদের মতো টাক দেখা দিতে পারে।
আক্রান্তদের নিকটাত্মীয়ের এই রোগ হওয়ার ইতিহাস থাকতে পারে। এ জন্য পারিবারিক ইতিহাস গুরুত্বপূর্ণ। তলপেটের আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষায় ওভারির আয়তন, ওভারিতে ছোট সিস্টের মতো কতটি সিস্ট আছে ও অন্যান্য বেশ কিছু বিষয় দেখা হয়। এ ছাড়া রক্তে গ্লুকোজ ও ইনসুলিনের মাত্রা, লিপিড প্রোফাইল ও অন্যান্য হরমোন যেমন—থাইরয়েড, কর্টিসল, প্রোল্যাক্টিনের মাত্রা দেখা উচিত।
চিকিৎসা
পিসিওএসের চিকিৎসা রোগীর লক্ষণ, চিকিৎসা ইতিহাস এবং রোগীর স্বাস্থ্য অন্যান্য অবস্থার ওপর নির্ভর করে। চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে—
হরমোনাল জন্মনিরোধক: এটি একই সঙ্গে মাসিক চক্র নিয়ন্ত্রণ, ব্রণ থেকে মুক্তি ও চুলের সমস্যায় কার্যকর।
অ্যান্ড্রোজেন ব্লক ওষুধ: কিছু ওষুধ অ্যান্ড্রোজেনের প্রভাব ও উৎসকে ব্লক করতে সাহায্য করে।
ইনসুলিন সংবেদনশীল ওষুধ: ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় প্রায়ই মেটফরমিন ওষুধ ব্যবহৃত হয়
ডিম্বাণু স্ফুটনে সাহায্যকারী ওষুধ: যাঁরা গর্ভধারণের পরিকল্পনা করছেন, তাঁদের ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু স্ফুরণের জন্য কিছু ওষুধ ব্যবহার করা হয়।
জীবনযাত্রার পরিবর্তন: স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস, ওজন কমানো ও নিয়মিত ব্যায়াম পিসিওএস রোগীদের সমস্যা সমাধানে বহুলাংশে সাহায্য করে থাকে।
অস্ত্রোপচার: আধুনিক চিকিৎসায় সিস্টের আকার বা সংখ্যা বেশি বেড়ে গেলে ল্যাপারোস্কোপিক ওভারিয়ান ড্রিলিং পদ্ধতির সাহায্য সিস্ট অপসারণ করা যায়।
পিসিওএস আক্রান্ত নারীদের ডায়বেটিস, উচ্চ রক্তচাপ কিংবা রক্তে কোলেস্টেরলের মাত্রা বেশি থাকলে তা নিয়ন্ত্রণে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
প্রচণ্ড গরমে নিজেকে সুস্থ রাখার ১০টি উপায়
প্রচণ্ড দাবদাহে জনজীবন বিপর্যস্ত। তাপমাত্রা কমার কোনো লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। এই তাপমাত্রায় সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকেন শিশু ও বৃদ্ধরা, তবে এটা যেকোনো মানুষের জন্যই বিপজ্জনক হতে পারে। তাই কিছু বিষয়ে সতর্কতা মেনে চলা জরুরি।
১. প্রচুর পানি পান করুন। তৃষ্ণাবোধ না করলেও নির্দিষ্ট সময় অন্তর পানি পান করুন। সব সময় সঙ্গে বিশুদ্ধ পানি রাখুন। ঘরে বিদ্যমান তাপমাত্রায় থাকা পানি ধীরে ধীরে পান করুন। ঠান্ডা পানি ও বরফপানি পান করা থেকে বিরত থাকুন। কারণ, এই সময়ে খুব বেশি ঠান্ডা পানি খেলে মানবদেহের ছোট রক্তনালিগুলো ফেটে যেতে পারে।
২. যদি বাইরে থাকার সময় হাত-পা রোদের সংস্পর্শে থাকে, তাহলে বাসায় ফিরেই তড়িঘড়ি হাত-পা ধোবেন না। এ ক্ষেত্রে গোসল বা হাত-পা ধোয়ার আগে কমপক্ষে আধা ঘণ্টা অপেক্ষা করুন।
৩. এই সময়ে যতটা সম্ভব বাইরে বের না হওয়াই ভালো। বিশেষ করে বেলা ১১টার পর থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রোদের তীব্রতা অনেক বেশি থাকে। শিশুদের এ সময় বাইরে খেলাধুলা বা দৌড়ঝাঁপ করতে দেওয়া যাবে না। বাইরে বের হলে বেশিক্ষণ রোদে থাকবেন না। পেশাগত কারণে রাস্তায় রোদে যাঁদের থাকতেই হবে, তাঁরা কিছু সময় অন্তর ছায়া বা ঠান্ডায় বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করুন।
৪. বাইরে বের হতে হলে ছাতা, টুপি সঙ্গে রাখুন। পা ঢাকা জুতা ও হালকা, ঢিলেঢালা সুতির পোশাক পরুন। আঁটসাঁট বা সিনথেটিক কিছু পরবেন না। সানগ্লাস ও সানব্লক ব্যবহার করুন।
৫. শরীরে অস্বস্তি হলে ওরস্যালাইনে পান করতে পারেন। বাড়িতে শরবত, ফলের রস, লেবুপানি, লাচ্ছি বানিয়েও পান করতে পারেন। প্রচুর ফলমূল খান যাতে পানির পরিমাণ বেশি। এভাবে শরীরকে সব সময় হাইড্রেটেড রাখতে হবে।
৬. প্রচণ্ড গরম থেকে এসে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে ঢোকার আগে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করুন। আবার এসি থেকে বেরিয়েও কিছুটা সময় অপেক্ষা করতে হবে। শরীরকে স্বাভাবিক তাপমাত্রার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সময় দিতে হবে।
৭. হিটস্ট্রোক ও হিট ক্র্যাম্প (গরমের কারণে পেশিতে টান) এড়াতে শরীর ঠান্ডা রাখতে হবে। খুব গরম লাগলে চোখেমুখে পানির ঝাপটা দিন। পারলে ঠান্ডা পানিতে গা স্পঞ্জ করে নিন।
৮. প্রতিদিন অবশ্যই গোসল করুন।
৯. বাতাস শুষ্ক ও গরম থাকলে দিনের বেলা জানালা বন্ধ রেখে বিকেলে খুলে দিতে পারেন। এতে করে ঘরের ভেতর ঠান্ডা থাকবে। ঘরের জানালায় ভারী পর্দা ব্যবহার করলে বাইরের রোদ তাতিয়ে তুলবে না।
১০. বাড়ির আঙিনায়, বারান্দায় অথবা ছাদে গাছ লাগান। পরিবেশ ঠান্ডা রাখতে সবুজ পরিবেশ তৈরি করা দরকার।
হিটস্ট্রোক
প্রচণ্ড দাবদাহে হঠাৎ করে কোনো ব্যক্তি অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন, একে বলে হিটস্ট্রোক।
কীভাবে বুঝবেন? প্রচণ্ড ক্লান্তি ভাব, মাথা ঝিমঝিম, মাথাব্যথা, ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া, হাত ও পায়ের মাংসপেশিতে অস্বস্তি, বুক ধড়ফড়, অতিরিক্ত তৃষ্ণা, শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া, দুর্বলতা ইত্যাদি হতে থাকে। তারপর এক সময় রোগী অচেতন হয়ে পড়তে পারেন।
কী করবেন?
১. দ্রুত আক্রান্ত ব্যক্তিকে ঠান্ডা বা শীতল কোনো স্থানে নিয়ে যেতে হবে।
২. শরীরের অতিরিক্ত কাপড়চোপড় সরিয়ে ফেলতে হবে।
৩. প্রচুর পানি, ফলের জুস অথবা শরবত, খাবার স্যালাইন পান করতে হবে।
৪. সমস্ত শরীর ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে দিতে হবে।
৫. শরীর ঠান্ডা করতে কুলিং ফ্যান ব্যবহার করতে হবে।
৬. বগলের নিচে আইস প্যাক কাপড়ে জড়িয়ে দিয়ে রাখা যায়।
৭. রোগী অচেতন হলে মুখে পানি জোর করে দেওয়ার চেষ্টা না করে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
শরীরের জায়গায় জায়গায় ব্যথা হয়?
শরীরে বা অস্থিসন্ধিতে ব্যথা-বেদনা বেড়ে গেলে আমরা চিন্তায় পড়ে যাই, ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেল না তো! ইউরিক অ্যাসিডের নাম ব্যথার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত বলে আমরা কমবেশি অনেকেই জানি। এটি মূলত অক্সিজেন, নাইট্রোজেন আর কার্বন–গঠিত একটি যৌগিক পদার্থ, যা আমাদের শরীরের এক ধরনের বর্জ্য পদার্থ বলা যেতে পারে। আমাদের শরীরে আছে দুই ধরনের অ্যামাইনো অ্যাসিড, এর মধ্যে কিছু আবশ্যিক বা অ্যাসেনশিয়াল, আর কিছু অনাবশ্যিক বা নন–অ্যাসেনশিয়াল। পিউরিন হচ্ছে এমনই একটা অনাবশ্যিক অ্যামাইনো অ্যাসিড। আমাদের শরীরের বেশির ভাগ ইউরিক অ্যাসিড তৈরি হয় এই পিউরিন থেকেই। আর কিছু পরিমাণ ইউরিক অ্যাসিড আসে খাবারের মধ্যে থাকা পিউরিন থেকে। ইউরিক অ্যাসিড কিডনির মাধ্যমে শরীর থেকে নিষ্কাশিত হয়ে যায়।
আমাদের শরীরে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ ইউরিক অ্যাসিড থাকে। পুরুষের ক্ষেত্রে ২.৪ থেকে ৭, এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ২.৪ থেকে ৬ মিলিগ্রাম ইউরিক অ্যাসিড প্রতি ডেসিলিটারে থাকাটা স্বাভাবিক। এর চেয়ে মাত্রা বেড়ে গেলে তাকে বলে হাইপার ইউরেসিমিয়া। রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়লে নানা জটিলতার সৃষ্টি হতে পারে। বিশেষ করে অস্থিসন্ধি বা জয়েন্টে ইউরিক অ্যাসিড স্ফটিক জমে সেখানে প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে, যাতে করে শরীরের নানা জয়েন্টে মারাত্মক ব্যথা, লাল হয়ে ফুলে যাওয়ার মতো সমস্যা হতে পারে। এ ছাড়া অতিরিক্ত ইউরিক অ্যাসিডের কারণে কিডনির পাথরজনিত সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা আছে। আছে কিডনির কার্যক্ষমতা কমে যাওয়ার ভয়ও। এমনিতে রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের উচ্চমাত্রার সঙ্গে আরও কিছু রোগের সহাবস্থান দেখা যায়। যেমন উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরলের উচ্চমাত্রা ইত্যাদি। কখনো কখনো ইউরিক অ্যাসিড বেড়ে গেলেও তা তেমনভাবে জানান দেয় না। অর্থাৎ তেমন কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না।
রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের উচ্চমাত্রার কারণ আছে অনেকগুলো। যাঁরা শাকসবজি কম খান বা প্রোটিন–জাতীয় খাবার বেশি খান, অ্যালকোহল খান, পানি কম খান, যাঁদের ওজন বেশি, বংশে বাত রোগের ইতিহাস আছে, তাঁদের ইউরিক অ্যাসিড বাড়তে পারে। আবার কিছু ওষুধের সঙ্গেও ইউরিক অ্যাসিড বৃদ্ধির সংশ্লিষ্টতা রয়েছে। যেমন ডাইইউরেটিক–জাতীয় ওষুধ। অনেক ক্ষেত্রে প্রচ্ছন্ন কোনো কারণ ছাড়াও এমনটা হতে পারে।
ইউরিক অ্যাসিড যেহেতু শরীরে নানাবিধ সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, তাই এটি নিয়ন্ত্রণে রাখাটা জরুরি। আর এ জন্য দরকার খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার মান নিয়ন্ত্রণ। যেসব খাবার খেলে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়াতে পারে, সেগুলো হলো চতুষ্পদ প্রাণী যেমন গরু, ছাগল, মহিষ ইত্যাদির মাংস, কলিজা, জিহ্বা, মগজ ইত্যাদি। চিংড়ি, কাঁকড়া–জাতীয় খোসাসহ মাছ। বীজ–জাতীয় খাবার, যেমন শিমের বিচি, মটর, কাঁঠালের বিচি ইত্যাদি। এ ছাড়া আছে ক্যাফেইন–জাতীয় পানীয় যেমন চা, কফি। অ্যালকোহল। কিছু বিশেষ সবজি, যেমন পালংশাক, পুঁইশাক, ফুলকপি, ব্রকলি, ঢ্যাঁড়স, মিষ্টিকুমড়া, টমেটো। ইস্ট দেওয়া খাবার, মিষ্টি ফল ইত্যাদি।
অতএব, ইউরিক অ্যাসিডজনিত সমস্যা থেকে বাঁচতে হলে খাবারদাবারে নিয়ন্ত্রণ আনতে হবে। ছোট মাছ, মুরগি, আঁশযুক্ত সবুজ শাকসবজি, পর্যাপ্ত তরল খাবার খেতে হবে। চা, কফি, অ্যালকোহল–জাতীয় পানীয় পান থেকে বিরত থাকতে হবে। সেই সঙ্গে উচ্চ রক্তচাপ, রক্তের কোলেস্টেরল বা সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখাও জরুরি। এ ছাড়া ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা কমানোর জন্য কিছু ওষুধ আছে, যা চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে গ্রহণ করা যায়। যেহেতু ইউরিক অ্যাসিড উচ্চমাত্রায় থাকলেও সব সময় এর লক্ষণ নাও থাকতে পারে, তাই বছরে অন্তত একবার হলেও রক্তে ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা পরিমাপ করা প্রয়োজন।
ডা. শাহনূর শারমিন, সহযোগী অধ্যাপক, মেডিসিন বিভাগ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ ।
সূত্র : প্রথম আলো
গলায় কিছু আটকে গেলে কীভাবে বের করবেন ?
হঠাৎ গলায় কোনো কিছু আটকে গেলে তা বের করে আনার প্রাথমিক চেষ্টা বাড়িতেই হতে পারে। আক্রান্ত ব্যক্তি যদি কথা বলতে পারেন, ভালোভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে পারেন, কাশতে পারেন, তাহলে আটকে থাকা জিনিসটি জোরে কাশি দিয়ে বের করে ফেলতে উৎসাহিত করুন। তবে যদি তাঁর কথা আটকে যায়, তিনি কাশতে না পারেন, কিংবা শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে অসুবিধা হয়, সে ক্ষেত্রে হেইমলিক ম্যানুভারের (গলায় কিছু আটকে শ্বাসপ্রশ্বাসে সমস্যা হলে তার প্রাথমিক চিকিৎসাপদ্ধতি) মাধ্যমে আটকে থাকা বস্তুটিকে বের করার চেষ্টা করতে হবে।
হেইমলিক ম্যানুভার কীভাবে করবেন? ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক কান গলা এবং হেড নেক সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. শেখ নুরুল ফাত্তাহ রুমি বলেন, ‘আক্রান্ত ব্যক্তিকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে নিজের দুই হাতের সাহায্যে তাঁর ওপর পেটে জোরে চাপ দিতে হবে। কার্যকরভাবে চাপ দেওয়ার জন্য এক হাতের আঙুলগুলো মুঠি করতে হবে। এরপর আরেক হাত দিয়ে সেই মুঠিকে জড়িয়ে ধরে সেই অবস্থায় দুই হাতের সাহায্যে ওপর পেটে সজোরে চাপ দিতে হবে। পেটে এমনভাবে চাপ প্রয়োগ করতে হবে, যাতে চাপটা পেট থেকে বুকের দিকে হয়। এভাবে কয়েক দফায় চাপ দিতে হবে।
এ পদ্ধতিতে রোগীর বমি হতে পারে, বমির সঙ্গে ওই আটকে থাকা বস্তুটি বের হয়ে আসে কি না বা রোগীর অবস্থার উন্নতি হয় কি না, লক্ষ করতে হবে। আর যদি এভাবে আটকে থাকা বস্তুটি গলার দিকে উঠে আসে এবং বস্তুটি দেখা যায়, তাহলে আঙুলের সাহায্যে তুলে আনার চেষ্টা করা যায়। তবে এই কাজ করতে হবে খুব সাবধানে, যাতে ধাক্কা লেগে তা আবার ভেতরে না চলে যায়। তবে গর্ভবতী নারী এবং স্থূলকায় ব্যক্তির ক্ষেত্রে পেটের পরিবর্তে চাপ দিতে হবে বুকে।
তিনি আরও জানান, ছোট শিশুর ক্ষেত্রে এমন দুর্ঘটনা ঘটলে তাকে উল্টো করে ঝুলিয়ে পিঠে জোরে থাপড়ানো যেতে পারে বারকয়েক। প্রয়োজনে শিশুর শরীরের সামনের অংশে নিজের হাত দিয়ে রেখে শিশুর ঘাড় ও মাথার ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে।
বাড়িতে সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান না হলে কালক্ষেপণ না করে রোগীকে নিকটস্থ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। তাৎক্ষণিক সমাধানের পদ্ধতিগুলো ইউটিউব থেকে শিখে রাখতে পারেন। কখন কোন বিপদে দরকার হবে, কে বলতে পারে!
#গরমে_চোখের_যত্নে_এই_কাজগুলো_করুন
চোখের জন্য তীব্র দাবদাহ বা গরম ক্ষতিকর। গ্রীষ্মকালের তীব্র তাপ, প্রখর রোদ ও ধুলাবালু চোখের নানা সমস্যার সৃষ্টি করে। তাই এ প্রচণ্ড গরমে চাই চোখের যত্ন।
গরমের সময় সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মি থেকে ত্বক রক্ষার জন্য সানস্ক্রিন ব্যবহার করা হয়, কিন্তু চোখের দিকে আমাদের খেয়ালই থাকে না। অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতি ছাড়াও তীব্র গরমের সময় চোখের অ্যালার্জির সমস্যা বেড়ে যেতে পারে। অতিরিক্ত তাপমাত্রা ও দূষণ এর অন্যতম কারণ। এ কারণে চোখ চুলকায় ও লালচে রং ধারণ করে। এমনকি রোদে গেলে চোখ জ্বালাপোড়াও করে।
অনবরত পানি ঝরার সমস্যা গরমে অনেক বেশি হয়। চোখ লাল হয়ে যায়, চুলকায় ও চোখ দিয়ে পানি পড়ে। চোখের অঞ্জনি হলে চোখের পাতা ফুলে যায়, লাল হয় ও ব্যথা অনুভূত হয়। এগুলো সাধারণত ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে হয়ে থাকে। চোখের পানি শুকিয়ে যাওয়া এ সময়ের একটি বড় সমস্যা।
প্রতিকারে যা করতে হবে
👉রোদ থেকে চোখ বাঁচাতে সানগ্লাসের বিকল্প নেই। বাইরে বের হলে অবশ্যই সানগ্লাস ব্যবহার করুন। এটি সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে চোখকে সুরক্ষা দেবে।
👉সরাসরি এসির বাতাস থেকে চোখকে রক্ষা করুন।
👉চোখের বিশ্রাম দিতে ছয় থেকে আট ঘণ্টা ঘুমান।
👉চোখের কিছু ব্যায়াম করুন।
👉দিনের মধ্যে কয়েকবার পরিষ্কার ঠান্ডা পানি দিয়ে চোখ পরিষ্কার করুন। এমনকি চোখে পানির ঝাপটাও দিতে পারেন। এতে চোখের ময়লা ভেতর থেকেই পরিষ্কার হবে।
👉কিছুক্ষণের জন্য চোখের ওপর পাতলা করে কেটে নেওয়া শসার টুকরা রাখতে পারেন। এটি আপনার চোখ ঠান্ডা রাখতে কাজ দেবে।
👉প্রতিদিনের খাদ্যাভাসে সবুজ শাকসবজি, ফলমূল, গাজর, কলিজা ও বাদাম রাখুন।
এ গরমে ত্বকের পাশাপাশি চোখের যত্ন নিন।
ডায়াবেটিস রোগীরা কীভাবে মৌসুমি ফল খাবেন ?
এসে গেছে আম-জাম-কাঁঠালের সময়। চারদিক ভরে উঠছে কত শত ফলে। কিন্তু ডায়াবেটিস থাকলে কি আপনি এসব ফল খেতে পারবেন? ডায়াবেটিসের রোগীদের ধারণা, তাঁরা কখনোই মজার মজার জিনিস খেতে পারবেন না, কেবল শাকসবজি, রুটি খেয়েই দিন কাটাতে হবে—ধারণাটা ঠিক নয়। সরাসরি চিনি, মিষ্টি, গুড়যুক্ত খাবার ছাড়া সবকিছুই তিনি খেতে পারবেন, কিন্তু পরিমিত।
আসুন জেনে নিই, গ্রীষ্মের মজাদার ফলগুলো ডায়াবেটিসের রোগীরা কীভাবে খাবেন—
কাঁঠাল: জাতীয় ফল কাঁঠাল, কিন্তু খুবই পুষ্টিমানসম্পন্ন। এর কোনো কিছুই ফেলনা নয়। এতে আছে প্রচুর পরিমাণে প্রোটিন, শর্করা, ভিটামিন ও খনিজ। ১০০ গ্রাম কাঁঠালে ৩০০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম থাকে। তাই উচ্চ রক্তচাপের রোগীর জন্য এটি উপকারী। ডায়াবেটিসের রোগীরা এক দিনে ৫০ গ্রাম কাঁঠাল, মানে তিন কোয়া কাঁঠাল খেতে পারবেন।
আম: সুস্বাদু রসে ভরা পুষ্টিকর ফল আম। কাঁচা ও পাকা দুই অবস্থাতেই খাওয়া যায়। যাঁরা ওজন কমাতে চান এবং উচ্চ রক্তচাপের ডায়াবেটিসের রোগীরা কাঁচা আম বা কাঁচা আমের জুস খেতে পারবেন। পাকা আমে থাকে প্রচুর ভিটামিন এ, বি এবং সি। এতে আরও থাকে প্রচুর আঁশ, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। ত্বকের জন্য খুব উপকারী আমের ভিটামিন। তবে এতে শর্করাও প্রচুর বলে ডায়াবেটিসের রোগীদের হিসাব করে খেতে হবে। প্রতিদিন মাঝারি সাইজের, অর্থাৎ ৩০-৫০ গ্রাম পরিমাণ আম খেতে পারবেন তাঁরা। ১০০ গ্রাম আমে ৩ গ্রাম আঁশ থাকে বলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে, কোলেস্টেরলও কমায় আম।
আনারস: আনারসে ব্রোমেলিন নামের এনজাইম থাকে বলে এটি হজমে সহায়ক। এর প্রোটিন মৃত কোষ দূর করে ত্বককে সজীব করতে সাহায্য করে। একজন ডায়াবেটিসের রোগী দিনে ৬০ গ্রাম পরিমাণ আনারস, অর্থাৎ চার ভাগের এক ভাগ আনারস খেতে পারবেন।
তরমুজ: তরমুজের ৯২ ভাগই পানি। তাই গরমে প্রশান্তি এনে দেয় এই ফল। ১০০ গ্রাম তরমুজে শর্করা ৩-৫ গ্রাম ও মাত্র ১৫ কিলোক্যালরি। যাঁরা ওজন কমাতে চান, তাঁরা তরমুজ খেতে পারবেন ইচ্ছেমতো। কিন্তু গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি বলে ডায়াবেটিসের রোগীদের এটি খেতে হবে হিসাব করে। তাঁরা দিনে ১৫০ গ্রাম পরিমাণ খেতে পারবেন।
জাম: জামে আছে প্রচুর ভিটামিন, খনিজ, জিংক, কপার, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ও ফাইবার। ফ্ল্যাভোনয়েড থাকার কারণে এটি ডায়াবেটিসের রোগীর জন্য উপকারী। জামে ক্যালরির পরিমাণ খুব কম, কিন্তু ফাইবার বেশি। কোষ্ঠকাঠিন্য তো দূর করেই, হজমশক্তি বাড়ায়, মূত্র পরিষ্কার করে।
জ্যৈষ্ঠ মাসের নানা রসাল ফলের মধ্যে প্রায় সবই ডায়াবেটিসের রোগীরা খেতে পারবেন, কিন্তু তাঁদের খেতে হবে পরিমিত, হিসাব করে। তাই ফল খেতে পারবেন না—এটা ভেবে মন খারাপ না করে রোজ স্বাস্থ্যকর উপায়ে খানিকটা করে স্বাদ নিন।
Click here to claim your Sponsored Listing.
About
বাংলাদেশ এর মানুষকে স্বাস্থ্য খাতে আরো উন্নত সেবার ব্রত নিয়ে বায়োমেড এর পথচলা শুরু করেছিল আজ থেকে ৯ বছর আগে। সময়ের চাহিদার আলোকে বায়োমেড ২০১৬ থেকে তাদের অনলাইন কার্যক্রম শুরু করে। বায়োমেড বিশ্বাস করে মানসম্পন্ন ঔষুধ ও স্বাস্থ্যগত সঠিক পণ্য পাওয়া মানুষের অন্যান্য মৈলিক চাহিদার মতোই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
তারই ধারাবাহিকতায় বায়োমেড অনলাইন মানসম্পন্ন ঔষুধ ও স্বাস্থ্যগত পণ্য নিয়ে গ্রাহক এর নিকট পৌঁছে যাচ্ছে খুবই দ্রুত সময়ে। বায়োমেড এবং বায়োমেড অনলাইন বিশ্বাস করে পণ্য বিক্রয় নয় সেবা প্রদানই আমাদের মূল লক্ষ্য। গ্রাহকদের সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা কে আরো অধিক গতিশীল করতে আমরা চালু করেছি ১৬৫৭২ [ হট লাইন ]
এই মুহুর্তে ঢাকা, চিটাগং সহ দেশের সব কয়টি বিভাগীয় শহর এবং জেলা শহরে আছে আমাদের হোম ডেলিভারি সার্ভিস, প্রোডাক্ট হাতে পেয়ে পেমেন্ট করার সুবিধা. এছাড়া আপনি আপনার সুবিধা মতো কুরিয়ারের সার্ভিস এর মাধ্যমে ডেলিভারি নিতে পারবেন, আর পেমেন্ট করবেন বিকাশে.
আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ!
Videos (show all)
Contact the practice
Telephone
Address
152/2 H, Eastern Dolon, Bir Uttam Kazi Nuruzzaman Road, West Panthapath
Dhaka
1205
Opening Hours
Monday | 08:00 - 23:15 |
Tuesday | 08:00 - 23:59 |
Wednesday | 08:00 - 23:59 |
Thursday | 08:00 - 22:00 |
Friday | 08:00 - 06:00 |
Saturday | 08:00 - 17:59 |
Sunday | 08:00 - 22:00 |
House: 1, Road: 8, Bosilla Garden City, Mohammadpur
Dhaka, 1207
Digito, the trusted name in the health and digital gadget sector of Bangladesh. We are ready to serv
Mirpur Road
Dhaka
Living a healthy life is the ultimate choice.Knowledge is a must. So for ensuring the utmost thing and to aware people about different health problems and solutions is my passiona...
R. M Center, 4th Floor, House 101, Gulshan/2
Dhaka, 1212
VLCC BD (Bangladesh) guided by the motto ‘Transforming Lives’ the VLCC Group seeks to spark self-transformation, spread happiness and imbibe every individual with wellness
Dhaka, 1205
Exercising is a great way to stay happy and healthy, but sometimes it can take a toll on our joints.
Dhaka
Fitness Bangladesh is a first fitness blog of Bangladesh to create awareness among Bangladeshi peopl
House 674, Road 09, Avenue 06, Mirpur DOHS
Dhaka, 1216
Free home delivery Pharmacy and convenient shop at Mirpur DOHS
House 60 Road 9 Block F Banani
Dhaka, 1213
An On Demand Medicine delivery and Foreign doctor Telemedicine platform .